User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
আমার প্রিয় উপন্যাস! এক কথায় অনবদ্য সৃষ্টি ?
Was this review helpful to you?
or
বই ভালো ছিলো তাড়াতাড়ি পেয়েছি
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কোয়ালিটি ভাল .
Was this review helpful to you?
or
বইটি চমৎকার। প্রেমিকাকে গিফ্ট করার মতো।
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী। আহা। আপনাকে আটকে রাখবে।
Was this review helpful to you?
or
আশ্বিনের বর্ষার রাতে যখন বইটা শুরু করলাম, তখন মনে হলো এই বই পড়ার এরচেয়ে উপযুক্ত পরিবেশ আর হয় না। যতো পড়ছিলাম, ততোই আবিষ্ট হচ্ছিলাম- কী সুন্দর! কী সুন্দর! এ্যাতো বেশি সুন্দর লাগছিলো যে নিঃশ্বাস আটকে আসতে চাইছিলো। এ্যাতো বেশি সুন্দর যে, ভয় হচ্ছিলো তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাবে। এ্যাতো বেশি সুন্দর যে আশঙ্কা হচ্ছিলো, শেষটায় কোনো অমঙ্গল হবে নাতো............ আমার ভয় আর আশঙ্কাই জিতে গ্যালো। বইটা ফুরিয়ে গ্যালো কয়েক ঘন্টায় আর রেখে গ্যালো একরাশ হাহাকার। শেষ করার পর মনে হলো, এই বই পড়ার এরচেয়ে বাজে পরিবেশ আর হয় না... ঘোর বরষার রাতে কখনো শব্নম্ পড়বেন না। বুক ভেঙ্গে যাবে! ভেঙ্গে যাবে!!!
Was this review helpful to you?
or
অনেকদিন ধরে খোজার পর পাইছি।
Was this review helpful to you?
or
এতো এতো ভালো লাগছিল যে বলে বোঝানো যাবে না ?
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কোয়ালিটি ভাল ছিল। ডেলিভারিও দ্রুত ছিল।
Was this review helpful to you?
or
দিনের আলোতে খেলা তো সহজ,সবাই-সবাইকে দেখতে পায়,তাতে আর রহস্য কোথায়?অন্ধকারের অজানাতে ঠিকজনকে চিনে নিতে "পারাই" তো সবচেয়ে বড় খেলা,শিশু যেমন গভীরতম অন্ধকারে মাতৃস্তন খু্ঁজে পায়! বইঃ- শবনম
Was this review helpful to you?
or
ভাল লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
শেষটা বেদনাদায়ক না হলে বোধহয় মজা পেতাম না। গল্পের প্রতিটি লাইন আমাকে মুগ্ধ করেছে।
Was this review helpful to you?
or
তুমি আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেও না। ?
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
শবনম ভানু বা শবনম শিউলি উত্তর চরিত্রটি সেই
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো একটি রোমান্টিক উপন্যাস ❤️
Was this review helpful to you?
or
Best
Was this review helpful to you?
or
baje
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
good book
Was this review helpful to you?
or
নির্জলা প্রেমের উপন্যাস। বর্ননা আর প্রেমের অনবদ্য মেলবন্ধনে বইখানা প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থাকবে বাংলা সাহিত্যে। ত্যাগ তিতিক্ষার এই প্রেম তিক্ততাও পাঠক মনে বশ করতে পারে এই বই টি তার উজ্জ্বল উদাহরন
Was this review helpful to you?
or
Finnest pieces of humor, Dyed Moztoba Ali was a great writer, and did the Great.
Was this review helpful to you?
or
ভালোই ছিলো!
Was this review helpful to you?
or
মুগ্ধ করা বই
Was this review helpful to you?
or
অন্তিমতার পূর্বে যে সখ্যতার ঘর বেঁধেছিল; আকাশে, বাতাসে,পাহাড়ে, মেঘে..আমি তারে খুঁজি ফিরি শুধু তাহারি মাঝে! ?
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর কার্যক্রম।
Was this review helpful to you?
or
That's good
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। এত চমৎকার উপমা আর বর্ণনা শৈলীতে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর একটা বই
Was this review helpful to you?
or
দারুন
Was this review helpful to you?
or
KHUB SUNDOR EKTA BOOK
Was this review helpful to you?
or
আমার কাছে রোমান্টিক উপন্যাসের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় বই এটি। লেখক আমার মনে যেনো বিশুদ্ধ প্রেম-ভালোবাসা একেবারে নিংড়ে দিয়েছে। বইয়ের বাঁধাই, প্রচ্ছদ, প্রিন্ট সবই খুবই ভালো। ধন্যবাদ রকমারি।
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা রোমান্টিক উপন্যাস
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
কি সুন্দর লেখনী! একটানা পড়ে গেছি, আর একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। শব্নম্ এখন কোথায়? তাকে কি আর পাওয়া যাবেনা? শব্নম্ কি হারিয়ে গেছে কালের অতল গহ্বরে?
Was this review helpful to you?
or
দুটি বই পড়তেই খুব ভালো লেগেছে। অন্য সকল পাঠক দের উদ্দেশ্য করে বলছি যে, আপনারাও বই দুটি সময় পেলে অবশ্যই পড়ে দেখবেন। আশা করছি আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে। বিশেষ করে যারা রোমান্টিক উপন্যাস গুলো পড়তে ইচ্ছুক তারা এই দুটো বই অবশ্যই পড়ে দেখবেন।
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
দারুন সুন্দর একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু বইয়ের রিভিউ অশ্রু দিয়ে লিখতে হয় - সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রথম কোন বই পড়লাম। প্রেমের আখ্যানের কোন কিছু বাকি রাখা হয় নি, পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় কাব্যাংশ এর ঝলক মন্ত্রমুগ্ধ করতে যথেষ্ট। কিন্তু শবনম তো ভোরের শিশির, যা সকালের প্রথম রৌদ্রের পরশেই ফুরিয়ে যায়। কেউ কী শবনম'কে সারাজীবন নিজের মতো করে সত্যই পাবে? শবনমের মোহনীয় রূপ, বুদ্ধিমত্তা, কবিত্ব-রস,যৌক্তিক উচ্চারণ,ভালবাসার মানুষের জন্য মিষ্টি হিংসেমী,লজ্জাবোধের সাবলীল প্রকাশ,দূরদর্শিতা, চারিত্রিক দৃঢ়তা এ সবকিছু মজনুককে প্রভাবিত/মনমুগ্ধ করেছে। শবনমের প্রেমে পড়া মজনুনের উপযুক্ত মধুর শাস্তি ছিল। তাই শবনমের মুখ থাকে উচ্চারিত হয় চিরমানবের অন্তর্বেদনা, "আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না, আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না।" বুকের একদম ভিতরে হিমালয়ের সমান উঁচু হয়ে থাকা বেদনাগুলির ভার কমানোর জন্যও তো একটা মানুষ লাগে! আশেপাশে শত সহস্র মানুষ থাকলেও বিশেষ একজন মানুষ লাগে। যে শুধুই একান্তে, নিভৃতে মনের কথাগুলি বলার মানুষ, মনের কথাগুলি শোনার মানুষ, গভীর আবেগে জড়িয়ে ধরে থাকার মানুষ। অযুত নিযুত সংখ্যার মানুষ আশেপাশে থাকলেও একান্ত পাশে থাকার মানুষের খুবই অভাব এই জীবনে। হে প্রেম তুমি পবিত্র হলে শবনম-মজনুনের বক্ষমাঝে স্থান পেয়ে ! হে প্রেম, তুমি অমরত্ব পেলে শবনম-মজনুনের হারানোর ভিতর দিয়ে ! হে প্রেম, তুমি ধন্য হলে লায়লি-মজনুর বক্ষমাঝে স্থান পেয়ে ! হে প্রেম, তুমি অমরত্ব পেলে লায়লি-মজনুর মৃত্যুর ভিতর দিয়ে ! খুদাতালার সিংহাসন থেকে ঐশীবাণী উচ্চারিত হল : হে সুরলোকবাসীগণ ! প্রেমের দহন দাহে দগ্ধ হয়ে অর্জন করেছ তোমরা সুরলোকের অক্ষয় আসন। হে মর্ত্যবাসীগণ ! সর্বচৈতন্য সর্বকল্পনার অতীত যে মহান সত্তা তিনি তার বিশ্বরূপ ব্রক্ষান্ডস্বরূপের একটিমাত্র রূপ স্বপ্রকাশ করেছেন মর্ত্যালোকে- তাঁর প্রেমরূপ। ঘড়িতে কি বাজে, 'ঠিক...ঠিক...ঠিক...ঠিক...। না ভুল ঘড়িতে বাজে, শব...নম...শব...নম...শব...নম। হঠাৎ একদিন আকস্মিকভাবে আসবে তো শবনম ? শবনম কি মজনুনকে বলে যায়নি, 'বাড়িতে থেকো। আমি ফিরব?' শবনম কি ফিরেছিল ???
Was this review helpful to you?
or
অ-অ-অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
Girl you're so rude I'm slippin' away all i want, is ecstasy...............
Was this review helpful to you?
or
One of the best creations
Was this review helpful to you?
or
Mujtaba Ali is always rocks ✊?
Was this review helpful to you?
or
Good experience!!!
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর
Was this review helpful to you?
or
Great book, if it gets to your comprehension.
Was this review helpful to you?
or
এমন ভালো ক’জনইবা বাসতে পারে। হৃদয় ছুয়েঁ দেয়ার মত একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
সেরা। লেখকের সেরা বই। খুব ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
প্রথমবার যখন শবনম পড়েছিলাম,শবনমকে পড়েছিলাম_প্রেম ও বিরহের যাতনায় আমার জ্বর চলে এসেছিল। শবনম,এটি কি উপন্যাস?নাকি চিরায়ত প্রেম-বিচ্ছেদের শিল্পিত কাব্যরূপ? মানবজীবনে প্রেম কি সৃষ্টিকর্তার প্রত্যাদেশে অবতীর্ণ হয়? হে মর্ত্যবাসীগণ!সর্বচৈতন্য সর্বকল্পনার অতীত যে মহান সত্তা তিনি তাঁর বিশ্বরূপ ব্রহ্মাণ্ড রূপের একটিমাত্র রূপ স্বপ্রকাশ করেছেন_মর্ত্যলোকে তাঁর প্রেমরূপ। যে চার্বাক ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন না তিনি নাকি প্রেমের প্রতিদানের আশায় একদিনের তরে ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিলেন- সেই একদিন শুধু জীবনে চার্বাক নত হয়েছিল নিজে চরণে ধাতার প্রেমের কল্যাণে শুধু সেই একদিন সে যে আনন্দের দিন_সে যে প্রত্যাশার।(সত্যেন দত্ত) শবনম-মজনুনের প্রথম সাক্ষাতে মজনুন বিমোহিত হয়েছিল শবনমের চাপল্য,সৌন্দর্য আর অসাধারণ কাব্যপ্রেমে ।শবনম,সেতো শরৎ নিশির স্বপ্ন-প্রভাতের বিচ্ছেদ বেদনা,বিরহিনী নিশীথিনীর অশ্রুশিশির। মজনুন যখন জিজ্ঞেস করেছিল, আচ্ছা, তুমি আমায় কখন ভালোবাসলে?শবনম বলেছিল,হোটেলের বারান্দায় যখন তোমাকে ডেকে পাঠালুম।তুমি যখন কোনো কথাই খুঁজে পাচ্ছিলে না,তখন। প্রেমের প্রথম ধাক্কায় মুখরাও নাকি মূক হয়ে যায়। গভীরে ডুবেছে যেজন,জানিবে মুক্তার সন্ধানে বুদ্বুদ হয়ে তার প্রশ্বাস ওঠে না উপর পানে। বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক উপন্যাস হিশেবে শবনমের স্থান অপ্রতিদ্বন্দ্বী।গুণীজন প্রেমে পড়ার পূর্বে শবনম পড়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন। মিলন ও বিচ্ছেদে মজনুনের উপলব্ধি আর ললিতপ্রেমময় কথামালা আপনাকে শবনমের প্রেমে পড়তে বাধ্য করবে। ...~ তুমি পুরুষ তুমি কি করে বুঝবে কুমারীর প্রেম।প্রেম মেয়েদের সর্বস্ব আর পুরুষের মাত্র একটি অংশ । ...~ হৃদয়ের যুক্তি তর্কশাস্ত্রের বিধিবিধানের অনুশাসন মানে না আকাশের জল আর চোখের জল একই যুক্তি কারণে ঝরে না।একটা মৃন্ময় আরেকটা চিন্ময়; একটা বাঙ্ময়-সারা আকাশকে মুখর করে তোলে, আরেকটা নৈস্তব্দ্ধ্যে বিরাজ করে সর্ব মনময়। ...~ প্রেম গোপন রাখতে যে গভীর আনন্দ আছে তার থেকে আমি তাকে বঞ্চিত করতে যাব কেন? ...~ আর মজনুনের শেষ আর্তনাদ:সে কি বলে যায়নি,'বাড়িতে থেকো।আমি ফিরব।'
Was this review helpful to you?
