User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৩ মাস: আগস্ট সপ্তাহ: তৃতীয় পর্ব: ৩ বইয়ের নাম: কিছুক্ষণ লেখক: হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী: আফসার ব্রাদার্স পৃষ্ঠা: ৮৮ মলাট মূল্য: ১৫০ টাকা লেখক পরিচিতি: বই পড়েন কিন্তু বাংলাদেশী পাঠক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদকে চিনবেন না এমন পাঠক খুঁজে পাওয়া কঠিন।সেই লেখক হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচিত্রনির্মাতা। তার জনপ্রিয়তার মাত্রাই তাকে করেছে অনন্য।তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় তিন শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। #কাহিনীর_পূর্বের_কাহিনী ট্রেন দেখেলেই লেখক হুমায়ূনের ট্রেনে চড়তে ইচ্ছে করতো।এই ব্যস্ত নগরীর জীবন, জ্যামের মধ্যে গাড়ির মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা একরকম বন্দিদশায় প্রতিপন্ন হতো। আর সেই ইচ্ছে থেকেই এই গল্পের সূত্রপাত।মজার না? গল্পের নামটিও কিন্তু ধার করা। না, না। আমি বলছি না। স্বয়ং লেখক বলছেন। তা কার থেকে ধার করা শুনবেন না? বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। যাকে আমরা বনফুল বলেই চিনি। তার কাছ থেকেই এই 'কিচ্ছুক্ষন' নামের উপন্যাসের উৎপত্তি। #কাহিনী_সংক্ষেপ: কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন ছাড়বে। অনেক চিন্তা ভাবনার মধ্যে দিয়ে শেষ পর্যন্ত চিত্রা ট্রেনে উঠলো। ট্রেনে উঠার পর নিজের সিটটাতে বসতেই পারলোনা একেরপর এক নানান কর্মকান্ড শুরু। সব ঝক্কিঝামেলা শেষ হলে নিজের কামরায় ঢুকতেই এক অদ্ভুত দর্শন লুঙ্গি পরিহিত লোককে দেখেই চিত্রার মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম।কিছুইতেই সে এই লোকের সাথে সারা রাস্তা ট্রেনে যেতেই রাজি নয়। এক্ষুনি কামরা বদলানো দরকার। চিত্রার বান্ধবীর পরিচিত এমপি, তার উপরে পরিচিত এই রেলের প্রধানগণ।সেই সুবাদে বদলানো যেতেই পারে কামরা। তবে যে কামরা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল সেটিও হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম আর ঝামেলাপূর্ণ। কারণ ট্রেনে একটা লাশ যাচ্ছে। আর খালি পাওয়া সেই বগির পাশেই সেই লাশ রাখা। শোনার পর থেকেই চিত্রার গা গোলাচ্ছে। এদিকে চিত্রাকে তার বান্ধবী ঘন ঘন ফোন করেই যাচ্ছে, এতে সে একটু নয়, বরং মহা বিরক্ত। কিছুক্ষণপর এক ভদ্রলোকের সাথে পরামর্শ করে ট্রেনের কর্তৃপক্ষ সমাধান করেছেন কে কিভাবে, কোন কামরায় যাচ্ছেন। ট্রেন দুলে দুলে চলেছে।.....দিনাজপুর যাচ্ছে চিত্রা। মা-বাধাহীন অনাথ চিত্রা যাচ্ছে বিবাহ বসতে। এই ব্যাপারটি সে জানে। সে ও জানে তার আত্মীয়রা জানে সে এই ব্যাপারে কিছু না জেনেই যাচ্ছে। ভাগ্যের লিখনে ট্রেনের মধ্যে এক অপিরিচিত আগুন্তকের সাথে চিত্রার মিষ্টি পরিচয় কি কোনো বার্তা বহন করে? নাকি জীবনের কিছুক্ষন স্মৃতি হয়ে রবে সারাটি জীবন? #পাঠ_পর্যালোচনা: কয়েক ঘন্টার সময়ের এক টুকরো গল্পই এই উপন্যাসের প্রতিপাদ্য বিষয়। কিন্তু এই সময়ের মাঝে মানুষের নানান রূপের, মনের, আঙ্গিক ও বাহ্যিক প্রতিক্রিয়ার বর্ণনা রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে দেখলে আমরা মানুষকে বাইরে থেকেই বিবেচনা করি। কিন্তু মনের মানুষ তার বহিরাগত আকর্ষণ থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। এই ট্রেনে মোট যাত্রী ৬৪৯ জন। এসব যাত্রীদের মধ্যে রয়েছে জ্ঞানী, ধার্মিক, সাধারণ রমণী, মা, ক্ষমতাচুত্যু মন্ত্রী, ডাক্তার, ক্ষমতাধর ব্যাক্তি সকলেই আছে। তাদের চারিত্রিক দৃষ্টিকোণ যেমন আলাদা, তাদের পছন্দের গল্পটিও আলাদা। মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সবাই এক সূত্রে গাঁথা পড়েছেন। মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব নিয়ে খেলা লেখকের প্রাচীন এক খেলা। এই উপন্যাসটিও তার ব্যতিক্রম নয়। মানুষের মনের ভেতরের তোলপাড় করা রূপ একটা সাধারণ ঘটনার মাধ্যমে তিনি অকপটেই তুলে ধরেছেন। এখানে কোনোরূপ জটিল কোনো লেখা নেই। সব সাধারণভাবেই ঘটে চলেছে। তবু জীবন যেমন নতুন করে প্রাণ পায় আরেকটি মানুষের ছোঁয়ায়, তেমনি নতুন প্রাণ ঝরে যাওয়ার ঘটনাও এখানে হাহাকার এনে দেবে। কিন্তু অসম্ভব গুণদর্শনেই লেখক শেষটাতে কি এক অনুভূতি রেখেছেন পাঠক নিজেকেও খুব সুখী সুখী অনুভব করবেন। ট্রেনেই কাহিনী শুরু আর ট্রেনেই শেষ। কিন্তু জীবনের বাঁকে বাঁকে ঘুরে ফিরেই যেন আবার শান্তির নীড়ে আপনাকে বসিয়েই লেখকের পরিতৃপ্তি। আমার রেটিং: ৫/৫ ( রেটিং আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত হলেও আমার মনে হয় এই উপন্যাসের সব পাঠকই আমার মতোই রেটিং দেবেন পুরোটা পড়বার পর। ) রিভিউ লিখেছেনঃ আহনাফ তিয়াস