User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ইতোমধ্যে ২০০০ সাল থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর লেখা স্মৃতিকথা, নয়াচীন ভ্রমণ ও ডায়েরি প্রকাশের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। আমেরিকার জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এনায়েতুর রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন বঙ্গবন্ধুর উপর গবেষণা করতে। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা-এই বিষয়টা ছিল তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু।
Was this review helpful to you?
or
Salute ??
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধু কে জানতে হলে এই বই পড়তে হবে। একজন বাঙালি হিসেবে বইটা পড়া অবশ্যই উচিত।
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস জানতে পারবেন
Was this review helpful to you?
or
best book ever
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেগেছে বইটা। লাইব্রেরিতে বইটা পাচ্ছিলাম না। রকমারি থেকে অর্ডার করে অল্প সময়ের মধ্যে হাতে পেয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
An incomplete story about Father of nation.
Was this review helpful to you?
or
অর্ডার করার ৩ দিনের মধ্যেই পেয়েছি। ধন্যবাদ রকমারি
Was this review helpful to you?
or
outstanding
Was this review helpful to you?
or
অর্ডার করার তিন দিন পরই হাতে পেয়েছিলাম। খুবই সুন্দর সারভিস দিয়ে থাকে রকমারি। আল্লাহ্ তায়া’লা আরো উন্নতি দান করুন-আমিন।
Was this review helpful to you?
or
সত্যি বলতে বঙ্গবন্ধুর সম্মান বাড়ানোর জন্য যদি তার মেয়ে শেখ হাসিনা কোনো ভালো কাজ করে তবে সেটি এই বইটির প্রকাশের ব্যবস্থা করা। গর্ব করি এরকম একজন বাঙ্গালি আমাদের দেশে জন্ম নিয়েছিলেন।
Was this review helpful to you?
or
A must-read for every Bengali national.
Was this review helpful to you?
or
boita payesi.Darun
Was this review helpful to you?
or
I like it
Was this review helpful to you?
or
জাতির পিতার রাজনৈতিক দর্শন বোঝার জন্য খুব সুন্দর বই
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর ছিল
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বইটি প্রথম পড়েছিলাম আমার এক বড় ভাইয়ের বাসায়। পড়ে খুবি ভালো লেগেছিল। এর পরে কিনি কিনি করে আর কেনা হয়ে উঠছিলো না। রকমারিতে দেখেই অর্ডার করে দিলাম। কিনেছি অনেক আগে। কিন্তু রিভিউ দেওয়া হয়ে উঠতেছিলো না। এই বই সম্পর্কে কিছু বলার নাই। পছন্দের বইয়ের মধ্যে একটা
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Thanks for good service
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
কি বলব
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
a good book..page quality is good and overall a good book to read
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
What a life!!!!!
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা বই।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
good book
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
This 8s good
Was this review helpful to you?
or
It's really amazing book. As a Bengali i think one should read this book. I have learned many things about our country and Bangabandhu.
Was this review helpful to you?
or
A good book of a legendary leader.
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো একটা বই
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো বই।
Was this review helpful to you?
or
unbelievable
Was this review helpful to you?
or
Excellent meaningful.
Was this review helpful to you?
or
অত্যন্ত চমৎকার। বুক বাইন্ডিং এবং পেপারের মান উন্নত।
Was this review helpful to you?
or
awesome ?
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Thank you for fast service
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
Good?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই।লেখা পড়ে মনে হয় পিতা কত বড়ো মাপের সাহিত্যিক৷ সাবলীল ভাষা৷
Was this review helpful to you?
or
good book
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
Great one. STRUGGLE and DEDICATION of father of nation বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান is truely reflected in this book.
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই। লেখক অত্যন্ত সুন্দর ভাবে তার লেখনির মাধ্যমে সব কিছু ফুটিয়ে তুলেছে। বইটি আমাকে মুগ্ধ করেছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি অনেক ভাল।
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
This is really a very informative book. Everybody who wants to know the history of our politics can read this book.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
You should read thia book
Was this review helpful to you?
or
সব কিছু মিলে খুব ভালো ছিল।
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো একটা বই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ এক কথায়
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর একট বই। বইটি পরলে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন, ব্যাক্তি জীবন পারিবারিক জীবন সম্পর্কে জানা যায়।
Was this review helpful to you?
or
?great book
Was this review helpful to you?
or
Good Book
Was this review helpful to you?
or
Nice Nice
Was this review helpful to you?
or
onek valo
Was this review helpful to you?
or
i like this book
Was this review helpful to you?
or
ভালো লাগে না। ফালতু
Was this review helpful to you?
or
Good books and good services by Rokomay
Was this review helpful to you?
or
wow
Was this review helpful to you?
or
Good a lot regarding myth of Making of Bangladesh
Was this review helpful to you?
or
Valo manush chilen. Allah onar vul truti maaf kore jannatbashi koruk, Amin
Was this review helpful to you?
or
This book is very fine .
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
অনবদ্য লেখনী।মনে হলো যেন টাইম ট্রাভেল করে এলাম পঞ্চাশের দশক থেকে।
Was this review helpful to you?
or
wow
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 রিভিউকারীর নাম: জান্নাতী বইেয়র নাম: অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান বইয়ের ধরণ: আত্মজীবনী প্রকাশক: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড প্রথম প্রকাশ: জুন ২০১২ প্রচ্ছদ: সমর মজুমদার গ্রন্থস্বত্ব: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ২০১২ ★ বই কথা : একজন লেখকের আত্মজীবনী মানেই তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া একখণ্ড স্মৃতি উপহার। যে স্মৃতি উপহার কখনো ব্যথায় জর্জরিত, আবার কখনো মায়ের মুখে হাসি দেখার মতোই নির্মল সুন্দরে গচ্ছিত। কখনো বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের একটুকরো গল্প, কখনো বা আবার প্রকৃতির সৌন্দর্যে বিমোহিত হওয়ার প্রশান্ত মনের সুরভিত অনুভূতি। সেই সব স্মৃতিকে নিয়ে সহধর্মিণী ও সহকর্মীদের অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় লিখতে শুরু করেছিলেন এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী। যে আত্মজীবনী আজ এক বাস্তবিক মুজিবের গল্প শোনায়।যে আত্মজীবনীর মাধ্যমে রাজনৈতিকতার ও বাংলার ইতিহাসের ভিতরে ডুব দেওয়া যায় একজন নিবিড় পাঠক হয়ে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন সরল ও উদার প্রকৃতির মানুষ।যা সত্য, যা কল্যাণকর তা নিয়ে নির্ভয়ে বলে গেছেন নির্বিবাদে।যার অকাট্য দলিল তাঁর লেখা এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী। যে জীবনীতে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে, একজন নেতার রাজনৈতিক জীবনকে হৃয়য়ের গভীরতায় পড়তে পারা যায় এক স্নিগ্ধকর ও শ্রদ্ধা জাগানিয়া পরিবেশের মধ্য দিয়ে । যে আত্মজীবনীতে খুব কাছ থেকে চেনা যায় বাঙালি জাতির জনক,এক সাহসী দেশপ্রেমিককে।যিনি দীর্ঘদিন পরিবার থেকে বিছিন্ন হয়ে কারাগারে বন্দি থেকেছেন শুধুমাত্র দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে যিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পরিবারে ফিরে একদিন বলেছিলেন, বাবাকে অনেকদিন না দেখার ফলে সন্তানও ভুলে যায়। ★বইটির মাধুর্যতা : এক মোহনীয় আবেশে স্বাধীন বাংলার পূর্ব ইতিহাস জানতে ও পড়তে বঙ্গবন্ধুর লেখা এই অসমাপ্ত আত্মজীবনীর কোনো তুলনা নেই। বইটির অন্যতম দিক হচ্ছে এক সরল মুজিবকে উপলব্ধি করা। বইটি যেন বঙ্গবন্ধু সাজিয়েছেন মনের সবটুকু স্নেহ দিয়ে।যেখানে জীবনের শুরু থেকে রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাগুলো সাবলীলভাবে সন্নিবেশিত হয়েছে একে অপরের হাতধরে।কত নিখুঁতবাবে তিনি উপস্থাপন করেছেন প্রতিটি ঘটনা। মুগ্ধতার চোখে তুলে ধরেছেন নয়া চীনের ভ্রমণ। স্মৃতি থেকে কলমে লিখেছেন সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা, সহকর্মীদের কথা। ★ বইটি পড়ে অনুভূতি: এক সংগ্রামী মুখর জীবনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন। যিনি জীবনের অনেক সময় কাটিয়েছেন কারাগারের বদ্ধ ঘরে।যিনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি পড়ার মাঝে যেমন রয়েছে স্নিগ্ধতার পরশ তেমনি ব্যথিত হওয়ার করুণ চিত্র। যখন দীর্ঘ ‘সতেরো-আঠরো মাস জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরক্ষণেই গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বঙ্গবন্ধুকে, মন খারাপ হয়ে বঙ্গবন্ধু বলে ওঠেন আমার মা,আব্বা ও ভাইবোন এবং ছেলেমেয়েদের এ দুঃখ না দিলেই পারত। আমার তো এতে কোনো দোষ ছিল না'।তখন পাঠক মনও দুঃখ ভরাক্রান্ত হয়ে ওঠে। শিহরিত হয়ে উঠে যখন এক আদর্শ নেতা জাহাজে উঠে মনের অভিব্যক্তি প্রকাশে বলেন, ‘আমি এখন স্বাধীন মানুষ-যদিও পুলিশ পাহারায়, তবু কম কিসে, বাইরের হাওয়া তো পাচ্ছি! ’ যারা তাঁকে সাহায্য সহযোগীতা করেছেন তাদেরকেও বঙ্গবন্ধু কৃতজ্ঞতার সাথে মনে রেখেছেন। তাদেরকেও গেঁথে রেখেছেন এই অসমাপ্ত আত্মজীবনীর স্মৃতি ঘরে। সত্য প্রকাশ ও সবকিছুকে স্বীকার করার এক অনন্য গুণাবলি ছিল বঙ্গবন্ধুর। আত্মজীবনী লেখার আগে যিনি তার সহধর্মিণী কে বলেছিলেন, “এমন কি করেছি যা লেখা যায়! আমার জীবনের ঘটনাগুলি জেনে জনসাধারনের কি কোনো কাজে লাগবে? কিছুই তো করতে পারলাম না। শুধু এটুকু বলতে পারি, নীতি ও আদর্শের জন্য সামান্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে চেষ্টা করেছি।" ★ ব্যক্তিগত মতামত: আজকের উন্নত প্রযুক্তির যুগে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে রয়েছে নানা জনের নানান মতবাদ।সূচিত হয়েছে এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি। সেখানে বঙ্গবন্ধু নিজেই তার আত্মজীবনীর মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে লিখে গেছেন এই অসমাপ্ত আত্মকথা । বঙ্গবন্ধুকে জানতে, শিখতে ও বাঙালি স্বাধীন সত্তার ইতিহাস জানতে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি সকলের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। যদিও সেখানে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলিকে বঙ্গবন্ধু লেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন যিনি,নিজের সবটুকু দিয়ে সবার পাশে থাকার প্রয়াশ ছিল যার এবং ১৯৭৫'রের ১৫ আগস্ট বুকের রক্ত ঝরেছিল যেই মহান পিতার, আসুন সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে দেশের জন্য একসাথে কাজ করি।রক্ষা করি আমাদের স্বাধীনতাকে। ব্যাক্তিগত রেটিং :১০/১০
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী- শেখ মুজিবুর রহমান অসমাপ্ত আত্মজীবনী। লেখকের ভূমিকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। লেখকের মূল লেখার ব্যাপারে কিছু বলার আগে আমি বইটির ভূমিকা নিয়ে দুটো কথা বলতে চাই। এই বইটি খোলার পরেই বইয়ের পাতায় হৃদয় ছোঁয়ার মত যে ঘটনাটি রয়েছে তা হল বইটির ভূমিকা। পিতার আত্মজীবনী নিয়ে নিজের ভাষায় ছোটখাটো নানা স্মৃতি তুলে ধরেছেন এক পিতৃহারা হতভাগা কন্যা। সেই পিতৃহারা কন্যা, আজকের বাংলাদেশের অভিভাবক শেখ হাসিনা তখন এক নারকীয় গ্রেনেড হামলায় মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত। সেই সময় যেন তাঁর কাছে স্নেহের শীতল পরশ বয়ে নিয়ে আসে পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনীর প্রায় জরাজীর্ণ চারটি খাতা। বহুদিন পর খাতাগুলো হস্তগত হয় শেখ হাসিনার। পিতা-মাতা-পরিবারহারা দুই কন্যা শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানা সেই খাতাগুলো পরম যত্নে আগলে যেন কান্নার সাগরে ভেসে যেতে চায়। দুই কন্যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আর কিছু মানুষের আন্তরিক সহযোগিতায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সেই জরাজীর্ণ খাতাগুলো ছাপার হরফে রূপ পেয়ে আজ আমাদের জনসাধারণের হাতে পৌঁছেছে "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" নামে। লেখকের নাম আগেই বলেছি। যার নাম বাংলাদেশেরই আরেক নাম। বন্ধুবান্ধব আর সহধর্মিণীর অনুপ্রেরণায় জেলের নির্জন প্রকোষ্ঠে বঙ্গবন্ধু লিখতে শুরু করলেন তাঁর আত্মজীবনী। শুরু করেছেন একেবারে গোঁড়া থেকে। সম্ভ্রান্ত শেখ বংশের সুনাম, এগিয়ে চলা, তার বংশধরদের নানা চড়াই-উৎরাই পেরুবার গল্প আমাদের জানিয়ে দেয় বঙ্গবন্ধু কোন বংশের সন্তান। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চে জন্মের পর বেড়ে ওঠা, শৈশবের দুরন্তপনা আর নানান অসুখ-বিসুখের কালো থাবা কিভাবে টুঙ্গিপাড়ার ছোট্ট 'খোকার' শৈশবকে অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতায় ভরিয়ে তুলেছে তা বইটি পড়া না থাকলে শুধু বর্ণনায় বুঝানো যাবেনা। তবে এতকিছুর পরও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুণ ডানা মেলেছে তার আপন মহিমায়। কিভাবে মুসলিম সেবা সমিতির হয়ে গরীব ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আর কিভাবে অন্য সব ছাত্রদের অধিকার আদায়ে স্কুলজীবন থেকেই বুক চিতিয়ে কথা বলেছেন তাও বঙ্গবন্ধু লিখে গেছে একেবারে প্রাণবন্ত ভাষায়। কখনও কখনও কাজে বাধা পেলে যে প্রতিপক্ষের ওপর সদলবলে ঝাঁপিয়েও পড়েছেন তাও লিখে গেছেন অকপটে। তবে আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধু নিজের আত্মজীবনীতে নায়কের ভূমিকা দিতে চেয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে। এই মহান মানুষটির সাথে কিভাবে তাঁর পরিচয়, কিভাবে এই মানুষটির নির্দেশে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনসহ পূর্ব বাংলার সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন সবসময় তার বিস্তর বর্ণনা দিয়ে গেছেন আত্মজীবনীর ভেতরে। নেতাকে গুরু মেনেছেন ঠিকই কিন্তু নেতার ভুল কিংবা অন্যায় সিদ্ধান্তে সরব প্রতিবাদ জানিয়েছেন এমনকিছুর বর্ণনাও পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর নিজের ভাষায়। নেতার সামনে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে যখন বলেছেন, 'You have no right to insult me. I will prove that I am somebody' - তখন নেতা সোহরাওয়ার্দী তরুণ মুজিবকে দূরে ঠেলে দেননি। বরং এক তরুণের সাহস, প্রতিবাদ আর প্রজ্ঞায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে আরও আপন করে নিয়েছেন৷ এটুকু পড়ে আমার খুব করে মনে হয়েছে, আমরা অনেকেই নিজেদের বঙ্গবন্ধুর সৈনিক বলে পরিচয় দিই। কিন্তু হায়! বঙ্গবন্ধুর মত অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোর সাহস আমাদের কোথায় !! অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু যেমন রাজনীতির মাঠে এগিয়ে যাবার বর্ণনা দিয়েছেন, অসহায় মানুষের পাশে সর্বস্ব দিয়ে দাঁড়ানোর ইতিহাস জানিয়েছেন তেমনি তুলে এনেছেন নিজের পরিবারের অসহায়ত্বের কথাও। যখন রাজনীতির মাঠে পদচারণা শুরু তখন থেকেই জেল কারাগার যেন হয়ে উঠেছিলো বঙ্গবন্ধুর আরেকটি বাড়ি। দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে থেকে নিজের আদর্শে যেমন আরও বলীয়ান হয়েছেন তেমনি আদর্শের জন্যই নিজের জীবন-যৌবনে হারিয়েছেন পরিবারের সঙ্গও। বাড়ি ফিরে যখন দুটো দিন পরিবারের মানুষগুলোকে কাছে পেতেন, বড় মেয়ে হাসিনা যখন বাবার গলা জড়িয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে চাইতেন তখনই তাঁকে আবার ছুটতে হতো রাজনীতির মাঠে। সেখান থেকে আবার ঠিকানা হতো কারাগারের কোন এক অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। এতকিছুর পরও যে দায়িত্ব থেকে সামান্য বিচ্যুত হননি তা তো তাঁর নিজের বর্ণনাতেই স্পষ্ট। কোথায় দলের ভাঙন ধরেছে ছুটে গেছেন খেয়ে না খেয়ে, কোথায় দলের প্রার্থী ঠিক করতে হবে হাজির হয়েছেন সবার আগে। তারপর আন্দোলন-সংগ্রামে তো তরুণ মুজিব বরাবরই মুখর। বইটিতে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত নিজের জীবনের খুঁটিনাটি নানাকিছু তুলে ধরতে পেরেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাহিত্যের মানুষ না হয়েও পুরো বইয়ের সমস্ত পৃষ্ঠাজুড়ে নিজেকে ধরা দিয়েছেন একজন অনবদ্য সাহিত্যিক হিসেবে। আত্মজীবনীর ৩৫ বছরের ইতিহাসে শেখ মুজিব নামের সেই তরুণের জীবনে আন্দোলন এসেছে, ক্ষমতা এসেছে, ক্ষমতাচ্যুতিও এসেছে। এসেছে কারাগারের অন্ধকার দিনরাত্রি, এসেছে আপন মানুষদের থেকে দূরে থাকার শত শত দিন। সেই দিনগুলোই ধীরে ধীরে কিভাবে একটি জাতির মুক্তিসংগ্রামের ভিত গড়ে দিয়েছে তা বইটি না পড়লে যেন উপলব্ধি করাটা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ দিতে হয় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর পান্ডুলিপিগুলোকে প্রকাশের উপযোগী করার পেছনে যেসব মানুষ দিবারাত্র শ্রম দিয়েছেন তাঁদেরকে। ধন্যবাদ দিতে হয় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাকে। তেমন কোন সংযোজন-বিয়োজন ছাড়াই যেন এক জীবন্ত বঙ্গবন্ধুকে এনে দিয়েছেন তাঁরা পাঠকের হাতে। রাজনীতির বাইরেও চিনিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ভেতরের একজন সাহিত্যিককে। বইটির পেছন মলাটে লেখা ছোট্ট ঘটনাটুকু যেন আরেকবার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বড় মেয়ে হাসিনা খেলার ফাঁকে ফাঁকে বাবার কাছে ছুটে আসে আর 'আব্বা' 'আব্বা' বলে ডাকে। ছেলে কামাল তখনও অনেক ছোট। স্বৈরাচারী স্বভাবের সরকার যেন ছোট্ট কামালকে তখনও দূরে সরিয়ে রেখেছে বাবার থেকে। বাবা দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে কামাল তখনও জানেনা তাঁর বাবা কে। সংগ্রামী বাবাকে চিনতে না পেরে তাই বড় বোনের কাছে ছোট্ট শিশু শেখ কামালের আবদার- 'হাচু আপা, হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি! ' আহা....
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” কেবল বইই নয়, বইয়ের আদলে গড়ে ওঠা বাঙালি জাতির এক মহান নেতার অনবদ্য স্মৃতিগাঁথা। আর এই বইটিই মহান এই নেতাকে বাঙালির স্মৃতিতে ধরে রেখেছে স্থির সেলুলয়েডে। বইয়ের কাহিনী যখন শুরু হয়, গোপালগঞ্জ তখনো জেলা হয়নি। ফরিদপুর জেলার একটি মহকুমা। তারই অন্তর্ভুক্ত টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। অতীতে শেখ বংশের বেশ নামডাক থাকলেও শেখ মুজিব যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন বংশের সেই জৌলুস আর আগের মতো নেই। অন্য দশজন মধ্যবিত্তের মতোই জীবন শুরু হয়। শেখ মুজিবুর রহমান মেট্রিক পরীক্ষা দেন ১৯৪১ সালে। কিন্তু তার আগেই জীবনে কত চড়াই-উৎরাই, কত বাধা বিপত্তি! স্থানীয় স্কুলে পড়া শুরু করার পর একাধিকবার স্কুল থেকে ছিটকে পড়েছেন। আবার শুরু করেছেন নতুন করে। স্কুলে থাকতেই জড়িয়ে যান রাজনীতির সাথে। তখন একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেতে হয় জেলে। সাত দিনের জেল খাটেন। জীবনের প্রথম জেল। পরবর্তীতে এই জেলে তাঁকে বহুবার যেতে হয়েছে। ফলে সংখ্যাটাও আর সাতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। মেট্রিক পাশের পর পুরোদমে রাজনীতিতে যোগ দেন। মিছিল, মিটিং আর বক্তৃতা ছাড়া কোনোদিকে নজর নেই। তখন লক্ষ্য একটাই- যে করেই হোক পাকিস্তান আনতেই হবে, নতুবা মুসলমানদের বাঁচার উপায় নেই। ১৯৪৩ সালে দেখা দিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। মা মরে রাস্তায় পড়ে আছে, ছোট বাচ্চা সেই মরা মায়ের দুধ খাচ্ছে। কেউ কেউ পেটের দায়ে নিজের ছেলেমেয়েকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে। বাড়ির দুয়ারে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ চিৎকার করছে-“মা, বাঁচাও। কিছু খেতে দাও, মরে তো গেলাম, একটু ফেন দাও।” বলতে বলতে সেখানেই পড়ে মরে যাচ্ছে। ভয়াবহ সেসব দৃশ্য দেখে আর ঠিক থাকতে পারলেন না মাটির মানুষ শেখ মুজিব। ঝাঁপিয়ে পড়লেন দুর্ভিক্ষপীড়িতদের সেবায়। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে ১৯৪৭ সালে করা হলো পাকিস্তান। কিন্তু একি! পাকিস্তান হবার সাথে সাথেই শুরু হলো ষড়যন্ত্রের নতুন রাজনীতি। দাসত্বের শৃঙ্খলে চক্রাকারে ঘুরতে লাগল হতভাগা বাঙালির দল। আবার শুরু হলো চড়াই-উৎরাই। দুর্গম পথচলা, জেলখাটা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অনলে একে অন্যকে পুড়িয়ে ছারখার করার পাঁয়তারা। সামনে এসে দাঁড়াল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। পূর্ব বাংলার মানুষ ততদিনে বুঝে গেছে, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে না পারলে দাসত্বের শৃঙ্খল আবার পরতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমান তখন জেলে বন্দি। কিন্তু তাতে কী? সেখানে থেকেই দিয়ে গেলেন একের পর এক নির্দেশনা। আন্দোলন হলো, মিছিল-মিটিং হলো, গুলি হলো, তাতে তাজা প্রাণও ঝরল; এরপরই না মাতৃভাষা বাংলা হলো। কিন্তু সংগ্রাম থেমে থাকেনি। বরং আরো ঝেঁকে বসেছে। এরপর একে একে সামনে এসেছে ১৯৫৪ সালের নির্বাচন, ১৯৬৬ সালে বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা, ১৯৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান এবং সবশেষে ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হওয়ার ইতিহাস। প্রতিটি ঘটনাই বহু ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। প্রত্যেকটি ঘটনাই আবির্ভূত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘিরে। তিনিই ছিলেন কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ভেবেছিলেন সংগ্রাম বুঝি এবার শেষ হবে। কিন্তু হলো না। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে যে বাংলাদেশকে পেলেন সে এক অন্য বাংলাদেশ। যেন এক ধ্বংসস্তূপ। চারিদিকে ক্ষুধা, দারিদ্র, অশিক্ষা আর অপুষ্টি। কিন্তু যে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন তিনি কি আর পিছু হঠবেন? বাংলার আপামর জনগণকে নিয়ে শুরু করলেন নতুন এক সংগ্রামের। স্বপ্ন তখন একটাই- একটা সোনার বাংলা। “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” মধুমতি তীরের জনপদ থেকে উঠে আসা এক মানুষের গল্প, সফল এক রাষ্ট্রনায়কের আত্মজীবনী। আত্মজীবনী হলেও লেখকের কলমের আঁচড়ে উঠে এসেছে তৎকালীন সময়ের নানান প্রেক্ষাপট। তাই এটি শুধু একটি আত্মজীবনীই নয়, বাঙালি জাতির বিশাল এক ইতিহাসও বটে। ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় বইটির লেখা শুরু করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। বইটিতে বর্ণিত হয়েছে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শৈশব থেকে যৌবনের শুরুর দিককার কথা। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর বংশপরিচয়, শৈশব, শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, দেশভাগ, মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশভাগের পর থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতির সংক্ষিপ্ত খতিয়ান এই বইটি। ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন বিষয়গুলো উঠে এসেছে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনায়। সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে দেখতে পাওয়া যায় কাগজের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন। আছে তাঁর কারাজীবন, পিতামাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সবসময় পাশে ছিলেন যে মানুষটা তিনি ফজিলাতুন্নেসা। সমকালীন বৃহত্তর জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বইটি একটি অমূল্য সম্পদ। আন্দোলন আর সংগ্রামের ইতিহাসের মধ্য দিয়ে সেই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতাদের পরিচয়ই বইটিতে পাওয়া যায়। ঘুরে ফিরেই এসেছে ভাসানী, ফজলুল হক ও সোহরাওয়ার্দীর নাম। বইটি পড়ে ব্যক্তি মুজিবকে অনেকখানি উদ্ধার করা সম্ভব। মাঠের রাজনীতিতে যারা ব্যর্থ তাদের পদাঙ্ক তিনি অনুসরণ করতেন না। তিনি কাজ করতেন, ভুল হলে স্বীকার করতেন, সংশোধনের চেষ্টা করতেন। বইটিতে অনেক না জানা প্রশ্নের উত্তর পাবেন। কেন কংগ্রেস থেকে মুসলিম লীগ? কেন তা থেকে আওয়ামীলীগ? কেনই বা বাদ দেওয়া হলো মুসলিম শব্দটি? তবে বইটি শেষ হয়েছে কিছুটা অতৃপ্তি দিয়ে। এর কারণ আসলে নামেই বুঝা যায়-অসমাপ্ত আত্মজীবনী। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া, উপসংহার ছাড়া, লেখকের অসমাপ্ত জীবনের মতোই একেবারে হুট করে শেষ হয়ে গেল। গোপালগঞ্জের ডানপিটে সাহসী কিশোর শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতা হয়ে ওঠার আভাস কেবল বইটিতে আছে। কিন্তু সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার গল্পের প্রায় সবটাই অজানা রয়ে গেল। স্তম্ভিত হতে হয় বঙ্গবন্ধুর লেখনীর ধার দেখে। মাঠে ময়দানে ছুটে বেড়ানো মানুষটির কলমের ভাষা কতই না সাবলীল! শব্দ আর বাক্যের ব্যবহারে, ভাষা আর রূপকের কারুকার্যে মন ভোলানো লেখা তাঁর ছিল না। তবু মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়তে হয়। সহজ বাক্য, হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা সহজ ভাষা। একজন দক্ষ ঔপন্যাসিকের মতো বর্ণনা করে গেছেন সব; যেখানে ইতিহাস আর একজন মহামানুষের জীবন এক হয়ে গেছে। বইটির শুরুতে শেখ হাসিনার লেখা ভূমিকা এবং বইয়ের বিভিন্ন অংশে জুড়ে শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির টুকরো ছবিগুলো বইটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল এই বই। অসাধারণ তথ্যে সমৃদ্ধ প্রতিটি পাতা। বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, জাপানি, আররি, ফারসি, অসমীয়া, রুশসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় বইটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে আমি দেখিনি কিন্তু অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে তাঁকে উপলব্ধি করেছি। পড়ার সময় মনে হয়েছে আলগোছে মহান মানুষটি যেন চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তর্জনী নাড়িয়ে দরাজ কন্ঠে বলে গেছেন জীবনের কথা। কানের কাছে ধ্বনিত হয়েছে সেই বজ্রকন্ঠ- জয় বাংলা। বইঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকঃ শেখ মুজিবুর রহমান প্রচ্ছদঃ সমর মজুমদার প্রকাশনীঃ দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড পৃষ্ঠাঃ ৩২৯ মূল্যঃ ২২০ টাকা। রিভিউকারীঃ মোঃ জামাল উদ্দিন
Was this review helpful to you?
