User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
তৃতীয় শ্রেণীতে "পাঠান মুল্লুকে" এবং নবম-দশম শ্রেণীতে "প্রবাস বন্ধু" পড়ার পর বইটি আর না কিনে থাকতে পারলাম না। বইয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে শুরু করে আফগানিস্তান পর্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে মানুষের সংস্কৃতি, তাদের ব্যবহার থেকে শুরু করে আফগানিস্তানের বাদশাহদের ইতিহাস আছে। আর যেই বিষয়টা সবাইকে আকৃষ্ট করে, সেটা হলো লেখকের ভৃত্য আবদুর রহমান। তার ব্যাপারেও অনেক কিছু লেখা আছে। লেখক আফগানিস্তানে ছিলেন ২ বছর (১৯২৭-১৯২৯)। এর মধ্যে আফগানিস্তানে যুদ্ধ লাগে। তার ঘরে খাবার শেষ হয়ে যায়। তিনি আবদুর রহমানকে মাইনে দিতে পারবেন না বলে তাকে পানশির ফিরে যেতে বললেও আবদুর রহমান যায় না। এমনকি আবদুর রহমান যখন জানতে পারে যে লেখক শীগ্রই ভারতবর্ষে ফিরে যাবেন, তখন সেও লেখকের সাথে ভারতবর্ষে চলে যেতে চায় নিজের পরিবার রেখে। তবে শেষ পর্যন্ত সে যেতে পারে না। সে আফগানিস্তানেই রয়ে যায় আর লেখক দেশে ফিরে আসেন। আবদুর রহমান শুধু লেখকের ভৃত্য না, বন্ধুও ছিলেন। প্রতিটা ক্ষেত্রে সে লেখকের সাথে ছিল। লেখক আজীবন আফগানিস্তানে থাকলে আবদুর রহমান হয়তো লেখকের শ্মশান পর্যন্ত সাথে থাকতো। ?
Was this review helpful to you?
or
বইটা হাতে পেলাম দুই দিনের মধ্যে। ধন্যবাদ রকমারি !❤️
Was this review helpful to you?
or
premium quality. 1 diner moddho delivery diche. good service
Was this review helpful to you?
or
oshadaron !!
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো বই.... আমার অনেক পছন্দ হয়েছে আমি গল্প টি পরে শেষ করে ফেলেছি
Was this review helpful to you?
or
অন্যন্য ও অসাধারণ। পড়ে মনে হচ্ছে আমার চোখের সামনেই সব ঘটছে।
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের সার্থক ভ্রমণ কাহিনী। সত্যিই অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। ?
Was this review helpful to you?
or
শিক কাবাব, ঢাকাই পরোটা, মুরগী মুসল্লম, আলু গোস্ত, মাংসের কোরমা, পেঁয়াজ-ঘিয়ে দুম্বার মাংস, বোম্বাই সাইজ শামী কাবাব, কোফতা-পোলাও, আস্ত মুরগি রোস্ট... দাঁড়ান, দাঁড়ান! ভাববেন না খাবারের রেসিপি লিখতে বসেছি। এটা শতভাগ বইয়ের রিভিউ। কিন্তু বইটা পড়তে গিয়ে এরকম অসংখ্য খাবারের নাম বারবার সামনে এসেছে। মনোযোগ দিয়ে পড়ার সময় যদি এমন সব খাবারের বর্ণনা চোখে পড়ে, কেমন লাগে বলুন! পেটটা কি খিদেয় মোচড় দিয়ে ওঠে না? আমার বেলায় তো পেটে ইঁদুরের লাফালাফি শুরু হয়েছিল! তবে সত্যি বলতে কী, বইয়ের সবকিছুই ভীষণ উপভোগ্য ছিল। পড়তে কোনো অসুবিধা হয়নি। বরং নেহারিতে থাকা অমৃত সমান মজ্জারসের মতো গিলে-শুষে খেয়েছি প্রতিটি পৃষ্ঠা। রম্য সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সৈয়দ মুজতবা আলী। তার লেখা ‘দেশে বিদেশে’ বইটি বাংলা ভাষার অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ কাহিনি, যা ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালের আফগানিস্তান ভ্রমণের উপর রচিত। এ বইটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনি হিসেবে গণ্য করা হয়। আজ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে অন্য কোনো ভ্রমণ কাহিনি এর মতো এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। সৈয়দ মুজতবা আলী মাত্র তেইশ বছর বয়সে শান্তি নিকেতন থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর তিনি আফগানিস্তানের কাবুল কৃষি কলেজে ইংরেজি এবং ফারসী ভাষার শিক্ষক হিসেবে শুরু করেন কর্মজীবন। তার স্বপ্ন- কাবুলে অধ্যাপনা করে যে অর্থ সঞ্চয় হবে, পরবর্তীতে সেটা ব্যবহার করে উচ্চতর শিক্ষার জন্য জার্মানি যাবেন। দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে এক বাঙালি যুবকের পশ্চিম ভারত থেকে আফগানিস্তান যাত্রাকালের স্মৃতি বিজড়িত, অভিজ্ঞতাপূর্ণ, জীবন গল্পের লিপিবদ্ধ রূপ ‘দেশে বিদেশে’। কলকাতা হতে পেশাওয়ার, খাইবার পাস হয়ে জালালাবাদ, কাবুল যাত্রা এবং কাবুলে শিক্ষকতা কালীন সময়ের জীবন-যাপন নিয়েই মূল কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। লেখকের যাত্রাপথের অভিজ্ঞতা, স্থানীয় ইতিহাস ঐতিহ্য এবং কাবুলের স্মৃতিকথা- এই তিনটি বিষয়ের উপর পুরো বইটি রচিত। হাওড়া স্টেশন থেকে রেলগাড়িতে চড়ে পেশাওয়ার পথের যাত্রা কাহিনি দিয়ে গল্প শুরু। হাস্যরসপ্রিয় তরুণ লেখক একের পর এক বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছেন। স্থান, কাল, পাত্র কিচ্ছু বাদ যাওয়ার জো নেই। এর মাঝেই এক বিলেতি সাহেবের কাছ থেকে ভোজের নেমন্তন্ন। বাঙালি হিসেবে লেখকও কম যান না। নিজের খাবার নিয়ে মিলেমিশে খেতে বসলেন। বাকি পথে সফর সঙ্গী হলেন এক সর্দারজিসহ বেশ কয়েকজন পাঠান। শুরু হলো আড্ডা। দুনিয়ার নানান গল্প পাঠানদের ঝুলিতে। অদ্ভুত সেই গল্পের সত্য-মিথ্যা নিয়ে লেখক যখন সন্দিহান, তখন সর্দারজি দারুণ এক উদাহরণ টেনে বললেন- “গভীর বনে রাজপুত্তুরের সঙ্গে বাঘের দেখা। বাঘ বলল, আমি তোমাকে খাবো। এ হলো গল্প। তাই বলে বাঘ মানুষ খায় সেও কি মিথ্যা কথা?” তর্ক-গল্পে লেখক কুপোকাত হলেন। সর্দারজির হাত থেকে রক্ষা পেলেন পেশাওয়ার পৌঁছানোর পর। তবে পাঠান মুলুকে প্রবেশ করে বন্ধুবর শেখ আহমদ আলীর জিম্মায় পড়লেন। দু-তিনদিনের সফর গিয়ে দাঁড়ালো এক সপ্তাহে। কোনোভাবেই আহমদ আলীর আতিথিয়েতা উপেক্ষা করার সুযোগ হলো না। পেশাওয়ার শহর, সেখানকার মানুষ, তাদের ইতিহাস কপচে অষ্টম দিনে মুক্তি মিলল। কিন্তু লেখকের কপাল বলে কথা! পেশাওয়ার থেকে বন্ধু আহমদ আলী তাকে যে মুড়ির টিনে তুলে দিলেন তার ড্রাইভার ষাটোর্ধ্ব বয়সী এক শিখ সর্দারজি, নাম অমর সিং। জানতে পারলেন, অভিজ্ঞ এই ড্রাইভার সাহেব চোখ বন্ধ অবস্থাতেও কাবুল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। সমস্যা শুধু একটাই। তিনি রাতকানা মানুষ! এর পরের যাত্রা রীতিমতো শ্বাসরুদ্ধকর। নুড়ি পাথর, কাঁচা ভাঙা রাস্তা, অসম্ভব গরম, পাহাড় মরুভূমি পেরুনোর যে ভয়ংকর বর্ণনা পাওয়া যায়, তাতে কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসে। সর্দারজির পাশে কোনোরকমে জান হাতে নিয়ে বসে লেখক যেভাবে খাইবাস পাস এলাকা অতিক্রম করলেন, তা যেন পুলসিরাত পার করার মতো উত্তেজনায় ভরপুর। স্মরণ করিয়ে দিই, যে সময়কার অভিজ্ঞতা-স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে সেটা আজ থেকে প্রায় ৯০ বছর পূর্বেকার। পেশাওয়ারের সুদীর্ঘ এই যাত্রার প্রথম বিরতি পাওয়া গেল জালালাবাদ পৌঁছানোর খানিক আগে। মরুপ্রান্তরে নিরাপত্তা প্রহরী সজ্জিত বিশাল এক দুর্গের সামনে এসে থামলো গাড়ির চাকা। জানা গেল, পাসপোর্ট না দেখিয়ে দুর্গ অতিক্রমের সুযোগ নেই। কৌতুহল এবং আগ্রহ নিয়ে লেখক সাহেব গাড়ি থেকে নেমে প্রথমে বাঁ পাশের কাবুল নদী দেখে মুগ্ধ হলেন। এরপর দুর্গে ঢুকে কর্মরত অফিসারের ব্যবহার ও আতিথিয়েতায় মুগ্ধ হলেন আরেক দফা। তাদের আলাপচারিতায় বেদনাবিধুর জীবনের কথা উঠে আসে। বিশেষ করে এই অংশটি হৃদয়স্পর্শী- “আমি (লেখক) আমার ভাঙা ভাঙা ফারসীতে জিজ্ঞাসা করলুম, সঙ্গীহীন জীবন কি কঠিন বোধ হয় না? (অফিসার) বললেন, আমার চাকরী পল্টনের, ইস্তফা দেবার উপায় নেই। কাজেই বাইরের কাবুল নদীটি নিয়ে পড়ে আছি। রোজ সন্ধ্যায় তার পাড়ে গিয়ে বসি আর ভাবি যেন একমাত্র নিতান্ত আমার জন্য সে এই দুর্গের দেয়ালে আঁচল বুলিয়ে চলে গিয়েছে।” যাত্রাপথে লেখকের বক্তব্যে বিভিন্ন জানা-অজানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে। সেসময়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস তেমন লেখা হয়নি। তাদের প্রাচীন ইতিহাস পোঁতা আছে সে দেশের মাটির তলায় আর ভারতবর্ষের পুরাণ মহাভারতে। আফগানিস্তান গরীব দেশ। ইতিহাস গড়ার জন্য মাটি ভাঙবার ফুরসৎ আফগানদের নেই। মাটি যদি তারা নিতান্তই খোঁড়ে, তবে সেটা কাবুলী মোন্-জো-দড়ো বের করার জন্য, নয়তো কয়লার খনি পাবার আশায়। পুরাণ ঘাঁটাঘাঁটি করার মত পাণ্ডিত্য কাবুলীর তখনো হয়নি। তাদের পূর্বসূরীদের তথ্য ঘাটতে গেলেও বিপদ। দক্ষিণে (আধুনিক) মধ্য ও দক্ষিণ-আফগানিস্তান তথা পশ্চিম-ভারতের গ্রীক রাজাদের কোনো ভালো বর্ণনা পাবার উপায় নেই। শুধু এক বিষয়ে ঐতিহাসিকের তৃষ্ণা তাঁরা মেটাতে জানেন। কাবুল থেকে ত্রিশ মাইল দূরে বেগ্রাম উপত্যকায় এঁদের তৈরি হাজার হাজার মুদ্রা প্রতি বৎসর মাটির তলা থেকে বেরোয়। খ্রীষ্টপূর্ব ২৬০ থেকে খ্রীষ্টপূর্ব ১২০ রাজ্যকালের ভেতর অন্তত ঊনত্রিশজন রাজা ও তিনজন রানির নামচিহ্নিত মুদ্রা এযাবৎ পাওয়া গেছে। এগুলোর উপরে গ্রীক ও খরোষ্ঠী এবং শেষের দিকের মুদ্রাগুলোর উপরে গ্রীক ও ব্রাহ্মী হরফে লেখা রাজারানির নাম পাওয়া যায়। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির কথা পুরো বইজুড়েই। তবে লেখকের সাবলীল বর্ণনা আর প্রাঞ্জল উপস্থাপনায় সেগুলো পড়তে বেগ পেতে হয় না। সেইসাথে প্রবল রসবোধ আর হাস্যরসাত্মক ঘটনা তো আছেই। বইয়ের চৌদ্দতম অধ্যায় পর্যন্ত ভ্রমণ যাত্রার বর্ণনা পাওয়া যায়। মূলত পনেরোতম অধ্যায় থেকে কাবুলের গল্প শুরু। এখান থেকে বইটিকে আর ভ্রমণকাহিনি মনে হয় না। বরং পরিণত হয় স্মৃতিকথায়। তখনকার মানুষের সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অবস্থার বিশদ বিবরণ মেলে। একারণেই হয়তো বইটিকে বলা হয়েছে আফগানিস্তানের লিখিত দলিল। এবার কাহিনি যত এগোয়, কাবুলের রূপরস ততটাই সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। আফগানদের জাতি-উপজাতি, সংস্কৃতি, ভূ-প্রকৃতির বর্ণনার পাশাপাশি তাদের জীবন-যাপন, ভাষা, খাদ্যাভাস, ইত্যাদির সঙ্গে পরিচয় মেলে। লেখক যখন ফুল-ফলের বর্ণনা দেন, তার ঘ্রাণও যেন নাকে এসে লাগে। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সী, আরবিসহ যতগুলো ভাষার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়; সবগুলোর মাঝে লেখক এক অদ্ভুত মেলবন্ধন তৈরি করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ওমর খৈয়াম, কবি সাদী, বৈষ্ণব পদাবলীসহ অসংখ্য চেনা-অচেনা ব্যক্তিবর্গের কবিতা, গান, প্রবাদ, বক্তব্যকে প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। লেখক কাবুল শহরে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। যার কারণে বিভিন্ন দেশের শিক্ষক, গভর্নর, ক্ষমতাশীল মানুষদের সঙ্গে তার ওঠা-বসা ছিল। তখনকার শিক্ষা ব্যবস্থার দৃশ্য অতটা সহজ স্বাভাবিক ছিল না। সভ্য দেশের শহরবাসীরা গ্রামের জন্য স্কুল, হাসপাতাল, রাস্তা-ঘাট বানিয়ে দিয়েছিল। কাবুলের গ্রামে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান নেই বললেই চলে। কতকগুলো ছেলে সকালবেলা গাঁয়ের মসজিদে জড়ো হয়ে গলা ফাটিয়ে আমপারা মুখস্থ করে- এই হলো বিদ্যা চর্চা। তাদের তদারককারী মোল্লাই গাঁয়ের ডাক্তার। অসুখ-বিসুখে তাবিজ-কবচ তিনিই লিখে দেন। ব্যামো শক্ত হলে পানি-পড়ার বন্দোবস্ত করেন আর মরে গেলে তিনিই তাকে নাইয়ে ধুইয়ে কবর দেন। মোল্লার ভরণ-পোষণ করে গাঁয়ের লোকজনই। এই ছিল তখনকার অবস্থা। আফগানিস্তানের শাসন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেন রাজা-বাদশারা। ক্ষমতাশীলদের মাঝে দ্বিধা দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে সবসময়। লেখকের বর্ণনাতেই সেসময়কার ক্ষমতার পালাবদলের বীভৎস দৃশ্য ফুটে উঠেছে। বাদশাহ হাবিবুল্লাহ, রাজা আমান উল্লাহ, রাজার বড়ভাই মুইন-উস-সুলতান যে যেভাবে পেরেছে ক্ষমতার কলকাঠি নেড়েছে। বিশেষ করে আমান উল্লাহর ইউরোপ ভ্রমণ এবং পরবর্তীতে ইউরোপের আদলে আফগানিস্তান সংস্কার শুরু করলে লেজে-গোবরে অবস্থা তৈরি হয়। তার অদ্ভুত সব নিয়ম-কানুনের কাছে কাবুলের সাধারণ জনগণ অসহায় বোধ করে। সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। কাঠের শেষ পেরেক ঠুকে দেয় বাচ্চা নামক ডাকাত সর্দার। তার আকস্মিক আক্রমণে কাবুল শহর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ডাকাতের ক্ষমতার কাছে পরাজিত হয়ে রাজা আমান উল্লাহ পালিয়ে যায়। শাসন ক্ষমতা কিছুদিন মুইন-উস-সুলতান এর উপর সোর্পদ হলেও শেষ পর্যন্ত সেও পালিয়ে যায়। শহরে লুটপাট ও অচলাবস্থা তৈরি হবার পর বিদেশি কূটনৈতিক যারা ছিলেন তারা একে একে দেশ ছাড়েন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ভারতীয় ও অন্যান্য বিদেশি শিক্ষকেরা আটকা পড়ে যান। এই সময়টাতে তাদের দুঃখ-দুর্দশার অন্ত রইল না। একদিকে যেমন খাদ্য সংকট, অপরদিকে মৃত্যুভয়। এমন দুর্বিষহ অবস্থার ভুক্তভোগী ছিলেন লেখক নিজেও। পরবর্তীতে বহু কষ্টে নিজের দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু যে ভ্রমণের শুরুটা হয়েছিল অতি আনন্দে, সেটা শেষ হয়েছে কষ্ট এবং লাঞ্ছনায়। আফগানিস্তান ও তার শহর কাবুল পর্বের ইতি টানবো একজন বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের পরিচয় দিয়ে। তার নাম আবদুর রহমান। সহজ সরল অথচ শত গুণের অধিকারী এই মানুষটি লেখকের কাবুলে পদার্পণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাশে ছিল। বিশালদেহী আবদুর রহমানের উচ্চতা ছ’ফুট চার ইঞ্চি, যা লেখক নিজের হাতে ফিতা দিয়ে মেপে দেখেছেন। রান্নাবান্না, ঘরের কাজকর্মসহ প্রায় সবকিছু দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল তার একার কাঁধে। বিনা প্রশ্নে বিনা সঙ্কোচে যেকোনো কাজ সাফল্যের সঙ্গে সম্পাদন করতো। তার কাছে অসাধ্য বলতে কিছুই ছিল না। লেখক তাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বলেছেন ‘হরফন-মৌলা’ বা ‘সকল কাজের কাজী’। আবদুর রহমান শুধুমাত্র লেখকের কর্মচারী ছিল না। সে ছিল বন্ধু বা ভাইয়ের সমান। যার হৃদয় বরফের থেকেও শুভ্রতর। বিশাল এই পৃথিবী অসংখ্য সীমারেখায় বিভক্ত। প্রতিটি সীমারেখার মাঝে আবার অসংখ্য মানুষের বসবাস। জাতিগত, প্রথাগত, সংস্কৃতি, ধর্ম, শিক্ষা-দীক্ষা, আচার ব্যবহার, অভ্যাসে কত শত ভিন্নতা। কিন্তু ভিন্নতার মাঝেও মিল থাকে। থাকাটাই স্বাভাবিক। দিনশেষে আমরা মানুষই তো। তবে ভূ-খণ্ড আর প্রকৃতির যে পরিবর্তন, সেটা মানুষকে এবং তাদের জীবনকে করেছে বৈচিত্রময়, রহস্যময়। সেই রহস্য ও বৈচিত্র কারও নজর এড়ানোর সুযোগ নেই। মানবজীবনে এগুলো এক ধরনের অভিজ্ঞতা। যা জীবনকে পরিণত করে। লেখক তার ভ্রমণ জীবনের এমন অভিজ্ঞতাকে অবহেলায় হারিয়ে যেতে দেননি। বরং যত্নের সঙ্গে লিপিবদ্ধ করেছেন। সময়, স্থান ও কালের আপন মহিমায় ‘দেশে বিদেশে’ ভ্রমণ কাহিনি হওয়া সত্বেও এটি আফগানিস্তানের লিখিত ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। লেখকের রম্য রসাত্মক বর্ণনা, পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষের সাথে রসালাপ, ঘটনার চমৎকার উপস্থাপন, ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা এবং শেষ পর্যায়ে এসে আফগানিস্তান ছেড়ে আসার করুন স্মৃতি অসাধারণভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই ভ্রমণ কাহিনিতে। সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘দেশে বিদেশে’ বাংলা সাহিত্যকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি কুঁড়িয়েছে কালজয়ী সাহিত্যের খেতাব। জীবনে একবার হলেও চমৎকার এই বইটি সকলের পড়া উচিত। হ্যাপি রিডিং। . বই: দেশে বিদেশে লেখক: সৈয়দ মুজতবা আলী প্রচ্ছদ: খালেদ চৌধুরী ধরন: ভ্রমণকাহিনি প্রকাশনী: স্টুডেন্ট ওয়েজ পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২০৮ মলাট মূল্য: ২৫০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
সেরা, বাংগালি হয়েও যারা এই বই পড়েনি; তারা সত্যিই অভাগা।
Was this review helpful to you?
