User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
গল্পগুলো ছোট হওয়াতে পড়তে ভালো লাগবে। খুব দ্রুত পড়ে ফেলতে পারবেন। অসংখ্য লেখকের গল্প এক বইয়ে সংকলন করা আছে। যাদের ধৈর্য কম তাদের জন্য বেস্ট। আপনারাও পড়ে দেখতে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ লিখেছেন : ফুয়াদ আল ফিদাহ এই বই টা বাতিঘর প্রকাশনীর ২য় থ্রিলার গল্প সংকলন। প্রথমটা বেশ ভাল ছিল। এটা তারচেয়েও ভাল হইছে। মোট ১৮ টা গল্প নিয়ে এই বই। এরমধ্যে অনুবাদ ৬ টা আর ১২ টা মৌলিক লেখা। আগের বই টার তুলনায় এটাতে মৌলিক লেখা বেশি দেখে ভাল লাগল। আগের সংকলনের প্রায় ১:১ অনুপাত টা এখানে নাই। আমাদের লেখকদের লেখাই বেশি - ব্যাপারটা খুবি আশাপ্রদ। ১ম গল্পটা স্টিফেন মিলহসারের আইজেনহাইম দ্য ইলিউশনিষ্ট এর অনুবাদ। অনুবাদ করেছে রবিন জামান খান। গল্পটা আইজেনহাইম নামের এক জাদুকর কে নিয়ে। তবে এই বই টা থ্রিলার কম আর হরর বা আধিভৌতিক মনে হয়েছে আমার কাছে। অনুবাদ চমতকার হয়েছে। তবে পরের গল্পটা নিজের লেখা বলে শব্দ চয়নে পার্থক্য পরের টা পড়লেই বুঝা যায়। ২য় গল্পটা রবিন জামান খানের নিজের লেখা - হোমিসাইড। বেশ ছোট একটা গল্প। খুব একটা স্পেশাল কিছু না। ইংরেজী ব্যবহারটা বেশী হয়েছে। বাংলির কথোপকথনে ইংরেজী একবারেই ভাল লাগে না। স্পাই থ্রিলার টাইপের এই গল্পটা শুরু হবার আগেই শেষ। প্রধান চরিত্রের সাথে মোলাকাতই হল না। ৩য় গল্পটাও রবিন জামান খানের নিজের লেখা - কুইন অফ হার্টস। এই গল্পটা ভাল হইছে। ভাল বলতে জটিল হইছে। তবে আগের টার মত এইটাতেও একের পর এক ইংরেজী বুলি ছন্দপতন করছে। ঘটনাটাও মজার - পরকীয়ায় আসক্ত এক নারীর স্বামী তার স্ত্রীকে খুন করার জন্য ভাড়াটে খুনির শরণাপন্ন হয়। কিন্তু ডিল ফাইনাল করার আগেই জানতে পারে ওকে খুন করার জন্যই খুনি বিশাল অঙ্কের টাকা দেয়া হয়েছে, এরপর? আরেক্টা কথা বাংলাদেশের এক্টা জায়গা আর একজন ব্যক্তিকে নিয়ে এক্টু মজা করা হয়েছে। ব্যাপারটা ভাল লাগে নাই বলতে পারলে খুশি হইতাম, কিন্তু আসলে মজাই পাইছি। ৪র্থ গল্পটা শরীফুল হাসানের - রাইটার্স ব্লক, অরিজিনাল লেখা। আমার প্রিয় এক লেখকের খুব ভাল এক্টা গল্প। তবে এটাও আধিভৌতিক মনে হইছে। গল্পটা এমন এক বেষ্ট সেলার লেখক কে নিয়ে লেখা যে একে একে ৭ টা বেষ্ট সেলার লিখে এখন বসে গেছে। অষ্টম বইটা লেখার জন্য গ্রামের বাড়িতে গিয়েই পড়ে নাটকীয় এক অভিজ্ঞতার মধ্যে। চরম গল্প। তবে এক্টু খটকা লাগছে। লেখক নাকি (গল্পেরটা, আসল জন না) ৩য় প্রজন্মের, এতে ১ম প্রজন্মের অবদান নেই। কিন্তু গল্পটা অন্য কথা বলে। ৫ম গল্প শরীফুল হাসানের অরিজিনাল - ব্ল্যাক মেইল। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এক নারী - নায়লা আঞ্জুম এর ডা: আহমেদ করিম। নায়লার সমস্যা ও দুই স্বামী কে দেখে। একজন সুদর্শন আর আরেকজন পেটমোটা মাঝবয়সী। সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে বের হয় ব্ল্যাক মেইলের এক মজার কাহিনী। বই টার শুরু হুমায়ুন আহমেদ এর অন্যভুবনের মত, শেষ শরীফুল হাসানের ব্ল্যাক মেইলের মত . ৬ষ্ঠ গল্প শরিফুল হাসানের অরিজিনাল - দ্বিতীয় জীবন। এতক্ষণে এসে একটা গল্প পেলাম যার নাম ইংরেজী তে না . তবে এই গল্পটা অনেক দুর্বল, লেখকের কাছে আশা আরো বেশি ছিল। গল্পটার প্রধান চরিত্র আজমল করিম নামে একজন লেখক যে তার সস্তা লাইলী মজনু টাইপ বই এর জন্য পরিচিত। এই গন্ডি থেকে বের হয়ে আসার জন্য নতুন উপন্যাস লেখার সিদ্ধান্ত নেই, তার তখনই হয়ে যায় গোলমাল, হারিয়ে ফেলে নিজের পরিচয়। গল্পটাকে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার বলা যেতে পারে। ৭ম গল্প আমার আরেক প্রিয় লেখক তানজিম রহমানের অরিজিনাল - ওকামের উল্টা ক্ষুর। ওকামের ক্ষুর কি বা তার উল্টা ক্ষুর কি তা বলব না। পড়লেই বুঝে যাবেন। লেখক আমাকে হতাশ করেন নি। তবে যে নামে গল্পটা লিখেছেন তাতে নিজেই ধরা খেয়ে গেছেন। এন্ডিংটা প্রডিক্টেবল। ৮ম গল্প কুইন্ট সি পার্কের দ্য টাইস দ্যাট বাইন্ডস আস এর অনুবাদ। অনুবাদক তানজিম রহমান। জটিল গল্প। দুই আপনার আমার মত মানুষকে দুই লাইনের মধ্যে কোল্ড ব্লাডেড কিলার বানান, আবার মাফিয়া আততায়ীর সাথে সাইকোপ্যাথের দ্বন্দ্ব - ইন্টারেষ্টিং না? আর ঠিক করছি ইনার অনুবাদ নিয়ে কোন কথা বলব না, ধরে নিবেন খুব ভাল (অটো চয়েস) ৯ম গল্প মাইকেল আর. ড্যানিয়েল পামার এর ডিসফিগারড, একই অনুবাদকের অনুবাদ। এক প্লাষ্টিক সার্জনের কাছে এক উঠতি তারকার আগের দিন এক চিঠি আসে। তার ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিডন্যাপারদের দাবি অই তারকার চেহারা অবশ করে দিতে হবে, নইলে তার ছেলের রক্ষা নেই। কি করবে? আর তার বউ এর ভূমিকাই বা এতে কি? গল্পটা ভাল। অল্প সময় আর অল্প জায়গার পরিসরে বেশ ভাল দৌড়াদৌড়ি আছে। তবে কিছুটা প্রেটিক্টেবল। অনুবাদ এর ব্যাপারে ত বলেই ছি। ১০ম গল্প জাহিদ হোসেনের অরিজিনাল নার্সিসাস। এই বইটা গল্প বলার ছলে লেখা, যদিও পরের দিকে গিয়ে উপস্থাপন ভংগি অনেক পরিবর্তিত হয়ে যায়। গল্পটার প্লট টা ব্যতিক্রমী, সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। তবে লেখা ভাল। এক্টু খটকা আছে যে টানা টানা চোখ আর পাতলা ঠোট নিয়ে কেউ মাচোম্যান এর প্রতিকৃতি কিভাবে হয়। আর লেখক এখানে এক্টা স্টেরিওটাইপ ব্যবহার করেছেন