User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এর থেকে ভাল কোন বই হতে পারে না।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
আর রাহীকুল মাখতুম বইটির বেশ কয়েকটি অনুবাদ বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে।তারমধ্যে সবচেয়ে সাবলীল অনুবাদ এটি।বিশেষভাবে কবিতাগুলোর অনুবাদে অনুবাদকারীরা পরিশ্রম ও যত্নের ছাপ রেখেছেন। যাজাকাল্লাহু খইর।
Was this review helpful to you?
or
This is the best update version book
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulilah paici boi Donnobad asha raki eivabei sarbis diben
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
সীরাতে রাসূল। অসাধারণ। আমি এবং আমার বন্ধু একসাথে ৩ টা ক্রয় করেছিলাম।
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah. Good one.
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ! সৌভাগ্য আমার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাকে এই বইটা পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ!
Was this review helpful to you?
or
মাশআল্লাহ অনেক বেশি সুন্দর বইটা ??
Was this review helpful to you?
or
Excellent Book
Was this review helpful to you?
or
আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে এই বইটি আপনার জন্য। মাশাল্লাহ এই বইটির অনুবাদ সহজ সরল ভাষায় লিখা হয়েছে যার ফলে সকল মানুষ খুব সহজেই বুঝতে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
বাইন্ডিং এবং পেজ ভালো, অনুবাদও অনেক সুন্দর হয়েছে মাশাল্লাহ। ডেলিভারি খুবই দ্রুত দিয়েছে
Was this review helpful to you?
or
That was a good book
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর একটা বই
Was this review helpful to you?
or
বইটি সম্পূর্ণ শেষ করে রিভিউ দিতে চাইছিলাম কিন্তু ততদিনের আর ধৈর্য হলো না। আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ার সৌভাগ্য হইছে আমার। বইটি এক কথায় অসাধারণ নবিজীর জীবনকে জানার জন্য সেরা। জীবনে যত ব্যস্ততায় থাকুক চেষ্টা করুন এই বইটি সাথে রাখার এবং পড়ার ইনশাআল্লাহ ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
Masterpiece
Was this review helpful to you?
or
This is very helpful book for human.Alhamdulillah good.
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো লেগেছে বইটা।❤️
Was this review helpful to you?
or
this is best books for sirah
Was this review helpful to you?
or
সব দিক থেকেই ভালো but হার্ড কভার হলে বেশি ভালো হইতো।
Was this review helpful to you?
or
এই সিরাতের ব্যাপারে মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই। অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে যানার জন্যে এবং নিজের জীবনকে সেই মোতাবেক পরিচালনার জন্য আর রাহিকুল মাখতুম অন্যন্য এক বই। আল্লাহ্র কাছে উক্ত বইয়ের লেখকসহ সকলের জন্যে দু'য়া করি যেনো এই বই উসিলায় সবাই নাজাতের ফয়সালা লাভ করেন।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ্, অর্ডার করারা ২৪ ঘণ্টার মদ্ধেই ডেলিভারি পেলাম। Order Placed 04 Dec 2024, 9:51 PM and Delivery 05 Dec 2024, 1:45 PM
Was this review helpful to you?
or
লেখক সফিউর রহমান মুবারকপুরী অত্যন্ত সহজ ভাষায়, প্রমাণসমৃদ্ধ এবং সময়োপযোগী পদ্ধতিতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন। বইটিতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম থেকে শুরু করে তার দাওয়াতি জীবন, যুদ্ধ, পরিবার, বন্ধুত্ব, শত্রুতা, হিজরত এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। *সমকালীন প্রকাশন থেকে প্রাকাশিত এই বইয়ের বৈশিষ্ট্য- ১. তথ্যসমৃদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য: লেখক প্রচুর প্রাচীন আরবি গ্রন্থ এবং নির্ভরযোগ্য হাদিস গ্রন্থের রেফারেন্স ব্যবহার করেছেন। ২. সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষা: বইটি এমনভাবে লেখা হয়েছে যা পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য এবং হৃদয়স্পর্শী। ৩. ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ: রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আলোচনা করা হয়েছে। ৪. আধ্যাত্মিক গভীরতা: বইটি কেবল একটি জীবনী নয়; এটি মুসলিমদের জন্য একটি আত্মিক শিক্ষা। বইটি পাঠ করার মাধ্যমে পাঠক রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি দিক সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। এটি পাঠকের ঈমানকে মজবুত করবে এবং নবীজীর অনুসরণে জীবনের পথ নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে। "আর রাহিকুল মাখতুম" নবীজীর জীবন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী প্রতিটি মুসলিমের জন্য অবশ্যপাঠ্য। এটি কেবল একটি জীবনী নয়; এটি একটি দিকনির্দেশনা, যা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষাকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রেরণা জোগায়।
Was this review helpful to you?
or
নবীজি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেরা জীবনি বই। সব মুসলমানদের এই বইটি পরা উচিৎ।❤❤❤
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই ❤️।
Was this review helpful to you?
or
১. বিশুদ্ধ তথ্যভিত্তিক আলোচনা: বইটি ঐতিহাসিক দলিল এবং প্রামাণ্য উৎসের ভিত্তিতে লেখা, যা নবীজির জীবন ও ইসলামের ইতিহাস বুঝতে সাহায্য করে। ২. সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষা: লেখকের সরল ভাষায় উপস্থাপন সবাইকে আকৃষ্ট করে বইটি পড়তে। ৩. সবার জন্য উপযোগী: এটি শুধু ইসলামিক ইতিহাসের জন্য নয়, বরং ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষার জন্যও আদর্শ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
❤️?
Was this review helpful to you?
or
আররাহিকুল মাখতুম?
Was this review helpful to you?
or
যা ভাবছি তার চেয়ে অনেক ভাল।
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো এবং মানসম্মত আক্তা বই❤️
Was this review helpful to you?
or
বইটা কেমন'; বই পেজ কেমন;লেখা কেমন; পেজ কী কাগজের??
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম নামক সিরাতটির ভাষাশৈলি অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
আদর্শ জীবন গঠনের জন্য একটি অসাধারণ বই।
Was this review helpful to you?
or
❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
খুবই সুন্দর অনুবাদ ধন্যবাদ সমকালীন প্রকাশনী কে
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ, সবারই পড়া উচিত বলে মনে করি।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ। বইটির অনুবাদ উন্নত মানের। এর কবিতাগুলো অনুবাদ আসলেই প্রশংসার যোগ্য। এই বইটি শায়খ আহমদ উল্লাহ নিজেও রিকমেন্ড করেছিলেন। সম্পূর্ণ নবী জীবনী খুব সহজ সাবলীল ভাষায় এবং রেফারেন্স সহকারে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বইটি পড়ে সমস্ত লেভেলের জ্ঞানপিপাসু মানুষ আশা করি বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী উপলব্ধি করতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
২টি নিয়েছি, কাজের চাপে খুব বেশি সময় পাইনা বাট দুই বন্ধুর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে ( কে বেশি পড়েছে )।
Was this review helpful to you?
or
Excellent book
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কোয়ালিটি আলহামদুলিল্লাহ ভালো ছিল
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম একটি অসাধারণ সিরাত গ্রন্থ। সহজ ও সুন্দর ভাষায় লেখক নবী করীম (সাঃ) এর জীবনী তুলে ধরেছেন। এই বইটি ইসলামের প্রতি আগ্রহী সকলের জন্য অবশ্যই পড়ার মতো।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ ভালো পাইছি বই
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো
Was this review helpful to you?
or
কাউকে ভালোবাসতে হলে, আগে তাকে জানতে হয়। না জেনে পরিপূর্ণ ভালোবাসা যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার পিতা-মাতা,সন্তান-সন্ততি ও সমস্ত মানুষ থেকে আমাকে না বেশি ভালোবাসবে।—[১]আমরা দাবি তো ঠিকই করি রাসূলকে ভালোবাসি, কিন্তু তাকে ঠিক কতোটা জানি। তাই আমাদেরকে সীরাতপাঠ করতে হবে। তাকে জানতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের জীবনে উত্তম আদর্শ রয়েছে।—[২] কারও আদর্শ গ্রহণ করতে হলে, আগে তাকে জানতে হয়। আমি যদি তার আদর্শ না-ই জানি, তাহলে গ্রহণ করব কীভাবে? আমরা যদি অন্তত একটা সীরাত পরিপূর্ণ পড়তাম, তাহলে নাস্তিকরা কখনোই আমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারত না। তাদের যুক্তি যে কত অসাড়, তা আমরা বুঝতে পারতাম। সীরাত পড়লে দ্বীনের উপর চলার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। নিজেকে নবীর সাজে সজ্জিত করা যায়। আমি সংক্ষেপে লেখক পরিচিতি তুলে ধরছি। "সফিউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জুন, ভারতের এক প্রত্যন্ত গ্রাম মুবারকপুরে। এখানেই কেটেছে তার শৈশব ও বাল্যকাল। তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেন ফয়জে আম মাদরাসা থেকে। এরপরই শুরু হয় তার কর্মব্যস্ত সুন্দর জীবনের পদযাত্রা। জ্ঞানপিপাসু এই মানুষটি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ২০০৬ সালের পয়লা ডিসেম্বর। আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন। আমিন।" [৩] বইটি পড়ে আপনি একটুও বিরক্ত হবেন না। অনুবাদ এতো সাবলীল আর ঝরঝরে হয়েছে, পড়ার সময় অনুবাদ পড়ছি বলে মনে হয় নি। টিকা,বিশ্লেষণ ও তথ্যে ভরপুর বইটি। তবুও একটুও বিরক্তি লাগে নি। একটানা অনেক সময় পড়া যায়।
Was this review helpful to you?
or
সমকালীন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত এই অনুবাদটি এতটাই সহজ সাবলীল ভাষায় হয়েছে যে মনে হচ্ছিলো কোনো মৌলিক বই পড়ছি। ৭০৪ পৃষ্ঠার বইটি শেষ করতে আমার খুব বেশি সময় লাগেনি। সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে পেরেছি। লেখকের আকর্ষণীয় বর্ণনাভঙ্গি, মানসম্মত অনুবাদ, অসাধারণ ভাষা সম্পাদনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সবাইকে আর-রাহিকুল মাখতুম বইয়ের এই অনুবাদ সংগ্রহ করার পরামর্শ দিবো। হতাশ হতে হবে না ইন শা আল্লাহ।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ মানবজাতির ইতিহাসে এমন কিছু মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছে, যাদের জীবন ও আদর্শ প্রতিনিয়ত মানুষকে আলোকিত করেছে। তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহম্মদ (স) তাঁর জীবনকে যেভাবে মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করেছেন, তা অনন্য এবং অতুলনীয়। তাঁর জীবনের প্রতিটি পর্বে ছিল আত্মত্যাগ, সহনশীলতা, ধৈর্য ও ন্যায়বিচারের মিশ্রণ। আর এসব গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করেই ইসলামের প্রাথমিক যুগে অন্ধকারে নিমজ্জিত একটি সমাজকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বইটির সারসংক্ষেপ: বইটি মহানবী মুহাম্মদ (স.) এর জীবন কাহিনীকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। লেখক তাঁর জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়কে বিশ্লেষণ করেছেন, যেখানে নবীর চরিত্র, আদর্শ, এবং ইসলামের বার্তা স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীর প্রতি যে নির্দেশনা এসেছে, তা থেকে তাঁর জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। লেখক তাঁর বইয়ে মহানবীর জন্মের প্রেক্ষাপট, যুবক বয়সে তাঁর চরিত্র, নবুওয়তের সূচনা, এবং ইসলামের প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন ঘটনাবলি বর্ণনা করেছেন। বইয়ের প্রাথমিক অংশে আইয়ামে জাহিলিয়া বা অন্ধকার যুগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে সমাজের বিভিন্ন কুসংস্কার ও অশ্লীলতার মধ্যে মানুষ জীবনযাপন করছিল। এই অন্ধকারের মাঝে মহানবীর আবির্ভাব এবং তিনি যে আলোর দিশা দেখিয়েছেন, সেটাই পাঠকদের সামনে প্রতিটি অধ্যায়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মহানবীর চরিত্র ও আদর্শ: মহানবী (স.) ছিলেন মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ। তাঁর চরিত্রের নানা দিক বইটিতে খুবই নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি ছিলেন সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, এবং দয়ালু। লেখক নবীর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং পাঠককে এই শিক্ষাগুলি নিজের জীবনে প্রতিফলিত করতে উৎসাহিত করেছেন। বইটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, লেখক নবীর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়কে অত্যন্ত গতিশীল এবং হৃদয়গ্রাহী ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। পাঠক যেন নবীর সময়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান এবং তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে নিজের চোখের সামনে দেখতে পান। নবীর চরিত্রের এই বিশালতা এবং গভীরতা পাঠকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। নবী মুহাম্মদ (স.) এর জন্ম ও শৈশব: বইয়ের প্রথম অংশে মহানবী (স.) এর জন্ম, শৈশব, এবং প্রথম জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করার পর নবীর শৈশব কাটে এতিম হিসেবে। তাঁর পিতৃবিয়োগ ও মায়ের মৃত্যুর ফলে সমাজের প্রতি অবিচার ও অসাম্য নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন। লেখক এখানে নবীর জীবনযাপনের অঙ্গীকার ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছেন। নবীর শৈশবকাল থেকেই যে সততা, ধর্মীয় অনুভূতি, এবং মানবিক গুণাবলী তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল, তা পাঠককে অত্যন্ত প্রভাবিত করে। তিনি যখন ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে শাম ভ্রমণ করেন, তখন তাঁর সততা ও চরিত্রের চিত্র স্পষ্ট হয়। এই ভ্রমণের সময় নবী (স.) এর পাদ্রি বাহীরার সঙ্গে সাক্ষাতের ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাহীরা নবীর মধ্যে আল্লাহর পয়গম্বর হওয়ার লক্ষণগুলো দেখতে পান এবং এটি নবীর জীবনে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করে। আইয়ামে জাহিলিয়া যুগ ও নবীর আবির্ভাব: লেখক আইয়ামে জাহিলিয়া বা অন্ধকার যুগের চিত্র তুলে ধরেন, যেখানে সমাজের বিভিন্ন মূল্যবোধ ভেঙে পড়েছে। এই সময়ের আরব সমাজ ছিল বিভিন্ন কুসংস্কার ও অশ্লীলতার কবলে। লেখক এখানে নবীর আবির্ভাবকে সমাজের জন্য একটি সেরা আশীর্বাদ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। নবী (স.) এর নেতৃত্বে সমাজের অন্ধকার থেকে মুক্তি পাওয়ার যাত্রা শুরু হয়। নবীর আগমন সমাজের জন্য আলোর দিশা প্রদান করে, এবং তিনি যে নৈতিকতার পাঠ দেন, সেটি সেই সময়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন মানুষের জন্য একটি পাথেয় হয়ে দাঁড়ায়। লেখক অত্যন্ত বাস্তবসম্মতভাবে এই ঘটনাগুলি উপস্থাপন করেছেন, যা পাঠককে চিন্তার খোরাক দেয়। নবুওতের সূচনা ও ইসলামের দাওয়াত: বইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নবী মুহাম্মদ (স.) এর নবুওত লাভের ঘটনা। সুরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা নবীর প্রতি যে নির্দেশনা দেন, তা তাঁর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লেখক এই প্রথম নির্দেশনার মাধ্যমে সমাজের অজ্ঞতা ও কুসংস্কার দূর করার জন্য নবীর প্রচেষ্টার চিত্র তুলে ধরেছেন। নবীর প্রতি আগ্রহ এবং দাওয়াতের আহ্বান প্রথমদিকে গোপন থাকলেও, এর পরে তিনি প্রকাশ্যে ইসলামের বার্তা প্রচার করতে শুরু করেন। এই সময়ের কুরাইশদের প্রতিক্রিয়া এবং তাদের অত্যাচারের চিত্রও অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে লেখক তুলে ধরেছেন। ইসলামের বিস্তার ও বিভিন্ন যুদ্ধ: বইয়ের মধ্যবর্তী অংশে ইসলামের বিস্তারের বিভিন্ন দিক এবং নবীর নেতৃত্বের কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বদর, উহুদ এবং খন্দকের যুদ্ধের বর্ণনা পাঠককে সেই সময়ের পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেয়। লেখক এখানে মুসলিমদের একতা, সাহসিকতা এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। নবীর (স.) এর রাজনৈতিক কৌশল এবং তাঁর নেতৃত্বের দক্ষতা বিভিন্ন যুদ্ধের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই যুদ্ধগুলোর মাধ্যমে তিনি ইসলামের জন্য একটি স্থায়ী ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়। বিদায় হজের ভাষণ: বইয়ের সবচেয়ে আবেগময় অংশগুলোর মধ্যে একটি হলো বিদায় হজের ভাষণ। লেখক এই ভাষণে নবীর (স.) জীবন ও তার ইসলামের বার্তা সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছেন। নবীর এই ভাষণটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় বক্তব্য নয়, বরং মানবতার জন্য একটি চিরন্তন জীবনব্যবস্থা। পাঠক যখন এই অধ্যায়টি পড়েন, তখন তাদের মনে নবীর প্রতি এক ধরনের আবেগ তৈরি হয়। বিদায় হজের সময় নবী ইসলামের পূর্ণতা ঘোষণা করেন এবং মুসলিমদের জন্য একটি আদর্শ জীবনবিধান স্থাপন করেন। লেখক এই অধ্যায়টিতে নবীর (স.) মানবতার প্রতি ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধকে তুলে ধরেছেন। নবী মুহাম্মদ (স.) এর মৃত্যু: বইয়ের শেষ অংশে নবী মুহাম্মদ (স.) এর অসুস্থতা এবং মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা পাঠককে আবেগে ভাসিয়ে দেয়। লেখক নবীর জীবনের শেষ সময়ের বর্ণনা অত্যন্ত সুন্দরভাবে দিয়েছেন। নবী (স.) তাঁর মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত উম্মতের জন্য চিন্তিত ছিলেন এবং তাদের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছিলেন। এমনকি মৃত্যুর আগমুহূর্তে তাঁর মন উম্মতের প্রতি ভালোবাসা এবং দয়া দিয়ে পূর্ণ ছিল। লেখকের এই অংশটি পাঠককে গভীরভাবে প্রভাবিত করে, এবং নবীর (স.) প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা সৃষ্টি করে। বইয়ের ভাষা ও প্রকাশনা: বইটির অনুবাদ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সমকালীন প্রকাশনীর উদ্যোগে এই বইয়ের অনুবাদে সহজ ও বোধগম্য বাংলা ব্যবহার করা হয়েছে, যা পাঠকদের জন্য বইটি সহজবোধ্য করেছে। লেখকের আবেগ এবং ভাবনা পাঠকদের কাছে সহজেই পৌঁছেছে, ফলে ইসলামিক ইতিহাস ও রাসুলুল্লাহ (স.) এর জীবনী সহজে অনুধাবন করা সম্ভব হয়েছে। বইটির প্রোডাকশন মানসম্মত। ফন্ট, পৃষ্ঠার মসৃণতা, প্রচ্ছদ এবং বাইন্ডিং পাঠক অভিজ্ঞতাকে উন্নত করেছে। প্রচ্ছদটি বিষয়বস্তু অনুযায়ী আকর্ষণীয় এবং সরল। বইটির সম্পাদনা দক্ষতা ও সূক্ষ্মতার সঙ্গে করা হয়েছে। উপসংহার: মহানবী হযরত মুহম্মদ (স) এর জীবন মানবতার ইতিহাসে এক অসাধারণ উদাহরণ। তাঁর জীবনের প্রতিটি দিকই আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। ‘আর রাহীকুল মাখতুম’ সহ অন্যান্য সিরাত গ্রন্থ আমাদের সেই শিক্ষার ভান্ডারে প্রবেশ করতে সহায়তা করে। একজন মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য সিরাত অধ্যয়ন অপরিহার্য। "আর রাহীকুল মাখতুম" বইটি রাসুল (স.) এর জীবনের বিশালতা এবং তাঁর শিক্ষা সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। লেখক ও সমকালীন প্রকাশনীর প্রচেষ্টা এই গ্রন্থটিকে আলোকিত জীবন গড়ার একটি অনন্য সহায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। নবী (স.) এর জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষা আমাদের ইহকাল ও পরকালে সফল হওয়ার মূলমন্ত্রের প্রতিফলন ঘটায়। আল্লাহর হাবিবের জীবন সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আমরা নিজেকে একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। বই: আর রাহিকুল মাখতুম লেখক: আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ. পৃষ্ঠা: ৬৯৮ মুদ্রিত মূল্য: ৮৫০ টাকা প্রকাশনী: সমকালীন প্রকাশন মোঃ শাহরিয়ার নাবিল
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ পিপাসায় কাতর ব্যক্তির কাছে একটু পানি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনই উম্মাহর জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো নবীজি ﷺ এর আবির্ভাব ও আগমন। নবীজি ﷺ এর জন্ম ছিলো মানবজাতির জন্য কল্যাণ ও বরকতস্বরূপ। নবীজি ﷺ আমাদের জন্য রহমত তাই খুশি হওয়া উচিত। প্রমাণ হিসেবে এ আয়াতটি পেশ করা যায়- হে নবী! আপনি বলুন আল্লাহর ফযল ও রহমতের কারণে। সুতরাং এজন্য তাদের সন্তুষ্ট ও খুশি থাকা উচিত। (সূরা ইউনুস; আয়াত ৫৭-৫৮) সীরাত পাঠই হলো নবীজির জীবন ও আদর্শ জানার সহজ ও সুন্দর একটি মাধ্যম। ফিদাকা আবি ওয়া উম্মি ইয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ। ◾বই প্রসঙ্গ : সীরাত গ্রন্থটি ১৩৯৬ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে রাবিতাতুল আলামিল ইসলামির ব্যবস্থাপনায় পাকিস্তানে একটি সিরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, আর প্রতিযোগিতার বিষয় ছিলো সিরাতুন-নবি। এ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে বিশুদ্ধ ও পরিমার্জিত 'আর রাহিকুল মাখতুম' গ্রন্থটি। পবিত্র সীরাত পাঠের অনন্য প্রাপ্তি হচ্ছে ঈমান-বৃদ্ধি। প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাস সাক্ষী যে, পবিত্র সীরাত যুগে যুগে অসংখ্য মানুষকে ঈমানের পথ দেখিয়েছে। 'আর রাহিকুল মাখতুম'- এর অনুবাদ শব্দচয়নগুলো এত সুন্দর করে উপস্থাপন করা হয়েছে যা সিরাত প্রেমীদের জন্য একটি অতুলনীয় কালজয়ী সিরাত গ্রন্থ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। অনুবাদ ঝরঝরে ও মেদহীন করতে গিয়ে একটুও যাইনি। বরং লেখকের ভাব ও ভাষার পুরোটা তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে বিবরণ ও বিস্তারণে। ◾লেখক পরিচিত : শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ.। ১৯৪৩ সালের ৬ ই জুন ভারতের এক প্রত্যন্ত গ্রাম মোবারকপুরে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থানের নামানুযায়ী তিনি মুবারকপুরী নামে পরিচিতি লাভ করেন। ইসলামী সাহিত্য জগতে সফিউর রহমান মুবারকপুরি একজন অনান্য প্রতিভাবান লেখক ও সাহিত্যিক,তার মনোজ্ঞ লেখনীর প্রস্ফুটন "আর রাহিকুল মাখতুম" সিরাত গ্রন্থটি ইতিমধ্যে সারাবিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছে এবং বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি 'আর রাহিকুল মাখতুম' গ্রন্থটির মাধ্যমে হয়েছেন জগদ্বিখ্যাত এবং সীরাত প্রেমীদের প্রিয় লেখক। ◾পাঠ-প্রতিক্রিয়া : নবীজি ﷺ জীবনী আমাদের মুসলমাদের জন্য যেমন আদর্শ, ঠিক তেমনি সারা বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক ও শিক্ষণীয় মূল্যবান নূর। সীরাত তো অনেক পড়া হয়েছে। কিন্তু 'আর রাহিকুল মাখতুম' কে যখন নতুন সীরাতের স্বাদ গ্রহণের জন্য পড়ছি, কখনো তাতে ডুবে গিয়েছি আবার কখনো অশ্রুজল গড়িয়ে পড়েছে নিজের অজান্তেই। সৌভাগ্যবান মুমিনের জন্য পবিত্র সীরাতের অধ্যয়ন ও আনুগত্য যে অনন্য প্রাপ্তি নিয়ে আসে তা হচ্ছে, নবীজি ﷺ এর প্রতি মহব্বত ও ভালবাসা। মুমিন যতই তাঁকে জানবে ততই তাঁর মহানুভবতার সাথে পরিচিত হবে, মানবজাতির প্রতি তাঁর মহাঅনুগ্রহের দিগন্ত ততই তার সামনে উন্মোচিত হতে থাকবে। মানুষ তো মানুষকে তার মনুষ্যত্ব, মহানুভবতা ও অনুগ্রহের কারণে ভালবেসে থাকে। মুহাম্মদ ﷺ এর জীবনের অধ্যায়গুলো আসলে সংক্ষিপ্ত রূপে বিবরণে তুলে ধরা সম্ভব নই। সে ক্ষেত্রে এ বইটি একদম মনের মতো বিবরণসহ লেখা হয়েছে। যাতে সীরাত পড়ার আসল স্বাদটা গ্রহণ করা যায়। ◾শেষ কথন : শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ. তাঁর প্রতিভার বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে যে সীরাত আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন তা 'আর রাহিকুল মাখতুম' হিসেবে আমরা হাতে পেয়েছি। এবং সৌভাগ্যক্রমে পড়ারও সুযোগ হয়েছে। গ্রন্থটি এ যাবৎকাল পর্যন্ত যেমনিভাবে জনপ্রিয় হয়ে আছে। গ্রন্থটি পড়ার পর বুঝতে পেরেছি যে, এ সীরাতের অমিয় স্বাদ আসলে অন্তরের মধ্যে গেঁথে দেওয়ার জন্য উপযুক্ত। অনেক অনেক সীরাত পাঠ করলেও, এই সীরতটির মতো সুন্দর ও সাবলীলভাবে খুব কমই পেয়েছি। নবীজি ﷺ পবিত্র সীরাত পাঠের মাধ্যমে আমরা জ্ঞান-প্রজ্ঞা, দ্বীন-ঈমান, আদব-আখলাক, আদর্শ জীবন গঠন ও আল্লাহর দিকে দাওয়াত ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে অতুলনীয় পাথেয় অর্জন করতে পারি। ◾বই পরিচিতি : ?বইয়ের নাম: আর রাহিকুল মাখতুম ?লেখক: শাইখ সফিউল রহমান মুবারকপুরী রাহিমাহুল্লাহ ?ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান ?সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ ?শারয়ী নিরক্ষণ: মুফতি সারোয়ার হুসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, মুফতি আবুল হাসানাত কাসিম,মাওলানা আসাদুল্লাহ ফুয়াদ ?প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন ?প্রথম প্রকাশ: ডিসেম্বর ২০২৩ ?বাঁধাই: হার্ডকাভার ?পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৭০৪ ?মুদ্রিত মূল্য: ৮৫০৳ রিভিউদাতা : রুবাইয়া বিনতে হোসেন
Was this review helpful to you?
or
কেন সমকালীনের বইটা পড়বেন :- আপনি যদি আর রাইকুল মাখতুম বইটা পড়তে চান তাহলে সমকালীনের বইটা নির্দ্বিধায় কিনতে পারেন। এক কথায় বইটার অনুবাদ মারাত্মক হয়েছে। অনুবাদকারীদের আমার পক্ষ থেকে একটা বিশেষ ধন্যবাদ থাকলো,এমন অনুবাদ আমাদের উপর দেয়ার জন্য। বাংলা ভাষার সিরাতের অন্য সকল বইয়ের মধ্যে এই বইটি বিশেষ যে কারণে সেটা এই অনুবাদ। কমবেশি প্রায় অনেক প্রকাশনী এই বইটার অনুবাদ করেছে। কিন্তু সমকালীনের মত এমন সাবলীল অনুবাদ পাইনি। বইটা পড়ার সময় কোন ক্লান্তি বা অবসাদ আসেনি।মাঝ রাস্তায় কেউ পড়ার খেয়ে হারাবে না, ঝরঝরে ও একদম সহজবদ্ধ ভাষায় বটি অনুবাদ। যা আপনাকে একের পর এক ভরে যেতে আকাঙ্ক্ষা দিবে। বইটার অনুবাদে আরবি ভাষার মান অক্ষুন্ন ও তার কথা বইয়ের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। সিরাতের সেই আসল ভাষায় এই বইয়ে পাবেন। তাছাড়াও বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিষয় সহ সকল বিষয়ে বর্ণনা ক্ষেত্রে বিভিন্ন "টিকা" বিভিন্ন হাদিস দিয়ে রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে। যা এই বইটির পরিশুদ্ধতা নিশ্চিত প্রমাণ বহন করে।এসব কারণেই বইটি আমার কাছে অনেক সহজবদ্ধ। s s shajid
Was this review helpful to you?
or
"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম " বুক রিভিউ লেখক : মোঃ শফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থী : রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ :রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পবিত্র কুরআন কারিমে আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেছেন, "বলুন, যদি তোমারা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরণ করো যাতে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন।আল্লাহ হলেন পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু ( সুরা আল ইমরান : ৩১) দুনিয়া ও আখিরাতের সুখ শান্তি সফলতা অর্জনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আমার জীবন, আমার পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি যখন আল্লাহ তা'য়ালার ও তার রাসূলের সুন্নাত তরিকায় প্রতিষ্ঠিত হবে তখনই দুনিয়ায় শান্তি বিরাজ করবে ইনশাআল্লাহ । তখন থাকবে না কোনো অপরাধ, ধর্ষণ, লুটতরাজ, ডাকাতি, ইভটিজিং ও মাদকাসক্ত। তবুও কেন রাসূল (স.) এর জিন্দেগীর মত আমরা আমাদের জীবনকে সাজাই না? কেন আমরা নাস্তিকদের অনুসরণ করি? কেন তাদের সংস্কৃতি নিজের মধ্যে ধারণ করে নিজের দ্বারা কিয়ামতের আলামত প্রকাশ করি? ভূমিকা: বালুকাময় প্রান্তর ধূসর মরুভূমি বা তৃনশয্য বিহীন অঞ্চল আরব। ভৌগোলিক এবং ভূপ্রাকৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আরব উপদ্বীপ বা জাজিরাতুল আরব (তিন দিকে জল একদিকে স্থল বেষ্টিত) অত্যন্ত গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এরপর কয়েক'শো বছর নবীহীন জামানায় সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় ঘটে আরবে। কন্যা শিশু হত্যা, যুদ্ধ মারামারি, ডাকাতি, লুটতরাজ এবং ধর্ষণ ছাড়াও এমন কোন নিকৃষ্ট ঘটনা ছিল না যা সেখানে ঘটতো না।হত্যার বিনিময়ে হত্যা, রক্তের বিনিময়ে রক্ত যাবতীয় নিকৃষ্ট পাপাচারে নিমজ্জিত ছিল পুরো জাতি। তারা কতই না বর্বর অসভ্য ছিল? যা ইতিহাসে "আইয়ামে জাহেলিয়া" বা অন্ধকার যুগ নামে পরিচিত। প্রভাত হবার পূর্বে শুভে সাদিকের আলো এবং রক্তিম পূর্বাকাশ যেমন পৃথিবীতে আলো উজ্জ্বল সূর্যোদয়ের জানান দেয় তেমনি নবুয়াতি সূর্যের উদয় মুহূর্ত যখন একেবারে নিকটে তখন পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এমন সব ঘটনা ঘটতে লাগলো যা একজন মহামানবের শুভ জন্মের আগমনী সংবাদ দিচ্ছিল। মহাদ্দিস ইতিহাসবিদদের পরিভাষায় বাসায় সেগুলোকে "ইরহাসাত"বা অপেক্ষমান নিদর্শন বলা হয়। তিনি হলেন সমগ্র বিশ্বের মানবতার অগ্রদূত, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল, খাতামুন নাবিয়্যিন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সিরাত সম্পর্কিত তথ্য : সিরাত একটি আরবি শব্দ। যা ইয়াসিরু ক্রিয়াপদ থেকে এসেছে। যার অর্থ ভ্রমন করা। আর কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির সিরাত বলতে উক্ত ব্যক্তির জীবন আদর্শ জন্ম ও জীবনের বিভিন্ন ঘটনা এবং আচার আচরণের বৈশিষ্ট্য এবং মৃত্যু পর্যায়ক্রমে পাঠকের সামনে সহজ ও বোধগম্য ভাষায় উপস্থাপন করা। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিয়ে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সিরাত গ্রন্থ লিখিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। "১০০ মনীষীর জীবনী" গ্রন্থেও লেখক মাইকেল এইচ হার্ট অমুসলিম হওয়া স্বত্তেও মহানবী(স.) কে সবার শীর্ষে স্থান দিয়েছেন। বিশ্বের সিরাত প্রতিযোগিতার মধ্যে রবিউল আউয়াল ১৩৯৬ হিজরীতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত "রাবেতা আলমের ইসলামি সংগঠনের" প্রতিযোগিতাটি ছিল অসাধারণ ব্যতিক্রমধর্মী এবং তাৎপর্য। গর্বের সহিত বলতে ইচ্ছে করছে যে ১১৮২ টি পান্ডুলিপির মধ্যে আল্লামা শফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহ:) এর "আর রাহীকুল মাখতুম " জীবনী গ্রন্থখানা সম্মানের সাথে প্রথম স্থান অর্জন করেছে, আলহামদুলিল্লাহ। কবি পরিচিত : আল্লামা শফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহ:) একজন ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক, মনীষী এবং আলেমেদীন। তিনি ১৯৪৩ সালে ৬ ই জুন মোবারকপুরের উত্তর দিকে হুসাইনাবাদ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা কালজয়ী সিরাত গ্রন্থ " আর রাহীকুল মাখতুম"। তিনি একাধারে "মাসিক মুহাদ্দিস" পত্রিকার সম্পাদক পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন। আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুর মোবারকপুরী ২০০৬ সালের ১ ডিসেম্বর পরলোকগমন করেন। আল্লাহ তা' আলা হুজুরকে পরকালে জান্নাতুল ফেরদৌসের দান করুক। সীরাতের বিবরণ: জীবনী গ্রন্থটিতে লেখক প্রাচীন আরবের ভূ-প্রকৃতি সামাজিক অবস্থা ও নানা প্রেক্ষাপট ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। শিশুকালে বাবা- মা হারানো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কষ্ট ও অস্বচ্ছলতার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করা পাঠকের মনে দুঃখ ভারাকান্ত মন ও হৃদয় স্পর্শ করেছে। সততা ও সত্যবাদিতার জন্য প্রতিবেশীর নিকট থেকে পাওয়া "আল -আমিন" উপাধি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুপ্রেরণা ও আদর্শ। পবিত্র কুরআনে কারীমে আল্লাহ স্বয়ং নিজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আখলাকের নিশ্চয়তা দিয়েছেন, "আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী (সুরা ক্বলম: ০৪)" সিরাত গ্রন্থের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু : ✅ ব্যবসা - বাণিজ্য ✅ বিবাহ ✅ নবুয়ত লাভ ✅ ইসলাম প্রচার ✅ হিজরত ✅ মদিনা সনদ ✅ বদরের যুদ্ধ ✅ ওহুদের যুদ্ধ ✅ খন্দকের যুদ্ধ ✅ মক্কা বিজয় ✅ আরাফাতের ঐতিহাসিক ভাষণ ✅ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ একের পর এক ঘটনা পর্যায়ক্রমে কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিশ্বস্ত সোর্স থেকে গৃহীত তথ্যসমূহ এত সুন্দর সহজ সরল সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন যা আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রকাশনী সম্পর্কিত কথা: সমকালীন থেকে প্রকাশিত "আর রহিকুল মাখতুম" গ্রন্থটি আসলেই অনন্য একটি বিন্যাস। সবুজ রঙে, মোটা কাভারে এবং বুক বাইন্ডিং, সূচীপত্র বিন্যাস, লেখকের কথা, প্রকাশকের কথা, প্রতিটি পৃষ্ঠায় নির্ভুল শব্দ প্রয়োগ, গুরুচন্ডালী ও বাহুল্যদোষ মুক্ত রেখে পাশাপাশি আলেমদের নিরীক্ষণে বা রাহাবারিত্বে ত্রুটিমুক্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্ম থেকে শুরু করে শৈশব, যৌবনকাল, বিবাহ, পরিবার সংক্রান্ত, নবুয়ত লাভ, ধর্ম প্রচার, হিজরত, হুদায়বিয়ার সন্ধি, বদর, উহুদ ওখন্দকের যুদ্ধ সমূহ এবং মক্কা বিজয়, ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ, শেষ বিশ্বাস নিঃশ্বাস পর্যন্ত লেখকের ধারাবাহিকভাবে ঘটনাগুলো পর্যায় ক্রমে সমকালীন প্রকাশনী দ্বারা নান্দনিক বিন্যাস পাঠক হিসেবে সন্তুষ্টিচিত্যে গ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত। ব্যক্তিগত ভাবে সমকালীন প্রকাশনীর বইগুলো ভালো লাগার কারণ : ১/ লেখায় ট্রীকা ও বিশ্লেষণ প্রয়োগ; ২/ কাগজের কালার কম্বিনেশন ; ৩/ সামঞ্জস্যপূর্ণ ফন্ট সাইজ ও বিভিন্ন চিহ্ন প্রয়োগ; ৪/ নাস্তিকতাবাদে বিশ্বাসী লেখকদের এড়িয়ে চলা; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, এবছর ২০২৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলায় সমকালীন প্রকাশনীর বইয়ের গুনগতমানে মুগ্ধ হয়ে মীযান হারুনের " কিয়ামতের আলামত" বইটি কিনতে বাধ্য হয়েছিলাম। ✅আর রাহিকুল মাখতুম সিরাতগ্রন্থটি কেন জরুরি : মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম উম্মার এমন একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্ব যিনি সত্যবাদী ন্যায় ও ইনসাফের শাসন কায়েম করে দেখিয়েছেন। বিচারক কিভাবে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করবেন, শাসক কিভাবে শাসন করবেন, রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে রাষ্ট্র পরিচালক করবেন, দুনিয়া ও আখিরাতে কিভাবে সফলতা লাভ করবেন এবং মাজলুমের কাছে সদয় ও শত্রুর কাছে বীরের পরিচয় বহন করে দেখিয়ে গেছেন বিশ্বকে।তিনি স্ত্রীর কাছে আদর্শ স্বামী, সন্তানের কাছে আদর্শ পিতা, চাকরের কাছে আদর্শ মনিব, ছাত্রের কাছে আদর্শ শিক্ষক, উম্মতের কাছে আদর্শ নবী আদর্শ ও অনুপ্রেরণা রেখে গেছেন। ?এক নজরে বই পরিচিতি ? বই : আর রাহিকুল মাখতুম লেখক : আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি ( রহ.) ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান প্রকাশক: সমকালীন প্রকাশন প্রকাশকাল: দ্বিতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ২০২৪ পৃষ্ঠাসংখ্যা : ৭০৪ মুদ্রিত মূল্য : ৮৫০৳ #আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪
Was this review helpful to you?
or
⭐ নিজের কিছু অনূভুতি ⭐ সমকালীনের এই আর রাহীকুল মাখতুমটি পড়ার সময় বারবার শুধু আমি মুগ্ধ হয়েছি ভাষা শৈলীর সৌন্দর্যে, সাহিত্যের উৎকর্ষে, আরো এমন অনন্য সকল গুণাবলীর কারণে-বিশেষ করে আরবি কবিতাগুলোর কাব্যিক অনুবাদে, যেন সেগুলো একদম মৌলিক কবিতা, অন্যরকম স্বাদ,। যারা কবিতাপ্রিয়, তারা অনেক বেশি আকর্ষিত হবে এবং চাইলে এ সমস্ত কবিতা অনেক মজার সাথে মুখস্ত করে নিতে পারবে। আমি নিশ্চিত, এই বইটি পাঠ করে যে কোন বিচক্ষণ এবং উৎসাহী পাঠক মুগ্ধ না হয়ে থাকতে পারবে না। নিঃসন্দেহে একটি বাংলাদেশে এই পর্যন্ত যে কটি অনুবাদ হয়েছে তার ভিতরে সর্বাধিক সমাদৃত, জনপ্রিয় এবং সহজ ও প্রাণবন্ত অনুবাদ। রিভিউ- গাজি আলি
Was this review helpful to you?
or
বাজারে তো ‘আর রাহিকুল মাখতুম’ আরও অনেক প্রকাশনি থেকেই বেরিয়েছে। তাহলে কেন সমকালীন আলাদা? · শিরোনামঃ আরব ভূখন্ডের আয়তন ও অবস্থান 'আরব' সে তো এক বিশাল মরুভুমি! যত দূর চোখ যায় কেবল বালু আর বালু! দিগন্তবিস্তৃত সেই মরুর বুকে শত শত মাইল বিচরণ করেও দেখা মেলে না এক ফোঁটা সুমিষ্ট জল। নেই কোনো গাছপালা, আঁকাবাঁকা মেঠো পথ, সবুজ অরন্য কিংবা ছায়া সুনিবিড় গ্রাম। আরব মানেই যেন ভিন্ন এক দৃশ্যপট। তবে প্রাচীনকাল থেকেই 'আরব' বলতে আরব উপদ্বীপ এবং সেখানকার স্থানীয়দের বোঝানো হয়। (পৃষ্ঠাঃ ২৯) অন্য প্রকাশনির বইগুলোতে এ ধরনের আলোচনায় আমি শাব্দিক অনুবাদ পেয়েছি। তাই অধ্যায়টি কোনোভাবে হৃদয়াঙ্গম করতে পারিনি। এবার তার ব্যতিক্রম হয়েছে। এরপর আরবদের বিভিন্ন গোষ্ঠী, তাদের সাংস্কৃতিক বিভেদ, প্রজ্ঞা, মানচিত্রে অবস্থান, অর্থনৈতিক ভিত এগুলো যেমন বোধগম্য হয়েছে, তেমনি যু’দ্ধের বিবরণ, সাহাবিদের আলোচনা সহজে মনে রাখতে সহজ হয়েছে। কুরআনের আয়াতের অর্থ ও রেফারেন্সের ক্ষেত্রেও সরল অনুবাদের কাজ প্রশংসনীয়। যদিও পাঠকভেদে মতামত ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু সাহিত্যরসের কারণে, আর অন্যসকল অনুবাদের কাছে সমকালীনের ‘আর রাহিকুল মাখতুম’কে এগিয়ে রাখব সাহিত্যরস যোগ করার জন্য। তবে শাব্দিক ভাষান্তর পড়তে চাইলে অন্যান্য প্রকাশনি থেকে ক্রয় করতে পারেন। তা বাদেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজা-বাদশাহ, রাজনৈ’তিক পরিমন্ডল, চক্রা’ন্ত ও ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্রে শব্দচয়ন খুব পরিশীলিত মনে হয়েছে। আনুসঙ্গিক সকল কিছুই ভালো লাগলেও প্রচ্ছদের কাজ ভালো লাগেনি। চাইলেই নতুনত্ব আনা যেত।
Was this review helpful to you?
or
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ?বই পরিচিতি: ? বইয়ের নাম: আর রাহিকুল মাখতুম ? লেখকের নাম: শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ ? প্রকাশনী: সমকালীন প্রকাশন ?পৃষ্ঠা: ৭০৪ ?কভার: হার্ড কভার ? সংস্করণ: প্রথম প্রকাশ, ডিসেম্বর ২০২৩ ?মুদ্রিত মূল্য: ৮৫০ টাকা। ?আর রাহিকুল মাখতুমে যা আছে: আমার ব্যক্তিগত অভিমতে,সংক্ষিপ্ত পরিসরে সিরাত গ্রন্থ পড়তে চায়লে "রাহীকুল মাখতুম" বেস্ট। তবে প্রকাশনা ভেদে অনুবাদের ভিন্নতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ফাস্ট প্রায়োরিটি হিসাবে 'সমকালীন প্রকাশন' থেকে প্রকাশিত বইটি দেখা যেতে পারে।এর চেয়ে ভালো হতে পারে, তবে আমি ৪টি প্রকাশনা থেকে "রাহীকুল মাখতুম" সংগ্রহ করেছি। তার মধ্যে থেকে তাদের টা ভালো লেগেছে।কেননা, তাদের অনুবাদটি সহজ সরল সাবলীল ভাষায় লিখা।যেকোনো শ্রেনীর পাঠক পড়ে তৃপ্তি পাওয়ার মতো। রাসূলের সময় আরবের কবিতার উৎকর্ষতা ছিলো অসাধারণ, সকল কিছুতেই ছিলো কবিতার সমারোহ। টিম সমকালীন এই কবিতাগুলো বাংলা ভাষার সাথে মিলিয়ে মনোমুগ্ধকর করে সাজিয়েছেন। পাশাপাশি কুরআন হাদীস ও প্রয়োজনীয় রেফারেন্সের যথোপযুক্ত। কিছু কিছু বিষয় টীকাটিপ্পনী দিয়ে সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন, এটা পাঠকের জন্য একটু প্লাস পয়েন্ট। সংক্ষিপ্ত পরিসরের সিরাত জানতে হলে,এটি একটি ভালো বই। এই বইটিতে রাসূল সা: এর জন্মের পূর্ব থেকে নববী জীবন সহ ইন্তেকাল পর্যন্ত আরব অঞ্চলের পাশাপাশি সমসাময়িক বিশ্বের পরিস্থিতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিসরে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আশা করা যায়,কোন পাঠক সিরাত গ্রন্থ "রাহিকুল মাখতুম" পড়া শুরু করলে হতাশ হবেন না,ইনশাআল্লাহ।রাসূলের মহিমান্বিত জীবনগাথা আর আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের অনবদ্য সৃষ্টি সিরাত। সিরাত অধ্যয়ন করে, এর আলোকে যেন আমরা আমাদের জীবন গঠন করতে পারি,মহান রবের নিকট এটাই প্রত্যাশা।
Was this review helpful to you?
or
◾ বই-প্রসঙ্গ: আর রাহীকুল মাখতুম ◾ সাইয়েদুল মুরসালিন ও খাতামুন নাবিয়ীন এর জীবনী লিখার দুঃসাহসিক এক অভিযাত্রায় লেখকের বিশুদ্ধ নিয়তই যেন তাঁর এ কর্মযজ্ঞ কে পুরো পৃথিবীর কাছে সমাদৃত করেছে। তার নিজের ভাষায়.. “নিজের ভেতরকার অন্ধ গলিতে আবদ্ধ থাকার চেয়ে নবী জীবনের আলোকিত রাজপথে বিচরণ করা আমার জন্য বেশি নিরাপদ এবং সৌভাগ্যের বিষয়। আমি যদি এই অভিযাত্রায় শেষ পর্যন্ত টিকে যায় তবে নবীজি ভীষণ খুশি হবেন” তার এ পরম আকাঙ্ক্ষাই যেন বইটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ১১৮২ টি পান্ডুলিপির মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে বইটি। জগদ্বিখ্যাত ও বিশুদ্ধ নবি জীবনী হিসেবে শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রচিত এই গ্রন্থটি কালজয়ী সিরাত গ্রন্থে উত্তীর্ণ হয়। বহু ভাষায় অগণিত বার অনূদিত হওয়া সত্ত্বেও আজ অবধি গ্রন্থটির আবেদন এতটুকু কমে যায়নি। ◾ বই-বৃত্তান্ত ◾ যে সমাজকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় হাবীবকে প্রেরণের উৎকৃষ্ট লক্ষ্য বস্তু হিসেবে বেছে নিলেন,যে সময়কে তিনি নির্বাচন করলেন তার একটি সামগ্রিক চিত্রায়ণের মধ্য দিয়েই বইটির সূচনা। প্রারম্ভিক বক্তব্য শেষ করেই নবীজীর আগমন মুহূর্ত। সেই থেকে শৈশব কৈশোর পেরিয়ে পরিণত বয়সের প্রতিটি ঘটনাবহুল উপস্থাপন। নবুয়তের পূর্বেই সকলের মাঝে গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত একজন আদর্শ মানুষ হয়ে উঠার প্রতিটি পদক্ষেপ লেখকের বর্ণণায় চিত্রায়িত হয়েছে। নবুওয়াত প্রাপ্তির পর থেকে নির্ঘুম রজনীর আত্মত্যাগের যাত্রা শুরু,কুরায়েশদের জুলুম, তায়েফের রক্তাক্ত সফর,ধরণীর বুক থেকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সোনালী সমাজ বিনির্মাণের নতুন এক উর্বর ভূমি মদিনায় পদার্পণ; যেখান থেকে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবতারণা। জীবনের বিরামহীন এ যাত্রায় অবশেষে মক্কা বিজয়। বিজয়ের সুবাতাস চারিদিকে। আল্লাহর দ্বীনের বিজয়। ইসলামের বিজয় পতাকা পতপত করে উড়তে থাকে পুরো আরব দুনিয়ায়। এবার কিছুটা স্বস্তির যাত্রা মুসলমানগণের। তবুও যে তাদের শেখার এখনো অনেক বাকি। পরিশেষে বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক লগ্নের বিদায়ী ভাষণ; বিশ্ব মানবতার মুক্তির এক অনন্য সনদ। মক্কা মদিনার অলিতে গলিতে আল্লাহর দ্বীনের পূর্ণতার প্রতিচ্ছবি। এ যেন পূর্ণতার পরেই ক্ষয়ের ইঙ্গিত। আরব জাহান ছাড়িয়ে দূর দূরান্ত থেকে প্রতিনিধি দলের আগমন পরম্পরায় ইসলামের ঝাণ্ডা যখন আরব ছাড়িয়ে দুই পরাশক্তি পারস্য ও রোমের দিকে ধাবমান, তেমনি এক লগ্নে বিশ্ব জাহানের মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ সা এর অন্তিম যাত্রা তার প্রিয়তমের সান্নিধ্যে। বইটির শেষাংশে রাসূল সা এর পরিবার-পরিজন ও রাসূল এর দৈহিক ও চারিত্রিক গুণাবলীর সুনিপুণ বর্ণনায় লেখক সমাপ্তি টেনেছেন তার লেখনীর। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ◾ অনুবাদ এবং ভাষাশৈলী◾ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় বইটি অনূদিত হয়েছে। বাংলা ভাষাতেও এর ব্যাতিক্রম নয়। যেকোনো অনুবাদ গ্রন্থের ক্ষেত্রে পাঠকের বিবেচনার উর্ধ্বে থাকে সহজ সরল অনুবাদ ও প্রাঞ্জলতা। ভাষার সাহিত্যিক মান ও ভাষার আবেদনকে বজায় রেখে কোনো অনুবাদ সত্যিই প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা ব্যতীত সম্ভব নয়। শব্দের দুর্বোধ্যতা পরিহার করে সহজে অনুধাবন যোগ্য ভঙিমায় বইটি তার নিপুণতার স্বাক্ষর রেখেছে। একদম নির্জলা,ঝরঝরে অনুবাদে ভাষাশৈলী বোধগম্য এবং প্রশংসনীয় । প্রয়োজনীয় টিকা,বিশ্লেষণ ও তথ্যসূত্র গুলো পাঠকের মনে জাগ্রত হওয়া প্রশ্নকে নিবৃত্ত করেছে অবচেতন ভাবেই । এক্ষেত্রে কোনদিক দিয়ে সমকালীনের এই ছাপাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়নি।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪। নবীজির জীবনী জানার অনেক দিন থেকে ইচ্ছা ছিল, নিজের হাতে অনেকগুলো সিরাতের গ্রন্থ নিয়েছিলাম, কিন্তু সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহীকুল মাখতুম বইটি এক কথায় বেস্ট। আমার মতে এই বইটি সবার সংগ্রহে থাকা উচিত। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা নবীজির এর জীবনের ভাল মত জানে না, তাদের জন্য এই বইটি বেস্ট। আপনি যদি নিজের কাছে নবীজির একটি সিরাতের গ্রন্থ রাখতে চান, এই বইটি আমি আপনাকে হাইলি রিকোমেনড করব, কেননা এই বইটি ১৮৮২ একটি বইয়ের মধ্যে প্রথম স্থান লাভ করেছে, এবং সমকালীন প্রকাশনী এ বইটিকে খুবই সুন্দর ও সহজ ভাষায় অনুবাদ করেছে। এক কথা বলতে গেলে একটি চমৎকার কাজ হয়েছে। নিজের জ্ঞানের পরিধিকে বাড়ানোর জন্য এই বইটা অবশ্যই আপনারা পড়বেন, এবং অন্যদেরকেও এ বইটি পড়ার জন্য উৎসাহ দিবেন। জাযাকাল্লাহু খাইরান। অবশেষে সমকালীন প্রকাশনীকে বলতে চাই, আপনাদের এই কাজটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই বইটি যারা অনেকেই উপকৃত হচ্ছে। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন। {সৈয়দা তোহা মণি}
Was this review helpful to you?
