User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
খুবই মনোমুগ্ধকর একটি উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah oboseshe boi hate peye gelam.Khub valo lagse
Was this review helpful to you?
or
এইসব দিনরাত্রি অতি সাধারণ একটি যৌথ পরিবারের প্রতিদিনের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, ব্যর্থতা ও বঞ্চনার গল্প। বইটিতে আছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সর্বসহা বৌমা নীলু, তার রোবট টাইপের স্বামী শফিক, আবেগী ও রূপবতী ননদ শাহানা, ভবঘুরে বেকার দেবর রফিক যে সবসময় কিছু না কিছু নিয়ে ব্যস্ত, শ্বশুর হোসেন সাহেব সাদামাটা এবং সর্বদা উৎফুল্ল একজন মানুষ যিনি হোমিওপ্যাথি নিয়ে মশগুল এবং রাগী ক্যাটকেটে শ্বাশুড়ি মনোয়ারা। আর পাঁচটা শ্বাশুড়ীদের মতো তারও একমাত্র কাজ পুত্রবধূর ত্রুটি বের করা কিন্তু মনে মনে তিনি নীলুকে প্রচন্ড ভালোবাসেন। এছাড়া আছে বাড়িওয়ালা এবং তাদের মেয়ে বীণা, বাড়ির ছাদের চিলেকোঠায় থাকা আনিস নামের এক ভবঘুরে যুবক যার ঝোঁক ম্যাজিকের দিকে। আছেন কবির মামা যিনি সুখী নীলগঞ্জ প্রজেক্ট শুরু করারর চেষ্টা করছেন। এটি হুমায়ুন আহমেদের বহুল আলোচিত বইয়ের একটি। সেই অনুপাতে যতটা ভাল লাগার কথা আমার লাগে নি। এর মানে খারাপ লেগেছে তা বলছি না। তবে হুমায়ুন আহমেদ মানেই তো প্রত্যাশার চূড়ান্ত। সেইদিক বিবেচনায় মনে হয়েছে বই শেষে অনুভূতিটা কেমন যেন মিশ্র ছিলো। অনেক বেশি যে খারাপ লেগেছে তাও বলবো না। আবার অনেক খারাপ লেগেছে সেটাও না। প্রিয় কিছু লাইনঃ "যারা সুখী হয় তাদের মধ্যে সুখী হবার বীজ থাকে। জল, হাওয়া এবং ভালোবাসায় সেই বীজ থেকে গাছ হয়।" "একজন মানুষের অনেকগুলি চেহারা থাকে। একটি চেহারার সাথে অন্য চেহারার কিছুমাত্র মিল থাকেনা।" "আমরা যাদের পছন্দ করি, তাদের কড়া কথাও আমাদের ভালো লাগে।" “বিয়ে করার জন্য দরকার হাসি খুশি ধরনের একটি মেয়ে, যে খুব রাগ করবে আবার পরমুহূর্তেই সবকিছু ভুলে হেসে ফেলবে। রাত ১ টার সময় ছাদে উঠে বৃষ্টিতে ভিজতে যার আপত্তি থাকবেনা।” "সূর্যোদয় দেখাটা অত্যন্ত জরুরী। এই দৃশ্যটি মানুষকে ভাবতে শিখায়। মন বড় করে।"
Was this review helpful to you?
or
উচ্চবিত্ত পরিবার নিয়ে লিখা থাকলেও গল্পের আসল আকর্ষন একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে ঘিরে যেখানে সুখ দু:খ সব কিছুই আছে। গল্পটি বেশ বড়, খুবই সাধারন কিন্তু খুবই ভাল লাগার মত একটি গল্প। হুমায়ূন আহমেদ কোন যাদু বলে মানুষকে নিজের গল্পে এমন আকর্ষিত করতে পারে আমার জানা নেই। তবে বইটি পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল আমি নিজেই ঐ পরিবারের একটি সদস্য। এই গল্প কখনো শেষ হবার নয় এটি এমন একটি গল্প যা অবিরাম চলতেই থাকে…
Was this review helpful to you?
or
এটি এক একান্নবর্তী পরিবারের গল্প, যেখানে স্বামী , স্ত্রী , মামা শশুর, শাশুড়ি ইত্যাদি অগুনতি চরিত্র মনে রাখা কিছুটা কষ্টকর ই বটে। হুমায়ুন আহমেদ মানেই জীবন ঘনিষ্ট গল্প। এ পরিবারের কর্তাটি বেশ ভালো মানুষ , একটু স্বল্পভাষী। তার স্ত্রী সংসারের হাল ধরতে চাকরি শুরু করেন। স্ত্রী র দেবর আর ননদের সাথে ও সম্পর্ক বেশ। তবে এ পরিবারটি ঠিক অর্থনৈতিক ভাবে অতটা উপরে নয় , কখনো কখনো ভাত দিয়ে খাবার ডিম্ ভাজা ও থাকেনা। অনেক রকম ঘটনার মধ্যে দিয়ে গল্প এগিয়ে চলে ,আর পাঠক কে দেখায় জীবনের নানা টানা পড়েন। রিভিউ তে গোটা গল্পটি দিয়ে মজা নষ্ট করতে চাইনা। গল্পটি অসম্ভব ভালো বলেই আশির দশকে এই গল্পটি নিয়ে দর্শক নন্দিত একটি নাটক নির্মিত হয়েছিল। এ উপন্যাসের শেষে শিশু চরিত্র টুনি রমৃত্যু আমাকে খুব কষ্ট. দিয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের লেখা অন্যতম সেরা বই। এক পর্যায়ে কাদতে বাধ্য হয়েছি
Was this review helpful to you?
or
Very good
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালোএকটাবই
Was this review helpful to you?
or
Best book
Was this review helpful to you?
or
Family melodrama, a little bit of romance, and regular life issues are portrayed excellently.
