User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

    • Was this review helpful to you?

      or

      ঝরা পাতার তদ্রা গায়ে মেখে বাক্সবন্দী বকুলের ঘ্রাণে মন সাগরের জল থৈ থৈ । ছুটে চলা মুক্ত সময়ের সঙ্গী হয়ে উড়ে চলছে অক্ষরের প্রজাপতি। "চতুর্মাত্রিক ব্লগ সংকলন ২০১৪" সেই অক্ষর প্রজাপতির আবাস। প্রজাপতিকে ছুঁয়ে দেখলাম চোখের আলোয়, মনের অন্ধকার অক্ষরের বর্ণীল শৈলীতে আবিষ্কার করে চললো ভোরের শিশির! দীঘির নীল পদ্ম, পৌষের সাঁঝের মায়া আবার কখনোও এক ফালি রদ্দুর! ধীরে ধীরে রোদের গায়ে শুকিয়ে যাওয়া শিশির কণা সুখের বাষ্পে ঝরনা হয়ে ওঠে ওই অক্ষরের মায়ায়! পাঠ পুনরাবৃত্তি ভালোলাগার সিন্ধুকে আগলে রাখা নীল খামের চিঠির মত মনের শেকড় আঁকড়ে ধরে। "চতুর্মাত্রিক" শব্দটা শুধুমাত্র বিনোদন, অবকাশ যাপন অথবা সৃষ্টিশীলতার মাধ্যম নয়। আমার কাছে চতুর্মাত্রিক মানে আমার আমিকে খুঁজে পাওয়া, অচেনা প্রিয় মানুষদের মনের আঁকিবুঁকিকে নিজের সাথে মিলিয়ে নেয়া। একটা শব্দতেই এর অস্তিত্ব মাপি " আপন"। সংকলনের প্রতিটি শব্দে আমি আপনের আপনাকে খুঁজে চলি। অনুভব করি শব্দ, মন আর মেধার ঐক্যতান। গল্প, মুক্তগদ্য, কবিতা, রম্য, ছড়া আর প্রবন্ধের অপূর্ব বন্ধন জড়িয়ে আছে শুধু বইয়ের পাতাতেই নয়, বরং মনের ভাঁজে। গল্প যেন শুধু গল্প নয় অল্প কথার সত্য মোহময়! শ্রদ্ধেয় "বাপী হাসান" এর রূপান্তর গল্প পাঠে আমার এমনটাই মনে হয়েছে । বাপীদার অনুবাদ অথবা রূপান্তর সর্বদাই মৌলিকতার সুরে রাঙ্গানো। ফারুক আবদুল্লাহ মত করেই বলতে হয় "আপনার হাত প্রিজমের মত- ওতে ছায়া পড়েনা, স্বরের ভেতরে সাতরং।" সাত রংরের ছায়াতে পাঠের শুরু। তারপর ভেসে চলা রাস্তার সোডিয়াম আলোতে ফুলার রোডের জারুল গাছতলার জমাট অন্ধকারের পাখির ডানা ঝাপটানো শব্দে। কমলের হাসির সাথে মিশে থাকা শ্লেষ সোডিয়ামের আলো অথবা জমাট অন্ধকারেও টের পাওয়া যায়। অনুধাবন করি এক অনন্য সাধারণ বহিঃপ্রকাশ। "এ শহরে ঢোকার রাস্তা আছে, বের হবার পথ নেই। আমরাও জঞ্জাল বাড়াব, হাসপাতালের দেয়ালে লেপটে থাকা দূষিত কফের মতো ঝুলে থাকব এখানে" -- মোস্তাফিজ রিপন জারুল গাছের অন্ধকার আর কৌশিকের দৃষ্টি মনে গেঁথে ডুব দিলাম "ছায়া দর্জি " এর কারুকাজে। সে ছায়া আটকে গেছে মগজের খাঁজে। গল্পকার শুক্ম চিন্তনে ভাবনার খোরাক আটকে দিয়েছেন গল্পের ভাঁজে। বইয়ের পাতায় পাতায় মায়ার ছায়া, গাঁয়ের ছায়া রোদ উঠনের একটুকরো শীতল পাটির, পুকুর ধারে শিউলি গাছটার পাতাঝরা শব্দ ছায়া । গল্পকার "আহমাদ আবদুল হালিম" গল্পের গায়ে সযত্নে গল্পের ছায়া জড়িয়েছেন। সে ছায়ার মায়া আচ্ছন্ন হয় পাঠকের পাঠতৃপ্তি আবার প্রবল ভাবে আচ্ছন্ন হই ছায়াহীন কায়ার বার্তায় । "উঠে দাড়া। হাটি হাটি পায়ে আয় বারান্দায়। দেখ, নিজে দাড়িয়ে আছি আমি। চাঁদের আলোয় আজ কোন ছায়া পড়েনি আমার " - হামিম কামাল তারপর এগিয়ে চলি " শুন্য হতে বিন্দু- বিন্দু হতে শুন্যে"। "আরন্যকের পাতার শব্দ আমাকেও ঘুম পারিয়ে দিল " "স্বপ্ন না সত্যি ভাবতে থাকি । মানুষ ঈশ্বরকে কল্পনা করছে না ঈশ্বর কল্পনা করছে মানুষকে ? কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে একটা বিন্দুর কথাই মনে পড়ে। বিন্দু যার দৈর্ঘ্য প্রস্থ বেধ কিছু নেই"--- ইমতিয়াজ মীর্জা "ভোরের অধিগ্রহণে" এ আকাশের কিছুটা আবীর জাহানারার চোখে প্রতীক্ষার রশ্মি আঁকে । "তুই ও পারলু না মা" হাজেরার প্রতি জাহানারার আদ্র কণ্ঠের একটি বাক্যে আক্ষেপ, যাতনার, পুনরাবৃত্তির প্রতিধ্বনি হয়। কখনও একটি উচ্চারণই পারে ঘৃণা কিংবা ভালবাসার ভাব বুঝাতে । "সাইফ মাহমুদ শাওন" এর গল্পে " তুই রাজাকার" শব্দ লক্ষ প্রনের ঘৃণা হয়ে ঝরে পরে হেকমত উল্লার গায়। সে ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ প্লাবনের ধারার মত। মনের জামানো ক্রোধ কিছুটা হলেও শান্ত করে । লেখক "কয়েস সামী " তাঁর গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন একজন লেখকের সার্থকতা আর কষ্টের যুগলকে। যুগলবন্দী রেখা মনের গভীরে উৎসারিত করে এক আপন বলয়। পারুলের প্রতি জেগে ওঠা সহানুভূতি এক সময় মায়া হয়ে ছায়া ফেলে লেখকের সৃষ্টি লেখক চরিত্রের উপর । "মুক্তি" "মানসাঙ্ক " "প্রাপক প্রিয় রওশন আরা " " হন্তারক " "নাল পিরান" " শঙ্খবাস" "মফিজুলের খোয়াবনামা" এ ৭ টি গল্পের একটি অন্তমিল আছে। সে দিকে নাই বা গেলাম তার চেয়ে গল্পের উপসংহারে চোখ বুলাই আমি চাই মুক্তির জীবনে অনেক উদার কোন পুরুষ আসুক। সেই পুরুষ তার উদারতা, বিশালতা দিয়ে মুক্তির সব দুঃখ ভুলিয়ে দিক। আমি হয়তো মুক্তিকে প্রকৃতপক্ষে ভালোবাসিনি অথবা আমি হয়তো ভালো বাসতেই শিখিনি! -----------(গল্প ) "মুক্তি" "দিদি, ভুল মানুষের ছবি মনে একে ঘরের মানুষের সাথে যাপিত জীবনের চেয়ে, মনের মানুষের পাশে থেকে ভালোবাসার কাঙাল হওয়া অনেক সহজ জীবনরে।