User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Shamim Reza

      21 Jan 2020 08:10 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চৌরঙ্গী হয়ত লেখকের আত্নজীবনী। বইটি সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর জনসম্মুখে নিয়ে আসার প্রয়াশ। বইটিতে জীবনযুদ্ধে বারবার হেরে যাওয়া মানুষের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে। হয়ত জীবন এমনি। ক্ষনিকের সফলতায় জীবনকে সার্থক মনে হলেও সামনে এগিয়েই আবার হোচট খেতে হয়। বইটি নিয়ে উত্তম কুমার অভিনীত একটি চলচিত্রও রয়েছে। যদিও উপন্যাস অবলম্বন এ বানানো কোন চলচিত্রই এপর্যন্ত উপন্যাসকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। যাইহোক এক কথায় অসাধারণ একটি বই।

      By Neel kontho

      10 Nov 2019 01:19 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      সোজা কথায় অসাধারন একটা বই ছিল।লেখক শংকর অনেকটা আত্মজীবনী হিসেবে বইটা লেখেন।সদ্য চাকরি হারানো এক যুবকের লড়াইয়ের গল্প।এখানে ওখানে মাথাঠুকে মরা এক যুবক অনেকটা ভাগ্যক্রমে চাকরি পায় কলকাতার বিখ্যাত হোটেল শাহজাহানে।সম্রাট শাহজাহানের মতই জৌলুশ ছিল সে হোটেলের।হোটেলের রিসেপশনিস্ট হিসেবে টেম্পোরারি জব পায় যুবকটি।সহকর্মী হিসেবে পাশে পায় নিজের বড় ভাইয়ের মত অসাধারন এক মানুষ স্যাটা বোসের।এ তো যেন হোটেল নয়,এ যেন এক শহর।নানা বর্নের নানান রকমের মানুষের নিত্য আনাগোনা।কত বিচিত্র ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় এ হোটেল জীবনে।পুরো বই জুড়ে দারুন সব ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হতে হবে পাঠক কে।চমৎকার গতিশীল লেখনী।পড়ে কখনো বিরক্ত লাগবেনা এমন বই।

    • Was this review helpful to you?

