User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় সেরা। অবশ্যই পড়ুন।
Was this review helpful to you?
or
love is all about sacrifice?
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
আগুনের পরশমণিতে যে চরিত্র গ্রহন করেছে তা আলাম রাত্রি সাদেক, আশফাক,মতিন,সুরমা ইত্যাদি। অল্প কয়েকদিনের মেহমান তার জন্য অল্প কিছু দিনের মধ্যে ভালোবাসা গড়ে উঠার গল্প হলো আগুনের পরশমণি। ১৯৭১ সাল সে সময় চলছিলো পাক বাহিনীর ঢাকা দখল। বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করেছিলো তারা। তাদের আটকাতে মুক্তিবাহিনীরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছিলো যেনো তাদের কেউ সন্দেহ না করে তার মধ্যে আলম এসেছিলো মতিন সাহেবের বাসায় মেহমান হয়ে কিছুদিন পরই উড়িয়ে দিবে পাক বাহিনীর ক্যাম্প তা নিয়েই পরিকল্পনা। মতিন সাহেবের পরিবারে ছিলো স্ত্রী সুরমা ও দুই মেয়ে রাত্রি ও অপলা। রাত্রী সুন্দরী ও একা থাকলেও অপলা ছিলো বই নিয়ে চুপচাপ। আলমকে আশ্রয় দিয়েছিলো মতিন সাহেব তবে তা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলো না মতিন সাহেবের স্ত্রী সুরমা। যার কারণে সুরমা আলম কে চলে যেতে বললেও যাইনি সুরমা। কেনোনা পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭দিনের আগে যাওয়া যাবে না। আলম চুপচাপ থাকলেও অল্প কয়েকদিনের মধ্যে সবার মন জয় করে। ঠিক সময়ে আলম ও তার বাহিনীরা পাক বাহিনীর ক্যাম্প উড়িয়ে দেয় এর মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এবং একজনকে জীবত গ্রেফতার করা হয়। তবে আলমের গুলি লেগে আহত হয় আলম। আলমের সুস্থতা কামনা করে সকালের অপেক্ষা শেষ হয় কাহিনি।
Was this review helpful to you?
or
রাত্রি জানালা বন্ধ করবার জন্য এগিয়ে যেতেই আলম বলল, বন্ধ করবেন না। প্লিজ বন্ধ করবেন না। সে পাশ ফিরতে চেষ্টা করতেই তীব্র ব্যথায় সমস্ত চেতনা আচ্ছন্ন হয়ে গেল। মাকে ডাকতে ইচ্ছা করছে। ব্যথার সময় মা মা চিৎকার করলেই ব্যথা কমে যায়। এটা কি সত্য, না এটা সুন্দর একটা কল্পনা? খোলা জানালার পাশে রাত্রি দাঁড়িয়ে আছে। হাওয়ায় তার চুল উড়ছে। আহ, কী সুন্দর দেখাচ্ছে মেয়েটাকে! বেঁচে থাকার মতো আনন্দ আর কিছুই নেই। কত অপূর্ব সব দৃশ্য চারদিকে। মন দিয়ে আমরা কখনো তা দেখি না। যখন সময় শেষ হয়ে যায় তখনি শুধু হাহাকার হৃদয় পূর্ণ হয়। রাত্রি কী যেন বলছে। কী বলছে সে? আলম তার ইন্দ্রিয়গুলি সজাগ করতে চেষ্টা করল।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি পড়ে বুকে এক অদ্ভুত রকমের কষ্ট অনুভব হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা খুব কম বই পরা হয়েছে আমার। আমার পড়া বইগুলোর মধ্যে এই বইটি সবচেয়ে বেশি পছন্দের। প্রতিটি লাইন আমাকে আকৃষ্ট করেছে। আমাকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে। রাত্রি, সাদেক, আলম, আসফাক নামের চরিত্রগুলো আমাকে দারুনভাবে আকৃষ্ট করেছে। এক কথায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অসাধারন একটি বই বলা চলে।
Was this review helpful to you?
or
আগুনের পরশমণি হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখা এক অসাধারণ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস। এখানকার চরিত্রগুলো হলো আলম,সাদেক,রাত্রি, আশফাক,মতিন সাহেব, সুরমা এবং বিন্তি। এই উপন্যাসের মূল চরিত্র হলে যুবক মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম।সে মুক্তিযুদ্ধে খবর সংগ্রহের জন্য মতিন সাহেবের বাসায় আশ্রয় নেয়।মতিন সাহেবের মেয়ে রাত্রি নিজের অজান্তেই আলমকে ভালবেসে ফেলে।আলম গুলিবিদ্ধ হয় এবং আশফাক মিলিটারির হাতে ধরা পড়ে তারা তাকে অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের ঠিকানা বলে দেবার জন্য অনেক নির্যাতন করে কিন্তু সে কিছুতেই কারো ঠিকানা বলে না।উপন্যাসটি পড়ে অনেক ভালো লাগল।
Was this review helpful to you?
or
২০১৯ সালে বসে ১৯৭১ সালের সেই শ্বাসরুদ্ধকর সময়কে অতিক্রান্ত করতে চাইলে অবশ্যই এ বইটি পড়তে হবে। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলতে পারছি না!