or
Excellent book
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের কথা বলবো? এই লেখার কোনো তুলনা হতে পারে না। লেখকের রসবোধ, লেখার সাহিত্যমান, চরিত্র নির্মান সবকিছু আপনাকে সম্মোহিত করে রাখবে। লেখকের কয়েকটা বই পড়ে মনে হয়েছে, এতো গুনী একজন লেখক কিভাবে দেশে এতো আন্ডাররেটেড।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ শবনম। লেখকঃ সৈয়দ মজতবা আলী। "আমি তব সাথী হে শেফালী, শরৎ-নিশির স্বপ্ন, শিশির সিঞ্চিত প্রভাতের বিচ্ছেদ বেদনা।" "সৈয়দ মুজতবা আলীর "শবনম"। যারা এই উপন্যাসটি পড়েছেন তারাই দ্বিধার মধ্যে পড়ে জান। এই উপন্যাসটি কবিতার আদলে উপন্যাস, নাকি উপন্যাসের আদলে কবিতা বলবেন। আসলে সৈয়দ মুজতবা আলী শবনম আর মজনুনের প্রেমের কাহিনী বণর্না করেছেন এখানে। শবনম আর মজনুনের প্রেম এতোটায় লেখকের হৃদয় ঘনিষ্ঠ ছিলো-যে এতে কবিতার মাধুর্য পাওয়া যায়। "শবনম-এর অর্থ-শিশির, শিশির পবিত্র হয় ভোরে। তা ঘাসের উপর পড়ে, ঘাসকে সজিব করে তার দুপুরে উড়ে যায়। আফগানিস্থানে এক বিদেশীনির প্রেমে পড়ে বাঙালি মজনুন। শবনম উপন্যাসের নায়িকা শবনম, তার ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ, বলিষ্ঠ, যেমন কমল, অমনি কঠোর, সে প্রাণ খুলে ভালোবাসতে যানে, ঘটনা চক্র শবনম আর মজনুন বিয়েও হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে শবনমকে খুঁজে পাওয়া যায়না। মজনুন সব জায়গায় খুঁজে শবনমকে, কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়না। শবনম বলে গিয়েছিল-"আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না, আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না। শবনম উপন্যাসটি, একটি প্রেমের উপন্যাস। এখানে মজনুন চরিত্রটি বাঙালি আট-দশটি চরিত্রের মতো সাধারণ। তবে শবনমের প্রেমে সে অনন্য। এখানে শবনমের নারীর বলিষ্ঠতা চোখে পড়ার মতো। তবে এই উপন্যাসে প্রেম ছাড়াও আফগানিস্তানের রাজনৈতিক, ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক, খুটিনাটি বিষয় জানা যায়। একজন প্রবাসীর দেশ সম্পর্কে অনুরাগ বিষয়ও স্পষ্ট জানা যায়। শবনম যাওয়ার আগে মজনুনকে লিখে গিয়েছিল বাড়িতে থেকো, আমি ফিরব। তবে কি শবনম ফিরে আসে? নাকি ফিরে না? এটি জানতে হলে পড়তে হবে, শবনম উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
*বইঃ-শবনম *লেখকঃ-সৈয়দ মুজতবা আলী *ধরণঃ-উপন্যাস *ভাষাঃ-বাংলা *প্রকাশণীঃ-বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র *প্রথম বিশ্বসাহিত্য প্রকাশঃ-ফেব্রুয়ারি ২০১৪ *প্রচ্ছদঃ-ধ্রুব এষ *মোট পৃষ্ঠাঃ-১৪০ *মূল্যঃ-২৪০ ৳ =সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মুজতবা আলীকে নিয়ে একবার একটি কথা পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার।কথাটা ছিল ঠিক এমন—"সৈয়দ সাহেবকে যার পড়ার সুযোগ হয়নি তার বাংলা সাহিত্যের কিছুই পড়ার সুযোগ হয়নি!"সত্যই আজ মনে হচ্ছে তাই।মুজতবা আলী বাংলা সাহিত্যের এক অনবদ্য লেখক।যেমন রম্যে-তেমনি উপন্যাসে।শবনম তাঁর একটি অনবদ্য প্রেমের উপন্যাস।তবে সত্যই কি উপন্যাস??এমন আধোকাব্য-আধোগল্পের লেখাকে কি সত্যিই উপন্যাসের তালিকায় ফেলা যায়??হয়তো না!তবুও শবনম উপন্যাস না হয়ে পারে না।সৈয়দ মুজতবা আলীর এক অনবদ্য সৃষ্টি হলো শবনম৷ কোনো সৃষ্টিমুখর প্রেমকাব্যও হয়তো।উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়তো শবনম।মজনুর স্থানে ছিল মজনুন।প্রথম খন্ডে আমরা দেখি,বিদেশী মজনুন আফগানিস্তানে শিক্ষকতা করার উদ্দেশ্য যায়।এক রাতে পথ ভুলে গেলে লায়লীর স্থলে উদয় ঘটে শবনমের।এক আফাগানিস্তানি মেয়ে।তবে তাতে কি?প্রেমের যে রুপ মর্ত্যলোকে খোদাতায়ালা সৃষ্টি করে দিয়েছেন তার যে সীমা নেই।প্রেমকে বাঁধা যায় না কোনো সীমায়।তাইতো মজনুন শবনমের প্রেমে পড়ে।প্রথম খন্ডের শেষে নিয়মমাফিক আবির্ভাব হয় দ্বিতীয় খন্ডের।এই অংশে আমরা দেখতো পাই প্রেমের রুপ।প্রেমের সুখ।মজনুন আর শবনম বিয়েতে জড়িয়ে পড়ে।তবে তাদের বিয়ে দুইবার হয়!তারা কাউকে না জানিয়ে একবার বিয়ে করে।পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে।শবনম এ থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র হলো আবদুর রহমান।উপন্যাসের প্রয়োজনে তাকেও লেখক উপস্থাপন করেছেন অসংখ্যবার।দ্বিতীয়খন্ডের শেষ দিকে আমরা দেখতে পাই,শবনমের হারিয়ে যাওয়া।কিন্তু যাওয়ার আগে তার মুখ থেকে উচ্চারিত সেই অনবদ্য ধ্বনিসমষ্টিই বা কি ছিল..?রাধা-কৃষ্ণ কিংবা শিরি ফরহাদের প্রেমের চিরায়ত ধারা শবনম- মজনুনের মাঝেও চিরবহমান—সে প্রেম অনন্ত - অনাদি।তাই শবনমের মুখ থেকে উচ্চারিত হয় চিরমানবপর অন্তর্বেদনা~ "আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না।আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না।" তবে মজনুন কি সত্যিই শবনমের বিরহে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল?আর শবনমই বা কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলো?তা জানতে হলে পড়তে হবে আপনাকে শবনম।উপন্যাসের তৃতীয় খন্ডে আমরা দেখি প্রেমের তীব্রতা।শবনমের বিচ্ছেদে মজনুনের বিরহকাতর হয়ে পড়া।তবুও মজনুন ধৈর্য হারায় না।সে শবনমকে খুঁজতে থাকে শরৎের দেবদাস হয়ে।শবনমকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের একেবারে শেষে লাইনে দেখা যায় স্ব-মনের উদ্দেশ্যে মজনুনের প্রেমিক হৃদয়ের বিরহাতুর প্রশ্ন-"সে কি আমাকে বলে যায়নি,'বাড়িতে থেকো।আমি ফিরবো?' এই ছিল শবনমের সংক্ষিপ্ত কাহিনী।তবে পড়া শেষে অবশ্যই পাঠককে বলতে হবে,শবনম একটি প্রেমের উপন্যাস।পবিত্র প্রেমের।যারা কাব্যের রসে অবগাহন করতে পারেন তাদের অবশ্যই পাঠ্যতালিকায় থাকা উচিত এমন একটি সৃষ্টি শবনম।শবনম কাব্যে ভরা।যদিও কাব্য না হয়ে উপন্যাসই হয়ে উঠে শবনম।শবনম রয়েছে প্রিয়ার উদ্দেশ্যে কালিদাসের সেই উক্তি~ "হে সৌভাগ্যবান মুক্তা,তুমি একবার মাত্র লৌহশলাকায় বিদ্ধ হইয়া প্রিয়ার বক্ষঃস্থলে বিরাজ করিতেছো;আর হতভাগ্য আমি বিরহ-শলাকায় শতবার ছিদ্রিত হইয়াও সেই স্থলে স্থান করিয়া লইতে পারি না।" সত্যিই তাই।মুক্তার কিসমত বহুত ভালো।আর মজনুনের মতো প্রেমিকদের শেষপর্যন্ত মজনু কিংবা দেবদাসই হয়ে উঠতে হয়।তবুও শবনম শিউলির মতো প্রেমিকা কে না চায়??যারা কামের চোখে প্রেমকে অবলোকন করেন তাদের প্রেম কি তা জানার জন্য হলেও শবনম পড়া প্রয়োজন।শবনম পড়ে অনুভূতি আসতে বাধ্য-সর্ব চৈতন্যে,সর্ব কল্পনার যে মহান সত্তা তিনি তার বিশ্বরুপ ব্রক্ষান্ড স্বরুপের একটি মাত্র রুপ স্বপ্রকাশ করেছেন—"মর্ত্যলোকে তার প্রেমরুপ।"এভাবেই শবনম হয়ে উঠে— "শারদ-প্রাতে গন্ধবিধুর মাঠের শেফালি-বিছানো গালিচায় বিরহীনী নিশীথিনীর অশ্রুশিশির।" হ্যাপি রিডিং? রেটিংঃ-৫/৫ #রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ #এপ্রিল-২০২০ ~ফখরুল ইসলাম.
Was this review helpful to you?
or
So beautifully written!!! Mesmerizing! Loved it!! ❤❤
Was this review helpful to you?
or
ভালো লাগার মতো একটি বই, আপনারা চাইলে পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
‘শবনম’ শুধু উপন্যাস নয়- যেন উপন্যাসের ঠোঙায় পাওয়া কবিতা। আত্নজীবনী বলেও কয়েকবার মনে হয়েছে। অবশ্য লেখকের লেখায় তার জীবনের একটা স্পর্শ থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ‘শবনম’ এ কেন যেন ঠিক স্বাভাবিক মনে হয় না বিষয়টা। মনে হয় অনেক বেশি আত্নজৈবনিক। হয়তো তিনি আমাকে বোকা বানিয়েছেন- অথবা উপন্যাসের ছলে আত্মজীবনী লিখে গেছেন-জানি না কোনটা ঠিক। শেষে সব ফেলে বইটা আমাকে মুগ্ধ করেছে এতটুকু বলতে পারি।
Was this review helpful to you?
or
এককথায় বললে,অসাধারন।এমন কাব্যে মেশা প্রেমকাহিনী আর কখনো পড়া হয় নি।শবনমের বয়ানে ফারসি আর ফরাসি কাব্য আর মজনুনের বয়ানে বাংলা কবিতা দিয়ে তার জবাবগুলো সত্যি অসাধারন ছিল।আর অনুপ্রেরণা হিসেবে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের 'বাঙ্গালি তরুণ তরুণীদের প্রেমে পড়ার পূর্বে অবশ্যই সৈয়দ মুজতবা আলীর শবনম বইটা পড়ে নেওয়া উচিত।এমন শিক্ষণীয় প্রেমের উপন্যাস বিশ্ব সাহিত্যে আর একটাও নেই' কথাটি তো ছিলই।প্রেম তো কোনো একসময় করতেই হবে তাই আগে থেকেই পড়ে রাখলাম
Was this review helpful to you?
or
মুজতবা আলীর ‘শবনম’ এর চাইতেও ভাল কোন প্রেমের উপন্যাস লিখা হয়েছে কি-না জানিনা, তবে ‘শবনম’ এর মত অন্য কোন প্রেমের উপন্যাস পড়ে আমি এতটা মুগ্ধ যে হব না এটা একশ ভাগ নিশ্চিত। ‘শবনম’ই একমাত্র উপন্যাস যার প্রতিটি শব্দ নিয়ে তৈরি বাক্য আমাকে আলাদা আলাদাভাবে আকর্ষণ করে। ‘শবনম’ পড়ার পরের ফিলিংসটা নিয়ে আমার মনে হয় আমি একটা বই-ই লিখে ফেলতে পারব এবং সেটা যতই অখাদ্য হোক, আমি জানি আমার অনুভূতিগুলো সম্পূর্ণ খাঁটি।
Was this review helpful to you?
or
অদ্ভুত এবং অনবদ্য এক কাজ। এই উপন্যাস পড়ে আমার দুটি জিনিস মনে হয়েছে, লিখতে হলে পড়তে হবে এবং ভ্রমণ লেখকের জন্য আবশ্যক করা উচিত। সৈয়দ মুজতবা আলী একজন প্রাজ্ঞ, বহু ভাষাবিদ লেখক। কর্মসূত্রে অনেকদিন আফগানিস্তানে ছিলেন। এজন্য আফগান কৃষ্টি কালচারের সাথে খুব চমৎকারভাবে পরিচিত। যার প্রভাব বইয়ের প্রতিটি পাতায়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে 'শবনম' একটি মিষ্টি প্রেমের কাব্যিক উপন্যাস। এই গল্পে মুগ্ধতা আছে, কাব্যিকতা আছে, প্রেমে বিলীন হয়ে যাওয়া আছে, আছে প্রেমের চিরন্তন এক রূপ 'বিরহ'। মজনুন এবং শবনমের এই প্রেম পাঠকের হৃদয় আলোড়িত করবে।
Was this review helpful to you?
