User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Having read your book(diary), a number of aspect stands out clearly regarding the environment where you wasted you childhood: psychologically disturbed individuals from fresh intakes in class 7 up to the principle itself, finding faults in others and giving punishment for the enjoyment of their own sick mind,;politics, jealousy, and hatred towards others; deprivation from normal upbringing of a child. Henceforth, a convoluted, sickening and disturbed psychology resulted for these individual. May God has mercy on their soul.
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ ক্যাডেটের ডায়েরি লেখকঃ শাকুর মজিদ প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ পৃষ্ঠাঃ ১৩৬ মূল্যঃ ২২৫ টাকা এ বইটা মূলত লেখক, ফটোগ্রাফার শাকুর মজিদের ক্যাডেট কলেজের ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় লেখা ডায়েরীর একটা সংকলন। বইতে লেখাগুলো লেখাও হয়েছে মূলত ডায়েরীতে লেখার আদলে। ক্যাডেট কলেজের প্রচণ্ড কড়া নিয়মকানুন, শৃঙ্খলার ভেতরেও একটু ফাঁক পেলে লেখকের দুষ্টুমি, এ্যাডভেঞ্চার, জীবনের গল্পগুলো উঠে এসেছে বইয়ের পাতায়। তাছাড়া, বইয়ের পাতায় সে সময়কালের বেশ কিছু স্থিরচিত্রও সংযুক্ত করা হয়েছে। যেটা, বইটিকে অন্য তাতপর্য দিয়েছে। এই লেখকের লেখা প্রথম বই পড়েছিলাম, “হুমায়ূন আহমেদঃ যে ছিল এক মুগ্ধকর” বইটা পড়ে ভালো লেগেছিলো। এবার পড়লাম, এই বইটা। যদিও বইটা তার কিশোর বয়সে লেখা ডায়েরীর সংকলন, তবুও ভালো লেগেছে। এর আগে শাহাদুজ্জামানের বই “খাকি চত্বরের খোয়াঁড়ি” পড়েছিলাম। সেটিও ক্যাডেটজীবনের একটা স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ। ভালো লেগেছিলো। তখন থেকেই মূলত ক্যাডেট জীবনের সাথে পরিচয়, এ বইতে এসে পরিচয়টা আরো নিবিড় হয়েছে। বইয়ের প্রচ্ছদটা খুবই সুন্দর ছিলো। তাছাড়া, পৃষ্ঠার মানও উন্নত। বানানও ঠিকঠাক ছিলো, খুব একটা ভুল চোখে পড়েনি। বইয়ের এদিক নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। এছাড়া, বইয়ের আকারটা অন্যরকম ছিলো। পকেট ডায়েরী আকারের বই পড়ে মজা পেয়েছি। সবমিলিয়ে, খারাপ লাগবেনা বইটা। পড়ে দেখতে পারেন “ ক্যাডেটের ডায়েরী।“ বইটা পড়ে ক্যাডেটদের ছকবদ্ধ গম্ভীর জীবন সম্পর্কে কিছুটা ধারণাও পাবেন।
Was this review helpful to you?
or
একজন ক্যাডেটের ৬ বছর জীবনে কাটান বিভিন্ন ঘটনা আবদ্ধ এই ডায়রীতে। ডায়েরি মানুষের জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতির সংগ্রহশালা। ডায়েরির একেকটি পাতা যেন একেকটি স্মৃতির শহর। কিন্তু যদি সে শহরটি হয় সেনা নিয়ন্ত্রিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তবে তার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে অজস্র স্মৃতি। যে স্মৃতিগুলো অন্যসব স্মৃতি থেকে আলাদা। শাকুর মজিদ-এর ‘ক্যাডেটের ডায়েরি’ তেমনি এক অনন্য রোজনামচা, যেখানে উঠে এসেছে ক্যাডেট-জীবনের বিচিত্র ঘটনাবলি। কৈশোরে বাবা-মাকে ছেড়ে যে বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতে হয় আধাসামরিক চৌহদ্দিতে, সেখানে মনের কথাগুলো লিখে রাখার সবচেয়ে প্রিয় মাধ্যম ডায়েরি। আর ক্লাস সেভেন থেকেই তাদের ডায়েরি লেখার জন্য বলা ছিলো। ছোট ছোট অভিমান, অনুযোগ, আক্ষেপ, মজার ঘটনা, অভিজ্ঞতা, দৈনন্দিন কার্যক্রম, বন্ধুত্ব, দুষ্টুমি, অ্যাডভেঞ্চার, কঠোর নিয়মাবর্তিতা—সবকিছু মিলিয়েই এ জীবন। আর সে জীবনের নানা ঘটনা যখন লিপিবদ্ধ হয় ডায়েরির পাতায় তখন তা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম। বইয়ের শুরুতে জানা যায়, ক্যাডেট কলেজে পড়ার প্রথম দিন থেকেই তাঁকে ডায়েরি লেখানোর অভ্যাস করানো হয়েছিল। যদিও মূল ডায়েরি শুরু হয় ১৯৮০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে, যখন তিনি নবম শ্রেণির একজন ক্যাডেট। শুরুটা হয় ভ্রমণকাহিনি দিয়ে। কোনো এক শীতের ছুটি শেষে কলেজে প্রত্যাবর্তনের পর নতুন ক্লাসে নতুন করে জীবন শুরু করার মধ্য দিয়ে ডায়েরির সূচনা। পুরো ক্যাডেট জীবনের খণ্ডচিত্র তাঁর এই ডায়েরি। ডায়েরির প্রতি পাতায় পাতায় অসংখ্য স্মৃতি। এক ব্যাচের বিদায়, অন্য ব্যাচের আগমন। শিক্ষাসফরে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা, ক্লাব সোসাইটি, পরীক্ষা, অধ্যক্ষের বিদায়, নতুন অধ্যক্ষের আগমন, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়া, বিভিন্ন মঞ্চ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া, বন্ধুদের সাথে বাজি ধরা, আড্ডামুখর রাত সবকিছু তুলে ধরেছেন ডায়েরিতে। একবার ক্যাডেট কলেজে অভিভাবক সাক্ষাতকার