User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
শারমিন আন্জুম আপুর "বহ্নিসময়" নামটাই তো যেমন আকর্ষনের তেমন আগ্ৰহের।বহ্নি অর্থ আগুন। বহ্নিসময় অর্থ আগুনের সময়। শুরুটা হয় ১৯৮৮ সালের বাংলাদেশের একটি সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে। যেখানে দাফন হয় কিছু নিগুড় সত্য। তারপর আসে ১০ মার্চ ২০২০। ঘটনার শুরু এখান থেকেই ।পরপর তিনটি মার্ডার, নিখুঁত পরিকল্পনা,কোন ক্লু নেই। ধেয়ে আসে কোরোনা,কোরোনা কালীন জটিলতা। মূলত প্যান্ডামিকের এই সময়টাই ধারণ করা হয়েছে। একের পর এক মৃত্যু, কর্মহীন মানুষ,অভাব, জীবন যেন একেবারে স্থির।অপরদিকে প্রযুক্তি, প্রযুক্তির অগ্ৰগতি যেমন আমাদের জীবনযাত্রা সহজ করেছে ঠিক তেমনি জিম্মি করে চলেছে আমাদের সকল ইনফরমেশন। যার অপকারিতা নিজে না চিপায় পড়লে আসলে জানলেও মানতে চাই না আমরা। ঘটনার শেষ হয় ২৩ এপ্রিল ২০২৩।এই স্বল্প সময়ের প্রতিটিক্ষণ লেখক কাজে লাগিয়েছে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। মনে হয়েছে সেই সমস্ত দৃশ্য আমার চোখের সামনেই ঘটছে। বইটির প্রতিটি পাতা আমার কাছে ভীষণ ভীষণ দামী মনে হয়েছে। এতোটা স্যাটিসফাই আমি এর আগে কোন থ্রিলার পড়ে হয়নি। বহ্নিসময় আমার পড়া সবচেয়ে বেস্ট বেস্ট বেস্ট একটি থ্রিলার বই। বইটিতে লেখক ইচ্ছে মতো পাঠককে নাচিয়েছে।একটা সময় পর মনে হয়েছে,আরে এটা আবার এমন কি ? আমি জানতামই এটা হবে কিন্তু বিশ্বাস করুন আমার কনফিডেন্স লেবেল একদম উড়ায় দিছে লেখক। কেননা আমি ঠিক ততটুকুই ধরতে পেরেছি ঠিক যতটুকু লেখক চেয়েছেন।আর যেটা ধরতে পারিনি সেটা যখন জেনেছি তখন পুরাই হা হয়ে গেছি কেননা ওটাও আমি ভুলভাল গেস করেছি। ৩৮৪ পেজের থ্রিলার বইয়ের যদি ৫০ পেজেই আপনি কাহিনী বুঝে যান তাহলে সেটা কোনভাবেই থ্রিলার হতে পারে না। তারচেয়েও বড় কথা এটাতে কোন মজা পাওয়া যায় না।যারা অতিরিক্ত সাসপেন্স পছন্দ করেন, যাদের ধৈর্য্য আছে বইটা তারা পড়বেন। খুব ভালো একটা সময় কাটবে আশাকরি। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই। খুবই ভালো লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
ভীষণ সুন্দর! এককথায় বলতে হলে বলি, বহ্নি সময় যে মিস করছে সে বিসাল কিছু মিস করছে। আমারই আফসোস হচ্ছে এতো দিন পড়ে কেনো কিনলাম।
Was this review helpful to you?
or
আমার দৃষ্টিতে বহ্নিসময়ঃ “ রুটি - মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা - যদি তেমন বই হয়। ” কিংবদন্তি পারস্য কবি ওমর খৈয়ামের রুবাই এর অংশ বিশেষ প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর নিজস্ব মতবাদে এভাবে উঠে এসেছে। কথাগুলোর সত্যতা আমি আবারও উপলব্ধি করতে পারলাম সৃজনশীল লেখিকা শারমিন আঞ্জুমের বহ্নিসময় বইটা পড়ে। বিশাল শব্দের সাগর সেঁচে, তার থেকে মনি মুক্তা নিয়ে তিনি তার গোটা সাহিত্য কর্মটাকে শুরু থেকে শেষ অবধি যেন সমৃদ্ধ করে গেছেন অত্যন্ত সুনিপুণ ভাবে। বইটা যতই পড়ছিলাম কাহিনির ব্যাপ্তিতে বার বার বুঝা যাচ্ছিল এর পেছনে একজন সুদক্ষ কারিগরের অনেক গবেষণা আর পরিশ্রম মিশে আছে। হুট করে মনে হল আর লিখে ফেললাম এমন কোন গল্প এটা না। কাহিনি গুলো লেখকের নিজস্ব দক্ষতায় অন্য মাত্রা পেয়েছে। কিন্তু এর সাথে সাথে সরবরাহ করা তথ্য গুলো একদম সত্যিকারের ছিল। যা গল্পটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। বইটা পড়ে আমি যে নির্মল আনন্দে ভেসেছি চলুন তবে আপনাদেরও আজ তার সম্পর্কে কিছুটা জানান দিয়ে যাই। ? প্রচ্ছদ কথনঃ প্রচ্ছদ হচ্ছে একটি লেখার অন্তর্গত ভাষা। প্রচ্ছদের সাথে বইয়ের একটি আত্মিক সম্পর্ক থাকে। প্রথমে দর্শনধারী, পরে গুণ বিচারী- তাই অন্য কিছু বলার আগে বইটা হাতে নিলে প্রথমেই যা চোখে পরবে তা নিয়ে বলি। কালো খামের উপর একটি টকটকে লাল গোলাপ প্রচ্ছদের ফ্রন্টে রয়েছে। প্রচলিত আছে, প্রাচীন রোমানরা নাকি গোলাপকে "সাব রোসা" বলতো যার আক্ষরিক অর্থ "গোলাপের নীচে"। তাদের কোন মিটিংয়ের গোপনীয়তা বুঝাতে গোলাপ ঝুলিয়ে দিত। যার উল্লেখ ড্যান ব্রাউন তার ভিঞ্চি কোড বইতেও করেছেন। এছাড়াও প্রাচীন ইউরোপে যখন গুপ্ত সমিতির আমল। তাদের প্রতীকেও ছিল গোলাপ ফুলের চিহ্ন। গোলাপের বহু স্তরের পাপড়ি যেন গোপন করে রাখছে কিছু। এই অর্থ বোঝাতেই ব্যবহার করা হত। আর কালোখাম যেন কোন ভয়াল বার্তা নিয়ে এসেছে। গোপনীয় ভয়াল কোন বার্তা। এমনকি বইয়ের প্রচ্ছদের পেছনের অংশেও গল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অংশের ছাপ দেখা গেছে। বইয়ের প্রচ্ছদটিতে যেন এর লেখার অন্তর্গত ভাষা প্রকাশ পাচ্ছিল। ? কাহিনী সংক্ষেপঃ ১৯৮৮ সাল, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কোন এক এলাকায় একটি শিশুর জন্মের মধ্য দিয়ে কাহিনির সূত্রপাত হয়। যেকোন মায়েরই প্রথম সন্তানের অস্তিত্বের আনন্দ এতোটাই প্রশান্তি দায়ক হয়, যে হৃদয় ভরে গিয়ে সব বেদনারা যেন স্থিরতায় মুছে যায়। তবে কেন সে আনন্দের দেখা পেয়েও নীলুফার সেদিন খুশী হতে পারেনি? জীবনের ঠিক কোন ভুলটার কারণে সে সারা জীবন অন্তর্দহনে দগ্ধ হয়ে গেছে সব সময়? মানুষের জীবনে অশুভের প্রবেশ হয় ভুল পদক্ষেপে। তবে দুরবিন পেইজের ওনারদের জীবনে ঠিক কোন পদক্ষেপ টা এমন ভুল ছিল? একে একে যার মূল্য জীবন দিয়ে চুকাতে হচ্ছে তাদের? পরবর্তী টার্গেট তবে কে? পর পর পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্যের মৃত্যুতে তালুকদার বাড়ির সদস্যরা শোকে স্তব্ধ। বাবা চাচার মৃত্যুতে টালমাটাল বংশের একমাত্র উত্তরাধিকারী, স্বেচ্ছাচারী আবরার তালুকদার। হাতছনি দিয়ে ডাকা সম্ভাবনাময় জীবনে প্রবেশের নিমিত্তে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রিতে সে কি সফল হতে পারবে? ফিরে যেতে পারবে কি সে, সব পিছুটান অস্বীকার করে কাংখিত নির্ভার জীবনে? পুরুষোত্তম হয়ে উঠার পথটা কি তার জন্য সহজ হবে? বোনের না হওয়া শ্বশুরালয়ে কোন এক অজানা উদ্দেশ্যে তিলোত্তমার আগমন ঘটে। খোঁজ করছে এক রহস্যময় তানপুরার, কেন? কোন অদৃশ্য অধিকার বোধ তমার বাড়ি ফেরা আটকে দিল? শেষ পর্যন্ত কেন তমা আর ফিরে যেতে পারে না? কারণগুলো কি শুধু মানুষ্য সৃষ্ট নাকি প্রকৃতিও চায় না ওর ফেরাটা? চারদিকে সংকটকালীন সময়ের আগমনের ফিসফাস চলছে। বিলেতি পাসপোর্ট ধারী সৌম্য দর্শন এক যুবক এই সময়ে ঠিক কোন কারণে খুলনায় আসে? কাকে খুঁজে ফিরছে আতিফ? তালুকদার বাড়িকেই কেন সে থাকার জন্য উপযুক্ত মনে করলো? এক এর পর এক মিস্ট্রি সলভ করে যাচ্ছে পুলিশের এক বড় সাহেব! কেন তাকে পড়ে এমনি কি এখন তাকে নিয়ে লিখতে গিয়েও মুচকি হেসে পুলক অনুভব করছি? চমকটা তোলা থাকলো দেখবেন তো বইটা পড়ে আমার মতো আপনারও একই ভাবে মনটা দ্রবীভূত হয় কিনা? চোখ কান খোলা রেখে পড়বেন। বিশাল কলেবরে বেস্টিত এই গল্পের একটা চরিত্রও রহস্যের বাইরে নেই। কে, কখন, কোন দিক দিয়ে, কোন অঘটন ঘটাবে বিশ্বাস, নেই! এবং গল্পের শেষ অবধি বড় চমকের জন্য প্রস্তুত থাকবেন। ? অনুভূতির ব্যবচ্ছেদঃ ক্লাসিক সাহিত্য থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের চিরায়ত সব সাহিত্য পর্যালোচনা করলে যে-বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে তা হলো, মহৎ সব সাহিত্যকর্ম রচিত হয়েছে লেখকের এক ধরনের দায়বদ্ধতা থেকে। যেখানে প্রধান হয়ে উঠেছে দেশ, মানুষ, প্রকৃতি, সামাজিক অসংগতি ও ধর্ম। বাংলা ভাষার কোনো মৌলিক কবি-সাহিত্যিক কখনোই বিচ্যুত হননি তাঁদের মূল ও