User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Happy reading!
Was this review helpful to you?
or
এটা বইটা নিয়ে তো আর রিভিউ করা যায় না!কালজয়ী উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
বিভূতিভূষন এর "আদর্শ হিন্দু হোটেল " বইটি অসাধারন একটি বই।কিন্তু এই প্রকাশনীর বইটিতে মাত্রাতিরিক্ত বানান ভুল রয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটা পড়লে বুঝা যায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন কত বড় মাপের লেখক , সময় হলে সবাই একবার ট্রাই করে দেখবেন ,,
Was this review helpful to you?
or
বিভূতির লেখা সেরা উপন্যাসগুলোর একটি।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ সুখপাঠ্য ধ্রুপদী একটি উপন্যাস। উপন্যাসটি পাঠককে শতবছর আগের পশ্চিম বাংলার গ্রামীণ জীবন, হাট-বাজার, অধুনা বৃটিশ নির্মিত রেলস্টেশনে টাইম মেশিনে করে মন্ত্রমুগ্ধের মত ঘুরিয়ে আনবে। একই সাথে আত্মবিশ্বাস, আত্মপ্রত্যয় সৃষ্টিতেও বইটির জুড়ি মেলা ভার।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
ভালো একটি বই! জীবনে বাঁচতে হলে সংকল্প রাখতে হবে!
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ, বইটি পদে অনেক ভাল লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
ভালো বই। ভীষণ পছন্দের হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো লেগেছে বইটি। জহির রায়হানের বইগুলো সত্যিই দারুন। যার কারনে আমি ওনার ভক্ত হতে বাধ্য
Was this review helpful to you?
or
সত্যি কি চমৎকার কাহিনী বেঁধেছেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় , আপনারা নির্ধিদ্বায় বইটি নিতে পারেন আমি শতভাগ নিশ্চিত যেই বয়স এর মানুষই পড়ুক সকলের ভালো লাগবে ।
Was this review helpful to you?
or
আদর্শ হিন্দু হোটেল লিখেছেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এক বিখ্যাত নাম। তাকে চেনেন না এমন লোক খুব কমই আছে। সত্যি বলতে কি, আমি অনেক দিন ধরেই তার লেখা বইগুলো পড়তে চাচ্ছিলাম। বিশেষ করে নবম/দশম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে "আম আতির ভেপু" পড়ার পরে। গল্পটি দারুণ লেগেছিল। তখন থেকেই আমি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই পড়া শুরু করতে চেয়েছিলাম। আজ সেই আশা পূরণ হলো। ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ আমার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পড়া প্রথম বই। বইটির ঘটনাটি ঘটে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ রাজের সময়। বইটির প্রধান চরিত্র "হাজারী ঠাকুর", যিনি রানাঘাটে অবস্থিত একটি হোটেলের রাধুনী। তিনি একজন চমৎকার বাবুর্চি। সকল খতদের দ্বারা প্রশংসিত হলেও তিনি তার মালিক কাছ থেকে যথাযথ সম্মান পায় না। বিশেষ করে "পদ্ম ঝি" এর কাছ থেকে সে শুধু অপমানের পেয়েছে। পদ্ম ঝি তার সাথে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করে, যখনই পারে তাকে অপমান/ছোট করে। হাজারী নিজের একটি হোটেল খুলতে চায়, যেখানে সে তার খোতদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, সেখানে তারা সদ্য রান্না করা খাবার উপভোগ করবেন, কোনো প্রকার বাসি খাবার খেতে দেওয়া হবে না। ৬ বছর এক হোটেলে কাজ করার পরেও তিনি তার প্রাপ্ত সম্মান পায় নেই। পরবর্তীতে কয়েকজন বিশেষ মানুষের সাহায্য পাবার পর সে তার স্বপ্নের হোটেল খুলতে সক্ষম হয়। তার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকে না, বাস্তবতায় পরিণত হয়। বইটি সেই সময়ের জীবন-যাত্রাকে প্রতি ফলিত করে। সেই সময়ের হিন্দু সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছে। বইটি আমাদের সময়ের অনেক আগে লেখা হলেও মনে হয় যে গল্পটি এই যুগের জন্যই তৈরি। কঠোর পরিশ্রম এবং সততার মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করলে টা এক না একদিন পূরণ হবেই। এটি একটি কালজয়ী গল্প। চাকরিতে যতই খারাপ আচরণ করা হোক না কেন হাজারী কখনোই তার মনিবের বিরুদ্ধে যায় নেই। মনিবের দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। গল্পটি বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে, একে অপরকে সাহায্য করার গল্প হলো এটি। গল্পটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। চরিত্রগুলো অসাধারণ ছিল। একটি চরিত্র আছে যাকে আমি খুব ঘৃণা করি, সেটি হল "পদ্ম ঝি", সে একটি জঘন্য চরিত্র, তবে শেষে কিছুটা রেদেম্পশন থাকেলও তার চরিত্র আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। হাজারী দুর্দান্ত চরিত্র ছিল এবং অন্যান্য চরিত্র যেমন "অতসী এবং কুসুম" ও ছিল অসাধারন। বইটি স্লো পেসড। স্লো পেসড এর বই হওয়া সত্ত্বেও এটি আপনাকে আকৃষ্ট করে রাখবে। শেষ পর্যন্ত, আমার মনে হয়েছিল যে আরও গল্প বলা যেত, আমার আরও কিছু পড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল, যদিও আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট। বইয়ের চরিত্র গুলো আশার আলো দেখায়। হাজার কষ্টের মাঝেও তারা নিজেদের ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছে। প্রায় এক শতাব্দী পুরনো হবার পরেও জেনো বইটি বর্তমানের কথাই বলে। সবাইকে পড়ার জন্যে সাজেস্ট করবো। বইটিকে 10 এর মধ্যে 10 রেটিং দিবো। __ English __ Adarsha Hindu Hotel written by Bibhutibhushan Bandyopadhyay Bibhutibhushan Bandyopadhyay is a famous name in Bengali literature. There are very few who don't know him. Honestly, I always wanted to read his works. Especially after reading "Aam Atir Bhepu" in the textbook of class 9-10. The story felt great, an amazing tale. Ever since then I wanted to start reading books by Bibhutibhushan Bandyopadhyay. And "Adarsha Hindu Hotel" is my first book by Bibhutibhushan Bandyopadhyay. The story takes place during the British Raj in the Indian subcontinent. The main character of the book is "Hajari Thakur", who is a chef in a hotel located in "Ranaghat". He is a wonderful cook and is praised by all the clients however he doesn't get the proper respect from his employer. Especially "Padma Jhee", who treats him like a slave, humiliating him whenever she can. "Hajari" always wanted to open a hotel by himself, where he will treat his clients well, where clients will enjoy freshly cooked food. He worked in the hotel for 6 years without getting the respect he deserved. After some events and help from some people, he was able to open his dream hotel. His dream was no longer a dream it has become a reality. The story depicts life from the said time period. Also, a sneak peeks into the Hindu culture of that time period. The book was written way before our time yet the story feels like it was made for this era. It's somewhat of a timeless tale of one trying to accomplish his dreams through hard work and honesty. Where no matter how badly he was treated at his job he never stopped supporting the employees. He stood beside them in their bad time. The story is also about the relationship between father and daughter, a story of helping each other. The story is a wholesome one. It also has elements of Karma in it. The story felt great to me. The characters were engaging. There is one character that I despise, it's "Padma Jhee", a horrible character however in the end there was a bit of redemption yet a horrible character. "Hajari" was a great character and so were other characters such as "Atoshi and Kusum". The book is a slow-paced one. Despite being a slow pace book it will keep you hooked. In the end, I felt like there could have been more story to be told, I had a craving for more, and yet I was satisfied. The characters give a sense of hope that despite all the trouble one can become successful if one truly dreams about something. Truly amazed by how good the book is and how realistic it still feels despite being nearly a century-old book. Will Highly recommend this book to everyone. will rate the book 10 out of 10.
Was this review helpful to you?
or
এই বইটা মানুষকে অনুপ্রেরণা দিবে নিজ স্বপ্ন পূরণ করতে অনুপ্রেরণা দিবে অসাধারণ একটা বই ভাষা নেই আর কিছু বলার।
Was this review helpful to you?
or
ভীষণ সুন্দর সাবলীল একটি বই। মুগ্ধ হলাম। এক দমে পড়ে ফেললাম?
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
বইটা খুবই সুন্দর করে লেখা। একজন মানুষের জীবন যুদ্ধ ফিরে এসেছে। তার সততার সাথে চেষ্টা করে যাওয়া যে কাউকে অনুপ্রাণিত করবে।
Was this review helpful to you?
or
নামঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম প্রকাশঃ ১৯৪০ সাল রেটিংঃ ৪.৮/৫ রিভিউঃ রিফাত আলম সকল মানুষের জীবনেই স্বপ্ন থাকে কিন্তু সবাই তার স্বপ্নের পিছনে লেগে থাকতে পারে না। লেখক এই গল্পে তেমন একজনকেই দেখিয়েছেন যে কিনা তার স্বপ্নকে কাছ থেকে ছুতে পেরেছে। গল্পের প্রধান চরিত্র হাজারি ঠাকুর একজন সহজসরল ভালো মনের মানুষ। যিনি এড়োঁশোলা গ্রাম থেকে প্রথমবারের মত রাণাঘাট রেল বাজারে আসে। তিনি চমৎকার রান্না পারেন। যার রান্নার গুণে সবাই মুগ্ধ। বেচু চক্কত্তির হোটেলে ৭ টাকা মাসিক বেতনে রসুয়ে বামুনের চাকুরি নেয়। সেখানেই তার পথচলা শুরু। সেই হোটেলে তার রান্না যিনি একবার খেয়েছেন তিনি দ্বিতীয় বার এসেছেন। সেই রান্নার প্রশংসা রাণাঘাট ছাড়িয়ে কলকাতায় পৌছায়। সবাই তার প্রশংসা করলেও তার মনিব ও পদ্ম ঝির কাছ থেকে কখনো প্রশংসা পান নি। পাশের হোটেলের যদু বাঁড়ুয্যে তার হোটেলে নিয়ে যেতে চায় কিন্তু সে এই হোটেলের মায়া ছাড়তে পারে নি। ভালোবেসে থেকে যায় বেচু চক্কত্তির হোটেলেই। সে অল্পতেই তুষ্ট থাকে এবং স্বপ্ন দেখতে থাকে সেও একদিন হোটেলের মালিক হবে যার নাম হবে- হাজারি চক্রবর্তী হিন্দু হোটেল রাণাঘাট ভদ্রলোকের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের স্থান। আসুন! দেখুন!! পরিক্ষা করুন!! পদ্ম ঝি তার পেছনে সবসময় লেগে থাকত। উঠতে বসতে তাকে অপমান করত, ঝামেলা করত। কিন্তু হাজারি সবসময় তাকে মনিবের চোখে দেখত ভক্তি শ্রদ্ধা করে পদ্ম দিদি বলে ডাকত। একদিন হোটেলে বাসন চুরি হওয়ায় তাকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয় এবং তার চাকরি চলে যায়। যখন চাকরি চলে যায় তখন তার জীবনে সৌভাগ্য হিসেবে আসে তারই গ্রামের মেয়ে কুসুম। সে তাকে মেয়ের মত ভালোবাসে এবং কুসুমও তাকে বাবার চোখে দেখে। অনাত্মীয় হয়েও যে ভালোবাসা দেখিয়েছে তার কল্যাণে হাজারির সাহস অনেক গুণ বেড়ে যায়। সেই কুসুম, অতসী, নতুন পাড়ার গোয়াল বউ এই তিন অনাত্মীয় নারীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে নতুনভাবে পথচলা শুরু হয়। একসময় সে তার স্বপ্ন পূরণ করে। লেখক দেখাতে চেয়েছেন মানুষের জীবনে খারাপ সময় সবসময় থাকে না। আশেপাশে খারাপ মানুষের ভীরে কিছু ভালো মানুষও থাকে যারা বিপদে পাশে দাঁড়ায়। ভাগ্য তাকে নতুন করে জীবন দেয় সেই নতুন জীবনের সিড়ি বেয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করে। একজন গ্রামের সহজ সরল সৎ মানুষ কিভাবে স্বপ্ন পূরণ করে সেটি লেখক তুলে ধরেছেন। সবমিলিয়ে বইটি অসাধারণ ছিল। সামাজিক রোমান্টিক ঘরনার উপন্যাস যা পাঠক মনে আনন্দ দিবে। লেখক ব্যক্তিজীবন, সামাজিক জীবন, পারিবারিক জীবন খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Such a nice story
Was this review helpful to you?
or
ভালই ছিল
Was this review helpful to you?
or
আসলেই অনেক সুন্দর
Was this review helpful to you?
or
thanks rokomari
Was this review helpful to you?
or
জোস
Was this review helpful to you?
or
বইটা পড়ার পরে আমার এতটাই ভালো লেগেছে যে আমি এখন লেখকের অন্য বইগুলো পড়ার জন্য খুঁজছি ?
