User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর একটা বই
Was this review helpful to you?
or
wonderful
Was this review helpful to you?
or
Awesome Book
Was this review helpful to you?
or
Giid
Was this review helpful to you?
or
সেই সময় দিনের কথা
Was this review helpful to you?
or
good quality and really quick service
Was this review helpful to you?
or
সেই সময় - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সময় বহিয়া যায়, নদীর স্রোতের প্রায়। চলুন একটু টাইম ট্রাভেল করে ঘুরে অাসি বহিয়া যাওয়া সময়ে। কল্পনা করুন ইতিহাসের পাতায় অাপনি এক ছোট্ট শিশু। ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছেন দেড়শ বছর অাগের সময়ে। কি কল্পনা শক্তিকে জাগ্রত করতে অসুবিধে হচ্ছে?কোন ব্যাপার না। সুনীল বাবুর "সেই সময়" বইখানা খুলে বসুন। তারপর বইয়ের পাতা উল্টাতে থাকুন অার ঘুরে বেড়ান ইতিহাসের পাতায়। কোন সময়ের ইতিহাস? ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ সালের বাংলায়। মনে করুন অাপনি এক ছোট্ট শিশু অার নাম নবীন কুমার। সময়কে ধরণ করে এগিয়ে চলেছেন অার অাপনার চোখের সম্মুখে ঘটে চলেছে নানা উত্থান পতন। বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছেন অার বাংলার রথি মহারথীরা ছুটে চলছে অাপনার সামনে। এ যেন এক বিস্ময়! কি দেখবেন অাপনি? দেখবেন চোখের সম্মুখে ছুটে বেড়াচ্ছেন প্রিন্স দ্বারকানাথ। হেয়ার সাহেব ভারতের শিক্ষা প্রসারে অার বিদ্যাসাগর মহাশয় ব্যস্ত সংস্কার সংস্করণে। অার রামমোহন রায় অাছেন অাপন ভূবনে। এখানেই শেষ নয় অারো অাছে! মধুসূদন দত্ত মাইকেল হয়ে উঠার বিরাট ইতিহাস দেখবেন অাপনি। সেই সাথে দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ ফ্রীতে দেখে নেওয়াটা অাপনার উপরি কামায়। অাপনার চোখের সম্মুখে ঘটছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তার অার বাঙ্গালি বাবুদের বেলাল্লাপনা। নানা উপজীব্য ঘটনা নিয়ে সময়ের মৃত্যুর সাথে ছুটে চলেছেন অাপনি। বাংলার উত্থান পতন, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সভ্যতার উপর দাড়িয়ে অাছে"সেই সময়"। সময়ের চাকায় অবগাহন করতে চাইলে চলুন ঘুরে অাসি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই সময়ের পাতায়।
Was this review helpful to you?
