User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#............ #............
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব সুন্দর, অনবদ্য
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
this book is nice❤️???❤️
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন বই। সময়মত পেয়েছি। ধন্যবাদ রকমারি
Was this review helpful to you?
or
Well
Was this review helpful to you?
or
অনেক অজানা কিছু জানার আছে বইটিতে । নেতৃত্বের সাথে সাথে শেখ হাসিনার লেখক সত্তাও বইটির মাধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। ইতিহাসকে কাছ থেকে জানার জন্য খুবই যুগোপযোগী বই।
Was this review helpful to you?
or
Very Goode book
Was this review helpful to you?
or
good knowledge about banghabondhu
Was this review helpful to you?
or
Ex
Was this review helpful to you?
or
hhbbbbbbbbbbbbnnnnnnnnnnn
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বইয়ের নামঃ শেখ মুজিব আমার পিতা লেখকঃ শেখ হাসিনা প্রকাশকঃ আগামী প্রকাশনী পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ১১১ প্রচ্ছদঃ সমর মজুমদার মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫০ রিভিউ করছিঃ মায়েশা তারান্নুম রিচি ধরণঃ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব 'শেখ মুজিব আমার পিতা' বইটিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লিখা ১০ টি প্রবন্ধ একত্রে প্রকাশিত হয়েছে।বই প্রকাশের সময় এই ১০ টি প্রবন্ধ উপস্থাপনার প্রয়োজনে ৪টি পর্যায়ে সাজানো হয়েছে। এগুলো হলো- বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা,স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য,ছেড়া ছেড়া ছবি।১ম তিনটি পর্যায়ে তিনটি করে প্রবন্ধ এবং শেষের টি তে একটি প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধসমূহ লেখা হয় ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৪ সালের আন্দোলন মুখর দিনগুলোতে। তাই এতে উঠে এসেছে তৎকালীন শাসক দলের অনৈতিক কাজকর্মের সমালোচনা। এই বইটি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে নয়, বরং তাঁর প্রবন্ধগুলির মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে সংঘাতময় দেশের রাজনীতির প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি। বইয়ের নাম দেখে মনে হতে পারে,বাবা আত্মজীবনী নিয়ে কন্যার লেখা বই,কিন্তু হতাশ হবেন।বঙ্গবন্ধুর জীবনের অনেক অজানা ঘটনা নিয়েও লিখেছেন এই প্রবন্ধগুলো। ?বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিঃ ❝ শেখ মুজিব আমার পিতা❞ প্রবন্ধে, বঙ্গবন্ধুর জন্ম, বংশ পরিচয়, শৈশব, পড়ালেখা, তাঁর কৃতিত্ব, সামাজিক কর্মকান্ড,কৈশরের সাহসীকতা,রাজনৈতিক জীবন ইত্যাদি বিভিন্ন ঘটনা লেখিকা উপস্থাপন করেছেন।যা আমরা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী তে বঙ্গবন্ধুর বর্ণনামূলক লেখনী থেকেও জানতে পেরেছি। তৎকালীন সময়ে মুহম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলে প্রতিটি বাঙালি প্রতিবাদী হয়ে উঠে।ছাত্র সমাজ আন্দোলন করে,এই আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু গেফতার হন ১৯৪৯ সালে। তখন আমাদের শেখ হাসিনা খুব ছোট ছিলেন এবং তাঁর ভাই কামাল এর জন্ম হয়েছে মাত্র। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জেলে থাকায়, উনার ছেলে কখনো দেখেনি, চিনেও না।একদিন শেখ হাসিনা "আব্বা আব্বা" বলে বঙ্গবন্ধুকে ডাকায়, উনার ছেলে কামাল বলেছিল শেখ হাসিনা কে,"হাসু আপা,তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি"। কিন্তু ঘাতকেরা শেষ করে দিল সবাইকে,আব্বা ডাকার মতো ও আজ কেউ নেই লেখিকার। ❝বঙ্গবন্ধু ও তার সেনাবাহিনী❞ প্রবন্ধে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রতি বঙ্গবন্ধুর স্নেহ ও দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে।বঙ্গবন্ধু সবসময় সেনাবাহিনীর অধিকার পূরণে ছিলেন সোচ্চার। তাঁর ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবিতে পূর্ববাংলার জন্য সতন্ত্র সেনাবাহিনী ও নৌ সদর পূর্ব বাংলায় স্থাপনের দাবি উত্তাপন করেছিলেন।দেশের সংকটের সময় ও ভুলে যান নি তিনি সেনাবাহিনী কে,তাদের জন্য খাদ্য ক্রয়ের পাশাপাশি বিদেশ থেকে সংগ্রহ করেছেন প্রয়োজনীয় অস্ত্র। মিগ-২১ নামে উপমহাদেশের সবচেয়ে আধুনিক বিমান ও এনে দিয়েছেন।এভাবে আরো বিভিন্ন উপায়ে কাজ করেছেন সেনাবাহিনীর উন্নয়নে।কিন্তু ভাগ্যর নির্মম পরিহাস, পরিবার সহ তাঁকে খুন হতে হয় কতিপয় সেনা সদস্যর হাতে।কিন্তু শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন সমগ্র সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নয়।তিনি বলেন, "সামরিক বেসামরিক যে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী আজ ব্যাক্তিস্বার্থে সেনাবাহিনী কে ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের সুহৃদ সহযোদ্ধা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি কোনো দেশপ্রেমিক নাগরিক ক্ষুণ্ন হতে দিতে চায় না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে সেনাবাহিনী তার যোগ্য মর্যাদা পাবে।" ইতিহাসের জঘন্যতম কান্ড প্রবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা।কিভাবে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো তারই মন্ত্রিপরিষদের একজন সদস্য। ১৭৫৭ সালের পলাশীর প্রান্তরের ঘটনার সাথে তিনি এই ঘটনার তুলনা করেছেন।বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে শাসকগোষ্ঠী ন্যায়নীতি, মূল্যবোধকে বিসর্জন দিয়ে শোষণ চালিয়েছে। বাংলার মানুষের জন্য নিয়ে এসেছিল দুর্ভোগ এমন ঘটনাগুলো লেখনীর মাধ্যমে স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করেছেন তিনি এই প্রবন্ধে। ?মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথাঃ ❝স্মৃতির দখিন দুয়ার❞ প্রবন্ধে আত্মসমর্পণের দিনটি কিভাবে মনের ছটফটানি তে কেটেছে তা প্রকাশ পেয়েছে বাস্তব রূপের লেখনী তে।শেখ হাসিনা বলেন," সমগ্র দেশটাই ছিল বন্দীশালা,এর মাঝে জীবনের ধ্বনি পাওয়া যেতো যখন শোনা যেতো মুক্তিযোদ্ধার গুলি বা মিলিটারি মারার খবর।মনে হতো আমরা বেচে আছি,বেচে থাকব,আমাদের অস্তিত্ব আছে এখনো।" দীর্ঘ নয় মাস তাদের কাটাতে হয়েছে আতঙ্কগ্রস্ত ও অর্ধমৃত হয়ে। শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের বয়স তখন ছিল ৪ মাস।সে গুলির আওয়াজে কেপে উঠতো।শেখ রাসেল তুলো গুজে দিতো অর কানে,যাতে গুলির আওয়াজে পর্দা না ফেটে যায়।আত্মসমর্পণের পর বন্দী শেখ হাসিনা ও পরিবারকে দেখতে আনন্দের সাথে যারাই আসছিলো কিন্তু পাকিস্তানিরা তখন ও তাদের গুলি চালিয়েছিল।তখন ও বন্দীশালা ছিল স্বাধীনতার স্বাদ থেকে বঞ্চিত। ১৭ ডিসেম্বর তারা কিভাবে মুক্তি পেলেন এই ঘটনা ও সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে, যেনো পাঠকরাও তাদের সাথে মুক্তির অনুভূতি পাবেন।এই প্রবন্ধের দ্বিতীয় অংশে প্রকাশ পেয়েছে শেখ হাসিনার শৈশব ও কৈশরের বিভিন্ন স্মৃতিময় ঘটনা। প্রথম সাকো পার হওয়া, নদীর ধারে ঘুরে বেড়ানো,কলাগাছ ফেলে সাতার কাটা,মাছ ধরা,কলাপাতায় আম মাখানো খাওয়া, তাঁর পড়া পথের পাঁচালী বইয়ের বর্ণনা ও এরকম আরো নানান ধরনের স্মৃতিকথা।গ্রামের কিভাবে উন্নয়ন করা যায় এসব পরিকল্পনা ও তিনি লিখেছেন এই প্রবন্ধে। ❝স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার❞ প্রবন্ধে ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়ির সব স্মৃতি তুলে ধরেছেন তিনি। শেখ রাসেলের জন্মগ্রহণ নিয়ে ভাইবোনদের মাঝের উচ্ছাস আনন্দ বিশেষ অনূভুতির সাহায্য প্রকাশ করেছেন। এরকম আরো অনেক উত্তেজনাপূর্ন অজানা স্মৃতির কথা এই প্রবন্ধ পড়ে জানতে পারবে পাঠক।এই প্রবন্ধে আরো প্রকাশ পেয়েছে কিভাবে বারবার পুলিশ এসে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে এবং তার পরিবারের কেমন অনুভূতি হয়। এদিকে ছোট্ট রাসেল শুধু বাবার জন্য কাদতো। ১৯৮১ সালে মিলাদ পড়ানোর জন্য এই বাড়ির দরজা খুলার অনুমতি দেয় নি জেনারেল জিয়াউর রহমান। জিয়া হত্যার পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি দরজা খুলে দেন হাসিনাকে।তখন ও দেখা গেলো ঘরের মেঝেতে বড় বড় গুলির আঘাত, রক্তের দাগ।নিজে সবকিছু পরিষ্কার করেছেন এসব বেদনাদায়ক ঘটনার কথা উল্লেখ আছে এই প্রবন্ধে। যা পড়ে যেকোনো পাঠকের চোখে জল আসতে বাধ্য। ?স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্যঃ ❝আমার স্মৃতিতে ভাস্মর যে নাম❞ প্রবন্ধে শেখ হাসিনার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষক ড.আবদুল মতিন চৌধুরী নিয়ে স্মৃতি রচিত হয়েছে। এই স্মৃতিচারণ বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষে খুবই কষ্টের। স্মৃতিচারণের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, "সেদিন যদি স্যারের কথা অমান্য না করে ঢাকায় থেকে যেতাম,আমার জন্য সেটাই ভালো হতো।সব হারিয়ে এমন বেচে থাকতে তো আমি চাইনি।" এই পর্যায়ের বাকি দুটো প্রবন্ধে তিনি যথাক্রমে বেগম জাহানারা ইমাম ও বুকে 'স্বৈরাচার নিপাত যাক' ; পিঠে 'গণতন্ত্র মুক্তি পাক' লিখে স্লোগান দেওয়া নূর হোসেন নিয়ে স্মৃতিচারন করেন লেখিকা। ?ছেড়া ছেড়া ছবিঃ ❝একানব্বইয়ের ডায়েরি❞ প্রবন্ধে কিছু খন্ড খন্ড ঘটনা বর্ণনা হয়েছে।দেশবাসীর জন্য শেখ হাসিনার প্রাণ কাঁদে। ১৯৯১ সালের সাইক্লোনের তান্ডবে বহু মানুষের প্রান ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে।তিনি সহযোগিতার জন্য ছুটে গেছেন উপকূলে। চট্টগ্রামের সৌন্দর্য্য চোখ এড়িয়ে যায় নি বিরোধী দলের প্রধানমন্ত্রীর।অপরূপ বর্ণনা দিয়েছেন প্রকৃতির। ?কেনো পড়া উচিতঃ "শেখ মুজিব আমার পিতা " এই বইয়ের মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধু নিয়ে বিভিন্ন অজানা ঘটনা জানতে পারবো।মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন হৃদয়বিদারক ঘটনা সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পারবো এবং প্রধানমন্ত্রীর জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে ধারণা পাবো। ?রেটিংঃ ১০/১০
Was this review helpful to you?