Was this review helpful to you?
or
বইঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪৩ ????? বইটির মূল চরিত্রের নাম হাজারি ঠাকুর। রানাঘাটের রেল বাজারের এক হোটেলে সামান্য রাধুনীর কাজ করে সে। তার রান্নার হাত এক কথায় অসাধারণ। কলকাতার বাবুরা পর্যন্ত তার রান্না খেয়ে সুখ্যাতি করে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে রানাঘাটের হোটেলে হাজারি ঠাকুরের রান্না খাওয়ার জন্য। কিন্তু হোটেলের মালিক বেচু চক্কোত্তি এবং তার সহকারী পদ্মঝি এর কাছ থেকে প্রশংসা তো দূরে থাক সবসময়ই বাজে কথা শুনতে হয় তার। পদ্মঝি সবসময় হাজারি ঠাকুরকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে। তবুও হাজারি ঠাকুরের মনে কোনো আক্ষেপ নেই। সারাটাদিন উনুনের তাপ সহ্য করে যখন খদ্দেরের মুখে দুটো ভালো কথা শুনতে পায় তখন তার সকল পরিশ্রম সার্থক হয়। হোটেলের রান্নার সমস্ত কাজ শেষ করে বিকেলে চূর্ণী নদীর ধারে বেড়াতে যাওয়াই ছিলো তার একমাত্র অবসর। সেখানে গিয়ে বসলেই হাজারি ঠাকুরের সব স্বপ্ন আবারও নতুন করে মনে আসে। তার জীবনের একটাই স্বপ্ন রানাঘাটে একটা হোটেল খোলা, তার নিজের হোটেল, আদর্শ হিন্দু হোটেল। যেখানে খাবার থেকে শুরু করে আসনব্যবস্থাও হবে সুরূচিপূর্ণ।কিন্তু হোটেল খোলার মতো সঞ্চয় তার কাছে নেই। এক মেয়ে আর বউকে নিয়ে সংসার চালানোই যার জন্য কষ্টকর সে হোটেল খুলবে কি করে? মাঝে মিথ্যে অপবাদে তার চাকরি যায়। বেড়িয়ে পড়ে চাকরির খোঁজে। নিজ গ্রামের মেয়ে কুসুম তার কন্যাসম, কুসুম নিজের জমানো টাকা দিয়ে হাজারিকে সাহায্য করতে চায়। নিজ বাড়িতে ফিরে গেলে তার মেয়ে টেঁপি তাকে অতসীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। কুসুম, অতসী দুজনই হাজারি ঠাকুরকে অর্থের ব্যবস্থা করে দেয় তার স্বপ্নের হোটেল খোলার জন্য। কিন্তু হাজারি ঠাকুর কি সেই টাকা গ্রহণ করে? খুলতে পারে তার স্বপ্নের "আদর্শ হিন্দু হোটেল "? বইটি আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে। একজন সৎ, পরিশ্রমী মানুষের স্বপ্ন, ধৈর্য, দৈনন্দিন জীবনে মানিয়ে চলার দিক আরও কতো কি উঠে এসেছে এই বইটাতে। হাজারি ঠাকুর চাইলেই তার প্রতি হওয়া অত্যাচারের জবাব দিতে পারতো। কিন্তু তা না করে বিপদের দিনে সে বেচু চক্কোত্তি আর পদ্মঝি এর পাশে দাঁড়িয়েছে। এখানেই অন্যদের সাথে হাজারি ঠাকুরের পার্থক্য। হাজারি ঠাকুরের হাতের রান্নার বর্ণনা শুনে একবার হলেও খেয়ে দেখতে ইচ্ছে হবে তার রান্না। উপন্যাসের মূল শিক্ষণীশ বিষয় হলো, কঠোর পরিশ্রম কখনোই বৃথা যায় না। প্রকৃত গুণ থাকলে একদিন তা সবার সামনে আসবেই।
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর বইটা। বিভূতিভূষণ মানেই এক অনন্য সৃষ্টি। পড়া শুরু করলে শেষ করা অব্দি উঠার যো নেই।
Was this review helpful to you?
or
Motivating
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
good book
Was this review helpful to you?
or
আদর্শ হিন্দু হোটেল অসাধারণ একটি বই। স্বপ্ন নিয়ে বাঁচা প্রতিটা মানুষের বইটি পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
চেষ্টা এবং ইচ্ছাশক্তি পারে একজন মানুষকে বড় করতে-বইটি তার প্রেক্ষাপটে রচিত এবং লেখকের একটি সেরা বই। আশা করি বইটি সকলের ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
কিছু বই পড়ার পর এমন হয়, কেন যে আরো আগে পড়লাম না! এটা তেমনই একটা বই! যেসব বই পড়তে পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগা কাজ করতে থাকে, সেসব বইয়ের শেষের দিকে এসে একটু মন খারাপ লাগা কাজ করে! বারবার মনে হতে থাকে, আহারে একটু পরেইতো বইটা শেষ হয়ে যাবে! এটার ক্ষেত্রে সেই অনুভূতি কাজ করেছে, অনেক দিন পর! খুব সম্ভবত পাওলো কোয়েলহোর দ্য আলকেমিস্ট বইয়ের কথা- "When you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it." এই মর্মবাণীর এক জলন্ত উদাহরণ উপন্যাসের মূল চরিত্র হাজারী ঠাকুর! রাণাঘাটের রেল বাজারে বেচু চক্কতির হোটেলে রান্নার কাজ করেন এই হাজারী ঠাকুর! অসাধারণ তাঁর রান্নার হাত! সুখ্যাতি চড়িয়ে গেছে কত্ত কত্ত দূরে! অথচ সারাদিনোমান খেটেও মন পায়না হোটেল মালিক বেচু চক্কতি কিংবা পদ্ম ঝি'র! উল্টো পদে পদে জুটে লাঞ্চনা! যদিও মুখ বুজেই সব সহ্য করে সে! কাজের ফাঁকে যা একটু অবসর মেলে, তার পুরোটা সময় জুড়েই ভাবে, নিজে যদি এমন একটা হোটেল করতে পারতো! উদ্যোক্তা হওয়ার, নিজে কিছু করার তীব্র একটা আকাঙ্ক্ষা তাঁর মনে! হ্যাঁ, এক নয়, একাধিক হোটেলের মালিক হয় হাজারী ঠাকুর। কিন্তু এসব যেনো তাকে আরো বিনয়ী করে তোলে! যাদের দ্বারা অত্যাচারিত, তাদেরই অন্য সংস্থানের উছিলা হয়ে উঠে সে! সত্যজিৎ রায়ের 'জন অরণ্য' সিনেমা দেখার পর মনে হতো- উদীয়মান উদ্যোক্তাদের ওয়াচ লিস্টে থাকা উচিত এই মুভি! আর এই উপন্যাস পড়ার পর মনে হচ্ছে, #উদ্যোক্তাদের_অবশ্য_পাঠ্য হওয়া দরকার এই বই! আর আপনি যদি হন, ভোজন রসিক তবে আর যায় কই! মাঝেসাঝেই তো আছে সেরাম আয়োজন করে জিভে জল আনা সব রেসিপি! ? একবাক্যে, বড্ড সুখপাঠ্য ছিলো!
Was this review helpful to you?
or
finished this book in 2 days. worth the time.
Was this review helpful to you?
or
Good one
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনি।আমি লেখকের ভক্ত হয়ে গেছি
Was this review helpful to you?
or
ভাল
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
Great book! I read it in one sit
Was this review helpful to you?
or
Easy and light read unlike other books of the legendary writer.
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় দুর্দান্ত
Was this review helpful to you?
or
It’s good
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
Wonderful
Was this review helpful to you?
or
fine
Was this review helpful to you?
or
#priyomukh_rokomari_book_club_review_2021 আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।য়। প্রকাশনী : প্রিয়মুখ বইয়ের ধরণ: উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৬০ মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা রিভিউ লেখক : মুহাম্মদ ওয়াহিদুল ইসলাম হাজারি দেবশর্মা তথা রসুয়ে বামুন হাজারি ঠাকুরের জীবনের উত্থান পতনকে কেন্দ্র করে আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাসের বিচারিত। নিত্যদিনের রন্ধন এবং পরিবেশনের পাশাপাশি পদ্ম ঝিয়ের উপরি পাওনা স্বরূপ ঝাঁঝ বাক্য হজম করে বেচু চক্কতির হোটেলে দিন অতিবাহিত হয় হাজারি ঠাকুরের। খদ্দের কর্তৃক রান্নার সুখ্যাতির প্রমোদ গুণে নিজেকে গর্বিত করে কভু। পদ্ম ঝিয়ের মুখে তার সুখ্যাতির আশা কভু করে না বৈকি সদা মুখরিত থাকে। তার বদলে অদৃষ্টে জুটে হীন বাক্য আর উদরে অর্ধ খাবারের নিয়তি। প্রতিদিনের বিচরণে চূর্ণীঘাটের নিমগাছটি যেন তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার এক চিরচেনা ঘাঁটি। সেদিনও সেই ঘাঁটির কার্য চুকিয়ে নানান ভাবনায় প্লাটফর্মের আবছা আলোয় রাত্রি সাবাড় করে হোটেল ফিরে যা দেখলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না হাজারি ঠাকুর। হোটেলের সমস্ত থালাবাসন যেন সাময়িক অবসর যাপনে সদলবলে হোটেল ত্যাগ করিয়া অজানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। সেই লঙ্কাকাণ্ডে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়ে হাজারি ঠাকুর আর মতি চাকর। চৌর্যবৃত্তির অপরাধে সপ্ত দিবস হাজতের বাসনা পূর্ণ হয় অপরাধশূন্য মতি চাকর আর হাজারি ঠাকুরের। জেল ফেরত রসুয়ের রন্ধন মাংস যেন অপরাধের গন্ধ বিলায়। সমাজের চর্মচোখে সে এখন আর সুখ্যাতি বিলানো হাজারি ঠাকুর নন, যেন শুধুই একজন হাজত কাটা দাগী অপরাধী। দুমুঠো অন্ন জুটাইতে যাযাবরের ন্যায় দিক্বিদিক ঘুরে বেড়ায় হাজারি ঠাকুর, এমন করুণ মুহুর্তে আশীর্বাদ হয়ে আসে ত্রিরত্ন কন্যা সমতুল্য কুসুম, গোয়ালবাড়ির বউ এবং তার মেয়ে আশালতার বান্ধবী অতসী। শেষোক্ত মেয়েটি হাজারি ঠাকুরের জীবনে ভাগ্য দেবী হয়ে আসে। জীবনকে কারো চারদেয়ালের তাঁবে আটকে রাখা যায় না, সে নিজস্ব গতি বলে তার স্বীয় গন্তব্যে ফিরিয়া যাইবে। সাত টাকা মাহিনে চাকরী করা হাজারী ঠাকুর কভু ভাবে নাই যে, শহরের মতো জায়গায় দু দুটি হোটেল গজিয়ে তুলবে, টেঁপিদের নিয়ে দালান কোটার চার দেয়ালে কর্তার হুকুম চালাবে। কভু ভাবে নাই বাড়ু্য্যের ন্যায় সম্ভ্রান্ত, মুনিব সমতুল্য বামুন তাহার পদধূলিতে নিজেকে সৌভাগ্যের চাদরে জড়াবে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, ঈশ্বরের কি লীলাখেলা, প্রতিনিয়ত ঝাঁঝালো কণ্ঠে শাসানো মুনিব আর তার সহযোগী পদ্ম ঝি একসময়কার গুরুর আসনে সমাসীন গুরুজনই আজ তাহারই আশ্রয়ের ছায়াতলে দুমুঠো অন্নের জোগানে শিষ্যের দোরগোড়ায় উঁকি দেয়। তাহারই পদধূলিতে নিজেকে ধন্য মনে করে, এ যেন হাজারির জীবনের সব ঘটনাকে চাপিয়ে চোখের ভেসে উঠা এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি। হাজারি ঠাকুরের জীবনের উত্থান পতনের গভীরে হারাতে আপনাকে অবশ্যই এই উপন্যাসটির সাথে সখ্য গড়ে তুলতে হবে।
Was this review helpful to you?