Was this review helpful to you?
or
Ei Shob Din Ratri firstly is a popular novel by Humayun Ahmed, secondly, a Bengali Family-Drama in 1985 aired on BTV. Ei Sob Din Ratri tells the story of a middle-class combined family, lived in Dhaka. The novel is portrayed with the happiness, love, marriage, deaths, and troubles of a middle-class family in Bangladesh. The story ends with the death of a young girl called "Tuni". Tuni had been suffering a life-threatening disease called Leukemia. At last, the little girl dies. The family gets a shock. It is covered by a dark shed of melancholy. Many viewers of the serial requested Humayun Ahmed to bring the character "Tuni" to the life. But Ahmed stood on his decision. Ei Sob Din Ratri gained huge popularity both as novel and drama. Still, now this book is being read by the readers of Bangladesh as they find themselves in the story of a middle-class family.
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
Awesome
Was this review helpful to you?
or
চলমান কাহিনী পড়েছেন কখনো? যেসব কাহিনী লেখা কখনোই শেষ হওয়ার নয়। এরকম একটি বই বলা যায় হুমায়ূন আহমেদের ’এইসব দিনরাত্রি’। প্রথমেই বলে রাখি, এই বইটিতে নেই সুড়সুড়ি দেওয়া হাসি, নেই চোখে পানি নিয়ে আসা ট্রেজেডি; শুধুমাত্র একটি অতি সাধারণ বাঙালি পরিবারের একটি কাহিনী আপনাকে এমনভাবে টানবে যে আপনি বুঝতেও পারবেন না কখন যে বই শেষ হয়ে গেল। আর শেষ হওয়ার পরও মনে হবে - “শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ”।
Was this review helpful to you?
or
এইসব দিনরাত্রি । একটি সৃষ্টি একজন হুমায়ূন । বইটি পড়ার শুরুতে ব্যাক্তিগত ভাবে তেমন আগ্রহ পাই নি । তবে অই যে কথায় আছে নাহ নদীর জল গড়ায় তত রঙ বদলায় । মধ্যবিত্তের জীবন ও তাই । একটি মধ্যবিত্তের পরিবারের সুখ দুঃখ,হাসি কান্না, আনন্দ বেদনার এক অপূর্ব লেখনী এইসব দিনরাত্রি । জীবনেরর পছন্দ চাওয়া পাওয়া না পাওয়ার হতাশা ফুটিয়ে তুলেছেন লেখকের অসামান্য প্রতিভায় । মুধ্যবিত্তের জীবন শুরু হয় দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে মাঝে চাওয়া পাওয়া নানা হিসাব পাওয়া না পাওয়ার কষ্ট আর শেষ হয় মেনে নিয়ে । মাঝ থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক ভালো ভাবে মনোযোগ নিয়ে শেষ করেছি । অনেক আগে পড়া শেষ করার জন্য চরিত্র গুলোর নাম মনে নেই তাই বর্ননা করা হলো না ।
Was this review helpful to you?
or
বইঃ এইসব দিনরাত্রি লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ। "এইসব দিনরাত্রি" হুমায়ূন আহমেদ সাঁরের একটি অসাধারণ উপন্যাস। বইটি পড়তে ভালো লাগে। একাধিকবার পড়া হয়েছে তবুও ভালো লাগে। জানিনা এটি হুমায়ূন আহমেদের লেখার কারণে নাকি লেখনীর মাধুর্যের কারণে। এমন একটি উপন্যাস কারো খারাপ লাগার কথা না।
Was this review helpful to you?
or
নিঃসন্দেহে আমার পড়া হুমায়ুন আহমেদ এর লেখা সবচাইতে প্রিয় বই এটা। আমি বইটা যতবার পড়ি প্রতিবার নতুন করে ভাল লাগে প্রতিটা চরিত্রকে। মমতাময়ী নীলুকে অসাধারণ লাগে, রফিক আর শারমিনের প্রেম আর সম্পর্কের টানাপােড়ান, শাহানার বিচিত্র মনােভাব, মামার পাগলামাে আর সব ছাপিয়ে ছােট্ট টুনী সবকিছুই যেন বইটাকে অসাধারণ করে তুলেছে।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের অন্তরের তলানিতে তলিয়ে থাকা কিছু গভীর কষ্ট আছে। যে কষ্ট কাউকে বলা যায় না, পড়ানো যায় না। কিন্তু মাঝেমধ্যে তা নেড়েচেড়ে দেখতে আমরা ভালোবাসি। সেই কষ্টগুলো হৃদয় গহীন থেকে তুলে আনে 'এইসব দিনরাত্রি'র মতো উপন্যাস। নীলু মধ্যবিত্ত পরিবারের বউ। শ্বশুর - শ্বাশুড়ি, স্বামী, দেবর, ননদের একান্নবর্তী পরিবারে নীলুই চালিকাশক্তি। শ্বাশুড়ি মনোয়ারা উঠতে বসতে যেমন খুঁত ধরেন, তেমনি গোপনে মন থেকে তার লক্ষী বৌমাকে আশীর্বাদও করেন। মনোয়ারার সারাদিনের কটুক্তিকে আড়াল করেন নীলুর ভালোমানুষ শ্বশুর, হোসেন সাহেব। স্বামী সফিক স্বল্পভাষী - আত্মকেন্দ্রিক, মাসের শুরুতে সংসারের টাকাটা মনোয়ারার হাতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত যার কর্তব্য। ননদ শাহানার যা কিছু ছেলেমানুষী সমস্যা, দেবর রফিকের আবদার - সব কিছু নীলুর কাছেই। এদের নিয়ে নীলুর গোছানো সংসার। বিয়ের পাঁচ বছর পর, নীলুর কোল আলো করে আসে টুনি। এদের জীবনে আরো এসে উঁকি দিয়ে যান কবির মামা, সুখী নীলগঞ্জের স্বপ্নে বিভোর একজন মানুষ। রয়েছে বাড়ির ছাদের ঘরে বাস করা আশ্রিত আনিস, তার ইচ্ছা বড় ম্যাজিশিয়ান হবে। মনের ভিতরে সে গোপন করে রেখেছে এক কিশোরীর তীব্র আবেগ। পড়ালেখা শেষ করা বেকার রফিক তার ভালোবাসার নীলপদ্মগুলো রেখে এসেছে কোটিপতির সন্তান শারমিনের কাছে, নিজেও সে জানে না কেন ফিরে ফিরে যায় মেয়েটির বসার ঘরে। জীবন কি আর এতো সরলরেখায় চলে? হাসি-কান্নার সংসারে ঝড়ও আসে। সফিকের আয়ে বিশাল সংসার আর চলে না। আটপৌরে গৃহবধূ নীলু পা বাড়ায় বাইরের জগতে, একটু স্বাচ্ছন্দ্যের খোঁজে। কিন্তু সুখ নামের সোনার হরিণ কি সহজে ধরা দেয়? সেই নব্বই দশকের গল্প 'এইসব দিনরাত্রি'। তখনকার কথা, যখন মেয়েদের তাস খেলতে, রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে দেখলে চোখ কপালে উঠতো। যখন সংসারের ভার হালকা করার জন্য চাকরি করতে যাওয়াটা নীলুর জন্য ছিল বিশাল বিপ্লব। কিন্তু সমাজ কি খুব বদলেছে? স্বামীর দেওয়া হাত খরচ থেকে মা'কে টাকা পাঠানোর গঞ্জনা, একবেলা শ্বাশুড়ির অনুমতি ছাড়া পোলাও রেঁধে ফেলার ধৃষ্টতা, কর্মস্থল থেকে একদিন ফিরতে দেরি হয়ে যাওয়ার অপরাধ বা অসাবধানতার জন্য সন্তানকে মশার কামড় খাওয়ানোর মতো অপবাদ নীলুরা আজ অবধি বয়ে বেড়াচ্ছে। তবু প্রতিটি অশ্রুকণা আর দীর্ঘনিশ্বাস গোপন করে প্রবল মমতায় এতোগুলো মানুষের মুখের হাসি আগলে রাখার যুদ্ধ করে যায় নীলু। এই সমাজে এখনো অভাব রয়েছে একজন কবির মামার। গ্রামে সবাই যাঁকে জানে 'পাগলা মাস্টার'। নীলগঞ্জ গ্রামকে উন্নত করে তুলবেন, এই স্বপ্ন নিয়ে প্রাক্তন ছাত্রদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেন। কেউ মূল্যায়ন করে, কেউ করে না। তবু কবির মামা তাঁর সবটুকু আয়ু নিঃস্বার্থে লিখে দিয়েছেন অন্যের জন্য। স্বপ্ন কতটা সফল হয়েছে, সে প্রশ্ন অবান্তর। একসময় যে গভীর আত্মতৃপ্তির সাথে বলতে পেরেছেন তিনি 'জীবনটা তাহলে একেবারে নষ্ট হয়নি।' সংসারী জীবনটা কি নীলুর মতো হওয়া উচিত? যে সকলের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে দিনশেষে টুনিকে বুকে জড়িয়ে হিসেব কষে অদেখা সুখ-দুঃখের। অথবা বন্যার মতো, স্বাধীনতার খোঁজে চলেছিল, চলতে চলতে সব সম্পর্ক হারিয়ে ফেলেছে যে। নাকি রফিকের মতো নিজের জন্য, সাফল্যের পিছে ছুটে বাঁচা উচিত? কিন্তু রফিক যে হাসতে ভুলে যাচ্ছে! হয়তো বা শারমিনের মতো মেনে নেওয়াই কি ভালো 'সুখী হওয়ার ক্ষমতা সকলের থাকে না, যারা সুখী তাদের মধ্যে সুখের বীজ থাকে।' 'এইসব দিনরাত্রি' উপন্যাসটি খুব সহজ ভাষায় বলে যেতে থাকে আশা ও ব্যর্থতার গল্প। কিছু পেতে গেলে কিছু হারাতেও হয়, জীবনের এই চিরন্তন পাঠ পড়িয়েছেন লেখক। আনন্দ-বেদনার সংসারে কেউ আসে, কেউ চলেও যায়। কিছুই থমকে থাকে না, শূন্যস্থান প্রকৃতি পূর্ণ করে দেয়। অমঙ্গলের ছোঁয়া কাটিয়ে মঙ্গলবার্তা আবারো আসে চক্রাকারে, কিন্তু শূণ্যস্থান কি একেবারে পূর্ণ হয়? নাকি সুখের বীণার ফাঁকে ফাঁকে বেজে যায় বিষাদের সুর? বইঃ এইসব দিনরাত্রি লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনায়ঃ অনন্যা প্রকাশকালঃ ১৯৯০ পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩১১ বর্তমান মূল্যঃ ৩৪০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউঃ এইসব দিনরাত্রি কোনদিন যদি আলাদীনের দৈত্য এসে জিজ্ঞেস করতো "আমার তিনটি ইচ্ছা কি?" আমি বলতাম- তিনটি নয়, আমার একটি মাত্র ইচ্ছা আছে। আর সেটা হল আমি আমার সারা জীবনের বিনিময়ে "এইসব দিনরাত্রি"র মতো একটি উপন্যাস লিখতে চাই।কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল-আলাদীনের দৈত্য আমাদের কাছে আসে না,আসে হুমায়ূন আহমেদদের কাছে।তাদের আবার কৃপণের মত শুধু তিনটি করে ইচ্ছা পূরণ করে না,করে অনেক।আর তার ফলেই তাদের কাছ থেকে আমরা পাই অসাধারণ সব লেখা যেগুলো পড়ে আমরা হাসি,আমরা কাঁদি,সংসারের যাঁতাকলে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়ে জীবনিশক্তি ফিরে পাই,ফিনিক্স পাখির মতো পুনর্জন্ম হয় আমাদের।"