or
‘শেখ মুজিব আমার পিতা'_শেখ হাসিনা।ঢাকা:আগামী প্রকাশনী।ফেব্রুয়ারী: ২০১৫। পৃষ্ঠা: ১১১। নুসরাত জাহান নিশু শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনার লেখক পপরিচয়টি অনেকেরই অজানা। কারণটা সঙ্গত হলেও ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে পাঁচটি গ্রন্থের রচয়িতা হিসেবে তিনি উপেক্ষণীয় নয়। শেখ হাসিনার লেখক সত্ত্বার পরিচিতি এমনভাবেই তুলে ধরেছেন 'ভূমিকা' অংশে ড. রফিকুল ইসলাম। ভারত ও পাকিস্তানের মত অন্যতম দুই রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও রাষ্ট্রপ্রধানদের উদাহরণ টেনে এশিয়া মহাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের লেখক স্বত্বার বৈশিষ্ট্য নিয়ে পার্থ ঘোষ শুরু করেন প্রস্তাবনা। দুজনেরই আলোচনা এগিয়েছে শেখ হাসিনার লেখাগুলো বিশ্লেষণ করে বলছি শেখ হাসিনা লিখিত স্মৃতিকথামমূলক সংক্ষিপ্ত আত্মজৈবনিক রচনা_"শেখ মুজিব আমার পিতা (১৯৯৯)" গ্রন্থের কথা। কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা ১৯৯৯-তে সর্বপ্রথম প্রকাশিত ১১১ পৃষ্ঠার গ্রন্থটিতে 'ভূমিকা' ও প্রস্তাবনা'-র পাশাপাশি মূল রচনায় রয়েছে_' 'বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি', 'মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা', 'স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য' এবং 'ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি' শিরোনামে দশটি প্রবন্ধের সন্নিবেশ।প্রথম তিন শিরোনামে আছে তিনটি করে এবং শেষটায় একটি প্রবন্ধ। গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো সবই ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে লেখা। বলা যায় উক্ত প্রবন্ধগুলো মূলত আন্দোলনমুখর দিনগুলোতে লেখা, তাই স্বভাবতই উঠে এসেছে হয় তৎকালীন শাসকদের কর্মকান্ডের সমালোচনা নতুবা জনগণের দাবি আদায়ের যৌক্তিক সমর্থন। অর্থাৎ প্রবন্ধগুলোতে শেখ হাসিনার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, তার পিতার জীবন, নির্মম মৃত্যু, তদানীন্তন সমাজ-রাজনীতির ছবি এবং দিন বদলের আহবান দৃঢ়ভাবে উঠে এসেছে। পরবর্তীকালে বাংলা একাডেমির গ্রন্থমেলা-২০১৫ উপলক্ষে ‘আগামী প্রকাশনী’ বইটির বাংলাদেশ সংস্করণ প্রকাশ করে। ২০১৮ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইটির ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। তবে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানান জানা-অজানা ঘটনার বর্ণনা সমৃদ্ধ হয়েছে প্রথম তিনটি প্রবন্ধে (যথা_' শেখ মুজিব আমার পিতা', 'বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী' এবং 'ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড')। ‘বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ‘ শিরোনামেই ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সঙ্গী ও শিক্ষনবিশ হিসেবে শেখ হাসিনা তুলে ধরছেন তাঁকে। বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর ওঠা বিতর্ক নিয়ে শেখ হাসিনার এ শিরোনামের শেষ দুটি প্রবন্ধ সচেতন পাঠকদের মনে আলোড়ন তুলবে। "বাস্তব কি নির্মম! জাতির জনকের হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত তাঁরই প্রিয় সেনাবাহিনী। " (বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী', পৃ:৩৮) 'স্মৃতির দখিন দুয়ার (এক ও দুই)’, 'স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার'_প্রবন্ধদ্বয়ে ধরা পড়েছে শেখ হাসিনার স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা। প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো কাটাতে হয়েছিল মুজিব পরিবারকে। সেই রুদ্ধশ্বাস অভিজ্ঞতার এক দীর্ঘ বর্ণনা আছে 'স্মৃতির দখিন দুয়ার (এক)’-এ। নির্বিক বেগম মুজিবকে আবিষ্কার এই প্রবন্ধে উপরি-পাওয়া! “আমরা ঘর থেকে ছুটে বারান্দার চলে এলাম ওরা সব অস্ত্র ফেলে দিয়ে একে একে সারেন্ডার করে গেল। মা সঙ্গে সঙ্গে আবদুলকে হুকুম দিলেন পতাকা (পাকিস্তানি পতাকা) নামিয়ে ফেলতে। পতাকাটি নামিয়ে মার হাতে দিতেই ওটাকে নিচে ফেলে পা দিয়ে মাড়াতে শুরু করলেন। তারপর ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে আগুন ধরিয়ে দিলেন।“(স্মৃতির দখিন দুয়ার: এক, পৃ: ৫৩) অনেকটা কাব্যিক ভাষায় শৈশবের গ্রাম-জীবনের চিত্র তুলে এনেছেন 'স্মৃতির দখিন দুয়ার (দুই)’-তে। বাইগার নদীর পাশের সেই টুঙ্গিপাড়ায় জীবনের শেষ সময়টুকু থাকার ইচ্ছে পোষণ এতে উল্লেখযোগ্য। “দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে পেরে আমি গর্বিত। আমার জীবনের শেষ দিনগুলো আমি স্থায়ীভাবে টুঙ্গিপাড়ায় কাটাতে চাই।“ (স্মৃতির দখিন দুয়ার: দুই, পৃ: ৫৭) 'স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার' প্রবন্ধে সহধর্মিনী ও রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে বেগম মুজিবের ভূমিকা আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। ‘ স্মরণ শ্রদ্ধার্ঘ্য’ শিরোনামে সংকলিত প্রবন্ধত্রয়ে ড.আবদুল মতিন, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এবং শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতি উঠে এসেছে। এই তিনজনের কথা বলতে গিয়ে প্রত্যেকর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রপাত থেকে আপন অভিজ্ঞতার আলোকে ধরা পড়া তাদের চরিত্র বৈশিষ্ট্য কুশলতার সাথে হৃদয়গ্রাহী করে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক শেখ হাসিনা। বিশেষত পিতৃতুল্য ড. আআবদুল মতিন চৌধুরী, নিজের বেদনার প্রতিচ্ছবি রূপে জাহানারা ইমাম এবং প্রতিবাদের প্রতীক বলে নামে দেয়া নূর আহমেদ _অনিভূতি, শ্রদ্ধা আর মমত্ববোধে পর পর তিনটি প্রবন্ধে যেভাবে উঠে এসেছে ততা সসত্যি অসাধারণ। উনিশশো একানব্বইয়ের কতগুলো স্মৃতি নিয়ে রচিত হয়েছে 'ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি'। শেখ হাসিনার লেখনীর অন্য একটি রূপ এতে পাওয়া যায়। নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে ভুলেননি তিনি, ফলে পিতার আদর্শ যে তাকে কতখানি প্রভাবিত করে তার অসাধারণ উপলব্ধি পাঠক পাবেন এই প্রবন্ধে। একানব্বইয়ের সাইক্লোনের তাণ্ডব, বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে তাঁর ভূমিকা ও শাসকগোষ্ঠীর সমালোচনা বিচক্ষণতার সাথে তুলে ধরেছেন। গ্রন্থটির পর আশা করা যায় তাঁর অন্যান্য গ্রন্থগুলো পড়ার ইচ্ছাও জাগবে গভীরভাবে। সেইসাথে'লেখিকা' শেখ হাসিনাকেও খুঁজতে উৎসাহিত হবেন পাঠক। গ্রন্থটির ভাষা অত্যন্ত প্রাঞ্জল এবং সুখপাঠ্য। এর সহজ সরল ভঙ্গিতে উচ্চারিত হৃদয়স্পর্শী স্মৃতিচারণ নিঃসন্দেহে রাজনীতি ও সমাজ সচেতন জ্ঞানপিপাসু পাঠককে আরেকটি নির্ভরযোগ্য উৎসের সন্ধান দিবে।
Was this review helpful to you?