or
Good read
Was this review helpful to you?
or
Great Book
Was this review helpful to you?
or
Good book
Was this review helpful to you?
or
Anar lakha khub e valo.
Was this review helpful to you?
or
i love it
Was this review helpful to you?
or
Out of this world!!!
Was this review helpful to you?
or
Thanks
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
???
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
মান ভালো।মজার বই।
Was this review helpful to you?
or
Problems in binding
Was this review helpful to you?
or
Wonderful book .I suggest everyone to read the book.
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সেরা ভ্রমণ কাহিনী 'দেশে বিদেশে'।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের সেরা বইয়ের তালিকায় সবার উপরে রাখব।
Was this review helpful to you?
or
Vary good
Was this review helpful to you?
or
best
Was this review helpful to you?
or
Best travelling novel I've ever read.
Was this review helpful to you?
or
খুব ই ভালো বই । আপনারা এগুলো কিনতে পারেন । জ্ঞান বাড়বে অবশ্য ই ।
Was this review helpful to you?
or
ছোটবেলায় রসগোল্লা গল্প পড়ে সৈয়দ মুজতবা আলী সম্পর্কে ধারণা হয়েছিল, # তিনি একজন ধনী মানুষ # বিদেশ ভ্রমণ উনার শখ # কারনে অকারণে দেশ ভ্রমণ করেন দেশে বিদেশে পড়ে দেখলাম, ঘটনা ভিন্ন। অফগান মুল্লোক নিয়ে লিখেছেন বইটি। ভদ্রলোক জার্মানিতে পড়তে চেয়েছিলেন এবং এক ভারতীয় মহাজনের কাছে টাকা জমা রেখেছিলেন সেই উদ্দেশ্যে, মহাজন বিপ্লবে মারা যাওয়ায় তার সব টাকা খোয়া যায়, শুধুমাত্র জার্মানিতে পড়ার টাকা কামানোর জন্যই তিনি আফগানিস্থানে বিপদসঙ্কুল পরিবেশে চাকরি করতে যান। ওই চাকুরির সুবাদে তার এই দেশে বিদেশে উপন্যাস। এতে ফুটে উঠেছে এক জীবন্ত আফগানিস্তান, খাইবার পাসের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, আফগান জাতির ইতিহাস, কৃষি, বরফ, ভোজন শৈলি, চিন্তা ধারা, হাবিব উল্লার বীরত্ব , আমান উল্লার প্রগতিশীলতা, ফারসি-পশতু ভাষার দন্দ, সর্বোপরি আফগান সম্পর্কে এক সচ্ছ ধারণা। তার চিন্তা ভাবনায় তৎকালীন পরাধীনতার গ্লানি সুস্পষ্ট। শুধুমাত্র অফগান স্বাধীনতায় অবদানের জন্য কট্টরপন্থী বর্বর আফগান মোল্লাদের তিনি শ্রদ্ধার চোখে দেখেছেন। সৈয়দ মুজতবা আলী খুব বড় মাপের সাহিত্যিক ছিলেন বলে কখনো দাবি করতেন না, তবে আমার মতে তিনি ছিলেন একজন বড় মাপের সাহিত্য সমঝদার।
Was this review helpful to you?
or
Most Favourite book
Was this review helpful to you?
or
g
Was this review helpful to you?
or
Good quality
Was this review helpful to you?
or
দেশে বিদেশে - সৈয়দ মুজতবা আলী ভ্রমনকাহিনী বেশ ভালো লাগে। দশম শ্রেণীর বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম 'প্রবাস বন্ধু' নামক বইটি। বেশ ভালো লেগেছিলো। সেটি নেওয়া হয়েছিলো 'দেশে বিদেশে' নামক গ্রন্থ থেকে। অসাধারণ লাগলো পড়ে।
Was this review helpful to you?
or
প্রবাস বন্ধু!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ মনোমুগ্ধকর গল্প। ♥️♥️
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সেরা বইগুলোর মধ্যে অন্যতম।
Was this review helpful to you?
or
Shundor
Was this review helpful to you?
or
হাস্যরসাত্মক তবে তথ্যবহুল একটি ভ্রমণ কাহিনি। একে বাংলা ভাষার প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনি বলা হয়ে থাকে।
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
Nice book.
Was this review helpful to you?
or
#সপ্তর্ষি_রকমারি_বুকরিভিউ_প্রতিযোগ ইমেইল: [email protected] বইয়ের নাম: দেশে বিদেশে লেখকের নাম: সৈয়দ মুজতবা আলী ক্যাটাগরিঃ বুক রিভিউ কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত একটি ভ্রমণকাহিনী "দেশে বিদেশে", যা ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালের আফগানিস্তান ভ্রমণের উপর রচিত। এই বইটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনি হিসেবে গণ্য করা হয়। "দেশে বিদেশে" ভ্রমণকাহিনী শুরু হয় লেখকের কলকাতার হাওড়া স্টেশন থেকে পেশাওয়ার হয়ে কাবুল যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে। লেখকের লেখনিতে উঠে এসেছে আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা ও মোল্লাতন্ত্র-প্রকৃত ধর্মচর্চার প্রভেদ সম্পর্কে। কাবুলে অবস্থানের শেষ পর্যায়ে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন শুরু হয়। ভ্রমণকাহিনীটি শেষ হয় কাবুলের করুণ কাহিনী বর্ণনা করে। ভ্রমণ শুরু করার পর থেকে দেখা যায় প্রতিটি পর্বে কৌতুক, কৌতুহল, হাসি-ঠাট্টা, রম্য-রসিকতা। "দেশে বিদেশে" গ্রন্থে প্রতিটি বাক্যই অর্থপূর্ণ। যাত্রার শুরুতেই গাড়িতে উঠতে গেলে একজন ইংরেজ হাঁক দিয়ে বলেছিলেন, "ওটা ইউরোপিয়ানদের জন্য"। এই একটা মাত্র উক্তির মধ্যে ব্রিটিশ-শাসিত দুশ বছরের ইতিহাসের একটি মাত্রা অনুভব করা যায়। পাঠকরা স্ব শরীর উপস্থিত না থেকেও আফগানিস্তানের খাবার, সংস্কৃতি, ইতিহাস জানতে পারবেন। #দাদু ? ©Mujahid Hasan
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
এত হাসি পেত এই বই পড়ে বলে শেষ করা যাবে না Outstanding Humour ,Respect মুজতবা স্যার
Was this review helpful to you?
or
অমূল্য একটি বই
Was this review helpful to you?
or
Enough informative and very enjoyable
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়লে তৎকালীন বিশ্ব সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা অর্জন করা যাবে, সাথে আফগান জাতি এবং তাদের সাথে ভারতের সম্পর্কের দিকটাও বুঝতে সুবিধে হবে।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া প্রথম ভ্রমণকাহিনী ।অসম্ভব ভালো লেগেছে।বইটি পড়ে মনে হয়েছে,আমি নিজেই যেন ভ্রমণে বের হয়ে গিয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
মাধ্যমিক পর্যায়ে যখন এই উপন্যাসের কিছু অংশ পড়ি তখনই ভালো লেগে যায়। সেখান থেকেই কেনার চিন্তা। পড়ার পর দেখলাম শুধু ভ্রমনের কাহিনী নয় যেখানে যেখানে গিয়েছেন সেখানকার মানুষ সম্পর্কে, সামাজিক, রাজনৈতিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি লিখার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। যা আসলেই অনেক উপভোগ্য।
Was this review helpful to you?
or
পড়া এখনো শেষ হয়নি
Was this review helpful to you?
or
best!
Was this review helpful to you?
or
সত্যি কথা বলতে দেশে বিদেশের মতো ভ্রমণকাহিনী আগে কখনো পড়া হয়নি। ইতিহাস,রম্যরস আর করুণ কাহিনীর মিশ্রণে এমন এক ভ্রমনকাহিনীর শৈল্পিক রূপ তৈরি হয়েছে যা ভাষায় প্রকাশ করার নয়।
Was this review helpful to you?
or
quite good
Was this review helpful to you?
or
A timeless classic
Was this review helpful to you?
or
বইটি অনেক ভাল । সবাই পড়তে পারেন বইটি।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই,অসাধারণ লেখনী।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
ভ্রমণকাহিনী হিসেবে সুখপাঠ্য এই বইটির জবাব নেই। মুজতবা আলী এমন এক লেখক যিনি কিনা বাংলা ভাষায় বিদেশী বহু শব্দের যথোপযোগী ব্যবহারে ও নিজের স্বভাবসুলভ রসিকতায় নিজের রচনাকে করে তুলেছেন একইসাথে রসাত্মক ও শিক্ষণীয়। তার তেমনই এক অনবদ্য সৃষ্টি "দেশে বিদেশে"।
Was this review helpful to you?