      or

      বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা মুগ্ধ করবে।।

      By Anik Hassan

      12 May 2019 06:31 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে বইয়ের নাম: চৌরঙ্গী লেখক: শংকর প্রকাশক:ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড খালি চোখে আমরা যা দেখি তা ই কি সব? না। বাইরে থেকে খালি চোখে আমরা যা দেখতে পাই তা একশ ভাগের কয়েক ভাগ মাত্র। এমন অনেক কিছু আছে যা বাইরে থেকে দেখা যায় না। সেগুলো দেখত হলে অন্দরে ঢুকতে হয়, অন্তরের চোখ খুলে তাকাতে হয়। ঠিক তেমনটাই হোটেল শাহজাহান এর বেলাতেও। বাইরে থেকে সর্বদা হাসিখুশি আর জাকজমকপূর্ণ হোটেলের অন্দরমহলে এক অন্য জীবন আছে। সেই জীবনটা সাধারণ মানুষ যা দেখে তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সেই জীবনে হাসি আছে, কান্না আছে, ভালোবাসা আছে, আছে বিশ্বাসঘাতকতাও। কিছুসময়ের জন্য সেই জীবনে ডুব দিতে চাইলে পড়ে ফেলতে পারো শংকরের লেখা 'চৌরঙ্গী' উপন্যাসটি। . ক্লাস আর বাসের চাপে পিষ্ট হয়ে জীবন যখন ওষ্ঠাগত তখনই খোঁজ পাই বেঙ্গল বইয়ের। সেখানে নাকি ফ্রি ফ্রি বই পড়া যায়। তারপর থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন বেঙ্গল বইয়ে যাওয়া রুটিন হয়ে যায়। আমি সেই সময়ের কথা বলছি যখন বেঙ্গল বইয়ে মোটা মোটা বই পড়া নিয়ে কোন রেস্ট্রিকশন ছিল না। বইয়ের তাক খুঁজতে খুঁজতে একদিন চোখে পড়লো বিভিন্ন রঙে রঙিন মলাটের একটা বই, নাম তার চৌরঙ্গী। লেখকের নাম শংকর। এত এত বই পড়া হয়ে গেল, কিন্তু এই লেখকের কোন বই পড়ি নি তখনো। তাই কিছুটা নতুন লেখা চেখে দেখার ইচ্ছা আর কিছুটা রঙিন মলাটের আকর্ষণেই তাক থেকে নামিয়ে নিলাম বইটি। একটা জায়গা খুঁজে নিয়ে বসলাম। প্রথম দুই তিন পৃষ্ঠা পড়ে একবার মনে হয়েছিল অন্য বই নিই। মন বিক্ষিপ্ত থাকার কারণে ভালো লাগছিল না। কিন্তু তারপরই আবিষ্কার করলাম বইটা না রেখে মোটেও ভুল করি নি। পড়তে পড়তে লেখকের সাথে ঢুকে গেলাম হোটেল শাহজাহান এর অন্দরে। শংকরের লেখা পড়া ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো লেগেছে তার গল্প বলার ধরণ। খুব সাবলীল বর্ণনার মাধ্যমে তিনি পুরো শাহজাহান হোটেলের অন্দরের খবর তুলে ধরেছেন। জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত এক সৈনিকের বায়রন সাহেবের হাত ধরে শাহজাহান হোটেলে ঢুকে পড়া থেকে শুরু করে বরখাস্ত হয়ে বেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত গল্পটা তিনি এমনভাবে লিখেছেন যে একবার শুরু করলে শেষ না করে উঠার উপায় নেই। পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল যেন আমি নিজেই ঘুরে বেড়াচ্ছি চৌরঙ্গীর আশেপাশে, শাহজাহান হোটেলের ভেতরে কিংবা হোটেলের সবচেয়ে উপরের তলার সেই ঘুপচি ঘরগুলোতে। সত্যসুন্দর বোস ওরফে স্যাটা বোস, মার্কো পোলো, পি সি গোমেজ ওরফে প্রভাত চন্দ্র গোমেজ, ডাক্তার সাদারল্যান্ড, করবী দেবী, শংকর, গুড়বেড়িয়া, জেন, নিত্যহরিদা ওরফে ন্যাটা, বায়রন সাহেব, কনি আর ল্যামব্রেটা, রোজী- শাহজাহান হোটেলের বুকে বিচরণ করে বেড়ানো প্রত্যেককে চোখের সামনে দেখছি বলেই মনে হচ্ছিল। উপন্যাসের শুরুটা হয় হুট করেই চাকরি হারিয়ে সেলসম্যানের কাজ শুরু করতে থাকা শংকরকে দিয়ে। অতীত জীবনে বায়রন নামের কোন এক কালো সাহেবের সাথে ভালো ব্যবহার করায় বায়রন সাহেবের হাত ধরেই তার প্রবেশ ঘটে হোটেল শাহজাহান এর অন্দরমহলে। তারপর একেকটি ঘটনার সাথে সাথে সমৃদ্ধ হতে থাকে তার অভিজ্ঞতার ঝুলি। হোটেল শাহজাহান এ কাজ করার সুবাদে সে দেখতে পারে সমাজের উঁচুতলার মানুষের মুখোশের আড়ালে তাদের আসল জীবন। আবার নানারকম কর্মচারীর সাথে মেশার সুবাদে দেখতে পারে মানুষগুলো কত সহজ সরল। তার এই উপলব্ধির প্রকাশ পাওয়া যায় একটি উক্তিতে - "কী আশ্চর্য এই পৃথিবী! বেঁচে থাকার সমস্যা সমাধান করতে করতেই কত নিষ্পাপ লোকের সমগ্র সামর্থ্য ব্যয়িত হচ্ছে; আর যাদের অন্নচিন্তা নেই, একঘেয়ে সুখে ক্লান্ত হয়ে তারা শখের সমস্যা তৈরি করছে।" হোটেল রিসেপশনিস্ট শংকরের দৈনন্দিন জীবনের বর্ণনার মধ্য দিয়ে লেখক মূলত আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোরই একটা চিত্র আঁকতে চেয়েছেন। সেই সাথে বুঝাতে চেয়েছেন কখনো কখনো নিয়তির কাছে খুব ক্ষমতাবান মানুষটিও অসহায়। যদিও সবাই একটা মেকি মুখোশে নিজের আসল চেহারাটা ঢেকে রাখে, কিন্তু কিছুটা সময়ের জন্য হলেও সেই মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায়। খুব সরল উক্তির মধ্য দিয়ে উপন্যাসের মাঝে মাঝেই তিনি কিছু কঠিন বাস্তব কথা তুলে ধরেছেন। উপন্যাসের একেকটি চরিত্রের জীবনের গল্প আমাদের একেকটি নতুন শিক্ষা দিয়ে যায়। সত্যি বলতে এক চৌরঙ্গী উপন্যাস আমাকে যা শিখিয়েছে, আর কোন বই পড়ে আমি তা শিখতে পারিনি। উপন্যাসের শেষটা হয় হোটেল শাহজাহান থেকে শংকরের বিদায় নেয়ার মাধ্যমে। প্রিয় মুখগুলোর একে একে বিদায়ের পর ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে শংকরকেও বিদায় নিতে হয় হোটেল শাহজাহান থেকে। শেষটা ঠিক শেষ এর মতই- আমার তাই মনে হয়েছে। কেউ যদি আমাকের একটা বই সাজেস্ট করতে বলে, আমি কোন দ্বিধা ছাড়াই বলি- শংকরের 'চৌরঙ্গী'। শংকরের অন্য বইগুলোও খুবই চমৎকার। তবে চৌরঙ্গী আমার মনে যে দাগ ফেলেছে তা অন্যগুলো পারেনি। তাই আমি সবাইকে বলব সময় পেলে বইটি পড়ে ফেলতে। আমি নিশ্চিত যে বইটি সবার ভালো লাগবেই।