or
#Sorone_mohanayok_book_review_2021 বইয়ের নামঃশেখ মুজিব আমার পিতা লেখকঃ শেখ হাসিনা প্রকাশনীঃ আগামী প্রকাশনী ধরনঃ স্মৃতিকথামূলক আত্নজৈবনিক রচনা মলাট মূল্যঃ ২৫০ টাকা প্রথম প্রকাশঃ ২০১৫ সাল রিভিউ লেখকঃ ফাতেমা হেলালী বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার স্মৃতিচারণ মূলক লেখা "শেখ মুজিব আমার পিতা" নামক বইটি। বইটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলেবেলা সহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলেবেলা সূচারু রূপে তুলে ধরেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা দশটি প্রবন্ধ এই বইতে চারটি পর্যায়ে সন্নিবেশিত হয়েছে।পর্যায়গুলোর শিরোনাম ---- বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা, স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব এবং ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি। "বাইগার নদীর পাশে টুঙ্গিপাড়া। এই নদী মিশেছে মধুমতী নদীতে। দু'শ বছর পূর্বে মধুমতী নদী এই গ্রাম ঘেঁষে বয়ে যেত। " ---এই অসাধারণ বাক্য দিয়ে স্মৃতি কথা শুরু করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর পিতার শৈশবের কথা, তিনি কি খেতে পছন্দ করতেন,তাঁকে কি নামে সবাই ডাকতো৷ গ্রামের লোকেরা বঙ্গবন্ধুকে কি নামে ডাকতেন সকল কথা তিনি লিখেছেন তাঁর এই বইটিতে।আরও উল্লেখ আছে বঙ্গবন্ধুর গেফতার হওয়ার ঘটনা। তিনি ১৯৪৯ সাল থেকে একটানা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত বন্দী ছিলেন।বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক দেওয়া, স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠন প্রক্রিয়া, চাকরিতে পুনর্বাসন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে "দিঘনালা" রুমা,আলী কদম এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ৩ টি ছাউনি গড়ে তোলা সবই দক্ষ হাতে লিখেছেন বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার মধুর শৈশব স্মৃতি এই বইটি পড়লে জানা যাবে৷ নদীর ধারে বেড়ানো, পানিতে জোড়া নারকেল ভাসিয়ে অথবা কলাগাছ ফেলে সাঁতার কাটা, গামছা বিছিয়ে টেংরা, পুঁটি, খল্লা মাছ ধরা। বর্ষাকালে পানি এলে কচুরিপানার শেখর থেকে কই ও বাইন মাছ ধরা, বৈশাখে কাঁচা আম কুচি কুচি করে কেটে সর্ষেবাটা ও কাঁচা মরিচ মাখিয়ে কলাপাতা কোনাকুনি করে সেই আমমাখা পুরে রস করে খাওয়া, ডাল ঝাকিয়ে বড়ই পেরে কাড়াকাড়ি করে খাওয়ার মজার ঘটনা সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। যেন গ্রাম বাংলার দূরন্ত বালিকার জীবন কাহিনি পড়ছি বলে মনে হচ্ছিলো। মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিলো যা বইটি না পড়লে কখনোই পেতাম না৷ বইটিতে পারিবারিক নানান ঘটনা, রাজনৈতিক ঘটনা উল্লেখ আছে যা হয়তো অনেকের অজানা। বঙ্গবন্ধুর হত্যা ঘটনা, হত্যার আগে ও পরের ঘটনা সব ই আছে বইটিতে৷ বঙ্গবন্ধুর হত্যার ঘটনা যতবার পড়ি ততবারই চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে । যখন একটা মেয়ে তার পরিবারের সকলের মৃত্যু দেখে সেই জায়গা থেকে বইটি পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারি নি৷ কতটা ব্যথা কতটা কষ্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এগুলো লিখেছেন৷ হত্যার পরবর্তী তাঁর সংগ্রাম, মনের আকুলতা, মনকে শক্ত করার সকল ঘটনা তিনি তার কলমে তুলে ধরেছেন। শোকে পাথর হওয়া দুই বোন কিভাবে বেঁচে গেলেন আর শোক সামাল দিলেন সেই কথাও আছে বইটিতে। বেগম মুজিব যে একজন আদর্শ স্ত্রী, আদর্শ মা ছিলেন তার প্রতিফলন আমরা এই বইটিতে দেখতে পাই৷ বইটি এক কথায় অসাধারণ। কখনো হারিয়ে গিয়েছি সেই টুঙ্গিপাড়ার মেঠো পথে কখনও বাইগার নদীতে, কখনো বা ভেবেছি দূরন্ত কিশোরির কথা আবার জেনেছি দূরন্ত কিশোরী কিভাবে হয়ে উঠলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী। জেনেছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আত্নত্যাগের কথা, তাঁর পরিবারের আত্নত্যাগের কথা,এক সাহসী পিতার সাহসী কন্যার কথা৷ আমি মনে করি এসকল ইতিহাস জানার জন্য বইটি পড়ার কোন বিকল্প নেই৷
Was this review helpful to you?
or
Amazing!!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।অবশ্য পাঠ্য
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বই : শেখ মুজিব আমার পিতা লেখিকা : শেখ হাসিনা জনরা : প্রবন্ধ প্রকাশনী : আগামী প্রকাশনী রিভিউদাতা : মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেখ হাসিনাকে তো আমরা সবাই চিনি। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ আমাদের বেশিরভাগের কাছে শেখ হাসিনার পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা এবং তিনি এক তুখোড় রাজনীতিবিদ। কিন্তু এটা তাঁর অসম্পূর্ণ পরিচয়। তাঁর আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হলো তিনি একজন সুলেখিকা। পঁচাত্তরের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পর নির্বাসনে থাকার সময় তাঁর রাজনৈতিক বিকাশ ঘটে এবং একাশিতে দেশে ফিরে এসেই তিনি দেশ নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন। ভাবনাগুলোকে শুধু মাথায় সীমাবদ্ধ না রেখে সেগুলোকে তিনি ছড়িয়ে দেন কাগজের পাতায়। ওরা টোকাই কেন (১৯৮৮), বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম (১৯৯৩), সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র (১৯৯৪) সহ পাঁচটি স্বরচিত গ্রন্থ এবং বেবী মওদুদের সাথে দুইটি সংকলন প্রকাশ করেন তিনি। আলোচ্য বইটা তিনি রচনা করেন ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে। এবার আসা যাক বইটার সংক্ষিপ্ত পরিচয়ে। বইটার নাম দেখে যদিও ভেবেছিলাম বইটা এক বাবাকে নিয়ে তাঁর কন্যার স্মৃতিচারণমূলক একটা বই হবে কিন্তু শুরুতেই হতাশ হতে হয়েছে। বইটা মূলত শেখ হাসিনার স্মৃতিকথামূলক আত্মজৈবনিক রচনা করতে যেখানে তিনি তাঁর শৈশব, মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো, বাবার সাথে স্মৃতি, বাবার হত্যাকাণ্ডের দিনগুলোর কথা এবং তাঁর জীবনে প্রভাব বিস্তারকারী তিনজন ব্যক্তি সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেছেন। অর্থাৎ বইটা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শেখ হাসিনার স্মৃতিকথামূলক একটা একক বই নয় বরং বিভিন্ন সময়ে লেখা দশটি প্রবন্ধের সংকলন। আর বইটা সামরিকতন্ত্রের সেই টালমাটাল সময়ে লেখা বলে প্রতিটা প্রবন্ধেই ঢুকে পড়েছে সেই সময়ের কথা, লেখিকার সংগ্রাম, আন্দোলনের কথা। লেখিকার লেখা এই দশটি প্রবন্ধকে সম্পাদক সাহেব বিষয়বস্তু অনুসারে আবার চারটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা, স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য এবং ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি – এই চারটি পর্যায়ে বিভক্ত হয়েছে প্রবন্ধগুলো। প্রথম পর্যায়ের প্রবন্ধগুলো বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা। শেখ মুজিব আমার পিতা, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী এবং ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড – এই তিনটা প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে এই পর্যায়ে। প্রবন্ধগুলোতে লেখিকা বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠা এবং এক কন্যা হিসেবে তাঁর সান্নিধ্য, সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা এবং সেই একই সেনাবাহিনী কর্তৃক তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার কথা আলোচনা করেছেন। একই সাথে উঠে এসেছে সেনাশাসনের প্রতি তাঁর ঘৃণা এবং মুজিব হত্যার বিচারের শপথের কথা। এই তিনটা প্রবন্ধ যদি মূল্যায়ন করি তাহলে বলব তেমন কোনো নতুনত্ব নেই এখানে। গরীবদের সাহায্য করা, শেরেবাংলার নিকট দাবি উত্থাপন করে আলোচিত হওয়া বা কামাল কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে বাবা ডাকার অনুমতি প্রার্থনা – এসব প্রতিটা ঘটনায় আমরা জেনেছি ‘ অসমাপ্ত আত্মজীবন ‘ থেকে। আবার পরের দুইটা প্রবন্ধে লেখিকা শুধু এটাই দেখাতে চেয়েছেন যে বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং একাত্তরে পরাজিত শক্তি ক্ষমতায় যেতে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে পঁচাত্তরের ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু এই আলোচনায় সেনাবাহিনী-রক্ষীবাহিনী দ্বন্দ্ব, মুক্তিযোদ্ধা-অমুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের দ্বন্দ্ব, পদায়নের সিনিয়রিটি ভাঙ্গা বা ডালিমদের ব্যক্তিগত শত্রুতার কোনো উল্লেখ নেই যা প্রবন্ধগুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ হতে দেয় নি। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রবন্ধগুলোতে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা। স্মৃতির দখিন দুয়ার ১ ও ২ এবং স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার – এই তিনটা প্রবন্ধে লেখিকা গোপালগঞ্জে তাঁর শৈশবের কথা, ১৯৭১ সালের ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে অবরুদ্ধদের কথা এবং জাদুঘর হিসেবে বাড়িটা দানের পূর্বে বাড়িটা নিয়ে সার্বিক স্মৃতিচারণ করেছেন। এই প্রবন্ধগুলো থেকে বেশ কিছু নতুন বিষয় জানতে পেরেছি। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো লেখিকার গ্রামের প্রতি মুগ্ধতা ও শেষ বয়সে সেখানে বসবাসের ইচ্ছা, বেগম মুজিবের মানসিক দৃঢ়তা ও পাকিস্তানি পতাকা পা দিয়ে মাড়াইয়ের কথা এবং বিজয়ের পরেও ধানমন্ডির বাড়ির ঐ রোডে গোলাগুলিতে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কথা। এই পর্যায়েই প্রথম লেখিকার দারুণ কিছু চিত্রকল্পের বর্ণনার প্রমাণ পেয়েছি। তৃতীয় পর্যায়ে লেখিকা ড. আব্দুল মতিন, জাহানারা ইমাম এবং নুর হোসেনকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন। এঁদের মধ্যে প্রথমজন লেখিকার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন যিনি তাঁকে ১৫ আগস্টের পূর্বের জার্মানি গমন স্থগিত করতে বলেন যা তাঁর জীবনাবসান ঘটাতে পারতো। কিন্তু তার পরবর্তী জীবনে তাঁর স্নেহ ও ভালোবাসা লেখিকাকে বাঁচার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আর জাহানারা ইমাম ও নুর হোসেন লেখিকাকে দিয়েছেন স্বাধীনতাবিরোধী ও সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা। এই অংশে লেখিকার আবেগপ্রবণতা ও সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ে লেখিকা ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কথা বলেছেন। এখানে তিনি বাবার সাথে নিজেকে মিলিয়ে সত্তর ও একানব্বইয়ের দুর্যোগ দুটিকে একসাথে দেখাতে চেয়েছেন। এই অংশেও লেখিকার সংবেদনশীলতা এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ মেলে। তাছাড়া লেখিকার লেখনীর চমৎকার দুটি দিক চিত্রকল্প নির্মাণ ও রূপকের ব্যবহার চোখে পড়ে এখানে। লেখনী নিয়ে কিছু একটা বলা যাক। গ্রামের বর্ণনা, সাগরের প্রতি মুগ্ধতা, জাহানারা ইমাম বা নুর হোসেনকে নিয়ে স্মৃতিচারণ ইত্যাদি বেশ কয়েক জায়গায় লেখিকা দারুণ মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। পুরো বইটাই বেশ সহজ-সরল ভাষায় লেখা। সামরিকতন্ত্রের প্রতি ঘৃণা বা বঙ্গবন্ধুর প্রতি আবেগ বা ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন ইত্যাদি যে ভাষায় বলেছেন তা মনোমুগ্ধকর। প্রিয় পাঠক সম্বোধন করে বলা কথাগুলো পাঠককে বইয়ের সাথে চমৎকারভাবে কানেক্ট করিয়েছে। তবুও কিছুটা খামতি রয়ে গিয়েছে। বিশেষত বাক্য গঠনে সমস্যা লক্ষ্যণীয়। বিরামচিহ্নের ভুল ব্যবহার বা বানান ভুলও আছে প্রচুর পরিমাণে। আরেকটা বিষয় হলো যেহেতু বইটা একক বই হিসেবে লেখা হয়নি সেহেতু প্রচুর পরিমাণে পুনরাবৃত্তি আছে। একই কথা বা ঘটনা এসেছে বারবার। এবার আসি লেখিকার স্বপ্নের কথা নিয়ে। ঘুরেফিরে পুরো বইয়ে লেখিকার তিনটা স্বপ্নের কথা উচ্চারিত হয়েছে। প্রথমত স্বৈরতন্ত্র হটিয়ে কার্যকর সংসদীয় গণতন্ত্র আনা ও মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত বঙ্গবন্ধুর খুনীদের শাস্তি কার্যকর করা। আর তৃতীয়ত শেষ বয়সটা গোপালগঞ্জের গ্রামে কাটানো। তৃতীয় স্বপ্নের বিষয়ে এখনও বলার সময় আসেনি তবে প্রথম দুইটা নিয়ে মন্তব্য করা যেতেই পারে। সফলতার গল্পই আগে বলি। লেখিকা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রিত্ব পেয়েই তাঁর বাবা ও পরিবারের হত্যা মামলা আদালতে তুলেছেন এবং পরবর্তীতে রায়ও কার্যকর করেছেন। কিন্তু প্রথম স্বপ্নটা কি পূরণ হয়েছে? একটা কার্যকর সংসদ কি আমরা পেয়েছি? স্বৈরশাসক এরশাদের সাথেই কি তাঁর জোট গঠন করতে হয় নি? ভাতের অভাব কিছুটা দূর করেছেন সত্য কিন্তু ভোটের রাজনীতি কতটুকু করতে পেরেছেন? এই প্রশ্নগুলো থেকেই যায়। সার্বিকভাবে বলতে গেলে, প্রাথমিক আশা পূরণ না হওয়া, পুনরাবৃত্তি, তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু না পাওয়া প্রভৃতি কারণে আশাহত হলেও রাজনীতিবিদদের লেখালেখি, দারুণ কিছু চিত্রকল্প ও রূপকের ব্যবহার ও নতুন কিছু ঘটনা জেনে আনন্দিতও হয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
১৫ আগস্ট বাঙ্গালি জাতির শোক দিবস। এই দিনটিতে কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস মানে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস। তার জীবন ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস জড়িত। এই মহান মানুষটি জীবনে যাই করেছেন তার সবই দেশের জন্য করেছেন। তার প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ছিল দেশের সার্থে। তার জন্ম না হলে আজ আমরা স্বাধীনতা পেতাম না।
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
খুব ভাল।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন
Was this review helpful to you?
