User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সকালে উঠে ঢুলু ঢুলু চোখে ক্যান্টিনের দশ টাকার চা খাওয়ার পরে গিয়ে মনে হয়, এবার বুঝি বা ঘুম ভাঙলো। অথবা, ৭০২ নং ওয়ার্ডে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে কোনো পেশেন্টের ইসিজি লাইন ফ্ল্যাট হওয়ার পর মনে হয়, খুব সহজ হারিয়ে ফেলা, হারিয়ে যাওয়া। কিংবা, ফার্মা ভাইভার দিন সকালে একদৃষ্টে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে পালিয়ে যাওয়ার যে আকাঙ্খা, আর আফসোস উড়তে পারার মতো ডানা বা পরীক্ষা উৎরাতে পারার মতো সাহস নেই বলে। এরকম মিশ্র অনুভূতি হচ্ছিলো, বইটি শেষ করে। যুগের ধর্ম কি না জানি না, তবে চারদিকে এত মানুষ, তবু সবাই সমানে জপছে 'একা বাঁচতে শেখো প্রিয়'। জন অরণ্যে একাকী ছায়া মানবের মতো বেঁচে থাকতে গিয়ে আমাদের Me time আর loneliness এর সীমানারেখা ঝাপসা হয়ে গেছে। Afterall, It's hard to play the role of a kid, who never gets invited. আমার জনৈক অপ্রিয় (?) বন্ধু জীবনে "delulu is the only solulu" নীতির কট্টরপন্থী। But, not everyone is allowed to dream, let alone dream big, সুকুমারের কথাই ধরা যাক। সুখস্বপ্নের দেয়াল দিয়ে বাস্তবকে আড়াল করে রাখা যায়না সব সময়, জেগে একদিন উঠতেই হবে। দেখতে না চাইলেও চোখে আঙুল দিয়ে "চার্নক সাহেবের জারজ সন্তান" কোলকাতার আসল চেহারা দেখতেই হবে এ বইতে। আসলে Mediocre মানুষ গুলোর সংখ্যাই বেশি, তাই অনেক পাঠকেরই মনে হবে সোমনাথ তো আসলে তাকে নিয়েই লেখা।অসহায়ত্ব, অপারগতা, হতাশা আর দীর্ঘশ্বাসের মতো শব্দ গুলো বারবার নেমে আসে এদের জীবনে। পরিশেষে বলবো, সবার জীবনে একজন কমলা বউদি থাকুক, বড্ড প্রয়োজন তার মতো আশ্রয় আজকের সময়ে।
Was this review helpful to you?
or
দারুণ এক বই শংকরের । অনবদ্য লেখনী । একদিনেই পড়ে ফেলেছি । অসম্ভব ভালো লেগেছে । বাংলা সাহিত্যের ক্লাসিক মর্যাদা পাবে বলে আশা করি । দারুণ । অনবদ্য ।
Was this review helpful to you?
or
বই: জন-অরণ্য লেখক: শংকর ঘরানা: সামাজিক/জীবনধর্মী উপন্যাস পৃষ্ঠা: ১৬০ মূল্য: ২৫০ টাকা (রকমারি) "এও এক আদিম অরণ্য শহর কলকাতা অগণিত জীব পোশাকে-আশাকে মানুষের দাবিদার প্রকৃতি তালিকায় জন্তু মাত্র----।" সোমনাথ কবিতাটার নাম দিয়েছিল : জন-অরণ্য। হ্যাঁ, সোমনাথ, এক কবি সোমনাথ, যার কাব্যপ্রতিভার মৃত্যু ঘটেছে বেকারত্বের দংশনে। বাবা-মার আদরের ছোট ছেলে, সবাই ডাকে খোকন বলে। বড় দুই ভাই সমাজে প্রতিষ্ঠিত। একজন এম-ই, আরেকজন চার্টার্ড এ্যাকাউন্টেন্ট। শুধু সোমনাথের কপালটাই যেন পোড়া। গত আড়াই বছরে কয়েক হাজার চাকরির এ্যাপ্লিকেশন লিখেছে সোমনাথ, কিন্তু বিধিবাম। প্রিয়তমার দেয়া কবিতা লেখার কলম আজ চাকরির আ্যপ্লিকেশন লিখতে লিখতে ভোঁতা হয়ে গেছে। তবু মুক্তি মিলেনি বেকারত্বের অভিশাপ থেকে। সুকুমারের মতে, বেকার কথাটা বড্ড নেগেটিভ, ওরা হল গিয়ে চাকুরিপ্রার্থী। সুকুমার, সোমনাথের বেকার জীবনের বন্ধু। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ, রাইটার্স বিল্ডিং, ক্যালকাটা কর্পোরেশন সব জায়গায় চাকরির খোঁজে দৌড়ে বেড়ায়। এই সদা হাস্যোজ্জল ফসুকুমারের মুখের হাসি কেড়ে নিল ওই বেকারত্ব। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয় সোমনাথ, চাকরির পেছনে আর নয়, ব্যবসা করবে। কিন্তু কোন কিছুই কি আর সহজ এ জীবনে। হাজার মানুষের ভীড়ে নিজের জায়গা বানানো যে চাট্টিখানি কথা নয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পায়। সবশেষে মরিয়া হয়ে এমন কাজ করে ফেলে, যা করার কথা কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি। লেখক পরিচিতি : শংকর একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তাঁর আসল নাম মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল চৌরঙ্গী, সীমাবদ্ধ এবং জন অরণ্য। এই তিনটি বই নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট সম্মানে ভূষিত হন।(উইকিপিডিয়া) পাঠ প্রতিক্রিয়া: বহুদিন ধরে শুধু থ্রিলার এর মধ্যে ছিলাম। এখন আবার একটা দুটো ক্লাসিক পড়া শুরু করেছি। ছাত্রীর বাসায় বইয়ের তাকে রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, মানিক সমগ্রের সাথে লেখকের কয়েকটা বই চোখে পড়ল। উনি নাকি বেশ বিখ্যাত, অথচ নাম ই শুনিনি কোনদিন। বইটা হাতে কয়েক পৃষ্ঠা পড়ে ভালই লাগল, পড়ে ফেললাম। আশাহত তো হই ই নি, বরং ওদের বাসায় থাকা লেখকের বাকি বইগুলোও পড়ে ফেলব আশা করি। বইটার কাহিনি গতানুগতিক উপন্যাসের থেকে আলাদা। বেকার জীবনের কষ্ট, মানসিক টানাপোড়ন সব কিছু লেখক এত জীবন্ত করে তুলে ধরেছেন, অনুভব করা গেছে বিষয়গুলো। সুকুমারের জন্য বুকের ভেতর একটা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করেছি। কমলা বৌদিকে খুব ভাল লেগেছে। আমাদের দেশে এমন কত সোমনাথ রয়েছে, রয়েছে কত সুকুমার। বেকারত্বের অভিশাপে তিলে তিলে যারা এগিয়ে যাচ্ছে করুণ পরিণতির দিকে। কত প্রতিভাময় তরুণের প্রতিভাগুলো প্রতিনিয়ত পিষে যাচ্ছে ওদেরই পায়ের নিচে। আজ যে তরুণেরা নিত্য-নতুন চাকরির জন্য প্রস্তুত হতে একের পর এক কোচিং সেন্টারগুলোতে টাকা আর সময় ব্যয় করছে, তাদের পরিণতি সুকুমারের মত হতেই পারে। এমন নয় যে, বইটা না পড়লে আপনার জীবন ব্যর্থ, তবে পড়তেই পারেন, খারাপ লাগবেনা আশা করি। ব্যক্তিগত রেটিং : ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
আমি শংকরের অনেকগুলো বই পড়েছি। তবে এই বইটি আমার কাছে সেরা মনে হয়েছে। গভীর একটি উপলব্ধি আছে, আমাদের বাঙ্গালী সমাজ কেন এখন ব্যবসাবিমূখ, কেন এখন কর্মসংস্হান বলতে চাকরী পাওয়াটাকেই বুঝে, কেন উদোক্তা হতে সাহস পায়না প্রভৃতির সার্বিক একটি চিত্র তুলে ধরেছেন। বইটি এক পূজো সংখ্যায় প্রকাশ হয়, সত্যজিৎ রায় বইটি পড়ে এতই মুগ্ধ হয় যে, বইটির সিনেমাসত্ব নেবার জন্য সেইদিনই শংকরকে দুইবার টেলিফোন করেন। কিন্তু সেসময় শংকর বাইরে থাকাই তার স্ত্রী টেলিফোন কল রিসিভ করেন। উল্লেখ্য, সত্যজিৎ রায় এই বইটির উপর ভিত্তি করে তার বিখ্যাত “মিডলম্যান” সিনেমাটি নির্মাণ করেন। আমি নিশ্চিত এই বইটি পড়লে আপনি বিমোহিত হবেন, অবশ্যই নতুন করে ভাবতে শিখবেন।
Was this review helpful to you?