or
Good Book
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী : এক মহৎ জীবনের সত্য উপাখ্যান লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান রিভিউ লেখক : মিলন আশরাফ প্রথম পৃষ্ঠা পড়েই বইটি কীভাবে লেখা হল সেটি জানতে পারা যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও তাঁর সহধর্মিণীর অনুরোধে জীবনীটা লিখতে শুরু করেছিলেন তিনি। শুরুতেই তিনি লেখেন, “বন্ধুবান্ধবরা বলে, ‘তোমার জীবনী লেখ’। সহকর্মীরা বলে, ‘রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাগুলি লিখে রাখ, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।’ আমার সহধর্মিণী একদিন জেলগেটে বসে বলল,‘বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবনের কাহিনী।” ঠিক এভাবেই তিনি লেখা শুরু করেছিলেন ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেন। ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ থানায় টুঙ্গিপাড়া গ্রামের তাঁর বেড়ে ওঠা। টুঙ্গিপাড়ার শেখ বংশের লোক তিনি। শেখ বোরহান উদ্দীন নামে এক ধার্মিক পুরুষ এই বংশের গোড়াপত্তন করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান। দাদার নাম শেখ আবদুল হামিদ। বঙ্গবন্ধুর ছোট দাদার নাম শেখ আবদুর রশিদ। ইংরেজরা তাকে ‘খান সাহেব’ উপাধি দেন। লোকজন তাকে খান সাহেব বলেই জানতেন। তাঁর মায়ের নাম সায়েরা খাতুন। নানার নাম আবদুল মজিদ। বঙ্গবন্ধুর আকিকার সময় তাঁর নানা নাম রেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। জগৎ জুড়ে এই নাম খ্যাত হবে এরকম আশির্বাদও করেছিলেন তিনি। মাতা পিতা তাঁকে আদর করে খোকা বলে ডাকতেন। ভাই বোন ও গ্রামের লোকজনের কাছে বঙ্গবন্ধু ‘মিয়া ভাই’ বলে পরিচিত ছিলেন। টুঙ্গিপাড়া গ্রামের অদূরে মধুমতী নামে এক বিখ্যাত নদী রয়েছে। বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায় দেখেছেন এই নদীতে স্টিমার চলতো। এবং সেই স্টিমারে করে খুলনা হয়ে কলকাতায় যাওয়া যেত। গোপালগঞ্জ তখন ফরিদপুর জেলার একটি মহকুমা শহর ছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর বাল্য জীবন নিয়ে নিজেই বলেছেন, ‘ছোট সময়ে আমি খুব দুষ্ট প্রকৃতির ছিলাম। খেলাধুলা করতাম, গান গাইতাম আর খুব ভালো ব্রতচারী করতে পারতাম।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ৮) ছোটবেলা থেকেই তিনি একগুঁয়ে স্বভাবের ছিলেন। একটা দলও ছিল তাঁর। কেউ কিছু বললে মারপিট করতেন। একসাথে সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। গৃহশিক্ষকের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর। এরপর গিমাডাঙ্গা স্কুলে ভর্তি হন তিনি। এখানে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। তারপর ভর্তি হন গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে। এই স্কুল থেকেই তিনি ১৯৪২ সালে এন্ট্রাস পাস করেন। পাস করার পর কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে বিএ ভর্তি হন। ওই কলেজের বেকার হোস্টেলে তিনি থাকতেন। ১৯৪৭ সালে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে থেকে তিনি পড়াশুনা করতেন। ছোটবেলায় বঙ্গবন্ধুর দুটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। রোগ দুটি হল; বেরি বেরি আর গøুকোমা। বেরি বেরি রোগ নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘১৯৩৪ সালে যখন আমি ৭ম শ্রেণিতে পড়ি তখন ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি।... হঠাৎ বেরি বেরি রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে। আব্বা আমাকে নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে যান। কলকাতার বড় বড় ডাক্তার শিবপদ ভট্টাচার্য, একে রায় চৌধুরী আরও অনেককেই দেখান এবং চিকিৎসা করাতে থাকেন।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ৮) এই রোগের দুই বছর পর ১৯৩৬ সালে বঙ্গবন্ধুর চোখে গøুকোমা রোগ হয়। ডাক্তারের পরামর্শে তাঁর বাবা তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যান। কলকাতায় তাঁকে চিকিৎসা করেন ডাক্তার টি. আহমেদ। চিকিৎসার পর থেকে বঙ্গবন্ধুকে চশমা পরতে দেন। অসুস্থতার কারণে বঙ্গবন্ধুর ৪ বছর শিক্ষা বিরতি ছিল। বঙ্গবন্ধুর মাস্টার সাহেব গোপালগঞ্জে একটা ‘মুসলিম সেবা’ সমিতি গড়ে তোলেন। এই সমিতির কাজ ছিল গরিব ছেলেদের সাহায্য করা। বঙ্গবন্ধুও সেখানে যোগ দিলেন। মুসলমানদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে মুষ্টি ভিক্ষার চাল উঠিয়ে আনতেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘প্রত্যেক রবিবার আমরা থলি নিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে চাউল উঠিয়ে আনতাম এবং এই চাল বিক্রি করে তিনি গরিব ছেলেদের বই এবং পরীক্ষার ও অন্যান্য খরচ দিতেন।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ৯) যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে মাস্টার সাহেব মারা গেলে বঙ্গবন্ধু মুসলিম সেবা সমিতির দায়িত্ব নিয়ে অনেকদিন পরিচালনা করেন। আরেকজন মুসলমান মাস্টারকে সভাপতি বানিয়ে তিনি হয়েছিলেন সম্পাদক। বঙ্গবন্ধু তখন গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে পড়েন। সালটা ১৯৩৮। তাঁদের স্কুলে একবার অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এসেছিলেন। স্কুলের ছাদ থেকে পানি পড়া ও ছাত্রাবাসের সমস্যা তাঁদের কাছে তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন তিনি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দীর সংবর্ধনা উপলক্ষ্যে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নেতৃভূমিকা পালন করেন তিনি। এ নিয়ে স্থানীয় কংগ্রেসদের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা বাধে। তাদের ষঢ়যন্ত্র ও মিথ্যা অভিযোগে জীবনের প্রথম কারাবরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর বঙ্গবন্ধু ও নইমউদ্দিন আহমেদ মিলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন। দিনটা ছিল ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লেখেন, ‘১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তারিখে ফজলুল হক মুসলিম হলের এ্যাসেম্বলি হলে এক সভা ডাকা হল, সেখানে স্থির হল একটা ছাত্র প্রতিষ্ঠান করা হবে। যার নাম হবে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ।’ (পৃষ্ঠা ৮৮) ২৩ জুন, ১৯৪৯ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মওলানা ভাসানী। আর কারাবন্দি অবস্থায় যুগ্ম সম্পাদক হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই সংগঠন নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত হুমায়ুন সাহেবের রোজ গার্ডেন বাড়িতে সম্মেলনের কাজ শুরু হয়েছিল। শুধু কর্মীরা না, অনেক রাজনৈতিক নেতাও সেই সম্মেলনে যোগদান করেন।... সকলেই একমত হয়ে নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করলেন; তার নাম দেওয়া হল, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ১২০) পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগকে অসম্প্রদায়িক সংগঠন করার জন্য ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয় ১৯৫৩ সালের এক কাউন্সিল অধিবেশনে। পাকিস্তানিরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর প্রথম আঘাত হানে ভাষার উপর। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করে। ফজলুল হক মুসলিম হলে বঙ্গবন্ধু প্রতিবাদ করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের প্রস্তাব দেন। ১৯৪৮ সালে ২ মার্চ সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু ১৬ মার্চ আমতলায় সভাপতি হিসেবে ভাষণ দেন। উক্ত ভাষণে তিনি বলেন, ‘১৬ তারিখ সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রসভায় আমরা সকলেই যোগদান করলাম। হঠাৎ কে যেন আমার নাম প্রস্তাব করে বসল সভাপতির আসন করার জন্য। সকলেই সমর্থন করল। বিখ্যাত আমতলায় এই আমার প্রথম সভাপতিত্ব করতে হলো।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ৯৬) এরপর ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালীন অবস্থায় ভাষার জন্য অনশন শুরু করেন। জেল থেকে ছাড়া পেয়েও তিনি আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। তাঁর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে তিনি এই বিষয়ে লেখেন, ‘আমি সাধারণ সম্পাদক হয়েই একটা প্রেস কনফারেন্স করলাম। তাতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে, রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে এবং যাঁরা ২১ শে ফেব্রæয়ারি শহীদ হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দান এবং যারা অন্যায়ভাবে জুলুম করেছে তাদের শাস্তির দাবি করলাম।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ২১২) বঙ্গবন্ধু হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও আমাদের জাতির পিতা। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন তাঁর নাম ইতিহাসের স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকবে। আমরা এমন এক নেতাকে পেয়ে সত্যিই গর্বিত। তাই কবি শামসুর রাহমান এর কবিতার ভাষায়; ‘ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর রৌদ্র ঝরে চিরকাল/গান হয়ে নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা/ যাঁর নামের উপর কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া/ ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের উপর পাখা মেলে দেয় জ্যোৎ¯œার সারস/ ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের উপর পতাকার মতো দুলতে থাকে স্বাধীনতা।’ (ধন্য সেই পুরুষ, শামসুর রহমান)
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউঃ #sorone_mohanayok_book_review_2021 বইয়ের নামঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকঃ শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশকঃ মহিউদ্দিন আহমেদ প্রকাশনীঃ দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড মূল্যঃ ২২০/- কলমেঃ দিলীপ রায়, প্রভাষক, গণিত, মুরারিচাঁদ(এমসি) কলেজ, সিলেট। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন কথামূলক গ্রন্থ 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'। যেদিন তিনি সাদা কাগজের উপর কলম চালানো শুরু করেছিলেন, সেদিন কি তিনি জানতেন তাঁর লেখা একদিন বিশ্ব খ্যাত হবে ? অনেক রাজনীতিক বেশ গুছিয়ে রোজনামচা লেখেন। পরে তা হয়ে ওঠে ইতিহাসের দলিল। কিন্তু শেখ মুজিবের লেখার শুরুটা ঠিক সেভাবে ছিল না। জেলে বন্দী অবস্থায় অখণ্ড অবসরে কারাগারের আঙিনায় বাগান করেছেন, সহবন্দীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন, জেলখানায় অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তারই ফাঁকে ফাঁকে স্ত্রীর অনুরোধে কিংবা সহকর্মী বন্ধুদের আহবানে আপন মনে রোমন্থন করেছেন কষ্টমাখা স্মৃতির কথা, সোনালি দিনের কথা। সেগুলোই এক সুতোয় গেঁথে আজকের কালজয়ী গ্রন্থ 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'। এই আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে প্রথম পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু লিখেন, ‘বন্ধুবান্ধবরা বলে, তোমার জীবনী লেখ। সহকর্মীরা বলে, রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাগুলি লিখে রাখ, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। আমার সহধর্মিণী একদিন জেলগেটে বসে বলল, বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবন কাহিনী। বললাম, লিখতে যে পারি না; আর এমন কি করেছি যা লেখা যায়! আমার জীবনের ঘটনাগুলো জেনে জনসাধারণের কি কোন কাজে লাগবে? কিছুই তো করতে পারলাম না। শুধু এটুকু বলতে পারি, নীতি ও আদর্শের জন্য সামান্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে চেষ্টা করেছি।’ ১৯৭১ সালের নয় মাস যোগ করলে মুজিবের কারাজীবন দিনের হিসাবে ৩ হাজার ৫৩ দিন। জেলে বসেই মুজিব 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' লিখেছেন যা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এসেছে তাঁর মৃত্যুর ২৯ বছর পর এবং প্রকাশিত হয়েছে ৩৭ বছর পর অর্থাৎ ২০১২ সালের জুন মাসে। সমর মজুমদারের প্রচ্ছদে, বাংলা একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সম্পাদনায় 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'র ভূমিকা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারাবন্দি অবস্থায়। আর বঙ্গবন্ধু ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত সময়কালের আত্মজীবনী লিখেছেন ১৯৬৭ সালে কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দি থাকাকালে। কিন্তু ১৯৬৮ সালের ১৭ জানুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক করে তাঁকে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে গেলে লেখা বন্ধ হয়ে যায়। শেখ হাসিনা ভূমিকায় লিখেছেন- ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যে ভয়ানক গ্রেনেড হামলা হয় এবং ২৪ জন নেতা মৃত্যুবরণ করেন, সেই সময়েই এই খাতাগুলোর চারটি তিনি হাতে পান। এই খাতাগুলো তাঁর এক ফুফাতো ভাই তাঁর হাতে তুলে দেন। খাতাগুলো ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে 'বাংলার বাণী'র সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মণির অফিস টেবিলের ড্রয়ারে। সম্ভবত শেখ মুজিব এই খাতাগুলো দিয়েছিলেন টাইপ করার জন্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মুজিবের সঙ্গে শেখ মণির বাড়িতেও আতাতায়ীরা আক্রমণ করে। সেদিন তিনিও সপরিবারে নিহত হন। সে খাতাগুলো থেকেই 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থিত হয়েছে। সাধারণত আত্মজীবনী শুরু হয় নিজের কথা দিয়ে কিন্তু এখানে তিনি নিজের কথা না বলে তাঁর রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা দিয়ে শুরু করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট্ট কোঠায় বসে বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হলো। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য আমি পেয়েছিলাম। কিভাবে তিনি আমাকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন এবং কেমন করে তাঁর স্নেহ আমি পেয়েছিলাম।' বইয়ের প্রথম দিকে বঙ্গবন্ধু তাঁর পারিবারিক ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। সেই বর্ণনা থেকে জানা যায় তাঁর জন্ম তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের শেখ বংশে। সাথে রয়েছে বংশের পূর্ব ঐতিহ্যের ধারাবাহিক বর্ণনা। এরপর আছে শৈশব ও কৈশোরের দুরন্তপনা। যেমন- পুকুরে সাঁতার কাটা, মাঠে ফুটবল নিয়ে পরে থাকা, দল বেঁধে ছুটাছুটি, হৈ-হুল্লোড় কিংবা অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ ইত্যাদি। ১৯৩৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একটি সভা উপলক্ষে গোপালগঞ্জ আসলে সেখানেই প্রথম পরিচয় হয় তাঁদের। এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই শহীদ সাহেবকে নিয়মিত চিঠি লিখতেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪১ সালের পর পুরোপুরিভাবে বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি পরিবার কর্তৃক অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছিলেন। এটি বোঝা যায় আত্মজীবনীর ২১ পৃষ্ঠায় তাঁর পিতার এই উক্তিটির মাধ্যমে- "বাবা রাজনীতি করো আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ এতো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবা না। আর একটা কথা মনে রেখ, 'sincerity of purpose and honesty of purpose' থাকলে জীবনে পরাজিত হবা না।" তিনি লিখেছেন, 'একথা কোনোদিন আমি ভুলি নাই।' আলোচ্য গ্রন্থে তিনি অনেকগুলো বিষয়ের ধারাবাহিক বর্ণনা করেছেন। যেমন তেতাল্লিশ এর দুর্ভিক্ষ, ছেচল্লিশ এর দাঙ্গা, সাতচল্লিশের দেশভাগ, বায়ান্ন'র রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন, আদমজী জুট মিলের দাঙ্গা, আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ গঠন, যুক্তফ্রন্ট গঠনের পর ১৯৫৪ সালের নির্বাচন - এসবই প্রাঞ্জলভাবে এই বইয়ে তোলে ধরেছেন। সবসময় এসব আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি তাঁর অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, কথা বলেছেন নিপীড়িত মানুষের পক্ষে। জীবনীতে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের বিবরণও এসেছে। চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বিশদ বর্ণনা প্রাণবন্তভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পরতে পরতে যেমন বিভিন্ন বিষয়ে মানুষের সাহচর্য ও সহযোগিতা পেয়েছেন তেমনি মানুষের কাছ থেকে বঞ্চিত হবার ইতিহাসও কম নয়। মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর ছিল অনন্ত প্রচেষ্টা। আত্মজীবনীর ৪৭-৪৮ পৃষ্ঠায় তিনি লেখেন, 'ঈর্ষা, দ্বেষ সকল ভাষায়ই পাবেন, সকল জাতির মধ্যেই কিছু কিছু আছে, কিন্তু বাঙালির মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা। ভাই, ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি হয় না। এই জন্যই বাঙালি জাতির সকল রকম গুণ থাকা সত্ত্বেও জীবনভর অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। সুজলা, সুফলা বাংলাদেশ সম্পদে ভর্তি। এমন উর্বর জমি দুনিয়ার খুব অল্প দেশেই আছে। তবুও এরা গরিব। কারণ, যুগ যুগ ধরে এরা শোষিত হয়েছে নিজের দোষে। নিজেকে এরা চিনে না, আর যতদিন চিনবে না এবং বুঝবে না ততদিন এদের মুক্তি আসবে না।' ভুল হলে তা স্বীকার করতে আমরা কত কুণ্ঠাবোধ করি। অথচ বঙ্গবন্ধু ভুল হলে অবলীলায় স্বীকার করে নিতেন এবং দৃঢ়তার সাথে নতুন কাজে নেমে পরতেন। ৮০ পৃষ্ঠায় বিষয়টি তিনি এভাবে লিখেছেন, 'আমার যদি ভুল হয় বা অন্যায় করে ফেলি, তা স্বীকার করতে আমার কোনোদিন কষ্ট হয় নাই। ভুল হলে সংশোধন করে নেব, ভুল তো মানুষের হয়েই থাকে।' তিনি আরও লিখেন, 'আমি অনেকের মধ্যে একটা জিনিস দেখেছি, কোনো কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। অনেক সময় করব কি করব না, এইভাবে সময় নষ্ট করে এবং জীবনে কোন কাজই করতে পারে না। আমি চিন্তাভাবনা করে যে কাজটা করব ঠিক করি, তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয়, সংশোধন করে নেই। কারণ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না।' একটা জাতির সামগ্রিক উন্নয়নে সরকারের নীতি নির্ধারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি সেটি ৯০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। সরকারের নীতি ভুল হলে সবকিছুতেই ভাটি লাগে। কারণ সরকারকে জানতে হবে, ' কি করে একটা জাগ্রত জাতিকে দেশের কাজে ব্যবহার করতে হয় এবং জাতিকে গঠনমূলক কাজে লাগানো যায়।' বঙ্গবন্ধুর জীবনের অধিকাংশ সময় যেহেতু মানুষের জন্য কাজ করতে করতে কিংবা জেলে জেলে কেটেছে তাই তাঁর সন্তানেরা তাঁকে খুব একটা কাছে পায়নি। সেই সম্পর্কে একটা মর্মান্তিক বিষয় ২০৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। সেটি পড়ার পর একজন পিতা হিসেবে নিজেকে আর ধরে রাখা যায় না। বুক ফুরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। তিনি লিখেছেন, ' একদিন সকালে আমি আর রেণু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর 'আব্বা' 'আব্বা' বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে, হাচু আপু, হাচু আপু, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলে ডাকি।' আহা! কী হৃদয়বিদারক! যে মানুষটি মানুষের তরে, দেশের তরে জীবন বিলিয়ে দিচ্ছেন অকাতরে, তাঁকেই কি না নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করল ঘাতকের দল। তখন নির্বাচনের মৌসুম। মুসলিম লীগের ধনাঢ্য ব্যক্তি ওয়াহিদুজ্জামানের বিপরীতে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাহন কিছুই নেই। তবে আছে মানুষের অফুরান ভালোবাসা। জনগণ চাঁদা উঠিয়ে নির্বাচনের খরচ যোগাড় করেছেন। সেই সম্পর্কে আত্মজীবনীর ২৫৫-২৫৬ পৃষ্ঠায় একটি মর্মস্পর্শী ঘটনার অবতারণা করেছেন তিনি। লিখেছেন- ' আমার মনে আছে খুবই গরিব এক মহিলা কয়েক ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, শুনেছে এই পথে আমি যাব, আমাকে দেখে আমার হাত ধরে বলল, ''বাবা আমার এই কুঁড়েঘরে তোমায় একটু বসতে হবে।" আমি তার হাত ধরেই তার বাড়িতে যাই। অনেক লোক আমার সাথে, আমাকে মাটিতে একটা পাটি বিছিয়ে বসতে দিয়ে এক বাটি দুধ, একটা পান ও চার আনা পয়সা এনে আমার সামনে ধরে বলল, "খাও বাবা, আর পয়সা কয়টা তুমি নেও, আমার তো কিছুই নাই।" আমার চোখে পানি এল। আমি দুধ একটু মুখে নিয়ে, সেই পয়সার সাথে আরও কিছু টাকা তার হাতে দিয়ে বললাম, "তোমার দোয়া আমার জন্য যথেষ্ট, তোমার দোয়ার মূল্য টাকা দিয়ে শোধ করা যায় না।" টাকা সে নিল না, আমার মাথায় মুখে হাত দিয়ে বলল, "গরিবের দোয়া তোমার জন্য আছে বাবা।" নিরবে আমার চক্ষু দিয়ে দুই ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ছিল। সেইদিনই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, মানুষেরে ধোঁকা আমি দিতে পারব না।' এই বইয়ে অনেকগুলো চরিত্র এমন সুনিপুণভাবে বর্ণিত হয়েছে যা যেকোনো সফল উপন্যাসের চরিত্রকেও হার মানায়। সকল চরিত্রকে ছাপিয়ে ওঠা রেণু চরিত্রট এক কথায় অসাধারণ। সংসারজীবনের সুখের বৃত্ত থেকে বারবার ছিটকে পড়া, জেলজীবনকে সঙ্গী করা একজন রাজনীতিক কেমন করে এত সুন্দর একটি নিখুঁত নারী চরিত্র নির্মাণ করতে পারেন, তা সতিই ভাবনার বিষয়। 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' বইটি একইসাথে আত্মজীবনী ও রাজনৈতিক দলিল। বঙ্গবন্ধুর নিজের জীবন কাহিনীর মধ্য দিয়ে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর বর্ণনা উঠে এসেছে চমৎকারভাবে। বর্তমান প্রজন্ম পূর্ব প্রজন্মের সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবে এই বইয়ে। বইটিতে শব্দ, বাক্য, উপমা, রূপক কিংবা অলঙ্কার ব্যবহারে হয়তো পাণ্ডিত্য নেই, তবু সহজ-সরল ভাষায় লিখিত বইটি মন্ত্রমুগ্ধের মতো সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দেয়া, বাঙালি জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটানোর জন্য দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে একবার হলেও 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' পাঠ করা উচিত বলে মনে করি। ১৭.০৮.২১, মঙ্গলবার, সিলেট।
Was this review helpful to you?
or
Good to see
Was this review helpful to you?
or
ভাল বই ছিল
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী (বুক রিভিউ) রিভিউদাতাঃ রুমানা আক্তার রূপা। হারকাপুনে প্রচুর শীত বাবার দেওয়া গায়ের চাদরে, দিয়ে এলাম মা গো ঐ যে দেখ পথে বাস ঐ বুড়ি কে আদরে। খোকা তোর বাবার কিনে দেওয়া গায়ের চাদর পড়ে যে তুই স্কুলে গেলি তবে এই হীম ঠান্ডায় তোর গায়ের চাদর খানা কোথায় গেলো?? মায়ের এরকম প্রশ্ন শুনে খোকা উত্তর দেয়- মা গো পথের কাছে এক বৃদ্ধ শীতে কাপছে, শীতের হীম ঠান্ডা তাকে দুর্বল করে দিয়েছে তাইআমি তাকে আমার চাদরখানা দিয়ে এসেছি। মানুষের প্রতি খোকার এই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দেখেম মায়ের চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে ওঠে। এই সেই খোকা যে স্বাধীনতার ডাক না দিলে হয়তো আমরা কখনো স্বাধীনতার স্বাদই নিতে পারতাম না,,এই সেই খোকা যে স্বাধীনতার জন্য হারিয়েছে নিজ রক্ত,নিজ সহধর্মিণী, নিজ সন্তান, অতঃপর নিজ ভালোবাসার দেশ বাংলাদেশ কে।হ্যা তিনিই আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একজন মানুষ হিসেবে আমি সমগ্র মানবজাতি নিয়েই ভাবি।একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীর ভাবে ভাবায়।এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বেকে অর্থবহ করে তোলে। বাসায় এসে দেখলাম, রেণু এখনও ভালো করে সংসার পাততে পারেনি।তাকে বললাম, আর বোধহয় দরকার হবে না। কারণ মন্ত্রিত ভেঙে দিবে,আর আমাকেও গ্রেফতার করবে।ঢাকায় কোথায় থাকবো,বোধহয় বাড়ওই চলে যেতে হবে।আমার কাছে থাকবা বলে এসেছিলা,ঢাকায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ হবে,তা বোধহয় হল না।নিজের হাতের টাকা পয়সা গুলোও খরচ করে ফেলেছ। রেণু ভাবতে লাগল,আমি গোসল করে, ভাত খেয়ে একটু বিশ্রাম করছিলাম।বেলা তিনটায় টেলিফোন এলো,কেন্দ্রীয় সরকার ৯২(ক) ধারা জারি করেছে।মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করা হয়েছে। মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা কে পূর্ব বাংলার গভর্নর, চর এন.এম খান কে চিফ সেক্রেটারি করা হয়েছে।। আমি তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হয়ে আতাউর রহমানের বাড়িতে এসে তাকে নিয়ে হক সাহেবের বাড়িতে গেলাম এবং তাকে নিয়ে হক সাহেবের বাড়িতে গেলাম এবং তাকে অনুরোধ করলাম ক্যাবিনেট মিটিং ডাকতে।কেন্দ্রীয় সরকারের এই অন্যায় আদেশ আমাদের মানা হবে না আমাদের অগ্রাহ্য করা উচিত। তিনি বললেন কি হবে বুঝতে পারছি না,অন্যদের সাথে পরামর্শ কর।নান্না মিয়া কে বললাম, তিনি কিছুই বলতে পারছে না, মনে হল সকলে ভয় পেয়ে গেছেন। আতাউর রহমান সাহেব রাজি ছিলেন,যদি সকলে একমত হতে পারতাম।মন্ত্রীদের পাওয়া গেল না,হক সাহেব দোতালায় বসে রইলেন।আতাউর রহমান সাহেব কে বললাম,, আপনি দেখেন,সকলকে ডেকে আনতে পারেন কি না?আমি আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কাগজ পত্রগুলো সরিয়ে দিয়ে আসি।অফিস তালা বন্ধ করে দিতে পারে। আমি আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কাগজ পত্র গুলো সরিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে অন্য পথ দিয়ে পুলিশ এসে অফিসে পাহারা দিতে শুরু করল আমি আবার নান্না মিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে আমাকে জানাল বড় বড় পুলিশ কর্মচারীরা আমাকে খুজতে এসেছিল। বাড়িতে ফোন করে জানালাম সেখানে ও গিয়েছিল। আমি রেণু কে বললাম আবার আসলে বলে দিও আমি শীঘ্রই বাড়িতে পৌছাবো। বিদায় নেওয়ার সময় অনেককে বললবাম, আমি তো জেলে চললাম,তবে একটা কথা বলে যাই,আপনারা এই অন্যায় আদেশ নিরবে মাথা পেতে মেনে নিবেন না।প্রকাশ্যে এর বাধা দেওয়া উচিত। দেশবাসী প্রস্তুত আছে,শুধু নেতৃত্ব দিতে হবে আপনাদের। জেলে অনেকের যেতে হবে তবে প্রতিবাদ করে জেল খাটাই উচিত। সেখান থেকে এসে পথে কয়েকজন কর্মীর সাথে দেখা করতে চেষ্টা করলাম, কাউকে পাওয়া গেল না। আমি সরকারি গাড়ি ছেড়ে দিয়ে রিকশা ভাড়া করে বাড়ির দিকে রওনা করলাম।দেখলাম কিছু কিছু পুলিশ কর্মচারীরা আমার বাড়ি পাহারা দিচ্ছে। আমি রিকশায় পৌছালাম তারা বুঝতে পারে নাই।রেণু আমাকে খেতে বলল,খাবার খেয়ে কাপড় বিছানা প্রস্তুত করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এহিয়া খান চৌধুরীকে ফোন করে বললাম আমার বাড়িতে পুলিশ এসেছিল,বোধহয় আমাকে গ্রেফতার করার জন্য। আমি এখন ঘরেই আছি গাড়ি পাঠিয়ে দিন।তিনি বললেন আমরা তো হুকুমের চাকর।গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি, আপনি প্রস্তুত থাকুন।আপনাকে গ্রেফতার করার জন্য বারবার টেলিফোন আসছে। আজি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে ফোন ছেড়ে দিলাম।রেণু আমার সকল কিছু ঠিক করে দিল এবং কাঁদতে লাগল।ছোট ছোটো ছেলেমেয়েরা ঘুমিয়ে পড়েছে।ওদের ওঠাতে নিষেধ করলাম।রেণুকে বললাম তোমাকে কি বলে যাব,যা ভালো বোঝ কর,তবে ঢাকায় থাকলে কষ্ট হবে।বাড়ি চলে যাও।
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ✍বইয়ের পরিচিতিঃ বই: অসমাপ্ত আত্নজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশনী: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড রিভিউ লেখক :শ্রাবণী ✍শুরুর আগে: বইয়ের লেখক বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনা(১৯২০থেকে ১৯৫৫) গুলো লিখেছেন অনেকের অনুরোধ আর তার সহধর্মিনীর উৎসাহে। কারাগারে থাকাকালীন তিনি ডাইরিতে লিখা শুরু করেন (১৯৬৭)।এটা ঠিক ডাইরি নয় তাই এটা লেখকের আত্নজীবনীমূলক বই বলা হয়। ✍বইয়ের বিষয়বস্তু: বইটিতে লেখক দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।ক্ষমতার লোভে মানুষ ঠিক কতটা নির্মম হতে পারে তা তিনি তার বইয়ের মধ্য তুলে ধরেছেন।তার জীবনের ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক বিভিন্ন কাহিনী তিনি উল্লেখ্য করেছেন।তিনি তার জীবনের লক্ষ্যও উল্লেখ করেছেন তিনি চেয়েছিলেন বাঙালি জাতিকে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার ফিরিয়ে দিতে যা কেড়ে নিয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তান। প্রতিনিয়ত তারা আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছিল নানা ধরণের বৈষম্য লাঞ্ছনা-বঞ্চনা কষ্টের নির্মমতা। আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত অবিচার করে যাচ্ছিল। এইসব থেকে আমাদের মুক্তি দিতে তিনি অমৃত সংগ্রাম করেছেন। ভবিষৎ প্রজন্ম তার এই সংগ্রামের কথা জানানোর জন্য তার এই বই মূলত লেখা।আমাদের ভবিষৎ প্রজন্ম যাতে অনাচার অবিচার মিথ্যার কাছে মাথা না নত করে তারা যাতে বুঝতে পারে জীবনের আসল মানে। আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে ঠিক কতটা সংগ্রাম করা লেগেছে। কিভাবে আমরা এই স্বাধীন বাংলাকে পেয়েছি। ✍বইয়ের ফ্লাপ থেকে: ১,লেখক তার নিজের এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক সামাজিক অর্থনৈতিক বিভিন্ন পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন। ২,মুসলিম লীগের প্রতি জনগনের বিশ্বাস ভরসা উঠে গেছে কিভাবে, কিভাবে জনগনের মুসলিম লীগের প্রতি ক্রমাগত অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে তা বর্ণনা করা হয়েছে। ৩, আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হওয়ার মূল কারণ বইটিতে বর্ণনা করেছেন। ৪,১৯৫৪সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বইটিতে। ৫,লেখকের বংশ পরিচয় স্কুল কলেজের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা,দেশভাগ ইত্যাদি কথা স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করেছেন বইটিতে। ৬,লেখকের ব্যাক্তিগত বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথাও বর্ণনা করেছেন। ৭,পারিবারিক বিভিন্ন ঘটনা বইটিতে উল্লেখ করেছেন। ৮,পাকিস্তানের বিভিন্ন নির্বাচন সরকার গঠন নিয়ে তিনি নানা বিষয় উল্লেখ করেছেন। ৯, পাকিস্তানের সরকারের করা বিভিন্ন ধরণের অনাচার-অবিচার তুলে ধরেছেন উক্ত বইটিতে। ১০, বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাভোগের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন বইটিতে। ✍বইটি কাদের জন্য লিখা: বইটি সকলের পড়া উচিত। ছাত্র ছাত্রীদের পড়া উচিত কারণ এই বই পাঠের মাধ্যমে মানসিক বিকাশ ঘটবে এবং আত্নবিশ্বাসী হবে,প্রাপ্তবয়স্কদের পড়া উচিত তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে,রাজনৈতিক নেতাদের পড়া উচিত কারণ তারা বইটি পড়ে নিজেদের ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করতে শিখবে,এককথায় প্রত্যেক বয়সের ও যেকোনো পেশার মানুষের উচিত বইটি পড়া। ✍হৃদয়বিদারক কিছু কথা: এক এক করে সবাই কামরা থেকে বিদায় নিলো,তখন রেণু কেঁদে ফেললো এবং বলল,তোমার চিঠি পেয়ে আমি বুঝেছিলাম তুমি কিছু একটা করে ফেলবা...........কেন তুমি অনশন করতে গেছিলে? এদের কি দয়া মায়া আছে? আমাদের কারো কথা তোমার মনে ছিল না?কিছু একটা হয়ে গেলে আমাদের কি উপায় হতো?হাচিনা,কামালের কি অবস্থা হতো?তুমি বলবা,খাওয়া দাওয়ার কষ্ট তো হতো না?মানুষ কি শুধু খাওয়া পরা নিয়ে বেচে থাকতে চাই?মরে গেলে দেশের কাজই বা কিভাবে করতা?..........................................................................................একদিন সকালে আমি আর রেণু বসে গল্প করছিলাম।হাচু আর কামাল নিচে খেলা খেলছিল।হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে এসে আব্বা আব্বা বলে ডাকে।কামাল চেয়ে থাকে।একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে "হাচু আপা, তোমার আব্বারে আমি আব্বা বলি"। আমি আর রেণু দুইজনে শুনলাম।আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে ওকে কলে নিয়ে বললাম আমি তো তোমারও আব্বা।কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না। আজ গলা জড়িয়ে ধরে পড়ে রইলো।বুঝতে পারলাম এখন আর ও সয্য করতে পারছে না।নিজের ছেলে অনেকদিন না দেখলে ভুলে যায়। "আমি যখন জেলে যায় তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস"। ✍ব্যক্তিগত মতামত: আমার পড়া বইয়ের মধ্য "অসমাপ্ত আত্মজীবনী "বইটি ছিল অন্যতম।বইটি পড়ে আমার দেশের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক ধারণা লাভ করি।লেখক চেয়েছিলেন পরবর্তী প্রজন্ম যেন আমাদের দেশের ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক ধারণা পায়।তাঁর এই প্রচেষ্টা সফলতা পেয়েছে। তার চলে যাওয়ার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরেও তার লিখা বই আমরা পাঠ করছি। ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছি।আমাদের মনোবল বৃদ্ধি পাচ্ছে বইটি পড়ে। ✍লেখক সম্পর্কে: তার সফল প্রচেষ্টার জন্য আজ আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন ভাবে বাস করছি। মাতৃভাষায় কথা বলছি।তার জন্য আমরা পেয়েছি এক স্বাধীন ভুখন্ড।তাই তিনি আছেন আমাদের সবার হৃদয় জুড়ে।মহান রব তাকে জান্নাত দান করুন ব্যাক্তিগত রেটিং ১০/১০
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 "সমবেত সকলের মতো আমারো স্বপ্নের প্রতি পক্ষপাত আছে, ভালোবাসা আছে_ শেষ রাতে দেখা একটি সাহসী স্বপ্ন গতকাল আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি। আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি। . . আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি, আমি আমার ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিলাম।" - নির্মলেন্দু গুণ শুরুর কথা: শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণ প্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অস্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে। বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি। পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে । আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন । একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। বই নিয়ে আলোচনা: "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" গ্রন্থে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বাঙালী জাতির ভাষা-সমাজ-সংস্কৃতি-কৃষ্টির প্রতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাগ্রচিত্ততা, তাঁর রাষ্ট্রভাবনা, ইতিহাস চেতনা, নেতৃত্ব, নেতৃত্বের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য, মূল্যবোধ, কারাস্মৃতি, পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে প্রভেদ ও বৈষম্য, ভাষা আন্দোলন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও সংগঠন বিস্তার ইত্যাদি বিস্তারিত বর্ণিত হলেও, একটা বিষয় আমাকে বেশ চমকিত করেছে, আর তা হচ্ছে তাঁর শান্তি সম্মেলন উপলক্ষে গনচীন ভ্রমন। ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীন শান্তি সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। মাও সেতুং-এর দেশ গণচীনে তিনি চীনা মানুষের শিক্ষা, আচার, দেশপ্রেম আর দেশ গড়ার একাগ্রতা দেখে অভিভূত হন, এমনকি পশ্চিমা ব্লেন্ডও তিনি পাননা সেখানে 'সেভ' করতে, যেহেতু চীনারা দেশেপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে পশ্চিমা ব্লেডের পরিবর্তে শেভ করেন নিজ দেশের খুর দিয়ে। একই সঙ্গে তিনি ব্যঙ্গ সমালোচনা করেন বৃটিশ শাসিত প্রতারণাপূর্ণ হংকংয়ের। চীন ভ্রমণ উপলক্ষে তিনি তাঁর এ আদর্শিক অবস্থান ব্যক্ত করেন এভাবে, আমি নিজে কমিউনিস্ট নই। তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। একে আমি শোষণের যন্ত্র হিসেবে মনে করি। এই পুঁজিবাদ সৃষ্টির অর্থনীতি যতদিন দুনিয়ায় থাকবে, ততদিন দুনিয়ার মানুষের ওপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না”। বায়ান্ন সনেই চীন সফরে সাহসী বঙ্গবন্ধু লাখো মানুষের সম্মেলনে তাঁর বাংলায় প্রদত্ত ভাষণে আরো বলেন, “পুঁজিপতিরা নিজেদের স্বার্থে বিশ্বযুদ্ধ লাগাতে বদ্ধ পরিকর। নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্ত জনগণের কর্তব্য বিশ্ব শান্তির জন্য সংঘবদ্ধভাবে চেষ্টা করা। যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শৃঙ্খলে যারা আবদ্ধ ছিল, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যাদের সর্বস্ব লুট করেছে- তাদের প্রয়োজন নিজের দেশকে গড়া ও জনগণের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক মুক্তির দিকে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। বিশ্বশান্তির জন্য জনমত সৃষ্টি করা তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে”। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে জনগণের শোষণ মুক্তি। বঙ্গবন্ধুর কথায়, 'দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।' সে বিশ্বাসকে ধারণ করে স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালের সংবিধানে তিনি 'সমাজতন্ত্র’কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতেই বিশ্বাসী ছিলেন, পশ্চিমের অবাধ পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় নয়। এবং এ বিশ্বাসের বলেই তিনি চীনা একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মতো বাঙালি জাতির মুক্তির পথ নির্দেশনা হিসেবে প্রবর্তন করেন 'বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক লীগ’ বা বাকশাল। এখন বামপন্থী (ডানপন্থীতে রূপান্তরিত) জ্ঞানপাপীরা কেবল ‘১-দলীয় বাকশালের’ সমালোচনায় মুখে ফেনা তুললেও, চীনের বিশ্ব কাঁপানো এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নের চূড়ান্ত শিখায় আরোহণকে দেখে মুখে কুলুপ লাগিয়ে চুপ থাকেন। তখন একবারও বলেনা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা খারাপ বা উন্নয়নের অন্তরায়! হায় এদেশের রাজনীতি আর ধর্ম নিয়ে খেলছে ভন্ড খেলোয়াররা, কবে সাধারণের কাছে উন্মোচিত হবে এদেশের মুখোশ? বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' বাঙালি জাতির এক অনুন্মোচিত পথদিশা, যা পাঠককে দেখাতে পারে এক অনারম্ভর নেতার ক্লান্তিহীন পথচলা, যা ধাবিত হয় কেবলই অসাম্প্রদায়িকতা, স্বদেশপ্রেম আর মানবিকতার দিকে। অসমাপ্ত আত্মজীবনীর এ লেখকের সঙ্গে কি তুলনীয় হতে পারে এ মাটির, এ নদীর, এ বাতাসের কারো সঙ্গে? কখনোই নয়! এবং অদ্যাবধি জন্মাননি এ মাটিতে তাঁর সমতূল্য কেউ। ******* বই: অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশনী: ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড প্রথম প্রকাশ: জুন ২০১২ মুদ্রিত মূল্য: ২২০৳ (পে: ব্যাক) রিভিউ লেখক: অনিরুদ্ধ আকাশ
Was this review helpful to you?