or
বই: আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখক:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরানা: সামাজিক উপন্যাস প্রচ্ছদ:মোবারক হোসেন লিটন মুদ্রিত মূল্য:২২৫ টাকা প্রথম প্রকাশ: ১৯৪০ পৃষ্ঠাসংখ্যা:১৪৪ আইএসবিএন:৯৮৪-৭০১৪৫-০১২৫-৯ বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক,পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "রবীন্দ্র পুরস্কার" জয়ী,পথের পাঁচালী খ্যাত "বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়" র আরেকটি জনপ্রিয় অনুপ্রেরণামূলক সামাজিক ঘরানার উপন্যাস "আদর্শ হিন্দু হোটেল";যেখানে তিনি তৎকালীন সমাজের এক রাঁধুনি বামুন "হাজারি চক্রবর্তী "র জীবন কাহিনি খুব যত্ন করে তুলে ধরেছেন। কাহিনি সূত্রপাত হয় রাণাঘাটের রেল-বাজারে বেচু চক্কতির হোটেলকে কেন্দ্র করে। আর এই হোটেলের রাঁধুনি হিসেবে কাজ করতেন হাজারি চক্রবর্তী। এছাড়াও এখানে কাজ করতেন "পদ্ম ঝি" যার সাথে হাজারি ঠাকুরের বনিবনাটা ঠিক হয়ে উঠেনি।দু'জন সমপর্যায়ে কাজ করলেও মালিকের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে পদ্ম ঝি হাজারি ঠাকুরের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করতো।সব মিলিয়ে দিন পার করছিলেন হাজারি ঠাকুর।কিন্তু ছেচল্লিশ বছরের এই মধ্যবয়সী ব্যক্তিটির মনে ছিল অগাদ স্বপ্ন।তার মনে সবসময় উকি দিত নিজের নামে এক হোটেল গড়ার স্বপ্ন।সেই স্বপ্নের এক কাল্পনিক রূপও তিনি চিন্তা করেন যা ঠিক এই রূপ- "হাজারি চক্রবর্তীর হিন্দু-হোটেল রাণাঘাট ভদ্রলোকদের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের স্থান আসুন!দেখুন!!পরীক্ষা করুন!!!" বাস্তব, স্বপ্ন,কল্পনা সবকিছুর জালে জড়িয়ে জীবন যখন তার গতিতে চলছিল তখন হাজারি ঠাকুরের জীবনে আসে "কুসুম" নামক একজন যে কি-না নিজের মেয়ে না হলেও তার চেয়ে কম কিছু ছিলো না।দুজনের বেশ যাচ্ছিলো জীবন।কিন্তু সময় কখনও এক তরফা কারও জন্য বয় না;এখানে আসবে ঢেউ, ঝঞ্ঝা,ঝড় যা জীবনের মোড় পাটলে দিবে।ঠিক এমনটাই ঘটে হাজারি ঠাকুরের জীবনে।হঠাৎ তার ঘাড়ে এসে পড়ে চুরির অপবাদ!জেলও খাটতে হয় বটে!তবে সময়ের এই করাঘাত থামাতে পারেনি ঠাকুরকে।তিনি প্রমাণ করেছিলেন জীবনের একটা দুটো অধ্যায় খারাপ মানে পুরো জীবন খারাপ নয়।সাহস, ইচ্ছাশক্তি, তীব্র মনোবল থাকলে নিজের স্বপ্ন পূরণ হতে বাধ্য! তবে কিভাবে তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন জীবনে? তা জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে বইটি। পাঠ প্রতিক্রিয়া: ক্ষুদ্র এক জীবনে কতই না স্বপ্ন লালন করে মানুষ।সেই স্বপ্ন আবার মানে না কোনো বয়স,ধার ধারে না সময়ের।যেকোনো সময় উকি দিয়ে ফেলতে পারে হৃদয় গহীনে।কোনো এক জায়গায় পড়েছিলাম " মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়ো!" এই উক্তিটির যেনো সফল রূপ এই হাজারি ঠাকুর।শত ব্যথা,কষ্টের মাঝেও নিজের স্বপ্ন,ইচ্ছার কথা ভোলেননি।এগিয়ে গেছেন স্বপ্নময় সেই রাস্তায়। ১৯৪০ সালে ইংরেজ শাসনামলে তৎকালীন সমাজের জীবন,পেশা নিয়ে লেখা হয় বইটি।সামাজিক ঘরানার, অনুপ্রেরণামূলক বই হলেও আমার কাছে কিছুটা মনস্তাত্ত্বিক ধরনেরও লেগেছে। শুধু একজন মানুষের স্বপ্ন নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেনি উপন্যাস।এই বইয়ে একসাথে কাজ করতে গেলে যে হিংসা, পরশ্রীকাতরতার উদ্রেক ঘটে তা নিগূঢ় ভাবে দেখানো হয়েছে।এছাড়াও রক্তের সম্পর্ক ছাপিয়েও যে কিছু সম্পর্ক হতে পারে মানুষে তা সুনিপুণভাবে দেখা মিলবে বইটিতে।তাছাড়া তৎকালীন সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থা,পরিস্থিতিও বেশ সুন্দর করে লেখক উপস্থাপন করেছেন যা বইটিকে নিয়ে গেছে এক অন্য মাত্রায়! যদি কিছু কেউ মন থেকে চায় তবে বয়সের রেখা কখনই তার বাধা হতে পারে না।আর সেটারই প্রমাণ হাজারি ঠাকুর।যারা স্বপ্ন দেখে,স্বপ্নের পিছনে ছুটে,কোনো বাধাই তাদের থামাতে পারে না, তারা কখনও ব্যর্থ হয় না।আর এজন্যই বিখ্যাত লেখক পাউলো কোয়েলহো তার অন্যতম বিখ্যাত বই " দ্য আলকেমিস্ট" এ বলেছিলেন- "When you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it." এক স্বপ্নবাজ মানুষের গল্প,যা পাঠকদের চুম্বকের মতো আকর্ষণ করবে যেমনটা করেছিলো আমাকে।হয়তো মিলে যাবে অনেক পাঠকের জীবনের সাথে,কেউ বা পাবে নতুন প্রেরণা নিজের স্বপ্নের কাছে পৌঁছানোর আবার কেউ বা পেতে পারে নতুন করে স্বপ্ন দেখার উদ্যোম কারণ স্বপ্নই মানুষকে বাঁচায় আর দিন শেষে... "মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়ো" প্রিয় উক্তি: "বাঙালির মাঝে হাজারীর মতো মানুষ যত বাড়বে,ঘুমন্ত বাঙালি ততই জাগিবে।এরা পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে গলায় তুলসীর মালা পড়িয়া পরকালের জন্য তৈরী হয়।দেখছো না আমাদের গাঁয়ের দশা,ইহকালই দেখলি নে,ভোগ করলি নে।তোদের পরকালে কি হবে বাপু,সেখানেও তো সেই ভূতের ভয়,পরকালে নরকে যাবি,তুমি কি ভাবো। অকম্মা, অলস, ভীরু লোকদের স্বর্গে জায়গা দেন না-কি ভগবান!" রেটিং:৪.৮/৫ সাদিয়া ইসলাম সিনজা ভেটেরিনারি সাইন্স বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
Was this review helpful to you?
or
#priyomukh_rokomari_book_club_review_2021 রিভিউ লেখক : মালিহা রহমান ◑ বই : আদর্শ হিন্দু হোটেল ◑ লেখক : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ◑ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৬০ ◑ প্রকাশনা : প্রিয়মুখ জীবনে চলার পথে বিভিন্ন বাঁধা বিপত্তি আসলেও স্বপ্ন দেখতে কোনো বাঁধা নেই।স্বপ্ন দেখতে মানাও নেই। কারো একটু একটু করে সময়ের সাথে স্বপ্নের চাকা ঘোরে,কারো কারো বা অধরাই রয়ে যায়।বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় তার 'আদর্শ হিন্দু হোটেল ' নামক উপন্যাস এ মানুষের স্বপ্নের চাকা ঘুরে কিভাবে মানুষের দিন বদলায় তাই তুলে ধরেছেন।যার কারণে তার বাকি উপন্যাসের চেয়ে আদর্শ হিন্দু হোটেল খানিকটা আলাদা ধাঁচের। সামাজিক এই উপন্যাসের মূল চরিত্র হাজারি ঠাকুর,এক গরীব বামুন রাঁধুনী।বেচু চক্কোত্তীর হোটেলে গত ছয় বছর ধরে মাত্র সাত টাকা মাইনে তে চাকুরী করা এই লোকটির মনে নেই কোনো অহংকার, নেই কোনো দাম্ভিকতা।তার রান্নার হাত ভালো জেনে বহু কাস্টমার বেচু চক্কোত্তির হোটেলে খেতে এলেও,সেটার স্বীকারোক্তি হোটেল মালিক কিংবা প্রভাবশালী পদ্মঝি কেউ দিতে চায় না । সরল সোজা এই হাজারি ঠাকুর হাজার লাঞ্চনা , গঞ্জনা সত্ত্বেও নিজের মনিবের প্রতি অগাধ ভক্তি রেখে একনিষ্ঠ মনে কাজ করে যায়।তবে মনে মনে নিজের 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' খোলার স্বপ্ন লালন করে সারাক্ষণ। আর সেই পথচলায় তার সঙ্গ দেয় একটাই স্বপ্ন- তার নিজের হোটেল হবে, যেখানে বাইরে লেখা থাকবে, হাজারি চক্রবর্তীর হিন্দু হোটেল রাণাঘাট ভদ্রলোকদের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের স্থান। আসুন! দেখুন!! পরীক্ষা করুন!!! বলা যায় হাজারী ঠাকুর, বেচু চক্কোত্তী, পদ্মঝি,মতি চাকর,কুসুম,অতসী,টেপি প্রমুখ চরিত্রের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য হাজারী ঠাকুরের জীবনের উত্থান পতন। ১৯৪০ দশকে লেখা এই উপন্যাসকে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসও বলা যায় । কিভাবে হাজারী ঠাকুর শত খারাপ ব্যবহারের পরিবর্তে সামান্য ভালো ব্যবহার পেয়ে সন্তুষ্ট হন,কিংবা নিজে হোটেল মালিক হয়েও বেচু চক্কোত্তীর সামনে গেলে ম্রিয়মাণ হয়ে যান,নিজের পুরোনো অস্তিত্ব টের পান বারে বারে তাও খুব সুন্দর করে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন। পদ্মঝি নিজেও যেখানে হাজারী ঠাকুরের মত কর্মচারী,সেখানে একই অবস্থানে থেকেও কিভাবে বাকিদের উপর খবরদারি করে, হাজার অপমান করা সত্ত্বেও হাজারী ঠাকুর প্রতিবাদ না করে চুপ করে সব সয়ে যান, এসবও খুব সাবলীল ভাবে বর্ণনা করেছেন বিভূতিভূষণ। হাজারী ঠাকুরের এই ধৈর্য্য, আনুগাত্য,সয়ে যাওয়ার স্বভাব তাকে পরবর্তিতে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়। হাজারী ঠাকুরের স্বপ্নের প্রধান অন্তরায় ছিলো অর্থকড়ির সমস্যা। যার জন্য বারবার বাঁধাগ্রস্ত হতে থাকলেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরিচিত স্বল্পপরিচিত নারী,যাদের সাথে ছিলোনা তার রক্তের বাঁধন,তারা হাজারী ঠাকুরকে সাহায্য করতে চান, নিজের শেষ সম্বল দিয়ে। এই যে মানুষের শ্রদ্ধা ভালোবাসা কিংবা বিশ্বাস, এতেই হাজারী ঠাকুর ধন্য হয়ে যান। এখানে আমরা দেখি আমরা মানুষ কত বিচিত্র এক প্রাণী। একসাথে দীর্ঘ সময় থেকেও যেখানে হাজারী ঠাকুর কে অবিশ্বাস করে চাকরি থেকে বের করে দেয় তার মনিব,অন্যদিকে অপরিচিত মানুষ বিশ্বাস করে তার শেষ সম্বল হাতে তুলে দেয় হাজারীর হাতে। এখানে লেখক ফুটিয়ে তোলেন মানুষের সাথে মানুষের এক অপূর্ব বন্ধনের চিত্র।