দিবস হয়। যা প্যারেন্টস ডে নামে পরিচিত। এ সময়ে ক্যাডেটদের অভিভাবকেরা খাবার নিয়ে ক্যাডেটদের সাথে দেখা করতে আসে। কিন্তু তার বাবার জাহাজের চাকুরীর সুবাদে প্রায়ই তিনি দেশের বাইরে থাকতেন। তাই এদিন তাকে দেখতে কেউ আসতো না। স্বভাবতই তাঁর মন খারাপ হত। তিনি ডায়েরিতে লিখে রাখতেন এভাবে, আজ মাসের শেষ রোববার। প্যারেন্টস ডে। মনে মনে ভেবেছিলাম আমার কেউ হয়তো আসতে পারেন। না, কেউ এলেন না। কে-ই বা আসবে? প্যারেন্টস ডে-তে প্যারেড গ্রাউন্ড ভরে যায় গাড়িতে। ক্যাডেটদের বাবা মা গাড়ি করে আসেন। গাড়িতে বসে বসে ছেলেরা খায়। আমি তাকাই না। আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। সমসাময়িক বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনারও দেখা মেলে এখানে। এছাড়া এক সংস্কৃতিমনা বন্ধুপ্রিয় কিশোরকে পাওয়া যায়। যে কিশোরের স্বপ্নালু চোখে দোলা দেয় বড় ঔপন্যাসিক হবার স্বপ্ন। মাঝে মাঝে ক্যাডেট কলেজের নিয়ম কানুনের ওপর বিরক্ত হন তিনি। তাও লেখেন অকপটে। ক্যাডেটের ডায়েরি লেখকের ক্যাডেট জীবনের এক অনন্য স্মৃতিস্মারক, অনবদ্য দলিল। তিনি বলেন এই লেখা পড়ে যদি কারোর বিন্দুমাত্র উপকার হয় তাহলে আমার ৬ বছর জীবনের গোপন কথা ফাঁস করে দিতেও কোনো আপত্তি নেই। পাঠ প্রতিক্রিয়া বইটি একটি ক্যাডেটের ক্যাডেট থাকা অবস্থার জীবনী। অনেকেই ডায়েরি লেখে কিন্তু তা সময় সময়ে হয়ত মাঝে মাঝে লেখে না। কিন্তু আমাকে এই ডায়েরি র সবথেকে অবাক করেছে কারন লেখক এমন একদিন ও হয়নি যেদিন ডায়েরি লিখেনি।প্রতিদিন এর ঘটনা দুই চার লাইন করে হলেও লিখেছেন এবং প্রতি নতুন ক্লাসের প্রথম দিনের ছবিও সংযুক্ত করেছে। অনেক ছোট ছোট বিষয় আমাকে অভিভূত করেছে। এক কথায় অসাধারণ। লেখক পরিচিতি শাকুর মজিদ পেশায় স্থপতি, নেশায় লেখক-নাট্যকার-আলোকচিত্রী-চলচ্চিত্র নির্মাতা। কুড়ি বছর বয়সে সিলেট বেতারে তাঁর লেখা নাটক ‘যে যাহা করোরে বান্দা আপনার লাগিয়া’ প্রথম প্রচার হয় । দেশ-বিদেশের ভ্রমণচিত্র নিয়ে অনেক প্রামাণ্যচিত্র বানিয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩২, বেশীরভাগই ভ্রমণকাহিনি, স্মৃতিচারণ ও আত্মজৈবনিক গ্রন্থ।
Was this review helpful to you?
or
ডায়েরি মানুষের জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতির সংগ্রহশালা। ডায়েরির একেকটি পাতা যেন একেকটি স্মৃতির শহর। কিন্তু যদি সে শহরটি হয় সেনা নিয়ন্ত্রিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তবে তার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে অজস্র স্মৃতি। যে স্মৃতিগুলো অন্যসব স্মৃতি থেকে আলাদা। শাকুর মজিদ-এর ‘ক্যাডেটের ডায়েরি’ তেমনি এক অনন্য রোজনামচা, যেখানে উঠে এসেছে ক্যাডেট-জীবনের বিচিত্র ঘটনাবলি। কৈশোরে বাবা-মাকে ছেড়ে যে বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতে হয় আধাসামরিক চৌহদ্দিতে, সেখানে মনের কথাগুলো লিখে রাখার সবচেয়ে প্রিয় মাধ্যম ডায়েরি। ছোট ছোট অভিমান, অনুযোগ, আক্ষেপ, মজার ঘটনা, অভিজ্ঞতা, দৈনন্দিন কার্যক্রম, বন্ধুত্ব, দুষ্টুমি, অ্যাডভেঞ্চার, কঠোর নিয়মাবর্তিতা—সবকিছু মিলিয়েই এ জীবন। আর সে জীবনের নানা ঘটনা যখন লিপিবদ্ধ হয় ডায়েরির পাতায় তখন তা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম। বইয়ের শুরুতে জানা যায়, ক্যাডেট কলেজে পড়ার প্রথম দিন থেকেই তাঁকে ডায়েরি লেখানোর অভ্যাস করানো হয়েছিল। যদিও মূল ডায়েরি শুরু হয় ১৯৮০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে, যখন তিনি নবম শ্রেণির একজন ক্যাডেট। শুরুটা হয় ভ্রমণকাহিনি দিয়ে। কোনো এক শীতের ছুটি শেষে কলেজে প্রত্যাবর্তনের পর নতুন ক্লাসে নতুন করে জীবন শুরু করার মধ্য দিয়ে ডায়েরির সূচনা। পুরো ক্যাডেট জীবনের খণ্ডচিত্র তাঁর এই ডায়েরি। এক ব্যাচের বিদায়, অন্য ব্যাচের আগমন। শিক্ষাসফরে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা, ক্লাব সোসাইটি, পরীক্ষা, অধ্যক্ষের বিদায়, নতুন অধ্যক্ষের আগমন, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়া, বিভিন্ন মঞ্চ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া, বন্ধুদের সাথে বাজি ধরা, আড্ডামুখর রাত—সবকিছু তুলে ধরেছেন ডায়েরিতে। সমসাময়িক বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনারও দেখা মেলে এখানে। এছাড়া এক সংস্কৃতিমনা বন্ধুপ্রিয় কিশোরকে পাওয়া যায়। যে কিশোরের স্বপ্নালু চোখে দোলা দেয় বড় ঔপন্যাসিক হবার স্বপ্ন। মাঝে মাঝে ক্যাডেট কলেজের নিয়ম কানুনের ওপর বিরক্ত হন তিনি। তাও লেখেন অকপটে। লেখেন নিজের দারিদ্র্যের কথা। বলা যায় ‘ক্যাডেটের ডায়েরি’ লেখকের ক্যাডেট জীবনের এক অনন্য স্মৃতিস্মারক, অনবদ্য দলিল।
Was this review helpful to you?