or
? বুক রিভিউ ?? বইঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকঃ শেখ মুজিবুর রহমান নামঃ দেবজ্যোতি শর্ম্মা বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও সহধর্মিণীর ইচ্ছায়ই মূলত শেখ মুজিবুর রহমান নিজের আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন। ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝিতে তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে থাকা অবস্থায় এটি লেখা শুরু করেন। কিন্তু শেষ করতে না পারায় এটি অসমাপ্ত আত্মজীবনী হিসেবেই রয়ে গেল। এতে মূলত বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবন নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শেখ পরিবারের বড় ছেলে। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিজের জীবনীর পূর্বে নিজের শেখ বংশের ইতিহাসের কিছু বর্ণনা দিয়ে গেছেন। শেখ বোরহানউদ্দিন নামে এক ধার্মিক লোক এই শেখ বংশের সূত্রপাত করেন। শেখ বোরহানউদ্দিনের পর দুই-এক পুরুষ পরে শেখ কুদরতউল্লাহ্ ও শেখ একরামউল্লাহ্ নামে দুই ভাইয়ের ইতিহাস পাওয়া যায়। বলা চলে, শেখ বংশের বাকী সদস্যরাও এই দুই ভাইয়েরই বংশধর। তখনকার সময় শেখ বংশের যথেষ্ট সম্পদ ও অর্থ প্রতিপত্তি ছিল। একসময় ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী বাংলাদেশ দখল করে ও কলকাতা বন্দর গড়ে তোলে। শেখ বাড়ির পাশেই আরেকটি বংশ ছিল কাজী বংশ। শেখদের সাথে এদের আত্মীয়তা থাকলেও দ্বন্দ্বও কম ছিল না। কাজীরা অর্থসম্পদে ও শক্তিতে শেখদের সাথে টিকতে না পারলেও লড়াই করে গেছে বহুকাল। এখন আসি বঙ্গবন্ধুর মূল আত্মজীবনীতে। বঙ্গবন্ধুর ছোট দাদা 'খান সাহেব' উপাধি পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে উনার ছেলেও সেই উপাধি লাভ করেন। খান সাহেব একটি ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত এখানে পড়ে পরে গোপালগঞ্জের একটি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৩৪ সালে ৭ম শ্রেণিতে পড়াকালীন হঠাৎ তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে আবার ১৯৩৬ সালে গ্লুটামেট নামে একটি চক্ষু রোগ হয়। চোখ অপারেশনের পর ১৯৩৬ সাল থেকেই তিনি চশমা পড়া শুরু করেন। ঐ সময় ইংরেজদের বিরুদ্ধে সুভাষ বোসের নেতৃত্বে স্বদেশী আন্দোলন চলছিল। বঙ্গবন্ধুর প্রথম জেল হয় ১৯৩৮ সালে। মার্চ বা এপ্রিলের দিকে মালেক নামে এক সহপাঠীকে হিন্দু মহাসভার সভাপতির বাড়িতে মারধর করছিল। ঐ সময় বঙ্গবন্ধু কিনা ছাত্রকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলে রমাপাদ দত্ত নামে এক ভদ্রলোক উনাকে গালি দেন। বঙ্গবন্ধুও তার প্রতিবাদ করেন এবং রমাপাদ দত্ত থানায় মামলা করলে বঙ্গবন্ধুর জেল হয়। ১৯৩৯ সালে মুসলীম ছাত্রলীগ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু ঐ লীগের সম্পাদক হন। ১৯৪১ সালে তীব্র জ্বর নিয়ে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন। ১৯৪৩ সালে শুরু হয়েছিল দুর্ভিক্ষ। সেই সময় গরিব মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে থাকেন। পরবর্তি পাকিস্তান দাবীর জন্য একটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। ঐ কনফারেন্সে কাজ করতে করতে বঙ্গবন্ধু অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পড়ার জন্য একটুও সময় পাননি। বঙ্গবন্ধুর বাবা উনাকে সবসময় বলতেন, "রাজনীতি করো আর যাই করো পড়াশোনাটা ঠিকমতো করো। 'Sincerity of purpose and honesty of purpose' থাকলে জীবনে পরাজিত হবা না।" মা-বাবা রাজনীতি করতে মানা করতেন না কিন্তু সবসময় শেরেবাংলা এ. কে ফজলুল হকের বিরুদ্ধে না লড়ার কথা বলতেন। তাই তিনি লাহোর প্রস্তাব রাখলেন। লাহোর প্রস্তাবে উপস্থাপিত হয়েছিল পাকিস্তানে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দুরা এবং হিন্দুস্তানে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানরা সমান অধিকার পাবে। পাকিস্তান আনার লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে বুঝলেন যে, পরশ্রীকাতরতা ও বিশ্বাসঘাতকতা বাঙ্গালীদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। এজন্যই বাঙ্গালী জাতির সমস্ত গুণ থাকা সত্ত্বেও জীবনভর অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। যতদিন এরা নিজেকে চিনতে পারবে না ততদিন এদের মুক্তি অসম্ভব। সময় হল ভারতবর্ষ ভাগের। ১৯৪৭ সালের জুন মাস। বাংলাদেশী নেতাদের ধারণা ছিল কলকাতা ও আসাম পাকিস্তানে থাকবে। কিন্তু দেখা গেল শুধুমাত্র আসামের একটি জেলা সিলেট ছাড়া বাকী সব ভারতবর্ষেই থাকবে। সম্ভাবনা একেবারেই শেষ হয়ে গিয়েছিল যখ৷ নাজিমুদ্দিন সাহেব নেতা হয়েই ঘোষনা করলেন, ঢাকা হবে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী। বঙ্গবন্ধুর আরেকটি গুণ ছিল, তিনি যে কাজ চিন্তা করতেন, সেটি করে ফেলতেন। ভুল হলে সংশোধন করে নিতেন। কারণ তিনি মানতেন, "যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না।" ১৯৪৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী করাচিতে একটি সভা হয়েছিল রাষ্ট্রভাষায় সিদ্ধান্ত নিয়ে। মুসলীম লীগ নেতারা উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাইত। তখন কংগ্রেস সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ বাবু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী করেছিলেন। এরপর থেকেই অনেক ষড়যন্ত্র শুরু করতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। পাকিস্তানের প্রায় শতকরা ৫৬ ভাগ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। তাই বাংলাই একমাত্র কারণ রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত। কিন্তু তবুও বাঙালিরা 'বাংলা' ও 'উর্দু' দুটোকেই রাষ্ট্রভাষা করার দাবী করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরা উর্দুকে ইসলামিক ভাষা হিসেবে যুক্তি দিয়ে বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। অবশেষে জিন্নাহ পূর্ব পাকিস্তানে এ বিষয়ে সভা করতে আসলে বাঙালিরা তার মুখের উপর "উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা মানিনা" বলে দেয়। এর পর পশ্চিম পাকিস্তানীরা পূর্ববাংলার উপর অত্যাচার শুরু করতে থাকে। এই অত্যাচার দেখে প্রথমেই প্রতিবাদ করেন বঙ্গবন্ধু। পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা'র আন্দোলনকে ভালে চোখে দেখতেন না। বঙ্গবন্ধু তখন কারাগারের যন্ত্রণা ভোগ করছিলেন। অপরপক্ষে শেরেবাংলা এ.কে. ফজলুল হক, মওলানা ভাসানীসহ আরও অনেকে একমত হয়ে নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান "পূর্ব পাকিস্তান আওয়াজ মুসলিম লীগ" গঠন করলেন। যার জয়েন্ট সেক্রেটারি নিযুক্ত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এটি গঠন হওয়ার পরই বঙ্গবন্ধু মুক্তি পায়। সেটিই পরবর্তীতে "আওয়ামী লীগ" নামে পরিচিত হয়। আওয়ামী লীগের প্রথম সভাতে হঠাৎ করেই এসডিও ১৪৪ ধারা জারি করে। এতে কিনা মানুষ আহত হয়। মহকুমা প্রসাশনের কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুকে বক্তৃতা করে লোকজনকে বোঝাতে বলেন। বঙ্গবন্ধু যা বলার সবই বললেন এবং রাস্তা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলেন। অতঃপর বাড়িতে আসার পর বঙ্গবন্ধুর পিতা বার এট ল' ডিগ্রির জন্য বিলেত যেতে বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু জেদ করে বললেন, "দেশের মানুষের প্রতি যে অন্যায়-অবিচার হচ্ছে তাকে আমি প্রশ্রয় দিতে পারিনা।" এই বলে তিনি বিলেত যাবেন না সিদ্ধান্ত নেন। মনে মনে রেণু (শেখ ফজিলাতুন্নেছা) খুব দুঃখ পায়। একমাত্র রেণুই সবসময় বঙ্গবন্ধুর প্রয়োজনে পাশে থাকত। মওলানা ভাসানী বঙ্গবন্ধুর এই আন্দোলনকে সমর্থন করতেন। হঠাৎ এক সভায় সভাপতির স্থানে ওনার পরিবর্তে শামসুল হকের নাম প্রস্তাব করা হয়। এ নিয়ে সেখানে ভীষণ রাগ করেন। এতে বঙ্গবন্ধু বুঝলেন যে ওনার উদারতার অভাব আছে। তবুও ওনাকে শ্রদ্ধা করতেন ওনার ত্যাগের জন্য। কারণ যেকোনো কাজে ত্যাগই ঐ কাজকে সফল করতে পারে। একবার এক দুঃখজনক ব্যাপার ঘটল। বঙ্গবন্ধু মিয়া সাহেবের সাথে দেখা করতে 'পাকিস্তান টাইমস'র অফিসে যান। তখন তিনজন লোক বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের দুশমন বলে মারপিট করতে থাকে। অতঃপর বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারলেন যে এটা মুসলিম লীগের কাজ। কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধুকে পুলিশ খুঁজতে লাগল। বঙ্গবন্ধু গোপনে কিছুদিন বাড়িতে থেকে একদিন রেণুকে বললেন, "দেশ সেবায় নেমেছি, দয়া-মায়া করে লাভ কি? দেশকে ও দেশের মানুষকে ভালবাসলে ত্যাগতো করতেই হবে এবং সেই ত্যাগ চরম ত্যাগও হতে পারে।" ১৯৫১ সালে বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা জেলে আনা হয় এবং সাথে সাথে মহীউদ্দীনকেও আনা হয়। মহীউদ্দীন ছিলেন মুসলিম লীগে আর ঐ মুসলিম লীগই তাকে গ্রেফতার করেছে। বঙ্গবন্ধু ও আরও অনেকে মহীউদ্দীনের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে মহীউদ্দীন পরিবর্তিত হন। তাই বঙ্গবন্ধু শহীদ সাহেবকে অনুরোধ করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আন্দোলনে যেন মহীউদ্দীনের নামটাও নেন। ১৯৫১ সালের শেষের দিকে লিয়াকত আলিকে তার ষড়যন্ত্রের কবলে পড়েই মরতে হয়। তার মৃত্যুর পরে খাজা নাজিমুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী হন। অতঃপর ১৯৫২ সালে পূর্ব বাংলায় আসলে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার দাবী করেন। এতে বাঙালিরা ক্ষুব্ধ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু জেলে থেকেই ২১শে ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করার এবং সভা করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করার আহ্বান করেন। আর ১৬ই ফেব্রুয়ারী থেকে মহীউদ্দীনকে সাথে নিয়ে অনশন ধর্মঘট করার সিদ্ধান্ত নেন। এ অবস্থা দেখে পুলিশ বঙ্গবন্ধুকে ফরিদপুর জেলে স্থানান্তর করে দেয়। তবুও তারা অনশন করতে থাকেন। ২১শে ফেব্রুয়ারী ছাত্ররা রাষ্ট্রভাষার দাবীতে বিশাল আন্দোলন শুরু করে। অনেক ছাত্রজনতা পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। অন্যদিকে অনশন করে বঙ্গবন্ধু ও মহীউদ্দীনের অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আদেশ এল। এর পরদিন মহীউদ্দীনেরও এল। পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা প্ল্যান করে শিল্প কারখানা গড়ে তোলত। খাজা সাহেবের মন্ত্রীদের মধ্যে দুইটি ভাগ হয়—'বাঙালি দল' ও 'পাঞ্জাবি দল' নামে। ১৯৫৪ সালের মে মাসে যুক্তফ্রন্ট সরকার শপথ নেওয়ার সময় হঠাৎ করেই অবাঙালীরা বাঙালীদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এসব মূলত যুক্তফ্রন্ট সরকারকে ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।
Was this review helpful to you?
or
ভীষন সুন্দর একটি বই, বইটি পড়ে জাতির পিতার জীবনী জানতে পারবেন, তাঁর সংগ্রামী জীবন ও ত্যাগ এবং স্বাধীনতার পথের যুদ্ধ জানতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধু: নামটি বলতে বা লিখতেই কেমন গর্বে বুক ভরে। আমি এই বইটি পড়ে বেশকিছু পয়েন্ট বর্তমান যুগের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তুলনা করার চেষ্টা করেছি নিজে নিজে। একজন নেতা, একটি দেশের কল্যাণকামী। আসলে তার ত্যাগ অস্বীকার করার ক্ষমতা যে রাখে সে এ বাংলাদেশে থাকার উপযুক্ত নয়। পরিশেষে, একটা কথা; অনেকেই এ বইয়ের কঠিন সমালোচনা করে বানোয়াট বই ঘোষণা করতে চায়, আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে বলছি বইটি পড়ে একটিবারও সেরকম মনে হয় নাই আমার।
Was this review helpful to you?
or
১৫ আগস্ট বাঙ্গালি জাতির শোক দিবস। এই দিনটিতে কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস মানে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস। তার জীবন ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস জড়িত। এই মহান মানুষটি জীবনে যাই করেছেন তার সবই দেশের জন্য করেছেন। তার প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ছিল দেশের সার্থে। তার জন্ম না হলে আজ আমরা স্বাধীনতা পেতাম না।
Was this review helpful to you?
or
পড়তে পড়তে একটা সময় মনে হতে পারে শেখ মুজিব স্বয়ং আপনার সামনে বসে গল্প গুলো বলছেন; এতটাই সাবলীল আর জীবন্ত বইটা। প্রত্যেকের অন্তত একবার হলেও বইটা পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো
Was this review helpful to you?
or
আপার সবচেয়ে প্রিয় শপিং সাইট রকমারি।অনেক বিশ্বস্ত, সার্ভিস ভাল।তাই অনেক ভালবাসি। উত্তর উত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি।
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ রকমারি পছন্দের বই কেনার এমন চমৎকার প্লাটফর্ম তৈরী করে দেওয়ার জন্য অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লাম এবং প্রকৃত বঙ্গবন্ধুকে চিনলাম।
Was this review helpful to you?
or
ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
পড়তে পারেন,জানতে চাইলে।
Was this review helpful to you?
or
satisfied
Was this review helpful to you?
or
ভালোলাগার মত একটি বই
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুকে জানার জন্য এই বইটিই যথেষ্ট।। Thanks to Rokomari
Was this review helpful to you?
or
Good service
Was this review helpful to you?
or
magnificent book
Was this review helpful to you?
or
দারুণ একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
good one
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এক জলন্ত আগ্নেয়গিরি- মিয়াদ আহমেদ শুভ ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে নব্য নেতা হয়ে উঠার খণ্ডাংশ গল্পকথার উপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান "অসমাপ্ত আত্মজীবনী " রচনা করেন।এ আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থের প্রারম্ভে শৈশবের ডানপিটে, পরোপকারী ও বন্ধুদলের সর্দার হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। নেতৃত্ব গুণের প্রতিভা তার মধ্যে ছিল সহজাত । দেশ ও মানব প্রেমের প্রতি সাহস ও ত্যাগী মনোভাবের পরিস্ফুটন তার কৈশোরকালে আরম্ভ হয়েছিল। ১৯৩৮ সালে শেখ মুজিব প্রথমে শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সংস্পর্শে আসেন যা থেকে তার দেশনায়ক হয়ে উঠার পথযাত্রার সূচনা হয়। এ সময়ে তার জীবনে দুইটি বড় ঘটনা সংঘটিত হয় যার কারণে তার মধ্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতি দৃঢ় মনোবল জাগ্রত হয়। ফল স্বরূপ এ সময়ে জীবনে তাকে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করতে হয়। ১৯৪১ সালে মেট্রিক পরীক্ষা পাশ করে তিনি নিয়মিত কলকাতা ভ্রমণ ও সমসাময়িক মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে এ সময়ে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় যা তার রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে দুর্ভিক্ষপীড়িতদের সেবায় নিয়োজিত করে দেশের জনগণের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ তা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। "অসমাপ্ত আত্মজীবনী " তে গল্পকথকের বেশকিছু নিকটজনের কথা আমরা জানতে পারি ,বিশেষ করে তার বাবার কথা। তিনি যথাসাধ্য তার বাবার কথা মান্য করতেন। তার বাবার হতে প্রাপ্ত রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্ট হলে কখনো ব্যক্তিগত আক্রমণ না করার শিক্ষা লাভ তিনি আমৃত্যু মেনে চলে ছিলেন। লেখকের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে অপরিসীম ও অনস্বীকার্য ভূমিকা ছিল তার সহধর্মিণীর শেখ ফজিলাতুন্নেছা ওরফে তার প্রিয় রেনু। সূক্ষ্ম প্রতিভা সম্পন্ন জ্ঞানী , বুদ্ধিদীপ্ত, দায়িত্ববান ও ধৈর্যশীল হিসেবে তিনি বঙ্গবন্ধুর কারাবাস মিলানো এক ছন্নছাড়ার জীবনকে অনবদ্যভাবে সহায়ক শক্তি হিসেবে পরিচালিত করেছিলেন। লেখকের সর্বাত্মকভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ও " অসমাপ্ত আত্মজীবনী" লেখার পিছনে মূল প্রেরণা ও উৎসাহ প্রদানকারী ছিল এই মহীয়সী নারী । সমগ্র গ্রন্থটিতে বর্ণিত অসংখ্য ঘটনায় লেখকের সমস্ত চিন্তা চেতনার কেন্দ্রস্থল ছিল বাংলার সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা । বইটির ছোট ছোট ঘটনার মাঝেই প্রস্ফুটিত হয়েছে কিভাবে তিনি একেবারে শূন্য হতে ধীরে ধীরে একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৯২০-১৯৫৫ সালের অসমাপ্ত পথযাত্রা । নিঃসন্দেহে "অসমাপ্ত আত্মজীবনী " বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের ভিত রচনার মৌলিক দলিল এবং আমাদের তরুণ সমাজ ও ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের জন্য একটি অনুসরণীয় আদর্শ।
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির জীবন কাহিনী। আমি মনে করি প্রতেকটা বাঙালির বইটা পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
Nice book.
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
10 out of 9.99
Was this review helpful to you?
or
❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
অনেক ইতিহাস জানলাম বইটি থেকে। যার অনেক কিছু বর্তমান আমলেও লক্ষ্য করি। ওভারঅল এটি একটি ভালো হিস্টরিকাল বায়োগ্রাফিক বই মনে হলো আমার কাছে
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Good service
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন
Was this review helpful to you?
or
রোমাঞ্চকর, বিচিত্র!! খুউব ভাল লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
It is a very inspirational book. Must read ?
Was this review helpful to you?
or
আমি এই বইটি অর্ডার দিয়েছিলাম 5 দিনের ভিতরে বইটি পেয়েছি।।।।।।।।।৷।।।।।।।।।।। thanks রকমারি
Was this review helpful to you?
or
Great
Was this review helpful to you?
or
বইটি মানেই বাংলাদেশ
Was this review helpful to you?
or
Sundor
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী এই বইটার নাম শুনলেনই আমাদের জাতির পিতা এবং ঘটনাসমূহ মনে পড়ে যায়।তিনি যেভাবে এই দেশকে গড়েছেন তার ইতিহাস। আসলে বইটি পড়ে আমি মুগ্ধ। ধন্যবাদ রকমারিকে আমার চাওয়া পূরণ করার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি বই পড়া উচিত। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধুর তার জন্ম, বিয়ে, ছাত্র জীবন, পাকিস্তান সৃষ্টি, ভাষা আন্দোলন, ও ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের কথা লিখেছেন। মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলাসহ সেই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তা ও কাজ স্থান পেয়েছে বইটিতে।
Was this review helpful to you?
or
very nice book.
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
onek somoy niye porte hoy.tai 1 star kete nilam.tasara boi ti best
Was this review helpful to you?
or
খুবই সুন্দর একটি বই। সকলেরই একবার হলেও পড়ে দেখা উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
this is great
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ রকমারি
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ, অসম্ভব ভালো বই, পেজ, কভার, সবকিছু। এছাড়া ডেলিভারি সবমিলিয়ে অনেক ভালো ছিলো। আমি রকমারির একজন নিয়মিত গ্রাহক। তবে, বইয়ের দামগুলো আপনারা একটু বেশি রাখেন। তারপরও, সবমিলিয়ে আপনােদর সার্ভিসে আমি সন্তুষ্ট। আল্লাহ আপনাাদেট আরো সফলতা দান করুন।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি পড়ে বাংলাদেশের সৃষ্টির ইতিহাস ৯০%জানা যায়
Was this review helpful to you?
or
So good
Was this review helpful to you?
or
ভালো মানের বই
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি খুব ভালো লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
মন থেকে ভালবাসি আপনাকে বঙ্গবন্ধু... ❤
Was this review helpful to you?
or
ববঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের এই কাহিনী সত্যিই অসাধারণ! তিনি জীবনের বেশির ভাগ অংশই জেলে কাটিয়েছেন। তাঁর এই জীবনকাহিনী জানতে হলে পড়তেই হবে এই বইটি।
Was this review helpful to you?
or
এটা না পড়লে বঙ্গবন্ধুর অনেক কিছুই অজানা থেকে যেতো।
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুর অন্য বইগুলো ও সুলভ ভার্সনে বের করলে খুশি হবো। এই ভার্সনেই পড়তে ভালো লাগে।
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
it’s a very wonderful book...
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ অসমাপ্ত আত্মজীবনী - শেখ মুজিবুর রহমান খন্ড জীবন, খন্ড রাজনীতি, খন্ড দেশ ও খন্ড আত্মজীবনী (১৯২০-১৯৫৫) । ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির রুপায়নের অখন্ড দলিল এ অসমাপ্ত আত্মজীবনী। একজন মানুষের রাজনৈতিক জীবনের স্রোতের গভীরে যে একটি ভুখন্ডের রাজনীতির মূল সন্ধান আমরা পেতে পারি তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। তাই একে নিছক মুজিবের আত্মজীবনী বলার চেয়ে আমি অখন্ড বাংলা ও স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত রচনার দলিল বলার পক্ষপাতী। দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে ২০১২ সালের জুনে বের হওয়া এ দলিলের পেছনে রয়েছে ২৯ বছরের পেছনের গল্প। ১৯৬৭ সালে জেলে বসে মুজিবের লিখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে হাতে পায় বঙ্গকন্যা। সে সময়কার ইতিহাস বিশ্ববাসীকে জানানোর অনুভূতি বাস্তব রুপ পায় ২০১২ সালে। এ গ্রন্থে স্থান পায় জাতির পিতার শৈশব, কৌশর, শিক্ষাজীবন, নিজ গ্রাম আর দেশবাসীকে ভালবাসার উজ্জ্বল লুব্ধক। দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, দেশভাগ, পূ্র্ব বাংলার রাজনীতি, ভাষা আন্দোলন মূল উপজীব্য । শেষ কলেবরে রয়েছে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও রাজনীতি। ৭টি ভাষায় অনূদিত এ বইটির ভূমিকা লেখেন শেখের বেটি শেখ হাসিনা। কি অসাধরণ মিল বাপ বেটির! কারাবন্ধী অবস্থায় আত্মজীবনী লিখেন পিতা, আর সেই আত্মজীবনীর ভূমিকাও লিখেন হাসু জেল বসেই। বইটির শুরুতে আছে তাঁর আত্ম পরিচয় , বংশপরিচয় । বইটি লিখার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা রেণু ও তাঁর সহকর্মীরা যে তাকে উদ্দীপ্ত করেছিলো তা স্পষ্ট। শৈশবে শহীদ সাহেবের সাথে তার যে সখ্যতা সেটিও ফুঁটে উঠে বইটির আদ্যোপান্তে। মুজিব দেশের মানুষকে কতটুকুন ভালবাসতো তার ছাপ আমরা দেখতে পাই তাঁর শৈশবেই। মুষ্টির ভিক্ষার চাল উঠিয়ে সাহয্য করতেন গরীব শিক্ষার্থীদের। যারা ভালো খেলতো তাদের পড়াশুনার বেতন ফ্রি করে দিতেন। সময় গড়িয়ে যায়। সময়ের সাথে নিজেকে ঝলিয়ে নিতে ভুলতেন না তিনি। নিয়মিত পত্রিকা পড়তেন। ছিলেন রাজনৈতিক সচেতন। ভর্তি হলেন ইসলামিয়া কলেজে। বেকার হোস্টেল হয়ে উঠল তার রাজনীতির আতুড়ঘর। জড়িয়ে পড়লেন রাজনীতিতে। তবু আস্থা হাড়ায় নি মুজিব পিতা শেখ লুৎফর রহমান বরং দৃঢ় কন্ঠে বললেন,‘‘বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্থানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। ’’ বাবার সাথে দেখা হলেই চলে রাজনৈতিক কথোপকথন। এবার প্রেক্ষাপট দেশভাগ। লক্ষ্য বৃটিশদের শিকড় থেকে মুক্তি। সে সময় মুজিব পুরোপুরি সান্নিধ্যে চলে আসেন অবিভক্ত বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর । তবে বাবার বলা সিনসিয়ারিটি অব পার্পাস ও সিনসিয়ারিটি অব অনেস্টি প্রশ্নে নিজের নেতার সাথেও কোনদিন আপোষ করেন নি। বইটির ২৯ পৃষ্টায় একটি খন্ড বাক্যে তা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। ‘‘শহীদ সাহেবের সাথে আমার কথা কাটাঁকাটিঁ হয়। তিনি আনোয়ার সাহেবকে একটা পদ দিতে বলেন, আমি বললাম তা কখনোই হতে পারে না। সে প্রতিষ্ঠানে কোটারি করেছে, ভাল কর্মীদের জায়গা দেয় না । শহীদ সাহেব বললেন, ``who are you? You are nobody’’ মুজিব বলেন- ``If I am nobody, then why you have invited me? You have no right to insult me. I will prove that I am somebody. Thank you sir. I will never come to you again. পরে শহীদ সাহেব পরে তাকে ডেকে সব বুঝিয়ে বললেন এবং মুজিবের রাগ কমলো। সামনে মুসলিম লীগ নির্বাচন। শহীদ সাহেবের অন্যতাম অনুপ্রেরণা ও মন্ত্রক মুজিব। জয় পেলেন শহীদ সাহেব। এত ভলোবাসার ভিড়েও বাঙ্গলিদের কিছু খাপছাড়া বিষয় তাকে হতাশ করতো। তাঁর সহজ স্বীকারোক্তির মধ্যে সে বিষয়ে আমরা ধারণা পাই ‘‘আমাদের বাঙ্গালির মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হল, আমরা বাঙ্গালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। হয়তো মুজিব ১৯৭৫ সালে নিজের এ কথার মর্মার্থ বুঝেছিলেন আরো একবার। ইতোমধ্যে দেশভাগ হলো, হলো পার্টিশান ও দাঙ্গা। শুরু হলো পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বাংলা ভাষার প্রশ্নে পাক ভূমি নাপাকা হতে শুরু করলো। একদল লোভী বাঙ্গালী বাংলার বিরোধিতা করলো। শুধু ভাষার প্রশ্নেই স্পষ্ট হয়ে উঠলো দুই পাকিস্থানের ভেদাভেদ। জিন্নার উর্দূ প্রীতির প্রতিবাদ করলো বাংলার ছাত্র সমাজ। রোজ গার্ডেনে গড়ে উঠলো পূর্ব পাকিস্থান আওয়ামী মুসলিম লীগ , পরে সময়ের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী মুসলিম লীগ অবশেষে আওয়ামী লীগ। শুরু হলো পশ্চিম পাকিস্থানের ষড়যন্ত্রের দূর্বার প্রতিবাদ। লিয়াকত আলী খান ঘোষণা দিলেন, ‘ যো আওয়ামী লীগ করেগা, উসকো শের হাম কুচাল দেগা।’ মুজিব প্রতিবাদ করলো। তারপর জেল, সেল। ‘জেলের মধ্যে জেল তাকেই বলে সেল।’ জেলে বসেই ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত রুপরেখা প্রস্তুত করেন তিনি । দায়িত্ব দেন অলি আহাদকে। আন্দোলন চলেতে থাকে। জীবনের বেশির ভাগ সময় থাকতে হয়েছে তাঁকে জেলে তাই পরিবারের সান্নিধ্য পেয়েছে খুব কম। জেল থেকে বের হয়ে এবার বাড়িতে। বাবাকে দেখে খুশিতে আত্মহারা হাচু। নির্বাক তাকিয়ে শেখ কামাল । নিজের বাবাকে না দেখতে দেখতে ভুলে গেছেন যে তিনি তার বাবা। কামাল হাচিনাকে বলছে‘‘হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি।’ বাড়ি থেকে ফিরে চীন ভ্রমন। তারপর আওয়ামীলীগের ম্যানিফেস্টো প্রস্তুত। এবার আওয়ামীলীগ শক্তিশালী বিরোধী দল। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলো। দেশে শসনতন্ত্র আসলো না। অন্যদিকে মুজিব কুষ্টিয়াতে সভায়। মুজিবের সমর্থন না থাকার পরেও হক সাহেব ও ভাসানী যুক্তফ্রন্ট করে ফেললেন। যুক্তফ্রন্টকে নিয়ে শুরু হলো নিবাচনী প্রচারনা। টাকাকড়ি নেই তবে জনমত আছে মুজিবের পক্ষে। জনগন নিজের জমানো টাকা উল্টো বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিতে শুরু করলো। ফলাফল যুক্তফ্রন্টের নিরষ্কুশ বিজয়। এবার মন্ত্রীত্ব নিয়ে দানা বাধতে শুরু করেছে যুক্তফ্রন্টের নেতা হক সাহেব ও শহীদ সাহেবের নেতা কর্মীদের মাঝে। সুযোগ খুঁজতে থাকলো মুসলিম লীগাররা। বঙ্গবন্ধু পেলেন কো- অপারেটিভ ও এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট দফতর। মুজিব একদিকে শপথ নিলেন তো অন্যদিকে আদমজী জুট মিলে বাঙ্গালী অবাঙ্গালীদের মধ্যে চক্রান্তের দাঙ্গা শুরু হলো। মুজিব সরাসরি সেখানে উপস্থিত হলো, বক্তৃতা করে পরিস্থিতি শান্ত করলো। মূলত নতুন সরকারের অক্ষমতা প্রদর্শন ই ছিলো চক্রান্তকারীদের উদ্দেশ্য। কেন্দ্রীয় সরকার ৯২(ক) ধারা জারি করেছে। মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করা হয়েছে। হক সাহেবকে রাষ্ট্রদ্রোহী , মুজিবকে দাঙ্গাকারী বলে রটনা করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হলো। যুক্তফ্রন্টের নেতারা চুপ, অনেকে হাত মিলিয়েছে চক্রান্তকারীদের সাথে মন্ত্রীত্বের আশায় । মামলা চলে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত। অবশেষে রায় হলো। রায়ে বলা হলো যে ‘ আমাাকে(মুজিবকে) শান্তিভঙ্গকারী না বলে শান্তিরক্ষকই বলা যেতে
Was this review helpful to you?
or
দোষ গুণ মিলিয়ে মানুষ। বঙ্গবন্ধুর নিজের বয়ানে তার ডানপিটে স্বভাবের কথাগুলো জানা যাবে।
Was this review helpful to you?
or
khub e valo boi
Was this review helpful to you?
or
Inspiring. budget thakle hard cover version neye vlo hobe.
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Good book
Was this review helpful to you?
or
অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে ওনার লিখা বই থেকে
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী। এটি তার নিজের লেখা।বইটা পড়লে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নানা রকম কুকর্ম সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়।এছাড়া বঙ্গবন্ধুর সামনে এগিয়ে যাওয়া ও দেশকে স্বাধীন করার কথা বিস্তারিত জানা যাবে।
Was this review helpful to you?
or
বইটা না পরলে বাংলাদেশের অনেক কিসুই অজানা থেকে যাবে। এমনটা নয় যে আপনি শুধু মাত্র আওয়ামীলীগ করলেই বইটি পরবেন! আপনি যে দলের এই হোন না কেন বইটি আপনার চিন্তার পরিধি বৃদ্ধি করবে ইনশাল্লাহ্।
Was this review helpful to you?
or
আমার স্বপ্নের নায়ক।
Was this review helpful to you?
or
Super Historical book,onk sotto jinish uthe eshece..
Was this review helpful to you?
or
it's a good book
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।বঙ্গবন্ধুকে জানার এর চেয়ে ভালো কিছু আর নেই।
Was this review helpful to you?
or
boi tar quality and writing both are good.
Was this review helpful to you?
or
বাঙালী জাতীর মহান অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" এই বইটি না পড়লে হয়তো জ্ঞানের অনেক অধ্যায় আমাদেরই অসমাপ্ত থেকে যেতো। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করা একজন সাধারণ বালক থেকে অনন্য সাধারণ নেতা হওয়ার ইতিহাস জানা যায় বঙ্গবন্ধুর লেখা আত্মজীবনী এই বই থেকেই। কিভাব তিনি রাজনীতি তে এসেছেন কার ছত্রছায়ায় তার রাজনীতি হাতে খড়ি ও রাজনীতির ময়দানের শত বাঁধা বিপত্তি ত্যাগের অকাট্য দলিল এটি।
Was this review helpful to you?
or
great
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই। ধন্যবাদ জানাই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে, যাঁর কারনে আমরা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
Was this review helpful to you?
or
thats good?☺
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো বই।।। যতোবার পড়েছি ততোবার ভালো লেগেছে।।
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
রিয়েল লাইফের একজন সেরা নায়কের আত্মকাহিনী।
Was this review helpful to you?
or
একজন বাঙালির জীবন-বন্দনা।
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
#Sorone_mohanayok_book_review_2021 বইঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকঃ শেখ মুজিবুর রহমান ধরনঃ আত্মজীবনী প্রকাশনীঃ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড প্রকাশকঃ মহিউদ্দিন আহমেদ। ভাবতেও অবাক লাগে অমূল্য এই পাণ্ডুলিপিটি অবহেলায় পড়েছিল অনেকদিন। ২০০৪ সালে ভাগ্যক্রমে পাণ্ডুলিপিটি উদ্ধার হয়। এটি কোনো বই নয়, অনেকগুলো ইতিহাসের টুকরো; একটি ঐতিহাসিক দলিল। বঙ্গবন্ধু সাহিত্যিক ছিলেন না তবুও এই বইয়ের শব্দের গাঁথুনি, ভাষার বুনট-অনেক নামজাদা সাহিত্যিককেও লজ্জায় ফেলে দেবে। এখানে ঠাঁই পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ ও পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যের প্রত্যক্ষ বিবরণ। অনেক অজানা তথ্যও উঠে এসেছে লেখকের লেখনীতে। অনেক ঐতিহাসিক চরিত্র ও সালের কারণে আমি একটু হোঁচট খেয়েছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবনের বহুমাত্রিক ঘটনা আর সাবলীল লেখনী আমাকে চুম্বকের মতো বইটাতে আটকে রেখেছিল। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনের দুর্দশায় কখনো চোখ ভিজে উঠেছে, কখনো বা তাঁর দৃঢ় অবিচল মনোভাব মনে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। হাজার ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে পড়েও বঙ্গবন্ধুর অবিচলতায় মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। বার বার কারাবন্দী হওয়া সত্ত্বেও তিনি পিছু হটেননি। বইটার প্রতিটি পরতে জমা হয়ে আছে অস্থির সময় যেটাকে ঠেলে বাঙালিরা ধীরে ধীরে নোঙর ফেলেছে স্বাধীনতার বন্দরে। বঙ্গবন্ধুর সাবলীল শব্দচয়ন সেই না দেখা সময়টাকে চোখের সামনে এমনভাবে ভাসিয়ে দিয়েছে ঠিক যেন বায়োস্কোপ। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনা বইটিকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। পৃঃ ৩২৯ (পেপারব্যাক) প্রচ্ছদঃ সমর মজুমদার প্রথম প্রকাশঃ জুন, ২০১২ মূল্যঃ ২২০ টাকা (মুদ্রিত) রিভিউদাতাঃ শুভাশীষ বাপ্পী।
Was this review helpful to you?
or
এটা ফুল বই?? আপ্নাদের সাইটে আরেকটা দেখাচ্ছে কিন্তু দাম বেশি। তাহলে এটার দাম কম কেন??
