User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ছাইচাপা পড়া কয়লার কমলা আলো হয়ত দেখা যায় না কিন্তু উত্তাপটা ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কিছুকে লুকিয়ে বেশিক্ষণ রাখা যায় না, মনের ভেতর অনুতাপের উত্তাপ জাগে। কিন্তু যদি বিষয়টা হয় ক্ষমতার? যদি বিষয়টা হয় এক অন্ধ বিশ্বাসের...? বিষয়টা যদি হয় মজিদের! কে এই মজিদ? চলুন এক নজরে জেনে নেয়া যাক। #উপন্যাসের_ভেতরের_গল্প দেশটা থেকে ছড়িয়ে পড়ার এক অদ্ভুত উন্মত্ততা পেয়ে বসেছে যেন। রাতজাগা ঝিমধরা ট্রেনটা হঠাৎই জেগে ওঠে। যাত্রীরা দেখে তাদের ছুটছে... যেন এই ট্রেনের মাঝেই ভাগ্য লুকানো তাদের, খুঁজে নিতে কার্পণ্য করবে না। আর করলেই কি হবে? হা শুন্য চোখে রাজ্যের চিন্তা। জঠরে দানাপানি নেই। "শষ্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি" এমন এক অভাবে দেশ থেকে ছুটেছে মজিদ। মজিদ! শীর্ন দেহে কগাছি দাঁড়ি মুখে, শরীরের চেয়ে চোখের তীব্রতা বেশি। সুচতুর, বাস্তববাদী। মহব্বতনগরে তার নাটকীয় প্রবেশ গ্রামেরর সাধারন পরিবেশে জুরে দিল এক ব্যস্ততা! ধর্ম ব্যাবসা! মজিদ ভাঙা একটা কবরকে ঘোষণা দিল মোদাচ্ছের পীরের মাজার। জমায়েত যেন ভুত দেখার মত বিস্ময়ে ফাটছে। কবরটা হয়ে গেল রুপালী ঝালরাবৃত মাজার, গ্রামের লোকজনের বিশ্বাস আর আমাদের মজিদের শক্তি.... বছর ঘুরে ঘুরে মজিদের প্রতিপত্তি বাড়তে থাকল। ঝড়ের মুখে উড়ে চলা চারাগাছটা এখানে শেকড় গেড়ে বসল। রহিমা! বিধবা মহিলা। মজিদের সাথে দ্বিতীয়বার বিয়ের পরে সে জড়িয়ে গেল মাজার আর মজিদের প্রতিনিধি হিসেবে গ্রামের লোকের কাছে। শক্তিমত্তা মেয়ে মানুষটা নেহাত ঠান্ডা মেজাজের... সে মাজারকে ভয় পায়, ভয় পায় খোদাকে, ভয় পায় মজিদকে। রহিমার কাছে আর্জি জানাতে আসা লোকদের একজন হলো হাসুনির মা। সেও বিধবা। তাহের কাদেরের বোন। বাড়িতে বাড়িতে ধান ভাড়ানির কাজ করে খায়। বাড়িতে বুড়ো মা বাবার ঝগড়া। আর মায়ের তাদের জন্ম নিয়ে কুৎসা রটানো সব মিলিয়ে সে ভরসা পায় না। আউয়ালপুরের পীর সাহেবের প্রভাবে মজিদের প্রতিপত্তি যেন একটু মলিন হয়ে যাচ্ছে। পীর সাহেব আবার বড় বড় ডিঙা ছাড়ছে, সে সুর্যকে ধরে রাখতে পারে। মজিদ তাকে ছেড়ে দিবে? এতোটা দুর্বল তো মজিদ না... খালেক ব্যাপারীর প্রথম পক্ষের বউ আমেনা বিবির সন্তানের বড় খায়েশ। বড় আবদার করে সে খালেক ব্যাপারীরে মনের কথাটা বলল। এদিকে আউয়ালপুরের পীরের কাছে সে যেতে পারে না। জুতা মেরে গরু দান করার মতো ব্যাপার সে করতে পারে না... প্রথমবার করা আবদার ফেলতেও পারে না খালেক ব্যাপারী। দ্বিতীয় পক্ষের বিবি তানু বিবির ভাই ধলা মিয়াকে দিয়ে সে পানিপড়া আনাবে ঠিক করে কিন্তু.......! কি হয় তার? মজিদ কিভাবে জেনে যায় আমেনা বিবির আর্জি! কি করে সে? সে তো চুপ থাকার মানুষ না। আর যাই হোক দ্বিচারিণী মেয়ে লোকের উপহাস সহ্য করবে সমাজ ততো দুর্বল না। ওদিকে নব্য শিক্ষিত আক্কাস গ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা তোলে । কিন্মু সচেতন মানুষসমাজ যে ধর্ম ব্যবসার বাধা। আবার মজিদের খুব ইচ্ছে হয় নিজের সন্তানের। একদিন সে তার মেয়ের বয়েসী জমিলাকে বিয়ে করে নিয়ে আসে। শান্ত চুপচাপ মেয়েটাকে মজিদের মনে ধরে। কিন্তু এ যে সাক্ষাৎ কালকেউটে। মুসলমানের মেয়ের হাসি? নামাজ পড়ে না? ক্রমেই তার মজিদের ওপর ঘৃণা জন্মাতে থাকে। তারপর? এতগুলো চরিত্রের ভীরে সব চরিত্রের কলকাঠি নাড়ছে একজন। মজিদ! মজিদ লোকটা নিঃসন্দেহে খুব বড় মাপের অস্তিত্ববাদী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় কি? #মন্তব্য__ সময়টা তখনকার যখন সাহিত্যজগতে ভারত বিভক্তি আর অরাজকতা নিয়ে চর্চা হচ্ছিল। কিন্তু ওয়ালীউল্লাহ হেঁটেছেন একেবারে ভিন্ন পথে। সামাজিক উপন্যাস হিসেবে এটা একটা সার্থক উপন্যাস। সার্থক বলার পেছনে আমার যুক্তি ★ প্রচুর চরিত্রের সমাবেশ কিন্তু কোনো চরিত্র অন্যটার স্বাতন্ত্রতাতে বাধা দেয়নি ★ গল্পের প্লটটা খুবই স্ট্রং ★ ভাষাগত সৌকর্য লক্ষ্য করার মত ★ অস্তিত্ববাদীরাই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে, এই ভাবধারাটা অতীব বাস্তবজ্ঞান ভিত্তিক ★ গল্পের প্রবাহ বেশ স্মুথ, তবে এটা পাঠকের মনে করুণরস, আনন্দে অনুভুতি জাগাতে সক্ষম ★ বর্ণনানির্ভর হলেও অতিবর্ণনা দেখা যায় নি। তো বুঝতেই পারছেন উপন্যাসটা কতটা সমৃদ্ধ। পড়া না থাকলে অবশ্যই পড়ে নিবেন।