User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Recommended
Was this review helpful to you?
or
লেখক গভীর বনাঞ্চলে জীবন কাটানোর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে মানুষের কঠোর সংগ্রাম, তাদের সারল্য এবং দারিদ্র্যের মধ্যে নিহিত আনন্দকে চিত্রিত করেছেন। অরণ্যাঞ্চলের বিভিন্ন চরিত্র যেমন ধাওতাল সাহু, জয়পাল ও ভানুমতী, তাঁদের জীবনের সংগ্রাম এবং সীমিত সম্পদে সুখ খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা আমাদের কাছে এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ উপস্থাপন করে। লেখক বুনো প্রকৃতি, জীবনের চরম কষ্ট এবং সংগ্রামকে তুলে ধরার পাশাপাশি, সেখানকার দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যাবলি ও অভিজ্ঞতাগুলোও তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে জঙ্গল ও মানুষের সম্পর্ক একে অপরকে গড়ে তোলে, যেখানে জীবন কখনো অন্ধকারময়, আবার কখনো রঙিন। এই বইটি পড়ার মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করি যে, উন্নতির জন্য পরিশ্রম করা জরুরি, কিন্তু সত্যিকারের আনন্দ খুঁজে পাওয়ার জন্য মানসিক সমৃদ্ধিরও প্রয়োজন। সবমিলিয়ে, "আরণ্যক" একটি অন্তর্দৃষ্টিমূলক কাজ, যা আমাদের জীবনের গভীর অর্থ ও প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।
Was this review helpful to you?
or
,,,,,,,নিতে পারেন, খারাপ না!
Was this review helpful to you?
or
Good Service Thanks
Was this review helpful to you?
or
বিভূতিভূষণের লেখা মাত্রই জঙ্গল কিংবা অরণ্যের জয়গান, প্রকৃতির অনন্য সুন্দর বর্ণনা কিংবা অরণ্যের গভীরে লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্য আর জীবন বোধের হাতছানি। তার সব লেখাতে এসবের অসামান্য ছাপ থাকলেও "আরণ্যক" বইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন আর সেরার তালিকায় জায়গা করে নেয়৷ তার কারন অন্যান্য বই গুলোতে মানুষের গল্পের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে সেইসব অরণ্য কিংবা প্রকৃতির জয়গান। আর "আরণ্যক" বই এ মূখ্য করে দেখানো হয়েছে প্রকৃতি আর অরণ্যকে। এখানে অরণ্যের গল্পকে প্রধান ভুমিকায় রেখে মানুষের গল্প বর্ণনা করা হয়েছে। কলকাতার চাকরিবিহীন সত্যচরণ কোনো উপায় না পেয়ে এক পুরনো বন্ধুর কথায় কলকাতা থেকে বহুদূরে লবটুলিয়া বইহারে চলে যায় জমিদারী খাসমহলের ম্যানেজার রুপে৷ সেখানের জনমানবহীন গহীন অরণ্যে গিয়ে সারাজীবন শহুরে জীবনের কথা অনেকটাই ভুলে আস্তে আস্তে অরণ্যের প্রেমে পড়তে থাকে সত্যচরণ। তার সেই জঙ্গলের প্রেমে মুগ্ধ হওয়ার বর্ণনাই উঠে এসে পুরো বই জুড়ে। সত্যচরণের দৃষ্টিতে উঠে এসেছে সেই জঙ্গলের অসামান্য সৌন্দর্য, জঙ্গল জুড়ে মিশে থাকা জনজীবন, তাদের দারিদ্র্য আর সারল্যতা, জঙ্গলের গহীনে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর সব সৌন্দর্য, শিকারের গল্প, বন্য প্রাণীদের গল্প, পাহাড়ি বুনোফুল, ঝর্ণা কিংবা পাহাড়ি বুনো দেবতার গল্প, গহীন অরণ্যের মাঝে