Was this review helpful to you?
or
বইটি খুবই ভালো।
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একজন আদর্শ দেশনেতা ও রাজনীতিবিদই নন, তাঁর ছিলো উল্লেখযোগ্য সাহিত্য প্রতিভা। বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে যিনি সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার ফলে তাঁকে অভিহিত করা হয়ে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে। মহান এই ব্যক্তির জন্ম ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। তাঁর শৈশব কেটেছে গোপালগঞ্জেই, যার ফলে শিক্ষাজীবনের সূত্রপাতও সেখানে। ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। স্কুল-কলেজের লেখাপড়া শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন, কিন্তু ছাত্র রাজনীতি ও বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনের সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে যাওয়ায় তিনি আর পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি। পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার্থে তিনি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেন, যার ফলে সরকারের রোষানলে পড়েন। রাজনৈতিক কারণে তিনি দিনের পর দিন জেল খেটেছেন। এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর প্রারম্ভে তাঁকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে জেলে আটকে রাখা হয়। এরপর দেশ স্বাধীন হলে দেশে ফিরে এসে তিনি দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এতকিছুর পরও বঙ্গবন্ধু সাহিত্যকর্মে অংশ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বই ২টি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বই সমূহ মূলত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। 'কারাগারের রোজনামচা' ও 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' এই দুটি বই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বই সমগ্র এর অন্তর্ভুক্ত। এই দুটি বই-ই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগে। বঙ্গবন্ধু নিজে তেমন বই রচনা না করলেও তাঁকে নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য বই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই এর মধ্যে শেখ হাসিনার লেখা 'শেখ মুজিব আমার পিতা', পীর হাবিবুর রহমানের 'পোয়েট অব পলিটিক্স', ফারুক চৌধুরীর 'স্মরণে বঙ্গবন্ধু', এম আর আখতার মুকুলের 'মুজিবের রক্ত লাল', শেখ শাহাদাতের 'বিপ্লবী নেতা শেখ মুজিব' ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা কতিপয় সেনাসদস্যের হাতে নিজ বাসভবনে সপরিবারে নিহত হন।
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে লেখা তার জীবনী আমরা পড়তে পারব এটাতো কখনো কল্পনাতেই ছিল না। একজন সাধারণ মানুষ থেকে একসময় অসাধারণ নেতায় পরিনত হওয়া ব্যক্তিত্বের জীবনী পড়লে নিজেকে দেশ ও দেশমাতৃকার জন্যে বিলিয়ে দিতে মন চায়। নিজের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে এমন মানুষের জীবনী সবারই বারবার পড়া উচিত বলে মনে করি।
Was this review helpful to you?
or
যদি এ বই শেখ মুজিবুর রহমান নিজে লিখে থাকেন তবে তার আদর্শকে বোঝার জন্য বইটা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া তার সাপোর্টার আর উনার মধ্যে পার্থক্যটা স্পষ্ট বোঝ যাবে।যে বা যারা ছাত্রলীগ এট রাজনীতি করতে চায় তাদের প্রথমে এ বই পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
বাঙালি জাতির গর্ব, One Man Army জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের - অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রতিটি মানুষের ১টি বার হলেও পড়া উচিৎ। যে মানুষটি র অবদান এবং যার নেতৃত্ব ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো যে ছোট বড় বৃদ্ধ যুবক সকলের জন্য এই বইটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করবে। একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের বইটি পড়া উচিৎ। কেননা যে মানুষটির কল্যাণে আজ বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ তাকে যদি না জানি তবে আমরা অনেক কিছু মিস করব। ধন্যবাদ
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন যেমন জানা দরকার তেমনি তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানতে হবে। আর এটি জানতে চাইলে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি অন্যতম সেরা একটি বই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানতেই আমি বইটি ক্রয় করি রকমারি থেকে । অনেক ভালো লেগেছে ।
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো ছিল
Was this review helpful to you?
or
দারুণ একটি বই.. সবাইকে বইটি পড়ার অনুরোধ রইলো।।
Was this review helpful to you?
or
স্কুল জীবন থেকেই মুজিবের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশ ঘটে। তিনি যখন গোপালগঞ্জ মিশনারী স্কুলের ছাত্র সে সময় একবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক ঐ স্কুল পরিদর্শনে আসেন (১৯৩৯)। শোনা যায়, ঐ অঞ্চলের অনুন্নত অবস্থার প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তরুণ মুজিব বিক্ষোভ সংগঠিত করেন। ম্যাট্রিক পাশের পর মুজিব কলকাতায় গিয়ে ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি আই.এ ও বি.এ পাশ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একজন সক্রিয় কর্মী এবং ১৯৪৩ সাল থেকে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এইচ. এস সোহরাওয়ার্দীর একজন একনিষ্ঠ অনুসারী। ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগ শেখ মুজিবকে ফরিদপুর জেলায় দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্ব অপর্ণ করে।
Was this review helpful to you?
or
কিছুদিন আগে রকমারিতে অর্ডার করে একটি কপি পেলাম। সাথে আমার বন্ধুর জন্যেও পরে আরেকটি কপি অর্ডার করলাম। কথা হচ্ছে আপনাকে বইটি পড়তেই হবে। পড়া শেষে নিজের কাছে একটি কপি রাখতে হবেই।
Was this review helpful to you?
or
দারুণ একটা বই
Was this review helpful to you?
or
বইটি বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক বই। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট খুন হওয়ার কারনে বইটি শেষ করতে পারেননি। ব্রিটিশ ভারত পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অনেক তথ্য বইটিতে পাওয়া যায়। স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ছোটোখাটো ঘটনার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর নিজের অভিজ্ঞতা বইটির মধ্যে বর্ণিত আছে
Was this review helpful to you?
or
এই বই পড়লে জানা যাবে, বঙ্গবন্ধু কী ভাবে রাজনীতি করছে। তিনি কীভাবে পাকিস্থান সৃষ্টির জন্য অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশকে পাকিস্থানিদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আজীবন চেষ্টা করেন।
Was this review helpful to you?
or
আমি নিজে এখনো পুরো বইটি পড়ে শেষ করিনি কিন্তু যতটুকুন পড়েছি তাতে কেবল অবাক হয়েছি আর আবেগে আপ্লুত হয়েছি। বইটা পড়তে গিয়ে ছোটবেলার শুনা কথা মনে পড়ছিলো। শুনতাম রাজনীতিবিদরা নাকি বিবাগী হয়, ঘর-সংসার তাদের জন্য না; দেশ-মাটি-মানুষের কথা ভেবেই তাঁরা জীবন পার করে দেন। আর যদিও বা সংসার পাতেন কিন্তু ঘরের প্রতি তাঁদের কোন মনযোগই থাকে না। এই বইটা পড়তে পড়তে আমারও তাই মনে হয়েছে। আর বইটা পড়ে এখনকার সময়ে দেখা রাজনীতিবিদদের চেহারা মনে করলে কেবল তাঁদের প্রতি করুনাই হয়! তাই ভাবি, ইতিহাস তাঁকেই কোলে তুলে নেয়, যে ইতিহাস সৃষ্টি করে। আরাম কেদারায় বসে কি আর ইতিহাসের নায়ক হওয়া যায়?
Was this review helpful to you?
or
দৃপ্তপায়ে হেঁটে রেসকোর্স ময়দানের মঞ্চেে উঠলেন কবি। সুবিশাল জনসমাবেশ অধীর আকাঙ্খায় বসিয়া। কবে সেই বজ্রকন্ঠ গর্জে উঠিবে। যেই কন্ঠ তাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়। তিনিই সেই কবি যিনি সামনে থাকলে সকলেই সুরক্ষিত মনে করে। কবি নয় তিনি মহাকবি, বাংলাকে স্বাধীন করেছে যার মুখনিসৃত বাণী। রাজনীতির মহাকবি তিনি, যার কারণে বাংলা পেয়েছে মুক্তি। হাজার বছরেে একবার জম্নে তাহার মতো বীর। তার আত্মজীবনী আমাদের সংগ্রামী হতে সাহায্য করবে।
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো একটি বই, সকলের এই বইটি পড়া দরকার বলে আমি মনে করি। জানার অনেক কিছু রয়েছে এই বই থেকে। আপনি যদি ভালো কিছু বই পরতে চান তাহলে এই বইটি অবশ্যই পড়া উচিৎবলে আমি মনে করি। রকমারি আমাদের জন্যে আর্শিরবাদ কারন আমরা যারা সারাদিন ব্যাস্ততার মধ্যদিয়ে কাটাই, কারন সারাদিন কর্ম করে অনেক সময় ইচ্ছে হলেও বই কেনার জন্যে বইয়ের দোকানে যেতে সময় পাইনা। ধন্যবাদ রকমারিকে অল্পসময়ের মধ্যে ডেলিভারি করার জন্যে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি খুব ভালো। বইটি পড়ে খূব আনন্দিত হয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ পুস্তক!!
Was this review helpful to you?
or
ধর্ম, বর্ণ, দল, মত- এসবের উর্ধ্বে পৃথিবীতে যেসব মানুষেরা তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্যতম। তাঁর বায়োগ্রাফি বা আত্মজীবনী শুধু বই হিসেবে নয় ইতিহাসের জীবন্ত ভাগ হয়ে গেছে। একজন ভালো নেতার বিভিন্ন গুণ থাকা আবশ্যক। বঙ্গবন্ধুর নিপুণভাবে লেখা আত্মজীবনী পড়লে বুঝাই যাবে না উনি সাময়িক লেখক। অসাধারণ মানুষটির সাধারণ জীবন এরূপ সাবলীলতায় পূর্ণ যা সহজেই ভিজুয়ালাইজ করা যায়। তরূণ-তরূণীদের জন্য অবশ্যিক পাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী অসাধারণ বই,এর লেখা অনেক সুন্দর করে দেয়া আছে। এ বইটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে লেখা। জাতর জনক বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবুর রহমান তার ডায়েরিতে অনেক লেখা লেখেন তার মধ্য থেকে কিছু কিছু লেখা নিয়ে এ বইটি সৃষ্টি করা হয়। তাই তো আমরা তাকে নিয়ে বলি যে, যদি রাত পোহালে শুনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই।
Was this review helpful to you?
or
বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
দেশের জন্য রাজনীতি করা এক রাজনীতিবিদ এর জন্য এই বইটি শিক্ষামূলক একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে অনেক ইতিহাস জানা যায়।
Was this review helpful to you?
or
শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের গর্ব এবং অহংকার ।আর তার লেখা তার নিজের আত্মজীবনী পড়লে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস অনেকটা উপলব্ধি করতে পারবেন ।আমার জানামতে জীবনীটিতে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে যেখানে জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, গভীর উপলব্ধি ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ যা আপসহীন ও নির্ভীক চিত্তে সহজ ও সরল ভাষায়।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটা বই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই। প্রতিটি কথা অনেক সুন্দর ছিল এই বইয়ের।
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী (সুলভ) আর অসমাপ্ত আত্মজীবনী (স্ট্যান্ডার্ড) এর মধ্যে পার্থক্য কি?
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভাল একটি বই....এই বইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
কোন কিছু অর্জন করতে হলে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার তা হল সাধনা, ঐ কাজের প্রতি নিষ্ঠা। অসমাপ্ত আত্মজীবনী এরকমই একটি বই যার লেখক নিজের একাগ্রতা আর নিষ্ঠার দ্বারা ছোট্ট এই ভূখন্ডকে ধীরে ধীরে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিয়েছেন। সাধনার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে উনি গৃহ ছেড়েছেন, প্রিয়জনের ভালবাসা ছেড়েছেন, সন্তানদের আদর-আহ্লাদ দেখাতে পারেন নি আর জেল-জুলুম তো আছেই। সত্যিই বইটি অসাধারন। আমি যখন বইটি পড়ে শেষ করি তখন সত্যিই এ নেতার প্রতি শ্রদ্ধায় আমার হৃদয় ভরে ওঠে।
Was this review helpful to you?
or
বজ্রকণ্ঠের নেতা, সাদা পাঞ্জাবি, কালো মুজিব কোট, কালো চশমা, ব্যাক ব্রাশ করা চুল আর মারাত্মক পৌরুষওয়ালা গোফের এই মানুষটির সে আশ্চর্য সাহিত্য বোধ আছে, উনিও যে আমাদের মতো করেই দেখতেন, ভালোবাসতেন, উনি কতোটা রোমান্টিক ছিলেন, অন্যায়ের বিপক্ষে কীভাবে লড়েছেন সব এক নতুন দৃষ্টি নিয়ে আপনাদের চোখের সামনে ভাসবে বইটি পড়লে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনার উপর ব্যক্তিগত মতামত এই বইটিকে বিশেষ বৈশিষ্ট মন্ডিত করেছে।
Was this review helpful to you?
or
এমন এমন কিছু তথ্য জানলাম যা এতো দিন অজানাই ছিলো। সুন্দর লিখনী। অভিভূত হলাম। অনুপ্রাণিত হলাম। এতো টুকুই বলতে চাই অসাধারণ ব্যাক্তির অসাধারণ লেখা। অসাধারণ সকল অনুভূতি। এই বিষয় গুলি আসলেই আমাকে অনেক বেশি ফ্যাসিনেট করেছে। চোখের সামনে মনে হলো দেখলাম সব কিছু। ভালোই লাগছে। খুবই সুন্দর।
Was this review helpful to you?
or
Vlo boi..
Was this review helpful to you?
or
শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মহানায়ক। তার মৃত্যুর প্রায় ৩৭ বছর পরে অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। বইটিতে শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম, ছেলেবেলা, লেখাপড়া, রাজনীতিতে প্রবেশ থেকে শুরু করে তার ব্যাক্তিগত অনেক ঘটনা আছে। দেশবিভাগের সময়কার ঘটনা, আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা, ভাষা আন্দোলনের ঘটনা, যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিচারণা আছে। বইটিতে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত বর্ণনা আছে। অত্যন্ত সুপাঠ্য বইটি সময় পেলে পড়ে ফেলা যায়।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্বাীনতায় অসামান্য অবদান রয়েছে তার
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি তিনি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠস্বর। সবসময় ভাবতেন মা, মাটি, মানুষের কথা। আর এই কথা বলতে গিয়ে তাঁকে পেতে হয় পদে পদে বাধা। জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন অন্ধকার কারাগারে। তাঁর রাজনৈতিক উত্থান, অর্থাৎ '৫৪ এর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে জয়লাভ পরবর্তী সময়টা থেকে '৬৬ এর ছয় দফা পর্যন্ত যেভাবে কেটেছে, তা তাঁর এই আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে। ১৯৫৫-১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির স্বীকারোক্তি পাবেন এই মহান নেতার।
Was this review helpful to you?
or
পড়তে বসে থেমে থেমে বইটি পড়েছি এবং উনাকে ও সেই সময়ের নেতাদের সংগ্রাম গুলো অনুভব করার চেষ্টা করেছি। উনাদের ত্যাগ গুলো আসলেই অকল্পনীয়। বিয়ের পর যুবক বয়সে স্ত্রীকে ছেড়ে দূরে থাকা, নিজের সন্তানদের ফেলে দূরে থাকা, শুধু মুসলমানদের অধিকারের জন্য, মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা ভূখন্ডের জন্য। উনারা অগ্নিঝরা পথে হেঁটে আমাদের মসৃণ পথে হাটার ব্যাবস্থা করে গিয়েছেন। মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি উনি যেন জান্নাতে থাকেন।
Was this review helpful to you?
or
awesome
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের ইতিহাস জানার অপরিহার্য বই
Was this review helpful to you?
or
খন্ড জীবন, খন্ড রাজনীতি, খন্ড দেশ ও খন্ড আত্মজীবনী (১৯২০-১৯৫৫) । ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির রুপায়নের অখন্ড দলিল এ অসমাপ্ত আত্মজীবনী। একজন মানুষের রাজনৈতিক জীবনের স্রোতের গভীরে যে একটি ভুখন্ডের রাজনীতির মূল সন্ধান আমরা পেতে পারি তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। তাই একে নিছক মুজিবের আত্মজীবনী বলার চেয়ে আমি অখন্ড বাংলা ও স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত রচনার দলিল বলার পক্ষপাতী। দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে ২০১২ সালের জুনে বের হওয়া এ দলিলের পেছনে রয়েছে ২৯ বছরের পেছনের গল্প। ১৯৬৭ সালে জেলে বসে মুজিবের লিখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে হাতে পায় বঙ্গকন্যা। সে সময়কার ইতিহাস বিশ্ববাসীকে জানানোর অনুভূতি বাস্তব রুপ পায় ২০১২ সালে। এ গ্রন্থে স্থান পায় জাতির পিতার শৈশব, কৌশর, শিক্ষাজীবন, নিজ গ্রাম আর দেশবাসীকে ভালবাসার উজ্জ্বল লুব্ধক। দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, দেশভাগ, পূ্র্ব বাংলার রাজনীতি, ভাষা আন্দোলন মূল উপজীব্য । শেষ কলেবরে রয়েছে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও রাজনীতি। ৭টি ভাষায় অনূদিত এ বইটির ভূমিকা লেখেন শেখের বেটি শেখ হাসিনা। কি অসাধরণ মিল বাপ বেটির! কারাবন্ধী অবস্থায় আত্মজীবনী লিখেন পিতা, আর সেই আত্মজীবনীর ভূমিকাও লিখেন হাসু জেল বসেই। বইটির শুরুতে আছে তাঁর আত্ম পরিচয় , বংশপরিচয় । বইটি লিখার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা রেণু ও তাঁর সহকর্মীরা যে তাকে উদ্দীপ্ত করেছিলো তা স্পষ্ট। শৈশবে শহীদ সাহেবের সাথে তার যে সখ্যতা সেটিও ফুঁটে উঠে বইটির আদ্যোপান্তে। মুজিব দেশের মানুষকে কতটুকুন ভালবাসতো তার ছাপ আমরা দেখতে পাই তাঁর শৈশবেই। মুষ্টির ভিক্ষার চাল উঠিয়ে সাহয্য করতেন গরীব শিক্ষার্থীদের। যারা ভালো খেলতো তাদের পড়াশুনার বেতন ফ্রি করে দিতেন। সময় গড়িয়ে যায়। সময়ের সাথে নিজেকে ঝলিয়ে নিতে ভুলতেন না তিনি। নিয়মিত পত্রিকা পড়তেন। ছিলেন রাজনৈতিক সচেতন। ভর্তি হলেন ইসলামিয়া কলেজে। বেকার হোস্টেল হয়ে উঠল তার রাজনীতির আতুড়ঘর। জড়িয়ে পড়লেন রাজনীতিতে। তবু আস্থা হাড়ায় নি মুজিব পিতা শেখ লুৎফর রহমান বরং দৃঢ় কন্ঠে বললেন,‘‘বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্থানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। ’’ বাবার সাথে দেখা হলেই চলে রাজনৈতিক কথোপকথন। এবার প্রেক্ষাপট দেশভাগ। লক্ষ্য বৃটিশদের শিকড় থেকে মুক্তি। সে সময় মুজিব পুরোপুরি সান্নিধ্যে চলে আসেন অবিভক্ত বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর । তবে বাবার বলা সিনসিয়ারিটি অব পার্পাস ও সিনসিয়ারিটি অব অনেস্টি প্রশ্নে নিজের নেতার সাথেও কোনদিন আপোষ করেন নি। বইটির ২৯ পৃষ্টায় একটি খন্ড বাক্যে তা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। ‘‘শহীদ সাহেবের সাথে আমার কথা কাটাঁকাটিঁ হয়। তিনি আনোয়ার সাহেবকে একটা পদ দিতে বলেন, আমি বললাম তা কখনোই হতে পারে না। সে প্রতিষ্ঠানে কোটারি করেছে, ভাল কর্মীদের জায়গা দেয় না । শহীদ সাহেব বললেন, ``who are you? You are nobody’’ মুজিব বলেন- ``If I am nobody, then why you have invited me? You have no right to insult me. I will prove that I am somebody. Thank you sir. I will never come to you again. পরে শহীদ সাহেব পরে তাকে ডেকে সব বুঝিয়ে বললেন এবং মুজিবের রাগ কমলো। সামনে মুসলিম লীগ নির্বাচন। শহীদ সাহেবের অন্যতাম অনুপ্রেরণা ও মন্ত্রক মুজিব। জয় পেলেন শহীদ সাহেব। এত ভলোবাসার ভিড়েও বাঙ্গলিদের কিছু খাপছাড়া বিষয় তাকে হতাশ করতো। তাঁর সহজ স্বীকারোক্তির মধ্যে সে বিষয়ে আমরা ধারণা পাই ‘‘আমাদের বাঙ্গালির মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হল, আমরা বাঙ্গালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। হয়তো মুজিব ১৯৭৫ সালে নিজের এ কথার মর্মার্থ বুঝেছিলেন আরো একবার।
Was this review helpful to you?
or
One of the best book i have ever read about the great man Sheikh Mujibar Rahaman.
Was this review helpful to you?
or
আমি একজন নিরোপেক্ষ ব্যাক্তি মানে সোজাসাপটা অন্যায়কে অন্যায় আর ন্যায়কে ন্যায় বুঝি । বলতেও কোন দিধা করি না। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নিজের লেখা “অসমাপ্ত আত্মজীবনী ” পড়েছি । পান্ডুলিপি যদি সত্যি নিজের লেখা হয়ে থাকে তাহলে বলবো তিনি একজন ত্যাগি মহামানব ছিলেন। ইসলাম ও দেশের জন্য অনেক ঘাম ঝরিয়েছেন। আমি মনে করি প্রত্যেকের বইটি পড়া উচিত ।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পডে অনেক কিছু জানলাম,,,
Was this review helpful to you?
or
Inc I think it's most probably best book in Bangla written by bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman we know that he is our father of nation from this book we can know about him his lifestyle is Bible graphy in this book I can find his many formation of life is a just awesome book I have ever read any politician you can read this book and great book
Was this review helpful to you?
or
He is the father of nation.Everybody loves him
Was this review helpful to you?
or
আমি বইটি যতবার পড়ি ততবারই ভাবি যে একজন জাতির পিতার জিবনী তো এমনই হবার কথা। দীর্ঘদিন পরে হলে জাতি একটি সঠিক ইতিহাস পেয়েছে। এই পান্ডুলিপি যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী না পেতেন আর এই বই যদি না প্রকাশিত হতো তাহলে জাতি অনেক মূল্যবান কিছু থেকে বঞ্চিত হত। বইটি প্রত্যেক রাজনৈতিক ব্যক্তির আদর্শ হতে পারে। এক কথাই অসাধরণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
This book is really great.We can learn about our father of nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman by reading this book.We also get to know about the writing skill of Bangabandhu Sheikh Mujib.In a word,fabulous and fantastic work.
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী : একজন হৃদয়বান বাঙালীর হৃদয়ের আঁকিবুকি মাসুম বিল্লাহ আমি মুখে যা বলি, তাই বিশ্বাস করি। আমার পেটে আর মুখে এক কথা। আমি কথা চাবাই না, যা বিশ্বাস করি বলি। সেজন্য বিপদেও পড়তে হয়, এটা আমার স্বভাবের দোষও বলতে পারেন, গুণও বলতে পারেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী (২১৮ পৃষ্ঠা) থেকে উপরের সংলাপটি কোট করে দিলাম। বিশেষ কারণটি এখানে অব্যক্তই থাক; বরং আমার প্রিয় একটি সংলাপ’ বলে চালিয়ে দেয়া যেতে পারে। পড়ছি: বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী। অনেককাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ইমার্চের ভাষণ শুনে যেমনটি শিহরিত হয়েছিলাম, তেমনি বইটি পড়ার সময়ও বুকের ভেতর এক ধরনের শিহরন অনুভব করেছি। চোখের পাতায় আলগোছে মহান মানুষটি ভেসে উঠেছে। স্পর্শ পেয়েছি দরাজ কন্ঠের অধিকারী পাশে বসে আমার সাথে কথা বলে যাচ্ছেন। যেমন করে মাঠের রাখাল বালক আর কৃষকের মধ্যে ভাব বিনিময় হয়। এসময় অনুভব করে নিয়েছিÑ একজন হৃদয়বান মানুষের অন্তর আত্মার কথকতা। সাধারণত বিখ্যাত লেখক বা বিখ্যাত কোনো বইয়ের নাম জেনেই পড়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠি, কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ’র ক্ষেত্রে তেমনটি মাথায় ছিল না। যখন বইটি পড়া শুরু করলাম, তখনো মাথায় ছিল যে, আমি বঙ্গবন্ধুর নিজের বলা কথা জানতেই বইটি পড়ছি। কিন্তু কিছুসময় পড়েই আমি স্তম্ভিতই হয়ে গেলাম বঙ্গবন্ধুর লিখনি ধার দেখে। মাঠে ময়দানে ছুটে বেড়ানো মানুষটির কলম-কালির মহিমা পড়ে। একজন রাহনৈতিক নেতার লিখিত ভাষা এতো সাবলীল, গতিময়! যেন লিখিত কোনো বই পড়ছি না, বইটির লেখক নিজে আমার সাথে কথা বলছেন।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের ইতিহাসে যদি বলা হয় সর্বাধিক জনপ্রিয় নেতাদের তালিকা করতে, সবার আগে যেই নামটি পাওয়া যাবে তিনি হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । অসাধারণ ব্যাক্তিত্ত্বের অধিকারী এই মানুষ টি তার জীবনের কিছু মুহুর্ত কলমের কালিতে লিখে রে গিয়েছেন, যদিও তা সমাপ্ত করা হয়ে উঠেনি। বুকে যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করতে হয়, আমার মতে অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়া হবে তার জন্য সর্বাধিক সহায়ক। বেচে থাকুক বঙ্গবন্ধু যতদিন বেচে থাকবে বাংলাদেশ।
Was this review helpful to you?
or
এমন একজন নেতা যদি আজকে বাংলাদেশে থাকতো হয়তো দেশের চেহারাই পরিবর্তন হয়ে যেত। অনেক মিস করি তোমাকে হে রাজনীতির কবি।
Was this review helpful to you?
or
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন মহান নেতা ছিলেন, তেমনি ছিলেন সু-লেখক। আমাদের সৌভাগ্য যে অনেকদিন পরে হলেও তাঁর জেল-জীবনে লেখা এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্যই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা নয় এ বই। কিন্তু যুদ্ধ সূচনার আগের সময়ের কথা এখানে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশের তৎকালীন পরিবেশ, পরিস্থিতি, নেতাদের মনস্তত্ত্ব ব্যাখ্যা এবং বিশ্লেষণ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সাথে সাথে দেশের ইতিহাস জানতে এ বইটি অবশ্যপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে অসমাপ্ত আত্মজীবনী এর চেয়ে ভালো বই বিরল। কেননা বইটি বঙ্গবন্ধুর নিজের লেখা। ৩২৯ পৃষ্ঠার এই ছোট এই বইয়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নিজস্ব, রাজনৈতিক, কারারুদ্ধ, সৎ, সংগ্রামী, দূরদর্শী সকল দিকের পরিচয় রয়েছে। তার সাথে অন্যান্য সকল বঙ্গবন্ধুর জাতীয় সহযোদ্ধাদের পরিচয়ও পাওয়া যাবে। তাই পড়ে ফেল বইটি।
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী না পড়লে মনে হয় স্বাধীনতা পূর্ব অনেক ইতিহাস জানা হতো না। ১৯৪৭ এর দেশভাগ, অাওয়ামিলীগ গঠন ও ভাষা অান্দোলনে শেখ মুজিবের অবদান অনেক কিছুই জানা যাবে। অখন্ড পাকিস্তানের জন্য শেখ মুজিবের দিল্লী যাত্রা, জিন্নাহর ডাকে এগিয়ে যাওয়া এ জিনিসগুলো অজানা ছিলো। বইটি এক কথায় অসাধার।
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী রিভিউঃ আমার সবসময় আত্মজীবনী পড়তে ভালো লাগে। আবার সেই আত্মজীবনী যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর লেখা হয় তাহলে তো কথাই নেই। একজন মানুষের জীবনে যে কত ধরনের চরাই-উতরাই আসতে পারে তা এই বইটি না পড়লে বুঝতাম না। তাছাড়া তাঁর দেশপ্রেমের কথা নাই বা বলি তা সবাই জানে। রি বইটিতে আমার সবথেকে প্রিয় অংশ হলো বঙ্গবন্ধুকে যখন ফরিদপুর জেলে স্থানান্তরিত করা হয় মহি (মহিউদ্দিন) এর সাথে তখনকার সময়কাল।
Was this review helpful to you?
or
বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে। আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসার কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন। একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে ।
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী - শেখ মুজিবুর রহমান খন্ড জীবন, খন্ড রাজনীতি, খন্ড দেশ ও খন্ড আত্মজীবনী (১৯২০-১৯৫৫) । ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির রুপায়নের অখন্ড দলিল এ অসমাপ্ত আত্মজীবনী। একজন মানুষের রাজনৈতিক জীবনের স্রোতের গভীরে যে একটি ভুখন্ডের রাজনীতির মূল সন্ধান আমরা পেতে পারি তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। তাই একে নিছক মুজিবের আত্মজীবনী বলার চেয়ে আমি অখন্ড বাংলা ও স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত রচনার দলিল বলার পক্ষপাতী। দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে ২০১২ সালের জুনে বের হওয়া এ দলিলের পেছনে রয়েছে ২৯ বছরের পেছনের গল্প। ১৯৬৭ সালে জেলে বসে মুজিবের লিখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে হাতে পায় বঙ্গকন্যা। সে সময়কার ইতিহাস বিশ্ববাসীকে জানানোর অনুভূতি বাস্তব রুপ পায় ২০১২ সালে। এ গ্রন্থে স্থান পায় জাতির পিতার শৈশব, কৌশর, শিক্ষাজীবন, নিজ গ্রাম আর দেশবাসীকে ভালবাসার উজ্জ্বল লুব্ধক। দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, দেশভাগ, পূ্র্ব বাংলার রাজনীতি, ভাষা আন্দোলন মূল উপজীব্য । শেষ কলেবরে রয়েছে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও রাজনীতি। ৭টি ভাষায় অনূদিত এ বইটির ভূমিকা লেখেন শেখের বেটি শেখ হাসিনা। কি অসাধরণ মিল বাপ বেটির! কারাবন্ধী অবস্থায় আত্মজীবনী লিখেন পিতা, আর সেই আত্মজীবনীর ভূমিকাও লিখেন হাসু জেল বসেই। বইটির শুরুতে আছে তাঁর আত্ম পরিচয় , বংশপরিচয় । বইটি লিখার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা রেণু ও তাঁর সহকর্মীরা যে তাকে উদ্দীপ্ত করেছিলো তা স্পষ্ট। শৈশবে শহীদ সাহেবের সাথে তার যে সখ্যতা সেটিও ফুঁটে উঠে বইটির আদ্যোপান্তে। মুজিব দেশের মানুষকে কতটুকুন ভালবাসতো তার ছাপ আমরা দেখতে পাই তাঁর শৈশবেই। মুষ্টির ভিক্ষার চাল উঠিয়ে সাহয্য করতেন গরীব শিক্ষার্থীদের। যারা ভালো খেলতো তাদের পড়াশুনার বেতন ফ্রি করে দিতেন। সময় গড়িয়ে যায়। সময়ের সাথে নিজেকে ঝলিয়ে নিতে ভুলতেন না তিনি। নিয়মিত পত্রিকা পড়তেন। ছিলেন রাজনৈতিক সচেতন। ভর্তি হলেন ইসলামিয়া কলেজে। বেকার হোস্টেল হয়ে উঠল তার রাজনীতির আতুড়ঘর। জড়িয়ে পড়লেন রাজনীতিতে। তবু আস্থা হাড়ায় নি মুজিব পিতা শেখ লুৎফর রহমান বরং দৃঢ় কন্ঠে বললেন,‘‘বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্থানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। ’’ বাবার সাথে দেখা হলেই চলে রাজনৈতিক কথোপকথন। এবার প্রেক্ষাপট দেশভাগ। লক্ষ্য বৃটিশদের শিকড় থেকে মুক্তি। সে সময় মুজিব পুরোপুরি সান্নিধ্যে চলে আসেন অবিভক্ত বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর । তবে বাবার বলা সিনসিয়ারিটি অব পার্পাস ও সিনসিয়ারিটি অব অনেস্টি প্রশ্নে নিজের নেতার সাথেও কোনদিন আপোষ করেন নি। বইটির ২৯ পৃষ্টায় একটি খন্ড বাক্যে তা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। ‘‘শহীদ সাহেবের সাথে আমার কথা কাটাঁকাটিঁ হয়। তিনি আনোয়ার সাহেবকে একটা পদ দিতে বলেন, আমি বললাম তা কখনোই হতে পারে না। সে প্রতিষ্ঠানে কোটারি করেছে, ভাল কর্মীদের জায়গা দেয় না । শহীদ সাহেব বললেন, ``who are you? You are nobody’’ মুজিব বলেন- ``If I am nobody, then why you have invited me? You have no right to insult me. I will prove that I am somebody. Thank you sir. I will never come to you again. পরে শহীদ সাহেব পরে তাকে ডেকে সব বুঝিয়ে বললেন এবং মুজিবের রাগ কমলো। সামনে মুসলিম লীগ নির্বাচন। শহীদ সাহেবের অন্যতাম অনুপ্রেরণা ও মন্ত্রক মুজিব। জয় পেলেন শহীদ সাহেব। এত ভলোবাসার ভিড়েও বাঙ্গলিদের কিছু খাপছাড়া বিষয় তাকে হতাশ করতো। তাঁর সহজ স্বীকারোক্তির মধ্যে সে বিষয়ে আমরা ধারণা পাই ‘‘আমাদের বাঙ্গালির মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হল, আমরা বাঙ্গালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। হয়তো মুজিব ১৯৭৫ সালে নিজের এ কথার মর্মার্থ বুঝেছিলেন আরো একবার। ইতোমধ্যে দেশভাগ হলো, হলো পার্টিশান ও দাঙ্গা। শুরু হলো পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বাংলা ভাষার প্রশ্নে পাক ভূমি নাপাকা হতে শুরু করলো। একদল লোভী বাঙ্গালী বাংলার বিরোধিতা করলো। শুধু ভাষার প্রশ্নেই স্পষ্ট হয়ে উঠলো দুই পাকিস্থানের ভেদাভেদ। জিন্নার উর্দূ প্রীতির প্রতিবাদ করলো বাংলার ছাত্র সমাজ। রোজ গার্ডেনে গড়ে উঠলো পূর্ব পাকিস্থান আওয়ামী মুসলিম লীগ , পরে সময়ের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী মুসলিম লীগ অবশেষে আওয়ামী লীগ। শুরু হলো পশ্চিম পাকিস্থানের ষড়যন্ত্রের দূর্বার প্রতিবাদ। লিয়াকত আলী খান ঘোষণা দিলেন, ‘ যো আওয়ামী লীগ করেগা, উসকো শের হাম কুচাল দেগা।’ মুজিব প্রতিবাদ করলো। তারপর জেল, সেল। ‘জেলের মধ্যে জেল তাকেই বলে সেল।’ জেলে বসেই ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত রুপরেখা প্রস্তুত করেন তিনি । দায়িত্ব দেন অলি আহাদকে। আন্দোলন চলেতে থাকে। জীবনের বেশির ভাগ সময় থাকতে হয়েছে তাঁকে জেলে তাই পরিবারের সান্নিধ্য পেয়েছে খুব কম। জেল থেকে বের হয়ে এবার বাড়িতে। বাবাকে দেখে খুশিতে আত্মহারা হাচু। নির্বাক তাকিয়ে শেখ কামাল । নিজের বাবাকে না দেখতে দেখতে ভুলে গেছেন যে তিনি তার বাবা। কামাল হাচিনাকে বলছে‘‘হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি।’ বাড়ি থেকে ফিরে চীন ভ্রমন। তারপর আওয়ামীলীগের ম্যানিফেস্টো প্রস্তুত। এবার আওয়ামীলীগ শক্তিশালী বিরোধী দল। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলো। দেশে শসনতন্ত্র আসলো না। অন্যদিকে মুজিব কুষ্টিয়াতে সভায়। মুজিবের সমর্থন না থাকার পরেও হক সাহেব ও ভাসানী যুক্তফ্রন্ট করে ফেললেন। যুক্তফ্রন্টকে নিয়ে শুরু হলো নিবাচনী প্রচারনা। টাকাকড়ি নেই তবে জনমত আছে মুজিবের পক্ষে। জনগন নিজের জমানো টাকা উল্টো বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিতে শুরু করলো। ফলাফল যুক্তফ্রন্টের নিরষ্কুশ বিজয়। এবার মন্ত্রীত্ব নিয়ে দানা বাধতে শুরু করেছে যুক্তফ্রন্টের নেতা হক সাহেব ও শহীদ সাহেবের নেতা কর্মীদের মাঝে। সুযোগ খুঁজতে থাকলো মুসলিম লীগাররা। বঙ্গবন্ধু পেলেন কো- অপারেটিভ ও এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট দফতর। মুজিব একদিকে শপথ নিলেন তো অন্যদিকে আদমজী জুট মিলে বাঙ্গালী অবাঙ্গালীদের মধ্যে চক্রান্তের দাঙ্গা শুরু হলো। মুজিব সরাসরি সেখানে উপস্থিত হলো, বক্তৃতা করে পরিস্থিতি শান্ত করলো। মূলত নতুন সরকারের অক্ষমতা প্রদর্শন ই ছিলো চক্রান্তকারীদের উদ্দেশ্য। কেন্দ্রীয় সরকার ৯২(ক) ধারা জারি করেছে। মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করা হয়েছে। হক সাহেবকে রাষ্ট্রদ্রোহী , মুজিবকে দাঙ্গাকারী বলে রটনা করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হলো। যুক্তফ্রন্টের নেতারা চুপ, অনেকে হাত মিলিয়েছে চক্রান্তকারীদের সাথে মন্ত্রীত্বের আশায় । মামলা চলে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত। অবশেষে রায় হলো। রায়ে বলা হলো যে ‘ আমাাকে(মুজিবকে) শান্তিভঙ্গকারী না বলে শান্তিরক্ষকই বলা যেতে পারে।’
Was this review helpful to you?
