User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
স্বনামধন্য ’পরিতোষ বাড়ৈ’ লিখিত ’মায়ের চিঠি ‘ আমার পড়া সেরা উপন্যাস গুলোর মধ্যে
Was this review helpful to you?
or
বই: মায়ের চিঠি জনরা: সামাজিক উপন্যাস লেখক: পারিতোষ বাড়ৈ প্রকাশনী: অনন্যা প্রকাশ কাল: চতুর্থ মুদ্রন বইমেলা ২০১৬ পৃষ্ঠা: ৮০ প্রচ্ছদ: মশিউর রহমান মুদ্রিত মূল্য: ১৫০৳ কাহিনী সংক্ষেপ: লাইলি নামক একজন মা তার জীবন সংসারে কতটা যুদ্ধ করে নিজ সন্তানকে নিয়ে টিকে ছিলেন তারই গল্প মায়ের চিঠি। গর্ভাবস্থায় স্বামীর অকাল মৃত্যু দারিদ্র্যতার কুয়ো থেকে সমাজের নানা প্রতিকূলতার সমুদ্র ফেলে দেয় তাকে। একের পর এক উত্থান পতনের এক পর্যায়ে রক্তের সম্পর্কহীন এক ভাইয়ের সাহায্যে ছেলেকে মানুষ করে। কিন্তু শেষ বয়সে এসে ছেলের সুখের সংসারে যেন সে বোঝা হয়ে গেল। নিজের শেষ অাশ্রয়টুকুও হারাতে হয় ঠিকানা হলো তাই বৃদ্ধাশ্রম। জীবনের ক্রান্তিলগ্নে এসে কিছুটা ভারাক্রান্ত মনেই যেন ছেলেকে লিখতে বসলেন তাকে নিয়ে সংগ্রামের কাহিনী। খোকা, তুমি কেমন আছ? তোমার প্রদত্ত জেলে আমি ভালো আছি।.......!! ইতি তোমার মা! নিজস্ব মতামত: গল্পটা কেবল একজন লাইলি বেগমের না, বৃদ্ধাশ্রমে থাকা অগণিত মায়ের, বাবার। দিনের পর দিন যারা কষ্ট ক্লেশ করে সন্তান মানুষ করেন কিন্তু সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবার পর সেই বাবা মা তাদের ঘাড়ের কিংবা ঘরের বোঝা হয়ে যায়। তাই তথা কথিত সম্মানের লোভে বা সমাজের প্রচলিত ধারার তুলনায় মা বাবা পুরনো অামলের চিন্তা ধারার হওয়ার কারণে তারা তাল মেলাতে না পারায় অাত্ম সম্মানে বাঁধে সন্তানদের। সময় থাকতেও যে মা-বাবার খেয়াল অামারা রাখি না। হয়ত একটু হাসি মুখের কথা তাদের জন্য অনেক কিছু। কিন্তু সময় শেষে তাদের সাথে দুর্ব্যাবহারের প্রাশ্চিত্ত করার সুযোগও মিলবে না। লাইলি বেগমের জীবন সংসারে নানা চড়াই উৎড়াই পেরোনোর গল্প তিনি তার ছেলেকে চিঠির মাধ্যমে লিখে গেছেন দিনের পর দিন বৃদ্ধাশ্রমে বসে। যে গল্পের নির্মম সত্য যা পাঠকের চোখের কোনে জল নিয়ে অাসবে। অনেকদিন অাগে বইটা উপহার হিসেবে লেখক দিয়েছিলেন কিন্তু তখন পাঠ প্রতিক্রিয়া লেখার মত সাহস ছিল না তাই নতুন করে এখন অাবার বইয়ের স্বাদ নেয়া। বইয়ের প্রচ্ছদ হিসেবে যে চিঠিটা দেয়া সেটাই যেন হাহাকার সৃষ্টি করে তোলে মনে। একজন মা অাসলে কতটা কষ্ট, ত্যাগ স্বীকার করেন মা ছাড়া পৃথিবীর অার কেউ তা উপলব্ধি করতে পারে না।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই :- মায়ের চিঠি লেখক: পরিতোষ ভারৈ ঘরানা:- সামাজিক উপন্যাস প্রকাশনা:- অনন্যা প্রকাশনি প্রথম প্রকাশ ২০১১,পঞ্চম মুদ্রন ২০১৭। পৃষ্টা :- ৯১। মুদ্রিত মূল্য:- ১৫০ টাকা। #সংক্ষিপ্ত_রিভিউ:- আল-আমিনের বয়স চল্লিশ দিন। আর মায়ের একুশ। এক ঝড়ের রাতে আল-আমিনের বাবা পৃথীবির মায়া ত্যাগ করেন। আল-আমিনের বাবার এক পাগল ভাইয়ের সাথে তার মা কে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখানে ফেরেস্তা হয়ে আসেন আলামিনের দূর সম্পর্কের এক মামা। সে আল-আমিন এবং তার