User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
One of the best bangla satire book
Was this review helpful to you?
or
Value for money
Was this review helpful to you?
or
Already amr kace ache.khob valo lage
Was this review helpful to you?
or
মানুষ কে খুশি করার জন্য গল্প গুলো অসাধারন।
Was this review helpful to you?
or
মন খারাপ হলে মনকে ভালো করার জন্য এই বইটি একটি অসাধারণ বই
Was this review helpful to you?
or
বইটির বাঁধাই ও কাগজের মান খুবই ভাল। বানান ভুলও নেই বললেই চলে। সুখপাঠ্য এবং উপভোগ্য একটি বই। শব্দের অনেক মজাদার ব্যবহার করেছেন লেখক,যার সাথে হয়ত আপনি আগে পরিচিত ছিলেন না,এই বইটি পড়ার পর পরিচিত হবেন।
Was this review helpful to you?
or
শিবরাম চক্রবর্তী। বাংলা রম্যরচনার অন্যতম প্রবাদপ্রতিম প্রাণপুরুষ। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই তাঁর সম্পর্কে অবগত নন। অবশ্য তাঁর রম্যরচনাগুলো ঠিক কৌতুক বা প্রহসনের মধ্যে পড়ে না। তাঁর লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল শব্দশ্লেষ বা PUN ।কিন্তু শুধু এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর লেখাগুলো ভাষারীতি, বাক্যগঠন, বলার ভঙ্গি, এবং নব মিলিয়ে প্রসাদগুণ দ্বারাও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। তাঁর রচনার যে স্বাদ, তা আস্বাদন করার মধ্যে এক ধরনের প্রশান্তি আছে। আর তা না করতে পারলে সেটি লেখকের দুর্ভাগ্য নয়, আমাদের। চিরকুমার, সন্ন্যাসীকল্প শিবরাম অর্থ-সম্পদ-সম্পত্তি-সম্মান সবকিছু সম্পর্কেই ভয়ঙ্কর রকমের উদাসী ছিলেন। তাঁর একমাত্র বাসনা ছিল বাসনে- খাবারের পাত্রে। বিশেষ করে রাবড়ির প্রতি তাঁর লোলুপ দৃষ্টি পড়লেই তিনি লালায়িত হতেন। নিজে খেতেন এবং খাওয়াতেন। কিন্তু তাঁর পকেট থাকতো গড়ের মাঠ। অথচ লুচি, মালপোয়া, রাবড়ি, চপ, কাটলেট খেতে ইচ্ছা হচ্ছে। এখন কি করা যায়? বসে গেলেন কাগজ- কলম নিয়ে। স্বতঃস্ফূর্ত রসিকতার রস মিশিয়ে লিখে ফেললেন দুই একখানা লেখা। গল্প ফেঁদেই চলে গেলেন প্রকাশকের কাছে। প্রকাশক খুশিমনে যা দেন তাই দিয়েই তাঁর তখনকার খায়েশ পূরণ করতেন। হয়তোবা এইভাবেই তিনি দিনের পর দিন এত গল্প লিখে গেছেন। তবে কাজ যে একেবারেই করেন নি তা নয়। বোহেমিয়ান এই লেখক খবরের কাগজ বিলি করেছেন। ‘আত্মশক্তি’ পত্রিকায় সম্পাদনা করেছেন। ১৩৪ নং মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, কলকাতার নির্মীয়মাণ আনন্দভবনের কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব নেন। তাঁর জীবন শেষ হয়েছেও সেখানেই- সেই মেসেরই বাসিন্দা হিসেবে। অর্থাৎ প্রথমে বাড়ীর কেয়ারটেক করলেও সেই বাড়ীই একসময় তাঁর টেক কেয়ার করত। অথচ তিনি চাঁচল রাজপরিবারের শরিক ছিলেন। কিন্তু সব অধিকারই নিজ হাতে দূরে ঠেলে দিয়েছেন। এমনকি তাঁর ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ উপন্যাসটি চলচ্চিত্রে রুপান্তরিত হলে তিনি দশ হাজার টাকা পান এবং পুরোটাই তাঁর পাতানো ভাগ্নেকে দিয়ে দেন। এক সংবর্ধনা সভায় তাঁকে শাল-ধুতি-ছাতা সহ এক হাঁড়ি রাবড়ি উপহার দেওয়া হয়। তিনি সঙ্গীদের নিয়ে রাবড়ির সৎকার করেছেন ঠিকই কিন্তু বাকিগুলোর দিকে সৎ দৃষ্টিপাতই করেননি। তাঁর লেখা নিয়ে গম্ভীর হওয়ার মত যেমন কিছু নাই, তেমনি সেগুলো বাস্তব ভাবাও