or
বই:দেশে বিদেশে লেখক:সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশনী: বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সংস্করণ : তৃতীয় সংস্করণ, অষ্টম মুদ্রণ,নভেম্বর'১৮ পৃষ্ঠা : ২২৪(৮.৬''*৫.৬'') . বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমনকাহিনী বলা হয় সৈয়দ মুজতবা আলী'র 'দেশে বিদেশে' কে। এটি একই সাথে ভ্রমনকাহিনী,ইতিহাস, ভূগোল ও আত্মজীবনীমূলক রম্যরচনা। এর প্রথম প্রকাশ হয় 'দেশ' পত্রিকায় ১৯৪৮ সালের মার্চ মাস থেকে ধারাবাহিক ভাবে। ১৯২৭ সালে তখনকার বাদশা আমানউল্লা'র ডাকে আফগানিস্তানের শিক্ষা বিভাগে চাকরি করতে যান। কাবুলের কৃষিবিজ্ঞান কলেজে মাসিক ২০০ টাকা বেতনে ফরাসি ও ইংরেজি ভাষার প্রভাষক নিযুক্ত হন। তারই উদ্দেশ্যে কলকাতা থেকে পেশাওয়ার ও পেশাওয়ার থেকে কাবুল যাত্রা এবং সেখানকার দুই বছরের(১৯২৭-১৯২৯) প্রবাসজীবন নিয়ে তাঁর রচনা দেশে-বিদেশে। গ্রীক মনীষী অ্যারিস্টটল তাঁর Poetics গ্রন্থে বলেছেন, শিল্প সৃষ্টি হিসেবে সার্থক প্রতিটি নাটক অথবা কাব্য মূলত তিনটি সুনির্দিষ্ট পর্বে বিভক্ত হওয়া প্রয়োজন-আদিপর্ব,মধ্যপর্ব ও অন্তপর্ব।'দেশে বিদেশে' কাব্য বা নাটক কোনোটিই নয়। তবু এ রচনায় উপরের তিনটি পর্বের সন্ধান পাওয়া মোটেই কঠিন নয়। এর আদিপর্বে রয়েছে পথের কথা, রেলগাড়ি চেপে হাওড়া থেকে পেশাওয়ার যাত্রা, তারপর মোটরে করে পেশাওয়ার থেকে কাবুল যাত্রা;মধ্যপর্বে তাঁর প্রবাসজীবনের গল্প, প্রথমে শহর থেকে আড়াই মাইল দুরে এবং পরে শহরে বসবাস;শেষপর্বে শিনওয়ারীদের বিদ্রোহ, বাচ্চায়ে সকাও'র কাবুল আক্রমণ, আমানউল্লা'র দুর্দশা, আফগানিস্তানের তীব্র শীতে অনাহার-ক্লিষ্ট লেখক ও মৌলানা জিয়াউদ্দিন,স্যার ফ্রান্সিস হ্যামফ্রিস এর অসৌজন্যতা এবং অবশেষে তাঁদের প্রাণ নিয়ে পলায়নের কাহিনী।এই নাটকীয় গঠন পরিপাট্যের জন্য বইটি একটি বিচিত্র ধরনের অনন্যসাধারণ শিল্প কৃতিত্ব লাভ করেছে। আগেই বলেছি 'দেশে বিদেশে' ভ্রমনকাহিনী এবং অনেকটা আত্মজীবনীমূলক রচনা। একই সাথে ঐতিহাসিক ও বটে। যার কারণে লেখকের নিজস্ব কল্পনা বা পরিকল্পনার ফল এটা নয়। এর ঘটনা প্রবাহ চলেছে ইতিহাসের নির্দেশে-সময় যেন নিজের হাতে ঘটনাক্রম সাজিয়ে গ্রন্থের বিষয়বস্তুকে শিল্পসঙ্গত করে গড়ে তুলেছেন। সৈয়দ মুজতবা আলী'র গল্প বলার স্টাইল অনেকটা 'মজলিশে বসে গড়গড়ার নল হাতে ইয়ার-বন্ধুদের সাথে গল্প করা'র মতো। 'দেশে বিদেশে' ও তার ব্যতিক্রম নয়। পেশাওয়ারের আহমদ আলী ও রমজান খান, ল্যান্ডিকোটালে দুর্গের অফিসার, বাস চালক সর্দারজি, কাবুলের বহু অধ্যাপক,বিদগ্ধমনা পণ্ডিত, রুশ-দুতাবাস এমনকি খাজামোল্লা গ্রামের দরিদ্র চাষির সঙ্গেও তাঁর নির্বিশেষ সখ্যতা ছিল। 'দেশে বিদেশে' কে এক দৃষ্টিকোণ থেকে রম্যরচনাও বলা চলে। এর বহু স্থানে এত বেশি সরস বাক্য রয়েছে যে উদ্ধৃতি করার সময় 'কোনটা ছেড়ে কোনটা রাখি' এমন অবস্থা হয়। তবু দু-তিনটে না রাখলে আলোচনা অসম্পূর্ণ। ''....আমার এক দার্শনিক বন্ধু একদিন বলেছিলেন যে,এমেটিন ইনডজেকশন নিলে মানুষ নাকি হটাত্ অত্যন্ত স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়, ইংরেজিতে যাকে বলে 'মডলিন'-তখন নাকি পাশের বাড়ির বিড়াল মরে গেলে মানুষ বালিশে মাথা গুঁজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। বিদেশে যাওয়া আর এমেটিন ইনজেকশন নেওয়া একই কথা'' কাবুল যাত্রাকালে সর্দারজির সাথে তাঁর গল্প হচ্ছিল, ''সর্দারজিকে জিজ্ঞেস করলুম, পাগড়ি অপর কোনও কাজে লাগে কি না। তিনি বললেন,!আরও বহু কাজে লাগে কিন্তু উপস্থিত একটা কথা মনে পড়ছে। বিশেষ অবস্থাতে শুধু কলসিতেই চলে; দড়ি কেনার দরকার হয়না।'' (বুঝতে অসুবিধে হয়না)।তেমনি এক উচ্চপদস্থ ভারতীয় কর্মচারীর সাথে কথোপকথনকালে ''আমি মনে মনে বললুম,'ইংরেজের সনাতন পন্থা। সবকিছু রয়েসয়ে। সবকিছু টাপেটোপে। তা সে ইংরেজি লেখাপড়া চালানোই হোক, আর ঢাকাই মসলিনের বুক ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করাই হোক। ছুঁচ হয়ে ঢুকবে, মুষল হয়ে বেরোবে।' '' কিন্তু শুধুতো সরস কথা নয়, তাঁর ব্যক্তিজীবনে বহু শ্রদ্ধেয় মানুষের সংস্পর্শ তিনি পেয়েছেন। তাঁদের কথাও তিনি লিখেছেন। কাবুলের এক বিদগ্ধ পণ্ডিত মীর আসলম তাঁকে গুরুর প্রয়োজনীয়তা শেখাচ্ছেন, ''মীর আসলম বললেন,'... যে গুরুগৃহে প্রবেশ করার দিন তোমার মনে হইবে, গুরু ভিন্ন পদমাত্র অগ্রসর হইতে পার না এবং ত্যাগ করার দিন মনে হইবে, গুরুতে তোমার প্রয়োজন নাই, তিনিই যথার্থ গুরু-গুরুর আদর্শ তিনি যেন একদিন শিষ্যের জন্য সম্পূর্ণ নিষ্প্রয়োজন হইতে পারেন।' '' আফগানিস্তান-কাবুল নিয়ে(অন্তত দেশে-বিদেশে লেখার আগে) খুব বেশি ইতিহাস লেখা হয়নি। স্বয়ং গ্রন্থাকার লিখেছেন(চোদ্দ পরিচ্ছেদ), '' ...অরক্ষণীয়া কন্যার যেরকম বিয়ে হয়নি আফগানিস্তানেরও ইতিহাস তেমনি লেখা হয়নি । আফগানিস্তানের প্রাচীন ইতিহাস পোঁতা আছে সে - দেশের মাটির তলায় আর, ভারতবর্ষের পুরাণ মহাভারতে ।... আফগানিস্তানের অর্বাচীন ইতিহাস নানা ফারসি পাণ্ডুলিপিতে এদেশে - ওদেশে অন্তত চারখানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে আছে । এদেশের মাল নিয়ে পণ্ডিতেরা নাড়াচাড়া করছেন— মাহমুদ বাবুরের ভিতর দিয়ে ভারতবর্ষের পাঠান - তুর্কি - মােগল যুগের ইতিহাস লেখার জন্য । কিন্তু বাবুরের আত্মজীবনী সঙ্গে নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনও ভারতীয় পণ্ডিত- আফগানের কথাই ওঠে না - কাবুল হিন্দুকুশ , বদখশান্ বলখ , মৈমানা হিরাতে ঘােরাঘুরি করেননি , কারণ আফগান ইতিহাস লেখার শিরঃপীড়া নিয়ে ভারতীয় পণ্ডিত এখনও উদ্ব্যস্ত হননি । অথচ এ-বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে , আফগানিস্তানের ইতিহাস না লিখে ভারত - ইতিহাস লেখবার জো নেই , আফগান রাজনীতি না জেনে ভারতের সীমান্ত প্রদেশ ঠাণ্ডা রাখবার কোনও মধ্যমনারায়ণ* নেই । (*মাথা ঠান্ডা রাখার তেল।) এই ভূমিকা দিয়ে বইয়ের চোদ্দ পরিচ্ছেদে 'আফগানিস্তানের ইতিহাস' ও 'ইতিহাসে আফগানিস্তান' এই দুটি বিষয়ে পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। আবার অন্যত্র তেইশ-চব্বিশ পরিচ্ছেদে আমির হাবিবুল্লাহ থেকে আমানউল্লা পর্যন্ত একটা বিবরণ দিয়েছেন। বলেছিলাম এটা আত্মজৈবনিক রচনা। কিন্তু তা সত্বেও গ্রন্থাকারের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কথা এতে খুব বেশি নেই। অধিকাংশ তাঁর চাকরিজীবন,ছাত্র,বন্ধু-বান্ধব দের নিয়ে। একচল্লিশ পরিচ্ছেদে এক জার্মান রাজদূতের সাথে কথোপকথনে জানা যায় যে তাঁর সমস্ত টাকা-পয়সা এক ভারতীয় মহাজনের কাছে জমা ছিল এবং শিনওয়ারী বিদ্রোহে সে মহাজন মারা যাওয়ায় তার সব টাকা খোয়া যায়। এ ধরনের মর্মান্তিক কথা তিনি লিখেছেন নেহাতই কথাপ্রসঙ্গে। উপরেরে অনুচ্ছেদ গুলোতে ঘটনাবর্ণনায় খানিকটা ইচ্ছে করেই একজনের নাম উল্লেখ করিনি। কারন অাবদুর রহমানকে সকল চরিত্রের সমপর্যায়ে রাখলে অমার্জনীয় অপরাধ হতো। সে শুধু লেখকের পাচক বা ভৃত্য ছিল না, উপরন্তু সে তাঁর শুভানুধ্যায়ী,পরমবন্ধু। উত্সবে,আনন্দে,দুর্ভিক্ষে রাষ্ট্রবিপ্লবের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী,আত্মীয়ের চেয়ে পরমাত্মীয়। বইয়ের শেষে শেষ বিদায়ে তিনি লিখেছেন, ''তাকিয়ে দেখি দিকদিগন্ত বিস্তৃত শুভ্র বরফ। আর অ্যারফিল্ডের মাঝখানে , আবদুর রহমানই হবে , তার পাগড়ির ন্যাজ মাথার উপর তুলে দুলিয়ে দুলিয়ে আমাকে বিদায় জানাচ্ছে । বহুদিন ধরে সাবান ছিল না বলে আবদুর রহমানের পাগড়ি ময়লা । কিন্তু আমার মনে হল চতুর্দিকের বরফের চেয়ে শুভ্রতর আবদুর রহমানের পাগড়ি , আর শুভ্রতম আবদুর রহমানের হৃদয়।'' নিজের প্রতিবেশীকে ভুল ভাবে জানলে , প্রতিবেশীর হৃদয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকলে , তার দেশটি কেমন তা না জানলে তার প্রতি সহনশীল , সহমর্মী হয়ে উঠবে কী করে মানুষ ?সৈয়দ মুজতবা আলী'র এই অপূর্ব রচনা যেমন চিনিয়েছে আফগান জাতিকে , তেমন পাঠান মুলুকের পাঠান , পেশােয়ারের পাঠানকে ।আজকের দিনে আমরা কি ভাবতে পারি সর্দারজি আর বাঙালিবাবু রেলগাড়ি চেপে যাচ্ছেন পাঠান মুলুকে , তা টের পেয়ে গাড়ির অন্য যাত্রী হতদরিদ্র পাঠানরা তাদের একটি পয়সাও খরচ করতে দিল না।মেহমান তো! তবু আজকে এই একবিংশ শতাব্দীতে আমরা সেই সব জাতি সম্পর্কে, সেই দেশ সম্পর্কে যে ধারনা পোষণ করে আসছি(নিশ্চয় উঁচু নয়),'দেশে বিদেশে' পড়ে যদি তাদের সম্পর্কে সামান্য হলেও নিজস্বতার ও একাত্মতার ভাব জাগে তবেই তাঁর এ রচনা সার্থক।
Was this review helpful to you?
or
Interesting book.
Was this review helpful to you?
or
I have rated it 4 star, as the book, as a travelogue, is good. But it has lost one star due to one of the pages of this book being partially torn. It is the lack of sincerity of rokomari. Though their services and transactions are totally fine, but they should have checked the condition of the books before packaging.
Was this review helpful to you?
or
Mind blowing use of words and describing culture
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় বই... প্রকাশনীও চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
A book of great interest.
Was this review helpful to you?
or
বইঃ দেশে বিদেশে লেখকঃ সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশণিঃ বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্র ভ্রমণ আমরা করি, কেন করি? সেইটা কি আত্মার খোড়াক না সাময়িক নাগরিক যন্ত্রনা থেকে বের হবার কল্পনা। ভ্রমণের পরিধি কত দিন পর্যন্ত হতে পারে সেইটা কি কোন সীমায় বেঁধে রাখা যায়। আমাদের নাগরিক যন্ত্রনার এই যান্ত্রিক শহরে শুক্র, শনি ছাড়া কি ললাটে লেখা থাকে কোন ভ্রমণ। তাই দিন দিন ভ্রমণের সংজ্ঞা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে৷ চলুন না ভ্রমণের সংজ্ঞা ভুলে ফিরে যাই ৭০ বছর পিছে৷ সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া সেই পাকিস্তান পিরিয়ডে যখন বাঙালির রোমান্টিসিজম চলছে ধর্ম ভিত্তিক দেশের রসে৷ তখনই রচিত হয় বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনী৷ লেখকের কাবুল বাসের সেই অস্থির সময় নিয়ে রচিত হয় অপূর্ব গল্পগাঁথা৷ সৈয়দ মুজতবা আলীর রম্য রসাত্নক বর্ণনার সাথে পরিচিত নন এমন মানুষ এই সময় এসে খুঁজলে হয়তো অনেক পাওয়া যাবে৷ কারণ এ সময়টা বই না পড়ার যুগ৷ ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত লেখকে আফগানিস্তানের ভ্রমণের উপর রচিত এই ভ্রমণ কাহিনীটি বাংলা সাহিত্যে এমন প্যারামিটার সৃষ্টি করেছে পরবর্তিতে অনেক ডাক সাইটে ভ্রমণ লেখক এসেও এর ধারে কাছে যাবার ধৃষ্টতা দেখাতে পারেনি৷ কেন এই এই বই পড়বেন? এই বই পড়লে আপনার জীবন নিয়ে মূল্যবোধ পরিবর্তন হয়ে যাবে। ভ্রমণ কে শুধু সাময়িক আনন্দের খোঁড়াক না ভেবে খোঁজার চেস্টা করবেন ভ্রমণের সাথে আত্মার আত্মিক সম্পর্ক। আর তখনই না একজন ভ্রমণকারির আদি আত্মা ছুয়ে যেতে পারবনে৷ যেমন ছুয়ে গেছে আমাদের ইবনে বতুতা, মার্কো পোলো, হিউয়েন সাং এর মত বিখ্যাত সব ভ্রমণকারি৷ ভ্রমণ কাহিনী হওয়ার সত্বেও এটি আফগানিস্তানের তৎকালীন সময়ের একটা চিত্র ফুটে উঠেছিল লেখকের লেখনীতে। সৈয়দ সাহেবের ট্রেডিশনাল রম্য রসাত্বক বর্ণনা, বিভিন্ন পরিচিতি ও অপরিচিত মানুষের সাথে রসালাপ, ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা এবং কাবুল ছেড়ে আসার সেই করুণ বর্ণনা মনে দাগ কেটে রেখে যাবে না কেন৷ মনে হবে আপনিও লেখকের সাথে ঘুরছেন সময়ের পরিভ্রমণে৷ এই বইটি এত বিখ্যাত পরবর্তীতে বইটি In a Land Far from Home শিরোনামে অনুুদিত হয়। এত বছর পর দেশে বিদেশে নিয়ে রোমান্থন করতে গিয়েও ভুলতে পারি না আব্দুর রহমানের কথা৷ আমার কলেজ লাইফের প্রথম দিকে যখন দেশে বিদেশে পড়ি তখন আব্দুর রহমান কে মনে হত এক নরম মনের দৈত্যের মত। পুরা বইতে নানান হাস্য রসে ভরপুর গল্পের জন্ম দেওয়া আব্দুর রহমানের সাথে লেখকের বিচ্ছেদ আমার সেই কিশোর মনে দাগ কেটে গিয়েছে৷ জীবন সম্পর্কে এসেছিল ভয়ানক মূল্যবোধ৷ জীবন কেন এমন হয়, কেন হয় না আমার মনের মত৷ এরপর ভুলি কি ভাবে বাচ্চায়ে সাকোর কথা যার নেতৃত্বে আফগানিস্তানের আমানুল্লাহ'র পতন ঘটেছিল। ভুলে যাই কি ভাবে সেই তিন দিনের বাদশাহ ইনায়েতুল্লাহ'র কথা৷ আফগানিরা যে সেই সহস্র বছর ধরে রক্ত গরম জাতি তার ধারাবাহিকতা এখনও ধরে রেখেছে৷ তো বলতে গেলে দেশে বিদেশে ইতিহাসের এক প্রামাণ্য দলিলও বটে৷ অধ্যাপক বেনওয়া, শেখ আহমেদ আলী খান পাঠান, অধ্যাপক খুদাবখশ, অধ্যাপক বগদানফ, দোস্ত মুহম্মদ এর সাথে দেশে বিদেশের লেখকের কলমের জাদুতে চলতে চলতে দেখা হবে। জীবনের মূল্যবোধ, রস যেন নতুন আঙ্গিকে আসবে পাঠকের হৃদয়ে৷ তবে দুবোর্ধ কিছু বাংলা শব্দের সাথে বর্তমান প্রজন্মের উঠা বসা কতটুকু জানা নেই। এ বই শুধু ভ্রমণের জন্য নয় এ বই ইতিহাসের, এ বই রম্যে রসের, ই বই জীবনবোধের৷ তাই আপনি যদি এখন দেশে বিদেশে না পড়ে থাকেন সময় নষ্ট না করে শব্দের জাদুকরের কলমে চড়ে ঘুরে আসুন নতুন রোমাঞ্চে৷ সেই রোমাঞ্চের প্রথম রম্যে রস তো খুঁজে পাবেন একেবারে দ্বিতীয় পাতায়৷ এরপর লেখকের সাথে সময়ের পরিভ্রমণ করতে প্রস্তুত হয়ে নিন৷ প্রবেশ করুন সৈয়দ মুজতবা আলীর জগৎতে। যে জগৎটেড় ঘোর কাটবার নয়৷ কাহিনী সংক্ষেপঃ শান্তিনিকেতনের পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে ২৩ বছর বয়সী যুবক সৈয়দ সাহেবের চোখমুখে অনেক সপ্নের ঝিলিক৷ তখন কাবুল কৃষি কলেজে ফার্সি ও ইংরেজী ভাষা শিখানোর জন্য আফগানিস্তান সরকারের অনুরোধের ঢেকি গিলতে বের হন নতুন রোমাঞ্চে। ভ্রমণ কাহিনীর শুরু হয় কলকাতা থেকে পেশওয়ার হয়ে কাবুল যাবার মহাকাব্যিক যাত্রা দিয়ে৷ কাবুলবাসের সময় বিভিন্ন আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হন এবং অত্যন্ত সূক্ষ রসবোধের সাহায্যে তাদের সাথে কথোপোকথন ও দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপ তুলে ধরেন। বাচ্চায়ে সাকোর আক্রমণে বিপর্যস্ত কাবুলে যখন লেখকের বিদায়ের সুর বেজেছিল তখন আব্দুর রহমানের বাচ্চামি যেন নতুন রং তুলেছিল বেদনার সুরে৷ যারা এখনও পড়েনি দেশে বিদেশে। দেরি না করে ডুবে যান সৈয়দ সাহেবের সাহিত্য রসে৷
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো একটি বই। অবশ্যই দেখতে হবে লেখক কে? ভ্রমণ রাজা সৈয়দ মুজতবা আলী। আর এই দেশে বিদেশেই হচ্ছে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনি। আমি বইটি কিনেছি কিছুদিন আগে। আমাদের পাঠ্য বইতে এক অংশ দেওয়া আছে। তা পড়েই মূলক কেনার তীব্র ইচ্ছা জাগে। আপনাদেরকেও রেফার করব, কিনে ফেলুন নির্দ্বিধায়।
Was this review helpful to you?