মাকে নিজ বাসায় অাশ্রয় দেন। রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকা নেয় তখন আত্নসমর্পণ করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। কিন্তু মা আত্মসমর্পণ করে না। আল-আমিনকে নিয়ে এক বুক পানি ডিঙ্গিয়ে পালিয়ে যায় ''মা"। শত বাঁধা পেরিয়ে অন্যের বাড়িতে বুয়ার কাজ করে "আল-আমিনকে উন্নতির স্বর্ণশিখরে পোঁছায় মা"। নিজের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে আল-আমিন। মায়ের জন্য তাদের সমাজে মুখ দেখানো মুশকিল হয়ে পড়ে । তাদের সোসাইটিতে মা বেমানান। তারা কি পরিচয় দিবে মায়ের????? সে কাজের বুয়া????? এই পরিচয়টি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় আল-আমিন এবং তার স্ত্রীর জন্য। কৌশলে মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয় তারা। সেই বৃদ্ধাশ্রম কেই পুত্রপ্রদত্ত জেল ভেবে নেয় মা। সেখানে বসে তার জীবনের সম্পূর্ন ত্যাগের কথা জানাতে চায় ছেলেকে। সহজ মধ্যম হিসেবে বেছে নেন কাগজ ও কলম। ছেলেকে লেখা চিঠিতে নিজের কষ্টের অনুভূতিগুলো বুঝাতে চেষ্টা করে মা। একজন মানুষ ৪৫ ইউনিট ব্যথা একবারে সহ্য করতে পারে। একজন মা প্রসবকালে ৫৭ ইউনিটের বেশি ব্যথা সহ্য করেন। এই ব্যথা একসাথে ২০টি হাড্ডি ভেঙ্গে যাওয়ার চেয়েও বেশি। মা কি পারবেন, তাঁর সন্তানের হাতে চিঠি পৌছাতে? নাকি পুত্র প্রদত্ত জেলেই পঁচে মরবেন তিনি? নাকি আল-আমিন নিজের ভুল বুঝতে পেরে মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবেন? জানতে চাইলে পড়তে হবে 'মায়ের চিঠি"। #প্রতিক্রিয়া :- বইটি পড়ার সময় কয়েকটি যায়গাতে নিজের অজান্তেই চোখের কোন ভরে উঠেছে চোখের অশ্রুতে। প্রিয় বইয়ের তালিকায় আরো একটি নতুন বই যোগ হলো। লেখক খুবই কৌশলে পাঠকের মন জয় করতে সক্ষম। পড়ার সময়ে নিজেকে মায়ের জায়গাতে মনে হয়েছে। আজ যদি আমার মা থাকতো তাহলে হয়তো তাকে জড়িয়ে ধরে একটু কান্না করতে পারতাম। এমন কত মা যে বৃদ্ধাশ্রমে পরে আছেন তার ইয়ত্তা নেই। সেলুড সেই সব মায়েদের। #সংক্ষিপ্ত_লেখক_পরিচিতি:- লেখকের মোট বই সংখ্যা ১৯টি। বহুল আলোচিত এবং পাঠক প্রিয় মায়ের চিঠি। আজ আমরা মায়ের চিঠি নিয়ে আলোচনা করবো। লেখক পরিতোষদা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। নেশা লেখা। ছোটবেলে থেকেই লেখার প্রতি ঝুকে পরেন তিনি। মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়াই লেখার মূল উদ্দেশ্য। সাধারনত তিনি লেখেন সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে। সমাজ সংস্কার ও আলোকিত সমাজ গঠনই তার লেখার মূল উদ্দেশ্য। সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তার বিচরণ। নিরন্তর লিখে চলেছেন গান, কবিতা, নাটক। অল্প সময়ে তার ঝুলিতে পুরেছেন বিভিন্ন পুরস্কার। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে:- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সাহিত্য পুরস্কার, মাদারীপুর। নজরুল সাহিত্য সম্মাননা, ঢাকা। মরমী কন্ঠশিল্পী আব্দুল আলীম স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার। বাংলাদেশ লোকগীতি শিল্পীগোষ্টি, ঢাকা। মানবাধিকার সম্মাননা পদক, ঢাকা। নির্ভিক সংবাদ স্বর্নপদক, ঢাকা।
