User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
মোটামুটি লেগেছে। অল্প কথায় যদি বলি,এমন কিছু বলা হয়েছে যা সহজভাবে ঘটা সম্ভব নয়।কিন্তু তা এখানে সম্ভব করা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
Tan Tan Uttejonamoy Golpo
Was this review helpful to you?
or
storyline is very simple and unnecessary lengthen.
Was this review helpful to you?
or
hmm
Was this review helpful to you?
or
এক অন্যরকম অনুভূতি,,,,,,
Was this review helpful to you?
or
?বই- ১৯৫২- নিছক কোনো সংখ্যা নয় ?লেখক:- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ?পাঠ প্রতিক্রিয়া:- একটা বইয়ের সবচেয়ে ভালো দিক হলো প্রথম পৃষ্ঠাতে পাঠককে আটকে ফেলা,যাতে পাঠক বইয়ের শেষ পর্যন্ত যাওয়ার রসদ পায়। এক্ষেত্রে ‘১৯৫২’ একেবারে শতভাগ সফল হয়েছে। কাহিনী ধীরে গড়ে উঠেছে। কাহিনী ধীরে ধীরে গড়ে উঠলেও তার মধ্যে একটা সচলতা ছিলো,রহস্যের গন্ধ ছিলো। পরবর্তীতে গল্পে আস্তে আস্তে টুইস্ট আসতে থাকে, কাহিনী আস্তে আস্তে জটিল হয়ে উঠে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন স্যার তার প্রতিটি বইতে আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও সামজিক অবক্ষয়ের বিষয়গুলো গল্প আকারে খুব সুন্দর করেই ফুটিয়ে তুলেন। এটিতেও তার কোনো ব্যতিক্রম হয় নি। মাদকাসক্ত এবং তথাকথিত আধুনিকতা আমাদের সমাজকে কতটা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা এই বইটাতে উঠে এসেছে। কাহিনীতে শব্দের যথাযথ প্রয়োগ হয়েছে। অহেতুক কোনো শব্দের প্রয়োগ ঘটানো হয় নি। তবে কাহিনীটা আরেকটু ছোট করে আনলে গল্প একেবারে জমে যেতো। কাহিনীর মধ্যবর্তী জায়গা এসে আপনি সন্দেহভাজনদের যে কাঠামো দাঁড় করাবেন, শেষে এসে এই কাঠামো একেবারেই উলটে যাবে। বইয়ের প্রচ্ছদ, ফ্লপ, প্রিন্টিং কোয়ালিটি একেবারে টপ নচ। বানান ভুলের কোনোরকমের বাতিক চোখে পড়ে নি। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন স্যারের বইগুলোর মধ্যে রহস্য, রোমাঞ্চ এবং টানটান উত্তেজনার মিলমিশ ঘটেছে ‘বেগ-বাস্টার্ড’ সিরিজ এবং ‘রবীন্দ্রনাথ’ সিরিজের মধ্যে। ‘১৯৫২- নিছক কোনো সংখ্যা নয়’-তেও আমি সেই একই ছোঁয়া পেয়েছি। ‘বেগ-বাস্টার্ড’ এবং ‘রবীন্দ্রনাথ’ যেহেতু সিরিজ আকারের বই, তাই সিরিজের বইগুলো ক্রমন্বয়ে পড়া বাঞ্চনীয়। নাহলে মাঝেমধ্যে কিছু তথ্য ছুটে যায়। তাই মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন স্যারের একক থ্রিলার বইগুলো পড়া দেখার সূচনা যদি কেউ করতে চায় আমি চোখ বন্ধ করে ‘১৯৫২- নিছক কোনো সংখ্যা নয়’ এই বইটা সাজেস্ট করবো। ?ভালো লাগা কিছু সংলাপ:- ১। নাথিং ইজ ফ্রি ইন দিস রিয়েল ওয়ার্ল্ড। ২। পা চাটা বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, কবি, সাংবাদিক, সাবেক আমলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হলো সত্যিকারের কামলা। এরা নিজেরাই মাঠে নেমে পড়ে উপরওয়ালাদের নির্দেশ পেয়ে। ৩। অফেন্স ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স। ৪। এদেশে যেমন পরোপকারী মানুষজন থাকে, বিপদ দেখলে দৌড়ে এসে সাহায্যের হাত লাগায়, চেনাজানা না থাকলেও আগ বাড়িয়ে সাহায্য করে, তেমনি চোর-বাটপার আর ছেচরেরও অভাব নেই। বিয়ে-বাড়ি, মরার-বাড়ি থেকে শুরু করে সব জায়গাতে এদের উপস্থিতি। ?রেটিং:- ৯/১০
Was this review helpful to you?