or
এটা শ্রেফ ভ্রমণ কাহিনি নয়,এর মধ্য দিয়ে আলি সাহেব সমগ্র আফগানের ইতিহাস,সাহিত্য,শিল্প,তাদের জীবনযাপন, এসবের ভেতর দিয়ে পাঠক কে ভ্রমন করিয়ে এনেছেন।আমি এক জায়গায় ইংরেজি একটা রিভিউ তে দেখলাম,আমানউল্লার জমানা কে কেন্দ্র করে এটাই একমাত্র কোন চাক্ষুষ অভিজ্ঞতাময় দলিল ইতিহাস আফগানিস্তানের।এর বাইরে আর কেও লেখেননাই।আর আলি সাহেব এর রসবোধ,ভাষা,ধর্ম,সাহিত্য,ইতিহাস ইত্যাদির যে জ্ঞান ভান্ডারের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান কে যে প্রাণবন্ত ভাবে উপস্থাপন করেছেন সেরকম দ্বিতীয় কেও করেনাই।ইবেন যে আফগান ছাড়া ভারতীয় ইতিহাস অসম্পূর্ণ সে আফগান কেও বেমালুম ভুলে গেছেন ভারতীয় ইতিহাসবেত্তারা।আলি সাহেব জানাইতেছেন,ভারতীয় যে প্রতিমা কালচার এর যে বিবর্তন এসব ধার করা আফগান থেকে।তাই আফগান বাদ দিয়ে ভারতীয় কৃষ্টি কালচারের ইতিহাস বয়ান করলে সেটা হবে অসম্পূর্ণ জুটা।। আব্দুর রহমান এই চরিত্রটার মধ্য দিয়ে আফগানের সাধারণ মানুষের একটা মনস্তত্ব আমরা পাই।যারা উগ্র না,যারা আমাদের মতো মাটির মানুষ, যাদের মন আছে,যারা ভালোবাসতে জানে,অন্যের দুঃখে দুঃখিত হয়,অন্যের জন্য জান বাজি রাখতে জানে যারা এক কথায় নিরীহ সাধারন মানুষ।অথচ আজ সমগ্র আফগান সম্পর্কে ভয়ংকর ধারণা নিয়ে একটা প্রজন্ম বড় হয়ে উঠতেছে যাদের ধারণা আফগান বলতেই একদল উগ্র মোল্লার দেশ।আবদুর রহমান আলী সাহেব কে বিদায়ের দৃশ্য উনি যেভাবে বয়ান করলেন সেটা সত্যি চোখে জল এনে দিলো।। আমান উল্লাহর রাজনৈতিক আদর্শ ও তাদের কাজ কারবার নিয়ে আলীর মূল্যায়ন থেকে আমরা দেখি যে প্রগতিশীলতার চর্চা ঠিক আছে কিন্তু সেটা দেশ কাল পাত্রভেদে ভেবে চিন্তা করে চর্চা জরুরি।এই রাজনৈতিক শিক্ষা টা এই বই থেকে আমার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পাওনা মনে হলো।আপনি রাতারাতি নিজের শেকড়ের সব কালচারাল রেভ্যুলিউশল ঘটিয়ে রাতারাতি প্রগতিশীল হয়ে উঠতে পারবেননা।প্রগতিশীলতা টার্ম টা ও সব জায়গায় সমান ভাবে কাটেনা।এবং কোন লাইনে কি মাত্রায় প্রগতিশীলতা চর্চা দরকার বা আদো দরকার আছে কিনা এসব বাছবিচার না করে কেবল পুলিশ দিয়ে প্রগতিশীলতা আনা যায় না।
Was this review helpful to you?
or
Good Book
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
'দেশে বিদেশে' মুজতবা আলীর প্রথম বই এবং অনেক সমালোচকের মতে সর্বশ্রেষ্ঠ। তার রসনা ভরা শব্দে বিন্যস্ত বর্ণিল অভিজ্ঞতার সাথে মানুষ প্রথমবারের মতো পরিচিত হয়। দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল এই ভ্রমণকাহিনী। এটা বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক কোনো ভ্রমণকাহিনী। বইটি শেষ অবদি আমাকে ঘোরের মধ্যে রেখেছিল।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন বই
Was this review helpful to you?
or
My personal favorite.
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি লেখকের বিদেশের বিচিত্র সব ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে রচিত। চাকরি ও পড়াশোনার সুবাদে লেখক বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ায়।সেখানের সব বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা লেখক তার এই বইয়ে তুলে ধরেন। আমার কাছে সব থেকে ভালো লেগছে লেখকের আফগানিস্থানে আব্দুর রহমানের সাথে অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখাটা। বইটা পড়ে দেখবেন অবশ্যই।
Was this review helpful to you?
or
বেস্ট
Was this review helpful to you?
or
Nice write up.
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখার সাথে যাদের পরিচয় আছে তারা সবাই জানে রম্য রচনায় তিনি কতটা পারদর্শি।মনের ভিতরে তিনি সহজেই জায়গা করে নিতে পারেন,কারন ভাষাকে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সৈয়দ মুজতবা আলী খুব ভাল করে জানেন।সহজ কথায় তার বর্ননার প্যাটারণটি অসাধারন।অদ্ভুত এক অনুভূতি হয়েছিল দেশে বিদেশে বইটি পড়ে।জায়গায় জায়গায় অনেক হেসেছি।বিভিন্ন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মধ্যে দিয়ে হাস্যরসের মাধ্যমে সাহিত্য-রসটা মনের ভিতর ঠিকই গেঁথে দেন সৈয়দ মুজতবা আলী।দেশে বিদেশে সৈয়দ মুজতবা আলীর সর্বাধিক পরিচিত বই।অনেকগুলো চরিত্র নিয়ে লেখা হয়েছে বইটি।এক একটি চরিত্র এক একেক রকমের।
Was this review helpful to you?
or
Deshe Bideshe is a one of the best books of author Sayed Mujtoba Ali. The stories are very funny and attractively narrated, which will make you finish the book in one sit. There are many things about Afghanistan you never knew. I really liked this book.
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী। অসাধারণ এক লেখক তিনি। ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বের অনেক দেশে। সেসব স্মৃতি লিখে তিনি আলোকিত করেছেন। তাঁর সেসব ভ্রমণ অভিজ্ঞতা পড়লে ডুবে যাবেন আপনি নিজেই। অবসর কাটানোর অনেক ভালো একটা বই দেশে বিদেশে। বিশ্বের নানা প্রান্তে ভ্রমণের রোমাঞ্চকর ও চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা পড়তে আপনাকে স্বাগতম!
Was this review helpful to you?
or
চাচা কাহিনী
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যে যতো ভ্রমণকাহিনী রয়েছে তন্মধ্যে সৈয়দ মুজতবা আলীর এই 'দেশে বিদেশে' নামক সাহিত্যকর্মকে সেরা-ই বলা চলে। গ্রন্থটিতে লেখক রসাত্ববোধের মাধ্যমে কোনো কাহিনী বর্ণনাকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন। যেমন সুন্দর এর কাহিনী, তেমনি সুন্দর তাঁর লেখনীভঙ্গী। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অসাধারণ এক সাহিত্যকর্ম এবং আমার ভালো লাগার বইগুলোর মধ্যে অন্যতম।
Was this review helpful to you?
or
আফগান রে তিন তিনবার ব্রিটিশ চেষ্টা করেও দখল করতে পারেনাই,রুশ রাখতে পারেনাই এবং যেসব পাহাড়ি মোল্লারা এই আফগান রে স্বাধীন করে রাখছিলো,এবং মুজতবা আলি যাদের কেবল এই আত্মত্যাগের জন্য অভিবাদন করেছিলো সে আফগান এখন নিত্যনৈমত্তিক বোমা হামলায় দিশেহারা।মুজতবা আলির লেখায় সে সহজ সরল আফগান কে দেখতে দেখতে বর্তমান আফগানিস্তান এর জন্য বুকের ভেতরটা কেমন জানি করে উঠে।।আলী সাহেব বেঁচে থেকে যদি এই আফগান দেখতেন আমি নিশ্চিত আরো কষ্ট পাইতেন।। আলি সাহেব এর এই মাস্টারপিস পড়তে গিয়ে উপলব্ধি করলাম ইংরেজি আমি যতো কম জানি বাংলা জানি তারো কম বা বাংলায় বেশী দূর্বল।সত্য কথা হলো এই বইয়ের ২০ শতাংশ এর আমি অর্থই বুঝতে পারিনাই ঠিকমতো।এনিওয়ে বর্তমান জমানায় ভ্রমণ কাহিনি মানুষ পড়েনা -দেখে,কারন ভিজুয়াল এক্সপেরিয়েন্স অনেক বেশী চিত্তাকর্ষক কিন্তু এমন জমানায় ও আলী সাহেব এর এই বই মানুষ কে আকর্ষণ করবে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।। এটা শ্রেফ ভ্রমণ কাহিনি নয়,এর মধ্য দিয়ে আলি সাহেব সমগ্র আফগানের ইতিহাস,সাহিত্য,শিল্প,তাদের জীবনযাপন, এসবের ভেতর দিয়ে পাঠক কে ভ্রমন করিয়ে এনেছেন।আমি এক জায়গায় ইংরেজি একটা রিভিউ তে দেখলাম,আমানউল্লার জমানা কে কেন্দ্র করে এটাই একমাত্র কোন চাক্ষুষ অভিজ্ঞতাময় দলিল ইতিহাস আফগানিস্তানের।এর বাইরে আর কেও লেখেননাই।আর আলি সাহেব এর রসবোধ,ভাষা,ধর্ম,সাহিত্য,ইতিহাস ইত্যাদির যে জ্ঞান ভান্ডারের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান কে যে প্রাণবন্ত ভাবে উপস্থাপন করেছেন সেরকম দ্বিতীয় কেও করেনাই।ইবেন যে আফগান ছাড়া ভারতীয় ইতিহাস অসম্পূর্ণ সে আফগান কেও বেমালুম ভুলে গেছেন ভারতীয় ইতিহাসবেত্তারা।আলি সাহেব জানাইতেছেন,ভারতীয় যে প্রতিমা কালচার এর যে বিবর্তন এসব ধার করা আফগান থেকে।তাই আফগান বাদ দিয়ে ভারতীয় কৃষ্টি কালচারের ইতিহাস বয়ান করলে সেটা হবে অসম্পূর্ণ জুটা।। আব্দুর রহমান এই চরিত্রটার মধ্য দিয়ে আফগানের সাধারণ মানুষের একটা মনস্তত্ব আমরা পাই।যারা উগ্র না,যারা আমাদের মতো মাটির মানুষ, যাদের মন আছে,যারা ভালোবাসতে জানে,অন্যের দুঃখে দুঃখিত হয়,অন্যের জন্য জান বাজি রাখতে জানে যারা এক কথায় নিরীহ সাধারন মানুষ।অথচ আজ সমগ্র আফগান সম্পর্কে ভয়ংকর ধারণা নিয়ে একটা প্রজন্ম বড় হয়ে উঠতেছে যাদের ধারণা আফগান বলতেই একদল উগ্র মোল্লার দেশ।আবদুর রহমান আলী সাহেব কে বিদায়ের দৃশ্য উনি যেভাবে বয়ান করলেন সেটা সত্যি চোখে জল এনে দিলো।। আমান উল্লাহর রাজনৈতিক আদর্শ ও তাদের কাজ কারবার নিয়ে আলীর মূল্যায়ন থেকে আমরা দেখি যে প্রগতিশীলতার চর্চা ঠিক আছে কিন্তু সেটা দেশ কাল পাত্রভেদে ভেবে চিন্তা করে চর্চা জরুরি।এই রাজনৈতিক শিক্ষা টা এই বই থেকে আমার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পাওনা মনে হলো।আপনি রাতারাতি নিজের শেকড়ের সব কালচারাল রেভ্যুলিউশল ঘটিয়ে রাতারাতি প্রগতিশীল হয়ে উঠতে পারবেননা।প্রগতিশীলতা টার্ম টা ও সব জায়গায় সমান ভাবে কাটেনা।এবং কোন লাইনে কি মাত্রায় প্রগতিশীলতা চর্চা দরকার বা আদো দরকার আছে কিনা এসব বাছবিচার না করে কেবল পুলিশ দিয়ে প্রগতিশীলতা আনা যায় না।। সর্বোপরি এটা বাংলা সাহিত্যের জগতে এক মূল্যবান রত্ন বলে মনেহয়,একই সাথে আফগান ইতিহাসের জন্য ও।প্রায় ২৫০ পৃষ্ঠার ভ্রমণকাহিনী নিয়ে রিভিউ লেখা বা লেখার চেষ্টা করাও বোকামি কারন সেটা সম্ভব ও না।এই বিশাল বই আমার উক্ত আলোচনার বাইরে আরো বিশাল তত্ত্ব,কবিতা,ইতিহাস এ ঠাসা।আমি এখানে সামান্য একটা ঝলক ই তুলে ধরলাম মাত্র।
Was this review helpful to you?