কুসুম,গাঁয়ের অচেনা বধূ কিংবা অতসী এরা সকলে আসলে ভালোবাসার প্রতীক, যা রক্তের সম্পর্ক কিংবা বহুদিনের পরিচয় ছাড়াও গড়ে ওঠে বিশ্বাস আর সততার মাধ্যমে। রান্নার প্রতি ভালোবাসা, সৎ সাহস, অসম্ভব ধৈর্য্য এবং সারল্য হাজারী ঠাকুরের ভাগ্যের চাকা ঘোরায়।গ্রামের মেয়ে অতসীর ও কুসুম এর সাহায্যে হাজারী ঠাকুর খোলেন তার স্বপ্নের হোটেল। যত দিন যায়,তত যেন স্বপ্ন বাস্তবতা হয়ে থাকে,এদিকে যারা এতদিন হাজারী ঠাকুরকে অতি নগন্য মানুষ হিসেবে ঠাওরাতো,তারাই এসে ঠাকুরের সাথে কথা বলে সম্মানের সাথে।তারপরেও তার স্বভাবসুলভ ভালোমানুষি যায় না,পূর্বে যারা মনিব ছিলো,তাদের প্রতি ভক্তি যায় না। যারা তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলো,সকলকেই তিনি কাছে টেনে নেন,জায়গা করে দেন নিজের সাধ্যমতো।এটা যেনো এক অপূর্ব শিক্ষণীয় বিষয়,যা দ্বারা লেখক বুঝিয়ে দেন,ক্ষমা ভালোবাসার আরেক রুপ।হাজারী ঠাকুরকে সবাই দুর্বল ভাবলেও তিনিই আসলে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিলেন,যিনি কষ্ট সহ্য করে গিয়েছেন, তবু স্বপ্ন দেখা ছাড়েন নাই,যতদিন না তা পূরণ হচ্ছে এবং পূরণ হওয়ার পরেও তিনি সকলের প্রতি একই রকম স্বভাব,ভালোবাসা বজায় রেখেছিলেন,যা তার মহানুভবতার নির্দেশক এবং একই সাথে তার জীবনের সফল হওয়ার মূলমন্ত্র। 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' পড়তে গেলে আসবে না কোনো একঘেয়েমি। প্রতি বাঁকে বাঁকে লেখক বিভিন্ন পরিস্থিতি দেখিয়েছেন,দেখিয়েছেন মানুষের আচার ব্যবহার কিভাবে বদলায় পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে।সাথে এও দেখিয়েছেন মানুষের কাছে অর্থের অবস্থান সবচেয়ে উপরে।যা এই ভোগবাদী সমাজের ক্রুর সত্য।উপন্যাসে লেখক কিভাবে ভাগ্যের ফেরে দুর্বল ও শক্তিশালীর জায়গা পরিবর্তন হতে পারে তা খুবই আকর্ষণীয় ভাবে চিত্রায়িত করতে পেরেছেন,যার কারণে 'আদর্শ হিন্দু হোটেল ' উপন্যাসটি চিন্তার খোরাক জোগায় সব পাঠকের মনে,রেখে যায় এক অপূর্ব ভালোলাগার পরশ।
Was this review helpful to you?
or
নিজের সাধ পূরণ করার এক অনন্য কাহিনী এই উপন্যাস। সুখপাঠ্য একটি উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
onk banan bhul
Was this review helpful to you?
or
কিছুদিন আগেই পড়ে শেষ করলাম বিভূতিভূষণের একটা মাস্টারপিস। বইটার কভারটার মতই ভিতরটা অনেক সুন্দর। এবার একটু পাঠক প্রতিক্রিয়া বলি গল্পের প্রধান চরিত্র নাম হল হাজারী ঠাকুর রেলওয়ে স্টেশনের ছোট্ট একটা হোটেলে ৭ টাকা মাইনের রাধুনী সে। তার রান্নার সুনাম অনেক। হাজারী ঠাকুরের অনেক দিনের স্বপ্ন একটা নিজের হোটেল তৈরি করার। শত বাধা পেরিয়ে আসলেই কি তৈরি করতে পারে হাজারী ঠাকুর নিজের স্বপ্নের হোটেল জানতে হলে বইটি পড়তে হবে। অসম্ভব সুন্দর একটা বই। শুধুমাত্র পদ্মঝি বাদে সবাইকে খুব ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
A inspirational book.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ কথার চেয়েও বেশি কিছু থেকে থাকলে সেটাই বলা উচিত এই বইয়ের বেলায়।
Was this review helpful to you?
or
বইটা পড়ে একটা সময়ের জন্য রাণাঘাটে হারিয়ে যাই।
Was this review helpful to you?
or
পড়তে অনেক দেরি করে ফেলেছি বলেই মনে হয়। এমন একটা উপন্যাস, যা সকলের পড়া উচিত। আত্মসম্মানবোধ, স্বভাব, চরিত্র, কৃতজ্ঞতাবোধ অধ্যবসায় এর যে নমুনা "হাজারি ঠাকুর" চরিত্রের মাধ্যমে লেখক তুলে ধরেছেন তা অন্তত একবার সকলের পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
oshadharan boi
Was this review helpful to you?
or
আমি এই বই পড়ে দুইটা বিষয়ে অবগত হয়েছি ১.সততা ২.পরোপকার দুইটা বস্তু থাকলে মানুষের জয় হবেই?
Was this review helpful to you?
or
Inspirational
Was this review helpful to you?
or
পড়িনি এখনো
Was this review helpful to you?
or
.
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো মানের বই
Was this review helpful to you?
or
স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে শিখিয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
এক নিমিষে শেষ করার মত একটা বই। পড়ে অনেক ভাল লাগছে ।
Was this review helpful to you?
or
The book is inspiring. বিভূতিভূষণ এর লেখা এমনি ই সাবলীল। ভাল লেগেছে। Print Quality: Good
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো পড়ার মতো একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
এই বইয়ের তুলনা হয়না!!!!
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি মানুষকে হাল না ছাড়ার শিক্ষা দেয়। হাজারি ঠাকুরের ৭ টাকা বেতনের রাধুনি থেকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের গল্প এটি। কাজের প্রতি ভালোবাসা, হাল না ছাড়ার মানসিকতা কিভাবে ভাগ্য পরিবর্তন করে তা বইটি না পড়লে অজানাই থেকে যেতো।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটা বই!
Was this review helpful to you?
or
Great book'
Was this review helpful to you?
or
রকমারি থেকে কেনার কারন হল সংগ্রহ রাখার জন্য । অসাধারন একটা গল্প ।ছোট সারমর্ম লিখে এর গল্প কে প্রকাশ করার সামর্থ নাই।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনী।
Was this review helpful to you?
or
রন্ধনশিল্পে অসাধারণ নৈপুণ্যের অধিকারী হাজারী ঠাকুরের একজন সাধারণ রাঁধুনি হতে হোটেলের মালিক হয়ে ওঠার কাহিনী নিয়েই কালের নীরব দর্শক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর “আদর্শ হিন্দু হোটেল”। রোমাঞ্চপ্রিয় টেঁপি (আশালতা-হাজারির কন্যা), নিঃস্বার্থ মানব দরদী মন্দভাগ্য অতসী (জমিদারের মেয়ে- যার দানের কাছে হাজারী চির ঋণী), কর্মচঞ্চল অতিথিপরায়ণ কুসুম (হাজারীর আদর্শ হিন্দু হোটেলের একজন অংশীদার), বেচু চক্কত্তি (হাজারীর মনিব, যার হোটেলের হাজারী ৬ বছর রাঁধুনির কাজ করেছে), মুখরা পদ্ম ঝি (যার দু চোখের বিষ ছিল হাজারী) প্রমুখ এই গল্পের অন্যান্য বলশালী চরিত্র। প্রধান চরিত্র হাজারী দেবশর্মার ধৈর্য, বিনয়, আনুগত্য আর একাগ্রতা লেখকের রচনাশৈলীর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে।
Was this review helpful to you?
or
তুচ্ছ মামুলি একটা বিষয়কেও যে খুব যত্ন করে ফুটি তোলা যায় তা দেখতে পাই বিভূতিভূষণের রচনায়।কি ছোটখাটো বিষয়ও তার কলমের ছোয়ায় মহৎ হয়ে উঠেছে।এই গল্প রেললাইনের পাশে খাবার হোটেলের রান্নার ঠাকুরের।যার রান্নার গুণে দূর দূরান্ত থেকে আসা ভদ্রজনরা অন্য হোটেলে না গিয়ে তার মালিকের হোটেলে আসত।কিন্তু সে কখনই মালিকের কাছে যথার্থ সম্মান পায়নি,এমনকি ঝি এর কাছ থেকে সকাল বিকেল অজস্র কটুবাক্য শুনতে হয়েছে তাকে।সে কাজ ছেড়ে চলে যায় বলতে চুরির দায় চাপিয়ে দিলো সে সেখানে আর থাকতে পারে না।কত জায়গায় ঘোরে,ভালো চাকরিও পায়,কিন্তু সেই হোটেলের রান্নার মতো সুখ সে আর কোথাও পায় না।তাই নিয়তি তাকে আবার এনে ফেলে সেই হোটেলে।কিন্তু আবারও লাঞ্চনা।কিন্তু এবার সে অন্য পথে যায়।জীবনের সাধ "আদর্শ হিন্দু হোটেল" খোলে সে।এ কাজে দুটি রক্তসম্পর্কের বাইরের মেয়ে তাকে সাহায্য করে।তাকে আর পিছু ফিরতে হয় না।মানুষ যে তার চির আরাধ্য লক্ষ্যে একদিন না একদিন পৌঁছবে আর এ পথে কেউ তার সঙ্গী কেউ তার বাঁধা হয়ে সম্মুখে আসবে এ তো সেই গল্পই।আর সাথে আছে আমাদের শ্রেষ্ঠ কথাকারের মমতা।
Was this review helpful to you?
