User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ফরাসি লেখক দ্যা ফন দ্যু মারিয়ার অসাধারন থ্রিলার এই "রেবেকা"।১৯৩৮ সালে রচিত। মূলত এটাকে বলা যায় উচ্ছলতা হীন, নিশ্চুপ থ্রিলার।যা পাঠক কে পিন পিন যন্ত্রনা দিতে থাকবে, তরঙ্গায়িত হবে একটু পর পর। ঠিক চলমান কাহিনী নয়। অতীত এর স্মৃতিচারন। শুরুর কথা গুলো এরকম, " কাল রাতে স্বপ্ন দেখলাম, "আমি আবার ম্যান্ডারলতে গিয়েছি। মনে হলো আমি যেন লোহার ফটকটার সামনে দাড়িয়েছি, কিন্তু পথ বন্ধ বলে ভেতরে ঢুকতে পারছি না।"কথক এক নারী। কাহিনী যখন কার, তখন সে সপ্তদর্শী উঠতি যুবতী। জায়গা টা মন্টিকর্লো । যুবতী মিসেস ভ্যান হপার নামক এক বৃদ্ধার সঙ্গিনী। যুবতীর নাম মাদমোয়াজেল। সঙ্গী হওয়ার পরিনামে সে বছরে নব্বই পাউন্ড করে মাইনে পায়। মন্টিকর্লোতে সে তার মনিব এর সাথেই এসেছে। সেখানে ওতেল কোৎ দাজুর খাবার ঘরে খেতে গিয়ে দেখা হয় ম্যাক্স দ্যা উইন্টারের সাথে। লোকটি হল ফ্রান্সে ম্যান্ডারল নামক এক আশ্চর্য সুন্দর প্রাসাদের মালিক।ভদ্র লোক কে দেখে মনে হয় তিনি বেশ অসুস্থ। তাঁর বয়স বিয়াল্লিশ। কিছুদিন আগেই তার স্ত্রী মারা গেছেন। লোকে বলে স্ত্রীর মৃত্যুশোক তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। কিন্তু কাহিনীর দোলাচালে তরুণী প্রেমে পরে যায়, মধ্যবয়সি ম্যাক্সের। ম্যাক্সও তাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে বলে, সে রাজি হয়। স্ত্রী মারা যাবার আট মাস পর ম্যাক্স বিয়ে করে তাকে। কিছু সময় পর ফেরে ম্যানডারলেতে। কিন্তু মাদমোয়াজেল সেখানে তার অনবস্থার ধরুন শিকার হতে থাকেঅসহায়ত্বের । গোটা ম্যান্ডারলে, ম্যাক্সের প্রাক্তন স্ত্রী রেবেকার প্রভাব বিস্তার কর আছে। আর চারিদিকে রেবেকার এত স্মৃতি! এসব এর মাঝে সে ঠিক তল পায় না। এমন কি পরিচারিকা মিসেস ডানভার্স তাকে রেবেকার সাথে তুলনা করে হেয় করে।নিজেকে মনে হয় খুব অসহায়! একসময় বুঝতে পারে রেবেকার মৃত্যুকে ঘিরেও একটা রহস্য, যা খুব ধোয়াশা।..... বইয়ের শুরু টা বেশ ধীর। আর তাতে মনেই হয় না, পাঠক কে এরকমন একটা রহস্যের জালে আটকাতে হবে। কিন্তু পাতায় তখন রহস্য কুন্ডলী পাকিয়ে আছে। ছোট ছোট লেখায় পড়া আগায় না, কিন্তু কৌতুহল ও দমিয়ে রাখা সম্ভব হবে না পাঠকের। প্রথম দিকের তরুনীর এই মধ্যবয়স্ক মানুষ টার প্রতি আকর্ষনের যে তীব্রতা তা সকল পাঠক কে ছুয়ে যাবে। একটা সাদা মাটা তরুনীর চোখ ভরা জল। সারা রাত না ঘুমিয়ে অফুরন্ত কান্না। সকালে উঠে লজ্জা ভয় পেছনে ফেলে হোটেল রুমে দেখা করতে চলে যাওয়া! এই পৃষ্ঠা গুলো উপস্থাপনা যাস্ট অসাধারন! আর রহস্যের ঘূর্নিজল তো আছেই। খোদ ম্যাক্সকেও কেমন জানি রহস্যময় মনে হবে পাঠকের। আর ম্যান্ডেলার প্রাসাদ তো আছেই। রহস্যের ঘূর্নি পাঠক কে খুব তাগাদা দিতে থাকবে পৃষ্ঠা গুলো শেষ করতে।