or
শবনম" সৈয়দ মুজতবা আলীর অনবদ্য একটি উপন্যাস। সৈয়দ মুজতাবা আলীর সাথে আমার পরিচয় ক্লাস এইটে। আমার ভাইয়ের কলেজ ব্যাগে একটা উপন্যাসের বই পেলাম। নাম শবনম। বইয়ের প্রচ্ছদে ছিল ঘোমটা টানা এক সুশ্রী নারী। তখন আমার সাহিত্যের বই পড়ার নেশা তুঙ্গে। হাতের কাছে যা পাই সব পড়ে ফেলি। খবরের কাগজের সাহিত্য পাতা থেকে সাময়িকীর গুটিকতক পাতাতেও গল্প কবিতা পেলে আমি হাপুস করে গিলে নিতাম। তাই শবনম পাওয়া মাত্রই পড়া শুরু। শবনম উপন্যাস মূলত আফগানিস্তানে থাকাকালীন সৈয়দ মুজতাবা আলীর প্রেম আখ্যান। যেখানে তার প্রণয় হয়েছিল শবনম নামের এক সুন্দরী তরুনীর সাথে। যার নাম শবনম। শবনম ছিল রুপবতী আর বিচক্ষণ নারী। শবনম আর মজনূনের( মুজতবা) প্রেম গড়াতে থাকে গভীর থেকে গভীরতরে। আর সে প্রেমের পরতে পরতে ছিল কবিতা আর কবিতা। তাই অনেকে শবনমকে কাব্যউপন্যাসও বলে থাকে। উপন্যাসের চিরায়ত নিয়মে জটিলতা আর সংকট সৃষ্টি হয়েছিল এ উপন্যাসেও। শবনম আর মজনূনের প্রেমেও ছিল বিরহকষ্ট। তাই উপন্যাসের এক স্থলে শবনম মজনূনকে বলেছিল ; "তুমি আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না।" সর্বোপরি বিরহ মিলন আর অভিসারের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে উপন্যাসের কাহিনী এবং তাদের প্রেম বিবাহ অব্ধি গড়ায়। কিন্তু শেষাবধি এক অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে উপন্যাসটি অমিমামংসীত ছোটগল্পের মত বেশ কয়েকটির প্রশ্ন রেখে অসমাপ্ত হয়। অসমাপ্ত বলছি কারণ; মনের মাঝে এত তীব্র কটি প্রশ্ন রেখে উপন্যাসটি কেন শেষ করলেন সৈয়দ মুজতবা আলী? তাই সেই দায় মাথায় রেখেই তিনি উপন্যাসটির ইতি টেনেছেন "তামাম ন'শুদ" শব্দ দিয়ে। যার বাংলা অর্থ "অসমাপ্ত "। তবে সব মিলিয়ে শবনম একটি কাব্যে গাথা প্রেম কাহিনীর অশ্রঝরা উপন্যাস। অর্থাৎ ট্রাজেডি উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা সাহিত্যের অন্যতম একজন সার্থক লেখক। সার্থক ঔপন্যাসিক, অপরাজেয় রম্যলেখক কিংবা । বাংলা ভ্রমণকাহিনীর মহান গুরু কত অভিধায় তাকে অভিহিত করা যায়। রম্যবােধের পরিপুষ্টতায় উজ্জীবিত লেখক তিনি। তাঁর সার্থক প্রেমের উপন্যাস "শবনম" নিখাদ প্রেমের আনুকূল্য, ভাবের প্রগাঢ়তা, ভাষার নান্দনিকতা ও পরিশীলন, পাণ্ডিত্যের মুছনা ও সার্থকতার প্রাবল্যতায় সমুজ্জ্বল। "শবনম" বাংলা। সাহিত্যের সার্থক প্রেমের উপন্যাসগুলির কাপ্তান। এটা নিছক প্রেমের পলাশ প্রসূন নয় বরং শবনম নামের একজন তুর্কি। বংশােদ্ভূত আফগান ধনাঢ্য ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যার সাথে মজনুন নামক এক বাঙালী যুবকের অন্তর্বেদনা, প্রেমের আলেখ্য। হৃদয়ের সব ভালােবাসা অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতেও যেখানে নিঃশেষ হয়ে যায় নি। শবনমের দুটি মাত্র কথা "বাড়িতে থেকো। আমি ফিরবাে", পাঠকের মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি সঞ্চার করে, যা পাঠককে রীতিমতাে ভাবের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, কষ্টের লােনাজলে অবগাহন করতে শেখায়, ধৈর্য ও সহ্যের সীমা-পরিসীমাকে ব্যাপ্ত করে। এই কালজয়ী উপন্যাসের ভূমিকা লিখেছেন ড. মুহম্মদ এনামুল হক এবং এই বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে রাজশেখর বসুকে। পারসোনাল রেটিংঃ৪.৫/৫
Was this review helpful to you?
or
সচরাচর অনেক প্রেমের কাহিনী-গল্প-উপন্যাস আমরা পড়ে থাকি।তবে এই উপন্যাসটি পড়লে প্রেম সম্পর্কে ধারণাই পাল্টে যাওয়া উচিত।এটি সাধারণ কোন প্রেমের কাহিনী নয়,অসাধারণ তাৎপর্যময় একটি ভালোবাসার কাহিনী।বইটির বেশীরভাগ অংশই কাব্যিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।আফগানিস্তানের ব্যতিক্রমী চরিত্রের এক মেয়ে শবনমের সঙ্গে ব্যতিক্রমধর্মী এক প্রেমের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে বইটিতে।
Was this review helpful to you?
or
It's an important book to gather knowledge.
Was this review helpful to you?
or
বাড়িতে থেকো, আমি ফিরবো" দশটা বর্ণ চারটা শব্দ, কত সহজেই উচ্চারণ করে ফেললাম। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিচ্ছি উফফ্স। নিটল প্রেমের উপন্যাস হিসেবে "শবনম" কালজয়ী। "শবনম" এক রহস্য। শবনম হয়ে ওঠে, " শারদ-প্রাতে গন্ধবিধুর মাঠের শেফালি-বিছানো গালিচায় বিরহিনী নিশীথিনীর অশ্রুশিশির। পাঠক মাত্রই হোঁচট খান যত গভীরে যান। মাঝেমাঝে পাঠকমনে প্রশ্ন জাগে, "শবনম" কি উপন্যাস, নাটক নাকি সৃষ্টিমুখর প্রেমকাব্য? সৈয়দ মুজতবা আলী উপন্যাসটিতে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তা সত্যিই বাংলা সাহিত্যে বিরল দৃষ্টান্ত। অবশ্য লেখক এক বহুভাষাবিদ পন্ডিত হওয়ার কারণে কঠিন সব ফার্সি ও ফরাসি কবিতার দারুণ সব অনুবাদ করেছেন। কাব্যের ছলে মজনুন ও শবনমের মুখ দিয়ে অনেক কবিতা ব্যক্ত করেছেন দারুণ ও সুচারুভাবে। দিনে-রাতে বিভিন্ন সময়ে নায়ক-নায়িকার মোলাকাত বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। মজার ব্যাপার হল, তাদের বিয়ে হয় দুই বার, এক বার তারা নিজেরা বিয়ে করে, আরেকবার পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
Was this review helpful to you?
or
বইটা ভালো লাগে কারণ বইটা অনেক মিষ্টি। খুব নিগূঢ় কোন রহস্য অথবা দার্শনিক তত্ত্ব এখানে খুঁজতে যাওয়া বৃথা। বইটা মজার, মাঝে মাঝে হাসি পেয়েছে পাগলামি দেখে, মন ভালো হয়েছে মন খারাপ থাকলে
Was this review helpful to you?
or
প্রেমের গল্প। লাইলী মজনুর গল্পের অন্য রকম এক ভার্সন। কাহিনী তেমন কিছুই না, পাত্র পাত্রীর মাঝে গদগদ প্রেম। সে প্রেমের কথা এতই গদগদ করে লেখা যা কিছু পাঠকের জন্য বিরক্তিকর লাগতেও পারে। কিন্তু আলী সাহেবের লেখার গুণে পড়তে খারাপ লাগে না। সেই সাথে কিছু ফার্সি বয়েৎ আছে। যারা শের/শায়েরি পছন্দ করেন, তাদের ভালো লাগবে। তবে ভাষার ব্যবহার জানতে এই বই অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
#হৃদয়_আন্দোলিত_করা_বই শবনম সৈয়দ মুজতবা আলী সৈয়দ মুজতবা আলীর ভক্ত আমি অনেক আগে থেকেই, তাঁর লেখার রম্য ঢঙের কারণে। তাঁর বেশ কটি বই পড়া ছিল। শবনমের নাম শুনেছিলাম, তবে পড়া ছিল না। তাঁর রম্য লেখার ভক্ত আমি, শুনেছিলাম শবনম প্রেমের উপন্যাস, তাই বেশি আগ্রহ হয় নি। হঠাৎ চোখের সামনে পড়ে যাওয়াতে কিনে ফেললাম। ভাবলাম, সংগ্রহে থাক পড়লে পড়ব না পড়লে নাই। হঠাৎ অলস শুয়ে থাকার সময় হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম। দু'পাতা পড়তেই আটকে গেলাম অচিন এক জালে। যতই এগুতে লাগলাম ততই জড়িয়ে যেতে লাগলাম আশ্চর্য আবেশে। এমনও হয়? এমনও হতে পারে? নিঃশ্বাস আটকে শেষ হল প্রায় অর্ধেক। হৃৎস্পন্দন বন্ধ হওয়ার উপক্রম আমার। জীবনের মাত্র ঊনিশটি বসন্ত পার হয়েছে। প্রেম-ভালোবাসা গল্প-উপন্যাসে পড়া হয়েছে, বাস্তবে সে অনুভূতি লাভের সৌভাগ্য হয় নি। কেমন হয় সে অনুভূতি তা বোঝারও সুযোগ আসে নি। কিন্তু একি! কি আছে এতে! পড়ছি আর হারিয়ে যাচ্ছি বার বার। হৃদয়ের কোন এক গহীন তল যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে বার বার। লেখাও কখনও এমন অনুভূতি জাগাতে পারে? এত জীবন্ত অনুভূতি? এত প্রশান্ত অথচ উত্তাল অনুভূতি? মনে হচ্ছিল সত্যি সত্যিই বুঝি হৃৎস্পন্দন থেমে যাবে। তাই আর এগুতে পারলাম না... এগুনোর সাহসও করতে পারলাম না। আর কখনও পারব বলে মনেও হয় না। হৃদয়ের আঙিনাকে জমিয়ে দেওয়া হিম-শিশির 'শবনম'কে তুলে রাখলাম আলমারির গোপন কোণে, যেন আর পড়তে না হয়। রেখে দিয়েছি প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা হল, বিশ্বাস করুন একটুও বাড়িয়ে বলছি না --- এখনও আমার হৃদকাঁপুনি থামে নি। যেন উন্মাতাল কোনো সাইক্লোন বয়ে গেছে হৃদয়ের উপর দিয়ে। হায় প্রেম! হায় ভালোবাসা! আসলেই কি তুমি এমন? না এ শুধু বয়সের পাগলামি! আমি বুঝতে চাই না, আমার বোঝার প্রয়োজনও নেই! নিবেদন শুধু এটুকুই, প্রশান্ত এ অনুভূতির শুদ্ধতম অংশটুকু অশান্ত এই হৃদয়ে চিরজাগ্রত থাকুক আমার ভবিষ্যৎ কোনো এক শরতের ভোরে আঙিনায় ছড়ানো 'শিউলি' আর তার পাপড়িতে জমে থাকা 'শবনমে'র জন্য! হে সৈয়দ! হে মুজতবা! জানি না কী যাদু দিয়ে তুমি 'শবনম' ঝরিয়েছিলে! কী মোহ দিয়ে তুমি 'শিউলি' ফুটিয়েছিলে! তোমাকে বলার মতো আমার কিছুই নেই! তুমি শুধু গ্রহণ কর আমার এই জমাট হৃদয়ের উষ্ণ ভর্ৎসনা! কারণ, যে কাঁপন তুমি হৃদয়ে তুলেছ তাতে ধন্যবাদ পাওয়ার অধিকার যে তোমার নেই! পরপারে আল্লাহ তোমাকে ভালো রাখুন। #? আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না
Was this review helpful to you?
or
‘শবনম’ হল গদ্যের আদলে লিখা একটা অসাধারণ প্রেমের কবিতা। অন্য কোন প্রেমের উপন্যাস পড়ে শবনমের মত মুগ্ধ হওয়া যাবে কী না আমি সন্দিহান। বিশ শতকের খুব বেশি উপন্যাসে সম্ভবত নায়িকার এতখানি রোমান্টিক বর্ণনা দেখা যায় না। মধ্যযুগে এই জিনিসটার খুব চল ছিলো, এবং মুজতবা আলী উনিশশো ষাটেও যখন লিখলেন নায়িকার কপাল তৃতীয়ার ক্ষীণচন্দ্রের মত, বন-মল্লিকার পাঁপড়ির মত—তখনও শুনতে বেশ লাগলো। হয়তো বর্ণনার এই সৌন্দর্যগুলো চিরন্তন।। কেবল ভাষার অসাধারণ ব্যবহারের জন্যই মুজতবা আলীর প্রতিটা লেখা পড়ে ফেলা যায়। বাংলা সাহিত্যের খুব বেশি লেখকের ভাণ্ডারে এতগুলো শব্দ ছিলো না—এ আমি অনায়াসে লিখতে দিতে পারি।উপমার ব্যবহারেও মুজতবা কম যান কী সে!! শবনমের কণ্ঠের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “ঘুঙুরওয়ালা চরণচক্রপরা বাড়ির নতুন বউ চলাফেরা করার সময় যেরকম দক্ষিণী বীণা বাজে, ওর গলার শব্দ সেইরকম।” আমার কাছে শেষপর্যন্ত "শবনম" এমন এক উপন্যাস যেখানে আপনার এই যুগলের স্বপ্নালু বাস্তবতায় মিশে যেতে হবে।।
Was this review helpful to you?
or
'আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না।' সম্ভবত বাঙ্গলা সাহিত্যে এটিই সবচেয়ে রোমান্টিক মধুর বাক্য! আহা কি প্রেম! শবনম পড়ার পর খুব প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করছিলো। মনের গহীনে অমন কাউকে নিজের করে পাওয়ার সুপ্ত ইচ্ছে হয়তো সবারই থাকে। কেউ পায়, আবার কেউ হয়তো এতোটা ভাগ্যবান হয়ে আসে না। আবার কেউ কেউ পেয়েও সব হারিয়ে খুন হয়ে যায়! প্রিয় পাঠক, শবনমের শেষটায় কি ছিলো- দুটি মনের বিরহ না মিলন? জানতে ইচ্ছে করলে দ্রুত পড়ে ফেলুন শবনম!
