User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা "Happiness is like a butterfly which, when pursued, is always beyond our gasp, but if you will sit down quietly, may alight upon you." -Nathaniel Hawthorne এই অসম্ভব সুন্দর কথাটি টুকে দেয়া আছে যে বইটার ভূমিকার পরেই, সে বইটিতে যে কী ধরনের জীবনদর্শন থাকতে পারে তা পাঠক মাত্রই অনুমান করতে পারেন। মাহরীন ফেরদৌস বহুদিন আগে থেকেই লিখছেন একুয়া রেজিয়া ছদ্মনামে, ব্লগ থেকেই তাঁর লেখালেখির প্রতি অনুরক্ত আমি। তাই বন্ধুর কাছে বইটি দেখে আর তর সয়নি, ধার নিয়ে নিয়েছি। আর মাত্র বাহাত্তর পৃষ্ঠার বইটি এক বসায় পড়ে উঠেই প্রতিক্রিয়া লিখতে বসে গেছি! জীবনের জটিলতাগুলো যেখানে চোখ রাঙায় প্রতিনিয়ত, সেখানে স্বপ্ন দেখা দুঃসাহস বৈকি! এই দুঃসাহসিক কাজটিই করতে চায় মুক্তি নামের মেয়েটি। মুক্তি, ভালো নাম খন্দকার মোসাম্মৎ ফারিয়া বিনতে ফিরোজ। ফিরোজ সাহেবের কন্যা মোসাম্মৎ ফারিয়া কী করে বড় হয়ে মুক্তি হয়ে গেল, সে ব্যাপারটি মুক্তির নিজের কাছেও পরিষ্কার নয়। সে শুধু এটুকু জানে, তার বাবা প্রচণ্ড মেজাজী একজন মানুষ যাঁকে কিনা কেউ কখনো হাসতে দেখেনি। বাড়িতে কেউ সুখী নয়, সবসময় মুখ বেজার করে ঘুরে বেড়ায় সবাই। তবু নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতেই বোধহয় বারো বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করার দুঃসাহস দেখায় মুক্তি। বলাই বাহুল্য, তার সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বড় হতে হতে আস্তে আস্তে কেবলই নিজের মধ্যে গুটিয়ে যেতে থাকে সে। পুরো উপন্যাস জুড়ে দেখানো হয়েছে, জীবনের প্রতি মুক্তির দৃষ্টিভঙ্গি। প্রচণ্ড অন্তর্মুখী স্বভাবের মেয়ে মুক্তি। এতটাই যে, নিজের আদরের ছোট্ট বোনটির সাথেও কখনো কখনো দূরত্ব থেকে যায়। আর এজন্যেই হয়ত সে বলে, " আমার কখনো জিজ্ঞেস করা হয় নি জয়ী আসলে জীবনে কী হতে চায়। ওর জীবনের স্বপ্ন কী? আমরা দুজন সারা দিন এতটা সময় কাছাকাছি থাকি অথচ আমরাই মনে হয় নিজেদের সবচেয়ে কম জানি।" বাবার কড়া শাসন আর মায়ের এক অদ্ভুত উদাসীনতার মধ্য দিয়ে বড় হতে থাকা দু'বোনের জীবনে হঠাতই একটু পরিবর্তন আসে। বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকতে আসে তিনজনের একটি পরিবার আর মুক্তিদের নিজেদের বাসায়ই থাকতে আসে দূর সম্পর্কের আত্মীয় শামিম। এরাই যে তাদের জীবনে এত পরিবর্তন নিয়ে আসবে, ভাবতে পারে নি মুক্তি বা জয়ী কেউই। বাসায় কিছু নিয়মে পরিবর্তন আসে। যে বাবার মুখের ওপর কেউ কিছু বলার সাহস পায়নি, সেই বাবারই মুখের ওপর নির্দ্বিধায় কথা বলে যায় শামিম। বাসার গেটের তালা খোলার