এমন ভিখারিকে কৃষ্ণ কিছুতেই মনের আড়ালে রাখতে পারবে না" ---------( গল্প) "মানসাঙ্ক" এই চিঠিটা আগামীকাল বনানী গোরস্থানে আপনার কবরে আমি দিতে চাইব, জানি না পারবো কিনা। তবে চিঠিটা আপনি পড়বেন সেই আসাতেই লিখছি। কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি যদিও, জানবেন আপনাকে ভালোবাসি। অবশ্য আমার বিশ্বাস আপনি জানেন এই কথা। বিদায় রওশন আরা, বিদায় আমার ৯৩ বছর বয়সী বন্ধু ! ভালো থাকুন, যেখানেই থাকুন না কেন ! -------- (গল্প) "প্রাপক প্রিয় রওশন আরা " এদিকে খুব আবছায়া ভাবে ভেসে আসছে যুথির চিৎকার। "তারেক, এই যে এখানে আমি। এই যে আমার হাত। উঠে আসুন। আমার হাত আকরে ধরুন" । অনেক চেষ্টার পর, শেষ পর্যন্ত তারেক একটা হাত আঁকড়ে ধরতে পারল- সে জানেনা কার হাত ওটা । মাঝি না যুথির? তবে পানির নীচেও ডুবে যেতে যেতে বুঝতে পারল কোমল ফর্সা একটা হাত। হাতটা স্পর্শ করেই বুঝতে পারল এটা আর কারো নয় তানাকার হাত। তানাকা তাকে আঁকড়ে ধরে ডুবে যেতে চাইছে" --------(গল্প )"হন্তারক" ঈদের সকালে হারানের ঘুম ভাঙলো মায়ের ডাকাডাকিতে। চোখ ডলতে ডলতে সে দেখলো বাবা দাড়িয়ে, হাতে একটা প্যাকেট। হারানের সদ্য ঘুম ভাঙা চোখটা হঠাৎ ঝপসা হয়ে উঠলো, জ্বরটা বোধ হয় এই মুহূর্তেই ছেড়ে গেছে, বমি পাচ্ছে না আর। বাবার ভরাট কণ্ঠটা কানে এসে বাজছে- "আব্বা দ্যাখো তোমার নাল -----------(গল্প ) "নাল পিরান" ঘরের মধ্যে যেন বজ্রপাত হয়। কালামের বুকের ভেতর সবকিছু যেন দুমড়ে মুচড়ে যায়। জ্বালা করে উঠে চোখ। আলগা হয়ে আসে হাতের বাঁধন। রাতের নিকষ কালো আঁধারে এক ঝলক সাদা আলোতে জরির চোখে মুখে মাখা পরিতৃপ্তির কোমলতায় কালামের সম্বিৎ ফেরে, সে শক্ত করে আকরে ধরে জরি কে। ঝড় উঠেছে উঠুক না, থেমেও যাবে, এ তাদের বহু যত্নে গড়া সংসার , কোন ঝড়ের সাধ্যই নেই ভাঙ্গার। এই ঝড়ের জন্য তারা কেউ দায়ী না । -----------(গল্প) "শঙ্খবাস" শেষ থেকে মন আবারো ধাবিত হয় শুরু তে। মাঝ পথে আটকে পড়ে শুধুই কি চোখ ? " মফিজুলের খোয়াবনামা" পুরানো কাগজপত্রের স্তূপে বন্দী স্বপ্নের নাম। অনমনে আমিও বলি "সেকি তোমার বাঁশির সুরের অমোঘ টান ? আমি জানি না, জানলে না তুমিও!" "আমি কত ভেবেছি; শহরটা প্যারিস হলে কি হত? সেইনের ওপর বয়ে যাওয়া ব্রিজ পার হতে হতে কিংবা ভেসে থাকা বোটে আলোকময় আইফেল, নটরড্যাম দেখতে দেখতে; অথবা শাসেলিঝের সারিবদ্ধ বৃক্ষরাজির কমলা রঙের পাতা বেয়ে নেমে আসা বৃষ্টি বিন্দুতে সিক্ত হতে হতে আমি কত উত্তর খুঁজেছি ! " ---------(গল্প) "মফিজুলের খোয়াবনামা" । গল্পের গদ্যময়তা পেরিয়ে আমি ছুটে চলি মুক্তগদ্যের সম্ভারে! এক অনবদ্য সৃষ্টির মায়াজালে আবিষ্কার করি নিজেকে। 'নির্ঝর নৈঃশব্দ্য" ঠিক যেমন করে লিখেছেন "শাহরিক ধুলো আর বালি যখন আটকে যায় চিরলোলুপ চাঁদ আর চন্দ্রের আনন্দবিহারে- আমার মনে পড়ে বিনোদিনী বালা, হরমতী, পার্বতী, জহ্নবী ছায়া যে তটে পড়ে আছে বনাঞ্চল, বিক্ষত শর আর পাঞ্চলীর আঁচলের চুলি" "লুনা রুশদী " অদ্ভুত সুন্দর করে জানিয়েছেন স্বপ্নের সীমানার হাতছানির কথা। অক্ষরের জালে আমি যেন শুনি তার কথা " তোমার গলার স্বর আমার কাছে মাঝে মাঝে কফির কাপের ধোঁয়ার মতন মনে হয় । যা আস্তে আস্তে বাতাসে মিশে কেমন যেন নাই হয়ে যায়। কিন্তু থাকে--- টিনের চালে অস্থির শান্তির মত নেমে আসে অঝোর হয় আমার সামনের বালির মাঠে - যাকে আমি দেখি না" । আচ্ছন্নতার গন্ধ মেখে আমি একে একে পার করি বাঁক। কবি " মেঘ অদিতি" এর মতন আমার ও ইচ্ছে হয় " জানালার পাশে যে গাছটা প্রায়ই উঁকি দিয়ে দেখতে চায় আমাকে, তাকে ইচ্ছে করে বলি , একদিন দুজনে মিলে সাঁতরাবো