শিকড় থেকে। এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে, নিজের দায়বদ্ধতার জানান দিতেই যেন শারমিন আঞ্জুম তার এক একটা সাহিত্যকর্ম রচনা করে যাচ্ছেন। স্বদেশ, স্বজাতি, স্ব-ধর্ম, স্ব-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের চিত্র সহ সামাজিক ও রাজনৈতিক অসংগতির চিত্র বহ্নিসময়ে লেখিকা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। পুরো উপন্যাসটি সামাজিকতার মোড়কে জড়ানো। যেটা মূলত লেখিকার তৃতীয় স্লো বার্নার মাল্টি ডাইমেনশনাল সাসপেন্স স্টোরি। গল্পটা পড়ার সময় আমিও তাই স্লো স্টিডি এন্ড উইন দ্য রেস, এই নীতিতে আমার পড়ার গতি স্লো করে পড়েছি। প্রতিদিন তিন থেকে চার পৃষ্ঠা করে বইটা পড়া শুরু করলাম। এবং শেষে একটা চমৎকার সমাপ্তির মধ্য দিয়ে ভালো লাগার যে আবেশটা পাই, তার রেশ যেন এখনও কাটছে না। মুগ্ধ হয়েছি, আবেগ তাড়িত হয়েছি, গল্পে ছড়ানো পাজল গুলো নিয়ে মিস্ট্রি সলভ্ করতে হয়েছি উদ্বুদ্ধ। রোমান্টিক আবহে যেমন পুলকিত হয়েছি তেমনি অনাকাঙ্ক্ষিত টুইস্টগুলো উপভোগ করেছি। ◾ শুরু থেকে শেষ অবধি টিকে থাকা মুগ্ধতার মূলে যে প্রভাবক গুলো কাজ করেছিল, ▪️এক বহ্নিসময়ের আখ্যানঃ বেশিদিন হয়নি, ক্ষতের দাগগুলো এখনো তার নির্মমতার জানান দিতে সুস্পষ্ট সাক্ষী হয়ে আছে যেন । করোনা নামক মানব সভ্যতার এক চরম দুর্যোগকালীন সময়ে সমস্ত লোকজন যখন মৃত্যুর ভয়ে ঘর বন্দী ছিল অস্তিত্বের মিছিলে কতশত প্রাণ থেমে গিয়েছিল সে সময়। প্রকৃতিও যেন নিরবতার গায়ে হাত রেখে হেসেছিল আর মনে মনে বলেছিল— 'এতদিনে তোমারা আমাকে যা দিয়ে এসেছ আজ তারই প্রতিদান আমি তোমাদের দিলাম।' 'আমি তোমাদের সমস্ত জীবন যাত্রাকে থামিয়ে দিলাম।' জীবনের গান গাইতে অপেক্ষমান মানুষের, সেই সময়ের আঙ্গিকেই বহ্নিসময়ের আখ্যানের মূল দৃশ্যপট মলাট বন্ধি হয়েছে। সময়ের হিসেবের ব্যাপ্তিতে চিত্রিত হয়েছে ২০২০ সালের কোভিড নাইন্টিন ফার্স্ট ওয়েভের প্রেক্ষাপট। যেটাকে মূলত থ্রিলারের সাথে পর্যাপ্ত মানবিক আবেদন সম্পন্ন গল্পও বলা যায়। বিশেষ করে কোভিডে, লকডাউনের সময়টাতে অবলা প্রাণীদের খাদ্য সংকটের দরুন যে মর্মান্তিক ব্যাপারগুলো আমরা খবরে জানতে পারছিলাম, তারই কাল্পনিক কিন্তু বাস্তবতা বোধ সম্পন্ন একটা দৃশপটের বর্ণনা এতো দূর্দান্ত ভাবে উঠে এসেছে গল্পে অসাধারণ লেগেছে। কোভিডের মতো ভয়ংকর যুদ্ধের প্রথম ওয়েভের এক দালিলিক আখ্যানের আরেক নাম বহ্নিসময়। ▪️ফোকাসে যখন জেন জিঃ জেন জি হল, প্রথম প্রকৃত ডিজিটাল নেটিভ জেনারেশন। ঠিক মিলেনিয়ালদের বিপরীত। জেন জি'র সদস্যদের অধিকাংশই স্মার্টফোনের আগের জীবন মনে করতে পারেন না। এরা স্ট্রিমিং কন্টেন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক প্রবেশ যোগ্যতার সময়ে বড় হয়েছে। তারা যেভাবে ইন্টারনেটের সাথে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা পূর্ববর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ মাধ্যমের থেকে আলাদা। বহ্নিসময়ের মূল চরিত্রের বেশির ভাগই জেন জি। এদের ফোকাস করেই লেখিকা তাদের জীবনের সমস্যা, চ্যালঞ্জ, ব্যার্থ বিপ্লবের যন্ত্রণা, দুই প্রজন্মের দ্বন্দ্ব গুলো অতন্ত্য দক্ষতার সাথে তুলে এনেছেন। টেকনোলজিস আমাদের জীবন কিভাবে ডমিনেট করছে তার সাবলীল বর্ণনা খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে কাহিনি প্রসঙ্গে ডিপ ওয়েবের কথা উঠে আসায় লেখিকার উপর পূর্বে স্থাপিত বিশ্বাস আরও যেন দৃঢ় হয়েছে। উঁনার যেকোন লেখাই মনগড়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় না। কাহিনি গুলো কাল্পনিক হলেও প্রভাবক গুলো নিক্তিতে মেপে সত্যতা যাচাই করে গল্পে আনা হয়। ▪️এডাল্টারি কন্টেন্টঃ প্রায় অধিকাংশ থ্রিলার উপন্যাসে এডাল্টারি কন্টেন্টের উপস্থিতি যেন বাধ্যতা মূলক। বহ্নিসময়ও এর ব্যাতিক্রম নয়। তবে আমার ভালো লেগেছে এর উপর শালীনতার চাদর টেনে, লেখিকা সঠিক শব্দ চয়নের মাধ্যমে লেখায় যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তার জন্য। ▪️চরিত্র কথনঃ গল্পের প্রয়োজনে বিশাল কলেবরে বেষ্টিত সম্পূর্ণ উপন্যাসের কোন চরিত্রকে অনাহূত মনে হয় নি। কয়েকটা প্রধান চরিত্র নিয়ে গল্পটা এগিয়েছে। যাদের প্রত্যেকের আবার নিজের নিজের গল্প আছে। প্রতিটা চরিত্রই সাজানো হয়েছে সম-সাময়িক পৃথিবীর চেনা মানুষদের নিয়ে ; সবচেয়ে ভালো লেগেছে নায়কের চরিত্রটাকে অতি রঞ্জিত করে নিপুণ- নিখুঁত ভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। মূলত এই গল্পের নায়ক - নায়িকা থেকে শুরু করে কেউই ভুলের উর্ধ্বে নয়। এমন ত্রুটি সম্পন্ন বাস্তবতার নিরিখেই গল্পে সাজানো প্রতিটা ক্যারেক্টারের বিল্ডাপে গল্পটাকে আমাদের গল্পই মনে হচ্ছিল যেন। এই ত্রুটিযুক্ত মানুষ গুলোর জীবনে আসা এক বহ্নিসময়ের গল্প এটা যেখানে তারা লড়তে শেখে। ▪️টুইস্ট ও রহস্যে ঘেরা আবহঃ আপনি যদি রেগুলার থ্রিলার পড়া পাঠক হয়ে থাকেন তো গল্পের অনেক রহস্যই ধরে ফেলতে পারবেন। কিন্তু লেখিকা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এর মধ্যেই এমন কিছু টুইস্ট দিয়েছেন, যা আপনাকে নিঃসন্দেহে চমকে দিবে। আমরা যারা তাঁর নিয়মিত পাঠক তাদের এটা বেশ ভালো ভাবেই জানা কিন্তু নতুনদের জন্য বলছি আঞ্জুম আপুর গল্পের এক লাইন ও বাদ দিয়ে পড়ার কোন অবকাশ নেই। গল্পের শেষ প্যারার শেষ লাইন অবধি চমক থাকে। ? পরিশেষে, গল্পের শেষাংশের টুইস্ট গুলো খুব ভালো লেগেছে। এই গোটা উপন্যাসটাই বেশ উপভোগ্য ছিল আমার জন্য। সম্পাদনার ঘাটতিও তেমন চোখে পড়েনি কয়েকটা ছাপার ভুল ছাড়া। কালোখামে একটা চ্যালেঞ্জ এসেছে। গ্রহণ করুন আর ঘুরে আসুন খুলনা খালিশপুর শহরের ফিফটি সেন্ট্রাল ব্লকের তালুকদার বাড়ি থেকে। সমাধান করুন রহস্যের। বিনিময়ে কিছু সুন্দর মুহূর্তদের নিজের করে নিন। ▪️বই: বহ্নিসময় ▪️লেখক: শারমিন আঞ্জুম ▪️প্রকাশক: রাশেদ রানা (চলন্তিকা) ▪️প্রচ্ছদ : সাদিতউজজামান ▪️মলাট মূল্য : ৮০০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
~আসলে পৃথিবীতে প্রাপ্ত কোন অমূল্য বস্তুই শুদ্ধভাবে আসে না, তাকে শুদ্ধ করতে হয়। সোনা নিখাদ হয় আগুনে পুড়ে তেমনি পুরুষ নিখাদ হয় বহ্নিসময়ে।~ বই -বহ্নিসময়। লেখক- শারমিন আঞ্জুম। প্রকাশনী- চলন্তিকা। মুল্য-800 টাকা। জনরা- সামাজিক থ্রিলার #পাঠপ্রতিক্রিয়া: আমাদের জীবন সব সময় আমাদের অনুকূলে থাকে না।কিছু সময় থাকে ভীষণ কষ্টের,অনেকটা কঠিন। কষ্টগুলো উপড়ে ফেলা যায়না আর না তাকে চাপিয়ে রাখা যায়। সেরকমই একটা সময়ে অসুস্থতা, মনখারাপ এসব সামাল দিতে আমি বরাবরের মতো বইকেই বেছে নেই। তবে কাজ হচ্ছিলো না।রিডিং ব্ল*ক নামের অপছন্দনীয় জিনিসটা ঘ্যান ঘ্যান করছিল মাথায়। একে একে দুই-তিনটা বই হাতে নিয়েও রেখে দিয়েছি। তবে একটা কালো খাম বারবার আমাকে টানছিলো। আমি বিশ্বাস করতাম এই বইটা হাতে নিলে পৃথিবীর কোন ব্ল*কই আর কাজ করবে না। তবে আমি এই বইটা সুন্দর কোনো সময়ে পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু সবকিছু যে আমাদের প্ল্যানে হয় না।আমার এক বহ্নিসময়ে হাতে নিলাম শারমিন আঞ্জুমের সামাজিক থ্রিলার বহ্নিসময়। আমি জানিনা এটা শুধু আমার সাথেই হয় কিনা। শারমিন আঞ্জুমের লেখা পড়তে সময় অদ্ভুত এক মায়াজালে আটকে থাকি। বই হাতে নিলে আর সময় জ্ঞান থাকে না। অদ্ভুত এক জাল বিছিয়ে রাখেন লেখক যার সুতো থেকে বের হওয়া কঠিন।