User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Hussain

      14 Dec 2019 11:24 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার পঠিত সেরা উপন্যাস গুলোর তালিকায় পুতুল নাচের ইতিকথা শীর্ষেই থাকবে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনবদ্য রচনা এটি। উপন্যাসটি পড়া শুরু করতে গিয়ে প্রথম তিনবার ২০ পেজের বেশি পড়তে পারিনি। তবে চতুর্থবার শুরু করে একটানা পড়ে শেষ করেছি। পুতুল নাচের ইতিকথা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে সবাই হয়তো শশী কুসুম কে নিয়ে মাতামাতি করবেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমি কুমুদ এবং মতির কাহিনীকে সর্বাগ্রে অবস্থান দেবো। উপন্যাসটি পড়ার পর বারবার মনে হয়েছে লেখক কি আর কোথাও মানে অন্য কোন উপন্যাসে কুমুদ- মতির কাহিনিকে স্থান দিয়েছেন? পরে জানতে পেরেছি লেখক কুমুদ মতির কাহিনী শেষ করার পূর্বেই তাঁর প্রয়াণ হয়েছে।

      By Sultan

      17 Oct 2019 11:44 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      দুটি পাখনায় রঙ বিলায় রঙিন প্রজাপতি, দুটি পত্রেই পেখম মেলে বিশাল মহীরুহ, দুটি ডানা মেললেই ফুটে উঠে উড়ন্ত নীলকন্ঠের সৌন্দর্য।।। তেমনি পুতুলনাচের ইতিকথার আকাশে যে দুটি নক্ষত্র উজ্জ্বলতম হয়ে ফুটেছে, যাদের ঘিরে ঘুরেছে গ্রহমালা, নীলকন্ঠে সুর বাজিয়েছে মহাকাল– তারা শশী ও কুসুম। শশী শহর থেকে পাশ করা ডাক্তার, গ্রামে এসেছে। তার চরিত্রে সুস্পষ্ট দুটি ভাগ। এক ভাগে সাধারণ সাংসারিক বুদ্ধি ও ধনসম্পদ এর প্রতি মমতা যে দিকটা গড়ে তুলেছে তার বাবা গোপাল দাস। অপরদিকে রয়েছে কল্পনা, ভাবাবেগ ও রসবোধ। কলকাতায় মেডিকেল কলেজে পড়তে যাওয়ার সময়ও তার হৃদয় ছিল সংকীর্ণ, চিন্তাশক্তি ছিল ভোতা, রসবোধ ছিল স্থুল। তার এই দিকটি গড়ে তুলেছে তার বন্ধু কুমুদ। সে তাকে কথকথার মতো হৃদয়গ্রাহী করিয়া ধর্ম, সমাজ, ঈশ্বর ও নারী সম্পর্কে বুঝাইয়াছিল। শশী ভাবে ‘এ সুদূর পল্লীতে সে বসন্ত কখনো আসিবে না যাহার কোকিল পিয়ানো, সুবাস এসেন্স, দখিনা ফ্যানের বাতাস। তবু শশী মনকে বাধিয়া রাখিবে? দীর্ঘ জীবন পড়িয়া আছে, পড়িয়া আছে বিপুলা পৃথিবী। আজ শশী কামিনী ঝোপের পাশে ক্যাম্প চেয়ারে বসিয়া বাশঁঝাড়ের পাতা-কাঁপানো ডোবার গন্ধ ভরা ঝিরঝির বাতাসে উন্মনা হোক, কোলের উপর ফেলিয়া রাখা বইখানার দুটি মলাটের মধ্যে জীবনটি তাহার আবদ্ধ থাক। একদিন কেয়ারি করা ফুল বাগানের মাঝখানে বসানো লাল টাইলে ছাওয়া বাংলোয় শশী খাঁচার মধ্যে কেনারি পাখির নাচ দেখিবে, দামী ব্লাউজে ঢাকা বুকখানা শশীর বুকের কাছে স্পন্দিত হইবে– আলো গান হাসি আনন্দ আভিজাত্য — কিসের অভাব থাকিবে শশীর? পরানের বউ কুসুম।