or
★★★ #আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪# রিভিউয়ের সার সংক্ষেপ লেখক: ismam muktadir আল্লাহ তায়লা নবি করিম সা: কে দিতে পাঠিয়েছে এটি সবচেয়ে বড় রহমত।আল্ল্াহমা শফিউর রহমান মোবারকপুরী এই বইটি লেখেছিল। মূলত এটি বাংলাতে অনুবাদ করেছিল অনেক প্রকাশনী। কিন্তু তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ভালো এবং স্বচ্ছ বাংলা অনুবাদ করেছে সমকালীন প্রকাশন। এরপর প্রত্যেকটা ঘটনা সুন্দর সুন্দর সমকালীন প্রকাশন অনুবাদ করেছে। কোন জায়গায় জটিল শব্দ ব্যবহার করে নাই। সবাই সুন্দরভাবে পরতে পারবে। সুন্দর নকশা বইয়ের কভারে। সবার উচিত সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম বইটা কিনা। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রয় হওয়া বইটি প্রকাশনী এর আর রাহীকুল মাখতুম।বইটার কভারে সবুজ রং ব্যবহার করাতে সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। বইটা সুন্দর ভাবে লেখা হয়েছে। এই প্রকাশনীর অনুবাদ সব সময় ভালো হয়।সমকালীন প্রকাশনী প্রায় অনেকগুলো বই আছে।যার মধ্যে অনুবাদ টা সবচেয়ে ভালো লাগে সমকালীনের।।।
Was this review helpful to you?
or
নবিজীকে আমরা কখনও দেখি নি, তাই তার সীরাতকে আঁকড়ে আমরা তার অস্তিত্বের একটু অনুভূতি পাই। যারা তার সাহচর্যে ছিলেন, তাদের মতো সৌভাগ্য আমাদের না হতে পারে, কিন্তু তার সীরাত পড়লে এখনও আমাদের চোখে তার জীবনের যে ছবি ভেসে ওঠে, মনে হয় আমরাও যেন নবিজী (ﷺ) এর পাশেই বসে আছি, তাকে দেখছি— এও কি কম সৌভাগ্যের কথা? সফিউর রহমান মুবারকপুরি যে প্রাঞ্জল সীরাহ রচনা করে গিয়েছেন, সেটা পড়ে তুষ্ট হচ্ছে হাজারও প্রাণ। চারজনের অনুবাদ, তিনজনের কাব্যানুবাদ এবং আরও তিনজনের সম্পাদনা বইটাকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। প্রত্যেকটা কবিতায় মূল আরবির ভাব আর বাংলার ছন্দ খুব দারুণভাবে বজায় থেকেছে, যেটা আমার নিজের কাছে অত্যন্ত ভালো লেগেছে। বইয়ের নীলাভ প্রচ্ছদের জন্য সমকালীনের আর রাহিকুল মাখতুম আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। মোটকথা, সমকালীনের এই সংস্করণ যেকোনো ঘরানার সীরাতপিপাসুর তৃষ্ণা নিবারণ করবে, ইনশাআল্লাহ।
Was this review helpful to you?
or
সমকালীন প্রকাশনের সিরাহ বিষয়ক একটি গ্রন্থ "আর রাহীকূল মাখতুম "। তাদের প্রকাশিত এই বইটির প্রচ্ছদ, লেখনী, ভাষাশৈলী সত্যিই প্রসংশার দাবীদার। বিশ্বনবী (স:) এর সমস্ত জীবন এত বিস্তারিত ও সুনিপূণভাবে এই বইয়ে ফুটে উঠেছে যে, রাসুলুল্লাহ (স:) এর পুরো জীবন নিজের মানসপটে এঁকে ফেলতে পারবেন যেকোনো পাঠক। সাথে সাথে পবিত্র কুরআনের আয়াত গুলো নাযিলের প্রেক্ষাপট ও পাঠকের বোধগম্য হবে। নবীকে জানতে একজন মুসলিমের "আর রাহীকূল মাখতুম" এর মত একটি বই অবশ্যই পড়া উচিত। আল্লাহ উত্তম বিনিময় দান করুন সমকালীন প্রকাশন এবং "আর রাহীকূল মাখতুম" বইটির সাথে জড়িত সকলকে।
Was this review helpful to you?
or
**আর-রাহিকুল মাখতুম: ইসলামের অমূল্য ইতিহাস** "আর-রাহিকুল মাখতুম" গ্রন্থটি নবীজির (সা.) জীবনের ওপর ভিত্তি করে রচিত একটি অনন্য সীরাত সাহিত্য। মাওলানা সাফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহ.) রচিত এই বইটি নবীজির (সা.) জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং ইসলামের প্রারম্ভিক যুগের ইতিহাস সংক্ষিপ্ত ও বিশদভাবে উপস্থাপন করে। বইটি নবীজির (সা.) জন্ম, নবুওয়াত লাভ, ইসলাম প্রচার, মক্কী ও মাদানী জীবন, মক্কা বিজয়, এবং বিদায় হজের ঘটনাগুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে। সমকালীন প্রকাশনীর সংস্করণটি সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় অনূদিত, যেখানে মানচিত্র, টীকা এবং পাদটীকা সংযোজন করে বইটিকে আরও বোধগম্য ও সমৃদ্ধ করা হয়েছে। এটি ইসলামের ইতিহাস জানতে ও নবীজির (সা.) জীবন থেকে শিক্ষা নিতে আগ্রহী পাঠকদের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ।
Was this review helpful to you?
or
হালের ক্রেজ আর রাহিকুল মাখতুমের কথা কে না জানে? বাজারে এত এত অনুবাদ থাকতেও তাহলে কেন সমকালীনের আর রাহিকুল মাখতুমই বেস্ট অল্টারনেটিভ? এই প্রশ্নের সুলুকসন্ধানেই বইটি হাতে নেয়া। বইটির পেছনে সমকালীন টীমের দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রম স্পষ্ট হয় বইটির প্রতিটি পাতায়। তথ্যে ঠাসা একটি একাডেমিক ধাঁচে লেখা নন ফিকশনও পড়তে ঝরঝরে হয়ে দাঁড়িয়েছে সমকালীনের বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল মেদহীন অনুবাদে। শিরোনাম, আয়াত কিংবা কবিতা, সবখানেই অনন্য কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছে অনুবাদক টীম। প্রয়োজনীয় টীকা টিপ্পনী দিতেও আলস্য করেনি তারা। উৎসগ্রন্থ ঘেটে বের করে এনেছে যথাসম্ভব বিশুদ্ধ তথ্য। আর রাহিকুল মাখতুমের জবড়জং অনুবাদ পড়ে ভীতসন্ত্রস্ত পাঠকের জন্য সমকালীন প্রকাশিত এই অনুবাদটি মাস্টরিড।
Was this review helpful to you?
or
আমি রাহিকুল মাখতুমকে একটি চমৎকার বই হিসাবে উল্লেখ করবো,কারন এই গ্রন্থটি জীবনের একটি সুষম ওভারভিউ প্রদান করে। লেখক বুদ্ধিবৃত্তিক জটিলতা এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলোচনার খুব গভীরে প্রবেশ করেননি, তেমনি তিনি এটিকে এতটা সীমাবদ্ধ করেননি যে এটি অধ্যয়ন করার পরে পাঠকের তৃষ্ণা মিটবেনা। আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি,লেখক সম্পূর্ণ সিরাহকে কভার করে তার আসল উদ্দেশ্য পূরণ করতে সফল হয়েছে। বইটির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট হচ্ছে:- পয়েন্ট :-১ লেখক খুব সুন্দরভাবে ঘটনার সাথে প্রাসঙ্গিক কোরআনের আয়াতগুলিকে জুড়ে দিয়েছেন। পয়েন্ট:-২ বইটির ভাষা খুব সাবলীল ও সহজবোধ্য।সব বয়সের পাঠকদের অধ্যয়ন উপযোগী একটি সিরাত গ্রন্হ। লেখক ভৌগোলিক দিকগুলি কভার করার সময় এটি কালানুক্রমিকভাবে লিখেছেন এবং নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে ডায়াগ্রাম অর্থাৎ চিত্র প্রদান করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, উহুদ পর্বত প্রদর্শনকারী একটি মানচিত্র এবং যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত কৌশল।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪। ❀ **আর রাহিকুল মাখতুম: একটি পর্যালোচনা** ❀ “আর রাহিকুল মাখতুম” (অর্থ: সিলমোহরকৃত অমৃত) রাসুলুল্লাহ (সা.) এর জীবনী ভিত্তিক এক অনন্য গ্রন্থ, যা লিখেছেন মাওলানা সাফিউর রহমান মোবারকপুরী। ১৯৭৬ সালে এটি "বিশ্ব সিরাত প্রতিযোগিতা"য় প্রথম স্থান অর্জন করে। এই বইটি আজও ইসলামী বিশ্বে রাসুল (সা.) এর জীবনী নিয়ে লেখা অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। ❀ গ্রন্থটির অনন্য বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো : ১. **ইসলামের আগমনের পূর্ববর্তী আরব সমাজ:** বইটির প্রথমাংশে লেখক আরব সমাজের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন। রাসুল (সা.) এর আগমনের আগে আরবরা যে অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় ছিল, তা বইটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২. **নবীজির জন্ম ও শৈশব:** রাসুল (সা.) এর বংশধারা এবং তাঁর শৈশব জীবনের ঘটনা খুব যত্নসহকারে বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। এতে পাঠকরা রাসুলের বাল্যকাল থেকে তাঁর চরিত্রের অনন্য গুণাবলী সম্পর্কে জানতে পারেন। ৩. **নবুওয়াত প্রাপ্তি এবং ইসলাম প্রচার:** রাসুল (সা.) যখন নবুওয়াত লাভ করেন এবং ইসলামের প্রচার শুরু করেন, তখনকার কঠিন সময় এবং কুরাইশদের প্রতিরোধের বিস্তারিত বিবরণ বইটিতে রয়েছে। ৪. **মদিনায় হিজরত:** মদিনায় হিজরতের ঘটনা এবং ইসলামের নতুন পর্বের সূচনা বইটিতে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে। মদিনায় ইসলামের প্রতিষ্ঠা, রাসুলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, এবং মদিনা সনদের বিবরণও স্থান পেয়েছে। ৫. **বদর, উহুদ ও মক্কা বিজয়:** ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে মুসলমানদের সংগ্রাম, ত্যাগ এবং বিজয় অত্যন্ত সুনিপুণভাবে বর্ণিত হয়েছে। বিশেষ করে বদর যুদ্ধের বিজয় এবং মক্কা বিজয়ের ঘটনা পাঠকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। ৬. **বিদায় হজ এবং রাসুলের জীবনাবসান:** রাসুলের বিদায় হজের খুতবা এবং তাঁর শেষ জীবন নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী। এতে মানবাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার, এবং ইসলামের মূলনীতি সম্পর্কে তাঁর নির্দেশনা রয়েছে। ❀ উপসংহার: “আর রাহিকুল মাখতুম” গ্রন্থটি তথ্যসমৃদ্ধ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত। এটি রাসুলের জীবন সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয় এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি একটি আদর্শ গ্রন্থ। বাজারে নানা প্রকাশনী থেকে বইটি অনুবাদ করে প্রকাশ করলেও, সমকালীন প্রকাশনের “আর রাহিকুল মাখতুম” যেনো ভিন্নতা বহন করে। ❀ জটিলতা এড়িয়ে বইটি অনূদিত হয়েছে সহজ সাবলীল ভাষায়। নিতান্ত সাবলীল ভাষায় শব্দের গাঁথুনি বইটিকে অনবদ্য করে তুলেছে। যা স্বাচ্ছন্দ্যে সীরাত প্রেমীদের পৌঁছাবে শেষ পৃষ্ঠা অবধি। ❀ সমকালীন প্রকাশনী থেকে বইটি সম্পাদনা করেন : আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ। প্রকাশক: সমকালীন প্রকাশন। ❀ আল্লাহ বইটি প্রকাশের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের খেদমতকে কবুল করুন। এবং দুনিয়া ও আখেরাতে এর উত্তম জাযা দান করুন৷
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ! নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একাদিক জীবনী পড়াহয়েছে,এই বইটি এখনো পড়া হয়নি, শুনেছি বইটি নাকি ধারুন,অপেক্ষায় আছি পড়ার প্রবল ইচ্ছে নিয়ে।
Was this review helpful to you?
or
সমকালীন প্রকাশনের রাহিকুল মাখতুম বইটি মূল আরবী ভাষার ন্যায় সহজ-সাবলীলভাবে অনুবাদের কারণে সহজেই যে কেউ কোনরূপ জটিলতা ছাড়াই খুব সহজে, ফুরফুরে মেজাজে পড়ে ফেলতে পারবেন ইন শা আল্লাহ। বইটি সার্বিকভাবে সুন্দর, প্রাণবন্ত এবং প্রাঞ্জল করে তুলে ধরা হয়েছে। লেখার মান মাশা-আল্লাহ! বইয়ের প্রতিটি অনুচ্ছেদের শিরোনাম থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় টীকা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, তথ্যসূত্র সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যক্তি, স্থান, বিভিন্ন স্থাপনার বিশুদ্ধ নাম তুলে ধরা হয়েছে। বইয়ে উল্লেখ করা কবিতাগুলোও মনকাড়া। আরবের ভৌগোলিক অবস্থান এবং বিভিন্ন গোত্র, জাতিগোষ্ঠী, তৎকালীন শাসনব্যবস্থা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, মতবাদ থেকে শুরু করে রাসূল (সাঃ) এর বংশধারা, পরিবার, জন্ম, চারিত্রিক মাধুর্য থেকে শুরু করে জীবনের পরতে পরতে ঘটে যাওয়া সকল বিষয়াবলী, প্রতিটি ঘটনা এতো সুন্দর করে উপস্থাপন করা হয়ে যে,পড়তে নিলে মনে হয় তা দৃশ্যমান হচ্ছে চোখের সামনে।
Was this review helpful to you?
or
ভিন্ন প্রকাশনীর 'আর রাহিকুল মাখতুম' গ্রন্থ ব্যক্তিগত সংগ্রহে আছে বছরখানেক হয়ে এলো। ভাষার মানসম্মত অনুবাদের ঘাটতি-দূর্বোধ্যতার জন্য পড়তে গিয়ে খেই হারিয়েছি বারংবার। তবে, এ দূর্বোধ্যতাকে আমার মতো পাঠকদের জন্য সহজ করলো সমকালীন। বই অনুবাদের ক্ষেত্রে জটিল ভাষাকে জলবৎ তরলং করে উপস্থাপনার জন্য নিরলসভাবে শ্রম দিয়েছে সমকালীনের ১৮-২০ জন টিম মেম্বার। মূল আরবি থেকে সরে না যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টার নিরীক্ষক হিসেবে ছিলো বরেন্য চারজন আলেম। সাথে প্রকাশনী যুক্ত করেছেন প্রয়োজনীয় টিকা,বিশ্লেষণ ও তথ্যসূত্র। অন্য প্রকাশনীর বইগুলোতে যা আমার চোখে পড়েনি। ভিন্ন মত থাকলে সে মতকে তুলে ধরে, প্রাধান্য দেওয়া মতের কারণ উল্লেখ করতেও ভোলেননি। বুক-বাইন্ডিংও প্রশংসাযোগ্য। নিঃসন্দেহে, যা সমকালীনকে করেছে অন্য প্রকাশনীর অনুবাদগুলো থেকে বৈচিত্র্যময় ও সেরা। ফলে,লেখার ঝরঝরে ও মেদহীন সুখপাঠ্য অনুবাদ পাঠককে টানবে চুম্বকের মতো, সুযোগ পেলেই মুখিয়ে থাকবে জাদুময় সে বইয়ের ঘোরলাগা বাঁকে। ~জান্নাত রুবাইয়া
Was this review helpful to you?
or
Saimon Mahmud Shaoun আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ আর রাহীকুল মাখতুম লেখক শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরীর একটি স্বীকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক গ্রন্থ, যা নবী মুহাম্মদ (স.) এর জীবন এবং ইসলামের মৌলিক শিক্ষা সম্পর্কে গভীর দৃষ্টি দেয়। বইটি ইতিহাসের কাহিনী ও ইসলামী শ িক্ষার সংমিশ্রণে রচিত, যা পাঠকদের হৃদয়ে ধর্মীয় অনুভূতি ও আকর্ষণ তৈরি করে। বিষয়বস্তু ও কাঠামো বইটি বিভিন্ন অধ্যায়ে বিভক্ত, প্রতিটি অধ্যায় নবীর জীবনের একটি বিশেষ দিক নিয়ে আলোচনা করে: নবীর জন্ম ও যুবক বয়স: লেখক নবী মুহাম্মদ (স.) এর জন্ম, শৈশব, এবং যুবক বয়সের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরেছেন। নবীর চরিত্রের নির্মলতা, সততা এবং সমাজের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এখানে বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। নবুওত ও প্রথম বার্তা: নবী যখন নবুওত লাভ করেন, তখন তাঁর প্রথম নির্দেশনা, ইসলামের মৌলিক শিক্ষা এবং যেভাবে তিনি মক্কার কাফিরদের বিরুদ্ধে ধর্ম প্রচার শুরু করেন, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মক্কার দুঃসময়ের চ্যালেঞ্জ: এই অধ্যায়ে ইসলামের প্রতিরোধ, নবীর সংগ্রাম, এবং মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। লেখক বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার মাধ্যমে এই দিকটি তুলে ধরেছেন। মদীনার জীবন ও ইসলামের প্রসার: নবী মদীনায় এসে মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া এবং ইসলামের সামাজিক ও রাজনৈতিক দিকগুলোর বর্ণনা করেছেন। তিনি এখানেও নবীর নেতৃত্বের গুণাবলী ও নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। শেষ সময় ও উত্তরাধিকার: নবীর শেষ জীবন, তাঁর মৃত্যুর পূর্ববর্তী ঘটনা এবং ইসলামের উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ভাষা ও উপস্থাপন শাইখ মুবারকপুরীর ভাষা অত্যন্ত সচ্ছ এবং প্রাঞ্জল। লেখক সহজ ও আকর্ষণীয় ভাষায় তথ্য উপস্থাপন করেছেন, যা সাধারণ পাঠকের জন্যও বোঝার উপযোগী। বইটিতে বিভিন্ন কাহিনী ও উদ্ধৃতি ব্যবহার করে বিষয়গুলোকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে, যা পাঠকদের মনে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। পাঠকের জন্য উপকারিতা আর রাহীকুল মাখতুম মুসলিম পাঠকদের জন্য একটি মূল্যবান শিক্ষা উপহার দেয়। এটি কেবল নবী মুহাম্মদের জীবন ও শিক্ষার ব্যাপারে ধারণা দেয় না, বরং ইসলামিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার গুরুত্বও তুলে ধরে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য, যারা ধর্মীয় জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক উন্নয়ন খুঁজছেন, বইটি তাদের জন্য একটি গাইড। উপসংহার সার্বিকভাবে, আর রাহীকুল মাখতুম একটি দারুণ বই, যা নবী মুহাম্মদ (স.) এর জীবন ও ইসলামের শিক্ষাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। এটি পাঠকদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি, নৈতিকতা, এবং মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব বাড়ায়। যারা ইসলামের ইতিহাস ও নবীর আদর্শ জীবন সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে চান, তাদের জন্য এই বইটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয়।
Was this review helpful to you?
or
বাংলা ভাষায় আর-রাহিকুল মাখতুমের কতগুলো অনুবাদ আছে তার হিসেবে নেই। আগে তাওহীদ পাবলিকেশন, আল-কোরআন একাডেমি এবং আনোয়ার প্রকাশনীর বাংলা অনুবাদ এবং দারুসসালাম পাবলিকেশনের ইংরেজি অনুবাদ পড়েছি আমি। সেই অনুবাদগুলো পড়তে মোটেও সুপাঠ্য ছিল না, বিশেষ করে তাওহীদ পাবলিকেশনেরটা। তাওহীদ পাবলিকেশনের অনুবাদ পড়ে শেষ করে আমি নিজেই অবাক হয়েছি—কীভাবে শেষ করতে পারলাম! একটি প্রতিযোগিতার নির্ধারিত বই থাকায় পড়তেই হয়েছিল ওটা। একে একে অন্য অনুবাদগুলো পড়লাম, কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। তারপর সমকালীন প্রকাশন ‘আর-রাহিকুম মাখতুম’ আনল। তাদের অন্যান্য বইয়ের মতো এটির ভাষাও সহজ-সরল-প্রাঞ্জল এবং পৃষ্ঠা ঝকঝকে। আর স্নিগ্ধ অথচ নজরকাড়া প্রচ্ছদ তো রয়েছেই। সেই সাথে বাঁধাইও ভালো। সুতরাং নিঃসন্দেহে বলতে পারি, সমকালীন প্রকাশনের ‘আর-রাহিকুম মাখতুম’ আমার পড়া অন্য অনুবাদগুলোর চেয়ে হাজার গুণে ভালো; পড়তে সুপাঠ্য এবং দেখতে রুচিশীল। আমার কাছে সাজেশন চাইলে এটাই কিনতে বলব।
Was this review helpful to you?
or
সিরাত সম্পর্কিত বইয়ের মধ্যে আর রাহিকুল মাখতুম বেস্ট একটা বই।চোখ বন্ধ করে নিতে পারেন বইটা ইনশাআল্লাহ।
Was this review helpful to you?
or
?️ বস্তুত রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তোমাদের মধ্য হতে এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখেরাত দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে। আল-আহ্যাব :২১ নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সকল মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই। ( সহিহ বুখারী ) ? নিঃসন্দেহে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিটি মুমিনের কাছে সর্বাধিক প্রিয়। আর প্রিয় মানুষের কথা, কাজ, পছন্দ-অপছন্দ সব কিছুই জানতে মনে চায় খুবকরে, তাঁর অনুসরনে খুঁজে পেতে চায় মন নিজেকে, একাকার করে দিতে চায় হৃদয় নিজ সত্তাকে তাঁর সাথে। আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্পর্কে জানা শুধু প্রেমের দাবি নয়, বরং দুনিয়া এবং আখেরাতে সফলতা লাভের এবং সকল প্রকার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ। আর তাঁর সেই অতি উজ্জ্বল জীবনের অলিগলি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায় তাঁর সিরাত গ্রন্থ সমূহ থেকে। কিন্তু হাজার বছরের অধিক সময়ে এই প্রিয়ো মানুষটির এত পরিমাণ জীবন-চরিত হয়েছে রচিত, হিসাব নেই যার কোন। হিন্দু, খ্রিস্টান, মুসলিম, আস্তিক কিংবা নাস্তিক, সবাই লিখেছে তাকে নিয়ে। কিন্তু এত এত সিরাতের ভীড়ে কোনটা পড়া যায় বিশ্বাস নিয়ে? বেশ চিন্তার বিষয়! আবার এটা এমন কিছুও নয় যে, এতই যখন ঝামেলা তো দেই ছেড়ে। এখন উপায়? আমি বলি কি, একটু কষ্ট করে নিচের লেখাটুকু পড়ুন। উপায় পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। না না, বেশি সময় নিবো না। ? আমার অনুভূতিতে সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম" ? অতঃপর........... অতঃপর শুরু হলো সমকালীনের আর রাহিকুল মাখতুম পাঠ। আজও শেষ হয়নি, মানে বিভিন্ন যায়গা খুলে খুলে বারবার পরতে মন চায় শুধু, তাই আর রেখে দেওয়া হল কই! বইটি কিন্তু অনুবাদ, অথচ পড়তে গিয়ে সেটা বুঝতে পেরেছি কিনা, তাই বুঝতে পারছিনা। বইটির প্রাণবন্ত অনুবাদ, রসালো বর্ণনা ভঙ্গি, আরবি কবিতামালার বাংলা অর্থের মাঝে পদ্যের মিল, অন্য স্থানগুলোতে গদ্যের অনুপম সাহিত্য সমারোহ, শিরোনাম সমূহের আকর্ষণীয় সৃজনশীলতা, বিস্তারিত তথ্যসূত্র, প্রয়োজনীয় টিকা সংযোজন ইত্যাদির দরুন আমি বইটির প্রতি সম্মোহিত প্রায়। এই সিরাত গ্রন্থের দলিল এবং ব্যখ্যা-বিশ্লেষন সমৃদ্ধ টিকা অন্য বইয়ের মতো পড়ার গতিকে ধীর করার চেয়ে করে তোলে আরো দ্রুতগামী। কেননা, তাতে ফুটে উঠে সিরাত সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রচলিত কথার দালিলিক বিশ্লেষণ সহজ এবং সুন্দরভাবে সাবলীল ভাষায়। যা সাধারণ এবং অসাধারণ সকল সিরাত পাঠকের জন্য বেশ উপকারী এবং হৃদয় প্রশান্তির কারণ। যার ফলে এই গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে অন্য অনেক সিরাত গ্রন্থর চেয়ে অধিক বিশ্বস্ত, মজাদার এবং মূল্যবান। সমকালীনের এই আর রাহিকুল মাখতুমের পাতায় পাতায় আমি যেমনিভাবে পেয়েছি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৃষ্টান্তহীন অসম্ভব সুন্দর জীবনের শিক্ষনীয় সকল ঘটনার হৃদয়কাড়া আলোচনা, তেমনি পেয়েছি সাহিত্যময় গদ্য আর পদ্যের রুচিশীল বর্ণনা শৈলীর অনন্য বহু পাথেয়। আচ্ছা! আপনারা তো আবার বেশ রুচিশীল পাঠক। তাই শুধু ভিতরগত বিষয়ে জেনে কি আর মন নিরব হয়! তাহলে বলে রাখি, চোখ ধাঁধানো কোমল প্রচ্ছদ, মজবুত বাধন, উন্নত পৃষ্ঠা, অনমনীয় কভার, সব মিলিয়ে শুধু অভ্যন্তরীণ বিষয়-আষয় নয় বরং তার সাথে বহিরাগত কারণসমূহও আমাকে যেমন করেছে মুগ্ধ, তেমনি আপনিও যে মুগ্ধ হবেন, তাতে আমি বেশ আশাবাদী। যদিও মানবরুচির ভিন্নতায় আপনার অনুভূতি ভিন্ন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আরো কিছু অনুভূতি শেয়ার করবো নাকি? না, থাক। আমি তো আবার আগেই বলেছি, বেশি সময় নিবো না। ? আগ্রহীদের সুবিধার্থে সংক্ষিপ্ত বই পরিচিতি ? ? বইয়ের নাম : আর রাহিকুল মাখতুম। ✒️ লেখক : শাইখ সফিউলর রহমান মুবারকপুরি। ✍️ ভাষান্তর : আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান। ?️ সম্পাদনা : ইকরাম হোসাইন, নেছার উদ্দীন রুম্মান, যাহিক আহমাদ। ? শরয়ী নিরীক্ষণ : মুফতি সারোয়ার হুসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, মুফতি আবুল হাসানাত কাসিম, মাওলানা আসাদুল্লাহ ফুয়াদ। ?️ কাব্যানুবাদ ও সম্পাদনা : ওমর আলফারুক, মাহমুদ জামিল, আব্দুল্লাহ আমান। ✏️ বানান ও ভাষারীতি : ওমর আলফারুক, মাহবুবুর রহমান, মুজিব হাসান, নাহিদুজ্জামান শাকিল। ?️ প্রচ্ছদ : সমকালীন গ্রাফিক্স টিম। ?️ প্রকাশক : সমকালীন প্রকাশন। ? পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৬৯৯ পৃষ্ঠা। ? মুদ্রিত মূল্যঃ ৮৫০ টাকা। ( তবে রবিউল আউয়াল মাস উপলক্ষে ৫০% ছাড়ে ৪২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটা কিন্তু বিশাল সুযোগ। ) ✉️ আরেকটা কথা: অবশ্য আপনারা মনে হয় জানেন, পাকিস্তানে ১৩৯৬ হিজরীরতে একটি আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়। বইটি কিন্তু তাতে প্রথম পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছে। ? বই পরিচিতির উপর যত সামান্য দৃষ্টি ? প্রিয়ো পাঠক! অনুবাদ এবং সম্পাদনা সংশ্লিষ্ট এতজন ব্যক্তির নাম পড়তে পড়তে কিছুটা হাঁপিয়ে উঠেছেন নিশ্চয়। আমারো হয়েছিলো একি দশা। কিন্তু ভেবে দেখুন, ৬৯৯ পৃষ্ঠার একটি অনুবাদে যদি ১৫ জনেরও বেশী যোগ্য, দক্ষ, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, কর্মঠ, জ্ঞানী-গুণী, ভাষাবিদ, সাহিত্যাক আর গবেষক ওলামায়ে কেরাম হাত দেয়, তবে অবস্থাটা কি দাঁড়ায়! যার কারণে বইটি হয়ে উঠছে উৎকৃষ্ট সাহিত্য সমৃদ্ধ, উন্নতমানের দালিলিক গ্রন্থ, নির্ভুল বানান সম্পুর্ণ, অতি কোমলভাবে উপস্থাপিত এবং উহার অনুবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে সহজ, সরল, সাবলীল ও চয়িত। বইটি অনুবাদ হয়েছে এমন ভঙ্গিমায় যে, পাঠ করার সময় মনে হয়, এটি একটি মৌলিক গ্রন্থ। আর দেয় এমন অনুভূতি, আমি রয়েছে বহু পূর্বের যুগে, সেই নববী যুগের জাজিরাতুল আরবে, ইসলামের শুরু লগ্নের সাক্ষী হয়ে। ফলে সার্বিক বিবেচনায় আমি যদি বলি, বাংলা ভাষায় সাহিত্যকর্ম এবং দলিল ভিত্তিক সিরাত গ্রন্থের ক্ষেত্রে এ এক এমন সংযোজন যার দৃষ্টান্ত হয় না, তবে খুব বেশিই বাড়াবাড়ি হবে না মনে হয়। ? বইটিতে যা রয়েছে ? বইটিতে রয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মপূর্ব আরবের সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় অবস্থান ইত্যাদি সহ মক্কায় বসতি স্থাপনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। যদিও এসব আলোচনা কিছুটা জটিল হয়ে থাকে, কিন্তু এই বইটিতে প্রাঞ্জল শব্দ চয়ন ও প্রয়োগ আর সরল উপস্থাপনার দরুন সেই জটিলতা অনেকটাই দূরীভূত হয়ে সে আলোচনাগুলোও হয়ে উঠেছে বেশ চটকদার। তবে এই বইয়ের মূল প্রাণ হল, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন-চরিত। যা এই বইতে মোটামুটি পূর্ণাঙ্গভাবেই উঠে এসেছে। এতে রয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম, কৈশোর, যৌবন, নবুওয়াত, হিজরত, জিহাদ, মৃত্যু ইত্যাদির পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা এবং তাঁর সামাজিক, রাজনৈতিক, কুটনৈতিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক ইত্যকার সকল জীবন-ঘনিষ্ঠ বিষয়াদির বিবরণ শব্দের অপচয় কিংবা দলিলের অতিশয়োক্তি ছাড়াই পর্যাপ্ততার সাথে। এ ছাড়াও রয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উন্নত চরিত্রের জাঁকজমকপূর্ণ বিবরণ ও আভাযবনীয় উজ্জ্বল আর সুন্দর শারীরিক অবয়বের নিখুঁত কীর্তন। যা সাধারণ যে কোন পাঠককে করে আকর্ষিত। পাশাপাশি প্রতিটি বিবরণের সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য টিকাতে রয়েছে উৎসগ্রন্থসমূহের উল্লেখ । যা গবেষকদেরকে বেশ খানিকটা ঝুঁকিয়ে দিয়েছে এই বইটির দিকে। বইটির এমন আরো কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা আলোচনা করেছি উপরোল্লেখিত "আমার অনুভূতিতে সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম" এবং"বই পরিচিতির উপর সংক্ষিপ্ত দৃষ্টি" শিরোনাম দুটির অধিনে। এক কথায় অসাধারণ একটি সিরাত গ্রন্থ এটি। ?️ এত সব কিছু লেখার পরেও বাকি থেকে গেছে অনেক কিছু। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য ও অন্যতম হলো-মানচিত্রের বিষয়টি। হ্যাঁ মানচিত্র। ইসলামের ইতিহাসের সর্বপ্রথম বৃহত্তর ঈমানদীপ্ত জিহাদ বদর যুদ্ধ, নবী প্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত সম্পূর্ণ, হৃদয়বিদারক কাহিনী সমৃদ্ধ উহুদ যুদ্ধ এবং প্রথম কৌশলগত জিহাদ খন্দক যুদ্ধের স্থানসমূহের মানচিত্র রয়েছে এই বইটিতে এবং সেই মানচিত্রগুলো হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও আঞ্জাম দিয়েছেন বই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গগণ। ফলে মানচিত্র দেখে দেখে মানচিত্রের আগে পরের ঘটনাগুলো বার বার পড়ে পড়ে যদি বোঝার চেষ্টা করা হয়, তবে মানচিত্রগুলো হয়ে ওঠে জীবন্ত। মনে হয় যেন পাঠক স্বয়ং সেখানে উপস্থিত রয়েছে, ইসলামের বিজয়ে হাসছে, কাঁদছে পরাজয়ে, সালমান ফারসির বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে আশ্চর্য হচ্ছে, কনকনে শীতের ভিতর ক্ষুধার তাড়নায় পেটে পাথর বেঁধে খন্দক খননের দৃশ্য দেখছে আর তার দু'চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রুধারা, সাহাবীদের নবীপ্রেম দেখে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে আর ভাবছে, হায়! আমি যদি হতাম অমুক। আর এসবের সময় সে যেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত। এছাড়াও রয়েছে আরো বিভিন্ন মানচিত্র যেগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে ঘটনাগুলো পড়তে মজাই অন্যরকম। যেমন, "হিজরতের সময় মদিনার অধিবাসীদের অবস্থান","নবীজির সময় আরবে বিভিন্ন গোত্রের অবস্থান" ইত্যাদি শিরোনামে উল্লেখিত বিভিন্ন মানচিত্র।
Was this review helpful to you?
or
আমি আগেও অনেকবার বিভিন্ন প্রকাশনীর ‘আর রাহীকুল মাখতুম’ পড়ে শেষ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুদূর পড়ার পর ভাষার কাঠিন্যতা, গুরুগম্ভীর আলোচনার কারণে একবারও শেষ করতে পারিনি। কিন্তু যখনই ‘সমকালীন প্রকাশনী’ কর্তৃক প্রকাশিত ‘আর রাহীকুল মাখতুম’ বইটি নিয়ে পড়তে বসলাম মনে হলো— এক একটি লেখা আমাকে আরেকটি লেখার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এক একটি ঘটনা অন্য ঘটনার সাথে এমন ভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, একটি ঘটনা জানার পর অন্যটি জানার জন্য অপেক্ষা করাই দুষ্কর। প্রাজ্ঞ অনুবাদকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বইটির শব্দচয়ন এবং বাক্যবিন্যাসে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, অন্যান্য সকল প্রকাশনীর 'আর রাহীকুল মাখতুম' থেকে এটাই বেস্ট। আসলে অনুবাদের মান এতটা উন্নত হয়েছে যে, বোঝাই যাচ্ছে না এটা কোন অনুবাদ। বারবার একটি প্রশ্ন মনে দোলা দিয়ে গেছে, এটা কি অনুবাদ? এত সুন্দর? এক কথায় অপূর্ব! অতুলনীয়! সহজ এবং সাবলীল ভাষার ব্যবহারে বইটি হয়েছে প্রাঞ্জল ও প্রাণবন্ত। বইটি পড়া শুরু করলে যে কোনো পাঠকের হৃদয়েই নবী প্রেমের ঝর্ণাধারা কল্লোল সুর তুলে প্রবাহিত হবে। পাঠকের জন্য একটাই সাজেশন আর রাহীকুল মাখতুম কিনতে চাইলে এটা চোখ বন্ধ করে কিনতে পারেন। ঠকবেন না ইনশাআল্লাহ ইতিহাসের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট অংশটুকু; জগতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষটির নানামাত্রিক জীবনী বিজ্ঞ লেখক তার কলমের জাদুতে,অলংকরময় ভাষার ব্যবহারে, একের পর এক চমকপ্রদ শব্দের গাঁথুনিতে ফুটিয়ে তুলছেন অনবদ্য এ সিরাতগ্রন্থটিতে। বইটি পড়লে উৎসাহী পাঠক শুধুমাত্র ইতিহাসের ধারা বর্ণনাই জানতে পারবেন না, বরং ছেঁকে নিতে পারবেন ইতিহাসের নির্যাসটুকু। যাপিত জীবনের নানা স্তরকে মিলাতে পারবেন নবাবি আদর্শের আয়নায়। এবং এরই মাধ্যমে সুপ্ত শিক্ষা ও নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে হতে পারবেন সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুলের (সাঃ) একান্ত আপনজন। বিজ্ঞ লেখক এবং প্রাজ্ঞ অনুবাদকবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাঠকের হাতে তুলে দিয়েছেন সুরভিত ফুলবাগান তুল্য অমূল্য এই সিরাতগ্রন্থটি। যার সৌরভে মোহিত হচ্ছে চতুর্দিক। সম্মানিত পাঠক এই ফুলবাগানে বিচরণ করবেন। সুরভিত ফুল তুলবেন। মালা গাঁথবেন। এবং এই ফুলের সুঘ্রাণ ছড়িয়ে দিবেন যুগান্তরে। এটাই প্রত্যাশা। ধন্যবাদ সমকালীন টিমকে।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ এই মহাবিশ্বের সকল রহস্যের সন্ধান করা যেমন কঠিন , তেমনই কঠিন ছিল আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের অন্ধকারে আচ্ছন্ন সমাজে এক আলোর জন্ম নেওয়া ও সমাজকে আলোকিত করা মহামানবের জীবন। মানবজীবনের জন্মলগ্নের বহু আগে থেকেই যে মানুষটার জন্মের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল সৃষ্টির সকল সৌন্দর্য,ভালোবাসা আর ন্যায়ের ঢাল - সেই জন্মের শুভ সংবাদের মাধ্যমে মরুভুমির প্রখর তাপে পুড়ে যাওয়া প্রকৃতির মাঝে সবুজের আভার জাগরণ করে, সুবহে সাদিকের স্নিগ্ধ আলোর ঝলকানির মতো, বসন্তের মিষ্টি ফুলের সুবাসে মরুভূমির মৃত বুকে প্রাণের সঞ্চার করতে মদিনার তৃষ্ণার্ত বুকে জন্মেছিলেন মদিনার বুলবুলি। আমাদের পথপ্রদর্শক হযরত মুহম্মদ (স)। তার শুভ আগমন সম্পর্কে বলার ক্ষেত্রে সূরা আল ইমরানের ৮১ নম্বর আয়াতের কথা উল্লেখ করতেই হয়- “ আর স্মরণ করুন, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, আমি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি; তারপর তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে যখন একজন রাসূল আসবে- তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এর উপর আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে? তারা বলল, “আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেন, তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।” খুব ছোটবেলা থেকেই তার অনুসন্ধিৎসু হৃদয়ে জেগেছিল সৃষ্টি জগত নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন। ‘আমরা কোথা থেকে এসেছি? আমাদের গন্তব্য কোথায়? আমাদের কে সৃষ্টি করেছেন?’ আল্লাহ তায়ালা তার সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য যথেষ্ট সময় দিলেও কষ্ট আর ভালোবাসার মানুষদের হারানোর বেদনার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। উত্তরের সন্ধানে জাবালে নুরের হেরা গুহায় রসুল ( স) যখন ধ্যানমগ্ন ছিলেন, তখনই ফেরেশতাদের সর্দার জিব্রাইল ( আ) তাঁকে কোরআনের সর্বপ্রথম নাযিল করা সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াতের শিক্ষা দিলেন। এই পাঁচটি আয়াত প্রতিনিধিত্ব করে জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। “ পড়ো তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন নিষিক্ত ডিম্ব থেকে। পড়ো! তোমার রব মহা সম্মানিত, যিনি শিখিয়েছেন কলমের মাধ্যমে। শিখিয়েছেন মানুষকে, যা তারা জানত না।” - সুরা আলাক। একজন মহামানবের জীবন সম্পর্কে জানার জন্য জ্ঞান আহরণ করার পূর্ব শর্ত হচ্ছে একটি তথ্যবহুল বই। সেরা মানুষদের নিয়ে লেখা অনেক বই পড়েছেন পাঠকেরা। প্রত্যেকটা বই নতুন ভাবে চিন্তাধারা বিকাশে সহায়তা করে। একজন মানুষ যিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানুষের জীবনকে আলোকিত করার কথা ভেবে গিয়েছেন,আত্মত্যাগ ছিল যার নিত্যসঙ্গী, যার চোখে ছিল মায়া, বুকে ছিল হাজার স্বপ্ন, নিজের কাজে সামান্য ভুল থাকলেও স্রষ্টা পবিত্র আকাশবানীর মাধ্যমে তার ভুল সংশোধনের কথা জানানোর পর তিনি তা সংকোচহীনভাবে মানুষকে জানিয়েছেন, শত্রুদেরকে প্রতিনিয়ত ক্ষমা করে গিয়েছেন - এই গুণের কথাগুলো যখন বলা হয় তখন যে মহামানবের নাম আমাদের মনে আসে তিনি হচ্ছেন আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স)। পাঠককে যদি প্রশ্ন করা হয়, কেনো এই মানুষটার সিরাত সকলের পড়া উচিত তখন সহজ ভাষায় একটা উত্তর দিতেই হয়- মানুষ নিজের পরিশুদ্ধির মাধ্যমে যদি নিজের,সমাজ,রাষ্ট্রের, মানুষের উন্নয়ন করতে চায় তখন তাদের শিক্ষাগুরু হিসেবে প্রিয় নবির জীবন সম্পর্কে অবশ্যই অধ্যয়ন করতে হবে।সিরাত হচ্ছে জ্ঞানের মহাসমুদ্রের মাঝে ভেসে থাকা অত্যাধুনিক জাহাজের মতো, যার প্রধান কাজ হচ্ছে একজন মানুষের জীবনের সকল তথ্যকে একত্রিত করা,যেভাবে জাহাজ সমুদ্রে সঠিক দিক নির্ণয় করে তেমন ব্যাপার। বাজারে সিরাত সম্পর্কে বইয়ের অভাব নেই। প্রত্যেকটা বই নিজের গুনাগুণের দিক দিয়ে অনন্য। রাসুল (স) এর পুরো জীবনী সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে একটি বই সমগ্র জীবনকে কখনোই ধারণ করতে পারবে না। সত্য বলতে গেলে, সামান্য কয়েক পাতার মাধ্যমে তার প্রায় ৬৩ বছরের জীবনটাকে বিস্তারিত ভাবে তুলে আনা সম্ভব নয়। মানুষের অনুসন্ধিৎসু মনে রসুল (স) এর পরিপূর্ণ চিত্র ফুটিয়ে তুলতে চাইলে একাধিক বই অধ্যয়ন করার সাথে সাথে তার মতো জীবন গড়ার তাগিদ নিতে হবে। একজন পাঠকের যদি মনে হয় এমন একটি গ্রন্থ (যা রসুলের সম্পূর্ণ জীবনকে ধারণ করেছে সূক্ষ্মভাবে) যার মাধ্যমে রসুল (স) এর জীবন সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিজের জ্ঞানের প্রসার ঘটাতে ইচ্ছুক, তখন যে গ্রন্থগুলোর নাম শীর্ষে থাকার যোগ্য তার মাঝে আর রাহীকুল মাখতুম অন্যতম।যেকোনো বিগিনার পাঠকদের জন্য শ্রেষ্ঠ একটি বই। ‘আর রাহীকুল মাখতুম’ এমনই একটা গ্রন্থ যেখানে মহানবি (স) এর জন্মের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকল ইতিহাসের এত সুন্দর সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে যে আপনি বইটি পড়ার সময় প্রতিনিয়ত টাইম ট্র্যাভেল করে চলে যাবেন ইতিহাসের সোনালী সময়ে। ১৯৭৯ সালে আয়োজিত রাবেতা আল আলাম সিরাত প্রতিযোগিতায় ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস সফিউর রহমান মুবারকপুরীর ‘আর রাহিকুল মাখতুম’ বইটি ১১৮২ টি বইয়ের পান্ডুলিপির মাঝে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। ইংরেজিতে বইটিকে The Sealed Nectar নামে অনুবাদ করা হয়েছিল। বাংলা ভাষাতেও প্রচুর অনুবাদ হয়েছে বইটির। অনুবাদগুলোর মাঝে সমকালীন প্রকাশনির পক্ষ থেকে বইটির অনুবাদ করেছেন আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ , আল-আমিন ফেরদৌস এবং মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান। ⚪ একটি বইয়ের পিছনে এতজন অনুবাদক থাকার বিষয়টা কেমন? বইটির অনুবাদ কেমন হয়েছে? আর রাহিকুল মাখতুম কি অবশ্যই পাঠ্য বই?সমকালীন প্রকাশনির এই বইটিই কি আমাদের পড়া উচিত হবে? এই বিষয়গুলো জানার আগে চলুন আমরা আরব দেশের অতীতে সময় ভ্রমণ করে কেমন ছিল এই মহামানবের জীবন তা সম্পর্কে জেনে কয়েকটি ধাপে পাঠপ্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করি। ⚪ পাঠপ্রতিক্রিয়া - আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের ন্যায় কলুষিত চিন্তাভাবনা যখন আমাদের কোমল হৃদয়ের দখল নিতে চায়, তখন এই মহামারী রোগের প্রতিষেধক হিসেবে আল কোরআনের সুমধুর বাণী, হাদিসের আলোর আভা, নবী রসুলদের জীবনী এই কালো মেঘে আচ্ছন্ন মন থেকে অন্ধকার দূর করে আলোর আভাস দেয়। ঠিক তেমন ভাবেই মনে যখন শঙ্কা, ভবিষ্যতের প্রতি ভয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কন্ঠ উঁচু করার সাহস হারিয়ে ফেলি তখনই নিজের আত্মিক সন্তুষ্টি প্রাপ্তি ও সুন্দর পথের দিশা খুঁজে ফিরে পাবার তাগিদে ডুবে যাই ‘আর রাহিকুল মাখতুম’ নামক সিরাতের অতল জ্ঞানের সমুদ্রে। একটি দীর্ঘ বই পড়ার ক্ষেত্রে বারবার ক্লান্তি ঘিরে ধরে। আর রাহিকুল মাখতুম বইটি পড়ার সময় বিষয়টা একদম বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশাল কলেবরের বইটি শেষ করতে তিনদিনের বেশি সময় লাগেনি। একটি ভালো বইয়ের বৈশিষ্টই হলো পাঠককে পাতার অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখা। লেখক, অনুবাদকের বক্তব্যের পর বিশালাকারের সূচিপত্র দেখার পর সামান্য ভীতি কাজ করাটাই স্বাভাবিক ছিল। এই বইয়ের ক্ষেত্রে সেটাও হয়নি। প্রথম দিকে সূচিপত্রকে দারুণ ও বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করে সুন্দর উপমার মাধ্যমে অধ্যায়ের নাম সাজানোর ফলে পুরো বই সম্পর্কে প্রথমেই সম্মুখ ধারণা পাওয়া যায়। বইটির আরম্ভ হয় আরবের ভৌগলিক অবস্থান ও আয়তন, আরব, ইয়েমেন, হিজাযের তথাকথিত শাসন ব্যবস্থা, বিভিন্ন ধর্মের মতবিরোধ, সম্প্রদায়ের মাঝে রচিত যুদ্ধ এবং আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের কলুষিত সমাজের অন্যায় ও অত্যাচারের ভয়াবহ বর্ণণার মাধ্যমে। " ওদের উপমা হচ্ছে এমন জনতার, যারা আগুন জ্বালাল। আগুনে চারপাশ আলোকিত হওয়ার পরই আল্লাহ সে আলো সরিয়ে নিলেন। ওরা ঘোর অন্ধকারে ডুবে গেল। অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখার থাকল না " আইয়ামে জাহিলিয়া যুগ তথা তৎকালীন আরব সমাজের শাসনব্যবস্থা, আচার, ধর্মবিশ্বাস ইত্যাদি বিষয়গুলোর বর্ননা দেওয়ার ক্ষেত্রে সূরা বাকারার (১৭-১৮) আয়াতটির কথা বলতেই হয়। স্রষ্টার অস্তিত্ব ভুলে তারা লিপ্ত হয়েছিল হাজারো পাপাচারে, মানুষ বিশেষ করে নারীরা পরিণত হয়েছিল ভোগবিলাসের খেলনা নামক কাঠের পুতুলে। ক্ষমতার লোভে আরববাসীদের আগ্রাসী মনোভাব, লুটপাট, জঘন্য অর্থনৈতিক ও চারিত্রিক সংস্কৃতি, অহেতুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেনো তাদের শ্বাস নেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় কর্মে পরিণত হয়েছিল। অন্ধকার যুগের উত্তাপে যখন আরব সমাজ উত্তপ্ত তখনই মদিনার তপ্ত বুক চিড়ে সূর্যের লাভ আভা হয়ে নিকষ কালো আঁধারের সমাপ্তি সূচনার তাগিদে ধরনীর বুকে এলেন সেই মহামানব, যার অপেক্ষায় ছিল মানবসভ্যতা। মা আমিনার কোল আলো করে জন্মালেন আমাদের প্রিয় নবী (স)। প্রিয় চাচার সঙ্গে ব্যবসায়িক উদ্দ্যেশ্যে শাম ভ্রমনকালে পাদ্রি বাহীরা কিশোর রসুল ( স) কে দেখার পর আখেরি নবী হবার সকল নিদর্শন দেখে অবাক হয়েছিলেন। তিনি ভবিষ্যতে বাণী করেছিলেন যে - ইনি হবেন বিশ্বজাহানের সর্দার,আল্লাহর পয়গম্বর,সর্বশেষ নবী। ফুজারের যুদ্ধের ভয়াবহতা তার হৃদয়কে আঘাত করার পর তিনি গঠন করেছিলেন হিলফুল ফুজুল নামক সংঘের।হাজরে আসওয়াদ পাথর নিয়ে বিরোধের সমাধান করা, প্রিয়তমা খাদিজাকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করা, নবীর বংশ পরিচয়,হযরত জিবরাইল (আ) এর আগমন, আল কোরআন নাজিল, নবুয়ত প্রাপ্তির মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব গ্রহণের ইতিহাস জানানোর মাধ্যমে শেষ হয় বইটির আরম্ভের পর্যায়। লেখক তার কাব্যিক ও আকর্ষণীয় বর্ণণার মাধ্যমে প্রথম দিকেই পাঠককে এমন ভাবে হুকড করে রাখার জাদু দেখিয়েছেন যে - পাঠক বইটির অন্তিম পাতায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের মনকে অশান্ত করতেও দ্বিধা করবে না। বইটির মধ্যপর্যায়ে আমরা দেখতে পাই প্রথম দিকে গোপনে এরপর প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার ঘটনা, কুরাইশদের সংঘটিত বিভিন্ন অত্যাচার, ইসরা -মিজাজ,রসুল (স) কে শেষ নবি হিসেবে মানার প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন মুজিজা দেখানো, ধাপে ধাপে মদীনা ও মক্কি সূরার আয়াত নাযিল, আবু তালেবের মৃত্যু থেকে শুরু করে শ্রেষ্ঠ মানব মানুষ কীভাবে বিভিন্ন ধকল সামনে নিয়ে চারিত্রিক গুণাবলির মাধ্যমে উম্মতদের ভালোবাসা লাভ করেছেন, কীভাবে বার বার ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। আমরা দেখেছি রক্ত স্রোত বয়ে যাওয়া খন্দক, ওহুদ, বদরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় লাভ করতে। এই মধ্য পর্যায়ে বার বার উঠে এসেছে মুহাম্মদ (স) এর যুদ্ধকেন্দ্রিক, রাজনৈতিক জ্ঞান। হিজরতের সময় এই মানুষটার দেশপ্রেম যে কতটা গভীর ছিল তা ফুটে এসেছে পুরো লেখাতে। রসুল (স) এর প্রশংসা করতে হলে আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর আবৃত্তির ভাষায় বলতে হয় - “ নির্বাচিত, কল্যাণকামী এবং আমানতদার আপনি এমন পূর্ণচন্দ্র, হটায় যা অন্ধকার।” মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন জ্ঞান, ভালোবাসা নামক ফলের ভারে নুয়ে থাকা জ্ঞান বৃক্ষের মতো। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার উম্মতের জন্য চিন্তা করে গিয়েছেন। আর রাহিকুল মাখতুম বইটিতে রসুলের একাধিক বিবাহের কারণ, মক্কা বিজয়ের প্রভাব ও বিস্তার নিয়ে বর্ণণার ক্ষেত্রে লেখকের জ্ঞানের প্রশংসা করতে হয়। প্রত্যেকটা ইতিহাসের যৌক্তিক আলোচনা ও বিশ্লেষণগুলো ছিল অনন্য।ওহুদ যুদ্ধ, রসুল (স) এর একাধিক স্ত্রী থাকার যৌক্তিক কারণ দিয়ে মানুষের মনে থাকা বিভ্রান্তি দূর করেছেন পাকাপোক্ত লেখনি ও উপযুক্ত তথ্যের মাধ্যমে। বইটি পড়ার পর উপলব্ধি হয় যে - কোনো পাকাপোক্ত চক্রবুহ ও অত্যাধুনিক অস্ত্রের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক বাহীনির মাধ্যমে মুসলমানদের বিজয় অর্জিত হয়নি। বিজয় অর্জনের ক্ষেত্রে কাজ করেছে ইসলাম ধর্ম ও স্রষ্টার প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর বুকভরা সাহস এবং একতা। বিদায় হজের ভাষণের অধ্যায় পড়ার সময় আবেগে আর প্রিয় নবীর প্রতি কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। লেখক শুধু তথ্য উপস্থাপনই করেননি বরং বইটির প্রতিটি শব্দে মিশ্রিত করেছেন ভালোবাসা। বইটির শেষ প্রান্তে আসার পর দুঃখের আর বিষাদের ছায়া মনকে গ্রাস করেছে। যে সুরেলা পাখি মানুষের কানে ভালোবাসা ও বিজয়ের গান শুনিয়ে প্রতিটি হৃদয়কে শীতল করেছিল, স্বপ্ন দেখিয়ে তা বাস্তবে পরিণত করেছিল সেই পাখি আল্লাহর পেয়ারে হাবিব, আমাদের আদর্শ, তিনিও চলে গিয়েছিলেন উম্মতদের বুকের ভার বৃদ্ধি করে। অন্তিম হজ(বিদায় হজ) করার পর মানুষের কাছে ইসলামকে পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ঘোষিত করেন। বলেছিলেন - আজ থেকে ইসলামকে সম্পূর্ণ করা হলো।এই বিজয়ের আনন্দ উম্মতদের আনন্দের বার্তা দিলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। হজ থেকে ফেরার পথে তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন । প্রচন্ড অসুস্থতার মাঝেও তিনি স্রষ্টাকে স্মরন করতে ভুলেননি, বার বার চিন্তা করেছিলেন তার উম্মতদের ব্যাপারে, এমনকি মৃত্যুর কিছুক্ষন আগেও তিনি ভেবেছিলেন তার প্রিয় উম্মতদের কথাই। এরপর? মৃত্যু নামক শব্দটি তাঁর ক্ষেত্রেও সত্য হয়ে গেলো।প্রতি মোনাজাতে উম্মতদের হেদায়েত চাইতেন, তায়েফবাসীর এত অত্যাচারের পরেও তিনি অভিশাপ দেননি, নিজের মুখের খাবারটাকে অনাহারীর মুখে তুলে দিতে দ্বিধাবোধ করেননি, স্রষ্টা চাইলেন তাকে শাহেনশাহ বানাতে, তিনি হতে চাইলেন ফকির। রাজত্বের লোভ ছিল না তার মনে। যিনি নীতিতে বজ্রের ন্যায় অটল, কুসুমকোমলের ন্যায় আচরণ, যার নামে দরুদ পড়ে পুরো প্রাণীকুল সেই মানুষটার জীবনী লেখার ক্ষেত্রে লেখক প্রতিটি পাতায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। কাহিনীর বিন্যাস বেশ ইউনিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার কারণে সামান্য পরিমাণেও বিরক্তির সঞ্চার হয়নি পড়ার সময়। প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন কোরআনের প্রত্যেকটি বাণীর বাস্তব প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে। লেখক বেশ প্রানবন্ত কায়দায় প্রত্যেকটি কথাকে এত সুক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন যে পড়ার সময় প্রতিনিয়ত মনে হয়েছে সকল ঘটনা যেনো ক্রমান্বয়ে চোখের সামনে ঘটে চলেছে। কবি যুহাইরের কবিতা অনুযায়ী নবি(স) এর প্রশংসা করতে গেলে বলতে হয়, “ অন্যকিছু হতেন যদি আপনি মানুষ বিনে, চতুর্দশী কিরণ পেত আপনার আলোর ঋণে।” সময়যন্ত্রের আবিষ্কার আদৌ হবে কীনা জানা নেই। তবে লেখক যেভাবে অতীত সময়ে তার কাহীনিবিন্যাস, বাক্যগঠনের মাধ্যমে ভ্রমণ করিয়ে এনেছেন সেটা বিবেচনা করলে বলতে হয় - একজন দক্ষ লেখকের কাজই হচ্ছে ইতিহাসকে মানুষের হাতের মুঠোয় আনা। প্রত্যেকটি ইতিহাস বর্ণণা সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রেফারেন্স তার বইকে আরো জীবন্ত করে তুলেছে। বিশেষ করে তখনকার আরব কবিদের ভাষায় রসুলের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা বইটিকে হীরক খন্ডে পরিণত করেছে। লেখক ইন্তেকাল করেছেন ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসের এক তারিখ। মানুষ ইন্তেকাল করার পরেও কর্মগুণে অমর হয়ে থাকেন।