or
রাতের আকাশে জোছনা ঝরছে এমন এক প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ননা করতে সব সাহিত্যিক'রা যদি একত্রিত হন আমার মনে হয় না বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যাইয়ের থেকে সুন্দর একরে তা কেউ বর্ননা করতে পারবে । তেমনি একজন জীবন সংগ্রামী মানুষের গল্প এই আদর্শ হিন্দু হোটেল । গল্পে গল্পে প্রতিটি চরিত্রে যেমন পূর্ন জীবন্ত হয়েছে তেমনি তার লেখনী ছিল অনেক সাবলীল । গ্রামীন মানুষের সরলতা যেমনি লিখেছেন তিনি তেমনি লিখেন এখানে প্রান্তিক শহুরে নিম্ন মধ্য আয়ের মানুষের জীবন । একজন মানুষের লেগে থাকা তার সাধারনতার অসাধারন ক্ষমতা তার দক্ষতা তার সঠিক স্বপ্ন সঠিক সিদ্ধান্তই তার সফলতার মূলমন্ত্র ।পড়া শেষে বলতেই হবে খুব সবলিল অসাধারন এক বই আদর্শ হিন্দু হোটেল ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_এপ্রিল 'বাবুর হোটেলে কি কাজ আছে? রসুয়ে-বামুনের কাজ জানি আজ্ঞে।' 'নাম কি?' 'আজ্ঞে হাজারি দেবশর্মা, উপাধি চক্রবর্তী।' 'বাড়ি কোথায়?' 'এড়োশালা গ্রামে বাবু।' 'তিন দিন এমনি রাঁধো - তার পর সাত টাকা মাইনে দেবো আর খেতে পাবে।' সেই যে পাঁচ বছর আগে বেচু চক্কোত্তির রাণাঘাটের ভাতের হোটেলে রান্নার কাজ নিয়েছিল হাজারি ঠাকুর, সেখানেই আছে। মা'র কাছে রান্না শিখেছিল, বলতে নেই রাঁধে সে বেশ ভালোই৷ তার হাতের মাংস কি নিরামিষ চচ্চড়ি যে খেয়েছে, এই হোটেলে ফিরে আসবেই। খদ্দেরদের মধ্যে তার বেশ সুখ্যাতি থাকলেও হোটেল মালিক তার স্বীকৃতি দেয় না। বেতন বাড়েনি এক আনাও, পান থেকে চুন খসলে মাইনে কাটা যায়, আর প্রতিদিন অপমান গঞ্জনা তো আছেই। বেচুবাবুর হোটেলের তদারকি করে পদ্ম ঝি, বাবুর সাথে তার সম্পর্কটা নিয়ে অনেক কানাঘুঁষা আছে। তবে বাবু যে পদ্ম ঝির ব্যাপারে অন্ধ সে সবাই জানে, ঝি যা খুশি বলে, হোটেলের কলাটা মুলোটা তার ঘরেই যায়। পদ্ম ঝি হাজারিকে দেখতে পারে না দু'চোখে, উঠতে বসতে কথা শোনায়। যা কিছু দোষঘাট হয় হাজারির ঘাড়েই চাপিয়ে দেয়। হোটেলে খদ্দের ঠকানোর হাজারটা ফিকির আছে। কখনো পঁচা মাছ ভেজে দিতে হয়, ডালে ফেন মেশানো, বাসি ভাত, নষ্ট দই এসব পরিবেশন করতে হাজারি ঠাকুরের মন সরে না। কিন্তু পদ্ম ঝির চোখ রাঙানিতে বাধ্য হয়েই করতে হয়। দুপুরে উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে একটু ফুরসত পেলে চূর্ণী নদীর ধারে গিয়ে বসে যখন, হাজারি ঠাকুর বিভোর হয় নিজের একটা ভাতের হোটেলের স্বপ্নে। যে হোটেলে খদ্দের ঠকানো হবে না, থাকবে হাজারি ঠাকুরের আন্তরিকতা আর রান্নার জাদু। কত আশা, কত পরিকল্পনা! কিন্তু হোটেল খুলতে কি কম টাকা লাগে? মাস শেষে গ্রামে স্ত্রী কন্যাকে টাকা পাঠিয়ে কি-ই বা রয়। তাতে নিজের ব্যবসা করা যায় না! এদিকে বেচু চক্রবর্তীর হোটেলের দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারও দিন দিন বেড়ে চলেছে। হাজারি বামুন কি পারবে তার স্বপ্নের 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' - কে সত্যি করতে? পাঠপ্রতিক্রিয়া: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিখ্যাত উপন্যাস 'আদর্শ হিন্দু হোটেল'। কপটতা আর অপমানের জবাবে সহজ সরল ভালোমানুষি দিয়ে হাজারি ঠাকুরের এগিয়ে চলার গল্প এটা। সেইসাথে সৎ থেকে স্বপ্ন দেখে অটুট লক্ষ্যে পৌঁছানোর অনুপ্রেরণাও হতে পারে হাজারি ঠাকুর। গল্পে প্রথম থেকেই হাজারি ঠাকুরের চরিত্রটি পরিষ্কার, নীতিবান সৎ মানুষ সে। কিছুটা গরীরের আজন্ম লালিত ভীতিও তার মধ্যে রয়েছে, যার কারণে অবিচারের প্রতিবাদ করতে পারে না। কিন্তু যোগ্যতা যার আছে, সেই হীরের দ্যুতি ঠিকই ছড়িয়ে যায়। হাজারি ঠাকুরের জীবনে স্নেহ-মমতার চাদর বিছিয়ে দেয় কুসুম - অতসীর মত কন্যাসম চরিত্রগুলো৷ নিঃস্বার্থভাবে যারা নিজের অর্থ ঠাকুরের হাতে তুলে দেয়৷ ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে মানুষ ভালোটাই পায়, এমনটাই দেখাতে চেয়েছেন লেখক। ভাতের হোটেলের খুঁটিনাটি পড়তে দারুন লাগে। হোটেলের জীবনযাত্রা, বাজার সদাই, স্টেশনের যখন যাত্রীরা এসে নামে, তাদের খাওয়ানো, কোলাহল সবকিছুর মধ্যে একটা উত্তেজনা বোধ করছিলাম। পদ্মঝি প্রথম থেকেই তার সাথে খারাপ আচরণ করে। মিথ্যে চুরির দায় চাপায়, নিজে অন্যায় করে হাজারিকে দোষী বানায়, কুসুমকে জড়িয়ে কুকথা বলে। কিন্তু এক সময় পদ্ম যখন বেচুবাবুর হোটেলের সঙ্গে তার সম্পর্কটা হাজারিকে জানায় তখন পদ্মর উপরেও আর পাঠকের রাগ থাকবে না। হাজারি ঠাকুরের যখন দুর্দিন, তখন কাজের খোঁজে সে ভবঘুরের মতো হেঁটে বেড়িয়েছিল গ্রামে গ্রামে। অনেকে তাকে গরীব বামুন হিসেবে খাইয়েছিল, আশ্রয় দিয়েছিল। পরবর্তীতে সফল হাজারি আবার সেই পথে, সেইসব চরিত্রের সাথে পুনরায় দেখা হওয়ার অংশটা ভালো লেগেছে। গল্পে এসেছে নরেন, বংশী, যতীন, যদু বাঁড়ুয্যে, রতন ঠাকুর সহ আরো চরিত্র। তবে চরিত্রগুলোকে বিভূতিভূষণ বড় বেশি সরলীকরণ করেছেন। হাজারির জীবনে উত্থান এর সাথে কিছু পতনও আমি আশা করেছিলাম। এতোটা এক ধারায় গল্পটা বয়ে যাওয়াটা একটু একঘেয়ে ছিল। বাস্তবে মানুষের জীবনে আশা-নিরাশা সব মিলেমিশেই চলতে থাকে। নতুন সময়ের পাঠক যারা তাদের কাছে বইয়ের ভাষা একটু অসহজ মনে হতে পারে। তবে গল্পে একবার মিশে যেতে পারলে সেটা অতিক্রম করে নিতে পারবেন। হাজারি ঠাকুরের গল্পটি একজন খেটে খাওয়া অধ্যবসায়ীর কথা। নিজের সততা এবং লক্ষ্যজয়ের তাড়নার জোড়ে যে সফলতার শিখরে পৌঁছানো সম্ভব এবং কর্মের মাধ্যমেই সকল অপমানকে জবাব দেওয়া যায় - সেটাই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই গল্পের মূল বার্তা ছিল। বই: আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম প্রকাশ: ১৯৪০ ইং সংস্করিত মুদ্রণ: ফেব্রুয়ারি ২০১৮ প্রকাশনায়: মাটিগন্ধা মুদ্রিত মূল্য: ২০০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
মানুষের কিছু বই অবশ্যই পড়া উচিত। তার ভেতর এটা একটা
Was this review helpful to you?
or
এখনকার সময়ের তথাকথিত মোটিভেশনাল ভিডিও না দেখে, গঁদ বাধা বই না পড়ে সকলের এই বইটি অন্তত একবার পড়া উচিৎ। অসাধারণ! অসাধারণ! এবং অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
বইটা যখন প্রথম ফেসবুক এ দেখি, ভেবেছিলাম ফালতু কোনো ধর্মের বই হবে। এরপরে কিছুদিন আগে হঠাৎ আবার চোখের সামনে বইটা আসলো। রকমারি তে পাঠকদের রিভিউ দেখে না কিনে আর পারলাম না। পড়ার পর বুঝেছি কি মিস করেছি এতদিন। আমার পড়া শ্রেষ্ঠ ১৫ টা বইয়ের মধ্যে এটা থাকবে। এক বসায় পরে ফেলার মতো একটা বই। ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
বিভূতিভূষণের এক অনবদ্য সৃষ্টি আদর্শ হিন্দু হোটেল। আমার পড়া বিভূতিভূষণের প্রথম উপন্যাস। পাঠকে এমনভাবে মোহিত করেছে যে শেষ হবার পরে ও আরও পড়ার ইচ্ছা জাগে।
Was this review helpful to you?
or
বই - আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ধরন - উপন্যাস পটভূমি - বঙ্গ প্রকাশিত - ১৯৪০ প্রকাশনী - প্রিয়মুখ পেইজ সংখ্যা - ১৬০ পৃষ্ঠা প্রচ্ছদ মূল্য - ৩০০ টাকা রেটিং - ০৪/০৫ (ব্যক্তিগত মতামত, এত বড় মাপের লেখকের লেখার রেটিং করার মতো ন্যূনতম যোগ্য আমি না) রিভিউয়ার - Md Naimul Islam ? কিছু কথাঃ মানুষ কখন বুড়ো হয় জানেন? মানুষ বুড়ো হয়ে উঠে তখন; যখন তারা স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেয়। তাদের জীবন থেকে উত্তম আশা-ভরসা শেষ হয়ে যায়, যাদের জীবনে পূরণ করার মতো কোনো স্বপ্ন নেই তাদের জীবন বড়ই কষ্টকর আবার একদল মানুষের চোখে স্বপ্ন খেলা করে, তীব্র আকাঙ্ক্ষা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ছুটে চলে তার স্বপ্নের পথে তখন তার শক্তি এসে ভর করে তার শরীরে। তেমনি এক স্বপ্নবাজ মানুষকে নিয়ে লেখা আদর্শ হিন্দু হোটেল। উপন্যাসটি পড়ার আগে আপনাকে অনুরোধ করবো কল্পনায় নিজেকে টাইম মেশিনে নিয়ে নিজের চিন্তাধারাকে কয়েক বছর পিছিয়ে নিয়ে পড়া শুরু করুন। তাহলে সব কিছু অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পারবেন। ? চরিত্রঃ * হাজারি ঠাকুর - রসুইয়ে বামন (রাধুনী) কিন্তু স্বপ্ন তার আকাশ ছোয়া। * বেচু চকোত্তি- রানাঘাটের হোটেলের মালিক। * পদ্ম ঝি - বেচু চকোত্তির ডান হাত। কোন এক অজানা কারনে তার কথা ফেলতে পারেনা চকোত্তি মশায়। * কুসুম - হাজারী ঠাকুরের গায়ের মেয়ে। হাজারীর সাথে তার বাপ মেয়ের সম্পর্ক। হোটেলের রাধা খাবার মাঝে মাঝে নিজে না খেয়ে কুসুমের জন্য নিয়ে যায় সে । * অতসী - গায়ের সাহেবের মেয়ে, নরম মনের। হাজারী ঠাকুরের রান্নার ভক্ত। * অন্যন্ন - বংশি, নরেন, হাজারির মেয়ে টেপি প্রমুখ। ? চিত্রপটঃ পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার এক শহর নাম রানাঘাট। রানাঘাট রেল বাজারের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে দুটি হোটেল একটি বেচু চকোত্তির আন্যটি যদু বাড়ুয্যের আদি হিন্দু হোটেল। হাজারী ঠাকুর চাকরীর উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে, সাত টাকা মাইনে দুবেলা খাওয়া আর বছরে দুখানা কাপড়ের চুক্তিতে চাকরী নেয় বেঁচু চক্রবর্তীর হোটেলে। হোটেলটি খানিকটা এরকম, ঢুকতেই বাম হাতে গদির ঘর, তারপর খাবার ঘর। সেখানে আছে তিন ধরনের মিলের ব্যবস্থা। ফার্স্ট ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাস ও থার্ড ক্লাস। হোটেলের রান্না শুরু হয় ভোর থেকেই। প্রথমে দুধ তারপর ভাতের জল, বড় ডেকচিতে ডাল, বাজার থেকে আসা সবজী, মাছ।