or
Bongobondhu ki ki krse desher jnno tah ei boi porle bujhte parben
Was this review helpful to you?
or
মানুষটার সবচে বড় গুণ ছিল তার কথা! তিনি কথা দিয়ে মানুষের খুব কাছাকাছি চলে আসতে পারতেন। কথা দিয়ে মানুষকে পথ দেখাতে পারতেন। পারতেন কথায় মানুষের প্রতিধ্বনি হয়ে উঠতে। উনি যে তার আত্মজীবনী লিখে গেছেন। যখন তিনি আত্মজীবনী লিখছিলেন। হয়ত কোন এক রাতে, হয়ত কোন দিন সন্ধ্যায় কিংবা সকাল থেকে বৃষ্টি দুপুরে তিনি বসেছেন লিখতে। লিখতে লিখতে তিনি কি কখনো ভেবেছিলেন তার একান্ত কথামালা গুলো মানুষ একদিন জানবে। তার চলে যাবার হাজার রাত পরে কোন এক শীতের রাতে বাংলার কোথাও কোন এক যুবক তার আত্মজীবনী পড়তে পড়তে হঠাৎ লক্ষ্য করবে তার চোখের কোনে জল এসে গেছে। পিতার জন্যে, পিতার প্রতি গভীর ভালোবাসায়।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিলেনর একটা এই বই। অসাধারণ তথ্য সমৃদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জানতে বুঝতে হলে এই বই অবশ্য পাঠ্য। এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী কেবল শেখ মুজিবের জীবনী তো না, বাংলাদেশের জীবনীই এটা। আর একজন মানুষের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা কতটা বেশি হতে পারে তারও দলিল। আমাদের সৌভাগ্য আমরা একজন শেখ মুজিবকে পেয়েছিলাম। রাজনীত যারা করেন, তারা যেনো একবার হলেও অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটা পড়েন।
Was this review helpful to you?
or
Abdul Majed অসমাপ্ত আত্মজীবনী (সুলভ) by শেখ মুজিবুর রহমান বইটি বাংলার সাহিত্যের আকাশপটে এক নতুন সূর্য। বইটির রিভিউ লিখে এর সারসংক্ষেপ ফুটিয়ে তোলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে বইটি অসাধারন। শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ মার্চ ১৯২০ - ১৫ আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব , ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও ভারতীয় উপমহাদেশের একজন অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে ভারত বিভাজন আন্দোলন এবং পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের " জাতির জনক " বা " জাতির পিতা" বলা হয়ে থাকে। তিনি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি শেখ মুজিব এবং শেখ সাহেব হিসাবে বেশি পরিচিত ছিলেন এবং তার উপাধি " বঙ্গবন্ধু"। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সভানেত্রী এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ।
Was this review helpful to you?
or
Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman er "Oshomapto Attojiboni" boiti porar somoy bar bar sihorito hoyesi. Boi ti te Uthe eseshe bivinno guruttopurno itihash. Sadhin banglar rupokar mohan netar somporke janar jonne boiti obosso pattho. Amra oirokom bolishto ekjon netar ovab bodh korbo sara jibon. Osadharon bektitto r deshprem er jonno tini onno sobar theke alada. Shei mohan netar oshomapto attojiboni pora proti ti bangalir akanto kortobbo.
Was this review helpful to you?
or
best
Was this review helpful to you?
or
১
Was this review helpful to you?
or
এমন মানুষ পৃথিবীতে আবার কবে আসবেন কে জানে! বাংলার দুঃখী মানুষের জন্য আমরণ কাজ করে গেছেন। আমাদের দেশটাকে এতো ভালোবাসতেন...... এই বইটি সবার পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
বইঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকঃ শেখ মুজিবর রহমান পৃষ্ঠাঃ ৩৪৫ এই রিভিউ এ অধিকাংশ আমি বইয়ের ভিতরের লাইন থেকে নিয়েছি।কারণ ভিতরের লেখা এতটাই সুন্দর যে নিজে থেকে কিছু লিখতে ইচ্ছে হয় নি। "বন্ধুবান্ধবরা বলে তোমার জীবনী লেখো। সহকর্মীরা বলে রাজনৈতিক জীবনের কাহিনীগুলো লিখে রাখো, কাজে লাগবে।” এভাবেই শুরু হয়েছে এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী। মধুমতি তীরের জনপদ থেকে উঠে আসা একজন মানুষের গল্প, একজন রাষ্ট্রনায়কের আত্মজীবনী তার বংশীয় পরিচয় এবং নাটকীয় কথনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাঠকের যাত্রা। প্রথমেই যে প্রশ্নটি চলে এসেছিলো, বইটি কি আদৌ শেখ মুজিবুর রাহমানের লিখা? তাহলে এতোদিন কোথায় ছিলো? কিংবা, এর আবিষ্কারের নেপথ্যকাহিনী কী ছিলো? শুরু ভূমিকাতে সেই প্রশ্নর উত্তর মিলে যায়। উদ্ধৃত করছি। ২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে। ” সামনে এগুতে থাকি। দেখতে থাকি কাগজের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে থাকা স্থির সেলুলয়েডে গড়িয়ে চলা বঙ্গবন্ধুর জীবন। বইটির ভাষা কিংবা বিষয় আত্মজীবনীধর্মী হলেও, লেখকের কলমের আঁচড়ে উঠে এসেছে তৎকালীর সময়ের নানান প্রেক্ষাপট। সাথে পেয়ে যাই লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতির সংক্ষিপ্ত খতিয়ান। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনায় সমৃদ্ধ হয়েছে ৩৪৫ পৃষ্টার এই বইটি। এতে আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন। একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। মতামতঃ বইটা শেষ করতে হলো বেশ ভালো রকমের অতৃপ্তি নিয়ে। অতৃপ্তির কারণ আসলে নামেই বোঝা যায় – অসমাপ্ত আত্মজীবনী। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া, কোনো উপসংহার ছাড়া, লেখকের অসমাপ্ত জীবনের মতোই একেবারেই হুট করে শেষ হয়ে গেল বইটা। এটা থেকে বঙ্গবন্ধুর পরিনত বয়সের রাজনৈতিক দর্শনের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না । যে বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপকার হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছিলেন তার শুরুর সময়টার কিছু ধারনা পাওয়া যাবে মাত্র। গোপালগঞ্জের ডানপিটে সাহসী সমাজ সচেতন কিশোর শেখ মুজিবের পরিণত বলিষ্ঠ নেতা হয়ে ওঠার কিছুটা আভাস পাই। কিন্তু সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার গল্পের প্রায় কিছুই আমরা পাই না। ” বইয়ের শুরুতে শেখ হাসিনার লেখা ভূমিকা এবং বইয়ের বিভিন্ন অংশে জুড়ে দেয়া শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে লেখা পান্ডুলিপির টুকরো ছবি বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। বইয়ের আনুষ্ঠানিক শুরু পূর্বের একটি উদ্ধৃতি তুলে দিচ্ছি। যা থেকে আন্দাজ করা যায়, একজন ব্যক্তি মুজিবকে কতোটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। “একদিন সকালে আমি ও রেনু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম , হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল ” হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর “আব্বা আব্বা ” বলে ডাকে . কামাল চেয়ে থাকে , একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে , হাচু আপা হাচু আপা , তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি….! আমি আর রেনু দুজনেই শুনলাম . আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে যেয়ে ওকে কোলে নিয়ে বললাম, আমি তো তোমারও আব্বা ! কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না, আজ গলা ধরে পড়ে রইলো . বুঝতে পারলাম , এখন আর ও সহ্য করতে পারছে না . নিজের ছেলেও অনেক দিন না দেখলে ভুলে যায় . আমি যখন জেলে যাই ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস . রাজনৈতিক কারনে একজনকে বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা আর তার আত্মিয়স্বজন ছেলেমেয়ের কাছ থেকে দুরে রাখা যে কতো বড় জঘন্য তা কে বুঝবে?মানুষ সার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়।"
Was this review helpful to you?
or
ধন্য সেই পুরুষ, যার নামের ওপর পতাকার মতো দুলতে থাকে স্বাধীনতা, ধন্য সেই পুরুষ, যার নামের ওপর ঝরে মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি। কবি শামসুর রহমানের ‘ধন্য সেই পুরুষ’ কবিতা থেকে
Was this review helpful to you?
or
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিচরিত্র একটি অখণ্ড সংগ্রামের ইতিহাস হিসেবে চিহ্নিত। তিনি বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন এবং একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছেন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'র প্রকাশ এ জন্য ঐতিহাসিক তাৎপর্যে অর্থবহ হয়ে উঠেছে। 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' ৩৩০ পৃষ্ঠার গ্রন্থ। তবে আত্মজীবনী অংশ ২৮৮ পৃষ্ঠায় শেষ হয়েছে; বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার পরে মূল প্রসঙ্গের অবতারণা-অর্থাৎ আত্মজীবনীর সূচনা। ২৮৯ পৃষ্ঠা থেকে শুরু হয়েছে টীকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন পরিচয় (১৯৫৫-১৯৭৫); আরো আছে জীবনবৃত্তান্তমূলক টীকা ও নির্ঘণ্ট। গ্রন্থটি প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে ও আনুষঙ্গিক তথ্য বিবৃত করা হয়েছে ফ্ল্যাপে। একটি অংশ স্মরণীয়-'২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলো অতি পুরনো, পাতাগুলো জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলো পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার স্বাক্ষর বহন করে।' এ গ্রন্থে শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তাঁর জীবনী লিখেছেন। তবে অনুপুঙ্খ বর্ণনায় উপস্থাপিত হয়েছে অনেক বিষয়। আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশপরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশ ভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে। আরো আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তানসন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সব দুঃসময়ে অবিচলভাবে পাশে ছিলেন। একই সঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'কে কারা-সাহিত্যের একটি স্বতন্ত্র রূপ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায়। কারণ লেখক শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ কয়েদির মতো জেলহাজতে বন্দি ছিলেন। সে সময় তিনি এটি রচনা করেছেন। তা ছাড়া গ্রন্থটিতে ব্যক্তির 'কারাজীবনের অন্তরালের ঘটনা, জেলখানার রীতিনীতি, শাসনপ্রণালি, পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং সেখানকার অন্যান্য বন্দি ও কর্মচারীর' সব কিছু উন্মোচিত হয়েছে। বলা যায়, কারা-সাহিত্য কারাগারের ভেতরের চিত্র তুলে ধরে। তবে বন্দিশালা সব সময়ই লেখকের জন্য একটি সংকীর্ণ পরিসর। তাঁর স্বাধীনতা, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ ও সমঝোতার সুযোগ সেখানে সংকুচিত। যদিও অবারিত তাঁর কল্পনার আঙিনা। এ জন্য এই কারা-সাহিত্যকর্মটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ভাষ্যে পরিণত হয়েছে। গ্রন্থটি বাস্তব রাজনীতির বহুকৌণিক পাঠের জন্যও মূল্যবান। রাজনীতি করতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে নানা সমস্যা ও সংকটময় পথপরিক্রমণ করতে হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি লিখেছেন, 'রাজনৈতিক কারণে একজনকে বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা আর তাঁর আত্মীয়স্বজন, ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে দূরে রাখা যে কত বড় জঘন্য কাজ, তা কে বুঝবে? মানুষ স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়।' একই সঙ্গে তিনি তুলে ধরেছেন অন্যান্য দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ। ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আচরণের সমালোচনা করার সময় কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন ছাত্রদের কর্মকাণ্ডকেও তিনি একটি মন্তব্যে স্পষ্ট করেছেন। 'দু-চারজন কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন ছাত্র ছিল, যারা সরকারকে পছন্দ করত না। কিন্তু তারা এমন সব আদর্শ প্রচার করতে চেষ্টা করত, যা তখনকার সাধারণ ছাত্র ও জনসাধারণ শুনলে ক্ষেপে যেত।' (পৃ ১০৯) এমনকি 'পাকিস্তান টাইমস' অফিসে মিয়া সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে প্রহৃত হয়েছিলেন পাকিস্তানের দুশমন হিসেবে, সেই সংবাদও জানিয়েছেন লেখক। (পৃ. ১৪১) তবে এসব সত্ত্বেও জনগণের পক্ষে কথা বলেছেন তিনি সাহসের সঙ্গে; পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন দৃঢ়চিত্তে। কারাগারে বন্দি লেখকের স্মৃতি গ্রন্থটিতে ঘুরেফিরে এসেছে। বঙ্গবন্ধু নিজেই ঐতিহাসিক চরিত্র। তাঁর আত্মজীবনী এ জন্য নানা তথ্যের আকর। তবে রাজনৈতিক ইতিহাসের মলাট ছেড়ে এই যশস্বী ও বর্ণময় চরিত্রের নিভৃত মনের অনেক সংবাদ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে গ্রন্থটির সাবলীল ভাষার বর্ণনায়। সমকালীন বৃহত্তর জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে শেখ মুজিবুর রহমানের 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' একটি অমূল্য সম্পদ। তা ছাড়া গ্রন্থটিতে বর্ণিত ঐতিহাসিক কালানুক্রমিক ঘটনাধারা মনে রাখলে 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'র ঐতিহাসিক গুরুত্ব সহজেই অনুধাবন করা সম্ভব। বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মহাকালিক ইতিহাসের পটভূমিতে বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'র তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
boi ta onk vlo price hishebe page er quality o alhamdulillah vloi ?
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর এবং মানসম্মত বই।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ রিভিউদাতা: মো:সাকিব হোসেন বইয়ের পরিচিতি -- বইয়ের নাম:- অসমাপ্ত আত্মজীবনী। লেখকের নাম:-শেখ মুজিবুর রহমান। প্রকাশনী:- দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড। প্রকাশক:- মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রথম প্রকাশ:- জুন, ২০১২। পৃষ্ঠা:- ৩২৯। মূল্য:-২২০ টাকা মাত্র। প্রাক কথোপকথন তিনি রাজনীতির মানুষ, লেখক নন। শব্দ আর বাক্যের ব্যবহারে, ভাষা আর অলংকারে, উপমা আর রূপকের কারুকার্যে মন ভোলানো লেখনি তাঁর ছিল না। কিন্তু তারপরেও মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়তে হয়। সহজ মানুষের সহজ বাক্য, সহজ শব্দ, সহজ ভাষা, হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা, ঠিক তাঁর ভাষণগুলোর মতোই। বন্ধুবান্ধব আর স্ত্রীর অনুরোধে জেলখানার বসে তিনি লিখতে শুরু করেছিলেন তাঁর অসমাপ্ত জীবনের অসমাপ্ত গল্প। বইয়ের একেবারে শুরুতেই সরল স্বীকারোক্তি, "লিখতে যে পারি না; আর এমন কী করেছি যা লেখা যায়! আমার জীবনের ঘটনাগুলি জেনে জনসাধারণের কি কোনো কাজে লাগবে? কিছুই তো করতে পারলাম না। শুধু এটুকু বলতে পারি, নীতি ও আদর্শের জন্য সামান্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে চেষ্টা করেছি।" ‘শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি।’ বইটিকে ফ্ল্যাপে এভাবেই পরিচিত করে দেয়া হয়েছে। লেখক যখন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তখন এর চেয়ে অধিক ভূমিকার আর কী প্রয়োজন থাকতে পারে! বইটা শেষ করতে হলো বেশ ভালো রকমের অতৃপ্তি নিয়ে। অতৃপ্তির কারণ আসলে নামেই বোঝা যায় - অসমাপ্ত আত্মজীবনী। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া, কোনো উপসংহার ছাড়া, লেখকের অসমাপ্ত জীবনের মতোই একেবারেই হুট করে শেষ হয়ে গেল বইটা। এই অঞ্চলের রাজনীতি যখন ধীরে ধীরে নানা কুশীলবের অংশগ্রহণে জটিল হয়ে উঠছে, পশ্চিম পাকিস্তানি আর তার ধামাধরা স্বার্থান্বেষী বাঙ্গালিরা যখন সদ্য স্বাধীন দেশে ইংরেজ আমলের ঔপনিবেশিক পন্থা টিকিয়ে রেখে নতুন ভাবে শোষণের জাল বিস্তার করছে, গোপালগঞ্জের কিশোর শেখ মুজিব যখন একটু একটু করে গোটা বাংলাদেশের শেখ মুজিব হয়ে উঠছেন ঠিক তখনই শেষ হয়ে গেল বইটা। মূলভাব: বইটির রচনাকাল ১৯৬৭ সাল হলেও এই বইয়ে মূলত উঠে আসার সুযোগ পেয়েছে লেখকের রাজনৈতিক জীবনের শৈশব থেকে রাজনৈতিক যৌবনের শুরুর দিককার অংশ। পাকিস্তানের আন্দোলনের সময়কার রাজনীতি সচেতন এক কিশোর মুজিব থেকে ১৯৫৪ এর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের কড়চা পর্যন্ত মূলত এই বইয়ের কলেবর। বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবনের খুব সামান্য অংশের সাথেই, আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে একেবারে শুরু দিকের অংশের সাথেই কেবল পরিচিত করায় এই বইটি। এখানে গোপালগঞ্জের ডানপিটে সাহসী সমাজ সচেতন কিশোর শেখ মুজিবের পরিণত বলিষ্ঠ নেতা হয়ে ওঠার কিছুটা আভাস পাই। কিন্তু সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার গল্পের প্রায় কিছুই আমরা পাই না। কিন্তু এই হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটার সাথে, তাঁর রাজনৈতিক দর্শন আর উপলব্ধির সাথে, তাঁর চেতনা আর স্বপ্নের সাথে, তাঁর বোধ আর বোধের বিবর্তনরেখার সাথে পরিচিত হয়ে উঠি। কোনো রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট বা বিশাল প্রভাবশালি ধনাঢ্য কোনো পরিবারে জন্ম নেন নি তিনি। গ্রামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত গৃহস্থ পরিবারে জন্ম নেয়া একজন কীভাবে হয়ে উঠলেন বাংলার মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক? যেসব নেতাদের কাছে রাজনীতির পাঠ নিয়ে কিশোর মুজিব উঠে এসেছেন ধীরে ধীরে, মঞ্চের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে কীভাবে তিনি তাঁদের ছাপিয়ে আরও অনেক উপরে উঠে গেলেন? কীভাবে হয়ে উঠলেন নেতাদের নেতা? সাম্প্রদায়িকতাকে উপজীব্য করে শুরু হয়েছিল যে আন্দোলন, সেই পাকিস্তান আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে যাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা তিনি কীভাবে আর কেন হয়ে উঠলেন অসাম্প্রদায়িক বাংলার গণমানুষের নেতা? শেখ মুজিব রাজনীতি করেছেন মূলত মানুষের জন্য, আর কিছু না বোঝা গেলেও এইটুকু অন্তত বুঝতে পারা যায় এই তিনশ পৃষ্ঠার এই ছোট্ট বই থেকে। আর এই জন্যই তাঁর কোনো পিছুটান ছিল না, স্বার্থের জন্য আপোষের মনোভাব ছিল না, পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার দায় ছিল না। যা করেছেন নিজে বিশ্বাস করে করেছেন। এজন্যে বারবার তিনি উল্লেখ করেছেন তিনি গোপন রাজনীতি বা পালিয়ে থেকে বিবৃতি দেয়ার রাজনীতি পছন্দ করতেন না। বারবার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি শোষক শ্রেণির দ্বারা। পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু সেই আন্দোলনের ফসল পাকিস্তানে একেবারে শুরু থেকেই তিনি জেলের ভেতর কাটিয়েছেন অধিকাংশ সময়। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে জন্য সংগ্রাম করেছিলেন তা তিনি পাননি, বরং সাদা চামড়ার বদলে কালো চামড়ার শোষণ পেয়েছে জনগণ। দেখলেন, শাসকের নাম বদলেছে রঙ বদলেছে, কিন্তু চরিত্র বদলায় নি। যাদের সাথে নিয়ে পাকিস্তান আন্দোলন করেছেন, তাদের অনেকের বিপক্ষেই তাই তাঁর আর তাঁর সমমনাদের নতুন সংগ্রাম শুরু হলো। দুইশ বছরের বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন এই অঞ্চলের মুসলমান আর হিন্দুর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরাজমান যে অসন্তোষ তা কেবল বৃদ্ধিই করেছিল। তার চূড়ান্ত রূপ পায় সম্ভবত যখন ধর্মের নামে দেশভাগের আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়ল ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। এই অঞ্চলের মুসলমানদের জন্য উন্নতির আর কোনো বিকল্প পথ খোলা ছিল কিনা, সেই বিতর্ককে এই লেখায় সাবধানে পাশ কাটিয়েই বলা যায়, কোনো সাম্প্রদায়িক আন্দোলন সাধারণত কোনো ভালো ফলাফল বয়ে আনে না। দেশভাগ আর তার আগে পরের সময়ের কথা বার বার উঠে এসেছে। উঠে এসেছে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার কথা, কখনও ঢাকায়, কখনও কোলকাতায়, কখনও এপারে, কখনও ওপারে। কখনও রাজনৈতিক নেতারা হিন্দু-মুসলিম অসন্তোষ উস্কে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টিতে সহায়তা করেছেন, নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে। এখনকার মতোই ইমাম, হুজুর আর পীরসাহেবেরা অংশ নিয়েছেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অনুঘটক হিসেবে। জনগণকে ধর্মের নামে আলাদা করতে চেয়েছেন বারবার, সাম্প্রদায়িক নেতা আর অনেক ধর্মগুরু। এইসব ঘটনাই সম্ভবত ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান আন্দোলনের একজন নিবেদিত কর্মী শেখ মুজিবকে বুঝতে শিখিয়েছে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ না গড়তে পারলে আসলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। পাকিস্তান আমল থেকেই শুরু হয় যে কোনো ইস্যুতে ভারত আর ইসলাম ধ্বংসের জুজু দেখানো শুরু হয়। অবাক হয়ে লক্ষ্য করি সেই রাজনীতি করে যাচ্ছে এখনও সেই পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ভূত। ২১ শে ফেব্রুয়ারির আন্দোলনে গুলি চালানোর পরে সরকার থেকে বলা হয়, "হিন্দু ছাত্ররা কলকাতা থেকে এসে পায়জামা পরে আন্দোলন করেছে।" ধীরে ধীরে তিনি উপলব্ধি করেছেন পাকিস্তান আসলে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। দুঃখ করেই তিনি লিখেছেন, "দুঃখের বিষয়, পাকিস্তান আন্দোলনের যারা বিরোধিতা করেছিল, এখন পাকিস্তানকে ইসলামিক রাষ্ট্র করার ধুয়া তুলে রাজনীতিকে তারাই বিষাক্ত করে তুলেছে। মুসলিল লীগ নেতারাও কোনো রকম অর্থনৈতিক ও সমাজনৈতিক প্রোগ্রাম না দিয়ে একসঙ্গে যে স্লোগান নিয়ে ব্যস্ত রইল, তা হল 'ইসলাম'।" অবাক লাগে, ধর্ম বেঁচে যারা মূলত জীবন ধারণ করে, তাদের চারিত্রিক গুণাবলি এত বছর পরেও খুব একটা বদলায় নি। যুক্তফ্রন্টের আর মুসলিম লীগের নির্বাচনের সময় মুজিবের সাথে জনপ্রিয়তায় টেক্কা দিতে না পেরে ঠিক এখনকার মতোই ধর্মের ট্রাম্পকার্ড খেলার চেষ্টা করে মুসলিম লীগ। লেখকের ভাষায়, "... মুসলিম লীগ যখন দেখতে পেলেন তাদের অবস্থা ভালো না, তখন এক দাবার ঘুঁটি চাললেন। অনেক বড় বড় আলেম, পীর ও মাওলানা সাহেবদের হাজির করলেন। ... ... এক ধর্মসভা ডেকে ফতোয়া দিলেন আমার বিরুদ্ধে যে, 'আমাকে ভোট দিলে ইসলাম থাকবে না, ধর্ম শেষ হয়ে যাবে'। সাথে শর্ষিনার পীর সাহেব, বরগুনার পির সাহেব ... ... সবাই আমার বিরুদ্ধে নেমে পড়লেন এবং যত রকম ফতোয়া দেওয়া যায় তাহা দিতে কৃপণতা করলেন না।" কিন্তু বাংলার মানুষের জন্য রাজনীতি করতে করতে তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন বাঙালিকে এইভাবে ধোকা দেওয়া যাবে না। আমি বইটি থেকে মূলত সেই সময়ের শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন বুঝতে চেষ্টা করেছি। পাতার পর পাতা থিসিস লিখে আর গবেষণা করে মাঠের রাজনীতিতে যারা কিছুই করতে পারেন নি তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন নি তিনি। তিনি কাজ করতে করতে শিখেছেন, ভুল হলে স্বীকার করেছেন, সংশোধনের চেষ্টা করছেন। বলেছেন এভাবে, "আমার যদি কোনো ভুল হয় বা অন্যায় করে ফেলি, তা স্বীকার করতে আমার কোনোদিন কষ্ট হয় নাই। ভুল হলে সংশোধন করে নেব, ভুল তো মানুষেরই হয়ে থাকে। আমি অনেকের মধ্যে দেখেছি, কোনো কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। আমি চিন্তা ভাবনা করে যে কাজটা করব ঠিক করি, তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয় সংশোধন করে নেই। কারণ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না।" আন্দোলন আর সংগ্রামের ইতিহাসের মধ্যে দিয়ে সেই সময়কার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতার সাথে বিভিন্ন তাঁর মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সেইসব নেতাদের কিছু পরিচয় পাওয়া যায়। বইয়ে ঘুরে ফিরে এসেছে সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা, যাঁর হাত ধরে তিনি রাজনীতি শিখেছেন। লেখক একেবারে শুরুর দিকেই বলছেন, "ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট কোঠায় বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হল। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য আমি পেয়েছিলাম। কিভাবে তিনি আমাকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন এবং কেমন করে তাঁর স্নেহ আমি পেয়েছিলাম।" বার বার বিভিন্ন জায়গায় তিনি সোহরাওয়ার্দী সাহেবের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন, তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। কিন্ত অবাক লাগে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একেবারে শুরুর দিকে যখন শেখ মুজিব একাবেরাই বিশিষ্ট কেউ হয়ে ওঠেন নি, তখনও তাঁর নিজের মত আর বিশ্বাসের প্রতি ছিল ভয়ঙ্কর আত্মবিশ্বাস। এক সভার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলছেন, "তিনি আনোয়ার সাহেবকে একটা পদ দিতে বললেন। আমি বললাম কখনোই হতে পারে না। সে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোটারি করেছে, ভালো কর্মীদের জায়গা দেয় না। কোনো হিসাব নিকাশ কোনোদিনও দাখিল করে না। শহীদ সাহেব আমাকে বললের Who are you? You are nobody. আমি বললাম, If I am nobody, then why you have invited me? You have no right to insult me. I will prove that, I am somebody. Thank you, sir. I will never come to you again." অবাক হয়ে ভাবতে হয়, কতটুকু আত্মবিশ্বাস থাকলে একটা ছোট্ট মহকুমার সামান্য একজন কিশোর রাজনীতিবিদ সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতার সামনে এভাবে নিজের মতামত দিতে পারে! পশ্চিম পাকিস্তানি তথা অবাঙ্গালি নেতাদের মধ্যে একমাত্র জিন্নাহর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ছিল বলে মনে হয়েছে। বাকি অধিকাংশ অবাঙ্গালি নেতা মূলত স্বার্থান্বেষী আর ক্ষমতালিপ্সু মনোভাবই ফুটে উঠেছে লেখার বিভিন্ন অংশে। ধীরে ধীরে সম্ভবত তিনি এটাও বুঝতে পেরেছিলেন যারা পশ্চিম পাকিস্তানিদের ধামাধরা, মূলত ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন, তাঁরাই রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের সময় নেজামে ইসলামের নেতাদের ক্ষমতালিপ্সু আদর্শহীন মনোভাব তাঁকে পীড়িত করে। কিন্তু এইসব শিক্ষাই তাকে ধীরে ধীরে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির গুরুত্ব আরও ভালোভাবে উপলব্দি করতে উদ্বুদ্ধ করে। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে তিনি মূল্যায়ন করছেন এভাবে, "এই নির্বাচনে একটা জিনিস লক্ষ্য করা গেছে যে, জনগণকে ‘ইসলাম ও মুসলমানের নামে’ স্লোগান দিয়ে ধোঁকা দেওয়া যায় না। ধর্মপ্রাণ বাঙালি মুসলমানরা তাঁদের ধর্মকে ভালোবাসে; কিন্তু ধর্মের নামে ধোঁকা দিয়ে কার্যসিদ্ধি করতে তারা দিবে না এ ধারণা অনেকেরই হয়েছিল।" সেই সময়ের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাওলানা ভাসানী, যাঁকে বইয়ে বিভিন্ন জায়গায় লেখক মূলত মাওলানা সাহেব হিসেবে সম্মোধন করেছেন, তাঁর প্রতি বিভিন্ন জায়গায় ভরসা আর শ্রদ্ধার প্রকাশ থাকলেও তাঁর কিছু কর্মকাণ্ডে লেখকের বিরক্তিও চাপা থাকেনি। ব্যক্তিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় আর তাঁর নিকটবর্তী সময়কাল ছাড়া মাওলানা ভাসানীর ব্যাপারে খুব বেশি জানাশোনা আমার নেই। কিন্ত মুক্তিযুদ্ধের সময় আর তার নিকট অতীতে, গুরুত্বপূর্ণ সময় আর সিদ্ধান্তের সময় উধাও হয়ে যাওয়ার বা দায়িত্ব না নেয়ার কথা পড়েছি। মাওলানা ভাসানীর এই রকম কিছু কর্মকাণ্ডে নিজের বিরক্তি বেশ ভালোভাবেই প্রকাশ করেছেন,"মাওলানা ভাসানীর এই দরকারের সময় আত্মগোপনের মনোভাব কোনোদিন পরিবর্তন হয় নাই। ভবিষ্যত অনেক ঘটনায় তার প্রমাণ হয়েছে।" এখানেই সম্ভবত পার্থক্য গড়ে উঠেছে। একজন যিনি গণমানুষের নেতা হয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে গেছেন, রাজনৈতিক কেবলা বা অন্য কোনো কারণে নিজের হাতে দায়িত্বের কালিমা লাগাতে চান নি, আর অন্যজন সামান্য এক মহকুমার সচেতন কিশোর রাজনীতিবিদ থেকে হাতে কলমে কাজ করে, ভুল করতে করতে হয়ে উঠেছেন গণমানুষের নেতা, বাঙ্গালির আশা আকাঙ্খার প্রতীক। ব্যাক্তিগত অভিমত: শেখ মুজিবের লেখা আত্মজীবনী পড়তে গিয়ে যে মাঝে-মধ্যেই হাই উঠবে সেটা ধরেই নিয়েছিলাম। তিনিতো আর সৈয়দ মুজতবা আলীর মতো রসিক লেখক ছিলেন না, ছিলেন রাজনীতিবিদ। ৫০ বছর আগে তাঁর লেখা বইতে সাধু ভাষার পাশাপাশি ঐতিহাসিক কাহিনীর নিরস বর্ণণা পাবো - এর বেশি আশা ছিলো না। তবুও পড়া শুরু করেছি উনি শেখ মুজিব বলেই, তাঁর আত্মোপলব্ধির খোঁজে। এক অনুচ্ছেদ পড়তে-না-পড়তেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে হলো। এ কী পড়ছি আমি? বন্ধুবান্ধবরা বলে, “তোমার জীবনী লেখ”। সহকর্মীরা বলে, “রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাগুলি লিখে রাখ, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।” আমার সহধর্মিনী একদিন জেলগেটে বসে বলল, “বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবনের কাহিনী।” বললাম, “লিখতে যে পারিনা; আর এমন কি করেছি যা লেখা যায়!" আমার জীবনের ঘটনাগুলি জেনে জনসাধারণের কি কোনো কাজে লাগবে? কিছুই তো করতে পারলাম না। শুধু এইটুকু বলতে পারি, নীতি ও আদর্শের জন্য সামান্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে চেষ্টা করেছি।” আহা, কী ঝরঝরে লেখা! পড়তে কী আরাম! একেবারে মুজতবা আলীর লেখার মতোই। “সম্পাদকদের কাজ বেশ ভালো হয়েছে” - যেই এমনটা ভাবতে শুরু করেছি, তখনই দেখি ২য় পৃষ্ঠায় মূল পান্ডুলিপির ১ম পৃষ্ঠার ছবি। আমার চোখতো ততক্ষণে ছানাবড়া। এ লেখা যে শেখ মুজিব নিজেই লিখে গেছেন — ঝরঝরে ভাষায়। সম্পাদকরা কিছু যতিচিহ্ন আর বানান ঠিক করেছেন মাত্র। এরপর থেকে অদ্ভূত মুগ্ধতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। পড়তে-পড়তে ইতিহাসের সাথে যেমন দেখা হয়, তেমনি ক্ষণে-ক্ষণেই দেখা মেলে জীবনলব্ধ উপলব্ধির। যেমন - অনেক সময় দেখা গেছে, একজন অশিক্ষিত লোক লম্বা কাপড়, সুন্দর চেহারা, ভাল দাড়ি, সামান্য আরবি ফার্সি বলতে পারে, বাংলাদেশে এসে পীর হয়ে গেছে। বাঙালি হাজার হাজার টাকা তাকে দিয়েছে একটু দোয়া পাওয়ার লোভে। ভাল করে খবর নিয়ে দেখলে দেখা যাবে এ লোকটা কলকাতার কোন ফলের দোকানের কর্মচারী অথবা ডাকাতি বা খুনের মামলার আসামি। অন্ধ কুসংস্কার ও অলৌকিক বিশ্বাসও বাঙালির দুঃখের আর একটা কারণ। রাজনীতির বাইরে কবি-সাহিত্যিক-লেখক-সঙ্গীতজ্ঞদের প্রতি শেখ মুজিবের যে প্রবল আগ্রহ আর সম্মান - তার প্রকাশ ঘটে বিভিন্ন জায়গায়। উনি পশ্চিম পাকিস্তানে গিয়ে যেমন রবীন্দ্র-নজরুলের কবিতা শুনিয়েছেন, তেমনি চীনে শান্তি সম্মেলনে বিখ্যাত লেখক আসিমভ আর তুরস্কের কবি নাজিম হিকমতের সাথে দেখা হওয়ার কথা গর্বভরে বলেন, আবার সমসাময়িক আব্বাসউদ্দিন-মুনীর চৌধুরীদেরও স্মরণ করেন গুরুত্বের সাথে। মূলত সাম্যে বিশ্বাস বিশ্বাস করতেন তিনি, বিশ্বাস করতেন গণমানুষের অধিকারে। সরাসরি সমাজতান্ত্রিক রাজনীতি তিনি করেন নি। বিভিন্ন সময় তাঁর লেখায় মনে হয়েছে তিনি অতি বিপ্লবীদের পছন্দ করতেন না তিনি। কারণ এই অঞ্চলের অতি বিপ্লবীদের অনেকেই ছিল মূলত খাতা কলমের রাজনীতিবিদ আর জনবিচ্ছিন্ন। অন্যদিকে তিনি চেয়েছেন জণগণকে নিয়ে প্রকাশ্য নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে। নিজে সরাসরি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন না করলেও তিনি মূলত সমাজতন্ত্রের মূলনীতি অর্থাৎ সাম্যে বিশ্বাস করতেন। প্রায় একই সময় স্বাধীন হওয়া কম্যুনিস্ট নতুন চীন সফরে গিয়ে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন আর উপলব্ধি করেছেন নেতাদের স্বার্থান্বেষী কার্যকলাপে কীভাবে জণগনের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটছে। চীন সফরের কথা লিখতে গিয়ে সমাজতন্ত্রের প্রতি তার মনোভাব ব্যক্ত করতে গিয়ে বলছেন, "আমি নিজে কম্যুনিস্ট নই। তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। এঁকে আমি শোষণের যন্ত্র হিসাবে মনে করি। এই পুঁজিপতি সৃষ্টির অর্থনীতি যতদিন দুনিয়ায় থাকবে ততদিন দুনিয়ায় মানুষের উপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না।" আরও বলছেন এভাবে, "আওয়ামী লীগ ও তার কর্মীরা যে কোনো ধরণের সাম্প্রদায়িকতাকে ঘৃণা করে। আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক নেতা ও কর্মী আছে যারা সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে; এবং তারা জানে সমাজতন্ত্রের পথই একমাত্র জনগণের মুক্তির পথ। ধনতন্ত্রবাদের মাধ্যমে জনগণকে শোষণ করা চলে। যারা সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা কোনোদিন সাম্প্রদায়িকিতায় বিশ্বাস করতে পারে না। তাদের কাছে মুসলমান, হিন্দু, বাঙালি, অবাঙালি সকলেই সমান।" সমাজতন্ত্রের প্রতি এই দূর্বলতাই হয়ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে দেশে তাঁকে বাকশাল গঠন করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। মানুষেরে ধোঁকা আমি দিতে পারব না"- চোখের পানিতে এই প্রতিজ্ঞা যিনি করেছিলেন, বাংলার মানুষের জন্য যিনি জেল খানায় পার করেছেন অর্ধেক সময়, বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গোপালগঞ্জের কিশোর শেখ মুজিব যখন ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠছেন, ঠিক তখনই সমাপ্ত হল তাঁর - অসমাপ্ত আত্মজীবনী। আর তাঁর আত্মজীবনীর মতো জীবনটাকেও অসমাপ্ত করে দিল এই বাংলারই কিছু মানুষ। বইটা অসম্পূর্ন। এবং এটা থেকে বঙ্গবন্ধুর পরিনত বয়সের রাজনৈতিক দর্শনের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না । যে বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপকার হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছিলেন তার শুরুর সময়টার কিছু ধারনা পাওয়া যাবে মাত্র। তবে প্রথম ৭৫ পৃষ্ঠা উঠতি রাজনীতিকের চিন্তা জগতের বাড়ির লিভিংরুম হতে পারে। রাজনীতিক হতে হলে কতটা ত্যাগ স্বীকারের প্রস্তুতি থাকা উচিত তার একটা ধারনা পাওয়া যাবে এই বইতে। লেখক না হয়েও অসাধারণ লিখছেন।। কোনো সময় বিরক্তি লাগে নাই।।সব কিছু একটু বেশিই বিস্তারিত লিখছেন।।সিনিয়র নেতাদের শ্রদ্ধা বাচক শব্দ গুলা অনেক ভালো লাগছে।। অসাধারণ নেতা ও কর্মী ছিলেন। ব্যাক্তিগত রেটিং:এই বইয়ের রেটিং দেওয়ার ক্ষমতা আমার নাই।রেটিং তো দূরের কথা বইটির রিভিউও সুন্দর করে লেখার মত কাবিল হয়ে উঠিনি। তবে নিজের সবটুকু দিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। ইনশাআল্লাহ সবাই দোয়া করবেন। খোদা হাফেজ