রমজান মাস তাই সন্ধ্যায় হাতে নিতাম বই। এমন করে তিনটা রাত আমার লেগেছে। অসুস্থতা বেশি চাপ নিতে পারতাম না। যারা শারমিন আঞ্জুম পড়ে অভ্যস্ত তারা একটা প্যার্টানের সাথে পরিচিত। টুকরো টুকরো ঘটনা লেখক ছড়িয়ে যান ধীরে ধীরে ঠিক যেন জাল বিছাচ্ছেন। অতীত-বতর্মান একটা খেলা তিনি খেলেন। এর মাধ্যমে তিনি পাঠকদের বিভ্রান্ত করে ফেলেন। ধরুন আপনি পড়তে পড়তে একটা শক্তপোক্ত ধারনা করে ফেললেন ঘটনা এমন হবে। ঠিক তখনই আপনাকে অতীতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং আপনি আবার বিভ্রান্ত হবেন এই ভেবে যে, উঁহু! ঘটনা তো এমন না! বইটা শুরু হয় নিলুফারের অতীত দিয়ে। এক অসহায় মায়ের স্বীকারোক্তি দ্বারা। যৌবনে এক ভুল যা তিনি আজীবন বয়ে বেড়িয়েছেন। ফেলে আসা নিজ শরীরের একটা অংশ যা তিনি ভুলেননি একটা মুহূর্তের জন্যেও। সেই করুন ইতিহাস পড়তে পড়তে যখন মনটা আদ্র হচ্ছিলো ঠিক তখনই এলো ধাক্কা। লুকিয়ে রাখা এই সত্য জেনে যাচ্ছে কেউ। নিচ্ছে ভ*য়া*বহ প্রস্তুতি। সফল হতে পারবে কি? নাকি অমোঘ মায়ায় আটকে যাবে? নাকি এর মধ্যেও আছে অন্য কোন রহস্য! নিলুফার এক মায়াবতী নারী। সব জায়গায় তার মায়া ছড়িয়ে রাখেন।তার মিষ্টি বুলি এবং গভীর মায়া দিয়ে সব কিছু জয় করে নেন। যৌবনের একটা ভুল তিনি বুকের মধ্যে আঁকড়ে বেঁচে আসছেন। মায়াবতী, আবেগী একটু সরল ভীষণ ভালোবাসাময় একটা চরিত্র। পুরো বইয়ে যে চরিত্র টা বেশী আকর্ষণ করেছে সে হচ্ছে আবরার। গল্পের নায়ক বা প্রধান চরিত্র। প্রথমে আপনার মনে হবে বড়লোক এবং অভিজাত পরিবারের প্রচণ্ড অহংকারী, আত্মকেন্দ্রিক একজন মানুষ। যে নিজের স্বা*র্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। কিন্তু তবুও কি দুর্দমনীয় এক আকর্ষণ তার। কি র*হ*স্যময় ব্যাক্তিত্ব। পড়বার সময় একটা কথাই মনে হচ্ছিলো র*হ*স্য গল্পের নায়ক বুঝি এমনই হয়।গল্পটা বলা যায় প্রচণ্ড স্বা*র্থ*প*র একজনের পুরুষোত্তম হয়ে উঠার গল্প। তিলোত্তমা,তমা বা কারো প্রিয়তমা। মিষ্টি চেহারার সাধারণ মেধার অসাধারণ কিছু মানবিক গুণাবলি সম্বলিত তরুণী। বুকে পরিবারের প্রতি একরাশ অভিমান জমা রেখে হাসিমুখে চলা একটা মিষ্টি মেয়ে। আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ কিন্তু তাকে দেখার চোখ ঠিকই তার অসাধারণত্ব খুঁজে নিয়েছে। তমার মাধ্যমে লেখক একটা নি*র্ম*ম সত্য চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। অনেকেই বলেন বাবা মা তার প্রতিটা সন্তানকে সমান ভালোবাসেন। এইকথাটা সবথেকে বড় ধো*কা। পৃথিবীতে সবার ভালোবাসাই ক্যা*লকু*লেটিভ। অনেকেই হয়তো এই কথাটা স্বী*কার করতে চাইবে না। তবে এটাই সত্য। আফরোজা আপাত দৃষ্টিতে দেখা যায় প্রচণ্ড ব*দ*মেজাজি একজন মহিলা। স্বামীর মৃ*ত্যু*তে যার শোক নেই। কাহিনী যখন বাড়তে থাকে আমার চোখে তখন দেখে একজন অনাথ মেয়ে। যে সর্বস্ব হারিয়ে ভীষণ ইন*সিকি*উরিটিতে ভুগছে। তার প্রতিটা পদক্ষেপ তার ইন*সিকি*উরিটির প্রমাণ। জায়ের সাথে তার দ্ব*ন্দটাও ঠিক এই কারণে। আফরোজার প্রতি আমার তেমন রাগ হয়নি বইটা পড়তে সময়। একটু করুণা একটু মায়া এবং শেষে এসে কষ্টই লেগেছে। গল্পে আবরারের পুরষোত্তম হয়ে ওঠা দেখানো হয়েছে। তবে এর আগেই একজন পুরষোত্তমকে উপস্থাপন করেছেন লেখক। ফিরোজ ভীষণ শ্রদ্ধাবোধ জাগানিয়া একটা চরিত্র। আতিফ ভীষণ রহ*স্য*ময় একটা চরিত্র। গুরুত্বপূর্ণ এবং আগ্রহ জাগানোর মতন একটা চরিত্র। তার আকর্ষণও কম নয়। মানুষকে তার প্রতি সম্মোহন করতে পারে। কোন এক বহ্নিসময়ে তালুকদার বাড়িতে তার পদার্পন। এসেছে এক দাবী নিয়ে। কি সেটা? আতিফকে নিয়ে এর বেশি বললে স্পয়লার হবে। আরো ছোটবড় অনেক চরিত্র বইটাতে দেখা গেছে। ভীষণ ভালো লেগেছে এই জন্য যে প্রতিটা চরিত্র নিজ নিজ জায়গা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। আরোপিত কোন ঘটনা বা চরিত্র ছিলো না। অতিথি চরিত্র গুলোও দারুণ মানিয়েছে ঘটনার সাথে। একসময় মনে হয়েছে এই গল্পে প্রখর কোন ইনভেস্টিগেটর অফিসার আনা হলে তাকে নিয়ে আরেকটা গল্প বলতে হতো। তার ব্যাকগ্রাউন্ড লাগতো। এবং তাকে অবশ্যই বেশী গুরুত্ব দিতে হতো। তাই লেখকের সৃষ্টি আরেক তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন নায়ককে অতিথি চরিত্রে নিয়ে আসা ছিলো তারই সূক্ষ্মবুদ্ধির প্রমান। এই জিনিস টা বেশ ভালো লেগেছে। শারমিন আঞ্জুম পড়ে অভ্যস্ত বলেই বোধহয় কোন গোঁজামিল এবার আমার লাগেনি। কিছু প্রশ্নের উত্তর পেতে দ্বিতীয়বার বইটা হাতে নিতেই হবে। কারণ কোন ঘটনাই শুধু শুধু ঘটেনি। টাইম,প্লেস এ্যান্ড এ্যাকশন। এরিস্টটলের থ্রি ইউনিটি। তিনটাই জরুরী যদিও শেক্সপিয়র মানতেন না। 384 পৃষ্ঠার একটা বই। বিশাল সংখ্যা না? কাহিনীও কিন্তু মাল্টি ডায়মেনশনাল। কিন্তু প্লেস ছিলো একটা। তালুকদার বাড়ি। এই একটা বাড়ির মধ্যেই ঘটনার ঘনঘটা। আর কিছুর জন্য না হলেও এই একটা জিনিসের জন্য লেখককে বাহ্বা দিতে হবে। একটা রহস্য গল্প। একটা বাড়িকে কেন্দ্র করে। সব ঘটছেও বাড়ির মধ্যে। কা*ল*প্রি*টও সেখানেই উপস্থিত। কিন্তু আপনি বিভ্রান্ত! হচ্ছেটা কি? করছেটা কে? রহস্যের সাথে রো*মা*ন্সের ব্লেন্ড শারমিন আঞ্জুমের মতন আর কে পারে? একদিকে খু*ন হচ্ছে। ভ*য়ং*ক*র সব খু*ন। খু*নি ঠান্ডা মাথার নিখুঁত প্ল্যানার। আপনার মাথা ধরে যাচ্ছে। ঠিক তার পর মুহূর্তে দারুণ রো*মা*ন্টিক কিছু সিন। রোমা*ন্টিকতাকে শিল্প বলবো না আভিজাত্যে নিয়ে যান লেখক। তার নায়কেরা এই দিক থেকে ইউনিক সব সময়। র*হ*স্য, রো*মান্স সবই তো এলো এবার আসি সামাজিক অংশটুকুতে। দ্বায়িত্ববোধ থেকে লেখা লেখকরা এটাই করে থাকেন। প্রতিটা যুগের লেখকই তার সময়টাকে তার লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেন। তার সময়ে ঘটে যাওয়া বিশেষ কোন ঘটনাকে। সমকালিন লেখক শারমিন আঞ্জুমও তার বাইরে নন। বলুনতো, কিছুদিন আগে আমরা কেমন একটা কঠিন সময় পার করেছিলাম না? কার কার ওই সময়ের ভ*য়া*ব*হতা মনে পড়ে? আমরা কি খুব শীঘ্রই তা ভুলে যাচ্ছি না? অথচ মৃ*ত্যু*র মিছিল বয়ে গিয়েছিল সেই সময়টাতে। আমাদের আকাশের দিকে তাকানো ছাড়া আর কোন উপায় ছিলোনা। গৃহবন্দী ছিলো পুরো পৃথিবীটা। ঠিক সেই সময়ের গল্পই বহ্নিসময়। বলুনতো কোন সময় এটা? গল্পটার আরো একটা সামাজিক ম্যাসেজ ছিলো। গল্পটা আমাদের গল্প। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসআ্যাপের এই যুগে পৃথিবীটা আমাদের হাতের মুঠোয়। আর আমরা তাদের হাতের মুঠোয়! আমরা ভুলে যাই ভাসমান এই মাধ্যমটাতে আমরা কতটা ঝুঁকির মধ্যে আছি। সাই*বার*ক্রা*ইম শব্দটার সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। হ্যা*কিং আর ব্ল্যা*ক*মে*ল ? সহজ লভ্য জিনিসের যেমন সুবিধাও থাকে ঠিক তেমন অসুবিধাও থাকে। আমরা কতটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি লেখক তা সুন্দর করে এই বইতে তুলে ধরেছেন। রয়েছে কিছু সাবধানতার কথা। এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে। যারা প্রচুর থ্রিলার পড়েন প্রথম থেকে গোঁজামিল লাগলেও একটা সময় মাথা খাটালে বা চিন্তা করলে কিছু ব্যাপার বুঝে যাবেন। আমি বুঝেছি চুলে চিরুনি করার সময় চিন্তা করতে করতে?♀️। তবে এখানে লেখকের ক্রেডিট বুঝতে পারলেও সন্দেহ যায়নি মন থেকে। কারন লেখক বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন তার সমাধানে যাওয়ার আগ পযর্ন্ত। সবশেষে বলবো দারুণ উপভোগ্য একটা বই। রহস্য গল্পের রহস্য শেষ হয়ে গেলে সেটা আর পড়তে মন চাইবে না। এখানেই শারমিন আঞ্জুম খেল দেখান তার গল্পে শুধু রহস্যই থাকে না। কিছু সামাজিক, পারিবারিক এবং রোমান্টিক আবেদন থাকে। ওই আবেদনই আপনাকে বারবার টানবে বইটা আবার হাতে নেওয়ার জন্য। এই দুর্দান্ত বইটা আমি আরেকবার পড়বো রহস্যগুলো পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য। এরপর প্রতিবার পড়বো শুধুমাত্র আবরার এবং তার প্রিয়তমার অংশগুলো উপভোগের জন্য??।