Was this review helpful to you?
or
"আগুনের পরশমণি" স্যার হুমায়ূন আহমেদের একটি বিখ্যাত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস । ১৯৯৪ সালে এ উপন্যাসের উপর হুমায়ুন স্যার প্রথম একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এই উপন্যাসের নায়ক স্বাধীনতাকামী বদিউল আলম বদি। সে গেরিলা বাহিনীর সদস্য। এ উপন্যাসের বিশেষ চরিত্র হল মতিন সাহেব এবং তার পরিবার। তিনি ঐ সময় সরকারি স্বল্প বেতনের চাকরিজীবী । মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকার মধ্যে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে নিদারুন আতঙ্কে দিন কাটে তার। কিন্তু, এই বিপদের মধ্যেও তিনি নিজ বাড়িতে ঠাই দেন এক তরুণ মুক্তিযোদ্ধার। সে হল তার এক বন্ধুর ছেলে বদি। বদিকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রবল আপত্তি থাকা সত্ত্বেও পরবর্তীতে এই বদিই হয়ে উঠে এই পরিবারের এক অতি আপনজন। বদির নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক অভিযান করে সফলতা লাভ করে। কিন্তু এক এক করে তারা পাক বাহিনীর হাতে বন্ধী হয়। ধরা পড়ার পর গেরিলাযোদ্ধা রাশেদুল করিমকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় থু থু ছিটিয়েছেন পাকিস্তানী মেজরের মুখে। হাতের আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে তাঁর। তবুও পাকবাহিনীর কাছে মাথা নোয়াননি । অবশেষে বদি গুলি খান। তাকে সুস্থ করার মত ডাক্তার ও ঔষধের এর জন্য সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তিনি কি পারবেন সকাল পর্যন্ত বাঁচতে? তিনি কি আরেকটি সূর্যালোক দেখতে পাবেন? এভাবেই শেষ হয় উপন্যাসটির কাহিনী। আজকের তরুণ প্রজন্ম যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেতে চায়, তবে তাদে উচিৎ অবশ্যই এই ‘আগুনের পরশমণি’ বইটি পড়া। কারণ এই একটি বই ই পারে তাকে মুক্তিযুদ্ধের মহাত্মতা সম্পর্কে ধারণা দিতে। তাকে উৎসাহিত করবে এই বিষয়ের উপর আরও বই পড়া ও জানার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_নভেম্বর বইঃ আগুনের পরশমণি লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ ধরণঃ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস প্রকাশনঃঅন্যপ্রকাশ পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ১০৩ মুদ্রিত মূল্যঃ২০০ টাকা ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪.৪/ ৫ #ভুমিকাঃ মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালীর ইতিহাসের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এই প্রেক্ষাপটে এখনো পর্যন্ত রচিত হয়েছে অসংখ্য গল্প, কবিতা, উপন্যাস। হুমায়ূন আহমেদ স্যার নিজেই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচনা করেছেন ৯ টি উপন্যাস এবং ৫ টি গল্প। স্যারের লেখা জনপ্রিয় বইগুলোর মধ্যে এই ‘আগুনের পরশমণি’ অন্যতম। #কাহিনী_সংক্ষেপঃ ১৯৭১ সালের জুন মাস, অর্থাৎ বছরের মাঝামাঝি সময়ের প্রেক্ষাপটে কাহিনীটি রচিত। কাহিনীর শুরুটা হয় একটা চাপা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে। মতিন সাহেব অফিসে না গিয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছেন। সময় যত যেতে থাকে, তার উৎকণ্ঠাও তত বাড়তে থাকে। কিন্তু সে কথা কারো কাছে তিনি প্রকাশ করেন না। এরপরে তিনি বাইরে গেলেন, চুল কাটালেন, সিগারেট খেলেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে, কিন্তু যার জন্য অপেক্ষা করছেন সে কোথায়? এখনো তো এলো না। মতিন সাহেবের স্ত্রী সুরমা। মোটামোটি গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ। রসিকতা খুব কম পছন্দ করেন। মনের কথা মনের মধ্যেই বেশিরভাগ সময় রাখতে পছন্দ করেন। তবে এক সময় তিনি এতটা গম্ভীর ছিলেন না। রাগ করলে কেঁদে ভাসাতেন। কিন্তু পঁচিশ বছরে তার ভেতরে এসেছে অনেক পরিবর্তন। রাত্রি ও অপালা তাদের দুই মেয়ে। রাত্রি বেশ লাজুক স্বভাবের মেয়ে। আর অপালা হলো বইপড়ুয়া স্বভাবের। তবে তাদের দুই বোনের বেশিরভাগ দিন কাটে তাদের ফুপু নাসিমার বাড়িতে। তাদের ফুপু নিঃসন্তান হওয়ায় সে রাত্রি ও অপালাকে অনেক ভালোবাসে এবং সবাইকে বলে তার দুইটি মেয়ে আছে। তাদের ফুপা এই বিষয়টা পছন্দ না করলেও তিনি কখনো তা প্রকাশ করেন না। এরপরে এল মতিন সাহেবের অপেক্ষার মানুষ। বদিউল আলম। সুরমাকে আলম