User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
This book has Correct Historical Information . For gather genuine information prefer this book for everyone
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
fine
Was this review helpful to you?
or
ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে "মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর : কথোপকথন" বইটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন মনে হয়েছে। তবে হ্যা যুদ্ধ পরবর্তি যুগ এখনো শেষ হয়নি। বর্তমান অবস্থাও যুদ্ধ পরবর্তি যুগের অংশ। তাই বর্তমান তরুন সমাজের যারা দেশকে ভালোবাসে এবং দেশের জন্য কাজ করতে চায় তাদের জন্য এই বইটি একটি গুরুত্বপূর্ন বই হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর কথোপকথন by মঈদুল হাসান মুক্তিযুদ্ধের উপ-সেনাপতি একে খন্দকার, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের বিশেষ সহকারী ও সাংবাদিক মঈদুল হাসান এবং যুবশিবিরের পরিচালকের এস আর মীর্জা একত্রিত হলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের কথা বলতে। এ ত্রয়ীই মোটামুটি একই সুরে কথা বলেছেন। শেখ মুজিব কিংবা তাঁর দল আওয়ামীলীগের পাকিস্তানি আক্রমণ রোধে কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না বলেই তিনজনই দাবী করেছেন। বিশেষত, একে খন্দকার এ নিয়ে সোচ্চার ছিলেন।কেন শেখ মুজিব ২৫ শে মার্চ রাতে সরে না গিয়ে গ্রেফতার হলেন, সেই পুরনো প্রশ্নকে জীয়ন্ত করে নানা তথ্য দিয়েছেন। যা সূক্ষ্মবিচারে বিতর্কিত বটে। যুদ্ধে তাজউদ্দীনের নেতৃত্ব নিয়ে খোদ আওয়ামীলীগের মাঝেই কতশত দ্বন্দ্ব- বিবাদ ছিল তার খানিকটা নমুনা নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন তিনজনই। যুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধ পরিচালনায় কীসব বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল তার নিয়েও তাঁরা খোলামেলা বাতচিত করেছেন। তিনজনই বেশ অনালোচিত অংশে আলো ফেলবার চেষ্টা করেছেন। আবার তিনজনই সকল বিষয়ে সহমত পোষণ করাতে আলোচনার গন্ডি একমুখী মনে হচ্ছিল। তাঁরা যেসব কথা বলেছেন তা নিয়ে আরো কাজ হওয়া উচিত।বিশেষত, তথ্য 'ক্রসচেক' করাটা অপরিহার্য। তাতে হয়ত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কিছুক্ষেত্রে নতুন করে লিখতে হবে, স্বীকার করে নিতে হবে তেতো সত্য।
Was this review helpful to you?
or
lovely. তথ্যসম
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
What is written in this book, that is real True! Peoples of Bangladesh will have known about the actual scenario what happened in 1971!!
Was this review helpful to you?
or
‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপরঃ কথোপকথন’ তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধার রচিত গ্রন্থ। যারা স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন এবং মাঠ পর্যায়ে যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ কিন্তু এর বীজটা বপন হয়েছিল আরও অনেক অনেক আগে। ৪৭ শে বিতর্কিত দেশভাগ। এরপর থেকে ক্রমেই বাঙালির উপর শোষণ, অত্যাচার, নিপীড়ন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’এর যুক্তফ্রন্ট, ৬৯’গন অভ্যুত্থান এভাবে নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়েই ৭১। বাঁচতে হলে লড়াই করতে হবে। স্বাধিকার পেতে হলে স্বাধীন হতে হবে। এই স্বাধীনতা অর্জন করাটা সহজ ছিল। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর অবস্থান ছিল সংঘাতময়। অভ্যন্তরীণ ঘটনাবলিরও ছিল নানামুখী স্রোত। এটা একটা ঐতিহাসিক আন্দোলন। এই আন্দোলনের সাথে সমাজের নানা পর্যায়ের, নানা পেশার মানুষ জড়িত ছিল। আরও ছিল বৈশ্বিক সংঘাতময় রাজনীতি। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণটাও অনেক দুরূহ একটা কাজ। এর জন্য পর্যপ্ত গবেষণা অনুসন্ধান ও অংশগ্রহণকারী, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান দরকার। তিন সক্রিয় অংশগ্রহণকারীর আলোচনা , পর্যালোচনা নিয়ে এই গ্রন্থ রচিত। এদের মধ্যে একে খন্দকার গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি রণাঙ্গন এবং নীতিনির্ধারনী উভয় জায়গাতেই কাজ করেছেন। এই বই থেকে অনেক কিছু নতুনভাবে জানা যায়। রাজনৈতিক উপরমহল জানতে যে পাকিস্তানী বাহিনী ঢাকা আক্রমণ করবে, তবুও তাঁরা কোন প্রস্তুতি নিয়ে। আমাদের সেনাকর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতাদের জানানোর পর, তাদেরকেও কোন ইন্সট্রাকশন দেয়া হয়নি। পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে হয়তো এতো বিশাল পরিমাণ ক্ষতি হতো না। জানার পরেও কেন প্রস্তুতি নেয়া হয়নি, সেখানে প্রশ্ন থেকে যায়। তারপরও বাঙালি সেনারা নিজ উদ্যেগে সাথে সাথেই যে অল্প অস্র নিয়ে যে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে , তা এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এরকম নানা প্রশ্ন, উত্তর, আলোচনা, পর্যালোচনা নিয়েই এই বই। এক বসাতেই পড়ে ফেলার মত।
Was this review helpful to you?