শশুরবাড়ির প্রায় সব সম্পত্তি তার বাবার কাছে বন্ধক বলে সবাই হয়তো তাকে কিছুটা ভয়ই পায়। তবুও… ‘বকাবকি করলে সবসময় কানেও তুলে না, নিজের মনে কাজ করিয়া যায়। নিজের মনে ঘরের কাজ করিয়া যায়। কাজ কাজ করিতে ভালো না লাগিলে খিড়কির দরজা দিয়া বাহির হইয়া গিয়া তালবনে তালপুকুরের ধারে ভূপতিত তালগাছটার গুঁড়িতে চুপচাপ বসিয়া থাকে। অদ্ভুত মেয়ে সে। বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলিতে ভালবাসে। কুসুমের এ মিথ্যে ভাষণ শশী মাঝে মাঝে লক্ষ করিয়াছে। ধরা পড়িবে জানিয়া শুনিয়াই সে যেন এই মিথ্যে কথা গুলি বলে। এ যেন তার এক ধরনের পরিহাস। কালোকে সাদা বলিয়া আড়ালে সে হাসে।শুনিতে মন্দ লাগে না শশীর। ওর এইসব খাপছাড়া কথায় ব্যাবহারে একটা যেন মিষ্টি ছন্দ আছে। বাড়ির অন্যদের সাথে কথা বলার সময় রান্নাঘরে শশীকে শোনাইয়া কুসুম যাত্রার দলের গান করে, টানা গুনগুনানে সুরে, অস্পষ্ট ভীরু গলায়। সত্য সত্যই পাগল নাকি কুসুম?!’ পুতুলনাচের ইতিকথার আকাশে যেনো এক নীহারিকার নাম সেনদিদি! আচ্ছন্ন,অসুস্থ,মৃতকল্প সেনদিদি। গায়ের উজ্জ্বল রঙ লাল হইয়া হাতের অনন্তের সংগে মিশিয়া গিয়াছে, সারা গায়ে আরো সব অস্পষ্ট চিহ্ন, শশী যা চেনে। শশীর মুখ শুকাইয়া গেল। শরতের গোড়ায় সেনদিদি এ রোগ পাইল কোথায়। গাওদিয়া গ্রামে, কলিকাতা শহরে, দেশে-বিদেশে কোথাও শশী যার মতো রূপসী দেখে নাই, শুধু রূপের জন্যই যে মিথ্যা কলঙ্ক কিনিয়াছে, এ কি রোগ ধরিয়াছে তাহাকে!’ গ্রামে একদিন যাত্রা দল আসে। যাত্রাদলের প্রবীর হয়ে আসে কুমুদ। ‘শশীর বিশ্বাস করিতে বিস্ময় বোধ হয়! এ তো সেই কুমুদ! মানে বই না দেখিয়া যে একদিন তাহাকে ক্লাসের কাব্যচয়নে শেলীর দূর্বোধ্য কবিতা বুঝাইয়া দিয়াছিল, মোনালিসার হাসির ব্যাখ্যা করিয়াছিল।’ তালবনে মতির মাকড়ি হারাইয়া যায়। কুমুদ মতিকে একখানা নতুন মাকড়ি কিনিয়া দেয়। মতির মনে হয়, ‘মাকড়ি কেনার আগে কুমুদ তাকেই কিনিয়া ফেলিয়াছে’। কুসুম কি চায়? শশী হয়তো বোঝে, কিংবা বোঝে না। কেনো মতির বুকে টেথোস্কোপ ধরা নিয়ে তার এতো হিংসে? কেন সে হাত ভাঙার ছল করিয়া শশীর ঘরে যায়?? কেন মতির কথা জানতে তাকে তালবনে ডাকিয়া নেয়??? কেন বলে “চাঁদনী রাতে আপনার সঙ্গে কোথাও চলে যেতে সাধ হয় ছোটবাবু” ! কেন বলে “আপনার কাছে দাঁড়ালে আমার শরীর এমন করে কেন ছোটবাবু”!!! শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম? সেই আদিম মায়ায় বন্দী হয়ে, জীবনের সৌন্দর্য আস্বাদনে মতি আসে কলকাতায়। প্রথমে কলকাতা এসে মতি শহর, পারিপার্শ্বিকতা, আচার-ব্যাবহার জীবন যাত্রার ছবি দেখিয়া স্তম্ভিত ও অবাক হইয়া যায়। যেমন অবাক হইয়া যায় প্রতিবেশিনী জয়ার ঘরের ছবিটি দেখে..’