      By OoS.S.oO

      11 Oct 2016 04:50 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      your review #রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা অল্প বয়সেই বাবার মৃত্যুর পর বেঁচে থাকার সংস্থানের আশায় লেখককে পৃথিবীর পথে নেমে পড়তে হয়েছিল । তারপর তো কত কিছুই করেছেন পেটের ক্ষুধা মেটাতে; কখনও প্রাইভেট টিউশনি, কখনও পাটের দালালের কেরানী, কখনও কোর্টের ব্যারিস্টারের বাবুগীরি, নয়তো বা বা ক্লিনারের কাজ । হোটেল শাজাহানে চাকরি পাওয়ার আগে করতেন ফেরিওয়ালার কাজ । অফিসে অফিসে গিয়ে ময়লা কাগজ ফেলার তারের ঝুড়ি বিক্রি ; প্রতি ঝুড়ির দাম এক টাকা , আর তাতে তার কমিশন চার আনা । কাহিনী একাংশ - “ .... ঝুড়ি হাতে আপিসে আপিসে ঘুরেছি আর বাবুদের টেবিলের তলায় তাকিয়েছি । অনেকে সন্দিগ্ধভাবে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘ ওখানে কি দেখছো? ‘ বলেছি, ‘ আজ্ঞে আপনার ছেঁড়া কাগজ ফেলবার ঝুড়িটা । ‘ সেটা জরাজীর্ণ দেখলে কি আনন্দই যে হয়েছে! বলেছি, ‘ আপনার ঝুড়িটার আর কিছুই নেই । একটা নতুন নিন না, স্যর । ‘ বড়বাবু ঝুড়িটার দিকে দৃষ্টিপাত করে বলেছেন, ‘ কন্ডিশন তো বেশ ভালোই রয়েছে । এখনও হেসে – খেলে বছর খানেক চলে যাবে । ‘ বড়বাবুর মুখের দিকে করুণভাবে তাকিয়ে থেকেছি । কিন্তু আমার মনের কথা তিনি বুঝতে পারেন নি । চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়েছে , ‘ ঝুড়িটার না হয় হেসে – খেলে আরও বছরখানেক চলে যাবে । কিন্তু আমার? আমার যে আর একদিনও চলতে চাইছে না । “ জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে যাওয়ার মতো জীবন সংগ্রামে লেখক যখন ক্লান্ত তখন নেহায়েত কপাল জোরে পেলেন অভিজাত হোটেল শাজাহানের রিসেপশনে চাকরি । তারপর কাউণ্টারের এপাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলেন নানা দেশের, রঙের মানুষদের; আরও একবার জানলেন কতো অদ্ভুত হয় মানুষের জীবন । চৌরঙ্গী সেসব অসামান্য গল্পেরই বর্ণনা। চৌরঙ্গী হোটেল ম্যানেজার মার্কোপোলো সাহেবের গল্প যিনি হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান তার প্রিয়জনকে কেবলই তাকে আরেকবার হারিয়ে ফেলার জন্য, কিন্তু খুঁজে পান না । আছেন সহকর্মী অসাধারণ এক মানুষ সত্যসুন্দর বোস, যার নামও এখন বদলে গেছে মিঃ স্যাটা-য় । তিনি যেন নেপথ্যের কোলাহলই কেবল, সবখানেই আছেন আবার কোন খানেই নেই । চৌরঙ্গী গ্রিক ভাস্কর্যের মতো অপরূপ সৌন্দর্যের মানুষ ডঃ সাদারল্যান্ডেরও গল্প । জীবন সমুদ্রে পথ হারিয়ে অন্যদের পথ দেখিয়ে বেড়ানো এক দিক শুন্য নাবিক তিনি । এক নম্বর স্যুইটে কোন কোন রাতে কালো চশমা চোখে এসে ওঠেন মধ্যবয়সী মিসেস পাকড়াশি, সমাজসেবী আর গুণী স্ত্রী হিসেবে যার জুড়ি মেলা ভার । তিনি আসার কিছুক্ষণ পর এসে হাজির হয় এক ইংরেজ যুবক – যার নাম রবার্টসন । দুই নাম্বার স্যুইটে স্থায়ীভাবে থাকেন করবী গুহ, যিনি প্রতি রাতে একবার মারা যান আবার বেঁচে ওঠেন সকালে । একদিন সুদূর স্পেন থেকে ধনী মাতালদের বিনোদন দিতে উড়ে আসে নর্তকী কনি, দ্যা উইমেন । অর্থের জন্য আলো আঁধারিতে সর্বাঙ্গে বেলুন পড়ে তাকে ঘুরে বেড়াতে হয় সমাজের নামকরা সব মানুষদের সামনে । মদ্যপ মানুষের হাতের খোঁচায় একে একে কমে আসে তার শরীরের বাস আর তা দেখে রাগে উন্মাদ হয়ে ওঠে কনির বামন সঙ্গি ল্যামব্রেটা । তারসাথে কনির সম্পর্ক কি তা কেউ জানে না । ওদিকে বেয়ারা গুড়বেড়িয়া স্বপ্ন দেখে সে বিয়ে করবে শাজাহানের দামি এক কেক দিয়ে । ব্যান্ড দলের সামান্য আয়ের প্রধান গোমেজ স্বপ্ন দেখে মোজার্ট, বিথোফেনদের মতো কেউ হওয়ার । ধুমকেতুর মতো এসে হাজির হন সুজাতাদি , বোসদা কে তিনি নতুন করে বাঁচতে বলেন । মুক্তির ডাক একদিন আসে বন্দিনী করবী গুহুর জীবনেও .. কি হয় তাদের? আছেন বুড়ো হবস, সরাবজি, রোজি, উইলিয়ম, লিজা সহ আরও অনেকে, প্রত্যেকে তাদের জীবনের নানা গল্প নিয়ে । চৌরঙ্গী উপন্যাস যেন বাস্তবের ব্যস্ত রাজপথ চৌরঙ্গীর মতোই এক জায়গা, যেখানে এসে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে মানুষের হাসি, কান্না, ভালোবাসা, পাওয়ার আনন্দ আর হারানোর বেদনার গল্প ... মানুষের গল্প । যে গল্পের শেষ নেই । বাংলা সাহিত্যের অসাধারণ এ ক্লাসিক দশকের পর দশক ধরে দুই বাংলার পড়ুয়াদের মুগ্ধ করে আসছে । আশা করি বইটা আপনারও ভালো লাগবে। বইয়ের নামঃ চৌরঙ্গী। লেখকঃ শংকর। দামঃ ২৯৮ ৳(রকমারি মুল্য)। বাংলাদেশী সংস্করণঃ দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড।