or
??
Was this review helpful to you?
or
it's good
Was this review helpful to you?
or
সায়েমের বাল্যকাল থেকেই শখ তার নিজের গাড়ি হবে। তার পরিচিত গন্ডির সবাই জানে গাড়ি নিয়ে তার ভালোবাসার কথা। যদিও অনেকে এটাকে ❝গরীবের ঘোড়া রোগ❞ হিসেবে দেখতো। আর আজকালের জেনারেশনে বলা হতো, ❝শখের দেখি কমতি নাই❞। কারণ সেসময় সায়েমের নিজস্ব গাড়ি কেনার সাধ্য ছিল না। দৈনিক মহাকালের সিনিয়র রিপোর্টার সায়েম মোহাইমেন অবশেষে তার সেই শখ পূরণ করতে পারলো। কিনে ফেলল তার স্বপ্নের গাড়ি। চলে আমার গাড়ি হাওয়ায় উইড়া উইড়া, এমন ফিল নিয়ে এয়ারপোর্ট রোডে ড্রাইভ করে বাড়ি ফেরার পথেই বাঁধে বিপত্তি। খুবই দক্ষ এবং সতর্ক ড্রাইভার হওয়া স্বত্বেও তার গাড়িতে এ ক্সি ডে ন্ট করে একজন ইহকালের মায়া ত্যাগ করে। পরিণাম, থানায় যেতে হলো। উত্তরা থানার ওসিকে দিয়ে সায়েম ফোন করালো তার বন্ধু ছটকু ওরফে গোলাম মওলাকে। সদ্য ট্রান্সফার হয়ে আসা গুলশান-বনানীর এসি সে। অনিচ্ছাকৃত এই ঘটনা থেকে বন্ধুকে বাঁচাতে মওলা নিয়োগ দেয় তার প্রাক্তনের ভাই উকিল নিশুকে। কিন্তু ঘটনা তো ঘেঁটে ঘ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তি লামসাম কেউ নয়। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিল্পপতি আরেফ সুফির বংশের প্রদীপ আদনান সুফি সেই নিহত ব্যক্তি। যার অন্যতম আরেক পরিচয় সে ভাষাসৈনিক আদেল সুফির তৃতীয় প্রজন্ম (নাতি)। সরকারের উচ্চ পদস্থ লোকেদের সাথে ওঠাবসা এদের। গুলশান-বনানীর এসির পক্ষে এখন বন্ধুকে বাঁচানো মুশকিল-ই নেহি, না মুমকিন হ্যায়! কোর্টে তোলা হবে সায়েমকে। যেখানে সবাই নিশ্চিত তার জামিন হবে না। কিন্তু আমাদের উকিল Better Call নিশু আদালতে খেল দেখিয়ে দিলো। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পাবার আগেই লোক লাগিয়ে আদনান সুফির মৃ ত্যু যে আসলে গাড়ির ধাক্কায় নয় তা প্রমাণ করে ফেলল। গাড়ি দুর্ঘটনা মোড় নিলো খুনের দিকে। জামিন পেয়ে গেলো সায়েম। আদনান সুফির কেস নিয়ে মাসখানেক হম্বিতম্বির পর তাও চাপা পরে যায়। এরপর ঘটনায় উপস্থিত হয় এমপি আহকাম উল্লাহ। এমপি থেকে মন্ত্রী হয়ে যাবে যাবে অবস্থা। এই অবস্থায় সায়েম এক ব্রেক থ্রু পেয়ে যায় আদনান সুফির কেসের। একটি গাড়ি! ১৯৫২! গাড়ির নাম্বার প্লেট শুধুই এইটুক। আদেল সুফির গাড়ি যা তার নাতি আদনান পরবর্তীতে ব্যবহার করত। তার মৃত্যুর সময় থেকে ১৯৫২ নাম্বারধারী এ গাড়ি নিখোঁজ। সায়েম তারই খোঁজ পেয়ে যায় ঘটনাচক্রে। সায়েম ও মওলা দুই বন্ধু মিলে জট খুলতে শুরু করে। এরপর এগিয়ে যায় কাহিনি। কামাল পাশার গু ম, আদনানের মৃ ত্যু সবই কি একই সুতোয় জোড়া? শকিং রকের রুডি বাসায় ক্যামেরা দিয়ে আহকাম উল্লাহর