Was this review helpful to you?
or
”মায়ের চিঠি” উপন্যাস থেকে- “এক সন্তান তার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। সেই মা বৃদ্ধাশ্রমকে সন্তান প্রদত্ত জেল হিসাবে বরণ করে নেয়। একদিন মায়ের মনে হলো- তার সন্তানকে বড় করতে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে। সবকিছু সন্তান জানে না। কোনদিন বলাও হয়নি। কাগজ কলম নিয়ে সন্তানকে চিঠি লিখতে বসলেন।/ খোকা,/তুমি কেমন আছো?তোমার প্রদত্ত জেলে আমি ভালো আছি......।/আশ্রয়হীনদের আশ্রম। হাসি-কান্নার জীবনে এখানে যৌবন অনুপস্থিত। এখানে সব আছে। তবুও কিসের যেন অভাব রয়েছে। বৃদ্ধাদের তপ্ত নিঃশ্বাসে এখানের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। বাতাসে কান পাতলে কান্নার ধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়......../ একজন মানুষ ৪৫ ইউনিট ব্যথা একবারে সহ্য করতে পারে। একজন মা সন্তান প্রসবের সময় ৫৭ ইউনিটের বেশি ব্যথা সহ্য করেন। তুমি কি ব্যথার মাত্রা বুঝতে পারছ? তোমাকে সামান্য উদাহরণ দেই।/এই ব্যথা ২০টি হাড্ডি একসাথে ভেঙে যাওয়ার চেয়ে বেশি। তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ, তোমাকে জন্ম দিতে গিয়ে তোমার মায়ের কি পরিমাণ ব্যথা সহ্য করতে হয়েছে.......।/ এক মায়ের অশ্রুজলে লেখা উপন্যাস।"/ এবারের একুশে বইমেলার শুরুতেই বাজারে এসেছে দেশের অন্যতম নাট্যকার পরিতোষ বাড়ৈর নতুন উপন্যাস ‘মায়ের চিঠি’। একজন মায়ের অশ্রসিক্ত বেদনার গল্প স্থান পেয়েছে উপন্যাসটিতে। অনন্যা প্রকাশনীর ব্যানারে প্রকাশিত এই উপন্যাসটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন নাসিম আহমেদ। বই মেলার শুরু থেকেই উপন্যাসটি ক্রেতা দর্শকদের কাছে ভাল সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন লেখক পরিতোষ বাড়ৈ। প্রসঙ্গত, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হলেও লেখক এবং নাট্যকার হিসেবেই বেশি পরিচিতি পরিতোষ বাড়ৈ। শিল্প-সাহিত্যের সব শাখাতেই তার অবাধ বিচরণ। গল্প, উপন্যাসের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত তিনি লিখে যাচ্ছেন নাটক, গান এবং কবিতা। প্রতিবার বইমেলাতেই তার লেখা একাধিক উপন্যাস প্রকাশ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার মেলায়ও ‘মায়ের চিঠি’ উপন্যাসটি বেরিয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটা খুব একটা ভালো লাগেনি। মূল সমস্যা দূর্বল লেখনী কিংবা ভাষার ব্যবহার। কিছু ক্ষেত্রে কাহিনী খাপছাড়া মনে হয়েছে। তবে চরিত্রগুলো আরও ভালো করে ফুটিয়ে তুললে হয়তো বইটা পড়ে ভালো লাগতো। এই বইয়ের মূল চরিত্রের প্রতি আমার সহমর্মিতা তৈরি হয়েছে। তাই আমি ব্যাক্তিগতভাবে চাই কোনো বাবা-মা'কে যেন এই বইয়ের প্রধান চরিত্র বা মায়ের মত এত কষ্ট পেতে না হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পৃথিবীর সকল মা-বাবার জন্য ভালোবাসা।
Was this review helpful to you?