লেখক অমর হয়ে থাকবেন আর রাহীকুল মাখতুমের মতো ক্লাসিক সীরাত লিখে পাঠকদের জীবনকে আলোকিত করার জন্যে। দোয়া করি লেখককে আল্লাহ জান্নাত নসিব করুন। ⚪ লেখার শুরুতেই বলেছিলাম একটা বইয়ের পিছনে এতজন অনুবাদকের হাত থাকার কারণটা কি? কি এমন আছে সমকালীন প্রকাশনির এই বইটির অনুবাদে যা অন্যান্য বই থেকে এই অনুবাদকে ভিন্ন করে? যারা বইটি পড়েছেন তাদের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর থাকলেও যারা এখনো দ্বিধায় আছেন তাদের জন্য অনুবাদ সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা করছি, যাতে বইটি কেনার আগে ভেবে নিতে পারেন - এই বইটিই আপনার উপযুক্ত নাকি। ⚪ অনুবাদ, প্রোডাকশন সংক্রান্ত পর্যালোচনা - “ এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।” - সূরা আর রুম :২২ কাঁটা তারের বেড়া যেমন দুটো মানচিত্রের দেশকে আলাদা করে রাখে তেমন ভাবেই মানুষের বর্ণ, বৈচিত্র, ভাষার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ নিজস্ব পরিচিতি লাভ করে। আল কোরআন আরবি ভাষায় নাজিল হলেও প্রত্যেকটি ভাষায় আল কোরআনের বাণীকে জাতি থেকে জাতিতে প্রেরণ করার ক্ষেত্রে ভাষা একমাত্র মাধ্যম। নিজের মাতৃভাষার সুমধুর শব্দ যেনো স্রষ্টার বাণীকে সহজভাবে মানুষের হৃদয়ে বাসা বাঁধতে সহায়তা করে। আর-রাহীকুল মাখতুম বইটিকে আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করেছে একাধিক প্রকাশনী। প্রত্যেক প্রকাশনীই নিজেদের বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সর্বোচ্চ প্রোডাকশন দেওয়া চেষ্টা করে। পাঠকরা যদি জিজ্ঞেস করেন বাজারে এত অনুবাদ থাকতে কেনো সমকালীন প্রকাশনীর অনুবাদকে বেছে নেওয়া উচিত, তখন এই প্রশ্নের উত্তর তিনটি ধাপে দিতে হয়। ১. মানুষ যেকোনো বাক্যকে সহজ ভাষায় বোধগম্য করতে চেষ্টা করে। বাংলা ভাষার প্রাচুর্য প্রচুর। এত উচ্চমানের শব্দের ভিড়ে মাঝেমধ্যে মানুষের মনে শব্দ নিয়েই শঙ্কায় থাকতে হয়।অনেকের কাছেই কঠিন শব্দগুলো বোধগম্য হয় না। বাক্যের মাধুর্য একটা বইকে উচ্চমানের খ্যাতি অর্জনে সহায়তা করে।অনেক সময় বেস্টসেলিং, মাস্টরিড তকমা পাওয়া বইগুলো অনুবাদের পর দেখা যায় পাঠকের এমন বইগুলোতেও অরুচি ধরে যায়। অনুবাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় অনুবাদকের দায় নিতে হয় এই কারণে। লেখক ও অনুবাদকের মেহনতের খাতিরেই একটা বই সেরার মর্যাদা পায়। সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহীকুল মাখতুম বইটির অনুবাদের সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হচ্ছে সহজ,সাবলীল, বোধগম্য ও ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার। বাংলা বাক্যগুলো পড়ার সময় মনে হবে আসর জমানো গল্পকথক যেনো তার মাধুর্যমিশ্রিত বাক্য ব্যবহার করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করছেন। কুরআনের আয়াতের বঙ্গানুবাদ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দক্ষতা দেখিয়েছেন অনুবাদকেরা। আয়াতের এত সুন্দর অনুবাদ যেনো বইটির হৃদস্পন্দন। কাব্যিক বর্ণণায় পরিপূর্ণ কবিতাগুলো প্রচন্ড রকমের শ্রুতিমধুর লেগেছে। তৎকালীন আরবের কবিতার ছন্দ অনুবাদে সর্বোচ্চ দক্ষতার পরিচয় দেওয়াটা যে প্রচন্ড ধকলের ছিল তা অনুবাদকদের পরিশ্রম দেখার পরেই বোঝা যায়।আমি পাঠ প্রতিক্রিয়ায় বইতে থাকা কয়েকটি কবিতার অনুবাদ তুলে ধরেছিলাম।ভেবে দেখুন, এই কয়েকটা কবিতাই যদি এত শ্রুতি মধুর হয় তাহলে বইতে থাকা অন্যান্য কবিতা কতটা মধুর। রসুলের জীবনের সাথে কবিতাকে সংযুক্ত করা অবশ্যই একটা দক্ষতার আর ইউনিক কাজ বলতে হয়।এছাড়াও দুর্বল হাদিসের মান চিহ্নিতকরণ, টীকাগুলোর শুদ্ধতম ব্যবহার ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বইটির বিভিন্ন ঘটনার বিবেচনা বইটিকে মাস্টারক্লাস পর্যায়ে এনে ফেলে। ভালোবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। বইটি অনুবাদের ক্ষেত্রে প্রকাশনী এই অস্ত্রটির উপযুক্ত ব্যবহার করেছেন। ২. একটা বইয়ের সৌন্দর্য পাঠকদের কাছে প্রেয়সীর সৌন্দর্যের চাইতে কম নয়।বই সম্পাদনা করার ক্ষেত্রে বাক্য গঠনে ত্রুটি, বানানে ত্রুটি থাকাটা একদম প্রাত্যহিক দিনের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি বইয়ের ভাষান্তর করা মানেই বইটির পোস্টমর্টেম করা। পোস্টমর্টেম করার পর যদি পাকাপোক্ত প্রমাণ হাজির করতেই ব্যর্থ হয় তবে পোস্টমর্টেম করে লাভই কি হলো? আমি বলব, সমকালীন প্রকাশনি আর রাহিকুল মাখতুম আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করার ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম করে ফেলেছে। পোস্টমর্টেম করার ফলে বইটির কি অবস্থা হলো তা বলার আগে এই পোস্টমর্টেমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলে নিই। আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তরের কাজে নিয়োজিত ছিলেন - আবুল হাসানাত কাসিম, আল-আমিন ফেরদৌস, রিফাত মাহমুদ, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান। সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন - আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ। শরয়ী নিরীক্ষণ করেছেন - মুফতি সারোয়ার হোসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, আবুল হাসানাত কাসিম, আসাদুল্লাহ ফুয়াদ। বানান ও ভাষারীতি - ওমর আল ফারুক, মাহবুবুর রহমান, মুজিব হাসান, নাহিদুজ্জামান শাকিল। আমি ইসলামি প্রকাশনীগুলোর কাছে অন্যান্য প্রকাশনী থেকে বেশি কৃতজ্ঞ থাকি তাদের একটি বইকে পার্ফেক্ট করার জন্য সর্বোচ্চ মেহনত করার সাহস দেখানোর জন্য। একটা বইয়ের পিছনে শুধুমাত্র উপরোক্ত ব্যক্তিদেরই পরিশ্রম নয় বরং প্রেসকর্মীদের মাথার ঘামও জড়িয়ে থাকে। প্রত্যেকটা বই যেনো অনেকগুলো জীবনের গল্প বলে। আন্তর্জাতিক প্রকাশনিগুলো যেভাবে প্রত্যেকটি বইকে সুন্দর করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাহসিকতা দেখায় ঠিক তেমনি সাহসিকতা দেখিয়েছেন সমকালীন প্রকাশনির প্রত্যেকে। পোস্টমর্টেমের পজিটিভ রিপোর্ট আনার পরীক্ষাতেও তারা উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রকাশনি বইটিতে যে ফন্ট ব্যবহার করেছেন সেটা কি তাদের নিজেদের তৈরি নাকি জানা নেই।তবে বলতে হয় ফন্টটাকে চোখের আরাম বলা যায়।এই ফন্টটা যদি তাদের নিজস্ব হয় তবে সেটা হবে বেশ দারুণ ব্যাপার। বানানের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাদের নিজস্বতা দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হয়েছি। সমকালীন গ্রাফিক্স টিম প্রচ্ছদ সৃষ্টির ক্ষেত্রেও দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। সরল, স্নিগ্ধ প্রচ্ছদ। বিশালাকারের বইটির বাইন্ডিং যথেষ্ট পাকাপোক্ত। তবে লেখক পরিচিতিটা অনুবাদক,লেখকের বক্তব্যের মতো প্রথম দিকে থাকলে ভালো হতো আমার মতে। কালো মেঘে আচ্ছন্ন থাকার পরেও পূর্ণিমার চাঁদের আলো যেমন মলিন হয়না, তেমন ভাবেই এই ছোটখাটো ভুলের জন্যেও বইয়ের স্বাদ বিন্দুমাত্রও কমেনি। বইটি পড়া শেষ করার পর পাঠক সমকালীন টিম,অনুবাদক ও ডিজাইনারের ভূয়সী প্রশংসা করবেন বলেই আশা রাখি।প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে বই শ্রেষ্ঠ উপহার। সমকালীন প্রকাশনী আর রাহিকুল মাখতুম এমনই একটা বই যা উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রেও পাঠকদের আনন্দিত করতে পারে। ৩. প্রথমে দর্শনধারী, পরে গুনবিচারী নামে একটা প্রবাদ আমাদের সমাজে প্রচলিত। সৌন্দর্য ও সরলতার পিছনে ছুটে চলা আমাদের দেশের মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। সৌন্দর্যতা ও ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে আল কোরআনে অতি উত্তম একটি আয়াত আছে। “সূর্যের সাধ্য নেই যে চন্দ্রের নাগাল পায় আর রাতও দিনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। প্রত্যেকেই (নিজ নিজ) কক্ষ পথে পরিভ্রমণ করছে।” (৩৬-সূরা ইয়াসিনঃ আয়াত-৪০) মহান সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেকটা সৃষ্টিকে সুনির্দিষ্ট সৌন্দর্য, আকৃতি ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন।আল কোরআন আমাদের প্রথম বিদ্যালয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়মের মাঝ দিয়েই জীবনধারণ করা উত্তম। এই আয়াতটা প্রকাশনীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একটা বইকে উত্তম বলার পিছনে শুধু মাত্র প্রচ্ছদ, প্রোডাকশন, ভাষান্তর, লিখনশৈলীই যথেষ্ট নয় বরং দরকার একটি নির্দিষ্ট নিয়মেরও। আর রাহিকুল মাখতুমের সূচিতে প্রত্যেকটা শিরোনাম লক্ষ্য করলে বেশ আকর্ষণীয় একটা জিনিস দেখা যায়। শিরোনামগুলোর নামগুলো পুরো অধ্যায়ের খন্ড চিত্র ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। যেমন :একটা অধ্যায়ের নাম ‘ দুঃখে ভরা বছর’। এই অধ্যায়ে চাইলেও সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে সকলের মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া যেতো।কিন্তু এই কাজটি করলে শিরোনামের মান হারাতো। তাই এই অধ্যায় জুড়ে রসুল (স) এর আত্মীয়,প্রিয়তমার মৃত্যু নিয়ে কথা বলা হয়েছে। আবার যে শিরোনামের নাম হুদাইবিয়ার সন্ধি, সেখানে সন্ধির আগেকার ও মধ্যকার সকল ইতিহাসই তুলে ধরা হয়েছে।অর্থাৎ বইটির প্রতিটি অধ্যায় নিয়মতান্ত্রিক ভাবে একটি সিকোয়েন্সে সামনে এগিয়ে গিয়েছে।কোথাও সামান্য গড়মিল থাকার প্রশ্নই তেমন আসেনি বইটিতে। বইটিতে শিরোনামের মাধ্যমে অধ্যায়গুলোকে সুবিন্যাস করার জন্য বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে ভারসাম্য বজায় থাকার ফলে সমকালীন প্রকাশনীর এই পদক্ষেপকে যথোপযুক্ত বলা যায়। ⚪ অন্তিম কথন - বিশাল কলেবরের একটি বইকে মাত্র কয়েকটি বাক্যে ফুটিয়ে তোলার মত দুঃসাহস আমার নেই। প্রতিক্রিয়া লিখতে যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত শঙ্কায় ছিলাম কোনো না কোনো তথ্য যেনো বাদ পরে না যায়। যে মহামানবের জীবন নিয়ে আলোচনা কিংবা লিখতে গেলে সাত সমুদ্রের পানির সমতুল্য কালিও যথেষ্ট নয়, তার সমগ্র জীবন ফুটে উঠেছে আর রাহীকুল মাখতুম গ্রন্থটিতে। একজন মানুষের জীবনচরিত আমাদের জীবনের চাইতেও বিশাল পরিধির তখনই হয় যখন তার জীবনের সাথে ইহকাল ও পরকাল সংযুক্ত হয়ে যায়। আর রাহীকুল মাখতুম রসুল (স) জীবনের পরিধি সম্পর্কিত একটি দলিল।লেখক ও সমকালীন প্রকাশনী উভয়ই এই বইটি লেখা ও ভাষান্তর করার ক্ষেত্রে ভূয়সী প্রশংসার দাবিদার। আলোকিত জীবন গড়ার ক্ষেত্রে যেসকল বই একজন পাঠককে সহায়তা করে তার মাঝে এই বইটি অন্যতম। রণক্ষেত্রে যোদ্ধাদের স্তরে স্তরে বিভাজন করে সমরাঙ্গনে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রে যেমন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়, তেমনই দরকার অসীম সাহসের। নবি (স) জীবন নামক সমরাঙ্গনে বিজয় লাভ করে ইহকাল ও পরকালে সুখী হবার মূলমন্ত্র শিক্ষা দেন বলেই আল কোরআন এ বর্ণিত জীবনব্যবস্থার সাথে তার এত মিল। আলোকিত জীবন গড়ার তাগিদে, আল্লাহর হাবিবের জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিয়ে একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য বইটি অবশ্যই পাঠ্য। পরিশেষে, আরবের সোনালি সময়ে আর রাহিকুল মাখতুম বইটির মাধ্যমে মহাযাত্রা করার আমন্ত্রণ রইল প্রত্যেক পাঠকদের জন্য। বইমেলা জুড়ে ইসলামি প্রকাশনিগুলোর জয়ধ্বনি হোক, মুসলমানরা সকল অধিকার ফিরে পান, সমকালীন প্রকাশনির প্রত্যেকে দীর্ঘজীবী হোন এবং এভাবেই দারুন সব বই পাঠকদের উপহার দিতে থাকুন এই কামনাই করি। বইয়ের নামঃ আর রাহিকুল মাখতুম লেখকঃ আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ. প্রকাশনীঃ সমকালীন প্রকাশন রিভিউদাতা : S M Farhan Tanvir
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ এই মহাবিশ্বের সকল রহস্যের সন্ধান করা যেমন কঠিন , তেমনই কঠিন ছিল আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের অন্ধকারে আচ্ছন্ন সমাজে এক আলোর জন্ম নেওয়া ও সমাজকে আলোকিত করা মহামানবের জীবন। মানবজীবনের জন্মলগ্নের বহু আগে থেকেই যে মানুষটার জন্মের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল সৃষ্টির সকল সৌন্দর্য,ভালোবাসা আর ন্যায়ের ঢাল - সেই জন্মের শুভ সংবাদের মাধ্যমে মরুভুমির প্রখর তাপে পুড়ে যাওয়া প্রকৃতির মাঝে সবুজের আভার জাগরণ করে, সুবহে সাদিকের স্নিগ্ধ আলোর ঝলকানির মতো, বসন্তের মিষ্টি ফুলের সুবাসে মরুভূমির মৃত বুকে প্রাণের সঞ্চার করতে মদিনার তৃষ্ণার্ত বুকে জন্মেছিলেন মদিনার বুলবুলি। আমাদের পথপ্রদর্শক হযরত মুহম্মদ (স)। তার শুভ আগমন সম্পর্কে বলার ক্ষেত্রে সূরা আল ইমরানের ৮১ নম্বর আয়াতের কথা উল্লেখ করতেই হয়- “ আর স্মরণ করুন, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, আমি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি; তারপর তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে যখন একজন রাসূল আসবে- তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এর উপর আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে? তারা বলল, “আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেন, তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।” খুব ছোটবেলা থেকেই তার অনুসন্ধিৎসু হৃদয়ে জেগেছিল সৃষ্টি জগত নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন। ‘আমরা কোথা থেকে এসেছি? আমাদের গন্তব্য কোথায়? আমাদের কে সৃষ্টি করেছেন?’ আল্লাহ তায়ালা তার সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য যথেষ্ট সময় দিলেও কষ্ট আর ভালোবাসার মানুষদের হারানোর বেদনার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। উত্তরের সন্ধানে জাবালে নুরের হেরা গুহায় রসুল ( স) যখন ধ্যানমগ্ন ছিলেন, তখনই ফেরেশতাদের সর্দার জিব্রাইল ( আ) তাঁকে কোরআনের সর্বপ্রথম নাযিল করা সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াতের শিক্ষা দিলেন। এই পাঁচটি আয়াত প্রতিনিধিত্ব করে জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। “ পড়ো তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন নিষিক্ত ডিম্ব থেকে। পড়ো! তোমার রব মহা সম্মানিত, যিনি শিখিয়েছেন কলমের মাধ্যমে। শিখিয়েছেন মানুষকে, যা তারা জানত না।” - সুরা আলাক। একজন মহামানবের জীবন সম্পর্কে জানার জন্য জ্ঞান আহরণ করার পূর্ব শর্ত হচ্ছে একটি তথ্যবহুল বই। সেরা মানুষদের নিয়ে লেখা অনেক বই পড়েছেন পাঠকেরা। প্রত্যেকটা বই নতুন ভাবে চিন্তাধারা বিকাশে সহায়তা করে। একজন মানুষ যিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানুষের জীবনকে আলোকিত করার কথা ভেবে গিয়েছেন,আত্মত্যাগ ছিল যার নিত্যসঙ্গী, যার চোখে ছিল মায়া, বুকে ছিল হাজার স্বপ্ন, নিজের কাজে সামান্য ভুল থাকলেও স্রষ্টা পবিত্র আকাশবানীর মাধ্যমে তার ভুল সংশোধনের কথা জানানোর পর তিনি তা সংকোচহীনভাবে মানুষকে জানিয়েছেন, শত্রুদেরকে প্রতিনিয়ত ক্ষমা করে গিয়েছেন - এই গুণের কথাগুলো যখন বলা হয় তখন যে মহামানবের নাম আমাদের মনে আসে তিনি হচ্ছেন আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স)। পাঠককে যদি প্রশ্ন করা হয়, কেনো এই মানুষটার সিরাত সকলের পড়া উচিত তখন সহজ ভাষায় একটা উত্তর দিতেই হয়- মানুষ নিজের পরিশুদ্ধির মাধ্যমে যদি নিজের,সমাজ,রাষ্ট্রের, মানুষের উন্নয়ন করতে চায় তখন তাদের শিক্ষাগুরু হিসেবে প্রিয় নবির জীবন সম্পর্কে অবশ্যই অধ্যয়ন করতে হবে।সিরাত হচ্ছে জ্ঞানের মহাসমুদ্রের মাঝে ভেসে থাকা অত্যাধুনিক জাহাজের মতো, যার প্রধান কাজ হচ্ছে একজন মানুষের জীবনের সকল তথ্যকে একত্রিত করা,যেভাবে জাহাজ সমুদ্রে সঠিক দিক নির্ণয় করে তেমন ব্যাপার। বাজারে সিরাত সম্পর্কে বইয়ের অভাব নেই। প্রত্যেকটা বই নিজের গুনাগুণের দিক দিয়ে অনন্য। রাসুল (স) এর পুরো জীবনী সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে একটি বই সমগ্র জীবনকে কখনোই ধারণ করতে পারবে না। সত্য বলতে গেলে, সামান্য কয়েক পাতার মাধ্যমে তার প্রায় ৬৩ বছরের জীবনটাকে বিস্তারিত ভাবে তুলে আনা সম্ভব নয়। মানুষের অনুসন্ধিৎসু মনে রসুল (স) এর পরিপূর্ণ চিত্র ফুটিয়ে তুলতে চাইলে একাধিক বই অধ্যয়ন করার সাথে সাথে তার মতো জীবন গড়ার তাগিদ নিতে হবে। একজন পাঠকের যদি মনে হয় এমন একটি গ্রন্থ (যা রসুলের সম্পূর্ণ জীবনকে ধারণ করেছে সূক্ষ্মভাবে) যার মাধ্যমে রসুল (স) এর জীবন সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিজের জ্ঞানের প্রসার ঘটাতে ইচ্ছুক, তখন যে গ্রন্থগুলোর নাম শীর্ষে থাকার যোগ্য তার মাঝে আর রাহীকুল মাখতুম অন্যতম।যেকোনো বিগিনার পাঠকদের জন্য শ্রেষ্ঠ একটি বই। ‘আর রাহীকুল মাখতুম’ এমনই একটা গ্রন্থ যেখানে মহানবি (স) এর জন্মের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকল ইতিহাসের এত সুন্দর সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে যে আপনি বইটি পড়ার সময় প্রতিনিয়ত টাইম ট্র্যাভেল করে চলে যাবেন ইতিহাসের সোনালী সময়ে। ১৯৭৯ সালে আয়োজিত রাবেতা আল আলাম সিরাত প্রতিযোগিতায় ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস সফিউর রহমান মুবারকপুরীর ‘আর রাহিকুল মাখতুম’ বইটি ১১৮২ টি বইয়ের পান্ডুলিপির মাঝে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। ইংরেজিতে বইটিকে The Sealed Nectar নামে অনুবাদ করা হয়েছিল। বাংলা ভাষাতেও প্রচুর অনুবাদ হয়েছে বইটির। অনুবাদগুলোর মাঝে সমকালীন প্রকাশনির পক্ষ থেকে বইটির অনুবাদ করেছেন আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ , আল-আমিন ফেরদৌস এবং মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান। ⚪ একটি বইয়ের পিছনে এতজন অনুবাদক থাকার বিষয়টা কেমন? বইটির অনুবাদ কেমন হয়েছে? আর রাহিকুল মাখতুম কি অবশ্যই পাঠ্য বই?সমকালীন প্রকাশনির এই বইটিই কি আমাদের পড়া উচিত হবে? এই বিষয়গুলো জানার আগে চলুন আমরা আরব দেশের অতীতে সময় ভ্রমণ করে কেমন ছিল এই মহামানবের জীবন তা সম্পর্কে জেনে কয়েকটি ধাপে পাঠপ্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করি। ⚪ পাঠপ্রতিক্রিয়া - আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের ন্যায় কলুষিত চিন্তাভাবনা যখন আমাদের কোমল হৃদয়ের দখল নিতে চায়, তখন এই মহামারী রোগের প্রতিষেধক হিসেবে আল কোরআনের সুমধুর বাণী, হাদিসের আলোর আভা, নবী রসুলদের জীবনী এই কালো মেঘে আচ্ছন্ন মন থেকে অন্ধকার দূর করে আলোর আভাস দেয়। ঠিক তেমন ভাবেই মনে যখন শঙ্কা, ভবিষ্যতের প্রতি ভয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কন্ঠ উঁচু করার সাহস হারিয়ে ফেলি তখনই নিজের আত্মিক সন্তুষ্টি প্রাপ্তি ও সুন্দর পথের দিশা খুঁজে ফিরে পাবার তাগিদে ডুবে যাই ‘আর রাহিকুল মাখতুম’ নামক সিরাতের অতল জ্ঞানের সমুদ্রে। একটি দীর্ঘ বই পড়ার ক্ষেত্রে বারবার ক্লান্তি ঘিরে ধরে। আর রাহিকুল মাখতুম বইটি পড়ার সময় বিষয়টা একদম বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশাল কলেবরের বইটি শেষ করতে তিনদিনের বেশি সময় লাগেনি। একটি ভালো বইয়ের বৈশিষ্টই হলো পাঠককে পাতার অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখা। লেখক, অনুবাদকের বক্তব্যের পর বিশালাকারের সূচিপত্র দেখার পর সামান্য ভীতি কাজ করাটাই স্বাভাবিক ছিল। এই বইয়ের ক্ষেত্রে সেটাও হয়নি। প্রথম দিকে সূচিপত্রকে দারুণ ও বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করে সুন্দর উপমার মাধ্যমে অধ্যায়ের নাম সাজানোর ফলে পুরো বই সম্পর্কে প্রথমেই সম্মুখ ধারণা পাওয়া যায়। বইটির আরম্ভ হয় আরবের ভৌগলিক অবস্থান ও আয়তন, আরব, ইয়েমেন, হিজাযের তথাকথিত শাসন ব্যবস্থা, বিভিন্ন ধর্মের মতবিরোধ, সম্প্রদায়ের মাঝে রচিত যুদ্ধ এবং আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের কলুষিত সমাজের অন্যায় ও অত্যাচারের ভয়াবহ বর্ণণার মাধ্যমে। " ওদের উপমা হচ্ছে এমন জনতার, যারা আগুন জ্বালাল। আগুনে চারপাশ আলোকিত হওয়ার পরই আল্লাহ সে আলো সরিয়ে নিলেন। ওরা ঘোর অন্ধকারে ডুবে গেল। অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখার থাকল না " আইয়ামে জাহিলিয়া যুগ তথা তৎকালীন আরব সমাজের শাসনব্যবস্থা, আচার, ধর্মবিশ্বাস ইত্যাদি বিষয়গুলোর বর্ননা দেওয়ার ক্ষেত্রে সূরা বাকারার (১৭-১৮) আয়াতটির কথা বলতেই হয়। স্রষ্টার অস্তিত্ব ভুলে তারা লিপ্ত হয়েছিল হাজারো পাপাচারে, মানুষ বিশেষ করে নারীরা পরিণত হয়েছিল ভোগবিলাসের খেলনা নামক কাঠের পুতুলে। ক্ষমতার লোভে আরববাসীদের আগ্রাসী মনোভাব, লুটপাট, জঘন্য অর্থনৈতিক ও চারিত্রিক সংস্কৃতি, অহেতুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেনো তাদের শ্বাস নেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় কর্মে পরিণত হয়েছিল। অন্ধকার যুগের উত্তাপে যখন আরব সমাজ উত্তপ্ত তখনই মদিনার তপ্ত বুক চিড়ে সূর্যের লাভ আভা হয়ে নিকষ কালো আঁধারের সমাপ্তি সূচনার তাগিদে ধরনীর বুকে এলেন সেই মহামানব, যার অপেক্ষায় ছিল মানবসভ্যতা। মা আমিনার কোল আলো করে জন্মালেন আমাদের প্রিয় নবী (স)। প্রিয় চাচার সঙ্গে ব্যবসায়িক উদ্দ্যেশ্যে শাম ভ্রমনকালে পাদ্রি বাহীরা কিশোর রসুল ( স) কে দেখার পর আখেরি নবী হবার সকল নিদর্শন দেখে অবাক হয়েছিলেন। তিনি ভবিষ্যতে বাণী করেছিলেন যে - ইনি হবেন বিশ্বজাহানের সর্দার,আল্লাহর পয়গম্বর,সর্বশেষ নবী। ফুজারের যুদ্ধের ভয়াবহতা তার হৃদয়কে আঘাত করার পর তিনি গঠন করেছিলেন হিলফুল ফুজুল নামক সংঘের।হাজরে আসওয়াদ পাথর নিয়ে বিরোধের সমাধান করা, প্রিয়তমা খাদিজাকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করা, নবীর বংশ পরিচয়,হযরত জিবরাইল (আ) এর আগমন, আল কোরআন নাজিল, নবুয়ত প্রাপ্তির মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব গ্রহণের ইতিহাস জানানোর মাধ্যমে শেষ হয় বইটির আরম্ভের পর্যায়। লেখক তার কাব্যিক ও আকর্ষণীয় বর্ণণার মাধ্যমে প্রথম দিকেই পাঠককে এমন ভাবে হুকড করে রাখার জাদু দেখিয়েছেন যে - পাঠক বইটির অন্তিম পাতায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের মনকে অশান্ত করতেও দ্বিধা করবে না। বইটির মধ্যপর্যায়ে আমরা দেখতে পাই প্রথম দিকে গোপনে এরপর প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার ঘটনা, কুরাইশদের সংঘটিত বিভিন্ন অত্যাচার, ইসরা -মিজাজ,রসুল (স) কে শেষ নবি হিসেবে মানার প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন মুজিজা দেখানো, ধাপে ধাপে মদীনা ও মক্কি সূরার আয়াত নাযিল, আবু তালেবের মৃত্যু থেকে শুরু করে শ্রেষ্ঠ মানব মানুষ কীভাবে বিভিন্ন ধকল সামনে নিয়ে চারিত্রিক গুণাবলির মাধ্যমে উম্মতদের ভালোবাসা লাভ করেছেন, কীভাবে বার বার ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। আমরা দেখেছি রক্ত স্রোত বয়ে যাওয়া খন্দক, ওহুদ, বদরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় লাভ করতে। এই মধ্য পর্যায়ে বার বার উঠে এসেছে মুহাম্মদ (স) এর যুদ্ধকেন্দ্রিক, রাজনৈতিক জ্ঞান। হিজরতের সময় এই মানুষটার দেশপ্রেম যে কতটা গভীর ছিল তা ফুটে এসেছে পুরো লেখাতে। রসুল (স) এর প্রশংসা করতে হলে আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর আবৃত্তির ভাষায় বলতে হয় - “ নির্বাচিত, কল্যাণকামী এবং আমানতদার আপনি এমন পূর্ণচন্দ্র, হটায় যা অন্ধকার।” মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন জ্ঞান, ভালোবাসা নামক ফলের ভারে নুয়ে থাকা জ্ঞান বৃক্ষের মতো। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার উম্মতের জন্য চিন্তা করে গিয়েছেন। আর রাহিকুল মাখতুম বইটিতে রসুলের একাধিক বিবাহের কারণ, মক্কা বিজয়ের প্রভাব ও বিস্তার নিয়ে বর্ণণার ক্ষেত্রে লেখকের জ্ঞানের প্রশংসা করতে হয়। প্রত্যেকটা ইতিহাসের যৌক্তিক আলোচনা ও বিশ্লেষণগুলো ছিল অনন্য।ওহুদ যুদ্ধ, রসুল (স) এর একাধিক স্ত্রী থাকার যৌক্তিক কারণ দিয়ে মানুষের মনে থাকা বিভ্রান্তি দূর করেছেন পাকাপোক্ত লেখনি ও উপযুক্ত তথ্যের মাধ্যমে। বইটি পড়ার পর উপলব্ধি হয় যে - কোনো পাকাপোক্ত চক্রবুহ ও অত্যাধুনিক অস্ত্রের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক বাহীনির মাধ্যমে মুসলমানদের বিজয় অর্জিত হয়নি। বিজয় অর্জনের ক্ষেত্রে কাজ করেছে ইসলাম ধর্ম ও স্রষ্টার প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর বুকভরা সাহস এবং একতা। বিদায় হজের ভাষণের অধ্যায় পড়ার সময় আবেগে আর প্রিয় নবীর প্রতি কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। লেখক শুধু তথ্য উপস্থাপনই করেননি বরং বইটির প্রতিটি শব্দে মিশ্রিত করেছেন ভালোবাসা। বইটির শেষ প্রান্তে আসার পর দুঃখের আর বিষাদের ছায়া মনকে গ্রাস করেছে। যে সুরেলা পাখি মানুষের কানে ভালোবাসা ও বিজয়ের গান শুনিয়ে প্রতিটি হৃদয়কে শীতল করেছিল, স্বপ্ন দেখিয়ে তা বাস্তবে পরিণত করেছিল সেই পাখি আল্লাহর পেয়ারে হাবিব, আমাদের আদর্শ, তিনিও চলে গিয়েছিলেন উম্মতদের বুকের ভার বৃদ্ধি করে। অন্তিম হজ(বিদায় হজ) করার পর মানুষের কাছে ইসলামকে পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ঘোষিত করেন। বলেছিলেন - আজ থেকে ইসলামকে সম্পূর্ণ করা হলো।এই বিজয়ের আনন্দ উম্মতদের আনন্দের বার্তা দিলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। হজ থেকে ফেরার পথে তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন । প্রচন্ড অসুস্থতার মাঝেও তিনি স্রষ্টাকে স্মরন করতে ভুলেননি, বার বার চিন্তা করেছিলেন তার উম্মতদের ব্যাপারে, এমনকি মৃত্যুর কিছুক্ষন আগেও তিনি ভেবেছিলেন তার প্রিয় উম্মতদের কথাই। এরপর? মৃত্যু নামক শব্দটি তাঁর ক্ষেত্রেও সত্য হয়ে গেলো।প্রতি মোনাজাতে উম্মতদের হেদায়েত চাইতেন, তায়েফবাসীর এত অত্যাচারের পরেও তিনি অভিশাপ দেননি, নিজের মুখের খাবারটাকে অনাহারীর মুখে তুলে দিতে দ্বিধাবোধ করেননি, স্রষ্টা চাইলেন তাকে শাহেনশাহ বানাতে, তিনি হতে চাইলেন ফকির। রাজত্বের লোভ ছিল না তার মনে। যিনি নীতিতে বজ্রের ন্যায় অটল, কুসুমকোমলের ন্যায় আচরণ, যার নামে দরুদ পড়ে পুরো প্রাণীকুল সেই মানুষটার জীবনী লেখার ক্ষেত্রে লেখক প্রতিটি পাতায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। কাহিনীর বিন্যাস বেশ ইউনিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার কারণে সামান্য পরিমাণেও বিরক্তির সঞ্চার হয়নি পড়ার সময়। প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন কোরআনের প্রত্যেকটি বাণীর বাস্তব প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে। লেখক বেশ প্রানবন্ত কায়দায় প্রত্যেকটি কথাকে এত সুক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন যে পড়ার সময় প্রতিনিয়ত মনে হয়েছে সকল ঘটনা যেনো ক্রমান্বয়ে চোখের সামনে ঘটে চলেছে। কবি যুহাইরের কবিতা অনুযায়ী নবি(স) এর প্রশংসা করতে গেলে বলতে হয়, “ অন্যকিছু হতেন যদি আপনি মানুষ বিনে, চতুর্দশী কিরণ পেত আপনার আলোর ঋণে।” সময়যন্ত্রের আবিষ্কার আদৌ হবে কীনা জানা নেই। তবে লেখক যেভাবে অতীত সময়ে তার কাহীনিবিন্যাস, বাক্যগঠনের মাধ্যমে ভ্রমণ করিয়ে এনেছেন সেটা বিবেচনা করলে বলতে হয় - একজন দক্ষ লেখকের কাজই হচ্ছে ইতিহাসকে মানুষের হাতের মুঠোয় আনা। প্রত্যেকটি ইতিহাস বর্ণণা সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রেফারেন্স তার বইকে আরো জীবন্ত করে তুলেছে। বিশেষ করে তখনকার আরব কবিদের ভাষায় রসুলের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা বইটিকে হীরক খন্ডে পরিণত করেছে। লেখক ইন্তেকাল করেছেন ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসের এক তারিখ। মানুষ ইন্তেকাল করার পরেও কর্মগুণে অমর হয়ে থাকেন।লেখক অমর হয়ে থাকবেন আর রাহীকুল মাখতুমের মতো ক্লাসিক সীরাত লিখে পাঠকদের জীবনকে আলোকিত করার জন্যে। দোয়া করি লেখককে আল্লাহ জান্নাত নসিব করুন। ⚪ লেখার শুরুতেই বলেছিলাম একটা বইয়ের পিছনে এতজন অনুবাদকের হাত থাকার কারণটা কি? কি এমন আছে সমকালীন প্রকাশনির এই বইটির অনুবাদে যা অন্যান্য বই থেকে এই অনুবাদকে ভিন্ন করে? যারা বইটি পড়েছেন তাদের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর থাকলেও যারা এখনো দ্বিধায় আছেন তাদের জন্য অনুবাদ সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা করছি, যাতে বইটি কেনার আগে ভেবে নিতে পারেন - এই বইটিই আপনার উপযুক্ত নাকি। ⚪ অনুবাদ, প্রোডাকশন সংক্রান্ত পর্যালোচনা - “ এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।” - সূরা আর রুম :২২ কাঁটা তারের বেড়া যেমন দুটো মানচিত্রের দেশকে আলাদা করে রাখে তেমন ভাবেই মানুষের বর্ণ, বৈচিত্র, ভাষার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ নিজস্ব পরিচিতি লাভ করে। আল কোরআন আরবি ভাষায় নাজিল হলেও প্রত্যেকটি ভাষায় আল কোরআনের বাণীকে জাতি থেকে জাতিতে প্রেরণ করার ক্ষেত্রে ভাষা একমাত্র মাধ্যম। নিজের মাতৃভাষার সুমধুর শব্দ যেনো স্রষ্টার বাণীকে সহজভাবে মানুষের হৃদয়ে বাসা বাঁধতে সহায়তা করে। আর-রাহীকুল মাখতুম বইটিকে আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করেছে একাধিক প্রকাশনী। প্রত্যেক প্রকাশনীই নিজেদের বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সর্বোচ্চ প্রোডাকশন দেওয়া চেষ্টা করে। পাঠকরা যদি জিজ্ঞেস করেন বাজারে এত অনুবাদ থাকতে কেনো সমকালীন প্রকাশনীর অনুবাদকে বেছে নেওয়া উচিত, তখন এই প্রশ্নের উত্তর তিনটি ধাপে দিতে হয়। ১. মানুষ যেকোনো বাক্যকে সহজ ভাষায় বোধগম্য করতে চেষ্টা করে। বাংলা ভাষার প্রাচুর্য প্রচুর। এত উচ্চমানের শব্দের ভিড়ে মাঝেমধ্যে মানুষের মনে শব্দ নিয়েই শঙ্কায় থাকতে হয়।অনেকের কাছেই কঠিন শব্দগুলো বোধগম্য হয় না। বাক্যের মাধুর্য একটা বইকে উচ্চমানের খ্যাতি অর্জনে সহায়তা করে।অনেক সময় বেস্টসেলিং, মাস্টরিড তকমা পাওয়া বইগুলো অনুবাদের পর দেখা যায় পাঠকের এমন বইগুলোতেও অরুচি ধরে যায়। অনুবাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় অনুবাদকের দায় নিতে হয় এই কারণে। লেখক ও অনুবাদকের মেহনতের খাতিরেই একটা বই সেরার মর্যাদা পায়। সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহীকুল মাখতুম বইটির অনুবাদের সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হচ্ছে সহজ,সাবলীল, বোধগম্য ও ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার। বাংলা বাক্যগুলো পড়ার সময় মনে হবে আসর জমানো গল্পকথক যেনো তার মাধুর্যমিশ্রিত বাক্য ব্যবহার করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করছেন। কুরআনের আয়াতের বঙ্গানুবাদ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দক্ষতা দেখিয়েছেন অনুবাদকেরা। আয়াতের এত সুন্দর অনুবাদ যেনো বইটির হৃদস্পন্দন। কাব্যিক বর্ণণায় পরিপূর্ণ কবিতাগুলো প্রচন্ড রকমের শ্রুতিমধুর লেগেছে। তৎকালীন আরবের কবিতার ছন্দ অনুবাদে সর্বোচ্চ দক্ষতার পরিচয় দেওয়াটা যে প্রচন্ড ধকলের ছিল তা অনুবাদকদের পরিশ্রম দেখার পরেই বোঝা যায়।আমি পাঠ প্রতিক্রিয়ায় বইতে থাকা কয়েকটি কবিতার অনুবাদ তুলে ধরেছিলাম।ভেবে দেখুন, এই কয়েকটা কবিতাই যদি এত শ্রুতি মধুর হয় তাহলে বইতে থাকা অন্যান্য কবিতা কতটা মধুর। রসুলের জীবনের সাথে কবিতাকে সংযুক্ত করা অবশ্যই একটা দক্ষতার আর ইউনিক কাজ বলতে হয়।এছাড়াও দুর্বল হাদিসের মান চিহ্নিতকরণ, টীকাগুলোর শুদ্ধতম ব্যবহার ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বইটির বিভিন্ন ঘটনার বিবেচনা বইটিকে মাস্টারক্লাস পর্যায়ে এনে ফেলে। ভালোবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। বইটি অনুবাদের ক্ষেত্রে প্রকাশনী এই অস্ত্রটির উপযুক্ত ব্যবহার করেছেন। ২. একটা বইয়ের সৌন্দর্য পাঠকদের কাছে প্রেয়সীর সৌন্দর্যের চাইতে কম নয়।বই সম্পাদনা করার ক্ষেত্রে বাক্য গঠনে ত্রুটি, বানানে ত্রুটি থাকাটা একদম প্রাত্যহিক দিনের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি বইয়ের ভাষান্তর করা মানেই বইটির পোস্টমর্টেম করা। পোস্টমর্টেম করার পর যদি পাকাপোক্ত প্রমাণ হাজির করতেই ব্যর্থ হয় তবে পোস্টমর্টেম করে লাভই কি হলো? আমি বলব, সমকালীন প্রকাশনি আর রাহিকুল মাখতুম আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করার ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম করে ফেলেছে। পোস্টমর্টেম করার ফলে বইটির কি অবস্থা হলো তা বলার আগে এই পোস্টমর্টেমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলে নিই। আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তরের কাজে নিয়োজিত ছিলেন - আবুল হাসানাত কাসিম, আল-আমিন ফেরদৌস, রিফাত মাহমুদ, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান। সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন - আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ। শরয়ী নিরীক্ষণ করেছেন - মুফতি সারোয়ার হোসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, আবুল হাসানাত কাসিম, আসাদুল্লাহ ফুয়াদ। বানান ও ভাষারীতি - ওমর আল ফারুক, মাহবুবুর রহমান, মুজিব হাসান, নাহিদুজ্জামান শাকিল। আমি ইসলামি প্রকাশনীগুলোর কাছে অন্যান্য প্রকাশনী থেকে বেশি কৃতজ্ঞ থাকি তাদের একটি বইকে পার্ফেক্ট করার জন্য সর্বোচ্চ মেহনত করার সাহস দেখানোর জন্য। একটা বইয়ের পিছনে শুধুমাত্র উপরোক্ত ব্যক্তিদেরই পরিশ্রম নয় বরং প্রেসকর্মীদের মাথার ঘামও জড়িয়ে থাকে। প্রত্যেকটা বই যেনো অনেকগুলো জীবনের গল্প বলে। আন্তর্জাতিক প্রকাশনিগুলো যেভাবে প্রত্যেকটি বইকে সুন্দর করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাহসিকতা দেখায় ঠিক তেমনি সাহসিকতা দেখিয়েছেন সমকালীন প্রকাশনির প্রত্যেকে। পোস্টমর্টেমের পজিটিভ রিপোর্ট আনার পরীক্ষাতেও তারা উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রকাশনি বইটিতে যে ফন্ট ব্যবহার করেছেন সেটা কি তাদের নিজেদের তৈরি নাকি জানা নেই।তবে বলতে হয় ফন্টটাকে চোখের আরাম বলা যায়।এই ফন্টটা যদি তাদের নিজস্ব হয় তবে সেটা হবে বেশ দারুণ ব্যাপার। বানানের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাদের নিজস্বতা দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হয়েছি। সমকালীন গ্রাফিক্স টিম প্রচ্ছদ সৃষ্টির ক্ষেত্রেও দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। সরল, স্নিগ্ধ প্রচ্ছদ। বিশালাকারের বইটির বাইন্ডিং যথেষ্ট পাকাপোক্ত। তবে লেখক পরিচিতিটা অনুবাদক,লেখকের বক্তব্যের মতো প্রথম দিকে থাকলে ভালো হতো আমার মতে। কালো মেঘে আচ্ছন্ন থাকার পরেও পূর্ণিমার চাঁদের আলো যেমন মলিন হয়না, তেমন ভাবেই এই ছোটখাটো ভুলের জন্যেও বইয়ের স্বাদ বিন্দুমাত্রও কমেনি। বইটি পড়া শেষ করার পর পাঠক সমকালীন টিম,অনুবাদক ও ডিজাইনারের ভূয়সী প্রশংসা করবেন বলেই আশা রাখি।প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে বই শ্রেষ্ঠ উপহার। সমকালীন প্রকাশনী আর রাহিকুল মাখতুম এমনই একটা বই যা উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রেও পাঠকদের আনন্দিত করতে পারে। ৩. প্রথমে দর্শনধারী, পরে গুনবিচারী নামে একটা প্রবাদ আমাদের সমাজে প্রচলিত। সৌন্দর্য ও সরলতার পিছনে ছুটে চলা আমাদের দেশের মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। সৌন্দর্যতা ও ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে আল কোরআনে অতি উত্তম একটি আয়াত আছে। “সূর্যের সাধ্য নেই যে চন্দ্রের নাগাল পায় আর রাতও দিনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। প্রত্যেকেই (নিজ নিজ) কক্ষ পথে পরিভ্রমণ করছে।” (৩৬-সূরা ইয়াসিনঃ আয়াত-৪০) মহান সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেকটা সৃষ্টিকে সুনির্দিষ্ট সৌন্দর্য, আকৃতি ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন।আল কোরআন আমাদের প্রথম বিদ্যালয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়মের মাঝ দিয়েই জীবনধারণ করা উত্তম। এই আয়াতটা প্রকাশনীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একটা বইকে উত্তম বলার পিছনে শুধু মাত্র প্রচ্ছদ, প্রোডাকশন, ভাষান্তর, লিখনশৈলীই যথেষ্ট নয় বরং দরকার একটি নির্দিষ্ট নিয়মেরও। আর রাহিকুল মাখতুমের সূচিতে প্রত্যেকটা শিরোনাম লক্ষ্য করলে বেশ আকর্ষণীয় একটা জিনিস দেখা যায়। শিরোনামগুলোর নামগুলো পুরো অধ্যায়ের খন্ড চিত্র ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। যেমন :একটা অধ্যায়ের নাম ‘ দুঃখে ভরা বছর’। এই অধ্যায়ে চাইলেও সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে সকলের মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া যেতো।কিন্তু এই কাজটি করলে শিরোনামের মান হারাতো। তাই এই অধ্যায় জুড়ে রসুল (স) এর আত্মীয়,প্রিয়তমার মৃত্যু নিয়ে কথা বলা হয়েছে। আবার যে শিরোনামের নাম হুদাইবিয়ার সন্ধি, সেখানে সন্ধির আগেকার ও মধ্যকার সকল ইতিহাসই তুলে ধরা হয়েছে।অর্থাৎ বইটির প্রতিটি অধ্যায় নিয়মতান্ত্রিক ভাবে একটি সিকোয়েন্সে সামনে এগিয়ে গিয়েছে।কোথাও সামান্য গড়মিল থাকার প্রশ্নই তেমন আসেনি বইটিতে। বইটিতে শিরোনামের মাধ্যমে অধ্যায়গুলোকে সুবিন্যাস করার জন্য বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে ভারসাম্য বজায় থাকার ফলে সমকালীন প্রকাশনীর এই পদক্ষেপকে যথোপযুক্ত বলা যায়। ⚪ অন্তিম কথন - বিশাল কলেবরের একটি বইকে মাত্র কয়েকটি বাক্যে ফুটিয়ে তোলার মত দুঃসাহস আমার নেই। প্রতিক্রিয়া লিখতে যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত শঙ্কায় ছিলাম কোনো না কোনো তথ্য যেনো বাদ পরে না যায়। যে মহামানবের জীবন নিয়ে আলোচনা কিংবা লিখতে গেলে সাত সমুদ্রের পানির সমতুল্য কালিও যথেষ্ট নয়, তার সমগ্র জীবন ফুটে উঠেছে আর রাহীকুল মাখতুম গ্রন্থটিতে। একজন মানুষের জীবনচরিত আমাদের জীবনের চাইতেও বিশাল পরিধির তখনই হয় যখন তার জীবনের সাথে ইহকাল ও পরকাল সংযুক্ত হয়ে যায়। আর রাহীকুল মাখতুম রসুল (স) জীবনের পরিধি সম্পর্কিত একটি দলিল।লেখক ও সমকালীন প্রকাশনী উভয়ই এই বইটি লেখা ও ভাষান্তর করার ক্ষেত্রে ভূয়সী প্রশংসার দাবিদার। আলোকিত জীবন গড়ার ক্ষেত্রে যেসকল বই একজন পাঠককে সহায়তা করে তার মাঝে এই বইটি অন্যতম। রণক্ষেত্রে যোদ্ধাদের স্তরে স্তরে বিভাজন করে সমরাঙ্গনে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রে যেমন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়, তেমনই দরকার অসীম সাহসের। নবি (স) জীবন নামক সমরাঙ্গনে বিজয় লাভ করে ইহকাল ও পরকালে সুখী হবার মূলমন্ত্র শিক্ষা দেন বলেই আল কোরআন এ বর্ণিত জীবনব্যবস্থার সাথে তার এত মিল। আলোকিত জীবন গড়ার তাগিদে, আল্লাহর হাবিবের জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিয়ে একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য বইটি অবশ্যই পাঠ্য। পরিশেষে, আরবের সোনালি সময়ে আর রাহিকুল মাখতুম বইটির মাধ্যমে মহাযাত্রা করার আমন্ত্রণ রইল প্রত্যেক পাঠকদের জন্য। বইমেলা জুড়ে ইসলামি প্রকাশনিগুলোর জয়ধ্বনি হোক, মুসলমানরা সকল অধিকার ফিরে পান, সমকালীন প্রকাশনির প্রত্যেকে দীর্ঘজীবী হোন এবং এভাবেই দারুন সব বই পাঠকদের উপহার দিতে থাকুন এই কামনাই করি। বইয়ের নামঃ আর রাহিকুল মাখতুম লেখকঃ আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ. প্রকাশনীঃ সমকালীন প্রকাশন রিভিউদাতা: S M Farhan Tanvir
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম পড়ার অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক এবং হৃদয়স্পর্শী। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন, সংগ্রাম এবং তাঁর চরিত্রের যে অনন্য দিকগুলো বইটির মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তা আমার অন্তরকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে। প্রথমেই যে বিষয়টি আমাকে আকৃষ্ট করেছে তা হলো নবীজীর জীবনের নানা ঘটনাকে অত্যন্ত ধারাবাহিক ও সহজভাবে উপস্থাপন করা। বইটির ভাষা সহজ এবং স্পষ্ট, যা নবীজীর জীবনকে একদম বাস্তব চিত্রে ফুটিয়ে তুলেছে। তাঁর সংগ্রাম, ত্যাগ, ধৈর্য এবং অবিচলতা আমাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছে। নবীজীর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়—জন্ম থেকে শুরু করে নবুয়ত প্রাপ্তি, মক্কায় ইসলামের প্রচার, মদিনায় হিজরত, বিভিন্ন যুদ্ধ এবং তাঁর পুরো জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত গভীরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষ করে তাঁর মানবিক গুণাবলি, সহনশীলতা, এবং ইসলামের জন্য ত্যাগ আমাকে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। আরেকটি দিক যা আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তা হলো নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের সাথে সংযুক্ত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের গভীর বিশ্লেষণ। এটি আমাকে সেই সময়ের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে এবং বুঝতে সাহায্য করেছে কীভাবে ইসলামের প্রসার সম্ভব হয়েছে। যারা নবীজীর জীবন সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য গ্রন্থ। ইসলামের ইতিহাস ও নবীজীর জীবন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য এটি অন্যতম সেরা উৎস।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম: আর রাহীকুল মাখতুম লেখক: শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরী বইয়ের ধরন: অনুবাদ অনুবাদকের নাম:আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান ঘরানার: সীরাতগ্রন্থ প্রকাশনী: সমকালীন প্রকাশন পৃষ্ঠা সংখ্যা:৬৯৮ রেটিং: ১০/১০ শায়েখ সফিউর রহমান মুবারকপুরী-র লিখা "আর রাহীকুল মাখতুম" বইটি যা বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়েছে শ্রেষ্ঠ মানব ও প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনী সম্পর্কিত একটি সিরাত গ্রন্থ যা উম্মাহর জন্যে রত্ন সমতুল্য। উপক্রমণিকা: সিরাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো রাস্তা বা পথ। এখন প্রশ্ন আসতে পারে কোন পথ? এই পথ হলো আল্লাহ্ তায়ালা কর্তৃক নির্দেশিত ও রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রদর্শিত সত্য ও ন্যায়ের পথ। আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে যখন মানুষ এক আল্লাহকে ভুলে মূর্তিপূজা শুরু করলো , আল্লাহর সাথে গুস্তাখি করা শুরু করলো, হালাল হারামের বলাই ভুলে মানুষকে অন্যায়ভাবে জুলুম করা শুরু করলো ঠিক সেই সময় তক্ত মরুভূমির মক্কা নগরীতে জন্ম নেন আমাদের শেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ৬৩ বছরের জীবনে তার করা কাজ, অনুমতি, নির্দেশনা আমরা ১৪০০ বছর পরে সিরাত গ্রন্থ আকারে পাঠ করি আর তাই বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাই। বই সম্পর্কে মতামত: "আর রাহীকুল মাখতুম" আর অনেক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ যা পাঠকের সংগ্রহে আছে । তবে সমকালীন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত গ্রন্থটির মাঝে আলাদাই এক আলোকচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। বইয়ের ভাষাশৈলী, বর্ণনার ধরণ, ভাষাচয়ন অত্যন্ত নিখুঁত মা শা আল্লাহ্। সীরাতে ডুব দিতে চাইলে এই বইয়ের বিকল্প খুঁজে বের করা অত্যন্ত দুষ্কর। পাঠকের অনুভূতি: খুব কম বই আছে যা একবার পড়া শুরু করলে স্রোতের টানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পর হয়ে যায় কিন্তু বই থেকে চোখ সরে না। এমনই একটি বই সমকালীন প্রকাশন এর "আর রাহীকুল মাখতুম" বইটি। বইয়ের বর্ণনা এতই শ্রুতিমধুর যে বারবার পড়তে মন চায় আর ১৪০০ বছরের সেই জনপদে হারিয়ে যেতে মন চায়। নবীজী যখন জানতে পারলেন তাঁকে তার সম্প্রদায় বের করে দেবে কেমন অনুভব করেছিলেন তিনি? তায়েফবাসী যখন নবীজিকে রক্তাক্ত করে ফেলেছিলেন তখন কি দুয়া করেছিলেন তিনি?বইটি এমন হাজার হাজার স্মৃতির আর অনুভূতির সমন্বয়। কভার ও বাইন্ডিং: বইয়ের কভারটা সবার আগে পাঠকের দৃষ্টি কাড়ে। আর সমকালীন প্রকাশন সর্বদাই এই ব্যাপারে গতানুগতিক ধাঁচের বাইরে বারাক্কাল্লাহু ফিক। আর এত সুন্দর বাইন্ডিং পাঠক অন্য কোনো বইয়ে পায়নি। ইন শা আল্লাহ্ পরের প্রজন্মের জন্যেও এই বই একটা অন্যতম সিলেকশন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
Was this review helpful to you?