or
বিশিষ্ট সাহিত্যিক শংকর এর রচিত “জন-অরন্য” উপন্যাসটি পড়লাম।এ উপন্যাস সোমনাথ আর সুকুমারের মতন হাজার হাজার বাঙালি বেকার যুবকের, যারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা বড় অফিসের ম্যানেজার হওয়ার মতন যোগত্যা নিয়ে বড় হয়নি; অসাধারন মেধাবি হয় না সকলেই, অতি সাধারন মানুষই সর্বত্র ঘুরে বেড়ায়। এই অতি সাধারণের কাতারের লোক এই দুইজন যুবক, স্বপ্ন দেখে একটি চাকরির, না, বড় অফিসের বড় বাবু হওয়ার নয়, সামান্য কেরানির চাকরিতেই খুশি তারা; এই ধরনের ছোট স্বপ্ন দেখা তারা শিখে গেছে দু’বছর নানা জায়গায় ঠোকর খেতে খেতে। বিশ্বের সবচে ছোট প্রজাতন্ত্রের নাম কি, জাম্বিয়া কোথায় এই সব প্রশ্নের উত্তর না জানার আফসোসে চোখে পানি এসে যায় সুকুমারের, তাঁর বাবা যে সামনের মাসেই রিটায়ার্ড করবে, তখন সমস্ত সংসারের দায় ভার যে তাকেই তুলে নিতে হবে কাঁধে। সুতরাং তাকে বাড়াতে হবে জেনারেল নলেজ, পেতে হবে যে কোন মূল্যেই একটি চাকরি। তাই তো উপন্যাসের এক পর্যায়ে তাকে দেখা যায়, অফিস গমনে ব্যস্ত লোকদের থামিয়ে প্রশ্ন করতে – “আচ্ছা দাদা, চাঁদের ওজন কত আপনি বলতে পারবেন?” সোমনাথ ব্যবসা করবে বলে মনস্থির করে ফেলে কিন্তু সেই ব্যবসার পথও কি খুব মসৃণ? সে পথ কি সেই সব সাধারনের জন্যে, যারা তাদের মায়ের কাছে কথা দিয়েছিল তারা ভালো থাকবে, সৎ থাকবে? প্রথম ব্যবসা থেকে উপার্জিত টাকায় কেনা শাড়ি, মা-সমতুল্য বউদিকে দিয়েও কেন সোমনাথ বলে- “এই শাড়ি আপনি পড়বেন না বউদি, এই শাড়িতে অনেক নোংরা লেগে আছে?” কেন বলে? নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেও রাতের বেলায় বালিশে মুখ গুজে হু হু করে কেন কেঁদে ওঠে সোমনাথ? সেও কি তবে মিশে গেছে জন-অরণ্যে আর সবার মতন? তার শরীরেও কি লেগে গেছে এই নষ্ট সমাজের নোংরা কাদা? “জন-অরণ্য” উপন্যাসটিকে চলচ্চিত্রে রূপদান করে তাকে অমর করে রেখে গেছেন বিশ্ববরেণ্য চলচিত্রকার সত্যজিৎ রায়। উপন্যাসটি যখন দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তখন তুমুল আলোড়িত হয় সমগ্র বঙ্গ সমাজ, বাংলার লাখ লাখ বেকারদের নিয়ে এইভাবে এর আগে কেউ উপন্যাস লেখে নি। এই উপন্যাস পড়লে উপলব্ধি করা যায় বেকারত্তের জ্বালা বেকার হওয়ার রলাম।পাঠক আপনাদের কাছেও আশা করি ভাল লাগার মত একটি গল্প হবে।মিস করবেন না কিন্তু।