or
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধা অর্পন। স্বজন হারানোর পর একাকিত্ব দিনের কথা, হারানোর ব্যথা, , কিভাবে রাজনীতিতে নিজেকে যুক্ত করা - এ সবই আছে এই বইয়ে। তাছাড়া তার উপর বিভিন্ন সরকারের নির্যাতন ,সব-ই তিনি ব্যক্ত করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কন্যা শেখ হাসিনার অনুভূতি ও আবেগ নিয়ে লেখা প্রবন্ধগুলি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে এই বইটি। পিতা শেখ মুজিবুর রহমান যখন জেলে বন্দী থাকতেন, যখন আন্দোলনে যেতেন - সেই দিনগুলিতে শেখ পরিবারের সদস্যদের রোজনামচা প্রকাশ পেয়েছে এই গ্রন্থে। এই গ্রন্থে ফুটে উঠেছে ব্যক্তি শেখ হাসিনার আক্ষেপ, আবেগ, কন্যা হিসেবে পিতার প্রতি ভালোবাসা।
Was this review helpful to you?
or
?বইয়ের নাম : শেখ মুজিব আমার পিতা ?লেখক: শেখ হাসিনা ?প্রকাশনা: আগামী প্রকাশনী ?পৃষ্ঠা সংখ্যা:১১১ ?মূল্য: ২১৩৳ উনিশশো একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।আজীবন ন্যায়ানুগ-শোষণহীন গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ার লক্ষে কাজ করে যাওয়া অম্লান প্রোজ্বল এই মহান মানুষটিই যুদ্ধ শেষ হলে কাঁধে নিয়েছিলেন বিধ্বস্ত রাষ্ট্র পুনর্গঠনের গুরুদায়িত্ব-ভার।কিন্তু মাত্র তিন বছর সাত মাস সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেই সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি নিজেদের জিঘাংসা চরিতার্থ করতে নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির জনককে। শুধু বঙ্গবন্ধু নন,নরপিশাচদের হাতে প্রাণ হারান তার স্ত্রী,পুত্র,পুত্রবধূ সহ উপস্থিত পরিবারের সদস্যরা।বঙ্গবন্ধু-তনয়া শেখ হাসিনা সপুত্রক জার্মানি থাকায় রক্ষা পান এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ থেকে।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ গভীর ষড়যন্ত্রের জালে আচ্ছাদিত হয়। সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান চলতে থাকে।একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় আরোহণ করে সমাজ-রাজনীতিতে স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসন করেন-বঙ্গবন্ধু শাসন আমলের সকল মৌল চেতনা সঙ্গীনের আঘাতে ছিন্নভিন্ন করে যেনো ঘটতে থাকে একাত্তর-বিপ্লবের প্রতিবিপ্লব।এসময় শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে দেয় নি তৎকালীন জিয়াউর রহমান সরকার।ভারতে অবস্থান করে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেছেন তিনি। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আকস্মিক এবং অভাবিত হলেও তার নিহত জনকের শূন্যস্থান গ্রহণ ছিল যৌক্তিক পরিণতি। এই ঘটনা তদানীন্তন সামরিক স্বৈরাচারের নিশ্চয়ই অভিপ্রেত ছিল না, কিন্তু ইতিহাসের গতি যে বড়ই বিচিত্র!যে নৃশংস প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বংশ করতে চেয়েছিলো,যে অন্ধশক্তি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সফল নেতৃত্ব দানের অপরাধে চার জাতীয় নেতাকে কারগারে পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছিল,তারা কি স্বপ্নেও ভেবেছিলো একদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই ক্ষমতাসীন হয়ে তাদের বিচার করবেন? পঁচাত্তরের ঘাতকচক্রের জন্যে অবিশ্বাস্য হলেও তা ছিলো ইতিহাসের বাস্তব সত্য! স্বৈরাচারী সামরিক সরকারের শাসনের সেই অন্ধকার সময়ে শেখ হাসিনার লেখা দশটি প্রবন্ধ নিয়ে রচিত হয়েছে স্মৃতিকথামূলক আত্মজৈবনিক গ্রন্থ "শেখ মুজিব আমার পিতা"।কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা,১৯৯৯তে প্রকাশিত হয় গ্রন্থটি। মোট চারটি পর্যায়ে এই প্রবন্ধগুলো সন্নিবেশিত হয়েছে— বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি,মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা, স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য এবং ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি- এই নামে।বইয়ের প্রবন্ধগুলো সবই ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে লেখা,বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের পরিক্রমায় যে বছরগুলো ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-যে বছর গুলোতে বারে বারে পরিবর্তনের ঢেউ অশান্ত করে তুলেছে বাংলাদেশকে-এবং অশান্ত করেছে লেখিকা শেখ হাসিনার জীবনকেও।প্রবন্ধগুলিতে শেখ হাসিনার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ,পিতার নির্মম মৃত্যু, তদানীন্তন সমাজ-রাজনীতির ছবি এবং দিন বদলের আহবান দৃঢ়ভাবে উঠে এসেছে। প্রথম পর্যায়ের তিনটি প্রবন্ধ 'শেখ মুজিব আমার পিতা', 'বঙ্গবন্ধু ও তার সেনাবাহিনী' এবং ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড'—এর মূল উপজীব্য বঙ্গবন্ধু স্বয়ং। শুধু মেয়ে হিসেবেই নন,পিতার রাজনৈতিক জীবনের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হিসেবে পিতার জীবনের নানা ঘটনার মালা গেঁথেছে লেখিকা প্রবন্ধত্রয়ে।বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর ওঠা বিতর্ক নিয়ে শেখ হাসিনার শেষ দুটি প্রবন্ধ বোধ করি সচেতন-পাঠকমাত্রেই আলোড়ন তুলবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের তিনটি প্রবন্ধ—'স্মৃতির দখিন দুয়ার(এক এবং দুই)','স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার'—এ ধরা পড়েছে লেখিকার স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনসহ রাজনৈতিক জীবনের টুকরো ঘটনার উল্লেখ আছে এখানে। স্মরণ শ্রদ্ধার্ঘ্য শিরোনামে সংকলিত প্রবন্ধত্রয়ে ড.আবদুল মতিন,শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এবং শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতি উঠে এসেছে। এই তিনজনের কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা সাল-তারিখের ছকবাঁধা পথে হাঁটেননি,বরং প্রত্যেকর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রপাত থেকে আপন অভিজ্ঞতার আলোকে ধরা পড়া তাদের চরিত্র বৈশিষ্ট্য হৃদয়গ্রাহী করে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।বিশেষত জাহানারা ইমামকে নিয়ে লিখিত প্রবন্ধটিতে লেখিকা যেভাবে শহীদ জননীর সঙ্গে বেদনার অদ্ভুদ সাযুজ্যের সন্ধান পেয়েছেন এবং তৎকালীন ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষাপটে বর্ণনা করেছেন,তা সত্যিই অসাধারণ! শেষত উনিশশো একানব্বইয়ের কতগুলো স্মৃতি নিয়ে রচিত হয়েছে "ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি"। ব্যক্তিগতভাবে লেখিকা শেখ হাসিনার সাথে আমার পূর্বপরিচয় ছিলো না,তবে এই বইটি পড়ার পর তার অন্যান্য বইগুলো পড়ার ইচ্ছাও জাগলো গভীরভাবে।যাহোক, আলোচ্য নাতিদীর্ঘ বইটির ভূমিকা লিখেছেন জাতীয় অধ্যাপক উপাধি প্রাপ্ত বুদ্ধিজীবী ড.রফিকু্ল ইসলাম।এবং প্রস্তাবনা রচনা করেছেন ওপার বাংলার খ্যাতনামা লেখক পার্থ ঘোষ।বইয়ের ভাষা অত্যন্ত প্রাঞ্জল এবং সুখপাঠ্য। নিঃসন্দেহে রাজনীতি ও সমাজসচেতন পাঠককে জ্ঞানসমৃদ্ধ করবে এবং ইতিহাস নিয়ে চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি। #হ্যাপি_রিডিং?