or
শুধুই ক্ষমা নাকি প্রতিশোধ? শুধুই দু'আ নাকি বদ দু'আ? ইসলাম কি বলে? জানবেন কীভাবে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জীবন থেকে। তিনি কাদের ক্ষমা করেছেন, কাদের প্রতিশোধ নিয়েছেন আর কোন পরিস্থিতিতে বদ দু'আ দিয়েছেন - এসব না জানলে জন্মসূত্রেই কেবল মুসলিম হয়ে রইলেন। হৃদয়ে ধারণ করলেন না। আর যদি চান এমনভাবে কেউ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুক, যেনো সে আপনার কাছের কোনো বন্ধু - তবে আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে সমকালীন প্রকাশনীর 'আর-রাহিকুল মাখতুম'।
Was this review helpful to you?
or
কেন পড়বেন আর রাহিকুল মাখতুমঃ আর রাহিকুল মাখতুম সিরাত লেখনীর ইতিহাসে এক কালজয়ী গ্রন্থ। যুগে যুগে রাসুলের অগনণিত সিরাত লেখা হলেও এর আবেদন বিন্দুমাত্র কমেনি। আর রাহিকুল মাখতুম এর সহজ সরল প্রাঞ্জল ভাষা নবী জীবনের সকল ঘটনা আপনার চোখের সামনে ভাসিয়ে তুলবে। এতসব কারনে নবী জীবনকে জানতে আপনি বেছে নিতে পারেন সিরাতের অন্যতম বিশুদ্ধতম গ্রন্থ আর রাহীকুল মাখতুমকে
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ বই: আর রাহিকুল মাখতুম লেখক: শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি (রহ.) প্রকাশনী: সমকালীন প্রকাশন বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। সকল প্রশংসা আল্লাহর। যিনি এই সারা জাহানের একমাত্র মালিক। যে মহান রবের সীমাহীন নিয়ামতে আমরা ডুবে থাকি সর্বদা। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি। আল্লাহ তাআলা তাকে মানবজাতির জন্য এক অনন্য রহমত হিসেবে এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। তার অনন্য গুণাবলী ও চারিত্রিক মাধুর্য সকল মানুষের জন্য উত্তম আদর্শ। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় বান্দা এবং তিনিই সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। আল্লাহ তাআলা বলেন, "আমি তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি; কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ তা জানে না।" (সূরা সাবা, আয়াত ২৮) আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন। সর্বপ্রথম নবী হযরত আদম (আঃ) থেকে সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) পর্যন্ত যত নবী পৃথিবীতে এসেছেন, মুহাম্মদ (স.) সবার মধ্যে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তাআলা তাকে এমন অনেক কিছু দান করেছেন যা অন্য কাউকে দেননি। ♦️বই পরিচিতি: আর রাহীকুল মাখতুম একটি সিরাত সংক্রান্ত বই যেখানে নবী (স.) এর জীবনী তুলে ধরা হয়েছে। বইটির লেখক শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি। ১৩৯৬ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে রাবিতাতুল আলামিন ইসলামীর ব্যবস্থাপনায় পাকিস্তানে একটি সিরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেকোনো ভাষার মানুষের জন্য এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ ছিল। সিরাত সম্মেলনের সেই প্রতিযোগিতায় ১১৮২ টি পান্ডুলিপির মধ্যে এটি প্রথম পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়। ছোট্ট এই বইটিতে লেখক খুবই সুন্দর ও সুবিন্যাস্তভাবে নবীজীর সম্পূর্ণ জীবনী তুলে ধরেছেন। ♦️সিরাত: সিরাত শব্দটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত থাকলেও এর সঠিক ব্যাখ্যা আমরা কমই জানি। তবে সিরাত শব্দটি শুনলেই আমাদের নবী (স.) এর জীবনীর কথা মনে পড়ে যায়। সিরাত একটি আরবী শব্দ। সিরাতের বহুবচন হলো সিয়ার। যার অর্থ চাল-চলন, গতিবিধি। অর্থাৎ সিরাতের আভিধানিক অর্থ হল নেককার মানুষের জীবনাচার, চাল-চলন, কাজ-কর্ম ইত্যাদি। এজন্যই সিরাত বলতে আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুহাম্মদ (স.) এর জীবনীকেই বুঝি। ♦️বই পর্যালোচনা: বিখ্যাত এই সিরাত গ্রন্থটিতে মহানবী (স.) এর জীবনী ধাপে ধাপে তুলে ধরা হয়েছে। শিরোনামের মাধ্যমে আমি কিছু ধারণা এখানে তুলে ধরছি: ?আরব ভূখন্ডের আয়তন ও অবস্থান ? আরবের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ? নবীজীর বংশধারা ও পরিবার ? নবীজীর নবুয়ত পূর্ব জীবন ?নবুয়তের পরবর্তী জীবন ? ইসলাম প্রচারের সূচনালগ্ন ?নবীজীর দুঃখে ভরা জীবন ? মদীনায় হিজরত ? বিভিন্ন যুদ্ধ ও সন্ধি ? মক্কা বিজয় ইত্যাদিসহ আরও বিস্তারিত উঠে এসেছে বইয়ে যা এমন ক্ষুদ্র আকারে তুলে ধরা সম্ভব নয়। বইটিতে নবীর বংশ,জন্ম,পরিবার, ছেলেবেলা বেড়ে উঠা ও নবুয়তের আগের জীবন, নবুয়তের পরবর্তী জীবন, নবীজীর কাঁধে আল্লাহ তায়ালা যে সুমহান দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন তার ব্যাখ্যা, গোপনে ইসলাম প্রচার, প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার, সামাজিকভাবে তাকে কিভাবে বয়কট করা হয়েছিল, প্রিয়জনদের হারানোর যে দূর্বিষহ যন্ত্রণা তিনি সহ্য করেছিলেন, নিজের গোত্রের মানুষের কাছে তিনি যেভাবে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন সেই সবকিছু তুলে ধরা হয়েছে। ছোট্ট এই জীবনে তিনি যত দুঃখ, যন্ত্রণা সহ্য করেছেন, যত গুরুদায়িত্ব তিনি পালন করেছেন তার সবকিছুই বইয়ে লেখক তুলে ধরেছেন। ইসলামের জন্য তিনি কত ত্যাগ তিতিক্ষা করেছেন সবই বইয়ে দেওয়া আছে। ♦️পাঠ্যানুভূতি: সিরাত পড়লে অন্তরে অন্যরকম একটা প্রশান্তি অনুভব করা যায়। আর নবী (স.) এর জীবনী পড়লে তার প্রতি ভালোবাসা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হয়েও তিনি যে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন, যত দুঃখ-কষ্টে তিনি দিন পার করেছেন সেগুলো জানলে জীবনের প্রতি আর কোনো অভিযোগ বা আফসোস থাকবে না। দিনের পর দিন তার ঘরে চুলা জ্বলেনি, না খেয়ে থেকেছেন, ক্ষুধার যন্ত্রণায় পেটে বেঁধেছিলেন পাথর। একদিকে এমন কষ্টে জীবনযাপন করেছেন অন্যদিকে কাফেরদের অত্যাচার সহ্য করেছেন দিনের পর দিন। সিরাত পাঠ করলে এগুলো জানা যায় এবং দুঃখ কষ্টকে আল্লাহর পরীক্ষা ভেবে ঈমানী চেতনা বৃদ্ধি পায়। বইটি পড়ে ইসলামের প্রচার-প্রসারের কথা ভেবে আনন্দিত হয়েছি, আবার নবীজীর দুঃখ-কষ্টে হৃদয় জর্জরিত হয়েছে, আবার কখনো নবী ও তার সাহাবায়ে কেরামের কথা ভেবে নিজের ঈমান নিয়ে সংশয়ে পড়েছি। বারবার ভেবেছি তারা কতটা প্রতিকূল পরিবেশে নবীজীর সঙ্গ দিয়েছেন। নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন ছেড়ে সাধারণ জীবন বেছে নিয়েছেন। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, পুরো আরবের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। নিজেদের জীবনকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করেছিলেন। নবীজীর মতো তার সাহাবায়ে কেরামগণও ছিল দীপ্তিময় ঈমানের অধিকারী। ♦️সিরাত পাঠের প্রয়োজনীয়তা: আমরা মুসলিম জাতি। আল্লাহ আমাদের একমাত্র মালিক ও সৃষ্টিকর্তা। নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় নবী এবং রাসূল। নবী (স.) আমাদের একমাত্র আদর্শ এবং আল্লাহর পরে তিনিই আমাদের সর্বোচ্চ ভালোবাসার অধিকারী। আমরা যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি তাকে আমাদের গভীরভাবে জানতে হবে। নবীজী যেভাবে আমাদের জন্য কষ্ট করেছেন, মানুষের মার খেয়েছেন, গালি সহ্য করেছেন, রাতের পর রাত আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে কেঁদেছেন সেই মানুষটাকে আমাদের জানতে হবে, চিনতে হবে, তাকে উত্তম আদর্শ মানতে হবে। আর তাকে জানার জন্য আর রাহীকুল মাখতুম বইটা পড়ার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই বইটা নিয়ে যত বলি ততই কম কবে। এত সুন্দর সহজ ও সাবলীল ভাবে বইটা লেখা যে যতই পড়েছি ততই মুগ্ধ হয়েছি। আরও পড়ার ও জানার ইচ্ছা জেগেছে। আর নবীজীবনী কখনোই একটা বইয়ের মাধ্যমে জানা সম্ভব নয় তাই ছোট ও সহজ বই থেকে শুরু করা উচিত। এজন্য সিরাত পড়ার ও জানার জন্য আর রাহিকুল মাখতুম বইটা দিয়ে শুরু করা উচিত। কেউ যদি সিরাত সম্পর্কিত অনেক জ্ঞান অর্জন করতে চায় তাহলে এই বইটা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। আবার কেউ যদি শুধু এই বইটা পড়ে তবুও সে নবীজীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান এই বই পড়ার মাধ্যমেই পাবে ইনশাআল্লাহ। ♦️পরিশেষে: এক হাদীসে মহানবী (স.) বলেছেন, দ্বীনি ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। তাই আমাদের অবশ্যই দ্বীনি জ্ঞান অন্বেষণ করতে হবে। আর যদি মুসলিম হওয়ার পরও কেউ মুহাম্মদ (স.) সম্পর্কে না জানে তাহলে তার চেয়ে দুর্ভাগা এই দুনিয়াতে আর কেউ নেই বলে মনে করি। হাশরের ময়দানে কঠিন এক মুসিবতের সময় যখন মা তার সন্তানকে দেখে পালাবে, ভাই তার ভাইকে দেখে পালাবে কেউ কাউকে চিনবে না সবাই শুধু ইয়া নাফ্সি ইয়া নাফ্সি করবে। সেই ভয়ংকর দিনে একজনই শুধু ইয়া উম্মাতি ইয়া উম্মাতি বলে আল্লাহর কাছে আমাদের শাফায়াত প্রার্থনা করবে। তিনি আর কেউ নন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)। যার শাফায়াত ছাড়া, যার হাতের হাউজে কাউসারের পানি ছাড়া আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবনা। সেই নবীর জীবনী জানা ও তার সুন্নাহ এর উপর আমল করার তাওফীক আল্লাহ আমাদের দান করুন এবং জান্নাতে আল্লাহ তাআলা আমাদের তার প্রতিবেশী হিসেবে স্থান দান করুন আমীন!
Was this review helpful to you?
or
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিশুদ্ধ জীবনী জানতে আর রাহিকুল মাখতুম বইটির বিকল্প খুব কমই আছে। তন্মধ্যে সমকালীন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটি অন্যনতার নজির সৃষ্টি করেছে পাঠক সমাজে। সমকালীন থেকে প্রকাশিত আর রাহিকুল মাখতুম বইটির বিশেষত্ব- ১. সিরাতগ্রন্থ গুলোর মধ্যে "আর রাহিকুল মাখতুম" বইটি সবেচেয়ে বেশি সংখ্যক পাবলিকেশন থেকে অনুদিত হয়েছে কিন্তু অধিকাংশই গড়পড়তা অনুবাদ করে বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু সমকালীন প্রকাশন ভিন্নতা এনেছে। বইটিকে অনুবাদ নয় বরং রূপান্তর করেছে বলা যায়। বইটি পড়ার সময় কখনোই মনে হবে না যে কোনো আরবি বইয়ের অনুবাদ পড়া হচ্ছে, বরং মনে হবে বইটি বাংলা ভাষাততেই লেখা হয়েছে। ২. অনুবাদ বইগুলোত বানান নিয়ে পাঠকদের বেশ বেগ পোহাতে হয়, বিপাকে পড়তে হয় যখন কঠিন কঠিন শাব্দিক অর্থগুলো পড়া হয়। সেদিক থেকে খুবই ঝরঝরে, সাবলীল, প্রাঞ্জল ভাষায় সাহিত্যমান বজায় রেখে বইটিকে পাঠক উপযোগী করা হয়েছে। আর বিশাল কলেবরের প্রায় ৭০০+ পৃষ্ঠার বইটিতে গুটিকয়েক বানান ভুলও খুঁজে পাইনি। ৩. যুদ্ধের বর্ণণা শেষে পাঠক যখন মনের মাঝে একটি চিত্র দাঁড় করায়, আল্লাহর রাসূল সা. ও তাঁর বাহিনীর ময়দানের অবস্থানের কথা চিন্তা করে তখনই যুদ্ধের ময়দানের একটি মানচিত্র বইয়ের পাতায় খুঁজে পাওয়া যায়। এই মানচিত্রের সংযোজন বইটিকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করে পাঠকদের কাছে। ৪. আরবি কবিতাগুলো অধিকাং ক্ষেত্রেই অনুবাদ করে বইয়ে দিয়ে দেয়া হয়, তাই পাঠকরা তা পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কিন্তু সমকালীন প্রকাশন কাব্যানুবাদ ও সম্পাদনায় যে কাব্যিক মাধুর্যতার পরিচয় দিয়েছে তা প্রশংসনীয়। প্রতিটি কবিতাকে বাংলায় ছন্দবদ্ধ কবিতায় রূপ দিয়েছে এবং অর্থগুলোতে চমৎকার সাদৃশ্যতা বজায় রেখেছে। ৫. সমকালীন প্রকাশন অনুবাদ করার ক্ষেত্রে প্রতিটি তথ্যের নতুন কোনো বিষয়ে আলাদা টীকা ও রেওয়ায়তে ব্যাখ্যামূলক বিশ্লেষণ সংযোজন করেছে যা অন্য কোনো পাবলিকেশনের অনুবাদে দেখা যায় না। ৬. সমকালীন প্রকাশনের বইটি প্রকাশের পেছনে সমকালীনের গ্রাফিক্স টিম ছাড়াও সর্বমোট ১৭ জন সরাসরি পরিশ্রম করেছেন বইটিকে পাঠক উপযোগী করতে। যাদের মধ্যে ভাষাগত বিষয়ে ৪ জন, সম্পাদনায় ৩ জন, শারয়ি নিরীক্ষণে ৪ জন, কাব্যানুবাদ ও সম্পাদনায় ৩ জন এবং বানান ও ভাষারীতিতে ৪ জন কাজ করেছেন। (একজন দুটো বিভাগে কাজ করেছেন)
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ আর রাহিকুল মাখতুম বইটি ‘দ্য সিলড নেক্টার’ বইয়ের অনুবাদ যা সফিউর রহমান মুবারকপুরী রচিত একটি সিরাহ বই। বইটি ১৯৭৯ সালে মক্কায় অনুষ্ঠিত মুহাম্মদের ﷺ জীবনী রচনার বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ কর্তৃক প্রথম পুরস্কার লাভ করে। [গ্রন্থটি অধ্যয়ন করবেন কেন?] ❝ মহানবী (সা.) মানবজাতির ইহকাল ও পরকালের মুক্তির একমাত্র আদর্শ ছিলেন। বর্তমান মুসলিম উম্মাহর যে অবনতি ও অধঃপতন আমরা অবোলকন করছি ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ থেকে শুরু করে অর্থনীতি সময় নীতিসহ সর্বক্ষণ যে বিপর্যয়ের যে চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি তা মূলত আমাদের ঈমানের দুর্বলতা হীনমন্যতা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। তার জন্য আমাদের ইসলাম ও মুসলমানদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস অধ্যয়ন করতে হবে। এ অধ্যয়ন নিছক আত্মা প্রশান্তি লাভের জন্য নয় বরং ইতিহাস হতে শিক্ষা গ্রহণের নিমিত্তেই তারিখ ও সিরাত গ্রন্থাদি অধ্যয়ন করতে হবে। এই বিষয় আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ. রচিত "আর রাহিকুল মাখতুম" অধ্যয়ন করলে বিস্ময়কর ঐতিহাসিক সিরাত এবং তৎপরবর্তী মুসলমানদের উত্থান ও পতনের নির্ভুল আখ্যান করা যাবে। এটি অধ্যয়ন করলে আপনার মনস্পটে প্রকৃত মুসলমানদের নির্মল প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে।❞
Was this review helpful to you?
or
আর রাহীকুল মাখতূম সম্পর্কে বিশ্বের আলেমগণের রিভিউ: - ড. উসমান আল-খামীসকে আর রাহীকুল মাখতূম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “এটি অসাধারণ, সংক্ষিপ্ত, সুন্দর।” ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম বলেন, “এই বইয়ের লেখক পরিশ্রম করে সীরাতের তথ্য সন্নিবেশিত করেছেন”। - ড. মুসতফা আদাবী বলেন, “এর সাহিত্যপূর্ণ বাকশৈলী সুন্দর, বিন্যাস চমৎকার”। - শায়খ শুআইব আলী বলেন, “আর রাহীকুল মাখতূম নির্ভরযোগ্য উৎসগ্রন্থ থেকে লেখা নবীজীবন সম্পর্কে চমৎকার একটি বই।” - শায়খ মুহাম্মাদ বিন হাসান বিন আকীল আশ-শারীফ বলেন, “আর রাহীকুল মাখতূম নবীজীর গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য পূর্ণাঙ্গ রুপে ফুটিয়ে তুলেছে।” - শায়খ মাহমূদ মাল্লাহ বলেন, “মার্জিত বাক্যগঠন ও সহজ শব্দের মিশেলে ধারাবাহিকভাবে সীরাতের ঘটনাগুলো বর্ণনা করায় ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ পড়ে আপনার মনে হবে, আপনি যেন চৌদ্দশ বছর আগের সেই সময়টাতে ফিরে গেছেন, ঘটনাগুলো স্বচক্ষে দেখছেন।” তিনি আরো বলেন, “আর রাহীকুল মাখতূম বর্তমান সময়ে সীরাত বিষয়ক লিখিত শ্রেষ্ঠ বইগুলোর অন্যতম।” # সমকালীন প্রকাশনের অনুবাদের কিছু বৈশিষ্ট্য: - সমকালীন সম্পাদক টীম বইটিতে প্রয়োজনীয় টীকা যোগ করেছে। - প্যারাগ্রাফিং, নাম্বারিং, পেজ সেটআপ সবকিছুই চমৎকার। গোটা বইয়ে অভিন্ন বানানরীতি অনুসরণ করা হয়েছে। যুক্তাক্ষরে প্রতিটি হরফ স্পষ্ট করা হয়েছে। ফলে পড়তে আরাম বোধ হয়। - সীরাতগ্রন্থের সাথে মানানসই মনোরম প্রচ্ছদ। সাবলীল, পাঠকবান্ধব ও সুখপাঠ্য অনুবাদ। অনেক সময় নিরেট শব্দানুগ অনুবাদ পড়তে গিয়ে পাঠক বিড়ম্বনার শিকার হন। সমকালীনের অনুবাদ পাঠককে এমন বিড়ম্বনার থেকে রক্ষা করেছে। - সমকালীন প্রকাশন অনুবাদে সমকালীন ভাষা ও উপস্থাপনরীতি গ্রহণ করায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা পাঠক নির্দ্বিধায় এটি হাতে নিতে পারেন। আরবি মাধ্যমে পড়াশোনা করা সাধারণ পাঠক মূল আরবি ও সমকালীনের অনুবাদ মিলিয়ে দেখে অনুবাদে দক্ষতা অর্জনের অনুশীলন করতে পারেন। - আর রাহীকুল মাখতূমের কিছু অনুবাদে সম্মানিত সাহাবীদের নামের ভুলভাল উচ্চারণ দেয়া হয়েছে। সমকালীনের অনুবাদে সাধারণত সঠিক উচ্চারণ দেয়া হয়েছে। ইতিহাসের মহানায়কদের বিকৃত নাম দেখা ও পড়া খুবই দু:খজনক। সেইসাথে যে কোন ব্যাক্তি, গোত্র ইত্যাদির নাম সঠিকভাবে লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। - একক অনুবাদে ভুল হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। সমকালীনের একটি টীম মিলে এই অনুবাদটি প্রস্তুত করেছে। টীম মেম্বাররা যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছে। ফলে অনুবাদটি বাজারের অন্যান্য অনুবাদের চাইতে বেশি নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হয়েছে। পাঠক ইতিমধ্যেই আস্থার সাথে গ্রহণ করেছেন। প্রকাশনীগুলো গুরুত্বপূর্ণ বই অনুবাদে টীমওয়ার্ক করার কথা ভেবে দেখতে পারে। - মূল আরবিতে ছোট ছোট শিরোণাম দেয়া হছে। সমকালীন অনুবাদক টীম আকর্ষণীয় ভঙিমায় শিরোণামগুলো উপস্থাপন করেছে। সূচি থেকে শিরোণামগুলো পড়লেই ভেতরের গল্প পড়তে ইচ্ছে হবে। বিশেষ করে বদর ও উহুদ যুদ্ধের নানা নাটকীয় মোড় ও বাঁক বদলের শিরোণামগুলো যে কাউকেই টানবে। # সমকালীন প্রকাশনের অনুবাদে কিছু অসংগতি: সবচেয়ে বড় অসংগতি হচ্ছে, লেখক কতৃক পুন:সম্পাদিত ও পরিমার্জিত সংস্করণটি অনুৃবাদ না করে পুরাতন সংস্করণ অনুবাদ করা হয়েছে। অথচ দুই সংস্করণে অনেক ধরণের পার্থক্য আছে। আগের শিরোণামে আমরা মাত্র ১৫টি পয়েন্ট দেখিয়েছি, কিন্তু আরো পার্থক্য আছে। উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য মাহমূদ মাল্লাহ তার বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে দেখিয়েছেন। আগ্রহী পাঠক সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন। নতুন সংস্করণটি অনুবাদ না করায় যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা হল: শ্রদ্ধেয় লেখক যে বাক্য, যে প্রকাশভঙ্গি কিংবা যে উদ্ধৃতি অনুপযুক্ত মনে করে বাদ দিয়েছেন, তা এখনো সমকালীনের অনুবাদে রয়ে গেছে। অনুরুপ লেখক যেসব উদ্ধৃতি, যেসব নতুন তথ্য, গবেষণাকৃত মূল্যবান যেসব আলোচনা প্রয়োজনীয় ও উপকারী মনে করে যোগ করেছেন, তা সমকালীনের অনুবাদে অনুপস্থিত। যেখানে সমকালীন সম্পাদক টীমের দায়িত্ব ছিল পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত নতুন সংস্করণটি সামনে রেখে প্রয়োজনীয় আরো কাজ করা, সেখানে সম্পাদক টীম পরিমার্জিত সংস্করণটিই সামনে রাখেন নি। এটি আফসোসের। আশা করছি, সমকালীনের পরবর্তী সংস্করণে এই অসংগতি দূর করা হবে এবং পাঠক মোবারকপুরীর রেখে যাওয়া আর রাহীকুল মাখতূমের শেষ সংস্করণটি পড়তে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
"বুক রিভিউ প্রতিযোগিতা ২০২৪ সমকালীন প্রকাশন আর রাহিকুল মাখতুম" সমকালীন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত একটি অনন্য সীরাত গ্রন্থ, যা নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী বর্ণনা করে। এটি আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রহ.) রচিত এবং নবীজির জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা অত্যন্ত প্রামাণিকভাবে উপস্থাপন করেছে। কুরআন ও হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে নবীজির জীবনী এবং ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। বইটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে এবং পাঠকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়। সমকালীন প্রকাশন বইটি বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে সীরাত সাহিত্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশনা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ আর রাহিকুল মাখতুম লেখক: শায়খ শফিউর রহমান মোবারকপুরী প্রকাশনা: সমকালীন প্রকাশন "আর রাহিকুল মাখতুম" ইসলামিক সাহিত্যের একটি অমূল্য রচনা, যা মহান নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও শিক্ষা তুলে ধরেছে। লেখক শায়খ শফিউর রহমান মোবারকপুরী বইটিতে নবীজির জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়কে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করেছেন, যা পাঠকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। বইয়ের বিষয়বস্তু বইটি নবীজির জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর নবুওয়াত, ইসলামের প্রচার, এবং মৃত্যুর পরবর্তী ঘটনাবলীকে কেন্দ্র করে গঠিত। প্রতিটি অধ্যায় নবীজির বিভিন্ন দিক এবং তাঁর শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা দেয়। লেখক গভীর মনোযোগ দিয়ে নবীজির চরিত্র, তাঁর নেতৃত্বের গুণ, এবং সমাজে ইসলামের প্রভাব তুলে ধরেছেন। শিক্ষামূলক ও অনুপ্রেরণামূলক "আর রাহিকুল মাখতুম" শুধু একটি জীবনী নয়, বরং এটি নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। লেখক নবীজির দয়া, সহানুভূতি, এবং আত্মত্যাগের ঘটনাগুলোকে বিশ্লেষণ করে পাঠকদের মনে অনুপ্রেরণা জাগাতে সক্ষম হয়েছেন। নবীজির আদর্শ ও শিক্ষা মানবতার জন্য অনুকরণীয় ভাষা ও শৈলী লেখকের ভাষা সহজ ও প্রাঞ্জল, যা সাধারণ পাঠকের জন্য অত্যন্ত বোধগম্য। বইটির গঠনশৈলীও পাঠককে আকৃষ্ট করে, যা গল্পের মতো উপস্থাপন করা হয়েছে। লেখক সুষ্পষ্টভাবে নবীজির জীবনের নানা ঘটনা ও শিক্ষা তুলে ধরেছেন। শেষ কথা "আর রাহিকুল মাখতুম" এক্ষেত্রে একটি মৌলিক রচনা, যা ইসলামের ইতিহাস, নৈতিকতা, এবং মানবতার প্রতি ভালোবাসার শিক্ষা প্রদান করে। এই বইটি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অবশ্যপাঠ্য। এটি পাঠকদেরকে মহান নবীজির জীবন ও তাঁর শিক্ষা সম্পর্কে একটি গভীর উপলব্ধি প্রদান করে, যা একটি শান্তিপূর্ণ ও নৈতিক সমাজ গঠনে সহায়তা করবে। এক কথায়, "আর রাহিকুল মাখতুম" একটি কালজয়ী গ্রন্থ, যা পাঠকদের হৃদয়ে আলোর পথ দেখাবে।
Was this review helpful to you?
or
বাংলা ভাষায় এই বইটির অনুবাদ অনেক সহজ। সমকালীন প্রকাশনীর বইটির অনুবাদের দক্ষতায় দ্রুত পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে বইটি। বইটির অনুবাদের ভাষা খুবই সাবলীল। পাঠক হিসেবে বইটি পড়ে আমি অন্তর থেকে তৃপ্ত হয়েছি। বইটির গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্সগুলোর ব্যাখ্যা ও প্রমাণাদি টিকা আকারে বইয়ের নিচে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে। বইটি পড়ে অতি সহজে পাঠক বিষয়গুলো হৃদয়ে ধারণ করতে পারবে। এই বইটিতে আছে ৭০৪টি পৃষ্ঠা, যা পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ।বইটি প্রত্যেক পাঠকের পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম শাইখ সফিউর রহমান মোবারকপুরী রচিত প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী। বইটি নবীজীর জন্ম, ইসলাম প্রচার, মক্কা ও মদিনার সময়কাল, এবং বিভিন্ন যুদ্ধসহ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি তুলে ধরে। বইটি সমকালীন প্রকাশনা এতো সুন্দর করে অনুবাদ করেছে পাশাপাশি বইয়ের ডিজাইন এবং কোয়ালিটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।এটি সীরাত সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা।
Was this review helpful to you?
or
দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নবি মুহাম্মদ ﷺ এর প্রতি। আর রাহিকুল মাখতুম বইটি ‘দ্য সিলড নেক্টার’ বইয়ের অনুবাদ যা সফিউর রহমান মুবারকপুরী রচিত একটি সিরাহ বই। বইটি ১৯৭৯ সালে মক্কায় অনুষ্ঠিত মুহাম্মদের ﷺ জীবনী রচনার বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ কর্তৃক প্রথম পুরস্কার লাভ করে। বইটির শিরোনামের অর্থ হল "সিলড নেক্টার" (মোহরাঙ্কিত বিশুদ্ধ মদিরা) যা কুরআনের সূরা মুতাফিফিন এর ২৫ নম্বর আয়াতের উল্লেখ। বইটি মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিভিন্ন ভাষায় এই বই অনুবাদ হয়েছে। বাংলা ভাষায় একাধিক প্রকাশনী থেকে আর রাহিকুল মাখতুম নামেই প্রকাশিত হয়েছে। সীরাহ/সিরাত কি? ◾উপক্রমণিকা: 'সিরাহ' অর্থ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনী। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনীর রয়েছে দু'টি দিক; ১. সীরাত ও ২. সুরত। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সীরাত অনুকরণীয় এবং সুরত প্রশংসনীয়। সৃষ্টির নিরপমতা আর চরিত্রে পরিপূর্ণতার এমন এক অনন্য ভূষণে ভূষিত ছিলেন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা মানবীয় কলমের কালি দিয়ে কাগজের পিঠে অঙ্কন করা কোনদিনও সম্ভব নয়। জামাল ও কামালের অনন্য সভায় ভূষিত মানবতায় এ মহান গৌরবময় মহা নায়কের অবস্থা ছিল এই যে মানুষের হৃদয় গুলো তার শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় উচ্ছল তরঙ্গ ধারার মতো বহমান ছিল। নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি যে ধরনীর আমরা কেউ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুরত ধারণ করতে পারব না। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জীবনীগ্রন্থ পড়লে,জানলে এবং শিখলে তাঁর সিরাত অনুকরণ করতে পারব। কারণ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিরাতে রয়েছে আমাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ মানব। সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক, ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন এবং সমরাঙ্গনেও তিনিই উত্তম আদর্শ। ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, ক্ষমাপরায়ণতা বা দানশীলতার মতো যেকোনো উত্তমগুণাবলী অর্জনে রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ উপমা। তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল। সমগ্র মানবজাতির কল্যাণ ও মুক্তির জন্য এই দুনিয়ার বুকে মুহাম্মদ ﷺ এর আগমন ঘটেছে। কিন্তু আফসোস আমরা তাঁর সম্পর্কে খুব কমই জানি। স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোতে দীর্ঘ সময় কেটে যায় কিন্তু ১৪০০ বছর আগে যিনি আমাদের ভালোবেসেছেন, আমাদের দিকভ্রান্ত হওয়ার আশংকায় ভীত হ'য়ে কেঁদেছেন উম্মাতি উম্মাতি বলে, আমরা তাঁকে জানতে, চিনতে চেষ্টা করি না। জীবনের সময়গুলো হেলায় কাটিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কখনও দুদণ্ড বসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ভালবাসায় নিজেকে সিক্ত করতে পারিনি। যেভাবে সাহাবী আজমাইন রাসূলের জন্য নিজের মা বাবা এমনকি নিজের প্রাণকেও উৎসর্গ করেছেন। ❝ফিদাকা আবি ওয়া উম্মি ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)❞ আমরা তা পারিনি। উমর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমার কাছে সব কিছু থেকে প্রিয়, তবে আমার প্রাণ ছাড়া। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘না, হে উমর। ওই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে তোমার প্রাণের চেয়েও প্রিয় না হই। এরপর উমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ, এখন হয়েছে। আল্লাহর শপথ, আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়ে বেশি প্রিয়। তখন নবীজি (সা.) বললেন, হ্যাঁ, উমর। এবার ঠিক আছে। (বুখারি, হাদিস ৬৬৩২) চতুর্থ হিজরিতে রাজি হত্যাযজ্ঞের সময় খুবাইব বিন আদি (রা.) বা জায়েদ বিন দাসিন্নাহ (রা.)-কে বন্দি করা হয়। কুরাইশের কাফিররা তাদের ক্রয় করে হত্যার জন্য নিয়ে যায়। মৃত্যুর আগমুহূর্তে আবু সুফিয়ান জিজ্ঞাসা করে, আল্লাহর শপথ, হে জায়েদ, তুমি কি ভালোবাসো যে মুহাম্মদ এই মুহূর্তে আমাদের মধ্যে তোমার স্থানে থাকবে এবং আমরা তার শিরশ্ছেদ করব? তখন ওই সাহাবি বলেছিলেন, আল্লাহর শপথ, আমি মোটেও ভালোবাসি না যে মুহাম্মদ আমার এই স্থানে থাকবে এবং তিনি কাঁটাবিদ্ধ হয়ে কষ্ট পাবেন আর আমি পরিবার নিয়ে বসে থাকব। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যখন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ প্রতিফলিত হবে তখনই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হবে। রাসূলের আদর্শ অনুসরণের পূর্বে জানতে হবে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনী। কেমন ছিলেন তিনি? কেমন ছিল তাঁর আচরণ পরিবারের সদস্যদের সাথে; স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, চাচা,ভাই-বোন, আত্মীয়দের সাথে, প্রতিবেশির সাথে, সহযোগীদের সাথে, সাহাবী আজমাইনদের সাথে। ◾বই আলোচনা: রাতের আঁধার ব্যতীত যেমন দিনের আলোর গুরুত্ব অনুধাবন করা দুষ্কর তেমনই মক্কায় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের পেছনের হেকমত বুঝতে রাসূলের জন্মপূর্ব আরব সম্পর্কে জানা আবশ্যক। আলোচ্য বইয়ে লেখক সেই কাজটিই গুরুত্বের সাথে করেছেন। আরবের ভৌগোলিক অবস্থান এবং বিভিন্ন গোত্রের আলোচনায় সমগ্র আরবের শাসনব্যবস্থা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মবিশ্বাস, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও চারিত্রিক অবস্থা দৃশ্যমান হয় যে রাসূলের আগমনের পূর্বে সমগ্র আরব নিকষ কালো আঁধারে নিমজ্জিত ছিল। যাকে বলে 'আইয়্যামে জাহিলিয়া'। সেই সময় আল্লাহ পাঠালেন রহমাতুল্লিল আলামিনকে। যিনি কুরআনের আলোয় আলোকিত করেন গোটা আরবকে। প্রথমধাপেই আরবে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের পেছনের উদ্দেশ্য কিছুটা পরিষ্কার রূপে ধরা দেয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর জন্মের পূর্বে বাবাকে এবং শৈশবে মাকে হারান। রাসূলের (স.) বাবা-মা তাঁদের যৌবনের প্রারম্ভেই গত হওয়ার পেছনে সম্ভবত এই হিকমত ছিল যে, যে-সকল শিশুর শৈশবেই পিতা-মাতা বা তাদের কোনো একজন দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন, তাদের জন্য তিনি আদর্শ মানুষে পরিণত হবেন। নবুয়ত-পূর্ব জীবনে রাসূল (স.) অত্যন্ত সাদাসিধা জীবনযাপন করতেন। তিনি ছিলেন আমানতদার,দয়ালু,লজ্জাশীল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিটি বিয়ের পেছনেই ছিল মহৎ উদ্দেশ্য। রূপ সৌন্দর্য অর্থ-সম্পদ বা জৈবিক কামনা তাড়িত হয়ে কোন বিয়েই তিনি করেননি। খাদিজা রা. এর সাথে তাঁর বিয়ে এই বিষয়ের স্পষ্ট প্রমাণ। রাসুল সাঃ এর একাধিক বিয়ের অন্যতম কারণ ছিল ইসলামের প্রচার প্রসারে সহায়তা করা আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল তার স্ত্রীরা তার জীবনচরিত সম্পর্কে বেশি সংখ্যক মানুষকে অবহিত করতে পারবে। এর প্রমাণও আমরা পাব রাসূলের মদীনার জীবনের কয়েকটি ঘটনায়। নবুয়তের পূর্বে এবং পরেও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই সম্পদের পেছনে ছুটেননি। নাস্তিকরা যেভাবে আমাদের পিয়ারা রাসূলের একাধিক বিয়ে এবং বিভিন্ন যুদ্ধের ঘটনায় যুদ্ধের পর সম্পদ লাভের বিষয়ে অশ্লীল কটুক্তিও মিথ্যাচার করে তার কারণ ওরা কখনও আমার রাসূলের জীবনী পড়েনি। যদি পড়তো তাহলে জানতো যে আমার রাসূলের ঘরে দারিদ্র্য ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তিনি কখনোই দুনিয়ার পেছনে ছোটেননি। এমনও হয়েছে পরপর তিন চন্দ্র মাস তাঁর ঘরের উনুনে আগুন জ্বলেনি। বিভিন্ন অভিযানের গণীমত তিনি মক্কা থেকে হিজরতকৃত সাহাবী এবং অভিযানে যোগদানকারী সাহাবী আজমাইনদের মাঝে বন্টন করেছেন। বন্টনের ক্ষেত্রেও তিনি সমতা হকদারিত্ব বজায় রাখতেন। বিরত্ব, সাহসিকতা আর প্রবল বিক্রমে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অতুলনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী তিনি ছিলেন জগতের সবচেয়ে বড় বাহাদুর। জীবনের সবচেয়ে সঙ্গীন আর খতরনাক সমরঙ্গনে যেখানে বড় বড় নামকরা বীর আর সাহসী যোদ্ধাদের পদস্খলন ঘটে। নিজের জীবন বাঁচাতে সহযোদ্ধাদের যুদ্ধের ময়দানে ফেলে পালিয়ে যায় সেখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ দৃঢ়তার সাথে নিজের অধিক যোদ্ধা ও যুদ্ধাস্ত্র সম্বলিত শত্রুদের সাথে লড়েছেন। এইসব তো লেখকের বানানো ঘটনা নয়। এইসব সত্য রাসূলের স. এর জীবন থেকে নেওয়া। লেখক বইয়ে কোনোকিছুই বাদ দেননি। এখানে যেমন রাসূলের (স.) সঠিক সিদ্ধান্ত বা বিচারের কথা বলা হয়েছে তেমনই কঠিন সময়ে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আল্লাহ কর্তৃক ভুল সংশোধনের বার্তা পাঠানোর ঘটনাও উঠে এসেছে। সাধারণ কোনো মানুষের জীবনী লেখার ক্ষেত্রে লেখক কেবল ব্যক্তির ভালো দিকগুলো তুলে ধরেন এবং ভুল বা মন্দ দিকগুলো পাঠকের থেকে আড়াল করে যান। কিন্তু কোনো লেখক যখন সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের রাসূলুল্লাহ ﷺ জীবনী লিখেন তখন কোনোকিছু আড়াল করার কোনো সুযোগ নেই। লেখক বইয়ে যা কিছু লিখেছেন তার স্পষ্ট রেফারেন্স দিয়েছেন তা কুরআনের আয়াত হোক, হাদিসের শুদ্ধতা বা বর্ণনার শুদ্ধতা বিষয়ে হোক। সিরাতের স্পষ্ট এবং দীর্ঘস্থায়ী স্মরণে আলোচনাকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করে উপস্থাপন করাটা বেশ কার্যকরী মনে হয়েছে। ◾অনুবাদ এবং ভাষাশৈলী: যেকোনো অনুবাদ গ্রন্থের ক্ষেত্রে পাঠকের বিবেচনার উর্ধ্বে থাকে সহজ অনুবাদ, শব্দের দুর্বোধ্যতা না থাকা, সহজে অনুধাবন যোগ্য এবং অনুবাদকে সহজ করতে গিয়ে আসল লেখার মানকে বিকৃত না করা। সেক্ষেত্রে সমকালীনের আর রাহিকুল মাখতুম এই কাঠগড়ায় উত্তির্ন। একদম নির্জলা,ঝরঝরে অনুবাদ। ভাষাশৈলীও বোধগম্য এবং হৃদয়ঙ্গম মা শা আল্লাহ। ◾কভার এবং বাইন্ডিং : আমি তিনটি ভিন্ন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম পড়েছি কিন্তু কোনোটারই বাইন্ডিং এতো মজবুত ছিল না। সিরাতের বই হচ্ছে বারবার পড়ার মতো বই। যদি বইয়ের বাইন্ডিং ভালো না হয় সেক্ষেত্রে দেখা যায় বার কয়েক পড়তেই বইয়ের বেহাল দশা। তবে সমকালীনের বইটি মনে হয় দীর্ঘ সময় তার বাহ্যিক লাবণ্য এবং স্থায়ীত্বে টিকে থাকবে ইন শা আল্লাহ। কভারের কথা যদি বলি তাহলে বলতেই হবে যে বাজারের বেশিরভাগ আর রাহিকুল মাখতুম বইয়ে হলুদ রঙটা থাকেই কিন্তু সমকালীনের কাজটা ভিন্ন ধাঁচের হয়েছে। কভার ডিজাইনও দৃষ্টিনন্দন। ◾পাঠ অনুভূতি: বইয়ের আলোচনা, কভার ও বাইন্ডিং এর বিষয়ে বলতে গিয়ে নিজের পাঠানুভূতি অনেকটাই প্রকাশ করেছি। তবুও আলাদা করে না বললেই নয়। পূর্বেই বলেছি সমকালীনের আর রাহিকুল মাখতুম নিয়ে এটা আমার তৃতীয় বই। দুটো বই বার কয়েক পড়ে শেষ করে এটাতে হাত দিয়েছি বিধায় পার্থক্য বুঝতে পারছি। অন্য বইয়ের তুলনায় সমকালীনের আলোচনা আরও সহজ এবং সাবলীল। পড়তে পড়তে একবারও একঘেয়েমি কাজ করেনি যে এই ঘটনাবলী তো আমার জানা। বহমান নদীর মতোই পড়ে যেতে পেরেছি। আর রাহিকুল মাখতুম পড়ে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত নাজিল হওয়ার পেছনের কাহিনি জানা হয়েছে। কোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা হলেই রেফারেন্সের সহায়তা পেয়েছি। দ্বীনের জন্য রাসূলের (স.) আত্মত্যাগ, পরিশ্রম, এতো এ-তো কষ্ট স্বীকার করা আমাকে বারংবার লজ্জিত করেছে। তিনি দুনিয়ার জন্য আমাদের মতো নিজেকে বিক্রী করেননি বরং দ্বীনের দাওয়াতের জন্য নিজেকে,নিজের সবকিছু বিক্রী করেছিলেন। ◾বইটি কেনো পড়বেন: দেখুন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনী জানতে আপনাকে যেকোনো একটি বই বেছে নিতেই হবে। সেক্ষেত্রে একটি ভালো মানের বই আপনার লিস্টে অবশ্যই রাখতে হবে। জীবনে পড়া প্রথম সিরাতগ্রন্থের সাথে আপনার অন্যরকম ভালোবাসা বা ভালোলাগা তৈরি হবে। বছরের পর বছর যাতে বইটি যত্নে রাখতে পারেন সেই জন্য ভালো বাইন্ডিং এবং ভালো মানের বইটি বেছে নিতেই হবে। আর এর সহজ আলোচনা আপনার পড়ার আগ্রহকে বাড়িয়েই যাবে ইনশাআল্লাহ। পূর্বে কোনো সিরাতগ্রন্থ পড়ে থাকলেও নতুন নতুন সিরাতগ্রন্থ সংগ্রহ করা এবং পাঠ করা বন্ধ করবেন না। কারণ একেকটি সিরাতগ্রন্থে একেকরকম অনুভূতি অর্জন হয়। ◾বই পরিচিতি: বই: আর-রাহিকুল মাখতুম লেখক: শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম,রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ রিভিউ: সুমাইয়া বিনতে কাদির রেটিংস: ১০/১০
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম বইটা বিশ্বব্যাপী প্রশংসনীয় একটা সীরাত যার ফলে অন্য ভাষার মতো বাংলা ভাষাতেও অসংখ্য প্রকাশনী বইটা অনুবাদ করে প্রকাশ করেছে। আমার জানামতে প্রায় ত্রিশোর্ধ প্রকাশনী থেকে বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশিত হয়েছে বইটি। এর মধ্যে সমকালীন প্রকাশনী ২০২৩ সালে প্রথম অনুবাদ করে তাদের প্রকাশনী প্রকাশ করে বইটি। এর মধ্যেই এটি পাঠকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন আলেমরাও সমকালীন প্রকাশনীর বইটির প্রশংসা করেছে এর মূল কারণ হলো তাদের অনুবাদের ধরণ। অন্য সকল অনুবাদ থেকে তাদের অনুবাদ তুলনামূলক সহজ, কঠিন শব্দের প্রয়োগও অনেক কম। যার ফলে পড়তে গিয়ে শব্দের অর্থের জন্য আটকাতে হয় না।প্রতিটা অধ্যায়ে শিরোনামসহ আলোচনা যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এছাড়াও তাদের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্সের টিকা আকারে ব্যাখ্যার ধরণ বইটিকে পাঠকের নিকট সহজতর করেছে। সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম বইটার বিশেষ দিক এটি সকল ধরনের পাঠকের পড়ার উপযুক্ত। এছাড়া অনুবাদকগণ বইটিতে অনুবাদের কাঠিন্যতা দূর করে সাহিত্যের রস সঞ্চার করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তাই সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম বইটা সকলর জন্য বেস্ট চয়েজ হতে পারে। বইটা পড়ার সময় মনে হবে না যে কোনো অনুবাদ গ্রন্থ পড়া হচ্ছে, এতোটাই সাবলীল।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ বই: আর রাহিকুল মাখতুম লেখক: শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ প্রকাশনী: সমকালীন প্রকাশন পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৭০৪ প্রচ্ছদ মূল্য: ৮৫০ টাকা অন্ধকারের এক সময়কে আলোর মুখ দেখাতে যার আগমণ হয়েছিল পবিত্র মক্কা নগরীতে, যার জন্মের সময় কেঁপে উঠেছিল পৃথিবীর বড় বড় সিংহাসন, তারকা বাজি স্থান পরিবর্তন করছিল এবং স্বয়ং ইব লিশের আসন ও কেঁপে উঠেছিল সেই মহামানবের নাম হযরত মুহাম্মদ (সা.)। অসভ্যতা আর জাহেলিয়াতের মতো যুগেও তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন পুরো বিশ্বের মানবজাতির জন্য এক নিদর্শন হিসেবে। যার আদর্শে মহিমান্বিত হবার সুযোগ পেয়েছিল একদল নিপীড়িত মানুষ। অশান্তির বদলে শান্তির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সর্বস্তরে। আর সেই হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর জীবনী আমরা কতজন জানি? বর্তমান যুগে তাল মিলিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসে অনেক মুসলিম পরিবারের শিশুরাই এখন নবীজির জীবনী সম্পর্কে জানার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। মোবাইল ইন্টারনেটের সহজলভ্য যুগে যেন নবীজি সম্পর্কে জানার আগ্রহ পোষণ খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেকে পূর্ণাঙ্গ জীবনী পড়ার সাহস পাননা সঠিক বইটি নির্বাচনের অদক্ষতার জন্য। তবে বিশ্বজুড়ে যত জীবনী লেখা হয়েছে তন্মধ্যে শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি লেখা 'আর রাহিকুল মাখতুম' বইটি বেশ জনপ্রিয়। এর কারণ হিসেবে বলা যায় দুটি দিক। প্রথমত. এর লেখনী। মক্কার প্রাথমিক অবস্থা থেকে নবীজির আগমণ থেকে শুরু থেকে বাল্যকাল, যৌবন, কৈশোর সব দিক ই লেখক সমানতালে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। দ্বিতীয়ত. সিরাত প্রতিযোগিতায় 'আর রাহিকুল মাখতুম' বইটি ১১৮২টি পাণ্ডুলিপির মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছিল। যা থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না। নবীজীর জীবনী নিয়ে জানার মধ্যেই আমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত আছে। তার আদর্শ অনুকরণে আমরাও পৌঁছাতে পারব জান্নাতের দ্বারপ্রান্তে। তাই একজন মুসলিম হিসেবে কি আমাদের উচিত না সেই নবীর উম্মত হিসেবে অন্তত পক্ষে একবার হলেও তার জীবনী সম্পর্কে জানা? জানার পর তাকে মনে ধারণ করা? সেক্ষেত্রে এই 'আর রাহিকুল মাখতুম' হতে পারে একটি উত্তম মাধ্যম। ? কাহিনী সংক্ষেপ: 'আর রাহিকুল মাখতুম' মূলত হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী বিষয়ক গ্রন্থ যেখানে লেখক করেছেন প্রতিটি ঘটনার তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা। এই বইতে শুধুমাত্র নবীজীর জীবনের শুরুর অংশ কেই আলোচনায় রাখেননি বরং নবীজীর জন্মের আগে তৎকালীন আরবের ভৌগোলিক অবস্থান, ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক অবস্থানও তুলে ধরেছেন। আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ নামে পরিচিত সে সময়ের বর্ব র তা ছিল বেল বিস্তৃত। এমনি বর্বর ছিল সে জাতি যারা মেয়ে শিশু জন্ম হলে হায় হুতাশ করত এবং তাদের জীবন্ত মাটিতে দাফন করে দিত। হযরত মুহাম্মদ (সা.) ঠিক তেমনি এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্ম নেন ইয়াতিম হয়ে। তার বাবা তার জন্মের আগেই মা রা গেছেন। অসহায় আর দারিদ্রতার মাঝে তিনি এসেছিলেন মুক্তির বার্তা নিয়ে। সেই বার্তাবাহকে এখানে তুলে ধরা হয়েছে সাবলীল ভাষায়। আরবের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে তখনকার সময়ে একেকদল একেকজন জিনিসকে পূজা করত। কেউ গাছ,কেউ বা সূর্য, কেউ বা মাটির তৈরি মূর্তি। মূর্তিপূজার প্রচলনটা অবশ্য ধীরে ধীরে পুরো আরবে ছড়িয়ে পরে। এমনকি পবিত্র কাবাঘরেও রাখা হয়েছিল মূর্তি। কুরাইশ বংশের লোকেরাও তখন মূর্তি পূজারক ছিল। সেই বংশেই জন্ম নেয় আমাদের প্রিয় নবী। বাল্যকাল থেকেই তিনি সত্যবাদী হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করে। আরবের মানুষজন তাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করত।