নেমে আসা রাতের অনন্য সুন্দর জোৎস্নায় ঢাকা ভয়ঙ্কর রকমের স্নিগ্ধতার গল্প যেনো রচিত হয়ে আছে পুরো বই জুড়ে। জঙ্গলের বর্ণনা মুগ্ধ হয়ে যতোই পড়বেন ততই প্রেমে পড়ে যাবেন আরো। হারিয়ে যেতে থাকবেন লবটুলিয়া বইহারের জঙ্গলের গহীন অরণ্যে। আমার মতো পাহাড় আর জঙ্গলপ্রিয় মানুষ এসব বইয়ে ডুব দিলে তাকে আর ইহজগতে খুঁজে পাওয়া যায়না। তারা হারিয়ে যায় বইয়ের কালো অক্ষরের অতলে জঙ্গল কিংবা অরণ্যের জনজীবনে। এই বইটাও এমন। অরণ্যের এতো সুন্দর বর্ণনা কিংবা অরণ্যকে মুখ্য ধরে গল্প বলে যাওয়া শুধু বাংলা সাহিত্য নয়, বিশ্ব সাহিত্যেও বিরল। লবটুলিয়া বইহার, নাড়া বইয়ার, মোহনপুরা রিজার্ভ ফরেস্ট, পূর্ণিয়া কিংবা স্বরস্বতী কুন্ডির অরণ্যের মুগ্ধ করা বর্ণনা শুনে যতটাই মুগ্ধতা কাজ করবে, ঠিক ততটাই আপন মনে হবে সেখানে মিশে থাকা মানুষগুলোকে। সাওতাল রাজকুমারী ভানুমতীর সারল্যতা আর নিখাদ সুন্দর আত্মা, কুন্তার নিখাদ সম্মান, মটুকনাথ, সুরতিয়া, ধ্রুবা, গিরধারীলাল কিংবা হারিয়ে যাওয়া মঞ্চী, অরণ্যের গল্প পড়তে পড়তে কখন যে তারা খুব গভীরভাবে ছুঁয়ে যাবে তার টেরও পাবেন না। সবশেষে এটাই বলবো যে যদি অরণ্য নিয়ে পড়তে চান, গহীন অরণ্য আর পাহাড়ের অতলে হারিয়ে যতেে চান তাহলে এই বইটি অবশ্যই পড়া উচিত। অরণ্য কিংবা জঙ্গল নিয়ে এতো অসাধারন লেখনী বিশ্বসাহিত্যেও বিরল৷ এই ক্লাসিক সৃষ্টিটা সবসময়ই অমর হয়ে থাকবে, সবসময়ই অরণ্য প্রেমীদের মুগ্ধতায় ভাসাবে।
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু বই রিভিউ, রেটিং এর উর্দ্ধে। আরণ্যক এমন একটি বই, যার রিভিউ লেখার যোগ্যতা আমার এখনো হয়নি, বোধ হয় কোনোদিন হবেও না। তবে নিজের অনুভূতি লিপিবদ্ধ করার ছোট্ট চেষ্টা করা যেতেই পারে। বইটি আমি পড়া শুরু করেছিলাম ব্যস্ত যান্ত্রিক জীবনে একটু অবসর পাবো, এই আশায নিয়ে। আমার চাহিদা আর বইয়ের লেখনী যেন খাপে খাপে মিলে গিয়েছিল। সারাদিন কলেজে ক্লাস করে, ক্লান্ত শ্রান্ত আমি বাসায় ফেরার পথে যখন একটু ঠাণ্ডা হাওয়া দরকার ছিল মনকে প্রশান্তি দিতে, সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছিল আরণ্যক। কি আছে ' আরণ্যক ' বইয়ে? নাম শুনেই ধারণা করা যায়, অরণ্যকে পটভূমি করে লেখা। বিভূতভূষণ বন্দোপাধ্যায় এর এই উপন্যাসটি অসাধারণ এই কারণে যে, এটি কাহিনিঘটিত নয়, বরং প্রকৃতি ও মানুষ কে কেন্দ্র করে নানা খন্ডকাহনীর শিল্পসঙ্গত সমষ্টি। একদিকে দশ হাজার বিঘা জমি জুড়ে বিস্তৃত বৈচিত্রময় প্রকৃতির সুবর্ণ গালিচা, আর তার সাথে প্রকৃতির কোলে বেঁচে থাকা নানা প্রান্তের মানুষের জীবনযুদ্ধ আর সুখ-দুঃখ। অসম্ভব নৈপুণ্যে এই দুটির এক অপূর্ব মিশেল দেখিয়েছেন, প্রিয় লেখক বিভূতিভষণ। প্রবীণ সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় এর মন্তব্য দিয়েই না হয় শেষ করি: "অরণ্যকে পটভূমি করে কোনো রকমের উপন্যাস হতে পারে, বাঙালি পাঠক এর আগে তা ভাবতে পারে নি।' আরণ্যক '- এর মত এই বই বাংলায় তো হয়ই নিজ বিশ্ব - সাহিত্যেও কটা আছে জানি না।"
Was this review helpful to you?
