User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
যথার্থই দ্বিতীয় খুনের কাহিনি বলা হয়েছে৷
Was this review helpful to you?
or
Interesting
Was this review helpful to you?
or
প্রামান্য দলিল।
Was this review helpful to you?
or
দারুন একটি বই। ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের কথা এতদিন শুধু মুখে মুখে শুনেছি, এই বইটি পড়ে বিস্তারিত জানলাম।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ ডিসেম্বর ৩০ মে ১৯৮১, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে খুন হলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এর ঠিক দু দিন বাদে অর্থাৎ ১ জুন , চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ফায়ারিং রেঞ্জে খুন হলেন জিওসি জেনারেল আবুল মঞ্জুর । এর নেপথ্যে কারা? তুরুপের তাস কি তবে ফেলেছিলেন এরশাদ নিজে ? এক ঢিলে দুই পাখি মারার মত প্রথমে জিয়াকে খুন করে পরে পথের কাঁটা মঞ্জুর কেও সরিয়ে দিলেন? ক্ষমতা দখলের পর জিয়া কিছু ভুল করেছিলেন যার মধ্যে অন্যতম হল অমুক্তিযোদ্ধা সেনা দের ঢাকায় রেখে মুক্তিযোদ্ধা দের ঢাকার বাইরে বদলীকরন , দূর্ণীতিবাজ হিসেবে খ্যাত ' অমুক্তিযোদ্ধা ' এরশাদকে সেনা প্রধান করা, জামাতী নেতা শাহ আজীজ, আব্দুল আলীম দের প্রধানমন্ত্রী , মন্ত্রী পদে বহাল , গোলাম আযম কে নাগরিকত্ত্ব প্রদান । এসবের খেসারত হিসেবেই কি জিয়া প্রাণ দিলেন মেজর মতি আর মেজর মাহবুব এর গুলিতে? আর কিছু না করেই ফেঁসে গেলেন জেনারেল মঞ্জুর? নাকি এই হত্যাকান্ডে তার হাতটাই সবচে বড়? যে ঘটনার প্রেক্ষিতে বইটা লিখা হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি। একটা দেশের রাষ্ট্রপতি সে দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক খুন- ছয় বছরের মধ্যে দেশে দুই বার এমন ঘটনা ঘটল। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নাটক সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়। আর লেখক যখন এই ঘটে যাওয়া ঘটনার গল্প লিখেন, সেটার আলাদা একটা পাবলিক আপিল থাকবেই। তবে শুরুটা, বিশেষ করে প্রথম সাত-আট পৃষ্ঠা কেমন জানি ছাড়া ছাড়া লেখা। ঘটনা শুরু হল জিয়া সার্কিট হাউজে ঢোকার পর পরই। নানা শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা ঘটতে লাগল একের পর এক। তবে বইটাতে মেজর মঞ্জুরকে একদম নির্দোষ হিসাবে দেখানো হয়েছে। আসলেই কি তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন? শেষে যদিও বলা হয়েছে মূল কলকাঠি এরশাদ নেড়েছেন, কিন্ত এই বইয়ে এরশাদ প্রায় উপেক্ষিত বললেই চলে। কেবল দুই এক জায়গায় তিনি এসেছেন। আমি চট্টগ্রামে থাকি বলেই কিনা বইয়ে লেখা কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র, নেভাল, অক্সিজেন, হাটহাজারি এসব যায়গাগুলো বারবার আমার চোখের সামনে ভাসছিল। প্রথমটা একটু বিরক্ত লাগলেও, সম্পূর্ণ বইটা শেষ না করে আমি উঠতে পারিনি। আমার এখনো মনে আছে, রোজার মাস ছিল, সেহেরীর সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি বই রেখে উঠতে পারছি না। শেষে আম্মা এসে আমাকে খাইয়ে দিয়েছেন, আর আমি পড়েছি। তবে আর দেরি কেন? ১৯৮১'র ৩০ শে মার্চ থেকে ১ জুন, শ্বাসরুদ্ধকর দু'দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো জানতে পড়ে ফেলুন দ্বিতীয় খুনের কাহিনী।
Was this review helpful to you?
or
This is a very well written book.