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বইয়ের নামঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী (সুলভ) লেখকঃ শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশকঃ দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ৩২৯ প্রচ্ছদঃ সমর মজুমদার মুদ্রিত মূল্যঃ ২২০ রিভিউ করছিঃ মায়েশা তারান্নুম রিচি ধরণঃ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রেটিংঃ ১০/১০ এটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবন কথামূলক গ্রন্থ "অসমাপ্ত আত্মজীবনী।" ১৯৬৬-১৯৬৯ সালে কারাগারে রাজবন্দী থাকাকালীন সময়ে তিনি এই বই লিখেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা ২০০৭ সালে কারাবন্দী অবস্থায় এই বইয়ের ভূমিকা লিখেন এবং মুক্তি পেয়ে বই প্রকশনার পদক্ষেপ নেন। তথ্যবহুল লেখায় বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলা, পাকিস্তান আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, বাঙালির স্বাধীনতা, স্বাধীকার আন্দোলন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নানা চক্রান্ত ইত্যাদি বিভিন্ন ঘটনা জানা যায় এই বই থেকে এবং এই বইতে কায়েমী স্বার্থবাদীদের নানা ষড়যন্ত্র এবং শাসনের নামে শোষণের অপচেষ্টা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরেছেন তিনি। বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী এবং সহধর্মিণীর অনুরোধেই হাতে কলম তুলে নেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয় টুঙ্গিপাড়ার শেখ বংশে। এই বংশের গোড়াপত্তন করেছেন,শেখ বোরহানউদ্দিন নামে এক ধার্মিক পুরুষ। শেখ বংশ বিরাট সম্পদের মালিক থেকে কিভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে গেলো এই কাহিনি বাড়ির মুরব্বিদের থেকে তাঁর জানা হলেও,খুব সুন্দর করে তিনি বর্ণনা করেছেন। ১৯২০ সালে ১৭ ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। মজার ব্যাপার হলো তাঁর দাদা ও নানার ঘর পাশাপাশি কারণ বঙ্গবন্ধুর মা সায়েরা খাতুন, তাঁর বাবার চাচাতো বোন। ১৯৩৪ সালে তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হয়ে যান।১৯৩৬ সালে আবার চোখে গ্লুকমা নামে রোগের কারণে অপারেশন করতে হয়। ১৯৩৭ সালে আবার লেখাপড়া শুরু করলেন গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে। ১৯৩৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এগজিবিশন উপলক্ষে গোপালগঞ্জ আসলেন। মিশন স্কুল পরিদর্শন কালে বঙ্গবন্ধু মিশন স্কুলের ছাত্র হওয়ায়,সম্বর্ধনা দিতে গিয়ে পরিচয় হয় তাঁদের। এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই শহীদ সাহেবকে নিয়মিত চিঠি লিখতেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪১ সালের মধ্যে তিনি রাজনীতিতে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়েন। ম্যাট্রিক পরিক্ষার সময় ও সভা,বক্তৃতা এসবে যেতেন। ফলস্বরূপ রেজাল্ট মনমতো হয় নি।তাই আবার পড়া শুরু করলেন এবং দ্বিতীয় বিভাগে পাস করে ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। এই কলেজ ছিল বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। ১৯৪৩ সালে তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিল এর সদস্য হন। এই সময় দুর্ভিক্ষ আরম্ভ হয়, বইতে বঙ্গবন্ধু এই করুণ ঘটনার বর্ণনা উপস্থাপন করেন।তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে দুর্ভিক্ষ পীড়িতদের সেবায় দিন রাত কাজ করেছেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সভা,বক্তব্য, বিভিন্ন কাজ করে গেছেন দিনরাত। বঙ্গবন্ধুর বাবা-মা রাজনীতি তে কখনোই আপত্তি করেন নাই, এভাবেই ছোট্ট মুজিব নিজের সাহসীকতা,বুদ্ধিদীপ্ততা, অক্লান্ত পরিশ্রম ও তেজ এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হবার পথে এগিয়ে গেছেন।বঙ্গবন্ধুর বাবা বলতেন," বাবা রাজনীতি কর,আপত্তি করবো না,পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছো এ তো সুখের কথা,তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। 'Sincerity of purpose and honesty of purpose' থাকলে জীবনে পরাজিত হবা না।" তিনি বাবার আদর্শে কাজ করে গেছেন এবং সফল হয়েছেন। তখনকার সময়ে বঙ্গবন্ধুকে বাধা দেওয়ার জন্য অনেক মানুষ আহ্বান করতো।কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাবা বলতেন, "দেশের জন্য কাজ করছে,অন্যায় তো করছে না।যদি জেল খাটতে হয় খাটবে,আমি দুঃখ পাবো না।পাকিস্তান না আনতে পারলে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না।" তিনি বাবার সাথে রাজনৈতিক আলোচনা করতেন। বঙ্গবন্ধু ধারাবাহিকভাবে এই বইতে ৪৬ এর দাঙ্গা,৪৭ এর দেশভাগ, বায়ান্ন'র রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন, আদমজী জুট মিলের দাঙ্গা,আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ গঠন, যুক্তফ্রন্ট গঠনের পর ১৯৫৪ সালের নির্বাচন এসব এর ঘটনা ও তাঁর প্রতিবাদ সবকিছু খুব সাবলীল ভাষায় সচ্ছ ভাবে বর্ণনা করেছেন।এসব পড়লে পাঠক মন ঐ দৃশ্য কল্পনা করতে পারবে। বঙ্গবন্ধু দেশের জন্য বিভিন্ন কাজে দেশ বিদেশে ভ্রমণ করেছেন। পশ্চিম পাকিস্তান, চীন ও ভারত ভ্রমণের পুরো বর্ণনা তিনি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রায় সময় কেটেছে কারাগারে। রমাপদ নামক এক লোককে ছোরা দিয়ে হত্যার চেষ্টা নামক মিথ্যা মামলায় জীবনের প্রথম জেল হয় তাঁর। এরপর পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরের ১২ বছরই কারাগারে কেটেছে বঙ্গবন্ধুর। তাও তিনি থেমে থাকেন নি,তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব,,একাগ্রতা, দেশপ্রেম, চিন্তা চেতনার দ্বারাই বাঙালি পায় স্বাধীনতা। ১৯৫২ সালে জেলে বন্দী অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সিদ্ধান্ত নেন জেলের বাইরে যাবেন,বলেন,"Either I will go out of the jail,or my deadbody will go out" তিনি ও মহিউদ্দিন সরকারের কাছে দরখাস্ত দ্রন,১৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে মুক্তি দেওয়া না হলে তারা অনশন শুরু করবেন। ২৭ তারিখ ডেপুটি জেলার এসে জিজ্ঞেস করলো তাঁকে মুক্তি দিলে খাবেন কি না? তিনি শরীরের এই খারাপ অবস্থা নিয়ে উত্তর দিলেন, "মুক্তি দিলে খাবো,না দিলে খাব না।তবে আমার লাশ মুক্তি পেয়ে যাবে।" এরপর বঙ্গবন্ধুর মুক্তির অর্ডার আসলো,কিন্তু মহিউদ্দিনের আসলো না। বাড়ি ফেরার পরের খুবই একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, "একদিন আমি আর রেণু(স্ত্রী) বিছানায় বসে গল্প করছিলাম।হাচু (শেখ হাসিনা) ও কামাল নিচে খেলছিল।হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর আব্বা আব্বা বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে।একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে,হাচু আপা,হাচু আপা,তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি। নিজের ছেলেও অনেক দিন না দেখলে ভুলে যায়!" তিনি যখন জেলে যান তখন অর বয়স মাত্র কয়েক মাস।রাজনৈতিক কারণে বিনা বিচারে বন্দি রেখে ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে দূরে রাখা কতটা জঘন্যতম কাজ। এই বইতে রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সংসারের সব সদস্যর সমর্থন, সহযোগিতা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে বেগম ফজিলাতুন্নেছার অবদান ও অনেক। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের তিনি যেমন বিভিন্ন বিষয়ে মানুষের উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়েছেন, তেমনি মানুষের কাছ থেকে বঞ্চিত হয়ার ও অনেক ঘটনা রয়েছে। মানুষের মুক্তির জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। বাঙালি জাতির ইতিহাস সঠিকভাবে জানার জন্য বইটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান প্রজন্ম সভ্যতা, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এক অনবদ্য সুযোগ পেয়েছে এই বইয়ের মাধ্যমে। বর্তমান প্রজন্ম পূর্ব প্রজন্মের সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবে এই বইয়ে। এটি বাঙালির রাজনৈতিক দলিল। বইটিতে সহজ সাবলীলভাবে উপন্যাসের চরিত্র বিশ্লেষণের থেকেও অনেক ভালো ভাবে সব চরিত্র এবং ঘটনা বর্ণনা হয়েছে, যা মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ার মতো। বাঙালির স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর জীবনকাহিনী জানতে হলে বইটি এক কথায় অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বই: অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশনী: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড প্রচ্চদ: সমর মজুমদার রিভিউ লেখক : আশরাফুল শরীফ ● প্রাককথন: "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" নিরেপেক্ষতার মৌলিক দলিল ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কখনো অন্যায়ের পক্ষে আপস করেন নাই ৷ জেল-জুলুম, নানান ভয়-ভীতি এমন কি ফাসির দঁড়িকেও ভয় করেন নাই ৷ দেশ, দেশের জনগণ এবং দেশের স্বার্থ রক্ষায় তিনি ছিলেন সর্বদায় অটুট ৷ বাবার আদর্শে গড়ে উঠা বঙ্গবন্ধু সর্বদায় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন ৷ হয়েছেন অবিসংবাদিত নেতা৷ তার জীবনের সমস্ত কাজকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছে বাংলার মানুষ ৷ একাত্তরে তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ঝাপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে ৷ স্বাধীন হয় সোনার বাংলা ৷ জনগণকে সাথে নিয়ে সোনার বাংলাকে গড়ে তোলার কাজ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ ● লেখক পরিচিতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ বাঙালি জাতির জনক ৷ রাজনৈতিক কবি ৷ জীবনের সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাঙালি জাতি এবং জাতি সত্তা নিয়ে কাজ করে গেছেন নিরলস ভাবে ৷ "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" বইয়ে তার জীবনের ঘটে যাওয়া (১৯২০-১৯৫৫) ঘটনাগুলো লিখেছেন অনেকের অনুরোধ এবং তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছার উৎসাহে । কারাগারে থাকাকালীন তিনি আত্মজীবনী লিখা শুরু করেন (১৯৬৭) ৷ তবে আত্মজীবনী গ্রন্থের সমাপ্তি করে যেতে পারেননি ৷ ● বইয়ের বিষয়বস্তু: আত্মজীবনী মানে নিজের ঢোল নিজে পেটানো ৷ তবে শেখ মুজিবুর রহমানের "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" নিরপেক্ষতার দলীল ৷ ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধুর লেখা চারটি আত্মজীবনী মূলক খাতা তার কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয় ৷ যা ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে থাকাকালীন অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন ৷ কিন্তু শেষ করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীত প্রাণ ৷ সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন সমগ্র জীবন জুড়ে ৷ জেলে থাকাকালীন সময়ে সবার অনুরোধে বঙ্গবন্ধু চারটি ডায়রি লিখতে শুরু করেন ৷ যাতে তিনি আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট বর্ণণা করেছেন ৷ বইটিতে লেখক নিজের বংশ পরিচয়, শৈশব, স্কুল-কলেজের শিক্ষাজীবনের আলোচনা করেছেন ৷ পাশাপাশি বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক আলোচনা তুলে এনেছেন ৷ লেখক আলোচনা করেছেন- দেশভাগ, মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ ভাগের পর দেশের রাজনীতির হালচাল ৷ লেখক আরও আলোচনা করেছেন, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচিত সরকার গঠন নিয়ে ৷ বইটিতে লেখক লিখেছেন- ১৯৫৪ সালের নির্বাচন, পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ ৷ লেখক তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন ৷ বইটিতে আরও স্থান পেয়েছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্ততির কথা ৷ লেখক নিজের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছার সংগ্রামী জীবনের ত্যাগ তুলে এনেছেন৷ যিনি তার রাজনৈতিক জীবনে দুঃসময়ে সহায়ক ভূমিকায় ছিলেন ৷ বইটিতে লেখকের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের বর্ণণা ফুটে উঠেছে ৷ যা বইটিকে অনন্য করেছে৷ ●বইয়ের কিছু উক্তি: ◇ অন্ধ কুসংস্কার ও অলৌকিক বিশ্বাস বাঙালির দুঃখের আর একটি কারণ ৷ (পৃঃ ৪৮) ◇ নেতারা যদি নেতৃত্ব দিতে ভুল করে, জনগণকে তার খেসারত দিতে হয় ৷ (পৃঃ ৭৯) ◇ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না ৷ (পৃঃ ৮০) ◇ শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে গণতন্ত্র চলতে পারে না ৷ (পৃঃ ১২৬) ◇ জনমতের বিরুদ্ধে যেতে শোষকরাও ভয় পায় ৷ (পৃঃ ২১০) ◇ নির্যাতনের ভয় পেলে বেশি নির্যাতন ভোগ করতে হয়৷ (পৃঃ ১২৮) ◇ মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে ৷ যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবন দিতেও পারে ৷ (পৃঃ ২৫৭) ● বইয়ের দারুণ একটি কথা: একদিন সকালে আমি আর রেণু বসে গল্প করছিলাম । হাচু আর কামাল নিচে খেলা খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে এসে আব্বা আব্বা বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে "হাচু আপা, তোমার আব্বারে আমি আব্বা বলি"। আমি আর রেণু দুইজনে শুনলাম । আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে ওকে খুলে নিয়ে বললাম, আমি তো তোমারও আব্বা। কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না । আজ গলা জড়িয়ে ধরে পড়ে রইলো । বুঝতে পারলাম এখন আর ও সয্য করতে পারছে না। নিজের ছেলে অনেকদিন না দেখলে ভুলে যায়। "আমি যখন জেলে যাই তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস ।" ● বইটি কেন পড়া উচিত: বাঙালি জাতি সত্তার ইতিহাস জানার জন্য বইটি অন্যতম ৷ বঙ্গবন্ধু যেহেতু বাংলার সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছেন সেজন্য তার আত্মজীবনী মানেই বাংলার ইতিহাস ৷ ঐতিহ্য ৷ "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" পাঠ করলে পাঠক অবশ্যই বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য পুঙ্খানুপুঙ্খ জানতে পারবে ৷ বাংলার ইতিহাস জানার জন্য বইটি সবার পড়া উচিত ৷ যদিও বইটি তিনি শেষ করে যেতে পারেন নাই, তবুও এতে বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে সুদূঢ় আলোচনা করেছেন ৷ ● ব্যক্তিগত রেটিং: ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
বইটি অসম্ভব ভালো লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধু ছিলেন গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী। তিনি ছিলেন জনগণের পক্ষে। স্বাধীন মতপ্রকাশের পক্ষে। শোষণ ও বঞ্চনার বিপক্ষে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, শৃঙ্খল ও শোষণমুক্তির প্রবল আকাঙ্ক্ষাই ছিল তার সংগ্রামী জীবনের মূল কথা। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে চুয়ান্নর নির্বাচন, আটান্নর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান তার গণতান্ত্রিক চেতনা, শৃঙ্খল ও শোষণমুক্তির উদগ্র বাসনাকেই আমাদের সামনে তুলে ধরে। তিনি তার ব্যক্তিসত্তাকে বাঙালি জাতিসত্তায় রূপান্তরিত করেছিলেন। নিজের স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থে বিলীন করে দিয়েছিলেন। তাই তিনি পরিণত হয়েছিলেন বাংলার সব বর্ণের, সব ধর্মের, সব মানুষের এক অবিসংবাদিত নেতায়। তিনি পুরো দেশকে জাগিয়েছিলেন। তার কথায় বাঙালি উঠত-বসত। তার অঙ্গুলিহেলনে সারা দেশ থমকে যেত। গাড়ির চাকা থেমে যেত। কোর্ট-কাছারি বন্ধ হয়ে যেত। তার কথায় বাঙালি কাঁদত-হাসত। তার জন্য মানুষ প্রার্থনা করত। তিনি ছিলেন বাঙালির এক মুকুটহীন সম্রাট। তাই তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু তাই অভিন্ন। একে অপরের পরিপূরক। তাই অন্নদা শঙ্কর রায় তো বলেই গেছেন- “যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান”।
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বই:-অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক:-শেখ মুজিবুর রহমান রিভিউ:-আরাফাত হক বিশ্বাস আত্মজীবনী মানে নিজের ঢোলটা বেশি পেটানো। নিজেকে ফুটিয়া তোলা। নিজের ভালো দিকগুলা সবার সামনে তুলে বলা, ‘এই হইলাম আমি’। সবকিছুর উর্ধ্বে আমিই ছিলাম। আমি হইলাম আসল হিরো। তবে সত্যি কথা বলতে হইলো, বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু হিরো নন। হিরো হইলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। অধিকাংশ অধ্যায় জুড়েই সোহরাওয়ার্দীর কথাই বলতে চেয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তার রাজনৈতিক জীবনে শহীদ সাহেবের প্রভাব যে কতটা স্পষ্ট তা বইটি পড়লেই ঝকঝক হয়ে উঠবে। আত্মজীবনীর শুরুতেই তিনি বলে ফেলেন, ‘…ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট কোঠায় বসে বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হলো। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। কিভাবে তিনি আমাকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন এবং কেমন করে তাঁর স্নেহ আমি পেয়েছিলাম।…’ শহীদ সাহেবের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ফুটে ওঠে এই লাইনগুলোর মধ্যে দিয়েই। বইয়ে নিজ পরিবারের পরিচয়পর্ব থেকে শুরু করে শহীদ সাহেবের সঙ্গে পরিচয় পর্বটিও স্পষ্ট উল্লেখ করেছে বঙ্গবন্ধু। শহীদ সাহেবের সঙ্গে তার পরিচয় হয় ১৯৩৮ সালে। একসঙ্গে দুই নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ আসেন। সেখানেই পরিচয় পর্ব দিয়ে রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র শেখ মুজিবুর রহমানের যাত্রা শুরু। এরপর সেই কলেজ ছাত্র ধীরে ধীরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। পাকিস্তান আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা স্পষ্ট। সেসময়কার মুসলমানদের একমাত্র দাবি ছিল ‘পাকিস্তান’ নামে আলাদা রাষ্ট্র। আর সেই দাবী প্রতিষ্ঠায় যে ভূমিকা তার ছিল তা তিনি খুব সহজেই বলে গেছেন। এমনকি সেখানেও শহীদ সাহেবের ভূমিকার স্পষ্ট বর্ণনা দেন বঙ্গবন্ধু। তবে এসব বর্ণনা তার নিজের ব্যক্তিগত মতামত হিসেবেই ধরে নিতে হবে। আত্মজীবনী গ্রন্থখানি সম্পাদনা কাজে জড়িত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। একইসঙ্গে বইটির ভূমিকা লিখেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ভূমিকাটি তিনি লিখেছেন জেলে থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালে। এ নিয়ে আমার একখানা মতামত হলো, নেতারা সবসময় জেলে বসেই লেখতে পছন্দ করেন। নিজের মতো করে সময় পান। যা তারা লেখালেখিতে হয়তো ব্যয় করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিকার এক জায়গায় বলেছেন, ‘এ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত আত্মজীবনী লিখেছেন। ১৯৬৬-৬৯ সালে কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দি থাকাকালে একান্ত নিরিবিলি সময়ে তিনি লিখেছেন।’ বলাই যায়, বঙ্গবন্ধুও আত্মজীবনী লেখেছেন কারাবন্দি থাকা অবস্থায়। যাইহোক, যে কথা বলতে চেয়েছিলাম সেটা হলো বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী গ্রন্থে বহুবার চৌধুরী সাহেবের প্রসঙ্গ এসেছে। এই চৌধুরী সাহেব হলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী। সম্পাদনার ভালো দিকটি হলো, সম্পাদক চাইলে বইয়ে এই বিতর্কিত লোকটির চরিত্র ম্যানুপুলেশন করতে পারতেন। কিন্তু সেটা হয় নাই। বরং স্বচ্ছভাবেই চৌধুরী সাহেবের কথা উল্লেখ রয়েছে। যেমন তার কথা প্রথম আসে ‘অল বেঙ্গল মুসলিম ছাত্রলীগ’- এর সভাপতি ওয়াসেক সাহেবের সূত্র ধরে। এই ওয়াসেক সাহেবের সঙ্গে ফজলুল কাদের চৌধুরীর সব সময় বিরোধ লেগে থাকতো। ওয়াসেক সাহেব একচেটিয়ে রাজনীতি করতে চাইতেন। তাই তার সঙ্গে বিরোধ। একবার এক গন্ডগোলে চৌধুরী সাহেবের দলকে বঙ্গবন্ধু সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদেও অংশ নেন। এমনকি চৌধুরী সাহেবের সঙ্গে ভারত ঘুরার বর্ণনাও আছে বইটিতে। চৌধুরী সাহেব যে পুরানো ধনী সেটিও বোঝা যায় বঙ্গবন্ধুর বর্ণনায়। তবে চৌধুরী সাহেব সম্পর্কে এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু মন্তব্য করেন, ‘চৌধুরী সাহেব খুবই স্বার্থপর হয়ে ওঠেন এবং একগুঁয়েমি করতেন, সেজন্য যারা তাকে চট্টগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, পরে তারা সকলেই তাঁকে ত্যাগ করেন।’ রাজনৈতিক কুটচাল, পার্টি ম্যানুপুল্যাশন, টাকার খেলা, দল বদলানো, মানুষের নতুন চেহারা উন্মোচন এসবই পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীতে। সঙ্গে আছে দূর্ভিক্ষ এবং হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা। দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটও উঠে আসে বইয়ে। শুধু তাই নয়, কলকাতা ও সিলেট নিয়ে যে রাজনীতি ব্রিটিশরা করেছে সে বর্ণনাও আছে। কলকাতাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী না করে ভারতের সীমানায় দিয়ে দেওয়াটা হঠকারিতার সামিল বলেই বোঝা যায়। অন্যদিকে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পশ্চিম পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের কথাও তিনি বলেছেন। সেখানেও মূল নায়ক সোহরাওয়ার্দী। বঙ্গবন্ধু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পাকিস্তান হওয়ার সাথে সাথেই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। বিশেষ করে জনাব সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে দিল্লিতে এক ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কারণ, বাংলাদেশ ভাগ হলেও যতটুকু আমরা পাই, তাতেই সিন্ধু, পাঞ্জাব, সীমান্ত প্রদেশ ও বেলুচিস্তানের মিলিতভাবে লোকসংখ্যার চেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের লোকসংখ্যা বেশি। সোহরাওয়ার্দীর ব্যক্তিত্ব, অসাধারণ রাজনৈতিক জ্ঞান, বিচক্ষণতা ও কর্মক্ষমতা অনেককেই বিচলিত করে তুলেছিল। কারণ, ভবিষ্যতে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চাইবেন এবং বাধা দেওয়ার ক্ষমতা কারও থাকবে না।’ শুধু রাজনীতি কিংবা নিজের ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ বাদেও কখনও কখনও বঙ্গবন্ধুর ভেতরের কবি সত্ত্বাও জেগে উঠতে দেখা গেছে এ গ্রন্থে। তাজমহলে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভেতরের রোমান্টিকতার প্রকাশ পেয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘সূর্য যখন অস্ত গেল, সোনালী রঙ আমাশে ছুটে আসছে। মনে হল, তাজের যেন আর একটা নতুন রূপ। সন্ধ্যার একটু পরেই চাঁদ দেখা দিল। চাঁদ অন্ধকার ভেদ করে এগিয়ে আসছে আর সাথে সাথে তাজ যেন ঘোমটা ফেলে দিয়ে নতুন রূপ ধারণ করেছে। কি অপূর্ব দেখতে! আজও একুশ বৎসর পরে লিখতে বসে তাজের রূপকে আমি ভুলি নাই, আর ভুলতেও পারব না।’ প্রতিটি মানুষের মনে কবি বাস করে। কথাটি হয়ত ঠিক। অপরূপ মায়া ও রোমান্স উঠে এসেছে লাইনগুলোতে। যাইহোক, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিশক্তিরও বেশ প্রশংসা করতে হয়। প্রতিটি মানুষের নাম। এমনকি কখনও কখনও সময়ও উল্লেখ করেছেন। প্রতিটি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তিনি বর্ণনা করেছেন। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ একটি আত্মজীবনী গ্রন্থ। যে গ্রন্থখানি লেখেছেন একজন নেতা। নেতার লেখায় রাজনীতি উঠে আসাই স্বাভাবিক। তবে অনেক সাহিত্যবোধ্যারা তাকে সাহিত্যিকের মর্যাদায় দিয়ে ফেলছেন। যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হতেই পারে। বঙ্গবন্ধু একজন নেতা। বাংলাদেশ স্বাধীকার আন্দোলনের প্রধান নেতা। এবং তার রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী একজন নেতার বেড়ে ওঠার গল্প। তার রাজনৈতিক দর্শন ও ভাবনার মিশেলে বাংলাদেশের তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উঠে এসেছে এ গ্রন্থে। ভাষা ঝরঝরে। বাক্য সাধারণ। শব্দ নির্বাচনে সাদামাটা। কোনো সাহিত্য করার জন্য এ জীবনী তিনি লেখতে বসেননি। নেহায়েত বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী এবং স্ত্রী রেণুর অনুরোধে নিজের জীবন লেখতে বসেছিলেন কারাবন্দী অবস্থায়। যা আজ আমাদের সামনে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ হাজির হয়েছে। অতএব আমার এ লেখাও একটি অসমাপ্ত রিভিউ হিসেবেই আপনারা নিতে পারেন। এটি কোনো ন্যারেটিভ রিভিউ নয়। নিছক সাদামাটা একটা রিভিউ।
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুর “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” শুধুমাত্র একটি বই নয় , আমার কাছে এটি একটি প্রামাণ্য দলিল। বঙ্গবন্ধুর ভাবাদর্শ বুকে লালন করে এমন মানুষের কাছে এই বইটি নিরপেক্ষতার মৌলিক দলিল।
Was this review helpful to you?
or
আমি যতবারই বইটা পড়ি মনে হয় কানের কাছে এসে পিতা নিজের গল্প নিজে আমাকে শুনাচ্ছে! তারপর মনে হয়, সেই কন্ঠ,সেই কবিকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে নি ওরা।
Was this review helpful to you?
or
good book....thank you rokomari
Was this review helpful to you?
or
একজন প্রকৃত জাতীয়তাবাদী নেতা।যিনি পেরেছিলেন এই জাতিকে এক করতে।এরপর থেকে আজ পর্যন্ত আর কেউ পারে নি। কিভাবে এক দুরন্ত কীশোর জাতির শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাদের সহচর্যে জাতির জনক হয়ে উঠল তার অত্যন্ত সরল বর্ননা এবং তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা প্রতি অক্ষরে অক্ষরে প্রকাশ পেয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
This book is great .If you want to know about the father of the nation shekh Mujibur Rahman you should read this book . This book will really help you
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পিছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অবদান অপরিসীম। তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি একত্রিত না হতে পারলে সম্ভবত বাংলাদেশের স্বাধীন হওয়াটা শুধু স্বপ্নই থেকে যেতো। আর বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানার জন্য তাঁর জীবনী পড়াটা অতি আবশ্যক।কারণ তাঁর জীবনকে পড়া ছাড়া তার কর্মের পরিধি সম্পর্কে জানা প্রায় অসম্ভব। আত্মজীবনীতে পাবেন অন্যরকম স্বাদ।পাবেন বঙ্গবন্ধুর নিজের জীবনের সাদামাটা বয়ান
Was this review helpful to you?
or
বাঙালি জাতির পথ প্রদর্শক হিসেবে একজন উজ্জল আদর্শবান ব্যক্তিত্ত্বের আবির্ভাব।তিনি আমাদের জাতির পিতা।অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি একজন বাঙালির কাছে গুরুত্বপূর্ণ..দেশকে জানা..কিভাবে একজন ব্যক্তি তার দেশকে গড়ে তুলতে, দেশের মানুষকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সংগ্রাম,ত্যাগ,কষ্ট করেছেন তা সুন্দর ও সহজ ভাষায় তুলে ধরা আছে.. অনেক শিক্ষনীয় ব্যাপার আছে.কিছু বিশেষ বিশেষ উক্তি..যা আমাদের দৈনন্দিম জীবনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ.. বইটি একজনকে উপহার দেয়ার জন্য সেরা..