সম্পর্কে আগে থেকে না জানানোর জন্য এবং তাকে না জানিয়ে আলমের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য সুরমা মতিন সাহেবের উপ রাগারাগি করেন। রাত্রিও প্রথমে তাকে পছন্দ করে না। কিন্তু পরে ঠিকই আলমের প্রতি সুরমার মমতা এবং রাত্রির একধরনের ভালোলাগা প্রকাশ পেতে থাকে। আলমের স্বভাব চরিত্রে অনেকটা হিমুর লক্ষণ প্রকাশ পায়। (যদিও হিমু সিরিজ শুরু হওয়ার আগেই এই উপন্যাস রচিত হয়)। মতিন সাহেবের বাড়িতে আলমের থাকার কথা এক সপ্তাহ। এর মধ্যে সে সবসময় ঘরেই থাকে। যখন কোন গোপন মিটিং থাকত কেবল তখনই বের হত। পরিকল্পনা অনুযায়ী একদিন অপারেশনে নামে আলম ও তার সহযোদ্ধারা। সফলও হয় তাদের অপারেশন। কিন্তু ফেরার পথে হানাদার বাহিনীর আক্রমণে কাঁধে গুলি লাগে আলমের। তাকে নিয়ে মতিন সাহেবের বাড়িতে পৌছে দেয় আশফাক এবং ডাক্তার আনতে যায় সে। কিন্তু তাকে ধরে নিয়ে যায় হানাদার বাহিনী। তাকে নানাভাবে তথ্য দেওয়ার জয়ন জোর করা হয়। একে একে ভেঙে ফেলা হয় তার হাতের চারটি আঙুল। কি হলো শেষ পর্যন্ত আলমের? আশফাক কি হানাদার বাহিনীর কাছে সব তথ্য দিয়ে দিল? ডাক্তার কি এসেছিল? সবকিছুর উত্তর রয়েছে বইটিতে। #ব্যক্তিগত_মতামতঃ মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় শহরের মানুষের ভীত সতন্ত্রতা, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অমানুষিক নির্যাতন সবই সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে এই বইয়ে। বইয়ের বর্ণনা এতটাই সুন্দর যে মনে হচ্ছিল সব বাস্তবে ঘটছে। কিছি জায়গাতে খুব খারাপ লেগেছে। বিশেষ করে যখন আশফাকের চারটা আঙুল ভেঙে ফেলা হল, তখন বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠেছে। বিশ্বাসই হতে চাইছিল না যে কিভাবে হানাদার বাহিনীর সৈন্যরা এতো স্বাভাবিকভাবে মানুষের উপর অত্যাচার করত। ওই জায়গাটা পড়ে শিউরে উঠেছি। #ভালোলাগা_লাইনটিঃ ‘ব্যথার সময় মা মা বলে চিৎকার করলেই ব্যথা কমে যায়। এটা কি সত্যি, না এটা সুন্দর একটা কল্পনা?’ আসলেই তো, এই বিষয়টা আমাদের সাথে প্রায়শই ঘটে থাকে, কিন্তু আমরা বিষয়টা মন থেকে অনুভব করি না। আর এই সুন্দর সত্যটাকেও স্যার বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ-এর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস “আগুনের পরশমণি”। ১৯৭১ সালের মে মাস। অবরুদ্ধ ঢাকার একটি পরিবারের কর্তা মতিন সাহেব ট্রানজিস্টার শোনার চেষ্টা করছেন মৃদু ভলিউমে। ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শোনার চেষ্টা করছেন। নব ঘোরাচ্ছেন ট্রানজিস্টারের। হঠাৎ শুনতে পেলেন বজ্রকণ্ঠের অংশ বিশেষ : ‘মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি / রক্ত আরও দিবঃ / এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম / এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। মতিন সাহেবের পরিবারে কয়েকদিন পর হাজির হন উনার বন্ধুর ছেলে বদিউল আলম বদি এবং তার সাথের মুক্তিযোদ্ধারা। মতিন সাহেবের দুই মেয়ে — স্ত্রী সুরমা ও দুই মেয়ে অপলা আর রাত্রি। রাত্রির ফুফু নাসিমা। তার কোন সন্তান নেই। তাই রাত্রি আর অপলাই তার সন্তান। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তার নতুন টেনশন শুরু হয়েছে রাত্রির বিয়ে নিয়ে। তিনি রাত্রিকে বিয়ে দিয়ে দিতে চান। ওদিকে রাত্রি আলমকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। অপলার মা সুরমার সাথে আলমের কথা হয়েছে, এক সপ্তাহর মধ্যেই আলম কাজ শেষ করে এই বাড়ি থেকে চলে যাবে। কিন্তু এক এক করে তারা পাক বাহিনীর হাতে বন্দী হয়। ধরা পড়ার পর গেরিলাযোদ্ধা রাশেদুল করিমকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় থু থু ছিটিয়েছেন পাকিস্তানী মেজরের মুখে। হাতের আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে তাঁর। মাথা নোয়াননি। অবশেষে আসাদুজ্জামান নূর গুলি খান। তাকে সারানোর মত ডাক্তার ঔষধের এর জন্য সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তিনি কি পারবেন সকাল পর্যন্ত বাঁচতে? তিনি কি আরেকটি সূর্যালোক দেখতে পাবেন? এভাবেই শেষ হয় উপন্যাসটির কাহিনী। ১৯৯৪ সালে এটি চলচ্চিত্র হিসেবে চিত্রায়িত হয়। নির্মাণ করেন ঔপন্যাসিক নিজেই। এটিই তাঁর পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।
Was this review helpful to you?