or
‘ক্যাডেটের ডায়েরি’ লেখকের ক্যাডেট কলেজের জীবন থেকে নেয়া কিছু ক্ষন, ঘটনা, অভিজ্ঞতা আর অনুভুতির সমষ্টি এবং দলিল।এই ডায়েরি লেখকের মনের আনন্দ, সংকল্প, বেদনা, গর্ব, হতাশা, দুঃখ-কষ্ট, ফেলে আশা মা-বাবা আর পরিজনদের নিয়ে উৎকন্ঠা, আর বিভিন্ন মিশ্র অনুভুতির বহিঃপ্রকাশ।ডায়েরির সময়কাল ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩, যখন লেখকের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছর। ৬ বছরের ক্যাডেট কলেজ জীবনের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনীর সময়ের গল্প। ডায়েরিটি পড়ে সেসময়ের ক্যাডেটের দৈনিক জীবন, কলেজের রুটিন, রুটিন বহির্ভুত জীবন, নিয়মনীতি সম্বন্ধে ধারনা পাওয়া যায়। তৎকালীন ক্যাডেটের জীবনে বিস্মৃত প্রায় ‘কাগুজে চিঠি’ লেখার অভ্যাস লক্ষনীয়। অনেক স্থানেই তা বিধৃত হয়েছে।“পড়াশোনায় মন দিতে হবে”। “সব মার্ক দেওয়া হয়ে গেছে। এবার সেভেনথ হলাম”। বেশিরভাগ ক্যাডেটের মত, পড়ালেখার ব্যপারে লেখককেও খুব সচেতন দেখা যায়। এ ব্যপারটি খুব বেশী চোখে পড়ে। “লাঞ্চে ডেয়ারিংনেস দেখালাম, টাই পরিনি”, কিংবা, “আজ প্রথম বারের মতো রাতের বেলা কলেজ থেকে পালিয়ে ফৌজদারহাট বাজারে গেলাম”, বা “আজ ডাব চুরি করতে গিয়েছিলাম”, ইত্যাদির বর্ননা একটা শৃংখলাবদ্ধ জীবনেও মানুষের মাঝে যে শৃংখল ভাঙ্গার সহজাত প্রবনতা কাজ করে, তা সাবলীল ভাবে উঠে এসেছে। “আমাদের জীবনটা কি? কোথা থেকে এসেছে?” এত কম বয়সেও দার্শনিকভাব তার লেখায় ফুটে উঠেছে। অতি সাধারন বিষয়- যেমন, “আজ জীবনে প্রথম বারের মতো লিফটে চড়লাম”, সে সময়ের নাগরিক জীবন সম্বন্ধে পাঠককে ধারনা দেয়। কলেজ থেকে লেখকের নিজের প্রস্থানের অনুভুতি না জানলেও একজন পাঠক দ্বাদশ শ্রেনীর সিনিয়র একদল ক্যাডেটের প্রস্থানকালে লেখককে দেয়া বড়ভাইদের আশির্বাদ সম্বন্ধে জানতে পারে। প্রাসঙ্গিক ভাবেই চলে এসেছে, বন্ধুত্ব, মান অভিমান, কলহ, দ্বন্দ,দল গঠন, ক্ষমতার অভিপ্রায় আর অন্তরের সুপ্ত বাসনাগুলো। লেখক নির্দ্বিধায় সহপাঠীদের সাথে তার সম্পর্ক, আচরন এবং অনুভুতি নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন। এতে সমসাময়িক ক্যাডেটদের পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধে বর্তমান ক্যাডেট ও তাদের আত্মীয়স্বজন, শিক্ষকগন ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টগন কিছুটা তুলনা করার সুযোগ পাবেন। ডায়েরিটিতে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়ার হত্যা ও তৎপরবর্তী কিছু রাজনৈতিক তথ্য, এরশাদের ক্ষমতা দখল, কলেজের এডজুটেন্টের আত্মহত্যার বিষয় গুলোও উঠে এসেছে।প্যারেড, পিটি, ক্লাস, পরীক্ষা, ভ্রমন, শিক্ষা সফর,প্যারেন্টস ডে, সাপ্তাহিক সিনেমা, লুকিয়ে টিভি দেখা, কলমবন্ধুত্ব করা, ক্যাডেটদের রস বোধ ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার আলোচিত হয়েছে। বইটিতে সেসময়ের প্রাসঙ্গিক কিছু ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে, তবে লেখকের মূল ডায়েরির দু’একটি পাতার ছবি সংযুক্ত থাকলে ভালো হত । বইয়ের শেষের দিকের অংশে শিক্ষকদের ছবি, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের বিভিন্ন ম্যাগাজিন এ সে সময়ে কলেজের বিভিন্ন সাময়ীকিতে লেখকের ছাপানো লেখাও জুড়ে দেয়া হয়েছে। এসমস্ত ছবি ও লেখা এই বইয়ের এর মূল বিষয়ের থেকে ভিন্ন ধারার বলে ঠিক খাপ খায়নি। ক্যাডেটের ডায়েরি একজন ক্যাডেটের ব্যক্তিগত দলিল। ক্যাডেট কলেজ জীবনের মধ্যভাগের একজন কিশোরের দিনলিপির বর্ননা একজন পাঠক এর মাঝে খুঁজে পাবেন। মাসুম রহমানের সুন্দর প্রচ্ছদের ভেতর ঝকঝকে কাগজে প্রকাশিত বইটি, লেখকের সহপাঠী, পরিচিত, সমসাময়িক অন্যান্য ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেটদের দৃষ্টি কাড়বে সন্দেহ নেই। মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী নৌ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে লেখকের সহপাঠী।
Was this review helpful to you?