Was this review helpful to you?
or
লও সালাম শেখ মুজিব । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন ব্যক্তিত্ত যার নাম শুনলেই ভক্তি চলে আসে । বিপথগামী কতিপয় কিছু মানুষের কারণে তাকে কাছ থেকে দেখতে পাইনি তো কি হয়েছে ? আমার নেতা এমন এক নোট রেখে গিয়েছিলেন যার বদোওলতে এখন তাকে বাংলার জনগণ তাকে চোখের সামনে দেখতে পায় । আমরা ফিল করতে পারি আমাদের প্রিয় নেতাকে। এরকম একটি বই থেকে আশা করি বাংলার জনগণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ গঠন করতে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এর সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা করে না? তার কথা শোনতে ইচ্ছা করে না? মনে হয় না, ইস! যদি একবার দেখতে পেতাম তাকে! সে নেই তো কি হয়েছে? তার স্পর্শ তো হাড়িয়ে যায় নি, তাই না? প্রত্যেকের সৃষ্টি কর্মে, তার প্রতিফলিত রূপ পরে। মানে সবার সৃষ্টি কর্মে, সে নিজেই প্রতিফলিত হয়ে বিরাজ করে। তাই তো প্রত্যেক মানুষের মাঝে আল্লাহ বিরাজ করে?. তাই আমরা তার সৃষ্টি কর্ম যেমন বই এর দিকে নজর দিতে পারি। তার লেখা কিছু বই আছে। তার মধ্যে তার আত্মজীবনী (অসমাপ্ত আত্মজীবনী) একটা। আমরা ইচ্ছা করলেই তার আত্মজীবনী থেকে অনেক কিছু শিক্ষা নিতে পার। যার জন্য দরকার দৃঢ় মনোভব। এই বইটা বঙ্গবন্ধু নিজের হাতে চয়ন করেছেন। ওনার এই বই তে নিজের করা কাজ কর্ম লিখেছেন। তিনি কত কষ্ট করেছেন এই দেশের জন্য, তা আমরা তার এই বই পড়ে উপলব্ধি করতে পারব। কিভাবে একটা মানুষ (অবশ্য মানুষ বলা চলে না) তার জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করতে পারে, দেশের জনতার কাছে। কি ভাবে হয়ে উঠলেন, 'Who are you' থেকে 'I am the father of the nation'? অন্তত তা জানতেই না হয় বই টা পড়বেন। আর এই বইটা পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হওয়ার দরকার নেই। 'রকমারি' কে বললেই আপনার বাসায় এনে দিয়ে যাবে। তাই আর দেড়ি না করে 'রকমারি ডট কম' এ ক্লিক করে, বই টা বাসায় এনে পড়ে ফেলুন?.
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী হলো বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী।অসমাপ্ত আত্মজীবনীঃ শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী সংকলন। ২০১২ সালের জুনে এ বইটি প্রকাশিত হয়।এ পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে ইংরেজি, উর্দু, জাপানি, চিনা, আরবি, ফরাসি, হিন্দি, তুর্কি, নেপালি, স্পেনীয়, অসমীয়া ও রুশ ভাষায় বইটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
বাঙ্গালী জাতির কিংবদন্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাদি সাবলীল ভঙ্গিতে সরল ভাষায় ফুটে উঠেছে। ছেলেবেলা থেকে রাষ্ট্রনায়ক হওয়া পর্যন্ত নানা বাধা প্রতিবন্ধকতা বিপর্যয় সুন্দর ও প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। আগামীর কর্ণধারা অনুপ্রাণিত হবে বলে আমার শতভাগ বিশ্বাস।
Was this review helpful to you?
or
This book is much more helpful for not only students but also the other intellectual professionals. The misconception regarding the history is truely removed with the help of this "Untold Memories" by Father of the nation Bangabandhu Sheikh Mijibur Rahman.
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধু এক আদর্শের নাম। তিনি ছিলেন এক স্বাধীনতাকামী নেতা। তার এই বইটি আমাদের সকলের একবার হলেও পড়া উচিৎ। সকল দলমত নির্বিশেষে এই বইটি পড়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কারণ এই বইটি একজন আদর্শে গড়া মানুষের জীবনী। আর তা বাদেও এই বইটি লিখেছেন আমাদের দেশের রূপকার শ্রদ্ধেয় শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামীগের যারা বক্তব্য দেন তাদের অবশ্যই এ বইটি পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
এই লেখাগুলোকে বঙ্গবন্ধু হারিয়ে যাওয়া পূর্বোক্ত আত্মজীবনী হিসেবে সুনিশ্চিত করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে শেখ মণিকে টাইপ করার জন্য এগুলো দেওয়া হয়েছিল। পরে এগুলো বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সম্পাদনায় গ্রন্থাকারে অসমাপ্ত আত্মজীবনী নামে ২০১২ সালের জুনে প্রকাশ করা হয়।
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বীর বাঙালীর সন্তান তুমি, বাংলাকে,বাংলার মাটিকে ভালোবেসে রেখে গেলে যে দান,ত্যাগ ও দেশপ্রেমের এক দৃষ্টান্ত, যতকাল পদ্না,মেঘনা ও যমুনার জলরাশি চির বহমান থাকবে, ততকাল জাতি তোমাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। জয় বাংলা,জয় বঙ্গবীর
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনী সত্যিই আমাকে রোমাঞ্চিত করেছে এবং শেষে আমাকে অনেক ব্যাথিত করেছে।বইটিতে বঙ্গবন্ধু নিজের সংগ্রামের কাহিনী ব্যাক্ত করেছেন এমনকি বইটিকে অনেকটা গবেষণা রেফারেন্স হিসেবেও উল্লেখ করে যায়।আমরা অনেকেই বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে আগ্রহী এবং বিভিন্ন বই হয়তো বিভিন্নভাবে তাকে উপস্থাপন করেছে।তবে এই বইটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বঙ্গবন্ধুর মনে একঝলক ভ্রমণ করে আসতে পারবে এনং জানতে পারবেন বহু অজানা সংগ্রামের গল্প।আমি মনে করি সত্যিকার ইতিহাস জানতে চাইলে সবাই বইটি অন্তত একবার পড়ে দেখবেন।ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবিসংবাদিত নেতা এবং একই সাথে বাংলাদেশের জাতির পিতা।তার জীবনে তিনি যেমন অনেক সময় গিয়েছেন আনন্দ হাস্যোজ্জ্বল সময়ের মধ্য দিয়ে আবার তেমনি অনেক সময় গিয়েছেন গভীর বেদনা দুঃখময় জীবনের মধ্য দিয়ে। তিনি আমাদের দেশকে মুক্ত করার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে বাঙ্গালীদের পথ দেখিয়েছেন। তার জন্যই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশ তারি দেওয়া উপহার।তার এই সংগ্রামী জীবনে তিনি যে সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন এই কথাগুলোই তিনি প্রতিনিয়ত ডাইরিতে লিখতেন।বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্যোগে এই বইটি শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় নয় বিশ্বের আরও বেশকিছু ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।বইটি পড়ে আপনারা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং তার জীবন থেকে নিজেও শিখতে পারবেন।বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই আমি বইটি পড়তে বলব।
Was this review helpful to you?
or
আমাকে সবথেকে আকৃষ্ট করেছে ১৯৫২ সালে জেলে যাওয়ার ঘটনাটি । যেখানে তার আমরণ অনশন সত্যি অবাক করার মত । বঙ্গবন্ধুকে জানার জন্য এই বইটি এক অনন্য সাক্ষ্য বহন করে । আর যাই হোক সত্য ইতিকথা জানা আমাদের প্রয়োজন । সুলভ মুল্যে ব্যাবস্থা করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
Was this review helpful to you?
or
লেখাটা আশাতীত রকম ভাল। বিশেষ করে জেলের। দিনগুলাের বর্ণনা। কুখ্যাত ডাকাতরা কয়েদী হয়ে গলার "খােকরে" সােনার গিনি লুকিয়ে রাখত, এই বই পড়েই জানলাম। একটানা জেল যে কী রকম দুঃসহ হয়ে ওঠে, রাজনৈতিক বন্দীদের মনােবল ভেঙে দেয়ার জন্য যা যা করা হত, সেসবেরও একটা ধারণা মিললাে। ভাসানী, ফজলুল হক আর সােহরাওয়ার্দির কাজগুলাে অন্য । এংগেলে দেখতে পেলাম, মিলিয়ে নেয়ার সুযােগ পেলাম আবুল মনসুর আহমেদের "আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর" বইখানার সঙ্গে। আত্মজীবনীটা তিনি শেষ করে যেতে পারতেন যদি, হয়তাে তাঁর নিজের অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা মিলতাে।
Was this review helpful to you?
or
রকমারি ডটকমের সাহায্যে আমার এক বন্ধু ২০১৭ সালে আমার ১৪ তম জন্মদিনে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি উপহার হিসেবে পাই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।। ❤
Was this review helpful to you?
or
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগিতা বই-অসমাপ্ত আত্মজীবনী(সুলভ) লেখক-শেখ মুজিবর রহমান মূল্য-২২০ ঘরনা-জীবনী ও স্মৃতিকথা পৃষ্ঠা-৩২৯ "একদিন সকালে আমি ও রেণু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর 'আব্বা' 'আব্বা' বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে, "হাচু আপা, হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি।" আমি আর রেণু দু'জনেই শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে যেয়ে ওকে কোলে নিয়ে বললাম, "আমি তো তোমারও আব্বা।" কামাল আমার কাছে আসতে চাইত না। আজ গলা ধরে পড়ে রইল। বুঝতে পারলাম, এখন আর ও সহ্য করতে পারছে না। নিজের ছেলেও অনেকদিন না দেখলে ভুলে যায়! আমি যখন জেলে তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস। রাজনৈতিক কারণে একজনকে বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা আর আত্মীয়স্বজন ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে দূরে রাখা যে কত বড় জঘন্য কাজ তা কে বুঝবে? মানুষ স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়।" একজন পিতার ঔরশজাত সন্তান। সে তার নিজের বাবাকে চিনতে পারছে না! ভাবা যায়? বিনা কারনে তার এই কারাভোগের দিনগুলো মুজিব আর তার পরিবার মিলে যেভাবে পার করেছিলেন, আমাদের পক্ষে কখনো সেই অনুভূতি গুলো বুঝতে পারা সম্ভব নয়। কোনদিন না। আমি যেদিন প্রথম জানলাম শেখ মুজিবের একটা জীবনী প্রকাশিত হয়েছে, যদিও তা পূর্ণাঙ্গ নয়।তবুও চোখ চকচক করছিলো। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মানুষটাকে এতো পছন্দ করি। এতো বেশি! আমি তা কখনই প্রকাশ করতে পারবো না । তার কারণও হয়তো অনেক যা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতা থেকে তাকে একটু একটু করে জেনেছি ঠিকি। তবে অপূর্ণতাও কম ছিলো না। সেটা আংশিক পুরণ করবার জন্যই বোধহয় এই বই সাহায্য করেছে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে অনেক অন্বেষণের পর হঠাৎ করে ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখহাসিনা তার পিতার চারটে আত্মজীবনী লেখার খাতা পান। এগুলো পাওয়ার পিছনেও আছে বিশাল ইতিহাস। যদিও সেগুলো পুরোনো কিন্তু সেগুলো পড়ে বুঝা গিয়েছিলো এগুলো বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী। এগুলো তিনি লিখেছিলেন ১৯৬৭ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দী থাকাকালীন সময়। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে তিনি লেখা শুরু করেন।এরপর লিখে যান পরিবার, দেশ, দেশের মানুষ সব কিছু। ১৯৫৫ সালে এসে লেখাটা থেমে যায়। আর আগায়নি। হয়তো এগিয়ে যেতো আরো অনেক খানি । আমরা হয়তো আরো অনেক না জানা কাহিনী জানতে পারতাম। কিন্তু আমাদের বঞ্চিত করেছে কতিপয় স্বার্থলোভী, পাষান্ড লোকগুলো। বাঁচতে দেয় নি তাকে। মেরে ফেলেছিলো ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে। এই বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনা। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শুধু একটি আত্মজীবনী নয় বাঙালী জাতির জন্য এক বিশাল ইতিহাসও বটে। একে জীবনী সাহিত্যও বলা চলে। অন্যান্য সাধারণ আত্মজীবনীমূলক রচনা গুলো থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এতে রয়েছে ১৯৩৯ থেকে ১৯৫৪-৫৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের নিরপেক্ষ তথ্য এবং বিশ্লেষন। অসাধারণ ভাষারীতি অত্যন্ত সহজ, সুন্দর এবং সাবলীল। আত্মজীবনী হলেও পড়ার সময় মনে হবে কল্পনিক কোন গল্প শুনছি বোধহয়। এর শুরটা হয় একবারে সহজভাবে মুজিবের বংশের পরিচয় দিয়ে। এরপর শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো। গ্রামের আর পাঁচটা কিশোর ছেলের মতো দুরন্তপনার কান্ডকাহিনীর মাঝেও স্পষ্ট হয় মুজিবের আপোষহীন চরিত্র। যে কখনও কোন অন্যায় এর সাথে আপোষ করেনি। চলতে থাকে তার জীবনের গল্পবলা। তার বিয়ের গল্প। কলকাতা কলেজের গল্প। রাজনীতি প্রবেশের গল্প। রাজনীতিতে সক্রিয় হবার ফলে পরিবার পরজনদের থেকে দূরে থাকার গল্প। সময় অসময়ের গল্প। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হয়ে হার্ট দুর্বল হওয়া, দুই বছর পর চোখের অসুখ গ্লুকমায় আক্রান্ত হয়ে চশমা নেয়ার সহ কৈশরেই হিন্দু সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শেখ মুজিব প্রথম জেলে যান। রাজনৈতিক জীবনে আপোসহীন ও নির্লোভী চরিত্রের জন্য তাকে বারবার কারাবরণ করতে হয়।১৯৩৬ সালে সুভাষ বসুর অনুকরনে রাজনীতিতে প্রবেশ করলেও , সক্রিয় হন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর হাত ধরে। বংশ পরিচয়ের পর সোহরাওয়ার্দীর সাথে পরিচয়ের অংশটাও তিনি বর্ণনা করেছেন। একেকটি গল্পের সাথে আরেকটি গল্প তিনি এমন ভাবে জুড়ে দিয়েছেন, তাতে কোন ফাঁক নেই প্রতিটা পৃষ্ঠা সমান আকর্ষনীয়। প্রতিটা পৃষ্ঠায় চমক। একটা মানুষ এতো সারল্য এতোটা বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের হতে পারে! আছে তার সততা, ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা। একজন দক্ষ ঔপন্যাসিকের মতো বর্ণনা করে গেছেন, যেখানে ইতিহাস আর একজন মহামানবের জীবনী এক হয়ে গেছে। একটা থেকে অন্যটা আলাদা করবার কোন জো নেই। আছে অনেক না জানা প্রশ্নের উত্তর। অনেক সমালোচনা । নিজের এবং রাজনৈতিক প্রতিটা ব্যক্তি বর্গের। দলের বিভিন্ন কাহিনী। কেন কংগ্রেস থেকে মুসলিম লীগ? কেন মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী মুসলীম লীগ? কেন আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম বাদ হলো? যে পাকিস্তান গড়ার জন্য এতো কিছু। সেই পাকিস্তান হওয়ার পর তাকে কেনই বা সেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই সংগ্রাম করতে হয়েছে? তাছাড়া আত্মজীবনীটি লেখার প্রেক্ষাপট, তার জন্ম-বংশ পরিচয়, শৈশব, স্কুল-কলেজের শিক্ষাজীবন, তার সংগ্রাম, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থানে তার কর্মকাণ্ড, কলকাতায় হিন্দু মসলিম দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, ৪৭ দেশভাগ,কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনীতি, তাঁর অংশগ্রহণ, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তানের বিমাতা সুলভ আচরণ। ষড়যন্ত্রের এবং এসব বিষয়ে তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। তাছাড়া এরই ফাঁকে ফাঁকে তার সহধর্মিনী এবং পারিবারিক জীবন সম্পর্কেও বর্ণনা করেছেন। তিনি কেন জাতির পিতা। কেনইবা তাকে জাতির স্থপতি বলা হয়, তার পরিচয় মিলবে পৃষ্ঠার বইটাতে। না, তিনি সেটা দাবী করেন নি নিজের সততা সংগ্রাম দিয়ে আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র তিনিই হতে পারেন একটি জাতির যোগ্য নেতা। এই মলাটবন্দী বইটাকে শুধু মাত্র জীবনী ভাবলে ভুল হবে। কেননা এটা একটা জাতির সূচনা লগ্নের ইতিহাস।
Was this review helpful to you?
or
Informative
Was this review helpful to you?
or
শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই পড়বেন
Was this review helpful to you?
or
One of the two books -- Shefali -- was in bad shape. There were stains on almost all pages of the book. Very disappointing...
Was this review helpful to you?
or
এই প্রথম রিভিউ লেখতেছি তাও আবার রকমারি ডট কম এ!! প্রথম এখান থেকেই বই কেনা শুরু অনলাইনএ। প্রথম কেনা বই 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী '। অনেক সুন্দর একটা বই। বইয়ের পেজ গুলো অনেক ভালো ছিল, তার জীবনি পরে আমি আমার জিবনি লেখা শুরু করেছি। সত্তি তিনি একজন মহানেতা ছিলেন। তার ছেলে বেলা যে এত সুন্দর ছিল তা জানা ছিল না। আসলে আমার বলার চেয়ে বইটি পড়লে আরো মজা পাবেন আশা করছি। বইএর পেজগুলো অনেক মসৃণ হওয়ায় পড়তে আরো ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ রকমারি ডট কম কে।❤❤
Was this review helpful to you?
or
As it is written by ' Bangabandhu Sheik Muzibur Rahaman ', I hope I need not talk very much about this book. This book is just a treasure for Bangladeshi and Bengali for all time. By reading this book, anyone can achieve knowledge about his whole life.
Was this review helpful to you?
or
This book is a rare piece of property for Bangladesh, as it was written by the Great leader of Bangladesh, bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, which contains the unknown history of Bangladesh. This book inspires us how we can resolve problems in crisis moment and how a leader struggles continuously for making a country independent without any sort of personal benefit . Each and every young generation should read this book for knowing the true historical back ground of Bangladesh.
Was this review helpful to you?
or
Allah valo Jane boi e kototuk sotti r kototuk Mitha
Was this review helpful to you?
or
"অসমাপ্ত আত্মজীবনী" বই বঙ্গবন্ধুর অার্দশের প্রতিটি যোদ্বার পড়া প্রয়োজন এবং বুকে ধারন করতে পারলেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব। উনি ছিলেন বাংলাদেশের স্তম্ভ।
Was this review helpful to you?
or
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়াবারাকাতহু ?বইয়ের পরিচিতিঃ বই: অসমাপ্ত আত্নজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশনী: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড রিভিউ লেখক :সাব্বির আরাফাত ?ভৃমিকা: “থালা-বাটি কম্বল জেলখানার সম্বল।” —বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের বড় একটি অংশই কেটেছে কারাগারে।বঙ্গবন্ধু! স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নসারথি বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে লিখলে লেখার যেন শেষই হবে না।বঙ্গবন্ধু আত্মবিশ্বাসের উদাহরণ। বঙ্গবন্ধু মানে প্রশংসার ঝুড়ি। ?কিছু কথা -বঙ্গবন্ধু লিখেছেন—“চিন্তা করিও না।জীবনের বহু ঈদ এই কারাগারে আমাকে কাটাতে হয়েছে।আরও কত হবে ঠিক নেই! তবে কোনো আঘাতেই আমাকে বাঁকাতে পারবে না।খোদা সহায় আছে।” এটি ছিল ঈদের সময় বঙ্গমাতাকে লেখা বঙ্গবন্ধুর একটি চিঠি।তার এই উক্তি দ্বারা বোঝা যায় অমন কঠিন সময় তার আত্মবিশ্বাস গলে পড়েনি বরং দৃঢ় থেকে দৃঢ়তম হয়ে রূপান্তর ঘটেছে । শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণ প্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অস্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে। ?️বইটি পড়ে যে বিষয় গুলো জানতে পারবেন- ১)বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট। ২ লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। ৩) দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি। ৪)দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি। পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন। ৫)ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন। ৬)আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে । ৭)লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন । ৮)একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। ৯)"অসমাপ্ত আত্মজীবনী" গ্রন্থে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বাঙালীজাতিরভাষা-সমাজ-সংস্কৃতি-কৃষ্টির প্রতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাগ্রচিত্ততা, তাঁর রাষ্ট্রভাবনা, ইতিহাস চেতনা, নেতৃত্ব, নেতৃত্বের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য, মূল্যবোধ, কারাস্মৃতি। ১০)পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে প্রভেদ ও বৈষম্য, ভাষা আন্দোলন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও সংগঠন বিস্তার ইত্যাদি বিস্তারিত বর্ণিত হলেও, ?একটা বিষয় আমাকে বেশ চমকিত করেছে, আর তা হচ্ছে তাঁর শান্তি সম্মেলন উপলক্ষে গনচীন ভ্রমন। ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীন শান্তি সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। মাও সেতুং-এর দেশ নয়াচীনে তিনি চীনা মানুষের শিক্ষা, আচার, দেশপ্রেম আর দেশ গড়ার একাগ্রতা দেখে অভিভূত হন, এমনকি পশ্চিমা ব্লেন্ডও তিনি পাননা সেখানে 'সেভ' করতে, যেহেতু চীনারা দেশেপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে পশ্চিমা ব্লেডের পরিবর্তে শেভ করেন নিজ দেশের খুর দিয়ে। ?অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই টি কেন পড়বেন?- এই বইটি পড়ে জানতে পারবেন কেন বঙ্গবন্ধুর নামে এত উপাধি দেওয়া হয়েছে।কেন তাকে বঙ্গের বন্ধু বলা হয়।তার দৃষ্টিকোণে মুক্তিযুদ্ধ কেমন ছিল।তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কেমন ছিল।এছাড়াও চীনের মানুষদের দেশপ্রেম সম্পর্কে জানবেন। এই দেশপ্রেমের কারণেই হয়তো তাদের রাষ্ট্র এত উন্নত।যারা রাজনীতি সম্পর্কে জানতে চায় তাদের অবশ্যই এই বইটি পড়া।সেসময়কার রাজনীতি সম্পর্কে জানবেন।লেখক এই বইয়ের মাধ্যমে সেই সময় তার সাথে ঘটে যাওয়া সব বিষয় লিখে রেখেছেন।এটি একটি অসাধারণ বই।আমরা বাঙালি আমাদের তো এই বই সম্পর্কে জানতেই হবে, কেননা কোন বিদেশি লোক যদি কখনো জানতে চায় তোমার দেশের জাতিরপিতা সম্পর্কে কিছু বলো তখন যেন আমরা অপারগতার জন্য লজ্জায় মাথা নিঁচু না করি। ?বই কোথা থেকে কিনবেন-এখন ঘরে বসেই রকমারি. কমে বই অর্ডার করা যায়।তাই আর দেরি না করে অর্ডার দিয়ে ফেলুন রকমারি তে। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়াবারাকাতহু ?বইয়ের পরিচিতিঃ বই: অসমাপ্ত আত্নজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশনী: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড রিভিউ লেখক :সাব্বির আরাফাত ?ভৃমিকা: “থালা-বাটি কম্বল জেলখানার সম্বল।” —বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের বড় একটি অংশই কেটেছে কারাগারে।বঙ্গবন্ধু! স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নসারথি বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে লিখলে লেখার যেন শেষই হবে না।বঙ্গবন্ধু আত্মবিশ্বাসের উদাহরণ। বঙ্গবন্ধু মানে প্রশংসার ঝুড়ি। ?কিছু কথা -বঙ্গবন্ধু লিখেছেন—“চিন্তা করিও না।জীবনের বহু ঈদ এই কারাগারে আমাকে কাটাতে হয়েছে।আরও কত হবে ঠিক নেই! তবে কোনো আঘাতেই আমাকে বাঁকাতে পারবে না।খোদা সহায় আছে।” এটি ছিল ঈদের সময় বঙ্গমাতাকে লেখা বঙ্গবন্ধুর একটি চিঠি।তার এই উক্তি দ্বারা বোঝা যায় অমন কঠিন সময় তার আত্মবিশ্বাস গলে পড়েনি বরং দৃঢ় থেকে দৃঢ়তম হয়ে রূপান্তর ঘটেছে । শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণ প্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অস্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে। ?বইটি পড়ে যে বিষয় গুলো জানতে পারবেন- ১)বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট। ২ লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। ৩) দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি। ৪)দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি। পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন। ৫)ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন। ৬)আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে । ৭)লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন । ৮)একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। ৯)"অসমাপ্ত আত্মজীবনী" গ্রন্থে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বাঙালীজাতিরভাষা-সমাজ-সংস্কৃতি-কৃষ্টির প্রতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাগ্রচিত্ততা, তাঁর রাষ্ট্রভাবনা, ইতিহাস চেতনা, নেতৃত্ব, নেতৃত্বের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য, মূল্যবোধ, কারাস্মৃতি। ১০)পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে প্রভেদ ও বৈষম্য, ভাষা আন্দোলন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও সংগঠন বিস্তার ইত্যাদি বিস্তারিত বর্ণিত হলেও, ?একটা বিষয় আমাকে বেশ চমকিত করেছে, আর তা হচ্ছে তাঁর শান্তি সম্মেলন উপলক্ষে গনচীন ভ্রমন। ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীন শান্তি সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। মাও সেতুং-এর দেশ নয়াচীনে তিনি চীনা মানুষের শিক্ষা, আচার, দেশপ্রেম আর দেশ গড়ার একাগ্রতা দেখে অভিভূত হন, এমনকি পশ্চিমা ব্লেন্ডও তিনি পাননা সেখানে 'সেভ' করতে, যেহেতু চীনারা দেশেপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে পশ্চিমা ব্লেডের পরিবর্তে শেভ করেন নিজ দেশের খুর দিয়ে। ?অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই টি কেন পড়বেন?- এই বইটি পড়ে জানতে পারবেন কেন বঙ্গবন্ধুর নামে এত উপাধি দেওয়া হয়েছে।কেন তাকে বঙ্গের বন্ধু বলা হয়।তার দৃষ্টিকোণে মুক্তিযুদ্ধ কেমন ছিল।তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কেমন ছিল।এছাড়াও চীনের মানুষদের দেশপ্রেম সম্পর্কে জানবেন। এই দেশপ্রেমের কারণেই হয়তো তাদের রাষ্ট্র এত উন্নত।যারা রাজনীতি সম্পর্কে জানতে চায় তাদের অবশ্যই এই বইটি পড়া।সেসময়কার রাজনীতি সম্পর্কে জানবেন।লেখক এই বইয়ের মাধ্যমে সেই সময় তার সাথে ঘটে যাওয়া সব বিষয় লিখে রেখেছেন।এটি একটি অসাধারণ বই।আমরা বাঙালি আমাদের তো এই বই সম্পর্কে জানতেই হবে, কেননা কোন বিদেশি ভদ্র লোক যদি কখনো জানতে চায় তোমার দেশের জাতিরপিতা সম্পর্কে কিছু বলো তখন যেন আমরা অপারগতার জন্য লজ্জায় মাথা নিঁচু না করি। ?আরো একটি কথা_ এই বইটির ভৃমিকা লিখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সাব জেলে থাকাকালীন সময় বইটির ভৃমিকা লেখেন।পরর্বতীতে বই টি প্রকাশ করেন।আর বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হলে শুধু এই একটি বই পড়লে হবে না জানার শেষ নাই। ?বই কোথা থেকে কিনবেন-এখন ঘরে বসেই রকমারি. কমে বই অর্ডার করা যায়।তাই আর দেরি না করে অর্ডার দিয়ে ফেলুন রকমারি তে। #sorone_mohanayok_book_review_2021
Was this review helpful to you?
or
? আমার ফাঁসি চাই
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃঅসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকঃশেখ মুজিবুর রহমান প্রকাশনীঃদি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড মূল্যঃ ১৮৭ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির আবেদন বহুমাত্রিক। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি আত্মজীবন ভিত্তিক বই হয়ে থাকেনি, হয়ে উঠেছে ১৯৩৯ থেকে ১৯৫৪-৫৫ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের বিশেষত পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের অনবদ্য, নিরপেক্ষ, নির্মোহ দলিল; একজন হৃদয়বান নেতার এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলোকে গভীরভাবে অনুধাবন করে সেসব সমাধানের সংগ্রামের অসাধারণ আখ্যান। অসাধারণ চড়াই-উৎরাইয়ে ভরা লেখকের জীবনের গল্প যে কোন রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানায়। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির পরিক্রমা মূলত দুইটি প্রধান কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত। ধারা দুটো হল লেখকের রাজনৈতিক জীবন এবং লেখকের ব্যক্তিগত জীবন।এথেকে আবিষ্কার করতে পারি ব্যক্তি মুজিব কে। একজন সাহিত্যক না হয়েও যে এমন সাবলীল লেখনি লেখা যায় তার দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু।আজও যখন ৭ই মার্চের ভাষণ কর্ণপাত হয় শরীর শিহরিত হয়ে যায়। ঠিক তেমনি এই বইটি পড়েও বুকের ভেতর এক ভিন্ন রকম অনুভূতি জাগে। মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ানো এক সাধারণ বাঙালির এমন অসাধারণ কলম-কালির মহিমায় সত্যিই আমি অভিভূত।বইটি শুধু আত্মজীবনী নয়, এটি পাঠক ও ব্যাক্তি মুজিবের মধ্যে পরিচায়ক। যতবার বইটি পড়েছি আমার শরীর শিউরে উঠেছে। মনে হচ্ছিল মুজিব নিজেই কথা বলছেন পাশে বসে।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় বলতে হয় যে , জাতির জনক সম্পর্কে জানবার জন্য তার লিখিত আত্মজীবনীই সর্বোত্তম।
Was this review helpful to you?
or
Sheque Mujibur Rahman He is my alltime Favourite Person. I believe He is the only man who is The Alltime Great Person In Bangladesh. Bangladesh never Independence when A Great Leader Sheque Mujibur Rahman not born in our country Bangladesh !!!
Was this review helpful to you?
or
মিথ্যা ও বানোয়াট ইতিহাস নিয়ে অসত্য একটি বই। ইতিহাসকে বিকৃত করাটাই এদের লক্ষ্য।
Was this review helpful to you?
or
একজন ভালো মানুষ, একজন ভালো নেতা, সর্বোপরি একজন ত্যাগী রাজনীতিবিদ হওয়ার সব উপাদন এখানে আছে। সব মানুষের জন্য বইটি আর রাজনীতি যারা করেন তাদের জন্য তো বলার অপেক্ষা রাখে না!