যা সবক্ষেত্রে সত্যি নয়। সব মিলিয়ে ভাল লেখা, যদি ছোট খাট ডিটেইলস নিয়ে চুলকানী না থাকে ত। ১১তম গল্পও জাহিদ হোসেনের - দ্য আগলি। ব্যাংকের কর্মকর্তা ইয়াকুব। নির্বিরোধী, চুপচাপ, শান্ত। সাত চড়ে যার রা নেই। আওবাই উপহাস করে তাকে নিয়ে। কিন্তু সে শান্তভাবেই মেনে নেয় সব। কিন্তু এই নির্লিপ্ততা কি আসলেই সত্য না এর পিছনে ভয়ংকর কোন সত্য লুকিয়ে আছে? জাহিদ হাসানের আরেক্টা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। ফ্লাশব্যাক স্টাইলে লেখা। মুটামুটি ভাল। ১২ তম গল্প জেফরি ডিভার দ্য মর্নিং সোলজার, অনুবাদক জাহিদ হোসেন। রক্ষনশীল পরিবারের শান'ত, সুবোধ মেয়ে গোয়েন। বাবা মার কথার বাইরে এক্টুও যায় না। এমন শান্ত মেয়ের দিকেই নজর পরে মানসিক ভারসাম্যহীন হার্লের। উত্ত্যক্ত করতে থাকে তাকে। মেয়েকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর রন। হঠাত জানা যায় হার্লে খুন হয়েছে। দায় চাপে রনের কাঁধে। সমস্যা একটাই, খুন টা সে করে নি। আরেক্টা খুব ভাল ছোটগল্প। অনুবাদ ও খুব সাবলীল। পছন্দের অনুবাদকের তালিকায় নতুন একটা নাম যোগ হল। ১৩ তম গল্প সালেহ তিয়াসের দি টেল অব দি স্ট্রেঞ্জ কিস - অরিজনাল। ইন্টারনেট এ উনার লেখা অনেক পাওয়া যায়। এখানে যে গল্প টা আছে তা আমার একদমই ভাল লাগে নি। লুতুপুতু গাঁজাখুরি গল্প বলে মনে হয়েছে। তবে উনার লেখার হাত ভাল। এই গল্পটা এই বই এ থাকার মত মনে হয় নি, এই যা। ১৪তম গল্প কামরুন নাহার এর অণুতে একাকীত্ব। আরেক্টা অরিজিনাল। ভালবাসার মানুষকে হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারায় বন বিভাগের কর্মকর্তা আনন্দ। সবার ধারনা নিজের স্ত্রীর হত্যাকারী সে নিজেই। মেন্টাল হসপিটালে তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে ডা: রোকন। কিন্তু কাহিনী যতই আগে বারে, ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। প্রেমের গল্প মনে হয়েছিল প্রথমে, কিন্তু এক্টু আগাতেই গল্পটা থ্রিলার বলে মনে হয়েছে। সুন্দর লেখা। তবে কিছু বানান আর কিছু গ্রামাটিক্যাল ভূল আছে ছাপায়। ভাল এক্টা লেখা। ১৫ তম গল্প প্রান্ত সাহার মৌলিক লেখা প্রমান। এই গল্প নিয়ে অনুভূতি মিশ্র। গল্পটার থিম বা প্লট টা ভাল লাগছে কিন্তু বাকি সব এক্টু কষ্টকল্পিত মনে হয়। লেখার হাত ভাল, কিন্তু আরেক্টু মাথা খাটিয়ে লিখতে ভাল হত। ১৬ তম গল্প নওশের ডনের পনজি স্কিম, মৌলিক লেখা। পিরামিড স্কীম নিয়ে লেখা একটা ছোট গল্প। উল্লেখযোগ্য কিছু আছে বলে মনে হয় নাই। ১৭ তম গল্প স্টিভেন মিলহসারের ইনভেনশন ফ্রম আউটার স্পেস এর অনুবাদ, অনুবাদক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। ভিনগ্রহ থেকে আসা ধুলার এককোষী প্রাণীর পৃথিবী দখলের কাহিনী। আগেও কোথাও পরেছি সায়েন্স ফিকশন হিসেবে। থ্রিলার বা সায়েন্স ফিকশন কোন দিক দিয়েই ভাল লাগে নাই। ১৮তম ও শেষ গল্প হল এডগার এ্যালান পো'র টেইল টু টেল হার্ট এর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কর্তৃক করা অনুবাদ। গল্পটা আগেই ইংরেজীতেই পড়েছি। এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির এক অসহায় বুড়োকে হত্যা করে ধরা পরার গল্প। ইংরেজীটা আগে পড়ে ফেলার কারনে অনুবাদটাকে এক্টু শক্ত বলে মনে হইছে। আমার মত - অধিকাংশ গল্পই ভাল। বিশেষত রবিন জামান খান, তানজিম রহমান, শরিফুল হাসান তাদের উপর যে ভরসা ছিল তার মান রেখেছেন। নতুন পড়া লেখকদের মধ্যে জাহিদ হোসেন, কামরুন নাহার এর লেখা ভাল লাগছে। তবে আশাহত হইছি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর কোন মৌলিক লেখা না পেয়ে - লটারি গল্পটা খুবি ভাল ছিল। বাতিঘরের ছাপাখানার ভুত এখানেও তার উপস্থিতিরর প্রমাণ রাখছে - হায়দার হয়ে গেছে হায়দায়, ভয়াবহ হইছে ভয়াভহ। আরও অনেক ছোট খাট ভুল নজরে আসছে। থ্রিলার বলতে আমি বুঝি যে গল্প আমার মধ্যে শিহরণ জাগায়। কয়েক্টা গল্প আমার কাছে ঠিক থ্রিলার বলে মনে হয় নি। তবে এটা একান্ত অভিমত। অনেক বড় লেখা হয়ে গেছে, মাঝে মাঝে হয়ত এক্টু শক্ত কথা বলে ফেলেছি। তাই লেখাটাকে একটা অভিমত হিসেবে সবাই নিবেন বলে আশা করি। আমার রেটিং - ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
কিছু মৌলিক আর কিছু ছোট গল্প দিয়ে সাজানো গল্প সংকলন, একটা ভালো উদ্যোগ। এখানে শুধু মৌলিক গল্পগুলো নিয়ে কিছু বলতে ইচ্ছে হচ্ছেঃ ১। হোমিসাইড : রবিন জামান খান ভালো গল্প জমাতে চেয়েছেন লেখক, আরো পরিনত হতে হবে। লেখা অনেক কাঁচা। ২। কুইন অব হার্টস : রবিন জামান খান একই কথা প্রযোজ্য, টুইস্ট পেলে ভালো লাগে তবে উদ্ভট টুইস্ট কিংবা আরোপিত টুইস্ট কাম্য নয়। বোঝা যাচ্ছে লেখক অনেক মাথা খাটাচ্ছেন টুইস্ট খুঁজে বের করতে। আরো চমৎকার টুইস্ট আশা করি তার কাছে। ৩। রাইটার্স ব্লক : শরীফুল হাসান এই ভদ্রলোক সাম্ভালা ট্রিলজি লিখে ট্রিলজির ইতিহাস গড়েছেন, আর বাতিঘর প্রকাশনীও ট্রিলজির সূতিকাগার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে! গল্পটা কিভাবে লিখেছেন জানি না, এতো উদ্ভট আইডিয়া মানুষের মাথায় কিভাবে আসে কে জানে। তবে লেখা শেষ না করা উঠা যাবে না। শেষের টুইস্ট ইমপসিবল! উনি ফ্যান্টাসী ঘরানায় থাকলে ভালো করবেন মনে হয়। ৪। ব্ল্যাকমেইল : শরীফুল হাসান উনি কি হুমায়ুন আহমেদ হতে চাচ্ছেন? আহমেদ করিম চরিত্রটা