চল। সামলে নেই নিজেকে। থাক, ও তাহলে থাম্বস আপের রহস্য বুঝে যাবে ঠিক! আর হয়ত জেনে যাবে কাঁপুনি এলে আমিও এপিলেপটিকের মতই মুখে ফেনা ঘুমিয়ে পরি যখন তখন --- যেখানে---- সেখানে"। "মধ্যবর্তী স্টেশনে আলগুলো অচেনা হলুদ" জেনেও খুঁজে চলি জোনাকের মফস্বল । "আব্দুল্লাহ বিন হোসাইন ' এর অনবদ্য মুক্তগদ্য এক! "আমারা চোখ জ্বালা নিয়ে ফিরে যেতাম ঐ মধ্যবর্তী স্টেশনে ডিপোজিট হত, অলীক আবেগ যত" অলীক আবেগ সঙ্গে নিয়ে গদ্যকার "মাহবুব ময়ূখ রিশাদ" এর উচ্চারনে চমকে ওঠে মন " মেয়েরা কষ্ট পেতে পেতে এভাবে জমে যায়, জমে গিয়ে আটকে যায়, না এগিয়ে কোথাও যেতে পারে, না পিছিয়ে কোথাও পালাতে পারে" । তারপরও ছুটে চলি কোন এক হরিৎ বিকেলের সন্ধানে। "মৃন্ময় মিজান" তাঁর লেখনিতে ছড়িয়ে দিয়েছেন আলো আঁধারির বিবিধ বয়ন। সে আলোতে খুঁজে ফিরি শৈশব " আমাদের শৈশব সেই আধো জাগরণগন্ধী সুপুরুষ সন্তময় হয়ে বেয়ারী বিলের ছনক্ষেতে ঝরে পরে হঠাৎ শালিখ হয়ে হেসে ওঠে , সুর তোলে গেয়ে যায় ঘুম পড়ানি স্বপ্নময় বাস্তবতা" "ভালবাসা অথবা ভ্রান্তিতত্ব " রম্য রচনায় ফুটে উঠেছে ভালো বাসার রকমফের ! সত্য, বিদ্রুপ আর স্বাগত স্বরে স্পষ্ট ধরা পরে অসাধারন হিউমার। সংকলনের শক্ত অবস্থান ফুটে উঠেছে প্রবন্ধ - নিবন্ধ এ "চাষির মুখের টপ্পা গাওয়ায় " স্বনামখ্যাত লেখক আবদুশ শাকুর তুলে ধরেছেন গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি, প্রথা, ঋতুর আবর্তন আর উৎসবের কথা । ফুলে ফলে সমাদৃত বাংলার লোক ঐতিহ্য ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনীতে । "আকাশ অম্বর" নিপুন শৈলীতে ফুটিয়ে তুলেছেন " বাংলার ভাব এবং ইমন জুবায়ের " এর কথা । তাঁর লেখনীতে উঠে এসেছে শ্রদ্ধেয় লেখক ইমন জুবায়ের রচিত "আমার তো কপিলে বিশ্বাস " " "শরৎ বাউল ' " প্রেরিত পুরুষ " "পূর্বাহ্নের আগুন" "শেষ দৃশ্য কবি" " আকাশে মনি মালার মুখ" এর ভিত্তিতে বাংলার ভাবের স্পষ্ট ধারনা । " সাহিত্যে বাংলা ভাষার পথ পরিক্রমা " প্রবন্ধে বাংলা ভাষার বিবর্তন যেমন তুলে ধরা হয়েছে তেমনি বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন চর্যাপদ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, বৈষ্ণপদ থেকে উদ্ধৃত প্রঞ্জল বর্ণনা প্রবন্ধে সরস আবহ সৃষ্টি করেছে । উঠে এসেছে প্রাচীন কালে ব্যবহৃত গদ্যের দুরূঢ় বাক্য গঠন ।রাজার কাছে রাজার লেখা চিঠিটি একটি স্পষ্ট নমুনা সেই কঠিনতর বাক্য ভাবের প্রকাশের! "হদয়ে লালিত লালন" প্রবন্ধে মরমিয়া বাউলের ছন্দ ভাসে । মানের কোনে আবারো প্রশ্ন জাগে " আমি কে ! আমি কে! " প্রানের কোনে দ্বার খোলে লালনের আপার সৃষ্টি " আছে যার মনের মানুষ আপন মনে সে কি আর জপে মালা। নির্জনে সে বসে বসে দেখছে খেলা " "বাণীব্রত রায় " তার লেখনীতে তুলে ধরেছেন কালো বর্ণের সাদা মানুষ ডেনিস মুকওয়েগে এর কথা । লেখনীতে ফুটিয়ে তুলেছেন মানবতার কথা, মানুষের কথা ঠিক তেমনি " তাহসিন রেজা" অরহান পামুকের লেখা থেকে তুলে ধরেছেন "বই "এর কথা । কত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন "আপনার পকেটে অথবা ব্যাগে একটা বই থাকা মানে আপনার অধিকারে আরও একটা জগৎ আছে" । বই এর শব্দ ছবিতে ভর করে এবার কবিতার ভুবনে ঘুরে আসা। যেখানে কবি আন্দালীব বলেছেন " শেষমেষ গ্যাসোলিনই সত্য, গতি নির্ভর এই পৃথিবীতে আর রাষ্ট্র নায়কেরা পিস্তলেরো। ফলে বুদ্ধি ব্যতিত আর কিছু হারাবার নেই " তবুও পৃথিবী মায়াময় কবি "নম্রতা" বলেছেন , "তাও এখানে দাড়িয়ে আছি দুহাতে পাহাড় সরাতে সরাতে একে একে আঙ্গুল ফুরিয়ে যায় আঙুল ফুরিয়ে হাত টানা চোখ, কাঁধের ঢেউ " ইসতিয়াক অয়ন তার কবিতায় এঁকেছেন মানচিত্রের রেখা। যেখানে কাঁটাতারে বিদ্ধ মানবতা প্রহসন হয়ে কড়া নারে মনের অতলে " ধীরে ধীরে তেজগাঁও কাওরান বাজার থেকেও শব্দ ভেসে আসে ভেসে যাওয়া বস্তির ধার থেকে হুহু করে কাঁদে বস্তি বাসীর দল! হু কেয়ারস? এস নীপবনে --- মনের শ্লেষ বাক্য হয়ে ধরা দিলে এমনই হয় ! যেটা কবি তার মনের আঁচরে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন " তদন্ত কমিটি" তে "সরকারের আদমীরা উর্ণনাভের মত অস্তচক্রে শেয়ার বাজার লুটে পুটে খায় অথচ পদ্মা সেতু স্বচক্ষে দেখবার সাধ পূর্ণ হয় না জনতার" সেই অভিযোজিত কষ্টগুলো আঁকড়ে নিয়ে আমারা পার করি সময় "অভিযোজিত কষ্ট গুলো" কবিতা হয়ে ছুঁয়ে যায় কষ্টের সীমানা "আর এভাবেই , ছুটে চলি নিরুদ্দেশ, ফিরে আসি একই পথ ঘুরে এসে মিলে যাই নিজেতে, বিলীন হয়ে যাই ।"