User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Jahan-E-Noor

      22 Apr 2013 02:13 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সবাই কবি নয়, কেউ কেউ কবি—এ কথা বোধহয় সংগীতশিল্পীদের নিয়েও বলা যায়। কবি হতে হলে রক্তে চাই এক ভিন্ন দোলাচল, বুকের মধ্যে ভিন্ন অনুরণন। পণ্ডিত রামকানাই দাশের আত্মস্মৃতি সঙ্গীত ও আমার জীবন পড়ে মনে হলো, সংগীতশিল্পীকেও বোধ হয় অনুগত হতে হয় এক ভিন্ন সম্মোহনের। তাঁর কানেও বাজে এক নিশির ডাক, চিত্তে জাগে এক উথালপাতাল ঢেউ, যার হদিস তিনি ভিন্ন আর কেউ পায় না। রামকানাই দাশের কথাই ধরুন। সুনামগঞ্জের এক অনগ্রসর গ্রামে বড় হওয়া মানুষ তিনি। অভাবের সংসারে অর্থ ছিল না, কিন্তু গান ছিল। মা-বাবা দুজনই গানপাগল, কিন্তু জীবিকার জন্য নির্ভর করতে হতো কৃষিকাজে। খুব অল্প বয়সেই তাঁকে সংসারের জোয়াল কাঁধে নিতে হয়েছিল। কখনো একা, কখনো ভাড়াটে মজুর সঙ্গে নিয়ে একফসলি জমিতে শস্য উৎপাদন করতে তাঁকে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। বাড়ি থেকে চার মাইল দূরে ফসলের মাঠ, কাজে সুবিধা হবে ভেবে সেখানে ডেরা বেঁধে থেকেছেন। এই যে কঠিন-কঠোর জীবন, তা সত্ত্বেও গান তিনি কখনো ত্যাগ করেননি। গানও তাঁকে নয়। একদম ছোটবেলায়, বাবার কাঁধে চড়ে পালাগানে অংশ নিতে এ-গ্রাম সে-গ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছেন। গানের গলা ছিল, চমৎকার বোল তুলতে পারতেন তবলায়। এই দেখে বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোক আসত গানের নিমন্ত্রণ করতে। একদম ছোটবেলায়—দেশভাগের আগে আগে—গণভোটের গান গেয়ে চার আনা করে মজুরি পেতেন। বলতে গেলে সেই তাঁর পেশাদার শিল্পীজীবনের শুরু। খুশি হয়ে বাবা তাঁকে একজোড়া ডুগি-তবলা কিনে দিয়েছিলেন সেই শৈশবে। জাগরণের প্রতিটি মুহূর্তে সেই তবলা তো তাঁর সঙ্গে থাকতই, এমনকি ঘুমের সময়ও এটি বুকে জড়িয়ে রাখতেন। এরপর কিছুটা বড় হয়ে ফসলের মাঠ পাহারা দেওয়ার জন্য যখন খেতের পাশে ডেরা বেঁধে থেকেছেন, সঙ্গে থেকেছে ওই ডুগি-তবলা। কখনো নিঃসঙ্গ বোধ করেননি। দুঃখের অমারজনী অনায়াসে পার হয়ে গেছে, সঙ্গে থেকেছে গান। আমার নিজের কাছে যা বিস্ময়কর মনে হয়েছে, তা হলো, সিলেটের পাড়াগাঁয়ের এই বালক কীভাবে একদিকে লোকগানের ভান্ডারি, অন্যদিকে রাগসংগীতের পরিশীলিত শিল্পী ও সংগীতগুরু হয়ে উঠলেন। রামকানাই দাশকে নিয়ে আমার এই বিস্ময় সম্ভবত কিছুটা অজ্ঞতাপ্রসূত। শৈশবে লোকগীতি শিখেছেন মা-বাবার কাছে, সে সময়ের আরও অনেক জানা-অজানা সংগীতগুরুর কাছে। শুধু লোকগীতি নয়, শুদ্ধ সংগীতের প্রতিও তাঁর অনুরাগ নাতিতরুণ বয়স থেকে। যাঁদের কাছ থেকে গান শিখেছেন, তাঁদের অনেকেই এই দুইয়ের মধ্যে—অর্থাৎ লোকগানে ও শুদ্ধ সংগীতে—কোনো তফাত করেননি। সব গানের ভিত নির্মিত হয় রাগ-রাগিণীর নিয়মতান্ত্রিক গঠন দিয়ে। লোকগীতি শুনে আমাদের অশিক্ষিত কানে তাকে সরল মনে হয়, কিন্তু সে গানের ভিতেও রয়েছে সুনির্দিষ্ট রাগ-রাগিণীর ব্যাকরণ। রামকানাই গান শেখার আগে শিখেছেন ওই ব্যাকরণ। ফলে যে পারঙ্গমতায় তিনি জারি-সারি-হাসন রাজার গান তুলতে পারেন, তেমনি বাঁধতে পারেন শুদ্ধকল্যাণ অথবা বেহাগ। গ্রামাঞ্চলেও শুদ্ধ সংগীতের ব্যাপক প্রচলন ছিল, নিভৃতে প্রচারবিমুখ অনেক জাতশিল্পী এই গানের সাধনা করে