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ #বহ্নিসময়_শারমিনআঞ্জুম দুর্দান্ত প্লট, কাহিনির বিন্যাস, চরিত্র গুলোর গভীরতা, মনে দাগ কেটে যাওয়া ডায়লগ সব মিলিয়ে 'বহ্নিসময়' একটি অসাধারণ থ্রিলার যা একই সাথে তুলে এনেছে একটি অচিন্তনীয়, অভাবনীয় সময়কে। আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় এই থ্রিলার উপন্যাসের মূল চরিত্র কে? আমি বলব 'প্লট'। প্লটের বুনন, উপস্থাপন, প্লটের এক্সেকিউশন। বইয়ের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন ক্লু। ঘটনা যতো এগিয়েছে মনে হয়েছে যেন পাযল বোর্ডের পাযল সলভ করছি। এতো বড় উপন্যাস অথচ এক মুহূর্তের জন্য কোথাও ঝুলে যায়নি। শারমিন আপুর লেখনীর একটি অসাধারণ দিক হচ্ছে পাঠককে বইয়ের প্রতিটি চরিত্র এবং ঘটনার সাথে ইনভলভ করতে পারা। Simply outstanding. একটি বেস্ট সেলার বইয়ের বিশেষত্ব হচ্ছে এক পৃষ্ঠা পড়ার পর পরের পৃষ্ঠা পড়ার জন্য অধীর হয়ে থাকা। লেখিকা এ ক্ষেত্রে একশত ভাগ সফল। শারমিন আঞ্জুম আপুর প্রতিটি বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি আমার কাছে মনে হয় চরিত্র গুলোর ডায়লগ ডেলিভারি। অনন্য অসাধারণ। "পুরুষ হওয়া নিয়তি কিন্তু পুরুষোত্তম হওয়া একটা যোগ্যতা। পুরুষোত্তম সূর্যের মতো, সবাইকে শক্তি দেয়, আলো দেয়, আশ্রয় দেয় ; নিজে জ্বলে প্রয়োজনে জ্বালিয়েও দেয়। " এমন সব অসাধারণ ডায়লগের দেখা মিলে বইটিতে। বইটি শুরু হয় বাংলাদেশের একটি সীমান্তবর্তী গ্রামে, যেখানে একজন অসহায় প্রতারিত তরুণী তার অযাচিত ভয়ংকর ভুলের মাশুল দিতে সেখানে অবস্থান করছিল। যার প্রস্তরতম স্মৃতি তাকে আজন্ম বয়ে বেড়াতে হয়। শুধু স্মৃতি বয়ে বেড়ানোই না, এর ফল চড়া মূল্যে তাকে দিতে হয় নিজ পরিবার, নিজ আপনজনদের কাছেও। বইটির দ্বিতীয় চ্যাপ্টারেই দেখা যায় সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা সময় এবং পরিস্থিতি। রহস্যের শুরু হয় গ্রামের অতি সাধারণ এক গৃহ বধুর হত্যার মাধ্যমে। এরপর একে এক কয়েকটি হত্যাকাণ্ড এবং রহস্যের ধোঁয়াসা। সেই ধোঁয়াসার মাঝে যোগ হয় তানপুরা নামক রহস্য। কেন উপন্যাসের মূল চরিত্র তমা এই তানপুরা উউদ্ধারের জন্য এতো মরিয়া? জানতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। করনাকালিন সময় এর ভয়াবহতা উঠে এসেছে বইটিতে। বইটি পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে গায়ে কাটা দিয়েছে এই ভেবে যে কতোটা ভয়াবহ সময় আমরা পাড় করেছি, কতো আপনজন কে হারিয়েছি। রহস্যের পাশাপাশি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যু উঠে এসেছে। যেমন - * গুম হওয়া কোনো ব্যাক্তির পরিবারের হাহাকার * সন্তানদের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা। অনেক সময় সন্তানদের কে আমরা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে মনে করি। শুধু মেধাবীদের কেই আমরা মূল্যায়ন করি। বাকিরা সেই ভাবে আমাদের কাছে গুরুত্ব পায় না। আমরা বুঝতে পারিনা আমাদের আপাত ছোট ছোট বলা কথা, অবহেলা কচি মনে কতটা দাগ ফেলে। লেখিকা যথার্থই বলেছেন, " হাতের পাচ আংুল সমান না, কিন্তু পাচ আংুল সমান যত্ন আশা করে।" * ড্রাগসের ভয়াবহতা। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ * সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার। যেই মিডিয়া আমাদের কাছে একই সাথে আশীর্বাদ এবং ধ্বংসাত্মক। কথা হচ্ছে আমরা বেছে নেই কোনটাকে? বইয়ের প্রচ্ছদ অসাধারণ। প্রচ্ছদেই অনেক কিছু প্রকাশ করে, আবার অনেক রহস্যের বার্তা বহন করে। সবশেষে লেখিকা শারমিন আঞ্জুম আপুকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আবারও একটি জমজমাট, থ্রিলার উপহার দেওয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
বই : বহ্নিসময় লেখক: শারমিন আঞ্জুম প্রকাশনী: চলন্তিকা প্রচ্ছদ: মো: সাদিত উজ জামান মলাট মূল্য: ৮০০টাকা পৃষ্টা সংখ্যা: ৩৮৪ নামকরণ ও প্রচ্ছদ: কালো একটা খামের ওপর একটা লাল গোলাপ দেখলেই একটা রহস্য ভাব মনে হয়। প্রথম নজরে পছন্দ হয়ে যাবে সবার। আর বইয়ের ব্যাকপার্ট এর রহস্য সব বই পড়লেই জানা যাবে। বই এর নামকরণ এর কাহিনী বইটার সাথে একদম পারফেক্ট। পাঠ প্রতিক্রিয়া: জনপ্রিয় লেখক শারমিন আঞ্জুম এর সাসপেন্স থ্রিলার উপন্যাস 'বহ্নিসময়'। পাঠককে মুগ্ধ করার মতো একটি বই। টানটান উত্তেজনা এক টানা পড়ে শেষ করা যাবে, বই রেখে উঠতেই ইচ্ছে করবেনা। আমিও এক টানা পড়ে শেষ করেছি। বইটি এতো চমৎকার লেগেছে একবার শেষ করার পর দ্বিতীয় বার পড়ে অনুভূতি জানাচ্ছি। প্রতি পৃষ্ঠায় রহস্য ভরপুর। বইতে লেখক পাঠককে ঝটকার ওপর রাখছে খালি ঝটকা খাইছি। কিছু বই পড়ার সময় পরের পৃষ্টায় কি হবে এটা আইডিয়া করা যায় কিন্তু বহ্নিসময় পড়ার সময় কোন প্রেডিকশন করতে পারছিলাম না এতো সাসপেন্স। মাথার মধ্যে ঝট পেকে গেছে আমার তেমনি লেখক সব রহস্যের ঝট খুলেছে। এই বইটা একদম অন্য রকম একেবারে আলাদা। যারা থ্রিলার প্রেমী তাদের জন্য নিঃসন্দেহে এটা দারুণ একটা বই হবে। বইটা পাঠককে এতোই আকৃষ্ট করবে যে বই হাত থেকে রেখে উঠতেই ইচ্ছে করবে না, টানা পড়ে যেতে পারবে। আমার পছন্দের লিস্টে বইটি যুক্ত হয়ে গেছে। কাহিনী সংক্ষেপ: করোনা কালীন মহামারি সংকটের কথা একদম পূর্ণাঙ্গভাবে তুলে ধরেছেন। মহামারির ভাইরাসটি কিভাবে একজন মানুষ থেকে অন্যজনে ছড়াই যায় এতো ডিটেলস লিখেছেন লেখক বুঝাই যাচ্ছে এই বই লিখতে অনেক মেধা, শ্রম, সাধনা করা লাগছে। বইতে প্রত্যেকটা চরিত্রকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে লিখেছেন। বহ্নিসময় বইয়ের মেইন চরিত্র আবরার। সে কিভাবে পুরুষ থেকে পুরুষোত্তম হওয়ার কাহিনী বইতে চমৎকার ভাবে সাজিয়েছে লেখক। পুরুষ সবাই হতে পারে কিন্তু পুরুষোত্তম হওয়া সহজ নয়। সে কিভাবে পরিবারের জন্য পুরুষোত্তম হয়ে ওঠেছে সেই জার্নিটা চমৎকার। প্রথমে পড়ার সময় আবরারকে স্বার্থপর, অহংকারি যে শুধু নিজেরটা ভাবে এমন একজন পুরুষ মনে হবে কিন্তু না পরে তার সম্পর্কে পড়ে অবাকের পর অবাক হয়েছি। পরিবারের কঠিন বহ্নিসময়ে আবরার ঢাল হয়ে দাড়াইছে সেটা জানতে হলে বইটি অবশ্যই পড়তে হবে। তিলোত্তমা নামটা শুনলেই একটা মায়া চলে আসে। মা-বাবা হচ্ছে একজন সন্তানের জন্য সবচেয়ে আপন কিন্তু যখন সেই মা-বাবার থেকে একটি সন্তান অবহেলা পেয়ে বড় হয় ওঠে সেটা যে একটা সন্তানের জন্য কত কষ্টের সেটা তমা সম্পর্কে পড়েই জেনেছি। লোভ, লালসা অনেক খারাপ। এই লোভই মানুষকে কিভাবে ডুবাই সেটা বইতে সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। পুরা বইতে অনেক অনেক চরিত্রের আনাগুণা রয়েছে। সবগুলা চরিত্রের গুরুত্ব বিশেষ পড়ার সময় মনে গভীর একটা দাগ কেটেছে। (বিঃদ্রঃ) আমি গুছিয়ে রিভিউ লিখতে পারি না। এটা আমার মনে অনুভূতি তুলে ধরেছি।