or
‘সেই সময়’ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস।আমার পড়া অন্যতম সেরা একটা উপন্যাস এটি।উপন্যাসটি রচিত হয়েছে ১৮৪০ থেকে ১৮৮০ এর সময়কালের তৎকালীন বাংলার পটভূমিতে। আমার কাছে গল্পের কোনো চরিত্রকেই প্রধান বলে মনে হয়নি। লেখকের মতে, ‘এই কাহিনীর মূল নায়ক হল সময়।’আসলেও তাই।উনবিংশ শতাব্দীতে ঘটে যাওয়া নানা ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনী এগিয়ে চলেছে।আর সেই সময়প্রবাহকে লেখক তুলে ধরেছেন নবীনকুমার নামক চরিত্রের মধ্য দিয়ে। নবীনকুমার হল কলকাতার বিখ্যাত জমিদার বংশ সিংহী পরিবারের উত্তরাধিকারী। তার জন্মসংবাদ দিয়েই কাহিনির সূচনা।ধীরে ধীরে আমরা পরিচিত হই তার বাবা রামকমল মা বিম্ববতী, পালক ভাই গঙ্গানারায়ণ,বাবার বন্ধু বিধুশেখর ও আরো নানা চরিত্রের সাথে।নবীনকুমারের শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত প্রায় পুরো জীবনের বর্ণনা লেখক উপন্যাসটিতে করেছেন, আর সেই বর্ণনাই তুলে ধরেছে উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সমাজের পরিস্থিতি ও বিবর্তনকে। লেখকের নবীবকুমার সম্পর্কে বক্তব্য, ‘ সময়কে রক্ত মাংসে জীবিত করতে হয়। নবীনকুমার সেই সময়ের প্রতীক। তো কেমন ছিল সেই সময়? বাংলা তথা সমগ্র ভারতবর্ষ তখন ব্রিটিশদের পদতলে। দেশীয় জমিদার ও শাসকেরা তখন নামমাত্র ক্ষমতায়, আসল ক্ষমতা কুক্ষিগত ইস্ট ইন্ডিয়া শাসকদের হাতে। তাদের তৈরি কলকাতা শহর তখন সারা বঙ্গের রাজধানী এবং সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র।সেখানকার বেশির ভাগ জমিদার ও উচ্চবিত্তরাই ভোগবিলাসে মগ্ন, মধ্যবিত্ত নামক শ্রেণী তখনো অনুপস্থিত, নিম্নবিত্তরা ভয়াবহ শোষনের শিকার। বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য ভীষণভাবে উপেক্ষিত। শতাব্দী ধরে চলে আসা ফার্সী এবং আরবীর ব্যবহারও পড়তির দিকে, সর্বদিকে ইংরেজ ও ইংরেজী সাহিত্যের জয়জয়কার। সমাজ অশিক্ষা এবং নানা ধরণের প্রথা এবং ধর্মীয় সংস্কারে আকন্ঠ নিমজ্জিত, নারীরা কেবলই ভোগ্যদ্রব্য। একদিকে পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ, অন্যদিকে হাজারো অন্যায় এবং অনাচারের এক বিশাল সমুদ্রের নিচে ডুবে ছিল গোটা বঙ্গসমাজ। ধীরে ধীরে এখানে গড়ে ওঠে একটি শিক্ষিত যুবকশ্রেণী। যাদের অনেকেই উদ্যগী হন সমাজকে পরিবর্তনের। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মধূসুদন দত্ত সহ আরো অনেক ইতিহাসখ্যাত চরিত্র উঠে এসেছে উপন্যাসের নানা পর্যায়ে। নবীবকুমার এই শ্রেণীরই একজন সদস্য। লেখকের সার্থকতা এখানেই যে, তিনি উপন্যাসে ইতিহাসের নিরস বর্ণনাকে প্রাণ দান করতে সক্ষম হয়েছেন । তার গল্প বলার সাবলীল ভঙ্গি, বিশদ বর্ণনা আমাকে যেন সেই সময়টিতে নিয়ে গিয়েছিল। এতটাই মগ্ন হয়েছিলাম যে, টানা একবসাতেই ১২ ঘন্টা পড়ে শেষ করেছিলাম বইটি। এই উপন্যাসটির জন্যে সুনীল বঙ্কিম এবং একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ সেই সময় লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বইয়ের ধরণঃ সামাজিক উপন্যাস প্রকাশকালঃ ১৪ই এপ্রিল ১৯৯১ (ভারত); একুশে বইমেলা ২০০৮ (বাংলাদেশ) প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ (ভারত); জ্যোৎস্না পাবলিকেশন্স (বাংলাদেশ) পৃষ্ঠাঃ ৮১৬ মূল্যঃ ৭২০ টাকা (ভারত); ৫১০ টাকা (বাংলাদেশ) গল্প-সংক্ষেপঃ কোম্পানী আমল। রক্ষিতার ঘরে মৃত্যু হয় জমিদার রামকমল সিংহের। মৃত্যুর আগে তিনি রেখে রেখে যান দত্তকপুত্র গঙ্গানারায়ন, নাবালক পুত্র নবীনকুমার আর স্ত্রী বিম্ববতীকে। কিন্তু সম্পত্তি ভাগের সময় দেখা গেল, গঙ্গানারায়ন তেমন কিছুই পাননি। সবই চলে গেছে বিম্ববতী আর নবীনকুমারের নামে। রামকমলের বন্ধু ও পরামর্শদাতা বিধুশেখরের প্ররোচনাতেই এই ব্যবস্থা! মায়ের কথায় গঙ্গা ভার নিলেন সম্পত্তি দেখাশোনার। কিন্তু বিধুশেখরের তা পছন্দ হলো না। তিনি চান গঙ্গাকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেলতে, টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দিতে। আর চান নবীনকুমারকে তার জীবনে সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত করে যেতে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তরই রয়েছে কাহিনীতে। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ সেই সময়। নামটার সাথেই 'সময়' শব্দটির উল্লেখ আছে। সুতরাং বোঝাই যায়, গল্পটি একটি নির্দিষ্ট সময়কালকে ঘীরে। ১৭৫৭ সাল। বাংলার সর্বশেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে বধ করে ক্ষমতা নিল ইংরেজ সরকার। প্রথম প্রথম যদিও তারা এদেশে এসেছিল ব্যবসা করতে, তারপর ধীরে ধীরে গ্রাশ করে নিল গোটা ভারতবর্ষ। শাসন করতে লাগলো এদেশের নিরীহ মানুষদের। যদিও গোটা ভারতবর্ষে ছিল ইংরেজদের রাজ, তবে তার বড় প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যেত বাংলায়। কলকাতা ছিল রাজধানী। প্রচন্ড রকমের মানুষের আনাগোনা ছিল তাই এখানে। বৃটিশ আমলে কলকাতাও ছিল এক অদ্ভুত চেহারায়। নামমাত্র জমিদাররা শাসন করত কম, ফূর্তি করত বেশি। আবার একদল ছিল যারা শোষিত হয়ে যেত আজীবন। এই দুই সমাজ নিয়ে মিলেমিশে ছিল তৎকালীন বাংলা সমাজ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা এক অসাধারণ সৃষ্টি এই ‘সেই সময়’। এর আগে অবশ্য এই লেখকের লেখা পড়েছি। কাকাবাবু সিরিজ। তাও সেই কোন ক্লাস ফোরে থাকতে। ভালো লাগে নি। কেমন যেন খাপ ছাড়া লেগেছিল। আসলে তখন ফেলুদা পড়তাম। তাই কাকাবাবু তেমন টানে নি আমাকে। আজ এত বছর পর আবার সুনীলবাবুর লেখা পড়লাম। মনে হলো, লেখক যেন এখানে কোন গল্প বা উপন্যাস লেখার চেষ্টা করেন নি। বরং এ এক উপাখ্যান। উপাখ্যান সময়ের। কোম্পানী আমলে বাংলার চালচিত্র একেবারে ছবির মত ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। পড়তে পড়তে মনে হল, গঙ্গা, বিম্ববতী, নবীন... এরা শুধু উপলক্ষ মাত্র। এদেরকে পরিবেষ্টন করে লেখক লিখেছেন অন্যকিছু। গল্পের