কী মিসির আলীর মতো? না! চমৎকার গল্প। প্লাস। ৫। দ্বিতীয় জীবন : শরীফুল হাসান আহমেদ করিম, নতুন চরিত্র, কিন্তু ভালো লাগছে। গল্পটা সুন্দর, শেষটা আন্দাজে থাকলেও পড়তে খারাপ লাগে নি। ৬। ওকামের উল্টো খুর : তানজীম রহমান সুপার শুরু হয়েছিল গল্পটার, শেষটায় কিছুটা হতাশ হলেও ভালো লেগেছে। নামকরনের সার্থকতা জানি না, তানজীম ভালো লিখেছেন। ৭) নার্সিসাস : জাহিদ হোসেন চমৎকার গল্প, শুধু শেষটা সাধারন, লেখক একটু মনোযোগ দিলেই আরো ভালো করতে পারতেন। ৮। দ্য আগলি : জাহিদ হোসেন ভালো গল্প, ভালো লেগেছে। ৯। টেল অব দি স্ট্রেঞ্জ কিস : সালেহ তিয়াস রূপকথার মতো, সুন্দর, সালেহ অনেকদূর যাবেন। ১০। অনুতে একাকীত্ব : কামরুন নাহার এখনকার থ্রিলার জগতে সবাই লেখিকা, হারি পটার, হাঙ্গার গেমস, টোয়ালাইট তাদের অনবদ্য সৃষ্টি, আমাদের এখানেও ভালো মিস্টরি/থ্রিলার গল্প লিখতে পারেন এমন কেউ আছেন তাহলে। গল্পটা চমৎকার। ১১। প্রমান : প্রান্ত সাহা দুজন চরিত্র, কোথাও যেতে হবে না। এক ঘরেই সব কিছু, খুন আর হত্যা রহস্যের সমাধান, চমৎকার গল্প। ১২। পনজি স্কিম : নওশের ডন বুঝলাম না, আপাতত এটুকুই বলতে পারছি।
Was this review helpful to you?
or
ছোটগল্প আমায় তেমন টানেনা। একমাত্র ব্যাতিক্রম সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ রায়ের যে কোন গল্পই আমার পাঁচের অধিকবার পড়া। আমার কাছে থ্রিলার মানে হচ্ছে ৫০০/৭০০ পৃষ্ঠার ঢাউস সাইজের কোন বই যা নিয়ে আমি মেতে থাকব ৩/৪ দিন। গতবছরে বাতিঘর প্রকাশনী যখন থৃলার গল্প সংকলন প্রকাশ করল তখন বেশ আশা নিয়েই পড়েছিলাম। কিন্তু ৩/৪ টি গল্প ছাড়া আর কোনটিই আমার তেমন ভালো লাগেনি। এই বছরের থৃলার গল্প সংকলন-২ প্রকাশের আগে সংকলনের পেছনের কাহিনী এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শুনে আবার আগ্রহ হয়ে কিনে ফেলি। বাতিঘর একটি বেশ ভালো ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে আর তাহল প্রতি বছরেই একটি করে থৃলার গল্প সংকলন প্রকাশ করা। বলা তো যায় না, আজ থেকে ৪/৫ বছর পরে হয়তো এই সংকলন বাংলা থৃলারের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠবে। আর তখন দেখা যেতে এই পুরানো সংকলনগুলো আউট অফ মার্কেট। ঠিক যেমন দ্য দান্তে ক্লাব বর্তমানে বাজারে নেই। তাই এই থৃলার-২ কেনা। আর সবার প্রতি অনুরোধ রইল আমার নিম্নের রিভিউকে অতোটা প্রাধান্য না দেয়ার জন্য, কারন শুরুতেই বলেছি ছোট গল্পে আমার এলার্জি আছে। তাই আমার এই রিভিউ একটু চাঁছাছোলা হতে পারে। ১) হোমিসাইড : রবিন জামান খান বিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. জাফরের বাড়ী