or
শাকুর মজিদের লেখা 'ক্যাডেটের ডাইরী' পড়া শেষ করতে আমার সময় লেগেছে মাত্র ৩ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট। প্রতিটি বাক্যই আমি পড়েছি, প্রতিটা ছবিই আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি। এর আগে চে গুয়েভারার "মোটর সাইকেল ডাইরী" নামে একটা বই পড়েছিলাম। ডাক্তারি পাশ করা একজন যুবকের ল্যাটিন আমেরিকায় ঘুরে বেড়ানোর দিনগুলির কথা লিপিবদ্ধ করা আর কিশোর বয়সী এক ছেলের মুক্ত জগত থেকে নিয়ম শৃঙ্খলায় আবদ্ধ একটি জগতে প্রবেশ করে সেই দিন গুলির কথা ধারাবাহিকভাবে লিখে যাওয়ার সাথে তুলনা করা যাবেনা। স্থান কাল পাত্র এবং উদ্দেশ্য সবকিছুই ভিন্ন। ক্যাডেট কলেজে ক্যাডেটদের সংখ্যা সীমিত, এবং সীমিত তাদের চারিত্রিক বৈচিত্র্য। ভিন্ন ভিন্ন নয় বরং সামস্টিক চারিত্রিক বৈচিত্র্য দেখা যায় এখানে। কিছু খুব শান্ত শিষ্ট এবং নিয়ম শৃঙ্খলার প্রতি দারুন অনুগত, কিছু সম্পূর্ণ বিপরীত এবং কিছু মাঝামাঝি চরিত্রের। ডায়েরিটি পড়ে শাকুর মজিদ ভাইকে আমার অনেক গোছাল প্রকৃতির মনে হয়েছে। অতীত, বর্তমান এবং অনাগত ক্যাডেটদের জীবন ও ধারা আমার কাছে একই মনে হয় । কারন জিনিষগুলো নির্দিষ্ট, যুগে যুগে কোন পরিবর্তন হয়না। অন্ধকার ভোরের ওস্তাদজির ঘুম ভাঙ্গানো বাঁশি থেকে শুরু করে রাতের বেলায় হাউস বেয়ারার লাইট বন্ধ করে দেওয়ার চীৎকার পর্যন্ত সব কিছু একই ছিল এবং আছে। জীবন ও ধারার বাইরে যা কিছু আছে তার মধ্যে ডাইরী অন্যতম। ডাইরী তো আমারও ছিলো, প্রতিবছরই একাধিক ডাইরী আমি কলেজে নিয়ে গেছি। কোথায় সেগুলো চলে গেছে বলতে পারবো না। ক্লাস সেভেনে প্রথম প্রথম দুই চার দিন এলো মেলো কিছু লেখার চেষ্টা করেছি কিন্তু তারপরে আর হয়নি, হয়না আমার মতো হাজার জনের। কিন্তু শাকুর ভাইয়ের হয়েছিলো, কিভাবে টানা ছয় বছর প্রতিদিনের দুই একটা ঘটনা চার পাঁচ লাইনে হলেও লিখে গেছেন, এটা অবাক করেছে আমাকে। আরো অবাক হয়েছি প্রতি বছরের শুরুতেই ঐ শ্রেণীতে থাকাকালীন সময়ের একটি একক ছবি ডায়রীতে সংযুক্ত করায়। এভাবে কি আসলে কেউ কখনও চিন্তা করেছে? সেই বিবেচনায় অবশ্যই এটি একটি ব্যতিক্রমী ডাইরী। সাধারন একজন মানুষের একটাই জীবন থাকে, যেটাকে তারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বয়ে চলে। একজন ক্যাডেটের দুইটা জীবন, সাধারন জীবন ও ক্যাডেট জীবন, দুটোকেই বয়ে নিয়ে চলতে হয়। শাকুর ভাই ছুটিতে থাকা সময়ের ঘটনাবলীও লিখে রেখেছন, এটা আমার কাছে অনবদ্য মনে হয়েছে। তার পারিবারিক জীবন, প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির আনন্দ বেদনা, সমকালীন কিছু রাজনৈতিক ঘটনাবলীর সামান্য ঝলক, একজন ক্যাডেটের মনোজগতের দ্বন্দ্ব এবং সেটাকে জয় করে ফেলা, সাথে সমকালীন বিনোদন ব্যাবস্থার একটি চিত্র সহজেই ধরতে পারা যায়। শাকুর মজিদ লিখেছেন ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের গল্প, সেটা ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ সালের । আর আমি তাঁর ১০ বছর পরে এ সময়টা কাটিয়েছি রংপুর ক্যাডেট কলেজে । সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসার ব্যাপারটা ডাইরীতে ভালোভাবেই বুঝা যায়। তিনি গল্পের বই পড়তেন, প্রচুর বাংলা সিনেমার নাম উল্লেখ করে গেছেন, নাটকের নামও তিনি বলেছেন। কলেজের বিভিন্ন মাগাজিনে লেখার কথাও উল্লেখ করেছেন। ডাইরীর শেষে বিশেষ কয়েকটি লেখাও তিনি সংযুক্ত করেছেন। ক্লাস ইলেভেনের শিক্ষা সফর দুর্দান্ত মনে হয়েছে। এতো কম বয়সে সাহিত্যিক একটা পরিপক্কতা আয়াত্ত করতে পেরেছিলেন বলেই হয়তো ডাইরী লেখার অভ্যাসটা বজায় রাখতে পেরেছিলেন। শাকুর ভাইয়ের ডাইরী আমাকে ভুলে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনাবলী পুনরায় মনে করিয়ে দিয়েছে, মনে করতে পেরে কখনও কখনও রোমাঞ্চিত হয়েছি। এটা ভেবে যে, আমার সাথেও একই ঘটনা ঘটেছিলো। শুধু তিনি লিখেছিলেন স্বজ্ঞানে, আমি ওইটা পড়েছি নস্টালজিয়ায়। টাইম মেশিনে একটা সময় ভ্রমন করার মতো, নিজের ডাইরী পড়লে হয়তো আমি বড়জোর ৮৮ সাল পর্যন্ত যেতে পারতাম। এই মেশিনটা আমাকে ৭৮ সালের একজন ক্যাডেট বানিয়ে দিয়েছিলো, আমি নিজের চেয়েও ১০ বছরের পুরাতন একজন ক্যাডেট হয়ে গিয়েছিলাম। ফৌজদারহাট কিংবা রংপুর, এই শব্দ দুটি মাথায় আনতে পারিনি। শুধু মনে হয়েছে ফেলে আসা সেই দিনগুলির কথা, আমার কৈশোর এবং যৌবনের শুরু ঐ ডাইরীতেই। শাকুর মজিদের এ ডায়েরি পড়া শেষে আমার মনে হয়েছিলো, এটা তো আমার ডাইরী ছিলো, সিনিয়র হওয়ার ফায়দা নিয়া কোন অপরাধে আমার কাছ থেকে সেটা তিনি সীজ করে নিয়েছিলেন। কারন স্থান ও তারিখের বদল ছাড়া ঘটনার বিবরণের কোনও তফাৎ নাই । ওটা শাকুর মজিদের না কি আমার ডায়েরি, আমি এখনো নিশ্চিত নই । আমার ধারনা যারা এটা পড়বে তারাও ধন্ধে পড়ে যাবে। আমার মতো আরও হাজার হাজার আছে যারা দিনগুলি খুঁজে ফেরে। পাঠ্য হওয়ার কারনে কোন এক ক্লাসে একটা ইংরেজী কবিতা পড়েছিলাম ‘The Arrow and the Song’ নামে। ঐ সময়ে কবিতাটির ভাব ধরতে পারিনি, ‘ক্যাডেটের ডাইরী’ পড়ার পরে ধরতে পেরেছি। আকাশে হারিয়ে যাওয়া তীর এবং বাতাসে মিলিয়ে যাওয়া গান, দুটোই অনেক দিন পরে খুঁজে পেলাম, অপরিবর্তিত অবস্থায়, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, একটি ডাইরীতে এবং ডাইরী লেখকের হৃদয়ে। যারা খুঁজতে চায় তাদের এখানেই খোঁজা উচিৎ, অন্য কোথাও নয়। শুধু প্রাক্তন নয়, বর্তমান ক্যাডেটদেরও শিক্ষণীয় এবং অনুপ্রানিত হওয়ার অনেক উপাদান এখানে আছে। ক্যাডেটদের অস্তিত্বহীন নিজস্ব একটা জগত আছে যেখানে বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারে না। এমনকি বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তানেরাও পারে না। সাধারন মানুষের পক্ষে জগতটা বোঝা মুশকিল, এমনকি এটা ব্যাখ্যা করাও মুশকিল। শুধুমাত্র ক্যাডেট হলেই সেটা অনুভব করা যায়। ডয়েরিটা আমি অনুভব করার চেষ্টা করছি, কারন এর ভিতরে গোপনে কোথাও লেখা আছে... বাড্ডুটা বান্ধিয়া, দিলাম রে ছাড়িয়া, গগনে ঘুড্ডি উইড়া যায়... যায় রে... গগনে গুড্ডি উইড়া যায়... মোঃ সাইদুল হক প্রাক্তন ক্যাডেট, রংপুর ক্যাডেট কলেজ, (১৯৮৮-৯৪)
Was this review helpful to you?