ছলে ফুটিয়ে তুলেছেন কলকাতার সেই সময়কার বাবুসমাজ, যখন তারা সুরা আর নারীদের নিয়ে ব্যস্ত। তুলে এনেছেন ইংরেজদের অত্যাচার, প্রজাশোষনের অর্থে চালিত সংষ্কৃতচর্চা, ধর্ম ও সমাজ সংষ্কার। তাছাড়া বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহের মত বিতর্কিত কুসংষ্কার তো ছিলই। লেখক সেই সময়ে তুলে এনেছেন কিছু বাস্তব চরিত্রও। যেমনঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, হেয়ার সাহেব, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ আরো অনেকে। সব মিলিয়ে এক বড় সংখ্যক চরিত্র দিয়ে ঘীরে ফেলেছেন তিনি। তবে তারা সবাই বাস্তব হয়ে উঠেছে। কোথাও একটুকু খামতি রাখেন নি। যে যার অবস্থান থেকেই দ্যুতি ছড়িয়েছে সমানভাবে। গল্পে তৎকালীন কলকাতার সদ্য শিক্ষিত তরুণসমাজ যখন ইংরেজ অনুকরণে মত্ত, তখন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসগরকে দেখা যায় রাত জেগে রেড়ির তেলের আলোয় বাংলা গদ্যভাষা রচনা করতে। মাইকেল মধুসূদনকে দেখা যায় অধিক বিত্তের নেশায় মগ্ন হতে। আবার দেখা যায় তাঁর বাবা রাজনারায়ন দত্তের অহংকার। এদিকে গল্পের অন্যতম চরিত্র নবীনকুমার সম্পর্কে তো লেখকই বলেছেন, “সময়কে রক্ত মাংসে জীবিত করতে হলে অন্তত একটি প্রতীকি চরিত্র গ্রহন করতে হয়। নবীনকুমার সেই সময়ের প্রতীক। তার জন্মকাহিনী থেকে তার জীবনের নানা ঘটনার বৈপরীত্য,শেষ দিকে এক অচেনা যুবতীর মধ্যে মার্তৃরুপ দর্শন এবং অদ্ভুত ধরনের মৃত্যু,সবই যে সেই প্রতীকের ধারাবাহিকতা,আশা করি তা আর বিশদভাবে বলার প্রয়োজন নেই।প্রয়োজনীয় কথা শুধু এই যে,নবীনকুমারের আদলে এক অকালপ্রয়াত অসাধারন ঐতিহাসিক যুবকের কিছুটা আদল আছে,অন্য কোনো প্রসিদ্ধ পুরুষের নাম বা জীবনকাহিনী আমি বদল করিনি....” সব মিলিয়ে ‘সেই সময়’ সেই আসল সময়কে ঘীরে যখন বাঙ্গালী সমাজ প্রথমবারের মত মাথা উচু করে দাঁড়াতে শিখেছে। গোটা উনবিংশ শতাব্দীটাই যেন বিভিন্ন চরিত্র হয়ে চোখের সামনে জীবন্ত হয়েছে। তাই হয়তো লেখক নিজেই বলেছেন, “আমার কাহিনীর পটভুমিকা ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ সাল। এবং এই কাহিনীর মূল নায়কের নাম সময়” সবশেষে বলতে হয়, “সেই সময়” এমন একটি উপন্যাস, যার পরিচয় সে নিজেই। একে আলাদা করে পরিচয় দেয়া মূল্যহীন। তবে যারা এই ব্যাপারে আরো নিশ্চিত হতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, সেই সময় বইটি পশ্চিমবঙ্গের দুটি সম্মানিত পুরষ্কার ‘বঙ্কিম পুরষ্কার’ ও ‘আকাদেমী পুরষ্কার’এ ভূষিত হয়েছে। তাই যারা এখনও পড়েননি, পড়ে ফেলুন। কথা দিচ্ছি, পড়ার পর আপনার জীবনের অন্যতম স্মরনীয় বই হয়ে থাকবে এটি! হ্যাপি রিডিং! :) রেটিংঃ ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি পড়ার সময় মনে হচ্ছিল কোথাই যেই হারিয়ে গিয়েছি। ঠিক 'সেই সময়' টাই। আমার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম মাইকেল মধুসূদন দত্তের বড় হওয়া, রাম মোহন রায় এর