যতোক্ষন রহস্য উন্মোচিত না হয়, সস্থির নিশ্বাস টা কিছুতেই নিতে পারবেনা ।কেন না কাহিনীর তরঙ্গতা এতোই বেশি যে, পাঠক এর স্নায়ুর উপর চাপ প্রবল ভাবে বাড়তে থাকবে। আর তা থেকে মুক্তি পেতেই পৃষ্ঠা গুলোর উপর হাতের ছাপ পরবে খুব, আমার মতো। শেষে একটা শিহরণ বয়ে যাবে শিরদাড়া বরাবর।।এত কিছু বলার পর হয়তো অনুভূতি শেয়ার করার কিছু থাকে না। তবে এরকম নিশ্চুপ রহস্য কেবল এই রেবেকা তেই সম্ভব বোধ হয়। অনুবাদকের লেখার ধরন বেশ সাবলীল। বিশেষ করে আবেগ এর জায়গা গুলো এমন সহজ ভাবে বর্ননা করেছেন, অনুভূতি আমি নিজ থেকে টের পাচ্ছিলাম! একে বারে শেষ পর্যন্ত গতি ধারা ছিলো অসাধারন। থ্রিলার প্রেমীদের কাছে এই বইয়ের গুন কীর্তন না করলেও হয়তো চলবে। কেন না, এই বই ছুয়ে দেন নি আমি এরকম পাঠক খুব কম পাবো। আর তা বিশ্লেষন, মারিয়ার এই বইয়ের সদ্ভাব অসাধারন! আর থ্রিলার হিসেবে দ্যা ফনে দ্যু মারিয়ার 'রেবেকা' এর কোন তুলনা হয় না। ১৯৪০ সালে আমেরিকার আলফ্রেড হিচকক এই বই অবলম্বনে চলচিত্র নির্মাণ করেছেন। এর জনপ্রিয়তায় বেস্ট সেলার এর জায়গা করে নিয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
শুরু থেকেই কেমন একটা গুমোট ভাব... দম বন্ধ করা, অস্বস্তিকর একটা পরিবেশ... বুকের ভেতর বুঝি একটা পাথর রাখা হয়েছে... প্রচন্ড ভারি পাথর... কখনো বুকটা খালি খালি লাগছে... আবার কখনো দ্বিগুণ বেগে বুকের ওপর অস্তিত্বহীন পাথরের চাপটা বাড়ছে... বেড়েই চলেছে... এটা সদ্য প্রেম বিরহী কোন তরুণীর ডায়রির পাতা নয়। এটি একটা বিশেষ বই পড়ার সময় যুগ যুগ ধরে (সেই ১৯৩৮ সাল থেকে) পাঠকের মনে জন্ম নেয়া বিচিত্র অনুভূতির ধারাবর্ণনা। হ্যাঁ, আসলেই এরকম বিচিত্র একটা অনুভুতিই হবে 'রেবেকা' পড়তে পড়তে। শুরুটাই এক অসাধারণ বাক্য দিয়ে, ''Last night I dreamt I went to Manderley again". যুগ যুগ ধরে যা কাঁপিয়ে দিয়েছে হাজারো পাঠকের অন্তরাত্মা। না, একদম শুরু থেকেই কোন অজানা আশংকা মনে দানা বাঁধবে না। কিন্তু কাহিনী যত সামনে এগুতে থাকবে, মনে হবে যেন কোন একটা চলমান গাড়ির গতি ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসছে। আর ঠিক তখনই একের