or
বই: আগুনের পরশমণি লেখক: হুমায়ূন আহমেদ জীবন একটা যু দ্ধে র ন্যায়। এখানে উত্থান পতন লেগেই থাকে। এই উত্থান পতন ঠেকাতে কি কোনো পরশমণি আছে? আজ আমরা যারা স্বাধীন দেশে হাঁটাচলা করছি তাদের জন্য এই স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল আরেকদল। আমাদের ই পূর্বপুরুষ। তারাই কি তবে সেই পরশমণি যার কথা গানের মাধ্যমে উঠে এসেছিল; যা আমাদের জীবনকে পূন্য করতে সক্ষম! মুক্তিযু দ্ধে র ইতিহাসের কথা শুনলেই হয়ত অনেকে নাক ছিটকে উঠেন। ইতিহাস বিষয়টা আমারো তেমন পছন্দের ছিল না যতক্ষণ না নিজেই একটা ইতিহাসের সাক্ষী হবার সৌভাগ্য হয়েছিল। ৭১' এর সেই সময়কে অবিস্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই যুগ যুগ ধরে লেখক, কবি, সাহিত্যিকরা তাদের কলম তুলেছেন। রচনা করেছেন শত শত গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস। তাও যেন পাঠকের মনে সেই সময়কাল চির জাগ্রত হয়ে থাকে। তরুন প্রজন্ম যেন অতীত জানতে পিছপা না হয়। তবে আমি আবার ইতিহাসের পর ইতিহাস অনর্গল পড়ে যেতে পারি না। এই ভয়ভীতির পেছনের কারণ স্কুল জীবনের সালের পর সাল মুখস্থ করার দুর্বিসহ দিনগুলি। তবে উপন্যাস পড়ার চেষ্টা করি যখন দেখি লেখক সরস ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। হুমায়ূন আহমেদের লেখার ধরণ আমার অত্যাধিক প্রিয় বলেই 'আ গুনের পরশমণি' হাতে নিয়েছিলাম। তাও বহুকাল আগে। মুক্তিযু দ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস নিয়ে যেমন ধারণা মনে গাঁথা ছিল তা অবশ্য এটা পড়ার পর বদলে যায়। বইটি ১৯৭১ সালকে ঘিরে লেখা হয়েছে। 'আগুনের পরশমণি'র পটভূমি রচিত হয়েছিল গেরিলা বাহিনীর একটি ছোট্ট অপারেশন কে ঘিরে। সেই অপারেশনের সঙ্গী হয়েছিল সাতজন যুবক। তারা তাদের পরিবার ছেড়ে দূর শহরে এসেছে শুধুমাত্র একটা অপারেশনের জন্য। জানে পরবর্তীতে হয়ত বেঁচে নাও ফিরতে পারে, মায়ের সাথে আবার দেখা নাও হতে পারে। অকুতোভয় এই যুবকদের মধ্যে ছিল উৎকণ্ঠার ছাপ। তারপরো সেই ছাপকে তারা গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে নি। দেশপ্রেম কি এমন হয়? দেশপ্রেম কি যুবকের মনে এতোটা অসীম সাহস জুগিয়ে দেয় যে সে জীবনের পরোয়া করা ভুলে যায়? হয়ত তাই। আমি শুরুতেই বলেছিলাম, হুমায়ূন আহমেদের লেখার ধরণ ইতিহাস নির্ভর বই পড়ার প্রতি চিন্তাধারাকেই বদলে দিতে সক্ষম। লেখক এখানে গল্প বলেছেন। সেই গল্প কার্ফুর মাঝে ঢাকা শহরে অবস্থান করা থমথমে লোকগুলোর। যাদের মধ্যে ছিল মতিন সাহেবের পরিবার। ইতিহাসে দেখা গেছে মুক্তিযু দ্ধ চলাকালীন সময়েও কত অপরিচিত যুবক আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে। আমি একসময় ভাবতাম আশ্রয় কেন দিবে? অথচ এখন মনে হয় দুর্দিনে সকল বাঙালি ভাই ভাই। তাইতো মতিন সাহেবের বাড়িই হয়ে উঠেছিল বদরুল আলমের আশ্রয়স্থল। অত্যন্ত চাপা স্বভাবের ছেলেটির প্রতি মুগ্ধ ছিলেন বাড়ির সকলে। অচেনা এক ছেলের সালামতির জন্য দোয়া করতে থাকেন আরেকজন মা। এসব কি অবাস্তব? এখন দাঁড়িয়ে বললে বলল,'না, এসব সত্যি।' লেখক শুধু গেরিলা অপারেশনেই উপন্যাস সীমাবদ্ধ রাখেননি। গেরিলা অপারেশনকে মূল উপজীব্য বানিয়েছেন ঠিক্ই কিন্তু মাঝে টেনেছেন সামাজিক ঘরানার সুর। মতিন সাহেবের নির্ভেজাল পরিবারের মধ্যে ছোটখাটো খুনসুটি। তার বড় মেয়ে রাত্রির জন্য বিয়ের চিন্তাভাবনা থেকে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা। সেই সাথে জেগে উঠা না বলা প্রেম। ভাবছেন তো আলমের কথা? ঠিক কিছুটা এমনই। যু দ্ধের মাঝে শুধু রক্তপাত ঘটে না, উৎকণ্ঠা নিয়ে মানুষ জেগেও থাকে না, প্রেমের তাড়নাও মানুষকে ছুঁয়ে যায়। সেই প্রেম সমাপ্তি হয়ত পায় না তবে সূচনা তো হয়! তাও দেখতে মন্দ না! এই উপন্যাসের সবচেয়ে ভালো লাগার দিক কোনটা ছিল জানেন? একজন সহযোগী চরিত্রের মাঝে ফুটে তোলা চেতনা। আশফাক নামের ছেলেটি ছিল সহযোগী চরিত্র। আলমের মতো মূল অংশে তাকে দেখানো হয় নি অথচ আমির মনে হয়েছে ছেলেটা কি অসাধারণ সাহসী? ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অপারেশন শেষ করে ধরা পড়লেও সে মুখ ফুটে কিছুই বলেনি। কেন বলেনি? তার দলের অন্যদের প্রাণ বাঁচাতে। একটি প্রাণের বিনিময়ে আরো তিনটি প্রাণ বেঁচে যাবে। অথচ বেঁচে থাকার মতো আর কিছু ই নেই। আশফাকের ঘরে ছিল তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী। সে হয়ত তার জন্য অপেক্ষায় ছিল কিংবা এখনো আছে। কিন্তু তাও সে স্বার্থপর হতে চায়নি। দেশের সোনালি ভবিষ্যত দেখেছিল বলেই কি সে নির্মম শারীরিক নির্যাতনের কাছে মাথা নত করেনি! তার হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত ভেঙে নেওয়া হয়। ভাবা যায় সেই দিনের কথাগুলো! জীবন সিনেমেটিক নয়। জীবন ভয়াবহ বাস্তব। এরপর ... এরপরের ঘটনা হয়ত আমার মতো অনেকেরই জানতে ইচ্ছে করছে। আশফাক কি ফিরতে পেরেছিল কিনা এটা জানতেও মন আনচান করছিল। তবে লেখক তার চ্যাপ্টার মাঝপথেই ক্লোজ করে দেন। কেন দিলেন? শুধুই কি সহযোগী চরিত্র বলে? উপন্যাসে কি সহযোগী চরিত্রের একটা সুন্দর সমাপ্তি থাকতে পারে না? তবে লেখকের সরস লেখনী নিয়ে যাদের দ্বিমত আছে তাদের বলব, ঘটনাগুলো বাস্তব জীবন থেকেই প্রভাবিত। বর্ণনা এমনভাবেই করা যেন তা পড়লে মনে হয় পাঠকের চোখের সামনে সিনেমার মতো ভাসছে। সেখানে নিজেকেই আলমের মতো মনে হতে পারে একটি অচেনা পরিবারের সদস্য। কিন্তু এটিকে কেউ অনেক তথ্যনির্ভর মনে করে পড়তে সাজেশন চাইলে আমি বলব না। এটি তথ্যনির্ভর নয় বরং সময়ের একটি ঘটনাকে কেন্দ্রীভূত করে। অতিরিক্ত সাল, রেফারেন্স তেমন টানা হয়নি। সাধারণ উপন্যাস হিসেবে পড়তে চাইলে অবশ্যই বলব বেশ ভালো সময় কাটবে। এরপরেও অন্যদের মতো একটা অভিযোগ আমারো আছে। লেখক তার গল্পে কখনো সমাপ্তি দেননা। সমাপ্তি এমনভাবে টানেন যেন সুখকর বা কষ্ট কোনোটাই বুঝে উঠা যায় না। 'আগুনের পরশমণি' তার ব্যতিক্রম নয়। এর সমাপ্তিতে লেখক গোলকধাঁধা তৈরি করে গিয়েছেন। যেখানে সমাপ্তি পজিটিভ ও হতে পারে আবার নেগেটিভ ও। তবে এটা ঠিক এই গোলক ধাঁধা এন্ডিং এর জন্য হয়ত পাঠকের মনে গল্প পুরো জীবন গেঁথে যায়। তবে অনেকের জন্য তা মহাবিরক্তির কারণও বটে.... পার্সোনাল রেটিং: ৩.৮/৫
Was this review helpful to you?
or
আমি প্রথমে আগুনের পরশ্মনি ছবি টা দেখি,,,দেখে পড়ার ইচ্ছা হয়,,,তাই কিনেও ফেলি ঝটপট,,, টিভি তে দেখা জিনিস গুলো বইয়ে পড়তে যে কি অসাধারন লাগে তা যারা পড়েছে সবাই জানে,,, হুমায়ুন স্যার কে নিয়ে কিছু বলার নাই,,,,উনি অসাধারন,, বইটা অবস্যই সবার পড়া উচিত?
Was this review helpful to you?
or
বদিউল আলম, আশফাক,গৌরাঙ্গ, সাদেক,নুরু,নাজমুল এই কয়জন যুবকের গেরিলা যুদ্ধের কাহিনী নিয়ে বইটি রচিত। মতিন ও সুরমার মেয়ে রাত্রি, ভার্সিটিতে কেমিস্ট্রিতে পড়ে। রাত্রিদের বাসায় আলম ৭ দিনের জন্য আশ্রয় নেয়। সেখান থেকেই সে বিভিন্ন অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন। শেষেরটাই ২ জন মারা যায়। আলম গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাসায় ফেরত আসে আর আশফাক মিলিটারিদের হাতে বন্দি হয়ে বিভিন্ন অত্যাচার সহ্য করা সত্ত্বেও বাকিদের ঠিকানা না বলায় সেখানেই মরতে হয়। আর আলম, চিকিৎসার অভাবে হয়তোবা মারা যায়। রাত্রি মনে মনে আলমকে ভালোবেসে ফেলেছিলো কিন্তু কখনো বলতে পারে নাই। "জোনাকি দেখা যাচ্ছে না কারণ ভোর হচ্ছে। আকাশ ফর্সা হতে শুরু করেছে। গাছে গাছে পাখ-পাখালি ডানা ঝাপ্টাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই।"
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-আগুনের পরশমনি লেখক-হুমায়ূন আহমেদ ধরন-মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত উপন্যাস পৃষ্ঠা-১০৩ মূল্য-২০০ প্রকাশনী-অন্যপ্রকাশ ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি । সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধের তাপ। ঢাকা তখন পাকবাহিনী দ্বারা চারদিক থেকে অবরুদ্ধ। অন্ধকার রাতের নিস্তব্ধতা চিরে চলছে হানাদার বাহিনীর গাড়ির বহর। পুরো দেশের মানুষ তখন ভীত-বিদ্ধস্ত। মতিন সাহেব পায়চারি করছেন। তার তেমন ভালো লাগছে না। একটু পর পর বাড়ির দরজায় কিসের শব্দ হচ্ছে আর তিনি কাজের মেয়ে বিন্তিকে দেখতে পাঠাচ্ছেন।