নিয়মও ব্যতিক্রম হয় তার ক্ষেত্রে। কেন? জানতে হলে পড়তে হবে "এই শহরে মেঘেরা একা" বইটি। তিনজনের ছোট পরিবারটির সাথে বেশ ভালোভাবেই মিশে গিয়েছিল মুক্তি এবং জয়ী। বিভা, রাশেদ এবং তাদের সংসারের ছোট্ট সদস্য অয়নের সাথে অল্প সময়েই বেশ সৌহার্দ্য স্থাপিত হয়েছিল তাদের। তবে হঠাতই কেন তাদেরকে বাসা থেকে উঠিয়ে দিতে হল? এ প্রশ্নের উত্তর আছে "এই শহরে মেঘেরা একা" বইটিতে। বইটির মূল চরিত্র মুক্তি হলেও প্রতিটি চরিত্র বেশ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। অপ্রয়োজনীয় চরিত্রের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। প্রতিটি চরিত্রই বেশ গভীর ভূমিকা রেখেছে ঘটনাপ্রবাহে। মুক্তির মা এবং বিভা চরিত্রটি খুব আংশিক ভাবে উঠে এলেও এঁদের মুখ দিয়েই বেশ কিছু অসাধারণ কথা বলিয়ে নিয়েছেন লেখক। তাঁকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। এছাড়া শব্দ নির্বাচন শৈলী এবং নির্মেদ লেখনীর কারণে অনায়াসে পড়া যায়। অনেক অল্প কথায়, অল্প পরিসরে বেশ বড় আঙ্গিকের গল্প বলা হয়েছে বেশ মুন্সীয়ানার সাথে। কয়েক জায়গায় বাক্যগঠন কিছুটা খাপছাড়া মনে হয়েছে, এ বিষয়ে আরেকটু দৃষ্টিপাতের প্রয়োজন ছিলো। পৃষ্ঠা সংখ্যা কম বলে একে খুব ছোটগল্প ভাবার কারণ নেই। এই অল্প ক'টি পাতাতেই বেশ আকর্ষণীয় গল্প বলা হয়েছে। বাঁধাই এবং মূদ্রণ প্রসঙ্গে আসি। অন্যপ্রকাশের বাঁধাই কিংবা কাগজের মান সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছুই নেই। বানান ভুল প্রায় চোখেই পড়ে নি। ফ্ল্যাপ এবং ভূমিকার লেখাটুকু অল্প হলেও ভীষণ মূল্যবান এবং সুখপাঠ্য। খুব অসাধারণ একটি দর্শন তুলে এনেছেন বইটিতে লেখক। তিনি লিখেছেন, "জীবন হয়তো খুব সহজ, আমরা মানুষেরাই কেবল এটিকে জটিল করি।............ আমরা ভুলে যাই আমরা পৃথিবীতে আসি একবারই!" এটুকুতেই হয়ত বইটি সম্পর্কে ধারণা হয়ে গেছে আপনার! তাহলে দেরি না করে পড়ে ফেলুন বইটি। পড়া শেষে হয়ত লেখকের ভূমিকার শেষ লাইনের মত আপনারও মনে হবে, "এই উপন্যাসটি সেইসব মানুষের, যাদের কখনো হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিল না...!" Happy Reading! :)
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #অক্টোবর : ২২ বই : এই শহরে মেঘেরা একা লেখক : একুয়া রেজিয়া ধরণ : সমকালীন জীবনধর্মী প্রকাশনী : অন্যপ্রকার মূল্য : ১৭৫ টাকা কাহিনী : মুক্তি আর জয়িতা দুই বোন। তাদের বাবা ফিরোজ ভয়ঙ্কর রাগী মানুষ। বাড়িতে সবসময় তারা কঠিন শাসনের মধ্যে থাকে। বাড়ি তো নয়, যেন জেল খানা। তাদের মায়ের সাথেও বাবার সম্পর্ক খুব একটা স্বাভাবিক না। মা সর্বদা বাবার ভয়ে জড়োসড়ো। মুক্তি বাবাকে