or
বই : আরণ্যক জনরা : উপন্যাস লেখক : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় . কাহিনী শুরু হয় লেখকের অতীত স্মৃতি রোমন্থনের মাধ্যমে । কোলকাতার কোলাহলে বসে লেখক মাঝে মাঝে হারিয়ে যান সেই দিনগুলোতে । পনের ষোল বছর পূ্র্বে তরুণ লেখক কোলকাতায় চাকরী না পেয়ে কষ্টকর বেকার জীবন হতে মুক্তি পেতে তার এক বন্ধুর বাবার জমিদারিতে ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত হন যা ছিল সভ্য জগৎ এমনকি বঙ্গদেশ হতেও বহুদূরে । যেখানে এখনো প্রাগৈতিহাসিক যুগের সবুজ অরণ্য বিরাজ করছে । শহুরে জীবনে অভ্যস্ত তরুণ লেখক প্রথম কয়েকদিনেই হাপিয়ে ওঠেন সেই গভীর অরণ্যে । কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি মায়ায় জড়িয়ে পড়তে থাকেন । বিভূতিবাবুর লেখা এতটা জীবন্ত যে পড়তে পড়তে মনে হয়েছে লেখকের মত আমিই যেন সেই নাঢ়া , বইহার , লবটুলিয়ার গভীর অরণ্যে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি ! আমার গায়ে যেন বন্য লতার লকলকে ডগাগুলো আছড়ে পড়ছে ! যেন দু' একটি বুনোশিউলী ফুল কাঁধে বা মাথায় ঝড়ে পড়ছে টুপটাপ ! কখনো বা শাল, মহুয়া, পলাশ, কূলের বন , কখনোবা ক্ষূদ্র লোকালয় , কাশের বেড়ার ঘর , অতি দরিদ্র গাঙ্গোতা প্রজাদের মুখ ভেসে উঠেছে মনে ! কখনোবা হ্রদ 'সরস্বতী কুন্ডি'র ধারে স্পাইডারলিলির মাতাল গন্ধে আকুল হয়ে বা হংসলতার নীল ফুলের ডাল হাতে নিয়ে জোৎস্ন্যা বিলাস করেছি ! উপন্যাসের অনেকগুলো চরিত্রের মধ্যে বোহেমিয়ান 'যুগলপ্রসাদ'কে খুব ভাল লেগেছে । সংসারধর্মে মন নেই , এই লোকটার প্রিয় কাজ হল দূর পাহাড় বা লোকালয় হতে নানারকম বন্য ফুলের গাছ এনে সরস্বতী কুন্ডের আশেপাশে রোপন করা যে কাজে লেখক ও তাকে গোপনে সাহায্য করেছেন মাঝেমাঝে । সহজ সরল প্রকৃতিপ্রেমী এই লোকটকে আমার কাছে অসাধারণ এক ভালমানুষ মনে হয়েছে । বুড়ো নকছেদী , তার বউ মঞ্চী , দরিদ্র কুন্তা , পেটুক রাজু পাঁড়ে চরিত্রগুলো নানারকম অন্ধবিশ্বাস, ভালবাসা, আর গ্রামীন বাঁধনে আবদ্ধ কতগুলো জীবন । দূর পাহাড়ের বন্য রাজকন্যা ভানুমতি ও তার প্রপিতামহ রাজ্যহীন সাওঁতাল রাজা দবরু পান্না চরিত্রগুলোও অত্যন্ত ভাল লেখেছে । লবটুলিয়া অরণ্য ছেড়ে চলে আসার আগে লেখক ভানুমতির সাথে শেষবার দেখা করতে গিয়ে তার প্রেমে পড়েন । (লেখক এত বেরসিক কেন বুঝতে পারিনি । আমিতো লেখকের সাথে প্রথম দেখার বর্ণনাতেই ভানুমতির প্রেমে পড়ে গেছি ?) বারবার লেখকের মনে হয় তিনি একেবারে থেকে যান এই সবুজ সমুদ্রে , কোলকাতার সভ্য জীবনের চেয়ে এ যেন ঢেঁর ভাল ! ভানুমতিকে বিয়ে করে এই বন্য পাহাড়ে বসতি গড়েন ! কোন এক জোৎস্ন্যা রাতে ভানুমতির ছেলেমানুষি গল্প বা কাঁচের চুড়ির শব্দের মত হাসি শোনেন বসে ! কিন্তু বাস্তবে তা হয়ে ওঠেনা ! সব মায়ার জাল ছিঁড়ে একদিন লেখককে নিজের সভ্য সমাজে রওনা হতে হয় ! 