      By Md. Bayzeed Hossain

      26 May 2016 03:36 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Awesome Book..

      By Deepta

      11 Mar 2021 11:17 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      "সংসারের হোটেলখানায় কেউ কাউকে সার্ভ করে দিতে পারে না। আমরা কেবল ভালো ওয়েটারের মতো সামনে ট্রে ধরতে পারি, তার থেকে যার যা পাওনা তুলে নিতে হবে।"- চৌরঙ্গী (১৯৬২)" চৌরঙ্গী" কে বলা হয় মনিশংকর মুখোপাধ্যায়ের (যিনি শংকর নামে লেখেন) কলমের শ্রেষ্ঠতর লেখনী। পড়া শেষ করে আমি বরং বলবো বাংলা সাহিত্যের এক অদ্বিতীয় সৃষ্টি চৌরঙ্গী। অবশ্য যখন বইটা কিনছিলাম বইটির নাম ছাড়া আর কিছুই জানতাম না। ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত বইটির নিঁখুত বাঁধাই আর অনবদ্য প্রচ্ছদ দেখেই কেনা। চৌরঙ্গীর শুরু এভাবে...... "ওরা বলে এসপ্ল্যানেড। আমরা বলি- চৌরঙ্গী। সেই চৌরঙ্গীই কার্জন পার্ক। সারাদিন ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত শরীরটা যখন আর নড়তে চাইছিল না, তখন ওখানেই আশ্রয় মিলল।" উত্তম পুরুষের ব্যবহার দেখে ভাবছিলাম কোন আত্মজীবনীই হবে। কিছুক্ষণ পর এক প্রাইভেট ডিটেক্টিভের আবির্ভাবের পর ভাবলাম এই বুঝি গোয়েন্দা উপন্যাস। পুরোটা পড়া শেষে যদি কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবো এটা মানুষের গল্প। শংকর(লেখক) চাকরি করতেন আদালতের শেষ সায়েব (ইংরেজ) ব্যারিস্টারের অধীনে। ব্যারিস্টারের আকস্মিক মৃত্যু লেখককে বাধ্য করে ওয়েস্ট বাস্কেটের সেলসম্যানের ভূমিকা নিতে। পূর্বপরিচিত প্রাইভেট ডিটেক্টিভ বায়রন সাহেবের সাহায্যে লেখক চাকরি পান নামজাদা ও প্রাচীন এক পান্থশালা "হোটেল শাজাহান" এর আলো ঝলমলে দুনিয়ায়। আর এখন থেকেই শুরু মানুষের গল্প। প্রথমেই পরিচিত হবেন বায়রন সাহেবের সাথে। তিনি বেসরকারি গোয়েন্দা। অবশ্য ব্যোমকেশ বা ফেলুদার মতোন উপন্যাসের গোয়েন্দা নন। গল্পের মতো তার কাছে হরহামেশা ফোনকল আসে না বা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কোন রহস্যময় আগন্তুক বলে যান না তার রহস্য গল্প। শাজাহান উঁকি দিলে রিসেপশনে দাঁড়ানো যে লোকটি দেখবেন সে সত্যসুন্দর বোস অবশ্য হোটেলের মানুষের কাছে তিনি হয়ে গেছেন স্যাটা বোস। একসময় চোখভরা স্বপ্ন নিয়ে হোটেলে চাকরি করতে আসা মাঝবয়সী লোকটার উপরকার গাম্ভীর্য ভেদ করা গেলে পাওয়া যায় অন্য এক মানুষকে। ও হ্যাঁ শুরুতে লেখা উক্তিটি কিন্তু তারই। হোটেলের ম্যানেজারের নাম মার্কোপোলো, না ইতালীয় পর্যটক নন। বরং ভুল মানুষকে ভালোবেসে এখন সাঁতরে জীবন নদীর পাড় খোঁজার চেষ্টা করা এক পর্যটক। আছেন ন্যাটাহরি.. অবশ্য তার আসল নাম নিত্যহরি। জাতিতে ব্রাহ্মণ হলেও হোটেলের ধোপার কাজ করেন। তার ভাষায় হোটেলের পাপ ধুয়ে পরিষ্কার করেন। আরো আছেন বাজিয়ে প্রভাতচন্দ্র গোমেজ- তিনি যেন বধিরদের সামনে করেন সুরের সাধনা, বার ম্যানেজার সরাবজী - যার আসল নামও হারিয়ে গেছে সরাবের(মদের) আড়ালে। দুই নম্বর স্যুটে কান পাতলে হয়তো এখনো শুনবেন করবী গুহ নামের এক অখ্যাত হোস্টেসের আত্মহত্যার গল্প। আর টাইপ রাইটার মেশিনটা যেন খটখট শব্দ করে বলছে রোজী নামের এক আফ্রিকান মেয়ের জীবন সংগ্রামের কথা। চৌরঙ্গীতে আছে শাজাহানের অতিথিদের গল্পও। যেমন আছে একরাত্রের অতিথি ডাক্তার সাদারল্যান্ডের গল্প, যার বাবা-মা একসময় শাজাহান হোটেলে লাঞ্চিত হয়ে শেষ পর্যন্ত জীবনের খেলায় হেরে গেছেন। সাদারল্যান্ড এসেছেন সেই অতীতের খোঁজে। তেমনি আবার বহুরাতের অতিথি সুজাতা মিত্রের গল্পও! যিনি হোটেল শাজাহানেই পেয়েছেন তার জীবনের ধ্রুবতারা। সেসময় কলকাতায় ক্যাবারে ড্যান্স ছিল বেশ জনপ্রিয়। তেমনিও এক আইরিশ ক্যাবারে ড্যান্সার কনি ও তার বামন ভাই ল্যামব্রেটের করুণ গল্পও প্রায় পেয়েছে চৌরঙ্গীতে। ঠাঁই পেয়েছে সমাজের ভন্ড সমাজপতিদেরও প্রতিমূর্তি... এতো সব চরিত্রের বর্ণণা আর রিভিউ তে সম্ভব নয়। আমাদের প্রতিটা মানুষের জীবনেরই গল্প আছে। আমার, আপনার...সবার...। আমরা প্রায় সবসময় নিজের গল্পতেই ডুবে থাকি। তাই পরকে জানার সুযোগ পাই না। আত্মজীবনীতে সাধারণত নিজের গল্প লেখা হয়। কিন্তু নিজের গল্পই কি আমাদের জীবন... আশপাশের মানুষের গল্পগুলোও কি নয়?? আর এখানেই চৌরঙ্গী অনন্য। এ শুধু লেখকের গল্প না যেন আরো অনেকের গল্প যারা আমাদের ভেতরই আছেন, ছিলেন, থাকবেন। চৌরঙ্গীর সমালোচনা?? নাহ আমি বরং অনুযোগ করবো শুরু থেকে শেষ। শংকরের চৌরঙ্গীর মোড় থেকে আবার চৌরঙ্গীর মোড়ে ফিরে আসা পর্যন্ত সবটাই কেন জানি দুঃখ মাখানো!! আর মাঝে একটুখানি মরিচীকা। চৌরঙ্গী উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ ২০০৭ সালে পেয়েছে ভোডাফোন ক্রসওয়ার্ড বুক প্রাইজ। লেখক আর পাঠকের কল্পনা থেকে বেরিয়ে বার দুয়েক বন্দী হয়েছে রুপালী পর্দায়। প্রথমবার ১৯৬৮ সালে পিনাকী ভূষণ মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনা ও উত্তম কুমার, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ে চৌরঙ্গী নামেই। দ্বিতীয়বার ২০১৯ এ সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের এর নির্দেশনায় পরমব্রত আর আবিরের অভিনয়ে শাহজাহান রিজেন্সি নামে। দেখা নিতে পারেন মুভি দুটোও। বইয়ের নাম: চৌরঙ্গী লেখক: শঙ্কর প্রকাশক: ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৩৫০ মুদ্রিত মূল্য: ৩৫০