এইসব দিনরাত্রি" তেমনই একটি বই।বইয়ের শুরুতে প্রকাশক লিখেছেন "এইসব দিনরাত্রি" মধ্যবিত্ত জীবনের সাধারণ হাসি-কান্নার গল্প।কিন্তু এ তো সাধারণ নয়।একটা "অ" আছে সামনে-অসাধারণ। আমি যতবার "এইসব দিনরাত্রি" পড়ি,পড়ে ভাবি-যদি রফিক-সফিকের বাবার মতো আমার বাবা হতেন! অসুখক-বিসুখ হলে নিজেই হোমিওপ্যাথি করে "আর্নিকা টু" নিয়ে হাজির হতেন।নিয়ম মেনে "আর্নিকা টু" খেতাম আর তার গুণাবলী শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যেতো।অসুখ হয়তো ভালো হতো না কিন্তু প্রাণ খুলে হাসতে পারতাম।বই পড়েই যে হাসি হেসেছি,সত্যিই যদি কেউ চোখের সামনে "আর্নিকা টু" নিয়ে নাচানাচি করতো তাহলে আমার যে কি অবস্থা হতো কে জানে! হয়তো হাসতে হাসতে এমন অবস্থা হতো যে লোকে আমার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত আর আমার আব্বা নতুন উৎসাহে কেস হিস্ট্রি ঘাটতে ঘাটতে "কেরিমিন ফাইভ হান্ড্রেড" নিয়ে হাজির হতেন(ঔষধের এই নামটি আমার বানানো,দয়া করে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না)। মাঝে মাঝে ভাবি,যদি "মাস্টার মামার" মতো আমিও এরকম একজন মহাপুরুষের দেখা পেতাম যার পাশে বসলেও পুণ্য হয়,মন পবিত্র হয়।সারাজিবন এমন এক জীবন কাটিয়ে যাই যেখানে সেই জীবনে নিজেকে নিয়ে ভাববার সময় নেই। যেমনটি হতে পেরেছিল নীলু, সফিকের স্ত্রী। রফিকের ভাবী। কিন্তু সেসব কেবল স্বপ্নেই আসে,বাস্তবে না।হুমায়ূন আহমেদ তাঁর উপন্যাসে এমন কিছু চরিত্র সৃষ্টি করেছেন যা কেবল তাঁর উপন্যাসেই বিদ্যমান।উনি নিজেও হয়তো এরকম কারও দেখা পান নি কিন্তু এরকম কারও সাহচর্য প্রত্যাশা করেছেন।তাই বাস্তবে না হলেও উনার লেখনীর মধ্য দিয়ে উনি উনার পাঠকদের সেরকম কিছু অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ আমার চিন্তা চেতনার ভিত্তিমূল এমন ভাবে নাড়িয়ে দিয়েছেন যে আমি এখন সোজাভাবে আমার মতো করে কিছু ভাবতে পারি না।নতুন কোন কিছুর মুখোমুখি হলে নিজের মতো চিন্তা করা বাদ দিয়ে ভাবি এরকম ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদের অমুক চরিত্র কি ভাবতো বা কি করতো?নিজের অজান্তেই সেরকম করেই কাজ করা শুরু করি।এতে পরিচিত মহলে প্রায়ই হাসির পাত্র নতুবা কৌতূহলের খোরাক হই।হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ চরিত্রই রসিকতায় পারদর্শী হওয়ায় আমার ঐদিক টি বেশি উন্নত হয়েছে।রফিকের মতো যেখানে সেখানে রসিকতা করতে গিয়ে মাঝে মাঝে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।কিন্তু তাতে কি?আমার একটা দিন যাবে,আরেকটা রাত্রি আসবে কিন্তু সেখানে "এইসব দিনরাত্রির" কোন চিহ্ন থাকবে না তা কি হয়? অনেক হাসি তামাশার কথা বললেও "এইসব দিনরাত্রির" মূল সুরটি কিন্তু বিষাদের-এবং এর জন্যই কিন্তু "এইসব দিনরাত্রি" আমার এতো প্রিয়।কেননা আমাদের মধ্যবিত্তদের প্রাত্যহিক জীবনে সুখের স্থানই বা কতোটুকু?হুমায়ূন আহমেদ পাঠকদের এই মানসিকতা বুঝতেন বলেই হয়তো বিষাদের সুরে এমন কিছু উপন্যাস লিখে যেতে পেরেছন যেগুলো পড়লে হাসতে হাসতে বার বার চোখ মুছতে হয়। বুকের ভেতরের জমানো সেই কবেকার দুঃখ কষ্ট গুলো হাচড়ে পাছড়ে গলা দিয়ে চোখ দিয়ে বের হতে চায়।"এইসব দিনরাত্রি" আবার তাদের মাঝে লিডিং পজিশনে। কেউ যদি আমাকে আমার পড়া সেরা তিনটি উপন্যাসের নাম জিজ্ঞেস করে তবে "এইসব দিনরাত্রি" কে আমি দু' নম্বরে স্থান দেবো।মধ্যবিত্ত জীবনের আশা-আনন্দের গল্প বলে এক থেকে তিন এই ক্রমিকের মাঝখানেই স্থান দিলাম। হা....হা.......হা। কবি জীবনানন্দ দাস কে কিন্তু একটি ধন্যবাদ দিতেই হয়।"এইসব দিনরাত্রি" নামে তিনি যে কবিতা টা লিখেছিলেন সেটা যেকোনো কবির কাছেই আরাধ্য।হুমায়ূন আহমেদ হয়তো তাঁর প্রিয় কবির কবিতাটার সাথে পাল্লা দিয়ে "এইসব দিনরাত্রি" উপন্যাসটি লিখেছিলেন। ফলাফল? কেহ কারে নাহি ছাড়ে, সমানে সমান। বইয়ের রিভিউ কীভাবে লেখে আমি জানি না,কোন শর্ত বা নিয়ম মেনে লিখতে হয় কি না তাও জানি না।শুধু জানি "এইসব দিনরাত্রি" পড়ার সময় যে ভয়াবহ মুগ্ধতা আমাকে গ্রাস করেছিল তা কেবল কালির কলমে ধরতে চেয়েছি যদিও সেটা কখনোই সম্ভব নয়।
Was this review helpful to you?
