User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সংক্ষিপ্ত কবি পরিচিতি --------------- নিবদ্ধতার ডাকে সাড়া না দিতে পারা নাগরিক দৃষ্টিভঙ্গীসম্পন্ন এক তারুণ্যের নাম তারেক সালাহ্উদ্দিন -- নিরন্তর বহুমুখীতার দিকে ছুটে চলাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন তিনি। চিকিৎসাবিদ্যায় শিক্ষা লাভ করে পুরোপুরি ডুব দিয়েছেন উন্নয়ন কর্মকান্ড, স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখালেখি ও সাংবাদিকতা, তথ্যপ্রযুক্তি, আলোকচিত্রসহ আরো নানা দিকে। সেসব নানা দিকের একটি হচ্ছে কাব্যচর্চা, যার প্রথম প্রয়াস ও প্রকাশ -- ‘অপার্থিব জোছনার কাব্য’। জীবনের ঊর্ধ্বগতিতে খুব বেশী প্রতিযোগীতা নেই, বরঞ্চ বিভিন্নমুখী পদচারণাতেই ব্যস্ত সময় কাটে গোধূলী তারুণ্যের। পাঠকের ভালোবাসা সে প্রয়াসকে অব্যহত রাখবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস। তারেক সালাহ্উদ্দিন দূরলাপনীঃ +88-017-30095592 ইমেইলঃ [email protected] ফেইসবুকঃ www.facebook.com/tareq.salahuddin ---------------------------------------------------------------------------- নিঃসঙ্গ ইথারে ভেসে থাকা এক কবি তারেক সালাহউদ্দিন এর কাব্যগ্রন্থ ‘অপার্থিব জোছনার কাব্য’ এর পর্যালোচনা ---------------------------------------------------------------------------- প্রিয় প্রমত্ত ------- অপার্থিব জোছনার কাব্য। কবি তারেক সালাহউদ্দিন এর প্রথম কাব্য প্রয়াসের নাম। কবির কাব্য প্রতিভার পরিচয় মেলে উৎসর্গ পাতা থেকেই। কবি বলছেন, “সেইসব কাছের-দূরের-অচেনা-অজানা আপনজনদের – যারা অপরিসীম ভালোবাসায় এবং কঠিন কষ্টে, ক্রমাগত ‘কবি’ করে তুলেছে...”। মনে হয় কবি আবুল হাসানের কোন দুরন্ত কাব্যের ছায়া-গীতিময়তা যেন ছড়িয়ে আছে নতুন এই কাব্য প্রতিভার উৎসর্গপত্রে। অপার্থিব জোছনার কাব্য’কে যে কোন বিচারেই বলা যায় একটি ভালোবাসার কবিতাসমগ্র। কবির বাক্যচয়নে সাহসী পদক্ষেপ আজকের পাঠককুলকে নিঃসন্দেহে প্রণোদিত করবে। উন্মক্ত প্রেমের আহবান; শরীরি সংস্পর্শের আকুলতা পাওয়া যায় কবির ‘আমার বিশালতা’ কবিতায় ঠিক এভাবে, “ভালোবাসায় কার্পণ্য করিনি কোনদিন, যেমন করিনি – ভরা যৌবনা কেউ যৌবনের পানশীতে ডাক দিলে।” অন্যদিকে বেশিরভাগ কবিতায় তিনি হয়েছেন পরিশীলতার অবয়ব, ভালোবাসাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন যেন আধ্যাত্মিক অনুরক্ততায়। “কিছু দূরত্ব অনতিক্রান্ত থাক, তারও কিছু দূরে তুমি থাকো, আর সে সুদূরে থাক আমার ভালোবাসা।” কবি তারেক সালাহউদ্দিন এর কবিতায় ভাষার ব্যবহার অনেক প্রতিষ্ঠিত কবির জন্যও ঈর্ষনীয় হতে পারে। অত্যন্ত সহজ-সরল ভাষায় জীবনের অনেক জটিল বিষয়কে তিনি তুলে ধরেছেন সাবলীলভাবে। তবে তার কবিতার মধ্যে স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে কবির জীবনবোধ সম্পর্কে হতাশা কিংবা মানব-মানবীর সম্পর্কের মধ্যে নিষিদ্ধ কামনা বাসনার দ্বিধান্বিত অধ্যায়সমূহ। ‘তবু কি বন্ধু হবে?’ কবিতায় কবি আহ্বান করছেন, “কোন দায়িত্বশীল বন্ধনে আবদ্ধ হবার ক্ষমতা নেই আমার; কিংবা থাকলেও তার কথা ভাবছিনা তোমার জন্যে – মেয়ে – তবু কি বন্ধু হবে?” তারেক সালাহউদ্দিন তার কবিতার মধ্যে কি কোন উপন্যাস লিখতে চেয়েছেন? একটি সফল কবিতার বইয়ের মতই তা মনে হয়নি। মনে হয়েছে অনেক কবিতার সংকলনে একটি ছোট গল্প যেখানে কবি পদে পদে প্রেমের ব্যকুলতায় ভাসছেন, কবি চাইছেন তার দ্বিধান্বিত জীবনে আবির্ভাব ঘটুক কোন অপ্সরী; রমনীর। অন্যদিকে এটাও মনে হয়েছে কবি তার প্রেমিকাকে দূর থেকেই ভালোবাসেন। তিনি চান কিছু দূরত্ব অনতিক্রান্ত থাক; সেই দূরত্বের আপেক্ষিকতায় পূর্ণিমা রাতে তিনি ভাববেন তাদের ভালোবাসার কথা, নিরব নিথর হবেন মৌণতার আকুল আবেশে। কবিতার ভাঁজে ভাঁজে একাকীত্বের গন্ধ পাওয়া যায়। কবিতাগুলোকে মনে হয়েছে কবির জীবনেরই প্রতিচ্ছবি; কিংবা দীর্ঘশ্বাসের প্রতিবিম্ব। যদিও বইয়ের বিভিন্ন অংশে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার চেষ্টা এবং প্রেমকে প্রেমিক থেকে আলাদা করবার সযত্ন প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু পন্ডিত মাত্রই উপলব্ধি করবেন বইটির সর্বত্র প্রতিফলিত হয়েছে অমোঘ এক বাণী – মানুষ মূলত একা। প্রেম, ভালোবাসা, উন্মক্ততা, নিঃসঙ্গতার সাথে সাথে হতাশা কিংবা বন্ধুত্বের ব্যাকুলতাও এই নতুন কবির বইয়ে পরিপূর্ণ সংযোজন। নিচের পঙক্তিগুলোতে স্পষ্ট সেই অনুভূতি। “আজ বড্ড সংযমী! নই কি?” কিংবা “ভাগ্যে ছিল বুঝি এই ভালোবেসে আজ তাই ভালো নেই।” প্রেমের কবি তারেক সালাহউদ্দিন তার কবিতায় দর্শনতত্বেরও ছোঁয়া এনেছেন। ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ কবিতায় “একজন আমাকে প্রশ্ন করেছিল নারী কি খুব জরুরী? আমি মুচকি হেসে বলেছিলাম, সে আর বলতে! এক ক্ষুধা মেটায় অন্ন, অন্য ক্ষুধা মেটায় নারী!” অনেকে বলতে পারেন কবি এখানে জেন্ডার-সেনসিটিভ হননি কিন্তু প্রকৃত গুণীজন স্বীকার করতে বাধ্য হবেন জীবনদর্শন এর ব্যপ্তি এখানে ক্ষুধাকে ছাড়িয়ে গেছে বহুগুনে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে কবি তার নিজের প্রতি সৎ থেকেছেন। বইয়ের প্রতিটি পরতে পরতে কবির মধ্যে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের পরিষ্কার পরিস্ফুটন তা হয়তো তিনি চাইলেই আড়াল করতে পারতেন। কিন্তু হয়তো খুব যত্নের সাথেই কবি অবহেলা করেছেন তার কবিতায় মনুষ্য প্রেমের অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু সত্য উদঘাটনে। চিকিৎসক কবি উন্নয়ন কর্মকান্ডে জড়িত, সাংবাদিতাও করেন আর করেন আলোকচিত্রের আলোআঁধারির খেলা, যা তার প্রথম কাব্যগ্রন্থে পরিস্ফুট। পাঠক কোন এক বৃষ্টিভেজা দুপুরে এই বইটি হাতে নিলে নিঃসন্দেহে হারিয়ে যাবেন প্রেমের অবগাহনে। কবির পরবর্তী সংকলনের দিকে পাঠক, সমালোচকদের অনুসন্ধিৎসু চোখ থাকবে তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। বিষয়বস্তু নির্বাচনে কবি সামনের দিনগুলোতে আরো বৈচিত্র্য আনবেন, এই কামনা প্রাসঙ্গিক। কবির অগ্রযাত্রা সচল থাকুক তাঁর কবিতার মতন। “মূর্তির মতো স্থবির এত ভীতু নই, তবু ভীত; স্থির চলি, এক প্রবল অশান্ত!” প্রিয় প্রমত্তঃ সমকালীন কবি এবং সাহিত্য পর্যালোচক