তার কাছে জিনিস আমানতস্বরূপ রাখত। সেই হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখন নব্যুয়েত প্রাপ্ত হন তখন সেই মক্কাবাসীই তাকে পাগ ল বলে আখ্যা দিতে থাকে। আফসোস! বইয়ের এক অধ্যায়ে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নবুয়ত প্রাপ্তির ঘটনাটি বিশদভাবে আলোচনা করেছেন লেখক। ইসলাম ধর্ম প্রচারের সময়ে মানুষের কটু কথা থেকে শুরু করে যাবতীয় লাঞ্ছনা সহ্য করে তিনি লুকিয়ে ইসলামের প্রচার চালিয়ে যেতে থাকেন। ধীরে ধীরে আল্লাহর রহমতে মক্কা ইসলাম ধর্মের প্রসার পেতে থাকে এবং এই গোপনীয়তা থেকে প্রকাশ্যে শুরু হয় প্রচার। কিন্তু তাতেও কুরাইশ বাহিনীর অত্যা চা র বন্ধ থাকেনি। তারপরেও তারা চালিয়ে গেছে তাদের প্রচার। নিজ নিজ থেকে ইসলাম ধর্মকে মনে লালনের জন্য সবরকম অবহেলা ধৈর্য দিয়ে মোকাবেলা করেছেন। এখানে লেখক ধৈর্যের সাথে স্বস্তি আছে এই দিকটাকেই ফুটিয়ে তুলেছেন। এছাড়াও নবীজির বিবাহিত জীবন এবং সন্তান- সন্তনি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। সন্তান শোকের কাতরতা তাকেও স্পর্শ করেছে। এর মাঝে তিনি ভেঙে পড়েননি। তবে পাঠক তার হৃদয়বিয়োগ কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারবে। ইতিহাসের দুই ঐতিহাসিক যু দ্ধ নিয়েও এখানে লেখক বেশ বিষদ আলোচনা করেছেন। প্রতিটি যু দ্ধ হবার কারণ এবং এর ফলাফল নিয়ে অনেকে ভাবতে পারেন হয়ত মুসলিমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল কিন্তু আদৌ তা নয়। দিনশেষে যারা শ হী দ হয়েছেন তাদের জন্য ছিল শান্তির জান্নাত। এছাড়াও মক্কায় থাকা অবস্থায় যখন নবীজীকে বলা হলো তিনি যেন মদিনায় হিযরত করেন তখন তার হৃদয় চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছিল এই শো কে যে তিনি তার মাতৃভূমি থেকে দূর হয়ে যাচ্ছেন। দেশপ্রেমের এক জ্বলন্ত উদাহরণ ছিলেন নবীজি। এই জন্য ই হয়ত বলা হয়, 'দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।' মদিনায় হিযরতের পরের দৃশ্য অবশ্য ভিন্ন। মদিনায় শুরু হয় ইসলাম ধর্মের প্রচার। "হুদায়বিয়ার সন্ধি" নামক চুক্তিতে আবদ্ধ হয় মুসলিম এবং কুরাইশরা। এই চুক্তি মতে সকলে যার যার মতো ধর্ম প্রচারে স্বাধীনতা পাবে এবং ব্যবসা বাণিজ্যের দিক নির্দেশনা দেওয়া হলে ধীরে ধীরে মদিনায় ইসলামের প্রসার বাড়তে থাকে। এর কিছু সময় পরেই শুরু হয় মক্কার পথে যাত্রা। দশ লক্ষ সাহাবী সহ হযরত মোহাম্মদ (সা.) বিনা র ক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। এই মক্কা বিজয় ই ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্মরণীয় ঘটনা। এরপরেই ইসলাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিশ্বের চতুর্দিকে। ইসলামকে শান্তির ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হয় পুরো বিশ্ববাসীর নিকট। গ্রহনযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শেষাংশে এসে লেখক বিদায় হজের সেই শেষ ভাষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরেন। 'আল বিদা' শব্দটির অর্থ কতটা ভারী হতে পারে তা পাঠক এই পর্যায়ে এসে বুঝতে পারবেন বলেই আমার ধারণা। বিদায় হজের পরেই নবীজী ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অসুস্থতা থেকে তিনি হয়ত ফিরে আসতে পারতেন কিন্তু তিনি বেছে তার নেন আল্লাহর সান্নিধ্য। এর ই হাত ধরে তিনি ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে চিরনিদ্রায় শায়িত হন (ই ন্না লি ল্লা হি ও য়া ই ন্না ই লা হি রা জি উ ন)। সেই সাথেই তার সাহাবী এবং পরিজনদের উপর নেমে আসে শো কের চাদর। ?পাঠ প্রতিক্রিয়া: আমার পড়া প্রথম সীরাত ছিল আজ থেকে দশ/বারো বছর আগের। সেটি ছিল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত রূপে। প্রথম পড়ার পর নবীজীর জীবন সম্পর্কে জানার আগ্রহ সেখান থেকেই জন্ম নেয়। স্কুলের পড়াকালীন ইসলাম শিক্ষা ব্ইয়ের পাতায় তখন গল্প খুঁজে বেড়াতাম যদি একটু বিস্তারিত পাওয়া যায়? কিন্তু মিলেনি। তবে সমকালীন প্রকাশনীর মাধ্যমে সেই সুযোগটুকু মিলেছে। উর্দু ভাষায় রচিত একটি ব্ই সবচেয়ে সহজভাবে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করার কৃতিত্ব প্রথমেই দিব। 'আর রাহিকুল মাখতুম' বইটিকে আমি একটি টাইম মেশিনের তুলনা দিলে খুব বেশি ভুল হবে না অবশ্য। একটি সীরাত অথচ এর প্রতিটি ঘটনার সূক্ষ্মতা বজায় রাখার জন্য দিনের পর দিন করা রিসার্চ এবং ঐতিহাসিক সব তথ্যেগুলো সংগ্রহ করে তার উপর আলোকপাত। ব্ইটির গ্রহনযোগ্যতার আরো একটি কারণ এর ঘটনা বর্ণনার ধরণ যা অনুবাদে অপরিবর্তিত হয়ে উঠে এসেছে। এই কারণে এটি সকল বয়সের মানুষের পড়ার জন্য উপযোগী। শিক্ষার কোনো শেষ নেই যারা এই প্রবাদের সাথে একমত তাদের জন্য তো বটেই। হযরত মুহাম্মদ (সা.) জীবনের প্রতি পদে পদে যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছেন এবং তা ধৈর্যের সাথে মোকাবিলাও করেছেন তা আমাদের ক'জনের জানা? ইন্সপাইরেশন খোঁজার যুগে আমরা একজন দূতকে চোখে দেখেও দেখিনা। অথচ তিনি ছিলেন সারা পৃথিবীর জন্য মুক্তির দূত। যার অবদানে মেয়ে শিশুরা সমাজে পেয়েছে নিজেদের জন্য একটি স্থান। মুসলিম সমাজে মেয়েদের জন্মের সংবাদ তার বাবাকে জান্নাতের খবর পৌঁছে দেয় যদি সে তার লালনপালন সঠিক পন্থায় করতে পারে। অন্যায় যু দ্ধ এবং কলহ কখনোই ইসলাম সমর্থন করেনা কিন্তু সেই যু দ্ধ যদি হয় ধর্মের জন্য তাহলে তা নিষিদ্ধ নয়। উহুদ যু দ্ধ বদর যু দ্ধে র মাধ্যমে এর বিশ্লেষণ পরিষ্কার। তবে এখানে আমি দেখেছি হিং স্র তা। আবু জাহেলের করা কর্মকাণ্ড আমাকে শুধু ভাবিয়েছে একজন মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে? এখনকার সময়ে এসে দেখা যায় ছোট ছোট বিষয়েই কলহ,অশান্তির মাঝে অশান্তি। অথচ নবীজীর জীবনে ছিল না প্রাসাদ বাড়ি তাও হযরত খাদিজা (রা.) সবসময় তার সঙ্গে ছিলেন ছায়ার মতো। স্বামী ভক্তি এবং নিষ্ঠা একটি সম্পর্কের ভীত তা কি এখানে থেকে স্পষ্ট নয়? কিন্তু এখনের সময়ে সম্পর্ক গুলো হয়ে গিয়েছে নড়বড়ে। এখানে সুখ নির্ভর করে অর্থের উপর,সম্পদের উপর তাইতো সাংসারিক জীবনে আনন্দ কম। অথচ নবীজীর জীবনী পড়লে দেখা যায় সেসময়ের মানুষদের জীবন ছিল কত সাধারণ তাও সেখানে ছিল তৃপ্তির ঢেকুর। দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া যেমন সহজ ছিল না তেমনি নিজের দ্বীনকে ধরে রাখাও সহজ নয়। কিন্তু একই কাজ যখন দশে মিলে করা হলো তখন মরুর বুকে দেখা গেল এক নতুন সূর্যের। আর একদম শেষে এসে লেখক নবীজীর পারিবারিক জীবন-যাপনের তারিকা বলার চেষ্টা করেছেন সেই সাথে নবীজীর চারিত্রিক বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেই বর্ণনায় একজন উম্মতের কল্পনার চোখে যেন তাকে দেখা সম্ভব। তার আদর্শ যেন বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাওয়া যায় এই কামনাই রইল। ?বইটি কাদের পড়া উচিত: যারা বিস্তর সীরাত পড়তে ভ্রুক্ষেপ করেন তাদের জন্য সংক্ষিপ্ত রূপ এই "আর রাহিকুল মাখতুম" বইটি। বর্তমান সময়ে এসে যারা নামেই শুধু মুসলমান কিন্তু কর্মে নয় তাদের জন্য নিশ্চয়ই ভালো কোনো নিদর্শন মিলবে এই সীরাত থেকে। নবীজীর জীবন কখনোই সোনার পালঙ্কে শুয়ে বসে কাটেনি। তিনি নিধারূণ কষ্ট স্বীকার করেই পৃথিবীতে বসবাস করেছেন। যারা অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠেন, অতৃপ্তির জীবনকে অভি শা প হিসেবে গ্রহন করেন তাদের উচিত এই সীরাত একনজর পড়ে দেখা। নবীজী আল্লাহর কাছে চাইলেই তাকে দেওয়া হতো সুউচ্চ প্রাসাদ কিংবা দালান। অথচ তিনি জীবনকে অতি সাধারণভাবেই অতিবাহিত করার বিষয়ে অটল থেকেছেন। না খেয়েও তিনি বলেছেন আলহামদুলিল্লাহ। আর আমরা এক বেলা না খেতে পেলেই কতটা বিরক্ত হয়ে উঠি। এছাড়াও বইটিতে রয়েছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যা পাঠকের মতাদর্শ পরিবর্তনে সহায়ক বলেই আমার ধারণা। ?অনুবাদ: বইটি যেহেতু অনুবাদগ্রন্থ তাই বাজারে অনেক প্রকাশনীর অনুবাদক কর্তৃত্ব এর অনুবাদ প্রচলিত থাকলেও সমকালীন প্রকাশনীর অনুবাদক টিম আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমানের সমন্বয়ে করা অনুবাদকৃত বইটি বেশ জনপ্রিয়। বোঝার সুবিধার্থে অনুবাদকগণ যথাযথ টীকা এবং বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা যুক্ত করে দিয়েছেন। কবিতাগুলোকে গদ্য রূপান্তরের বদলে কবিতার মর্ম বজায় রেখেই কাব্যিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। সেই সাথে মূল বইয়ের সাথেও প্রতিটি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভাবগত মিল রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। প্রতিটি ঘটনার শুরুর আগে যথাযথ শিরোনামসহ সবদিক দিয়ে বইটি পড়তে গিয়ে তেমন বেগ পেতে হয়নি। ?বানান সম্পাদনা, প্রচ্ছদ এবং অন্যান্য: ৭০৪ পৃষ্ঠার একটি মোটাসোটা বই যা হাতে নিয়ে পড়া বেশ খানিকটা বেগ পেতে হয়েছে। যেহেতু এখানে অনুবাদক একের অধিক তাই বানান ভুল বা ভাষাগত অমিল তেমন চোখে পড়েনি। প্রচ্ছদ নিয়ে বলব হালকা নীল রঙের জন্য বইটিকে দেখলে চোখের শান্তি মনে হয়। এর উপর মোহর খচিত বিশেষ চিহ্নের ব্যবহার। পেছনের দিকে করা হয়েছে ক্যালিওগ্রাফি। যদিও বইটি হাতে নিয়ে পড়তে বেগ পেতে হয়েছে তবে বইটির বাঁধাই বেশ মজবুত এই কারণে পড়তে গিয়ে পৃষ্ঠা খুলে আসেনি। পার্সোনাল রেটিং: ৪.৩/৫
Was this review helpful to you?
or
“আর রাহিকুল মাখতুম” এমনই একটি গ্রন্থ যার মধ্যে উপরোল্লেখিত গুণগুলো বিদ্যমান। এই গ্রন্থটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে লেখক কেবল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের বর্ণনায়ই দেন নি, বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের পূর্বের আরবের প্রেক্ষাপট সম্পর্কেও মোটামুটি একটা আলোচনা টেনেছেন। যা এই সীরাতের বিশেষ একটা দিক। যেমন রাসুল পূর্ব আরবের ভৌগোলিক অবস্থান, আরবের সম্প্রদায়, শাসন ব্যবস্থা, রাজনৈতিক অবস্থা, আরবের প্রচলিত ধর্ম ও মতবাদ, দ্বীনে ইবরাহিমে কুরাইশদের বিদআত ঢুকানো, জাহেলিয়াত সমাজ ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ, সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, মানুষের নীতিনৈতিকতা এই বিষয়গুলোও মোটামুটি আলোচনায় এনেছেন। যা একজন সীরাত ও ইতিহাসপ্রেমীদের খুব আগ্রহের বিষয়। এই গ্রন্থটি লেখক খুব সংক্ষিপ্তও করেন নি, আবার অতি বিস্তারিত লেখেন নি, যদ্দরুন এটা পড়লে পাঠক যেমন একেবারে অতৃপ্ত থাকবে না, তেমনি বিশদ আলোচনার কারণে বিরক্তিও পেয়ে বসবে না।
Was this review helpful to you?
or
The StoryGraph logoমহামহিম আল্লাহর পরম প্রিয় বান্দা যিনি, সমগ্র জগতের জন্য যিনি সাক্ষাৎ রহমত, যাকে কেন্দ্র করে আসমান-জমিনের এতসব আয়োজন, দেড় হাজার বছর আগে না-দেখেও যিনি আমাদের ভালোবেসেছেন, কাতর হয়েছেন আমাদের বেদনায়, না-দেখা সত্ত্বেও আমরা যাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি, যার অনুপম আদর্শকে বুকে ধারণ করে হতে চাই অনন্যসাধারণ-সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মোহরাঙ্কিত সুরভিমাখা জীবনালেখ্য এ বই। ইসলাম নামক চারাগাছটিকে যিনি বিশাল বৃক্ষে রূপান্তরিত করেছেন, যার দাওয়াত ও মেহনতের বদৌলতে এই বৃক্ষ আরবের ঊষর মরুর বুক থেকে ডালপালা ছড়িয়েছে বিশ্বময়, দ্বীনের জন্য তাওহিদের জন্য মানবতার জন্য যিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, মক্কায় হয়েছেন সমাজচ্যুত, তায়েফে হয়েছেন রক্তাক্ত, উহুদে হয়েছেন জর্জরিত, খন্দকে পেটে বেঁধেছেন পাথর-সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসুলের মহিমান্বিত জীবনগাথা আর আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের অনবদ্য শব্দচিত্র এ বই আর রাহীকুল মাখতুম। Search Search all books... Open main menu A review by tamimwn আর রাহীকুল মাখতূম Ar-Raheeq Al-Makhtum by Safiur Rahman Mubarakpuri 4.0 আর রাহীকুল মাখতুম বইটি সারাবিশ্বেই অত্যন্ত প্রশংসীত ও বিখ্যাত। বইটি মূলত হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী বা সিরাত নিয়ে লেখা। নবিজি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী এক বইয়ে উপস্থাপন করা খুবই কঠিন কাজ। লেখক আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারপুরী কে ধন্যবাদ এই কঠিন কাজটি সম্পাদন করে আমাদের সামনে সহজ ও সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য। সত্যি বলতে আর রাহীকুল মাখতুম বইটা নিয়ে এখানে আলাদাভাবে কিছু বলার নেই। মোটামুটি প্রায় সবাই জানেন এই বই সম্পর্কে। অনুবাদ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা যেতে পাবে। আল কোরআন একাডেমী পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বইটির অনুবাদ অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। অনুবাদক নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন সহজ ও সাবলীল ভাষায় বইটি আমাদের সামনে উপস্থাপন করতে। চেষ্টাটা সফল হয়েছে। মহানবি (স) এর জীবনী পড়তে চাইলে 'আর রাহীকুল মাখতূম' বইটি পড়তে পারেন। By using The StoryGraph, you agree to our use of cookies. We use a small number of cookies to provide you with a great experience. Find out more The StoryGraph logo Search Search all books... Open main menu A review by tamimwn আর রাহীকুল মাখতূম Ar-Raheeq Al-Makhtum by Safiur Rahman Mubarakpuri 4.0 আর রাহীকুল মাখতুম বইটি সারাবিশ্বেই অত্যন্ত প্রশংসীত ও বিখ্যাত। বইটি মূলত হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী বা সিরাত নিয়ে লেখা। নবিজি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী এক বইয়ে উপস্থাপন করা খুবই কঠিন কাজ। লেখক আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারপুরী কে ধন্যবাদ এই কঠিন কাজটি সম্পাদন করে আমাদের সামনে সহজ ও সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য। সত্যি বলতে আর রাহীকুল মাখতুম বইটা নিয়ে এখানে আলাদাভাবে কিছু বলার নেই। মোটামুটি প্রায় সবাই জানেন এই বই সম্পর্কে। অনুবাদ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা যেতে পাবে। আল কোরআন একাডেমী পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বইটির অনুবাদ অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। অনুবাদক নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন সহজ ও সাবলীল ভাষায় বইটি আমাদের সামনে উপস্থাপন করতে। চেষ্টাটা সফল হয়েছে। মহানবি (স) এর জীবনী পড়তে চাইলে 'আর রাহীকুল মাখতূম' বইটি পড়তে পারেন। By using The StoryGraph, you agree to our use of cookies. We use a small number of cookies to provide you with a great experience. Find out more The StoryGraph logo Search Search all books... Open main menu A review by tamimwn আর রাহীকুল মাখতূম Ar-Raheeq Al-Makhtum by Safiur Rahman Mubarakpuri 4.0 আর রাহীকুল মাখতুম বইটি সারাবিশ্বেই অত্যন্ত প্রশংসীত ও বিখ্যাত। বইটি মূলত হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী বা সিরাত নিয়ে লেখা। নবিজি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জীবনী এক বইয়ে উপস্থাপন করা খুবই কঠিন কাজ। লেখক আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারপুরী কে ধন্যবাদ এই কঠিন কাজটি সম্পাদন করে আমাদের সামনে সহজ ও সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য। সত্যি বলতে আর রাহীকুল মাখতুম বইটা নিয়ে এখানে আলাদাভাবে কিছু বলার নেই। মোটামুটি প্রায় সবাই জানেন এই বই সম্পর্কে। অনুবাদ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা যেতে পাবে। আল কোরআন একাডেমী পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বইটির অনুবাদ অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। অনুবাদক নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন সহজ ও সাবলীল ভাষায় বইটি আমাদের সামনে উপস্থাপন করতে। চেষ্টাটা সফল হয়েছে। মহানবি (স) এর জীবনী পড়তে চাইলে 'আর রাহীকুল মাখতূম' বইটি পড়তে পারেন। By using The StoryGraph, you agree to our use of cookies. We use a small number of cookies to provide you with a great experience. Find out more মহামহিম আল্লাহর পরম প্রিয় বান্দা যিনি, সমগ্র জগতের জন্য যিনি সাক্ষাৎ রহমত, যাকে কেন্দ্র করে আসমান-জমিনের এতসব আয়োজন, দেড় হাজার বছর আগে না-দেখেও যিনি আমাদের ভালোবেসেছেন, কাতর হয়েছেন আমাদের বেদনায়, না-দেখা সত্ত্বেও আমরা যাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি, যার অনুপম আদর্শকে বুকে ধারণ করে হতে চাই অনন্যসাধারণ-সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মোহরাঙ্কিত সুরভিমাখা জীবনালেখ্য এ বই। ইসলাম নামক চারাগাছটিকে যিনি বিশাল বৃক্ষে রূপান্তরিত করেছেন, যার দাওয়াত ও মেহনতের বদৌলতে এই বৃক্ষ আরবের ঊষর মরুর বুক থেকে ডালপালা ছড়িয়েছে বিশ্বময়, দ্বীনের জন্য তাওহিদের জন্য মানবতার জন্য যিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, মক্কায় হয়েছেন সমাজচ্যুত, তায়েফে হয়েছেন রক্তাক্ত, উহুদে হয়েছেন জর্জরিত, খন্দকে পেটে বেঁধেছেন পাথর-সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসুলের মহিমান্বিত জীবনগাথা আর আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের অনবদ্য শব্দচিত্র এ বই।
Was this review helpful to you?
or
সমকালীন প্রকাশনীর ‘আর রাহিকুল মাখতুম’ বইটি আসলেই অনবদ্য । সাধারণ থেকে শুরু করে সকল শ্রেনীর পাঠকের কাছে অনুবাদের ভাষা যাতে জটিল মনে না হয় সে জন্য সহজ - সাবলীল ভাবে বইটি অনুবাদ করা হয়েছে । বইটি অধ্যায়ভিত্তিক শিরোনাম তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিটি ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে যুক্ত করা হয়েছে দলিল , ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ ।এর আগেও সমকালীনের কয়েকটা বই পড়া হয়েছে । বইয়ের মান সম্পর্কেও মোটামুটি ধারণা আছে । যার কারণে বইটি পড়ার জন্য বিশেষ ভাবে উৎসাহ জুগিয়েছে ।
Was this review helpful to you?
or
আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ আলহামদুলিল্লাহ সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি আমাকে সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহীকুল মাখতুম বইটি পড়ার তৌফিক দিয়েছেন । সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহীকুল মাখতুম বইটিতে রাসুলের জীবনের শুরু থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে । আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে শাইখ শফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ এর আর রাহীকুল মাখতুম গ্রন্থটি । তাই আপনারা যারা রাসূলের জীবনী পড়া শুরু করবেন তারা সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহীকুল মাখতুম বইটি পড়তে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
কেন সমকালীন? ? পরিচয়ে প্রচ্ছদ,,,, যেকোনো বই পড়ার আগে আমরা চোখ দিয়ে যেনো পড়ে নিই। স্বভাবতই চিত্তাকর্ষক একটি প্রচ্ছদ বই এর দিকে আমাদের আকৃষ্ট করে থাকে। ?বেশ মজবুত বাঁধাই,,, আকাঙ্ক্ষিত বই টি কেনার পর যদি ছিঁড়ে বা নষ্ট হয়ে যায়,তবে তা একজন বই প্রেমিক এর জন্য যাতনার বিষয়। ?সহজতায় সূচিপত্র,,, সমকালীন থেকে প্রকাশিত বইটির সূচিপত্র থেকে সহজেই মূল বিষয় সম্পর্কে একটি ধারণা করে ফেলা যায়। ? প্রকাশভঙ্গিমায় সাবলীলতা,,, সহজ সাবলীল প্রকাশভঙ্গি বইটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। ? ভাষায় চলিতরীতি,,,আপনি যদি সাধু ভাষায় অভ্যস্ত না হন তবে সাধু ভাষায় প্রকাশিত বই আপনার কাছে দুর্বোধ্য লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে সমকালীন এর বইটি চলিত ভাষার হওয়ায় বেশ সহজবোধ্য। ?টিকা থেকে টুক করে জ্ঞান অর্জন,,, টিকা গুলো তথ্য আরোহণের জন্য বেশ উপকারী। ?তথ্যসূত্র,,, সূত্র গুলো আমাদের জ্ঞান কে সমৃদ্ধ করে। ?কবিতায় মুগ্ধতা,, কবিতা গুলোর অসাধারণ বঙ্গানুবাদ প্রশংসার দাবিদার ?কাগজের কোয়ালিটি,,কাগজের মান ভালো হওয়ায় একদিকে যেমন সহজে ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না,অন্যদিকে পড়তেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয়।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ সার সংক্ষেপ রিভিউ রিভিউ : সাদিয়া চৌধুরী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের শেষ নবি এবং মানবতার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি মহান রহমত। তিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তার জীবন এবং শিক্ষার মূলনীতি মানুষকে সৎ,ন্যায়পরায়ণ এবং দক্ষতার পথে পরিচালিত করেছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার ধর্ম প্রচার শুরু করলে তিনি সমাজে অবহেলিত গোষ্ঠী, যেমন গরিব, নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন। তিনি মানবতার প্রতি দয়া,সহিষ্ণুতা এবং ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। মানবজাতির জন্য হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আগমন আল্লাহর বিশেষ দান,অনেক বড় অনুগ্রহ এবং স্পষ্টত উপহার। রাসুল (সা.)-এর জীবনী পাঠ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি সভ্য জাতি গড়ার শিক্ষা দেয়। 'আর রাহিকুল মাখতুম' সিরাতগ্রন্থটি প্রতিটি মানুষের পড়া উচিত, কারণ এটি আদর্শ ব্যক্তি ও নেতার পরিচয় প্রদান করে। বাংলা ভাষায় এই বইটির অনুবাদ অনেক প্রকাশনী থেকে দীর্ঘ সময় ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে। সমকালীন প্রকাশনীর বইটির অনুবাদের দক্ষতায় দ্রুত পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে বইটি। বাংলাদেশের বিভিন্ন আলেম ও ইমাম সমকালীন প্রকাশনীর এই বইটির বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন। বইটির অনুবাদের ভাষা খুবই সাবলীল। পাঠক হিসেবে বইটি পড়ে আমি অন্তর থেকে তৃপ্ত হয়েছি। বইটির গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্সগুলোর ব্যাখ্যা ও প্রমাণাদি টিকা আকারে বইয়ের নিচে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে। বইটি পড়ে অতি সহজে পাঠক বিষয়গুলো হৃদয়ে ধারণ করতে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সীরাত পর্যালোচনায়, সীরাতের ঘটনামালা উপস্থাপনায় বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি সত্যিই এক নজিরবিহীন রচনা। আলোচ্য বইটিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবন কাহিনী বিস্তারিত ভাবে আলোচিত হয়েছে। আসুন, আমরা নবীজির জীবনকে জেনে-বুঝে সে অনুসারে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করে গড়ে তুলি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা শায়েখের এই পরিশ্রম, ইখলাসকে কবুল করে নিন ও শায়েখের কবরকে প্রশস্ত করুন এবং রহমত বর্ষন করুন। আমিন
Was this review helpful to you?
or
" আর রাহিকুল মাখতুম" সাধারণ কোন সিরাত গ্রন্থ নয়। লেখক শত শত সিরাত গ্রন্থের যে নির্জাস এনেছেন, আর সমকালীন পাঠকদের মাঝে যে শব্দ চয়নে বাংলাভাষায় দিয়েছে, মনে হলো নতুন কোনো সিরাত পড়েছে। আর ভালো লাগবে না কেন, বইটিতে পৃথিবীর সেরা মানবকে নিয়ে আবেগ ঝড়ানো হয়েছে। বইটি পড়ে মনে হলো আরো আগেই পড়া দরকার ছিলো। কারণ ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ এমনভাবে সংকলন করা হয়েছে যে, সব শ্রেণীর পাঠককেই নিশ্চিতরূপে উপকৃত, উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করবে। অভিনিবেশ সহকারে বইটা অধ্যয়ন করলে, ইসলামকে আতসকাঁচে দেখার অন্তর্চক্ষু তৈরি হয়। বেদনামথিত ঘটনাগুলো পড়লে, বুকের ভেতরে উথলে ওঠা কষ্ট নিমিষেই দূর হয়ে যায়। বিজয়ের ঘটনায় আছে, মন ভালো করার মতো সঞ্জীবনী শক্তি; কোমল হৃদয়কে স্পর্শ করার ক্ষমতা। বাস্তবতা হলো নবিজী সীরাতের একেকটি গ্রন্থের একেক রকম স্বাদ। নবি জীবনের কথা, কখনো অশ্রু বরন করে, কখনো একটু হাসায়, কখনো হাউমাউ করে কাঁদতে বাধ্য করে। বুঝা যায় ইসলামের সূচনায় কেমন ছিলো। দু'জাহানের সরদার কেমন কষ্টে ইসলাম প্রচার করেছেন। স্বগোত্রীয়রা কেমন অত্যাচার নিপীড়নে স্টিমরোলার চালিয়েছিলো। আহা! কেমন ধৈর্য করে সবকিছু হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। হে নবী আপনাকে ভালোবাসী। ফিদাকা আবি ও উম্মি। ছন্নছাড়া, গন্তব্যহীন, গতিহীন জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তুলতে সিরাত চর্চার বিকল্প নেই। বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগানো, সিরাতের এই স্মারক গ্রন্থটি পঠক মহলে খুবই উপকারে আসবে। একঝলকে শেষ নবি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনদর্শন জানতে ও বুঝতে হলে, সমকালীন-এর বহু-বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ সিরাত ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ (মোহরাঙ্কিত সুধাময় জীবন) সবার পাঠ্য হওয়া উচিত এবং মুসলিম-মাত্র সংগ্রহে থাকা অতি জরুরি। বাংলাভাষায় বিশ্লেষণধর্মী ও শিক্ষামূলক পূর্ণাঙ্গ বিশুদ্ধ সিরাতগ্রন্থের প্রকট অভাব ছিলো, অনেকটাই পূরণ করবে আশাবাদী। তাই সবার সংগ্রহ করা দরকার।
Was this review helpful to you?
or
আর-রাহিকুল মাখতুম: রাসূলের ﷺ জীবনের আলোকিত পথচিত্র "আর-রাহিকুল মাখতুম" শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরির রচিত এক কালজয়ী সিরাতগ্রন্থ, যেখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনধারা ও ত্যাগের অনন্যসাধারণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নবিজির ﷺ জীবনের প্রতিটি অধ্যায় শুধু ইতিহাস নয়, বরং আদর্শ জীবন গঠনের নির্দেশনা হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। সমকালীন প্রকাশনীর অনুবাদ সহজবোধ্য এবং গভীর মর্মার্থ বহন করে, যা পাঠককে নবিজির জীবনের সাথে আবেগগতভাবে সংযুক্ত করে তোলে। এই গ্রন্থটি সিরাত সাহিত্যে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অনুসরণের প্রতি হৃদয়ের টান আরও গভীর করে।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ সার সংক্ষেপ রিভিউ আদ্রিতা ইসলাম হযরত মুহাম্মদ (স.) মানবসভ্যতার ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার জীবন ও আদর্শ সত্য,ন্যায় ও আদর্শের প্রতীক হিসেবে মানবতার জন্য এক অতুলনীয় দিশারী হয়ে আছে। "আইয়ামে জাহেলিয়াত" বা অন্ধকার যুগে যখন সমাজের নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের অভাব ছিল, তখন হযরত মুহাম্মদ (স.) আলোর মশাল হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। বইটিতে নবি মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন কাহিনী গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এটি তাঁর জন্ম, শৈশব, নবুয়তের প্রারম্ভ,নবুয়ত পরবর্তী জীবন, মক্কার কুরাইশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, মদিনায় হিজরত,বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং ইসলামের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের বিস্তৃত বিবরণ নিয়ে গঠিত। বইটিতে যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, তৎকালীন মুসলিমদের শত্রুপক্ষের মনোভাব, এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধের মাধ্যমে নবি (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম সম্প্রদায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে, এবং এর পরবর্তী ঘটনা হিসেবে মক্কা বিজয়ের উল্লেখ রয়েছে। মক্কা বিজয়ের পর নবি (সা.) ইসলামকে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। বইটির ভাষা সাবলীল এবং সহজবোধ্য, যা সাধারণ পাঠকের জন্য পড়তে সহজ করে তোলে। এছাড়া বইটির অনুবাদ অত্যন্ত প্রাঞ্জল এবং সাবলীল,যা পাঠকের জন্য সহজবোধ্য এবং গ্রহণযোগ্য। বইটির অনুবাদ পড়ে একবারের জন্যও বিরক্ত লাগেনি। বইটিতে নবির জীবন,সংগ্রাম এবং শিক্ষা চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি পাঠককে তাঁর আদর্শের গভীরতা এবং মানবতার প্রতি তাঁর অবদানের কথা মনে করিয়ে দিবে। মূল বই থেকে বইটির ভাষান্তর করেছেন আবুল হাসানাত কাসিম,রিফাত মাহমুদ,আল-আমিন ফেরদৌস এবং মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান। বইটির সম্পাদনার কাজটি করেছেন আকরাম হোসাইন,নেসার উদ্দিন রুম্মান,যাহিদ আহমাদ। এছাড়াও শারয়ি নিরীক্ষণ,কাব্যানুবাদ ও সম্পাদনা এবং বানান ও ভাসারীতিতে একটি বিশাল টিম মিলে কাজ করে এতো অসাধারণ একটি বই উপহার দিয়েছে। বইটি হাতে নিলে একটা স্মুথ একটা ফিল আসে। বইটির সম্পাদনা অনেক ভালো হয়েছে তাই বইটিতে বানান ভুল চোখে পড়েনি। সমকালীন প্রকাশনীর বইয়ের মান খুবই ভালো এটা পাঠকরা এতোদিনে সবাই জানে,এই বইটির প্রোডাকশনও অতুলনীয় লেগেছে আমার কাছে।
Was this review helpful to you?
or
‘আর রাহীকুল মাখতূম’ শাইখ আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি কর্তৃক রচিত। সৌদি আরবের সরকারী উদ্যোগে রাবেতা আলম আল ইসলামীর পক্ষ থেকে ১৩৯৬ হিজরী সনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন-চরিত বিষয়ক গ্রন্থ রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি সারা বিশ্ব থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকারী ১১৮২জন প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথম পুরস্কার লাভের এক দুর্লভ গৌরব অর্জন করেন। এ গ্রন্থটি সর্বস্তরের মানুষের নিকট অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছে। সকলেই অত্যন্ত প্রশংসা করেছেন গ্রন্থটির। বস্তুত রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তোমাদের মধ্য হতে এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখেরাত দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে। (আল-আহ্যাব :২১) নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার প্রিয় তা, তার সন্তান ও সকল মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই। (সহিহ বুখারী ) মহানবী (সঃ) এর পূর্নাজ্ঞ জীবনী অধ্যয়ন করতে হলে ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ সীরাত গ্রন্থটি হতে পারে শ্রেষ্ঠ বিকল্প। এই সীরাত গ্রন্থে মহানবী (সঃ) এর জন্ম থেকে তাঁর শৈশব এর বেড়ে ওঠা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে বংশ পরিচয়, বিবাহ, দাম্পত্য জীবন, সন্তান-সন্ততি, তাঁর উন্নত চরিত্রের জাঁকজমকপূর্ণ বিবরণ ও অভাবনীয় উজ্জ্বল আর সুন্দর শারীরিক অবয়বের নিখুঁত বর্ননা, নুবুওয়াত লাভের পূর্বকালীন সংক্ষিপ্ত চিত্র, নবুয়ত প্রপ্তি, নবুয়ত পরবর্তী দাওয়াত, ইসরা ও মিরাজ, মক্কায় সংগ্রাম, মদিনায় হিযরত, তৎকালীন আরবের ভৌগোলিক, সামাজিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা, জাহিলিয়াতের বিবর, মাদানী জীবন, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সন্ধি-চুক্তি, সামাজিক ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ এর অনেক অনুবাদ অনেক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। সমকালীন প্রকাশন এর অনুবাদটি বেশ প্রাঞ্জল, সাবলীল ও প্রানবন্ত। যা যেকোন বয়সের পাঠক কে মহানবী (সঃ) এর সীরাত পাঠে আগ্রহী করবে।
Was this review helpful to you?
or
সমকালীন প্রকাশনের আর রাহিকুল মাখতুম খুবই সহজ ও সাবলীল লেগেছে আমার কাছে। বইটিতে রাসূল (সা:) এর আসার আগ থেকে তৎকালীন আরবের অবস্থা কেমন ছিলো, গোত্র পরিচিতি ইত্যাদি থেকে শুরু করে রাসূল (সা:) এর আসার ঘটনা, কিভাবে ইসলামের দাওয়াত দেন তিনি, মদিনা হিজরত, যুদ্ধ অভিযানের ঘটনাগুলো খুবই সহজ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। খুবই চমৎকার অনুবাদ হয়েছে বইটার। সমকালীন টীমকে জাযাকাল্লাহ।
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম শুধুমাত্র নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী নয়, বরং একটি কালজয়ী রচনা যা ইসলাম সম্পর্কে গভীর জ্ঞানার্জন করতে সহায়ক। এর তথ্যসমৃদ্ধতা, প্রাঞ্জল ভাষা এবং লেখকের গবেষণাধর্মী উপস্থাপন পাঠককে মুগ্ধ করে। নবীজির (সা.) জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে শিক্ষা নিয়ে তা বর্তমান জীবনেও প্রয়োগ করা যায়, যা বইটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় নবীজি সা. সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য সিরাতগ্রন্থগুলো হতে পারে আমাদের জন্য উত্তম উৎস। কারণ, সিরাতের বইয়ের পাতায় পাতায় নবীজীবনী খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় লাখো-কোটি সিরাতগ্রন্থ রচিত হয়েছে। এসকল সিরাতগ্রন্থের মধ্যে শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহ. লিখিত 'আর রাহিকুল মাখতুম' উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে। এটা শুধুমাত্র এজন্য নয় যে 'আর রাহিকুল মাখতুম' রাবেতায়ে আলম আল ইসলামি কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিল; বরং এই গ্রন্থের উপস্থাপন ভঙ্গি, তথ্যের সুসমন্বিত বিন্যাস, শক্তিশালী রেফারেন্স একে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সিরাতগ্রন্থ হিসেবে 'আর রাহিকুল মাখতুম' পঠিত হয়ে থাকে। আর বাংলাভাষায় সাম্প্রতিক সময়ে 'আর রাহিকুল মাখতুম' যে বিশেষ আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছে—সে কথা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই বোধকরি। বাংলা ভাষায় 'আর রাহিকুল মাখতুম'-এর ডজনেরও বেশি অনুবাদ দেখা যায়। আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহেও অন্য তিনটি প্রকাশনীর অনুবাদ রয়েছে। আমি সেগুলোও পড়ে দেখেছি। তবে সমকালীন প্রকাশন যে অনুবাদটি আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছে—বাকিগুলো তেমন পাইনি। সত্যি বলতে সমকালীন-এর অনুবাদই আমার কাছে এখন পর্যন্ত সেরা বলে বিবেচিত হয়েছে। সহজ, সুন্দর ও সাবলীল অনুবাদের পাশাপাশি এমনকিছু টীকাটিপ্পনী যুক্ত করা হয়েছে—যাতে বইটি পাঠ করা আরও সহজতর হয়ে উঠেছে। বইটির অনুবাদ ও সম্পাদনার কাজে ১৫ জনেরও অধিক পরিশ্রমী মানুষ তাদের শ্রম ব্যয় করেছেন। ফলে বইটি পাঠকের জন্য আরও বেশি সাবলীল ও সহজবোধ্য হয়ে উঠেছে।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউয়ের উদ্দেশ্যে জনপ্রিয় কিছু অনুবাদ হাতে নিয়ে পর্যালোচনার চেষ্টা করেছি। মেদহীন ঝরঝরে অনুবাদ এবং পাদটীকার আধিক্য সমকালীনের অনুবাদকে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে রেখেছে। কেউ কেউ অনুবাদকে সাবলীল করতে গিয়ে বইয়ের কলেবর বড় করে ফেলেছেন। আবার কেউ করেছে উর্দু আর ইংরেজি থেকে ছায়া অনুবাদ। তবে এক্ষেত্রে সমকালীন প্রকাশন ভারসাম্য করতে পেরেছে। একে তো মূল আরবি থেকে অনুবাদ করেছে, তার উপর আরবি-বাংলায় দক্ষ একজন যোগ্য ব্যক্তিকে দিয়ে পুরো অনুবাদটা আগাগোড়া আরবির সাথে মিলিয়ে যাচাই করানো হয়েছে। . পাশাপাশি বইয়ে উল্লিখিত হাদিসগুলোর সনদ যুক্ত করে দেওয়া। সেই সাথে ফিকহি মাসয়ালা-মাসায়েলও টীকায় দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য টিকা-টিপ্পনী সংযুক্তির মাধ্যমে বইটিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে; যাতে আলোচনার প্রাসঙ্গিকতা বুঝতে বিভিন্ন ভৌগলিক স্থান, ব্যক্তি ও বিষয়ের পরিচয় জানতে পাঠকের সুবিধা হয়। কোনো বিষয়ে আলেমদের ভিন্নমত থাকলে সেগুলো উল্লেখ করে লেখক কোন মতামতকে কেন প্রাধান্য দিয়েছেন তাও টীকায় সংযুক্ত করা আছে—এই কাজগুলো অন্য কোনো অনুবাদে দেখিনি। এতজন বিজ্ঞ আলেমের শরয়ি সম্পাদনা এই অনুবাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সমালোচনার কোনো ফাঁকফোকর খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রচ্ছদ, পৃষ্ঠাসজ্জা আর বাইন্ডিংও প্রশংসাযোগ্য।
Was this review helpful to you?
or
?️ বস্তুত রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তোমাদের মধ্য হতে এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখেরাত দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে। আল-আহ্যাব :২১ নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সকল মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই। ( সহিহ বুখারী ) বইটি নিয়ে সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ বইটি কিন্তু অনুবাদ, অথচ পড়তে গিয়ে সেটা বুঝতে পেরেছি কিনা, তাই বুঝতে পারছিনা। বইটির প্রাণবন্ত অনুবাদ, রসালো বর্ণনা ভঙ্গি, আরবি কবিতামালার বাংলা অর্থের মাঝে পদ্যের মিল, অন্য স্থানগুলোতে গদ্যের অনুপম সাহিত্য সমারোহ, শিরোনাম সমূহের আকর্ষণীয় সৃজনশীলতা, বিস্তারিত তথ্যসূত্র, প্রয়োজনীয় টিকা সংযোজন ইত্যাদির দরুন আমি বইটির প্রতি সম্মোহিত প্রায়। এই সিরাত গ্রন্থের দলিল এবং ব্যখ্যা-বিশ্লেষন সমৃদ্ধ টিকা অন্য বইয়ের মতো পড়ার গতিকে ধীর করার চেয়ে করে তোলে আরো দ্রুতগামী। কেননা, তাতে ফুটে উঠে সিরাত সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রচলিত কথার দালিলিক বিশ্লেষণ সহজ এবং সুন্দরভাবে সাবলীল ভাষায়। যা সাধারণ এবং অসাধারণ সকল সিরাত পাঠকের জন্য বেশ উপকারী এবং হৃদয় প্রশান্তির কারণ। যার ফলে এই গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে অন্য অনেক সিরাত গ্রন্থর চেয়ে অধিক বিশ্বস্ত, মজাদার এবং মূল্যবান। সমকালীনের এই আর রাহিকুল মাখতুমের পাতায় পাতায় আমি যেমনিভাবে পেয়েছি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৃষ্টান্তহীন অসম্ভব সুন্দর জীবনের শিক্ষনীয় সকল ঘটনার হৃদয়কাড়া আলোচনা, তেমনি পেয়েছি সাহিত্যময় গদ্য আর পদ্যের রুচিশীল বর্ণনা শৈলীর অনন্য বহু পাথেয়। আচ্ছা! আপনারা তো আবার বেশ রুচিশীল পাঠক। তাই শুধু ভিতরগত বিষয়ে জেনে কি আর মন নিরব হয়! তাহলে বলে রাখি, চোখ ধাঁধানো কোমল প্রচ্ছদ, মজবুত বাধন, উন্নত পৃষ্ঠা, অনমনীয় কভার, সব মিলিয়ে শুধু অভ্যন্তরীণ বিষয়-আষয় নয় বরং তার সাথে বহিরাগত কারণসমূহও আমাকে যেমন করেছে মুগ্ধ, তেমনি আপনিও যে মুগ্ধ হবেন, তাতে আমি বেশ আশাবাদী। যদিও মানবরুচির ভিন্নতায় আপনার অনুভূতি ভিন্ন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আরেকটা বিষয় ভেবে দেখুন, ৬৯৯ পৃষ্ঠার একটি অনুবাদে যদি ১৫ জনেরও বেশী যোগ্য, দক্ষ, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, কর্মঠ, জ্ঞানী-গুণী, ভাষাবিদ, সাহিত্যাক আর গবেষক ওলামায়ে কেরাম হাত দেয়, তবে অবস্থাটা কি দাঁড়ায়! যার কারণে বইটি হয়ে উঠছে উৎকৃষ্ট সাহিত্য সমৃদ্ধ, উন্নতমানের দালিলিক গ্রন্থ, নির্ভুল বানান সম্পুর্ণ, অতি কোমনভাবে উপস্থাপিত এবং ভাষা সহজ, সরল, সাবলীল ও চয়িত। বইটি অনুবাদ হয়েছে এমন ভঙ্গিমায় যে, পাঠ করার সময় মনে হয়, এটি একটি মৌলিক গ্রন্থ। আর দেয় এমন অনুভূতি, আমি রয়েছে বহু পূর্বের যুগে, সেই নববী যুগের জাজিরাতুল আরবে, ইসলামের শুরু লগ্নের সাক্ষী হয়ে। ফলে সার্বিক বিবেচনায় আমি যদি বলি, বাংলা ভাষায় সাহিত্যকর্ম এবং দলিল ভিত্তিক সিরাত গ্রন্থের ক্ষেত্রে এ এক এমন সংযোজন যার দৃষ্টান্ত হয় না, তবে খুব বেশিই বাড়াবাড়ি হবে না মনে হয়। ? বইটিতে যা রয়েছে ? বইটিতে রয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মপূর্ব আরবের সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় অবস্থান ইত্যাদি সহ মক্কায় বসতি স্থাপনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। যদিও এসব আলোচনা কিছুটা জটিল হয়ে থাকে, কিন্তু এই বইটিতে প্রাঞ্জল শব্দ চয়ন ও প্রয়োগ আর সরল উপস্থাপনার দরুন সেই জটিলতা অনেকটাই দূরীভূত হয়ে সে আলোচনাগুলোও হয়ে উঠেছে বেশ চটকদার। তবে এই বইয়ের মূল প্রাণ হল, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন-চরিত। যা এই বইতে মোটামুটি পূর্ণাঙ্গভাবেই উঠে এসেছে। এতে রয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম, কৈশোর, যৌবন, নবুওয়াত, হিজরত, জিহাদ, মৃত্যু ইত্যাদির পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা এবং তাঁর সামাজিক, রাজনৈতিক, কুটনৈতিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক ইত্যকার সকল জীবন-ঘনিষ্ঠ বিষয়াদির বিবরণ শব্দের অপচয় কিংবা দলিলের অতিশয়োক্তি ছাড়াই পর্যাপ্ততার সাথে। এ ছাড়াও রয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উন্নত চরিত্রের জাঁকজমকপূর্ণ বিবরণ ও আভায়নীয় উজ্জ্বল আর সুন্দর শারীরিক অবয়বের নিখুঁত কীর্তন। যা সাধারণ যে কোন পাঠককে করে আকর্ষিত। পাশাপাশি প্রতিটি বিবরণের সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য টিকাতে রয়েছে উৎসগ্রন্থসমূহের উল্লেখ । যা গবেষকদেরকে বেশ খানিকটা ঝুঁকিয়ে দিয়েছে এই বইটির দিকে। বইটির এমন আরো কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা আলোচনা করেছি উপরে। ?️ এত সব কিছু লেখার পরেও বাকি থেকে গেছে অনেক কিছু। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য ও অন্যতম হলো-মানচিত্রের বিষয়টি। হ্যাঁ মানচিত্র। ইসলামের ইতিহাসের সর্বপ্রথম বৃহত্তর ঈমানদীপ্ত জিহাদ বদর যুদ্ধ, নবী প্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত সম্পূর্ণ, হৃদয়বিদারক কাহিনী সমৃদ্ধ উহুদ যুদ্ধ এবং প্রথম কৌশলগত জিহাদ খন্দক যুদ্ধের স্থানসমূহের মানচিত্র রয়েছে এই বইটিতে এবং সেই মানচিত্রগুলো হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও আঞ্জাম দিয়েছেন বই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গগণ। ফলে মানচিত্র দেখে দেখে মানচিত্রের আগে পরের ঘটনাগুলো বার বার পড়ে পড়ে যদি বোঝার চেষ্টা করা হয়, তবে মানচিত্রগুলো হয়ে ওঠে জীবন্ত। মনে হয় যেন পাঠক স্বয়ং সেখানে উপস্থিত রয়েছে, ইসলামের বিজয়ে হাসছে, কাঁদছে পরাজয়ে, সালমান ফারসির বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে আশ্চর্য হচ্ছে, কনকনে শীতের ভিতর ক্ষুধার তাড়নায় পেটে পাথর বেঁধে খন্দক খননের দৃশ্য দেখছে আর তার দু'চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রুধারা, সাহাবীদের নবীপ্রেম দেখে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে আর ভাবছে, হায়! আমি যদি হতাম অমুক। আর এসবের সময় সে যেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত। এছাড়াও রয়েছে আরো বিভিন্ন মানচিত্র যেগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে ঘটনাগুলো পড়তে মজাই অন্যরকম। যেমন, "হিজরতের সময় মদিনার অধিবাসীদের অবস্থান","নবীজির সময় আরবে বিভিন্ন গোত্রের অবস্থান" ইত্যাদি শিরোনামে উল্লেখিত বিভিন্ন মানচিত্র। ? অবশেষে বইটি থেকে একটি উদ্দীপক কবিতা উল্লেখ করার মাধ্যমে শেষ করেছি আপনাদের সাথে দেওয়া এই আড্ডা ( বুক রিভিউ গল্প)। যা একই সাথে অলংকার সমৃদ্ধ এবং ঈমান জাগানিয়া। তো চলুন একসাথে আবৃত্তি করি - কাফির সম্প্রদায়, ছাড়ো রাসুলের পথ রাসুলের পথেই রয়েছে রহমত। তার কাছে এসেছে পবিত্র কুরআন নিয়মিত তিনি তা করেন পাঠদান। তার প্রতি আমি এনেছি ঈমান তার কাছে পেয়েছি সত্যের জ্ঞান। তার পথে প্রাণ দিলে আছে কল্যাণ প্রাণপণে লড়ে নেব শত্রুর প্রাণ। শূন্যপানে উড়বে খুলি শত্রুদের মারের চোটে যাবে ভুলে বন্ধুদের। উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু তাঁর কবিতা শুনে বলেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা, তুমি নবিজির সামনে পবিত্র হারামের ভেতরে কবিতা পাঠ করছ? নবিজি বলেন, উমার, তাকে বলতে দাও। কারণ, এই কবিতা তিরের চেয়েও দ্রুতগতিতে বিঁধে যাচ্ছে মুশরিকদের গায়ে। রিভিউ : মোল্লা মোহাম্মদ।
Was this review helpful to you?