জয়ার মতো ঈষৎ স্থুলকায় এক রমনী কংকালসার এক শিশুকে মাটিতে ফেলিয়া ব্যাকুল আগ্রহে এক পলাতক সুন্দর দেবশিশুর দিকে হাত বাড়াইয়া আছে– ছবিখানা এই।’ তবে আস্তে আস্তে সে এই জীবনেই ভালবাসা খুজে পেয়ে বরন করে নেয়। এতোটাই যে শশী আর পরান তাকে নিতে এলেও সে যায় না।শশী ভাবে, “সংসারে হয়তো এমন অনেকেই আছে, মতির মতো এমন করিয়া ভালো অনেকেই বাসে, কিন্তু মতি ইহা শিখিল কোথায়? অনুভূতির এমন গভীরতা তাহার আসিলো কোথা হইতে?” সময় বয়ে যায়। বয়ে যায় শশীও। পাড়ার নির্জন রাস্তাটি আজো শশীর জীবনের রাজপথ হইয়া আছে। যে তাকে যতটুকু নাড়া দিয়েছে, এই পথে তাদের সকলের পড়িয়াছে পদচিহ্ন। তাহাদের মধ্যে অবশিষ্ট আছে শুধু কুসুম, এ পথে আজ শুধু কুসুম হাটে। কিন্তু সেই কুসুম! সেই চপল রহস্যময়ী, আধো-বালিকা, আধো-রমনী জীবনীশক্তিতে ভরপুর, অদম্য অধ্যবসায়ী কুসুম…

      By THANVIR R RAHMAN

      17 May 2024 03:18 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      দুটি পাখনায় রঙ বিলায় রঙিন প্রজাপতি, দুটি পত্রেই পেখম মেলে বিশাল মহীরুহ, দুটি ডানা মেললেই ফুটে উঠে উড়ন্ত নীলকন্ঠের সৌন্দর্য।।। তেমনি পুতুলনাচের ইতিকথার আকাশে যে দুটি নক্ষত্র উজ্জ্বলতম হয়ে ফুটেছে, যাদের ঘিরে ঘুরেছে গ্রহমালা, নীলকন্ঠে সুর বাজিয়েছে মহাকাল-- তারা শশী ও কুসুম। শশী শহর থেকে পাশ করা ডাক্তার, গ্রামে এসেছে। তার চরিত্রে সুস্পষ্ট দুটি ভাগ। এক ভাগে সাধারণ সাংসারিক বুদ্ধি ও ধনসম্পদ এর প্রতি মমতা যে দিকটা গড়ে তুলেছে তার বাবা গোপাল দাস। অপরদিকে রয়েছে কল্পনা, ভাবাবেগ ও রসবোধ। কলকাতায় মেডিকেল কলেজে পড়তে যাওয়ার সময়ও তার হৃদয় ছিল সংকীর্ণ, চিন্তাশক্তি ছিল ভোতা, রসবোধ ছিল স্থুল। তার এই দিকটি গড়ে তুলেছে তার বন্ধু কুমুদ। সে তাকে কথকথার মতো হৃদয়গ্রাহী করিয়া ধর্ম, সমাজ, ঈশ্বর ও নারী সম্পর্কে বুঝাইয়াছিল। শশী ভাবে 'এ সুদূর পল্লীতে সে বসন্ত কখনো আসিবে না যাহার কোকিল পিয়ানো, সুবাস এসেন্স, দখিনা ফ্যানের বাতাস। তবু শশী মনকে বাধিয়া রাখিবে? দীর্ঘ জীবন পড়িয়া আছে, পড়িয়া আছে বিপুলা পৃথিবী। আজ শশী কামিনী ঝোপের পাশে ক্যাম্প চেয়ারে বসিয়া বাশঁঝাড়ের পাতা-কাঁপানো ডোবার গন্ধ ভরা ঝিরঝির বাতাসে উন্মনা হোক, কোলের উপর ফেলিয়া রাখা বইখানার দুটি মলাটের মধ্যে জীবনটি তাহার আবদ্ধ থাক। একদিন কেয়ারি করা ফুল বাগানের মাঝখানে বসানো লাল টাইলে ছাওয়া বাংলোয় শশী খাঁচার মধ্যে কেনারি পাখির নাচ দেখিবে, দামী ব্লাউজে ঢাকা বুকখানা শশীর বুকের কাছে স্পন্দিত হইবে-- আলো গান হাসি আনন্দ আভিজাত্য -- কিসের অভাব থাকিবে শশীর? পরানের বউ কুসুম।শশুরবাড়ির প্রায় সব সম্পত্তি তার বাবার কাছে বন্ধক বলে সবাই হয়তো তাকে কিছুটা ভয়ই পায়। তবুও... 'বকাবকি করলে সবসময় কানেও তুলে না, নিজের মনে কাজ করিয়া যায়। নিজের মনে ঘরের কাজ করিয়া যায়। কাজ কাজ করিতে ভালো না লাগিলে খিড়কির দরজা দিয়া বাহির হইয়া গিয়া তালবনে তালপুকুরের ধারে ভূপতিত তালগাছটার গুঁড়িতে চুপচাপ বসিয়া থাকে। অদ্ভুত মেয়ে সে। বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলিতে ভালবাসে। কুসুমের এ মিথ্যে ভাষণ শশী মাঝে মাঝে লক্ষ করিয়াছে। ধরা পড়িবে জানিয়া শুনিয়াই সে যেন এই মিথ্যে কথা গুলি বলে। এ যেন তার এক ধরনের পরিহাস। কালোকে সাদা বলিয়া আড়ালে সে হাসে।শুনিতে মন্দ লাগে না শশীর। ওর এইসব খাপছাড়া কথায় ব্যাবহারে একটা যেন মিষ্টি ছন্দ আছে। বাড়ির অন্যদের সাথে কথা বলার সময় রান্নাঘরে শশীকে শোনাইয়া কুসুম যাত্রার দলের গান করে, টানা গুনগুনানে সুরে, অস্পষ্ট ভীরু গলায়। সত্য সত্যই পাগল নাকি কুসুম?!' পুতুলনাচের ইতিকথার আকাশে যেনো এক নীহারিকার নাম সেনদিদি! আচ্ছন্ন,অসুস্থ,মৃতকল্প সেনদিদি। গায়ের উজ্জ্বল রঙ লাল হইয়া হাতের অনন্তের সংগে মিশিয়া গিয়াছে, সারা গায়ে আরো সব অস্পষ্ট চিহ্ন, শশী যা চেনে। শশীর মুখ শুকাইয়া গেল। শরতের গোড়ায় সেনদিদি এ রোগ পাইল কোথায়। গাওদিয়া গ্রামে, কলিকাতা শহরে, দেশে-বিদেশে কোথাও শশী যার মতো রূপসী দেখে নাই, শুধু রূপের জন্যই যে মিথ্যা কলঙ্ক কিনিয়াছে, এ কি রোগ ধরিয়াছে তাহাকে!' গ্রামে একদিন যাত্রা দল আসে। যাত্রাদলের প্রবীর হয়ে আসে কুমুদ। 'শশীর বিশ্বাস করিতে বিস্ময় বোধ হয়! এ তো সেই কুমুদ! মানে বই না দেখিয়া যে একদিন তাহাকে ক্লাসের কাব্যচয়নে শেলীর দূর্বোধ্য কবিতা বুঝাইয়া দিয়াছিল, মোনালিসার হাসির ব্যাখ্যা করিয়াছিল।' তালবনে মতির মাকড়ি হারাইয়া যায়। কুমুদ মতিকে একখানা নতুন মাকড়ি কিনিয়া দেয়। মতির মনে হয়, 'মাকড়ি কেনার আগে কুমুদ তাকেই কিনিয়া ফেলিয়াছে'। কুসুম কি চায়? শশী হয়তো বোঝে, কিংবা বোঝে না। কেনো মতির বুকে টেথোস্কোপ ধরা নিয়ে তার এতো হিংসে? কেন