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউঃ বহ্নিসময় লেখকঃ শারমিন আঞ্জুম প্রকাশকঃ চলন্তিকা প্রকাশনী বইমেলা ২০২৪ পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৩৮৪ প্রচ্ছদঃ মোঃ সাদিতউজজামান যেকোন সচেতন মানুষের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। লেখকদের জন্য তো বটেই। এ হিসেবে 'বহ্নিসময়' শারমিন আঞ্জুমের অনবদ্য সৃষ্টি। এখন পর্যন্ত মানব সভ্যতার সবচে দুর্যোগময় সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাকে সেই সময়ের আঙ্গিকে তিনি মলাটবন্দী করেছেন। এক থমকে যাওয়া সময়ের গতিশীল গল্প। গল্পের ব্যাপ্তিকাল মোটামুটি দেড় মাস। কিন্তু চরিত্রগুলোর স্মৃতিতে সুদূর অতীতের অনেক ঘটনা উঠে আসে যার সাথে বর্তমানটা ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে আছে। শুরুটা একটু গোলকধাঁধা মনে হতে পারে। তবে ধৈর্য নিয়ে কিছুটা এগুলেই পাওয়া যায় গল্পের আসল নির্যাস। প্রায় একই সময়ে ঘটে যাওয়া ভিন্ন মোটিভের কিছু হত্যাকান্ডের রহস্য খুলেছে ধীরে ধীরে। এখানে লেখক দারুণ সফল। টানটান উত্তেজনা ছিল গল্পের শেষটুকু পর্যন্ত। লেখকের ভাষায় 'থ্রিলারের মোড়কে মানবিকতার' গল্পের শেষটুকু হয়েছে 'চোয়াল ঝুলে পড়া'। থ্রিলিং ছিল পুরোটা সময় জুড়ে। লোভ এই গল্পের একটা মূল উপজীব্য। কেউ অভাবে আর কেউ স্বভাবের কারণে লোভী হয়। তবে পরিণতি সবদিকেই সমান। পাশাপাশি রয়েছে মানবিকতার কিছু ছোট ছোট বাস্তব ঘটনা। রাজনীতি, ব্যবসা, চিকিৎসা, গৃহস্থালি প্রতিটি বিষয়ের কি বাস্তব এবং যৌক্তিক চিত্র। অনেক অনেক চরিত্রের আনাগোনা গল্পে। এর মাঝে কেউ কেউ গল্পের শুরুতেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েও সদর্পে ছিলেন পুরো গল্প জুড়ে। গল্পের আসল রহস্য উন্মোচিত হয়েছে একবারে শেষে। অথচ সূক্ষ একটা ইশারা কিন্তু শুরুতে ছিল। যা বোঝা যায় পুরো গল্প শেষ হলে। যোগ্য মানুষের কাছে দায়িত্ব কখনো বোঝা হয় না। বরং দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে তার আসল চরিত্র। আবরার তেমনি একজন। বাড়াবাড়ি আদর আর কিছু ভুল বোঝাবুঝিতে তাকে চরম স্বার্থপর, একগুঁয়ে মনে হলেও পরিবারের প্রয়োজনে সে অটল দুর্গ। প্রিয়জনের চোখে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে গিয়ে নিজের সবটা দিয়েই সে পুরুষোত্তম। সাদামাটা চরিত্রের মিষ্টি তমা তার মানবিক গুণাবলি দিয়ে পাঠকের মনে জায়গা করে নেয়। নিজের আপনজনের কাছে সে কখনো প্রাপ্য সম্মান পায়নি, আহত হয়েছে তার ব্যক্তিত্ব। তবে ভীরু তমার কিছু সিদ্ধান্ত আমার দারুণ সাহসী মনে হয়েছে। অবশ্য বারবার নিজের আত্মসম্মানে আঘাত আসার কারণেই হয়তো অল্পসময়ের জন্য এই বিদ্রোহ। যৌবনের সোনালি সময়ে প্রতারিত হয়ে করা ভুলের মাশুল দিতে প্রায় পুরো জীবন কাটালেন নীলুফার। শেষে এসে পাওয়া আর না পাওয়ার অদ্ভুত এক দোলাচলে আবিষ্কার করেন নিজেকে। বিচক্ষণ, মমতাময়ী, ধৈর্যশীলা নিলুফার পেয়েছেন ফিরোজের মতো এক দেবতুল্য স্বামী। গল্পের শুরুতে হারিয়ে গিয়েও পুরো গল্প জুড়ে ছিল যার সদর্প বিচরণ। আফরোজা একজন খিটখিটে মেজাজের ভদ্রমহিলা। যিনি নীলুফারকে জীবনের শুরুতেই প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছেন। তার সাথে নিজের তুলনায় মানসিক দৈন্যতায় ভুগেছেন। ঘটনাচক্রে হয়েছেন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তবু এই দুই নারীর একটা জায়গায় মিল দুজনই মা। একজন স্নেহে অন্ধ আরেকজন বিচক্ষণ। সাধারণ গৃহবধূ শেফালি "বেহেশতের" নাগাল হাতের কাছে পেয়েও অনাদর অবহেলার জীবন মেনে নিয়েছিল।নিজের নামের মতো স্বল্পায়ু হয়ে নিরবে নিভৃতে ঝরে গেছে সে। মিষ্টভাষী, সুদর্শন, শীতল মস্তিষ্কের আতিফ সহজেই পাঠকের মনে একটা মজবুত জায়গা দখল করে নেয়। ক্ষতবিক্ষত অতীতের ছায়া পড়ে তার কর্মকাণ্ডে। অতি আদরে বখে যাওয়া তারুণ্যের প্রতিনিধি সিল্মি। সমাজের উঁচু তলার বর্তমান সময়ের খানিকটা ঝলক দেখি তার মাঝে। স্বল্পসময়ের উপস্থিতিতেও কিছু চরিত্র স্বস্থানে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। এমনকি লেখিকার অন্য উপন্যাসসমূহের চরিত্রগুলোর উপস্থিতিও অনাহূত মনে হয়নি। চরিত্র আর সংলাপ দিয়ে লেখিকা রহস্য তৈরি করেছেন। পাঠকের মন আর মস্তিষ্ক নিয়ে খেলেছেন আর সেই রহস্যের জট খুলেছেন ধীরে ধীরে। গল্পের ধাঁধাগুলো সত্যজিতের ফেলুদার কথা মনে করিয়ে দেয়। যার সমাধানে অনেক রহস্যের জট খুলে যায়।আঞ্চলিক ভাষায় লেখা সংলাপগুলোর জন্য পাঠকের সাথে খুব সহজে যোগসূত্র স্থাপন করতে পেরেছে এই গল্প। কিছু প্রশ্নের উত্তর সরাসরি আসেনি বইয়ে। কেন যেন মনে হয় এসব ঘটনা হয়তো লেখিকার অন্য কোন গল্পে খুঁজে পাব। সবশেষে বইটার প্রচ্ছদ নিয়ে না বললেই নয়। সাধারণত প্রচ্ছদের সামনের অংশটুকু নজরকাড়া হয়। কিন্তু এই গল্পের পেছনের প্রচ্ছদটা আরো জীবন্ত। বই পড়া শেষ করে পেছনের অংশটুকু দেখে উপলব্ধি করা যায় প্রযুক্তির উন্নতি একদিকে যেমন স্বস্তিদায়ক তেমনি এর অপব্যবহার নষ্ট করছে আবেগ, মনুষ্যত্ব, নৈতিকতা অনেকক্ষেত্রে স্বস্তিও। লেখিকার সাথে সাথে শুভকামনা প্রচ্ছদশিল্পীর জন্যও। মুদ্রণত্রুটি আগামী সংস্করণে দূর হবে আশা রাখছি। ভুল ত্রুটি আবেগ নিয়ে মানুষ তবু গল্পের শেষে মনে একটু দ্বিধা রয়ে গেল। তবে আপনজনের রক্ষাকবচ হতে গেলে সবকিছু দ্বিধার উর্ধ্বে।
Was this review helpful to you?
or
শেষ করলাম বহ্নি সময়। মোটামুটি লেগেছে। থ্রিলার যতটা টানটান উত্তেজনা পূর্ণ থাকে তত টা লাগেনি। অনেক স্লো লেগেছে। কাহানি খারাপ না তবে দিখণ্ডীতা বেস্ট। শারমিন আঞ্জুম নাম মানেই তার থেকে বিশেষ প্রাপ্তির আশা থাকে সেই আশা মিটেনি। গল্প অ্যাভারেজ।
Was this review helpful to you?
or
লেখালেখি যা করে তা একরকম,
Was this review helpful to you?
or
#বুকরিভিউ বই : বহ্নিসময়(সাস্পেন্স থ্রিলার ) লেখক :শারমিন আঞ্জুম (Shairmin Anjum ) ছবি : সামিয়া আলম তন্বী বইটা শেষ করেছি কেবল । অনুভূতিটা ঠিক কেমন তার শব্দে রূপ দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই । তাও চেষ্টা করছি কিছু দিক তুলে ধরার । প্রথমেই বলি বইটা পড়তে হলে ধৈর্যশীল হতে হবে । আপনার নিজের কৌতুহল দমন করতে জানতে হবে । প্রতিটা পাতায় নতুনভাবে কৌতুহল জন্মাবে । যার উত্তর পেতে অবশ্যই পুরো বইটা শেষ করতে হবে । সচরাসচর থ্রিলার বলতে আমরা যা বুঝি তার থেকে একটু ভিন্ন ধর্মী বই । রহস্য ঘেরা বইটাতে ভালোবাসার ছায়া যেমন রয়েছে ,তেমনি রয়েছে পারিবারিক বন্ধনের মারপ্যাঁচ । এসব কিছুই আরো জীবন্ত করেছে বইটাকে । মনে হচ্ছিলো ২০২০ এ অবস্হান করছি । প্রতিটা পাতায় প্যাচ , যা পরের পাতায় আরো জট লেগে যায় , এই জট খোলে একদম শেষের পাতায় । প্লট চেন্জিং আর জটগুলোর খেলায় আন্দাজ করার সুযোগ নেই কি হতে যাচ্ছে । যতোগুলো জট খুলেছে অবাক হতে হয়েছে প্রতিটাতে । প্রথম দিকে পড়ে প্রশ্নে মাথা গিজ গিজ করবে , তবে উত্তর পেতে একদম শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে আগাতে হবে । শেষ কয়েকটা পাতা একদম বো*মা বিস্ফো*রক । আর বলতে গেলে স্পোয়েলার দিয়ে ফেলবো । তবে লেখকের বিষয়ে দু'টি মন্তব্য না করলেই নয় । এক , তাঁর লেখনশৈলী , যা সাধারণ কিছু বাক্যকেও অসাধারণ করে তোলে; দুই , তাঁর অলৌকিক এক ক্ষমতা হলো চরিত্রগুলোর প্রতি পাঠকের প্রবল টান সৃষ্টি । যার ফলে বই শেষ হলে চরিত্রের মায়া কাটাতে বেগ পেতে হয় , আর শূণ্য লাগে বইটা শেষ হলেই । এটা আসলেই বিশেষত্ব লেখকের যার কারণে তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলো পাঠক হৃদয়ে রয়ে যায় বছরের পর বছর । যারা সামাজিক , রোমান্টিক কিংবা রহস্য উপন্যাস পছন্দ করেন তাদের মনে দাগ কাঁটবে এই বই । তবে কেউ যদি থ্রিলার বলে বিভৎস্য খুনের বর্ণণা আর ডার্ক প্লট এক্সপেক্ট করে বইটা পড়ে , নিরাশ হতে হবে । ধন্যবাদ । - সামিয়া আলম তন্বী
Was this review helpful to you?