Was this review helpful to you?
or
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচয় দিতে গেলে প্রথমেই আসবে তিনি একজন রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা। কিন্তু এর বাইরেও তাঁর আলাদা একটি পরিচয় আছে। তিনি একজন সুলেখিকা। তাঁর রচিত অনেকগুলো বই বের হয়েছে। এক সময় বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন। বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। তাই রাজনীতির মতই সাহিত্যের অলিগলি তাঁর চিরচেনা। তাঁর লেখা গ্রন্থগুলোর মধ্যে 'ওরা টোকাই কেন?', 'সবুজ মাঠ পেরিয়ে', 'শেখ মুজিব আমার পিতা', 'দারিদ্র্য বিমোচনঃ কিছু চিন্তাভাবনা', 'আমার স্বপ্ন, আমার সংগ্রাম', 'People and Democracy', 'The Quest for Vision- 2021' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। উপর্যুক্ত বইগুলোর মধ্যে 'শেখ মুজিব আমার পিতা' বইটি আলাদাভাবে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। বইটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত নির্বাচিত দশটি প্রবন্ধের সংকলন। বইটির ভূমিকা লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং সম্পাদনা করেছেন পার্থ ঘোষ। ১৯৯৯ সালে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বইটি প্রকাশিত হয়। 'শেখ মুজিব আমার পিতা' বইটিকে চারটি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এর প্রথম তিনটি অধ্যায়ে তিনটি করে প্রবন্ধ আছে। শেষ অধ্যায়ে একটি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। প্রথম দুই অধ্যায়ে পারিবারিক স্মৃতি থাকলেও তৃতীয় অধ্যায়ে লেখিকা ড. আবদুল মতিন চৌধুরী, বেগম জাহানারা ইমাম ও নূর হোসেনকে স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছেন এবং শেষ অধ্যায়ে একানব্বই সালের ভয়ংকর সাইক্লোনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। প্রতিটি প্রবন্ধই ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে লেখা হয়েছে৷ বইটির প্রথম অধ্যায়ের নাম 'বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি'। এতে তিনটি প্রবন্ধ রয়েছে- ১. শেখ মুজিব আমার পিতা- এই প্রবন্ধে বাবা সম্পর্কে দেখা ও শোনা নানা ঘটনার বর্ণনা করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। বঙ্গবন্ধুর শৈশব, রাজনীতিতে হাতেখড়ি, জেলে বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অবস্থা জানার জন্য এই প্রবন্ধটি সবার কাজে দেবে। ২. বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনা বাহিনী- সেনাবাহিনীকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টভঙ্গি ও বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যে বিতর্ক প্রচলিত আছে, তা কতটুকু যৌক্তিক তা এই প্রবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। ৩. ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড- এই প্রবন্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনার বিবরণ দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা জড়িত ছিল, তাদের পরিচয় দিয়েছেন। বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিরোনাম- 'মুক্তিযুদ্ধ ও পারিবারিক কথা'। এতেও স্থান পেয়েছে তিনটি প্রবন্ধ- ১. স্মৃতির দখিন দুয়ার (এক)- ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। রেসকোর্স ময়দানে পাক সেনাবাহিনী যখন আত্মসমর্পণ করছিলো, তখন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বন্দি করে রাখা হয়েছিলো ধানমন্ডির ১৮ নম্বর রোড়ের একটি বাড়িতে। রুদ্ধশ্বাস সেই মুহূর্তগুলো বর্ণনা জানতে পারা যায় এই প্রবন্ধে। ২. স্মৃতির দখিন দুয়ার (দুই)- এই প্রবন্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর শৈশবে ফিরে গেছেন। অত্যন্ত কাব্যিক বর্ণনায় তিনি টুঙ্গিপাড়ার সৌন্দর্য তুলে এনেছেন বইয়ের পাতায়। এই প্রবন্ধের শেষে তিনি ইচ্ছাপোষণ করেছেন, "আমার জীবনের শেষ দিনগুলো আমি টুঙ্গিপাড়ায় স্থায়ীভাবে কাটাতে চাই।" ৩. স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার- ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের পারিবারিক বাড়িটি শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন, যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় 'বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর'। এই প্রবন্ধটি লেখা হয়েছিল সেই ঐতিহাসিক দিনটি উপলক্ষে। বইটির তৃতীয় অধ্যায়ের নাম- 'স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য'। এতে তিনজন ব্যক্তিত্ব নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিচারণ স্থান পেয়েছে। ১. ড. আবদুল মতিন চৌধুরীঃ আমার স্মৃতিতে ভাস্বর যে নাম- ড. আবদুল মতিন ছিলেন পনেরো আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। তাঁকে ঘিরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জীবনের একটি বিশেষ স্মৃতি স্থান পেয়েছে প্রবন্ধটিতে। ২. বেগম জাহানারা ইমাম- এই প্রবন্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সাথে নিজের স্মৃতিচারণ করেছেন। এই মহীয়সী নারীকে কীভাবে চক্রান্ত করে দেশদ্রোহী বানানো হয়েছে তা জানলে সবার কষ্ট লাগবে। ৩. নূর হোসেন- স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক নূর হোসেন। নির্ভীক নূর হোসেনের বুকে-পিঠে "স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক" লেখা দেখে মমতাময়ী মায়ের মতোই সন্তানের অনিষ্ট চিন্তা করে আঁতকে উঠেছিলেন শেখ হাসিনা। নূর হোসেনকে নিয়ে তাঁর সেই বেদনাবিধুর স্মৃতি স্থান পেয়েছে এই প্রবন্ধে। বইটির সর্বশেষ অধ্যায় 'ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি'। এতে একটি মাত্র প্রবন্ধ আছে- ১. একানব্বইয়ের ডায়েরি- ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী সাইক্লোনে ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রামে ছুটে যান তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। মানুষের জন্য কাজ করতে হলে যে ক্ষমতায় না থেকেও ভূমিকা রাখা যায়, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই প্রবন্ধটি। সবশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও তাঁর পরিবারের নানা স্মৃতিকে ধারণ করে আছে 'শেখ মুজিব আমার পিতা' বইটি। এছাড়াও বইটিতে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রামের ইতিহাস। যে সময় প্রবন্ধগুলো প্রকাশিত হয়েছিলো, তা সে সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং সাহসী পদক্ষেপ ছিলো। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের হাতিয়ার হয়েছিলো প্রবন্ধগুলো। এক কথায়, একজন শেখ হাসিনা কতটুকু বলিষ্ঠ মননের অধিকারী, তা বইটির প্রতিটি প্রবন্ধে স্পষ্ট। নিজের দেশের সরকার প্রধানের লেখার হাত এত ভাল জেনে মন থেকে প্রশংসা চলে আসে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পরে বঙ্গবন্ধু পরিবার সম্পর্কে ধারণা আরো প্রসারিতহয়ে।
Was this review helpful to you?
or
শেখ হাসিনার ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ : ত্যাগ, সংগ্রাম ও জীবনের আলেখ্য -------------------------------------------------------------- মুহাম্মদ ফরিদ হাসান -------------------------------------------------------------- সেই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে, টুঙ্গিপাড়া যার নাম; সেখান থেকে এসে কর্মে, আন্দোলনে, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যিনি বাংলাদেশকে রোদ-জোছনার মায়াবী আলোতে ভরিয়ে দিয়েছেন, শত বছরের প্রাচীন দৈত্য-দানোর কৌটা থেকে তুলে এনেছেন বহুল আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতাকে- তিনি বাঙালী জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর আদর্শের কণ্টকাকীর্ণ পথে হেঁটে তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয়ী, অঙ্গীকারবদ্ধ। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থটি শেখ হাসিনার আত্মজৈবনিক রচনা হলেও এতে ‘বঙ্গবন্ধু : তাঁর জীবন ও স্বপ্ন’ উল্লেখিত হওয়ার পাশাপাশি উপস্থাপিত হয়েছে লেখকের রাজনৈতিক আন্দোলন, ত্যাগ ও সোনারঙা শৈশবের টুকরো টুকরো স্মৃতি। ঘুরে ফিরে তিনি লেখায় ধারণ করেছেন তাঁর কাক্সিক্ষত বাংলাদেশকে। যেহেতু শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, অধিকন্তু তাঁর আন্দোলন, সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘÑ তাই ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থটি কেবল আত্মজৈবনিক রচনা হয়ে উঠেনি, এতে সহজাতভাবে স্থান পেয়েছে রাজনীতি, অপরাজনীতি, ক্ষমতার লড়াই, দেশের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। কখনও কখনও এসব কথাই ছাপিয়ে উঠেছে ‘বিশেষ এক উদ্দেশ্যের হাতিয়ার’ হয়ে এবং তা সঙ্গত কারণেই। আলোচ্য গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে চতুর্মুখী দশটি রচনা। এসব প্রবন্ধ লেখা হয়েছে ১৯৮৩ সাল থেকে শুরু হয়ে ১৯৯৪ সালের মধ্যে। তাই বিশেষ করে এসব রচনাগুলো ধারণ করে আছে ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিচিত্র। কলমের অক্ষরে উঠে এসেছে ধানম-ির ৩২ নম্বর বাড়ি, জেনারেল জিয়াউর রহমান ও স্বৈরাচার এরশাদের শাসন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, অপরাজনীতির নোংরা হস্তক্ষেপ, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, নূর হোসেন প্রমুখের কথা। পাশাপাশি শেখ মুজিব সম্পর্কে বেশকিছু অনালোকিত অধ্যায়ের আলোকপাত করেছেন লেখক। এক্ষেত্রে একটি কথা বলার আছে। যেহেতু শেখ হাসিনা কেবল বঙ্গবন্ধু কন্যাই নয়, বঙ্গবন্ধুর ‘রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গীও’- তাই জাতির জনকের অনেক অনালোকিত বিষয় নিয়ে তাঁর লেখার সুযোগ রয়েছে। হতে পারে আমরা তাঁর বয়ানে এমন তথ্য পেতে পারি, জানতে