মতিন সাহেবের স্ত্রী এসবে খুব বিরক্ত হচ্ছেন। তিনি অবাক হয়ে জানতে চাইলেন কোন সমস্যা কিনা। মতিন সাহেব কথা এড়াতেই পাশ কাটিয়ে বাইরে চলে গেলেন। মতিন সাহেবের পরিবার বলতে, স্ত্রী সুরমা, দুই মেয়ে রাত্রি, অপলা আর কাজের মেয়ে বিন্তি। রাত্রি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্সে পড়াশোনা করে। আর অপালা ক্লাস এইটে। রাত্রি অসম্ভব রূপবতী আর বেশ চুপচাপ। কিন্তু অপালা তার পুরোই বিপরীত। ভীষণ চঞ্চল আর ভীষণ বই পড়ুয়া। সারাক্ষন বই নিয়ে বসে থাকে। বই ছাড়া অন্য কোনদিকে তার খেয়াল থাকে না। এদিকে বিন্তির কোন কাজ আগ্রহ থাকুক বা না থাকুক। সব থেকে আগ্রহ নিয়ে যে কাজটা করে তা হলো, বাড়ির গেট খোলা। এ কাজ সে বারংবার হাসিমুখে করতে পারে। রাত্রির ফুফু নাসিমা। তাঁর কোন সন্তান নেই। আর তাই তিনি রাত্রি আর অপলাকেই নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। হঠাৎ তিনি ঠিক রাত্রিকে বিয়ে দিয়ে দিবেন। তার মনে হলো রাত্রির বিয়ে দেওয়া উচিৎ। আর সে জন্যই তিনি এই যুদ্ধের সময়ও তোরজোর শুরু করেছেন। তার কিছুদিন পর, যুদ্ধে তখন মুক্তিবাহিনীরা ঝাড়া দিয়ে উঠছে। বিভিন্ন জায়গায় তাদের সাফল্যের কথা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। মুক্তিবাহিনীর পাশাপাশি তখন গেরিলা বাহিনীও বেশ ভালো কাজ করছে। সে সময় হঠাৎ মতিন সাহেবের পরিবারে হাজির হয়, উনার বন্ধুর ছেলে বদিউল আলম। তখন ঢাকায়ও একটি গেরিলা বাহিনী প্রবেশ করে। আর সে বাহিনীর নেতৃত্বে থাকে এই আলম। আলম এ বাসায় উঠার পর মতিন সাহেবের স্ত্রী সুরমা বেশ আপত্তি করেছিলেন। তার আপত্তির কারন বাড়িতে দুটি বড় বড় মেয়ে। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি মন থেকে সায় দেন নি। কিন্তু আলমকে দেখার পর সুরমা তাকে ভীষন পছন্দ করে ফেলেন। আলম সুরমাকে জানায় সে এই বাসায় এক সপ্তাহ থাকবে। আর এই এক সপ্তাহে বড় বড় দুটি অপরেশন করতে হবে তাদের। আর সে ভাবেই উপন্যাস এগিয়ে যায়। অম্ভব সুন্দর এবং খুবই হৃদয়স্পর্শী উপন্যাস আগুনের পরশমনি। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মধ্যবিত্ত একটা পরিবারের অবস্থা, সে সময় সমাজের অবস্থা, যুদ্ধের অবস্থা, মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা এবং যুদ্ধে বিদ্ধস্ত এলোমেলো দেশের অবস্থা সবকিছুই বেশ সুন্দর ভাবে উঠে এসেছে উপন্যাসে । ১৯৯৪ সালে এ উপন্যাস অবলম্বনে লেখক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এবং এটিই তাঁর পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটিও বেশ সুন্দর , কিন্তু বইটি তার চেয়ে বহুগুন সুন্দর । শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটানা মুগ্ধ হয়ে পড়ার মতো, কোথাও কোন প্রকার ছড়া কাটেনি। পুরো উপন্যাসে আত্মা টিপ টিপ করে, কি জানি কি হয়। মুক্তিযুদ্ধের বেশ একটা ছাপ থেকে যায় উপন্যাসে। আর শেষটা আরো বেশি অসাধারণ। উপন্যাসে তখন ভোরে হওয়ার অসম্ভব সুন্দর বর্ণনা। সারারাত অপেক্ষার পর একটু একটু করে যেন আশার আলো ফুটছে । রেটিং-৫/৫ রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/976/আগুনের-পরশমণি
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ সালের জুলাই মাস। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়। মুক্তিবাহিনীর পাশাপাশি তখন যুদ্ধে নেমেছে গেরিলা বাহিনী। জুলাই মাসের ছয় তারিখ। ঢাকায় একটি গেরিলা বাহিনী ঢুকেছে। যার নেতৃত্বে আছে বদিউল আলম নামের ছেলেটি। দেখতে রোগা আর ছোটখাটো। শহরে আত্মীয়-স্বজন থাকলেও নিজের নিরাপত্তা এবং আত্মীয়পরিজনদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। মতিন সাহেব নামের এক ভদ্রলোকের বাসায় এক সপ্তাহের জন্য থাকে বদিউল আলম। মতিন সাহেবের পরিবারে তেমন কেউ নেই। স্ত্রী সুরমা আর দুই মেয়ে রাত্রি, অপালা এবং কাজের মেয়ে বিন্তি। রাত্রি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্সে পড়াশোনা করে। আর অপালা ক্লাস এইটে পড়ে। রাত্রি চুপচাপ স্বভাবের হলেও অপালা ভীষণ ছটফটে। সম্পূর্ণই বিপরীত।আর কাজের মেয়ে বিন্তি কোন কাজ আগ্রহ নিয়ে না করলেও বাড়ির গেট খোলার কাজ সে মহা আগ্রহ নিয়ে করে।বদিউল এ বাসায় উঠার পর সুরমা প্রথম একটু আপত্তি করেছিল তার থাকার ব্যাপারে। কারণ বাসায় দুজন মেয়ে আছে। তাদের নিরাপত্তার কারণেই তার আপত্তি ছিল। কিন্তু বদিউলেরর দূর্বিনীত রুপের কাছে হার মেনে যায় সুরমা।এই বদিউল ছেলেটাকেই এক সময় সুরমা ভীষণ পচ্ছন্দ করে ফেলে। এমনকি এ বাসার বড় মেয়ে রাত্রির মনেও বদিউল নামের ছেলেটি কখন যেন একটু জায়গা করে নেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় মোটামুটি বড়সড় দুইটি অপারেশনের দায়িত্ব নিয়ে আসে বদিউলরা। প্রথম অপারেশনে সাকসেসফুল হয়। দ্বিতীয় অপারেশন শেষ করেই তার এ বাসা ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সব উলটপালট হয়ে যায় সেদিন। কি হয় সেদিন? রাত্রি কি তার মনের কথা জানাতে পারে বদিউলকে??