or
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বহ্নিসময় এ পর্যন্ত শারমিন আঞ্জুম আপুর ৮ টা বই পড়েছি। প্রত্যেকটাই অনন্য। কিন্তু কখনো রিভিউ লেখা হয়ে ওঠেনি, আসলে আমি রিভিউ লিখতে পারিনা। অন্তরের অন্তস্থলে যে ভাল লাগা তাকে শব্দে প্রকাশ করা বড় কঠিন লাগে। বহ্নিসময় বইটা ২৩ তারিখে পড়া শেষ করেছি। পড়তে পড়তে কতবার যে থেমে গেছি, বিরতি নিয়েছি। বেশ অনেকটা সময় পর্যন্ত চরিত্র গুলোর একে অন্যের সাথে সম্পর্ক আর সম্পৃক্ততা বুঝে উঠাই মুশকিল! বারবার মাথার মধ্যে জট পেকে যাচ্ছিল, নার্ভেও বেশ চাপ পড়ছিল, দু একবার ভেবেছি নাহ এত জটিলতা আর নেওয়া যাচ্ছেনা! পরক্ষণেই মনে হয়েছে জীবন মাত্রই জটিলতায় ভরা তাহলে উপন্যাসে এর প্রতিফলন তো থাকবেই! নীলুফারঃ প্রথম যৌবনে প্রেমের আবেগে ভেসে জন্ম দিলেন এক সন্তানকে কিন্তু সামাজিক বাধায় আশ্রয় দিতে পারলেন না তাকে! কিন্তু সেই সন্তান রয়ে গেল তার অন্তরের গভীরে, স্বামী সংসার নিয়ে সুখী নিলুফার প্রতিনিয়ত খুঁজে ফেরেন তার গর্ভজাত না দেখা সন্তানকে। কোথায় তার হারানো সন্তান? আতিফঃ সমস্ত উপন্যাসে প্রবলভাবে বিরাজমান চরিত্র আতিফ। বিলিতি পাসপোর্ট ধারী বুদ্ধিমান সুদর্শন আতিফ হঠাৎ কেন খুলনা পৌঁছাল? কাকে খুঁজছে সে? আবরারঃ ধনীর আদরের দুলাল আবরার, দিব্যি আরাম আয়েশে নির্ভার জীবন কাটছিল তার, হঠাৎ ই বাবা চাচা দুজনকে হারিয়ে বিভ্রান্ত আবরার সিদ্ধান্ত নিল উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি বিক্রি করে ফিরে যাবে তার নির্ভার জীবনে! কিন্তু ফিরে যেতে চাইলেই কি এত সহজে চলে যাওয়া যায়? জীবন যে জটিলতার জাল বিছিয়ে রেখেছে তার জন্য! শেষ পর্যন্ত আবরার কি ফিরতে পারবে তার কাংখিত জীবনে? আফরোজাঃ নীলুফারের বড় জা আফরোজা, নীলুফারের সাংসারিক প্রতিদ্বন্দ্বী আফরোজারও আছে কিছু পাওয়া না পাওয়ার নিজস্ব হিসেব নিকেশ। কিন্তু কী সেই হিসেব? কী চান আফরোজা? ফিরোজঃ পুরো উপন্যাসে খুব অল্প সময় তিনি বেঁচে ছিলেন, তবে জীবিত না থেকেও তার অসামান্য প্রভাব রেখে গেছেন নীলুফার আর আবরারের জীবনে। নীলুফারের ভাংগাচোরা মনটা ভালবেসে মেরামতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফিরোজ। বাস্তবেও হয়ত এমন একজন জীবন সংগীই সব মানুষের আরাধ্য। মারা যাওয়ার ঠিক কয়েক ঘন্টা আগে কী বলতে চেয়েছিলেন নীলুফারকে? আর আবরারকে লিখে যাওয়া পাজল গুলারই বা অর্থ কী? মৃত স্বামীর না বলা সেই কথা নীলুফার কি জানতে পারবেন কোনদিন? আবরার কি বুঝতে পারবে ফিরোজের লেখা সাংকেতিক কথার অর্থ? তমাঃ নীলুফারের ভাইয়ের মেয়ে তমা। ছোটবেলা থেকে নীলুফার সম্পর্কে নানান সত্য অসত্য শুনে বড় হওয়া তমা নিজেও কি ভুল পথে পা বাড়াল? আর কেনই বা সে এক তানপুরা পাওয়ার জন্য মরিয়া? কী ঘটনা জড়িয়ে আছে তানপুরায়? তানপুরার জন্য তাকে ব্ল্যাকমেইলই বা করছে কারা? কোভিড আক্রান্ত তমা কি পার করতে পারবে বহ্নিসময়? ফয়সালঃ আপাদমস্তক ভদ্রলোক একজন ব্যক্তি। কিন্তু আবরার কে কি একটু বেশি প্রশ্রয় দিয়ে ফেলেছেন? এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু পার্শ্ব চরিত্র আনিকা, সজল, শাহিন, শেফালি, সাদাত, ফুলি, নুরবানু, সিল্মি, নাসরিন, জাহাংগীর, ওসি বাকের, একজন তীক্ষ্ণবুদ্ধি সম্পন্ন এ এস পি আর আছে বাবলু। আপাতদৃষ্টিতে তারা পার্শ্বচরিত্র হলেও প্রত্যেকেই স্বমহিমায় ভাস্বর। প্রত্যন্ত গাঁয়ের ছোট্ট বাবলু মা হারিয়ে যখন দিশেহারা তখন তার দেখা হয় আবরারের সাথে, করুণ ভাবে সে জিজ্ঞেস করে "শোন তুমি কি খুলনার? আমারে নেবা"? কিন্তু আবরারের দুঃসাহস নেই বাবলুকে সাথে নেয়ার! আচ্ছা, বাবলু কে? আর কেনইবা আবরারের সাথে যেতে চাইল? মনের মধ্যে এমনই অসংখ্য প্রশ্নের ঝড় বয়ে যায় উপন্যাসটা পড়ার সময়। ধীরে ধীরে সব জট খুলেও যায়। শুরুর দিকের অপছন্দের চরিত্রটিও বহ্নিসময়ে পুড়ে পুড়ে হয়ে ওঠে একজন পুরুষোত্তম। প্রিয় উক্তিঃ ১. শরীরের গোপনাংশে পুজ ভরা ফোড়া নিজের কাছেই কষ্টের, অন্যের কাছে তা ঘেন্নার। ২. জীবনে তুমি অনেক কিছু প্ল্যান করবে কিন্তু সুখে থাকতে পারবে তখনি যখন প্ল্যানের উলটো কিছুর জন্যও রেডি থাকবে। সো প্ল্যান ফর দা বেস্ট, প্রিপেয়ার ফর দা ওর্স্ট। ৩. সিঁধেল চোর শুধু চুরিই করতে পারে, বুকে লুকানো সত্য জানার ক্ষমতা তার থাকেনা। ৪. ভালবাসা একটা ভয়ংকর দায়িত্ব। ওপর থেকে দেখতে পার্ফেক্ট মনে হলেও এই জগতে কেউ পার্ফেক্ট নয়। প্রত্যেকটা মানুষের বুকের মাঝে একটা অসুন্দর কষ্টের সিন্দুক থাকে। জং ধরা, জরাজীর্ণ, পুঁতিগন্ধময় কাঠের সিন্দুক। কিছু গোপণ গ্লানি, লজ্জা ব্যার্থতার উপাখ্যান সেখানে সংরক্ষিত থাকে। যারা তাদের ভালবাসে তাদেরও দায়িত্ব থাকে সেই সিন্দুকটাকে আপন ভাবার, তাদের যত্ন নেওয়ার। কারো যখন সেই স্যাঁতসেঁতে বাক্সটার ওপর ঘৃণা ধরে যায় বুঝতে হবে সে কখনো ভালবাসতেই পারেনি। ওই সিন্দুকটার দায়িত্ব যদি নিতে না পার ভালবেসেছ এই দাবিটা কখনো করবেনা। এবার আসি অন্য কিছু পয়েন্টেঃ ১. শেফালির স্বামীর নাম কোথাও শাহিন, কোথাও শামীম, এটা ভুলক্রমে হয়েছে কিনা বুঝতে পারিনি। ভুল হয়ে থাকলে নেক্সট এডিশনে সংশোধন হয়ে যাবে আশা করি। ২. আফরোজা দীঘলিয়ার রাখির পরিবার নিয়ে কিছু বলেছিলেন, যেটা পরবর্তীতে আর ক্লিয়ার হয়নি। কী হয়েছিল রাখির পরিবারের? ৩. অল্প কয়েকটা বানান ভুল ছিল, পৃষ্ঠা নম্বর গুলা মনে পড়ছেনা। ওভার অল রেটিংঃ ১০ এ ৮ (ব্যক্তিগত রেটিং) পারিবারিক বন্ধন, সুখ দুঃখ, আর দায়িত্বের গল্পের সাথে পরতে পরতে মিশে আছে রহস্য আর বুদ্ধিমত্তা। এত এত চরিত্রের মাঝেও চমৎকার ঠাসবুনট গল্প, কোথাও গল্পের প্লট ভেংগে যায়নি কিংবা ধারাবাহিকতা হারায়নি। মজার ব্যাপার হচ্ছে বইটা ২য় বার পড়ে বেশি ভাল লেগেছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর আরও বেশি ভালভাবে বুঝতে পেরেছি। সব মিলিয়ে সুখপাঠ্য বই।
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার টুইস্ট সম্পন্ন একটি বিশাল গুছানো উপন্যাস এবং এক নিশ্বাসে শেষ করার মতো। একজন নতুন আগাথা কৃস্টি পেতে যাচ্ছি আমরা।। আমি মুগ্ধ।
Was this review helpful to you?
or
মাত্র শেষ করলাম বহ্নিসময়।আমি সাধারণত বইয়ের রিভিউ দেই না। দিতে পারি না বলে।লেখকের ভাষ্য মতে "ঘাপটি মেরে থাকা পাঠক" আমি।এবার লেখকের আবেদনে সারা না দিয়ে পারলাম না।প্রথমেই বলব যারা নির্বাসন পড়েছেন তারা বুঝবেন এক একটা অধ্যায়ে এক একটা রহস্য।সত্যি যেন পেয়াজের এক একটা পরত। কোভিক কালীন ভয় উৎকন্ঠা আর অসহায়ত্ব এই বইয়ে ফুটে উঠেছে সেই সাথে কারো কারো অনুশোচনার আগুনে পুড়ে খাঁটি হয়ে উঠার গল্প।বেশি কিছু বলছি না স্পয়লার হওয়ার ভয়ে।শুধু বলব যারা যারা থ্রিলার পছন্দ করেন তারা ঠকবেন না।টান টান উত্তেজনায় আর কাহিনীর মোড় পরিবর্তনে আপনার হাত থেকে বই নামাতে পারবেন না। সব শেষে লেখিকাকে ধন্যবাদ এমন একটা বই উপহার দেওয়ার জন্য। যথা শীঘ্র সম্ভব কিনে নিন।বইমেলায় কিনেছি বিকাশ পেমেন্টে মেলা কোড দেওয়ায় ৫৪০/-টাকায় পেয়েছি।সবাই কে ভুতগ্রস্তের মত বইটি একটানে পড়ার সাদর আমন্ত্রণ।
Was this review helpful to you?