or
‘দেশে বিদেশে’ বইটির কিছু অংশঃ এক চাঁদনি থেকে নসিকে দিয়ে একটা শর্ট কিনে নিয়েছিলুম। তখনকার দিনে বিচক্ষণ বাঙালির জন্য ইয়োরোপিয়ন থার্ড নামক একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান ভারতের সর্বত্র আনাগোনা করত। হাওড়া স্টেশনে সেই থার্ডে উঠতে যেতেই এক ফিরিঙ্গি হেঁকে বললে, ‘এটা ইয়োরোপিয়নদের জন্য।’ আমি গাঁক গাঁক করে বললুম, ইয়োরোপিয়ন তো কেউ নেই। চল, তোমাতে-আমাতে ফাকা গাড়িটা কাজে লাগাই।’ এক তুলনাত্মক ভাষাতত্ত্বের বইয়ে পড়েছিলুম, বাংলা শব্দের অন্ত্যদেশে অনুস্বার যোগ করিলে সংস্কৃত হয়; ইংরেজি শব্দের প্রাদেশে জোর দিয়ে কথা বললে সায়েবি ইংরেজি হয়।’ অর্থাৎ পয়লা সিলেবলে অ্যাকসেন্ট দেওয়া খারাপ রান্নায় লঙ্কা ঠেসে দেওয়ার মতো— সব পাপ ঢাকা পড়ে যায়। সোজা বাংলায় এরি নাম গাঁক গাঁক করে ইংরেজি বলা। ফিরিঙ্গি তালতলার নেটিব, কাজেই আমার ইংরেজি শুনে ভারি খুশি হয়ে জিনিসপত্র গোছাতে সাহায্য করল। কুলিকে ধমক দেবার ভার ওরি কাঁধে ছেড়ে দিলুম। ওদের বাপখুড়ো, মাসিপিসি রেলে কাজ করে- কুলি শায়েস্তায় ওরা ওয়াকিফহাল। কিন্তু এদিকে আমার ভ্রমণের উৎসাহ ক্রমেই চুবসে আসছিল। এতদিন পাসপোর্ট জামাকাপড় যোগাড় করতে ব্যস্ত ছিলুম, অন্য কিছু ভাববার ফুরসত পাইনি। গাড়ি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম যে ভাবনা আমার মনে উদয় হল সেটা অত্যন্ত কাপুরুষজনোচিত— মনে হল, আমি একা। ফিরিঙ্গিটি লোক ভালো। আমাকে গুম হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে বলল, ‘এত মনমরা হলে কেন? গোয়িঙ ফার?’ দেখলুম বিলিতি কায়দা জানে। ‘হোয়ার আর ইউ গোয়িঙ?’ বলল না। আমি যেটুকু বিলিতি ভদ্রস্থতা শিখেছি তার চোদ্দ আনা এক পাদরি সায়েবের কাছ থেকে। সায়েব বুঝিয়ে বলেছিলেন যে, ‘গোয়িঙ ফার?’ বললে বাধে না, কারণ উত্তর দেবার ইচ্ছা না থাকলে ইয়েস’ ‘নো’ যা-খুশি বলতে পার— দুটোর যে কোনও একটাতেই উত্তর দেওয়া হয়ে যায়, আর ইচ্ছে থাকলে তো কথাই নেই। কিন্তু ‘হোয়ার আর ইউ গোয়িঙ' যেন ইলিসিয়াম রো’র প্রশ্ন ফাঁকি দেবার জো নেই। তাই তাতে বাইবেল অশুদ্ধ হয়ে যায়। বইটি আজই সংগ্রহ করুন... দেশে বিদেশে (হার্ডকভার) সৈয়দ মুজতবা আলী গায়ের মূল্য: ৩৭৫ টাকা
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে পন্ডিত ব্যাক্তি ছিলেন। ১৮ টা ভাষায় যার দক্ষতা, ভিনদেশী ভাষায় যার সৃষ্টি আছে, ইহলৌকিক, পরলৌকিক যার চিন্তা আছে এবং সবকিছু নিয়ে সবিস্তর হাস্যরস দিয়ে ফুটিয়ে তোলার যে অসাধারণ গুণ নির্দিধায় তাকে পন্ডিত বলাই যায়। অবশ্য "যে সব কিছু পন্ড করে সেই পন্ডিত" মুজতবা আলী এই বলে যে বিনয়ী দেখাতেন তা তিনি ঠিকই বলেছেন। নতুনত্বের কাজ কি? পুরনোকে সরিয়ে দেয়া। মুজতবা আলী সেই কাজটায় করে গেছেন সবসময়। এখন যদি সেটা যদি পন্ড বলে চালিয়ে দেন কিছু করার নাই :-P মুজতবা আলীর শ্রেষ্ঠ এবং প্রথম সৃষ্টি হলো "দেশে বিদেশে"। এই বইটি এমন এক সৃষ্টি যাকে অনেকে অনেকভাবে নিয়ে পড়তে পারে। কেউ এই বইকে নেহায়েত ভ্রমণকাহিনী হিসেবে পড়তে পারেন। কেউ মধুর মধুর হাস্যরসের জন্য পড়তে পারেন। কেউ আফগানের মুগ্ধতা জানার জন্য পড়তে পারেন। আবার কেউ জ্ঞান আহরণের জন্য পড়তে পারেন.... ভ্রমণকাহিনী শুধু মাত্র কই গেলাম কি করলাম তা উল্লেখ করাই না। ভ্রমণকাহিনীর কাজ হচ্ছে যারা এই কাহিনী পড়ছে তাদেরসুদ্ধ নিয়ে যাওয়া সেই জায়গায়। এই জায়গায় জাদুকরী দেখিয়েছেন পন্ডিত মুজতবা আলী। তিনি "দেশে বিদেশে" শুধু কই কই গেলেন তা উল্লেখ করেন নি, সেখানকার মানুষের সাথে মিশেছেন, কথা বলেছেন। তিনি কথা বলেছেন শুধু ভ্রমণকেন্দ্রিক না, তিনি রাজনীতি থেকে দর্শন, ধর্ম থেকে নৈতিকতা সব আলোচনা করেছেন। ভৌগলিক জ্ঞান দান খুবই বোরিং একটা বিষয়। এই জায়গায় মুজতবা আলী আরো মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। হাস্যরসের কথা আর নাই বা বলি। আব্দুর রহমানের মুখে আমি চোখে আফগান দেখতে পাচ্ছিলাম। আজ আফগানের যে দশা, সেটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই কষ্ট হচ্ছে। আজকের আফগানরা যদি "দেশে বিদেশে" আমি নিশ্চিত তারা আফসোস করতো, যেমনটি করতেন মুজতবা আলী নিজেও। সম্ভবত ক্লাশ এইটে "কাবুলের পথে" নামক একটা ভ্রমণকাহিনী ছিল বইয়ে যা এই বই থেকেই নেয়া, তখন সেটা পড়ে একদম মজে গিয়েছিলাম। এরপর তো গোটা আফগান এখন চোখের সামনে ঝলঝল করছে :-)। গ্যাটো সত্যই বলেছেন, "যে বিদেশ যায়নি সে স্বদেশের স্বরূপ চিনতে পারেনি"। এজন্যে মুজতবা আলী একজন সাচ্ছা দেশপ্রেমিকও বটে। গোটা লেখার অন্যতম আকর্ষণ আব্দুর রহমান। "ফিরে দেখি সর্বত্র বরফ, দোরের গোড়ায় আব্দুর রহমান আর ঘরের ভেতর গনগনে আগুন।আমি তখন শীতে জমে গিয়েছি। আব্দুর রহমান হাসিমুখে আমার হাতে চুমো খেল, কিন্তু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তার মুখ শুকিয়ে গেল। "দাঁড়ান হুজুর" বলে আমাকে কোলে করে এক লাফে উঠোনে নেবে গেল।" এতটুকু পড়লেই আব্দুর রহমান সম্পর্কে জানা হয়ে যায়। আরেকটা লাইন উল্লেখ করি, আব্দুর রহমান এবার চেঁচিয়ে বলছে, 'ব্ খুদা সপুর্দমত, সায়েব, ব্ খুদা সপুর্দমত....আব্দুর রহমানের চিৎকার প্লেনের ভিতর থেকে শুনতে পাচ্ছি। হাওয়াই জাহাজ জিনিসটাকে আব্দুর রহমান বড্ড ডরায়। তাই খোদাতালার কাছে সে বারবার নিবেদন করছে যে, আমাকে সে তাঁরই হাতে সঁপে দিয়েছে।" শেষের দিকে মুজতবা আলী আরো সুন্দর করে বলেছেন, "একে বন্ধু বলবো না তো কাকে বলবো?"। আমি নিশ্চিত সকল পাঠকেরই আব্দুর রহমানের জন্য কষ্ট লাগছে আর মায়ার কথা নাই বা বললাম। মুজতবা আলী এই সৃষ্টিটা আমার মনে হয় শুধু লেখার জন্যই লিখেন নি, আমাদের জানানোর জন্য আমরা কেমন, আমাদের বুঝানোর জন্য আমরা যেমন এসব দিক দেখিয়ে দিতে চেয়েছেন। মুজতবা আলী আমাদের নিজের মুখে পড়তে দেননি, তিনি এমনভাবে লিখেছেন, শব্দচয়ন করেছেন যেমনকি তিনি বলছেন আমরা শুনছি। এজন্যই মঞ্জুরুল ইসলাম স্যার তাঁকে কিংবদন্তী বলে আখ্যা করেছেন। "দেশ বিদেশে" বইটা সবসময়ের জন্য ভ্রমণকাহীনি হিসেবে অন্যসব ভ্রমণকাহিনীর পাথেয় হিসেবে থাকবে তা বলায় যায়। তবে অনেকে এই বই এর শব্দশৈলীর জন্য শেষ করতে পারে না। বা এও দেখেছি অনেকে বেছে বেছে শুধু হাস্যরসটুকু নেয়। অথচ এই লেখায় হাস্যরসের গুরুত্ব কম। বইটা কঠিন কিন্তু দুর্বোদ্ধ(vague) নয়। সুখপাঠ্য এক মাস্টারপিস। যে কারোরই মন জুড়িয়ে যাবে।
Was this review helpful to you?
or
very amazing book
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম ছোট গল্পকার ও ঔপন্যাসিক । তাঁর এই বইটি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে ।
Was this review helpful to you?
or
অনন্যসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলীর বই কেনার জন্য রিভিউ পড়ার প্রয়োজন নেই। Just কিনুন আর পড়া শুরু করুন।
Was this review helpful to you?
or
আব্দুর রহমান, এক বিশ্বস্ত নাম,হরফুন মৌলা,যার উপর নির্ভর করা যায় নিশ্চিন্ত।,লেখকের প্রবাস জীবনের বন্ধু। অসাধারণ লেখনির মাধ্যমে যাকে প্রায় অমরত্ব দান করেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী। বিয়ের অনুষ্ঠানের সেই বৃদ্ধের গান,, এবং লেখকের উপলব্ধি,, অসাধারণ অসাধারণ।পানশিরের বরফের টুকরোর মতো স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে যায় অন্তরে।।
Was this review helpful to you?
or
।। দেশে বিদেশে; ভ্রমণ কাহিনীর আড়ালে রস আর ছন্দ ।। "বাঙাল বলিয়া করিও না হেলা, আমি ঢাকার বাঙাল নহি গো। " এই কথা মনে মনে বলে বিদেশ ভূইতে সৈয়দ মুসতবা আলী এক আফগান গাড়িওয়ালার কাছে নিজেকে শক্তিশালী মনোবলের হিসেবে প্রকাশ করেছিল। সত্যিই, 'দেশে বিদেশে' বইটি পুরোটা নয় যেকোনো একটা অধ্যায় পড়লেই কারো বোঝার বাকি থাকে না যে লেখক কতটা প্রবল মানসিকতার। কিন্তু ওই লাইন দুটোয় একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, কলকাতার বাঙালী আর ঢাকার তথা বাংলাদেশের বাঙালির মধ্যে একদলকে দূর্বলভাবে কেন দেখা হলো? তাহলে কী সৈয়দ মুসতবা আলী সিলেটের করীমগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেও তার মধ্যে কলকাতাকে বেশি আপন লাগতো? হতে পারে শান্তিনিকেতনের অগ্রভাগের ছাত্র বলে কথা! গতবছর তালেবানরা আমেরিকার পুতুল সরকার; আশরাফ ঘানীকে সরিয়ে যখন আফগান দখল করলো তখন এই বইয়ের একটা কথা খুব মনে পড়ছিল " দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান বিদেশিদের জন্য সবচেয়ে বড় বাঁধা। ওখানে গিয়ে শাসন করতে হলে একই সাথে সরকার ও পাহাড় মাড়িয়ে, শীতকে উপেক্ষা করে টিকিয়ে থাকতে হবে, যেটা আদৌ কারো দ্বারা সম্ভব? " "দেশে বিদেশে" ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে পরিচিত হলেও এটি মূলত সেই দেশে ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষকতা করতে গিয়ে লেখকের অভিজ্ঞতা ও দেশটির কালজয়ী ইতিহাস। বাদ যায় নি ইতিহাসের বাবর কিংবা হিমুর কথাও। লেখক এক যায়গায় বলেছেন- " গোঁপের আমি গোঁপের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা।" রসের হিরো কাবুল কেন সারা বিশ্বের কোথাও লোক চিনতে ভুল করতে পারেন না। এমনিতেই তো আর একাধারে ইংরেজি, ফারসি, উর্দু কিংবা বাংলা ভাষায় দক্ষতার সাথে শিক্ষকতার সুযোগ পান নি। কাবুলের যেখানেই গিয়েছেন রস ছড়িয়েছেন। লিখেছেন কাব্য ও কৌতুক। পাশাপাশি ফুটিয়ে তুলেছেন একজনকে। যিনি আবদুর রহমান। লেখকের সার্বক্ষণিক সঙী ;যাকে ভৃত্য হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিতে না চেয়ে তিনি নিজের চারিত্রিক উদারতা দেখিয়েছেন। গড়নে উঁচু জাতের আফগানিরা যে চরিত্রেও কতটা উঁচু স্বভাবের তা বইয়ের শেষ লাইনে আবদুর রহমানকে উদ্দেশ্ করে লিখে পুরো দেশটাকেই যেন সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছেন - "বহুদিন ধরে সাবান ছিল না বলে আবদুর রহমানের পাগড়ী ময়লা। কিন্তু আমার মনে হল চতুর্দিকের বরফের চেয়ে শুভ্রতর আবদুর রহমানের পাগড়ী, আর শুভ্রতম আবদুর রহমানের হৃদয়!” যেকোন ভ্রমণ কাহিনীই মনোযোগ টেনে নিতে যথেষ্ট। তার উপর কাব্য রসিক লেখনী এ বইটি পড়ার সময় একটা অন্যরকম আকর্ষণ বোধ করেছি ।আপনিও পড়া শুরু করলে হতাশ হবেন না হয়তো।
Was this review helpful to you?
or
the book give you a real feeling about travelling of kabul.
Was this review helpful to you?
or
ভ্রমণ প্রিয়দের কাছে বইটা একটা রত্নখনি মনে হবে
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই। ছাত্ররা ক্ষমতায় আাসার পর পড়তে আরও ভাল লাগছে। আফগানিস্তানের রাজনীতি সব থেকে জটিল ভূরাজনীতি যা বইটা পড়লে আঁচ করা যায়।
Was this review helpful to you?
or
The book is great.If you have any curiosity and interest about the people and the culture and lifestyle of British colonial Pakistan and Afghanistan also Indian subcontinent and their people with a great travelling experience then this book is yours.But I hardly recommend you buying this book from Rokomari because this book is only 220 taka almost 40 taka less in offline market .Sob, I recommend you to buy this book from your nearby offline book store.
Was this review helpful to you?
or
মুজতবা আলীর এক অনন্য কীর্তি?
Was this review helpful to you?
or
one of the best. Er theke valo lekha ekhn ar choke pore na.
Was this review helpful to you?
or
এই বইটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে গণ্য করা হয়; অন্য কোন ভ্রমণ কাহিনী আজ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে এর মতো এতোটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি।
Was this review helpful to you?
or
এমনিতেই ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসি। সৈয়দ মুজতবা আলী রসাত্নক বর্ণনার সাথে সেই ভ্রমণ হয়ে উঠে আরো আকর্ষণীয়।
Was this review helpful to you?
or
এটি সংগ্রহের জন্য একটি ভাল বই, আপনি এই বই পড়ে বিনোদন পাবেন
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি জীবনের গুঢ় সব সত্যও বর্ণনা করে ফেলেন এমন এক মুন্সিয়ানাতে যে পাঠকের অবাক হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। পছন্দের এক বইএর নাম এই দেশে বিদেশে! ভ্রমণ কাহিনী পড়াটা সব সময় উপভোগ্য! আর মুজতবার লেখার আকর্ষণ ভিন্ন মাত্রায়! মূলত আফগানিস্থান থাকা কালীন অভিজ্ঞতার সমাবেশ এই “দেশে-বিদেশে”! শুধু আফগানিস্থান নয় সাথে পাকিস্থানের কথাও তুলে ধরেছেন তিনি তার লেখায়। বইটিতে হাস্য রসের প্রাচুর্য যেমন পাওয়া যায় তেমনি সন্ধান মেলে আফগান নিখাদ সত্যেরও! আফগান লোকের খাদ্যাভাস, তাদের চিত্ত মনন, অভ্যাস, বিশ্বাস সব উঠে এসেছে এক মলাটের মাঝে! আফগানের সুখ দুঃক্ষের ঢালি নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন লেখক তার যাদুময় লেখনির পরশে। প্রিয় বইয়ের তালিকায় সবার উপরে থাকা এই বইটি সবারই ভালো লাগার কথা। সবার উপভোগ্য বইটি বহুল পঠিত! আরো পাঠকের দোরে পৌছে যাক এই আলোক সেই কামনা করি!