ভয় পেলেও তার শাসন-বারন থেকে মুক্তি পাওয়ার কম চেষ্টা করে না! একবার ছোট বেলায় চিঠি লিখে বাড়ি থেকে পালানোরও ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল সে। সে সব আগের কথা। পরে আর অতটা সাহস করতে পারেনি। জয়িতা মুক্তির তুলনায় একটু চুপচাপ। গানের প্রতি তার সীমাহীন আগ্রহ। এই কারনেই বাড়িতে নতুন ভাড়াটিয়া আসলে, তার কাছে গান গাইতে শিখতে শুরু করে জয়িতা। এর মধ্যেই মুক্তিদের বাড়িতে হঠাৎ এক অচেনা লোকের অবির্ভাব ঘটে। লোক না বলে যুবক বলাই শ্রেয়। তার নাম শামিম। তার আগমনে বাড়ির হাওয়া হঠাৎ পাল্টাতে থাকে। তার সামনে জয়িতা- মুক্তির বাবাও কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যায়। জয়িতার অবশ্য খুব ভাব জমে যায় শামীমের সাথে। মুক্তিই শুধু হাবুডুবু খায় এক অচেনা অনুভূতির মধ্যে। এর মধ্যেই পর পর ঘটে যায় কিছু দূর্ঘটনা। বদলাতে থাকে নিত্যদিনের মানুষ গুলো। একাকিত্ব, কষ্ট, বেদনা, যন্ত্রণা আরো একবার প্রকট রূপে হানা দেয় মুক্তিদের পরিবারে। কিন্তু তাতে কি বদলাবে মুক্তিদের জীবন যাত্রা? পাবে কি তারা মুক্তি আর আনন্দের স্বাদ? পাঠ প্রতিক্রিয়া : যান্ত্রিকতা আর ব্যস্ততা মুখর এই শহরে কিছু মানুষ ভিষণ একাকীত্বে ভোগে। কখনো বা পরিস্থিতি তাকে একটু বেশি নিসঙ্গ করে ফেলে। তখন কেন যেন পুরো শরটাই খুব অদ্ভুত দেখতে লাগে। স্বাভাবিক ব্যপারগুলো অন্যরকম মনে হয়। এলোমেলো হয় নিত্যনৈমিত্তিক জীবনও। এই শহরে মেঘেরা একা তেমনই এলোমেলো, অন্যরকম মেয়ের জীবনের গল্প। তার একাকীত্ব, তার স্বাধীনতার প্রতি তৃষ্ণা, তার দিনলিপিই এই উপন্যাসের মুখ্য বিষয়। " এই শহরে মেঘেরা একা" হয়তো পৃথিবীর আনাচে কানাচে থাকা অনেকেরই কাহিনী। যাদের হাসিমুখে প্রতিনিয়ত চলতে ফিরতে দেখি কিন্তু জানা হয়ে ওঠেনা তাদের অন্তরালের গল্পকথা। বইটি পড়তে পড়তে কখন যেন মিশে গিয়েছিলাম তার সাথে। মুক্তি এবং জয়ী দুবোনের খুনসুটি, প্রতিদিনের টুকরো গল্প, কেন যেন নিজের জীবনের গল্প গুলোকেই মনে করিয়ে দেয়। উপন্যাসের শেষ অংশের নাটিকীয়তা বেশ ছাপ ফেলে মনে। সব মিলিয়ে সত্যিই ভিষণ ভাল। যারা পড়েননি, পড়ে ফেলতে পারেন
Was this review helpful to you?
or
জীবন হয়তো খুবই সহজ, আমরা মানুষেরাই কেবল এটাকে জটিল করি। আমরা ভুলে যাই, প্রতিনিয়ত কষ্টকে পুঁজি করে বেঁচে থাকার চাইতে অনেক অনেক বছর ধরে বসন্তের মাতাল হাওয়া, বর্ষার ঝুম বৃষ্টি, কনকনে শীতের কুয়াশা, আর হেমন্তের পেঁজা তুলোময় মেঘ দেখে দেখে একটা জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায় অসাধারণভাবে। আমরা ভুলে যাই, আমরা এই পৃথিবীতে আসি একবারই...............।
Was this review helpful to you?