Was this review helpful to you?
or
২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে।
Was this review helpful to you?
or
eta na pore hadiser boi porun
Was this review helpful to you?
or
আমি কয়েকদিন বাড়িতে ছিলাম। আব্বা খুবই দুঃখ পেয়েছেন। আমি আইন পড়ব না শুনে বললেন, “যদি ঢাকায় না পড়তে চাও, তবে বিলাত যাও। সেখান থেকে বার এট ল' ডিগ্রি নিয়ে এস। যদি দরকার হয় আমি জমি বিক্রি করে তােমাকে টাকা দিব।” আমি বললাম, “এখন বিলাত গিয়ে কি হবে, অর্থ উপার্জন করতে আমি পারব না। আমার ভীষণ জেদ হয়েছে মুসলিম লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলাম, এখন দেখি তার উল্টা হয়েছে। এর একটা পরিবর্তন করা দরকার। জনগণ আমাদের জানত এবং আমাদের কাছেই প্রশ্ন করত। স্বাধীন হয়েছে দেশ, তবু মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে না কেন? দুর্নীতি বেড়ে গেছে, খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বিনা বিচারে রাজনৈতিক কর্মীদের জেলে বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে মুসলিম লীগ নেতারা মানবে না। পশ্চিম পাকিস্তানে শিল্প কারখানা গড়া শুরু হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না। রাজধানী করাচি। সব কিছুই পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব বাংলায় কিছু নাই। আব্বাকে সকল কিছুই বললাম। আব্বা বললেন, “আমাদের জন্য কিছু করতে হবে না। তুমি বিবাহকরেছ, তোমার মেয়ে হয়েছে, তাদের জন্য তো কিছু একটা করা দরকার।” আমি আব্বাকে বললাম, “আপনি তাে আমাদের জন্য জমিজমা যথেষ্ট করেছেন, যদি কিছু না করতে পারি, বাড়ি চলে আসব। তবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া চলতে পারে না। আমাকে আর কিছুই বললেন না। রেণু বলল, “এভাবে তােমার কতকাল চলবে।” আমি বুঝতে পারলাম, যখন আমি ওর কাছে এলাম । রেণু আড়াল থেকে সব কথা শুনছিল। রেণু খুব কষ্ট করত, কিন্তু কিছুই বলত না। নিজে কষ্ট করে আমার জন্যে টাকা পয়সা জােগাড় করে রাখত যাতে আমার কষ্ট না হয়।
Was this review helpful to you?
or
very bad and illogical. should not be buy
Was this review helpful to you?
or
Facebook বিনামূল্যে রয়েছে facebook সম্পাদনা করুন · মুছুন Shikha Chakraborty তিনি রাজনীতির মানুষ, লেখক নন। শব্দ আর বাক্যের ব্যবহারে, ভাষা আর অলংকারে, উপমা আর রূপকের কারুকার্যে মন ভোলানো লেখনি তাঁর ছিল না। কিন্তু তারপরেও মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়তে হয়। সহজ মানুষের সহজ বাক্য, সহজ শব্দ, সহজ ভাষা, হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা, ঠিক তাঁর ভাষণগুলোর মতোই। বন্ধুবান্ধব আর স্ত্রীর অনুরোধে জেলখানার বসে তিনি লিখতে শুরু করেছিলেন তাঁর অসমাপ্ত জীবনের অসমাপ্ত গল্প। বইয়ের একেবারে শুরুতেই সরল স্বীকারোক্তি, "লিখতে যে পারি না; আর এমন কী করেছি যা লেখা যায়! আমার জীবনের ঘটনাগুলি জেনে জনসাধারণের কি কোনো কাজে লাগবে? কিছুই তো করতে পারলাম না। শুধু এটুকু বলতে পারি, নীতি ও আদর্শের জন্য সামান্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে চেষ্টা করেছি।" ‘শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি।’ বইটিকে ফ্ল্যাপে এভাবেই পরিচিত করে দেয়া হয়েছে। লেখক যখন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তখন এর চেয়ে অধিক ভূমিকার আর কী প্রয়োজন থাকতে পারে! বইটা শেষ করতে হলো বেশ ভালো রকমের অতৃপ্তি নিয়ে। অতৃপ্তির কারণ আসলে নামেই বোঝা যায় - অসমাপ্ত আত্মজীবনী। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া, কোনো উপসংহার ছাড়া, লেখকের অসমাপ্ত জীবনের মতোই একেবারেই হুট করে শেষ হয়ে গেল বইটা। এই অঞ্চলের রাজনীতি যখন ধীরে ধীরে নানা কুশীলবের অংশগ্রহণে জটিল হয়ে উঠছে, পশ্চিম পাকিস্তানি আর তার ধামাধরা স্বার্থান্বেষী বাঙ্গালিরা যখন সদ্য স্বাধীন দেশে ইংরেজ আমলের ঔপনিবেশিক পন্থা টিকিয়ে রেখে নতুন ভাবে শোষণের জাল বিস্তার করছে, গোপালগঞ্জের কিশোর শেখ মুজিব যখন একটু একটু করে গোটা বাংলাদেশের শেখ মুজিব হয়ে উঠছেন ঠিক তখনই শেষ হয়ে গেল বইটা। বইটির রচনাকাল ১৯৬৭ সাল হলেও এই বইয়ে মূলত উঠে আসার সুযোগ পেয়েছে লেখকের রাজনৈতিক জীবনের শৈশব থেকে রাজনৈতিক যৌবনের শুরুর দিককার অংশ। পাকিস্তানের আন্দোলনের সময়কার রাজনীতি সচেতন এক কিশোর মুজিব থেকে ১৯৫৪ এর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের কড়চা পর্যন্ত মূলত এই বইয়ের কলেবর। বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবনের খুব সামান্য অংশের সাথেই, আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে একেবারে শুরু দিকের অংশের সাথেই কেবল পরিচিত করায় এই বইটি। এখানে গোপালগঞ্জের ডানপিটে সাহসী সমাজ সচেতন কিশোর শেখ মুজিবের পরিণত বলিষ্ঠ নেতা হয়ে ওঠার কিছুটা আভাস পাই। কিন্তু সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার গল্পের প্রায় কিছুই আমরা পাই না। কিন্তু এই হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটার সাথে, তাঁর রাজনৈতিক দর্শন আর উপলব্ধির সাথে, তাঁর চেতনা আর স্বপ্নের সাথে, তাঁর বোধ আর বোধের বিবর্তনরেখার সাথে পরিচিত হয়ে উঠি। কোনো রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট বা বিশাল প্রভাবশালি ধনাঢ্য কোনো পরিবারে জন্ম নেন নি তিনি। গ্রামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত গৃহস্থ পরিবারে জন্ম নেয়া একজন কীভাবে হয়ে উঠলেন বাংলার মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক? যেসব নেতাদের কাছে রাজনীতির পাঠ নিয়ে কিশোর মুজিব উঠে এসেছেন ধীরে ধীরে, মঞ্চের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে কীভাবে তিনি তাঁদের ছাপিয়ে আরও অনেক উপরে উঠে গেলেন? কীভাবে হয়ে উঠলেন নেতাদের নেতা? সাম্প্রদায়িকতাকে উপজীব্য করে শুরু হয়েছিল যে আন্দোলন, সেই পাকিস্তান আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে যাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা তিনি কীভাবে আর কেন হয়ে উঠলেন অসাম্প্রদায়িক বাংলার গণমানুষের নেতা? শেখ মুজিব রাজনীতি করেছেন মূলত মানুষের জন্য, আর কিছু না বোঝা গেলেও এইটুকু অন্তত বুঝতে পারা যায় এই তিনশ পৃষ্ঠার এই ছোট্ট বই থেকে। আর এই জন্যই তাঁর কোনো পিছুটান ছিল না, স্বার্থের জন্য আপোষের মনোভাব ছিল না, পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার দায় ছিল না। যা করেছেন নিজে বিশ্বাস করে করেছেন। এজন্যে বারবার তিনি উল্লেখ করেছেন তিনি গোপন রাজনীতি বা পালিয়ে থেকে বিবৃতি দেয়ার রাজনীতি পছন্দ করতেন না। বারবার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি শোষক শ্রেণির দ্বারা। পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু সেই আন্দোলনের ফসল পাকিস্তানে একেবারে শুরু থেকেই তিনি জেলের ভেতর কাটিয়েছেন অধিকাংশ সময়। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে জন্য সংগ্রাম করেছিলেন তা তিনি পাননি, বরং সাদা চামড়ার বদলে কালো চামড়ার শোষণ পেয়েছে জনগণ। দেখলেন, শাসকের নাম বদলেছে রঙ বদলেছে, কিন্তু চরিত্র বদলায় নি। যাদের সাথে নিয়ে পাকিস্তান আন্দোলন করেছেন, তাদের অনেকের বিপক্ষেই তাই তাঁর আর তাঁর সমমনাদের নতুন সংগ্রাম শুরু হলো। দুইশ বছরের বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন এই অঞ্চলের মুসলমান আর হিন্দুর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরাজমান যে অসন্তোষ তা কেবল বৃদ্ধিই করেছিল। তার চূড়ান্ত রূপ পায় সম্ভবত যখন ধর্মের নামে দেশভাগের আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়ল ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। এই অঞ্চলের মুসলমানদের জন্য উন্নতির আর কোনো বিকল্প পথ খোলা ছিল কিনা, সেই বিতর্ককে এই লেখায় সাবধানে পাশ কাটিয়েই বলা যায়, কোনো সাম্প্রদায়িক আন্দোলন সাধারণত কোনো ভালো ফলাফল বয়ে আনে না। দেশভাগ আর তার আগে পরের সময়ের কথা বার বার উঠে এসেছে। উঠে এসেছে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার কথা, কখনও ঢাকায়, কখনও কোলকাতায়, কখনও এপারে, কখনও ওপারে। কখনও রাজনৈতিক নেতারা হিন্দু-মুসলিম অসন্তোষ উস্কে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টিতে সহায়তা করেছেন, নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে। এখনকার মতোই ইমাম, হুজুর আর পীরসাহেবেরা অংশ নিয়েছেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অনুঘটক হিসেবে। জনগণকে ধর্মের নামে আলাদা করতে চেয়েছেন বারবার, সাম্প্রদায়িক নেতা আর অনেক ধর্মগুরু। এইসব ঘটনাই সম্ভবত ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান আন্দোলনের একজন নিবেদিত কর্মী শেখ মুজিবকে বুঝতে শিখিয়েছে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ না গড়তে পারলে আসলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। পাকিস্তান আমল থেকেই শুরু হয় যে কোনো ইস্যুতে ভারত আর ইসলাম ধ্বংসের জুজু দেখানো শুরু হয়। অবাক হয়ে লক্ষ্য করি সেই রাজনীতি করে যাচ্ছে এখনও সেই পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ভূত। ২১ শে ফেব্রুয়ারির আন্দোলনে গুলি চালানোর পরে সরকার থেকে বলা হয়, "হিন্দু ছাত্ররা কলকাতা থেকে এসে পায়জামা পরে আন্দোলন করেছে।" ধীরে ধীরে তিনি উপলব্ধি করেছেন পাকিস্তান আসলে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। দুঃখ করেই তিনি লিখেছেন, "দুঃখের বিষয়, পাকিস্তান আন্দোলনের যারা বিরোধিতা করেছিল, এখন পাকিস্তানকে ইসলামিক রাষ্ট্র করার ধুয়া তুলে রাজনীতিকে তারাই বিষাক্ত করে তুলেছে। মুসলিল লীগ নেতারাও কোনো রকম অর্থনৈতিক ও সমাজনৈতিক প্রোগ্রাম না দিয়ে একসঙ্গে যে স্লোগান নিয়ে ব্যস্ত রইল, তা হল 'ইসলাম'।" অবাক লাগে, ধর্ম বেঁচে যারা মূলত জীবন ধারণ করে, তাদের চারিত্রিক গুণাবলি এত বছর পরেও খুব একটা বদলায় নি। যুক্তফ্রন্টের আর মুসলিম লীগের নির্বাচনের সময় মুজিবের সাথে জনপ্রিয়তায় টেক্কা দিতে না পেরে ঠিক এখনকার মতোই ধর্মের ট্রাম্পকার্ড খেলার চেষ্টা করে মুসলিম লীগ। লেখকের ভাষায়, "... মুসলিম লীগ যখন দেখতে পেলেন তাদের অবস্থা ভালো না, তখন এক দাবার ঘুঁটি চাললেন। অনেক বড় বড় আলেম, পীর ও মাওলানা সাহেবদের হাজির করলেন। ... ... এক ধর্মসভা ডেকে ফতোয়া দিলেন আমার বিরুদ্ধে যে, 'আমাকে ভোট দিলে ইসলাম থাকবে না, ধর্ম শেষ হয়ে যাবে'। সাথে শর্ষিনার পীর সাহেব, বরগুনার পির সাহেব ... ... সবাই আমার বিরুদ্ধে নেমে পড়লেন এবং যত রকম ফতোয়া দেওয়া যায় তাহা দিতে কৃপণতা করলেন না।" কিন্তু বাংলার মানুষের জন্য রাজনীতি করতে করতে তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন বাঙালিকে এইভাবে ধোকা দেওয়া যাবে না। আমি বইটি থেকে মূলত সেই সময়ের শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন বুঝতে চেষ্টা করেছি। পাতার পর পাতা থিসিস লিখে আর গবেষণা করে মাঠের রাজনীতিতে যারা কিছুই করতে পারেন নি তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন নি তিনি। তিনি কাজ করতে করতে শিখেছেন, ভুল হলে স্বীকার করেছেন, সংশোধনের চেষ্টা করছেন। বলেছেন এভাবে, "আমার যদি কোনো ভুল হয় বা অন্যায় করে ফেলি, তা স্বীকার করতে আমার কোনোদিন কষ্ট হয় নাই। ভুল হলে সংশোধন করে নেব, ভুল তো মানুষেরই হয়ে থাকে। ... ... আমি অনেকের মধ্যে দেখেছি, কোনো কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। ... ... আমি চিন্তা ভাবনা করে যে কাজটা করব ঠিক করি, তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয় সংশোধন করে নেই। কারণ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না।" আন্দোলন আর সংগ্রামের ইতিহাসের মধ্যে দিয়ে সেই সময়কার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতার সাথে বিভিন্ন তাঁর মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সেইসব নেতাদের কিছু পরিচয় পাওয়া যায়। বইয়ে ঘুরে ফিরে এসেছে সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা, যাঁর হাত ধরে তিনি রাজনীতি শিখেছেন। লেখক একেবারে শুরুর দিকেই বলছেন, "ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট কোঠায় বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হল। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য আমি পেয়েছিলাম। কিভাবে তিনি আমাকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন এবং কেমন করে তাঁর স্নেহ আমি পেয়েছিলাম।" বার বার বিভিন্ন জায়গায় তিনি সোহরাওয়ার্দী সাহেবের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন, তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। কিন্ত অবাক লাগে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একেবারে শুরুর দিকে যখন শেখ মুজিব একাবেরাই বিশিষ্ট কেউ হয়ে ওঠেন নি, তখনও তাঁর নিজের মত আর বিশ্বাসের প্রতি ছিল ভয়ঙ্কর আত্মবিশ্বাস। এক সভার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলছেন, "তিনি আনোয়ার সাহেবকে একটা পদ দিতে বললেন। আমি বললাম কখনোই হতে পারে না। সে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোটারি করেছে, ভালো কর্মীদের জায়গা দেয় না। কোনো হিসাব নিকাশ কোনোদিনও দাখিল করে না। শহীদ সাহেব আমাকে বললের Who are you? You are nobody. আমি বললাম, If I am nobody, then why you have invited me? You have no right to insult me. I will prove that, I am somebody. Thank you, sir. I will never come to you again." অবাক হয়ে ভাবতে হয়, কতটুকু আত্মবিশ্বাস থাকলে একটা ছোট্ট মহকুমার সামান্য একজন কিশোর রাজনীতিবিদ সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতার সামনে এভাবে নিজের মতামত দিতে পারে! পশ্চিম পাকিস্তানি তথা অবাঙ্গালি নেতাদের মধ্যে একমাত্র জিন্নাহর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ছিল বলে মনে হয়েছে। বাকি অধিকাংশ অবাঙ্গালি নেতা মূলত স্বার্থান্বেষী আর ক্ষমতালিপ্সু মনোভাবই ফুটে উঠেছে লেখার বিভিন্ন অংশে। ধীরে ধীরে সম্ভবত তিনি এটাও বুঝতে পেরেছিলেন যারা পশ্চিম পাকিস্তানিদের ধামাধরা, মূলত ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন, তাঁরাই রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের সময় নেজামে ইসলামের নেতাদের ক্ষমতালিপ্সু আদর্শহীন মনোভাব তাঁকে পীড়িত করে। কিন্তু এইসব শিক্ষাই তাকে ধীরে ধীরে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির গুরুত্ব আরও ভালোভাবে উপলব্দি করতে উদ্বুদ্ধ করে। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে তিনি মূল্যায়ন করছেন এভাবে, "এই নির্বাচনে একটা জিনিস লক্ষ্য করা গেছে যে, জনগণকে ‘ইসলাম ও মুসলমানের নামে’ স্লোগান দিয়ে ধোঁকা দেওয়া যায় না। ধর্মপ্রাণ বাঙালি মুসলমানরা তাঁদের ধর্মকে ভালোবাসে; কিন্তু ধর্মের নামে ধোঁকা দিয়ে কার্যসিদ্ধি করতে তারা দিবে না এ ধারণা অনেকেরই হয়েছিল।" সেই সময়ের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাওলানা ভাসানী, যাঁকে বইয়ে বিভিন্ন জায়গায় লেখক মূলত মাওলানা সাহেব হিসেবে সম্মোধন করেছেন, তাঁর প্রতি বিভিন্ন জায়গায় ভরসা আর শ্রদ্ধার প্রকাশ থাকলেও তাঁর কিছু কর্মকাণ্ডে লেখকের বিরক্তিও চাপা থাকেনি। ব্যক্তিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় আর তাঁর নিকটবর্তী সময়কাল ছাড়া মাওলানা ভাসানীর ব্যাপারে খুব বেশি জানাশোনা আমার নেই। কিন্ত মুক্তিযুদ্ধের সময় আর তার নিকট অতীতে, গুরুত্বপূর্ণ সময় আর সিদ্ধান্তের সময় উধাও হয়ে যাওয়ার বা দায়িত্ব না নেয়ার কথা পড়েছি। মাওলানা ভাসানীর এই রকম কিছু কর্মকাণ্ডে নিজের বিরক্তি বেশ ভালোভাবেই প্রকাশ করেছেন,"মাওলানা ভাসানীর এই দরকারের সময় আত্মগোপনের মনোভাব কোনোদিন পরিবর্তন হয় নাই। ভবিষ্যত অনেক ঘটনায় তার প্রমাণ হয়েছে।" এখানেই সম্ভবত পার্থক্য গড়ে উঠেছে। একজন যিনি গণমানুষের নেতা হয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে গেছেন, রাজনৈতিক কেবলা বা অন্য কোনো কারণে নিজের হাতে দায়িত্বের কালিমা লাগাতে চান নি, আর অন্যজন সামান্য এক মহকুমার সচেতন কিশোর রাজনীতিবিদ থেকে হাতে কলমে কাজ করে, ভুল করতে করতে হয়ে উঠেছেন গণমানুষের নেতা, বাঙ্গালির আশা আকাঙ্খার প্রতীক। মূলত সাম্যে বিশ্বাস বিশ্বাস করতেন তিনি, বিশ্বাস করতেন গণমানুষের অধিকারে। সরাসরি সমাজতান্ত্রিক রাজনীতি তিনি করেন নি। বিভিন্ন সময় তাঁর লেখায় মনে হয়েছে তিনি অতি বিপ্লবীদের পছন্দ করতেন না তিনি। কারণ এই অঞ্চলের অতি বিপ্লবীদের অনেকেই ছিল মূলত খাতা কলমের রাজনীতিবিদ আর জনবিচ্ছিন্ন। অন্যদিকে তিনি চেয়েছেন জণগণকে নিয়ে প্রকাশ্য নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে। নিজে সরাসরি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন না করলেও তিনি মূলত সমাজতন্ত্রের মূলনীতি অর্থাৎ সাম্যে বিশ্বাস করতেন। প্রায় একই সময় স্বাধীন হওয়া কম্যুনিস্ট নতুন চীন সফরে গিয়ে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন আর উপলব্ধি করেছেন নেতাদের স্বার্থান্বেষী কার্যকলাপে কীভাবে জণগনের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটছে। চীন সফরের কথা লিখতে গিয়ে সমাজতন্ত্রের প্রতি তার মনোভাব ব্যক্ত করতে গিয়ে বলছেন, "আমি নিজে কম্যুনিস্ট নই। তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। এঁকে আমি শোষণের যন্ত্র হিসাবে মনে করি। এই পুঁজিপতি সৃষ্টির অর্থনীতি যতদিন দুনিয়ায় থাকবে ততদিন দুনিয়ায় মানুষের উপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না।" আরও বলছেন এভাবে, "আওয়ামী লীগ ও তার কর্মীরা যে কোনো ধরণের সাম্প্রদায়িকতাকে ঘৃণা করে। আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক নেতা ও কর্মী আছে যারা সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে; এবং তারা জানে সমাজতন্ত্রের পথই একমাত্র জনগণের মুক্তির পথ। ধনতন্ত্রবাদের মাধ্যমে জনগণকে শোষণ করা চলে। যারা সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা কোনোদিন সাম্প্রদায়িকিতায় বিশ্বাস করতে পারে না। তাদের কাছে মুসলমান, হিন্দু, বাঙালি, অবাঙালি সকলেই সমান।" সমাজতন্ত্রের প্রতি এই দূর্বলতাই হয়ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে দেশে তাঁকে বাকশাল গঠন করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। "মানুষেরে ধোঁকা আমি দিতে পারব না"- চোখের পানিতে এই প্রতিজ্ঞা যিনি করেছিলেন, বাংলার মানুষের জন্য যিনি জেল খানায় পার করেছেন অর্ধেক সময়, বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গোপালগঞ্জের কিশোর শেখ মুজিব যখন ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠছেন, ঠিক তখনই সমাপ্ত হল তাঁর - অসমাপ্ত আত্মজীবনী। আর তাঁর আত্মজীবনীর মতো জীবনটাকেও অসমাপ্ত করে দিল এই বাংলারই কিছু মানুষ
Was this review helpful to you?
or
নিরপেক্ষতার মৌলিক দলিল 'তিনি কখনো আপোস করেন নাই। ফাঁসির দড়িকেও ভয় করেন নাই। তাঁর জীবনে জনগণই ছিল অন্তঃপ্রাণ।'
Was this review helpful to you?
or
অসমাপ্ত আত্মজীবনী; একজন শেরপার সংক্ষিপ্ত উপাখ্যান (বুক রিভিউ) “বন্ধুবান্ধবরা বলে তোমার জীবনী লেখো। সহকর্মীরা বলে রাজনৈতিক জীবনের কাহিনীগুলো লিখে রাখো, কাজে লাগবে।” এভাবেই শুরু হয়েছে এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী। মধুমতি তীরের জনপদ থেকে উঠে আসা একজন মানুষের গল্প, একজন রাষ্ট্রনায়কের আত্মজীবনী তার বংশীয় পরিচয় এবং নাটকীয় কথনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাঠকের যাত্রা। প্রথমেই যে প্রশ্নটি চলে এসেছিলো, বইটি কি আদৌ শেখ মুজিবুর রাহমানের লিখা? তাহলে এতোদিন কোথায় ছিলো? কিংবা, এর আবিষ্কারের নেপথ্যকাহিনী কী ছিলো? শুরু ভূমিকাতে সেই প্রশ্নর উত্তর মিলে যায়। উদ্ধৃত করছি। “২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে। ” সামনে এগুতে থাকি। দেখতে থাকি কাগজের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে থাকা স্থির সেলুলয়েডে গড়িয়ে চলা বঙ্গবন্ধুর জীবন। বইটির ভাষা কিংবা বিষয় আত্মজীবনীধর্মী হলেও, লেখকের কলমের আঁচড়ে উঠে এসেছে তৎকালীর সময়ের নানান প্রেক্ষাপট। সাথে পেয়ে যাই লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতির সংক্ষিপ্ত খতিয়ান। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনায় সমৃদ্ধ হয়েছে ৩৪৫ পৃষ্টার এই বইটি। এতে আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন। একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। বইটা শেষ করতে হলো বেশ ভালো রকমের অতৃপ্তি নিয়ে। অতৃপ্তির কারণ আসলে নামেই বোঝা যায় – অসমাপ্ত আত্মজীবনী। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া, কোনো উপসংহার ছাড়া, লেখকের অসমাপ্ত জীবনের মতোই একেবারেই হুট করে শেষ হয়ে গেল বইটা। এটা থেকে বঙ্গবন্ধুর পরিনত বয়সের রাজনৈতিক দর্শনের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না । যে বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপকার হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছিলেন তার শুরুর সময়টার কিছু ধারনা পাওয়া যাবে মাত্র। গোপালগঞ্জের ডানপিটে সাহসী সমাজ সচেতন কিশোর শেখ মুজিবের পরিণত বলিষ্ঠ নেতা হয়ে ওঠার কিছুটা আভাস পাই। কিন্তু সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার গল্পের প্রায় কিছুই আমরা পাই না। তবে বইটা পড়ে ব্যক্তি মুজিবকে হয়তো অনেকখানিই উদ্ধার করা যায়। তার রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা, সংগ্রাম সবকিছুরই অনেক ধারনা পাওয়া যায়। যে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য যেই মুসলিম লীগে সমর্থন করে আন্দোলন করেছিলেন পরে সেই মুসলিম লীগের অত্যাচার এবং দুঃশাষনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিরোধী দল গঠন করলেন এবং হয়ে গেলেন মুসলিম লীগ আর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ শত্রু! আমি বইটি থেকে মূলত সেই সময়ের শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন বুঝতে চেষ্টা করেছি। পাতার পর পাতা থিসিস লিখে আর গবেষণা করে মাঠের রাজনীতিতে যারা কিছুই করতে পারেন নি তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন নি তিনি। তিনি কাজ করতে করতে শিখেছেন, ভুল হলে স্বীকার করেছেন, সংশোধনের চেষ্টা করছেন। বলেছেন এভাবে, ”আমার যদি কোনো ভুল হয় বা অন্যায় করে ফেলি, তা স্বীকার করতে আমার কোনোদিন কষ্ট হয় নাই। ভুল হলে সংশোধন করে নেব, ভুল তো মানুষেরই হয়ে থাকে। … … আমি অনেকের মধ্যে দেখেছি, কোনো কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। … … আমি চিন্তা ভাবনা করে যে কাজটা করব ঠিক করি, তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয় সংশোধন করে নেই। কারণ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না।” আন্দোলন আর সংগ্রামের ইতিহাসের মধ্যে দিয়ে সেই সময়কার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতার সাথে বিভিন্ন তাঁর মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সেইসব নেতাদের কিছু পরিচয় পাওয়া যায়। বইয়ে ঘুরে ফিরে এসেছে সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা, যাঁর হাত ধরে তিনি রাজনীতি শিখেছেন। লেখক একেবারে শুরুর দিকেই বলছেন, ”ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট কোঠায় বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি, সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হল। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য আমি পেয়েছিলাম। কিভাবে তিনি আমাকে কাজ করতে শিখিয়েছিলেন এবং কেমন করে তাঁর স্নেহ আমি পেয়েছিলাম।” বইয়ের শুরুতে শেখ হাসিনার লেখা ভূমিকা এবং বইয়ের বিভিন্ন অংশে জুড়ে দেয়া শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে লেখা পান্ডুলিপির টুকরো ছবি বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। বইয়ের আনুষ্ঠানিক শুরু পূর্বের একটি উদ্ধৃতি তুলে দিচ্ছি। যা থেকে আন্দাজ করা যায়, একজন ব্যক্তি মুজিবকে কতোটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। “একদিন সকালে আমি ও রেনু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম , হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল ” হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর “আব্বা আব্বা ” বলে ডাকে . কামাল চেয়ে থাকে , একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে , হাচু আপা হাচু আপা , তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি….! আমি আর রেনু দুজনেই শুনলাম . আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে যেয়ে ওকে কোলে নিয়ে বললাম, আমি তো তোমারও আব্বা ! কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না, আজ গলা ধরে পড়ে রইলো . বুঝতে পারলাম , এখন আর ও সহ্য করতে পারছে না . নিজের ছেলেও অনেক দিন না দেখলে ভুলে যায় . আমি যখন জেলে যাই ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস . রাজনৈতিক কারনে একজনকে বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা আর তার আত্মিয়স্বজন ছেলেমেয়ের কাছ থেকে দুরে রাখা যে কতো বড় জঘন্য তা কে বুঝবে ? মানুষ স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়..” যে জীবন ছিলো মহীরুহের, সে জীবনের আত্মজীবনী অসমাপ্ত থেকে গেলো। হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধুকে আমি দেখি নি। এই অসমাপ্ত বইটি আমাকে মুজিবের ভেতরের ব্যক্তিমুজিবকে দেখার সুযোগ করে দেয়। আমি বঙ্গবন্ধুর পূর্ণাঙ্গ আত্মজীবনী পড়বার অপেক্ষায় থাকি..। তথ্যসূত্র সাহায্য: অসমাপ্ত আত্মজীবনী ; শেখ মুজিবুর রহমান ( দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড(ইউ পি এল) ) গুডরিডস.কম ( বই বিষয়ক অন্যতম বৃহৎ ওয়েবসাইট ) বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট ( লিফলেট/প্রচারণা )
Was this review helpful to you?
or
" যদি রাত পোহালেই শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই.....যদি রাজপথে আবার মিছিল হত বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই...! মুক্তি চাই...!!....মুক্তি চাই....!!! তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা......!...."
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী : একজন হৃদয়বান বাঙালীর হৃদয়ের আঁকিবুকি মাসুম বিল্লাহ আমি মুখে যা বলি, তাই বিশ্বাস করি। আমার পেটে আর মুখে এক কথা। আমি কথা চাবাই না, যা বিশ্বাস করি বলি। সেজন্য বিপদেও পড়তে হয়, এটা আমার স্বভাবের দোষও বলতে পারেন, গুণও বলতে পারেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী (২১৮ পৃষ্ঠা) থেকে উপরের সংলাপটি কোট করে দিলাম। বিশেষ কারণটি এখানে অব্যক্তই থাক; বরং আমার প্রিয় একটি সংলাপ’ বলে চালিয়ে দেয়া যেতে পারে। পড়ছি: বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী। অনেককাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ইমার্চের ভাষণ শুনে যেমনটি শিহরিত হয়েছিলাম, তেমনি বইটি পড়ার সময়ও বুকের ভেতর এক ধরনের শিহরন অনুভব করেছি। চোখের পাতায় আলগোছে মহান মানুষটি ভেসে উঠেছে। স্পর্শ পেয়েছি দরাজ কন্ঠের অধিকারী পাশে বসে আমার সাথে কথা বলে যাচ্ছেন। যেমন করে মাঠের রাখাল বালক আর কৃষকের মধ্যে ভাব বিনিময় হয়। এসময় অনুভব করে নিয়েছিÑ একজন হৃদয়বান মানুষের অন্তর আত্মার কথকতা। সাধারণত বিখ্যাত লেখক বা বিখ্যাত কোনো বইয়ের নাম জেনেই পড়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠি, কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ’র ক্ষেত্রে তেমনটি মাথায় ছিল না। যখন বইটি পড়া শুরু করলাম, তখনো মাথায় ছিল যে, আমি বঙ্গবন্ধুর নিজের বলা কথা জানতেই বইটি পড়ছি। কিন্তু কিছুসময় পড়েই আমি স্তম্ভিতই হয়ে গেলাম বঙ্গবন্ধুর লিখনি ধার দেখে। মাঠে ময়দানে ছুটে বেড়ানো মানুষটির কলম-কালির মহিমা পড়ে। একজন রাহনৈতিক নেতার লিখিত ভাষা এতো সাবলীল, গতিময়! যেন লিখিত কোনো বই পড়ছি না, বইটির লেখক নিজে আমার সাথে কথা বলছেন। যে কথায় কোনো ভানটান নেই, চালাকী নেই, রং নেই একটুও; বাংলার মাটিঘেঁষা মানুষ তার ঘরের আঙিনায় বসে তার কাছের মানুষের কাছে যেভাবে হৃদয়ে কথা বলে, যা হৃদয়েরই রস-রসায়নে হয়ে ওঠে পাঁচালী-ঠিক সেই ভাবে লিখেছেন বইটি। পৃথিবীর সব লিখিত ভাষা মাত্রই সাজানো, আর্টিফিশিয়াল, কিন্তু বঙ্গবন্ধু লেখক ছিলেন না বলেন এমন সরল নির্ভেজাল কথাগুলো লিখতে পেরেছিলেন। পেরেছিলেন নিজের সম্পর্কেও সরল-সোজা ভাবে বলতে: আমি মুখে যা বলি, তাই বিশ্বাস করি। আমার পেটে আর মুখে এক কথা। আমি কথা চাবাই না, যা বিশ্বাস করি বলি। সেজন্য বিপদেও পড়তে হয়, এটা আমার স্বভাবের দোষও বলতে পারেন, গুণও বলতে পারেন।’’ (বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ২১৮ পৃষ্ঠা থেকে ) যেমন সহজেই বাংলার মানুষের সম্পর্কে তিঁনি বলতে পেরেছিলেন: অনেক সময় দেখা গেছে, একজন অশিক্ষিত লোক লম্বা কাপড়, সুন্দর চেহারা, ভালো দাড়ি, সামান্য আরবি ফার্সি বলতে পারে, বাংলাদেশে এসে পীর হয়ে গেছে। বাঙালি হাজার হাজার টাকা তাকে দিয়েছে একটু দোয়া পাওয়ার লোভে । ভালো করে খবর নিয়ে দেখলে দেখা যাবে এ লোকটা কলকাতার কোন ফলের দোকানের কর্মচারী অথবা ডাকাতি বা খুনের মামলার আসামি। অন্ধ কুসংস্কার ও অলৌকিক বিশ্বাসও বাঙালির দুঃখের আর একটা কারণ। (অসমাপ্ত আত্মজীবনী; পৃষ্ঠা, ৪৮) ৩২৯ পৃষ্ঠার বইটা পড়তে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের নিখাদÑঅকপট আন্তরিকতা আমায় গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে। বাঙালি সংসারে আন্তরিক মানুষ আমি অনেকই দেখেছি। সম্ভবত প্রত্যেক বাঙালিই আন্তরিকÑআমার একান্ত বিশ্বাস। তবে বাঙালির এই সর্বশ্রেষ্ট নেতাটি যে নিখাদ আন্তরিক সে বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ আগেও যেমন ছিলো না, বইটি পড়ে তো সে ধারণা পাকাপোক্ত হয়েছে। বইটির প্রতিটি বাক্যে তাঁর দরদ দারুণ স্পষ্ট করে অনুভব করেছি। বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতা, হৃদয়মাধুর্য অনুভব করার জন্য তাঁর দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরার বর্ণনার উদাহরণ হিসেবে এখানে তুলে দিতে পারি... ... আমাদের সময় হয়ে এসেছে, ফিরতে হবে। চৌধুরী সাহেব তাড়া দিলেন। আমরাও গাড়িতে উঠে বসলাম। আগ্রায় ফিরে এসেই মালপত্র নিয়ে রওয়ানা করলাম তুন্দলা স্টেশনে। এসে দেখি বংলাদেশের অনেক সহকর্মীই এখানে আছেন। অনেক ভিড়। মালপত্র চৌধুরী সাহেবের প্রথম শ্রেণীর গাড়িতে ফেলে আমরা তাড়াতাড়ি উঠে পড়তে চেষ্টা করলাম। যখন সকলেই উঠে গেছে ট্রেনে, আমি আর উঠতে না পেরে এক ফার্স্ট ক্লাসের দরোজার হাতল ধরে দাঁড়ালাম। আমার সাথে আরেক বন্ধু ছিল। পরের স্টেশনে যে কোনও বগিতে উঠে পড়ব। অনেক ধাক্কাধাক্কি করলাম, প্রথম শ্রেণীর ভদ্রলোক দরোজা খুললেন না। ট্রেন ভীষণ জোরে চলছে, আমাদের ভয় হতে লাগল, একবার হাত ছুটে গেলে আর উপায় নাই। আমি দুই হাতলের মধ্যে দুই হাত ভরে দিলাম, আর ওকে বুকের কাছে রাখলাম। মেলট্রেন-স্টেশন কাছাকাছি হবে না। আমাদের কিন্তু অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছিল।বাতাসে হাত-পা অবশ হতে চলেছে। আর কিছু সময় চললে আর উপায় নাই। কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ ট্রেন থেমে গেল। আমরা নেমে পড়লাম।’ (বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী; পৃষ্ঠা-৬০-৬১) এছাড়া আরো নানান বিষয় বঙ্গবন্ধু তার লেখনীতে তুলে এনেছেন। প্রতিটি ঘটনাই মানবিক হিসেবে আমার কাছে ধরা দিয়েছে। সেকারণেই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী কেবল একটা সময়ের নিছক রাজনৈতিক ভাষ্য বলে মনে হয় না। একজন মানুষের বুকের ভেতরের আকাশটা ছবি দেখতে পাওয়া যায়; শুধু ছবি কেন সব খোঁজ-খবরই পাওয়া যায় । পরিশেষে এটুকু বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু নির্জন কারাকক্ষে বসে অমূল্য কিছু লেখা পড়ে আমরা এক হৃদয়বান বাঙালি হৃদয়ের আঁকিবুকির খোঁজ পাই।