সতীদাহ প্রথার বিলোপকরণ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ প্রচলন আর নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম। সেইসাথে নীলচাষীদের উপর অত্যাচার, ইংরেজদের তোষামোদ,জমিদারদের চালচলন সে সময়ের বাংলার সমাজ, মানুষের জীবনযাত্রা। নবীনকুমারের জন্ম থেকে মৃত্যুর পর্যন্ত মাঝখানের সময়টাতে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে লেখক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ১৮৪০-১৮৭০ ঐতিহাসিক সময়কাল কে বর্ণনা করার চেষ্টা করছে। অহংকার,গভীর প্রেম, তীব্র অভিমান, বিরোহ, রোম্যান্স, ব্যভিচার, কুসংস্কার, সমাজসংস্কারের মতো ব্যাপার গুলো এত সুন্দর করে তুলে ধরা, পড়ার সময় মনেই হয়নি যে উপন্যাসটা খুব বেশি দীর্ঘ। নবীনকুমার, গঙ্গানারায়ণ, বিন্দুবাসিনী, বিম্ববতী, বিধুশেখর চরিত্রগুলো হয়তো অনেকদিন মনে রয়ে যাবে। সবশেষে, এরকম দীর্ঘ উপন্যাস যে এতটা উপভোগ্য হতে পারে তা আমার ধারনার বাইরে ছিলো। ইতিহাস আর কল্পনার সংমিশ্রণে বইটা সত্যিই অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
প্রথমেই বলে রাখি যে, এই বইয়ের রিভিউ লেখার মত রিভিউ লেখক এখনো হই নাই। তাই বইয়ের ফ্লাপ থেকে তুলে ধরলাম। এটাকে রিভিউ না বলে "প্রিভিউ" বলা উচিত। এই সেই সময় যখন কলকাতার বাবুসমাজ সুরা, নারী ও বুলবুলী-বিলাসে মগ্ন, যখন নব্যশিক্ষিত যুবকেরা প্রাণপণে ইংরেজ অনুকরনে মত্ত, গ্রাম নিঃস্ব করে প্রজাশোষণের অর্থে চলেছে সংস্কৃতি চর্চা, সমাজ ও ধর্ম সংস্কার, তরুণ বিদ্যাসাগর রাত্রী জেগে রেড়ির তেলের আলোয় রচনা করছেন বাংলা গদ্যভাষা, জেগে উঠেছে মধ্যবিত্ত শ্রেণী, এই সেই সময়- হ্যা, একটি বিশেষ সময়ই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সুকীর্তিত উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র। তিনি নিজেও এ উপন্যাস সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বলেছেন- "আমার কাহিনীর পটভূমিকা ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দ। এবং এই কাহিনীর মূল নায়কের নাম সময়।" আরও লিখেছেন, "সময়কে রক্তে-মাংসে জীবিত করতে হলে অন্তত একটি প্রতিক চরিত্র গ্রহন হয়। নবীনকুমার সেই সময়ের প্রতিক। তার জন্মকাহিনী থেকে তার জীবনের নানা ঘটনার বৈপরীত্য, শেষ দিকে অচেনা যুবতীর মাঝে মাতৃরূপ দর্শন এবং অদ্ভুত ধরনের মৃত্যু সবই যে সেই প্রতিকের ধারাবাহিকতা। আশাকরি তা আর বিশদভাবে এখানে প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনীয় কথা শুধু এই যে, নবীনকুমারের চরিত্রে এক অকাল-মৃত অসাধারন ঐতিহাসিক যুবকের কিছুটা আদল আছে। অন্য কোনো প্রসিদ্ধ পুরুষের নাম বা জীবনকাহিনী আমি বদল করিনি।" সত্যিই তাই। নাটকের শুরুতে যেমন দেওয়া থাকে পাত্রপাত্রীর নাম ও পরিচয়, তেমনভাবে এই বিপুল বর্ণাট্য উপন্যাসেও গোরাতেই যদি দেওয়া থাকত নবীনকুমারের সমকালীন চরিত্রাবলির নাম, বস্তুত বিস্ময়কর মনে হত সেই