or
বইটি ভালো লাগার একমাত্র কারণ বাস্তবতার করুণ রঙ লেখিকা তার নির্ঝঞ্ঝাট চিন্তাভাবনার মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।কিছু কিছু কথা , কিছু অনুভূতি আমার নিজের সাথেও মিলে গেছে।আর নিজের জীবনের কিছু কথা বইয়ের ছাপা অক্ষরে দেখতে পেলে খুব অদ্ভুত একটা অনুভুতি হয়! একটা লাইন আমার হৃদয় ছুঁয়েছে…"কোন এক গভির রাতে তোমাকে ঘুম থেকে ডেকে যদি বলি ভীষণ কষ্ট লাগছে।তুমি কি ভীষণ অবাক হবে? মাঝে মাঝে মানুষের সুখের সময় কোন সংগি লাগেনা তবে কান্নার সময় পাশে কারও থাকা খুব জরুরী হয়ে পড়ে…" বইটায় অন্য থ্রিলার কিংবা রোমাঞ্চকর কোন কাহিনীর মত রোমহর্ষক কিছু নেই ।তবু বইটা তার নিজের মহীমায় উজ্জ্বল।ভালোলেগেছে লেখিকার সহজ সরল আর বাস্তবতায় মোড়ানো বইটি পড়ে। পড়া শেষ করে কিছুক্ষন অবাক হয়ে কিছু ভাবছিলাম…সত্যিই এই শহরে মেঘেরা ভীষণ একা…
Was this review helpful to you?
or
আমি সাহিত্য বোদ্ধা নই। তবু লেখার দুঃসাহস শুধুমাত্র ভালোলাগা প্রকাশের জন্য। আমার কাছে সাহিত্য সেটাই, যা আমাদের মত সাধারন মানুষের কথা বলে। "এই শহরে মেঘেরা একা" পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে "আরে! এতো আমাকে নিয়েই লেখা!"... অদ্ভুত ভালো লাগার ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে আছি, এই ঘোর কাটুক, তা চাই না। একুয়া রেজিয়া আপুর লেখনীর সবচাইতে বড় গুন, পাঠককে আপন করে নেয়া। আর ওনার লেখা পড়লে আমার নিজেরও আবার লিখতে শুরু করতে ইচ্ছে হয়... পাঠককে এতোটা অনুপ্রেরণা খুব কম লেখক ই দিতে পারেন। শুভকামনা "এই শহরে মেঘেরা একা"! শুভকামনা "একুয়া রেজিয়া"!
Was this review helpful to you?
or
ভীড়ে আর কোলাহলে এই শহরে কিছু মানুষ খুব নিসঙ্গ থাকে, হয়তো পরিস্থিত তাকে একটু বেশি নিসঙ্গ করে ফেলে। তখন শহরের ভাঁজ গুলো খুব অদ্ভুত দেখতে লাগে। তখন স্বাভাবিক ব্যপারগুলো অন্যরকম ঠেকে। মুক্তি মাঝে স্বাধীনচেতা ভাব থাকলেও পরিবারের মাঝে খুব একা হওয়ায় নিজের ডানা ঝাপটাতে পারেনি। কিন্তু সবকিছুই তার চিন্তা মধ্যে ছিল; ছোট্ট অয়নের চঞ্চলতা, বিভা আপু উচ্ছাস, মায়ের কান্না, জয়ীর চনমনে ভাব থেকে নির্বাক হয়ে যাওয়া, শামিম ভাই নির্বিকার চালচলন, বাবার কঠোরতা...সব কিছু...বড্ড একা থেকেও সে নিজের ভেতরের সব চিন্তাকে চালিয়ে গেছে। শামিম মাকে হারিয়ে পুরোপুরি নির্বিকার হয়ে গেছে, বাবা ধোকা তাই ওকে কোথাও ক্ষত করে দিচ্ছিলো। কিন্তু নদীর ওপার থেকে এপারের গল্প সে অন্য ভাবে এঁকেছিল। কিন্তু এপারে এসে আসল ছবিটা ওকে কষ্ট দিয়েছে। সদা সবুজ কচি পাতার মত জয়ী শামিমের সান্নিধ্য তাকে তাজা করে দিয়েছিল। বিভার সঙ্গ,গান, অয়নের দুষ্টমি তার ভিতরের শিশুকে বাঁচিয়ে রেখেছিল; কিন্তু রাশেদ নামের ভালো মানুষের মত মুখোশধারী লোকটা সেই শিশুকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল, শুকনো পাতার মত দুমড়ে গিয়েছিল জয়ী,একা... বাবা-মার সম্পর্ক্টা সব সময় ঘোলাটে ছিল, কিন্তু সত্য জানার পর চুপ ছিল ... মাও একা থেকেছে দিনের পর দিন... বাবাও একা হয়ে গেলেন মায়ের অনুপস্থিতিতে...আবার সব একা... একটা নিশ্চুপ গল্পের মত সব চুপ ছিল, শেষটায় হঠাৎ কোলাহল তুলে গল্পের শেষ টেনে গেলো... জীবন কখনো আনন্দে আত্মহারা, কখনো নিশ্চুপ নীল কান্না... আকাশে থোকা থোকা জমে থাকা একা মেঘগুলোর মত, খুব মন খারাপ হলে মেঘগুলো হুহু করে কেঁদে ফেলে..."এই শহরে মেঘেরা একা" বড্ড একা...