পারি এমন কোন ঘটনাও- যার মাধ্যমে সমৃদ্ধ হবে ইতিহাস, অনুপ্রাণিত হবে বর্তমান প্রজন্ম। লেখক হিসেবে যদিও শেখ হাসিনার পরিচিতি প্রসিদ্ধ নয়, বেশকিছু গ্রন্থের রচয়িতা হলেও; কিন্তু এই স্বল্প আয়তনে তবু এ কথা বলা যায় যে, রাজনীতি সাহিত্যে তাঁর ঘরানা আলাদা। তিনি রাজনীতির কথাগুলো বলছেন একদিকে, অন্যদিকে উদাহরণ, উপমায়, বর্ণনায় তা করে তুলেছেন সুপাঠ্য। মূলত শেখ হাসিনা বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী হলেও তিনি যখন কলম ধরেছেন, সময়ের প্রয়োজনেই ধরেছেন এবং লিখেছেন অসঙ্গতির বিরুদ্ধে তৎকালীন শাসকদের এতটুকু তোয়াক্কা না করেই। তাঁর প্রতিবাদী লেখনী অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আলোচ্য গ্রন্থে প্রথম তিনটি রচনা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন এ তিনটি লেখায় স্পষ্টাকারে উঠে এসেছে। উঠে এসেছে শেখ মুজিবের শৈশবকাল, কৈশোর, তাঁর সংগ্রাম, চিন্তা-চেতনা। শেখ হাসিনা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুর শৈশবের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে : ‘আমার আব্বার শৈশব কেটেছিল টুঙ্গিপাড়ার নদীর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে, মেঠো পথের ধুলোবালি মেখে। বর্ষার কাদাপানিতে ভিজে। বাবুই পাখি বাসা কেমন করে গড়ে তোলে, মাছরাঙা কিভাবে ডুব দিয়ে মাছ ধরে, কোথায় দোয়েল পাখির বাসা, দোয়েল পাখির সুমধুর সুর আমার আব্বাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করত। আর তাই গ্রামের ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে করে মাঠে-ঘাটে ঘুরে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে বেড়াতে তাঁর ভাল লাগত। ছোট্ট শালিক পাখির ছানা, ময়না পাখির ছানা ধরে তাদের কথা বলা ও শিস দেয়া শিখাতেন।’ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বন্দী, অন্যদিকে তাঁর পরিবার বন্দী ধানম-ির বাড়িতে। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনাসহ সবাই এ বাড়িতেই বন্দী ছিলেন। সে সময়ের বর্ণনা, যাপিত দিনগুলো পাই আমরা ‘স্মৃতির দখিন দুয়ার’ প্রবন্ধে। সে সময়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, পাক হানাদারদের নির্মমতার মাঝে বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রাণের ছোঁয়া এনে দিতো মুক্তিবাহিনীর কার্যক্রম। শেখ হাসিনা লিখেছেন : ‘সমগ্র দেশটাই ছিল এক বন্দীশালা। এরই মাঝে জীবনের ধ্বনি যেন পাওয়া যেত, যখন শোনা যেত কোন মুক্তিযোদ্ধার গুলি বা বোমার শব্দ- মিলিটারি মারার খবর। তাদের যেকোন আক্রমণ বা গ্রেনেড ফোটার বিকট শব্দ হলে- শত্রুপক্ষ সন্ত্রস্ত হতো- মনে হতো আমরা বেঁচে আছি, বেঁচে থাকব, আমাদের অস্তিত্ব এখনও আছে। অমৃতের বরপুত্র এই মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের যেন নতুন করে জীবনদান করে যেত!’ আলোচনাটি দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগ আমাদের এলাকায় বলে, "মা আদরা পুত আর বাপ আদরী ঝি" অর্থাৎ ছেলেরা মায়ের আদরটা বেশী পায় আর মেয়েরা পায় বাবার। কিংবা যদি সাহিত্যেও খুজতে যাই সেখানেও পাবো, "পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ পুরুষ আছে কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই" কিংবা "একটা মেয়ে হয়তো সারা জীবন তার স্বামীর কাছে রাণী হয়ে থাকে না, কিন্তু একটা মেয়ে তার বাবার নিকট সারা জীবন রাজকন্যা হয়েই থাকে"। এ থেকেই বুঝা যায় পিতা আর কন্যার সম্পর্ক কতোটা ভালবাসার..... হ্যা, এই আখ্যান এক সম্রাটকে নিয়ে এক রাজকন্যার লিখা, এক পিতাকে নিয়ে এক কন্যার। স্কুলটা বাড়ি থেকে বেশ দূরে। সোয়া কিলোমিটার। ছোট খোকা সেই স্কুল মানে গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া স্কুলের ছাত্র। তখন চলছে ভর বর্ষাকাল। চারদিকে ফুঁসে উঠছে পানি। নৌকা করে স্কুলে যেতে হয়। একদিন নৌকা দিয়ে স্কুলে থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘটল এক দুর্ঘটনা। বর্ষার পানিতে নৌকা ডুবে গেল। নৌকার মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিল। খোকা ভরা বর্ষার পানিতে হাবুডুবু খেয়ে কোনমতে পাড়ে এসে উঠল। এদিকে এ খবর দাদির কানে যাওয়া মাত্র তিনি মহা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলেন। সেদিন থেকে দাদির কড়া ঘোষণা খোকার স্কুলে যাওয়া বন্ধ। গোটা বংশের আদরের দুলাল এক রত্তি সোনার টুকরো নাতি বলে কথা! নাতিকে কলজের টুকরা বলে জ্ঞান করতেন। টুঙ্গিপাড়া থেকে স্কুল বদল করে খোকাকে পাঠানো হলো ওর বাবার কাছে। গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হলো তাকে। এরপর খোকার পুরো কৈশোর কেটেছে সেখানেই। শৈশবের গ্রাম, চপলতা, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো সব মিলিয়ে খোকার ছোটবেলাটা ছিল আর আট-দশটি আটপৌরে বাঙালীর মতোই। সেদিনের সেই ছোট্ট খোকা পরবর্তীতে নিজের প্রজ্ঞা আর দূরদর্শিতা দিয়ে পরিণত হয়েছিলেন মানুষের নেতায়। বাঙালীর স্বপ্নদ্রষ্টায়, বঙ্গবন্ধুতে, স্বাধীনতার স্থপতিতে। বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে অবিস্মরণীয় এক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। যাঁর উচ্চতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল আকাশতক। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর আত্মমর্যাদার নাম। অহংকারের নাম। বঙ্গবন্ধুর সিংহ হৃদয় মানুষের জন্য সবসময় প্রসারিত ছিল। মানুষকে পরম মমতায় নিজের করে নিতে পারার এক ঐশ্বরিক গুণ ছিল তাঁর। আর মানুষও তাঁর কথায় জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে এনে দেখিয়ে দিয়েছিল যে, হে মহান নেতা, তোমার জন্য আমরা সব অসাধ্য সাধন করতে পারি।যুদ্ধদিনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালী বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিশ্বের অন্যতম প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখে তাঁর অমোঘ বাণীকে সত্যে পরিণত করেছিল- তাঁর অনেক পরিচয়। একের ভেতর অজস্র। পুত্র, ভাই, স্বামী, চাচা, মামা, দাদা, নানা, শ্বশুর, শুভাকাঙ্ক্ষী , নিকটজন, নেতা কত পরিচয়েই না তিনি পরিচিত। সব পরিচয়ের আড়ালে লুকিয়ে আছে একজন সজ্জন মানুষের প্রতিকৃতি, একজন বিনয়ী মানুষের অবয়ব সর্বোপরি সিংহ হৃদয় ও বাঙালী অন্তপ্রাণ। প্রতিটি পরিচয়ে নিজেকে উজাড় করে মেলে ধরার প্রয়াস রয়েছে। তাঁর এতসব পরিচয়ের বাইরে একটি পরিচয় নিয়ে কৌতূহল চেপে রাখা বেশ কষ্টকর। সেটা হলো পিতা হিসেবে কেমন ছিলেন বঙ্গবন্ধু? এ বিষয়টি জানা যায় তাঁর বড় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা থেকে। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থে শেখ হাসিনা অপার মমতায় পিতার প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। পিতা বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায় কেমন ছিলেন তা বর্ণনা দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা লিখছেন, “দাদা আমাদের কাছে গল্প করলেন যে, ‘তোমার আব্বা এত রোগা ছিল যে, ফুটবলে জোরে লাথি মেরে মাঠে গড়িয়ে পড়ত। আব্বা যদি ধারেকাছে থাকতেন তবে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করতেন। আমরা তখন সত্যিই খুব মজা পেতাম। এর পেছনে মজার ঘটনা হলো মাঝে মাঝে আব্বার টিম ও দাদার টিমের মধ্যেও খেলা হতো। আমি যখন ঐ সমস্ত এলাকায় যাই, অনেক বয়স্ক লোকের সঙ্গে পরিচয় হয় যারা আব্বার ছোটবেলার কথা বলেন।” বড় মেয়ে হিসেবে বাবাকে বেশ কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে তখন বঙ্গবন্ধুর ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বে, চিন্তা-ভাবনায় হৃদয়বান মানুষের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে উঠত। ‘দাদির কাছে গল্প শুনেছি, যখন ছুটির সময় হতো তখন দাদি আমগাছের নিচে এসে দাঁড়াতেন। খোকা আসবে দূর থেকে রাস্তার ওপর নজর রাখতেন। একদিন দেখেন তাঁর খোকা গায়ের চাদর জড়িয়ে হেঁটে আসছে, পরনের পায়জামা-পাঞ্জাবি নেই। কী ব্যাপার, এক গরিব ছেলেকে তাঁর শত ছিন্ন কাপড়ে দেখে সব দিয়ে এসেছেন।’ ১৯৪৯ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র সমাজের গড়ে ওঠা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সোচ্চার। এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তাঁর পিতাকে নিয়ে একটি অসাধারণ মানবিক ঘটনার কথা উল্লেখ করছেন। বইটি মূলত ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তার লেখা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ ও সংকলনের সংগ্রহ। বইটি তে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকান্ড এবং একজন সন্তান হয়ে বাবার নৃশংস হত্যাকান্ডের বোঝা বহনের যন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন। প্রায় দশটি প্রবন্ধে সাজানো এই বইটিতে শেখ হাসিনা তার লেখনী প্রতিভার অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়েছেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’র মতো মধুমতি নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা টুঙ্গপাড়ার সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন আপন মহিমায়। টুঙ্গিপাড়ার সৌন্দর্য তোলে ধরতে গিয়ে লেখিকা বলেছে ‘‘নদীর দুপাশে তাল, তমাল, হিজল গাছের সবুজ সমারোহ। ভাটিয়ালি গানের সুর ভেসে আসে হালধরা মাঝির কণ্ঠ থেকে, পাখির গান আর নদীর কলকল ধ্বনি এক অপূর্ব মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলে”। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে নদীর পাশে একটি ঘর বানিয়ে জীবনের শেষ সময়গুলো ব্যায় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এ লেখিকা। বইতে বঙ্গবন্ধু ও তার সেনাবাহিনী এবং কিছু বিপদগামী নরপিশাচদের ন্যাক্কারজনক ১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বুঝাতে চেয়েছেন, জাতির পিতার হত্যার জন্য তিনি সব সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করছেন না। পরাজিতরাই প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে জাতির জনককে হত্যা করেছে।