তালিকা। মাইকেল, বিদ্যাসাগর, ডিরোজিও, হেয়ার সাহেব, দেবেন্দ্র ঠাকুর- কে নেই! সমগ্র ঊনবিংশ শতাব্দীই যেন নানান চরিত্র হয়ে চোখের সামনে জীবন্ত। যেটুকু তফাৎ তা হল, গবেষকের রচনায় প্রান থাকে না, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সেই প্রানটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এক দুরন্ত সময়ের জীবন্ত চলচ্চিত্র 'সেই সময়'। পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ বইটা যখন পড়া শুরু করি তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছিলাম, "৭/৮ দিনের জন্য স্বর্গে যাচ্ছি।" অনুভূতিটা তেমনই। মিঠুনদাকে এই বইয়ের কথা বললে উনি বললে যে এটা হবে আমার জীবনে পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। হয়েছেও তাই। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পুরো বইটা শেষ করলাম। পড়ার সময় অন্য কোনো কাজ করি নাই, দিনরাত শুধু বই নিয়ে বসে থাকছি। যতই পড়ছিলাম ততই চুম্বকের মত টানছিলো। সবচেয়ে ভাল লাগার ব্যাপার হলো বইয়ের চরিত্রগুলো কাল্পনিক নয়। কে নেই এই বইতে!! কয়েকজনের নামতো উপরেই বললাম। এছাড়া বঙ্কিম, কার্ল মার্কস, দীনবন্ধু সহ আরও কত বিখ্যাত চরিত্র। গল্পের শেষের দিকে রবিন্দ্রনাথ চোখের সামনে জন্ম নিলেন। আর সুনীলবাবুর লেখা নিয়ে কি বলবো! এটাই আমার পড়া সুনীলবাবুর প্রথম মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। এর আগে কাকাবাবু সমগ্র পড়ছি। কিন্তু তখন তার লেখনির জোর বুঝি নাই। সুনীলবাবুর আরও দুইটা বিখ্যাত উপন্যাস পড়ার জন্য এখন আর ধৈর্য ধরতে পারতিছি না। সবশেষে যেটা বলবো, আমার পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাস এখনও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পুতুলনাচের ইতিকথা'। কিন্তু কেউ যদি আমার পড়া সেরা তিনটা উপন্যাসের নাম বলতে বলে, সেই তালিকায় 'সেই সময়' থাকতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ বলতে যেরকম বোঝায় তা হয়তো না। তবে বইটা বেশ দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে শেষ করেছি। প্রায় ৫ মাস। আমরা যারা হুমায়ুন পড়ি তাদের জন্য বেশ কষ্ট লাগে এধরনের উপন্যাস হজম করতে। তাই আস্তে আস্তে পড়লাম। উপন্যাস সম্পর্কে বলতে গেলে পড়তে পড়তে এক সময় মনে হচ্ছিল এইতো আমি মধুসূদনের পাশে দাঁড়িয়ে আছি। ঈশ্বর চন্দ্রের সাথে আমিও যেন সেই ধুতি পড়ে স্কুলে স্কুলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এক কথায় অসাধারন। সেই সময় শেষ করে এখন পুর্ব পশ্চিম শুরু করেছি। আশা করি আরো ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
না কেনার জন্যে সাজেশন থাকলো, নিঃসন্ধেহে দারূণ এক উপন্যাস কিন্তু "জ্যোৎস্না পাবলিশার্স" বই টি কে খুবই বাজে ভাবে তৈরি করেছে, বইয়ের প্রস্থ কমিয়ে ব্যাপক মোটা করার জন্যে বইটি পড়তে অনেক অসুবিধা মানে আনকমফর্ট্যাবল ফিল হয়, সুতরাং অন্য পাবলিশার থেকে কেনার সাজেশন থাকলো।