      By Kazi Asifuzzaman

      27 Jan 2019 01:17 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জানুয়ারি “ওরা বলে- এসপ্ল্যানেড। আমরা বলি- চৌরঙ্গী। সেই চৌরঙ্গীরই কার্জন পার্ক। সারা দিন ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত শরীরটা যখন আর নড়তে চাইছিল না, তখনই ওইখানেই আশ্রয় মিলল। ইতিহাসের মহামান্য কার্জন সাহেব বাংলাদেশের অনেক অভিশাপ কুড়িয়েছিলেন। সুজলা-সুফলা এই দেশটাকে কেটে দুভাগ করার বুদ্ধি যেদিন তাঁর মাথায় এসেছিল, আমাদের দুর্ভাগ্যের ইতিহাস নাকি সেই দিন থেকেই শুরু হয়েছিল।“ এভাবেই শুরু হয়েছে শংকরের জনপ্রিয় উপন্যাস 'চৌরঙ্গী'। পুরো নাম তাঁর মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। কিন্তু চৌরঙ্গী, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও কথামন্থনসহ বহু জনপ্রিয় উপন্যাসের স্রষ্টা পশ্চিমবঙ্গের এই লেখক পাঠকমহলে কেবল শংকর নামেই পরিচিত। ১৯৩৩ সালের ৭ ডিসেম্বর যশোরের বনগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আইনজীবী বাবা হরিপদ মুখোপাধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগেই চলে যান কলকাতার ওপারে হাওড়ায়। সেখানেই শংকরের বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা ও সাহিত্য সাধনার শুরু। জীবনের শুরুতে কখনো ফেরিওয়ালা, টাইপরাইটার ক্লিনার, কখনো প্রাইভেট টিউশনি, কখনো শিক্ষকতা অথবা জুট ব্রোকারের কনিষ্ঠ কেরানিগিরি করেছেন। এক ইংরেজের অনুপ্রেরণায় শুরু করেন লেখালেখি। ’চৌরঙ্গী’ লেখক শংকরের জনপ্রিয় একটি উপন্যাস। এটি ১৯৬২ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। উপন্যাসটি এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে ভারতীয় বিভিন্ন ভাষার পাশাপাশি বিদেশি বিভিন্ন ভাষায়ও তা অনূদিত হয়। উপন্যাসটির শতাধিক সংস্করণ চলছে। এ থেকেই পাঠকমহলে শংকরের জনপ্রিয়তার প্রমাণ মেলে। এ উপন্যাসের কতটি পুনঃমুদ্রণ যে হয়েছে তা শুনলে পাঠকরা সত্যিই অবাক হয়ে যাবেন। সত্যজিৎ রায় তাঁর কাহিনী অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন জন অরণ্য ও সীমাবদ্ধ এর মতো চলচ্চিত্র। শংকরের বিখ্যাত উপন্যাস চৌরঙ্গী নিয়েও তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি একটি নাটকও রচিত হয়েছে। চৌরঙ্গীকে বাংলা সাহিত্যের একটি ধ্রুপদী উপন্যাস মনে করা হয়। অরুণাভ সিনহা উপন্যাসটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। সেটি ২০০৭ সালে ভোডাফোন ক্রসওয়ার্ড বুক প্রাইজ জয় করে। এছাড়া ২০১০ সালে উপন্যাসটি ইন্ডিপেনডেন্ট ফরেন ফিকশন প্রাইজও জয় করে। চৌরঙ্গী চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন পিনাকি ভূষণ মুখোপাধ্যায়। ১৯৬৮ সালে মুক্তি পায় এই ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র। স্বয়ং উত্তম কুমার অভিনয় করেছে এই চলচ্চিত্রে। চৌরঙ্গী উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র স্যাটা বোসের চরিত্রে অভিনয় করেন মহানায়ক। এছাড়াও চলচ্চিত্রের অন্যান্য মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অঞ্জনা ভৌমিক, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। ছবিটির জনপ্রিয়তার কথা ভেবে বর্তমান দর্শকদের জন্য সৃজিত মুখোপাধ্যায় ‘চৌরঙ্গী’ ছবিটি নতুন করে বানিয়েছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের গল্পটা ২০১৮ সালের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে।” ‘স্যাটা বোসের চরিত্রে দেখা যাবে আবীর চট্টোপাধ্যায়কে এবং শংকরের চরিত্রে পরমব্রতকে। চরিত্রগুলো একরকম থাকলেও, সমসাময়িক আর্থসামাজিক অবস্থানেই এগোবে ছবির চিত্রনাট্য। 