User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বিপ্লবের সময় দক্ষ নেতারা আদর্শের কথা বলে জনগণ কে বিপ্লবের প্রতি উৎসাহ দেয় কিন্তু বিপ্লবের পর সেই দক্ষ নেতাদের দৃশ্যপট থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আর নেতৃত্বের জায়গা দখল করে স্বার্থপর, ক্ষমতা লোভী, আদর্শচূত অযোগ্য নেতা যারা সমাজকে ধীরে ধীরে পুর্বের অবস্থায় নিয়ে যায় । বলছিলাম এনিমেল ফার্ম! জর্জ ওরওয়েল এর অন্যতম সেরা উপন্যাস, যা মূলত বিপ্লব এর পরবর্তী সময়ের দিকে ঈঙ্গিত করে । বইটি পড়ার সময় আমার ক্ষনে ক্ষনে মনে পড়েছে মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলন এবং রক্তক্ষয়ি চব্বিশের আন্দোলন এবং পরবর্তী বাংলাদেশের এর কথা । আমরা গল্পের শুরুতে একটি খামার এর বর্ণনা পাই যা আসলে সমাজের অবস্থাকেই প্রতিনিধিত্ব করে ! খামারের বুদ্ধিমান প্রাণীরা অন্য প্রাণীদের সংগঠিত করে একটি বিপ্লব সাধন করে এবং খামারের নিয়ন্ত্রণ নেয় । তবে বিপ্লবের পর খামারের মালিক (পরাজিত শক্তি) তার খামারের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে । তবে খামারের প্রাণীরা দক্ষ নেতৃত্ব এবং ত্যাগের নিনিময়ে এটি নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয় । পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে যোগ্য নেতাকে তাড়িয়ে দিয়ে স্বার্থপর, ক্ষমতা লোভী, আদর্শচূত অযোগ্য নেতা এবং তার চাটুকার অনুসারীরা নিজেদেরকে আবার সেই আসনে বসায়। এবং ধীরে ধীরে শুরু হয় স্বেচ্ছাচারিতা। একটি সময় পর বিপ্লবের এবং এর আদর্শ হয়ে যায় অতীত, আর পরিস্থিতি এমন দারায় যে বিপ্লবের পূর্বের আর বর্তমানের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না । এখানে কারো নাম বা কোনো সমাজের নাম উল্লেখ করা হয়নি তবে এই উপন্যাসটি পড়ার সময় আপনি এর মধ্যে প্রায় সব সমাজের বাস্তব চিত্র দেখতে পারবেন ।
Was this review helpful to you?
or
দারুণ বই............! ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
'এনিমেল ফার্ম' বইটি জর্জ অরওয়েলের রূপকধর্মী ব্যঙ্গাত্মক উপন্যাস। রূপকের আশ্রয় নিয়ে লেখক বইটিতে ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা এবং একটা সময় পর আদর্শচ্যূত হয়ে পড়া বিপ্লবী বিশেষ করে জোসেফ স্ট্যালিনের সময়কার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। কাল মার্ক্স এর যে আদর্শের উপর ভর করে রাশিয়াতে পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল,স্ট্যালিনের সময়ে এসে তা মুখ খুবড়ে পড়ে। ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকা জার শাসনের নিপীড়ন-নির্যাতন আর বৈষম্যের দেয়াল ভেঙ্গে জেগে উঠা যে বিপ্লব, শ্রমিক শ্রেণীকে নতুন পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিল,সময়ের বিবর্তনে তা পুঁজিবাদে মিলিয়ে যায়। জার আমলের মতই কিছুটা ভিন্ন ফরম্যাটে নিপীড়ন-নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে সাধারণের উপর। এমনকি বিপ্লবের অন্যতম সহযোদ্ধা রেড আর্মির প্রতিষ্ঠাতা লিও ট্রটস্কিকে প্রাণের ভয়ে দেশ ছাড়তে হয়। স্ট্যালিনের লেলিয়ে দেয়া রাষ্ট্রীয় বাহিনীর খুনোখুনি আর খাদ্যাভাবে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। লেখক জর্জ অরওয়েল তার বইয়ে বিপ্লবী নেতাদের রূপক অর্থে শূকর শ্রেণী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। মানুষ/মালিকের বিরুদ্ধে(জার শাসক) হওয়া বিপ্লবের কিছু বছর পর পশুখামারের(সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন) ক্ষমতায় বসে শূকর নেপোলিয়ন(স্ট্যালিন)। পশুরা এই বিপ্লবে যোগ দিয়েছিল কারন তাদের মনে হয়েছে ”মানুষ একমাত্র প্রাণী যে খালি নিতে জানে,দিতে জানেনা বা উৎপাদন করেনা। সে দুধ দেয়না,ডিম পাড়েনা। অথচ সে পশুদের খাটায়,ঠিকমত খাবারও দেয়না!” শূকরের নেতৃত্বে খামার দখল করে পশুবাদ (সমাজতন্ত্র) কায়েম করে তারা বানিয়েছিল সপ্তবিধিমালা(সংবিধান)। কিন্তু পশুরা আশ্চর্য হয়ে দেখলো ধীরে ধীরে সেই বিধিমালা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। মানুষের গৃহে বসবাস বা বিছানায় শোয়া নিষিদ্ধ করা হলেও একটা সময় পর শূকররা মানুষের বিছানায় ঘুমাতে থাকলো। ‘কোন পশু মানুষের শয্যায় ঘুমাবেনা’ এর জায়গায় হঠাৎই লেখা হয়ে গেলো ‘চাদর বিছানো মনুষ্য শয্যায় ঘুমানো যাবেনা’! ‘কোন পশুই অন্য পশুকে হত্যা করবেনা’র জায়গায় স্থান পেলো ‘কারন ছাড়া কোন পশু অন্য পশুকে হত্যা করবেনা। এভাবে একের পর এক বিপ্লব পরবর্তী আইন পাল্টাতে থাকে আর পশুরা প্রাণের ভয়ে সব মেনে নিতে থাকে। এসবের মধ্যেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে আরেক শূকর স্নোবলের (ট্রটস্কি) সাথে নেপোলিয়নের শুরু হয় মতভেদ। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে স্নোবল টিকতে পারেনি,তাকে খামারছাড়া করা হয়। প্রতিদ্বন্দ্বীহীন বিপ্লবী নেতা পরিণত হলেন স্বৈরশাসকে। সামান্য প্রতিবাদে প্রাণ যেতো থাকলো পশুদের। নেতা মত্ত হয়ে পড়লেন ভোগ বিলাসে। যেই মানুষের সাথে সম্পর্ক বা ব্যবসা-বাণিজ্য নিষিদ্ধ ছিল সপ্তবিধিমালায়,তাদের সাথে শুরু হলো ব্যবসা,লেনদেন। পশুখামার বিলীন হয়ে গেলো আগের মতই পুঁজিবাদে। বইটি পড়ে আমার মনে হয়েছে এখানে মেজর চরিত্র দ্বারা লেখক আসলে লেলিনকেই বুঝিয়েছেন। রুশ বিপ্লবের ঘটনা মোটামুটি সবাই জানেন কিন্তু বিপ্লবের বাস্তবতা কতটা ব্যাঙ্গাত্মকভাবে তুলে ধরা সম্ভব ,পুরো বইটি পড়লেই কেবল তা টের পাবেন।তাই যারা বইটি পড়বেন কি না ভাবছেন তাদের অনুরোধ রইল একবার বইটি পড়ে দেখুন, অাশা করি ভালোই লাগবে।