Was this review helpful to you?
or
বই : শবনম লেখক : সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশকাল(১ম) : ১৯৬০ প্রকাশকাল (শেষ) : ২০১৫ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৪৪ ❝তোমার আমার মাঝখানে বঁধু অশ্রুর পারাপার।কেমনে হইবো পার?❞ ❝আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না। আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না।❞ ❝সে কি আমাকে বলে যায় নি, ‘বাড়িতে থেকো। আমি ফিরব।’❞ বাঙালি মন চিরকালই বিচ্ছেদযুক্ত। বাংলা সাহিত্যে যুগে যুগে বিচ্ছেদের কথাশিল্প অমর হয়ে আছে। তাতে পাঠকের মন আপ্লুত হয়। নায়ক-নায়িকার মিলন না হওয়ার আক্ষেপে সদ্য শৈশব পেরোনো কিশোরীর চোখেও জল এনে দেয়। বাঙালির হৃদয়ে দেবদাস, চোখের বালির বিনোদিনীর প্রেম কিংবা আরও যেসব উল্লেখযোগ্য চরিত্র গেঁথে রয়েছে, সে সবের সাথে গেঁথে থাকবে শবনম ও মজনুনের প্রেমের কথা। পাঠকরা স্মৃতি হাতড়ে ফিরবে বারবার। প্রতিক্ষণে প্রশ্ন জাগবে মনে, শবনম কি এসেছিল ঘরে? ‘শবনম’ সৈয়দ মুসতবা আলীর এক অবিশ্বাস্য সৃষ্টিকর্ম। শবনম কি উপন্যাস, নাটক না সৃষ্টিমুখর প্রেমকাব্য তা পাঠককে গভীরভাবে ভাবাবে বৈকি! সৃষ্টিকর্মটিতে যেমনি রয়েছে স্নিগ্ধ সুন্দর সুনিবিড় প্রেমের বর্ণনা, তেমনি রয়েছে কাঠফাঁটা রোদ্দুরে আর্তনাদরত শুঁকিয়ে চৌচির হয়ে যাওয়া মাঠ সদৃশ বিরহের বর্ণনা। উপন্যাসের প্রথম খন্ডে লেখক গল্পটি গেঁথেছেন একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত আফগান বড়লোকের একমাত্র কন্যার সঙ্গে সিলেট থেকে আফগানিস্তানের কাবুল শহরে শিক্ষক হিসেবে আগত এক বাঙালি যুবকের পবিত্র প্রেমের সূচনা দিয়ে। আফগানের অস্থিতিশীল প্রেক্ষাপটে সূর্যের আলোতে স্বাভাবিক এবং চাঁদের আলোতে স্বপ্নময় পরিবেশে অবধারিতভাবে শবনমের পবিত্রতা আর হেঁয়ালি গায়ে মেখে মজনুনের গভীর প্রেম জন্মলাভ করে প্রথম খন্ডে। প্রেমের পরিণতিবহ ইঙ্গিত নিয়ে শবনমের দ্বিতীয় খন্ডের আরম্ভ এবং এই খণ্ডের প্রেমের প্রখরতাও ব্যাপক। অদ্ভুত সুন্দর পরিপূর্ণ উপন্যাসের সর্বশেষ খন্ড অর্থাৎ তৃতীয় খন্ডে প্রকাশ পেয়েছে শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পরিণতির পরদিন আবার সেই আগের বিচ্ছেদের অনুভূতি। প্রেয়সীকে হারিয়ে প্রেমিকের হৃদয় ফাটা আর্তনাদ যা অনায়াসেই যেকোনো পাঠককে বিরহের অতলে ডুবিয়ে দিতে সক্ষম। শবনমের বলে যাওয়া শেষ উক্তিটি কি আদৌ সত্যি হয়েছিল? নাকি অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়েছিল মজনুনকে? জানতে হলে অবশ্যই পড়ে দেখতে হবে সৈয়দ মুসতবা আলী’র রচিত কালজয়ী ‘শবনম’ উপন্যাসটি।
Was this review helpful to you?
or
★সতর্কতা★ ভুলেও ‘শবনম’ পড়বেন না। এই বইটি সবার জন্য নয়৷ ‘উপন্যাসটির মূল কাহিনিতে লেখক একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত আফগান ধনাঢ্যের একমাত্র কন্যার সাথে বাঙাল যুবকের প্রণয় উপাখ্যান ফুটিয়ে তুলেছেন নিবিড়ভাবে । রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল আফগানের প্রেক্ষাপটে একটা নিখুঁত প্রেমের উপন্যাস। দিনের স্বাভাবিক দিনাতিপাত পার হলেই রাতের আলো-আঁধারী স্বপ্নময় পরিবেশে অনন্যা ‘শবনম’ তার পবিত্রতা আর হেঁয়ালি নিয়ে উপস্থিত হতো।’ শবনমের পরিচয়ঃ একজন সুশ্রী, সুভাষী, সুনয়না, শুচিস্মিতা, অনন্যা রমনী ‘হিমি-হিমিকা-শবনম’। ভাষ্যে, সদা হাস্যে নক্ষত্রের উদ্দীপনাকেও হার মানাবে যেন ৷ মজনুর-লাইলী, ইউসুফের-জুলেখা, ফরহাদের-শিরি তেমনি এ গল্পে মজনুনের- শবনম বানু অদৃষ্টের চাঞ্চল্যতাকে হার মানিয়ে চলা তরুনী। লেখকের লেখনীতে উপমার সর্বাধিক চর্চা করতে চেয়েছেন বলে মনে হয়েছে। শবনম ও অনুভূতিঃ প্রেম ও প্রেমিকা কবিতার মতো। সংসারে যত নারী রয়েছেন মা-মেয়ে-স্ত্রী-প্রেমিকা একেকজনের জন্যে পুরুষের একেক প্রেম। পৃথিবীতে কেবল স্ত্রী-প্রেমিকা জাতীয় মানুষের জন্যেই বোধকরি সর্বাধিক কবিতা রচিত হয়েছে৷ শবনম ও মজনুনের কথামালা বলতে যা ছিলো তার অধিকাংশই কবিতা। ফারসি, সংস্কৃতের ভাব প্রকাশ৷ গভীর আবেগ ও প্রেমের আখ্যান যেন পরতে পরতে বুনে গেছেন গল্পের কারিগর। শব্দশৈলীঃ এই বইয়ের সবচে বেশি আকর্ষণীয় দিক শব্দশৈলী। গুণী এই লেখকের উপমার দক্ষতা ও শব্দের বিচরণ অবাক করে দিবে। যে কারণে বইটি পড়তে নিষেধ করেছি তার একটি বড় কারণ কঠিন শব্দের সমাহার। যারা সহজ শব্দ পড়ে অভ্যস্ত তারা বইটি পড়তে বেশ বেগ পেতে হবে, মর্মোদ্ধারের কথা নাইবা বলি। মুহম্মদ এনামুল হক আমাদের মতো কাঁচা পাঠকদের জন্য বলেছিলেন, ‘উপন্যাসখানা নয়বার পঠন বাঞ্ছনীয়। কেন বইটি পড়া উচিৎ? গতানুগতিক সাহিত্যপাঠ, প্রেমোপন্যাস, বর্তমানের অবাধ যৌনসুড়সুড়িমূলক স্টোরি টেলিং এসবের বাইরেও যে সুন্দর সাবলীল বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক প্রেম হতে পারে তা এই বইতে স্পষ্ট। প্রিয় ও প্রিয়তমার আচরণের সংযম, লজ্জা ও বিচারবোধ আপনাকে মানসিক শুদ্ধতা শেখাবে। কতিপয় বিশেষ কথনঃ “আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না, আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না।” তারপর হঠাৎ হেসে শুধালে, বলো দেখি, মেয়েরা অনেকক্ষণ ধরে চুমু খেতে পারে না কেন? -কি করে বলবো বলো? -দু'মিনিট চোখ মুখ বন্ধ করে থাকতে পারে না বলে, কথা কইতে ইচ্ছে যায়। আরো মারাত্মক কথা কী বলেছে জান? -আমি যাতে তোমার কাছ থেকে ভালোবাসতে শিখি। “সরল হৃদয় মনে করে প্রেম লুকায়ে রাখিতে পারে কাঁচের ফানুস মনে ভাবে লুকায়েছে শিখাটারে।” “আকাশের জল আর চোখের জল একই কারণে ঝরে না।” লেখক ইতিবৃত্তঃ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ক্ষুরধার লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীকে পরিচয় করিয়ে দেবার মতো কিছু নেই৷ আমার সবচে পছন্দের লেখকের একজন তিনি। বর্তমানের অধিকাংশ পাঠক-পাঠিকা যারা মাত্রই বইয়ের জগতে নিজেদের সময় ব্যয় করছে, তাদের উচিৎ মুজতবা আলীসহ অন্যান্য গুণী লেখকগণের লেখার সাথে পরিচিত থাকা। ভাষাশিল্প আয়ত্ত্বের জন্যেও এনাদের বই পড়া যেতে পারে। সর্বশেষঃ ‘শবনম’ গ্রন্থাকারে প্রকাশের পূর্বে ৩ বৈশাখ ১৩৬৭ থেকে ১১ ভাদ্র ১৩৬৭ পর্যন্ত ‘দেশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ‘শবনম’ প্রথম গ্রন্থাকারে বের হয় অধুনালুপ্ত ত্রিবেণী প্রকাশন কলকাতা থেকে, ১৯৬০ সালে। প্রথম সংস্করণের পৃষ্ঠাসংখ্যা ২১৯
Was this review helpful to you?
or
ভালো তবে নতুন পাঠকদের না পড়াই ভালো বুঝতে অসুবিধা হতে পারে....
Was this review helpful to you?
or
মানুষের প্রশংসা শুনে নিয়েছিলাম,খুব বিরক্ত লাগছে, জোর করে পড়া আরকি ?