Was this review helpful to you?
or
লেখিকার আগের দুইটি বই পড়ে ইচ্ছে ছিলো এবারেরটাও যত দ্রুত হয় পড়ে ফেলবো। বইটার সবচেয়ে অসাধারণ দিক হচ্ছে বইটা শেষ করার পর একটা অদ্ভুত স্নিগ্ধতায় আপনার মনটা শান্ত হয়ে আসবে। চমৎকার একটা কাঠামো ঘিরে গল্পটা শুরু হয়েছে। আস্তে আস্তে মুক্তি, গল্পের প্রধান চরিত্রের চারপাশে ভিড় করেছে বাকি চরিত্রগুলো। ব্যাপ্তি পেয়েছে গল্প। গল্পে ডুবে যেতে যেতে আমাদের মতো শহুরে মানুষগুলো কখনো চমকে উঠে ভাবতে পারেন, এই গল্প কি আমাদেরই খুব কাছের কারো? এতো বেশি চেনা লাগে কেন? বাবার সাথে দুরত্ব, মায়ের নিজেকে আলাদা করে রাখার গল্প আর একজন শামীম ভাই, উপন্যাসের বুনোট ছিলো অনবদ্য। নারী প্রধান একটা উপনাস্যের শেষটা অনেকটুকু ভালো লাগা উপহার দেবে, স্মিত হাসি হেসে বইটা পাশে সরিয়ে রাখার আগে তবু মনে হবে, এই শহরে মেঘেরা কি আসলেই একা?
Was this review helpful to you?
or
শহরের ধনাঢ্য পরিবারে, কিংবা গ্রামের গরীব পরিবারে বেড়ে উঠা প্রতিটি কিশোর-কিশোরী, তরুন-তরুনী আসলে প্রচন্ড একাকী জীবন কাটায়। যদিও তাকে দেখলে বোঝা যায়না ব্যাপারটা। মনে হবে ছেলেটি বা মেয়েটি অত্যন্ত চঞ্চল, সবাইকে মাতিয়ে রাখছে। অথচ ভেতরে তার গুমরে মরা কষ্ট। যন্ত্রণার সাগরে সে হাবুডুবু খায় প্রতিনিয়ত। সবাইকে খুশি রাখার সে চেষ্টা করে। কিন্তু তার কথা কেউ ভাবেনা কোনদিন। পেরিয়য়ে যাওয়া প্রতিটি দিনে তার কষ্টগুলো বাড়ে। জমা হয়। কিন্তু তার পাশে কেউ দাড়ায়না। মেঘেদের মত নিসঙ্গ আকাশে সে ঠিকানাবিহীন ঘুড়ে বেড়ায়। এই শহরের মেঘেরা আসলেই একা। ধন্যবাদ একুয়া রেজিয়া। আমাদের পাঠকদের বৃহৎ একটি অংশের মনের বেদনাকে নিপুনভাবে তুলে ধরার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের সবার জীবনে নানা গল্প থাকে। আমাদের প্রতিদিনলিপি যেন উপন্যাসের একেকটা পাতা। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, ছোট ছোট সুখ, শেখা আর জানার মূহুর্ত সবকিছু কাগজের মলাটে বন্দী হয়ে আমাদের কাছে ধরা দেয় একুয়া রেজিয়ার উপন্যাসে। এই শহরে মেঘেরা একা এক পাখির মত মেয়ের জীবনের গল্প। তার একাকীত্ব , খাঁচার মাঝে ডানা ঝাপ্টান্ন তার মুক্তির প্রতি তীতির্ষা আর চেষ্টার গল্প। এই শহরে মেঘেরা হয়তো পৃথিবীর আনাচে কানাচে থাকা অনেকের উপাখ্যান, যাদের হাসিমুখে প্রতিনিয়ত চলতে ফিরতে দেখি কিন্তু জানা হয়ে ওঠেনা তাদের অন্তরালের ছায়াগল্প। শহুরে লেখক একুয়া রেজিয়ার প্রতিটি লেখায় আমি শহরবন্দী মানুষের দিনলিপি খুঁজে পাই। ব্যস্ততা, ছোট পরিবার, পারিবারিক সুখ দুঃখ , প্রতিবেশি যেন খুব কাছ থেকে কলমের আঁচড়ে