or
ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের রিইউনিয়নের পর সুবর্ন এক্সপ্রেসে করে ঢাকা ফিরছিলাম। কলেজ ক্যাম্পাসে অসাধারন ঘটনাবহুল তিনটি দিন কাটানোর পরও নস্টালজিয়া কাটেনি তখনও। বিশেষ করে ট্রেন যখন কলেজের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, অতীতের কতো স্মৃতি যে উঁকি দিচ্ছিল মনের ভিতরে, তা বলে বুঝাতে পারবো না। আমরা যারা ছুটিতে কলেজের সামনে দিয়ে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরতাম, তাদের জন্য এই মুহূর্তটি খুবই আবেগের। মনে হল হাজারো স্মৃতির এক পশলা মেঘ এসে আমাকে পুরোপুরি ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেলো। স্মৃতিকাতর আমি আনমনে রিইউনিয়ন থেকে পাওয়া সুভেনিয়্যর গুলি নেড়েচেড়ে দেখছিলাম। এর মধ্যে "ক্যাডেটের ডায়েরি" বইটিও ছিল। লেখক আমাদেরই কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেট বড় ভাই - শাকুর মজিদ। স্বভাবজাত ভাবে প্রথমেই বইয়ের ভূমিকায় চোখ বুলালাম। "কেন এ ডায়েরির প্রকাশনা" - এই অংশটি পড়েই আর হাত থেকে বইটি নামাতে ইচ্ছে করলো না। আর এরপর তো বলা যায় একরকম গোগ্রাসেই গিলেছি। অবশ্য শুধু পড়েছি বললে ভুল হবে। পড়ার মাঝে কখনও কখনও নিজেই ক্যাডেট শাকুর হয়ে গেছি। কখনও আবার আমার নিজের ক্যাডেট জীবনের স্মৃতির মধ্যেই হারিয়ে গেছি। কোথা দিয়ে সে সময় পার হয়ে গেছে, টেরই পাইনি! বইটি লেখকের পরিণত বয়সে লেখা কোন মৌলিক গ্রন্থ নয়, বরং কিশোর বয়সে লেখা ডায়েরির প্রায় হুবহু সংকলন। বইয়ের নাম থেকেই সেটা বোঝা গেলেও, ভূমিকাতে লেখক সে কথা পাঠকদের আর একবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বলাই বাহুল্য যে আমার কাছে এটিই বইটির মূল আকর্ষণ বলে মনে হয়েছে। অভিমানী কিশোর এক ক্যাডেটের অল্প অল্প করে বেড়ে ওঠা, কঠিন অনুশাসনের মধ্যে বিকশিত হওয়া, জীবনের সহজ সরল আনন্দ থেকে শুরু করে রুঢ় বাস্তবতা থেকে শিক্ষা নেয়া - এরকম অনেক অব্যক্ত গল্পই বুদ্ধিমান পাঠকের কাছে ধরা দেবে, যার সবটা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা হয়নি, কিন্তু ডায়েরি লেখার ধারাবাহিকতায় ঠিকই সুক্ষভাবে ফুটে উঠেছে। সেই সাথে আশির দশকের কিছু ছবি, আর সে সময়কার রাষ্ট্রীয় ও সামাজ জীবনে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ন কিছু ঘটনার ছোট ছোট বর্ণনা - সবকিছু মিলে মনে হল আমি নিজেই সেই কিশোর ক্যাডেটের স্মৃতিতে ভর করে কালের সাক্ষী হয়ে রইলাম। হুবহু ডায়েরি বলেই হয়তো আবেগটা এতোটাই খাঁটি। নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু শিখতে পারবে বইটি থেকে। কেউ কেউ হয়তো ডায়েরি লেখারও উৎসাহ পাবে নতুন করে। প্রতি ছুটিতে দুদিনের জার্নির পর বাসায় ফেরা, ডায়েরি হারিয়ে ফেলা, সহপাঠীদের প্রতি অভিমান, আবার পরবর্তীতে সেই অভিমানই নিখাদ বন্ধুত্বে রূপ নেয়া - এরকম অনেক মিলই পেয়েছি আমার নিজের ক্যাডেট জীবনের সাথে। বইটি পড়তে পড়তে নিজের বা কোন কাছের বন্ধুর ক্যাডেট জীবনের একই রকম স্মৃতি মনে করে কখনও আনমনে হেসে উঠা, আর কয়েকবার এদিক ওদিক তাকিয়ে সবার অলক্ষ্যে চোখ মোছা - রিইউনিয়নের এরকম একটা উপসংহার আমার খুবই প্রয়োজন ছিল। যারা পড়েনি, তাদেরকে বলবো অবশ্যই সংগ্রহ করে বইটি পড়তে। আমার নন-ক্যাডেট স্ত্রীও বইটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, সুতরাং বইটি নন-ক্যাডেটদেরও ভালো লাগবে বলেই আমার ধারনা। ফায়েজ আহমেদ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।
Was this review helpful to you?