নিরাপত্তা বেষ্টিত। কিন্তু তারপরও একটি গাড়ি পাগলা গতিতে এসে বাড়ির প্রধান ফটকে ধাক্কা দিলো। আহত আরোহীকে ভিতরে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপর?? গল্প টৃলোজি কখনো শুনেছেন!!? অন্তত আমার মনে পড়ছে না। রবিন জামান খানের থৃলার-১ সংকলনের 'সুইসাইড' নামক গল্পের দ্বিতীয় পর্ব। গল্পের কাহিনী একক। প্রথমটা না পড়া থাকলেও সমস্যা হবে না। তবে পড়া থাকলে আরো বেশী ভালো লাগবে এবং তৃতীয় পর্বে হয়ত কোন রেফারেন্স চলে আসতে পারে। তাই সুইসাইড পড়ে নেয়া উচিত। এই গল্পের কাহিনী সাধারন। কিন্তু লেখক অনেক সুন্দরভাবে কাহিনীকে শেষের দিকে নিয়ে গেছেন। এই গল্প টৃলোজির শেষ পর্বের জন্য অপেক্ষায় রাখতে লেখক বাধ্য করলেন। আমার রেটিং- ৪/৫ ২) কুইন অব হার্টস : রবিন জামান খান বিশিষ্ট শিল্পপতি মাহবুব সাহেব মুখোমুখি বসে আছেন এক পেশাদার খুনির। একজনকে খুন করতে হবে। কিন্তু খুনির ভাবসাবই সুবিধের গতিক হচ্ছে না তাঁর কাছে। তিনি কি ফাঁদে পড়তে যাচ্ছেন? অনেক ভালো একটা গল্প। বেশ সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলেছেন লেখক। লেখকের কৃতিত্ব প্রায় পুরো সময় আমাকে একটু ধোকায় রাখার জন্য। ফিনিশিং টা সাধারন এবং কমন ধরনের হলেও ভালো লেগেছে। এই সংকলনের সেরা গল্পগুলোর একটা। আমার রেটিং- ৪/৫ ৩) রাইটার্স ব্লক : শরীফুল হাসান এক বেস্টসেলার লেখক। সাত/সাতটি বেস্টসেলারের পর তাঁর কলমের কালি যেন ফুরিয়ে গেছে। তিনি মারাত্মক মানসিক যাতনায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে গেলেন জীবনের সেরা উপন্যাস লেখার জন্য। কিন্তু তিনি নিজেই উপন্যাস হয়ে যাবেন !!! খুবই হালকা মেজাজে, ডিমেতালে আগানো হলেও পুরো সময়ই পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে বাধ্য এই গল্পটি। লেখকের দারুন লেখনীর জন্যই অনেক সুন্দর লেগেছে এই গল্পটি। তবে এই গল্পের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিকটি হল, গল্পের ফিনিশিং। এক কথায় দুর্দান্ত ফিনিশিং। আমার রেটিং-৪/৫ ৪) ব্ল্যাকমেইল : শরীফুল হাসান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নায়লা রাতে ঘুমানোর সময় হেলুসিনেশনে তাঁর স্বামীর যায়গায় অন্য আরেকজনকে দেখতে পায়। আসলেই কি হেলুসিনেশন? না অন্য কোন গভীর কিছু? এই সংকলনের আমার দৃষ্টিতে সেরা গল্প। কাহিনী ভালো, গল্পের ডেভেলপমেন্ট চতুরতার সাথে গড়েছেন লেখক। ফিনিশিং এক কথায় এক্সিলেন্ট। ফিনিশিংটা যদিও একটু বেখাপ্পা মানে ইউজুয়াল না, কিন্তু এটা তো কেবলই ফিকশন। আমার রেটিং- ৪.