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, ভালবাসা সবকিছুই অকৃত্তিম। বইটি পড়লে অনুভূতিগুলো জেগে ওঠে। বইটির কিছু বিশেষ লাইন- *** একবার চোখে পানি এসে গেলে খুব মুশকিল। তখন যাবতীয় দুঃখের কথা মনে পড়ে যায়। কিছুতেই আর কান্না থামানো যায় না। (পৃষ্ঠা-৫২) *** অসম্ভব রকম বিত্তবান লোকজন স্ত্রীদের ঠিক পরোয়া করে না। (পৃষ্ঠা-৫৪) *** সাধারণত সাহসী লোকদের বুদ্ধি কম থাকে। (পৃষ্ঠা-৮৪) *** ব্যাথার সময় মা মা বলে চিৎকার করলেই ব্যাথা কমে যায়। (পৃষ্ঠা-৯১) *** বেঁচে থাকার মতো আনন্দ আর কিছুই নেই। (পৃষ্ঠা-৯১)
Was this review helpful to you?
or
ভূমিকাঃ আগুনের পরশমনি মুক্তিযুদ্ধের সময় নিয়ে লেখা। রাত্রি, আলম, সাদেক, আশফাক, মতিন সাহেব, সুরমা এবং বাংলাদেশের গল্প। অজান্তে জন্মানো ভালবাসা, অজানা কিছু অনুভুতি, দেশের প্রতি দায়িত্ব, দেশপ্রেম, গেরিলা যুদ্ধ, লক্ষ্য জয়ের অনন্দ, মৃত্যু যন্ত্রণা, বন্ধুদের জন্য মৃত্যু অলিঙ্গন করে নেওয়া,ইত্যাদি ঔপন্যাসিক তাঁর লেখায় তুলে ধরেছেন। কাহিনীঃ ১৯৭১ সালের জুন মাস, পাকবাহিনী ঢাকায় রাজত্ব করছে এবং মুক্তিবাহিনী ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মুক্তিবাহিনির সদস্যরা এক জায়গাতে আশ্রয় না নিয়ে অলাদা অলাদা আশ্রয় নিয়েছে কেউ তাদের সন্দেহ না করে। বদিউল আলম আশ্রয় নিয়েছে মতিন সাহেবের বাসায়। মতিন সাহেবের পরিবারে তিনি, উনার স্ত্রী সুরমা, দুই মেয়ে রাত্রি ও অপলা আর কাজের মেয়ে বিন্তি। মতিন সাহেবের দুই মেয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য। রাত্রি রূপবতী আর চুপচাপ এবং অপলা চঞ্চল আর আমাদের মতো বইপোকা। অপলা বই পড়ার সময় দুনিয়ার সব কিছু ভুলে যায়, এমন কী সে একি বই কয়েকবার করে পড়ে। রাত্রি এবং অপলা তাদের নিঃসন্তান ফুফুর নাসিমার সন্তানের মতো। তিনি তাদের এতোই ভালোবাসেন যে সুরমাকে রাত্রির বিয়ের চিন্তা করতে মানা করেছেন এবং এই দুঃসময়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মতিন সাহেবের স্ত্রী সুরমা আপত্তি করেছিলেন আলমের বাসায় থাকা নিয়ে এবং মতিন সাহেবের সাথে রাগ করেছিলেন তাকে না জানিয়ে থাকার অনুমতি দেওয়ায়। সুরমা আলমকে চলে জেতে বললেও সে যায়না, এক সপ্তাহ থাকবে জানিয়ে দিয়েছিল। রাত্রিরও আলমের থাকায় অপত্তি ছিল কিন্তু তার পরিচয় এবং উদ্দেশ্য জানার পর অপত্তি করেনি। আলম বাসার সবার মন জয় করে নিয়েছিল। তার চেহারায় তাকে নম্রভদ্র মনে হলেও সে তা ছিল না কিছুটা বাস্তববাদী বলা যায়। বলা যায় উপন্যাসটি হল সাতদিনের এক বুধবার থেকে আরেক বুধবার। এই সাতদিন নিয়ে উপন্যাসটি রচনা করেছেন ঔপন্যাসিক। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ শুরুটা যতো চাঞ্চল্যকর শেষটা ততোটাই গম্ভীর। বইটির মদ্ধ্যে দুঃখ বেদনা, অনুভুতিগুল খুব সহজে উপলব্ধি করা যায়। অনুভুতির নামে কোথাও নেকামোর প্রকাশ ঘটেনি। সহজেই গল্পের মাঝে হারিয়ে যাওয়া যায়। মনে হবে নিজের গল্পই পড়ছি। কখনো অলমকেক খুব অসাধারণ মনে হবে না। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের একজন যুবকে যেমন হওয়ার কথা সে তেমনি। শেষটা ছিল কষ্টের তার থেকেও কষ্টের হল উপন্যাসের শেষ হয়ে যাওয়া। রেটিংঃ ৪.৫/৫