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা || রিভিউ || বই : দ্বিতীয় খুনের কাহিনি লেখক : মশিউল আলমম প্রকাশক : প্রথমা প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ঘরানা : রাজনৈতিক উপন্যাস পৃষ্ঠা : ২২৪ প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ : মাসুক হেলাল মুদ্রিত মূল্য : ৪৫০ টাকা 'কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের গুলিতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হয়েছিলেন' - এই বাক্যের বাইরে জিয়া হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অনেকেরই কোন ধারণা নেই। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আসলে কি ঘটেছিলো দীর্ঘদিন ধোঁয়াশাচ্ছন্ন ছিলো। এখনো যে জিয়া হত্যার জট পুরোপুরি খুলেছে তাও না। তবে লেখক মশিউল আলম তাঁর 'দ্বিতীয় খুনের কাহিনি' বইয়ে জিয়া নিহত হওয়ার পরের ভয়াবহ অনিশ্চিত ও অস্থির সময়কে নানা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। মেজর জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে তাঁকে আলাদা করে পরিচিত করার কিছু নেই। ১৯৭৫ এ যখন বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হলো, তার পর থেকেই বাংলাদেশ নামক শিশু রাষ্ট্রের রাজনীতিতে ঘটলো আশ্চর্য এক পটপরিবর্তন। বিচারপতি সায়েমের হাত থেকে সর্বময় ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিলেন জিয়া। প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলেন নিজেকে। সেনাবাহিনীর একজন মেজর সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করলেন। বিএনপি গঠন করলেন আর আর হলেন এর চেয়ারপার্সন। শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট জিয়ার নামে একটা অভিযোগ বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছিলো। আর সেটা হলো, সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের ব্যাপারে তাঁর একচোখা নীতি। পাকিস্তান ফেরত অমুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের বেশি সুযোগসুবিধা দিতে শুরু করলেন তিনি। আর পক্ষান্তরে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদেরকে বদলি করতে লাগলেন ঢাকার বাইরে। বেশিরভাগকেই বদলি করা হলো চট্টগ্রামে। আর অদ্ভুতভাবেই, এই চট্টগ্রামেই গুপ্তহত্যার শিকার হন প্রেসিডেন্ট জিয়া। চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি জেনারেল মনজুর ৭৫ পরবর্তী সময়ে প্রেসিডেন্ট জিয়ার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন। সর্বাধিক যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট তাঁকে সেনাপ্রধান না করে করলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। চাপা ক্ষোভ, নাকি অভিমান? ৩০ মে রাতের শেষ প্রহরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের 'কাগজের নিরাপত্তা' নখের আঁচড়ে ছিঁড়ে হানা দিলো সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য। কোন কথাবার্তা ছাড়াই তারা নৃশংসভাবে হত্যা করলো প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে। ২৮ রাউন্ড বুলেট তাঁকে ঝাঁঝরা করে দিলো। তিনি ওইদিন সরকারী না, বরং দলীয় এক কাজে চট্টগ্রাম সফরে গিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্টের সাথে নিহত হলেন তাঁর সফরসঙ্গীদের কয়েকজন। শুধু তাই না, জিয়ার লাশ সরিয়ে ফেলা হলো অজ্ঞাত স্থানে। পুরো ব্যাপারটাই কি ওয়েল প্ল্যানড? নাকি হটহেডেড কিছু তরুণ অফিসারের বেপরোয়া মেজাজের নমুনা? নড়েচড়ে বসলো পুরো দেশ। 'সরকার' বলতে আসলে যা বোঝায়, তা রইলোনা। সবকিছুর দায় এসে চাপলো জিওসি মনজুর আর তাঁর অনুগত কয়েকজন অফিসারের ওপর। তাঁরাও নিজেদেরকে সেনাবাহিনীর 'বিপ্লবী কাউন্সিল' হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করলেন। ৩০ মে'র পর থেকে প্রতিটা ঘন্টা কাটতে লাগলো চরম অনিশ্চয়তায়। মুক্তিযোদ্ধা ও অমুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের মধ্যকার পুরোনো চাপা দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হয়ে উঠলো। বেসামরিক ও সামরিক উভয় ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অদ্ভুত এক দোলাচলে পড়ে গেলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া কি সত্যিই কোন বৈষম্য সৃষ্টি করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আর অমুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের মধ্যে? নাকি ঠান্ডা মাথার এই মানুষটা চেয়েছিলেন সব বৈষম্য দূরে ঠেলে সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে? ৩০ মে'র পর আর এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া হয়নি। জানা যায়নি এসবের পেছনে আসলে কার হাত ছিলো। কার অসুস্থ উচ্চাকাঙ্ক্ষার বলী হতে হয়েছিলো প্রেসিডেন্ট জিয়াকে সেটা অবশ্য 'দ্বিতীয় খুনের কাহিনি' পড়লে কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যায়। আর জিওসি মনজুরের ভয়ঙ্কর ভাগ্যলিখন বইটার নামটাকে আরো ভয়াবহভাবে সার্থক করেছে, এটা বলাই যায়। আর সেটাও ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। ব্যক্তিগত মতামত : 'দ্বিতীয় খুনের কাহিনি' বইটাই সম্ভবত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড ও তার পরবর্তী সময়কে নিয়ে লেখা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে তথ্যবহুল বই। লেখক মশিউল আলম এই বইটা লিখতে গিয়ে বেশ অনেকগুলো সহায়িকা গ্রন্থ ও সাক্ষীর সাহায্য নিয়েছেন। সেগুলোর নাম তিনি বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় উল্লেখও করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টাকে ঝাপসা অবস্থা থেকে আরো একটু পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন তিনি। গল্পের ছলে অতীত ইতিহাসকে পুনরায় আলোর বৃত্তে আনার এই প্রয়াস সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। প্রাঞ্জল লেখনী ও সবিস্তার বর্ণনাভঙ্গি 'দ্বিতীয় খুনের কাহিনি' পাঠে দারুন সহায়ক ছিলো। মাত্র ২২৪ পৃষ্ঠার এই বইয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা অন্ধকার অধ্যায় সম্পর্কে পাঠক তার কৌতুহল ভালোভাবেই নিবৃত্ত করতে পারবে বলে মনে হয়েছে আমার। মাসুক হেলালের প্রচ্ছদ ভালো লেগেছে। চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন 'দ্বিতীয় খুনের কাহিনি'। রেটিং : ৪.৫/৫ © শুভাগত দীপ
Was this review helpful to you?
or
পড়ে শেষ করলাম মশিউল আলমের “দ্বিতীয় খুনের কাহিনী”।যদিও উপন্যাস, ‘দ্বিতীয় খুনের কাহিনি’ মূলত ইতিহাস নির্ভর। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অন্যতম দুই চৌকশ মুক্তিযোদ্ধা সেনা কমান্ডার জিয়া এবং মনজুরের খুন নিয়েই এই উপন্যাসটি লেখা হয়েছে। মশিউল আলম উল্লেখ করেছেন যেহেতু একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস তাই অনেকের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে, অনেক বই ব্যবহার করা হয়েছে রেফারেন্স হিসেবে। অনেক সংলাপ লেখার ক্ষেত্রে তাকে চরিত্র বিশ্লেষণ করে কল্পনার আশ্রয় নিতে হয়েছে। ‘দ্বিতীয় খুনের কাহিনি’ বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম ইতিহাসনির্ভর উপন্যাস বলে আমি মনে করি। জেনারেল জিয়া যখন খুন হন তখন তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। প্রচলিত আছে তাকে হত্যার পেছনে জেনারেল মনজুরের ভূমিকা সর্বাগ্রে। কিন্তু ইতিহাস জানেন বোঝেন এমন সবাই জ্ঞাত আছেন যে মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্য এবং পাকিস্তানফেরত সেনা সদস্যদের মধ্যে একটা চরম বিভেদ ছিল। হতাশাব্যঞ্জক হলেও সত্য জিয়াউর রহমান একজন অকুতোভয় সেনাসদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধা হয়েও বঙ্গবন্ধু হত্যায় পরোক্ষ ভূমিকা রাখেন কারণ তিনি ব্যক্তিগতভাবে লোভী হয়ে গেছিলেন বাংলাদেশের অসংবাদিত নেতা হবার জন্য। সেনাবাহিনীর প্রধান হওয়া সত্বেও তিনি চেয়েছিলেন হতে রাষ্ট্রের প্রধান, রাজনৈতিক দলের প্রধান। তিনি সেনাবাহিনী থেকে সরে এসে বি এন পি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং নিজেকে ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে একটি অগণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা সেনাসদস্যদের বঞ্চিত করে পাকিস্তানফেরত সুবিধাবাদী সেনাসদস্যদের ভালো অবস্থানে নেন যার অন্যতম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যাকে জিয়া করেন সেনাবাহিনীর প্রধান। অথচ এরশাদ সেই ব্যক্তি যে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দাসত্ব করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দেশে এসেও বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই না করে ছুটি শেষে আবার পাকিস্তানে ফিরে যান। অথচ জিয়াউর রহমান পচাত্তর পরবর্তী প্রেক্ষাপটে এরশাদের মতো লোককে