সে হাত ভাঙার ছল করিয়া শশীর ঘরে যায়?? কেন মতির কথা জানতে তাকে তালবনে ডাকিয়া নেয়??? কেন বলে "চাঁদনী রাতে আপনার সঙ্গে কোথাও চলে যেতে সাধ হয় ছোটবাবু" ! কেন বলে "আপনার কাছে দাঁড়ালে আমার শরীর এমন করে কেন ছোটবাবু"!!! শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম? সেই আদিম মায়ায় বন্দী হয়ে, জীবনের সৌন্দর্য আস্বাদনে মতি আসে কলকাতায়। প্রথমে কলকাতা এসে মতি শহর, পারিপার্শ্বিকতা, আচার-ব্যাবহার জীবন যাত্রার ছবি দেখিয়া স্তম্ভিত ও অবাক হইয়া যায়। যেমন অবাক হইয়া যায় প্রতিবেশিনী জয়ার ঘরের ছবিটি দেখে..’জয়ার মতো ঈষৎ স্থুলকায় এক রমনী কংকালসার এক শিশুকে মাটিতে ফেলিয়া ব্যাকুল আগ্রহে এক পলাতক সুন্দর দেবশিশুর দিকে হাত বাড়াইয়া আছে-- ছবিখানা এই।' তবে আস্তে আস্তে সে এই জীবনেই ভালবাসা খুজে পেয়ে বরন করে নেয়। এতোটাই যে শশী আর পরান তাকে নিতে এলেও সে যায় না।শশী ভাবে, "সসংসারে হয়তো এমন অনেকেই আছে, মতির মতো এমন করিয়া ভালো অনেকেই বাসে, কিন্তু মতি ইহা শিখিল কোথায়? অনুভূতির এমন গভীরতা তাহার আসিলো কোথা হইতে?" সময় বয়ে যায়। বয়ে যায় শশীও। পাড়ার নির্জন রাস্তাটি আজো শশীর জীবনের রাজপথ হইয়া আছে। যে তাকে যতটুকু নাড়া দিয়েছে, এই পথে তাদের সকলের পড়িয়াছে পদচিহ্ন। তাহাদের মধ্যে অবশিষ্ট আছে শুধু কুসুম, এ পথে আজ শুধু কুসুম হাটে। কিন্তু সেই কুসুম! সেই চপল রহস্যময়ী, আধো-বালিকা, আধো-রমনী জীবনীশক্তিতে ভরপুর, অদম্য অধ্যবসায়ী কুসুম... পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ পদ্মা নদীর মাঝিকে সম্ভবত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলা হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে পাঠ্য থাকায় পদ্মা নদীর মাঝি বেশ খুটিয়ে খুটিয়েই পড়তে হয়েছে, কিন্তু তবুও আমার মনে হয়নি আমি মানিক বাবুর কোন বই একাধিকবার পড়বো। কিন্তু পুতুল নাচের ইতিকথা আমি একবার পড়েছি, আবার পড়েছি, বারবার পড়েছি।।। আমি এই বইকে পদ্মা নদীর মাঝি থেকে যোজন যোজন এগিয়ে রাখবো। আমাকে যদি কখনো বলা আমার পঠিত কোন চরিত্রে সাথে ইচ্ছানুযায়ী কোন যায়গায় আলাপ করতে দেবে, আমি কুসুমের সাথে একটা দুপুর, একটা বিকেল তালবনে, তালপুকুরে আলাপ করতে চাই। তিনি তালবনের এতো ভীষণ সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন, যতোবার তালবনের বর্ণনা এসেছে, খুব করে ইচ্ছে হয়েছে- ইসস যদি একবার তালবনে আমিও বসতে পারতাম! কিছু সম্পর্ক থাকে, যে সম্পর্কগুলোর কোন নাম হয় না, এটা তেমন ই এক