or
শায়খ সফি-উর-রহমান আল-মুবারকপুরী রচিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী নিয়ে “আর-রাহিকুল মাখতুম” একটি পূর্ণাঙ্গ বিশুদ্ধ প্রামাণ্য গ্রন্থ। যে ব্যক্তি রাসূলের সমগ্র জীবনধারা বিস্তারিতভাবে জানতে চায় সে সহজ ও সাবলীল ভাষায় প্রকাশিত এই বইটি পড়তে পারেন। মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীলতা, বিপদের সময়ে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে বিজয় অর্জন করা যায় সে সর্ম্পকে এবং ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে নবিজী (স:) কতো কষ্টের পরীক্ষা, আত্মত্যাগ এর সম্মুখীন হয়ে সফল হয়েছেন তা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ। সাবলীল ভাষায় লেখা অত্যান্ত চমৎকার একটি কিতাব হচ্ছে, আর রাহীকুল মাখতুম। এবং সমকালীন প্রকাশনীর কাজগুলো খুবই সুনিপুন। সমকালীন টিম বইটিকে আমাদের মাঝে অত্যান্ত সহজ ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছে। যার ফলেএকজন পাঠকের বইটি পড়ার আকর্ষণ আরো দ্বীগুন হয়ে যাবে। তারা প্রয়োজনীয় টিকা, ব্যাখ্যা তথ্যসূত্রও অত্যান্ত চমৎকারভাবে প্রদর্শন করেছে। সব মিলিয়ে আর রাহীকুল মাখতুম বইটি প্রতিটি মুসলিমের পড়া উচিত, নাবী ﷺ এর সীরাহ কিতাব যা বিশ্বে ১ম স্থান অধীকারী, আর সমকালীন টিম এটাকে আরো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছে তাই তাদের গ্রন্থটি আরো অনেক সাবলীল ভাষায় উপস্থাপিত যা সকল পাঠক খুবই সহজে বুঝতে এবং অনুধাবন করতে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ ?বইয়ের নামঃ আর-রাহীকুল মাখতুম ?মূল লেখকঃ আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরী, ?অনুবাদকের নামঃ আবুল হাসানাত কাসিম,রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস,মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান. ?প্রকাশনীর নামঃ সমকালীন প্রকাশন, ?বই নিয়ে আলোচনাঃ আর রাহীকুল মাখতূম একটি সীরাত-গ্রন্থ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত পর্যালোচনায়, সীরাতের ঘটনামালার সুসংহত ও মনোজ্ঞ উপস্থাপনায় গ্রন্থটি সত্যিই এক নজরবিহীন রচনা।আল কুরআনুল কারীম, হাদীসে নববী ও বিশুদ্ধ আছার এবং ঐতিহাসিক বর্ণনার নির্যাস বের করে প্রাজ্ঞ লেখক তাঁর এ বইটি সুবিন্যস্ত করেছেন।সীরাত বিষয়ে লিখিত প্রাচীন গ্রন্থাদি থেকেও তিনি বহু মণিমাণিক্য উপস্থাপন করেছেন যা ত্রুটিরহিত সংক্ষিপ্ততায়, সুখপাঠ্য দীর্ঘ আলোচনায়, অত্যন্ত চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন।বইটিতে আজেবাজে গল্প বর্ণনা করা হয় নি। ৭০৩ পৃষ্ঠার সীরাত বইটি অনেক ডিটেইলস না হলেও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনের জরুরী সব ঘটনাগুলোর একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়। বইটিতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনী তুলে ধরা হয়েছে।এতে সীরাতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধারাবাহিক ক্রমানুসারে লেখা হয়েছে এতে করে সাধারন পাঠকের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে। বইটি শুরু করা হয়েছে আরবের ভৌগলিক অবস্থান এবং বিভিন্ন গোত্র,নবিজির বংশধর ও পরিবার,নবিজির নবুয়ত-পূর্ব জীবন,নবিজির কাঁধে সুমহান দায়িত্ব, প্রথম পর্যায় : ইসলাম প্রচারের সূচনালগ্ন, দ্বিতীয় পর্যায় : মক্কার বুকে প্রকাশ্যে দ্বীনের দাওয়াত,তৃতীয় পর্যায় : মক্কার বাইরে ইসলামের বানী,আল্লাহর আদেশে মদিনায় হিজরত,মদিনার বুকে নবজাগরণ, প্রথম পর্যায় : মদিনার তৎকালীন অবস্থা,দ্বিতীয় পর্যায় ইসলামে নবধারার সূচনা,তৃতীয় পর্যায় দিকে দিকে ইসলামের বিজয়,মক্কাবিজয়ের পরবর্তী অভিযান,বিদায় হজ,প্রিতমের সান্নিধ্যে, প্রিয় নবিজির পরিবার-পরিজন,এবং শেষ করা হয়েছে নবিজির শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং চারিত্রিক গুনাবলি লেখা দিয়ে।উক্ত বইটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বইটিতে হাদীস ও সীরাত কে সুষ্ঠুভাবে দলিল হিসেবে সমন্বয় করেছেন।এতে করে বইটির গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যথারীতি জিহাদী জীবন, সাহাবীদের বদর প্রান্তরের বিজয়, উহুদ যুদ্ধে সাহাবাদের নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্যে যে অপরিসীম ভালোবাসা ও ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন যা পৃথিবী অবাক পানে তাকিয়ে দেখেছিলো,মক্কা বিজয়, বিদায় হজ্জ, এসবকিছুই লেখকের কলমে এক অন্য মাত্রা পেয়েছে।এছাড়াও বইটির প্রতিটা অধ্যায়ে সংক্ষিপ্ত আকারে বিভিন্ন বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে,শেষদিকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনের শেষ কয়টি দিনগুলো তার উম্মাতের জন্য বিশেষ গুরুত্ত্ব বহন করে। লেখক নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মগ্রহন নিয়ে আলোচনা করেন।বইটিতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মতারিখ ৯ই রবিউল আউয়াল বলা হয়েছে এতে দলীল হিসেবে তিনি “রাহমাতুল্লিল আলামিন”খন্ড ১,পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯,লেখক সায়্যেদ সুলাইমান নদবি(রহ.) ও ""মুখতাসারু সিরাতির রাসূল""পৃষ্ঠা ১২,মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল ওয়াহহাব আন-নাজদি এর সিরাত উল্লেখ করেছেন।যদিও আমাদের দেশে বেশি ১২ই রবিউল আউয়ালকে বেশি প্রধান্য দিয়ে থাকে। সর্বশেষে লেখক পাঠকের সামনে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়া সালাম এর পরিচয় ও আখলাকের ব্যাপারে সামান্য আলোকপাত করে তার এই মুল্যবান সিরাতগ্রন্থটি ইতি টেনেছেন। ?লেখক পরিচিত ইসলামি সাহিত্য জগতে সফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ একটি সুপরিচিত নাম। রাবিতাতুল আলামিল ইসলামি কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে তার আর-রাহিকুল মাখতুম গ্রন্থটি। আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে কালজয়ী এই গ্রন্থই তাকে বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি ছিলেন একাধারে হাদিসবেত্তা, সিরাত-বিশেষজ্ঞ ও ইতিহাসবিদ। শিক্ষকতা ও একাডেমিক গবেষণার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবনের সূচনা ঘটে। ইতিহাস ও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিচরণের পাশাপাশি নিজেকে জ্ঞানসাধনায় নিয়োজিত রাখেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় মদিনায় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে (আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়ায়) অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। দীর্ঘ ১০ বছর নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন এখানে। একইসাথে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিরাত-গবেষণার কাজটিও চালিয়ে গেছেন অত্যন্ত নিবিড়ভাবে। তার এই বহুমুখী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ রাবিতাতুল আলামিল ইসলামি তাকে সম্মানিত সদস্যপদে ভূষিত করে। শাইখ সফিউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুন, ভারতের এক প্রত্যন্ত গ্রাম মুবারকপুরে। এখানেই কেটেছে তার শৈশব ও বাল্যকাল। তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেন ফয়জে আম মাদরাসা থেকে। এরপরই শুরু হয় তার কর্মব্যস্ত সুন্দর জীবনের পদযাত্রা। জ্ঞানপিপাসু এই মানুষটি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ২০০৬ সালের পহেলা ডিসেম্বর। আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন। আমিন। ?মহামহিম আল্লাহর পরম প্রিয় বান্দা যিনি, সমগ্র জগতের জন্য যিনি সাক্ষাৎ রহমত, যাকে কেন্দ্র করে আসমান-জমিনের এতসব আয়োজন, দেড় হাজার বছর আগে না-দেখেও যিনি আমাদের ভালোবেসেছেন, কাতর হয়েছেন আমাদের বেদনায়, না-দেখা সত্ত্বেও আমরা যাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি, যার অনুপম আদর্শকে বুকে ধারণ করে হতে চাই অনন্যসাধারণ সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মোহরাঙ্কিত সুরভিমাখা জীবনালেখ্য এ বই। ইসলাম নামক চারাগাছটিকে যিনি বিশাল বৃক্ষে রূপান্তরিত করেছেন, যার দাওয়াত ও মেহনতের বদৌলতে এই বৃক্ষ আরবের ঊষর মরুর বুক থেকে ডালপালা ছড়িয়েছে বিশ্বময়, দ্বীনের জন্য তাওহিদের জন্য মানবতার জন্য যিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, মক্কায় হয়েছেন সমাজচ্যুত, তায়েফে হয়েছেন রক্তাক্ত, উহুদে হয়েছেন জর্জরিত, খন্দকে পেটে বেঁধেছেন পাথর সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসুলের মহিমান্বিত জীবনগাথা আর আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের অনবদ্য শব্দচিত্র এ বই। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আর-রাহীকুল মাখতুম সীরাত থেকে আমাদের সকলকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দিন, কেননা মুসলিম উম্মাহর এই ক্লান্তিলগ্নে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কিরাম যেভাবে ইসলামকে বুঝেছিলেন সেইভাবে ইসলামকে বুঝা ও সেই অনুযায়ী আমল করা বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ণ আর সেই জন্য সীরাতকে পড়া, উপলব্ধি ও আমল করা একান্ত প্রয়োজন। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন! ব্যাক্তিগত রেটিং-- ১০/১০ সমকালীন প্রকাশন সুন্দর জীবনের জন্য!
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম' বইটি শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রহিমাহুল্লাহ রচিত আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কারপ্রাপ্ত জগদ্বিখ্যাত ও বিশুদ্ধ নবিজীবনী। বইটি বেশ কয়েকটি প্রকাশনী থেকে প্রকাশীত হয়েছে। সমকালীন প্রকাশন থেকে খুব সুন্দর, সরল বাক্যবিনাস, ঝরঝরে, সহজবোধ্য, চমৎকার অর্থ শৈলী ও সাবলীল ভাবে বাংলা ভাষায় সাজানো হয়েছে। সকল পাঠকের জন্য কালজয়ী অনবদ্য এই সিরাত গ্রন্থটি বিভিন্ন টিকা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ও তথ্যপুঞ্জীসহ হাদিসের আলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমার জীবনের পড়া শ্রেষ্ঠ সিরাতের বই 'আর রাহিকুল মাখতুম'। বইটি পড়ে নিজের প্রতি মানসিক শক্তি পেয়েছি। আমাদের প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও তার সাহাবিরা কি অমানবিক নির্যাতন, নিপীড়ন ও কটাক্ষের শিকার হয়েছেন। একমাত্র আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য। ধৈর্য্যের কি অপরুপ শিক্ষা দিয়ে গেছেন প্রতিটা দূর্যোগপূর্ণ মুহুর্তে। নবি ও সাহাবিদের জীবন চিত্র এতো নিখুঁত ভাবে তুলে ধরেছেন আমি মনেহয় যেন প্রত্যক্ষ দৃশ্য গুলো দেখছি। কুরাইশদের অত্যাচার আর বিদায় হজের ভাষন আমাকে মর্মাহত করেছে। কান্নায় ঠিক ভাবে পড়তেও পারছিলাম না। নবিজি আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে রবকে ভালোবাসতে হয়। কিভাবে তার নৈকট্য অর্জন করতে হয়।
Was this review helpful to you?
or
সিরাত পাঠের অনুভূতি নিশ্চয়ই চমৎকার হওয়ার কথা। সুন্দর সাবলীল বাংলা পড়তে পড়তে কখনো কখনো মনে হয়েছে আরবের পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছি, বইয়ের পাতাগুলো আমার সাথে কথা বলছে, আমাকে দেখাচ্ছে আরব, আমি নতুন করে নবি মুহাম্মাদকে ﷺ চিনছি। বাংলা ভাষার সহজ-সরল শব্দ বিন্যাসের মিশেলে চমকপ্রদ এক সিরাত গ্রন্থ। পড়তে গিয়ে কখনোসখনো পুনঃপুন নববী যুগে। দেখছি মাদিনাহর নবি যুগ, মাদিনাহর অলিগলি, শুনছি রাসূলের দ্বীনের দাওয়াত, দ্বীন ইসলামের জন্য তাঁর ত্যাগ। দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্ঠায় তাঁর ত্যাগ, অক্লান্ত পরিশ্রম, নিষ্প্রভ দুঃখের প্রতিবিম্ব হৃদয়ে ঝড়ের সৃষ্টি করেছে। রাসূল এবং সাহাবায়ে কেরামগণের ইসলামের জন্য আত্মত্যাগের একেকটা দিন হৃদয়কে বিষাদিত করেছে। শেষের দিকে রাসূলের অসুস্থতা এবং ওফাতের দিনগুলো আমাকে ভীষণ ব্যথিত করেছে, হৃদয়কে করেছে শোকদগ্ধ। যেন আমি রাসূলের অসুস্থতা, তার চলে যাওয়ার সেই অন্তিমসময় দেখেছি আপন চোখে। এছাড়া লেখকের ব্যাপ্ত লেখাকে সহজবোধ্য বাংলা ভাষায় পড়ে সুখপাঠ্য লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
আর-রাহিকুল মাখতুম বই সম্পর্কে: আর-রাহিকুল মাখতুম একটি সিরাতগ্রন্থ। সিরাতগ্রন্থ মানে হচ্ছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনবৃত্তান্ত। তাঁর জন্ম, জন্মের মুহূর্তে পৃথিবীর পরিস্থিতি, আলৌকিক ঘটনা। দুগ্ধপান, শৈশব, বেড়ে ওঠা। কৈশোর, যৌবন, বিয়েশাদি, সংসার। নবুওত, ইসলাম, ইসলামের বিকাশ। যুদ্ধ-সংগ্রাম, ইসলামের বিজয়। তাঁর ওফাত, দেহাবয়ব— অর্থাৎ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ৬৩ বছরের মোহরাঙ্কিত সুরভিমাখা জীবন; জীবনের সকল ঘটনাপ্রবাহের আলোচনা। যুগে যুগে অসংখ্য সিরাতগ্রন্থ রচিত হয়েছে। নানা গ্রন্থে নবিজির মুবারক হায়াতের নানা দিক প্রাধান্য পেয়েছে। কেউ নবিজির রাষ্ট্র পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দিকটি প্রাধান্য দিয়ে গ্রন্থ লিখেছেন। কেউ আবার নবিজির সমর-যুদ্ধ, গাযওয়া-সারিয়া, সেনাকমাণ্ডার, রণকৌশল ইত্যাদি দিক প্রাধান্য দিয়ে গ্রন্থ লিখেছেন। কারো বইয়ে প্রাধান্য পেয়েছে নবিজির আখলাকী ও পারিবারিক জীবন। তবে আর-রাহিকুল মাখতুমে লেখক নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৌলিক জীবনের সবগুলো দিক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। যেখানে জন্ম, বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে নবুওত লাভ, ইসলাম প্রচার, অভিযান, যুদ্ধ-সমর সবগুলো দিক সারসংক্ষেপে সমান গুরুত্ব পেয়েছে। একজন নবিজি মানে একটি ইসলামি সমাজব্যবস্থা, একজন উম্মতের অনুকরণীয় আদর্শ— উম্মত যেন আদর্শ অনুসরণে কোনো দিককে প্রধান্য দিয়ে অন্য দিক সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে না যায়, সে লক্ষ্যে লেখক নবিজীবনের সর্বদিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বইটি পড়ার সময় একজন সাংসারিক নবিজিকে সাদামাটা দেখতে পাই। আবার যখন তিনি রণক্ষেত্রের কমাণ্ডার, তখন তিনি দূরদর্শী। বহু জীবনগ্রন্থ কিংবা আত্মজীবনীতে ব্যক্তিজীবনের নানা দিক অনুল্লেখের অভিযোগ থাকে। তবে আর-রাহিকুল মাখতুমে তা হয়নি। এ বইয়ে স্বচ্ছ ইতিহাসের আলোকে হায়াতে মুহাম্মদীর পুরো অংশ যথাযথ স্থান পেয়েছে। আমি বলব না, লেখক গতানুগতিক সিরাতগ্রন্থের যে ধারা তার বাহিরে গিয়ে নতুন কিছু করেছেন। তবে তিনি যা করেছেন তা হলো, পুরোনো ধারার স্বর্ণের আংটির উপর একটি হিরার মোহর বসিয়েছেন। যা আর-রাহিকুল মাখতুম গ্রন্থটিকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।সমকালীনের আর-রাহিকুল মাখতুম বিশেষত্ব: তাহকিক কিংবা উদ্ধৃতি না থাকলে বই পড়লে অতৃপ্তি রয়ে যায়। বাজারে আর-রাহিকুল মাখতুমের অসংখ্য অনুবাদ থাকলেও সমকালীনের প্রতি আগ্রহ বাড়ে তাদের তাহকিক ও টীকার পর্যালোচনাগুলোর কারণে। জটিল বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা, সংশয় নিরশন, আয়াত-হাদিসের উদ্ধৃতি উল্লেখ— সমকালীনের আর-রাহিকুল মাখতুমকে অন্য প্রকাশনীগুলো থেকে এগিয়ে রাখবে। এ ছাড়া অনুবাদ সহজ ও সাবলীল হওয়ায় শব্দের দুর্বোধ্যতা অনুভব হয়নি। মূল মাকসাদ ছেড়ে শব্দার্থ খোঁজার প্রয়োজন পড়েনি। তাছাড়া সমকালীনের অনুবাদের অঙ্গসজ্জা খুব ঝরঝরে মনে হয়েছে। কোনো হিজিবিজি ভাব নেই। শরয়ী নিরীক্ষণ, ভাষা ও বানানে তো সমকালীন বরাবরই এগিয়ে।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই খুব সহজ ভাষার বইটি যতই পড়ে ততই পড়তে মন চাই যেনো হারিয়ে যায় সেই সোনালি যুগে
Was this review helpful to you?
or
আর রাহীকুল মাখতুম বইটি বিশুদ্ধ নবীজীবনী।সমকালীন প্রকাশনী এর এই বইটিতে নবীজী সাঃ এর জন্মের আগে আরবের অবস্থা এবং জন্মের পরে আরবের অবস্থা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।রাসূলুল্লাহ্ সাঃ ইসলাম নামক একটি ছোট চারাগাছকে বিশাল বৃক্ষে রূপান্তর করার জন্য যে মেহনত ,অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। দ্বীন ইসলাম,তাওহীদ ও মানবতার জন্য যেভাবে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন,নিজ পরিবার দ্বারা লাঞ্ছিত ,মক্কা থেকে সমাজচ্যুত হয়েছেন ,যার পদধূলিতে গুমনাম ইয়াসরীব মদিনায় রূপান্তরিত হয়েছে,ইসলাম প্রতিষ্ঠায় যিনি তায়েফে রক্তাক্ত হয়েছেন,উহুদে জর্জরিত হয়েছেন আর খন্দকে নিজ পেটে পাথর বেঁধেছেন,যিনি তার প্রিয়তম রবের আদেশ পালনে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন সেই প্রিয়তম নবীজী সাঃ এর মহিমান্বিত, আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের একটি চমৎকার চিত্র এই বই।পাতায় পাতায় ঘটনার মোড় আর ঘটনাপ্রবাহে নবীজী সাঃ এর বুদ্ধিমত্তা ও যুদ্ধকৌশল হতে পারে আমাদের জন্যে নতুন অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা।
Was this review helpful to you?
or
সিরাতুর রাসুলের উপর লিখিত গ্রন্থাবলির মাঝে ' আর রাহিকুল মাখতুম' একটি কালজয়ী সাড়াজাগানো গ্রন্থ। বরেণ্য লেখক শাইখ সফিউর রহমান মুবাদরকপুরি রহিমাহুল্লাহ'র জাদুময় ভাষায় বইটিতে উপস্থাপিত হয়েছে নবি-জীবনের সুরভিমাখা ঘটনাপ্রবাহ। লেখকের দারুণ উপস্থাপনার সাথে যুক্ত হয়েছে বিজ্ঞ অনুবাদকের নিপুণ হাতের ছোঁয়া। পটু হাতের ঝরঝরে অনুবাদে নবিচরিতের ঘটনাবলি হয়ে উঠেছে প্রাণপূর্ণ, জীবন্ত। ফলে 'সমকালীন প্রকাশন'র অনুবাদটি জায়গা করে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ পাঠকের হৃদয়-রাজ্যে। সত্যিই অনুবাদটি সহজবোধ্য, প্রাণবন্ত, বেশ সুখপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
আর রাহীকুল মাখতুম বইটি বিশুদ্ধ নবীজীবনী।সমকালীন প্রকাশনী এর এই বইটিতে নবীজী সাঃ এর জন্মের আগে আরবের অবস্থা এবং জন্মের পরে আরবের অবস্থা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।রাসূলুল্লাহ্ সাঃ ইসলাম নামক একটি ছোট চারাগাছকে বিশাল বৃক্ষে রূপান্তর করার জন্য যে মেহনত ,অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। দ্বীন ইসলাম,তাওহীদ ও মানবতার জন্য যেভাবে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন,নিজ পরিবার দ্বারা লাঞ্ছিত ,মক্কা থেকে সমাজচ্যুত হয়েছেন ,যার পদধূলিতে গুমনাম ইয়াসরীব মদিনায় রূপান্তরিত হয়েছে,ইসলাম প্রতিষ্ঠায় যিনি তায়েফে রক্তাক্ত হয়েছেন,উহুদে জর্জরিত হয়েছেন আর খন্দকে নিজ পেটে পাথর বেঁধেছেন,যিনি তার প্রিয়তম রবের আদেশ পালনে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন সেই প্রিয়তম নবীজী সাঃ এর মহিমান্বিত, আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের একটি চমৎকার চিত্র এই বই।পাতায় পাতায় ঘটনার মোড় আর ঘটনাপ্রবাহে নবীজী সাঃ এর বুদ্ধিমত্তা ও যুদ্ধকৌশল হতে পারে আমাদের জন্যে নতুন অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ ? মূল রিভিউয়ের সার সংক্ষেপ লেখক : রুদ্র রহমান অশ্লীলতা ও অসভ্যতার সমাপ্তি ঘটিয়ে মানবজাতিকে পথপ্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় হযরত মুহাম্মদ (সা.) আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছিলেন এই পৃথিবীতে,যিনি মানবতার জন্য একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। 'আর রাহিকুল মাখতুম' হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে একটি গভীর ও সুবিন্যস্ত গ্রন্থ। লেখক শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি ইতিহাস ও তথ্যভাণ্ডার নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন,যা নবীর আবির্ভাব, পরিবার,নবুয়তের প্রথম দিন থেকে শুরু করে ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও বিস্তারের পথ পর্যন্ত বিস্তৃত। বইটি ১৯৭৯ সালে সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। এর লেখনী অত্যন্ত সাবলীল ও রোমাঞ্চকর,যা সব বয়সের পাঠকদের জন্য উপযোগী। বইটিতে নবীর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে,যা মুসলিম উম্মাহর জন্য আলোর দিশারী হয়ে থাকবে। বইটির মাধ্যমে পাঠকরা নবীর আদর্শ অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ হবে এবং ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লাভ করবে। লেখক নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বৈজ্ঞানিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তিতে বইটি রচনা করেছেন,যা এর বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছে। সমগ্র গ্রন্থটি ইসলামের মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষার উপর আলোকপাত করে, যা বর্তমান যুগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বইটির সঠিক সম্পাদনা ও সুন্দর প্রকাশনা এটিকে পাঠকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমকালীন প্রকাশনী থেকে বইটি অনেক সুসংবদ্ধ টিমের প্রয়াসে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ভাষান্তরে ৪ জন,সম্পাদনায় ৩ জন,শারয়ি নিরীক্ষণে ৪ জন এবং বানান ও ভাষারীতিতে ৪ জন মিলে মোট ১৫ জনের তত্বাবধানে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। স্কুলের পাঠ্যবইয়ে নবিজির জীবনী পড়ে তার জীবন সম্পর্কে আসলে তেমন কিছুই জানা সম্ভব না। যুক্তরাষ্ট্রের লেখক মাইকেল এইচ. হার্ট তার 'দ্য হান্ড্রেড: আ র্যাংকিং অভ দ্য মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল পারসনস ইন হিস্ট্রি ' বইতে হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে এক নম্বরে স্থান দিয়েছেন। লেখক দাবি করেন, মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন সর্ব্বোচ্চ সফল ব্যক্তি এবং ইসলামের উন্নয়নে মুহাম্মদ (সা.) এর ভূমিকা অনেক বেশি প্রভাবশালী ছিলো। 'আর রাহিকুল মাখতুম' বইটি ইসলামের ইতিহাস এবং নবি মুহাম্মদ (স.)-এর জীবনের উপর ভিত্তি করে লেখা একটি অসামান্য সীরাত গ্রন্থ। বইটিতে রয়েছে সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার,যা পাঠকদের নবিজির জীবনাদর্শ,মহানুভবতা,শিক্ষণীয় ঘটনা এবং ইসলামের মূলনীতি সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি দিতে সক্ষম। বইটি অধ্যয়ন করলে পাঠক মুসলিম সংস্কৃতি ও ইতিহাসের বিষয়ে জানার সুযোগ পাবে, যা তার ধর্মীয় চেতনা এবং নৈতিক শিক্ষা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এই নব্য জাহেলিয়াতের যুগে এই বইটি পড়া এখন তাই প্রতিটি পাঠকের জন্য অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ বা সারসংক্ষেপঃ সমকালীন প্রকাশনী এতো যত্ন ও সহজ-সরল -সাবলীল শব্দ ও সাহিত্য-রস যুক্তে সমকালীন প্রকাশনী বিস্তারিত যে অনুবাদ করেছেন তার ফলে পাঠক একবারেই হারিয়ে যাবেন ১৪ শত বছর পূর্বের আরবে।প্রতি ঘটনায় কল্পনার জগতে ভেসে উঠবেন। বইটিতে কেবল রাসূলের ﷺ জীবনীই সংকলিত করা হয়নি,বরং ইসলাম-পূর্ব যুগে আরবের প্রাকৃতিক,জাতিগত,রাজনৈতিক, সামাজিক,ধর্মীয় ইত্যাদি অবস্থাও তুলে ধরা হয়েছে।তারপর ক্রমান্বয়ে রাসূলের(স.) বংশধারা,নবুওয়াত লাভ,মাক্কী জীবন,হিজরত, মাদানী জীবন,জিহাদি জীবন,মাক্কা বিজয়, ইন্তেকাল -বর্ণনা,আরও সাহাবীদেরও জীবনের ঘটনা ও আখিরাত তথা জান্নাত জাহান্নামেরও বর্ণনাও উঠে এসেছে বইটিতে। আল্লাহ এই বইয়ের মেহনতের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে কবুল করুক। আমিন। নামঃ আমাঁতুল্লাহ রব্বাতুল বাইত
Was this review helpful to you?
or
সারসংক্ষেপ : আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ ‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৩১) আল্লাহকে ভালোবাসার পূর্ব শর্ত হলো তার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা। যার হৃদয় রাসুল সাঃ এর ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত করতে পারল না তার হৃদয় ভালোবাসার পূর্ণ তৃপ্তি কখনোই উপলব্ধি করতে পারল না। রাসুল (স) কে ভালোবেসে তার আদর্শকে লালন করার মধ্য দিয়েই মুমিনের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ করা সম্ভব। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তার জীবনাদর্শ জানতে ও উপলব্ধি করতে "আর রাহীকুল মাখতুম "হলো এমন একটি সিরাত গ্রন্থ যা প্রতিটি মুমিনকে রাসূল (স)এর জীবনাদর্শ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দিতে সক্ষম। সমকালীন প্রকাশন রচিত "আর রহিকুল মাখতুম "গ্রন্থটির সহজ সাবলীল শব্দ চয়ন ও পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা পাঠক হৃদয়কে সেই ১৪০০ বছর পূর্বের ঘটনার স্মৃতিচারণে সহায়ক হবে। মোহরাঙ্কিত সুরভীমাখা নবী জীবনের এ গ্রন্থ উপলব্ধি করাবে মরুর বুকে রহমত রূপে আগত এক মহামানবের কালজয়ী কর্মকান্ড কিভাবে নিশক কালো আঁধারে নিমজ্জিত জাতিকে আলোর দিশায় ফিরিয়ে এনেছেন। পাঠক হিসেবে বইটির রচনাশৈলী এবং পর্যায়ক্রমিক ঘটনার ধারাবাহিক বিশ্লেষণ ও কাব্যিক কবিতা সিরাত পড়ার আগ্রহকে বহু গুণে বাড়িয়ে তুলেছে।
Was this review helpful to you?
or
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী নিয়ে বহুল আলোচিত এবং পুরো বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সিরাত গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় ১১৮২ টি বইয়ের মধ্যে প্রথম পুরস্কারপ্রাপ্ত একটি গ্রন্থ হলো "আর-রাহিকুল মাখতুম"। এটি একটি বিশুদ্ধ নবীজীবনীর পান্ডলিপি। মূলত এই বইটিতে নবী (সাঃ) এর জন্মপূর্ববর্তী সময়কাল থেকে শুরু করে তাঁর ইন্তেকাল সময়কালসহ পুরো জীবনাদর্শের হৃদয়স্পর্শী সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায়। নবী (সা.)-এর জন্ম, শৈশব, কৈশোর,নবুয়তের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী ঘটনা, মক্কার কুরাইশদের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রাম, মদিনায় হিজরত এবং ইসলামের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের বিস্তৃত বিবরণ চমৎকার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই বইটিতে। বইটি মূলত আরবী ভাষায় রচিত।সমকালীন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত "আর রাহিকুল মাখতুম" বইটি অত্যন্ত চমৎকার,সহজ সাবলীল ভাষাশৈলির মাধ্যমে এবং কাব্যিক ছন্দে ভাষান্তর করা হয়েছে। যা একজন পাঠককে গভীরভাবে বইয়ে মনোনিবেশ করতে সহায়তা করে। যেহেতু ছন্নছাড়া, গন্তব্যহীন, গতিহীন জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তুলতে সিরাত চর্চার বিকল্প নেই, তাই লেখক খুব সচেতন ভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন এবং যুক্ত করেছেন প্রয়োজনীয় টীকা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং তথ্যসূত্র।প্রামান্য দলিলের উপর ভিত্তি করেই বইটি রচিত। নবী (সাঃ)এর মহিমানিত্ব জীবনগাঁথা, আনন্দমধুর এবং বেদনাবিধুর ঘটনা প্রবাহের অনবদ্য শব্দচিত্র এই বই। নবী জীবনের আনন্দমধুর ঘটনা যেমন ঠোঁটের কোণে একচিলতে হাসি ফোঁটায় তেমনি হৃদয়বিদারক ঘটনাগুলো পাঠক হৃদয়কে আহত করে। এই গ্রন্থটি শুধু মুসলিম পাঠকদের জন্য নয়, যেকোনো ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের মানুষের জন্যেও শিক্ষণীয়। মহান আল্লাহ তা'য়ালা -মুহাম্মদ (সাঃ)কে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য রহমাত হিসেবে প্রেরণ করেছেন।নবীর আদর্শে একজন মানুষকে আদর্শ মানুষে পরিণত করার জন্য নবী জীবনীর এই বইটি যথেষ্ট শক্তিশালী। নবীর অনুসরণ ছাড়া কোন মানুষ খাঁটি মুমিন হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে না এবং আল্লাহর ভালোবাসাও পেতে পারে না । কুরআনে বর্ণিত আছে-"(হে নবী) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাও তা হলে আমার অনুসরণ করো। আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের জন্য তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ তিনি তো পরম দয়ালু ও বড় ক্ষমাশীল।" (সুরা আলে ইমরান : ৩১)। রাসুল (সা.) হলেন সৃষ্টির সেরা মানব,যা নিরপেক্ষ ঐতিহাসিকরাও অকপটে স্বীকার করেছেন যে মুহাম্মাদ (সা.) সর্ব কালের, সর্ব যুগের শ্রেষ্ঠ মহামানব। দুনিয়াতে যারা তাঁর দেখানো পথে চলবে, পরকালে তারাই জান্নাতে যাবে। তারাই জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। আমরা তাঁর উম্মত বা অনুসারী দল। তাই নবীর জীবনাদর্শ প্রতিটি মানুষের জানা উচিত । আর এই সম্পর্কে বিশুদ্ধ ভাবে জানতে "আর রাহিকুল মাখতুম" বইটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে । (ছবি-সংগ্রহী এবং রিভিউএ-রাফেয়া বসরী রুপা)
Was this review helpful to you?
or
রাসুল ﷺ এর পুরো জীবন থেকে আমাদেরকে যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন সেটা যদি আমরা মেনে চলতে পারি তাহলে আমাদের জন্য অবশ্যই জান্নাত রয়েছে। রাসুলের পুরো জীবনই আমাদের জন্য আদর্শ। যে আদর্শ মেনে চললে পুরো জীবনই বদলে যাবে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমাদের নবী ﷺ কত কিছুই না ত্যাগ করেছেন। তিনি দ্বীন প্রচারের কাজে কত নির্যাতন-নিপীড়ন এর মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি সব করেছেন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার উম্মতের জন্য। আমাদের উচিত রাসূল ﷺ কে অনুসরণ করা। তিনি আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। ★ কেন আমরা সমকালীন টিম এর "আর রাহিকুল মাখতুম" বইটা পড়বো ★ সমকালীন টিম আমাদের জন্য এমন এক সুন্দর করে বইটা উপস্থাপন করেছেন যার প্রত্যেকটা লেখা সুন্দর ও অতুলনীয়, সহজ ও সাবলীল ভাষায় প্রকাশ করেছেন এবং বাদ যায়নি প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, টীকা ও তথ্যসূত্র। এটাই আমার জীবনের কেনা প্রথম সিরাত গ্রন্থ! নতুন করে পথ চলা হোক আর রাহিকুল মাখতুম সিরাতের সাথে ইংশাআল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
নবীজি সা এর সীরাত গ্রন্থের মধ্যে আর রাহিকুল মাখতুম এক কালজয়ী গ্রন্থ। বিশ্বাস ও মূল্যবোধের বাতিঘর ছিলেন হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি ছিলেন দয়ালু, মহানুভব, ধৈর্য্যশীল,ক্ষমার অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর সম্পর্কে যতোই গুন গাই তবুও কম হয়ে যাবে।তাঁর সীরাত পাঠের মাধ্যমে ঈমানের প্রদীপ জ্বলে উঠবে যা কুফর ও শিরকের অন্ধকারকে দূরীভূত করবে। বদলে দিবে জীবনের রূপরেখা ও গতিপথ। আর রাহীকুল মাখতুম সীরাতটি পড়ার পর বারংবার নতুন করে প্রেমে পড়েছি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি । সীরাতটি পড়ার সময় তাঁর প্রতিটি যুদ্ধ, অভিযান, হিজরত ও সাহাবাদের পরামর্শ যেন কল্পনায় স্বচক্ষে অবলোকন করেছি। জানতে পেরেছি নতুন কয়েকটি বিষয় তন্মধ্যে একটি তাঁর প্রথম দুধমা সুওয়াইবার কথা। সমকালীন মানেই এক অনবদ্য সৃষ্টি। সমকালীন প্রতিটি বইয়ের ভাষা যেমন সহজ, সুন্দর ও সাবলীল। ঠিক তেমনি এই সীরাতটির অনুবাদের ভাষা অতি সহজ,সরল, সাবলীল ও মাধুর্যপূর্ণ। যে কেউ পড়লে এর রূপ রস আস্বাদন করতে পারবে খুব সহজেই। প্রত্যেকের সীরাতটি একবার হলেও পড়া উচিত।সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জানা উচিত। সমকালীন প্রকাশন সুন্দর জীবনের জন্য
Was this review helpful to you?
or
আমাদের প্রাণের চেয়েও প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পুরো জীবনি যদি মোটামুটিভাবে পড়তে চান তাহলে ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ বইটি আপনার-ই জন্য। বইটিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্মের পূর্ববর্তী কিছু সময় থেকে শুরু করে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত আলোচনা করা হয়েছে। সেইসাথে মৃত্যুপরবর্তী কিছু বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। বইটির প্রথম দিকের পড়াগুলো অর্থাৎ ‘আরবের তৎকালীন অবস্থা’ পড়তে একটু কষ্ট হতে পারে, তবে পড়তে পারলে উত্তম। আর যদি না পড়তে চান তাহলেও চলবে। আর এই বইটির বাংলা অনুবাদের ক্ষেত্রে সমকালীন প্রকাশনের অনুবাদটি সাজেস্ট করছি। কেননা, তারা প্রকাশনী হিসেবে বেশ ভালো, তাদের কাজও ভালো; যা ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ বইটিতেও খুব করে প্রতিফলিত হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীতে সিরার উপর সবচেয়ে প্রসিদ্ধ এবং বিখ্যাত গ্রন্থ আর রাহিকুল মাখতুমকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল ভাষায় আমাদের সামনে নিয়ে আসছে ' সমকালীন প্রকাশন '। ইমাম যুহরী রাহিমাহুল্লাহ তিনি বলতেন, ইলমুল মাগাজি ওয়াস সরায়া ইলমুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ। অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিরাহ এর মধ্যে রয়েছে দুনিয়া আখিরাতের জ্ঞান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আপন নাতি হোসাইন (রা:) ছেলে আলী ইবনে হুসাইন যাকে গোটা পৃথিবীতে জয়নুল আবেদীন নামে জানে। তিনি বলতেন, আমাদেরকে যেমনিভাবে কোরআনের সূরা শেখানো হতো তেমনি ভাবে রাসূলের মাগাজী ( তার সিরাহ্) রাসূলের জীবনী আমাদেরকে পড়ানো হতো। জীবনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইসলাম তো রয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনীর মধ্যে। কোরআন তাঁর উপর নাযিল হয়েছে। ফলে কোরআন বুঝতে হলে সিরাহ জানতে হবে। ইসলাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনীর উপর ভিত্তি করে আবর্তিত হয়েছে। কারণ, তিনি যা করেছেন তাই সুন্নাহ্, তিনি যা করেছেন তাই সিরাহ্ এবং তিনি আমাদেরকে যে কথা নির্দেশনা প্রদান করেছেন তাই শরীয়া। ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনীর মধ্যেই আপনাকে দ্বীন বুঝতে হবে, কোরআন বুঝতে হবে, হাদীস বুঝতে হবে এবং আমলের কথা তাও কিন্তু সিরাহ্ থেকে নিতে হবে। এ কারণে উলামায়ে কেরাম বলতেন, সিরাহ্ জানা, স্টাডি করা আমাদের জন্য ফরজ। পৃথিবীতে সিরাহ্ এর উপর সবচেয়ে প্রসিদ্ধ এবং বিখ্যাত গ্রন্থ আর রাহীকুল মাখতুমকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল ভাষায় নিয়ে এসেছে আমাদের সবার প্রিয় প্রকাশনী ' সমকালীন প্রকাশন ' । নিজে নিজে জানুন অন্যকে জানান উৎসাহ উদ্দীপনা দিন।
Was this review helpful to you?
or
খুবই অসাধারণ একটা বই! জীবনে একবার হলেও পড়া উচিত ❤️
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ এক সময় ইসলামিক বই দেখলেই নিরীহ নিরীহ বই মনে হতো। একটা প্রকাশনী এই ক্ষেত্রে বিপ্লব নিয়ে আসে। এরপর আরো কিছু প্রকাশনী আসে এদের সাথে যুক্ত হয়। আমরা পাই ইসলামি জ্ঞানের মানসম্পন্ন অনেক অনেক বই। সমকালীন এমনই এক বিপ্লবী প্রকাশন। আমাদের অনেক অনেক ভালো বই উপহার দিক। আমাদের ইসলামি জ্ঞান অর্জনে অবদান রাখুক। আমিন।
Was this review helpful to you?
or
'আর রাহিকুল মাখতুম'- আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত জগদ্বিখ্যাত ও বিশুদ্ধ নবি জীবনী। শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রচিত এক কালজয়ী সিরাত গ্রন্থ। বহু ভাষায় অগণিত বার অনূদিত হওয়া সত্ত্বেও আজ অবধি এ গ্রন্থটির আবেদন এতটুকু কমে যায়নি; বরং পাঠকদের মাঝে দিনকে দিন এর চাহিদা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। আক্ষরিক অর্থে সিরাহ মানে 'ভ্রমণ'। 'আর রাহিকুল মাখতুম' সিরাত গ্রন্থের মাধ্যমে আমরা এমন এক মহানায়কের জীবনযাত্রায় ভ্রমণ করতে পারবো, যিনি বিশ্বব্যবস্থার গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন। মাত্র ৬৩ বছরের এই ভ্রমণকাহিনি পড়লে আমরা ঠিক বুঝতে পারব, কী করে জাহিলিয়াতের আঁধার কেটে টুকরো টুকরো করে এক পরিবর্তিত তারা-ঝলমল স্বপ্নের সমাজ গড়ে তুলতে হয়। এই ভ্রমণে কোটি কোটি বনি আদম একদমই ক্লান্ত হবেন না; বরং এক নতুন ভোর নির্মাণের স্বপ্নে দুর্বার ছুটে চলার রসদ পাবেন। শত চ্যালেঞ্জ, বাঁধা-বিপত্তি মাড়িয়ে মক্কা বিজয়ের স্মৃতি মানসপটে যতনে রেখে কোটি কোটি মুসাফির আবার একবার আরাফাতের মাঠে দাঁড়িয়ে ভাষণ শোনার অপেক্ষা করবে। সিরাতগ্রন্থ উম্মতে মুহাম্মাদিকে কেবল বসে বসে অশ্রু ফেলতে শেখায় না; মুহাম্মাদি সমাজব্যবস্থা নির্মাণের নেশায় বুঁদ করে ছাড়ে। সমকালীন প্রকাশন- থেকে বাংলা অনুবাদটি প্রকাশের পূর্বেই আমার পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার একজন হুজুরের কাছ থেকে এই বইটির অন্য এক প্রকাশনীর একটি অনুবাদ হাতে পাই যদিও তখন পুরো অনুবাদটি পড়ার সময় করে উঠতে পারিনি। তবে বইটি সম্পূর্ণ পড়ে ফেলার প্রতি প্রবল আগ্রহবোধ জন্মায়। যাইহোক, বইটি পড়ে শেষ করতে না পারলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হুজুরকে বইটি ফেরত দিয়ে দিই। উনি মূলত দাওয়াহ’র অংশ হিসেবে বইটি আরও কয়েকজনকে পড়তে দিতে চাচ্ছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন না এমন একটি বই অযথাই পড়ে থাকুক। এরপর পেরিয়ে যায় প্রায় এক বছর। বেশ কিছু জায়গা থেকে বইটি কিনতে চেয়েও কেনা হয়নি। তার পিছে অবশ্য কারণ আছে- নিম্নমানের পেইজ কোয়ালিটি, অনুবাদের ভাষা যথেষ্ট প্রাঞ্জল না হওয়া, পরিপূর্ণ তথ্যসূত্র উল্লেখ না থাকা ইত্যাদি। এরই মধ্যে একদিন সমকালীন প্রকাশন- এর ফেইসবুক পেইজে বইটি নিয়ে প্রি-অর্ডারের ঘোষণা আসলো। সমকালীনের কাজের প্রতি আগে থেকেই একটা ভালো লাগা, ভালোবাসা, এবং আস্থা ছিল। উনাদের প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হওয়া প্রচুর বই পড়া হয়েছে, সেই সুবাদে উনাদের কাজের উচ্চ মান সম্পর্কে আগে থেকেই সু-ধারণা ছিল। তাই একটি অনলাইন বুক সেলিং প্ল্যাটফর্ম থেকে হোম ডেলিভারি সার্ভিসে বইটি নিয়ে নিই। সমকালীন প্রকাশন- এর অনুবাদটি সত্যিই অনবদ্য! অনুবাদের ভাষা যেমন সাবলীল, ঝরঝরে ও প্রাণবন্ত; তেমনি রয়েছে প্রয়োজনীয় টীকা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, এবং তথ্যসূত্র। অনুবাদকে ঝরঝরে ও মেদহীন করতে গিয়ে মূল আরবি থেকে সরে যায়নি সমকালীন টিম। বরং লেখকের ভাব ও ভাষার পুরোটা তুলে আনার চেষ্টা করেছেন তারা। প্রতিটি ঘটনার বিবরণ ও বিস্তারণে লেখক তার জাদুময় ভাষায় সময় ও কাহিনির যে ঘোরলাগা পরম্পরা দেখিয়েছেন তার সবটাই অত্যন্ত সচেতনতার সাথে বাংলা ভাষায় রুপান্তর করেছেন সমকালীন টিম। এবার আসি বই প্রসঙ্গে- রাসূলে আরাবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র জীবন ইতিহাস এমন এক মহামূল্যবান রত্ন, যা চিরকাল মানুষের জন্য শিক্ষার উৎস এবং আলোর পথ দেখিয়ে এসেছে। সেই মহামূল্যবান জীবনের ওপর লেখা সবচেয়ে বিখ্যাত এবং প্রামাণ্য গ্রন্থগুলোর একটি হল 'আর রাহিকুল মাখতুম'। এই গ্রন্থটি অসাধারণ পাণ্ডিত্য এবং গভীর গবেষণার ফসল, যা ইসলামী বিশ্বে অমূল্য এক সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। এর লেখক শাইখ সফিউর রহমান মোবারকপুরি নিজের হৃদয় ও আত্মাকে মিশিয়ে, অশেষ প্রেম ও শ্রদ্ধার সাথে মহানবী (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়কে এমনভাবে তুলে ধরেছেন, যেন তা পাঠকের হৃদয়ে এক নিবিড় আবেগের ঢেউ তোলে। 'আর রাহিকুল মাখতুম' শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক দলিল নয়; এটি হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে উৎসারিত এক প্রেমের নিবেদন। লেখক এ গ্রন্থে নবীজীর (সা.) জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি কর্ম এবং প্রতিটি সিদ্ধান্তকে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন, যেন তা পাঠককে সরাসরি সেই যুগে নিয়ে যায়। তিনি ইতিহাসের নিরপেক্ষতা বজায় রেখেও, নবীজীর প্রতি গভীর প্রেম এবং শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে কখনও কার্পণ্য করেননি। এই বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন আবেগময় ভালবাসার এক অলংকরণ। নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী পড়তে গেলে প্রথমেই আমাদের আরবের তৎকালীন অবস্থা বুঝতে হবে। লেখক অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নবুয়তের পূর্ববর্তী আরবের চিত্র অঙ্কন করেছেন, যেখানে সামাজিক অবক্ষয়, ধর্মীয় ভ্রান্তি এবং অনৈতিক কার্যকলাপ সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই অন্ধকারময় সময়ে আল্লাহর প্রেরিত নবীজী (সা.)-এর আগমন এক পরম আশীর্বাদ ছিল। লেখক সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন কীভাবে নবীজীর আগমন মানবজাতির জন্য আলোর এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছিল। নবুয়ত লাভের পর মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময় ছিল মক্কার সেই দিনগুলো, যখন তিনি একা একা সত্যের পথে আহ্বান করছিলেন মানুষকে। মোবারকপুরী অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহীভাবে নবীজীর ধৈর্য, সহিষ্ণুতা এবং কষ্টকে বর্ণনা করেছেন, যা পাঠকের চোখে জল এনে দেয়। বিশেষ করে শাব-ই-আবু তালিবে কুরাইশদের অবরোধ এবং নবীজীর নিজের গোত্রের বিরোধিতা—এই ঘটনাগুলোতে তার ইমান এবং আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস যে কত গভীর ছিল, তা লেখক সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। এসব সংগ্রাম শুধু ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি আমাদের জীবনের দুঃসময়ে শক্তি খুঁজে পাওয়ার উপদেশ। 'আর রাহিকুল মাখতুম'-এর এক বিশেষ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে ইসরাআ ও মেরাজের মহিমান্বিত ঘটনা, যেখানে নবীজী (সা.) আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন করেন। মোবারকপুরীর ভাষায় এই ঘটনাটির বর্ণনা এমন এক আধ্যাত্মিক অনুভূতি জাগায়, যা পাঠককে এক ধরণের আকাশছোঁয়া অভিজ্ঞতা দেয়। নবীজীর জীবনের এই বিশেষ মুহূর্তটি ইসলামী ইতিহাসে বিশেষভাবে মূল্যবান, এবং লেখক তার ব্যাখ্যায় সেই মহিমান্বিত গাম্ভীর্যকে সংরক্ষণ করেছেন। নবীজী (সা.)-এর হিজরত এবং মদিনার জীবন আরবের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। মোবারকপুরী অত্যন্ত নিখুঁতভাবে মদিনায় নবীজীর নেতৃত্ব, তার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কৌশল, এবং সামাজিক সাম্যের প্রতিষ্ঠার গল্প বর্ণনা করেছেন। মদিনায় ইসলামের প্রথম রাষ্ট্র গঠন, সেখানে আইন প্রণয়ন, এবং বিভিন্ন যুদ্ধে নবীজীর নেতৃত্ব—এগুলো পড়তে গিয়ে পাঠক এক নতুন ইসলামি জগতের সাথে পরিচিত হয়। বিশেষ করে বদর, উহুদ এবং খন্দকের যুদ্ধের কাহিনিগুলো অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, যা পাঠকের মনকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। নবী মুহাম্মদ (সা.) শুধু একজন নবীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানবজাতির জন্য শ্রেষ্ঠ আদর্শ। 'আর রাহিকুল মাখতুম'-এ নবীজীর চরিত্রের এমন সব দিক তুলে ধরা হয়েছে, যা শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য শিক্ষণীয়। তার ধৈর্য, ক্ষমাশীলতা, সত্যবাদিতা, মানবতা এবং সর্বোপরি তার আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা আমাদের জীবনে এক অনুকরণীয় উদাহরণ। 'আর রাহিকুল মাখতুম' নিঃসন্দেহে সীরাত সাহিত্য জগতে এক অমূল্য রত্ন। এর প্রতিটি অধ্যায়ে নবীজীর (সা.) জীবনের এমন গভীর দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে, যা শুধু পাঠকের মনকে জ্ঞান দ্বারা পূর্ণ করে না, বরং হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করে তোলে। যারা মহানবী (সা.)-এর জীবনী নিয়ে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি শুধু একটি বই নয়, বরং এটি এক হৃদয়গ্রাহী ভ্রমণ, যা নবীজীর প্রেমে গভীরভাবে মগ্ন হওয়ার সুযোগ করে দেয়। সবশেষে একটি কথা বলতেই হবে, সিরাত জানতে হলে 'আর রাহিকুল মাখতুম' মাস্টরিড একটি বই। আর রাসূলের (সা.) সিরাত ছাড়া আমাদের ব্যক্তি জীবন সুন্দর করা অসম্ভব। #আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সীরাত গ্রন্থ "আর রাহিকুল মাখতুম।" নবী করীম (সা.) জীবনীর উপর যেই সকল প্রমাণ্য গ্রন্থ রচিত হয়েছে, তা সকল শ্রেণীর পাঠকদের জন্য সহজলভ্য নয়। আবার সহজলভ্য গ্রন্থ সমূহের প্রমাণ্য গ্রন্থের অভাব প্রকট। রাসূল (সা.) জীবনী সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের অজ্ঞতার পিছনে এই উভয়বিধ সংকট অনেকটা দায়ী। অবশেষে উপমহাদেশের খ্যাতনামা বুযূর্গ আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি (রহ.) সিরাত বিষয়ে উর্দূ ভাষায় একটি গ্রন্থ রচনা করেন।ইহা তারই সরল বঙ্গানুবাদ। সমকালীন প্রকাশনীর আর রাহিকুল মাখতুম অনুবাদের ক্ষেত্রে মূল লেখকের উপস্থাপনা ও বর্ণনাপদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। সাথে সাথে কয়েকটি বিশেষ স্থানে টিকা- টিপ্পনী সংযোজন করে পুস্তকটি পাঠকদের নিকট আরো সহজবোধ্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। তথাপি এই অনুবাদকর্মে কিছু বানানে টাইপিং মিস্টেক ব্যতিত তেমন ভুল-ক্রটি চাক্ষুষ হয়নি। গ্রন্থটিতে বর্ণনার ভিত্তিতে নবী-জীবনের গোটা চিত্র সংক্ষেপে এবং সহজ সরল ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। ফলে তা সাধারণ পাঠকদের জন্য আরো সহজলভ্য ও সহজবোধ্য হয়েছে। গ্রন্থটির কলেবর মোটামুটি দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে একঘেয়েমি চলে আসার সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও সমকালীন প্রকাশনীর ঝরঝরে সহজলভ্য অনুবাদের কারণে অন্যরকম এক মুগ্ধতা নিয়ে শেষ করেছি। আশা করা যায় সমকালীন প্রকাশনীর সহজ ও সবালীল ভাষাশৈলী অনুবাদ যা আমাদের রাসূল (সা.) এর জীবনী পাঠের তৃষ্ণা বাড়িয়ে দিবে।❞
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ আর রাহীকুল মাখতুম” (Ar-Rahiq al-Makhtum) হল একটি অনন্য ইসলামী জীবনীর কিতাব, যা শায়েখ সাফি-উর-রহমান মুবারকপুরি কর্তৃক রচিত। এটি মহান নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের ইতিহাসের একটি গভীর ও বিস্তৃত বর্ণনা প্রদান করে। কিতাবটির সৌন্দর্য ও গুরুত্ব এখানেই, এটি কেবলমাত্র ইতিহাস বর্ণনা করে না, বরং নবীর (সা.) চরিত্র ও শিক্ষার নানা দিক তুলে ধরে।বিশেষ বৈশিষ্ট্য:বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি: লেখক নবী (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় বিশ্লেষণমূলকভাবে বর্ণনা করেছেন।সংক্ষিপ্ত ও সঠিক তথ্য: কিতাবটি সংক্ষিপ্ত ও সঠিক তথ্যের মাধ্যমে পাঠকদের সামনে তুলে ধরেছে।আধ্যাত্মিক দিক: নবীর (সা.) চরিত্রের আধ্যাত্মিক দিকগুলি বিশদভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”রাহীকুল মাখতুম” শুধুমাত্র ইসলামী ইতিহাসের গবেষকদের জন্য নয়, বরং সাধারণ পাঠকদের জন্যও একটি প্রেরণাদায়ী কিতাব। এটি নবী (সা.)-এর আদর্শ ও জীবনকে বুঝতে সাহায্য করে, যা মুসলিম সমাজের জন্য অপরিহার্য।
Was this review helpful to you?