Was this review helpful to you?
or
যদিও নাম দেখে মনে হয় লেখক হয়তো অনেকগুলো দেশের বর্ণনা দেবেন কিন্তু পরে অবাক হয়ে দেখলাম লেখক অনেকগুলো দেশ নয় বরং একটি দেশের ভিতরেই অনেকগুলো 'দেশ' দেখিয়েছেন। পাঠান, আফ্রিদি, শিনওয়ারিসহ হরেক রকম জাতির বাস আফগানিস্তানে। তাদের প্রত্যেকটি জাতের সামাজিক বৈশিষ্ট্য, আচরণ লেখক একদম খুটিয়ে খুটিয়ে বর্ণনা করেছেন। কাবুলে গিয়ে একজন বিদেশির চোখে কাবুল দেখা নয় এ যেন এক কাবুলীর কাবুল বর্ণনা। আর সেইসময়ের কাবুলের রাজনৈতিক অস্থিরতা যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা অনবদ্য। আর হাস্যরসের কথা তো না বললেই নয়। পুরো বইজুড়ে হাস্যরসের ছড়াছড়ি, তাই বলে কোনোটাই স্থুল রসিকতা নয় বরং অত্যন্ত উচ্চমানের। তাছাড়া সেইসময়ের আফগানিস্তানে বসবাসরত অন্যান্য ইউরোপীয়দের সাথে কথাবার্তা, আলোচনা, সমালোচনা দেখিয়েছেন তাও অসাধারন। আর খাবারের কথা না বললেই নয়। বারবার জিবে পানি চলে আসছিল খাবারের বর্ণনা শুনে। কুরআন,পুরাণ,বাইবেল,শেক্সপিয়ার, গালিব,রুমি,সাদী,রবীন্দ্রনাথ এমন অসংখ্য উৎস থেকে পাওয়া যেসব উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছেন তাও বইটার শোভা কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। আর ভ্রমণকাহিনীর অপরিহার্য অংশ অর্থাৎ প্রকৃতিবর্ণনাতেও লেখক অবশ্যই ফুল মার্কস পাবেন। আর আব্দুর রহমান নামক তাঁর ভৃত্য চরিত্রটির কথা নি বললেই নয়। একজন ভৃত্য থেকে কিভাবে একটা চরিত্র লেখকের পরম বন্ধু হয়ে যায় সেই বর্ণনা নিশ্চিতপক্ষেই এক অনবদ্য সংযোজন। বইটাতে যেন অনেকটা হাসতে হাসতে খেতে খেতে আফগানিস্তানের ইতিহাসের হাতেখড়ি। তো স্বাগতম আপনাদের হাসিভরা এক ইতিহাসের রাজ্যে।
Was this review helpful to you?
or
দশম শ্রেনিতে খণ্ডাংশ পড়ে পুরো বই পড়ার লোভ জন্মেছিলো! মাঝে মাঝে লোভী হওয়া ভালো! খুবই সুন্দর একটা ভ্রমনকাহিনি!
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের অসাধারণ একটি সম্পদ এই বইটি। বিগত ৩৩ বছরে কেন যে এটি পড়িনি, সেই বিষয়ে খুবই আক্ষেপ হয়েছে বইটি শেষ করার পর।
Was this review helpful to you?
or
বহু আগে সেকেন্ডারি স্কুলের সাহিত্য বই এ প্রবাস বন্ধু গল্পটি পড়েছিলাম। আজ আফগানিস্তান আমার ভাই তালেবান দের হাতে স্বাধীন হলো। সেই সুবাধে মনে পড়ল আবদুর রহমান এর সেই আপ্যায়ন এর কথা। হরফন মৌলা (সব কাজের কাজী) এই ব্যক্তির আপ্যায়ন এর গল্প পড়ে যে কারো ই আফগানিস্তান যেতে ইচ্ছে করবে। ভাগ্যে থাকলে কোন একদিন যাবো আফগানিস্তান, ঘুরে আসব পানশির। ততদিন ভালো থাকুক পৃথিবী!
Was this review helpful to you?
or
শুধুমাত্র একটি কথায় বলবো.. আমি কোনো বই একবার পড়লেই দ্বিতীয়বার আর পড়তে মন বলতো না.. কিন্তু এই বইটি আমি যতবার পড়ি ততই যেন এই অমর সৃষ্টির নতুন কাব্যরসের আস্বাদন পাই....সৈয়দ মুজতবা আলি যে এর মধ্যে নানান দেশীয় কাব্যরস ঠেলে গুজে ঢুকিয়ে দিয়েছেন তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
Was this review helpful to you?
or
দেশে বিদেশে হচ্ছে কথা-সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত একটি ভ্রমণ কাহিনী,যা ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালের আফগানিস্তান ভ্রমণের উপর রচিত। এই বইটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে গণ্য করা হয়; অন্য কোন ভ্রমণ কাহিনী আজ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে এর মতো এতোটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। একটি ভ্রমণ কাহিনী হওয়া সত্বেও এটি আফগানিস্তানের লিখিত ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল। লেখকের রম্য রসাত্বক বর্ণনা, বিভিন্ন পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষের সাথে রসালাপ, ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা এবং শেষ পর্যায়ে এসে আফগানিস্তান ছেড়ে আসার করুন কাহিনী অসাধারনভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই ভ্রমণ কাহিনীতে।পরে বইটি ইংরেজিতে In a Land Far from Home শিরোনামে অনুুদিত হয়।
Was this review helpful to you?
or
এই সব বই সম্পর্কে কিছু বলা একধরনের ধৃষ্টতা । ওমর খৈয়ামের ভাষায় কিছু বই অনন্ত যৌবনের বই, যাদের কোন ক্ষয় নেই। এটা তেমনি একটি বই। যারা এখনো পড়েন নি নিঃসন্দেহে নিঃসংকোচে বইটি হাতে নিয়ে পড়া শুরু করেন দেখবেন লেখক লিখেছেন বহুত পূর্বে, কিন্তু পড়ার সময় মনে হবে এটা এখনকার সময়ের জ।
Was this review helpful to you?
or
এটি শুধু আমার পড়া সেরা ভ্রমণকাহিনী নয়,আমার পড়া সেরা বইগুলোরও একটি।যেকোন রুচিশীল পাঠক বইটি একবার পড়লেই যেমন বইটির ভক্ত হয়ে যাবেন তেমনি লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর ভক্তও হয়ে যাবেন নির্দ্বিধায় বলা যায়। লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী আফগানিস্তানে শিক্ষক হিসেবে পড়াতে যান।সেখানে তার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতিকে তিনি অত্যন্ত হাসরসাত্নক এবং আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করেছেন যে,বইটিকে বাংলা সাহিত্যের সেরা বইগুলোর কাতারে না রাখলেই নয়।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃদেশে বিদেশে লেখকঃসৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশনীঃবিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মূল্যঃ৩১৯টাকা এই বইটি প্রথম সফল ভ্রমণ বই হিসাবে স্বীকৃত এবং কেন তা বইটি পড়ার পরেই বুঝতেপারলাম।এখানে সৈয়দ মুজতবা আলী আফগানিস্তান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। তাঁর মজাদার রচনা এবং হাস্যরসের দুর্দান্ত বোধ আমাকে বইয়ের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছিল।আফগানিস্তানের ইতিহাস এবং রাজনীতির এক ঝলক পাই। লেখকের জীবনে আসা চরিত্রগুলির বর্ণময় কাস্ট বইটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।দেশে বিদেশে-র মত অন্য কোনো ভ্রমণকাহিনী আজ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। একটি ভ্রমণকাহিনী হওয়া সত্ত্বেও আফগানিস্তানের ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল এই বই। লেখকের রম্য রসাত্বক বর্ণনা, বিভিন্ন পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষের সাথে রসালাপ, ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা এবং শেষ পর্যায়ে এসে আফগানিস্তান ছেড়ে আসার কাহিনী অসাধারণভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই বইটিতে।আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ মুজতবা আলী'র লেখা অসাধরণ। তার বইয়ের উৎসব করে পুনঃ মুদ্রণ হয় তার জন্ম শতবার্ষিকীতে অর্থাৎ ২০০৪ সালে। কিন্তু সম্পাদনা যারা করেছিলে তারা তার গ্রন্থগুলোর সীমাবদ্ধতা দূরে বিন্দুমাত্র সচেতনতা দেখাননি। তার অসম্ভব সুন্দর লেখাগুলোর সীমাবদ্ধতা ছিল মূলত; তিনি তার লেখায় অনেক ভাষার শব্দ ও অর্ধতৎসম শব্দ ব্যবহার করেছেন। ফলে সাধারণ পাঠক তার লেখাকে দুর্বোধ্য বলে অভিযোগ তোলে। সেই সম্পাদক মহোদয়গণ যদি একটু কষ্টস্বীকার করে তার গল্পে ব্যবহৃত আরবি,ফার্সি,ফরাসি,জর্মন ভাষার শব্দগুলোর টীকা তথা শব্দার্থ যোগ করতেন গল্পের শেষে কিংবা বইয়ের শেষে তাহলে আমরা পাঠকরা তার লেখার পূর্ণ রস আস্বদনে সমর্থ হতাম। আর সেই অভিযোগ থেকে সৈয়দ মুজতবা আলী নিষ্কৃতি পেতেন।
Was this review helpful to you?
or
'সৈয়দ মুজতবা আলী ' দুই বাংলার পাঠকের কাছে অতিপরিচিত নাম।তার বইয়ের যুৎসই রিভিউ লিখতে হলে ভালো পাঠক অবশ্যই হতে হবে। আমি অতি নাদান পাঠক ,এই বইয়ের উপযুক্ত মূল্যায়ন আমার পক্ষে সম্ভব না। তবু , ভালো লাগার দুটো কথা বলে যাই। একজন লেখক সাধারণ কোনো ঘটনাতে এতো রসবোধ আনতে পারে 'দেশে বিদেশে' না পড়লে জানতেই পারতাম না।তার বিশ্লেষণ ভ্রমণ বৃত্তান্তে নতুন মাত্রা এনে দেয়। আমার মতো যারা চির ঘরকুনো , তবে পৃথিবীকে দেখতে চায় , তাকে পড়তেই হবে -এবই।
Was this review helpful to you?
or
মাধ্যমিক বাংলা বইয়ে ঠিক এই বইটা থেকে একটা অংশ ‘প্রবাস বন্ধু’ নামে অন্তর্ভুক্ত আছে। গল্পটা ছিল আবদুর রহমানের সাথে লেখকের প্রথম পরিচয় নিয়ে। আবদুর রহমান ছিল আফগানিস্তানে থাকাকালীন লেখকের ভৃত্য। বইয়ে গল্পটা বারবার পড়ে খুব ইচ্ছে হয়েছিল আবদুর রহমান সম্পর্কে আরও জানতে এবং এই আবদুর রহমানকে আরও আবিষ্কার করতেই বইটি কেনা। আমার বইটি কেনা সার্থকই হয়েছে বলা যায়। প্রথমদিকে ভ্রমণকাহিনী হিসেবে এগোলেও শেষের দিকে গিয়ে অনেক ইতিহাসও জানতে পেরেছি। বইটি পাঠকদের নিরাশ করবে নাহ বলে আমার বিশ্বাস।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটি বই
Was this review helpful to you?
or
A really HILLARIOUS way of writting a great travel
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
সেই ৯ম শ্রেণীতে পাঠকালে বাংলা বইয়ে এই বইটির একটি পরিচ্ছেদ ছিলো এবং সেটি পড়তে এতই ভালো লাগতো যে বার বার সেটি পড়তাম। "দেশে বিদেশে" বইটির ১৫ তম পরিচ্ছেদটি আমি ৯ম শ্রেণীর বাংলা বইতে ছিলো। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এটিই একমাত্র সার্থক ভ্রমণ কাহিনী। অত্যন্ত সুষ্ঠু ও রম্য রসে বইটি রচনা করেছেন আমার প্রিয় লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী। তার এই গ্রন্থের প্রশংসা করার ভাষা আমার জ্ঞানে নেই। কাবুলে থাকাকালীন সময়ে তিনি মানুষের সঙ্গে তার কথোপকথন এতই রসিকতা করে বইটিতে উপস্থাপন করেছেন যা প্রশংসার চেয়ে বড় কিছুর যোগ্য নিঃসন্দেহে। সৈয়দ মুজতবা আলীর সঙ্গে তার ভৃত্য আব্দুর রহমানের সম্পর্কটি আমায় মুগ্ধ করেছে। বইটি সম্পূর্ণ পড়া শেষে বারে বারে খুবই ইচ্ছে হচ্ছিলো ইশ! একটিবার যদি আব্দুর রহমানের কোনো ছবি দেখার সৌভাগ্য আমার হতো। আব্দুর রহমান ও সৈয়দ মুজতবা আলীর যে আবেগঘন মুহুর্ত তৈরি হয়েছিলো, তা আমাকেও স্পর্শ করেছিলো। বইটি হার্ড কভারের। ছাপা ও বিশেষ করে কাগজের কোয়ালিটি খুব ভালো। সবশেষে প্রিয় লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি বিখ্যাত উক্তি না বললেই নয় — "বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়না।"
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_জানুয়ারী_২০১৯ বইয়ের নাম: দেশে বিদেশে লেখকের নাম: সৈয়দ মুজতবা আলী৷ ধরণ: ভ্রমণ কাহিনী। ব্যক্তিগত রেটিং: ১০/১০। প্রথম প্রকাশ: ১৯৪৮ খ্রি. ১ম বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র সংস্করণ প্রকাশ : ২০১৪ ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশ : ২০১৫ খ্রি. প্রকাশকনা : বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, ১৭, বাংলামটর, ঢাকা - ১১০০, অনলাইন পরিবেশক : rokomari.com/ প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ মুদ্রিত মূল্য: ৩৭৫ টাকা। ISBN: 948-18-0394-1. *প্রাথমিক কথা ঃ কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ভ্রমণ কাহিনী "দেশে বিদেশে" বইটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে গণ্য করা হয়৷ লেখকের কাবুলবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা এটি।