৫/৫ ৫) দ্বিতীয় জীবন : শরীফুল হাসান বাজারে লেখক আজমল করিম নিজের সাহিত্যিক ব্যর্থতায় এক অপরিসীম মানসিক কষ্টে ভুগছেন। হঠাৎ তিনি হারিয়ে গেলেন অন্য জগতে। তাঁর দ্বিতীয় জীবনের কাহিনী শুরু হয়। শরীফুল হাসানের অপর দুটি গল্প হতে এই গল্প বেশ দুর্বল লেগেছে আমার কাছে। কাহিনী সাদামাটা। কাহিনী তৈরীতে লেখকের বেশ ভালই প্রচেস্টা করেছেন কিন্তু আমার মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমার রেটিং- ৩/৫ ৬) ওকামের উল্টো খুর : তানজীম রহমান আনাম শেখ নিজের মৃত্যুর পরিকল্পনা করছেন। তাঁর সামনে তিনজন। সবাইকে একটি করে মিস্ট্রি থ্রিলার বলতে হবে যার সমাধান আনাম শেখ দিবেন। যার গল্পের সমাধান তিনি দিতে পারবেন না তাকেই তিনি সুযোগ দিবেন খুন করার!! তানজীম রহমানের একটা বেশ ভালো গল্প। গল্পের মাঝামাঝি অংশে আমি তো মন্ত্রমুগ্ধের মত ৩/৪ পৃষ্ঠা পড়েছি। ফিনিশিং আরো ভালো হতে পারত। তারপরও ঠিক আছে। আমার রেটিং- ৪/৫ ৭) নার্সিসাস : জাহিদ হোসেন তানজীম হঠাৎ করেই নিজের চোখের সামনে এমন কিছু দেখতে পাচ্ছে যা তাকে ভিতরে ভিতরে কাপিয়ে দিচ্ছে। ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সে আবার ফিরে যাচ্ছে তার ছোটবেলার শহরে। গল্পের শুরুটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল, কাহিনীর গতিপ্রকৃতি ভালই ছিল তবে শেষের পাতা আমার ভালো লাগেনি। খুবই কমন ফিনিশিং। তবে লেখকের প্রচেস্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। আমার রেটিং-৩/৫ ৮) দ্য আগলি : জাহিদ হোসেন ইয়াকুব অফিসে সবার কাছে হাসির পাত্র। নিয়তির পরিহাসেই হোক বা তার দোষেই হোক সে সবসময় প্রতিকুল পরিস্থিতির স্বীকার হয়। কিন্তু মনের মধ্যে সে রাগ পুষতে থাকে। জাহিদ হোসেনের অপর গল্প নার্সিসাসের সাথে এই গল্পের বেশীরভাগই মিলে যায়। আমার কাছে নার্সিসাসের পরপরই এই গল্প পড়ার কারনে হয়ত একদমই ভালো লাগে নাই। আমি আসলে একই লেখকের একই ধরনের দুইটি গল্পের এই সংকলনে স্থান পাওয়ার কোন যৌক্তিকতা খুজে পেলাম না। আমার রেটিং-২/৫ ৯) টেল অব দি স্ট্রেঞ্জ কিস : সালেহ তিয়াস শফিক প্রায়ই তার স্ত্রী তাসমিমের সাথে ঝগড়া করে বের হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। লং ড্রাইভ শেষ করে কিছুক্ষন পরে ফিরে আসে বাসায়। কিন্তু আজ ফিরে এসে স্ত্রীকে সে পেল আরেকজন পুরুষের সাথে। খুবই ভালো একটি সাইকো থ্রিলার। আমার খুব ভালো লেগেছে। পুরা গল্পই আমার মনোযোগ ধরে রাখতে পেড়েছে। মাঝে দুই পৃষ্ঠায় একটু বেশী ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে যা উপন্যাসের জন্য ঠিক আছে, কিন্তু গল্পে অত বেশী ব্যাখ্যা ভালো লাগে না। আর শেষের দিকে এসে লেখক বড় একটা টেকনিক্যাল ভুল করেছেন। অনেকেই