বোকামি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় তাঁর অদ্ভুত দুইটি চরিত্র হর্ষবর্ধন এবং গোবর্ধন এর বোকামির কথা। হর্ষবর্ধনের স্ত্রীর পেটে সমস্যা। রাম ডাক্তার এসেছেন তাঁর বিখ্যাত ব্যাগ নিয়ে। সমস্যার কারণ জানা গেল। তাঁর স্ত্রী হাঁ করে ঘুমুচ্ছেন। এমন সময় একটি ইঁদুর সেই হাঁ দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল। সেই ইঁদুরের পিছু পিছু আবার একটা বিড়াল ঢুকে পড়েছে। বিড়ালকে বের করার জন্য হাঁ এর সামনে মাছ ধরলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। মাছের লালসায়ও বিড়াল লেজ গুটিয়ে ইঁদুর মুখে করে নিয়ে বের হচ্ছে না। তখন রাম ডাক্তার একটা কুকুর ঢুকিয়ে দিলেন ভিতরে। এত কিছুর পরেও শ্রীমতির ঘুম ভাঙ্গার কোনও নাম নেই। আসলে বাস্তবতার চাইতে মজাটাই এখানে মুখ্য। আরেকটি ঘটনা। হর্ষবর্ধনের স্ত্রীর অসুখ। গোবর্ধন আর শিবরাম বাবু গেছেন রাম ডাক্তারের কাছে। দরজার বাইরে থেকে তাদের কথোপকথনঃ শিবরামঃ দেখি গোবরা ভায়া, এবার তোমার রামডাক টি ছাড় তো। রাম ডাক্তারকে ডাকো। গোবর্ধনঃ তারবাবু, ও তারবাবু। শিবরামঃ একি ভায়া! তারবাবু কি? রাম ডাক্তার না? গোবর্ধনঃ আপনিই না বললেন রামডাক ছাড়তে? রাম ডাকতার বাবুর রামডাক ছাড়লে কি থাকে? তারবাবুই তো নাকি? বস্তুত শিবরাম বাবু এমনিভাবে নাম নিয়ে খেলা করতেও কুণ্ঠিত হননি। যেমন শিবরাম চক্রবর্তী হয়ে গেছে শিব্রাম চকরবরতি। তেমনি ভাবে গোবর্ধনকে গোবরা বানিয়ে ছেড়েছেন। শ্মশানের পাশ দিয়ে যেতেও তিনি ভয় করতেন না। কারণ তাঁর নামের প্রথম অংশে(শিব) ভূত আসলেও পরের অংশে(রাম) ভূত পালায়। গোবর্ধন তাঁকে শিব্রামবাবু ডাকতে অপারগ, তাঁকে ডাকে ব্রামবাবু। কারণ সে কখনও তাঁর 'শী' কে দেখেনি, সারা জীবন 'হি' কে-ই দেখে এসেছে। এমনিভাবে তাঁর চরিত্রগুলো একেকবার একেক রঙ ছড়িয়েছে শুধুমাত্র শব্দের খেলায়। শিবরামের বই সম্পর্কে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক যে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তাতেই মাহাত্ম বোঝা যায়। আজিজুল হক একবার বেড়াতে গেছেন মধুপুর অঞ্চলে। গিয়ে দেখেন তাঁর পরিচিত একজন বন্ধু আগে থেকেই সেখানে আছেন। পরে এক কাজে আজিজুল হক এক দিনের জন্য অন্যত্র যান। ফিরে এসে তাঁর বন্ধুর কাছে জানতে চাইলেন রাত কেমন কেটেছে। জবাবে তাঁর বন্ধু এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তিনি বললেন যে রাতে খুব একা একা লাগাতে তিনি পাশে রাখা বইটি নিয়ে পড়তে লাগলেন। একটু পরে তিনি আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে জোরে হেসে উঠলেন। একবার পাশে রাখা পানির গ্লাস উলটিয়ে ফেলেন তো অন্যবার নিজেই উলটিয়ে পড়েন। এমনি করেই তাঁর সারা রাত কোনদিক দিয়ে কেটে গেছে টেরই পাননি। বইটি কার ছিল নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না- শিব্রাম চকরবরতির। শিবরামের একটি গল্প আছে- ‘শিবরামের মত কথা বলার বিপদ’। আসলেই এতে বিপদ আছে। আমি নিজেও এর ভুক্তভোগী। কারণ শিবরামের মত কথা বললে বোঝা যায় না- পড়তে হয়। তাই আশা করি বইটি পড়তে শুধু পড়ন্ত বয়সের মানুষেরাই আগ্রহী হবেন না, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরাও বইটি হাতে নিবে। নেড়েচেড়ে দেখবে। তারপর পড়তে পড়তে হাসবে এবং হাসতে হাসতে পড়বে। কারণ- ‘শিব্রামের বই পড়াতে কোনও বিপদ নাই’