or
আমার প্রিয় উপন্যাস গুলোর মধ্যে এটি খুবই দারুণ।।।বার বার পড়লেও আরও পড়তে ইচ্ছে হয়।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা উপন্যাস। বইয়ের শেষ দিকে মন খারাপ এবং মন ভালো করা অনুভূতি হয়েছে। নীলুর ব্যাপার টা ভালো লাগেনি, এতো অহংকার থাকা ভালো না। শুধু মাত্র তার ইগোর কারনে মেয়ের মৃত্যুর সময় মেয়ের পাশে থাকা হলো না তার। শারমিন মেয়ে টাকে খুব বোকা মনে হয়েছে আমার
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু বই আছে যেগুলো ঠিক শেষ মুহূর্তে মনকে উলটপালট করে দেয়। এইসব দিনরাত্রি ঠিক এরকমই একটা বই। আমি আসলে বুঝাতে পারবো না, কিন্তু পড়ে শেষ করা মাত্রই একই সাথে মন ভালো এবং খারাপ হয়েছে। হুমায়ুন আহমেদের শ্রেষ্ঠ লেখাগুলির মধ্যে এটা নিঃসন্দেহে খুব উপরের দিকেই থাকবে। কত সাধারণ অথচ অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
গল্প শুরু হয়েছিল নীলু নামের এক মেয়েকে নিয়ে। যে মেয়েটি নিজের আবেগকে আড়ালে নিয়ে একটা পরিবার সামলায়। এক উদ্ভট মধ্যবিত্ত পরিবার, প্রতিটি চরিত্রই পাঠকের চেনা মনে হবে। হুমায়ূন আহমেদের লেখাগুলো যারা নিয়মিত পড়েছেন তারা এই উপন্যাস পড়ার সময় সামনে কি ঘটবে তা নিমিষেই বলে দিতে পারবেন। সাধারণ প্লট, চিরচেনা চরিত্রদের নিয়ে লেখা এ উপন্যাসও পাঠকের মনে যদি দাগ কাটতে পারে, তাহলে সেটা হবে হুমায়ূন আহমেদের অনবদ্য বর্ণনার কারণে। এর বর্ণনা এতটাই সুনিপুণ যে পাঠক সহজেই উপন্যাসের ভেতর ডুবে যেতে পারবেন নিজের অজান্তেই।
Was this review helpful to you?
or
মনে হয় এর চেয়ে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ভালো এইখানে- পৃথিবীর এই ক্লান্ত এ অশান্ত কিনারের দেশে এখানে আশ্চর্য সব মানুষ রয়েছে। এইসব দিনরাত্রি একটি একান্নবর্তী পরিবারের সুখ-দুঃখের গল্প। আশা ও আনন্দের,ব্যর্থতা ও বঞ্চনার গল্প। কিছু সাধারণ মানুষের সাধারণ কিছু স্বপ্নের গল্প। ম্যাজিসিয়ান আনিস স্বপ্ন দেখে একটি কিশোরীর, কবির মামা স্বপ্ন দেখেন সুখী নীলগঞ্জের। টুনি নামের একটি ছোট মেয়ে সেও স্বপ্ন দেখে। ওরা জোছনা রাতে ছাদে বসে গান গায়- আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে। কোন বনের কথা বলে তারা? কোথায় সেই গভীর অরণ্য ? ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ কি পেরেছেন সেই অরণ্যের সন্ধান দিতে ? ক্লাস ২/৩ এ থাকাকালীন আধোআধো বোধশক্তি নিয়ে বিটিভে বাবা-মায়ের সাথে বসে যখন নাটকটা দেখতাম তখন যদি বুঝতাম শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন স্যারের মাস্টারপিস একটা সৃষ্টির সাক্ষী প্রতিনিয়ত হচ্ছি তাহলে হয়ত আরেকটু অনুভব করার চেষ্টা নিশ্চই করতাম। তবে নাটকটার সাথে বইয়ের মোটামুটি বিস্তর পার্থক্য দেখা যায়। যেমন নাটকে দেখা যায় নীলু তার চাকরি ছেড়ে দেয় পরিবারের সবার মন রক্ষার্থে কিন্তু বাস্তবে (বইয়ে) তা ঘটেনি। অন্যদিকে রহমান সাহেব কে খুব ভাল মানুষ হিসেবে নাটকে উপস্থাপন করা হয়েছিল যদিও মূল বইয়ে উনাকে নিয়ে আহামরি কিছু লেখা নেই। নাটকে শারমিন,রফিক,সফিকসহ সবার চরিত্রেই বেশ পার্থক্য দেখা গেছে মূল বই থেকে। তবুও সেরা তো সেরাই.. তবে আমি একটা কথা প্রবলভাবে বিশ্বাস করি,অভিনেতাদের অভিনয় যেখানে মূলভাবে শতভাগ পৌঁছাতে পারে না ঠিক তখনই লেখক তাঁর লেখনির মাধ্যমে পাঠকের ভাবনার আকাশ পুরোটাই নিজের দখলে কেড়ে নেন। এখানেই তো একজন সেরা লেখকের স্বার্থকতা বিদ্যমান। যাই হোক,আমি খুবই তুচ্ছ ব্যক্তি যার কিনা ঐ কালজয়ী উপন্যাস নিয়ে নির্মিত নাটক নিয়ে মন্তব্য করা একেবারেই সাজে না। তবে নতুন প্রজন্মের অবশ্যই বইটা পড়া উচিৎ এবং সম্ভব হলে নাটকটাও দেখা উচিৎ। যদিও ইউটিউবে এখন আর পুরো নাটকটা পাওয়া যায় না।
Was this review helpful to you?