- --- নয়ন "মনির জামান" তার কবিতায় তুলে ধরেছেন স্বপ্নিল আকাশে মরীচিকার হাতছানির কথা। প্রশ্নের জালে জড়িয়েছেন সুপ্ত বিবেক কে" "তবে কি আমারা আদিম হতে শুরু করেছি নাকি আদিমতাকে হার মানিয়েছি?" "জ ই মানিক " উদাসী মনের ভাবনার ভেলায় তরী ভাসিয়ে জীবনের নথীর খাতায় এঁকেছেন উপেক্ষার পরিধি ।" রিং দিস মুঠো ফোনে" কবিতাটি শেষ হয়েছে আশ্বাসের ছোঁয়ায় " আছে এমন একজন শতক ঝড়বিদীর্ণে রইবে পাশে সারাটি ক্ষণ" "কামরুল হুদা রকি" একটি সুখমিশ্রিত অশ্রুবিন্দুর জন্য প্রতীক্ষার প্রহর একেছেন অক্ষরের আল্পনায় । মনের ক্লান্তির রং কি জানিনা তবে কবি বলেছেন আমার সবুজ পৃথিবীর রং সাদাকালো , বাতাসে গাঢ় বিষাদ , মেঘ নেই, বৃষ্টি নেই, আকাশ রংধনু হীন । জোছনার রঙেও অশেষ আঁধার; যেন আমি অন্ধকার মরুতে বর্ণান্ধ দিশেহারা পথিক।" "বাবুল হোসাইন " প্রণয় স্রোতধারা নদীটির নিখোঁজ হবার গল্প বলেছেন কবিতার ভাষায়। 'মাশরুর ইমতিয়াজ " এর "সংকেতক " ইশারার ব্যাকরণ পাঠ দেয় "ঘোষ বাড়ির মেয়েরা" শিরোনামে কবিতাটি "আমাদের বানিজ্যিক ঘটতি পোষাতে ঘোষ বাড়ির মেয়েদের নৃত্যবিদ্যায় কুশলী হবার প্রয়োজন" শেখায় "প্রশ্ন রেখে যাই" ছড়া টি জমে থাকা প্রশ্নের সঞ্চয় প্রত্র যেন! কত শত প্রশ্নের না জানা উত্তরে যাপিত জীবন মোদের ! সে জীবনে ভালোলাগা ভালোবাসার ছোঁয়া দিয়ে যায় আমার দেশের মাটির গন্ধ । শত সহস্র মাইল দূর থেকেও তার গন্ধে মাতোয়ারা মন । "এ টি এম গোলাম কিবরিয়া" এর লেখা ফ্লাপটি সেতারার সুরের মত আচ্ছন্ন করে হৃদয় । যেমন করে আবিষ্ট হই নেলসন ম্যাণ্ডেলার প্রতি নিবেদিত শ্রদ্ধা নিবেদনে । শব্দ প্রজাপতির ডানায় চেপে মায়াজালে আটকে পরা পথিক আমি। আমি পাড়ি দিলাম শব্দ স্রোত! পথের হাল ধরেছেন যারা তাঁদের জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা! শুভেচ্ছা স্নঞ্চালক কে যিনি মানচিত্র এঁকেছেন আন্তরিকতার স্পর্শে । পথ হারানোর জমে থাকা ভীতি না হয় মুছেই দিলাম! প্রাপ্তিতে অপ্রাপ্তি অস্পষ্ট !

      By ইসতিয়াক অয়ন

      12 Mar 2014 05:53 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমাদের বরিশাল শহরে ‘জীবনানন্দ দাশ চত্বর’ বলে চমৎকার একটি বুলভার্দ আছে । বুলভার্দের শেষ মাথায় শাদা রঙ করা ইটের তোরণের ওপর কবির চিরচেনা পোর্ট্রেট । এটি হয়ত তেমন আহামরি কিছু নয়, বাংলাদেশের অনেক জায়গাতে কবির নামে এমন অসংখ্য সড়ক, লাইব্রেরী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে । তবে আমি যে বুলভার্দটির কথা বলছি সেটি কবির ক্যাম্পাসের একটি অতি-পুরাতন রাস্তা । এ সরণী দিয়ে কবি হেঁটেছেন বহুবার । পাঠ্যবই হাতে হয়ত সরণীর পাশের গাঢ় সবুজ ঘাসে বসে আড্ডা দিয়েছেন সতীর্থদের সঙ্গে । হয়ত তাঁর মাথায় এসে ভর করেছে কবিতার নতুন কোন সুররিয়েলিস্টিক প্লট । হয়ত এই মাঠে, এই ঘাসে... দুঃখের বিষয় হচ্ছে বুলভার্দটির নামকরণ খুব বেশীদিন আগের নয় । তিন কি দুই বছর হতে চলল । বরিশাল শহরের খুব অল্পবিস্তর মানুষ-ই জীবনানন্দকে কবি হিসেবে জানতো । কবির প্রিয় শহরেই কবি ছিলেন সবচে বেশি অবহেলিত । কারনও ছিল এর । তাঁর খুব বেশী কবিতা পত্রিকাতে ছাপা হয় নি । অথবা ছাপানোর সুযোগ তিনি পান নি । ‘শনিবারের চিঠি’ পত্রিকাটিতে তার প্রকাশিত কবিতার সমালোচনা করতে গিয়ে তাকে ‘ছাগল’ কিংবা কোথাও কোথাও ‘গন্ডার কবি’ নামে পর্যন্ত ডাকা হয়েছে । চিরকালের মুখচোরা শান্ত স্বভাবের নির্জনতার কবি জীবনানন্দ দাশকে তার অধিকাংশ লেখা ট্রাংকবন্দী করে রেখে যেতে হয়েছে । ভাগ্যিস ইঁদুর বা বই-কাটা পোকারাও ‘শনিবারের চিঠি’র মতই তাকে অবহেলা করেছিল । নয়তো আমরা আমাদের প্রিয় কবিকে কখনো চিনতে পারতাম না । ‘ব্লগ সংকলন’ এর পাঠপতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এতসব কথা কেন লিখছি ? কারন অবশ্যই আছে । মাঝে মাঝেই আমি ভাবি, কবির সময়ে ‘ব্লগ’ জিনিসটা থাকলে তিনি কি তার ট্রাংকবন্দী লেখাগুলো ব্লগে তুলতেন ? আমার মনে হয়, তুলতেন । হয়তোবা লিখে লিখে ড্রাফট করে