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ ইউরোপে তুর্কি শাসক কামাল পাশা, আর এশিয়ায় আফগান বাদশা আমানুল্লা - এই দুজনকে নিয়ে মুসলিম বিশ্ব পড়ল ভারী বিপদে! কামাল পাশা ক্ষমতায় বসেই শুরু করলেন ভয়ানক সব সংস্কার। আরবি ভাষায় আজান ও নামাজ নিষিদ্ধ করা; আরবি হরফ অপাংক্তেয় ঘোষণা করা; দাড়ি, বোরকা এবং নিকাব নিষিদ্ধ করা; তুর্কি ফেজ টুপি নিষিদ্ধ করে বাধ্যতামূলক ইউরোপীয় হ্যাট চালু করা সহ নানা রকম সংস্কার চালিয়ে তুরস্ককে তিনি একেবারে টালমাটাল করে ফেললেন। আফগানিস্তানে বাদশা আমানুল্লাও কম যান না! তিনিও লাগামছাড়া সংস্কার চালিয়ে আফগানিস্তানে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থাকে বদলে দিতে চাইলেন। সৈয়দ মুজতবা আলীর বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনি 'দেশে বিদেশে' যারা পড়েছেন, তারা খুব ভালো ভাবেই পরিচিত সেসবের সাথে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পাগমান শহরে আয়োজন করা হয়েছে বল-ডান্সের! সরদার আওরঙ্গজেব খানের মেয়ে শবনমের কিন্তু তা পছন্দ হলো না! ফ্রান্সে পড়াশোনা করলেও শবনম বানু ইসলামি কায়দাকানুন, ইসলামি তাহজিব-তমদ্দুন ভুলে বসেননি। বেশিক্ষণ এই 'বেলেল্লেপনা' তার সহ্য হলো না। বল-ডান্সের ক্লাব থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি। সামনে এক যুবককে দেখতে পেয়ে হুকুম দিলেন, "সরদার আওরঙ্গজেব খানের মোটর এদিকে ডাকো তো!" খানিক বাদেই ভুল ভাঙল তার। এই যুবক কোনো বেয়াড়া নয়! ভিনদেশি এক যুবক। মজনুন নামের বাঙালি অধ্যাপককে প্রথমবার দেখেই আফগান কন্যা শবনম বানুর হৃদয় হুট করে রক্ত ছলকে দেয়া থামিয়ে দিয়েছিল কিনা, সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে 'শবনম' উপন্যাসের মিষ্টি প্রেমের অধ্যায় যে এখান থেকেই শুরু, তা বলা যায় নির্দ্বিধায়! শবনম শব্দের অর্থ শিশির। খাঁটি সংস্কৃতে বললে - হিমিকা। আর মজনুন অর্থ পাগল। আক্ষরিক অর্থেই শবনম বানুর প্রেমে রীতিমতো পাগল হয়ে পড়লেন মজনুন। উপন্যাসের প্রথম ভাগ খুব দ্রুত এগিয়ে গেল, যেন রেসের পাগলা খোরাসানি ঘোড়া! শবনম এবং মজনুন একে অপরের প্রেমে পড়লেন, আর সেটা একে অপরকে জানিয়ে দিলেন বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করেই। উপন্যাসের প্রথম ভাগে যে প্রেম কাহিনি শুরু হয়েছিল, দ্বিতীয় ভাগে গিয়ে তা আরো তীব্র হলো, আরো ঘনীভূত হলো। শবনম বানুর সমস্ত আগ্রহ কবিতায়। অসংখ্য ফার্সি এবং উর্দু কবিতা তার মুখস্থ। কাব্যপ্রেমী বাঙালি যুবক মজনুন বাংলার পাশাপাশি উর্দু-ফার্সিতেও পারদর্শী হওয়ায় তাদের কথোপকথন, খুনসুটি আর প্রেমের বয়ান হয়ে উঠেছে কাব্যরসে ঠাসা! কাব্যময় প্রেমের মধ্যেই নতুন মাত্রা এলো যখন ডাকাত সর্দার বাচ্চা-ই-সকাও কাবুল আক্রমণ করল। এক রাতে প্রিয়তম পুরুষের বাড়িতে দেখা করতে এসে আটকা পড়ল শবনম। ধর্মীয় বিধান মোতাবেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ একই ঘরে রাত কাটাতে পারবে কেবল তারা বিবাহিত হলে তবেই। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল হলো না প্রেমিকযুগলের। চাকর-বাকরদের উপস্থিতিতে বিয়ে সেরে ফেললেন শবনম-মজনুন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, পারিবারিকভাবে আরেকবার বিয়ে হয় তাদের! সে এক মজার কাহিনি! বিয়ের পর স্বপ্নময় এক বাসর রাত কাটে নবদম্পতির। এমন বাসরের জন্য যুগ যুগ অপেক্ষা করতে রাজি হবে যেকোনো প্রেমিকযুগল! উপন্যাসের প্রথম দুই ভাগ যতখানি আনন্দের, তৃতীয়ভাগ ততখানিই বেদনাময়। বাসর রাত পার হবার পরেই অন্তর্ধান ঘটে শবনমের। বাচ্চা-ই-সকাও এর সেনাপতি জাফর খানের লোকেরা ধরে নিয়ে যায় তাকে। শবনম চিঠি লিখে যায় মজনুনের জন্য, "বাড়িতে থেকো, আমি ফিরব।" কিন্তু দিনের পর দিন কেটে গেলেও ফিরে আসে না শবনম। শবনমের পরিবারের সবাই জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে তার খোঁজ করার। মজনুন এবার সত্যি সত্যিই মজনুন (পাগল) হয়ে যায়। রাতদিন কেবল শবনমের নামই জপে চলে সে। হ্যালুসিনেশন হয় বারবার। শবনম কি তবে আর ফিরবে না? তবে যে সে বলেছিল, "তুমি আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেও না!" বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে মিষ্টি প্রেমের উপন্যাস সম্ভবত শবনম। একইসাথে সবচেয়ে নোনতা প্রেমের উপন্যাসও বটে। এত প্রেম আর এত বিরহ একত্রিত হলে তা একইসাথে মিষ্টি এবং নোনতা না হয়ে কি পারে? শবনম যেমন একটি উপন্যাস, একইসাথে এটি একটি কাব্যগ্রন্থও বটে। উপন্যাস হলেও এর বর্ণনায়, এর ছন্দে, এর গন্ধে, এর রূপে, এর রসে মিশে আছে কবিতা। সৈয়দ মুজতবা আলী সম্পর্কে না জেনে কেউ 'শবনম' পড়তে বসলে নিশ্চিতভাবেই সে ঔপন্যাসিককে কবি ভেবে ভুল করে বসবে। শবনম উপন্যাসে বর্ণিত নর-নারীর যে প্রেম, তা সুন্দর এবং স্নিগ্ধ। আবেগী, অথচ পবিত্র। মজনুনকে বলা শবনমের একটি উক্তিতেই এ প্রেমের পবিত্রতা ফুটে ওঠে, "বিয়ের আগে আমি তোমার সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করিনি যার জন্যে আল্লার সামনে আমাকে লজ্জা পেতে হবে………… তুমি পুরুষ, তুমি কী করে বুঝবে কুমারীর প্রেম………… কত আঁখি পল্লব থেকে নিংড়ে বের করা এক ফোঁটা আঁখি জল। আর তার প্রতিটি ক্ষুদ্রতম কণাতে আছে কুমারীর লজ্জা, ভয়, সংকোচ।" শবনম উপন্যাসে স্বামী-স্ত্রীর প্রণয়-অভিসারের বর্ণনাও মুগ্ধ করার মতো। একটা উদাহরণ দিচ্ছি, "ভীরু পাখির মতো একবার তার ঠোঁট আমার ঠোঁট স্পর্শ করল… দুবার… শেষ বারে একটু অতি ক্ষীণ চাপ। এ অভিজ্ঞতা আমার জীবনে এই প্রথম নয়। কৈশোরে যখন ওষ্ঠাধরের গোপন রহস্য আধা আধা কল্পনায় বুঝতে শিখেছি, তখন আমি আকাশের তারার সঙ্গে মিতালি পাতাবার জন্য রাত্রিযাপন করতুম খোলা বারান্দায়। শরতের ভোরবেলা দেখতুম পাশের শিউলি গাছের বিরহ বেদনা ফোঁটা ফোঁটা চোখের জলের শিউলি আমার চতুর্দিকে ছড়ানো। এক ভোরে অনুভব করলুম ঠোঁটের উপর তারই একটি। এ সেই হিমিকা-মাখা, শবনম-ভেজা শিউলি।" এর চেয়েও মিষ্টি বর্ণনা অন্য কোনো প্রেমের উপন্যাসে আছে? লেখকের দেশে-বিদেশে যারা পড়েছেন, তারা তার আফগান-জীবনের বর্ণনার ঢঙের সাথে নিশ্চয়ই পরিচিত। দেশে-বিদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র, লেখকের ভৃত্য আগা আবদুর রহমান খান এখানেও উপস্থিত। ক্ষণে ক্ষণে উঠে এসেছে দোস্ত মুহম্মদ, বাদশা আমানুল্লা, আফগান মোল্লা শ্রেণি এবং ডাকাত সর্দার বাচ্চা-ই-সকাও এর কথাও। তবে শবনমের প্রশস্তিগীতের সামনে অন্য সব কিছুই যেন সূর্যের আলোর বিপরীতে চাঁদের মতো ম্লান! শবনমের মুখে তাই তো লেখক বলিয়েছেন, "তুমি আমার মিলনে অভ্যস্ত হয়ে যেও না।" বাকিটুকু নাহয় বইখানা পড়েই জেনে নেবেন! বই: শবনম লেখা: সৈয়দ মুজতবা আলী রেটিং: ১০/১০
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ বইয়ের নাম- শবনম লেখক- সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশনী- বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৫৪ প্রকাশকাল- ১৯৬০ বইয়ের ধরন- রোমান্টিক উপন্যাস লেখক পরিচিতি: সৈয়দ মুজতবা আলী একজন বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রম্যরচয়িতা। সৈয়দ মুজতবা আলী জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেটের করিমগঞ্জে। তাঁর পিতা সৈয়দ সিকান্দার আলী। তাঁর পৈতৃক ভিটা হবিগঞ্জে। পিতার বদলীর চাকরি হওয়ায় মুজতবা আলীর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কাটে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ১৯২১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রথম দিকের ছাত্র। এখানে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবী, ফার্সি, হিন্দী, গুজরাটি, ফ্রেঞ্চ, জার্মান ও ইটালিয়ান ভাষাশিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৬ সালে এখান থেকে বি.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে গবেষণার জন্য তিনি ডি.ফিল লাভ করেন ১৯৩২ সালে। ১৯৩৪-১৯৩৫ সালে তিনি মিশরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করে ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত মুজতবা আলী কাবুলের একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। সেখানে তিনি ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ ভাষার শিক্ষক ছিলেন। ১৯৩৫ সালে বরোদার মহারাজার আমন্ত্রণে তিনি বরোদা কলেজে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এখানে তিনি আট বছর কাটান। এরপর দিল্লীর শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খন্ডকালীন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে কিছুদিন আকাশবাণীর স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন পাটনা, কটক, কলকাতা এবং দিল্লীতে। ১৯৬১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ফিরে যান। বিশ্বভারতীর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে তিনি অবসরগ্রহণ করেন। শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় সেখানের বিশ্বভারতী নামের হস্তলিখিত ম্যাগাজিনে মুজতবা আলী লিখতেন। পরবর্তীতে তিনি ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে বিভিন্ন পত্রিকায়, যেমনঃ দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী প্রভৃতিতে কলাম লিখেন। তাঁর বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ভ্রমনকাহিনী। এছাড়াও লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা ৩০। ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ ১৯৭৪ সালে এই মহান সাহিত্যিক মৃত্যুবরণ করেন। সারসংক্ষেপ: উপন্যাসটি আরম্ভ হয় আফগানিস্তানের এক বাদশাহ আমানুল্লাহর নিজ উদ্যোগে আয়োজিত বল ডান্স যেখানে দেখা হয়ে যায় তরুণ-তরুণীর। ঘটনাপ্রবাহ এভাবেই এগোতে থাকে। কথা-সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী তার সাহিত্য সম্পর্কিত কিছু কাজের জের ধরে আফগানিস্তানে যান। আফগানিস্তানে থাকার কোনো ভালো বন্দবস্ত না পাওয়ায় তিনি গিয়ে উঠলেন আফগানের স্বনামধন্য এক ব্যক্তি আওরঙ্গজেবের বাড়িতে। আওরঙ্গজেব সাহিত্য ভালোবাসতেন। তাই তিনি স্বাদরে লেখককে থাকার স্থান দেন। বিদেশী বলে কথা থাকায়, তার সেবা-যত্ন এবং খাওয়া-দাওয়ায় কোনো কমতি রাখেননি তিনি। আওরঙ্গজেবের এক কন্যা ছিল, নাম তার শবনম। কাবুল শহরের এক কলেজে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে এক সেমিনার করা হয়। সেই সেমিনারে লেখকের চোখ ধাঁধানো বক্তৃতা শুনে উপন্যাসের নায়িকা শবনম কিছু একটা অনুভব করতে শুরু করে। সে অনুভব অন্য কোনো সাধারণ অনুভূতি ছিল না। সে ছিল, ভালোবাসার অনুভূতি। কিশোরী শবনম বয়সের তুলনায় অত্যন্ত গুণবতী ছিল৷ প্রায় সে লেখকের একাকীত্ব লক্ষ্য করতো। জানা-অজানা বোধে লেখক আর শবনমের দেখা হয়ে যাওয়া পাওয়া না পাওয়ার এক নেশার দিকে ইশারা করতো। ইশারাটা ছিল শুধুই মনের যা মুখ ফুটে বের না হলেও ইশারা দিতো। আফগানিস্তানের প্রায় সকল মানুষই কিছু কড়া নিয়মের সঙ্গে সংযুক্ত। সেসব নিয়ম ভঙ্গ করার সাহসিকতা কারো মধ্যেই তৈরি হয়নি। কিন্তু সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে শবনম। সে প্রায়ই লেখকের চোখের দিকে চোখ রেখে এক উদাসীনতায় ভেসে যেতো। ভালোবাসার অনুভূতি সব এসে যেন চোখেই জমা পড়তো। ধীরে ধীরে ভালোবাসা আর এক তরফা রইল না। দুজন একত্রে সেই ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েন। সুযোগ বুঝে তারা কিভাবে তাদের প্রেম বিনিময় করতেন তার বিশ্লেষণ রয়েছে বইতে। প্রেম আলাপের সুন্দর সুন্দর বর্ণনাও আছে। একাকী জীবন আর লেখকের একা ছিল না। এক পরী ত্র একাকীত্ব কাটিয়ে দিল। সেই পরী লেখকের শবনম, সেই পরী মজনুনের শবনম। কিন্তু বাস্তবতা সবসময় আপনায় সুখ প্রদান করবে তা কিন্তু নয়। বাস্তবতার কিছু কঠিন চিত্রের মুখোমুখি হতে হয় যা সত্যি নির্মম। আর সেসব নির্মম ঘটনাই বেদনা দিয়ে কোথাও হারিয়ে যায়। হুমায়ূন আহমেদের "ছায়াবীথি" বইতে লিখেছেন, "কোনোটিই জীবনে স্থায়ী নয়। সুখ এবং দুঃখ মিলিয়েই জীবন। সুখ এসে কখনো কখনো তার নির্যাস দিয়ে পরবর্তীতে দুঃখ এসে কড়া নাড়বে। আবার দুঃখের কালি মুছতে সুখ এসে কড়া নাড়বে।" সত্যিই এটি বাস্তবতা। পাঠ প্রতিক্রিয়া: বইটি সত্যিই মাস্টারপিস। এই বই নিয়ে ভালো খারাপের মন্তব্য করা আমার মতন ক্ষুদ্র একজন পাঠকের দ্বারা সম্ভব নয়। কতটা উঁচু মানের সাহিত্যিক হলে, এমনটা লেখা সম্ভব? সত্যি সৈয়দ মুজতবা আলী একজন ভালো মানের এবং গুণী লেখক ছিলেন। তার লেখার স্বাদ শুধু তার কাছ থেকেই পাবেন। অন্য কেউ তার মতন কলম চালাতে পারবে না। বইয়ের ভালো দিক: দারুণ একটি রোমান্টিক উপন্যাস। এমন উপন্যাস খুব কমই বাংলা সাহিত্যে আছে যেগুলো চিরস্মরণীয়। এ কথা মানতেই হবে, রোমান্টিক উপন্যাসের অন্যতম মাস্টারপিস "শবনম"। বইয়ের মন্দ দিক: বইয়ের মন্দ দিক হচ্ছে, বইটা এতো চমৎকার কেন! বই পড়াকালীন আমি শুধু মন্দ দিক খোঁজার চেষ্টা করছিলাম যেন নিরপেক্ষ একটি রিভিউ লিখতে পারি কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত, কিছুই পাইনি। তাই আমার রিভিউটা ঢালাওভাবে আলোচনার দিকে যাচ্ছে। সমালোচনা একদমই হচ্ছে না। আসলে এমন বইয়ের মন্দ দিক খোঁজাও খুবই দুষ্কর। ব্যক্তিগত রেটিং: ৫/৫ সবাইকে ধন্যবাদ। আরও কিছু বইয়ের রিভিউ নিয়ে জলদি হাজির হবো আমি। বই পড়ুন এবং অন্যকে বই পড়তে উৎসাহিত করুন। শুভ পঠন।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সবচেয়ে রোমান্টিক একটা বই, যতবার পড়ি ততবার মুগ্ধ হয়ে যাই। বইটা পড়ে শুধু একটা কথাই বার বার মাথায় ঘুরে একজন মানুষ এতো ভাল মানের রোমান্টিক উপন্যাস কেমনে লিখে? এক কথায় অসাধারণ একটা বই। সবারই সংগ্রহে বইটা রাখা উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
'শবনম’ শুধু এক প্রেমের উপন্যাস নয়, 'শবনম' সৈয়দ মুজতবা আলীর অননুকরনীয় গদ্যে কবিতার রসে জারিত অমর এক কাব্যগাঁথা। মূল চরিত্রে দুজন - মজনুন ও শবনম। মজনুন এসেছেন সুদূর বাংলাদেশের সিলেট থেকে আফগানিস্তানের কাবুল শহরে কলেজের শিক্ষক হয়ে। আফগানিস্তানের পাগমান শহরে অবসর কাটাতে এসে বাঙালি মুল্লুকের মজনুনের সাথে দেখা হয় ধনী পিতার অনিন্দ্য সুন্দরী একমাত্র কন্যা শবনম বানুর। এরপর প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হয় তারা দু'জন। ভালবাসার সমানুপাতে একে-অপরকে দেখার জন্য প্রতীক্ষা বাড়তে থাকে। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থা উত্তাল তখন। শবনম বাংলা জানে না। মজনুন জানে না সঠিক ফার্সি। অথচ ভালবাসলে সব অসম্ভবকে সম্ভব করে মজনুন শেখে ফার্সি, শবনম শেখ বাংলা। প্রেমের একপর্যায়ে শবনম, মজনুনের সাথে বাংলাদেশে সংসার করার স্বপ্নও দেখে। কিন্তু আফগানিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়। হারিয়ে যায় শবনম বানু প্রেমিক মজনুনের জীবন থেকে। উপন্যাসটি শেষ হয় আর একটি প্রেমের গল্প দিয়ে। বেদুইন সর্দার বন্দি করেছেন এক ইংরেজ যুবককে। ইংরেজ যুবকটিকে খাবার সরবরাহের দ্বায়িত্ব সর্দারের মেয়ের উপর। ইংরেজ যুবক জানে না আরবি, বেদুইন কন্যা জানে না ইংরেজি। কিন্তু প্রথম দর্শনেই প্রেমে পরে যায় তারা দু' জন দু' জনের। বেদুইন কন্যা নিজের জীবন বিপন্ন করে মুক্ত করে দেয় সেই ইংরেজ যুবক কে। ইংরেজ যুবক পালিয়ে পাওয়ার আগে মেয়েটিকে শুধু বলে যায় "টম, লন্ডন"। অর্থাৎ তার নাম টম, বাড়ি লন্ডন শহরে। এরপর বেদুইন কন্যা আরব থেকে জাহাজে করে চলে যায় লন্ডনে তার প্রেমিক টমকে খুঁজে বের করতে। লন্ডন শহরের হাজার হাজার টম নামের যুবকের মধ্যে সে কি খুঁজে পাবে তার প্রেমিক টমকে। গল্পটি শেষ হয় এখানেই। শবনম, যার অর্থ - শারদ প্রাতে গন্ধবিধুর মাঠের শেফালি-বিছানো গালিচায় বিরহিণী নিশীথিনীর অশ্রুশিশির। শবনম শিখিয়েছে, "পরমেশ্বর এ সংসারে স্বপ্রকাশ হয়েছেন একটিমাত্র রূপে - সে প্রেমরূপ।" আমার কাছে বইয়ের সবথেকে পছন্দের উক্তিটা - "আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না, এটুকুতেই চলবে আমার"। কী দারুণ কথাটা। আরও কিছু প্রিয় উক্তি আছে - "ধারের বইয়ে নাকি বিদ্যার্জন হয় না।" "বিশেষ করে প্রেমের সঙ্গে সূর্যেরই শুধু তুলনা হয়। আকাশ আর মুখ এক। ঘড়ি ঘড়ি রঙ বদলায়। সূর্য চিরন্তন। প্রেম-সূর্য একবার দেখা দিলে আর কোনো ভাবনা নেই।" " যে বিধাতা প্রতিটি ক্ষুদ্র কীটেরও আহার জুগিয়ে দেন, তিনিই তো তৃষিত হিয়ার অপ্রত্যাশিত মরুদ্যান রচে দেন।......... কুবেরের লক্ষ মুদ্রা লাভ অলৌকিক নয়, কিন্তু নিরন্নের মুষ্ঠিভিক্ষা অলৌকিক।" "আনন্দের সময় মানুষ দুঃখের দিনের সম্বল সঞ্চয় করতে ভুলে যায়। আসলে তা নয়। পরিপূর্ণতা যদি ভবিষ্যৎ দৈন্যের কথা স্মরণ করতে পারে, তবে সে পরিপূর্ণ হল কই? *কিন্তু সমাজ কি শের না বাবুর, বাঘ না সিংহ, যে তাকে হামেশা পিস্তল দেখাতে হবে? সমাজ তেজী ঘোড়া। দানাপিনা দেবে,তার পিঠে চড়বে। বেয়াড়ামি করলে পায়ের কাঁটা দিয়ে অল্প গুঁতো দেবে, আরও বেশি হলে চাবুক, আর একদম বিগড়ে গেলে পিস্তল। তারপর নতুন ঘোড়া কিনবে - নতুন সমাজ গড়বে।" "বিরহ-ব্যথায় যে আঁখিবারি ঝরে সেটা শুকিয়ে যায়-প্রিয় -মিলনের সময় সেটা দেখানো যায় না। দেখাতে হলে সেটা বুকে করে বইতে হয়।" "সাধনা না করে কোনোকিছু হয় না। পালোয়ানের উপদেশ পড়ে মাংসপেশি সবল হয় না, হেকিমির কেতাব পড়ে পেটের অসুখ সাড়ে না। মনকে শান্ত করতে হয় মনের ব্যায়াম করে।" "জীবনই অভিজ্ঞতা, আর অভিজ্ঞতাই জীবন। অভিজ্ঞতাসমষ্টির নাম জীবন আর জীবনকে খন্ড খন্ড করে দেখলে এক-একটি অভিজ্ঞতা। এক-একটি অভিজ্ঞতা যেন এক ফোঁটা চোখের জলের রুদ্রাক্ষ। সব-কটা গাঁথা হয়ে সে তসবি-মালা হয় তারই নাম জীবন।" 'শবনম' এর মতো শিক্ষনীয় প্রেমের উপন্যাস আসলেই বিরল আমাদের এই বিশ্বসাহিত্যে। "গোড়া আর শেষ, এই সৃষ্টির জানা আছে বল কার? প্রাচীন এ পুঁথি গোড়া আর শেষ।" পাতা কটি ঝরা তার?"
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের সেরা রোমান্টিক বই
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে বই: শবনম; লেখক: সৈয়দ মুজতবা আলী; প্রকাশক:বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র; ধরন:চিরায়ত উপন্যাস। সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি সুন্দরতম সৃষ্টি হলো শবনম। এতে যেমন স্নিগ্ধ সুন্দর সবুজ ভাবে প্রেমকে বর্ণনা করেছেন ঠিক তেমনি কাঁঠফাঁটা রৌদ্দুরে আর্তনাদরত চৌচির হওয়া মাঠের মতো বর্ণনা করেছেন বিরহকে। শুদ্ধতম প্রেমের গভীরে পৌঁছে দেখিয়েছেন ঈশ্বররূপ প্রেমকে। শাশ্বত সুন্দর প্রেমকে দেখিয়েছেন অনবদ্য নান্দনিক সুন্দরতম ভাবে। প্রেমিক(মজনুন)-প্রেমিকার(শবনম) মনের আকুতি প্রকাশ করেছেন অসাধারণ ভাবে। যেমন- "দুখ-রজনীর প্রেমের প্রদীপ ভাসায়ে দিলেম আমি দীরঘ নিশ্বাস পালেতে দিলেম জানে অন্তরযামী। শেষ দীপ-শিখা দিলেম তোমারে মোর কিছু নাহি আর ত্বরা এস বঁধু, বেগে এস প্রভু, নামাও বেদনাভার।" রাধা-কৃষ্ণ কিংবা শিরি-ফরহাদের প্রেমের চিরায়ত ধারা শবনম-মজনুনের মাঝেও চিরবহমান- সে-প্রেম অনন্ত-অনাদি। তাই শবনমের মুখ থেকে উচ্চারিত হয় চিরমানবের অন্তর্বেদনা,"আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না, আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না।" বইটিকে তিনটি খণ্ডে রচনা করেছেন লেখক। প্রথম দুটি খণ্ডে লেখক অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন মানব-মানবীর প্রেম, গেয়েছেন প্রেমের গান। তৃতীয় খণ্ডটিতে প্রকাশ পেয়েছে প্রেমিকের হৃদয় ফাঁটা আর্তনাদ, যা যে কোন পাঠককেই অনায়াসে ডুবাবে বিরহের অতলে। লাইলিকে হারিয়ে মজনু যেমন পাগল হয়েছিলো, তেমনি শবনমের বিরহে মজনুনকেও দেখা যায় দ্বারে দ্বারে ঘুরতে। বইটিতে লেখক অনবদ্য ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রিয়ার রূপকে। যেমন শবনমের রূপের বর্ণনায়- "এ যেন পূর্ণচন্দ্রের দূরে দূরে কয়েকটি তারা ফোটানো হয়েছে-চন্দ্রের গরিমা বাড়ানোর জন্য। এ যেন উৎসব-গৃহের সৌন্দয্যের মাঝখানে ধূপকাঠি জ্বালানো হয়েছে। তার চুলের বিচ্ছুরিত আলোর মাঝখানে থাকে থাকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বচ্ছ রুপালি শামা-প্রজাপতি। মাথায় অভ্র-আবীর ছড়ানো হয়েছে অশেষ সযত্নে, এক-একটি কণা করে-তিন সখী বাসর গোধূলিতে আরম্ভ করে এইমাত্র বোধহয় কুন্তল প্রসাধন সমাপন করেছেন।" প্রিয়ার চোখের রঙের বর্ণনায় বলেছেন- "সবুজ না নীল? নীল না সবুজ? অতৃপ্ত নয়নে আমি সে-দুটি আঁখির গভীরতম অতলে অনেকক্ষণ ধরে তাকালুম তবু বুঝতে পারলুম না সবুজ না নীল। হ্যাঁ, হ্যাঁ, হঠাৎ মনে পড়ে গেল, হ্যাঁ, দেখেছি বটে এই রঙ আসামের হাফলঙের কাছে। বড় বড় পাথরের মাঝখানে গিরিপ্রস্রবণ কুণ্ডের স্হির নীলজলের অতলে সবুজ শ্যাওলা। সে দিন ঠিক করতে পারিনি, কী রঙ দেখলুম, নীল না সবুজ- আজ বুঝলুম দুয়ের সংমিশ্রণে এমন এক কল্পলোকের রঙ প্রভাসিত হয় যে, সে রঙ ইহভূমের কোন আর্টিস্টের পেলেটে তো নাই-ই, সৃষ্টিকর্তা যে আকাশের রঙ-বেরঙের তুলি বোলান তাতেও নেই।" বইটি পড়তে পড়তে অনায়াসে এক অনবদ্য প্রেমের জগতে ঘোরা হয়ে যাবে। সকলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা....
Was this review helpful to you?
or
বইটি আমার গার্লফ্রেন্ডকে দিয়েছিলাম। মাশাল্লাহ সে খুব পছন্দ করেছে এবং বইটি অনেক সুন্দর সবাই নিতে পারেন ১০০% ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
প্রশংসা শুনে কিনেছিলাম কিন্তু কেন জানি না পড়তে গেলে সব গুলায় যায়। সম্ভবত এটা আমার অপারগতা।
Was this review helpful to you?