or
নীলু,সফিক,রফিক,শারমিন,মনোয়ারা,হোসেন সাহেব,শাহানা আর টুনিকে নিয়ে গড়ে ওঠা এক মধ্যবিত্ত পরিবারের আশির দশকের পটভূমিতে লেখা গল্প " এইসব দিনরাত্রি"। চিরাচরিত মধ্যবিত্ত পরিবারের টানাপোড়ানের মাঝে দেখা স্বপ্নের চিত্র লেখক তার জাদুর লেখনিতে কল্পনা থেকে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছেন। খিটখিটে মেজাজের শাশুড়ি, মমতাময় শশুড়,বেকার দেবর রফিক, মেট্রিক পরীক্ষার্থী ননদ শাহানা,স্বল্পভাষী স্বামী সফিক আর মেয়ে টুনিকে নিয়ে সংসার নীলুর। উপন্যাসের শুরু নীলুর কন্যা সন্তান টুনির জন্মের সাথে।সময়ের সাথে এগিয়ে যায় সংসার নামক গাড়ির চাকা ঘোরার গল্প। সংসারের শত খুটিনাটি অশান্তির সাথে হাসিমুখে মানিয়ে নেওয়া দায়িত্ববান নীলু সংসারের প্রয়োজনে কর্মজীবনে প্রবেশ করে। ঘরে বাহিরের সকল দায়িত্ব পালনের মাঝেই নিজের সুখের সন্ধান করে সে। স্বামীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় সংসারকে। লেখাপড়া শেষ করে চাকরীর সন্ধানে ঘুরতে থাকা রফিক ভালোবাসে সহপাঠী শারমিনকে। অন্যদিকে শারমিনের বিয়ে ঠিক হয় প্রবাসী সাব্বিরের সাথে। কিন্তু ঘটনাক্রমে রফিকের সাথেই বিয়ে হয় তার। শাহানা ভালোবাসে ছাদের চিলেকোঠায় বাস করা জাদুকর আনিসকে। স্বপ্ন দেখে আনিসকে নিয়ে ঘর বাঁধার। কিন্তু তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। আনিস স্বপ্ন দেখে একদিন সে বড় জাদুকর হবে।আশায় বুক বেঁধে চলতে থাকে তার জাদুকর হওয়ার প্রচেষ্টা। সংসারের সবচেয়ে প্রাণবন্ত ছোট্ট টুনি দুরারোগ্য " লিউকোমিয়া" রোগে আক্রান্ত হয়ে জার্মানীর এক হাসপাতালে একা একা চলে যায় না ফেরার দেশে। উপন্যাস শুরু হয় টুনির জন্মের মাধ্যমে এবং শেষ হয় টুনির মৃত্যু আর শাহানার সন্তানের অপেক্ষায়। " এইসব দিনরাত্রি " হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় একটি উপন্যাস যার অবলম্বনে ধারাবাহিক নাটক ও প্রচারিত হয়েছে ১৯৮৫-১৯৮৬ সালের দিকে। সংক্ষেপে বলা যায় " এইসব দিনরাত্রি" একটি একান্নবর্তী পরিবারের গল্প। হাসি, কান্না, সুখ, দুখের গল্প। যেখানে আছে আশা ও আনন্দ, ব্যর্থতা আর বঞ্চনা। চরিত্রগুলোে স্বপ্নের গল্প" এইসব দিনরাত্রি"। যেখানে নীলু স্বপ্ন দেখে সুখী সংসারের, হেডমাস্টার কবির মাস্টার স্বপ্ন দেখে সুখী নীলগঞ্জের।বেঁচে থাকারস্বপ্ন দেখে ছোট্ট টুনি। অসাধারণ লেখনি এতে দ্বিমত প্রকাশের কোনো অবকাশ নেই। তবে লেখকের অন্য একটি উপন্যাস " মেঘ বলেছে যাবো যাবো" এর সাথে বেশ কিছু চরিত্র এবং ঘটনাপ্রবাহের সাথে মিল রয়েছে বলে মনে হয়েছে। তবে এটা একান্তই ব্যক্তিগত মতামত।
Was this review helpful to you?
or
কত দিন আসে, দিন যায়। আমার আপনার সবার জীবনেই কত গল্পে ভরপুর তা কখনও ভেবে দেখেছেন কি? এইসব দিনরাত্রি একটি খুব সাধারণ বাঙালি পরিবারের প্রতিদিনের হাসি কান্না, আনন্দ বেদনার গল্প। হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য উপন্যাস এর মত এখানে নাই কোনো শুড়শুড়ি দেওয়া হাসি, তবে আছে অসম্ভব ভালো লাগা।
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুন বইয়ের নাম: এইসব দিনরাত্রি; লেখক: হুমায়ুন আহমেদ প্রকাশক: অনন্যা ধরন:সমকালীন উপন্যাস কোনদিন যদি আলাদীনের দৈত্য এসে জিজ্ঞেস করতো "আমার তিনটি ইচ্ছা কি?" আমি বলতাম- তিনটি নয়, আমার একটি মাত্র ইচ্ছা আছে। আর সেটা হল আমি আমার সারা জীবনের বিনিময়ে "এইসব দিনরাত্রি"র মতো একটি উপন্যাস লিখতে চাই।কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল-আলাদীনের দৈত্য আমাদের কাছে আসে না,আসে হুমায়ূন আহমেদদের কাছে।তাদের আবার কৃপণের মত শুধু তিনটি করে ইচ্ছা পূরণ করে না,করে অনেক।আর তার ফলেই তাদের কাছ থেকে আমরা পাই অসাধারণ সব লেখা যেগুলো পড়ে আমরা হাসি,আমরা কাঁদি,সংসারের যাঁতাকলে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়ে জীবনিশক্তি ফিরে পাই,ফিনিক্স পাখির মতো পুনর্জন্ম হয় আমাদের।"এইসব দিনরাত্রি" তেমনই একটি বই।বইয়ের শুরুতে প্রকাশক লিখেছেন "এইসব দিনরাত্রি" মধ্যবিত্ত জীবনের সাধারণ হাসি-কান্নার গল্প।কিন্তু এ তো সাধারণ নয়।