or
এটি কোন গল্প, উপন্যাস কিংবা কবিতার বই না। এই একটি চিঠি। সেই চিঠিটি লেখা তার অতি আদরের প্রাণপ্রিয় সন্তানকে উদ্দ্যেশ্য করে। যে সন্তান তার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছে। আর মা বৃদ্ধাশ্রমকে ছেলের প্রদত্ত জেল মনে করেই বরণ করে নেয় বৃদ্ধাশ্রমের অসহায় জীবনযাপনকে। সেই অসহায় মায়ের নাম লাইলি। উদাস নয়নে অস্তমিত সূর্যের পানে চেয়ে এই মা অতীতের দিনগুলিতে ফিরে যান। বহুদিন ধরে এক রঙিন স্বপ্নের উপর ভরসা করে জীবন কাটছিলো তার। সেই স্বপ্নে তার জীবন-সূর্যকে গ্রাস করে নিলো এক রাহু। আলোকিত জীবন ঢেকে গেলো আধাঁরে। এসব ভেবেই দিন কেটে যায় এই বৃদ্ধ মায়ের। হটাৎ একদিন তার মনে হলো ছেলেকে জানানো দরকার তার জীবনের সমস্ত গল্প। কত চড়াই-উৎরাই পার হয়ে ছেলেকে বড় করেছেন সেই কাহিনী বলা খুব প্রয়োজন। যেদিন তার স্বামী তাদেরকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি দেন তখন তিনি একুশ বছরের যুবতী। ছেলের বয়স মাত্র চল্লিশ দিন। স্বামী চলে যাওয়ার পর শুরু হয় তার বেচেঁ থাকার যুদ্ধ। স্বামীর ভিটেবাড়ি ছেড়ে চাচাতো ভাই সবুরের সংসারে আশ্রয় নেন। কিছুদিন ভালোভাবে থাকলেও একটা সময় সবুরের কুদৃষ্টি পড়ে তার উপর। রাতের আধাঁরে নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অজানার পথে। পথের মাঝেই একটা সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন মা। কোন এক দয়াবান ব্যক্তি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সেই ব্যক্তিই তার ঘরে তাকে আশ্রয় দেন। সেই লোকের নাম সামসুল। তিনি এবং তার স্ত্রী নিঃসন্তান। তাদের পরিকল্পনা ছিলো মায়ের কাছ থেকে তার পুত্রকে দত্তক নিয়ে নিবে। মা হয়তো তাতে রাজি হয়ে যেতো। কারণ এখানে অন্ততঃ ছেলের খাওয়া আর থাকার ব্যবস্থা ছিলো। কপালে সইলো না সুখ। আবার একদিন মাঝদুপুরে ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হলো। পথিমধ্যে দেখা হলো ফেরেশতা সমতুল্য এক ব্যক্তির সাথে। তিনি তার বাড়িতে আশ্রয় দিলেও সেখানে বেশিদিন থাকা হলো না। এত চড়াই-উৎরাই পার করার কারণ ছিলো একটাই। "আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে"। এত কষ্টের পর যখন সুখের দিনের দেখা মিললো সেই সময় আবার আধারে ঢেকে গেলো চারিপাশ। কিন্তু কেন..? কি অপরাধ তার?? জানা নেই তার কারণ..! এই বই সেই দুখিনী মায়ের অশ্রুজলে লেখা। খুব ছোট্ট একটি বই। মাত্র ৭৮ পৃষ্ঠার বই। কোন কঠিন শব্দ দিয়ে না সহজ-সরল শব্দ দিয়ে লেখা এই বই মনের শক্ত ভিত নাড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। বইটি আকারে ছোট হলেও ভীষণ মর্মস্পর্শী। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মায়েরা, জীবনের শেষ দিনটিও যেন তারা হাসিমুখে কাটাতে পারেন। এবার লেখকের কথা বলি। পরিতোষ বাড়ৈ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। সাহিত্যের প্রায় সকল শাখাতেই তার বিচরণ বিদ্যমান। গান, কবিতা, নাটক নিরন্তর লিখে চলেছেন। পেয়েছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পুরষ্কার, নজরুল সাহিত্য সম্মাননা, আব্দুল আলিম স্মৃতি সাহিত্য পুরষ্কার, বাংলাদেশ লোকগীতি শিল্পগোষ্ঠী, মানবাধিকার সম্মাননা পদক, নির্ভিক সংবাদ স্বর্ণপদক প্রভৃতি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বর্ষণমুখর এক সন্ধ্যা। পৃথিবীর সকল ব্যথা বেদনায় আকুল হয়ে কাঁদছে আকাশ। তার মাঝে ছোট্ট ভাঙা ঘরে ভিজে চুপচুপে হয়ে এক টুকরো চাঁদ বুকে নিয়ে স্বামীর অপেক্ষায় লাইলী। চল্লিশ দিনের সদ্য নতুন এক মা। বাজ পড়ে সেদিনই মারা যায় তার স্বামী। অবুঝ শিশুকে নিয়ে শুরু হয় একলা বেঁচে থাকার লড়াই। স্বপ্ন শুধু ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসেবে বড় করা। তাকে সুখী করাতেই অভাগিনীর একমাত্র সুখ। স্বামীর মৃত্যুর তিনদিন পর চাচাতো ভাই সবুরের বাড়িতে আশ্রয় জোটে তাঁর। কিন্তু এ আশ্রয় স্থায়ী হবার আগেই পৃথিবীর আদিম লালসার সামনে রুখে দাঁড়াতে হয় এক তরুনী মাকে। সন্তানকে মাথায় নিয়ে পালাতে হয় অজানার পথে। বুক সমান বিলের পানিতে ছেলেকে মাথায় করে হেটে পার হয়ে দুটি পা অসার হয়ে যায় তাঁর। কেবলমাত্র প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে একসময় সে শক্তি ফিরেও আসে। কিন্তু জীবনযুদ্ধ চলতে থাকে নিরন্তর। একজন ফেরেশতার মত ভাই জুটলেও কপালের ফেরে সে আশ্রয় থেকে তাঁকে বিতাড়িত হতে হয়। আয়ার কাজ করে, মজুর খেটে আবার ইটভাটায় মাটি টানার কাজ করে ছেলের মুখে দুমুঠো ভাত আর পড়াশুনার খরচ জোগান তিনি। কুকুরের মুখ থেকে রুটি কেড়ে খেয়ে দিন কাটে। এমনকি সন্তানের মুখে হাসি অমলিন রাখতে সতীত্বকে বাজি রাখতে হয় তাঁকে। অবশেষে ছেলেও বেশ সাফল্যের সাথে লেখাপড়ার স্তর পার হয়ে হাসি ফোটায় মায়ের মুখে। কিন্তু হায়! হাসি আর সুখ যে তাঁর জীবনে ক্ষণস্থায়ী। বৃদ্ধা মায়ের শেষ ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রম! এই বৃদ্ধাশ্রম নামের জেল হতে ছেলের কাছে মা লিখতে বসেন এতকাল লুকিয়ে রাখা নিজের সব গোপন কথা ও অব্যক্ত ব্যথার গল্প। স্বার্থপর সন্তানের কাছে লেখা অশীতিপর অসহায় বৃদ্ধাশ্রমবাসী এক বৃদ্ধার করুণ বিলাপ আর দীর্ঘশ্বাসে ভরপুর এই "মায়ের চিঠি" বইটি। জীবন সংগ্রামে শত ব্যথা-বেদনা-যন্ত্রণা-ত্যাগের না বলা কথাগুলো অকপটে মা তার ছেলেকে লিখেছেন এই চিঠিতে। লেখক পরিচিতিঃ পরিতোষ বাড়ৈ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হলেও লেখালেখির প্রতি আছে অদম্য অসীম ভালবাসা। গান, কবিতা, নাটক, উপন্যাস- সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় তাঁর অবাধ বিচরণ তাঁকে এনে দিয়েছে বেশ কিছু সম্মাননা ও পুরষ্কার। অচিন রাগ, উৎসর্গ, কাচের দেয়াল, আগুন পানির বধূয়া, হারিয়ে যাওয়া কানের দুল, ক্যাপ্টেন রবিন ইত্যাদি লেখকের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ মলাট উল্টালেই পুরো বই জুড়ে শুধু বিষাদ। মায়ের জবানীতে সহজ ভাষায় সরল গতিতে লেখক ৮০ পৃষ্ঠার চিঠি লিখেছেন। নব্য লেখক হিসেবে বেশ প্রাণবন্ত লেখা। পড়তে পড়তে একজন সন্তান হিসেবে নিজেকেও অপরাধী মনে হয়েছে। মনে হয়েছে, শুধু মা নন, মা-বাবা উভয়েই আরো অনেক বেশিই সম্মান প্রাপ্য আমাদের সন্তানদের কাছে। বৃদ্ধাশ্রমে শেষ ঠিকানা হবার মত নির্মম পরণতি কারুরই কাম্য নয়। মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এ কঠিন সময়ে ভালবাসাহীন আমাদের স্বার্থপর অন্তরগুলোতে একটু হলেও ভালবাসা জন্মাবে, বিবেককে নাড়া দেবে- "মায়ের চিঠি"। প্রতিটি সন্তানেরই বইটি পড়া উচিত। শক্ত লেখনী তা বলব না। লেখায় শব্দ ও বাক্যের অপূর্ব বাধুনীর চেয়ে আবেগের মাত্রা বেশি। বেশ কিছু স্থানে নাটকীয়তাও আছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে লেখক গতানুগতিক ধারার বাইরে ভিন্ন ও নিজস্ব পদ্ধতিতে সরল গতিতে উপন্যাসটিকে এগিয়ে নিয়েছেন এখানেই লেখকের সার্থকতা। বি. দ্র. বইয়ের ২৯ পৃষ্ঠার ২৯ নং লাইনে লেখা হয়েছে "সূরা আয়াতুল কুরসী"। আয়াতুল কুরসী কোন সূরা নয়; সূরা বাকারার কয়েকটি মহিমান্বিত আয়াত বিশেষ। পরবর্তী মুদ্রণে "সূরা" শব্দটি বাদ দেয়ার অনুরোধ রইল। "আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে" -তেমনি পৃথিবীর সকল মা-বাবাও যেন থাকেন সন্তানের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জড়িয়ে। বইঃ মায়ের চিঠি লেখকঃ @পরিতোষ বাড়ৈ ধরণঃ উপন্যাস প্রকাশনীঃ অনন্যা প্রচ্ছদঃ মশিউর রহমান পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৯১ মুদ্রিত মূল্যঃ ১৫০/- প্রকাশকালঃ ২০১৭ (৫ম মুদ্রণ)
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ উপন্যাস। সকলের পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
i've cried!!!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