পর এক প্রশ্ন এসে উঁকি দেবে মনে। নিছকই একটা রহস্য গল্প, নেই কোন ভায়োলেন্স। তবু দারুণ ভীতিকর এবং গুমোট একটা ভাব ছড়িয়ে থাকবে গোটা হৃদয়জুড়ে। বিষয়টা পরিষ্কার করা যাক। কাহিনীর সূত্রপাত মন্টে কার্লোতে। কাহিনী উত্তম পুরুষের বর্ণনায় বলে চলেছে আমাদের নায়িকা। না, সেই রেবেকা নয়। রেবেকা আরেকজন। আমাদের নায়িকার নাম না হয় অজানাই থাক। আমাদের নায়িকা সপ্তদশী উঠতি তরুণী। কাজ করে এক বিরক্তিকর বৃদ্ধার এসিসটেন্ট হিসেবে। মন্টে কার্লোতে তাদের দেখা হয় সদ্য বিপত্নীক ম্যাক্সিম ডি উইন্টারের সাথে। তার চরিত্রের যে বিশেষ বিশেষত্ব, তা হল সে ফ্রান্সে ম্যানডারলে নামক এক প্রাসাদোপম বাড়ির মালিক। বয়স বিয়াল্লিশ। যেভাবেই হোক, সপ্তদশী তরুণী প্রেমে পড়ে যায় সেই মধ্যবয়সি ম্যাক্সের। ম্যাক্সও প্রথম স্ত্রী মারা যাবার মাত্র আট মাসের মাথায় এক সপ্তদশীকে বিয়ে করে ম্যানডারলেতে ফেরে। সপ্তদশী সেখানে পদে পদে বিরুপতার শিকার হতে থাকে। প্রতিটা মানুষ এবং গোটা ম্যানডারলে, সবার উপরই ম্যাক্সের প্রাক্তন স্ত্রী রেবেকার বিষম প্রভাব। তাই চারিদিকে রেবেকার হাজারো স্মৃতির মাঝে বড্ড অসহায় মনে হয় সপ্তদশীর। অসহায়ত্ব বাড়ে যখন দেখে রেবেকার মৃত্যুকে ঘিরেও কি যেন একটা রহস্য, যেটা ধামাচাপা দিতে চাইছে তার স্বামীসহ আরও অনেকে। যতক্ষণ না রেবেকার মৃত্যু রহস্য উন্মোচিত না হয়, বুক ভার হয়ে থাকা অনুভূতিটা কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারবে না পাঠক। তারপর হঠাৎ করে কাহিনী কিছুক্ষণের জন্য আপন গতিতে দ্রুততার সাথে চলতে থাকবে। কিন্তু সে বড্ড অল্প সময়ের জন্য। শেষ দিকে আবার এমন কিছু ঘটনার অবতারণা হবে যে স্নায়ুচাপ বেড়ে যাবে পাঠকের। টানটান উত্তেজনা আর অজানা শংকা নিয়ে তারা পাতার পর পাতা পড়বে আর ভাবতে থাকবে, তাড়াতাড়ি যেন শেষ হয় উপন্যাস। ঠিক যেমনটা ফুটবল খেলার শেষ মুহুর্তে দল এগিয়ে যাওয়ার পর সময় শেষের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকে সমর্থকেরা। কেন এমন উপমা দিলাম, পাঠক নিজেই তা উপলব্ধি করতে পারবে যখন তারা বইটা পড়বে। আমি শুধু একটা কথাই বলব, কোন যৌনতা, কোন ভায়োলেন্স, কোন ওভার ড্রামা ছাড়াই যদি স্রেফ ঘটনার সাদামাটা বর্ণনা আর সংলাপের মাধ্যমে পাঠক হারিয়ে যেতে চায় রহস্যের জালে, যেখানে ভীতিকর কিছু না থাকা সত্ত্বেও প্রতি মুহুর্তে পাঠককে আঁতকে উঠতে হবে, সেক্ষেত্রে থ্রিলার হিসেবে দ্যাফনে দ্যু মরিয়ে'র 'রেবেকা' হবে চিরন্তন এক ও অদ্বিতীয়।