হয়ত ধরতে পারবেনা তাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা যায়। আমার রেটিং-৪/৫ ১০) অনুতে একাকীত্ব : কামরুন নাহার আনন্দ তার স্ত্রী অনুর মৃত্যুতে বর্তমানে মানসিক রোগি হিসেবে এক চিকিৎসালয়ে চিকিৎসাধীন। কিন্তু অনুকে সে হারিয়ে ফেলেনি। অনু এখনো তার কাছে আসে। আরেকটি সাইকো থ্রিলার এবং ভালো গল্প। তবে কাহিনী সাধারন। ফিনিশিং বেশ ভালো লেগেছে। আমার রেটিং-৩.৫/৫ ১১) প্রমান : প্রান্ত সাহা টেবিলে একজনের লাশ পড়ে আছে। মুখোমুখি বসে আছে বিখ্যাত গোয়েন্দা সিজার মিলান এবং গল্পের নায়ক। মিলান দায়ী করছে নায়ককে এই খুনের জন্য, কারন সমস্ত প্রমান আছে তার কাছে। অপরদিকে নায়কও ছেড়ে দেয়ার পাত্র নয়। এক মনস্তাত্ত্বিক খেলায় মেতে উঠে এই গল্পের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র একে অপরকে ফাসানোর চেস্টায় মত্ত। নতুন যারা এই সংকলনে লিখেছেন তার মধ্যে এই গল্পটিই আমার দৃষ্টিতে সেরা। কারন এই গল্পে লেখক সকল যৌক্তিক কারন দেখিয়েই ফিনিশিং এ পৌছেছেন। ভালো কাজ দেখিয়েছেন লেখক। আমার রেটিং- ৪/৫ ১২) পনজি স্কিম : নওশের ডন এই গল্পের নামকরনের কারনে চরম আকর্ষন থাকা সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত গল্পের মেইন থিম আমি ধরতে পারিনি। আমার রেটিং-১.৫/৫ এছাড়াও এই সংকলনে নিম্নলিখিত অনুদিত গল্প রয়েছেঃ স্টিভেন মিলহসার : আইজেনহাইম দ্য ইল্যুশনিস্ট (অনুবাদঃ রবিন জামান খান) কুইন্ট সি পার্ক : দ্য টাইস দ্যাট বাইন্ড আস (অনুবাদঃতানজীম রহমান) মাইকেল আর ড্যানিয়েল পামার: ডিসফির্গাড (অনুবাদঃতানজীম রহমান) জেফরি ডিভার : দ্য নিলিং সোলজার (অনুবাদঃ জাহিদ হোসেন) স্টিভেন মিলহসার : ইনভেশন ফ্রম আউটার স্পেস (অনুবাদঃমোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) এডগার অ্যালান পো : টেল টু টেল হার্ট (অনুবাদঃমোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) অনুবাদগুলোর মধ্যে আমার কাছে বেশী ভালো লেগেছে টেল টু টেল হার্ট এবং দ্য নিলিং সোলজার। পুরো সংকলন নিয়ে মতামতঃ থৃলার গল্প সংকলন-২ নিঃসন্দেহে প্রথম সংকলন থেকে অনেক ভালো হয়েছে এবং আমি নিশ্চিত ভবিষ্যতে আরো ভালো সংকলন পাব আমরা। নতুন লেখকদের নতুনত্ব নিয়ে আনার জন্য মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনকে ধন্যবাদ। আর লেখকদেরও সাধুবাদ দিচ্ছি তাঁরা বেশ নতুন কিছু আইডিয়া নিয়ে এসেছেন বলে। আশা রাখছি ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন ভালো ভালো লেখক আরো দারুন গল্প নিয়ে সংকলনের স্থান নিবেন। বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ বাতিঘরের।