or
#পাঠ্যনুভূতি আঞ্জুম আপুর লেখার প্রতি এখন এতটা ভরসা এসে গেছে যে তার কোনো বই শুরু করার আগেই আমার বিশ্বাস থাকে বই পড়ে নিরাশ হবো না, আর হইও না। প্রতিবার সে তার লেখার জাদু দিয়ে আমায় মুগ্ধ করে ফেলে। হালকা পাতলা রিডিং ব্লক নিয়েই বহ্নিসময় পড়তে শুরু করেছিলাম। মনে হয়েছিল ব্লক পুরোপুরি কেটে যাবে, পড়ায় আগের মতো ফ্লো চলে আসবে বিশ্বাস ছিল। হয়েছেও তাই। আমি আশেপাশের সবকিছু ভুলে মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ে গিয়েছি টানা। সবগুলো চরিত্র এতটা জীবন্ত ছিল! মনে হচ্ছিল এইতো সবকিছু চোখের সামনে ঘটছে আমি ওদের সবাইকে অনুভব করতে পারছি। ওদের ভালোবাসা,খুনসুটি, প্রায়শ্চিত্ত করা সবকিছু! তবে হ্যাঁ এরমধ্যে আবরার সম্পূর্ণ ভিন্ন। ও একটা মুগ্ধতার নাম! শুরু শুরুতে ওকে খুব দুর্বোধ্য লাগছিল বুঝতে পারছিলাম না ও আসলে কেমন। একসময় মনে হচ্ছিল প্রচন্ড আত্মকেন্দ্রিক আবার সে-ই পরিবারের জন্য লড়াকু মনোভাব রাখা একজন। সে এমন এক ব্যক্তিত্ব যে নিজ গুনে আমার হৃদয়ে প্রবেশ করে এখন রাজত্ব চালাচ্ছে। এবং আমার কাছে সে পুরুষোত্তমই। বইতে শুরু থেকেই এত সাসপেন্স ছিল দুইটা আলাদা জায়গার বর্ণনা অথচ কাহিনীগুলো একই সুঁতোয় গাঁথা। আস্তে আস্তে একটা একটা করে জট খুলতে শুরু করছিল আর আমি অবাক হচ্ছিলাম কিছু কিছু আবার আন্দাজও করতে পেরেছি আগে থেকে। তবে লাস্টের টুইস্টটা ধরতে একটু সময় লেগে গেছে যেটা ছিল সবচেয়ে বড় চমক। ৩৮৪ পেজের বই পড়েও আমার এখন আক্ষেপ মিটছে না। মনে হচ্ছে এত তাড়াতাড়ি কেন শেষ হয়ে গেল! আরও পড়তে চাই ওদের নিয়ে। থ্রিলার আমার কাছে তেমন পছন্দের জনরা ছিল না তবে আঞ্জুম আপুর লেখা পড়ার পর থেকে আমি থ্রিলারভক্ত হয়ে গেছি। এত সুন্দর বর্ণনা, শব্দচয়ন। মহামারীর সময়টাকে এত সুন্দর করে ব্যখ্যা করেছে আপু। আমি আবারও কোভিডের সেই সময়টায় চলে গেছি মনে হচ্ছিল। এত সুন্দর একটা বই আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু। এভাবেই আপনার লেখার একজন গুণমুগ্ধ পাঠক হয়ে থাকতে চাই সবসময়। অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইল আপু।
Was this review helpful to you?
or
পাঠ প্রতিক্রিয়া: বইটি প্রথমে অনলাইন থেকে পড়া শুরু করেছিলাম তাই বইটি হাতে পাওয়ার পর পড়া শুরু করলে বেশ গোলমেলে লাগছিল । মাঝে মাঝেই খেই হাড়িয়ে ফেলছিলাম। ঠিক ডুবে যেতে পারছিলাম না। কিন্তু যেহেতু লেখকের সব বই আমার একাধিকবার পড়া তাই ধৈর্য্য ধরে পড়ে যেতে থাকলাম এবং ক্রমশই বইয়ে ডুবে যেতে থাকলাম।পরিশেষে চমৎকার অভিজ্ঞতা হলো। কিছু ভালো লাগার বিষয় উল্লেখ করছি: একটি মূল চরিত্র কে কেন্দ্র করে রচিত এই গল্পে প্রতিটি চরিত্রই সমান গুরুত্ব পেয়েছে । ঠিক যেখানে শুরু এবং যেখানে শেষ হওয়া দরকার ছিল ঠিক সেখানেই শেষ বা শুরু হয়েছে চরিত্রগুলো। কোন চরিত্রই অপ্রয়োজনে আনা হয়নি এবং অমীমাংসিত থাকেনি। জীবনে চলার পথে ভুল হতেই পারে কিন্তু এই ভুলকে এড়িয়ে বা উপেক্ষা না করে সারাজীবন ধরে বিভিন্নভাবে যে প্রায়শ্চিত্ত করা যায় এবং জীবনকে পরিশুদ্ধ করা যায়, তা শুধুমাত্র বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমেই বোঝানো সম্ভব এবং লেখক তা ভালভাবেই করতে পেরেছেন।এখানে নিলুফার একটি শিক্ষণীয় চরিত্র। পরিবার একটি শিশুর জন্য সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ এবং মা বাবা ও পরিবারের ঘনিষ্ঠ মানুষেরা সবচেয়ে বড় শিক্ষক একথা আবারও প্রমাণিত হয়েছে তালুকদার বাড়ির মানুষের চিন্তা চেতনা ব্যবহার ও কাজের মাধ্যমে। যে কোনো ঘটনায় বা সময়ে উত্তেজিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে সুফল মেলে তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে গল্পের একেবারে শেষ অংশে। খুবই ছোট বিষয় কিন্তু তাও লেখক যত্ন করে লিখেছেন এবং পরে তা বড় কোনো বিষয়ের সাথে জুড়ে দিয়েছেন, তমা কে রান্না করতে কিংবা এই বাসায় থেকে যেতে নীলুফারের যে উদ্যোগ তার কারণ একবারে শেষে গিয়ে পরিষ্কার হয়েছে। তাই প্রতি পৃষ্ঠা মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। সম্পূর্ণ বইয়ে লেখক খুবই সূক্ষ্মভাবে পাঠককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং বেশ কয়েকবার সফল ও হয়েছেন এতে পাঠকের আগ্রহ বেড়েছে। গল্পের টুইস্ট গুলো চমৎকার, চরিত্রের বিন্যাস ও ব্যপ্তির মধ্যে অদ্ভুত সমন্বয় করা গেছে বলেই পাঠ অভিজ্ঞতা মধুময়। প্রচ্ছদ খুবই সুন্দর ও অর্থবহ। বইটি আসলেই প্রতিটি পাঠকের কাছে একটি কালো খামে ভরা পরম অভিজ্ঞতা হিসেবে পরিগণিত হবে বলে বিশ্বাস করি। ধন্যবাদ লেখক কে Shairmin Anjum
Was this review helpful to you?
or
আপুর বই নিয়ে কি লিখবো!!?? গুছিয়ে এর মর্মার্থ লেখা আমার সাধ্যের বাইরে। আপুর এই বই শুরু করে আমি তাল মেলাতে পারছিলাম না, মনে হচ্ছিল কে কোথায়!, কোন সম্পর্ক কার সাথে! কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে একদম এলোমেলো লাগছিল। মনে হচ্ছিল এই প্রথমবারের মতন আপুর বই পড়ে হয়তোবা এটা মনে ধরবে না, কিন্তু কিন্তু কিন্তু..... আমার সব ধারনাকে ভুল প্রমাণিত করে এই বইটি ও মন মগজে ঢুকে গেলো। আপুর থ্রিলার আর সেটা শেষ পেইজ অব্দি তার চার্ম ধরে রাখতে পারবে না তা যেন অসম্ভব?। এত্তগুলা চরিত্রের মাঝে প্রতিটি চরিত্রকেই মনে হচ্ছিল এটাই হয়তোবা মেইন কিন্তু, মেইন ক্যারেকটার সুপ্ত থেকে কিভাবে তা হাইলাইট হলো এটি যেন একটি ধাঁধা। যার জন্য ভালো লাগা কাজ করছিল সেই কেমন করে যেন মাটি চাপা পড়ে বিরক্তিকর চরিত্রটি ভালোবাসায় পরিনত হলো বুঝতেই পারলাম না। ভালোবাসা দায়িত্ব মায়া সততা অভিমান অভিযোগ সহনশীলতা অনুশোচনা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় কি নেই এই একটি সাধারণ গল্পের মাঝে!? শুধুমাত্র দুধে ধোঁয়া তুলসী পাতা হলেই নায়ক অথবা নায়িকা হওয়া যায়না, ভুল করে বা অন্যায় করেও জীবনকে শোধরানো যায় এবং তারপর একজন উদাহরণ স্বরূপ মানুষ হওয়া যায়। এই গল্পের প্রানকেন্দ্র জীবনের বহ্নিসময়ে তার সর্বোচ্চ দিয়ে সকল প্রকার অনাহুত ঘটনা গুলোকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে পেরেছে আর এই পারাটাই জীবনের সার্থকতা । আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভালোমন্দ ঘটনা অথবা খুবই সাধারণ কিছু ঘটনা দিয়ে কিভাবে তা অসাধারণ একটি গল্পে রূপান্তর করতে হয় তা আপুর সৃষ্টি পড়ে উপলব্ধি করতে পারি। শারমিন আপু অনেক অনেক ভালোবাসা নিবেন, শুভ কামনা রইলো আপনার এবং আপনার নতুন সৃষ্টির জন্যে। ?❤️
Was this review helpful to you?