বাসায় কী দেখে? ১৯৫২ এর সমাধান হবে কি? খু নি ধরা পরবে নাকি ক্ষমতার দাপটে সব ধামাচাপা পরবে? পাঠ প্রতিক্রিয়া: থ্রিলার ঘরনায় নাজিম উদ্দিনের লেখা পড়তে কোনো দ্বিধা আমার কখনোই হয় না। লেখকের লেখার সব থেকে ভালো দিক গতি। বই যতো স্বাস্থ্যবানই হোক না কেন গল্পের গতি এত বেশি থাকে যে নিমিষেই পড়ে ফেলা যায়। এই বইয়ের ক্ষেত্রেও তাই। খুবই ফাস্ট গল্প। ১৯৫২, নিছক কোনো সংখ্যা নয়। এইটুক পড়েই যে কারো মাথায় আসবে শিওর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা কোনো থ্রিলার। কিন্তু ভিডিওর সাথে অডিওর কোনো মিল নেই স্টাইলে এই বইটিও তাই। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের ছিটেফোঁটাও বইতে নেই। খুবই সাধারণ একটা প্লট। তবে গল্প বলার ধরনের কারণে সাধারণ প্লটটাই হয়ে গেছে সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস। সাধারণ একটা গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে এমপি পর্যন্ত পৌঁছানো, ক্ষমতার দাপটে গু ম, খু ন; সব-ই ছিল বইতে। থ্রিলারের আদলে আমাদের সমাজের পরিচিত চিত্র উঠে এসেছে। যেখানে টাকার বিনিময়ে ক্ষমতা কিনে নেওয়া, একজনকে দমিয়ে রাখতে আরেকজনকে শেষ করে দেয়ার ষ ড় য ন্ত্র, প র কী য়া, উঠতি জেনারেশনের বাবা মায়ের শাসনের বাইরে উচ্ছন্নে যাওয়া, দুর্নীতি, সমাজের কালো দিক উঠে এসেছে। মওলা-তাহিতি, সায়েম-নিম্মির প্রেম যেমন ছিল, তেমন ছিল টাকার পাহাড় গড়েও সংসারে সুখ না পাওয়া আহকাম-আমরিনের সংসার। সবশেষে গল্পের টুইস্ট, আসল খু নি ধরা, এবং কালোর অবসান সব কিছু খুব দারুণ ছিল। উশৃঙ্খল, লু চু, ম দ্য প গায়ক হলেও রুডিকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। তার খাইসি, গেসি টাইপ ভাষার জন্য এবং ঐ স্বভাব বাদে মানুষ হিসেবে উপন্যাসে তার বন্ধুর প্রতি ভূমিকা আমার খুব ভালো লেগেছে। এবার একটু সমালোচনা করি। লেখক তার অন্য উপন্যাসের নারী চরিত্র মুশকান জুবেরিকে যেমন বোল্ড একটা চরিত্র রূপে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন ঠিক তেমনই ব ল দ জাতীয় করে উপস্থাপন করেছেন তার অন্যান্য উপন্যাসের নারী চরিত্র গুলোকে। নারী অভিমানী মানলাম। কিন্তু এই উপন্যাসে সায়েমের ফোন না ধরায়, মেসেজের রিপ্লাই না করায় গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা বিসিএস প্রার্থী নিম্মির আচরণ আমার কাছে খুবই বালখিল্য লেগেছে। পঙ্গু তাহিতির ঘরে বসে জগৎ সম্পর্কে সীমিত ধারণার ব্যাপারটা আমার মনঃপুত হয়নি। সেও শিক্ষিত মেধাবী একজন। গোলাম মওলা ওরফে ছটকুকে প্রত্যেকবার গুলশান-বনানীর এসি বলে উল্লেখ করাটা খুব পিকুলিয়ার লাগছিল। গল্প অতি ফাস্ট হলেও কিছু জায়গায় বর্ণনা বেশি মনে হয়েছে যেগুলো কম হলেও খুব একটা ক্ষতি ছিল না। বাদবাকি পুরো উপন্যাস আমার কাছে উপভোগ্য লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