সম্পর্কের উপাখ্যান। কিছু সময়, কিছু অনুভূতি ভেতরে ডুবে ডুবে থেকে অব্যক্ত যন্ত্রনা দিয়ে ঠিকই একসময় ভাসিয়ে নিয়ে যায়, যে ভেসে যাওয়ায় নিজের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না- এটা তেমনি এক ভেসে যাওয়ার গল্প। ভালবাসার দায় শোধের যে আমাদের যে মরিয়া আকাঙ্ক্ষা তা কি সুচারুভাবেই না লেখক দেখিয়েছেন, "না, তুমি যেতে পারবে না শশী, আমার ভুতোকে বাচিয়ে যাও! যাও আমার ভুতোকে বাচিয়ে! ও যে আমার জন্যে জাম আনতে গাছে উঠেছিল শশী!" সূক্ষ্ম ঠাট্টাও তিনি করেছেন, " গ্রামের লোকের অনুমানশক্তি প্রখর। সকালে আকাশের দিকে চাহিয়া তাহারা বলিতে পারে বিকালে বৃষ্টি হইবে। বিকালে যদি নেহাত বৃষ্টি না-ই হয় সে অপরাধ অবশ্য আকাশের :D " যে কারণগুলোর জন্য আমি পুতুলনাচের ইতিকথাকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেরা সৃষ্টি বলি তা হলো তার দর্শন! জীবনদর্শন!! "শশী জানে এরকম হয়, মানুষের দেহে আজো এমন কিছু ঘটিয়া চলে এ যুগের ধন্বন্তরিরও যা থাকে জ্ঞান বুদ্ধির অগোচরে।" "প্রিয়াকে মানুষ গড়িয়া লইতে পারে না। মেয়ের মতো যাকে শিখাইয়া পড়াইয়া মানুষ করা যায় তাকে বসানো চলে না প্রিয়ার আসনে" "সংসারে যেখানে যত টাকা সেখানে তত নারী, সেখানে তত রূপ" "জীবনকে শ্রদ্ধা না করিলে জীবন আনন্দ দেয় না। শ্রদ্ধার সংগে আনন্দের বিনিময়, জীবন দেবতার এই রীতি" নামকরন যদি একটা উপন্যাসের কিছুটাও সার্থকতার মাপকাঠি হয়, লেখকের পরিপক্বতার নিদর্শন হয়, তবে পুতুলনাচের ইতিকথা এক পরিপক্ব হাতের সার্থক উপন্যাস। "সংসারে মানুষ চায় এক আর হয় আর, চিরকাল এমনি দেখে আসছি ডাক্তারবাবু। পুতুল বৈ তো নই আমরা, একজন আড়ালে বসে খেলাচ্ছেন।" মাঝে মাঝে আমরা জানি, আমার ভালবাসা তাকে জীবনেও স্পর্শ করবে না, তবুও ভালবাসি... যেন কিছু ভালবাসা বাতাসে উড়িয়ে দেয়ার। তেমনি.... " শশী জানে, কুসুম থাকিবেনা, থাকিলেও ভালবাসিবে না, তবু উৎসুক ভাবে শশী জবাবের প্রতীক্ষা করে।"... কিছু বই সময়ের গন্ডিকে অতিক্রম করে একান্তই আমাদের হয়ে যায়, ইচ্ছে করে লেখককে দিয়ে বই নয়, বইকে দিয়ে লেখককে চিনতে- পুতুলনাচের ইতিকথা তেমনি এক বই! যেনো মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নক্ষত্রভরা সাহিত্যাকাশে পূর্ণিমারচাঁদ হয়ে জ্বলছে পুতুলনাচের ইতিকথা। এ যেনো অসাধারণের মাঝে আরো অসাধারণ.. মুগ্ধতার মাঝে অনন্ত মুগ্ধতা।

    • Was this review helpful to you?

      or

      the nice one

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!