or
চিরকূটে লেখা ছিলো, "বাড়ি থেকো। আমি ফিরব।" সৈয়দ মুজতবা আলীর 'শবনম' পড়া শেষ করলাম কাল। 'শবনম' নিয়ে কিছু বলার মতো ভাষাজ্ঞান এবং সাহিত্যজ্ঞান কোনটাই আমার নেই। শুধু বইটি পড়ার পর মনের ভিতরে যে ভাবগতির সঞ্চার হয়েছে তা প্রকাশের কঠিন প্রচেষ্টা এই। এটাকেও বলতে পারেন 'অন্ধের হস্তি দর্শন।' গুগুলে সার্চ দিয়ে তিনটা রিভিউও পেলাম। তার তিনটাতেই বলা হয়েছে এমন অসাধারণ প্রেমের উপন্যাস আর হয় না। আসলেই। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার নাকি বাঙালি তরুণদেরকে প্রেম করার আগে 'শবনম' পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। স্যার হয়তো বুঝাতে চেয়েছেন শুদ্ধ প্রেম তো এমনই হয়। শবনম এবং মজনুনের মধ্যে যেমনটা হয়েছে। কেমনটা হয়েছে? চলুন শবনমের জবানে শুনি। "শুনে রাখ, আমার ভালোবাসা দিয়ে দেহের সৌন্দর্যকে হার মানাবো। সে হবে পরিপূর্ণ একটি হিমকণিকার মতো..." ক্লাস এইট-নাইনে না উঠতেই আমরা যেভাবে লাইনে পড়ে যাচ্ছি, টেনে উঠতে উঠতে হয়ে উঠছি প্লে বয় কিংবা কামিজের উপরে প্রদর্শিত করে রাখছি ঝুলে পড়া যৌবন সেক্ষেত্রে স্যারের এই পরামর্শ একটি ভালো পরামর্শ। টিভিসিনেমা, গল্পগাঁথায় যে প্রেমকে আমরা প্রমোট দিয়ে চলছি তার সবটার বিপরিতে 'শবনম' যেন একাই দাঁড়িয়ে সবটাকে ম্লান করে দিতে পারে। পাঠ্যসূচিতে 'শবনম'কে এড করা জরুরী। পাঠ্যের বাইরে পাঠোভ্যাস আমাদের তেমন কই? থাক সে কথা। বাংলাসাহিত্যে 'শবনম' কতোটা ব্যতিক্রম আমি জানি না। কীভাবে জানবো? সব উপন্যাস কি আমি পড়েছি? তবে আমার পড়া উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি অনন্য ব্যতিক্রম। দুজন মানবমানবীর পবিত্র প্রেম, বিশুদ্ধ প্রণয় বলতে যা বোঝায় তা অত্যন্ত আবেগঘন এবং ঋদ্ধ ভাষায় ফুটিয়ে তোলেছেন লেখক। তুর্কি বংশোদ্ভুত আফগান রমণী এবং হিন্দুস্থানী যুবকের প্রেম-প্রণয় অতপর বিচ্ছেদ-বিরহের মধ্য দিয়ে একটি ট্রাজিক সমাপ্তি ঘটেছে উপন্যাসের। কাহিনীর অন্দরে প্রবেশ করতে করতে আমি নিজেও অজান্তে ডুবে যেতে থাকি শবনম শিউলিতে। শুধু আমি না, যে কেউ ডুবে যাবে নিশ্চিত। মজনুন কী বলেছে জানেন?- "এ নামে কতো মধু ধরে। তাই বুঝি 'জপিতে জপিতে নাম অবশ হইল তনু।" একজন অভিজাত নারীর সবকটা গুণই ছিলো শবনমের ভেতরে। 'বিউটি, ব্রেন, বার্থ, ব্যাঙ্ক'- আর কী লাগে? শুরুর দিকে নজরুলের 'শিউলিমালা'র আজহার এবং শিউলির প্রেমের মতো একটা আমেজ আমাকে অভিভূত করেছে। পরবর্তীতে নিজের ভাষায় 'বেপরোয়া' তুর্কী নারী শবনমের চঞ্চল সিদ্ধান্ত, কাউকে না জানিয়ে শুধু তোপল খান এবং আব্দুর রহমানকে সাক্ষী রেখে হুটহাট বিয়ে তাদের প্রেম থেকে কালিমাকে ঝেটিয়ে বিদায় করে দিয়েছে, নিয়ে গেছে প্রস্ফুটিত হবার পথে। "খমূশী হুজ্জতে নাতিক্ বূদ জুইআই-ই-গওহররা, কি আজ গাওওয়াস দর দরিয়া নফস বীরূন নমীআয়াদ" "গভীরে ডুবেছে যে জন জানিবে মুক্তার সন্ধানে বুদ্বুদ হয়ে তার প্রশ্বাস ওঠে না উপর পানে।" এমন একের পর এক কাব্যোদ্ধৃতিতে কথোপকথন কাহিনীর সাথে একাত্ব করে, রোমান্টিকতায় মাতিয়ে আমাকেও করে তোলে শবনমের পাণিপ্রার্থী। লায়লী-মজনু, রাধা-কৃষ্ণের প্রসঙ্গ, হাফিজ, জামী, সত্যেন সেনসহ অনেক কবির অসংখ্য কবিতা দিয়ে লেখক সমৃদ্ধ করেছেন তার নির্মাণ। সবটুকু বুঝতে না পারলেও বুঝা-না বুঝার মধ্য দিয়ে এক অনির্বচনীয় রস উপভোগ করতে থাকবেন পাঠক। আমারও তাই হয়েছে। মনে হয়েছে শবনম পুরোপুরি বুঝতে গেলে বাংলা এবং ফার্সি ডিকশনারী নিয়ে বসতে হবে। তাও শাব্দিক অর্থ হয়তো জানা যাবে, বিশেষ অর্থের জন্য পাঠকের সাহিত্যসেন্স থাকা জরুরী। 'শবনম' উপন্যাসের জন্য শবনমের এই কাব্যোদ্ধৃতিই যথার্থ। "গোড়া আর শেষ এই সৃষ্টির জানা আছে বল কার? প্রাচীন এ পুথি, গোড়া আর শেষ, পাতা কটি ঝরা তার।" ড. মুহম্মদ এনামুল হক নাকি বলেছেন উপন্যাসের প্রকৃত লক্ষণ এটিতে অনুপস্থিত। সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনাবলীর ভূমিকায় গজেন্দ্রকুমার মিত্রও অল্প কথায় 'শবনম'র একটি যৌক্তিক সমালোচনা করেছেন। হাতের কাছে থাকলে পড়ে নিয়েন। অবশেষে বাচ্চার লোকেরা এসে শবনমকে নিয়ে যায়। আকস্মিকভাবে জাফর খার খুন এবং শবনমের নিরুদ্দেশ ঘুরিয়ে দেয় কাহিনীর মোড়। এখানে কিছুটা সিনেমাটিক মনে হলেও পরবর্তীতে কথকের ব্যাকুলতা, কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা পাঠককে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয় এক নির্মম বাস্তবতার সম্মুখে। 'হে খুদাতালা তুমি আমাকে পথ দেখাও।' পাঠে বিভোল হতে হতে আমিই যেন হয়ে উঠি মজনুন। কাবুলের পথে পথে ব্যাকুল কাতর হয়ে পড়ি আমার শবনমের জন্য। যদিও সে বলে গেছে, "আমার বিরহে তুমি অভ্যস্থ হয়ে যেয়ো না।" কিন্তু কে সইতে পারে এমন প্রিয়ার শোক? কোথায় শবনম? আর্কে নেই। মজার ই শরীফ, সখির বাড়ি, সরাইখানা সবখানে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছে। কাবুলের কোথাও আর বাকি নেই। কোথাও নেই শবনম। কী হয়েছে তার? কোথায় গেছে? হিন্দুকুশ পর্বত নাকি কাহান্দারে? অথবা আদৌ কি সে জীবিত আছে? চিরকূটে সে লিখে গিয়েছিলো, "বাড়িতে থেকো। আমি ফিরব।" দিন গেলো, মাস গেলো শবনম আসে না। আফগানিস্তানের বরফ গলতে শুরু করেছে। কাহান্দার থেকে হয়তো কাবুলের পথ ধরেছে আব্দুর রহমান। আমি তো আর পারছি না। 'টম, লন্ডন', 'টম, লন্ডন' বলে ছুটে যাওয়া প্রেমিকার মতো একদিন হয়তো ফিরবে আমার শবনম। শেষের এই ট্রাজেডি ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় পাঠকের মন। সৈয়দ মুজতবা আলী স্যার জীবিত থাকলে নিশ্চিত তাঁর কাছে একটি চিঠি লিখতাম। "প্লীজ স্যার শবনমকে ফিরিয়ে আনুন। নয়তো অন্তত সে কোথায় আছে তা জানিয়ে পাঠকে শান্ত করুন।" এমোনও কি হয়? ২১, ০৩, ২০১৮
Was this review helpful to you?
or
'শবনম' - বড় পবিত্র আর গভীর প্রেমের উপন্যাসের নাম। সৈয়দ মুজতবা আলীর ভ্রমণ কাহিনী কিংবা রম্যগল্পের পাঠক যারা, তাদের জন্য আবার প্রেমের গালিচা বিছিয়ে হাজির হয়েছে কাব্যধর্মী এক সুখপাঠ্য প্রেমের উপন্যাস। উপন্যাসের পটভূমি আফগানিস্তানের এক প্রেম আর বিরহের গল্প। এর সাথে পাবেন ফারসি সংস্কৃতিরও অপূর্ব চিত্রায়ণ। একই সাথে হৃদয়দোলানো পবিত্র প্রেমের গল্প শুনিয়ে বিষাদের মেঘেও যে কোনো লেখক আপনার মনকে ঢাকতে পারে, তার প্রমাণ হয়ত সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর 'শবনম' উপন্যাসটিতেই দেখালেন। ভালোবাসা কি শুধুই সুখ দিয়ে যায়? না, যাতনাও দেয়। তবুও কিছু প্রেম হয়ে থাকে একদম প্রকৃত, খুব গভীর। মনে গভীরভাবে দাগ কেটে শবনম বইটিও আপনাকে দেবে রোমান্টিক সাহিত্যের অপূর্ব স্বাদ।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
কিছু বই থাকে যার একটি মাত্র লাইন বা উক্তি পাঠক মনে গেঁথে রয় সর্বক্ষণ। এই মুহূর্তে স্মরণে আসছে তেমন দুটি লাইন - " ডাক্তার সাহেব, তুমি আমার জন্য দু ফোঁটা চোখের জল ফেলেছ, আমি তোমার জন্য জনম জনম কাঁদিব " - তেতুল বনে জোছনা ( হুমায়ূন আহমেদ) . " তোমায় আমায় মিলেছি প্রিয়, শুধু চোখের জলের ব্যবধান টুকু রইলো " - চিতা বহ্নিমান ( ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়) . " শবনম " ঠিক এমনি এক শব্দমালা উপহার দিলো যা হয়ে থাকবে চিরস্মরণীয়। " তুমি আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না! " মাত্র কয়েকটি শব্দের মিলনে কী অপূর্ব অথচ বেদনাময় এক আকুতির বহিঃপ্রকাশ! প্রিয় রোমান্টিক উপন্যাসের নাম কেউ জানতে চাইলে থমকে যেতে হয় আমাকে প্রতিবারেই। কারণ তালিকাটা খুব ছোট। সাধারণত পুরোটাই দুই জন মানুষের প্রেমের গল্প আমাকে তেমন টানে না। এরচেয়ে পারিবারিক কিংবা সামাজিক সম্পর্কের ইতিহাস, মান-অভিমান, উত্থানপতন আমার অধিকতর প্রিয়। এর মাঝেও পছন্দের কিছু রোমান্টিক বই আছে। ছোট এই তালিকায় যুক্ত হলো সৈয়দ মুজতবা আলীর অনবদ্য এবং নিখাদ এক প্রেমের উপন্যাস " শবনম "! শবনম - শুধুমাত্র একজন রূপসী নারীর নাম নয়। এই রমণীর সাহসিকতা, প্রেমের প্রকাশ, ধৈর্য, বুদ্ধিমত্তা নারীর এক অন্য মাত্রার সৌন্দর্য প্রকাশ করে। শবনমের কবিতা প্রীতি পাঠকের মনে কবিতার প্রতি টান বাড়িয়ে তুলবে, যদি পাঠক কবিতা প্রেমী হয়ে থাকেন। নতুবা এর উল্টোটাও ঘটতে পারে। বইটি পড়তে কষ্ট হয়নি এই মতামত প্রকাশ করে নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করার অভিপ্রায় যেহেতু আমার নেই, সে হিসেবে নির্দ্বিধায় বলছি পড়তে সময় লেগেছে। অনেক শব্দের অর্থ খুঁজে দেখতে হয়েছে, কোন কোন বাক্য ততোধিক বার পড়ে তবেই তার মমার্থ বুঝেছি আবার মাঝেমাঝে ঘটনাপ্রবাহের সাথে তাল মিলাতে হিমশিমও খেয়েছি। এর কারণ হয়তোবা আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা, শব্দভাণ্ডার এর স্বল্পতা। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত বছর দুই আগে এই বই পড়লে হয়তো আমি এর লেখনীর ভার সইতে পারতাম না। তবুও " শবনম " পড়তে আগ্রহ হয়, শবনম এর কথা জানতে ইচ্ছে হয়। " শবনম " এর তুলনা আমি করবো কঠিন, শক্ত আবরণের কোন ফলের সাথে। যেমন: কাঁঠাল কিংবা তরমুজ। জানি তুলনাটা খুব হাস্যকর হয়ে গেল। তবুও মিল আছে অনেকাংশে। বাইরের কঠিন আস্তরণ ভেদ করতে পারলেই যার ভেতরটা রসে ভরপুর। " শবনম " বইটি ঠিক এমন। পড়তে কঠিন মনে হলেও একবার ছুঁতে পারলেই যার গভীরতায় তলিয়ে যেতে হয় আচমকা। তবে হ্যাঁ, জাঁদরেল পাঠকের জন্য ভাষার এমন কাঠিন্যতা কোন ব্যাপার নয়। বরং তা ছাপিয়ে অন্য ধাঁচের আলাদা রকম এক প্রাঞ্জলতা অনুভূত হবে। আমি নাদান পাঠক। সর্বোপরি, " শবনম " ভোরের শিশিরের মতোই স্নিগ্ধ এক প্রেমের আখ্যান। যা পড়ার পর প্রেমের এক নতুন রূপের সন্ধান মিলে।
Was this review helpful to you?