তুলে ধরেন তিনি। এই শহরে মেঘেরা একা মুক্তি নামের মেয়েটির নিঃশব্দ হাহাকারের গল্প। প্রতিটি পাতা কী যেন এক অমোঘ আকর্ষনে বেঁধে রেখেছিলো শেষ পর্যন্ত। লেখিকার প্রতিটি লেখার মতো এটিও নানা মুনিদের উক্তি সম্বলিত যা লেখিকার পাঠক গুণ কেও তুলে ধরেছে। এছাড়া জীবনবোধের এক স্বরুপ ছায়া পড়েছে সহজপাঠ্য এই বইটিতে। প্রাঞ্জলতা এই বইটির আরেকটি অন্যতম গুন। এক নিঃশ্বাসে তাই পড়ে ফেলা যায়। মুক্তি এবং জয়ী দুবোনের খুনসুটি, প্রতিদিনের টুকরো গল্প, শেষবেলার এক অভিনব ট্যুইস্ট বইটিকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। এই বইমেলার অবশ্য অবশ্য অবশ্য পাঠ্য বই গুলোর মধ্যে অন্যতম যে হতে যাচ্ছে এই শহরে মেঘেরা একা তাতে কোন দ্বিরুক্তি থাকা অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই চলেনা!
Was this review helpful to you?
or
প্রতি বইমেলারে কিছু বই থাকে যার জন্য খুব আগ্রহে অপেক্ষা করি। এইবারের বইমেলার সেই অতি আগ্রহে অপেক্ষা করাটুকু ছিলো এই শহরে মেঘেরা একা। বইটি পড়ার পর মনে হলো অপেক্ষা মধুর হয় কথাটা একশত ভাগ সত্যি। এক বৈঠকে শেষ করে ফেলেছি বইটি।বরাবরই লেখিকার ঝরঝরে লেখনী। শহরবন্দী একজন একাকী মানুষের জীবনের গল্প এতো মায়া নিয়ে এর চ্যেয়ে সুন্দর করে হয়তো লেখা যেতোনা। প্রতি পাতায় পাতায় ছোট ছোট সুখ , দুঃখ , হাসি, কান্নার মেল বন্ধন ঘটেছে । নতুন করে চারিপাশকে দেখার মন্ত্রণা জাগিয়েছেন লেখিকা চমৎকার ভাবে। এই বইমেলার ওয়ান অফ দ্য বেস্ট বই এটি, তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাড়াতাড়ি আপনার কপিটিও যোগাড় করে ফেলুন আর পড়ে ফেলুন এই শহরে মেঘেরা একা!
Was this review helpful to you?
or
একুয়া রেজিয়ার নতুন বই "এই শহরে মেঘেরা একা" পড়লাম। বাংলাদেশের বাসিন্দা না হয়েও প্রত্যেক বইমেলায় লেখিকার নতুন বইয়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি এবং প্রতিবার মুগ্ধ হই। বইমেলা শেষ হবার আগেই বহু পথ এবং বহু ঘটনা অতিক্রম করে বইটা হাতে আসার সাথে সাথেই পড়তে শুরু করি। লেখিকার সব থেকে বড় গুন হল তিনি পাঠকদের একটা অদ্ভুত মায়ায় আচ্ছন্ন করে রাখেন শেষপর্যন্ত।একুয়া গল্প বলেন আমাদের পরিচিত জীবনের সুখ-দুঃখগুলোর। চরিত্রচিত্রনের গুনে মুক্তি, জয়ীতা, শামীম ভাই কখন যেন হয়ে ওঠেন ভীষন পরিচিত, তাদের দুঃখগুলো হয়ে ওঠে খুব চেনা। পরিশেষে লেখিকা এক আশাবাদী জীবনের কথা বলেন। এই রূঢ় বাস্তবতায় এই আশাবাদী জীবনের মায়াময় উপাখ্যান মনে রেখে যায় একটা অসম্ভব স্নিগ্ধ ভালোলাগা। নিরন্তর শুভকামনা। ভালো থাকুন।
Was this review helpful to you?