ফেলতেন (লেখালিখির ক্ষেত্রে তিনি খুব বেশি কাটাছেঁড়া করতেন) । তবু লিখতেন । হতাশাগ্রস্থ কবির হতাশা খানিকটা হলেও কেটে যেতে পারতো । আমার মতে, ব্লগ পৃথিবীটা এক ধরনের ‘নেভারল্যান্ড’ । আমরা যারা লিখে লিখে হতাশাগ্রস্থ কবি জীবনানন্দের মত ভাবিঃ ‘এতগুলো লেখা লিখলাম- তার একটিও কি সুপ্রীম লেখা হয়নি ?’, ব্লগের পৃথিবীটা তাদের জন্য অবশ্যই নেভারল্যান্ড । মাঝে মাঝে এক পশলা হাততালি কিংবা একটি প্রশংসাবাক্য মানুষকে উদ্দীপ্ত করে, সাহস জোগায় । ‘ব্লগ’ নামের এই নেভারল্যান্ডে লিখিয়েরা সেই সাহসটুকু নিজের মনের মধ্যে পাকাপোক্ত করে নিতে পারে । এক অর্থে তারা উড়তে পারে ! ‘চতুর্মাত্রিক ব্লগ সংকলন ২০১৪’ নিঃসন্দেহে উড়তে জানা কিছু মানুষের লেখার সংকলন । সংকলনটি পড়া শেষ করে প্রথম যে কথাটি মনে হয়েছে তা হলঃ ‘এমন অসাধারন কিছু লেখাও আমার চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল !’ ব্লগের বড় সমস্যা এটাই । জগৎটা বিশাল । হারিয়ে যাওয়ার মত । কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিনে পয়সায় পাওয়া বলে আমরা এটাকে ‘লঙ্গরখানা’ ভেবে নেই । সব লেখা পড়ে সময় নষ্ট করার মত সময় আমাদের হয়ে ওঠে না । যে লেখাটি সংকলিত অথবা যেটিতে কমেন্ট পড়েছে অনেক বেশি কিংবা সবচে বেশি বার পঠিত, ঐটিতেই চোখ বুলানো হয় । অনেক ভাল লেখাও চোখে না পড়ায় চোখের আড়ালে রয়ে যায় । আবার একই সঙ্গে একথাও সত্য এই নেভারল্যান্ডে খুঁজে পাওয়াটা খুব সহজ ! আপনি ‘আলবেয়ার কামু’ কিংবা ‘হাসন রাজা’ লিখে গুগল ফাইন্ডার-এ সার্চ দিন । অসংখ্য বাংলা ব্লগ চলে আসবে- যার অধিকাংশ অসাধারন করে লেখা প্রবন্ধ-নিবন্ধ জাতীয় পোস্ট । চার-পাঁচ বছর আগে প্রক্রিয়াটি এতটা সহজ ছিল না । আমরা সার্চ দিতাম ইংরেজীতে লিখে । সেটি তথ্যসমৃদ্ধ হলেও হৃদয়গ্রাহী ছিল না । মাতৃভাষায় তথ্যসমৃদ্ধ একটা বিশ্বকোষ আমরা অজান্তেই ওয়েবে তৈরী করে ফেলছি বাংলা ভাষায় ব্লগিং করে । একথা ভাবতেই ভাল লাগে । মন ভরে যায় । ব্লগসমুদ্র মন্থন করে আমাদের তৃপ্ত হওয়ার পথটা এখন বেশ মসৃন হয়ে গেছে সেইসব মেধাবী ব্লগারদের জন্য, যারা খাদহীন তথ্যের নিরেট বাঁধনে প্রবন্ধ-নিবন্ধ তৈরী করেছেন কোন একাডেমিক ডিগ্রি, এসাইনমেন্ট বা থিসিস রিপোর্টের জন্য নয়, শুধুমাত্র পাঠকদের নিছক আনন্দ দেয়ার জন্য । খুব খুব ভাল লেগেছে যখন দেখেছি ‘ব্লগ সংকলন ২০১৪’ তার প্রায় অর্ধেক অংশ ‘প্রবন্ধ-নিবন্ধ’-এর নামে করে দিয়েছে । আর সেগুলির প্রত্যেকটি এক-একটা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবার মত শক্তিশালী লেখা । স্বনামধন্য লেখক আবদুশ শাকুর, বাণীব্রত রায়, আকাশ অম্বর, তাহসিন রেজা, টি খন্দকার আর প্রতাপ শেখর মোহন্তের চোখে আমরা কখনো দেখেছি সাহিত্যে বাংলা ভাষার পথ পরিক্রমা- কখনো হেমন্তে বাংলার একান্ত নিজস্ব কৃষ্টি- কখনো লালন- কখনও মুকওয়েগে, আর কখনো সবকিছু ছাড়িয়ে একটি অসীম সমুদ্র ইমন জুবায়েরের বেলাভূমিতে আছড়ে পড়েছি । আমার মতে ইমন জুবায়ের বাংলার জিমি ওয়ালেস, যিনি ওয়েবে বাংলাকে তার প্রবন্ধ-নিবন্ধে সমৃদ্ধ করে গেছেন তিল তিল করে । সার্চ দিয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধ পাওয়া গেলেও গল্পের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে । গুগল এই একটি জায়গায় আপনাকে হতাশ করবে । ‘ভুতের গল্প’ লিখে সার্চ দিলে আপনাকে নিয়ে যাবে ‘ভুতের গল্প’ শিরোনামের কিছু নামসর্বস্ব গল্পে- যার বেশিরভাগই আপনাকে বিরক্ত করে তুলবে । গল্পের জায়গাটিতে এসে আমাদের তাই আটকে যেতে হয় । প্রিন্ট মিডিয়ার ছোঁয়ায় সেই সমস্যার একটি ‘নগন্য’ সমাধান করা গেছে (নগন্য এই জন্যে যে, ‘সাধ আছে-সাধ্য নাই’ কারনবশতঃ ব্লগের অসংখ্য চমৎকার গল্প থেকে মাত্র ষোলটি গল্পকে সংকলনে তুলে আনা গেছে) । ‘সংকলন ২০১৪’ পড়তে গিয়ে আমার অনেকবারই মনে হয়েছে এই গল্পটা তাজা তাজা পড়ে ফেলতে পারলে কত ভালই না হতো ! অন্ততঃ তাৎক্ষনিকভাবে লেখকের সঙ্গে কিছু কথা বিনিময় করার সৌভাগ্য তো হতো ! কিছু কিছু ক্ষেত্রে আনন্দিত হয়েছি পড়া গল্পটি আরও একবার পড়তেও মন্দ লাগে নি ভেবে । লেখক এখানেই সার্থক । ব্লগ সংকলনের এই লেখাগুলো কি সাহিত্য ? প্রিন্টমিডিয়ার অনেকে এই প্রশ্নে দাঁত কেলিয়ে হাসবেন, তা