লেখকের রম্য রসাত্বক বর্ণনা, বিভিন্ন পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষের সাথে রসালাপ, ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা এবং শেষ পর্যায়ে এসে আফগানিস্তান ছেড়ে আসার করুণ কাহিনী অসাধারনভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই ভ্রমণ কাহিনীতে। লেখক মাত্র ২৩ বছর বয়সে আফগানিস্তান সরকারের অনুরোধে "কাবুল কৃষি কলেজে" ফার্সি এবং ইংরেজী ভাষার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন৷ সেই সময়কার ঘটনা নিয়ে এটি লিখিত৷ পাকিস্তান সহ আফগানিস্তানের মানুষ, তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন, মনন, ধ্যান ধারনা, জীবনবোধ. কাবুলে অবস্থান, আফগানিস্তানের ঘটনাপঞ্জী, প্রতিটি বিষয় তিনি যথাযোগ্য মর্যাদায় রসময় করে তুলে এনেছেন। ১৯২৭ সালের এ ভ্রমণ কাহিনীটি লেখা হয় ১৯৪০ সালে এবং বই আকারে প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে৷ ২০১৫ সালে এটির ইংরেজী সংস্করণও প্রকাশিত হয় "ইন আ ল্যান্ড ফার ফ্রম হোম" নামে৷ ইংরেজী অনুবাদ করেন নাজেস আফরোজ। গত শতাব্দীর বিশের দশকে ও তার পরবর্তী সময়ের আফগানিস্তানে রাজতন্ত্রের পতন ও গণতন্ত্রের অভ্যুদয়ের সূচনালগ্নের এক মূল্যবান সাক্ষী এই বই। সেরা বাংলা বই হিসেবে এটিকে ১৯৪৯ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ‘নরসিংহদাস পুরস্কার’ দিয়ে সম্মানিত করেছিল। *কাহিনী সংক্ষেপঃ "দেশে বিদেশে" ভ্রমন কাহিনীটি শুরু হয় লেখকের কোলকাতা থেকে পেশওয়ার, খাইবার পাস, জালালাবাদ হয়ে কাবুল যাওয়ার বর্ননা দিয়ে। সময়টা ছিলো ১৯২৭ সালের জুন মাস৷ লেখক আফগান সরকারের আমন্ত্রণে কাবুলে শিক্ষকতার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন৷ কলকাতার হাওড়া স্টেশনে উপস্থিত হন ইয়োরোপিয়ন থার্ড নামক যানবাহনে উঠার জন্য৷ স্টেশন থেকেই বর্ণনা করতে থাকে ভ্রমণের এ কাহিনীটি৷ সকল সাধারণ ঘটনাকে লেখক রসাত্মক ভাষা বর্ণনায় অসাধারণ রূপদান করেন৷ গাড়ির মধ্যে অচেনা অজানা লোকদের সাথে জমে আড্ডা আলাপ৷ উঠে আসে গাড়িতেই পাঠানদের সরল বন্ধুত্ব, খোশগল্প, আড্ডাবাজী, আতিথেয়তার বর্ণনা৷ গাড়িতে প্রথমেই আলাপ জমে মুরুব্বি ড্রাইভারের সাথে, যাকে লেখক সর্দারজী নামে উল্লেখ করেন৷ লেখক বলেন, দেখলুম পাঠানদের বাইরের দিকটা যতই রসকষহীন হোক না কেন, গল্প শোনাতে আর গল্প বলাতে তাদের উৎসাহের সীমা নেই৷ তর্কাতর্কি করে না, গল্প জমাবার জন্য বর্ণনার রঙতুলিও বড় একটা ব্যবহার করে না৷ সব যেন উডকাঠের ব্যাপার, সাদামাটা কাঠখোট্টা বটে৷ কিন্তু ঐ নিরস নিরলঙ্কার বলার ধরনে কেমন যেন একটা গোপন কায়দা রয়েছে যার জন্য মনের উপর বেশ জোর দাগ কেটে যায়৷ বেশিরভাগই মিলিটারী গল্প, মাঝে মাঝে ঘরোয়া অথবা গোষ্ঠী সংঘর্ষের ইতিহাস৷ পাঠানদের গল্প শেষ হয় প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিয়ে৷ পাঠান মুল্লুকে লোকজন যার যে রকম খুশী চলে৷ খাস পাঠান কখনো কারো জন্য সহজে রাস্তা ছেড়ে দেয় না৷ ঘোড়ার নালের চাট লেগে যদি পায়ের এক খাবলা মাংস উড়ে যায় তাহলে সে রেগে গালাগালি কিংবা মারামারি কিংবা পুলিশ ডাকবে না৷ পরম শ্রদ্ধা আর বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞাসা করবে, দেখতে পাস না? চালক ততোধিক অবজ্ঞায় বলবে, তোর চোখ নাই? ব্যাস, যে যার পথে চলে যায়৷ গাড়ি থেকে পেশোয়ার স্টেশনে নেমে দেখা হলো লেখকের বন্ধু এবং পেশোয়ারের পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আহমদ আলীর সাথে৷ তিনি আগে থেকেই লেখককে গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন৷ লেখক বলেন, দেখলুম পেশোয়ারের বারো আনা লোক আহমদ আলীকে চেনে, আহমদ আলী বোধ হয় দশ আনা চেনেন৷ পেশোয়ারের তাপমাত্রা ১১৪ ডিগ্রী! আহমদ আলী বলেন, হন্তদন্ত হওয়ার মানে শয়তানের পন্থায় চলা৷ তাইতো বাইসিকেলের আরেক নাম শয়তানের গাড়ি! পাঠান অত্যান্ত অলস এবং আড্ডাবাজ, কিন্তু আরামপ্রয়াসী নয়৷ যেটুকু সামান্য তার বিলাস তার খরচাও ভয়ঙ্কর বেশি কিছু নয়৷ যাদের গায়ের জোর যেমন বেশি তাদের স্বভাবও তেমনি শান্ত, পাঠানদের বেলায় কথাটা খাঁটি৷ পাঠানদের দাওয়াত খাওয়া নিয়ে লেখক বলেন, বাঙ্গালিরা খাবারের সকল পদ নিয়েই খাওয়া শুরু করেন৷ পাঠানরা সব পদ পায় না৷ যে যেটা পায় সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট, জান গেলেও খুজবে না৷ হঠাৎ যদি কেউ বলে অমুকতো মাংস পায়নি, তখন সবাই মাংসের পেয়ালা নিয়ে তেড়ে যাবে তার দিকে৷ কিন্তু তার পর হয়তো খোশগল্পে মত্ত হয়ে আবার ভুলে গেছে মাংস দিতে! এদিকে ঐ লোক পোলাওয়ের মরুভূমিতে তৃষ্ণায় মারা গেলো নাকি মাংসের থৈ থৈ ঝোলে ডুবে প্রাণ দিলো তার খবর কারো নেই! গল্পের নেশায় বেখেয়ালে অন্তত আধ ডজন অথিতি সুদ্ধু শুকনো রুটি চিবিয়েই যাচ্ছেন৷ পেশোয়ার থেকে কাবুল যেতে পাসপোর্ট নয়, তিনদিন মেয়াদি স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতে হয়৷ সেই স্ট্যাম্প সংগ্রহ করে লেখক পেশোয়ার থেকে বাসে করে কাবুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন৷ গাড়িতে উঠা থেকে শুরু করে পথ ঘাট, আবহাওয়া, ভূ প্রকৃতি সবকিছুর বর্ণনা দিয়েছেন লেখক৷ গাড়ি বিপদ সঙ্কুল গোলযোগপূর্ণ খাইবার পাস হয়ে কাবুলের দিকে এগুচ্ছে৷ জালালাবাদ পর্যন্ত পৌছার আগে গাড়ির চাকা পাংচার হলো, ইঞ্জিন কয়েকবার নষ্ট হলো৷ গাড়ির দুরাবস্থার বর্ণনা দিয়ে লেখক লেখেন, গাড়িটা এতই বাজে যে তার হর্ণ ছাড়া সবই বাজে! মোটরের বনেট খুলতে পেরে ড্রাইভার যেন বউ এর ঘোমটা খোলার আনন্দ পায়৷ গাড়ির ইঞ্জিনের হরেক রকম আওয়াজ থেকে আমেজ পেলুম বিবিজান অনিচ্ছায় শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছেন৷ রাতের বেলা গাড়িতে একটা মাত্র হেড লাইট, তাও মিটমিট করে জ্বলে! কাবুলের নিকটে এসে সেটাও নিভে গেলো৷ তখন একটা হারিকেনের ব্যবস্থা করা হলো৷ লেখক ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলো, হারিকেনের সামান্য আলোতে গাড়ি চালাতে আসুবিধা হচ্ছে? ড্রাইভার জবাব দিলো, হচ্ছে বই কি, হারিকেনের আলোটা চোখ ধাঁধিয়ে দেয়, ওটা না থাকলে গাড়ি জোরে চালাতে পারতুম৷ লেখক বলেন, আফগানিস্থানের বড় শহর পাঁচটি, কাবুল, হিরাত, গজনী, জালালাবাদ, কান্দাহার৷ জালালাবাদ আফগানিস্থানের শীতকালীন রাজধানী৷ পেশোয়ার থেকে জালালাবাদের দূরত্ব একশ মাইল৷ জালালাবাদ থেকে কাবুল আরো একশ মাইল৷ আফগানিস্থানের অধিবাসিরা পাঠান, তাদের মাতৃভাষা পশতু৷ কিন্তু কাবুলের অধিবাসীরা এসেছে ইরান থেকে, তাদের মাতৃভাষা ফার্সী৷ অবশেষে কাবুল পৌছার বর্ণনা দিয়ে লেখক বলেন, সে যাত্রা যে কাবুলে পৌঁছতে পেরেছিলুম তার একমাত্র কারণ বোধ হয় এই যে, রগরগে উপন্যাসের গোয়েন্দা শত বিপদেও মরে না, ভ্রমণকাহিনী লেখকের জীবনেও সেই সূত্র প্রযোজ্য৷ তারপর আমরা দেখতে পাই অধ্যাপক বকদানফের সাথে সাক্ষাৎ হলো লেখকের৷ তিনি জাতে রুশ, মস্কোর বাসিন্দা ও কট্টর জার পন্থী৷ ১৯১৭ এর রুশ বিপ্লবের সময় দেশ থেকে পালিয়ে তেহরানে আশ্রয় নেন৷ তারপর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উনাকে ফার্সীর অধ্যাপক হিসেবে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসেন৷ বগদানফ বহুভাষার পন্ডিত ছিলেন৷ পুরো আফগানিস্থানের প্রাচীনকাল থেকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সবিস্তারে তুলে ধরেন লেখক৷ সুলতান মাহমুদ, তৈমুর, বাবুর, হুমায়ুন, নাদিরশাহ, আহমদ শাহ আবদালী কেউই বাদ যাননি৷ লেখক কাবুলে সমকালীন সময়ের বিভিন্ন আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হন এবং অত্যন্ত সূক্ষ রসবোধের সাহায্যে তাদের সাথে কথোপোকথন ও দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপ তুলে ধরেন। ইংরেজ, ফরাসী, জার্মান, রুশ, তুর্কি রাজদূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে লেখকের সাক্ষাৎ ও সুসম্পর্ক তৈরি হয়৷ উঠে এসেছে কাবুলের জীবনযাত্রার টুকরো টুকরো ছবি, তার বাজারের কথা, সুধীজনের বাড়িতে নিমন্ত্রণের ছবি, নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচয় আর সে বন্ধুত্ব গাঢ় হবার গল্প।সৈয়দ আলী তার সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও হাস্য রসাত্মক লেখনী দ্বারা তার প্রতিটি চরিত্রকেই জীবন্ত করে তুলেছেন। লেখার প্রতিটি মোড়েই একটি বাংলা বা ফারসী কবিতা ফুটে আছে পথের পাশের ঘাসফুলের মতো। 'দোস্ত মুহাম্মদ ছিলেন এক রসিক পাঠান অফিসার। বিদ্রোহের সেই অবরুদ্ধ সময়েও এতটুকু মলিন হয়নি যার ভালবাসা। সৈয়দ আলীর সাথে তার খুবই ভাল সর্ম্পক ছিল। মওলানা জিয়াউদ্দীন ছিলেন শান্তিনিকেতনের শিক্ষক। কাবুলে তিনি ছিলেন সৈয়দ আলীর সহকর্মী। কাবুলে বিদ্রোহের দুর্দিনে মওলানা জিয়াউদ্দীন তার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে কাবুলে অসহায় এক অবস্থায় পড়েন। তখন ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সহায়তায় তার স্ত্রীকে মেয়েদের বিশেষ ফ্লাইটে করে ভারতে পাঠানোর ব্যাবস্থা করেন মুজতবা আলী। পুরো বইজুড়ে বিশেষ অবস্থান থাকে ভৃত্য আব্দুর রহমানের৷ সহজ সরল আফগান এই যুবক শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দেন লেখককে৷ সে রান্না থেকে শুরু করে সকল কাজ করতো৷ লেখক নিজ হাতে মনের মাধুরী মিশিয়ে বইয়ের পাতায় তুলে ধরেন আব্দুর রহমানের অবয়ব৷ সেটি পাঠক মাত্রই অনুধাবন করতে পারেন৷ মনিব-ভৃত্যের প্রথাগত সর্ম্পকের বাইরে আবদুর রহমান নামের অত্যন্ত হৃদয়বান এক পাঠান যুবকের চিত্রই তুলে ধরেছেন তিনি। বিদ্রোহের দিনগুলোতে যখন কাবুল ক্রমেই একটি বিপজ্জনক জায়গায় পরিণত হচ্ছিল তখন আবদুর রহমান হয়ে ওঠে তার পরম বন্ধু্। দিনের পর দিন একসাথে তরকারিহীন রুটি চিবিয়ে কাটিয়েছেন তারা। সে দুঃসময়েও তাকে ছেড়ে চলে যায়নি আবদুর রহমান। এমনকি শেষদিন লেখকের সাথে ভারত চলে যেতে বায়না ধরে আব্দুর রহমান৷ আব্দুর রহমান নিজে কাঁদে, লেখককে কাঁদায়৷ সে সাথে লেখকের বর্ণনা পড়ে পাঠকও কাঁদতে বাধ্য৷ আমরা দেখতে পাই আফগান রাজপরিবারের ক্ষমতার দ্বন্দ্বের বিস্তারিত বিবরণ৷ বাদশা আব্দুর রহমান, বাদশা হাবীব উল্লাহ, বাদশা নসরউল্লা, বাদশা আমানউল্লাহ, মুইন উস সুলতান ইয়ানেতউল্লাহর কাহিনী আমরা বিস্তারিত জানতে পারি৷ জানতে পারি ইনায়েতউল্লাহর বিবাহে সৎমায়ের গুটি চাল৷ দৈবক্রমে ছোট ভাই আমানউল্লাহ বাদশা হন৷ তারপর সারাদেশে সংস্কার কাজ পরিচালনা করেন৷ বাদশাহ আমানউল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও রীতি-নীতির প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন। আমানউল্লাহ নানারকম সংস্কারমূলক কাজ করেছিলেন যেমন, নারী শিক্ষা, নারী-পুরুষ সমানাধিকার ইত্যাদি। বাদশা আসলে আফগান মুসলমানদের আধুনিকায়নের চেষ্টা করেছিলেন, যেমন উনি মেয়েদের বোরখা পড়া ও পর্দা করার বিরোধী ছিলেন, ছেলেদের কুর্তা-জামার বদলে কোট-প্যান্ট পড়ার প্রচলন করেছিলেন। আমানউল্লাহর পত্নী সুরাইয়াও ছিলেন সংস্কারের পক্ষে। তিনি আমানউল্লাহর ভ্রমণসঙ্গিনী হয়ে ইউরোপ ভ্রমণকালে জনসমক্ষে বোরখা ছাড়া বের হন। আফগানিস্তানের তখনকার রাজনৈতিক সংকটটা ছিল মূলত রাজতন্ত্রের পতনের আন্দোলন। বাদশা আমানউল্লাহর সংস্কার প্রক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তখনকার প্রভাবশালী মোল্লা ‘হযরত অফ শোরবাজার’-এর নেতৃত্বে অন্যান্য মোল্লা ও সাধারণ আফগানরাও বাদশাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। আফগানিস্তানের রাজত্ব নিয়ে যখন এই ঘোর সঙ্কটকাল, লেখক সেই সঙ্কটের প্রত্যক্ষদর্শী, আর তাঁর কলম সেই সঙ্কটদৃশ্য এঁকেছে দারুণ নৈপুণ্যের সাথে। বাদশাহ আমানউল্লাহ পদত্যাগ করে তার বড় ভাই এনায়েতউল্লাহকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে প্রস্তাব করে৷ এনায়েতউল্লাহ প্রস্তাবে রাজী না হলে আমানউল্লাহ বড় ভাইকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ক্ষমতা গ্রহনে বাধ্য করে৷ লেখক এখানে বেশ হাস্যরস করে বলেন পৃথিবীর চিরন্তন ইতিহাস আফগানিস্থানে এসে উল্টে গেলো৷ সর্বত্র বাদশাহকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়৷ আর এখানে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ক্ষমতা গ্রহণে বাধ্য করা হলো৷ নতুন বাদশা ছিলো লেখকের টেনিস খেলার পার্টনার৷ কিন্তু নতুন বাদশা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি৷ সে সময়কার ব্রিটিশ-রাশিয়ার যে ‘গ্রেট গেম’ তার সাথে আফগান বাদশাহের উৎখাতের কোন যোগসূত্র রয়েছে কি না প্রশ্ন ইদানিং অনেকের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। গবেষকরা ধারণা করেন যে সে সময়কার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ইংরেজদের একটা ভূমিকা ছিল। মোল্লা এবং ইংরেজদের মাঝে গোপন আঁতাত ছিল এটাও অনুমান করা যায়। কাজেই বিদ্রোহকে ‘গ্রেট গেম’-এর একটা অংশ হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে। লেখকের কাবুলে অবস্থানের শেষ পর্যায়ে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে৷ মোল্লা শোরবাজারারের সহায়তায় ডাকু সর্দার বাচ্চা সকাও হবীউল্লাহ তখন কাবুল দখল করে নেয়। নতুন বাদশা এনায়েতউল্লাহ পলায়ন করে৷ আত্মীয়স্বজন আর সভাসদ বাচ্চা সকওফর হাতে বন্দী হয়৷ বাচ্চায়ে সাকোর অত্যাচার আর লুণ্ঠনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কাবুলের জনজীবন৷ দুর্গম কাবুল যুদ্ধসঙ্কটাপন্ন, লেখক একা বাঙালি৷ নির্ভর করছেন ভাগ্য আর স্থানীয় বন্ধুদের ওপর, মুখোমুখি হচ্ছেন নির্মম ইংরেজের বিমাতাসূলভ আচরণের৷ অনুভব করছেন পরাধীনতার তিক্ত আঁচটুকু৷ নিত্য শুনছেন প্রতিবেশী আর প্রিয়জনের মৃত্যুসংবাদ৷ নিজে মুখোমুখি হচ্ছেন মৃত্যুর৷ দীর্ঘদিন অর্ধাহান অনাহারে দিন কাটানোর পর বৃটিশ দূতাবাসের সহায়তায় আফগানিস্থান ত্যাগের করুণ কাহিনীর মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই ভ্রমণ কাহিনী। শেষ বিদায়ের দিনে লেখকের সাথে ভারতে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করে আব্দুর রহমান। বিদায়ের সময় আবদুর রহমান যখন তার হাতে চুমু খেয়ে ‘ব আমানে খুদা’ অর্থাৎ ‘খোদার হাতে সমর্পন করলাম’ বলে কেঁদে ওঠে, তখন স্বভাবতই কেঁদে ওঠে লেখকের মনও। সে সাথে আমার মনে হয় আমার মতো অন্যান্য পাঠকূলও কেদে উঠেন হয়তো৷ দেশ থেকে বহু দূরে ভয়ঙ্কর দুঃসময়ে আবদুর রহমানের হৃদ্যতায় এক অকৃত্রিম বন্ধুকে খুঁজে পেয়েছিলেন লেখক। তাই তো প্লেন থেকে নিচে তাকিয়ে তুষার আবৃত আফগানভূমিতে তার কাছে সবচেয়ে শুভ্র মনে হয়েছিল আবদুর রহমানের সাদা পাগড়িটিকে। আর তারও চেয়ে শুভ্র মনে হয়েছিল তার হৃদয়কে।’ * গুরুত্বপূর্ন চরিত্রসমূহঃ আব্দুর রহমান- আফগান যুবক, লেখকের ভৃত্য এবং অন্যতম প্রধান চরিত্র।সহজ সরল আব্দুর রহমানকে লেখক ফুটিয়ে তুলেছিলেন তার সাহিত্যের আল্পনায়।পুরো কাহিনীজুড়ে হাস্যরসাত্বক ঘটনার জন্ম দিলেও শেষ পর্যায়ে আব্দুর রহমানের সাথে লেখকের বিদায়ের মুহূর্তে মর্মান্তিক এবং করুণ পরিনতি হয়। অধ্যাপক বেনওয়া- অধ্যাপক এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু। শেখ আহমেদ আলী খান পাঠান- লেখকের বন্ধু এবং পেশোয়ারের পুলিশ কর্মকর্তা। অধ্যাপক খুদাবখশ- ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপক বগদানফ- অধ্যাপক এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু দোস্ত মুহম্মদ- অধ্যাপক এবং লেখকের বন্ধু মুইন-উস-সুলতান- আফগানিস্তানের যুবরাজ, শেষ দিকে স্বল্প সময়ের বাদশাহ, নাম ইনায়েতুল্লাহ৷ বাচ্চায়ে সাকো- ডাকাত, যার আক্রমণে আফগানিস্তানে আমানুল্লাহর পতন ঘটেছিল৷ মূল নাম হবিউল্লাহ৷ কর্নেল বলশফ- রাশিয়ান এয়ারফোর্সের কর্নেল স্যার ফ্রানসিস- কাবুলে ব্রিটিশ লীগন্যাশনের প্রধান। *নামকরণঃ বইটির অংশবিশেষ ভারত থেকে খাইবার পাস পৌঁছাবার কাহিনী, সেটি আদতে লেখকের স্বদেশের কথাই। আর অন্য অংশ জুড়ে কাবুল তথা আফগানিস্তানের আখ্যান। যা কিনা লেখকের কাছে রাষ্ট্রীয় ও মানসিক– দুই দিক থেকেই বিদেশ। ধারণা করা যায়, এই কারণেই বইয়ের নাম নির্ধারিত হয় দেশে বিদেশে। সে হিসেবে বইয়ের নামটি সার্থক বলতে হবে৷ *বইয়ের কিছু উক্তিঃ ১) যাত্রার দিনই অর্ধেক ভ্রমণ৷ ২) উঠোন সমুদ্র পেরোলেই অর্ধেক মুশকিল আসান৷ ৩) হন্তদন্ত হওয়ার মানে শয়তানের পন্থায় চলা৷ ৪) দুঃখ না পেলে দুঃখ ঘুচবে কি করে৷ ৫) প্রকৃতি মরুপ্রান্তরে প্রাণ সৃষ্টি করেন না বটে, কিন্তু প্রাণ গ্রহণে তিনি বিমুখ নন৷ ৬) ঘুমন্ত অবস্থায় মানুষে মানুষে ভেদ থাকে না, সবাই সমান৷ ৭) কোনো দেশের গরীব মুসলিম মেয়েরা পর্দা মানে না, অন্তত আপন গায়ে মানে না৷ ৮) একবার ঠকলে ঠকের দোষ, দুবার ঠকলে তোমার দোষ৷ ৯) সব কিছু পণ্ড না হলে পণ্ডিত হয় না৷ ১০) আফগানিস্থানের প্রাচীন ইতিহাস পোঁতা আছে সে দেশের মাটির তলায়, আর ভারতবর্ষের পুরাণ মহাভারতে৷ ১১) পণ্ডিতজন যে স্থলে মতানৈক্য প্রকাশ করেন মূর্খ যেন তথায় ভাষণ না করে৷ (রাসেল) ১২) কুইনিন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে? ১৩) সৎমার অধিক ভালোবাসাকে সহজে বিশ্বাস করা যায় না৷ ১৪) অত্যান্ত কাঁচা কাঁচা লঙ্কাও পাঠার বলি দেখে খুশী হয় না৷ ১৫) কাবুল স্বর্ণহীন হোক, কিন্তু বরফহীন যেন না হয়৷ ১৬) যে শিল্প কাজে লাগে না সে শিল্প শিল্পই নয়৷ ১৭) স্ত্রীকে বেঁধে রাখতে হয় মনের শিকল দিয়ে, হৃদয়ের জিঞ্জির দিয়ে৷ ১৮) বর্ষা নামলে বাংলার বিদ্রোহ বিপ্লবও ছেঁড়া কাথা গায়ে টেনে নিদ্রা যায় মনের হরিষে৷ ১৯) কাকা আর আমি একা, চোর আর লাঠি দুজন৷ ২০) বাঘ হতে ভয়ঙ্কর কু-রাজার দেশ৷ (কনফুৎসিয়) ২১) রাজ্য চালানো হচ্ছে সিংহের পিঠে সওয়ার হয়ে জীবন কাটানো৷ সিংহের পিঠ থেকে এক মুহূর্তের জন্য নামবার উপায় নেই৷ যতক্ষণ উপরে আছ সিংহ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না, কিন্তু তোমাকে অহরহ সজাগ থাকতে হবে৷ এজন্যই ক্ষমতার তখৎকে সিংহাসন বলা হয়৷" ২২) চা বাগানের কুলীরা যে প্রচুর পরিমাণে বিনা দুধ চিনিতে লিকার খায় সে পানের তৃপ্তির জন্য নয়, ক্ষুধা মরার জন্য৷ ২৩) জীবিতাবস্থায়ই যখন মহাপুরুষের আশ্রয়স্থল নেই তখন মৃত্যুর পর তার জন্মভূমিইবা কি মৃত্যুস্থলই বা কি? ২৪) মায়ে মায়ে তফাৎ নাই৷ বীরের মা যে রকম ডুকরে কাঁদে ঠিক সেরকম চাষা মরলে তার মাও ডুকরে কাঁদে৷ * লেখক সম্পর্কেঃ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক, রম্যরচয়িতা ও বহুভাষাবিদ সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্ম ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতে আসামের অন্তর্ভুক্ত সিলেটের করিমগঞ্জে। পিতা খান বাহাদুর সৈয়দ সিকান্দার আলী সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তাঁর পৈতৃক ভিটা মৌলভীবাজার, সিলেট। সিলেটের গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। পিতার বদলির চাকরি হওয়ায় মুজতবা আলীর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কাটে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ১৯২১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনেভর্তি হন। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রথমদিকের ছাত্র। এখানে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি,হিন্দি, গুজরাটি, ফরাসি, জার্মান ও ইতালীয়ভাষাশিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে এখান থেকে বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। অতঃপর দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে গবেষণার জন্য তিনি ডি.ফিল লাভ করেন ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৩৪-১৯৩৫খ্রিষ্টাব্দে তিনি মিশরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মুজতবা আলী আফগানিস্থানের কাবুলে শিক্ষা দপ্তরে অধ্যাপনা করেন। সেখানে তিনি ইংরেজি ওফরাসি ভাষার শিক্ষক ছিলেন। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে বরোদার মহারাজার আমন্ত্রণে তিনি বরোদা কলেজে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এখানে তিনি আট বছর কাটান। এরপর দিল্লির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে এবংকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে কিছুদিন আকাশবাণীর স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন পাটনা, কটক, কলকাতা এবং দিল্লিতে। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে প্রত্যাবর্তন করেন। বিশ্বভারতীর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অবসরগ্রহণ করেন। তাঁর বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ভ্রমনকাহিনী। এছাড়াও লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি হল, "বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।" তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা ৩০ টি৷ ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক নরসিং দাস পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে আনন্দ পুরস্কার প্রদান করা হয়। সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার ২০০৫ সালে তাঁকে মরণোত্তরএকুশে পদকে ভূষিত করা হয়। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকাতে৷ * লেখকের স্টাইলঃ বইটি রম্য রসাত্মক ভাষা উপাদান দিয়ে বৈঠকিয় আড্ডার মেজাজে লেখা৷ আর এতে আফগান পাঠানদের স্বাধীন আর আড্ডাবাজির জীবন সম্পর্কে জানতে পারা যায়। আরো রয়েছে নানা ভাষায় নানা কবির নানা বয়ান। লেখকের জানার বিশালতা থেকে এ লেখাকে অলংকৃত করতে কবি ওমর খৈয়াম, শেখ সাদী থেকে শান্তিনিকেতনে পড়াশোনার সময় সান্যিধ্য পাওয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাউকেই বাদ দেন নি। লেখকের পাঠাভ্যাস আর জ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে সাম্যক ধারণা পাওয়া যাবে এই বইয়ের বিভিন্ন উদৃতি থেকে৷ *পাঠানুভূতিঃ বইটির কয়েক পৃষ্ঠা পড়ে বেশ বিরক্ত বোধ করছিলাম! কোথা থেকে কোথা যাচ্ছেন লেখক কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। শব্দের কাঠিন্যতা আমাকে আরো অস্থির করে তুলছিলো৷ সনাতন বাংলা শব্দের সহিত ফার্সি, উর্দু, হিন্দী, ইংরেজী সংমিশ্রণ আমার পাঠকে কঠিন করে তুলছিলো৷ তিনি যে ১৫টি ভাষার পান্ডিত্য লাভ করেছিলেন তার প্রমাণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম এ বই পড়তে গিয়ে৷ তাৎক্ষনিক গুগলের সাহায্য নিয়ে লেখক, ভারতবর্ষ, আফগানিস্তান আর বইটা সম্পর্কে একটু ঘাটাঘাটি করে কিঞ্চিত জেনে নিলাম৷ আর পড়তে বসে কাজে লাগালাম মোবাইলের বাংলা থেকে বাংলা অভিধান এপ্স৷ এতেকরে পাঠ খুব ধীরে এগুলেও বেশ উপকার বোধ করেছি৷ পেশোয়ার থেকে কাবুল যাত্রার যে কাহিনী বইটিতে আছে, সেটি শুধু রচনাগুণেই নয়, তথ্যগুণেও অমূল্য। সাধারণ জ্ঞান থেকে আফগানিস্তান সম্পর্কে ধারণা হতেই পারে দেশটি ঊষর, মরুময়, ছায়াহীন, প্রাণহীন, জীবন স্পন্দন যেখানে রসহীন পাথর, আছে কেবল যুদ্ধ বিগ্রহ আর হানাহানি। বাঙালির চোখে অচেনা আফগানিস্তানকে লেখক যে মুগ্ধ প্রেমিকের উচ্ছ্বাস নিয়ে এঁকেছেন, তার প্রতিচ্ছবি বইটির পাতায় পাতায় বিরাজমান৷ পড়তে পড়তে কতো যে হাসতে হলো তার ইয়ত্তা নেই৷ একই সাথে হাসি রম্য, ইতিহাস, দর্শন, কাব্য রস পাওয়া যাবে৷ সে সাথে পাওয়া যাবে দুঃখ দুর্দশার বর্ণনা৷ শেষের দিকে যখন আফগান রাজক্ষমতার দ্বন্দ্ব সংঘাত চরমে তখনকার বর্ণনায় পাঠক পাবে থ্রিলারের অনুভূতি৷ আর ভৃত্য আব্দুর রহমানে সাথে বিদায় মূহুর্তে পাঠক পাবে বিরহ ব্যাথার এক করুণ অনুভূতি৷ অন্তত আমার চোখে পানি সংবরণ করতে পারিনি৷ অধিকাংশ ভ্রমণ কাহিনীতে দেশের ও মানুষের কথার চাইতে লেখকের নিজের গল্পই বেশি থাকে, অথচ একটা ভ্রমণ কাহিনী হওয়া উচিত ঠিক তার উল্টোটা। গল্পটা হওয়া উচিত সেখানকার মানুষদের, সেখানকার প্রকৃতি আর সেখানকার সমাজ এবং সংস্কৃতির৷ কোন ভ্রমণকারী যদি ভ্রমণ-স্থলকে উপভোগ করতে না পারেন, তার কাদা, তার বালু, তার পাহাড়, তার ফুল, তার কাটায় যদি সৌন্দর্য অনুভব করতে না পারে তবে সেটি তার অন্তরের দীনতা৷ সেই দীনতা সৈয়দ মুজতবা আলীর কোনদিনই ছিল না। তিনি যখন যেখানে গিয়েছেন, সেই জায়গাটাকে ঠিক সেখানকার মত করেই অনুভব করার চেষ্টা করেছেন। আফগানিস্তান এর বিভিন্ন বিষয়ে তার যে প্রাঞ্জল বর্ণনা তা পড়লে মনে হবে, তিনি যেন মরুতে মধুর চাষ করেছেন।আব্দুর রহমানসহ প্রতিটি চরিত্রকে আর প্রতিটি ঘটনাকে লেখক এমন ভাবে বর্ণনা করেছেন সবগুলো পাঠকের সম্মুখে জীবন্ত হয়ে উঠেছে৷ আমার মনে হয়ছে আমি নিজে যেন লেখকের সাথে আড্ডা, সেই হাসি আন্দে, সেই কষ্ট সংগ্রামে প্রত্যক্ষ অংশ নিচ্ছি৷ আমি নিজেই যেন বইটির একটি চরিত্র৷ কাবুলের বরফ ঢাকা পথঘাটে আমি লেখকের সংঙ্গী৷ কী এক অসাধারণ ঘোরের মধ্যদিয়ে পড়ে শেষ করলাম বইটি৷ লেখক যখন পাঠককে একটি জীবন্ত লেখা উপহার দেন তখন পাঠক হয়ে উঠেন লেখকের বইয়েরই একটি কাল্পনিক চরিত্র৷ এখানেই একজন লেখকের সার্থকতা৷ সৈয়দ মুজতবা আলী সত্যি একজন সফল লেখক৷ আর সে জন্যই বইটি বেচে থাকবে হাজারো বছর৷ *একটি পরামর্শঃ বইটি সম্পাদনা করে দুর্বোধ্য শব্দসমূহ পরিবর্তন কর সহজ বাংলা শব্দ যোগ করলে সর্বস্তরের পাঠকদের জন্য এটি অধিক সুখপাঠ্য হতো, বিশেষ করে কিশোরদের জন্য৷ *রকমারি লিংক https://www.rokomari.com/book/80412/deshe-bideshe
Was this review helpful to you?
or
দেশে বিদেশে-কে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণকাহিনী হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশে বিদেশে-র মত অন্য কোনো ভ্রমণকাহিনী আজ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। একটি ভ্রমণকাহিনী হওয়া সত্ত্বেও আফগানিস্তানের ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল এই বই। লেখকের রম্য রসাত্বক বর্ণনা, বিভিন্ন পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষের সাথে রসালাপ, ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা এবং শেষ পর্যায়ে এসে আফগানিস্তান ছেড়ে আসার কাহিনী অসাধারণভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই বইতে।