ভাবলাম কি আর টুইস্ট হইল কি নাজিম ভাইয়ের দেখি গল্প বানানোর প্রতিভা আছে কিন্তু ইন্ডিং দিতে পারে না। মতামতটা বেক্তিগত হলেও সন্দেহ থাকলে বইটা পড়েন সবার রিভিউ ত আর এক হয় না। খাটি রিভিউ একটু বাছাই করেন বুঝতে পারবেন ধড়া কাকে বলে।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Podar moto ekti boi. Ruddho;shash uttejona protita page ei
Was this review helpful to you?
or
Nice suspenseful one!
Was this review helpful to you?
or
ভালোই লেগেছে তবে বিষয়বস্তুতে প্রেম ঢুকিয়ে শুধু শুধু দীর্ঘায়িত না করলে আরো ভালো লাগতো।
Was this review helpful to you?
or
Another exciting thriller of writer Nazim Uddin. The story is based on a strange car license number which is 1952. At first, famous journalist Sayem Muhaimen was accused of murder of a very rich businessman Adnan Sufi who was also a grandson of Language movement fighter Adel sufy. Then Sayem's friend, Golam Mawla and advocate Nishu rescused him by using very exciting way. After temporarily realising from court, Sayem involved himself into do or die investigative journalism. He realised that all key to success was deeply found in that car 1952. Then the twist of the story was began. The courage of hero Sayem Muhaimen, intelligence of advocate Nishu, friendliness of police AC Golam Mawla, power game of Ahakam ullah etc were fantastic. By reading this novel, we can find a very clear message to our devastating society. Power and money are not everything in life. We must spend time with our family and must take care each other. Thanks to writer Nazim Uddin sir for describing the true devastating situation of our current society as well as for this very exciting novel.
Was this review helpful to you?
or
গল্পটিতে দেখা যাবে, এক সাংবাদিকের গাড়িতে চাপা পড়ে মারা যান দেশখ্যাত ভাষা সৈনিক আদেল সুফির নাতি আদনান সুফি। গাড়ি দুর্ঘটনার মামলায় ফেঁসে যান এই সাংবাদিক। নিজেকে সে নির্দোষ দাবি করেন তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে তার এক পুলিশ বন্ধু। তারা রহস্যের কিনারা গিয়ে জানতে পারে অনেক কিছুই। তবে সেজন্য 1952 সংখ্যাটা কাছে ঋণী। গল্পের শেষটা 'পোয়েটিক জাস্টিস' বলে প্রচলিত কথাটির এক চমৎকার উদাহরণ।
Was this review helpful to you?