কে না জানে ! বিনে পয়সায়- বিনা তাগাদায় লিখিয়েরা ‘সাহিত্য’ লেখে না, এমন মতবাদ বহু পুরোনো । আবার খুব বেশি তাগাদায় লেখা, খুব বেশি বিক্রিত বইয়ের লেখককে ‘অসাহিত্যিক-কুসাহিত্যিক-বাজারি’ বলাটাও বাংলা সাহিত্যে এক ধরনের প্রচলিত শিল্প । এই ‘দুষ্ট’চক্রটা অনেকটা ঈশপের গল্পের মত, গাধার পিঠে বৌকে নিয়ে চড়লেও সমস্যা- একলা চড়লেও সমস্যা আবার গাধা থাকতে হেঁটে গেলেও সমস্যা । ‌ সেক্ষেত্রে সাহিত্যের মানদন্ড কি ? এই বিষয়ে ট্রুম্যান কেপটের একটি মজার উক্তি আছে । তাঁর মতে, ‘All literature is gossip’ । সাহিত্য হচ্ছে স্রেফ ‘বকরবকর’ । খোশগল্প । তাহলে বকর-বকর এর সংজ্ঞা কি ? Gossip is the art of saying nothing in a way that leaves practically nothing unsaid । এটা আমার কথা না । ওয়াল্টার উইনশেল তার আড্ডাজাতীয় কলামে এই বিখ্যাত উক্তিটি করেছিলেন । তার মানে সাহিত্য হচ্ছে তেমন কিছু না লিখেও অনেক কিছু বলে ফেলা । সংকলনের লেখক-কবিরা কি তা পেরেছেন ? বিচারের আগে একবার বইয়ে সংকলিত গল্প-মুক্তগদ্য-রম্য আর কবিতাগুলির দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক । গল্পের কথা বলি । ষোলটি গল্পের বুনন পাঠকের ষোল আনা সাধ মেটাতে বাধ্য । ফরাসী সাহিত্যে Deus ex machina বলে একটি তত্ত্ব প্রচলিত আছে । প্যারাডক্স সাহিত্যে এটির সফল ব্যবহার লেখাতে অন্যরকম একটি টোন যোগ করতে পারে । দর্শনের গন্ধে ভেঁজা ইমতিয়াজ মীর্জার গল্পটি এই কাজ সার্থকভাবে করতে পেরেছে । গল্পের প্রত্যেকটি লাইন-ই মাথায় ভাবনার জট পাকাতে সাহায্য করেছে । পাউলো কুয়েলো পড়তে গেলে যেমনটা হয় । একটি লাইন খুব টেনেছেঃ দু দুবার নির্বোধদের- ক্ষুদ্র আমিত্বময় মানুষের পাল্লায় পড়ে পৃথিবীকে ছোটখাটো নিউক্লিয়ার যুদ্ধ সহ্য করতে হয়েছে । লাইনটি হেলাল হাফিজের দু’লাইনের সেই বিখ্যাত কবিতাটির কথা মনে করিয়ে দেয়ঃ “নিউট্রন বোমা বোঝো মানুষ বোঝো না ।” ‘নাল পিরান’, ‘শঙ্খবাস’ এবং ‘ভোরের অধিগ্রহণ’ গল্পত্রয়ী আমাদের নিজস্ব সত্তার শেকড়ে নিয়ে যায় । মাটির টান পাওয়া যায় প্রতিটি শব্দ থেকে, পাওয়া যায় রূঢ় বাস্তবতার আঘ্রান । মুক্তিযুদ্ধ-যুদ্ধাপরাধ ছুঁয়ে যাওয়া একটি গল্প সৌভাগ্যক্রমে সংকলনটিতে আছে, এটি একটি প্রগাঢ় স্বস্তির ব্যাপার । গল্পের আখ্যানকার প্রিয় গল্প কথক ‘নীল কথন’ । দুটি পূর্নাঙ্গ এপিস্টোলারি পেয়েছি, একটি ‘মানসাঙ্ক’- অপরটি ‘প্রাপকঃ প্রিয় রওশন আরা’ । দুটির ক্ষেত্রেই এক কথায় বলব, অসাধারন ! ‘একজন লেখকের শেষ গল্প’কে এপিস্টোলারি বলতে গিয়েও মনে হল, না এটিকে ঠিক পুরোপুরি এপিস্টোলারি বলা চলে না । চিঠির বাইরেও এখানে কিছু গল্প আছে । গল্পের ছলে গল্পকার আমাকে লেখক হয়ে যেতে বাধ্য করেছেন । পারুলের চিঠি পড়ে আমিও ক্রুদ্ধ হয়েছি সক্রেটিস আদর্শ রাষ্ট্রে কোন কবি রাখতে চাননি ভেবে । তিনি কি গ্রীসের সেই কবির কথা জানতেন না যার কবিতা শুনে মুগ্ধ হয়ে কোন এক বিজয়ী রাজা তার হাতে বন্দী পুরো একটি শহরকে স্বাধীন ঘোষনা করেন এই বলে, ‘যে শহরে এমন কবির জন্ম- সে শহরের পরাধীন থাকা মানায় না, আজ থেকে তোমার শহর মুক্ত...’ । পারুলের চেয়ে আমার লেখকের প্রতি মমতা জন্মেছিল । ই এম ফস্টার লিখেছিলেন, What is wonderful about great literature is that it transforms the man who reads it towards the condition of the man who wrote । কয়েস সামী তা প্রমান করলেন । আহমাদ আবদুল হালিম ও মোস্তাফিজ রিপনের জীবন ঘনিষ্ঠ লেখা অন্য এক ধ্রুপদ মাত্রা যোগ করেছে সংকলনটিতে । আমি একটা ছোট্ট কথোপকথন কোট করিঃ : এইসব রাজকন্যাগুলো কেন যে একটা করে খাটাশ সাথে নিয়ে ঘোরে ! : তুই জেলাস । : তুই কি জেলাস না ? : এইসব রাজকন্যাগুলো কোথায় হারিয়ে যায় একদিন ! ‘মুক্তি’ নিঃসন্দেহে গল্পকার একুয়া রেজিয়ার তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণশক্তি ও গভীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উৎসারিত অভিনব একটি গল্প । অতি স্বাভাবিক একটি প্লটে ঋজু সংলাপের মধ্য দিয়ে কাহিনী গড়ালেও গল্পের গঠনরীতি, চরিত্রসৃষ্টি এবং বক্তব্য প্রকাশের সচ্ছন্দ গতি ‘মুক্তি’কে প্রশংসাযোগ্য করে তুলেছে । গল্পের শুরুতে এটিকে গড়পড়তা একটি প্রেমের গল্প বলে ভ্রম হতে পারে । প্রেম এবং শুচিতার ভেদটানা অদৃশ্য যে গন্ডি কঠিন বাস্তব নির্মোচনীয় মানসিক সংকট সৃষ্টি করে তোলে, বক্তব্যপ্রধান এই গল্পটি তাই সহজ শব্দে-শব্দে বর্ণনা করে গেছে । বলতে দ্বিধা নেই, আমায় সবচে বেশী মুগ্ধ করেছে ‘শ্বাপদ’ আর ‘ছায়াদর্জির গল্প’ –এই দুটি । আমার ‘জাদু-বাস্তব’ লেখায় ঢুকে যেতে সব সময়ই বড় ভাল লাগে । যখন ‘শ্বাপদ’ গল্পে কেউ একজন বারান্দা থেকে ডেকে ওঠেঃ ‘উঠে দাঁড়া । হাটি হাটি পায় আয় বারান্দায় । দেখ, নিচে দাঁড়িয়ে আছি আমি । চাঁদের আলোয় আজ কোন ছায়া পড়েনি আমার ।’ ...আমি গল্পটির সঙ্গে মিশে যাই একেবারে । মনে হয় জুলিও কোর্তাজারের মত কেউ আমায় আবার অন্য জগতে নিয়ে যাচ্ছে । ‘আ কন্টিনিউইটি অফ পার্কস’ এর পর অন্য কোন গল্প আমায় এতোটা ছুঁয়ে যায় নি কখনো । দু-তিনবার পড়লেও এর আবেদন ফুরায় না । আর ছায়া-সেলাইয়ের গল্প ? গল্পপাঠ শেষে ভাবতে বসি ‘কৃষ্ণ জলেশ্বর’ যখন গল্পটি লেখা শেষ করেছিলেন, তার অনুভূতি কি হয়েছিল ? ঐ ঘোরের জগৎ থেকে সহজে বের হওয়া কি সম্ভব ? একমাত্র অতিপ্রাকৃত গল্প ‘হন্তারক’ ছয়টি ম্যাট্রিয়শকা পুতুলের অভিশপ্ত ছায়া ছড়ানোর গল্প । এটি পড়তে যেমন ভাল লেগেছে, বাপীদার লেখা সংকলনের একমাত্র সায়েন্সফিকশন গল্পটি পড়তেও ভাল লেগেছে । এন্টি-লজিক ভাল লাগলে লজিক ভাল লাগতে পারবে না, এমন কোন শর্ত তো নেই –তাই না ? আর মুক্তগদ্য ? আমার মনে হয়েছে এই অংশটিতে চতুর্মাত্রিকের লেখকরা সবচে বেশী শক্তিশালী । ...সে তাকে টেলিপ্যাথি করে জানিয়ে দিতে চায়- জানো নাকি জানি না, মুগ্ধতা মানুষকে বোকা করে দেয়, মুগ্ধতা মানুষকে বোবা করে দেয়... ...ডিসক্লেইমারে বলা হচ্ছে, লোকটা টেলিভিশনের সামনে বসে, পছন্দমত রঙের পিক্সেলগুলো বাছাই করতে করতে ক্রিয়ার কালের নানা অনুষঙ্গ নিয়ে মুড়ি মাখিয়ে খাচ্ছিল আর রঙগুলো মুড়ির সাথে মাখিয়ে নেবে নাকি কিছু একটা ছেলেখেলা বানাবে তাই ভাবছিল... ...এক বৃষ্টি বয়ে আনে হাজার বৃষ্টির স্মৃতি ।... ...লিপস্টিকে আপনার পাশের দেয়ালে একটা কবিতা লেখা যাবে ।... অথবা, ...আমরা অবাক হতে হতে ভুলে যাব বিগত জীবন ।... এই বাক্যগুলি অবশ্যই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অনন্য একটা অংশ যারা জীবনানন্দের ট্রাংকের মত একটা জায়গায় মুখ লুকিয়ে পড়ে আছে । অনাদরে-অবহেলায় আছে বলবো না । আমরা এদের ভালবাসা দিয়েছি । জানি, মহাকালও দেবে । যদি না দেয়, তবে মহাকালের ক্ষতি, সাহিত্যের ক্ষতি । আমাদের কিছু নয় । অতি-অসাধারন একটি রম্য পেয়েছি সংকলনটিতে । পড়া শেষেও মুগ্ধতা অনেকক্ষণ ধরে ঝুলে ছিল আমার চোখের কোণে । সংকলনের কবিতা প্রসঙ্গে কিছু লিখছি না । ব্যক্তিগত লজ্জার কারনেই লিখছি না । আমার একটি বিশাল বড় রাজনৈতিক কবিতা সংকলনে ছাপা হয়েছে । নিজেকে বিচার করার মত এতবড় কবি বা লেখক আমি নই । কবিতা অংশে আরও দশজন কবির মোহময় কবিতা এসেছে । তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই অংশটিকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য । আশা করি অন্য কেউ নিশ্চয়ই এই বিষয়ে বড় করে সমালোচনা লিখবেন । নির্ঝর নৈঃশব্দ বইটির জন্য অসাধারন একটি প্রচ্ছদ করেছেন । প্রচ্ছদ দেখে বই কিনে ফেলার ইচ্ছা জাগাটা স্বাভাবিক । উৎসর্গপত্রটি ছিল দারূন ! ফ্লাপের লেখা, নেলসন মেন্ডেলার প্রতি শ্রদ্ধাপত্র সব মিলিয়ে খুব গোছানো পরিচ্ছন্ন একটি বই । বইয়ের বাঁধাই এবং প্রকাশনা বিষয়ক কিছু সমস্যা ছিল । ছাপায় কিছু বানানও ভুল এসেছে । পরবর্তী সংস্করনে হয়তো তা পরিশীলিত করে তোলা যাবে । আমি জানি, নাহিদ মঞ্জুর আফরোজ এতক্ষণ আমার ব্লগটি পড়ে থাকলে এই পর্যন্ত এসে হতাশ হয়েছেন । কারন আমি সব প্রবন্ধ, সবগুলো গল্পের সমালোচনা করে মুক্তগদ্যের কথা লেখা শুরু করে দিয়েছি, অথচ এখনও তার গল্পটির কিছুমাত্র উদ্ধৃত করা হয় নি । আমি সচেতনভাবেই এটি করেছি । লেখা শেষ করতে একটি ‘বিগ ব্লাস্ট’ এর প্রয়োজন হয় যেটি সমালোচকের মান ধরে রাখবে । আমার ‘বিগ হিট’ হচ্ছে ‘মফিজুলের খোয়াবনামা’ । সংকলনে প্রথমবার ‘অপাঙক্তেয়’ পড়ে আমার মনে হয়েছে এই লেখকের লেখা না পড়ে মরলে একটা সুন্দর কিছু না পড়ে মৃত্যু হতো এবং আমি তা জানতাম না । আমি জানি একই অনুভূতি সবারই হবে । আমি এই টপিকে বাজি ধরতেও রাজি আছি । নিচের অংশটুকু পড়ে কারও মুগ্ধতা সীমা ছাড়িয়ে না গেলে আমার কাছে বাজির টাকা দাবী করতে পারেনঃ " ...