একটা "অ" আছে সামনে-অসাধারণ। আমি যতবার "এইসব দিনরাত্রি" পড়ি,পড়ে ভাবি-যদি রফিক-সফিকের বাবার মতো আমার বাবা হতেন! অসুখক-বিসুখ হলে নিজেই হোমিওপ্যাথি করে "আর্নিকা টু" নিয়ে হাজির হতেন।নিয়ম মেনে "আর্নিকা টু" খেতাম আর তার গুণাবলী শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যেতো।অসুখ হয়তো ভালো হতো না কিন্তু প্রাণ খুলে হাসতে পারতাম।বই পড়েই যে হাসি হেসেছি,সত্যিই যদি কেউ চোখের সামনে "আর্নিকা টু" নিয়ে নাচানাচি করতো তাহলে আমার যে কি অবস্থা হতো কে জানে! হয়তো হাসতে হাসতে এমন অবস্থা হতো যে লোকে আমার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত আর আমার আব্বা নতুন উৎসাহে কেস হিস্ট্রি ঘাটতে ঘাটতে "কেরিমিন ফাইভ হান্ড্রেড" নিয়ে হাজির হতেন(ঔষধের এই নামটি আমার বানানো,দয়া করে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না)। মাঝে মাঝে ভাবি,যদি "মাস্টার মামার" মতো আমিও এরকম একজন মহাপুরুষের দেখা পেতাম যার পাশে বসলেও পুণ্য হয়,মন পবিত্র হয়।সারাজিবন এমন এক জীবন কাটিয়ে যাই যেখানে সেই জীবনে নিজেকে নিয়ে ভাববার সময় নেই। যেমনটি হতে পেরেছিল নীলু, সফিকের স্ত্রী। রফিকের ভাবী। কিন্তু সেসব কেবল স্বপ্নেই আসে,বাস্তবে না।হুমায়ূন আহমেদ তাঁর উপন্যাসে এমন কিছু চরিত্র সৃষ্টি করেছেন যা কেবল তাঁর উপন্যাসেই বিদ্যমান।উনি নিজেও হয়তো এরকম কারও দেখা পান নি কিন্তু এরকম কারও সাহচর্য প্রত্যাশা করেছেন।তাই বাস্তবে না হলেও উনার লেখনীর মধ্য দিয়ে উনি উনার পাঠকদের সেরকম কিছু অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ আমার চিন্তা চেতনার ভিত্তিমূল এমন ভাবে নাড়িয়ে দিয়েছেন যে আমি এখন সোজাভাবে আমার মতো করে কিছু ভাবতে পারি না।নতুন কোন কিছুর মুখোমুখি হলে নিজের মতো চিন্তা করা বাদ দিয়ে ভাবি এরকম ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদের অমুক চরিত্র কি ভাবতো বা কি করতো?নিজের অজান্তেই সেরকম করেই কাজ করা শুরু করি।এতে পরিচিত মহলে প্রায়ই হাসির পাত্র নতুবা কৌতূহলের খোরাক হই।হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ চরিত্রই রসিকতায় পারদর্শী হওয়ায় আমার ঐদিক টি বেশি উন্নত হয়েছে।রফিকের মতো যেখানে সেখানে রসিকতা করতে গিয়ে মাঝে মাঝে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।কিন্তু তাতে কি?আমার একটা দিন যাবে,আরেকটা রাত্রি আসবে কিন্তু সেখানে "এইসব দিনরাত্রির" কোন চিহ্ন থাকবে না তা কি হয়? অনেক হাসি তামাশার কথা বললেও "এইসব দিনরাত্রির" মূল সুরটি কিন্তু বিষাদের-এবং এর জন্যই কিন্তু "এইসব দিনরাত্রি" আমার এতো প্রিয়।কেননা আমাদের মধ্যবিত্তদের প্রাত্যহিক জীবনে সুখের স্থানই বা কতোটুকু?হুমায়ূন আহমেদ পাঠকদের এই মানসিকতা বুঝতেন বলেই হয়তো বিষাদের সুরে এমন কিছু উপন্যাস লিখে যেতে পেরেছন যেগুলো পড়লে হাসতে হাসতে বার বার চোখ মুছতে হয়। বুকের ভেতরের জমানো সেই কবেকার দুঃখ কষ্ট গুলো হাচড়ে পাছড়ে গলা দিয়ে চোখ দিয়ে বের হতে চায়।"এইসব দিনরাত্রি" আবার তাদের মাঝে লিডিং পজিশনে। কেউ যদি আমাকে আমার পড়া সেরা তিনটি উপন্যাসের নাম জিজ্ঞেস করে তবে "এইসব দিনরাত্রি" কে আমি দু' নম্বরে স্থান দেবো।মধ্যবিত্ত জীবনের আশা-আনন্দের গল্প বলে এক থেকে তিন এই ক্রমিকের মাঝখানেই স্থান দিলাম। হা....হা.......হা। কবি জীবনানন্দ দাস কে কিন্তু একটি ধন্যবাদ দিতেই হয়।"এইসব দিনরাত্রি" নামে তিনি যে কবিতা টা লিখেছিলেন সেটা যেকোনো কবির কাছেই আরাধ্য।হুমায়ূন আহমেদ হয়তো তাঁর প্রিয় কবির কবিতাটার সাথে পাল্লা দিয়ে "এইসব দিনরাত্রি" উপন্যাসটি লিখেছিলেন। ফলাফল? কেহ কারে নাহি ছাড়ে, সমানে সমান। এই রিভিউ-এ আমি ইচ্ছে করেই একটা বিষয় এড়িয়ে গেছি। কেন এড়িয়ে গেলাম এবং কি এড়িয়ে গেলাম তা যদি আপনি বইটা পড়ে থাকেন তবে নিশ্চই বুঝতে পারছেন। নয়তো বইটি পড়েতে হবে। বইয়ের রিভিউ কীভাবে লেখে আমি জানি না,কোন শর্ত বা নিয়ম মেনে লিখতে হয় কি না তাও জানি না।শুধু জানি "এইসব দিনরাত্রি" পড়ার সময় যে ভয়াবহ মুগ্ধতা আমাকে গ্রাস করেছিল তা কেবল কালির কলমে ধরতে চেয়েছি, কিন্তু তা আর পারলাম কই?
Was this review helpful to you?
or
ai boi ti khub e valo.moddho bitto familyer sukh dukkho niye lekha ai boi ti Sir HUMAYAN HAMED er onoboddo sristi.