or
#বহ্নিসময় "প্রচন্ড ব্যথা সাগর থেকে স্নান করে ধীরে ধীরে চেতনার পৃথিবীতে ফিরছি। একটা অস্বস্থি তবুও রয়ে গিয়েছিল। শুরুতে সেটা কি বুঝলাম না। হঠাৎই টের পেলাম একটা স্পর্শ, নরম তপ্ত কোন একটা কিছু, আমার হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল জড়িয়ে আছে যেন। দুর্বল অথচ স্পষ্ট, কমল স্পর্শ। হাত সরিয়ে আনতে চেয়েও পারলাম না। " ★ জনপ্রিয় লেখক শারমিন আন্জুমের নতুন থ্রিলার উপন্যাস "বহ্নিসময় " থেকে কথাগুলো নেয়া। সামাজিক, রোমান্টিক, রহস্য, সাহিত্যের সকল পর্য়ায়ে সমান দক্ষতার সাথে যার বিচরণ তারই আরেকটি দুর্দান্ত উপন্যাস বহ্নিসময়। সামাজিক প্রেক্ষাপটে আপাতত দৃষ্টিতে করোনা মহামারির সংকটময় সময়ের পারিবারিক আবহে লেখা একটি গল্প মনে হলেও এটি মূলত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আগাগোড়াই রহস্যের মায়াজালে ঘেরা। ★ কাহিনি সংক্ষেপে : বিশাল পরিসরে লেখা এই বড়সর উপন্যাসের কাহিনি আবর্তীত হয়েছে কিছু মানুষ ও বিশেষ কিছু এলাকাকে ঘিরেই। কাহিনির শুরু ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কোন এক অঞ্চলে একটি শিশুর জন্ম থেকে। যার জন্মের পরই তার মা তাকে প্রত্যাখান করে বা সমাজের কারণে করতে বাধ্য হয়। " অচিন্তনীয়ভাবে শুভ্রতায় দাগ লেগে যায় কখনো, অপূর্ব সুন্দর পদ্মকলিতেও ভোমরের আঁচড় আসে। তেমনি একটা গোপন দাগ লুকিয়ে এর রঙ্গমঞ্চ থেকে আমাকে প্রস্থান করতে হবে। " জীবনের একটি ভুলের মাসুল দিতে হয় নিলুফারকে তার অনেক কিছু দিয়ে। কাহিনি এই পর্যন্ত হলেও পারত। কিন্তু ধীরে কিছু মানুষের লোভ, দুঃসাহস আর ক্ষমতার অপব্যবহার তালুকদার বাড়ির বাতাসে মিশে একে একে সবার শ্বাসরোধ করতে শুরু করে। আবরার তালুকদার আপাতত দৃষ্টিতে সাধারণ একজন ছেলে, যার স্বপ্ন অস্ট্রেলিয়ায় নিজের কাজে ফিরে যাওয়া, সে কী পারবে বাবা চাচার মৃত্যুর পর এই বিষাক্ত বাতাসে টিকে থাকতে? তমা নামের ফুটফুটে মেয়েটি কী পারবে নিজেকে ব্যাকমেইলারের হাত থেকে বাঁচাতে? আতিফ নিজের ক্যারিয়ার ছেড়ে কিসের টানে তালুকদার বাড়িতে এসে হাজির হয়েছে? আফরোজা, নিলুফার, ফয়সাল ও ফিরোজ সাহেবের জীবনের বহ্নিসময়ের আখ্যান জানা যাবে পুরো উপন্যাস জুড়েই। সেইসাথে শেফালী, সাদাত,সজল,সিল্মি,তাসনিয়া মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হবে। কিন্তু এরজন্য আবরারকে চরম মূল্য দিতে হয়। আরও ছিলো এন্টিক পিস হিসাবে একটি তানপুরার রহস্য। কী এই তানপুরার কাহিনী? যেটা পাবার জন্য দূর থেকে কেউ একজন মরিয়া হয়ে আছে। যার কারনে তমার জীবন দূর্বিসহ। কাহিনির শেষটায়ও ছিলো আরও বড় ধরনের কিছু চমক। ★ পাঠ প্রতিক্রিয়া : বইটা থ্রিলার আগেই জানতাম। আন্জুম আপুর থ্রিলার মানেই প্রতি পাতায় পাতায় রহস্য। কিন্তু এই বইটা লেখা হয়েছে একেবারেই ভিন্ন আঙ্গিকে। মোট কথা লেখক পুরোপুরি পাঠকের মাইন্ড নিয়ে খেলেছে। আপুর আগের থ্রিলার গুলোতে যেমন অনেক কিছুই ধোয়াশা থাকলেও কাহিনি আচঁ করা গেছে কিন্তু বহ্নিসময় উপন্যাসে একদম শেষ পাতাটা না পড়া অব্দি মনে হয়েছে আরও কত রহস্য বাকি কিন্তু মাত্র কয়েকটা লাইনে যেন পুরো দৃশ্যপট বদলে গেলো। পুরো কাহিনি পানির মতো স্বচ্ছ হয়ে গেলো অথচ সবকিছু শুরু থেকেই তো চোখের সামনে ছিলো। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর গোটা উপন্যাস জুড়ে আমি খুঁজে ফিরেছি সেগুলো সবসময় যেন সামনেই ছিলো শুধু পর্দা সরানোর অপেক্ষায়। আর যখন সত্যিগুলো একে একে পর্দার আড়াল থেকে সামনে আসতে শুরু করল তখন অবাক হবারও অবকাশ পাইনি। কখন, কেন, কীভাবে এই প্রশ্নগুলোও অবান্তর মনে হয়েছে। এত এত ক্লু, এত এত বর্ণনা কিন্তু সবকিছুই যেন সত্যি হয়েও স্বপ্ন। সবচেয়ে ভালোলাগার যে বিষয়টা ছিলো সেটা হলো লেখক নিজের মর্জি মতো চরিত্র নিয়ে গল্প বুনে গেছে। রহস্যের জাল বুনতে বুনতে হুট করে পাঠকের মনে যে ভয় আর দ্বিধা তৈরি করেছিলো সবটাই যেন এক ঝটকায় পরিষ্কার করে দিলো। অনেক কথা যা লেখক ক্লিয়ার করে নি কিন্তু না বলেও যেন বলে দিছে পুরো কাহিনি। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য ছিলো পুরোটা সময়। এককথায় লেখকের এই ভিন্ন লিখনশৈলীতে আমি মুগ্ধ। আরও অনেক অনেক পয়েন্ট আছে বইটাকে বিশেষ করে তুলবে পাঠকের নজরে কিন্তু স্পয়লার হবার ভয়ে বলতে পারছি না। রহস্যের ফাঁকে ফাঁকে হিউমারও ছিলো প্রচুর যা পাঠককে একই সাথে আনন্দ ও মজা দিবে। ★ বিশেষ কিছু চরিত্র : বইতে খুব বেশি চরিত্রের আনাগোনা নেই আবার একেবারে কমও নেই। ঠিক যখন যেখানে যার প্রয়োজন ঠিক তখন তার আবির্ভাব ঘটেছে। তবে বইতে বিশেষ কিছু চরিত্র আছে যারা গোটা বইয়ে রাজত্ব করছে নির্বিঘ্নে। √ আবরার : " আসলে পৃথিবীতে প্রাপ্ত কোন অমূল্য বস্তুই শুদ্ধভাবে আসে না, তাকে শুদ্ধ করতে হয়। সোনা নিখাদ হয় আগুনে পুড়ে, তেমনি পুরুষ নিখাদ হয় বহ্নিসময়ে।" উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। তালুকদার বংশের একমাত্র প্রদীপ। কিন্তু এই চরিত্রটি পুরোপুরিই রহস্যনয়। যার গোটা জন্ম পরিচয়টাই ধোয়াশায় ছিলো পুরো কাহিনিতে। সে আসলে কার আফরোজার না নীলুফারের? নিজের মর্জি মতো চলা প্রচন্ড মেধাবী একরোখা কিন্তু পরিবার আন্তঃপ্রাণ একজন ছেলে। পরিবারের বহ্নিসময়ে যে হয়ে ওঠে পুরুষত্তোম। এই চরিত্রকে বুঝতে গেলে অথৈ সাগরে হাবুডুবু খেতে হবে নিশ্চিত। √ তমা : " বাবা মায়ের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ হয়। কথাটা সত্যি নয়, বাবা মায়ের ভালোবাসা ও ভয়ংকর স্বার্থপর হয়। " মিষ্টি মুখের মায়াময় চরিত্র তমা। যেকিনা নিজের পরিবারেই অবহেলিত। কিন্তু তমা চরিত্রটি বোকা নয় একেবারেই। জীবনের কঠিন সময়ে অত্যন্ত সাহসের সাথেই সে লড়ে গেছে। শুধু আারবার হেরে গেছে একজনের কাছেই। √ আতিফ : " মানুষ পরিশ্রম কর, যুদ্ধ করে, রাজা হতে পারে, কিন্তু রাজপুত্র হতে পারবে না। যে রাজার পুত্র সে জন্মগত ভাবেই রাজপুত্র। " চরিত্র অনেকের কাছে বিশেষ হবে না হয়ত।অনেকের ভালোও লাগবে না কিন্তু আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। চরিত্র যেমনই হোক গল্পে আর অবস্থান কতটা দৃঢ় সেটাই আসল। পুরো গল্পে আতিফ ছিলো নিঃশব্দে চলা সেই সরীসৃপের মতো যে সঠিক সময়ে নিজের কাজটা করতে জানে। √ নীলুফার : " যা কিছু গোপন তা গোপন এই জন্য যে আমরা নিজেরা তার মুখোমুখি দাঁড়াতে পারি না ।সেটা আলোতে আনলে হয়তো হেয় হব,হয়তো অনেকে দূরে সরে যাবে কিন্তু আমরা নিজের কাছে পরিষ্কার থাকব। " চমৎকার একটা চরিত্র। আত্নবিশ্বাসী, চৌকস এবং মমতাময়ী একজন নারী। যার দূর্দশীতার জন্য উপন্যাসটি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। √ ফিরোজ : " জীবনে তুমি অনেক প্ল্যান করবে কিন্তু সুখে থাকতে পারবে তখনই যখন প্লানের উল্টো কিছুর জন্যও রেডি থাকবে। সো প্লান ফর দ্যা বেস্ট, প্রিপেয়ার ফর দ্যা ওর্স্ট" উপন্যাসের শুরুর দিকেই এই চরিত্রের জীবনাবসান ঘটে। কিন্তু পুরো উপন্যাসে সে ছিলো জীবন্ত মূর্তীমান। যার পথ নির্দেশনায় আবরার আর নীলুফার এডিয়ে গেছে। ফিরোজের চিন্তাধারা আর মননশীলতা বারবার আমাকে মুগ্ধ করেছে। ★ এই বিশেষ কিছু চরিত্র ছাড়াও, সিল্মি,সাদাত,সজল, বাকের,জুম্মন, তনিমা, নাসরিন, তারামন, নুরূ, ফুলি,বেলা, আফরোজা, ফয়সাল, জাহাঙ্গীর আলম এবং কিছু সারপ্রাইজিং ক্যারেক্টারও ছিলো বইতে। যাদের পড়তে গিয়ে বারবার অবাক হতেই হবে। " কিছু সত্য থাকে তপ্ত লাভার মতো, যা দিয়েই ঢেকে রাখো, তা পুড়িয়ে সত্যি নিজের অস্তিত্ব জানিয়ে দেবে। " ★প্রচ্ছদ ও অলংকরণ: বইটির প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন জনপ্রিয় প্রচ্ছদ শিল্পী মো: সাদিতউজজামান। চোখ ধাধানো এই প্রচ্ছদটিই যেন পুরো বইটির সৌন্দর্য আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। সেই সাথে অন্তমিল তো আছেই। একটি কালো খামেই যেন বন্দী ঘোটা উপন্যাসের রহস্যময় যাত্রা। ★ সবশেষে বলব, থ্রিলার হিসেবে একদম পার্ফেক্ট একটি বই। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর। রহস্যের অটুট বুনন এবং এক লোহমায় স্বপ্ন ও বাস্তবতার মাঝে ব্যবধান করে এমন সমাপ্তি। রগরগে, গা গোলানো কোন থ্রিলার না তবে রক্ত হিম করে দেয়া মন কাপানো একটা অনুভূতি হবে শেষটায় গিয়ে।