এবং পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এই হায়নারা কেমন করে আশ্রিত-পালিত হয়েছে তার ঘটনা প্রবাহ আলোকপাত করেছেন। শহীদ জননী জাহানার ইমামের করুণ পরিনতি এবং রাষ্ট্রর তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতি যে প্রীতি প্রদর্শন তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। স্বৈরাচারী আন্দোলনে তার নেতা কর্মীদের নিপীড়ণ এবং পিঠে বুকে গনতন্ত্রের স্লোগান বহনকরী নুর হোসেনের আত্মদান খুব করুণভাবে তোলে ধরেছেন একজন বোন হয়ে। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইটি পড়তে পড়তে পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত তৈরি করবে। একজন আটপৌরে বাঙালী কী করে একজন দায়িত্ববান পিতা হয়ে উঠতে পারে এ বই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এই বইটি পড়ে জ্ঞান উৎসাহী পাঠকরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে একটি কথা স্বীকার করবেন যে, তিনি একজন অসাধারণ পাঠক। একজন পাঠকই একজন অসাধারণ লেখকে পরিনত হন। জ্ঞান অন্বেষণে লেখিকার আগ্রহ আমাকে মুগ্ধ করেছে। বইটি পড়ে শেখ হাসিনার সাথে আজ নতুনভাবে পরিচিত হলাম। আট দশটা সাধারণ বঙ্গালি মেয়ের মতো টুঙ্গিপাড়ায় পরবর্তীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বেড়ে উঠা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র নায়েক হিসেবে গড়ে উঠার পিছনের ইতিহাসটা যে কোন মানুষকেই উৎসাহিত করবে বলে মনে করছি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগিতা বই- শেখ মুজিব আমার পিতা লেখিকা-শেখ হাসিনা পৃষ্ঠা-১১১ মূল্য-২৫০ আগামী প্রকাশনী "শেখ মুজিব আমার পিতা" বইটি শেখ হাসিনার স্মৃতিচারণ মুলক বই। বইয়ের অংশ মুলত তিন খন্ডে বিভক্ত করেছেন তিন।প্রথম খন্ডে বাবার স্মৃতিতে কন্যা তার পেছনের গল্প বলেছেন। বর্ণনায় উঠে এসেছে মুজিবের জন্মের কাহিনী। শেখ মুজিবের জন্মের সময় মুজিবের নানা মুজিবের মাকে পুরো সম্পত্তি লিখে দিয়ে বলেন "মা সায়রা তোর ছেলের এমন নাম রাখলাম যে নাম জগৎ জোড়া খ্যাত হবে।" শেখ মুজিবের নানার ভবিষৎবানী কাটায় কাটায় ফলে গিয়েছিলো। এভাবেই বইয়ের শুরু টুঙ্গীপাড়া গ্রামের বর্ণনা দিয়ে, পিতা পিতামহ বংশের পরিচয় দিয়ে মুজিবের জন্মের সময় বর্ণনা করা হয়। একে একে তার স্কুলে যাওয়া, কলেজে প্রবেশ, রাজনীতিতে প্রবেশ, সফল রাজনীতিবিদ, রাজনীতির সে সব উজ্জল দিন গুলোর বর্ণনা, বাংলার মানুষের জন্য সংগ্রামের কাহিনী বলি, মুক্তি সংগ্রাম, দেশ স্বাধীন, স্বাধীন দেশের দায়িত্ব নেওয়া, সেনাবাহিনীর সাথে মুজিবের সম্পর্কে প্রভৃতি ঘটনাবলী আলোচনার শেষে আসে ১৫ আগস্টের সেই নারকীয় দিনের বর্ণনা। এসবের মাঝে আরো যেসব স্মৃতি উঁকি দেয় তা হলো লেখিকার শৈশব। তিনি সেই সব রঙিন শৈশব, বাবাকে নিয়ে উৎকন্ঠার দিন গুলো বর্ণনা করেন। ২য় খন্ডে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও পারিবারিক স্মৃতির বর্ণনা করেন। লেখিকার সংগ্রামের দিনগুলোর কথা। ৩য় খন্ডে তিনি ড.আবদুল মতিন চৌধুরী,বেগম জাহানারা ইমাম এবং নূর হোসেনকে নিয়ে স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়েছেন। শেখ মুজিবর রহমান, যিনি বাঙালি জাতির পিতা। বাংলাদেশের পতকার স্রষ্টা। যিনি নিজের সবকিছু ত্যাগ করে শুধু মাত্র দেশ এবং দেশ জনসাধারণের কল্যানের কথা ভেবেছেন। সকল কিছুর বিনিময়ে বাঙালির মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত এবং বাংলাদেশকে স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। তারই কন্যা শেখ হাসিনা, সেই সংগ্রামী বাবার, সংগ্রামী জাতির পিতার স্মৃতি চারণ করছেন। "শেখ মুজিব আমার পিতা " কথাতেই অহংকার প্রকাশ পায়। এটা গর্বের অহংকার। আমাদের পুরো বাঙালি জাতির অহংকার আমরা এরকম একজন নেতা পেয়েছিলাম। তাকে ঘিরে লেখিকা তার আনন্দের, যন্ত্রণার পুরনো কাহিনী গুলো নতুন করে আমাদের শুনিয়েছেন। এই বেদনাভরা স্মৃতির পট উম্মেচিত হওয়ার পর, এটা মানতেই হয় স্মৃতি বড় বেদনা ময়। লেখিকার এই কথা আমাদের আরো বেশি বেদনার রঙ ছাড়িয়ে যায়। বইটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতেই এর পৃষ্ঠা গুলো শেষ হয়ে যায়। মনে হয় আরো কিছুটা লিখলে ভালো হতো। আরো কিছুটা কেন থাকলো না। লেখিকার আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ হলেও মনে হয় কোথায় যেন ডুব দিয়েছিলাম। কিভাবে যেন মাথা তুলে সোজা হয়েছি। লেখিকার টুকরো টুকরো স্মৃতি আমাদের অন্য কোথাও নিয়ে যায়।অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আমরা শুধু মাত্র একজন নেতা কে পেয়েছিলাম। আর এই বইয়ে একজন কন্যার পিতাকে পেয়েছি। যিনি কন্যার পুরো শৈশব কৈশর জুড়ে আছেন। লেখিকা ও শেখ মুজিবর রহমান কে জানতে এই বই সকলের পাঠ করা উচিৎ। কেন না ইতিহাসের অনেক না বলা কথা এখানে উচ্চারিত হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বই - শেখ মুজিব আমার পিতা লেখক - শেখ হাসিনা (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার) প্রচ্ছদ - মাসুম রহমান। প্রকাশনা - আগামী প্রকাশনী। মুদ্রিত মূল্য - ২৫০ টাকা। প্রথম প্রকাশ - ফেব্রুয়ারী ২০১৫। 'শেখ মুজিব আমার পিতা ' বইটি মুলত লেখক শেখহাসিনার স্মৃতিমূলক আত্মজৈবনিক রচনা। ১১১ পৃষ্ঠার বইটি জুড়ে রয়েছে লেখকের জীবন, আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং এরসাথে আরো অনেক ব্যক্তির কথা। বইটিতে চারটি মুল খন্ড এবং দশটি মূল শিরোনাম (প্রবন্ধ) রয়েছে। বইটির শুরুতেই রোমাঞ্চকর বর্ণনায় রচিত হয় একটি নদীর নাম,বইগার নদী। তারপর সেই টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে শুরু হয় লেখকের দুরন্তপনা শৈশবের স্মৃতিচারণ, বেড়ে ওঠার গল্প, গ্রামীণ জীবনের বর্ণনা। তারপরে আস্তে আস্তে রোমাঞ্চকর স্মৃতি রোমন্থন হয়ে উঠে দুর্বিষহ যা পাঠক পড়লেই বুঝে উঠবেন। এখানে আমরা লেখকের পিতা আমাদের জাতির জনকের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্ক জানলেও এমন কিছু বর্ণনা করা হয়েছে যার সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর ব্যাক্তিজীবন ও তিনি বাবা হিসেবে কেমন ছিলেন তা জানতে পারি,জানতে পারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিজীবন ও চাঞ্চল্যের শৈশব সম্পর্কে, জানতে পারি শেখ মুজিব এবং সেনাবাহিনীর প্রতি তাঁর অবদান সম্পর্কে, ইতিহাসের জগণ্যতম হত্যাকান্ডের চিত্রও এখানে তুলে ধরা হয়েছে, লেখা আছে বায়ান্নের কথা, একাত্তরের বাস্তব গল্প,পঁচাত্তরের করুণ মৃত্যুর মর্মান্তিক স্মৃতি। এই বইয়ে কিছু ব্যাক্তিবিশেষকে বিশেষভাবে জানতে পারি লেখকের মাধ্যমে তাঁরা হলেন ড.আব্দুল মতিন চৌধুরী, বেগম জাহানারা ইমাম, নুর হোসেন। এছাড়াও রয়েছে লেখক পরিবার সদস্য সহ আরো অনেক মানুষের কথা। বইটির শেষাংশে রয়েছে একানব্বইয়ের ডায়েরি। যাতে পেয়েছি ১০ টি স্মৃতিকথন। পাঠক প্রতিক্রিয়া - বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত অসংখ্য বই রচিত হয়েছে এবং সামনে আরো বই লেখা হবে কিন্তু "শেখ মুজিব আমার পিতা " বইটির আলদা বিশেষত্ব রয়েছে কেননা এ বই স্বয়ং বঙ্গবন্ধুর কন্যা পিতার জন্য লিখে যাওয়া বইয়ে পিতার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, শুভেচ্ছা, দায় ও দায়িত্ববোধ আপনহাতে লিখে জানিয়ে দিয়েছেন প্রজন্মকে। শেখ হাসিনা রাজনৈতিক জীবনে বিশ্ব পরিচিত হলেও তিনি লিখালিখিতে সমৃদ্ধ নয় বলে লেখক হিসেবে খুব বেশি পরিচিত নন,তবে শেখ মুজিব আমার পিতা বইটির শব্দচয়ন,বাক্য বিন্যাস এবং সাবলীল প্রকাশ থেকে উনাকে নতুন করে জানলাম। বইটি পড়ে বাংলাদেশের ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জননেত্রী সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে সমৃদ্ধ হলাম। বইটি পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন,নিজের খেয়াল রাখবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। সবার জন্য শুভকামনা।
Was this review helpful to you?
or
ভাল লাগে নাই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনী
Was this review helpful to you?
or
গুড বুক
Was this review helpful to you?
or
জেই
Was this review helpful to you?
or
In the book, the literary genius of Sheikh Hasina, a student of Bengal, is revealed in her direct statement, about the turbulent days of the agitation and struggle, the touching experience of losing the family. But why the hated dictator Ershad, who joined hands with him in the cruel mockery of the time to do politics, why is the party against the liberation war accused of abusing power? Let corruption and democracy be liberated, then the soul of millions of martyrs like Nur Hossain will find peace, Bangladesh of their dreams will be established, this book of remembrance will be given the status of historical document!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
শেখ হাসিনা রচিত শেখ মুজিব আমার পিতা বইটি এক বসাতে শেষ করলাম। স্মৃতিগ্রন্থ হিসেবে বেশ ভালো লেগেছে। শেখ মুজিবুর রহমান এর পারিবারিক ইতিহাস সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানতে পারলাম না। তবে সম্পদনার ক্ষেত্রে তারিখের ক্রমানুযায়ী হিসেবে লেখাগুলো থাকলে ভালো লাগতো।
Was this review helpful to you?
or
কিছু গল্প আছে যার ধারা পাঠককে বইয়ের ভেতর টেনে নিয়ে যায়। যে বইটি সম্পর্কে বলতে চলছি তা এমনি একটি গল্প যার ধারা আপনাকে মোহিত করবে। হৃদয়ের কোণে লুকিয়ে থাকা মুক্ত সত্তাকে নাড়া দেবে, নিঃশব্দে বলে যাবে অনেক কিছু ।
Was this review helpful to you?