Was this review helpful to you?
or
ইমদাদুল হক মিলনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হুমায়ুন আহমেদ তার “এইসব দিনরাত্রি” বইটি নিয়ে কিছু মজার ঘটনা বলেন। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তা তুলে দেওয়া হলো-----মিলন: এই যে দেশের বাইরে থেকে ফিরেই একটার পরে একটা বই আপনি লিখতে থাকলেন৷ তারপর ‘৮৫-তে আপনি ‘এইসব দিনরাত্রি’ শুরু করেছিলেন৷ একটার পর একটা লেখা, পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করা, এই যে এই অবস্থাটা তৈরি হলো, এর পেছনে রহস্যটা কি বলে আপনার মনে হয়?===হুমায়ূন আহমেদ: এই অবস্থা যে তৈরি হয়েছিল, এই বিষয়টার একটা নরমাল আর একটা আধিভৌতিক ব্যাখ্যা আছে৷===মিলন: আপনি বলেন- আমরা দুটোই শুনি৷===হুমায়ূন আহমেদ: নরমাল ব্যাখ্যা হলো- আমি নাটক লেখা শুরু করলাম৷ আমাদের দেশে নাটকের দর্শক তো অনেক বেশি৷ ‘এইসব দিনরাত্রি’ বহু লোক দেখা শুরু করল এবং এরা মনে করল এই যে লোকটি নাটক লিখছে, তার একটা বই পড়ে দেখি না কেন! তারা বই কিনতে শুরু করল৷ পাঠকদের আমার বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবার পেছনে ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকটা কাজ করেছে বলে আমার নিজের ধারণা৷ একজন নতুন লেখক লিখবে আর সঙ্গে সঙ্গেই তার বই বিক্রি হবে- এটা তো হবার কথা না৷ আমার ধারণা আমার নাটক দেখে লোকজন আগ্রহী হয়েছে, একটা বই পড়ে হয়তো সেকেন্ড বই পড়তে চেয়েছে- এটা হতে পারে৷ আর আধিভৌতিক ব্যাখ্যা যেটা হলো- শহীদুল্লাহ হলে যখন থাকি, তখন একসঙ্গে প্রকাশকদের কাছ থেকে আমি হঠাৎ কিছু বড় অংকের টাকা পেয়ে গেলাম৷ ২৫-৩০ হাজার টাকা৷ সেই সময় ২৫-৩০ হাজার টাকা অনেক টাকা৷ বই বিক্রির টাকা৷ তখনো বই লেখা বাবদ অ্যাডভান্স দেয়া শুরু হয়নি৷ যেহেতু টাকা পেয়েছি, আমার খুব হাত উশখুশ করছিল টাকাটা খরচ করার জন্য৷ কাজেই করলাম কী গুলতেকিন এবং বাচ্চাদের নিয়ে গেলাম ইন্ডিয়াতে৷ এই টাকা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশ ভ্রমণ হবে এই হলো পরিকল্পনা৷ প্রথমে গেলাম নেপালে, নেপাল থেকে দিলিস্ন৷ ভাবলাম এত কাছে যখন এলাম মরুভূমি দেখে যাই৷ জয়সলমীরের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম৷ জয়সলমীরের পথে পড়লো আজমীর শরীফ৷ এত নাম শুনেছি- পথে যখন পড়লই তখন ভাবলাম যে, আজমীর শরীফ দেখে যাই৷ আজমীর শরীফ গেলাম৷ আমার সবচেয়ে ছোট মেয়েটি, বিপাশা, সে খুবই বিরক্ত হয়ে গেল; বলল- কোথায় নিয়ে এলে? চারদিকে ফকির৷ ফকিরে ভর্তি জায়গাটি৷ বিপাশার বয়স তখন তিন সাড়ে তিন; আমি তাকে বোঝালাম যে, এখানে একজন অতি বড় সাধু মানুষের কবর আছে৷ এখানে এলে আল্লাহর কাছে যা চাওয়া যায়, তা পাওয়া যায়৷ দেখা গেল যে, এই কথা শুনে মানসিকভাবে সে স্বস্তি বোধ করলো৷ তখন তাকে নিয়ে গেলাম কবর জিয়ারত করতে, জিয়ারত শেষ করে চলে আসবো, দেখি বিপাশা দাঁড়িয়ে৷ ব্যাপার কী? বিপাশা বলল, আমি যেটা চেয়েছি সেটা তো পাইনি৷ না পেলে যাব না৷ আমি বললাম, মা, তুমি কী চেয়েছ? বিপাশা বলল, আল্লাহর কাছে আমি এক হাজার বস্তা টাকা চেয়েছি৷ এই টাকা না পাওয়া পর্যন্ত এখান থেকে আমি যাব না৷ করবস্থানের পাশে রেলিংটা ধরে সে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো৷ আমি ও তার মা তাকে নিয়ে টানাটানি করতে লাগলাম৷ না, সে এ জায়গা ছেড়ে নড়বে না৷ এদিকে বাংলাভাষাভাষী কিছু লোক ছিল, তারা খুবই মজা পেয়ে গেল৷ একটি মেয়ে এক হাজার বস্তা টাকা আল্লাহর কাছে চাইছে, না পাওয়া পর্যন্ত সে যাবে না- এটা তো মজার বিষয়ই৷ তখন বিপাশাকে বোঝালাম যে, এখন টাকাটা পেলে বরং সমস্যা হবে৷ এতগুলো টাকা দেশে নিয়ে যেতে হবে৷ কান্নাকাটি না করে চলো দেশে যাই৷ দেশে গেলে টাকাটা পেয়ে যাবে৷ অবশ্যই পাবে৷ আমরা দেশে ফিরে এলাম৷ আসার পর পরই জলের মতো হুহু করে টাকা আসতে লাগল৷ কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে লেখালেখি করে বিপুল অর্থ উপার্জন আপনি কীভাবে করলেন? আমি বলি, আমার ছোট মেয়ে বিপাশার কারণে করেছি- এখানে আমার কোনো হাত নেই৷