'পথের পাঁচালি' পড়েই বিভূতিভূষণের লেখার প্রেমে পড়েছিলাম । কিন্তু এইটা একদম অন্যরকম ভাল লেগেছে । প্রথম কথা হল এটা এমন একটা উপন্যাস যা কারো কাছে খুবই ভালো লাগবে আবার কারো কাছে খুবই বাকোয়াস লাগতে পারে । অনেকে বলেছে যে এই উপন্যাস তারা কিছুটা পড়ার পরই পুরোটা পড়ার ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছে - তার মূল কারণ উপন্যাসের প্রথমদিকে কাহিনী কিছুটা ধীর গতিতে আগাতে থাকে । তবে যেকোন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে অত্যন্ত উপভোগ্য লাগবে । গভীর অরণ্যের হাতছানিতে হারিয়ে যেতে চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন বইটি ।
Was this review helpful to you?
or
প্রকৃতি আর মানুষের কি নিখুঁত যোগ এই উপন্যাসে,ওই জঙ্গল-ওইগ্রামের মানুষের জীবনের এত নিখুঁত ছবি আঁকা সহজ না।এত নিখুঁত বর্নণা কিভাবে দেয়া সম্ভব?? কতটা জানা প্রয়োজন এই ছোট্ট একটা উপন্যাসের জন্য সেটা বোধহয় বলা বাহুল্য... বইটা পড়তে পড়তে মনে হয়েছে আমি নিজেই হয়ত চলে গেছি বহু দূরে, যেখানে সভ্যতার আলো নেই, নেই জ্যাম, কালো ধোঁয়া......। সত্যচরণ, বি এ পাস করে বেকার, মেস এ খাওয়ার কিংবা ভাড়ার টাকা দেয়ার সামর্থ নাই। হেন কোন জায়গা নাই যেখানে সে চাকরী খোঁজেনি... এরপরে এক স্বরসতী পূজার দিনে বেশ পুরনো এক বন্ধুর সাথে দেখা... এই বন্ধুর মাধ্যমেই বন্ধুর ভাগালপুর এর কাছাকাছি একটি জমিদার এর এস্টেট, জঙ্গলের খুব কাছে...।। নিসংগ জঙ্গলে তার জীবনের ঘটনাপঞ্জি, তার নিজের ভাষা্য ব্যক্ত ...। শহরে বেড়ে ওঠা এক ছেলে, হঠাৎ নির্জন জঙ্গলে গিয়ে পড়ে, প্রথমে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যায়, তাকে একজন বলে কিছুদিন পরে নাকি এই জায়গা ছেড়ে থাকতে ভাল লাগবেনা...। এক সময় সেটায় সত্য হয়... সবুজ আর বন্য সৌন্দর্যে মুগ্ধ সত্য...... এই এলাকার সাথে মানিয়ে নেয়াটা খুব একটা শক্ত পরীক্ষা ছিল তার জন্য। মানুষের অভাব, স্বভাব আচরণে সে কিছুটা অবাক ছিল, কত রকমের মানুষের সাথে তাকে তাল মিলিয়ে চলতে হয়েছে, কত পরিস্থিতি তাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে...।। এর মাঝে গল্পে আসে কুন্তা, সুরতিয়া, মহাজন, কাঠুরে, মহিষপালক, ভিখারি, বিচিত্র থেকে বিচিত্রতর মানুষ ... এদের কাছে সে প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠে !কখনও অপ্রিয়।। কেউ হাতী পাঠিয়ে দাওয়াত করে নিয়ে যায়, কেন এই রাজকীয় দাওয়াত??? কুন্তা সত্যের পাতের ভাতের জন্য রোজ রাতে আসে,কে এই কুন্তা? একদিন জঙ্গলে আগুন লাগে, ছড়িয়ে পড়ে আগুন, কাছারী বাড়ী কি রক্ষা করতে পারবে সত্য? কিন্তু এরপর ..................। তার হাত ধরে নাঢ়া- লবটুলিয়া তে আসে এক বিশাল পরিবর্তন। কি সেই পরিবর্তন???? এক সময় জমিদার আর তার মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কি হবে এর পরে??