or
ডায়েরি মানুষের জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতির সংগ্রহশালা। বয়ে চলা জীবনের ফাঁকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, অনুভূতি, না বলা কথা কিংবা আনন্দ আর বেদনার কাব্য মানুষ লিখে রাখে ডায়েরির পাতায়। ডায়েরির একেকটি পাতা যেন একেকটি স্মৃতির শহর। কিন্তু যদি সে শহরটি হয় সেনা নিয়ন্ত্রিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তবে তার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে অজস্র স্মৃতি। যে স্মৃতিগুলো অন্যসব স্মৃতি থেকে আলাদা। শাকুর মজিদের “ক্যাডেটের ডায়েরি” তেমনি এক অনন্য রোজনামচা যেখানে উঠে এসেছে ক্যাডেট জীবনের বিচিত্র ঘটনাবলি। কৈশোরে বাবা মাকে ছেড়ে যে বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতে হয় আধাসামরিক চৌহদ্দিতে, সেখানে মনের কথাগুলো লিখে রাখার সবচেয়ে প্রিয় মাধ্যম ডায়েরি। ছোট ছোট অভিমান, অনুযোগ, আক্ষেপ, মজার ঘটনা, অভিজ্ঞতা , দৈনন্দিন কার্যক্রম, বন্ধুত্ব, দুষ্টুমি, অ্যাডভেঞ্চার, কঠোর নিয়মাবুর্তিতা, সবকিছু মিলিয়েই এ জীবন। আর সে জীবনের না না ঘটনা যখন লিপিবদ্ধ হয় ডায়েরির পাতায় তখন তা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম। বইয়ের শুরুতে জানা যায় ক্যাডেট কলেজে পড়ার প্রথম দিন থেকেই তাঁকে ডায়েরি লেখানোর অভ্যাস করানো হয়েছিল। শিক্ষক আক্কাস আলীর কাছ থেকে ডায়েরি লেখার অনুপ্রেরণা পান ক্যাডেট জীবনের একদম প্রথমেই। যদিও মূল ডায়েরি শুরু হয় ১৯৮০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে, যখন তিনি নবম শ্রেণির একজন ক্যাডেট। শুরুটা হয় ভ্রমন কাহিনী দিয়ে। কোন এক শীতের ছুটি শেষে কলেজে প্রত্যাবর্তনের পর নতুন ক্লাসে নতুন করে জীবন শুরু করার মধ্য দিয়ে ডায়েরির সূচনা। এরপর ক্রমান্বয়ে এক কিশোরের সাথে পরিচয় ঘটে, যে কখনো তার পরিবার নিয়ে চিন্তিত, কখনো বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া সামান্য কষ্টে ম্রিয়মাণ। কারো কাছেই যখন সে মনের কথা গুলো বলতে পারছে না, তখন ডায়েরিই হয়ে উঠছে তার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়। তিনি লেখেন, আজ “ম” আমার সঙ্গে বেইমানি করল। আমি নতুন দুইটা খাতা তার কাছে রাখতে দিয়েছিলাম গত টার্মে। আজ যখন খাতা গুলো চাইলাম, বলে কি না ওগুলো ফেরত দিয়ে দিয়েছি। ও একটা মিথ্যাবাদী। আমি ওকে উচিৎ শিক্ষা দেব। অথচ আজ অংক পরীক্ষায় আমি ওকে ৫০ নম্বরের অংক দেখিয়েছি।( ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮০) এখানে চিরচেনা এক অভিমানী কিশোরের দেখা মেলে, যার পরানের গহীন ভেতরে হাহাকারগুলো যেন এক হয়ে মিশে আছে। বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া দুঃখ লিখে রাখছে ডায়েরির পাতায়। দেখা মেলে পরিবারের চিন্তায় বিভোর এক কিশোরকে। যে তাঁর দৈনন্দিন না না কাজের ভিড়েও পরিবারের সদস্যদের ভালো মন্দ নিয়ে ভাবছে। তিনি লেখেন, শনিবারে সূর্য গ্রহন হবে। সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। বাড়ির জন্য চিন্তা করছি। বাড়িতে খবর পাঠাই কি করে? এখন চিঠি লিখলে শনিবারের আগেতো পাবে না। বাড়িতে ওরা যদি সূর্যের দিকে তাকায়, তবে তাদের রেটিনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। (১৪ ফেব্রুয়ারি,১৯৮০)। আবার কখনো মা, কখনো বাবা, কখনো ছোট ভাই কিংবা বোনের জন্য তার প্রাণ কেঁদে মরে। প্রতিটি অনুভূতিই প্রবল হয়ে ধরা দেয় তাঁর কাছে। নতুন ক্লাসে উঠলে ক্যাডেটদের নতুন অ্যাপুলেট দেয়া হয়। সে আনন্দের কথাও লিখতে ভোলেননি ডায়েরিতে। মূলত ক্যাডেট কলেজের দৈনন্দিন জীবনের বড় একটা অংশ জুড়ে আছে পি টি, প্যারেড, খেলাধুলা, শরীরচর্চাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। তাই ডায়েরির অধিকাংশ জায়গাতেই প্রাধান্য পেয়েছে এসবের কথা। কোন কোন দিনের সূচনা হয়েছে পিটি হয়েছে কি না, প্যারেড কেমন হলো, শীতের মাঝেও খুব সকালে দৌড়াতে কষ্ট হয়েছে এসবের মাধ্যমে। এর ফাকে ফাকে আছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার কথা। কখন কোন হাউস বিজয়ী হলো। এসব। বলাবাহুল্য ক্যাডেটদের আবাসিক বিল্ডিং গুলোকে হাউস বলা হয়। এবং বিভিন্ন হাউসের ক্যাডেটদের মাঝে না না প্রতিযোগিতা হয় বছর ব্যাপি। এছাড়া প্রথম বারের মতো ক্রিকেট ব্যাট হাতে ধরা, প্রথম সিগারেট খাওয়ার অনুভূতি, প্রথম স্টেজে ওঠার অনুভূতি, প্রথম মেরিন অ্যাকাডেমি ভ্রমন সবকিছুই স্থান পেয়েছে ডায়েরিতে। কখনো তিনি পানিশমেন্ট দিচ্ছেন, কখনো পানিশমেন্ট খাচ্ছেন। সবই লিখেছেন অকপটে। ডায়েরি যেন হয়ে উঠেছে তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। এক অদম্য মেধাবী কিশোরের দেখা পাওয়া যায় ডায়েরিতে। যে বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি লেখাপড়াতেও বেশ মনোযোগি। অবসরে যিনি অংক করতে বসে যান, কিংবা ভবিষ্যতে কি করবেন তা নিয়েও ভাবেন। কখনো তিনি প্রতিজ্ঞা নিচ্ছেন ভালো রেজাল্ট করার, আবার সফলও হচ্ছেন। বোর্ড পরীক্ষায় স্ট্যান্ড করছেন। কোন পরীক্ষায় কতো নাম্বার পাচ্ছেন তাও লিখেছেন ডায়েরিতে। কখনো কখনো ডায়েরির নিষ্প্রাণ পাতা জুড়ে দারুণ হাহাকার। প্রতি মাসে একবার ক্যাডেট কলেজে অভিভাবক সাক্ষাতকার দিবস হয়। যা “প্যারেন্টস ডে” নামে পরিচিত। এ সময়ে ক্যাডেটদের অভিভাবকেরা খাবার নিয়ে ক্যাডেটদের সাথে দেখা করতে আসে। লেখকের বাবার জাহাজের চাকুরীর সুবাদে প্রায়ই তিনি দেশের বাইরে থাকতেন। তাই এদিন লেখককে দেখতে কেউ আসতো না। স্বভাবতই তাঁর মন খারাপ হতো। তিনি ডায়েরিতে লিখে রাখতেন এভাবে, আজ মাসের শেষ রোববার। প্যারেন্টস ডে। মনে মনে ভেবেছিলাম আমার কেউ হয়তো আসতে পারেন। না, কেউ এলেন না। কে-ই বা আসবে? প্যারেন্টস ডে-তে প্যারেড গ্রাউন্ড ভরে যায় গাড়িতে। ক্যাডেটদের বাবা মা গাড়ি করে আসেন। গাড়িতে বসে বসে ছেলেরা খায়। আমি তাকাই না। আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। এই অংশটুকু পড়ে মন ভিজে যায়। সেনা শাসনে আবদ্ধ কিশোরের প্রতি মমত্ববোধ তৈরি হয়। নিজে ক্যাডেট থাকার কারণে আরো বেশি খারাপ লাগা কাজ করে। কারণ প্রতিটি ক্যাডেটের অনুভূতিগুলো একই রকম। ডায়েরি ফিরিয়ে নিয়ে যায় স্মৃতিময় সেসব দিনগুলোতে। মনে হয় এ যেন আমার ক্যাডেট জীবনেরই ডায়েরি। মুজা দিয়ে বল বানিয়ে রুম ক্রিকেট খেলা, রাতের অন্ধকারে ডাব চুরি, একটু সিনিয়র হলে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে কলেজের বাইরে যাওয়া, সবকিছুই লেখা আছে ডায়েরিতে। আবেগতাড়িত ভাষায়। কঠোর নিয়মের মাঝে থেকেও কৈশোরের এই অ্যাডভেঞ্চারগুলো মনকে আন্দোলিত করে। লেখক এসেছিলেন নিতান্তই গ্রাম থেকে। শহুরে ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে তাকে নিত্য নিয়ত সমৃদ্ধ করতে হয় নিজেকে, সেসবের কথাও লিখেছেন ডায়েরিতে। লিখেছেন নিয়ম ভাঙার কথা। বাধ্যতামূলক মাগরিবের নামাজে না গিয়ে লুকিয়ে থেকে ধরা পড়ার কথা, কিংবা বন্ধুর কাছে কাগজ চেয়ে না পেয়ে বেদনায় মুষড়ে যাবার কথা। সপ্তাহে একবার নিয়মিত সিনেমা দেখানো হতো ক্যাডেট কলেজে। সিনেমা দেখে তার অনুভূতি লিখে রাখছেন। আবার ছুটিতে এলে সিনেমা হলে সিনেমা দেখছেন বন্ধুদের সাথে। পুরনো বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠছেন, আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন, আবার ছুটি শেষে কলেজে ফিরে আসার সময়ে বিদায়ের শোকে মুহ্যমান হয়ে যাচ্ছেন। সবকিছুর নিরব সাক্ষী যেন ডায়েরি। আবার কখনো কিশোর ডায়েরি লেখক যেন দার্শনিক হয়ে ওঠে। জীবন সম্পর্কে না না প্রশ্ন তাকে ঘিরে ধরে। তিনি লেখেন, আমাদের জীবনটা কী? কোথা থেকে এসেছে? বিরাট নীল আকাশের নিচে চলার জন্য আমরা কোথা থেকে শক্তি পাই? বুঝতে পারি না। (৪ এপ্রিল, ১৯৮০) পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দী এক কিশোর কখনো বাবার চিঠির জন্য অপেক্ষা করে, কখনো বাসা থেকে চিঠি না এলে উৎকণ্ঠায় ভোগে। কখনো জুনিয়রকে কঠিন পানিশমেন্ট দিয়ে অনুতপ্ত হয়। এ যেন মানব মনের বিচিত্রতা। যে মন কখনোই স্থির নয়। তাই শেকল বন্দি যান্ত্রিক জীবনেও নস্টালজিক হয়ে যায়। তিনি লেখেন, আজ সকালে বৃষ্টি হলো। পিটি হয়নি। বৃষ্টি হলেই বাড়ির কথা মনে পড়ে। আমাদের টিনের চালে বৃষ্টি পড়ে। আমি দাদার সঙ্গে বসে গল্প করি। দাদা কলকাতার গল্প শোনান। কতদিন দাদার গল্প শুনি না। পুরো ক্যাডেট জীবনের খণ্ড চিত্র তাঁর এই ডায়েরি। এক ব্যাচের বিদায়, অন্য ব্যাচের আগমন। শিক্ষা সফরে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা, ক্লাব সোসাইটি, পরীক্ষা, অধ্যক্ষের বিদায়, নতুন অধ্যক্ষের আগমন, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়া, বিভিন্ন মঞ্চ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া, বন্ধুদের সাথে বাজি ধরা, আড্ডা মুখর রাত, সবকিছু তুলে ধরেছেন ডায়েরিতে। সমসাময়িক বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনারও দেখা মেলে এখানে। জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ড, সামরিক শাসন, এরশাদের রাষ্ট্র পরিচালনাসহ সকল বিষয়েরই খোঁজ খবর রাখতো এ কিশোর। তার দেখা মেলে ডায়েরির পাতায় পাতায়। এছাড়া এক সংস্কৃতিমনা বন্ধুপ্রিয় কিশোরকে পাওয়া যায়। যে কলম বন্ধুর কাছে চিঠি লেখে, ঈদ সংখ্যা পড়ে, সিনেমার নায়ক নায়িকার অটোগ্রাফ সম্বলিত টাকা সযত্নে রেখে দেয়। যে কিশোরের স্বপ্নালু চোখে দোলা দেয় বড় উপন্যাসিক হবার স্বপ্ন। আবার কাপ্তাই বাঁধে বেড়াতে