করেন সেনাপ্রধান অথচ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে দক্ষ ব্যক্তি জেনারেল মনজুরকে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের জি ও সি করে ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে দেন। শুধু তাই নয় এরশাদের পরামর্শে জিয়া সেনাবাহিনীতে চৌকশ মুক্তিযোদ্ধা বেশীরভাগ অফিসারকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাইরে পাঠিয়ে দেন, বেশীরভাগকে পাঠান চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে, জেনারেল মনজুরের অধীনে। এসবই আসলে ছিল এরশাদের চাল। তিনি মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের জিয়াউর রহমাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে এমন একটি ক্যান্টনমেন্টে পাঠান যেখানে বাংলাদেশের তৎকালীন সেনাবাহিনীর সেরা সামরিক অফিসার দায়িত্বে। এরমধ্য দিয়ে এরশাদ সুকৌশলে প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং জেনারেল মনজুরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি জেনারেল মইন যিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা তাকে দিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়াকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে খুন করান এমনভাবে যাতে তার দায় পড়ে জেনারেল মনজুরের ওপর। দারুণ কূট-কৌশলের মাধ্যমে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৩দিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং সেনাবাহিনীর সেরা কর্মকর্তাকে হত্যা করান এবং নিজে দখল করে নেন বাংলাদেশের ক্ষমতার কলঙ্কিত আসনটি। মশিউল আলম অত্যন্ত নিরাসক্তভাবে ইতিহাসের বিশ্লেষণ করেছেন এই বইটিতে। তিনি দেখিয়েছেন এরশাদের কূট-কৌশলের কাছে কীভাবে প্রেসিডেন্ট জিয়া পরাস্ত হন। কীভাবে জিয়াউর রহমান নিজে একজন মুক্তিযুদ্ধ হয়েও ক্ষমতার লোভে এরশাদকে সাথে নিয়ে চারশরও বেশী মুক্তিযুদ্দ করা সেনা কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিতে ঝোলান, কীভাবে ক্ষমতার লোভে রাজাকার গোলাম আযমসহ অন্যদের বাংলাদেশে ফেরত আনেন, জামায়াত ইসলামীকে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং মন্ত্রীসভায় আনেন আলীমের মতো রাজাকারদের। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদেরও পুনর্বাসিত করেন। জেনারেল মনজুরের চরিত্র নিজেও উপন্যাসে হতাশা ব্যক্ত করে জিয়াউর রহমানের এহেন কর্মকান্ডে যা কীনা তার মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। জেনারেল মনজুরের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যায় কোন ভূমিকাই ছিল না কিন্তু এরশাদ কূট-কৌশলে তাকে কীভাবে ফাঁসিয়ে দেন, কীভাবে সেনাবাহিনীর দ্বারা পুলিশের কাছে আত্মসমর্থন করা জেনারেল মনজুরকে আর্মি হেফাজতে নিয়ে খুন করান যাতে সাধারণ মানুষ না জানে কি হয়েছিল সেটা অত্যন্ত প্রাঞ্জল এবং বস্তুনিষ্ঠ তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তুলে ধরেছেন মশিউল আলম। তিনি পরিষ্কারভাবেই দেখিয়েছেন বি এন পি’র সুবিধাবাদী নেতারা কীভাবে পালিয়ে থেকেছেন তখন, কীভাবে জেনারেল মনজুর ব্যর্থ হন বিভ্রান্ত এবং হতাশ চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের সেনাসদস্যদের নেতৃত্ব দিতে। বইটিতে সেনা কর্মকর্তাদের সাথে তাদের স্ত্রীদের কথোপকথন অনেকক্ষেত্রেই ক্লান্তিকর মনে হয়েছে। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর এই খুন দুটোয় কী ভূমিকা ছিল, এরশাদের খুঁটির জোর ছিল কে বা কারা সেটা উপন্যাসে পরিষ্কার হয়নি। এছাড়া এটি একটি অত্যন্ত শক্তিশালী উপন্যাস যা কেবল পাঠককে সত্য জানতে সাহায্যই করবে না বরঞ্চ ব্যবহৃত হতে পারে ইতিহাসের শিক্ষার্থীদের জন্য রেফারেন্স হিসেবে।
Was this review helpful to you?
or
দুর্বল লেখা। সামরিক বাহিনীর মধ্যে ভিন্নতর একটি কথোপকথনের সংস্কৃতি প্রতিফলিত হবার কারনে ধরে নেয়া যায় লেখক লেখাটি কোন চাকুরীরত/অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যকে দিয়ে 'ভেটিং' করিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও দুর্বলতা কাটেনি। সেনাবাহিনীর অনেক আচার, সংস্কৃতি, প্রচলনকে হয় বিকৃত কিংবা ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তথ্যের ও সংলাপের অসংলগ্নতা চোখে পড়ার মত। নিরপেক্ষ, নতুন প্রজন্মের পাঠকের জন্য দিকভ্রান্তকারী একটি রচনা হিসেবে সমাদৃত হতে পারে, অন্য কিছু হিসেবে নয়।