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যে এক ক্লাসিক ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।প্রকৃতির সাথে খেটে খাওয়া মানুষের অন্তরঙ্গতা, তাদের অভাবের সাথে আবেগের মিশেল বিভূতিভূষণ যাদুকরী বর্ণনাভঙ্গীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। "আরণ্যক" সেই প্রকৃতি এবং মানুষের-ই এক অনন্যসাধারণ আখ্যান। বাংলা সাহিত্যে শ্রেষ্ঠতম উপন্যাসগুলোর একটি এই 'আরণ্যক'। উপন্যাসের ভূমিকায় জিতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লিখেছেন," 'আরণ্যক' উপন্যাসে কোথাও চমক সৃষ্টির প্রয়াস নেই। একটি ধীর লয়ে বয়ে যাওয়া কাহিনী একটি শান্ত বাঁশির সুরের মতো পটভূমিকে অবলম্বন করে ক্রমশ পাঠককে উত্তীর্ণ করে দিয়েছে সৌন্দর্যোপলব্ধির অমরাবতীতে ।" ভাগলপুরের আজমাবাদ, লবটুলিয়া, ইসমাইলপুর, মোহনপুরা রিজার্ভ ফরেষ্ট হচ্ছে 'আরণ্যক' এর পটভূমি। প্রকৃতি সাধারণত কাহিনীর পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখানেও সেভাবেই শুরু হয়েছে গল্পের প্রবাহ। কিন্তু, অজান্তেই লেখনীর আশ্চর্য জাদুস্পর্শে পটভূমি নিজেই একটি প্রধান চরিত্রে পরিণত হয়েছে। হঠাৎ একসময় উপলব্ধি ঘটে, পাঠক অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন- পটভূমি নিজেই মঞ্চে নেমে এসেছে। 'আরণ্যক'-এর কাহিনী সরল ও স্বাভাবিক গতিতে প্রবহমান। নায়ক সত্যচরণ ভাগলপুরের কোনো জমদারি এস্টেটে চাকরি পেয়ে ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করে। প্রথম দিকে তার শহুরে মন এই নিস্তরঙ্গ, জনমানবহীন অরণ্যপ্রবাসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেও ধীরে ধীরে প্রকৃতি তার জাদুময় প্রভাব বিস্তার করে সত্যচরণের ওপর। ক্রমে তার আর অরণ্য থেকে সামান্য দূরত্বও সহ্য হয় না। এরপর, সত্যচরণ আর তার সৌন্দর্যপূজারী সঙ্গী যুগলপ্রসাদ মিলে বনের এই সবুজ প্রকৃতিকে সাজায় নানা রকম দুষ্প্রাপ্য লতা ও বৃক্ষ রোপণ করে। কিন্তু সত্যচরণ জমিদারির ম্যানেজার হিসেবে, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তাকে প্রকৃতিদেবীর নিজের হাতে গড়া এই উদ্যান টুকরো টুকরো করে প্রজাদের বিলি করে দিতে হয়। তাদের কুঠারের ফলায় ধ্বংস হয়ে যায় প্রাচীন মহীরুহ, নিভৃত লতা বাগান, সাজানো বৃক্ষের সিঁড়ি। এর জন্য হৃদয়ের নিভৃতে গভীর অনুতাপ ও শোকের মধ্য দিয়েই শেষ হয় উপন্যাসের পরিণতি। 'আরণক'-এর চরিত্রেরা সরল ও মাটির কাছে বেড়ে উঠা মানুষ। রুদ্র ও বাম প্রকৃতির সঙ্গে কঠিন সংগ্রাম করে এরা উৎপন্ন করে দু'মুঠো চীনা ঘাসের দানা কিংবা দু'মুঠো মকাই। এদের মধ্যে রয়েছে রাজু পাঁড়ের মতো বিচিত্র মানুষ,যে একাধারে কৃষক, দার্শনিক, কবি ও চিকিৎসক। রয়েছে ধাওতাল সাহু, যে ধনাঢ্য হয়েও চাদরের প্রান্তে ছাতু মেখে খায়। রাসবিহারী সিং ও নন্দলাল ওঝা- এ দুটি খল চরিত্র। মঞ্চী, ভানুমতী ইত্যাদি নারী চরিত্রেরাও তাদের বন্য সারল্য ও চিরন্তন নারী হৃদয় নিয়ে উজ্জ্বল। উত্তম পুরুষে বর্ণিত বইটিতে শেষে লেখা- "মনে হয়, কেমন আছে কুন্তা, কত বড় হইয়া উঠিয়াছে সুরতিয়া; মটুকনাথের টোল আজও আছে কিনা, রাখালবাবুর স্ত্রী, ধ্রুবা, গীরধারীলাল, কে জানে এতকাল পরে কে কেমন অবস্থায় আছে।...আর মনে হয় মঞ্চীর কথা...কতকাল তাহাদের আর খবর রাখি না।" এই হল 'আরণক'-এর সমাপ্তি। বইটি পড়তে পড়তে প্রকৃতির সঙ্গে বাড়বে মিতালী, চরিত্রের সঙ্গে বেড়ে উঠবে ভালবাসা, প্রতিটি শব্দ মনে হবে আপন, সকরুণ বিষাদে ভরে যাবে মন।মিস না করে পড়ে ফেলেন বেশ ভালই লাগবে আশা করি।
Was this review helpful to you?
or
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন জনপ্রিয় ভারতীয় বাঙালী কথাসাহিত্যিক। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। "আরণ্যক" উপন্যাসের নামই উপন্যাসের মূল কথা বলে দিচ্ছে। 'সত্যচরণ' চরিত্র দিয়ে উপন্যাসের শুরু যে পড়া লিখা শেষ করে আজকালকার সাধারণ যুবকদের মতোই চাকরীর খোঁজ করছিল বিভিন্ন জায়গায়, এমন সময় হুট করেই তার এক বন্ধু তাকে জঙ্গলে চাকরী দেয়। প্রথমে সে অনেক ভাবছিল কি করে শহরের মানুষ হয়ে জঙ্গলে থাকবে বা কীভাবে তার সময় পার করবে কিন্তু যতই দিন যেতে লাগলো জঙ্গলের প্রতি তার ভালো লাগা গভীর হতে থাকলো। তার সামনে একের পর এক চরিত্র গুলো আসতে থাকে, বন-জঙ্গল এর রহস্য তাকে ঘিরে ধরতে থাকে। কখনো বাঘের ভয়, কখনো বন্যমহিষের সব ভয় এক হয়ে তার এক একটা দিন এক একটা বছর খুব রোমাঞ্চক ভাবে তার কাটতে থাকে। তার ভাগ করে দেয়া জঙ্গলের জমিতে মানুষ গুলো ফসল চাষ করতে থাকে। পাহাড় - নানান রকম গাছ - পশু- পাখি -ঝর্না - পাহাড়ি মানুষ- সেসব মানুষদের কথা- সংস্কৃতি সব কিছুর একার দর্শক হয়ে থাকে সত্যচরণ সে সব মুগ্ধ হয়ে চোখ ভরিয়ে দেখে নিতে থাকে কিন্তু কখনো তাদের সাথে গভীর আরণ্যে ডুবে যেতে পারে না কারণ তার চাকরী শহুরে লোক সামান্য চাকুরীর জন্য সেখানে গিয়েছে, জঙ্গলে তার কোন স্থান নেই। শেষ সময়ে যখন তিনি পেছন ফিরে তাকিয়ে ছিল তখন নিজের অজান্তেই চোখের কোণে অশ্রু এসেছিল কারণ তিনি না চাইতেও প্রকৃতি মাকে খণ্ডে খণ্ডে ভাগ করে এক বীভৎস রূপে সাজিয়ে ফেলেছিল কারণ সেটাই তার চাকুরীর কাজ ছিল। যদিওবা তারও ইচ্ছে হয়েছিল সাঁওতাল রাজকন্যা ভানুমতীকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে তাদের সাথেই আরণ্যের গর্ভে ডুব দিতে কিন্তু তিনি পারেনি নিজের গণ্ডী পার হতে, পারেনি অজানা একটা শৃঙ্খল ভাঙতে। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল আমি নিজেই সত্যচরণ হয়ে গেছি , আমি বনে-জঙ্গলে ঘোড়ায় চড়ে বেড়াচ্ছি -পাহাড়ি মানুষদের সাথে কথা বলছি-অবাক চোখে সব দেখছি; বইটা পড়া মুহূর্তের সময় গুলো আমার মুগ্ধতায় কেটেছে, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় খুব সূক্ষ্ম - সুনিপুণ ভাবে উপন্যাসটি রচনা করেছেন কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য কাগজে কলমে বর্ণনা করা বেশ কঠিন কাজ। 