গদিতে টিকিট কেটে খাবার ঘরে ঢোকার ব্যবস্থা। খাবার ঘরের ঠিক পেছনে রান্নার জায়গা। স্টেশনে ট্রেন আসলে শুরু হয়ে যায় খদ্দের ধরার প্রতিযোগিতা, একে অন্যের আগে খদ্দেরদের বগলদাবা করার জন্য উচ্চস্বরে হাঁকতে থাকে আসুন বাবু গরম ভাত, মাছের ঝোল তরকারি, ভাত, হিন্দু হোটেল বাবু। তবে তাদের বেশিরভাগই কিন্তু আসে বেচু চকোত্তির হোটেলে। হোটেলের জন্য নয় বরং আসে হোটেলের রাঁধুনি হাজারি ঠাকুরের হাতের রান্না খাওয়ার জন্য। তার রান্নার প্রশংসায় কাস্টমার পঞ্চমুখ থাকলেও বেচু চকোত্তি আর পদ্ম ঝি তাকে সবসময় তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেই চলে। বিশেষত তার এই সুনাম যে সূদুর কলকাতা অব্দি চলে গেছে এইটে সহ্য হয়না পদ্ম ঝিয়ের। সে সব সময় নিচু চোখেই দেখে হাজারীকে এছাড়াও তার আরো কিছু বদ গুন ছিল, যেমন চুরি বিদ্যা ও মিথ্যা বলা। বেশির ভাগ সময়ই তার মিথ্যা চাপা পড়ে যেত তার বাজখায়ি গলার আওয়াজে। মিথ্যে চুরির অপবাদে হাজারী ঠাকুরকে চাকুরিচ্যুত করে পদ্মঝি, বেকারত্বের বোঝ নিয়ে যাযাবরের মত বেশ কিছুদিন এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরে অবশেষে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে রান্নার ঠাকুরের কাজ নেয় হাজারী। খুব অল্প দিনেই হাজারী, রান্নার গুনে বাড়ির মেয়ে বউ দের বড় প্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু সে গ্রামে তার মন টিকতে চায়না। মন পড়ে রয় সেই বেচু চক্রবর্তীর হোটেলে। তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়নি একসময় অতসী, কুসুমের থেকে টাকা ধার করে নিজেই খুলে ফেলে একটি হোটেল। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কঠোর পরিশ্রম করে। মাত্র এক বছরের মধ্যে তার হোটেলটি জনপ্রিয় হোটেলে পরিণত হয়। অন্য দুটি হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে সরকার পরিচালিত একটি হোটেল পরিচালনা করতে হাজারি রেলওয়ের টেন্ডারও পায়। উপন্যাসের শেষে হাজারি একটি বড় হোটেল পরিচালনা করার জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে এবং বোম্বাই যায়। যাওয়ার আগে, সে বেচু চক্রবর্তীকে তার হোটেলটির পরিচালক হিসাবে নিয়োগ করে। সে পদ্মকেও একটি চাকরি দেয়; যারা তাকে আগে অপমান করতো। চাকরীর উদ্দেশ্যে বেরোনোর ঠিক আগে পদ্ম ঝি হটাৎ হাজারী ঠাকুর কে প্রণাম করে, সকলের স্বজল চোখ ও আকুতি এড়িয়ে গেলেও পদ্ম ঝির এই আচরণ যেন হাজারীর মনে সর্ব প্রাপ্তির ভাব এনে দেয়। ? প্রতিক্রিয়া * দারিদ্রতা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। * নিজের সৎ ইচ্ছা থাকলে কোন ব্যক্তির বাঁধা, উপেক্ষা কখনোই নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। নিজের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে। * নিজের উপর বিশ্বাস এবং নিজেকে বিশুদ্ধ রাখতে পারলেই সফলতা আসবে। * নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। * কারো প্রতি রাগ বা খারাপ ধারণা রাখা যাবেনা সে যতই আপনার খারাপ বা অনিষ্ট করুক না কেন, ক্ষমা করার মহৎ গুন থাকতে হবে। ? অভিযোজনঃ * ১৯৫৭ সালে এই উপন্যাস অবলম্বনে একই নামে একটি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। * কলকাতার রানাঘাটে এখনও "একটি আদর্শ হিন্দু হোটেল" নামে হোটেলটি চালু আছে। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
SN Rating:-5/5 গল্পটা একজন সাধারণ প্রতিভাবান মানুষের পরিশ্রমের মাধ্যমে অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প। হাজারী চরিএটি ছিলো প্রতিভা+ধৈর্য্য+পরিশ্রম এর প্রতীক। যার দ্বারা সে সফলতা লাভ করেছে। যেকোনো মানুষের এইগুণগুলো থাকলে অসাধারণ কিছু হবে সেটা নিশ্চিত। আর গল্পটাও অসাধারণ। কাউকে হতাশ করবে না এটাও নিশ্চিত।
Was this review helpful to you?
or
এক নিমিষেই শেষ করার মতো অসাধারণ একটি বই,যা আপনাকে শেখাবে সততা ও অধ্যবসায় থাকলে আপনি যেকোনো অবস্থান থেকেই সেরা হতে পারবেন।একটা উপন্যাসের বইয়ে এরকম মোটিভেশনাল বার্তা সত্যি ব্যতিক্রম।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বাংলা উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
" আদর্শ হিন্দু হোটেল " একটি স্বপ্নের নাম। আমাদের সমাজের যে মানুষ গুলো স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে এবং সেই স্বপ্ন পূরন করার জন্য ধৈর্য ধারন করার অদম্য মানসিকতা রয়েছে সেই মানুষদের-ই একজন "হাজারি ঠাকুর" যাকে কেন্দ্র করে এই বইটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। এই বইটিতে উঠে এসেছে তৎকালীন সমাজের সুবিধা বঞ্চিত একজন সাদা মনের মানুষের নানা চরাই উৎরাই পেরিয়ে সফলতার চূড়ান্ত শিখরে উঠে আসার গল্প। যে কোন বয়সী স্বপ্ন বাজ মানুষের জন্য এই বইটি হতে পারে এইটি অনন্য উদাহরন।
Was this review helpful to you?
or
রন্ধনশিল্পে অসাধারণ নৈপুণ্যের অধিকারী হাজারী ঠাকুরের একজন সাধারণ রাঁধুনি হতে হোটেলের মালিক হয়ে ওঠার কাহিনী নিয়েই কালের নীরব দর্শক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর “আদর্শ হিন্দু হোটেল”। চরিত্র হাজারী দেবশর্মার ধৈর্য, বিনয়, আনুগত্য আর একাগ্রতা লেখকের রচনাশৈলীর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে। ভালো বই?
Was this review helpful to you?
or
একটা কথা আছে বাংলায়,"মানুষ তার স্বপ্নের সমেত বড়"।আমরা সবাই স্বপ্ন দেখি।স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি।স্বপ্ন নিয়েই বাঁচি।স্বপ্নকে পূর্ণ করার চেষ্টা করি।কিন্তু সেই স্বপ্ন ক'জনই বা স্বার্থক করতে পারি? হ্যা সেরকম একজন স্বপ্নবিলাসী মানুষ "হাজারী চক্রবর্তী", যাকে এক নামে সবাই হাজারী ঠাকুর বলেই চেনে।পয়তাল্লিশোর্ধ পৌর হাজারী ঠাকুর তার ওই বয়সে শূন্য থেকে পূর্ণ হওয়ার যে স্বপ্ন দেখে তা কি চাট্টিখানি কথা??? ওই বয়সে অনেকেই জীবন থেকে,কর্ম থেকে অবসর নেয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে।কিন্তু হাজারী ঠাকুর স্বপ্ন দেখে।স্বপ্ন দেখে তার "একটি আদর্শ হিন্দু হোটেল"হবে।যেখানে কম দামে সস্তায় আরাম করে লোকে ভালো খাবার খেতে পারবে।চারদিকে তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পরবে।কিন্তু সেই উপায় কোথায়?দু'পয়সা রোজগার করে সংসার চালাতেই সে হিমশিম খেয়ে যায়। শুধু রান্না করে খাইয়েই যে মানুষের মন খুশি করানো যায় সেটা হাজারী ঠাকুরকে জানলে বোঝা যাবে।হাজারী ঠাকুর রাণাঘাটে রান্নার কাজ করে বেচু চক্কোত্তির হোটেলে।সে চমৎকার রান্না করতে পারে।কি নিরামিষ কি আমিষ?সব রান্নাই যেন অমৃত হয় কিন্তু তার মালিকের কাছে তার সেই কাজের কোন মূল্য নেই।সেই হোটেলের সহকর্মী পদ্দ ঝি,তাকে দুচোক্ষে দেখতে পারেনা।উঠতে বসতে কথা শোনায়,নানারকম উৎপাত সৃষ্টি করে।বেচু চক্কোত্তি হোটেলের মালিক হয়েও পদ্দ ঝিয়ের কানকথা ধরে।তার কথাতেই উঠ বোস করে।লোকে তাদের দুজনকে নিয়ে নানারকম কানাঘুষোও করে।পদ্দ ঝি হোটেলে এমনভাবে আদি বিস্তার করে থাকে যেন সেও হোটেলের মালিক।হাজারী ঠাকুর সহজ-সরল নিরীহ মানুষ।পদ্দ ঝি তাকে নানাভাবে হেনস্তা করে,আর সেও সেটা মুখ বুঝে সহ্য করে।এতকিছুর মধ্যেও সে স্বপ্ন দেখতে ভুলেনা।একটা সুখি সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে। হাজারী ঠাকুর নেহাতই একজন সহজ-সরল, ভালো মানুষ।কখনও কাউকে ঠকানোর চিন্তা মাথাতেও নেয়না।আর যারা ভালো মানুষ তাদের সাথে সৃষ্টিকর্তা সবসময় থাকেন।হাজারী ঠাকুরের বেলায়ও তাই হয়েছে।কিছু অনাত্মীয়া মেয়ের বয়সী নারী তাকে খুব শ্রদ্ধা আর ভক্তি করে।তাদের সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয় হাজারী ঠাকুরের দিকে।তারা প্রত্যেকে তাকে বাবার মত ভালবাসে।সেও তাদেরকে মেয়ের মতই স্নেহ করে।সেই অনাত্মীয়া মেয়ের বয়সী মেয়েদের সহায়তায়_আর তার একনিষ্ঠ পরিশ্রম, সততা এবং জাদুকরী রান্নার গুণেই একদিন সে তার স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যায় সফলতার পূর্ণ চূড়ায়। কিছু কথা: যারা স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়,মাঝ বয়সে এসে থেমে যায়,ভেতরে ভেতরে দুমড়ে-মুচড়ে যায়,যারা মনে করে কিছুই করতে পারবেনা,সময় শেষ হয়ে গেছে তাদের জন্য এই হাজারী ঠাকুর একটা অনুপ্রেরণা।এবং রক্তের সম্পর্ক না হয়েও যে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা যায় তার এক বিরল দৃষ্টান্ত এই কুসুম, অতসীর মত কন্যাসম মেয়েগুলো। অর্থাৎ যারা সৎ ভালো মানুষ, তাদের সাথে কখনও খারাপ কিছু হয়না। প্রিয় উক্তি: "উদ্যমই জীবনের সবটুকু, যার জীবনে আশা নেই, যা কিছু করার ছিল সব হয়ে গেছে_ তার জীবন বড় কষ্টকর"। পাঠ প্রতিক্রিয়া :কালজয়ী ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ এর অন্যান্য বইয়ের তুলনায় এই বইটা কম আলোচিত হলেও আমি বলবো এটাও একটা মাস্টারপিস।এসব কালজয়ী বই নিয়ে আমার আলাদা করে কিছু বলার নাই।এসব বই অবশ্যপাঠ্য বই। বইটা আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়ে গেছি।বইয়ের প্রত্যেকটা পরতে পরতে মিশে ছিলো একরাশ মুগ্ধতা আর ভালোলাগা।আমার মত মুগ্ধতায় ডুবে যেতে চাইলে আপনারাও(যারা পড়েননি)পড়ে ফেলুন বইটা। #বইকে ভালোবাসুন,বইয়ের সাথে থাকুন। হ্যাপি রিডিং। ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
ONE OF THE BEST BOOKS I HAVE EVER READ
Was this review helpful to you?