গেলে তাঁর ছোড়া ইটের আঘাতে বন্ধুর মাথা কেটে রক্ত বের হলে অনুতপ্ত হন তিনি। মাঝে মাঝে ক্যাডেট কলেজের নিয়ম কানুনের ওপর বিরক্ত হন তিনি। তাও লেখেন অকপটে। লেখেন নিজের দারিদ্র্যের কথা। ফটোগ্রাফির শখ থেকে ক্যামেরার প্রতি আসক্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে ক্যামেরা আর পাওয়া হয় না তার। তাই তিনি প্রতীজ্ঞা করেন, তিনি যখন বাবা হবেন তখন তার ছেলেকে প্রথমেই ক্যামেরা কিনে দেবেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিবাহিনীর কাছে বন্দী থাকা অবস্থায় আনা ফ্রাঙ্ক যেমন তার কিশোরি মনের অনুভূতিগুলো লিখে গেছেন ডায়েরিতে, সেভাবে শাকুর মজিদও সেনা নিয়ন্ত্রিত চার দেয়ালে আবদ্ধ হয়ে লিখেছেন তার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলো। নবম শ্রেণিতে যে ডায়েরি লেখা শুরু করেন সে ডায়েরি শেষ হয় ২৪ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সালে, তখন তিনি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়েন। যদিও এরপরেও তিনি ডায়েরি লিখেছিলেন কিন্তু তা হারিয়ে ফেলায় বইয়ে সংযুক্ত করতে পারেন নি। ডায়েরি ছাড়াও বইয়ে আছে লেখকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের কিছু আলোকচিত্র, ক্যাডেট থাকাকালীন কিছু ছবি, তৎকালীন শিক্ষকদের ছবি এবং কলেজের বিভিন্ন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত লেখকের কিছু লেখা। সবমিলিয়ে “ক্যাডেটের ডায়েরি” ক্যাডেট জীবনের এক অনন্য স্মৃতিস্মারক, অনবদ্য দলিল। যেকোন ক্যাডেটের জীবনের সাথেই যা হুবহু মিলে যাবে। এছাড়া ভবিষ্যতে যারা ক্যাডেট কলেজে অধ্যয়ন করতে চায়, তাদের জন্যেও এটি এক অসাধারণ বই। ত্রিশ বছর আগে তিনি ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হয়েছেন। জীবনানন্দের কুড়ি বছর পরে কবিতার মতো তার জীবনও বয়ে গেছে প্রবাহমান ধারায়। কিশোর বয়সে যে স্বপ্ন তিনি লিখেছেন ডায়েরিতে তা সবই বাস্তবায়ন করেছেন। জীবন পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ডায়েরিটি তাই অনন্য অনুপ্রেরণাও বটে।
Was this review helpful to you?
or
অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় ডায়েরী লিখতাম, সেটাকে লিখা না বলে টুকে রাখা বলা ভালো। দিনে কি কি করলাম তার একটা সারমর্ম। বর্তমান যুগের ফেসবুক স্ট্যাটাসের সাথে এর কিছুটা মিল পাওয়া যায়। কিন্তু পার্থক্য হলো স্ট্যাটাস সবাই দেখে,লাইক দেয়। ডায়েরীর লেখা কাউকে দেখতে দিতাম না। কেউ যাতে না পড়তে পারে সেজন্য লুকিয়ে রাখতাম। গল্পগুলো এক হয় কিভাবে !! শাকুর মজিদ ভাই এর “ক্যাডেটের ডায়েরী” পড়তে পড়তে খালি এই প্রশ্নটাই মাথায় ঘুরছিলো। লেখকের ভুমিকায় ডায়েরী লুকিয়ে রাখার ব্যাপারটা প্রথমেই তাই আমাকে চমকিত করে। গোগ্রাসে পড়তে শুরু করলাম, মনে হলো একটা ক্যাডেট এর পুরো ছয় বছর আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো। সপ্তম শ্রেনীতে পড়া বালক (নাকি শিশু!)এর কৈশোর পর্যন্ত সময়টা কিভাবে বেড়ে উঠছে, তার সামাজিক চিন্তাভাবনার পরিবর্তন কিভাবে হচ্ছে , মানসিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধিটা বেশ ভালোভাবেই চোখে পড়েছে। একজন বালক কিংবা কিশোর তার জগৎটাকে কিভাবে দেখছে বইটা পড়লে আমরাও সেই বালক/কিশোরের মতোই দেখছি। আর এখানেই লেখকের সার্থকতা, সময়টাকে সফলতার সাথে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। একটা নির্দিষ্ট সময়ে একটা নির্দিষ্ট জগতের বিভিন্ন ঘটনাগুলো সুন্দরভাবে পরিবেশিত গল্প হিসাবেই পাঠকের কাছে ধরা দিয়েছে। ছোট ছোট প্যারা করে ঘটনার বিবরণগুলো সংক্ষেপে অনেক গল্প বলে দিয়েছে, সেই গল্পগুলো পড়ে কখনো কিশোর ক্যাডেট শাকুর মজিদ এর জন্য আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছি, কখনো মনে লেগেছে কষ্টের ছোঁয়া। ডায়েরীরর সাথে সংযোজিত ছবিগুলো এবং ডায়েরী শেষে কলেজের বিভিন্ন প্রকাশনীতে প্রকাশিত লেখকের লেখাগুলো বইটিকে দিয়েছে অন্যরকম মাত্রা। ১৯৭৮-৮৪ এর সেই লেখাগুলো পড়লেই বড় লেখক হওয়ার তুমুল সম্ভাবনাময়ী সেই লেখনীশক্তি আমরা দেখতে পাই। “ক্যাডেটের ডায়েরী”- কে হয়তো কিশোর উপন্যাস বলা উচিত হবে না। এটা নিখাদ একজন কিশোর ক্যাডেট এর ডায়েরী। বই এর ভূমিকায় লেখক তা দৃপ্তভাবেই স্পষ্ট করেছেন। কিছু ছোটখাটো বানান শুদ্ধকরণ ছাড়া ডায়েরীর কোন পরিবর্তনই করেন নি লেখক। যেই ডায়েরী ক্যাডেট অবস্থায় আগলে রাখতেন, নিজের সেই প্রিয় ডায়েরীটিকেই বই আকারে পাঠকের জন্য প্রকাশ করেছেন। কিন্তু লেখকের লেখনীশক্তির জন্য এর শিল্পমান কোন অংশেই একটি কিশোর উপন্যাস এর চেয়ে কম নয়। মোঃ আবু ইবনে সিনা ইয়েন সাবেক ক্যাডেট-সিলেট ক্যাডেট কলেজ সহকারী প্রকৌশলী (ডেসকো)