'আরণ্যক' বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর রচিত চতুর্থ উপন্যাস। ১৯৩৯ সালে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারে তার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে উপন্যাসটি রচনা করেন। উপন্যাস পড়া শেষ করে ভেবেছিলাম-অনেক সুন্দর করে অনেক কথায় অনেক গুছিয়ে একটা প্রতিক্রিয়া লিখবো কিন্তু এখন লিখতে বসে সেসব কিছুই লিখতে ইচ্ছে করছে না কারণ আমি চাচ্ছি যারা এখনো বইটি পড়েনি তারা যেন আমার প্রতিক্রিয়া পড়ে কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বা আমি যা বলেছি সেসবের সত্যতা খোঁজার জন্য হলেও বইটি পড়ে দেখে, আমি চাই সবাই বইটি পড়ুক আমার মতো মুগ্ধ না হোক অন্ততঃ জানুক আরণ্যক নামক উপন্যাসে আরণ্যের ছোঁয়া আছে। শুভ হোক আপনার পাঠ্য কার্যক্রম।
Was this review helpful to you?
or
‘আরণ্যক’ উপন্যাস বিভূতি বাবুর এক অনবদ্য সৃষ্টি। যেটা পড়ে উনার লিখনির প্রতি নতুন করে ভালবাসা জেগেছে। ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত এটি তার চতুর্থ উপন্যাস। বইটি লেখকের কর্মজীবনের এক অংশের অভিজ্ঞতার আলোকে লিখা। বইটি পড়তে মন্দ লাগবেনা।
Was this review helpful to you?
or
আরণ্যক শব্দের অর্থ অরণ্য সম্পর্কীয়। পুরো বইটি সর্বত্র ঘিরে ছিল প্রকৃতি। গহীণ অরণ্যে জীবণযাপন , বিভিন্ন ধরনের মানুষ , হরেক রকম গাছপালা , পশু-পাখি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তিনি তার রচনায় ফুটিয়ে তুলতেন সমাজের অতি সাধারণ মানুষের চিত্র, সাধারণ মানুষের দারিদ্রতার প্রতিচ্ছবি। আরণ্যক বইটিও তার ব্যাতিক্রম নয়। শুধু পার্থক্য হচ্ছে আরণ্যকের পটভূমি গড়ে ওঠেছে আমাদের গ্রাম – শহর হতে দূরে । সুদূর এক অরণ্যের গহীনে। ফুটে ওঠেছে পাহাড়ীদের জীবণ। সেখানের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই । সেই লড়াই কখনো পাহাড়ী জন্তু জানোয়ারের সাথে, কখনোবা তীব্র ক্ষুধা মেটাতে দারিদ্রতার সাথে। “সত্যচরণ” নামক চরিত্র দিয়ে উপন্যাসের শুরু । কলকাতার আট-দশজন সাধারণ মানুষের মতো গ্রাজুয়েশন শেষ করে চাকরী খুজেছিল সে। টাকা পয়সার সঙ্কট ছিল অনেক। ঠিক এমনই এক সময় তার এক বন্ধু এক চাকরী দিল কিন্তু সে চাকরী করতে হলে তাকে থাকতে হবে শহর হতে দূরে এক অরণ্যে। আর্থিক সঙ্কটের জন্য সে রাজি হয়েছিল। তার পর সত্যচরণের চোখের মাধমে ফুটে ওঠেছে সেখানের মানুষদের দারিদ্রতা। আমরা ভাবি কলকাতার মানুষ দারিদ্র। কিন্তু সেখানে তিনি দেখিয়েছেন যে একটি কড়াই পেলে মানুষ কত খুশি হতে পারে। সাঁওতাল রাজকন্যা ভানুমতীকে সঙ্গী বানানোর মনোবাসনাও ছিল তার। এভাবেই নানা প্রকার মায়ায় জড়িয়ে যায় সে , যেতে মন চায় না আর জনমানবপূর্ণ কলকাতায়।