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম- আগুনের পরশমনি জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-হুমায়ূন আহমেদ পৃষ্ঠা-১০৩ মূল্য-২০০ অন্যপ্রকাশ "আগুনের পরশমনি" মুক্তিযু্দ্ধ অবলম্বনে উপন্যাস। ১৯৭১ সালের যু্দ্ধ শুরু হবার বেশ কিছুদিন পর। ঢাকা শহরে তখন গেরিলা প্রবেশ করছে। তখন কার কাহিনী। উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র মতিন সাহেব, তিনি কারো জন্য অপেক্ষা করছেন। সে হলো আলম। সম্পর্কে তার আত্মীয় কেউ নয়। শুধুমাত্র দেশের জন্য যুদ্ধ করতে আসায় ছেলেটাকে তিনি জায়গা দিয়েছেন। আলম এসেছে ঢাকায় গেরিলা অপারেশনে। কয়েকদিনের মাঝে কয়েকটা বড়সড় অপারেশন হবে ঢাকায়। তার নেতৃত্ব দিতে এসেছে সে। মতিন সাহেবের বাসায় তার থাকবার ব্যবস্থা হয়েছে। মতিন সাহেবের বাসায় আলম উঠাতে মতিন সাহেবের স্ত্রী সুরমার বেশ আপত্তি। কেন না মতিন সাহেবের দুটো বড় মেয়ে। রাত্রি আর অপলা। রাত্রি ভীষন সুন্দরী আর চুপচাপ প্রকৃতির। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আর অপলা ক্লাস এইটে। সে পুরো রাত্রির উল্টো। তবে বেশ বই পড়ুয়া। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে মতিন সাহেবের স্ত্রী বেশ শংকিত। মতিন সাহেবের বোন নাসিমা। নিজের কোন সন্তান না থাকায় অপলা আর রাত্রিকে নিজের সন্তানের মতো দেখেন। হঠাৎ তার মনে রাত্রিকে বিয়ে দিবেন। তিনি এই যুদ্ধের সময়ই ছেলে দেখা শুরু করেছেন। ব্যক্তিগত মতামতঃ "আগুনের পরশমনি" উপন্যাসটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে খুবই হৃদয়স্পর্শী উপন্যাস। ঔপন্যাসিক যুদ্ধের সময় ঢাকা শহরের যুদ্ধের চিত্র তুলে দিয়েছেন। যুদ্ধের সময় যুদ্ধে অংশগ্রহন না করাও পরিবার গুলো যেভাবে মুক্তিযুদ্ধাদের সহায়তা করেছেন তাও ফুটিয়ে তুলেছেন। পুরো উপন্যাসটা বেশ সুন্দর। অপলাকে বেশ সুন্দরী হিসেবে দেখিয়েছেন উপন্যাসে। শুধু মাত্র দেশকে বাচাঁবার জন্য মতিন সাহেব সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা ছেলেকে নিজের বাড়ি ঠাই দিলেন। তাকে ছেলের মতো দেখতে শুরু করলেন। একটা সময় সুরমাও যেন পর ভাবতে পারলেন না। এরকম অনুভূতি গুলো উপন্যাসে বেশ তীক্ষ্ম হয়ে ফুটেছে। সব গুলো চরিত্র মিলে আগুনের পরশমনি হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের অসাধারণ একটা উপন্যাস। যদিও এতে যুদ্ধের কোন চিত্র নেই, তবুও আছে দম ভারী করা যুদ্ধের বাতাস।অনেকবার পড়া হয়েছে এই উপন্যাস তবুও যেন ভালো লাগা মিশে আছে। https://www.rokomari.com/book/64425/আগুনের-পরশমণি?ref=atbr_t0_pg0_p39_at1
Was this review helpful to you?
or
তিনমাস পড় ঢাকায় এসেছে আলম। ঢাকায় এসে সে উঠেছে মতিন সাহেবের বাসায়। মতিন সাহেবের দুই মেয়ে — স্ত্রী সুরমা ও দুই মেয়ে অপলা আর রাত্রি। সবসময়ের মতোই নায়িকার চরিত্রে থাকা পাত্রীর মতো দ্বিতীয়া সুন্দরী খুব কমই আছে পৃথিবীতে। রাত্রি 'সেই' টাইপ সুন্দরী ও চুপচাপ ধরনের একটা মিষ্টি মেয়ে। তার বোন অপলা বই পাগলি। সারাক্ষণ নাকের ডগায় বই নিয়ে বসে আছে। তার আর কিছুতেই মন সেই... রাত্রির ফুফু নাসিমা - ইনার কোন সন্তান নেই। তাই রাত্রি আর অপলাই তার সন্তান। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তার নতুন টেনশন শুরু হয়েছে রাত্রির বিয়ে নিয়ে। তিনি রাত্রিকে বিয়ে দিয়ে দিতে চান। ওদিকে রাত্রি আলমকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। মতিন সাহেব খুব দেশপ্রেমী লোক। তার সাথে আলমের পূর্বপরিচিতি না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র দেশের টানে তিনি আলমকে নিজের বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন এই ভরবিপদের সময়ই। অপলার মা সুরমার সাথে আলমের কথা হয়েছে, এক সপ্তাহর মধ্যেই আলম কাজ শেষ করে এই বাড়ি থেকে চলে যাবে। তারপর প্লান মাফিক অপরেশন বাস্তব করার সময় হয়... এরপর বাকিটুকু ইতিহাস। বইয়ের পাতায় আছে... অসম্ভব সুন্দর একটা বই। আমি অনেক কষ্টে চোখের জল থামিয়ে রেখেছিলাম। শেষ পর্যন্ত পারিনি, একেবারে শেষ পাতায় এসে দু ফোটা জল সত্যিই গড়িয়ে পড়েছিল। দারুন হ্রদয়স্পর্শী ... খুব ভাল লেগেছে বইটা।