নামঃ মায়ের চিঠি লেখকঃ পরিতোষ বাড়ৈ প্রকাশনীঃ অনন্যা প্রকাশনী প্রকাশকালঃ ২০১১ ধরনঃ উপন্যাস লিখিত মূল্যঃ ১৫০.০০টাকা অনেকদিন হলো কোন বই পড়া হচ্ছেনা। তাই ভাবলাম আজকে একটা বই পড়ে ফেলি। ভার্সিটির ব্যস্ততায় আটকে পরে অনেকগুলো নতুন জমে থাকা বই, পড়ার সুযোগ হয়ে উঠছিলো না। তাই, বসা আজকে। সবটা না পারি,যে বইটাই ধরবো অর্ধেক তো শেষ করবই। বইগুলো দেখতে দেখতে "মায়ের চিঠি" বইটা সামনে আসে। বইটা লেখক নিজে আমাকে উপহার পাঠিয়েছিলেন। বইটির লেখক জনাব পরিতোষ বাড়ৈ। পেশায় তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার। আর নেশা হলো লেখালেখি। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক থাকায় এখন পর্যন্ত এই নিয়ে ১৯টি বিভিন্নধর্মী বই লিখেছেন। উনার লেখা বই "মায়ের চিঠি" ছাড়া আর কোন বই পড়ার ভাগ্য আমার এখনো হয়নি। মায়ের চিঠি একটা উপন্যাস। এখানে রয়েছে একজন বৃদ্ধ মায়ের লেখা চিঠি, তার প্রিয় সন্তানের উদ্দেশ্যে। এক সন্তান তার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। সেই মা বৃদ্ধাশ্রমকে সন্তান প্রদত্ত জেল হিসেবে বরণ করে নেয়। একদিন মায়ের মনে হলো, তার সন্তানকে বড় করতে তাকে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে, মানুষ এর দরজায় দরজায় ঠোকর খেতে হয়েছে, নিশ্চিত জাহান্নাম জেনেও শুধু সন্তানের ফর্মফিলাপের টাকা যোগার করতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির খারাপ নজরে পর্যন্ত পরতে হয়েছে। তবে, সে যাত্রায় সে বেঁচে যায় তার জীবনের সবচাইতে বেশি সাহায্যকারী ভাই এর কারণে। এসবের কিছুই সন্তান জানেনা। কোনদিন বলার প্রয়োজন হয়নি বলে বলাও হয়নি। তবে আজ এই বৃদ্ধাশ্রম নামক জেলখানা থেকে ছেলেকে জানাতে হবে। কাগজ কলম নিয়ে সন্তানকে চিঠি লিখতে বসেন দুঃখিনী মা লাইলি। লাইলির ছেলের নাম আল-আমিন। খোকা, তুমি কেমন আছো। তোমার প্রদত্ত জেলে আমি ভালো আছি...। আশ্রয়হীনদের আশ্রম। হাসি-কান্নার জীবনে এখানে শুধু যৌবন অনুপস্থিত। এখানে সব আছে। তবুও কিসের যেন অভাব রয়েছে। বৃদ্ধাদের তপ্ত নিঃশ্বাসে এখানের বাতাস ভারী হয়ে উঠে। বাতাশে কান পাতলে কান্নার ধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়.... একজন মানুষ ৪৫ইউনিট ব্যথা একবারে সহ্য করতে পারে। একজন মা সন্তান প্রসবের সময় ৫৭ইউনিটের বেশি ব্যথা সহ্য করেন। তুমি কি ব্যথার মাত্রা বুঝতে পারছো? তোমাকে সামান্য উদাহরণ দেই, এই ব্যথা ২০টি হাড্ডি একসাথে ভেঙে যাওয়ার চেয়ে বেশি। তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছো, তোমাকে জন্মদিতে গিয়ে তোমার মায়ের কি পরিমাণ ব্যথা সহ্য করতে হয়েছে... উপন্যাসটিতে লাইলির সম্পূর্ণ জীবন তার ছেলে আল-আমিন কে মানুষ করতে তার কি কি কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। কি কি চড়াই উতরাই পার করতে হয়েছে, তা সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। আল-আমিনের জন্মের ৪০দিনের মাথায় তার বাবা