or
নাম:১৯৫২( নিছক কোনো সংখ্যা নয়...) লেখক:মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশন:বাতিঘর প্রকাশনি প্রকাশকাল:২০১৪ বইমেলা পৃষ্ঠা:৪১৬ মুল্য:৩৪০৳ বৃষ্টিস্নাত এক রাতে ঢাকার এয়ারপোর্ট রোডে সদ্য কেনা গাড়ির সাথে কিসের একটা সংঘর্ষে চমকে উঠল দেশের খ্যাতনামা পত্রিকার ক্রাইম জার্নালিস্ট সায়েম মোহাইমেন!নেমে দেখে আর কিছু নয় -একটা মানুষের মৃতদেহ,হঠাৎ ই যেন হাজির হয়েছিল মানুষটা!বিমূঢ় সাংবাদিক ধরা খেল টলহ পুলিশের কাছে। জানা গেল সেই ব্যক্তি একজন উদীয়মান ব্যবসায়ী সেই সাথে একজন সাবেক এমপির একমাত্র ছেলে এবং তার দাদা একজন ভাষা সৈনিক।বিপদে পড়লো সায়েম মোহাইমেন।কিন্তু একইবাের অপ্রত্যাশিত ভাবে সহযোগিতা পেলে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় বদলি হয়ে আসা গুলশান-বনানির এসি ওর বন্ধু গোলাম মাওলার কাছ থেকে। সময় যত গড়িয়ে গেল কাহিনীর ডালপালা বাড়তেই থাকলো।প্রমান হলো গাড়ি চাপা পড়ার আগেই মৃত্যু হয়েছে তরুণের!তাছাড়া পুলিশ মৃত তরুনের কাছে ফোন ওয়ালেট এমনকি অদ্ভুত নাম্বােরর গাড়িটিও খুজে পায় নি!১৯৫২! জামিন পেল সাংবাদিক কিন্তু হত্যার কেসটি অমিমাংসিতই রয়ে গেল। মাস খানেক পর সাংবাদিক এক এমপির ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে গ্যারেজে পেল সেই তরুণের ১৯৫২ নম্বর গাড়িটি।মাথাখারাপ হবার জোগাড় সাংবাদিকের। শুরু করলো অনুসন্ধান আর তাতেই কেঁচো খুড়তে বেড়িয়ে এলো সাপ!!আর সূচনা হলো অসাধারন একটি থ্রিলারের-অপরাজনীতি,হত্যা,গুম আর দুর্নীতির বাস্তব চিত্র।।
Was this review helpful to you?
or
একটি সত্য গল্পের ছায়া নিয়ে লেখক তার লেখার স্বাধীনতার পূর্ণ ব্যবহার করেই গল্পটি লিখেছেন। কাহিনীটা টেনেটুনে বেশ বড় করা হয়েছে, আর যে বিষয়গুলাে দু এক লাইনেই বােঝানাে যেত সেখানেও বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। বইটির বিশালাকারের কারণও এইটাই। তবে বইটি কাহিনীর তুলনায় একটু বড় হয়ে গেলেও পড়তে কোনও বিরক্তি আসে নি। পড়ার গতিও ছিল খুবই ভালাে। তবে ফিনিশিং এ গিয়েই লেখক একটু এলােমেলাে হয়ে গিয়েছিলেন। পাঠকদের জন্য বেশ বড়সড় একটা টুইস্ট রেখেছেন তিনি। কিন্তু সমস্যা হলও এই টুইস্টটাকে বিশ্বাসযােগ্য করতে গিয়ে একটু বেশিই ঘােরালাে করে ফেলেছেন। আর সবচে বড় বিষয় বাতিঘর এর বই হওয়া সত্ত্বেও বানান ভুল নিয়েও কোনও অভিযােগ নেই।