ভাঙা চাঁদের হাসিতে মেতে তোমার লাবণ্যপ্রভা যখন ইউক্যালিপটাস সৌরভ মেখে বাতাসে পাখা মেলত তখন তুমি কেবলই বলতে, ‘শহরটা যদি প্যারিস হত!’ ‘সাইকেল’, ‘সিদ্ধার্থ’, কিংবা বৃদ্ধ স্যান্টিয়াগোকে নিয়ে শহরের বিচ্ছিন্ন আগন্তুক আমরা দুজন কী গভীর কূজনে মত্ত হতাম! তখনও তুমি বলতে, ‘আহ! শহরটা যদি প্যারিস হত!’ হ্যাবারমাসের তত্ত্বে মুখ গুঁজে লাইব্রেরিতে বসে থাকা আমার খোলা চুল উড়ে যখন লাগত তোমার গালে; তুমি বলতে, ‘শহরটা যদি প্যারিস হত!’ রিক্সায় আমার গোলগাল গালের টুকটুক করে নড়ে ওঠা দেখতে দেখতে মুগ্ধ তুমি কী প্রগাঢ় উচ্চারণে বলতে, ‘শহরটা যদি প্যারিস হত!’ আমার মন্ত্রপূত নিঃশ্বাসে নাক ডুবিয়ে বলতে, ‘শহরটা প্যারিস যদি হত!’ আমি কত ভেবেছি; শহরটা প্যারিস হলে কি হত? সেইনের ওপর বয়ে যাওয়া ব্রিজ পার হতে হতে কিংবা ভেসে থাকা বোটে আলোকময় আইফেল, নটরড্যাম দেখতে দেখতে; অথবা শাঁসেলিঝের সারিবদ্ধ বৃক্ষরাজির কমলারঙের পাতা বেয়ে নেমে আসা বৃষ্টি বিন্দুতে সিক্ত হতে হতে — আমি কত উত্তর খুঁজেছি! কোথাও জবাব মেলে নি, জেফিরাস! আমি স্যান্টিয়াগো হয়ে বসে আছি উত্তাল সমুদ্রে, বঁড়শিতে আটকা পড়া স্বপ্নসদৃশ মাছগুলোকে জীবিত রাখার অনুধ্যানে জলের স্পর্শে ফিরিয়ে দিচ্ছি বারংবার। আমার শহরটা প্যারিস হল না কখনও!”..." ‘ব্লগ সংকলন ২০১৪’ নিঃসন্দেহে চতুর্মাত্রিক ব্লগের একটি বিরাট অর্জন । সে তার প্লাটফর্মটিতে সেরা কিছু গদ্যকার, কবি এবং প্রাবন্ধিকদেরকে উঠিয়ে এনে একুশে বইমেলার সঙ্গে একটা যোগসূত্র তৈরী করে দিতে পেরেছে । এটি সম্ভব হয়েছে কয়েকজন স্বপ্রণোদিত ব্লগ অন্তঃপ্রান লেখকের জন্য । যারা ভাল করেই জানেন, ব্লগসংশ্লিষ্ট বইগুলো প্রিন্ট মিডিয়ার মানুষগুলোর কাছে অচ্ছুৎ -এই জাতীয় বইয়ের কাটতিও তেমন হয় না । তবু তারা ‘ভালবাসা’র ঠেকায় ঠেলেঠুলে সংকলনের এই কাজটি সফলভাবে করতে পেরেছেন । ব্যবসার ধার ধারেন নি । এই ভালবাসার সংজ্ঞা ‘সখী ভালবাসা কারে কয় ?’ জাতীয় প্রশ্ন দিয়ে করা যাবে না । একই সঙ্গে প্রশ্ন ও উত্তর দিতে চাইলে ফয়সাল কাদের চৌধুরীর কাছে ছুটে যেতে হবেঃ "অনির্বানঃ ভালবাসা কারে কয় ? কিশোর অথবা তরুণঃ ভালবাসা মানে আমরণ এক রক্ত রণাঙ্গন ! বিশেষজ্ঞঃ ভালবাসা ? ভালবাসা হল জাস্ট একটা বিজনেস ... ভালবাসা হল highly selling business । ...ভালবাসার কাটতি তুমুল । ভালবাসা এক্সপায়ার করলেও পণ্যরূপ ভালবাসার এক্সপায়ার ডেট নাই । অথবা যে পণ্যের গায়ে ভালবাসার সীল আছে, তার মাইর নাই ! ...জনৈক লেখকঃ না...ইয়ে...মানে... সুবীরঃ ভালবাসা আসলে পিটুইকারীর খেলা আর আমরা বোকারা বলি প্রেম... ...ব্যবসায়ী লেখকের দিকে একটি চিরকুট বাড়িয়ে দেয় । জনৈক লেখকঃ (উচ্চৈঃস্বরে) ভালবাসার মানুষের কাছে থাকুন... ভালবেসে হোক দিন বদলের চেষ্টা... ভালবেসে জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে... মাত্র পঞ্চাশ পয়সায় ভালবাসা কিনে নিন... বিশেষজ্ঞঃ হুম ! ভালবাসা মানেই ফ্যালাসি... তৎক্ষণাৎ ব্যবসায়ী একটা আচমকা ঘুষি বসায় বিশেষজ্ঞের মুখে । বিশেষজ্ঞ ছিটকে পড়ে মঞ্চ থেকে । ব্যবসায়ীর পাঞ্জাবীর কোণা ধরে ঝুলে আছে জনৈক লেখক, একজন কিশোর অথবা তরুণ, সুবীর । এবার ব্যবসায়ী প্রথম মুখ খোলেঃ Indeed ! ভালবাসা হল highest selling business । ভালবাসার জয় হোক ! এতক্ষণ পর দর্শকবৃন্দ প্রথম খেয়াল করেন, মঞ্চের দড়িটা আসলে ব্যবসায়ীর হাতে ধরা !!" (ভালবাসা অথবা ভ্রান্তিতত্ত্ব/ফয়সাল কাদের চৌধুরী/চতুর্মাত্রিক ব্লগ সংকলন-২০১৪) আশা করি, এই অভিশপ্ত দড়ি কোন একদিন আমরা ছিঁড়ে ফেলতে পারবো । ভালবাসা সত্যি সত্যি ‘ব্যবসা’ শব্দটির সঙ্গে টেক্কা দিতে পারবে । আমাদের অগ্রযাত্রা থমকে যাবে না কোথাও । ২০১২ তে যে শুভ পথের সূচনা হয়েছিল ২০১৪ পেরিয়েও সে পথ চলতে থাকবে । ব্লগাররা প্রেরণা পাবেন আরও ভাল লেখার, আরও বেশি ব্লগার উঠে আসবেন নবতর চতুর্মাত্রিক সংকলনের পৃষ্ঠায় । সেই সঙ্গে নিজেদের লেখায় নিয়মিত সমৃদ্ধ করবেন চতুরের প্রাঙ্গনকে, আগ্রহ নিয়ে নিয়ত উড়বেন তাদের প্রিয় নেভারল্যান্ডে । শুভ ব্লগিং !

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!