or
"আর রাহিকুল মাখতুম" বইটি রাসূল (সা.)-এর জীবনের একটি বিশদ ও গভীর বিশ্লেষণ। বইটিতে রাসূল (সা.) এর নবুয়ত থেকে শুরু করে মক্কা ও মদিনায় ইসলামের প্রচার, যুদ্ধ, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী বর্ণনা করা হয়েছে। এটি তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত: আরবের প্রেক্ষাপট, মক্কায় নবুয়তের প্রচার, এবং মদিনায় ইসলামের প্রতিষ্ঠা। বইটি মুসলমানদের জন্য আদর্শ জীবন গঠনের অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তোলে, রাসূল (সা.) এর ধৈর্য, দয়া ও মানবিকতার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার শিক্ষার দিকনির্দেশনা দেয়। "আর রাহিকুল মাখতুম" মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি অমূল্য সম্পদ এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ইসলামী চেতনা জাগিয়ে রাখার জন্য এটি একটি অপরিহার্য গ্রন্থ।
Was this review helpful to you?
or
**আর রাহিকুল মাখতুম** মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী নিয়ে লেখা একটি প্রামাণ্য ও বিশদ গ্রন্থ, যা আল্লামা সফিউর রহমান মুবরকপুরী রচনা করেছেন। কুরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে সহজ ভাষায় লেখা এই বইটি মুসলিম পাঠকদের জন্য অত্যন্ত শিক্ষামূলক ও অনুপ্রেরণাদায়ক। সমকালীন প্রকাশনী বইটি সাবলীল ও সহজবোধ্যভাবে প্রকাশ করেছেন, ফলে এটি সব শ্রেণীর পাঠকের জন্য উপযোগী। বইটির কাভার ও বাঁধাই মান অন্যান্য প্রকাশনীর তুলনায় উন্নত। আন্সিতর্জাতিক সিরাতে প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গ্রন্থটি মহানবীর (সা.) জীবনী সম্পর্কে জানতে আগ্রহী সবার জন্য অপরিহার্য। এমন একটি মানসম্মত গ্রন্থ প্রকাশের জন্য সমকালীন প্রকাশনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
Was this review helpful to you?
or
আগে প্রথমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ। মহান আল্লাহ আমাকে এই বইটা পড়ার তৌফিক দান করেছেন। এই সিরাত গ্রন্থটি অত্যান্ত চমৎকার ভাষায় লেখা ভাষায় লেখা হয়েছে।এই বইটা যত বার পড়েছি ততবার মনে হয়েছে যে আমি ওই জামানায় ছিলাম। মনে হয়েছে আমি যেনো রাসূলের সাথেই আছি। বদর,ওহুদ,খন্দক, মুতায় আমিও ছিলাম। রাসূলের দুঃখে দুঃখিত হয়েছি ; রাসূলের আনন্দে আনন্দিত হয়েছি। বইটা সাবলীল ভাষায় লেখার ফলে আমার ঘটনা ও লেখাগুলো বুজতে অনেক সহজ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা লেখককে জান্নাতের সুউচ্চ মকম দান করুক। সেই সাথে যারা বইটার অনুবাদের সঙ্গে ছিলো তাদের দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করি।
Was this review helpful to you?
or
বইটির ভাষা খুবই সাবলীল ও প্রাণবন্ত।ছোট থেকে বড় সকল বয়সের পাঠকদের পাঠের উপযোগী। ব্যক্তিগত লাইব্রেরি,পাবলিক লাইব্রেরি,মসজিদ লাইব্রেরিসহ সকল ধরণের পাঠাগার এবং বাড়িতে অন্তত একটি করে কপি হলেও বইটি সংগ্রহে রাখা উচিত।এছাড়া যে কাউকে উপহার দেওয়ার জন্য অনেক ভালো হবে।
Was this review helpful to you?
or
অন্য যত প্রকাশনীর বই হাতে নিয়েছি দুর্বোধ্য শব্দচারণ এবং গুরুগম্ভীর ভাবে প্রতিটা লেখার কারণে অল্প কিছু আগিয়ে বই রেখে দেওয়া লাগছে কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এই বইটি পড়ার সময় একবারও মনে হয়নি যে এটি ওই আগের বইগুলোরই অনুবাদ। এত সাবলীল, আকর্ষণীয় ভাবে প্রতিটা ঘটনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যেন পড়ার সময় পাঠক নিজেকে ওই ঘটনায় উপস্থিত ভাবতে বাধ্য। শান্তি শান্তি অনুভব হয় যখন নিজেকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আশেপাশে উপস্থিত মনে হয়, তাঁর অস্তিত্ব যেন অনুভূত হয় প্রতিমুহূর্তে। প্রতিটা অধ্যায় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের আগ থেকে শুরু করে, পৃথিবীতে রহমাতুললীল আলামিনের আগমন, নবুওয়াতের আগে সকলের ভালোবাসায় সিক্ত আলামিন, হৃদয়ে প্রশান্তি জাগানিয়া মিরাজের ঘটনা, মক্কায় দুঃসাধ্য দিনগুলো ,নবীজির কাছের মানুষগুলোর সাহায্য, প্রাণের জন্মভূমি ছেড়ে হিজরত ,মদিনাবাসীর ভালোবাসা মাখা উষ্ণ আলিঙ্গন, বদর যুদ্ধ আল্লাহতালার অলৌকিক সাহায্য, উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের জন্য শিক্ষা অতঃপর বিজয়, তায়েফের রক্তাক্ত দিনগুলি, উম্মাহর প্রতি অবর্ণনীয় দরদ, মক্কাবিজয় এবং তার মহান কোন ক্ষমাশীলতা ইত্যাদি পড়ার সময় লেখার চাহনিতে নিজেকে গভীর থেকে গভীরতম ভাবে উক্ত ঘটনায় হারিয়ে ফেলতে বাধ্য এবং আকর্ষণীয়তার মাত্রা মাঝে মাঝে এমন ছাড়িয়ে গেছে যে পুরোটা না পড়া পর্যন্ত যেন জানার তৃষ্ণা মেটেই না। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি সালামের জীবনী এমনিতেই এক মধুর গভীর সমুদ্র যত পড়বো তত একটু একটু করে মধুর স্বাদ পেতে থাকবো আর এখানে অনেক বিষয় বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছি আগে যখন অন্য সীরাহ পড়েছিলাম হয়তো ঘটনার সারসংক্ষেপ টা জানতাম কিন্তু এখানে ঘটনার অনেক পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য বা এর সাথে রিলেটেবল আরো অনেক ঘটনা উল্লেখিত আছে মাশাআল্লাহ। এই বইয়ের সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এর সহজবোধ্যতা । নবীজির জীবনী পড়তে গেলে প্রথমেই নাম আসে আর রাহীকুল মাখতুম যে বই বিশ্ব বিখ্যাত এবং অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ সাজেস্টেড কিন্তু এর অর্থই ছিল যে দুর্বোধ্য শব্দের ভীতি সাথে গম্ভীরতায় ঢাকা মহান গ্রন্থ হওয়া সত্বেও একঘেয়েমী ভাব এসে যাওয়ার প্রবণতা ছিল সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য বইয়ের এই সমকালীন প্রকাশনীর অনুবাদটির কোনো তুলনা নেই। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজের থেকেও বেশি না ভালবাসলে ঈমানের পরিপূর্ণতা আসবে না এবং ভালোবাসার পূর্বশর্ত তাঁকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানা এমন ভাবে জানতে হবে যেন তাঁর সকল বিষয় অন্তরে দাগ কাটে এক্ষেত্রে বইটির অবদান অনস্বীকার্য। এই বইটি বিশেষভাবে উপকারী তাদের জন্য যারা বই পড়ায় অভ্যস্ত নয় বা নবীজির জীবনী পড়ার ক্ষেত্রে নতুন এবং কঠিন বই পড়তে পারেন না। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রাণের নবী, রহমত বরকতের নবী, আল্লাহ তাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ বান্দা ও রাসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ?
Was this review helpful to you?
or
**রিভিউ সামারি বা সারসংক্ষেপ:** এক বিরল সিরাতগ্রন্থ আর-রাহিকুল মাখতুম। সমকালীন প্রকাশনীর এই সংস্করণটি ভালোবাসার কলমের নিবে সুবিন্যস্ত করে তোলা হয়েছে প্রিয়তম রাসুলের গোটা জীবন। রাসুল সা.-এর মহিমান্বিত মোহরাঙ্কিত সুধাময় মহাকাব্যিক জীবনের প্রতিটি অবস্থা অঙ্কন করা হয়েছে বইটিতে। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গ্রহণীয় বর্ণনাটিকেই হৃদয়ছোঁয়া বর্ণনায় পাঠকের সামনে তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে।বইটি এমনভাবে লেখা হয়েছে যে, পাঠকের মনে হবে নবিজীবনের আনন্দ-বেদনার সফরে সঙ্গী তিনিও। বইটি তার বৈশিষ্ট্য এবং সৌন্দর্যের মাধ্যমে এক অনন্য অবস্থান গড়ে নিয়েছে। বইটি এর পাঠককে নিয়ে যাবে নবিজির পাশে-মক্কা, মদিনা, তায়েফ; আর বদর, উহুদ, খন্দক, হুদাইবিয়ার প্রাঙ্গনে। জানাবে নববি জীবনের ঐশ্বর্য, সৌন্দর্য, মাহাত্ম্য।
Was this review helpful to you?
or
আমি বইটি নিয়েছি। সিরাতের বইয়ের মধ্যে বেস্ট একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
__''Very Informative and nicely translated BOOK''__ __Thanks to Author...
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো লাগলো
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ রহমতে শেষমেষ বইটি পেয়ে গেছি এবং রকমারিকে ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
রাসুল(সা.) এর জিবনি জানার জন্য খুবই helpful বই
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ রকমারিকে এত সুন্দর একটি বই দেওয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah I buy this book .this book is greatful
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ!? বইটা আজ হতে পেলাম। অনেক সুন্দর লেখা। প্রিন্টটা ও অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ সেলার ভাই কে এত সুন্দর বই দেওয়ার জন্য ❤️
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী নিয়ে চমৎকার একটি বই
Was this review helpful to you?
or
এমন সুন্দর অ সরল অনুবাদ খুব কম বইতেই দেখা যায়। রাসুল (সা) এর জিবনী কোনো মুভির চেয়ে কম কিছু না। বইটি পড়তে পড়তে অনেক সময় কেদেছি
Was this review helpful to you?
or
ma Sha allah it is a very nice book..I picked up this book from Contemporary Publishing and it's amazing
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ বইটা এইমাত্র হাতে পেলাম। ধন্যবাদ রকমারি ডটকমকে
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ সীমিত সময় এর মধ্যেই বইটি হাতে পেয়েছি।বই এর quality খুবি ভালো মাশা আল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
পড়া শুরু করলে আর ছাড়তে মন চাই না। খুবই চমৎকার অনুবাদ হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah. khub i valo print.thanks rokomari.
Was this review helpful to you?
or
Mashallah
Was this review helpful to you?
or
আর-রাহীকুল মাখতূম। এই বইটি অত্যন্ত ভালো। আমি এর জন্য ৫/৫ রেটিং দিচ্ছি। বইটির প্রতিটি কথা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বইটির বাইন্ডিংও খুব ভালো মানের, নিখুঁতভাবে তৈরি। যদি আপনি ইতিহাস জানতে চান, তাহলে এই সীরাত শরীফ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সীরাত সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আর-রাহীকুল মাখতূম বইটি পড়ুন।
Was this review helpful to you?
or
জীবনের প্রথম যদি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্পর্কে জানার একটা তীব্র ইচ্ছে উদিত হয়েছিলো এই ❝ আর রাহিকুল মাখতুম ❞ বইটাকে ঘিরে।। অনেকে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, ক্লাস ওয়ান থেকে বাবা আমাকে এই বই পড়ে শোনাতেন, আর আমিও ক্লাস ওয়ান হতেই ভালোই পড়া রপ্ত করেছিলাম, যা বুঝতাম না সেটা আব্বু বুঝিয়ে দিতেন।। বাবা ইন্তেকাল করলেন ১৫ বছর আগে।। আজও এই বইটাই আমার মনের প্রশান্তি।। যে মানুষ একবার এই বইটার অন্তর্নিহিত অনুভূতি এবং রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের বুঝতে পারবেন, তিনি কখনোই এই পড়া বাদ দিতে পারবেন না। বারংবার এই বই পড়বেন।। আশা থাকবে, পাঠকরা, বইটা জীবনে একবার পড়ে দেখে মনে প্রশান্তি খুঁজে নিবে এতোটুকু অন্তত বলতেই পারি।।
Was this review helpful to you?
or
best
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ খুব সুন্দর একটি বই
Was this review helpful to you?
or
আমাদের মত মুসলিমরা খুব কমন একটা প্রশ্ন প্রিয় ব্যক্তিত্ব কে এর উত্তরে বুঝে না বুঝে বলে থাকি হযরত মুহাম্মদ (সা:)। কিন্ত দু:খজনক হলেও সত্য যে আমরা রাসুলের (সা) পু্র্ণাঙ্গ জীবন চরিত সম্পর্কে খুব কম জানি। সামান্য কোন অংশবিশেষ হয়তো। প্রিয় ব্যক্তিত্ব তো তাই যে ব্যাক্তিত্বের প্রতিফলন থাকবে আমার ব্যাক্তিত্বে আর এজন্য তো সেই ব্যাক্তিত্বের সম্যক ধারনা থাকবে আমাদের মানসপটে । নবী (সা) এর জীবনের পুর্ণাঙ্গ রুপ, তাঁর সামগ্রিক কর্মজীবন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান যদি নাই থাকে তবে কিভাবে আমরা সত্যিকার অর্থে রাসুলের জীবনের শিক্ষা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি । তাই রাসুলের (সা) এর জীবন চরিত পূর্ণরুপে জানার জন্য আর রাহীকুল মাখতূম অনবদ্য একটি বই। বইটি রাসুল (সা) আগমন পূর্ব আরবের বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং তাদের জীবনযাপনের অবস্থা বর্ননার মাধ্যমে শুরু হয়েছে যা সীরাতুন্নবীর পরিপূর্ন চিত্র বোঝার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এতে আরবের ভৌগলিক অবস্থা থেকে শুরু করে আরবের জাতিগোষ্ঠী, তাদের প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, ধর্ম বিশ্বাস ধর্মীয় মতবাদ, অর্থনৈতিক,চারিত্রিক প্রমুখ বিষয়াবলীর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। রাসুল (সা) এর বংশপরিচয় থেকে শুরু করে তাঁর জন্ম এবং নবুয়ত পূর্ববর্তী চল্লিশ বছর জীবনের অসাধারন বর্ননা। পরবর্তীততে রাসুল (সা) এর নবুয়ত লাভ থেকে তাঁর জীবনের শেষ অধ্যায় পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায় পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে তুলে ধরা হয়েছে। মক্কার নবুয়তের তের বছর, সেখানে দাওয়াতের বিভিন্ন পর্যায়, পৌত্তলিকদের বাধাবিঘ্নতা যুলুম নিপীড়ন হঠকারিতা,সেসবের মোকাবেলায় নবী (সা) এর বজ্রকঠিন দৃঢ়তা রাসুলের (সা) হিজরত, মদীনায় নবুয়তের ১০ বছর, নতুন সমাজব্যবস্থা রুপায়নের সংগ্রাম, সশস্ত্র সংগ্রামের সেই অধ্যায়, হোদায়বিয়া সন্ধি , ইসলামের বিস্তৃতিলাভের কাল, মক্কা বিজয়, বিদায় হজ্জ্ব, অন্তিম যাত্রাপথে রাসুল (সা) সহ রাসুল (সা) জীবনের প্রত্যকেটি অধ্যায়ের ঘটনাবলী ঘটনাকাল অনুযায়ী পর্যায়ক্রমিকভাব সুক্ষ্ণতার সাথে তুলে ধরা হয়েছে। অসাধারন এই বইটি সীরাতুন্নবীর সাথে আমাদেরকে এমনভাবে পরিচিত করে যে আমরা রাসুলের জীবনের পরিপূর্ন ধারণা পাই যাঁর সার্থক অনুসরনেই আমাদের সফলতা।
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ চন্দ্রহীন আসমান। ঝিরঝিরে বৃষ্টির রাতে বরাবরের মতো ডুবে ছিলাম বইয়ের পাতায়। ❝আর রাহিকুল মাখতুম❞ নিস্তব্ধ রাত্রিতে বইটি আমাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল সেই সোনালী যুগে আমার রাসূলের জীবনের ভাঁজে ভাঁজে। ফিদাকা আবি ওয়া উম্মি ইয়া রাসুলুল্লাহ। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সমস্ত জগতের দয়াময় প্রতিপালকের কাছে তিনি ছিলেন সবথেকে প্রিয় বান্দা। জগৎবাসীর কাছে ছিলেন তিনি সাক্ষাৎ রহমত, কল্যাণ। তিনি ছিলেন ঘনআঁধার পরিবেশের তীব্র নূর। তাওহীদের শিক্ষা দিতে যুগে যুগে নবীদের আগমনের ইতি টান ঘটে আমাদের নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর মাধ্যমে। একজন মানুষ কতটা উৎকর্ষের শীর্ষে পৌঁছালে প্রতিটা ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় রাখতে পারেন তা নবীজীর সীরাত না পড়লে অজানাই থেকে যাবে। নবীজির সীরাত এক প্রোজ্জ্বল প্রদীপ। আমরা যদি এর থেকে আলো গ্রহণ করি তাহলে জ্বলে উঠবে আমাদের জীবন বাতি। আলোকিত হবে আমাদের হৃদয়জগৎ। সন্দেহাতীত ভাবে আর রাহিকুল মাখতুম এক-টুকরো অসাধারণ সীরাতগ্রন্থ। বাজারে নানা প্রকাশনী থেকে বইটি অনুবাদ করে প্রকাশ করলেও, সমকালীন প্রকাশনের আর রাহিকুল মাখতুম যেনো ভিন্নতা বহন করে। জটিলতা এরিয়ে গিয়ে বইটি অনুদিত হয়েছে সহজ সাবলীল ভাবে। নিতান্ত সরল শব্দের সাথে বইটি স্বাচ্ছন্দ্যে সীরাত প্রেমীদের নিয়ে পৌঁছাবে শেষ পৃষ্ঠা অব্দি। তৎকালীন আরবের ভৌগোলিক অবস্থান, বিভিন্ন গোত্র, আল্লাহর রাসূলের জন্ম থেকে শুরু করে বিদায় বেলা পর্যন্ত এবং প্রিয় নবীর পরিবার, শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও চারিত্রিক গুণাবলি সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। এবং তা ধাপে ধাপে সাজিয়ে সাতশত পৃষ্ঠার বইটির সূচিপত্র ও অনুচ্ছেদের শিরোনামে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মনোরম ভাবে। তাছাড়া, একটি বইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ বহন করে তাতে যুক্ত করা দলিল বা তথ্যসূত্র। যা পাঠককে দেয় নিশ্চয়তা। বক্ষ্যমান 'আর রাহিকুম মাখতুম' বইটিতেও তেমনি যুক্ত করা হয়েছে প্রয়োজনীয় টিকা, ব্যাখ্যা, সহজ বিশ্লেষণ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র। যেগুলো অন্য প্রকাশনীর বইগুলোতে আমার চোখে পড়েনি। মূল আরবী থেকে বইটি ভাষান্তর করেছেন একাধিক অনুবাদক। কুরআনের আয়াত গুলোও অনুবাদ করা হয়েছে যত্ন সহকারে। রাসূলকে বিহীন শূন্য এ দুনিয়ায় সীরাতের প্রতিটা পাতা যেনো সাক্ষী হয়ে থাকে অশ্রুসিক্ত নয়নের। তিনি তো এই উম্মাহর নেতা, পথপ্রদর্শক। আলোর দিশারি রাসূল ﷺ-এর জীবনী পড়ার সময় খেয়াল করলাম, বইটি শুধু মুসলিমদের জন্যই সুবোধ্য নয় বরং অমুসলিমদের জন্যও হতে পারে অতি সহজবোধ্য। আকাশী রঙে মোড়ানো সীরাহ, যে পথ ঘুরিয়ে আনে আমার রাসূলের জীবন পাঠের সহজ সাবলীল বাঁক থেকে। তাইতো প্রিয় বইগুলোর তালিকায় খুব সহজেই জায়গা নিয়েছে বইখানি। সীরাত এক অমিয় সুধা যা যত পান করি তত উজ্জীবিত হই। বই সম্পর্কে কিছু তথ্য__ বই: আর-রাহিকুল মাখতুম লেখক: শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ। ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান। সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ। প্রকাশক: সমকালীন প্রকাশন। রিভিউ এবং বইছবি: রুকাইয়া তারিন
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিত ?শুরুর আগে: 'অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাঁদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।' [৩৩:২১] . রাসূল ﷺ কে ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ। প্রকৃত মুমিন হওয়ার পূর্বশর্ত। সেইসাথে তাঁর আদর্শকে ধারণ করে পুঙ্খানুপুঙ্খ মান্য করা আমাদের আখিরাতের পাথেয়। তাই আমাদেরকে আগে আমাদের নবির জীবনপ্রণালী জানতে হবে। তারপর তাঁর আনুগত্য করতে হবে। কাউকে না জেনে কি তাঁর আদর্শ গ্রহণ করা ও ভালোবাসা যায়? এজন্যই ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে সাফল্য লাভের জন্য রাসূল ﷺ এর সিরাত পাঠের বিকল্প নেই। এবং নিঃসন্দেহে তা বিশুদ্ধ সূত্র ও সঠিক উৎস থেকে অধ্যয়ন করাও আবশ্যক। আমাদের মনে রাখা উচিত, তাঁর আনুগত্যের মাঝেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার আনুগত্য ও ভালোবাসা। ?বই প্রসঙ্গে: গ্রন্থটি হাদিসবেত্তা, সিরাত-বিশেষজ্ঞ ও ইতিহাসবিদ শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরী রাহিমাহুল্লাহর রচিত। 'রাবিতাতুল আলামিন ইসলামি' কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে আলোচ্য এই 'আর রাহিকুল মাখতুম' গ্রন্থটি। বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি ও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় গ্রন্থটি নানা ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। বাংলায় ভাষায় এর আগেও বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে অনুদিত হলেও সমকালীন প্রকাশনের এই গ্রন্থটির বহুল তাৎপর্য রয়েছে। দশের অধিক আলেমগণ গ্রন্থটির অনুবাদ কার্যে যুক্ত ছিলেন। যা অকল্পনীয়। বলাইবাহুল্য এর পেছনে কতোটা মেহনত করা হয়েছে। ফলে বক্ষ্যমান 'আর রাহিকুল মাখতুম' যেন প্রকাশিত যেকোনো সিরাত গ্রন্থ থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেইসাথে মুগ্ধতার পরশে হয়ে উঠেছে পাঠকপ্রিয়ও। ?পাঠ-পর্যালোচনা: মূল বইটি আরবি ভাষায় রচিত হয়েছে। বিধায়, সেখান থেকে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের নিকট ছড়িয়ে দিতে করতে হয়েছে বঙ্গানুবাদ। ফলে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অনুবাদের মৌলিকত্ব এবং অনুবাদ কতোটা ঝরঝরে, সাবলীল ও প্রাঞ্জল। আমি ব্যক্তিগতভাবে একই বইয়ের অন্য অনুবাদ পড়ার পর সার্বিক বিবেচনায় বক্ষ্যমান বইটি পাঠ শেষে আমার অভিমত হলো, যে-কোনো অনুবাদ থেকে সবচেয়ে অগ্রগণ্য। তাছাড়া, প্রতিটি টপিক সুন্দর ও পর্যায়ক্রমিক অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। যুক্ত করা হয়েছে রেফারেন্স, হাদিসের সনদগত মান এবং প্রয়োজনীয় টীকাটিপ্পনী। এতে করে যেকোনো পাঠকের পড়ার সময় বুঝতে সুবিধা হবে। আবার, শিরোনামসহ প্রায় সকল কঠিন শব্দের সাবলীল অনুবাদ করা হয়েছে। বিধায় কঠিন বিষয়ও পাঠকের সহজেই বোধগম্য হবে। ?অসংহতি: পড়া সময় মনেই হয়নি অনূদিত বই পড়ছি। কিস্তু একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি যখন সাহাবিগণ কালিমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেন তখন কালিমার আরবী ফ্রন্ট না দিয়ে সরাসরি বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। আর বিশেষত যখন আত্মীয়দের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত প্রথম দিতে গেলেন তখন পূর্বে সুন্দর আল্লাহর প্রসংশাসহ কিছু বাক্য বলেছিলেন। সেটা আরবিতে পড়তে ভালোই লাগতো। সেটাও দেখি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। এগুলোতে আরবি ফ্রন্টও যুক্ত করা উচিত ছিল। ?পাঠ-প্রতিক্রিয়া: যেকোনো সিরাত পঠনকালে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া। এবং চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়া অস্বাভাবিক কিছু না। বরং এটা অন্যতম নবিপ্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। কেননা নবিপ্রেমই রাসূলের আদর্শ গ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করে। রাসূলের আদর্শে উজ্জীবীত হতে অনুপ্রেরণা দেয়। তথাপি, বইটি যখন পড়ছিলাম সাহাবিদের নির্মম অত্যাচার ও নির্বাচন যেমন অন্তরকে বিগলিত করছিল। তেমনিভাবে তাঁদের ঈমানি দৃঢ়তা, অকুতোভয়ে সব যাতনার পরেও ঈমানি চেতনায় পরিপূর্ণতা যেকোনো অবস্থায় ঈমান ও ইসলামের সঙ্গে আপোষ না করার শিক্ষা দিচ্ছিলো। সুবহানাল্লাহ! আবার, সব দুঃখকষ্ট পাশ কাটিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সিরাতের মধ্যে আমরা যে বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা, সৎগুণ, আবেগের যথাযোগ্য প্রয়োগ এবং আধ্যাত্মিক সহানুভূতির এক অসাধারণ মিশ্রণ দেখতে পাই। নববী ফিল্টারে যদি আমরা যথাযথভাবে এবং যথাযথ জায়গায় প্রয়োগ করতে পারি তাহলে আমরা সত্যিকার্থেই উপকৃত হব। সাথে তাঁর আনীত বিধিবিধান সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে উপকৃত হবে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। এমনকি তা সফলতার একেকটির সোপান হয়ে আমাদের সামনে এসে ধরা দেবে। . ?শেষ কথা: যিনি আজীবন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসতে প্রাণপণ লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। আরবদেরকে দেখিয়েছেন পৌত্তলিকতার দাবানল ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির পথ। যার সোহবতে তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিআল্লাহু আনহুম আজমাইন হেরার আলোয় আলোকিত হয়েছেন। সেইসাথে আমরা মুসলিম জাতি হিসেবে পেয়েছি শ্রেষ্ট উম্মাহর মশাল। . তাহলে আর দেরি কেন? চলুন নিজেকে দাঁড় করাই নবি-জীবনের আয়নায়। খুঁজে বের করি আমাদের শূন্যতা এবং পূরণ করি সেই মহামানবের আদর্শ, যিনি রাঙিয়েছেন এই ধরা। . ? বই পরিচিতি: ▫️বইয়ের নাম: আর রাহিকুল মাখতুম ▫️লেখক: শাইখ সফিউল রহমান মুবারকপুরী রাহিমাহুল্লাহ ▫️ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান ▫️সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ ▫️শারয়ী নিরক্ষণ: মুফতি সারোয়ার হুসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, মুফতি আবুল হাসানাত কাসিম,মাওলানা আসাদুল্লাহ ফুয়াদ ▫️প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন ▫️প্রথম প্রকাশ: ডিসেম্বর ২০২৩ ▫️বাঁধাই: হার্ডকাভার ▫️পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৭০৪ ▫️মুদ্রিত মূল্য: ৮৫০৳ . ~ রিভিউদাতা: আমিনুর ইসলাম রিফাত
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪ ?শুরুর আগে: আমাদের জীবনে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাহ বা জীবনাদর্শ যেন তপ্ত মরুর বুকে একপশলা বৃষ্টি। সীরাহ অধ্যায়ন ব্যতীত সেই বৃষ্টির স্নিগ্ধতা অনুভব করা সম্ভব নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী পাঠ আশেকে রাসূলের একটি প্রিয় প্রসঙ্গ। এই মহামানবের শান ও মর্যাদা, জগৎখ্যাতি ও গ্রহণযোগ্যতার স্বাতন্ত্র ও ভিন্নতার এটিও এক বিরাট দলিল যে, আজ পর্যন্ত তার ব্যক্তিত্বকে যে পরিমাণ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সাথে দেখা হয় তার শতভাগের একভাগও অন্য কারোর ভাগ্যে জুটেনি! তৎকালীন আবর সমাজ ছিল সভ্যতাহীন, ভব্যতাহীন, গোত্রে গোত্রে বিভক্ত, পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত, জাহিলিয়্যাতে নিমজ্জিত, অন্ধকারাচ্ছন্ন, বিভক্ত এক জনগোষ্ঠী। অতঃপর মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে আগমন ঘটল প্রিয়নবী ﷺ এর। যিনি হয়ে উঠেছিলেন ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, নারী, পুরুষ, আমির, ফকির নির্বিশেষে সকলের জন্য তিনি ন্যায়, নিষ্ঠা, সততা ও সাম্যের মূর্ত প্রতিচ্ছবি। তিনি ছিলেন এমন এক পরশ পাথর, যাঁর ছোঁয়ায় মাত্র ২৩ বছরের মাথায় বদলে গিয়েছিল জাহিলিয়্যাতে নিমজ্জিত তৎকালীন আরবের সমাজ ব্যবস্থা। গড়ে উঠেছিল জ্ঞান, গরিমা, চারিত্রিক মাধুর্যমন্ডিত পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য জাতি। মহান আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেছেব, "নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" [ সূরা আল-আহযাব, আয়াত নং: ২১] ?বই প্রসঙ্গে: বইটির নাম 'আর-রাহিকুল মাখতুম'। লিখেছেন যুগ শ্রেষ্ঠ হাদিসবেত্তা, সীরাহ বিশেষজ্ঞ ও ইতিহাসবিদ শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরী রাহিমাহুল্লাহ। রাবেতায়ে আলমে ইসলামী কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সীরাহ প্রতিযোগিতায় ১১৮২টি পাণ্ডুলিপির মধ্যে প্রথম স্থান অধিকারী। লেখক পৃথীবিতে আপন কীর্তির স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন কালজয়ী অমর এই গ্রন্থটি লিখার মাধ্যমে। যা বিশ্ব সীরাহ ভান্ডারে বর্তমান সময়ের এক অনুপম ও অনবদ্য সংযোজন। ?পাঠ-পর্যালোচনা: মূল বইটি আরবি ভাষায় রচিত হলেও এই বইটি পৃথিবীর অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হওয়ার পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও অনূদিত হয়েছে। কেবলমাত্র বাংলা ভাষাতেই গ্রন্থটির ২০টিরও অধিক অনুবাদগ্রন্থ রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারে নতুন করে নতুনরূপে অনুবাদ করেছে পাঠকপ্রিয় 'সমকালীন প্রকাশন'। অন্যান্য অনুবাদের তুলনায় এই অনুবাদের রয়েছে বিশেষ গুণ। যেখানে অন্যান্য অনুবাদের শুরুতেই নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধারাসহ অন্যান্য ঘটনাবলী বর্ণনার ক্ষেত্রে বেশ দুর্বোধ্যতা কাঠিন্যতা লক্ষ্য করা যায়, সেখানে 'সমকালীন প্রকাশন' এর অনূদিত বইটি অনুবাদগ্রন্থে যোগ করেছে নতুন একটি মাত্রা। বইটির ভাষাশৈলী ও বর্ণনাধারা এতোটাই সাবলীল, ঝরঝরে ও প্রাণবন্ত যে, তা পাঠকালে পাঠকগণের মনেই হবে না এটি একটি অনুবাদগ্রন্থ। সেই সাথে বইটির নির্ভরযোগ্যতা ও বিশুদ্ধতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিটি বর্ণনার রেফারেন্স, হাদিসের সনদগত মান ও প্রয়োজনীয় টিকা টিপ্পনি যুক্ত করা হয়েছে। ?পাঠ-প্রতিক্রিয়া: পাঠকমাত্রই সীরাহ অধ্যয়নকালে নবিজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের ঈমানদীপ্ত জীবন কাহিনী পাঠ করে হুহু করে কাঁদবে। এটা রাসূলের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন কিংবা বহিঃপ্রকাশেরই অংশ। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। সীরাহ অধ্যায়ন কালে যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম ১৪০০ বছর পূর্বের সেই জামানায়। চোখ বন্ধ করলেই যেন দেখতে পাচ্ছিলাম নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের প্রতি কাফিরদের নৃশংস আচরণ সত্ত্বেও তাঁদের দ্বীন পালনের দৃঢ়তা এবং শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করতে পাগল পাড়া একদল মহামানব আশেকে রাসূলদের। যা দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছিল হৃদয়টাকে। ? বাঁধাই ও মুদ্রণ: সমকালীন প্রকাশন বরাবরের মতোই এই বইটির বাঁধাই ও মুদ্রণে বিশেষ দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। বইয়ের ফন্ট ও পৃষ্ঠার মান উন্নত এবং চোখের জন্য আরামদায়ক। বই পাঠকালে মনোযোগের বিচ্যুতি ঘটতে পারে এমন কোনো অনুষঙ্গ পাওয়া যায়নি। ?শেষ কথা: আর-রাহিকুল মাখতুম বইটি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাহ জগতের এক অনবদ্য সংযোজন। বইটি নির্ভরযোগ্যতা ও বিশুদ্ধতার সর্বোচ্চ মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়েছে। নবিজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সঠিকভাবে জানতে ও তাঁর আদর্শ অনুকরণ ও অনুসরণ করতে বইটির জুরি মেলা ভার। বিশেষ করে সমকালীন প্রকাশনের অনুবাদের পারদর্শিতা এটিকে আরও অনন্য মাত্রা দান করেছে। সীরাহ বিষয়ক এ গ্রন্থটি হতে পারে বাংলা ভাষাভাষী সকল পাঠকের জন্য সেরা সংগ্রহ। ? বই সম্পর্কে: ▫️বইয়ের নাম: আর-রাহিকুল মাখতুম ▫️লেখক: সফিউর রহমান মুবারকপুরী রাহিমাহুল্লাহ ▫️ভাষান্তর: আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ, আল-আমিন ফেরদৌস, মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান ▫️সম্পাদনা: আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ ▫️শারয়ী নিরীক্ষণ: মুফতি সারোয়ার হুসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, মুফতি আবুল হাসানাত কাসিম,মাওলানা আসাদুল্লাহ ফুয়াদ ▫️প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন ▫️সংস্করণ: দ্বিতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ২০২৪ ▫️বাঁধাই: হার্ড কভার ▫️পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৭০৪ রিভিউদাতা: এইচ. এম. ইরফান ইমু
Was this review helpful to you?
or
আমি আসলে একটা বইয়ের রিভিউ লিখছি। এই বইটি হচ্ছে সমকালীন প্রকাশনের অনুবাদকৃত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি জীবনীগ্রন্থ 'আর রাহীকুল মাখতুম'। বইটি রচনারও বেশ সুন্দর একটি কারণ রয়েছে। তার উপর বাংলা ভাষায় এই বইটি প্রায় ২০ টির মতো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনুবাদ করেছে। তন্মধ্যে সমকালীন প্রকাশন একটি। এবার বলি, প্রথমত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ দাস। স্বভাবতই তাঁর জীবন সমগ্র মানবজাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ হবে এবং তাদের জন্য আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হবে। আর তাঁর জীবনী যখন অন্য মানুষ লিপিবদ্ধ করবে তখন তা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে অন্যান্য সিরাত গ্রন্থের তুলনায় 'আর রাহীকুল মাখতুম'-এর বিশেষত্ব রয়েছে। এই সিরাত গ্রন্থটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে অনেকাংশে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কারণ, তাঁর বংশ পরম্পরা নিয়ে আলোচনা করাসহ তৎকালীন বিশ্বের সার্বিক অবস্থাকে আগে তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে। তারপর তাঁর জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর বাল্যকাল, কৈশোর, যৌবন এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেইসাথে তাঁর দুগ্ধপানকাল, চাঞ্চল্যকর বাল্যকাল, তাঁর উদ্যমী কৈশোর, সংস্কারের মনোভাব, তাঁর আয়-উপার্জন, বিয়ে-শাদি, সামাজিক মর্যাদার উন্নতি, নবুয়তপ্রাপ্তি, দাওয়াতি কাজ, অন্যায়-অত্যাচারে ধৈর্যধারন, দেশত্যাগ, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা, যুদ্ধ-সন্ধি, বিজয়লাভ, মানবজাতির সার্বিক কল্যাণসাধন ইত্যাদির সমন্বয়ে যে শ্রেষ্ঠ জীবন তিনি গড়েছিলেন তার একটা নিপুণ প্রতিচ্ছবি এই গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে। এটা হচ্ছে 'আর রাহীকুল মাখতুম'-এর শ্রেষ্ঠত্ব। আর সমকালীন প্রকাশন আরবি ভাষায় লেখা এই বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য সহকারে। বৈশিষ্ট্যটি হচ্ছে, বাংলা ভাষায় যেন বাংলাভাষীরা সহজে বইটির মুলভাবকে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে সেজন্য এর হুবহু অনুবাদের চাইতে বাংলায় এর বোধগম্যতা বৃদ্ধিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং অস্পষ্ট জায়গাগুলোতে টিকা সংযোজন করা হয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে পাঠক তাঁর পাঠের ক্রমধারা থেকে বিচ্যুত হওয়া বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন। মোটামুটি ঢাউস আকারের এই সিরাতগ্রন্থটি সর্বমহলে পঠনীয় করে তুলতে এই বৈশিষ্ট্যটি খুবই প্রয়োজন। সবশেষে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানা খুবই প্রয়োজন আর সেটার জন্য এই গ্রন্থটি খুবই উপাদেয় বলে আমি বিশ্বাস করি। জাযাকুমুল্লাহ।
Was this review helpful to you?
or
আল্লাহর অশেষ রহমতে কয়েকটি প্রকাশনীর রাহীকুল মাখতুম পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে। অন্যান্য সবগুলো থেকে সমকালীন প্রকাশনীরটা আমার কাছে পুরো আলাদা মনে হয়েছে।সমকালীনের 'রাহিকুল মাখতুম' কেন অন্য সকল প্রকাশনীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ তার কয়েকটি কারণ- ১. সহজ সরল ও সাবলীল অনুবাদ: অনুবাদের গুণগতমান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেজন্য সমকালীন প্রকাশনী সর্বতো চেষ্টা করেছে। শুধুমাত্র অনুবাদের জন্যই দক্ষ চারজনের সমন্বয়ে ভাষান্তর টিম ছিল। এ ব্যাপারে তাদের চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। প্রকাশকের কথামালায় তার প্রমাণ মেলে।সেখানে বলা হয়েছে:" অনুপাত মেদহীন ও ঝরঝরে করতে মূল আরবি থেকে সরে যাইনি আমরা।" অনূদিত গ্রন্থ গুলোর ক্ষেত্রে প্রায়ই মূল ভাষা থেকে কিছুটা হেরফের দেখা যায় অনুবাদে। কিন্তু সমকালীন প্রকাশনী এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। ২. প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন ম্যাপ ও উপস্থাপন: গ্রন্থটি পাঠকালীন সময়ে পাঠক মনের জ্ঞানপিপাসা নিবারণে বিভিন্ন ম্যাপ উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমন, হিজরতের সময় মদিনার অধিবাসীদের অবস্থান, বদর যুদ্ধের মানচিত্র, উহুদ যুদ্ধের মানচিত্র, নবীজির সময়ে আরবে বিভিন্ন গোত্রের অবস্থান ,খন্দক যুদ্ধের মানচিত্র ।নবীজির সীরাহ অধ্যয়নের প্রাক্কালে বিভিন্ন ভৌগলিক স্থান সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে। অনারব জাতি হওয়ায় আরবের ভৌগলিক স্থানগুলো সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা আমাদের নেই। শুধু গ্রন্থের ভাষা পড়ে সেই ভাবে অনুধাবন করা একটু কষ্টকর হয়ে যায়। কিন্তু মানচিত্র দেখার ফলে সহজেই মানসপটে ভৌগলিক স্থানগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়।সমকালীনের 'রাহিকুল মাখতুমের' এই বৈশিষ্ট্য অন্য সকল প্রকাশনী থেকে একেবারেই অনন্য। ৩. বইটিতে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সংলাপের আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমন, বয়কটের চুক্তি ছিন্নের ঘটনায় আবু জাহেল ও চুক্তিটি অবসানের পক্ষে যারা ছিলেন তাদের কথপোকথন, হুদাইবিয়ার সন্ধির চুক্তিগুলো আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য লজ্জাজনক ও হানিকর মনে হওয়ায় হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এর মাঝে কথোপকথন, রোম সম্রাট ও আবু সুফিয়ানের মাঝে কথোপকথন।এমন ক্ষেত্রে, গদ্যের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে সংলাপের আঙ্গিকে উপস্থাপনই অধিকতর যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক। ৪. ছক উপস্থাপন: বইটিতে প্রয়োজন মাফিক বিভিন্ন ছক উপস্থাপন করা হয়েছে।যেমন, নবম হিজরীতে নবীজি আরবের বিভিন্ন গোত্রে যাকাত আদায়ের জন্য সাহাবীদের প্রেরণ করেছিলেন। বিষয়টি সমকালীন প্রকাশন তাদের 'রাহিকুল মাখতুমে' ছক আকারে উপস্থাপন করেছে। যেটা পাঠক মাত্রেরই নজর কাড়তে বাধ্য। কিন্তু গতানুগতিক গদ্যের ধারায় বিষয়টি নিয়ে আসলে সেভাবে আকর্ষণীয় হত না। এদিক থেকে 'সমকালীন' অন্য সবার চেয়ে ব্যতিক্রম। ৫. পর্যাপ্ত রেফারেন্স ও টীকা উল্লেখ: বইটিতে প্রতিটি তথ্যের সাথেই রেফারেন্স ও টীকা উল্লেখ করা আছে। অন্তর্ভুক্ত বর্ণনা গুলো সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা রাখে। শারয়ি নিরীক্ষণের ব্যাপারগুলো চারজন মুফতি-মাওলানা দেখভাল করেছেন ।মতভেদপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন স্কলারদের নিজস্ব মতও উল্লেখ করা হয়েছে। লেখক রহিমাহুল্লাহ নিজেও বলেছেন, "বর্ণনার শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আমি সম্পূর্ণভাবে পূর্ববর্তী আলিমদের মত পথ ও সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেছি। নিজ থেকে কোন সিদ্ধান্ত দিইনি। সমকালীন প্রকাশন এখানেও একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। টীকাগুলি ছিল অনেক বিস্তারিত।বইটিতে এমনও অনেক পৃষ্ঠা রয়েছে, যেগুলোতে মূল গ্রন্থের লেখার চেয়ে টীকার লেখাই বেশি ছিল। টীকা গুলো বিশদভাবে জানা ব্যতিরেকে সাধারণ মানুষের জন্য গ্রন্থটা বুঝতে পারা একটু কঠিন হয়ে যাবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সমকালীন প্রকাশনী এ ব্যাপারে কোন কমতি রাখেনি। অন্যান্য প্রকাশনী এ ব্যাপারটিতে তেমন একটা গুরুত্বারোপ করেনি। ৬.অনন্য কাব্যানুবাদ: অন্য ভাষায় রচিত কবিতাগুলো অনুবাদের ক্ষেত্রে মূল রচনার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাতেও ছন্দ ঠিক রেখে কাব্যানুবাদ করা যথাসাধ্য কঠিন ব্যাপার।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রচনার মূল ভাবের রকমফের দেখা যায় অনুবাদগুলোতে। কিন্তু সমকালীনের কাব্যানুবাদ ও সম্পাদনা টিম আরবি কাসীদাগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাতেও ছন্দ ঠিক রেখে যেভাবে কবিতাগুলো উপস্থাপন করেছেন তা দেখে বুঝার উপায় নেই যে, এগুলো বিদেশি কোন ভাষা থেকে কাব্যিক অনুবাদ করা হয়েছে। ছন্দ, তাল, লয় সব কিছুর অসাধারণ সমন্বয় এখানে দেখিয়েছেন তারা। ৭. পাঠক মহলের জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণ: বইটিতে প্রতিটি বিষয়বস্তু অত্যন্ত সহজবোধ্য এবং সাবলীল ভাষায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবং ঘটনাগুলোর ধারাবাহিকতা যথাসম্ভব বজায় রাখা হয়েছে। বইটি পড়ার পরে পাঠক মনে কোন প্রশ্ন জাগবে না আশা করা যায়। অর্থাৎ, কোন বিষয় পড়ার পরে সে ব্যাপারে কোন ধরনের অস্পষ্টতা ভিতরে তৈরি হবে না। পাঠক মাত্রই নবীজীর সিরাত সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা অর্জন করতে পারবেন ইংশাআল্লাহ্ ৮. যুগের প্রয়োজনে বাচনভঙ্গির আধুনিকায়ন:'রাহিকুল মাখতুম' প্রথম রচিত হয়েছে আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে। বিগত কয়েক যুগ ধরেই বাংলা ভাষায় বিভিন্ন প্রকাশনী এটার অনুবাদ প্রকাশ করেছে।এখনো বাজারে অন্যান্য প্রকাশনীর যে 'রাহীকুল মাখতুম' আছে, সেখানে দেখা যায় তাদের প্রথম সংস্করণ থেকে বর্তমান সংস্করণে তেমন একটা পার্থক্য নেই। কোন কোনটা সাধু ভাষায় রচিত, তাদের বাচনভঙ্গি হয়তো সে আমলের জন্য উপযুক্ত ছিল কিন্তু বর্তমানে এটা অনেকের কাছেই 'সেকেলে' 'সেকেলে' লাগতে পারে ।এমনকি অনেক আরবি শব্দগুলোর বাংলা উচ্চারণেও সেকেলে একটা ভাব রয়ে গেছে। যেমন 'ফাদাক' শব্দকে অন্যান্য প্রকাশনীতে 'ফেদেক' লেখা দেখেছি। সমকালীন প্রকাশন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গ্রন্থটির গদ্যের ভাষার আধুনিকায়নের পাশাপাশি আরবি উচ্চারণগুলোতেও সর্বোচ্চ সঠিকতার আশ্রয় নিয়েছে। বাহ্যিক দিক থেকে বইটির অনন্যতার কারণ, ১. মনোরম প্রচ্ছদ ২. অসাধারণ বাইন্ডিং ৩. উন্নত মানের পৃষ্ঠায় মান সম্মত ফ্রন্টে ছাপানো। লেখাগুলো ঝকঝকে ও পরিষ্কার হওয়ায় পড়তে কোন ধরনের সমস্যা হয়না। মোটকথা, সর্বদিক বিবেচনা করে সমকালীনের 'রাহীকুল মাখতুম' ই সেরা বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
"আর রাহীকূল মাকতুম" একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি গ্রন্থ যা নবী মুহাম্মদ (স.) এর জীবন, শিক্ষা এবং ইসলামের মূলনীতি নিয়ে গভীর গবেষণা করে। এই বইটি ইসলামী ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং নবীর সঠিক আদর্শ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। লেখক এটি লিখেছেন তথ্যপূর্ণ এবং সহজবোধ্য ভাষায়, যা সাধারণ পাঠক থেকে গবেষকদের জন্যও উপযোগী।সমকালীন প্রকাশন এই বইটি প্রকাশের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছে এবং মুসলিম সমাজে নবীর জীবন ও আদর্শের গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে কাজ করেছে। বইটিতে বিভিন্ন দিক থেকে ইসলামের মহান শিক্ষা এবং মানবতার প্রতি নবীর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।এই গ্রন্থটি ধর্মপ্রাণ পাঠকদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান, কারণ এটি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোকে সহজে বুঝতে সাহায্য করে এবং একটি সাম্প্রদায়িক ও নৈতিক ভিত্তি গড়ে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করে।
Was this review helpful to you?