or
পর পর দুই রাতে টানা দুইবার পড়া হল একুয়া রেজিয়া আপুর বই এই শহরে মেঘেরা একা-Ei Shohore Meghera Eka। অদ্ভুত ! এত ভালো কি করে একজন মানুষ লিখে-- মাঝে মাঝে ভেবে খুব অবাক হই। গত বছর কিছু টা কিউরিয়াস হয়েই কিছু বিষাদ হোক পাখি-- কিনেছিলাম। বই টার ৮ থেকে ১০ পৃষ্ঠা পড়ার পর থেকেই বর্তমান সময়ে আমার প্রিয় লেখিকার তালিকায় উনাকে একনাম্বারে রেখে দিয়েছি। এবার আসি -- এই শহরে মেঘে রা একা বই টা দ্বিতীয় রাতে আবার পড়ার কারন সম্পর্কে -- কিছু বিষাদ হোক পাখি এর সাথে এই বইটার কিছু অদ্ভুত মিল পেয়েছি। অদ্ভুত বলার কারন এই যে -- দুটো বই তেই optimist হতে বলার কথা আছে কিন্তু একটু ভিন্ন ভাবে; অন্য রকম ভাবে। মানুষ কষ্টে থাকে বলেই সুখের অনুভূতি গুলো তাদের মাঝে তীব্র হয়। কষ্ট আছে বলেই তো সুখ আছে-- আনন্দ আছে। এই ব্যাপার টা বুঝার জন্যই টানা দুইবার পড়া। "এই শহরে মেঘেরা একা" বই তে মুক্তি নামের মেয়েটির জীবন কষ্ট দিয়ে শুরু হয়েছে; তার জন্মের সময় লোড-শেডিং এর কারনে অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল তাদের বাসা। সেই থেকে শুরু -- তার জীবনে সে প্রায় বলতে গেলে বাবা আর মা এর আদর ছাড়াই বড় হয়। ছোট বোন কে ঘিরে তার সব টুকু ভালোবাসা জড়িয়ে থাকে; আর সেই ছোট বোনের জীবনে ঘটে যায় ভয়ংকর এক ঘটনা। আবার শামিম নামে এক ছেলে তাদের বাসায় আসে ভিন্ন পরিচয়ে ; তার ধারনা ছিল মুক্তি রা অনেক সুখে আছে-- যে সুখ থেকে শামিম নিজে বঞ্চিত হয়েছে। অথচ সে এসে দেখে "নদীর এপার কয় ছাড়িয়া নিশ্বাস ওপারেতে যত সুখ আমার বিশ্বাস"। প্রাত্যহিক জীবনে সুখ খুজতে থাকা মেয়ে মুক্তি; জীবনে চলার পথে মাঝে মাঝেই ভাবে -- "এই শহরে মেঘে রা একা।" --- পরিশেষে দুঃখ আছে বলেই মুক্তির সুখের অনুভূতি গুলো তীব্র হয়। আর যখন তার জীবনে সুখ ফিরে আসে তখন সে সুখের চাদরে আচ্ছন্ন হয়ে হয়ত ভাবে -- আসলেই কি "এই শহরে মেঘেরা একা?" এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলার মত বই --- এত অসাধারন বই এর রিভিউ লেখার মত সাহস আমার নেই--- তাই বই পড়তে যেয়ে নিজের অনুভূতি আর উপলব্ধি গুলোই শুধু বলেছি। পড়ে দেখবেন -- সুখ দুঃখের মিশ্র অনুভূতি গুলো বই এর মাঝে আপনাকে আকৃষ্ট করে রাখবে।