or
তাঁরা তিনজনই স্বনামখ্যাত এবং একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। এ কে খন্দকার ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি, মঈদুল হাসান অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং এস আর মীর্জা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত যুবশিবিরের মহাপরিচালক। তাঁরা যখন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলেন কিংবা সে সম্পর্কে নিজস্ব মতামত তুলে ধরেন, তখন তা গুরুত্বের সঙ্গেই নিতে হয়। তাঁরা কেবল ইতিহাসের কথক নন, নির্মাতাও। বিবরণের চেয়ে অন্তরালের ঘটনা পাঠকের মধ্যে অনেক বেশি আগ্রহ সৃষ্টি করে, প্রসারিত করে তাঁদের ভাবনার দিগন্তকে। এ প্রেক্ষাপটে মক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর: কথোপকথন বইটি ব্যাপক আলোচনার দাবি রাখে। এতে এমন কিছু আছে, যা আগে কেউ বলেননি, আবার এমন কিছু বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে, যা বিতর্কও সৃষ্টি করতে পারে। ইতিহাসবিদ সালাহউদ্দীন আহমদ বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘যখন কোনো ঐতিহাসিক আন্দোলন বা রূপান্তরের সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক মানুষ যুক্ত হয়ে পড়েন, তখন তাঁদের সাক্ষ্য ও প্রতিবেদনাদি সংগ্রহ করা যথার্থ ইতিহাস রচনার জন্য প্রয়োজনীয় পন্থা হিসেবে স্বীকৃত।’ তাঁর ভূমিকা থেকে আমরা আরও জানতে পারি, যথার্থ ইতিহাস লেখার দায় থেকেই মুক্তিযুদ্ধ গবেষণাকেন্দ্র প্রায় ৫০০ প্রত্যক্ষদর্শী ও অংশগ্রহণকারীর মৌখিক বিবরণ সংগ্রহ করে, যা ২২ খণ্ডে প্রায় পাঁচ হাজার পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর: কথোপকথন সেই প্রকল্পেরই অংশ। বইটির অধ্যায়গুলো বিন্যস্ত হয়েছে এভাবে—অসহযোগ আন্দোলন প্রতিরোধ যুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণা, সশস্ত্র লড়াই, সেনাবাহিনীর মনস্তত্ত্ব, পাকিস্তান থেকে ফিরে আসা সেনাসদস্য প্রসঙ্গ, গেরিলা তত্পরতা, যৌথ সামরিক নেতৃত্ব, অন্যান্য বাহিনী প্রসঙ্গ, যুবশিবির প্রসঙ্গ, মুজিববাহিনী ও স্বাধীনতার পরবর্তী প্রসঙ্গ। শিরোনাম দেখেই ধারণা করা যায়, মক্তিযুদ্ধের নানা দিক কথকদের আলোচনায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যথার্থ ইতিহাস এখনো লেখা হয়নি। এত কাছাকাছি সময়ে সেটি হয়তো সম্ভবও নয়। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যাঁরা সরাসরি যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বর্ণনায় ব্যক্তিগত ভাবাবেগ ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি পক্ষপাত থাকা অস্বাভাবিক নয়। এ বইয়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে এখানে তিন কথকই সাহস করে অনেক অপ্রিয় সত্য বলেছেন। ব্যক্তি বা সংগঠনের ত্রুটির পাশাপাশি সার্বিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের দুর্বলতাগুলোও তুলে ধরেছেন। তাঁদের কথোপকথন থেকে আমরা এও জানতে পারি যে একাত্তরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাংলাদেশে বাড়তি সেনা ও অস্ত্র আনা সত্ত্বেও রাজনৈতিক নেতৃত্ব সামরিক প্রস্তুতি নেয়নি, রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে। দ্বিতীয়ত, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রেও ছিল সীমাহীন সমন্বয়হীনতা। মুজিবনগর সরকারে নেতৃত্বের কোন্দলের কথাও সবার জানা। কিন্তু প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানীর স্বেচ্ছাচার যে মুক্তিযুদ্ধকে গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছিল সেই সত্যটিও উঠে এসেছে তাঁদের বর্ণনায়। ওসমানী নিজে যুদ্ধক্ষেত্রে যাননি, আবার ব্রিগেড গঠন নিয়েও তুঘলকি কাণ্ড করেছেন। তাঁর প্রতি সেক্টর অধিনায়কদের যেমন আস্থা ছিল না, তেমনি তিনিও তাঁদের বিশ্বাস করতেন না। এ ব্যাপারে এস আর মীর্জার সাক্ষ্য হচ্ছে, ‘আসলে সদর দপ্তরের যুদ্ধ পরিকল্পনা বলতে তেমন কিছু ছিল না। বরং কর্নেল ওসমানীর ছিল খামখেয়ালিপূর্ণ পদক্ষেপ।’ সব মিলিয়ে তিন কথক যে তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণ হাজির করেছেন, তাতে এ উপসংহারে আসা অসম্ভব নয় যে স্বাধীনতা-পরবর্তী রাজনৈতিক হানাহানির সূচনা হয়েছিল একাত্তরেই। সে সময় সব শ্রেণী-পেশার মানুষ মুক্তিযুদ্ধকে অন্তরে ধারণ করলেও সবাই সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেননি দলীয় ও উপদলীয় কোন্দলের কারণে। এ কোন্দল শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্বে সীমিত ছিল না, ছড়িয়ে পড়েছিল সামরিক অধিনায়কদের মধ্যেও। মুজিবনগর সরকারের প্রতি আওয়ামী লীগের তরুণ অংশের অনাস্থা কিংবা সেক্টর অধিনায়কদের মধ্যকার বিরোধের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া অব্যাহত ছিল স্বাধীনতার পরও। রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের অধিকাংশই জাতীয় স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তির কৃতিত্ব জাহির করতে অধিক সক্রিয় ছিলেন। একজন তাজউদ্দীন আহমদের পক্ষে সব কিছু সামাল দেওয়া ছিল প্রায় অসম্ভব। তার পরও বলব, অসাধারণ প্রজ্ঞা ও অসীম ধৈর্যের সঙ্গে একের পর এক সংকট মোকাবিলা করে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সফল পরিণতির দিকে নিয়ে গেছেন। এ ক্ষেত্রে তাজউদ্দীন আহমদ সর্বোতভাবে সহায়তা পেয়েছেন ভারত সরকারের কাছ থেকে। তবে এ সহায়তার পেছনেও যে উদ্দেশ্য ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ প্রসঙ্গে এ কে খন্দকারের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য, ‘আসলে মুজিব বাহিনী বাংলাদেশ সরকারের বা বাংলাদেশ বাহিনীর নেতৃত্বের আওতায় আসুক, এটা বোধ হয় ভারত সরকার চায়নি তাদের কৌশলগত কারণেই। মুজিব বাহিনী চলমান যুদ্ধের বিষয়ে যতটা না আগ্রহী, তার চেয়ে বেশি আগ্রহী বা তত্পর ছিল দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের করণীয় বা ভূমিকা নিয়ে।’ এত দ্বন্দ্ব-দুর্বলতা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধ সফল হলো কীভাবে? এ প্রশ্নের জবাব রয়েছে মঈদুল হাসানের বক্তব্যে, ‘মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা দেশের ভেতর পাকিস্তানিদের প্রায় অচল করে ফেলেছিল। এটা হয়েছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের, যারা অধিকৃত এলাকায় ছিল, তাদের সহযোগিতার ফলেই।’ অর্থাত্ মুক্তিযুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষের ভূমিকাই হয়ে উঠেছিল অসাধারণ। অন্যদিকে রাজনৈতিক নেতা ও সামরিক অধিনায়কেরা যে প্রায় প্রতি ক্ষেত্রে সংকীর্ণতা ও স্বার্থবাদিতার পরিচয় দিয়েছেন তারই অসংখ্য প্রমাণ আছে এ বইয়ে। এসব ইতিবাচক বিষয় সত্ত্বেও বইটির দুর্বলতার দিক হলো স্বাধীনতার প্রধান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানেব অনুপস্থিতি। তিনি শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও তাঁর নামেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিতে তিনি কিছু করেননি এ কথাও ঠিক নয়। ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও মঈদুল হাসান সে কথা স্বীকার করেছেন। তার সাক্ষ্য এখানে তুলে ধরছি, ১৯৬৯ সালে লন্ডনে শেখ মুজিব-ইন্ধিরা গান্ধী বৈঠকে শেখ মুজিব বলেছিলেন, ‘আমরা জানি, নির্বাচনে বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতব। কিন্তু ওরা আমাদের ক্ষমতা দেবে না। ঠিক ১৯৫৪ সালের মতো হবে। আবার কেন্দ্রীয় শাসন জারি করবে। ধরপাকড় করবে। কিন্তু এবার আমি তা হতে দেব না। আমার কিছু ছেলেকে তোমাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে হবেই, আর একটা বেতার যন্ত্র দিতে হবে, যেখান থেকে তারা যাতে প্রচার করতে পারে যে বাংলাদেশকে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।’ অতএব শেখ মুজিব কেবল গণসংগ্রাম, সত্তরের নির্বাচন ও অসহযোগ আন্দোলনেরই কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন না, মুক্তিযুদ্ধেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন কোটি কোটি মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণা ও ভরসাস্থল। ইতিহাসকে আমরা যেভাবেই ব্যাখ্যা করি না, বদলাতে পারব না। অনেক সময় ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে ঘটনা ভুলভাবে উত্থাপিত হয়; সত্য হারিয়ে যায়। এই আশঙ্কা সত্ত্বেও ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর: কথোপকথন বইটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি সত্যানুসন্ধানের প্রয়াসও বটে।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর: কথোপকথন। লেখকঃ এ কে খন্দকার , মঈনুল হাসান , এস আর মীর্জা। পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৪৮ প্রচ্ছদ শিল্পীঃ কাইয়ুম চৌধুরী। প্রকাশকঃ প্রথমা প্রকাশন। মুক্তিযুদ্ধ। বাঙ্গালির স্বাধিকার আদায়ের সোপান। কিন্তু সে অধিকার আদায় একেবারেই কিন্তু হাতের মুঠোয় এসে ধরা দেয় নি। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের পর, কণ্টকাকীর্ণ বন্ধুর পথ পেরিয়ে তবেই আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা পরম আরাধ্য স্বাধীনতার দেখা পেয়েছি। ২৬শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর- এই ৮ মাস ২০ দিনের ঘটনাপ্রবাহ কেমন ছিল? মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি, ঘুমন্ত নিরীহ বাঙ্গালীর উপর পাকিস্তানী পশ্চিমা সেনাবাহিনীর পাশবিক হামলা, গনহত্যা, অতঃপর সেনাবাহিনী ও ইপিআর এর বাঙালি অফিসার, সৈন্য, পুলিশ, আনসার, সর্বোপরি সর্বস্তরের জনগনের প্রতিরোধ, প্রতি-আক্রমনের বীরত্বগাঁথা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন, নেতৃত্ব, গেরিলাযুদ্ধের সূচনা, লক্ষ লক্ষ নারী-পুরুষের আত্মত্যাগ, এবং সবশেষে বিজয়- শুধুমাত্র এইসকল ঘটনাবলীই কি মুক্তিযুদ্ধের আলোচ্য বিষয়? মুক্তিযুদ্ধের পূর্বের ঘটনাবলীর নানামুখী স্রোত, স্বাধীনতার ঘোষণা, তৎকালীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংঘাতময় অবস্থান, রাজনৈতিক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, বিভিন্ন আঞ্চলিক বাহিনীর ভূমিকা, মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানীর স্বেচ্ছাচারিতার ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর কৃতিত্ব,ভারতীয় বাহিনীর কার্যক্রম, এবং সর্বোপরি পশ্চিমা বাহিনীর আত্মসমর্পণ- এসব কিছুও জানা দরকার। মুক্তিযুদ্ধের এসব সংঘাতময় ঘটনাপ্রবাহ নিয়েই মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর কথোপকথন বইটি রচিত। মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান সেনাপতি এ কে খন্দকার, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মঈদুল হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য গঠিত যুব শিবিরের মহাপরিচালক এস আর মীর্জা কথপকথনের মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও অভিমত সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা দিয়েছেন বইটিতে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাঁদের মতামতের গুরুত্ব আছে বইকি। মুক্তিযুদ্ধের পরের ঘটনাপ্রবাহও বর্ণীত হয়েছে বইটিতে। তবে সংক্ষিপ্ত আকারে। কারণ যুদ্ধপরবর্তী যুগ এখন শেষ হয়নি। বর্তমান প্রজন্মও এ যুগের একটা অংশ। তারাই বর্তমানে এর বাহক। তাই বইটি তাদের জন্য উপকারী হবে বলেই আশা করি।