or
প্রেম-পিয়াসি বাঙালির মনে যে-কয়টা বইয়ের কদর কখনও কমবে না, তন্মধ্যে রবীন্দ্রনাথের 'শেষের কবিতা'-র পর সৈয়দ মুজতবা আলীর 'শব্নম্' অন্যতম। কিছু বই অাছে, যেগুলোর উপযোগ এক বার পড়লেই শেষ হয়ে যায় না; এটি তেমন একটি বই, যাকে অাগলে রাখতে হয়, বুকশেলফে সাজিয়ে রাখতে হয়। কেননা, সময়ে-অসময়ে একে প্রায়ই খুলে দেখতে হবে, পড়তে হবে; নেড়েচেড়ে প্রচ্ছদের দিকে তাকিয়ে প্রেয়সীর কথা ভেবে বুকে অাগলে নিতে হবে। তা ছাড়া, এটি প্রেমে পড়ার জন্য, প্রেমে পড়েও পড়ার জন্য, প্রেম শেখার জন্য। কিছু বই পড়তে গিয়ে, বইয়ের ভাঁজে অাঙুল রেখে অাকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে হয়, তখন প্রিয়ার কথা মনে পড়ে; ওপাশ থেকে কেউ এসে মুচকি হাসির কারণ জানতে চাইলে তবেই সংবিৎ ফিরে অাসে পাঠকের, এটি অাসলে তেমন একটি বই। পারস্যের মহাকবি ফেরদৌসীর লেখা 'শাহনামা', ওরা প্রত্যেক ঘরে একটি করে রাখে। অামি বলি কী, বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা 'শেষের কবিতা'-র পর যদি কোন বই প্রত্যেক ঘরে একটি করে রাখতে চায়, তবে সেটি যেন এটিই হয়। এই বইয়ের সৌন্দর্য বর্ণনা কিংবা বন্দনা যা-ই বলুন না কেন, তা করার মতো যোগ্যতা অামার নেই; জীবনানন্দ দাশ লাগবে। ? ২৬-০৫-২০২১
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলীর সৃষ্ট শবনম নিখাঁদ প্রেমের এক উপন্যাস । শবনম শব্দের অর্থ ‘শিশির বিন্দু’ । স্বাধীনতা দিবসের পাগমান শহরের অনুষ্ঠিত বল-ডান্সের কথা নিয়ে কাহিনীর শুরু। মূলত তুর্কি বংশদ্ভূত আফগান রমনী আর হিন্দুস্তানী যুবককে কেন্দ্র করে বইটির পটভূমি রচিত হয়েছে। যুবকের পেশা ছিল শিক্ষকতা। পাশাপাশি উপন্যাসটিতে ফুটে উঠেছে আফগান সমাজ ও সংস্কৃতি। কখনও ধর্মীয় গোঁড়ামি কিংবা অন্ধবিশ্বাস । কখনও-বা ক্ষমতার তীব্র বাসনা কিংবা দুটি দলের কোন্দল । হয়তো সে কোন্দল সৃষ্ট সমস্যাই হতে পারে এই অতি শুদ্ধ প্রেমের ইতি। শেষটাই বা কে জানতো ! হয়তো লেখক নিজেই জানতেন না । “প্রেম কি গরল? প্রেম তো অমৃত ! আমার মতো অপাত্রে পড়েছিল বলেই সাথে সাথে পাত্র ভেঙ্গে গেল।“ বইঃ শবনম লেখকঃ সৈয়দ মুজতবা আলী
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃশবনম লেখকঃসৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশনীঃবিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মূল্যঃ২০৪টাকা সৈয়দ মুজতবা আলীর অসাধারণ এক প্রেমের উপন্যাস শবনম। লেখক উপন্যাসটিতে প্রেমকে তার শুদ্ধতম রূপে চিত্রিত করেছে। এটি এমন এক গল্প যা আমাকে প্রেমে ডুবে থাকার অভিজ্ঞতা দিয়েছে ।এটি আমাকে শিখিয়েছে যে কীভাবে কাউকে ভালবাসতে হয় এবং নিজের প্রিয়জন কতটা মূল্যবান।শবনম আমার প্রিয় বাঙালি লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি রোম্যান্টিক উপন্যাসের অন্যতম উদাহরণ বলে মনে হয়েছে । বিশ শতকের গোড়ার দিকে কাবুলে ঘটে যাওয়া আসল ঘটনাগুলির একটি পটভূমিতে লেখক দুটি ব্যক্তির এই গল্পটি বুনেছিলেন যারা সুযোগে মিলিত হয়েছিল এবং প্রেমে পড়েছিলেন এবং তারপরে তাদের সংগ্রামগুলি পড়েছিলেন। বইটি পড়ার সময় এটি একটি সংবেদনশীল রোলারকোস্টার যাত্রা ছিল এবং আমি শেষের সাথে বিশেষভাবে সন্তুষ্ট । আমি মনে করি এটি বাংলা সাহিত্যের একটি খুব আন্ডাররেটেড রচনা এবং আরও লোকেরা এটি পড়তে চেয়েছিলেন এটি বোঝার জন্য যে এটির জন্য রোমান্টিক গল্পটি ফুটিয়ে তোলার জন্য বহিরাগত বর্ণনা প্রয়োজন নেই। অসাধারণ এক হৃদয় ছোঁয়া উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি পবিত্র প্রেমের উপন্যাস । শিক্ষকতা পেশাকে কেন্দ্র করে আফগানিস্তানে মজনুনের আগমন । পথ হারিয়ে শবনমের সহিত প্রথম দেখা , কথাবার্তায় একে অন্যের পরিচয় । প্রথম দেখায় মজনুনের দুর্নির্বায আকর্ষণ , নিন্দ্রা হারাম । দ্বিতীয় দেখায় বিদেশিনী শবনমের প্রেমে আবদ্ধ হলেন নায়ক । আস্তে আস্তে মজনুনের ভালোবাসা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে । তৃতীয় দেখায় জানতে পারেন পারে তাদের প্রেম ক্রিয়া বিক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার স্বাভাবিক নিয়ম মেনে চলছে অর্থাৎ শবনমও মজনুনের প্রেমে পড়েছেন । প্রেম যত গাঢ় হতে থাকে শবনমও মজনুনের বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু করে । তারপর তাদের কিছু সময়ের বিচ্ছেদ । তবুও চিঠিতে যোগাযোগ এবং হঠাৎ শবনমের প্রত্যাবর্তন । পরিশেষে লুকিয়ে বিয়ে । তারপরে পুনরায় আনুষ্ঠানিক বিয়ে । বিয়ের পরেরদিন কোন এক কাজে মজনুন বাইরে গিয়েছিল । এসে জানতে পারেন শবনমকে কারা যেন তুলে নিয়ে গেছে । শবনমকে কি উদ্ধার করা হয়েছিল ? শবনম কি ফিরে এসেছিল ? কি হয়েছিল মজনুনের ? জানতে হলে পড়তে হবে রোমান্টিক এই উপন্যাসটি । বইটি যারা পড়ে বেশি মজা পাবেন : ১.যাদের বাংলা শব্দ ভাণ্ডার অতিশয় বেশি ২.যারা কবিতা পছন্দ করেন ও কবিতার রস নিতে পারেন । #উপন্যাস_শবনম #সৈয়দ_মুজতবা_আলী #প্রকাশনী_বিশ্বসাহিত্য_কেন্দ্র #পৃষ্ঠা_১৪৪ #ব্যক্তিগত_রেটিং_১০/১০
Was this review helpful to you?
or
বেশ কয়েক জায়গায় চমৎকার কিছু রিভিউ পড়ে এ বই অর্ডার করেছিলাম| পড়তে শুরু করা থেকে শেষ করা পর্যন্ত আর কোন ভাবনা নেই। কেবল শবনম শবনম আর শবনম | ইতিহাস ঐতিহ্য আর প্রেক্ষাপট নিয়ে এক অনবদ্য প্রেমের গল্প | শুধু কি প্রেমের গল্প? ৩টি আলাদা পরিচ্ছেদ ৩টি আলাদা অনুভূতি | শেষ পর্যন্ত কার জন্য মন কাঁদে পাঠকের? কার কথা মনে থাকবে? পাঠকের মন থেকে শবনম কখনো হারিয়ে যারে না।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা RF-07-020 বইঃ শবনম লেখকঃ সৈয়দ মুজতবা আলী শবনমের রিভিউ লিখতে বসে আমার শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছে আমি কিসের রিভিউ লিখতে বসলাম! কাব্যের? উপন্যাসের?? প্রেমালাপের??? আমি কনফিউজড। তারচে বেশী কনফিউজড হয়েছি ইতোপূর্বে পড়া রিভিউ গুলো নিয়ে। পড়ার পর বুঝতে পারলাম, তার কেনো এমন লিখেছিলেন! এই আধো-কাব্য, আধো-উপন্যাস, আধো-প্রেমালাপের কি রিভিউ লিখা যায়! কোন অংশটা বাদ দেবেন? যেখানের প্রতিটা লাইন ই কাব্য হয়ে গেছে আর প্রতিটা কাব্যই লেখনিতে মিশে হয়ে গেছে উপাখ্যান! মজনূন পথ হারালেন। স্বাধীনতা দিবসের এই আলো ঝলমলে নিস্তব্ধ পাগমান শহরে তিনি কাকে পথের দিশা জিজ্ঞেস করবেন??? এমন সময় আলোর নিচে অপূর্ব এক আলোর মতোই উদয় হলেন এক তরুণী! শবনম!.... তারপর? প্রেম কি আর লুকিয়ে রাখা যায়? সরল হৃদয় মনে করে প্রেম লুকায়ে রাখিতে পারে কাচের ফানুশ মনেমনে ভাবে লুকায়েছে শিখাটারে তারপর....তারপর নামবিহীন তিন খন্ডের প্রথম দুই খন্ডে শুধু দেখা গেছে প্রেমের স্নিগ্ধ রূপ। নির্মল প্রেম যে কতোটুকু মনোরম হতে পারে, কতটুকু আরাধ্য হতে পারে। নিজের হৃদয়ের চাওয়ায় যে মজনূনকে শবনম পেয়েছিল, খুবই অদ্ভুত ভাবে পরিবারে সাথে তাকে আবার নতুন করে পায় সে। কিন্তু সেই যে অদৃষ্ট! যে ভয়ের কারনে এতো তাড়াহুড়ো, সে ভয়ে সওয়ার হয়ে হারিয়ে যায় শবনম! শবনম কি ফিরে এসেছিল??? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ♦ উপন্যাসটির আরম্ভ একটি নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে- ‘বাদশা আমানুল্লার নিশ্চয় মাথা খারাপ”। এর মধ্য দিয়েই সামগ্রিক উপন্যাসের একটা ক্ষীণ রেখাচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। পাতার পর পাতা পড়ে যেতে থাকলে ধীরে ধীরে আমরা দেখতে পাই- নায়কের প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে ওঠা। প্রেমিক শব্দটির সাথে হয়তো প্রবল শব্দটি মানানসই নয়, তারপরও এ উপন্যাসের নায়কের ভেতরে একটা আভ্যন্তরীণ প্রবলতা দেখতে পাই। যেনো অনেকটা এমন- “কোন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সত্তা সে নয়- অথচ ইন্দ্রিয়ই সেখানে তন্মাত্র হয়ে আছে”। ♦ উপন্যাসের দ্বিতীয় খণ্ডই অনেক বড়ো, এখানে প্রেমের তীব্রতাও প্রখরতম।প্রেম সাধারণ প্রেম নয়- হয়ও নি। কামের চশমা পড়ে ‘মোহকে’ যারা ‘প্রেম’ বলেন, এ প্রেম সেই প্রেম নয়। ‘শবনম্’ এর প্রথম খণ্ডে এমনই এক প্রেম ধীরে ধীরে জন্মলাভ করে থাকে। এখানে এসেই কালিদাসের সেই অমর উক্তির তাৎপর্য হৃদয়ঙ্গম হয়- “হে সৌভাগ্যবান মুক্তা, তুমি একবার মাত্র লৌহশলাকায় বিদ্ধ হইয়া প্রিয়ার বক্ষঃস্থলে বিরাজ করিতেছ; আর হতভাগ্য আমি বিরহ-শলাকায় শতবার ছিদ্রিত হইয়াও সেই স্থলে স্থান করিয়া লইতে পারি না”। ♦ "গোড়া আর শেষ, এই সৃষ্টির জানা আছে বল কার? প্রাচীন এ পুঁথি গোড়া আর শেষ পাতা কটি ঝরা তার?" বইয়ের দুই-তৃতীয়াংশ শেষ হবার পরের অনুভূতি আরপুরোটা শেষ হবার বোধের মাঝে যে কি আকাশ-পাতাল তফাত হতে পারে এই বই পড়ে তা বুঝলাম। কি ব্যপ্তি সে বোধের! সৈয়দ মুজতবা আলী এজন্যই অনন্য ! 'আকাশ আনন্দপূর্ণ না রহিত যদি জড়তার নাগপাশে দেহ মন হইত নিশ্চল।' রক রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/80413/শবনম
Was this review helpful to you?
or
শবনম “বাঙ্গালী তরুণ-তরুণীদের প্রেমে পড়ার পূর্বে অবশ্যই সৈয়দ মুজতবা আলীর 'শবনম' উপন্যাসটি পড়ে নেয়া উচিত। এমন শিক্ষণীয় প্রেমের উপন্যাস বিশ্ব সাহিত্যে আর একটিও নেই।” -আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ শবনম লিখেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী।যিনি বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রম্য সাহিত্যিক।রসাত্মবোধের গুরু তিনি। শবনম লেখা হয়েছে আফগানিস্তানের পটিভুমিতে।শবনম শুধু একটা প্রেমের উপন্যাস ই না,এতে ফুটে উঠে ফারসী সাহিত্য, আফগানদের সংস্কৃতির কথা। ১৯০১ সালে রচিত অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "দেবদাস" কে প্রেমের উপন্যাসের একটি মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়। ১৯০৩ সালে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের 'চোখের বালি' উপন্যাসটিতে বিনোদিনীর প্রেম উপন্যাসের মূল চালিকাশক্তি। বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী সৃষ্টি, আবহমান বাংলাকে চিত্রায়িত করা জহির রায়হানের "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসের মন্তু ও টুনির প্রেমও বেশ তাৎপর্যবহ। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের "পদ্মানদীর মাঝি"-র কুবের ও কপিলার প্রেম অপাঙয়েক্তয় শ্রেণির মানুষের জীবনকে চিত্রিত করেছে অদ্ভুত সরলতায়। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কবি' উপন্যাসের বাসন্তী এবং ঠাকুর জি'র প্রেমও আমাদের কম বিহ্বল করেনি। নিমাই ভট্টাচার্যের বিখ্যাত উপন্যাস "মেমসাহেব"-এ বাচ্চু ও মেমসাহেবের মধ্যকার প্রেম অনেক গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ। তবে সবকিছু ছাপিয়ে "শবনম" অনবদ্য, দুর্দান্ত ও নান্দনিক। তো দেরি কেন? শুরু করেদিন শবনম!