গেছেন, রামকানাইয়ের এই বই না পড়লে সে কথা হয়তো জানাই হতো না। রামকানাই দাশ মনে করেন, গান—সব গান, তা লোকজ অথবা শুদ্ধ সংগীত যা-ই হোক—তার নোঙর পোঁতা আমাদের জীবনাভিজ্ঞতায়। পল্লিজীবনের কান্না-হাসির সব আনুষ্ঠানিকতায় তিনি সুরের অস্তিত্ব খুঁজেছেন। তিনি লিখেছেন: ‘একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে। আমার দাদু, অর্থাৎ আমার মায়ের বাবা তখন মৃত্যুশয্যায়, অনেক আত্মীয়স্বজন মামাদের বাড়িতে জড়ো হয়েছিলেন। ছিলাম আমিও। দাদু মারা যাবার সঙ্গে সঙ্গে কান্নার রোল পড়ে যায়। আমার মা এবং বড় মাসি একে অন্যের গলা ধরে কাঁদছিলেন। মার সে মর্মস্পর্শী কান্নার সুরটি আমি আজও ভুলতে পারিনি। দাদুর মৃত্যুর বছর দশেক পর এক সন্ধ্যায় রেডিও শুনতে যাই। আমার বয়স তখন ২০-২১ হবে। রেডিও তখন গ্রামাঞ্চলে এক আশ্চর্য বস্তু। হঠাৎ শুনি, এক শিল্পী খেয়াল গাইছেন, রাগের নাম শুদ্ধকল্যাণ, শিল্পীর নাম এ টি কানন। সেদিনই অনুভব করি, শিল্পীর গাওয়া উচ্চাঙ্গসংগীতের সঙ্গে পল্লি মেয়ের পিতা হারানোর কান্নার সুর মিশে অপূর্ব এক আবহ সৃষ্টি হয়েছে।’ পরে রামকানাই নিজে শুদ্ধকল্যাণ গেয়ে অনেককে মুগ্ধ করেছেন। তাঁদের একজন ওয়াহিদুল হক, যিনি রামকানাইয়ের গলায় শুদ্ধকল্যাণ শুনে দিল্লি থেকে আগত শিল্পী শান্তি শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে গ্রিনরুমে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁরা শিল্পীর গায়কিতে চমকিত হয়েছিলেন। রামকানাই লিখেছেন, তাঁর গান শুনে যে প্রশংসা বোদ্ধা-শ্রোতা করেছেন, এর শিকড় পোঁতা রয়েছে সুদূর কৈশোরে শোনা এবং তাঁর চেতনায় লীন হওয়া শোকাতুর গ্রাম্য মেয়ের কান্নার সুরের ভেতর। কঠিন-কঠোর অধ্যবসায়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে রামকানাইকে। এই পথচলায় তিনি কখনো সাহায্য পেয়েছেন অপরিচিত, অর্ধপরিচিতজনের। আবার প্রতারিত হয়েছেন এমন লোকের কাছ থেকে, যাদের বন্ধু ভেবে বুকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কালীমোহন চক্রবর্তীর কাছে প্রথম যখন তিনি ডেরা বেঁধে গান শেখা শুরু করেন, সে সময় প্রতিদিন ১৫-১৬ ঘণ্টা অনুশীলন করেছেন। পরে, শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের পরও শেখা তাঁর শেষ হয়নি। রামকানাই লিখেছেন, গানবাজনার ভুবনে শেখার খোঁজে তিনি শহর-গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন। ‘শেখা সম্ভব না হলে অন্তত দেখার সুযোগ আমি পারতপক্ষে হাতছাড়া করিনি।’ শুধু গান বাঁধা শিখলেই হবে না, তার উপস্থাপনাও জানতে হবে। আর তা গড়ে ওঠে দেখার ও শোনার ভেতর দিয়ে। ‘সে লক্ষ্যে আমার অনুসন্ধিৎসা সামনে পড়া যেকোনো উপলক্ষকে কাজে লাগাতে চেয়েছি সারা জীবন।’ রামকানাই দাশকে আমি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি, কথা বলেছি। তাঁর মতো গানকে নিজের আরাধ্য করেছেন—এমন মানুষ আগে আমি একজনকেই দেখেছি, তিনি ওয়াহিদুল হক। রামকানাইকে দেখে আমার ওয়াহিদ ভাইয়ের কথাই মনে পড়ে। যাকে আমরা বাইরে থেকে ভাবি পাগলামি, নিজের কাছে তা ছিল উপাসনা। গান নিয়ে তাঁর সেই ‘পাগলামি’র কথা কোনো রাখঢাক ছাড়াই উল্লেখ করেছেন রামকানাই: ‘সারা দিন মাথার মধ্যে শুধু গানই বাজত। রাস্তাঘাটে চলতেও অনুচ্চ কণ্ঠে সুর অভ্যাস করতাম। কেউ কেউ ভুল বুঝত এতে। আমাদের পাশের বাড়ির এক মহিলা, মোহনগঞ্জে বিয়ে হয়েছিল, তিনি মাকে একবার পরামর্শ দেন আমাকে কবিরাজ দেখাতে। তাঁর ধারণা হয়েছিল, আমার মাথা বিগড়ে গেছে। মা তাঁকে অনেক কষ্টে বোঝাতে সক্ষম হন যে আমার গুনগুনানি পাগলামি নয়, সেটা ওস্তাদি গানের সাধনা।’ গান নিয়ে কোনো চালাকির আশ্রয় নেননি রামকানাই। নিজের ভ্রান্তি নিয়েও কোনো ভণিতা নেই। ১৯৬২ সালে সুনামগঞ্জে অনুষ্ঠিত হাসন উৎসবের একটি ঘটনার কথা লিখেছেন। সে উৎসবে রবীন্দ্রসংগীত পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় তাঁর এক কিশোরী ছাত্রী। রামকানাই তাকে যে গানটি শিখিয়েছিলেন, তার প্রথম লাইনের কথাগুলো ছিল এ রকম: ‘ঐ আসমানী পটে আঁকা মেঘ বলাকা।’ ঢাকা থেকে আসা নামীদামি শিল্পীরা সেই উৎসবের বিচারক। ছাত্রী পুরস্কার পেয়েছে জেনে রামকানাই স্বাভাবিকভাবেই খুশি, কিন্তু পরে জেনেছিলেন গানটি আদৌ রবীন্দ্রনাথের নয়। তিনি লিখেছেন, ‘আমি তখন পর্যন্ত ঢিমা তালের শান্ত মেজাজের যাবতীয় গানকে রবীন্দ্রসংগীতভুক্ত বলে মনে করতাম, এমনকি আমার নিজের সুর করা গানকেও।’ সিলেটে রেডিও স্টেশন চালু হওয়ার পর স্থায়ী শিল্পী হিসেবে যোগ দেন রামকানাই। কিন্তু সহকর্মীদের ঈর্ষার কারণে দীর্ঘদিন সেখানে টিকে থাকা সম্ভব হয়নি। তিনি হিন্দু, অতএব তাঁর নিজের দেশে (ভারতে) চলে যাওয়া উচিত—এমন কথা তাঁকে শুনতে হয়েছে। সেই চাকরি ছেড়ে দেওয়া তাঁর শাপেবর হয়। চাকরির বদলে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন, নিজের চেষ্টায় সিলেট শহরে গড়ে তোলেন সংগীত পরিষদ নামে একটি গানের স্কুল। বইটিতে রামকানাই মুখ্যত তাঁর সংগীতজীবনের কথাই বলেছেন। ফলে এর বাইরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-দুঃখের কথা খুব কমই এসেছে। বইয়ের শেষে, যেন গল্পের ‘পোস্ট স্ক্রিপ্ট’, এই ভেবে তিনি তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা দাশের কথা এনেছেন। রামকানাই গান নিয়ে থাকেন, ঘরের বাইরে যেসব মানুষের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা, তাঁদের অনেকেই নারী। একপর্যায়ে তাঁর প্রতি সন্দিহান হয়ে ওঠেন সুবর্ণা। মিথ্যা সন্দেহে পীড়িত স্ত্রীর প্রতি ক্রোধান্বিত হওয়ার বদলে ভিন্ন এক সমাধান বেছে নেন রামকানাই। কিছুটা অবহেলা হয়তো হয়েছিল, এর প্রতিকার হিসেবে সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রীকে উজাড় করা ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দেবেন। তাঁর ঘরে রাখা ছিল লক্ষ্মীমূর্তি, প্রতিদিন সকালে সুবর্ণা সেখানে পুজোয় বসেন। একদিন সকালে সেই মূর্তি সরিয়ে স্ত্রীকে বসিয়ে দেন লক্ষ্মীর আসনে। ফুল-চন্দন দিয়ে তাঁর পায়ে প্রণতি জানিয়ে বলেন, ‘আজ থেকে তুমি আমার লক্ষ্মী। ঘরের বউয়ের মনে যদি কষ্ট থাকে, তা হলে এই লক্ষ্মী পূজা করে কোনো লাভ নেই।’ খুব স্বাভাবিকভাবে, যেন বড় কোনো ব্যাপার নয়, এমনভাবে এই গল্প করেছেন রামকানাই। অথচ বাঙালি পুুরুষের জন্য ঘটনাটি মোটেই ক্ষুদ্র নয়। খুব বড় মাপের মানুষ না হলে এত অনায়াসে অবনতমস্তক হওয়া যায় না। রামকানাই তাঁর গান শুনিয়ে আমাদের অনেক আগেই মুগ্ধ করেছেন। এখন তাঁর বই পড়ে সেই গানের মানুষের আসল পরিচয় পেলাম। মুগ্ধতা আমাদের আরও বাড়ল, সঙ্গে বাড়ল শ্রদ্ধা।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!