মারা যায়, ৩দিন পর লাইলীর চাচাতো ভাই সবুর তাকে তার বাড়ি নিয়ে যায় আশ্রিতা হিসেবে। সেখানে সবুরের কামুক ব্যবহার দেখে রাতের আধারে ৩/৪ ঘন্টা পায়ে হেটে আল-আমিন কে মাথায় করে বিলের পানি দিয়ে হেটে পালিয়ে আসে। এতোক্ষণ পানিতে হাটার ফলে লাইলীর পায়ে রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ডাক্তার জানায় লাইলী আর হাটতে পারবেনা। তখন একটা পরিবার তাদের সাহায্য করে। পরিবারের দম্পতীর কোন সন্তান ছিলোনা আর যেহেতু লাইলী আর হাটতে পারবেনা তাই তারা আল-আমিন কে নিজেদের সন্তান হিসেবে নিয়ে নেয়ার প্লেনিং করলে তা লাইলী জেনে যায়। প্রথমে লাইলী মনে মনে আল-আমিন কে দিয়ে দিতে চাইলেও যখন ওই মহিলা আল-আমিন কে মারধোর ও ছোটলোকের বাচ্চা বলে গালি দেয় তখন লাইলী আবারো আল-আমিন কে নিয়ে পালিয়ে দিনাজপুর যাবার বাসে উঠে যায়। সেখানে দেখা হয় এক ভদ্রলোকের সাথে,সেই ভদ্রলোক তার দিনাজপুর যাবার ভাড়া মেটায়। দিনাজপুর পৌঁছে দুইদিন ঘুরাঘুরি করে কোন থাকার যায়গা না পেলে একটা বাড়ির খোলা বারান্দায় রাতে এসে ঘুমিয়ে পরে। ভাগ্যক্রমে বাসাটি বাসের সেই ভদ্রলোকের। তিনি লাইলী ও আল-আমিন কে থাকার অনুমতি দেন। আল-আমিন স্কুলে ভর্তি হয়।সাথে সেই ভদ্রলোকের ছেলেও। পঞ্চম শ্রেনীতে দুইজন ই বৃত্তি পেয়ে পাশ করে। কিন্তু আল-আমিন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায় এবং অই ছেলে সাধারণ। তাই ভদ্রলোকের বউ এর হিংসার কারনে লাইলীদের এ বাড়িও ছাড়তে হয়। ভদ্রলোক একটা ইন্সুরেন্স কম্পানিতে লাইলীকে আয়ার চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেন। ভালোই চলছিলো হঠাৎ একদিন কম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে আবারো তাদের পরিবারে হাহাকার নেমে আসে। স্কুল পাশ করে আল-আমিন কে লাইলী ভালো পড়ালেখার জন্য ঢাকায় পাঠায়। ঢাকা কলেজ থেকে পাশ করে, সে ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হয়। সেখানে ভালো রেজাল্টে পাশ করে ও ভালো একটা চাকরী পায় এবং মাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। মা ছেলেকে আয়েস করে বিয়ে করায় কিন্তু বউ আর শাশুড়ির প্ররোচনায় মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। শেষে কি হলো তাদের? জানতে হলে ৯০পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটি পড়তে হবে। কথা দিচ্ছি সময়ের অপচয় মনে হবেনা ১সেকেন্ডের জন্যেও। বইটা পড়বো ভেবেছিলাম অর্ধেক টুকু। কিন্তু পড়া শুরু করার পর মনে হচ্ছিলো যদি এই বই আমি এক বসায় শেষ করে না উঠি ও যদি আমি বইটা শেষ না করেই মরে যাই, তাহলে জীবনটা বৃথা মনে হবে। ধন্যবাদ সবাইকে। এবং বইটি পড়ে যাচাই করার অনুরোধ করবো।