or
বইঃ শেখ মুজিব আমার পিতা লেখিকাঃ শেখ হাসিনা এই বইটিতে ফুটে উঠেছে একজন মেয়ে তার বাবাকে যেভাবে দেখে। অনেকেই বইটি না পড়েই নেগেটিভ কমেন্ট, রিভিউ, রেটিং দিচ্ছেন। ব্যাপারটা ঠিক নয়। হ্যাঁ রাজনৈতিক দ্বিমত অবশ্যই থাকতে পারে। বরং না থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সহিষ্ণুতাও প্রদর্শন করতে হবে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই: শেখ মুজিব আমার পিতা লেখিকা: শেখ হাসিনা মূল্য:২৫০৳ প্রকাশনী: আগামী প্রকাশনী ভূমিকাঃ সবাই তো উপন্যাস,কাবগ্রন্থের রিভিউ দেয়।তাই আমার ইচ্ছে করল আত্মজীবনী নিয়ে লিখতে।আর তা যদি জাতির জনককে নিয়ে লেখা তাঁর কন্যার বই হয় তাহলে তো অবশ্যই কিছু লিখতে হয়। বই সম্পর্কিত তথ্যাবলীঃ "শেখ মুজিব আমার পিতা" নামটিতেই এক গর্ব কাজ করে,এই গর্ব আমাদের দেশের গর্ব,আমাদের সাধারণ মানুষের গর্ব। এই রচনায় উঠে এসেছে শেখ পরিবারের অনেক অজানা তথ্য,একটি পরিবারের বেঁচে থাকার ইতিহাস আর দেশের অভ্যুদয়ের মুহূর্তে পরিবারটির অজস্র সংগ্রামের ঘটনা। এই বইটির ভূমিকা লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।তিনি তাঁর ভূমিকায় বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার সময় থেকে চার নেতার হত্যাকান্ড এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমানে তাঁর লেখিকা পরিচিতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন।যা বইটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও এই বইতে পার্থ ঘোষের একটি নাতিদীর্ঘ প্রস্তাবনা আছে যা বইটি পড়ার সময় ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপট জানতে সহায়ক হবে। বইয়ের সারসংক্ষেপঃ বইটি চারটি মূল অধ্যায়ে বিভক্ত হলেও এর ভেতর প্রতি অধ্যায়ে তিনটি করে অনুচ্ছেদ আছে।প্রথম দুই অধ্যায়ে পারিবারিক স্মৃতি থাকলেও তৃতীয় অধ্যায়ে লেখিকা ড.আবদুল মতিন চৌধুরী,বেগম জাহানারা ইমাম এবং নূর হোসেনকে নিয়ে স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়েছেন। প্রথম অধ্যায়ে লেখিকার কলমে উঠে এসেছে তাঁর পিতার ছেলেবেলা থেকে শুরু করে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ঘটনাবলী।বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ে টুকরো টুকরো করে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল রাজনৈতিক সময়ের কথা বলা আছে যা আমাদের গর্বিত করে তোলে। এই বইতে লেখিকা তাঁর ছোটবেলার মজাদার সময় কাটানোর কথা বর্ণনা করেছেন।প্রধানমন্ত্রীর শৈশব কালের দস্যিপনার কথা পড়লে মন ভরে যেতে বাধ্য। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ আমার কাছে আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসে রেটিং দেওয়াটা ধৃষ্টতা মনে হয়।তবে শেখ হাসিনা লেখিকা না হওয়ার কারণে অথবা তাঁর নিজের টুকরো স্মৃতি হওয়াতে হয়তো বইটা পড়ার সময় অধ্যায়গুলোতে সামঞ্জস্যতার অভাব পাওয়া যেতে পারে।তদুপরি,বইটা আমার ভালো লাগার স্খান দখল করে আছে কারণ এই শেখ পরিবারের কাছে আমরা ঋণী।তাঁদের পারিবারিক ঘটনা জানাটা আমাদের জন্য সম্মানের। তাই বইটা আমার অনেক ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
একুশে বইমেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেশ কয়েকটি বই আসছে। এরই মধ্যে কয়েকটি বই এসেছে। আরো কয়েকটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে। মেলার প্রথম দিন থেকেই পাওয়া যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বই ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’। স্বাধীনতা মহাকাব্যের মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অনেকেই গ্রন্থ রচনা করেছেন। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু 'শেখ মুজিব আমার পিতা' গ্রন্থে পাঠক বঙ্গবন্ধুর জীবনী এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের এমন অনেক অজানা তথ্য খুঁজে পাবেন-যা আগে কোথাও পাননি। গ্রন্থটি মূলত শেখ হাসিনা লিখিত স্মৃতিকথামূলক আত্মজৈবনিক রচনা। যাতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবন এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের অনেক অজানা তথ্য। এছাড়াও রয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। এছাড়াও বইটিতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। প্রধানমন্ত্রী লেখা ও সম্পাদিত অন্যান্য বইগুলো হচ্ছে- সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ: কিছু চিন্তাভাবনা, সহে না মানবতার অবমাননা, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা, লিভিং ইন টিয়ারস, পিপল অ্যান্ড ডেমোক্রেসি, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি (জাতীয় সংসদে প্রদত্ত ভাষণ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (বেবি মওদুদের সঙ্গে যৌথ সম্পাদনা) স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার। এটা অসাধারণ একটা লেখা। এরকম মায়াময় এক লেখার শেষটায় যে কি কষ্ট! একটা বিষয় দেখলাম, শেখ হাসিনা স্মৃতিচারণমূলক লেখা বেশ ভালো লিখে। কেন যে সে তাঁর পারিবারিক, রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আরো বেশি করে লিখলো না?
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃশেখ মুজিব আমার পিতা লেখিকাঃশেখ হাসিনা প্রকাশনীঃআগামী প্রকাশনী মূল্যঃ২১৩টাকা শেখ মুজিব আমার পিতা' প্রবন্ধে শেখ হাসিনা তুলে ধরেছেন বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তার ঘনিষ্ঠতার নানা গল্প।শেখ হাসিনার স্মৃতিকথামূলক দশটি প্রবন্ধ এই বইতে স্থান পেয়েছে চারটি ভাগে। প্রতিটি প্রবন্ধই লেখা হয়েছে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে।বাংলার ছাত্রী শেখ হাসিনার সাহিত্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটেছে বইটিতে, তার প্রত্যক্ষ জবানবন্দিতে জানতে পেরেছি আন্দোলন-সংগ্রামের সেই ঝঞ্ঝামুখর দিনগুলোর কথা, পরিবার হারানোর ক্ষত বয়ে বেড়ানোর মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতার কথা। কিন্তু সেই ঘৃণ্য স্বৈরশাসক এরশাদ, সময়ের নির্মম পরিহাসে তার সাথে হাত মিলিয়ে কেন রাজনীতি করতে হলো, কেন আজ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সেই দলটির বিরুদ্ধেই ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ।দলান্ধতা আর দুর্নীতি নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক, তাহলে লাখো শহীদের মতো নূর হোসেনের আত্মাও শান্তি পাবে, তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, এই স্মৃতিচারণ বইটিও ঐতিহাসিক দলিলের মর্যাদা পাবে বলে আমার বিশ্বাস।শেখ হাসিনা লিখেছেন, "আন্দোলনের সময় বাঁ আব্বা বন্দি থাকা অবস্থায় পার্টির কাজকর্মে বা আন্দোলনে খরচের টাকাও মা যোগাতেন। অনেক সময় বাজার হাট বন্ধ করে অথাব নিজের গায়ে গহনা বিক্রি করেও মাকে দেখেছি সংগঠনের জন্য অর্থের যোগান দিতে।" শেখা হাসিন এই প্রবন্ধে ইচ্ছে প্রকাশ করে বলেছেন, "আমার জীবনের শেষ দিনগুলো আমি টুংগিপাড়ায় স্থায়ীভাবে কাটাতে চাই। খুব ইচ্ছে আছে নদীর ধারে একটা ঘর তৈরি করার।" বইটি থেকে শেখ হাসিনা ও পিতা মুজিব সম্পর্কে জানতে পারলাম নানা অজানা কথা। এর মধ্যে খুঁজে পেয়েছি ব্যক্তি শেখ হাসিনার ছাপ। সত্যি অসাধারণ এ বই পড়ে আমি অভিভূত।
Was this review helpful to you?
or
বইটি অবশ্যই দল-মত নির্বিশেষে সকল সচেতন নাগরিকদের পাঠ করা উচিত বলে আমি মনে করি।।।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা সুপ্রিয়া দে বই: শেখ মুজিব আমার পিতা লেখিকা: শেখ হাসিনা মূল্য:২৫০৳ প্রকাশনী: আগামী প্রকাশনী ভূমিকাঃ সবাই তো উপন্যাস,কাবগ্রন্থের রিভিউ দেয়।তাই আমার ইচ্ছে করল আত্মজীবনী নিয়ে লিখতে।আর তা যদি জাতির জনককে নিয়ে লেখা তাঁর কন্যার বই হয় তাহলে তো অবশ্যই কিছু লিখতে হয়। বই সম্পর্কিত তথ্যাবলীঃ "শেখ মুজিব আমার পিতা" নামটিতেই এক গর্ব কাজ করে,এই গর্ব আমাদের দেশের গর্ব,আমাদের সাধারণ মানুষের গর্ব। এই রচনায় উঠে এসেছে শেখ পরিবারের অনেক অজানা তথ্য,একটি পরিবারের বেঁচে থাকার ইতিহাস আর দেশের অভ্যুদয়ের মুহূর্তে পরিবারটির অজস্র সংগ্রামের ঘটনা। এই বইটির ভূমিকা লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।তিনি তাঁর ভূমিকায় বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার সময় থেকে চার নেতার হত্যাকান্ড এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমানে তাঁর লেখিকা পরিচিতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন।যা বইটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও এই বইতে পার্থ ঘোষের একটি নাতিদীর্ঘ প্রস্তাবনা আছে যা বইটি পড়ার সময় ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপট জানতে সহায়ক হবে। বইয়ের সারসংক্ষেপঃ বইটি চারটি মূল অধ্যায়ে বিভক্ত হলেও এর ভেতর প্রতি অধ্যায়ে তিনটি করে অনুচ্ছেদ আছে।প্রথম দুই অধ্যায়ে পারিবারিক স্মৃতি থাকলেও তৃতীয় অধ্যায়ে লেখিকা ড.আবদুল মতিন চৌধুরী,বেগম জাহানারা ইমাম এবং নূর হোসেনকে নিয়ে স্মরণ-শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়েছেন। প্রথম অধ্যায়ে লেখিকার কলমে উঠে এসেছে তাঁর পিতার ছেলেবেলা থেকে শুরু করে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ঘটনাবলী।বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ে টুকরো টুকরো করে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল রাজনৈতিক সময়ের কথা বলা আছে যা আমাদের গর্বিত করে তোলে। এই বইতে লেখিকা তাঁর ছোটবেলার মজাদার সময় কাটানোর কথা বর্ণনা করেছেন।প্রধানমন্ত্রীর শৈশব কালের দস্যিপনার কথা পড়লে মন ভরে যেতে বাধ্য। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ আমার কাছে আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসে রেটিং দেওয়াটা ধৃষ্টতা মনে হয়।তবে শেখ হাসিনা লেখিকা না হওয়ার কারণে অথবা তাঁর নিজের টুকরো স্মৃতি হওয়াতে হয়তো বইটা পড়ার সময় অধ্যায়গুলোতে সামঞ্জস্যতার অভাব পাওয়া যেতে পারে।তদুপরি,বইটা আমার ভালো লাগার স্খান দখল করে আছে কারণ এই শেখ পরিবারের কাছে আমরা ঋণী।তাঁদের পারিবারিক ঘটনা জানাটা আমাদের জন্য সম্মানের। তাই বইটা আমার অনেক ভালো লেগেছে।