or
"আদর্শ হিন্দু হোটেল" পড়তে গিয়ে Paulo Coelho এর The Alchemist উপন্যাসের একটা লাইন বারবার মনে পড়ে যায়। “And, when you want something, all the universe conspires in helping you achieve it.” মাসে সাত টাকা মাইনেতে রাণাঘাট রেল বাজারের বেচু চক্কত্তির হোটেলে রাঁধুনির কাজ করে হাজারি ঠাকুর। এই অল্প মাইনেতে তার পরিবার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু হাজারির স্বপ্ন অনেক বড়। এই রাণাঘাট রেল বাজারেই সে নিজের একটা হোটেল দিবে। হাজারির রান্নার হাত খুব ভাল, অনেক দূরদূরান্ত থেকে মানুষ বেচু চক্কত্তির হোটেলে আসে শুধু হাজারির রান্না করা খাবার খাবে বলে। বলতে গেলে বেচু চক্কত্তির হোটেলটা টিকে আছে হাজারির রান্নার গুণে। সকলেই খাওয়ার পরে হাজারির রান্নার বিশেষ তারিফ করে, এমনকি পাশের হোটেলের মালিক রাত্রিবেলা গোপনে এসে তাদের হোটেলে কাজ করলে দশ টাকা করে মাইনে দেওয়ার লোভ দেখায়। এসব হাজারির আত্মবিশ্বাস অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তবুও সে বেচু চক্কত্তির হোটেল ছেড়ে যায় না, কারণ সে এখানে থেকে ভালভাবে কাজ শিখে নিজেকে প্রস্তুত করতে চায়। কিন্তু বেচু চক্কত্তির হোটেলে হাজারির জীবনটা অত মসৃণ নয়। প্রায়সময় বিভিন্ন বানোয়াট অভিযোগে হোটেলের ম্যানেজার পদ্ম ঝির লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে তাকে জরিমানা করে বেতনের টাকাও কেটে রাখা হয়। এমনকি একবার হোটেল থেকে বাসনপত্র চুরির মিথ্যে অভিযোগে এক সপ্তাহ হাজতে কাটাতে হয়। এত কিছুর পরও হাজারি মনিবের প্রতি তার অসীম শ্রদ্ধা এবং নিজের একটি হোটেল দেয়ার স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে বেচু চক্কত্তির হোটেলে কাজ করে যায়। তার এই স্বপ্নের সারথি হয় তার কণ্যাসম কয়েকটি মেয়ে। বিধবা কুসুম, জমিদার কণ্যা অতসী এবং ভিনগাঁয়ের এক বধূ। তারা প্রত্যেকেই তাদের সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে হাজারিকে তার নিজের হোটেল চালু করতে সাহায্য করতে চায়। হাজারি কি কুসুম-অতসীদের সাথে নিয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে? নাকি মানুষের জীবনের অন্য অনেক স্বপ্নের মত "আদর্শ হিন্দু হোটেল" একটি স্বপ্নই থেকে যাবে?
Was this review helpful to you?
or
সবুজে ঘেরা এই সুন্দর প্রকৃতির বুকে রানাঘাটের রেলবাজারের পাশে ছোট্ট একটা হোটেল । নাম 'আদর্শ হিন্দু হোটেল '। এখানে রাধুনী হিসেবে কাজ করে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা এক ব্রাহ্মণ - হাজারী ঠাকুর । বয়স পঁয়তাল্লিশ কী ছেচল্লিশ, রঙ কালো, একাগ্র চেহারা । রান্নাকে রীতিমত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তিনি । তার হাতের হোক মাংস কী ডাল চচ্চড়ি - যে ই তার রান্না খেয়েছে সে ই পরেরবার এখানে আসতে বাধ্য হয়েছে । একরকম তার রান্নার দক্ষতার ওপরেই টিকে আছে হোটেলটা । গত পাঁচ বছর ধরে এখানে কাজ করছে সে । কিন্তু নিজের প্রাপ্য সম্মানটুকু সে পায়নি কখনো । মাইনে বাড়েনি এক আনাও । বরং উঠতে বসতে মালিকের ভর্ৎসনা শুনতে হয় তাকে । তুচ্ছ ভুলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এখানকার ঝি পদ্ম । তবু সহজ সরল এই মানুষটা বছরের পর বছর এখানে নির্বিকার ভাবে রাঁধুনির কাজ করে যাচ্ছে । কিন্তু তারও একটা স্বপ্ন আছে । বুকে জমানো আছে ছোট্ট এক টুকরো ইচ্ছে । বহুদিন ধরে নিজের একটা হোটেল খুলবার সাঁধ তার । যেখানে মানুষ কমদামে ভালো খাবার খেতে পারবে । নিজের হোটেলে স্বহস্তে মানুষকে রেঁধে খাওয়ানোর স্বপ্ন এই মানুষটার বহুকালের । কিন্তু হাতে তো অত টাকাপয়সা নেই । মাইনের টাকায় পরিবার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় । তবু সে স্বপ্ন দেখে । স্বপ্ন দেখতে তো আর বালাই নেই । হাজারী ঠাকুরের বুকের ভিতর জিইয়ে রাখা স্বপ্নটা কি আদৌ পরিণতি পাবে? প্রকৃতিটা কার লিখনীতে সবচেয়ে ভালো ফুটে ওঠে এই প্রশ্নের উত্তরে বাঙালি অবশ্যই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর নাম নেবে । 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' বইটিও এর ব্যতিক্রম নয় । তবে এই গল্প টা শুধু প্রকৃতির নয়, গল্পটা একজন সাধাসিধে নির্বিকার মানুষের দীর্ঘকাল যাবত মনের ভেতর বয়ে বেড়ানো বাসনার । লেখক তার লিখনীর মাধ্যমে গল্পটা এত সুন্দরভ্বে এগিয়েছেন যে পাঠক একবার পড়া শুরু করলে এই বইয়ের সাথে একাত্ম্য হতে বাধ্য । গল্প খুব সাবলীল ভঙ্গিতে এগিয়েছে বলতেই হয় । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিখনিী বরাবরই প্রকৃতি আর মানুষের মাঝের অদৃশ্য দেয়ল ভেঙে তাদের সমান্তরাল করে দেয় । এই বইটিও তার ব্যতিক্রম নয় । এই বইতে তিনি একটা জীবনের গল্প বলেছেন, ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্নগুলো মানুষের কাছে কতটা বড় হয়ে উঠতে পারে সেটা তুলে ধরেছেন । সব মিলিয়ে 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' একটি অবশ্যপাঠ্য বই নিঃসন্দেহে । এক নজরে, বই : আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখা : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জনরা: সামাজিক উপন্যাস
Was this review helpful to you?
or
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো একটি বই। সত্যিই অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের একটি বইয়ে ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ উপন্যাসটির কথা পড়েছিলাম। সেই জন্যই এটি পড়া। অসাধারণ একটি বই। সেই সময়ের প্রেক্ষাপট এক নিমেষে চোখের সামনে চলে আসে। হাজারি ঠাকুরের চরিত্রটি খুবই ইন্টারেস্টিং। এই গল্প নিয়ে চমৎকার একটি সিনেমা হতে পারে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরো উপন্যাস পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
একজন মানুষের জীবনে সে অনেক স্বপ্ন দেখে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় স্বপ্নের তকমা পায় একটি বা দুটি। কারো কারো পুরো জীবন কেটে যায় সে স্বপ্নের পিছু ধাওয়া করতে করতে, আবার কেউ পেয়েও যায় সোনার হরিণ। কিন্তু সেই স্বপ্নটি পূরণ হবার পরও যদি মনে হয়, কিছু বাকি রয়ে গেছে? আর খুব অপ্রত্যাশিত কিছু, অপ্রত্যাশিত কেউ এসে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়? হাজারি ঠাকুর আর আদর্শ হিন্দু হোটেলের গল্পটাও ঠিক এমনই এক স্বপ্নের। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অপেক্ষাকৃত কম আলোচ্য এই উপন্যাসটির শুরুটা হয় বেচু চক্কোত্তির আদি ও অকৃত্রিম হিন্দু হোটেল থেকে। রাণাঘাটে আদর্শ হিন্দু হোটেল বাস্তবেও রয়েছে, এবং সে থেকেই বিভূতিভূষণ এই উপন্যাস রচনার ইন্ধন নেন। খুব সম্ভবত ১৯৬২ গোপীনাথ কুণ্ডু এই হোটেল শুরু করেছিলেন। বর্তমান হোটেলের পেছনে তখন ছিল বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। হোটেলের মালিকও সেখানেই থাকতেন ও বাড়ির সামনেই হোটেলটি চালু করা হয়। এদিকে বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বিভূতিভূষণের আত্মীয়। সে সূত্রে প্রায়ই আসা-যাওয়া ছিল তার। মজার ব্যাপার হলো, উপন্যাসটি হোটেল চালু হবার ২০ বছরেরও বেশি আগে লেখা হয়েছে। এমনটা হতেই পারে যে হোটেলের নামটা আগে ঠিক করা ছিল, এবং এ থেকে লেখকমন আরো বহু কিছু কল্পনা করে নিয়েছেন। শুরুতে উপন্যাসের মূল চরিত্রকে তেমন শক্তিশালী অবস্থানে পাওয়া যায় না। এখানে লেখক পাচক হাজারি ঠাকুরকে অবহেলিত নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। পদে পদে তার জীবনের দারিদ্র্য, গঞ্জনা, অবহেলা নিয়েই কাহিনীর পথচলা। আর সেই পথচলায় তার সঙ্গ দেয় একটাই স্বপ্ন- তার নিজের হোটেল হবে, যেখানে বাইরে লেখা থাকবে, হাজারি চক্রবর্তীর হিন্দু হোটেল রাণাঘাট ভদ্রলোকদের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের স্থান। আসুন! দেখুন!! পরীক্ষা করুন!!! কে এই হাজারি ঠাকুর? মামুলি একজন হোটেলের রাঁধুনী বামুন। তার হাতের রান্নায় প্রচুর স্বাদ। তবু যেন নীরবে-নিভৃতেই তার যাপন। প্রাপ্য প্রশংসার আশায় চাতকের মত চেয়ে থাকে, কেউ ফিরেও চায় না। তাই দিনশেষে একটু দয়া পেয়েই নিজেকে ধন্য মনে করতে হয় তাকে। হাজারির কাছে তার পেশা অনেকটা নেশার মতোই। রান্না তার কাছে তেমনই, যেমন একজন শিল্পীর শিল্প। বয়সের রেখা তাকে ক্রমশ গ্রাস করছিলো, সাথে অস্বীকৃতির দায়। তার গুণেই যে হোটেলের খদ্দের বারবার ফিরে আসে, সে কথা কেউ মানেনি। না মানার দলে সর্বাগ্রে থাকে পদ্মঝি, তাকে হাজারি ডাকে ‘পদ্মদিদি’ বলে। হোটেলের মালিকের সাথে পদ্মের বড় ভাব, আর তাই অন্যদের উপর ছড়ি ঘোরাতে সে সিদ্ধহস্ত। সাত টাকা মাইনের চাকরি থেকে নিজের হোটেল, স্বপ্নটা একজন রাঁধুনী বামুনের জন্য অনেক বেশিই। সততার পথ থেকে একটুও না সরে, তিল তিল করে টাকা জমিয়ে এবং কিছু অনাত্মীয় আপনজনদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সে তার হোটেলের স্বপ্নের পথে একটু একটু করে পা বাড়ায়। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অন্যান্য উপন্যাসের মতো এ বইয়েও প্রকৃতির বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য রয়েছে অনেকটা জায়গা জুড়ে। ১৯৪০ সালে বইটি প্রকাশ পেয়েছিল। তখন ভারতে চলছে ইংরেজ শাসনামল। উপন্যাসের ধরন অনুযায়ী এটিকে একটি সামাজিক উপন্যাস বলা যায়, যেহেতু এখানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের নির্দিষ্ট সমাজের এবং মূলত নির্দিষ্ট পেশার কথা বলা হয়েছে। তবে এই উপন্যাসের একটি গূঢ় মনস্তাত্ত্বিক দিক রয়েছে, যে কারণে একে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস বলাটাও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এখানে হাজারি ঠাকুর ও পদ্মঝির মধ্যিকার সম্পর্কটা একপ্রকার আনুগত্যের বয়ান করে। যে আনুগত্য শ্রেণিবোধ থেকে নয় বরং ব্যক্তিত্বের প্রভাব থেকে সৃষ্ট। পদ্মঝি নিজেও বেচ্চু চক্কোত্তি হোটেলে ঝিয়ের কাজই করে, যদিও মালিকের সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে, তারপরও সে কিন্তু হাজারি ঠাকুরেরই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। বেতনভুক্ত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এখানে পদ্মঝি উচ্চশ্রেণির ও হাজারি ঠাকুর অপেক্ষাকৃত নিম্নশ্রেণির শ্রমিক ধরা যায়। হাজারি ঠাকুর ছাড়াও এই উপন্যাসে দেখা পাই পদ্ম ঝি, বেচু চক্কোত্তি, মতি চাকর প্রভৃতির। এদের জীবনটা ঘিরে থাকে হোটেল, রান্না-বান্না, খদ্দের, হোটেলের মানরক্ষা এবং উত্তরোত্তর উন্নতি; সাথে অবশ্যই ফাঁকফোঁকর দিয়ে নিজের আয়বৃদ্ধি ও উপরি পাওনা । হাজারি অন্যদের মতো নয়, সে তার কাজের সাথে অত্যন্ত সৎ। কিন্তু তার সরলতার সুযোগ নিয়ে পদ্ম ঝি তাকে প্রায়ই উপহাস করে এবং ঠকাতেও ছাড়ে না। একদিন হোটেলের বাসনকোসন চুরি যায়। হাজারির উপরই দোষ চাপানো হয় এবং সে এই চাকরিটি হারায়। হাজারি ঠাকুরের জীবনের চড়াই-উতরাই এবং তার উপর আশেপাশের অন্যান্য চরিত্রের প্রভাবকে লেখক আকর্ষণীয় বেশ কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন। মনস্তত্ত্বের ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার ব্যাখ্যাও পাওয়া যায় এই উপন্যাসে। কাহিনীর গতিময়তার কারণে কখনো একঘেয়ে লাগবে না, বরং টানটান এক গল্পময় গাঁথুনির মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে সমাপ্তির দিকে। এর সবচেয়ে বড় ধাক্কা সমাপ্তিতেই। শেষটায় এসে যেন একধরনের অতৃপ্তির স্বাদ থেকে যায়, যা একে ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যের ছোঁয়া দেয়। শেষটায় এসে থমকে যেতে হয়, তখন ভাববার আরো অনেক কিছুই থেকে যায়। লেখক এখানে যবনিকা শুধু টেনে দিয়েই থেমে থাকেননি, বরং শেষটা এমন করেছেন, যাতে করে পাঠক বইটি শেষ করবার পর কিছুক্ষণ নিজের মধ্যেই থমকে যেতে পারে। একটি ভালো বইয়ের অন্যতম গুণ বোধকরি এটাই যে তা শেষ হবার পরও অনেকটা সময় ধরে পাঠকমনে তার রেশ ধরে রাখে। ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ নিঃসন্দেহে তা করবে এবং হাজারি ঠাকুরের জীবনের উত্থান-পতন এবং মনস্তত্ত্বের বহুমাত্রিকতা উপন্যাসটিকে একটি ভিন্ন ধাঁচ দিতে সমর্থ হয়েছে। অনুপ্রেরণার দিক দিয়ে এই উপন্যাস অত্যন্ত ভালো একটি উদাহরণ। সব গণনাই শূন্য থেকে শুরু হয় এবং হাজারি ঠাকুর এই কথাটিকে কড়ায়-গণ্ডায় সত্যি প্রমাণ করে। নিজের লক্ষ্যে অটল থাকলে বহু বাধাবিপত্তির পরও সফল হওয়া যায়। নিজের উপর বিশ্বাস থাকলে আর স্বপ্নপূরণের জন্য অদম্য বাসনা থাকলে কিছুই আটকাতে পারে না সে স্বপ্নের কাছে যাওয়া থেকে। শূন্য থেকে শুরু করা হাজারি ঠাকুরের সফলতা পাঠককে অনেক অনুপ্রেরণা দেবে এবং কিছুটা সময়ের জন্য হলেও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে দূরে রাখতে পারবে। আঁধারের মাঝে কিছুটা আলোর রেখা দেবার মতোই একটি চরিত্র হাজারি ঠাকুর। কিন্তু এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে লেখক এ সমাজের সবচেয়ে কুৎসিত সত্যটিও উপস্থাপন করেছেন। অর্থই সকল অনর্থের মূল- এই উক্তিটি বহুল পরিচিত হলেও সকলেই জানি যে অর্থ ছাড়া এক তিলও চলা যায় না। আর ভোগবাদী সমাজে তো সকল মান-সম্মান-অবস্থানের নির্ধারক হচ্ছে অর্থ। ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ও বাস্তব এই সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখেনি, বরং পাঠকদেরকে এর মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। পদ্মঝি ও হাজারি ঠাকুরের মধ্যকার সম্পর্কও এই গূঢ় অথচ সাধারণ সত্যের একটি বড় উদাহরণ। তবে সব চরিত্র ও সম্পর্কই এমন নয়। অনাত্মীয় বেশ কিছু লোক হাজারিকে তার স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে এবং তাদের সহযোগিতা ছাড়া হাজারি বাস্তবিক অর্থেই একা ও অসহায় হয়ে পড়তো তার সততা ও নিষ্ঠা থাকা সত্ত্বেও। লেখক এখানে ব্যক্তি-মানুষের খারাপ-ভালো দুটো দিকই দেখাতে সমর্থ হয়েছেন। মানুষ আদতে ভালো না খারাপ? এ প্রশ্নের উত্তর বহুকাল ধরে বহু সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীরা অন্বেষণ করে এসেছেন। কারো মতে, মানুষ খারাপ, তো কারো মতে ভালো। কেউ বা একটু এগিয়ে গিয়ে ভেবেছেন যে মানুষ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে ভালো বা খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। সবদিকেই রয়েছে অনেক যুক্তি ও তর্কের অবস্থান। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ উপন্যাসটির মাধ্যমে পাঠকেরা মানুষের সহজাত ভালো-খারাপ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখানো- এ সব বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতিই পাবেন। এবং উপন্যাসের শেষে আসলে প্রশ্নটির উত্তর কী, তা ভাববার অবকাশও রয়েই যায়।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা।।২।। বইঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যাইয় ধরনঃ সামাজিক উপন্যাস প্রচ্ছদঃ অনিরুধ পল্ল প্রকাশনাঃ মাটিগন্ধ রকমারি মূল্যঃ ১২৭ পৃষ্ঠাঃ১৪৪ সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যাইয়ের লেখা উপন্যাস মানেয় শহরের কোলাহল ছাপিয়ে শান্ত কোন গ্রাম। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যাইয় মানে হারিয়ে যাওয়া আমাদের গ্রাম বাংলার ঐশ্বয। গাছ গাছালির ছায়ায় জড়িয়ে থাকা আমাদের গ্রাম আর এখানে বাস করা মানুসগুলর জীবন। আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাসটিও এর ব্যতিক্রম নয়। এটি একটি সামাজিক উপন্যাস, প্রকাশকাল ১৯৪০। ইংরেজ সময়ের পটভূমিতে এ উপন্যাসে লেখক তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজের একজন 'রাঁধুনী বামুনের জীবনকথা সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন। গল্পের শুরু রানাঘাটের রেল-বাজারের বেচু চক্ততির আদর্শ হিন্দু হোটেলে। রেল-বাজারের উন্নতি হওয়ার ফলে হোটেলটির ও উন্নতি হয়েছে, পাকা ঘর হয়েছে। রান্নাঘরে চারজন বামুন রাধুনি হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে এমন খদ্দেরের ভীড়। এই হোটেল এরই বামন রাধুনি হাজারি ঠাকুর। “বয়স পয়তাল্লিশ ছেচল্লিশ, একহারা চেহারা, রঙ কালো। দেখলে মনে হয় নিপাট ভাল মানুষ।” গত পাঁচ বছর ধরে হাজারি বেচু চক্ততির আদর্শ হিন্দু হোটেলে কাজ করে যাচ্ছে শত গঞ্জনা ভৎসনা সহ্য করে, তার শখ বলতে মাঝে মাঝে একটু আধটু গাঁজাই দম দেয়া আর নিজের একটা খাবার হোটেল দেয়ার স্বপ্ন দেখা। সে সৎ,পরিশ্রমী আর রাঁধুনি হিসেবে যথেষ্ট নাম ডাক আছে আর আছে তার স্বপ্ন নিজের একটা হোটেলের যেখানে অল্প পয়সায় মানুষ ভাল খাবার তৃপ্তি করে খেতে পায়। বেচু চক্ততি, হোটেলের চাকর মতি, ঝি পদ্ম, রাঁধুনি বামন রতন আর হাজারি ঠাকুরকে ঘিরেয় গড়ে উঠেছে আদর্শ হিন্দু হোটেলের গল্প। আর আছে কুসুম, হাজারির নিজ গাঁয়ের মেয়ে রানাঘাটে যার স্বশুর বাড়ী আর আছে অতসী। জীবনের চড়ায় উতরায় পেরিয়ে হাজারি ঠাকুরের স্বপ্ন কি বাস্তবে রূপ পেয়েছিল না স্বপ্নই থেকে গিয়েছিল?? মোটকথা বিভূতিভূষণের সহজ সরল ভাষায় হারিয়ে যাবে মন। কখনো হাজারি ঠাকুরের দুঃখে দুখী হবেন, কখনও তার মনিবের প্রতি বিস্বসতা আর মমতা বোধ দেখে তাকে ভৎস্বনা করবেন কখনো ব্যবসার ব্যাপারে তার দূর দর্শীতা আপনাকে অবাক করবে। কিন্তু শেষ না করা পর্যন্ত বইটা ছাড়তে পাড়বেন না।
Was this review helpful to you?
or
এ উপন্যাসটা মানুষকে অনুপ্রেরণা দেবে, শেখাবে হাল না ছাড়ার মানসিকতা। প্রতিভা থাকলে সে যে প্রকাশিত হবেই, সামান্য সাহায্য পেলে কেউ যে সফলতার সর্বোচ্চ ধাপে যেতে পারে, ঘুরে দাঁড়াতে পারে কোণঠাসা অবস্থা থেকে, হেরে যেতে যেতেও জিতে যেতে পারে। হাজারী ঠাকুরের আজন্ম সলজ্জ সাধ, সে নিজে একটা হোটেল খুলবে। অন্যের অধীনে আর কত? অনেক পরিকল্পনাও করে সে। কিন্তু সমস্যা একটাই, তার কোনো অর্থকড়ি নেই। মূলধনের অভাবে তার পরিকল্পনা, তার ইচ্ছে কখনোই আলোর মুখ দেখেনা। তারপর কী হলো? পড়ে দেখবেন। “আদর্শ হিন্দু হোটেল” বইটিকে অবশ্যপাঠ্য বললেও কম বলা হয়। বিভূতিভূষণের লেখা নিয়ে কী বলবো, তাঁর লেখা বারবার পড়লেও কখনো একঘেয়ে লাগেনা। বৈচিত্র্যময় বর্ণনা, ভাষার কারুকাজ, অক্ষরগুলোকে নৈপুণ্যের সাথে বিন্যস্তকরণ… “আদর্শ হিন্দু হোটেল” এর পুরোটাতেই এই বিষয়গুলো ছিলো যথাযথ পরিমাণে। তাছাড়া, তাঁর প্রায় প্রতিটি লেখাতেই তিনি মানব জীবনের সাথে প্রকৃতির একটা অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়ে দেন, কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে যায় মানুষ আর প্রকৃতির মধ্যবর্তী সূক্ষ্ম প্রাচীরখানি। এ সেতুবন্ধন বা সংযোগের বিষয়টা লেখকের এ বইয়েও স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত। “আদর্শ হিন্দু হোটেল” শুধু বিষয়গত দিক থেকেই নয়, ভাষাগত, গঠনগত দিক দিয়েও স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের, স্বকীয় ধারার। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “আদর্শ হিন্দু হোটেল।