'চৌরঙ্গী' উপন্যাসটি অনেকটা লেখকের নিজের জীবনের একটি অধ্যায়ের কাহিনী। লেখকের জীবন যে কম বৈচিত্র্যময় নয় তা তাঁর ভ্রমণ কাহিনীগুলো পড়লেই বোঝা যায়। সেই লেখক বালক বয়সে কলকাতায় হাইকোর্ট দেখতে এসে কলকাতাতেই থিতু হন, যার উল্লেখ আছে লেখকের ’কত অজানারে' বইতে। অল্প বয়সেই বাবার মৃত্যুর পর অন্ন সংস্থানের আশায় লেখককে পৃথিবীর পথে নেমে পড়তে হয়েছিল। তারপর তো কত কিছুই করেছেন ক্ষুধা মেটাতে; কখনও প্রাইভেট টিউশনি, কখনও পাটের দালালের কেরানী, কখনও কোর্টের ব্যারিস্টারের বাবুগীরি, নয়তো বা ক্লিনারের কাজ। কলকাতায় এসে সায়েব ব্যারিস্টারের কাছে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। আনন্দেই কাটছিলো দিনগুলো। হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে গেলো। লেখকের আশ্রয়দাতা ব্যারিস্টার সায়েব মারা গেলেন। লেখক পড়লেন অকুলপাথারে। বিশাল কলকাতা-সমুদ্রে লেখক হাবুডুবু খেতে লাগলেন। একটা চাকরির জন্য তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরতে লাগলেন। শেষমেশ, জীবিকার তাগিদে সেলসম্যান হলেন, ঝুড়ি বিক্রি করা শুরু করলেন। অফিসে অফিসে গিয়ে ময়লা কাগজ ফেলার তারের ঝুড়ি বিক্রি। প্রতি ঝুড়ির দাম এক টাকা, আর তাতে তার কমিশন চার আনা। “ ... ঝুড়ি হাতে আপিসে আপিসে ঘুরেছি আর বাবুদের টেবিলের তলায় তাকিয়েছি। অনেকে সন্দিগ্ধভাবে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘ওখানে কি দেখছো?‘ বলেছি, ‘আজ্ঞে আপনার ছেঁড়া কাগজ ফেলবার ঝুড়িটা।‘ সেটা জরাজীর্ণ দেখলে কি আনন্দই যে হয়েছে! বলেছি, ‘আপনার ঝুড়িটার আর কিছুই নেই। একটা নতুন নিন না, স্যর।’ বড়বাবু ঝুড়িটার দিকে দৃষ্টিপাত করে বলেছেন, ‘কন্ডিশন তো বেশ ভালোই রয়েছে। এখনও হেসে–খেলে বছরখানেক চলে যাবে।' বড়বাবুর মুখের দিকে করুণভাবে তাকিয়ে থেকেছি। কিন্তু আমার মনের কথা তিনি বুঝতে পারেননি। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়েছে, ‘ঝুড়িটার না হয় হেসে–খেলে আরও বছরখানেক চলে যাবে। কিন্তু আমার? আমার যে আর একদিনও চলতে চাইছে না।“ জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে যাওয়ার মতো জীবন সংগ্রামে লেখক যখন ক্লান্ত, তখন হঠাৎ উদয় হলেন বায়রন সাহেব। একদিন ঝুড়ি বিক্রি করে ক্লান্ত হয়ে চৌরঙ্গীর কার্জন পার্কে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ করেই লেখকের সাথে তাঁর অতি পরিচিত বায়রন সাহেবের সাক্ষাৎ। বায়রন সাহেবের অনুরোধে ‘শাজাহান’ হোটেলের ম্যানেজার লেখককে হোটেলে চাকরি দেন। নেহায়েত কপাল জোরে অবশেষে পেলেন অভিজাত হোটেল শাজাহানের রিসেপশনে চাকরি। তারপর কাউন্টারের এপাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন নানা দেশের, নানা রঙের মানুষদের; আরও একবার জানলেন কত অদ্ভুত হয় মানুষের জীবন। চৌরঙ্গী সেসব অসামান্য গল্পেরই বর্ণনা। চৌরঙ্গী হোটেল ম্যানেজার মার্কো পোলো সাহেবের গল্প, যিনি হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান তার প্রিয়জনকে; কেবলই তাকে আরেকবার হারিয়ে ফেলার জন্য, কিন্তু খুঁজে পান না। আছেন সহকর্মী অসাধারণ এক মানুষ সত্যসুন্দর বোস, যার নামও এখন বদলে গেছে মি. স্যাটা বোসে। তিনি যেন নেপথ্যের কোলাহলই কেবল, সবখানেই আছেন, আবার কোনোখানেই নেই। চৌরঙ্গী গ্রিক ভাস্কর্যের মতো অপরূপ সৌন্দর্যের মানুষ ড. সাদারল্যান্ডেরও গল্প। জীবন সমুদ্রে পথ হারিয়ে অন্যদের পথ দেখিয়ে বেড়ানো এক দিকশূন্য নাবিক তিনি। এক নম্বর স্যুইটে কোনো কোনো রাতে কালো চশমা চোখে এসে ওঠেন মধ্যবয়সী মিসেস পাকড়াশি, সমাজসেবী আর গুণী স্ত্রী হিসেবে যার জুড়ি মেলা ভার। তিনি আসার কিছুক্ষণ পর এসে হাজির হয় এক ইংরেজ যুবক, যার নাম রবার্টসন। দুই নাম্বার স্যুইটে স্থায়ীভাবে থাকেন করবী গুহ, যিনি প্রতি রাতে একবার মারা যান, আবার বেঁচে ওঠেন সকালে। একদিন সুদূর স্পেন থেকে ধনী মাতালদের বিনোদন দিতে উড়ে আসে নর্তকী কনি, দ্য উইমেন। অর্থের জন্য আলো আঁধারিতে সর্বাঙ্গে বেলুন পরে তাকে ঘুরে বেড়াতে হয় সমাজের নামকরা মানুষদের সামনে। মদ্যপ মানুষের হাতের খোঁচায় একে একে কমে আসে তার শরীরের বাস, আর তা দেখে রাগে উন্মাদ হয়ে ওঠে কনির বামন সঙ্গী ল্যামব্রেটা। তার সাথে কনির সম্পর্ক কী তা কেউ জানে না। ওদিকে বেয়ারা গুড়বেড়িয়া স্বপ্ন দেখে সে বিয়ে করবে শাজাহানের দামি এক কেক দিয়ে। ব্যান্ড দলের সামান্য আয়ের প্রধান গোমেজ স্বপ্ন দেখে মোজার্ট, বিথোফেনদের মতো কেউ হওয়ার। ধুমকেতুর মতো এসে হাজির হন সুজাতাদি, বোসদাকে তিনি নতুন করে বাঁচতে বলেন। মুক্তির ডাক একদিন আসে বন্দিনী করবী গুহুর জীবনেও। কী হয় তাদের? আছেন বুড়ো হবস, সরাবজি, রোজি, উইলিয়ম, লিজা সহ আরও অনেকে; প্রত্যেকে তাদের জীবনের নানা গল্প নিয়ে। চৌরঙ্গী উপন্যাস যেন বাস্তবের কলকাতার ব্যস্ত রাজপথ চৌরঙ্গীর মতোই এক জায়গা, যেখানে এসে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে মানুষের হাসি, কান্না, ভালোবাসা, পাওয়ার আনন্দ আর হারানোর বেদনার গল্প, মানুষের গল্প। যে গল্পের শেষ নেই। বইটিকে শুধু উপন্যাস বললে ভুল হবে, গভীর জীবনবোধের আশ্চর্য দলিল এই বইটি। এতে বহু লাইন আছে যেগুলো পাঠককে গভীরভাবে ভাবাবে, কাঁদাবে, হাসাবে, জীবনকে নতুন করে চিনতে সেখাবে। যারা জীবন সংগ্রামে ক্লান্ত, তাদের নতুন আশার আলো দেখাবে চৌরঙ্গী। বইটি থেকে কয়েকটি লাইন এখানে তুলে ধরা হলো। "পৃথিবীর এই সরাইখানায় আমরা সবাই কিছুক্ষণের জন্য আশ্রয় নিয়েছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ব্রেকফাস্ট খেয়েই বিদায় নেবে, কয়েকজন লাঞ্চ শেষ হওয়া মাত্রই বেরিয়ে পড়বে। প্রদোষের অন্ধকার পেরিয়ে, রাত্রে যখন আমরা ডিনার টেবিলে এসে জড়ো হবো তখন অনেক পরিচিতজনকেই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না; আমাদের মধ্যে অতি সামান্য কয়েকজনই সেখানে হাজির থাকবে। কিন্তু দু:খ কোরো না, যে যত আগে যাবে তাকে তত কম বিল দিতে হবে।" এ বই না পড়া যেন পাঠকের জন্য অপূরণীয় এক ক্ষতি। এক নজরে চৌরঙ্গীঃ বইয়ের নামঃ চৌরঙ্গী লেখকঃ শংকর (মণিশংকর মুখোপাধ্যায়) প্রথম প্রকাশঃ ১৯৬২ প্রকাশনীঃ দে'জ পাবলিশিং বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশঃ ২০১০ বাংলাদেশের প্রকাশনীঃ দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউ পি এল) প্রচ্ছদঃ অজিত গুপ্ত মূদ্রিত মূল্যঃ ৪০০ টাকা রকমারি মূল্যঃ ২৯৮ টাকা। রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/80192/chowringhee?ref=null

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!