or
হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তপূর্ব চল্লিশ বছর এবং নবুয়তপ্রাপ্তির পর তেইশ বছরের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনার মাধ্যমে সিরাতপ্রেমি প্রত্যেকটি পাঠকের অন্তরকে তৃপ্ত করার জন্য যথেষ্ট এই বই। যেসব ঐতিহাসিক সন-তারিখগত বিষয়ে মতভেদ রয়েছে, সেসব বিষয়ে মতভেদ উল্লেখকরত নিজের মতামত যুক্তি ও দলীল সহকারে লেখক উল্লেখ করেছেন এই বইয়ে। যা পাঠক মেনে নিতে বাধ্য। বইয়ের এই দিকটি আমাকে চমৎকৃত করেছে। আর এমনিতেই বইটি রাবিতায়ে আলম আল-ইসলামি মক্কা-মুয়াজ্জমা কর্তৃক আয়োজিত 'আন্তর্জাতিক সিরাতুন্নবি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিযোগিতায়' ১১৮২টি পান্ডুলিপির মধ্যে প্রথম হয়েছে। এথেকে বোঝায় যায় আর-রাহিকুল মাখতুম গ্রন্থটি সত্যিই মানোত্তীর্ণ এবং কালোত্তীর্ণ একটি গ্রন্থ, এতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এর অনুবাদ হয়েছে। অদ্যাবধি এ ধারা চলমান। বাংলা ভাষায়ও এর অনেকগুলো অনুবাদ বিদ্যমান। বাংলা ভাষায় এ গ্রন্থের অনেকগুলো অনুবাদ বাজারে আছে কিন্তু সমকালীনের অনুবাদই পাঠক কেন কিনবেন? মোটাদাগে এর করেকটি কারণ আমার কাছে যেটা মনে হয়- ১. এর সহজ-সরল বর্ণনা এবং কঠিন ও দুর্বোধ্য শব্দচয়ন এড়িয়ে যাওয়া। সহজ ও সাধারণ্যে প্রচলিত শব্দের ব্যবহার। ২. কুরআনের আয়াত এবং আরবি কবিতাসমূহের সরল বাংলায় অনুবাদ এবং কবিতাকে বাংলা কাব্যে রূপায়ন। ৩. পৃষ্ঠার নিচেই গ্রন্থসূত্র, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এবং টীকাটিপ্পনীর উপস্থাপন। হাদিসের মানের উল্লেখ এবং দূর্বল ও ভিত্তিহীন বর্ণনা কোনটি সেটা স্পষ্টকরণ। ৪. সুন্দর ও আকর্ষণীয় শিরোনাম ও উপ-শিরোনাম চয়ন। ৫. বর্ণনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং তথ্যর সামঞ্জস্যতা বিধান। পরস্পর বিরোধী বক্তব্য না রাখা। সর্বোপরি, একটা সুন্দর প্রচ্ছদ, পেজ মার্কার ফিতা যুক্তকরণ, প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠা হওয়ার পরও স্ট্যান্ডার্ড সাইজে রাখা, পৃষ্ঠা ও গ্রন্থসজ্জা মন কারার মত। আর-রাহিকুল মাখতুম নামক গ্রন্থটি অত্যন্ত সহজ-সরল ভাষায় লিখিত। এটা পড়তে গিয়ে বরাবরই এটা খেয়াল করেছি আমি। অন্যান্য প্রকাশনীর আর-রাহিকুল মাখতুম এবং সমকালীনের আর-রাহিকুল মাখতুমের তুলনা করতে গেলে বলতে হয়, কুরআনের একেবারে সরল অনুবাদ, আরবি কবিতাগুলোর হুবহু বাংলা কাব্যে রূপায়ন আমাকে মুগ্ধ করেছে। আর এটা অনস্বীকার্য যে, একজন অনুবাদকের চেয়ে তিন-চার জনের একটি টিম শ্রম দিলে সেটা ভালো না হয়েই পারে না।
Was this review helpful to you?
or
সিরাতুন - নবি হচ্ছে মুসলিম সভ্যতার মূল ভিত্তি। এর উপরই দাঁড়িয়ে আছে ইসলামি সমাজব্যবস্থা। " আর - রাহিকুল মাখতুম" গ্রন্থটিতে সম্মানিত লেখক বিভিন্ন অধ্যায়ে বিস্তারিত ভাবে নবিজির জীবনি ফুটিয়ে তুলেছেন। অধ্যায় গুলো খুব সুন্দর, সহজ- সাবলীল ভাষায় সাজানো হয়েছে।প্রতিটি ঘটনার বিবরণ ও বিস্তারণে লেখক তার জাদুময় ভাষায় সময় ও কাহিনির যে ঘোরলাগা পরম্পরা দেখিয়েছেন, তার সবটাই বাংলা ভাষায় রুপান্তর করেছেন অত্যন্ত সচেতনভাবে। এমনকি যুক্ত করেছেন প্রয়োজনীয় টীকা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং তথ্যসূত্র। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কত কষ্ট করেছেন, দ্বীন প্রচারের জন্য কত নির্যাতন- নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছেন! যার দাওয়াত ও মেহনতের বদৌলতে এই বৃক্ষ আরবের উষর মরুর বুক থেকে ডালপালা ছড়িয়েছে বিশ্বময়, দীনের জন্য তাওহিদের জন্য মানবাধিকার জন্য যিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, মক্কায় হয়েছেন সমাজচ্যুত, তায়েফে হয়েছেন রক্তাক্ত, উহুদে হয়েছেন জর্জরিত, খন্দকে পেটে বেঁধেছেন পাথর, সেই প্রিয় নবি, প্রিয়তম রাসূলের মহিমান্বিত জীবনগাথা আর আনন্দমধুর ও বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের অনবদ্য শব্দচিএ এ বই। বইটি পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা নবিজির এই কষ্টটুকু অনুভব করতে পারবো, দিলের ভেতর আল্লাহর প্রতি ভয় এবং ইসলামের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করতে পারবো। আমি মনে করি প্রত্যেকটি মুসলিম উম্মাহর উচিত নবিজির জিবনী সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং সেই অনুযায়ী নিজের জীবনকে পরিচালিত করা। আর নবিজির জিবনী সঠিকভাবে জানতে অবশ্যই "আর- রাহিকুল মাখতুম"গ্রন্থটি পড়া, এতে করে যারা আমার মতো কঠিন ভাষা গুলো বুঝতে পারেন না, তারাও অনায়াসে সহজ ভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন ইন শা আল্লাহ! এত সুন্দর একটি সিরাত উপহার দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা উওম প্রতিদান দান করুন।
Was this review helpful to you?
or
অনুবাদ ভালো,সবাই নিতে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
নবীজির জীবনী সবারই পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
অর্ডার করার মাত্র ৩ দিন পর এই বই টি হাতে পেয়েছি । বইটির মান বেশ ভালো ।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ। বইটি পেয়েছি। আর সাথে ৩ টা গিফটও পেয়েছি। ধন্যবাদ সমকালীন প্রকাশনী ও রকমারি।
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবন সম্পর্কে জানার জন্য অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
one of the best biography
Was this review helpful to you?
or
Good enough
Was this review helpful to you?
or
#আর_রাহিকুল_মাখতুম_সমকালীন_প্রকাশন_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২৪। বই:আর রাহিকুল মাখতুম লেখক:শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি অনুবাদক:আবুল হাসানাত কাসিম, রিফাত মাহমুদ , আল-আমিন ফেরদৌস , মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান প্রকাশনী:সমকালীন প্রকাশন মুদ্রিত মূল্য:৮৫০ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যা:৭০৪ ✅পূর্বকথন আধুনিক পৃথিবীতে যত বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তার সুফল বর্তমান পৃথিবীর মানুষ কতটুকু আস্বাদন করতে পেরেছে?ক'জন বিপ্লবী নেতা পেরেছে আদর্শ, নীতি-নৈতিকতায়, নিঃস্বার্থ, ত্যাগী ও মানবতার কাণ্ডারি হয়ে উঠতে? রুশ বিপ্লব কিংবা ফরাসী বিপ্লব কিংবা মেরিকার বিপ্লবের কথায় ধরা যাক। স্বতন্ত্রভাবে এই বিপ্লব গুলো বাহ্যিকভাবে সংগঠিত হয়েছিল বিশেষ শ্রেণির পক্ষ থেকে জনগণের উপর জুলুম থেকে নিষ্কৃতি দেয়া,নিষ্পেষিত ও নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।কিন্তু আদতে কি এই বিপ্লবগুলো সত্যিই পেরেছে পৃথিবী থেকে জুলুম, নিপীড়ন, অত্যাচার বন্ধ করতে? না পারে নি উলটো এই সব বিপ্লবসমূহ বেহাত বিপ্লবে পরিণত হয়েছে।পাশাপাশি জুলুমবাজদের দিয়েছে নিরাপদ শেল্টার।যারা এসব বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের আজকের পৃথিবীতে মহান আদর্শিক, ন্যায়বান ও মহান ধরা হলেও তারা কেউ ই সামগ্রিকভাবে বিচার-বিশ্লেষণে চরিত্রগত মানদন্ডে মহান বা আদর্শ এর কোন মাত্রা তেই পড়ে না। কিন্ত আজ থেকে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে পৃথিবীতে এমন এক বিপ্লব সংগঠিত হয় যার সুফল আজো পৃথিবীতে বর্তমান।অধিকন্ত এ বিপ্লবের নেতা যিনি ছিলেন সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায় বিচারক,সর্বাধিক পবিত্র,সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য ও আদর্শিক এবং মহান। এই মহান নেতার নাম মুহাম্মদ( সা:)। মহান আল্লাহ তা'আলা পৃথিবীর সকল অন্ধকার, কুসংস্কার ও ভ্রষ্টতার, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সকল যুগেই বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীকে সঠিক ও আলোকোজ্জ্বল পথে পরিচালিত এবং দাসত্ব ও শৃঙ্খলা হতে মুক্ত করতে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন।সেই সিলসিলা ধারায় সর্বশেষ মুহাম্মাদ সা: কে রাসূল করে পাঠিয়েছেন মানবজাতিকে সহজ, সরল ও একটি আদর্শিক জীবন গঠনের জন্য।আল-কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলছেন- وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰكَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۷﴾ অর্থ:আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।(২১:১০৭)। আফসোসের ব্যাপার হলো আমরা ঐ সকল বেহাত বিপ্লবের নেতা রুশো,ফিদোল কাস্ত্রো, ভলতেয়ার এদের জীবনী ও কর্ম সম্পর্কে যতটুকু জানি সারা বিশ্ব জাহানের সর্বোত্তম ও আদর্শিক এই মহান নেতার জীবন ও কর্ম এবং আদর্শ সম্পর্কে খুব অল্প-ই জানি এবং পড়ি।কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে নয় একজন সচেতন মানুষ হিসেবেও আমাদের সবার আগে আমাদের মহান নেতা ও রাসূল নবী মূহাম্মদ সা: এর জীবনী ও ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তার সংগ্রাম এবং ন্যায় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর আদর্শ, দৃঢ়তা ও ত্যাগ সম্পর্কে জানতে হবে। শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রচিত " আর রাহিকুল মাখতুম " আমাদের রাসূল সা: এর উপর লেখা বিশুদ্ধ ও সর্বাধিক নির্ভুল ও দালিল প্রামাণিক জীবনচরিত।এই বইটি অধ্যয়নের মাধ্যমে যে কোন জ্ঞানপিপাসু পাঠক রাসূল সা: এর জীবন, কর্ম, আদর্শ ও সংগ্রাম সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে পারবেন। ✅বই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা: কালচক্রের আবর্তনে বহু মহৎ ব্যক্তিবর্গের পদচারণা রয়েছে এ ধরায়।যাঁদের ব্যক্তিত্ব,কর্ম, আদর্শ আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্ত পৃথিবীতে এমন একজন ব্যক্তিকেও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যার মাঝে একাধারে সত্যবাদিতা,আমানতদারিতা,,ক্ষমশীলতা,পরহিতব্রতাততথা যাবতীয় মানবিক মূল্যবোধ ও গুনাবলীর সন্নিবেশ ঘটেছে।শুধু তাই নয় মানবিক মূল্যবোধের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার চমৎকার ও নিপুণ দক্ষতা,সমর পরিচালনায় অসামন্য দক্ষতা প্রভূত গুণের সমন্বয় একজন ব্যক্তির জীবনে খুব কমই পরিলক্ষিত হয়।কিন্তু আল্লাহর মনোনীত রাসূল মুহাম্মদ সা: পৃথিবীর এমন একজন মানব চরিত্র যাঁর মাঝে আমরা এ সকল যাবতীয় মানবিক গুণাবলীর প্রতিফলন দেখতে পায়।আল্লাহ তা'আলা সুরা আহযাবের বলেছেন- لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ ٱللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌۭ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْـَٔاخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا ٢١ অর্থ :"তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।" অতএব বিশ্বাসীরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা পেতে রাসূল সা: এর জীবনী অধ্যয়ন করার কোন বিকল্প নাই। শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রচিত "আর রাহিকুল মাখতুম " বইটি পৃথিবীর সুমহান ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ সা: এর বংশ পরিচয় হতে শুরু করে তাঁর জন্ম, নবুয়াত প্রাপ্তি, হিজরত,তাঁর জীবদ্দশায় যেসকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন সেসকল যুদ্ধের বিবরণ, ইসলাম প্রচারের তাঁর সংগ্রাম, ত্যাগ ও তিতিক্ষা এবং মক্কা বিজয় সহ তাঁর জীবনের নানান চড়াই উতরাই নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।বর্তমানে তাঁর লেখা সীরাহ গ্রন্থ আর রাহিকুল মাখতুম বহুল তথ্যনির্ভর, ইতিহাসসিদ্ধ ও বিশুদ্ধ সীরাহ বলে বিবেচিত।১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ(১৩৯৬ হিজরী) রাসূল সা: এর জীবনী সম্বলিত গ্রন্থ রচনা প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম পুরস্কার লাভ করেছিলেন। শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি সর্বাগ্রে সীরাহ গ্রন্থে রাসূল সা: এর জন্মের পূর্বে তৎকালীন আরবের ভৌগলিক, সামাজিক প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত কিন্ত সুবিন্যস্তভাবে তার চিত্রপট পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।কিভাবে আরব ভূখন্ডে মানব বসতী স্থাপিত হয়েছিল,ইব্রাহীম আ: এর কাবাঘর নির্মাণ ও ইসমাইল আ: এর দাওয়াত ও প্রচারের বিবরণ, কুরাইশ বংশের উৎপত্তি ও তাদের নেতৃত্বে আসা, কিভাবে তারা একত্ববাদ থেকে সরে গিয়ে লাত্ ও উযযার উপাসনা শুরু করেছিল সর্বোপরি আরবের জাহেলিয়াত সমাজের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো ঐতিহাসিক ও প্রামাণিক দলিলের ভিত্তিতে তুলে ধরেছেন। সীরাহ গ্রন্থ " আর রাহিকুল মাখতুমের " দ্বিতীয় পর্যায়ে লেখক ইসলামের মহা মহিম ব্যক্তি রাসূল মুহাম্মদ সা: এর বংশ পরম্পরা,জন্ম, নবুয়াত লাভ, মিরাজে অলৈাকিক ঘটনা , হিজরত,মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা,হুদায়বিয়াহর সন্ধি, বদর, উহুদ সহ গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ, মক্কা বিজয়সহ তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত ধাপে ধাপে আলোচনা করেছেন।মূলত "আর রাহিকুল মাখতুম" সীরাহ গ্রন্থটিতে রাসূল সা: জীবনীকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করা যায়। প্রথম স্তর হলো রাসূল সা: এর বংশ পরিচয়, তাঁর জন্ম, তাঁর নবুয়ত পূর্ববর্তী জীবন,নবুয়ত পরবর্তী দাওয়াত ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার, খদিজা রা: সাথে বিয়ে, মক্কার বাইরে ইসলামের দাওয়াত(তায়িফে),নৈশভ্রমণ, মক্কায় দুর্বিষহ জীবনযাপন ও রাসূল সা: সহ সাহাবীদের উপর মক্কাবাসীদের লাঞ্চনা ও অত্য্যাচার ও এবং মদীনায় হিজরত। নবুয়ত পূর্ববর্তী ও পরবর্তী রাসূল সা: যে অনন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও উল্লেখযোগ্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলো ও তাঁর সমাজ উন্নয়নমূলক যেসকল কর্মকাণ্ড উঠে এসেছে তা নিম্নরুপ: ?সত্যবাদিতা:নবুয়ত পূর্ববর্তী সময় থেকেই রাসূল সা: মক্কাবাসীদের কাছে সত্যবাদি ও সর্বাধিক বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন। ?আমানতদারিতা:রাসূল সা: নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্ব হতেই তাঁর আমানাতদারিতা সর্বজন বিদিত ছিল। ?ধৈর্য্যশীলতা:রাসূল সা: এর নবুয়ত- পূর্ব জীবন ও পরবর্তী জীবনে সমস্ত দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদকে ধৈর্য্যের সাথে মোকাবেলা করতেন। ?সামাজিক ক্রিয়াকলাপ:নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে মক্কার ফিজার যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে রাসূল সা: আরবের বিভিন্ন গোত্রের সাথে বসে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা দূরীকরণ, দরিদ্র,দুর্বল ও অসহায় লোকদের সাহায্য ও সহযোগিতা করা ও বিদেশি লোকদের মান, ধন- সম্পদ রক্ষা করতে হিলফুল ফুযূল নামে সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। ?দৃঢ়তা ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন: নবুয়ত প্রাপ্তির পর রাসূল সা: এর চারিত্রিক দৃঢ়তা ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপিত হয়।যা তাঁর নবুয়াতী জীবনের শেষ পর্যন্ত অটুট থাকে। দ্বিতীয় স্তর শুরু হয় রাসূল সা: এর মদীনায় হিজরতের মধ্য দিয়ে।মদীনায় হিজরতের উদ্দেশ্য ছিল, শান্তি পূর্ণ রিজনে ইসলামী মুভমেন্টের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ পর্যায়ে মক্কাবাসী ও বিভিন্ন গোত্র একত্রিত হয়ে ফিতনা ও মদীনা থেকে ইসলামকে বিলুপ্ত ও রাসূল সা: কে হত্যা করতে শহরের মধ্য হতে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ ও আক্রমণ চালিয়েছিল।কিন্তু রাসূল সা: এর দূরদর্শী নেতৃত্ব্ব ও সুনিপুণ যুদ্ধ পরিচালনার নীতি ও রাষ্ট্রনীতির কাছে শত্রুরা পরাজিত হতে বাধ্য হয়। এ যুগে রাসূল সা: এর যে বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও কার্যপন্থা পরিলক্ষিত হয় তা নিম্নরুপ: ?রাষ্ট্রনায়ক রাসূল( সা)::মদীনায় হিজরতের পর রাসূল এর সর্বপ্রথম কাজ ছিল মুসলিমগণের জন্য একটি নতুন দেশ ও রাষ্ট্রের নির্মাণ করা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ইসলাম প্রচার ও একে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়।হিজরতের মূল উদ্দেশ্যই ছিল শান্তিপূর্ণ এলাকায় ইসলামি সমাজব্যবস্থা ও কাঠামো তৈরি করে ইসলামেকে সম্প্রসারিত ও সুপ্রতিষ্ঠা করা।কাজেই রাসূল সা: একজন নেতা ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মদীনায় মুসলিমদের জন্যে একটি নতুন রাষ্ট্র স্থাপন করার পর একটি রাষ্ট্র কাঠামো তৈরি করেন যার প্রধান ভিত্তি ছিল আল্লাহর একত্ববাদ। পাশাপাশি নতুন ইসলামী রাষ্ট্রে ন্যায়, সাম্য, একতা ও ভ্রাতৃত্বের স্থাপিত করে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন যা ইতোপূর্বে কখনো দেখা যায় নি। ?সমন্বয়ক রাসূল( সা): মদীনায় হিজরতের পর মদীনায় হিজরতের পর তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল মদিনায় বসবাসরত তিন গোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয় ও বন্ধুত্ব্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা। কাজেই আনসার বাহিনীর সাথে মুহাজির বাহিনীর এমণ এক অপূর্ব ভ্রাতৃত্ব বন্ধন প্রতিষ্ঠিত করেন যা অতুলনীয় এবং পৃথিবীতে ইতিহাস হয়ে রয়েছে।এছাড়াও মদিনায় বসবাসরত অমুসলিমদের সাথেও তিনি পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যে তাদের সাথে চুক্তি সম্পাদন করেন। এ চুক্তি সম্পাদনের ফলে মদিনা ও তার আশে পাশের অঞ্চলসমূহ এক শান্তিময় অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এভাবেই মদিনা ইসলামের হুকুমতের রাজধানীতে পরিণত হয়। ? সমরনায়ক ও রণকৌশলী রাসূল( সা): এ পর্যায়ে রাসূল সা: যে অনন্য বৈশিষ্ট্য তুলে ধরব তা হলো রাসূল সা: এর সমরবিদ্যা ও সুনিপুণ রণকৌশল। রাসূল সা: এর যুদ্ধকৌশল ছিল অত্যন্ত নিঁখুত ও কার্যকরী।তাঁর যুদ্ধ পরিচালনার কৌশন ও পরিকল্পনা এমন ছিল যে শত্রু পক্ষের কঠিন ব্যুহ ভেদ করে শত্রু পক্ষকে পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হতে হতো।রাসূল সা: এর যুদ্ধ কৌশলের কাছে পরাস্ত হয়ে শত্রুদের কাছে শুধু দুটো অপশন ই থাকত হয় আত্মসমর্পণ করো আর নয়তো রাসূল সা: এর বীর মুজাহিদ বাহিনীর হাতে গণহত্যার শিকার হওয়া।বস্তুত প্রতিটি যুদ্ধ রাসূল সা: অপার বীরত্ব ও অসীম সাহসের এবং তাঁর সুনিপুণ রণকৌশল দ্বারা বিজয় লাভ করেছিলেন। ?কূটনীতিক রাসূল( সা):ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সন্ধি হলো হুদায়বিয়াহর সন্ধি।এ সন্ধি ছিল মুসলিমদের জন্যে এক বিরাট বিজয় স্বরুপ।বস্তুত এ সন্ধির মধ্যে যে সুদূরপ্রসারী হাকিকত ছিল তা অনুধাবন করতে পেরেই রাসূল সা: কুরাইশদের সাথে এ সন্ধি চুক্তি করতে সম্মত হন।এ সন্ধির ফলে যেমন কুরাইশদের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ইতি ঘটেছিল ঠিক তেমনই ইসলাম প্রসারে কুরাইশদের বাঁধা রইল না।পুরো আরবে ইসলাম স্বাধীনভাবে তার প্রচার কার্য সম্পাদন করা অধিক সহজতর ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।এছাড়া ও এ সন্ধির পর সম্রাট ও সমাজপতিদের নিকট ইসলামের প্রতি আহ্বান জানানোর এক বিরাট সুযোগ তৈরি হয়।কাজেই হুদায়বিয়াহর সন্ধির মাধ্যমে রাসূল এর কূটনৈতিক পারদর্শিতা স্পষ্ট ফুটে উঠে। ?দূরদর্শী রাসূল (সা):রাসূল সা: সবসময় প্রতিটি পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তে আমরা দূরদর্শিতা ও বাস্তবিক ছিল।যার প্রতিফলন আমরা যুদ্ধ ও নানান অভিযানগুলোতে দেখতে পাই। তৃতীয় স্তর শুরু হয় মক্কা বিজয়ের মধ্য দিয়ে। যে বিজয় শুধু সেই সময়ের মুসলিমদের বিজয় নয় সদূর আসমানের বাসিন্দারাও আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়ে।দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও ত্যাগের পর আল্লাহ তা' আলা তাঁর ঘরে আবার ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করেন।পুরো আরব ভূখন্ডে পৌত্তলিকতার অবসান সাথে সাথে আরবের জাহেলিয়াত যুগের যবনিকাপাত হয়।মূলত মক্কা বিজয় সুস্পষ্টভাবে মিথ্যাকে অপসৃত করে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে।অধিকন্ত আজো সারা বিশ্বের এ বিজয়ের উল্লাসধ্বনি শোনা যায়।প্রকৃতপক্ষে আরবে মক্কা বিজয়ের সাথে সাথে পুরো আরবজুড়ে যে শান্তি,ন্যায়, সহমর্মিতা সর্বোপরি যে একতা ও বন্ধন তৈরি হয় তা ইতোপূর্বে কোন কালেই দেখা যায় নি। তৃতীয় স্তরে মক্কা বিজয় ছাড়াও রাসূল সা: এর জীবনের আরো কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।রাসূল সা: এর শেষ যুদ্ধাভিযান,আরবের বিভিন্ন প্রান্ত হতে আসা প্রতিনিধিদলকে ইসলামের দাওয়াত ও ইসলামের আনুগত্য করতে অনুপ্রাণিত ও দীক্ষা দেয়াও বিদায় হজ। রাসূল সা: এর শেষ দুটি যুদ্ধ ছিল হুনাইন ও তাবুক যুদ্ধ।এ দুটো যুদ্ধতেও তিনি অসীম সাহসিকতা ও তাঁর দক্ষ সমরবিদ্যা এবং বুদ্ধিমত্তা -ধৈর্য্যের মাধ্যমে ইসলামের পতাকাকে সমুন্নত করতে সক্ষম হন। এরপর আসে সেই ঐতিহাসিক বিদায় হজের দিন। যেদিন তিনি শেষবারের মতো মক্কা-মদিনা সহ তথা পুরো মুসলিম জাহানের জন্য ইহকাল ও পরকালের জীবনের জন্যে নসীহা ও আল্লাহর দ্বীনকে ধরে রাখতে সবসময় মুসলিমদের একতাবদ্ধ থাকতে ও সচেষ্ট থাকতে নির্দেশনা দেন। এ পর্যায়ে আমরা রাসূল সা: পূর্বোল্লিখিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও মানবীয় গুনাবলির পাশাপাশি আরো যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য গুণাবলী দেখতে পাই।তা নিম্নরুপঃ ?ক্ষমাপরায়ন : রাসূল যে অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাপরায়ন ছিলেন তা সবচেয়ে বড় উদাহরণ আমরা দেখতে পাই মক্কা বিজয়ের দিন।মক্কা বিজয়ের যুদ্ধে বিনা রক্তপাতে তিনি মক্কা বিজয় করেন এবং সকল মক্কাবাসীকে তিনি ক্ষমা করে দেন।অথচ আমরা দেখেছি মদিনায় হিজরতের পূর্বে কত অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মক্কা বিজয়ের দিন তিনি কারো বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি।বরং ক্ষমার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ?ন্যায়পরায়ণ ও ন্যায্যতাঃ যদি ও এ গুণটি রাসূল সা: এর জীবনের শুরু থেকে আমরা দেখতে পাই।কিন্তু এ গুণটির কথা এ পর্যায়ে আলোচনার উদ্দেশ্য হলো হুনাইন যুদ্ধে রাসূল সা: যে ন্যায়সঙ্গত বন্টন ব্যবস্থা করেন তার উল্লেখ করা। এ যুদ্ধ হতে প্রাপ্ত গণিমতের মাল মদিনা ও মক্কাবাসীর মধ্যে যে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্টন করে দেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ?বাগ্মিতাঃ রাসূল সা: বাগ্মিতায় ছিলেন অত্যন্ত পটু।যখন তিনি কথা বলতেন যেন মনে হতো তাঁর কথা থেকে মুক্ত ঝরছে।এবং তাঁর কথা বার্তা সব সময় বলিষ্ঠ ছিল।কোন বাগাড়ম্বরতা বা বক্রতা ছিল না।এত অমায়িক ও সঙ্গত ভাষায় তিনি ইসলামের দাওয়াত ও আল্লাহর হুকুম -আহকাম সম্পর্কে বয়ান দিতেন যে যে কেউ শুনলে মুগ্ধ হয়ে যেতেন।বিদায় হজের দিন রাসূল সা: লক্ষাধিক সাহাবীদের সামনে যে বিদায় ভাষণ দেন তাতে তাঁর বাগ্মিতা স্বর্গীয় প্রাণ লাভ করে। এছাড়াও রাসূল সাঃ এর মধ্যে দানশীলতা,বদন্যতা, সংবেদনশীলতা,সহনশীলতা এবং ধৈর্য্যশীলতা ইত্যাদি যাবতীয় মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটেছিল যা অন্য কোন ব্যক্তির মধ্যে পাওয়া সম্ভব নয়।সীরাহ গ্রন্থ "আর রাহিকুল মাখতুমে " এই তিনটি পর্যায়ে ধাপে ধাপে এই পূর্ণবান ব্যক্তিত্বের যাবতীয় সকল বিষয় আলোচিত হয়েছে। সবশেষে রাসূল সাঃ এর পবিত্র জীবনের শেষ দিনগুলোর যে ক্রমিক হৃদয়স্পর্শী বর্ণনা এ সীরাহতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
Was this review helpful to you?
or
মাশাআল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আজ বইটা হাতে পেলাম কিন্তু ভাব ছিলাম এত বই পড়ার ধৈর্য্য থাকবে না কিন্তু আমি ভুল কারণ তারা এতটাই সুন্দর ও সহজ করে সাজিয়েছে যে এটা থেকে মনোযোগ সরাতে পারছি না... | দোয়া করি, যারা এই বইটি তৈরি করতে কাজ করেছে মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের ওপর রহমত বর্ষিত করুক
Was this review helpful to you?
or
মাশাল্লাহ বইটি অনেক ভালো হয়েছে। বই কোয়ালিটি 100 আউট অফ 100। বিশুদ্ধ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবনী সম্পর্কে জানতে সকল মুসলমানের পড়া উচিত। আর সমকালীন প্রকাশন কে ধন্যবাদ, এমন সাবলীল ভাবে গ্রন্থটি প্রকাশ করার জন্য। প্রচলিত এবং সহজ ভাষায় বইটি উপস্থাপন করায় সকল শ্রেণীর মানুষের বুঝতে এবং পড়তে কোন অসুবিধা হবে না। খুব সহজেই সকলে পড়তে ও বুঝতে পারবে। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ যথাসময়ে বইগুলো পেয়েছি। প্যাকেজিং আলহামদুলিল্লাহ। এই বইটির ব্যাপারে কিছু বলার নেই। সবার ই পরিচিত বই। ৩৫% off offer এর সাথে ফ্রি বইটিও একটি কাজের বই দিয়েছে। ভালো লাগলো। জাযাকাল্লাহু খায়রান। নোটবুকটাও ভালো আর বুকমার্ক টাও ভালো।
Was this review helpful to you?
or
হাতে পাওয়ার পর খুবই ভালো লাগছে,,,সাথে ৩ টি গিফট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
Was this review helpful to you?
or
Oshadharon onubad. kintu onader binding onek durbol ebong onubad korte giye kicchu jinish onara bad diyechen. Binding er khetre bahire ekta extra cover thake, jeta onara den ni. tai sohoje boi chire jete pare.
Was this review helpful to you?
or
ভাল লেগেছে❤️
Was this review helpful to you?
or
বাইন্ডিং এবং পেজ এর মান ভালো লাগছে, এই বইটির প্রচ্ছদ সুন্দর হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
**"আর রাহিকুল মাখতুম"** শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রচিত একটি সীরাত গ্রন্থ, যা আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী নিয়ে লেখা। এটি নবীজির জন্ম, শৈশব, নবুয়ত প্রাপ্তি, মক্কায় তাঁর সংগ্রাম, মদিনায় হিজরত এবং ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিশদ বিবরণ প্রদান করে। বইটি লেখকের প্রামাণ্য দলিলের ওপর ভিত্তি করে রচিত এবং সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে, যা পাঠকের জন্য বোধগম্য। বইটির প্রতিটি অধ্যায় নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের পাঠ নিয়ে তৈরি। সমকালীন প্রকাশনের এই সংস্করণটি বিশেষভাবে মুসলিম উম্মাহর জন্য শিক্ষণীয় ও পথনির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশে আর রাহীকুল মাখতুমের অনেক প্রকাশনী থাকলেও,বিশেষভাবে তাওহীদ প্রকাশনী,সমকালীন প্রকাশনী এবং রহানমুা প্রকাশনীর নাম শোনা যায়। তবে এই তিনটি বইয়ের মধ্যে থেকে আমার মনে হয় সমকালীন প্রকাশনীর অনুবাদ সব থেকে ভালো এবং সাবলীল।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ অনুবাদ! এতটা সাবলীল আর ঝরঝরে অনুবাদ! আসলে সমকালীন প্রকাশন মানেই ভিন্ন কিছু।
Was this review helpful to you?
or
যারা বাজারে অনেক গুলো "আর রহিকুল মাখতুম " দেখে কনফিউশান এ ভুগেন তাদের জন্য বলব আপনারা এ প্রকাশনীর টা নিশ্চিন্ত মনে নিতে পারেন। جزاكم الله خيرا
Was this review helpful to you?
or
আর রাহিকুল মাখতুম অনেকগুলো প্রকাশনী থেকে কোনটা নিব বুঝে উঠে পারছিলাম না। যখন দেখলাম সমকালীন প্রকাশনী থেকে বইটা প্রকাশ হইছে তখন আর দেরি করিনি অর্ডার করতে। কারন সমকালীন বই আগেও অনেক পড়েছি। তাই আমার জানা ছিল তাদের বই সম্পর্কে।
Was this review helpful to you?
or
The Books is amazingly translated. I have already done the reading this book from another Publication that book was full of mistakes (May Allah give them hedaya). But what make this book different from other Publications other versions the reference section, Somokalin publication added not just reference but also small details of the reference and some description and every page has it's chapter name. Thanks for that. I bought one for gift but In Sha Allah I will bought another one for me. BarakAllahu fee kum Rokomari and Somokalin
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ বইটা হাতে পেয়েছি।বই এর কোয়ালিটি খুব ভালো।সমকালীন প্রকাশন কোনো সময় নিরাশ করে না।আর এই সীরাত গ্রন্থটি এমনিতেই অনেক বিখ্যাত।
Was this review helpful to you?
or
আর-রাহিকুল মাখতুম এর অনেক অনুবাদ, অনেক প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে, তবে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে, প্রাণবন্ত । কবিতাগুলোর অনুবাদ দেখলেও বোঝা যায় কত পরিশ্রম করেছে অনুবাদকেরা । সাবলীল আধুনিক ভাষা। বইটিতে ফ্ল্যাপ কভার থাকা উচিত ছিলো, তাহলে সুন্দর লাগতো।
Was this review helpful to you?
or
আর-রাহিকুল মাখতুম : শব্দের তুলিতে আঁকা নবিজীবন  ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ সিরাতের কোনো বই পড়া শুরু করতে চাইলে, নিঃশঙ্কচিত্তে ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। একে বলা যায়, সিরাতের বিশাল জগতে প্রবেশের একটি খোলা জানালা। ইসলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞানার্জন, কুরআন অনুধাবন ও নিজের আত্মিক উন্নতি সাধনের জন্য নবিজি সম্পর্কে জানা সকলের জন্য আবশ্যক। একটি আদর্শ জীবনের নিখুঁত মানদণ্ড হলো শেষ নবি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহর ভাষায়⸺ ইহকাল ও পরকালে সকল সফলতা ও সৌভাগ্য কেবল রাসুলের পদাঙ্ক অনুসরণের মাঝেই নিহিত। তাই যে নিজের জীবনে কল্যাণ, সফলতা আর সৌভাগ্য কামনা করে, সে যেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সিরাত চর্চা করে। এতে করে সে রাসুলকে চিনতে এবং সত্যিকার অনুসারী হতে পারবে। (যাদুল মাআদ- ১/৩৬) বস্তুত নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পুরো জীবনটাই ছিল কুরআনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। বিদগ্ধ লেখক আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ সেই ছবিকে জীবন্ত ও প্রাণবন্ত করে তুলে ধরেছেন বইটাতে। এতে প্রচুর তত্ত্ব ও তথ্যের সমাহার ঘটেছে এবং অসংখ্য ঘটনার উপস্থিতি বইটিকে অনন্য মর্যাদায় উচ্চকিত করেছে। বিশেষকরে এ বইটির ক্ষেত্রে, সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি শোনা যায়, তা হলো⸺‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ কোন প্রকাশনীর টা ভালো? প্রকৃত বাস্তবতা হলো, বাজারে এই একটি বইয়ের অসংখ্য অনুবাদ রয়েছে। তাই একজন সাধারণ পাঠকের পক্ষে সম্ভব নয়, সবগুলো চেক করে নিজের পছন্দেরটা বেছে নেওয়া। এটা খুবই দুরূহ ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। নির্দিষ্ট কোনো একটাকে জোর দিয়ে ভুলশূন্য বলা যায় না; যেখানে মূল বইয়েই কিছু দুর্বল ও অস্পষ্ট বর্ণনা বিদ্যমান। কারণ মানবসৃষ্ট কোনো গ্রন্থই নিখুঁত-নির্ভুল নয়। তবে, যারা ব্যস্ততা, সময়ের অভাব, ধৈর্যচ্যুতি বা অন্য কোনো কারণে, পূর্বে ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ পড়া শুরু করেও শেষ করতে পারেননি, যারা একটু সহজ লেখা পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে, এ বইটি নির্দ্বিধায় সংগ্রহ করা যেতে পারে। অন্তত ভালো বাঁধাই, রুচিশীল প্রচ্ছদ ও অলংকরণ, উন্নত মানের কাগজ, হৃদয়গ্রাহী ভাষা মাধুর্য, তথ্যসূত্র ও প্রোডাকশন কোয়ালিটি ভালো পাবেন⸺পড়তে গিয়ে কোথাও থেমে যেতে হবে না। অক্লেশে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা পড়া যাবে। ◈ অনুবাদ ও সম্পাদনা : কালজয়ী এ বইটি মূল আরবি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করা হয়েছে। বইয়ের প্রথম পাতা থেকে শেষব্দি রিডারকে গ্রিপ করে রাখার মতোই অনুবাদ। শব্দের বাহুল্য বর্জন করে ছোট ছোট শব্দে করা হয়েছে বাক্যবিন্যাস। সত্যি বলতে, অনুবাদ নিয়ে বেশি কিছু বলারও নেই, যেখানে উস্তায আবুল হাসানাত কাসিম ও আল-আমিন ফেরদৌস এর হাতের ছোঁয়া আছে। সাথে আছে আকরাম হোসাইনের দক্ষ সম্পাদনা। শাস্ত্রীয় সম্পাদনায় অবদান রেখেছেন সালমান মাসরুর। সবমিলিয়ে প্রায় ১৫-২০ জনের একটি টিম কাজ করেছে পুরো বইটির পেছনে। বেস্ট সেলার, মাস্টারপিস, মাস্ট রিড বইগুলোর অনুবাদ ভালো হয় না⸺এই অভিযোগ আমাদের দেশে চিরকালের। একটি বইয়ের পেছনে মূল লেখক যতখানি মেহনত করেন; পরবর্তীতে অন্য ভাষায় যিনি রূপান্তর করেন, তাকেও ঠিক ততখানিই সময়, শ্রম ও যত্নের সহিত কাজটি করে যেতে হয়। অক্ষুণ্ন রাখতে হয় সাহিত্যমান। কিন্তু এই কাজটি যথাযথ হচ্ছে না বলেই, মানসম্মত অনুবাদকর্মের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয় শতকরা ৯০% বইতে। আর পেশাগত দক্ষতা ও সম্পাদনার কথা নাই বা বললাম। তবে আশার কথা হলো, ইসলামি বইয়ের প্রকাশনা অঙ্গনে ধীরে ধীরে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটছে। সমকালীনের ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। বইটিতে, আমার সবচেয়ে বেশি যা ভালো লেগেছে, তা হলো, কুরআনের আয়াতগুলোর অনুবাদ। খুবই সহজ ও সাবলীল। আর কাব্যিক দ্যোতনায় অনবদ্য কবিতাগুলোর বঙ্গানুবাদ এককথায় টপনচ। এই বিষয়ে অনুবাদকমণ্ডলী প্রশ্নাতীতভাবে প্রশংসার দাবিদার। বিভিন্ন প্রসঙ্গে উল্লিখিত দুর্বল হাদিসগুলোর মান চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি বা অসংগতি দেখতে পাইনি। বইয়ে সংযুক্ত টিকাগুলো নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্পাদকদের নিকট থেকে পক্ষপাতমূলক কিছু প্রত্যক্ষ করিনি। কয়েক জায়গায় টাইপিং মিসটেক ছাড়া আর কোনো বানান ভুল পাওয়া যায়নি। তবে কিছু বানান প্রকাশনী নিজের মতো করে লিখেছে। যারা সমকালীনের নিয়মিত পাঠক তারা বিষয়টি বুঝতে পারবেন। আর লেখক পরিচিতি বইয়ের শুরুতে দেওয়া উচিত ছিল। বইয়ে ব্যবহৃত ফন্ট সম্ভবত সমকালীনের নিজস্ব কাস্টমাইজ করা, যেজন্য লেখাগুলো ভালো করে ফুটে উঠেছে। ◈ পাঠ প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা : সত্যি বলতে, আমার উড়ু-উড়ু মনাকাশে যখন হুড়মুড়িয়ে কালো কালো মেঘ এসে ভরে যায়, হৃদয় পোড়ার গন্ধ যখন নীল নীল ধূপছায়ায় মিশে যায়⸺তখন মগ্ন হতে ইচ্ছে করে সিরাতের সোনাঝরা পাতায়। ইচ্ছে করে, ক্ষত ডানায় জলরঙের ঢেউ তুলে⸺শত্রুশিবিরের আতঙ্ক, দুঃসাহসী বীরযোদ্ধা আবু দুজানা রাদিআল্লাহু আনহুর মতো লাল পাগড়ি মাথায় বেধে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ি। পরক্ষণেই চলমান বাস্তবতার কথা মনে হলে, বদলে যাই আমি। বদলে যায় সমাজ। তখন চোখের তারায় জ্বলজ্বল করে উঠে দ্বীনবিমুখ একটি প্রজন্মের ছবি। ৭০৪ চার পৃষ্ঠার ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ পড়ে শেষ করতে আমার খুব বেশি সময় লাগেনি। কারণ এর কলেবর খুব বেশি দীর্ঘও নয়, আবার একেবারে সংক্ষিপ্তও নয়। বইয়ের প্রারম্ভে প্রকাশক ও লেখকের কথার পরপরই আছে দীর্ঘ সূচিপত্র। এরপর শুরু করা হয় মূল আলোচনা। বইয়ের প্রথমাংশে মরুময় আরবের তৎকালীন অবস্থা, অবস্থান, গোত্র, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ বিবরণ পেশ করা হয়। সেখানে আরও আলোচিত হয় নবিজির জন্মপূর্ব অবস্থা, বংশ পরিচয়, শৈশব, কৈশোর, বিবাহ, দাম্পত্য ও নবুয়ত পূর্বকালের পরিস্থিতি। বইটার ইউনিক দিক হচ্ছে, এর কাহিনির ধারা বিন্যাস। পর্যায়ক্রমে বইয়ের মধ্য ভাগে উঠে এসেছে দাওয়াতি কাজের লক্ষ্যে ইসলামের প্রচার-প্রসার, কুরাইশ কর্তৃক নানাবিধ জুলুম-নির্যাতন, ইসরা-মিরাজ, মুজিজা ও হিজরতের আখ্যান। মুসলিমদের দাওয়াতি কার্যক্রম ও সামরিক তৎপরতা নিয়ে বিস্তর আলোকপাত করা হয় স্বতন্ত্র অধ্যায়ে। তুলে ধরা হয় নবিজির রাষ্ট্রনীতি, যুদ্ধনীতি, সন্ধি-চুক্তি এবং রক্তস্নাত বদর, ওহুদ ও খন্দকসহ অন্যান্য যুদ্ধের জ্বলন্ত ইতিহাস। বইয়ের শেষ ধাপে মক্কা বিজয়, বিদায় হজসহ নবি জীবনের অন্তিম সময়টাকে নিখুঁত শব্দমালায় চিত্রায়ণ করা হয়। আলোকপাত করা হয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবার-পরিজন এবং তার শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও চারিত্রিক গুণাবলি নিয়ে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন যেন এক বৃহৎ শিক্ষায়তন। জ্ঞানের গভীর উৎস। অন্তহীন বয়ে চলা শীতল ফল্গুধারা। একটি সাদামাটা জীবনের প্রতিচ্ছবি। বইটাতে প্রকাশ পেয়েছে তার দ্যুতিময় ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্ব, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতা। পাশাপাশি উঠে এসেছে, ইসলামকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সাহাবিদের অবিস্মরণীয় ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা। আমৃত্যু ইসলামের জন্য লড়ে যাওয়ার প্রত্যয় দৃশ্যমান হতো তাদের চোখে-মুখে। তাদের কষ্টে ভরা জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতির দাগকে অম্লান করে রাখা হয়েছে সাদা পাতায়। ঘটনা বর্ণনার পাশাপাশি লেখকের বিশ্লেষণ দক্ষতা স্রেফ মুগ্ধ করেছে আমাকে। তথ্যের বিশুদ্ধতা এবং চমৎকার বর্ণনাশৈলীর ফলে, বইটি প্রথমবার পড়লেই, সিরাতের একজন নবীন পাঠকেরও জানা হয়ে যাবে অনেককিছু। আরও জানা যাবে কিছু আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট ও তাফসির। প্রয়োজনানুসারে কয়েক জায়গায় মানচিত্র যুক্ত করা হয়েছে; এতেকরে পাঠসূচি বুঝতে সহজ হয়। মহাকালের মহান ব্যক্তিত্ব রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অধিক বিবাহের প্রসঙ্গ নিয়ে লেখক অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছেন। এর ফলে, নবিজির বিবাহ-সংক্রান্ত বিষয়টি পরিষ্কার হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পুরো জীবনী কেবল একটি বই পড়লেই জানা হয়ে যাবে না। অনেক পাঠক, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ধারণা, ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ এ নবি জীবনের সার্বিক দিক উঠে এসেছে। ফলে, এই বইটার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তাদের সিরাত যাত্রা। প্রকৃতপক্ষে, সামান্য কয়েক পাতায় নবিজির ৬৩ বছরের জীবনটাকে কখনোই তুলে আনা সম্ভব নয়। বস্তুত সিরাতের ঘটনারাজি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন গ্রন্থে। তাই পাঠকমনে সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের পরিপূর্ণ অবয়ব ফুটিয়ে তুলতে চাইলে, অধ্যয়ন করতে হবে একাধিক বই। আবার একনাগাড়ে শুধু পড়ে গেলেই হবে না, থাকতে হবে তার মতো জীবন গড়ার স্পৃহা। ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ পাঠককে আকৃষ্ট করে, নবিজীবনকে আরও বিস্তৃতভাবে খুঁটে খুঁটে দেখতে। মূলত, এখানেই গ্রন্থকার সার্থক। এটিই বইটার বৈশিষ্ট্য। উহুদ যুদ্ধের বিষয়ে বিস্তারিত না জেনেই, অনেকে এর ফলাফল হিসেবে মুসলিমদের পরাজয় বলে গণ্য করে থাকে। এটা একপ্রকার ভুল বৈ আর কিছু নয়। বাস্তবতা হলো, তৎকালীন সময়ে একটি যুদ্ধে নিজেদের জয়ী ঘোষণা করতে হলে, বিজয়ী দলের বেশকিছু নিদর্শন থাকতে হতো। ✲ শত্রু শিবির দখল করা। ✲ যুদ্ধ শেষে ময়দানে তিন দিন অবস্থান। ✲ যুদ্ধবন্দি বা গনিমত লাভ ইত্যাদি। কুরাইশরা যার কোনোটিই করতে সক্ষম হয়নি। উলটো তারা নিজেরাই আগেভাগে ধরেছিল মক্কার পথ। অথচ মুসলিমরা তখনও রণাঙ্গন ত্যাগ করেনি। তবে এ কথা সত্য যে, তুমুল লড়াইয়ের ফলে দু-দলই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল অমীমাংসিত যুদ্ধ। বিষয়টি দারুণভাবে ব্যাখ্যা করেছেন লেখক। মক্কা বিজয়ের প্রভাব, প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল সবিস্তারে আলোচিত হয়েছে বইটিতে। দিগ্বিজয়ী সামরিক শক্তি বা বৃহৎ কোনো জনগোষ্ঠীর সমর্থনে ইসলামের বিজয় অর্জিত হয়নি; সাফল্য এসেছে কেবলই আল্লাহর সাহায্যে। মুসলিম মানসে এই চেতনাবোধটুকু জাগিয়ে তোলার জন্য⸺লেখক কলম চালিয়েছেন শান্ত গতিতে। আফসোস, মুসলিমদের গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলি এখন কেবলই অতীতের ফ্রেমে বাঁধা। চলমান সংকট মোকাবেলায় মুসলিম উম্মাহর উচিত, একনিষ্ঠভাবে সালাফদের পথ অনুসরণ করা। নব্য আবিষ্কৃত পথ বা পদ্ধতি ইসলামকে শুধু পেছন দিকেই টেনে রাখবে। সম্পূর্ণ বইটি পড়ে একটি বিষয় খেয়াল করেছি⸺নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো কাজে মদিনার বাইরে যেতেন, তখন তিনি একেক সময়ে একেক জনকে দ্বায়িত্ব দিয়ে যেতেন। একই ব্যক্তিকে দুইবার দায়িত্ব দিয়েছেন কি-না জানা নেই। কিন্তু নবিজির এমনটি করার কারণ কী ছিল! বিষয়টি নিয়ে ভেবেছি অনেকক্ষণ৷ ভেবে ভেবে কোনো কূলকিনারা পাইনি। নবিজীবনের সাঁজবেলার অংশটুকু হৃদয়তন্ত্রীতে গভীর অনুরণন তুলে। অদ্ভুত ঘোরলাগা, ব্যথাতুর ও বিয়োগান্ত হয়ে ওঠে সমাপ্তির পাতাগুলো। চোখের কোটরে অশ্রুরা গড়ে তুলে দুঃখনদী। বিষণ্নতায় মোড়ানো প্রতিটি লাইন মানে বৃষ্টির মরসুম। চৈতালি বাতাসে নীরব বেদনার ঘ্রাণ। এ এক অদৃশ্য সুতোর টান। নবিপ্রেমের এমন মুগ্ধকর অমৃত স্বাদ ও তীব্র অনুভূতি সৃষ্টিকারী বলেই সিরাত প্রেমীদের পাঠস্মৃতিতে সবসময় সমুজ্জ্বল হয়ে থাকে ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’। মনে গেঁথে যায় দ্বীন ইসলামের বিশুদ্ধ চিন্তাধারা। হৃদয় চিড়ে বয়ে যায় প্রিয়তম রাসুলের প্রতি স্নিগ্ধ অনুরক্তির ঝরঝর নির্ঝরণী। ◈ সারকথা : ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ এমনভাবে সংকলন করা হয়েছে যে, সব শ্রেণীর পাঠককেই নিশ্চিতরূপে উপকৃত, উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করবে। অভিনিবেশ সহকারে বইটা অধ্যয়ন করলে, ইসলামকে আতসকাঁচে দেখার অন্তর্চক্ষু তৈরি হয়। বেদনামথিত ঘটনাগুলো পড়লে, বুকের ভেতরে উথলে ওঠা কষ্ট নিমিষেই দূর হয়ে যায়। বিজয়ের ঘটনায় আছে, মন ভালো করার মতো সঞ্জীবনী শক্তি; কোমল হৃদয়কে স্পর্শ করার ক্ষমতা। ছন্নছাড়া, গন্তব্যহীন, গতিহীন জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তুলতে সিরাত চর্চার বিকল্প নেই। বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগানো, সিরাতের এই স্মারক গ্রন্থটি প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া এবং নিজের ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্য বেস্ট চয়েজ হতে পারে। দৈনিক পাঠ্যসূচির একটি অংশেও রাখা যেতে পারে বইটি। একঝলকে শেষ নবি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনদর্শন জানতে ও বুঝতে হলে, সমকালীনের ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ (মোহরাঙ্কিত সুধাময় জীবন) সবার পাঠ্য হওয়া উচিত। . . মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ . . ◈ একপলকে বইটি⸺ ◈ বইয়ের নাম : আর-রাহিকুল মাখতুম ◈ লেখকের নাম : শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি রাহিমাহুল্লাহ ◈ প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন ◈ পৃষ্ঠা : ৭০৪ ◈ কভার : হার্ড কভার ◈ সংস্করণ : প্রথম প্রকাশ, ডিসেম্বর ২০২৩ ◈ মুদ্রিত মূল্য : ৮৫০ টাকা। ⸺অনুবাদক : উস্তায আবুল হাসানাত কাসিম, আল-আমিন ফেরদৌস, উস্তায রিফাত মাহমুদ, মুহাম্মাদ ফয়জুর রহমান ⸺সম্পাদক : উস্তায আকরাম হোসাইন, নেসার উদ্দিন রুম্মান, যাহিদ আহমাদ ⸺শারয়ি নিরীক্ষণ : মুফতি সারোয়ার হোসাইন, মুফতি সালমান মাসরুর, আবুল হাসানাত কাসিম, আসাদুল্লাহ ফুয়াদ ⸺বানান ও ভাষারীতি : ওমর আলফারুক, মাহবুবুর রহমান, মুজিব হাসান, নাহিদুজ্জামান শাকিল .