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_আগস্ট_২০১৯ বইয়ের নাম: ১৯৫২:নিছক কোন সংখ্যা নয়; লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন; প্রকাশক: বাতঘর প্রকাশনী; ধরন: থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস মনে করুন আপনি একটি গাড়িতে বসে।গাড়িটি চলছে কোন পাহাড়ি রাস্তায়।একটু পর পর অজানা তীক্ষ্ণ বাঁক।এরপরেও গাড়ির গতি ক্রমশ বেড়েই চলছে।আপনার কাছে ব্যাপারটা প্রচণ্ড উত্তেজনাকর যেমন মনে হচ্ছে,আবার ভয়ও পাচ্ছেন।না না আমি এর সাথে এই উপন্যাসটির সরাসরি তুলনা করছি না।কারন ঐ দুর্গম রাস্তায় উত্তেজনার চেয়ে বিপদের পরিমাণটাই বেশি।আর এই উপন্যাসটি পড়লে লাভ ছাড়া কোন ক্ষতি নেই।আমি মূলত তুলনা করছি এই দুটির মাঝের উত্তেজনাকর মুহূর্তগুলোর।তুলনা করছি দুটির ক্রমশ বেড়ে যাওয়া গতির।আর অজানা বাঁকের তো দুই ক্ষেত্রেই ছড়াছড়ি।আসলে উপন্যাসটির তুলনা হয়ত করা উচিত রোলার কোস্টার রাইডের সাথে। তবে হ্যা উপন্যাসটি পড়ার সময় একটা মানসিক অশান্তি আপনার সঙ্গী হবে।আপনার মনে হবে কখন এটা পড়া শেষ করবেন,কখন জানতে পারবেন সকল রহস্য এর সমাধান।এই উপন্যাসের যাত্রায় আপনি যখন যাত্রী হবেন,তখন আপনার মনে একটি প্রশ্নই থাকবে,এই যাত্রার শেষে কি আছে। কাহিনী সংক্ষেপ: সায়েম মোহাইমেন।সেই শৈশব থেকে তার স্বপ্ন একটি গাড়ি।তার বন্ধুদের মাঝে গাড়ি সম্পর্কে সে সবচেয়ে বেশি জানে।তাই তো তারা নিজেদের গাড়িও ছেড়ে দিত সায়েমের হাতে নির্দ্বিধায়।সেই সায়েমের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত এই ছিল!!তার নিজের কেনা প্রথম গাড়ি,সেই গাড়িতে প্রথম দিন।সে সময়ই সে ঘটিয়ে ফেলল দুর্ঘটনা,পৌঁছে গেল জেলে। গোলাম মওলা ।বেচারা!টানা ১১ ঘণ্টা ভ্রমন করে ঢাকায় পৌঁছে কোথায় ঘুমাবে,তা না করে বেচারাকে রাতবেরাতে দৌড়াতে হল পুলিশস্টেশনে।হবে না কেন?সায়েম যে তারই বন্ধু,তাকে ছাড়াতে হবে না!কিন্তু সায়েম আর সে দুইজনেই জানেনা সামনে তাদের জন্য কত বড় বিস্ময় অপেক্ষা করছে।কি ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে তারা।আপাতদৃষ্টিতে যেসব ব্যাপার সাধারন মনে হচ্ছিল তা ধারন করবে কি বিশাল ভয়াবহতা! উপন্যাসটি পড়ার সময় প্রথমেই মাথায় রাখবেন হাতে সময় আছে তো?হাতে কোন কাজ রেখে পড়তে বসবেন না।কারন একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত আপনার আর উঠতে ইচ্ছে করবে না।একবার পড়া শুরু করলে এই উপন্যাসটি আপনাকে তার সাথে বেঁধে রাখবে।দেখা যাবে আপনি কখন যে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে পড়ে যাচ্ছেন তা নিজেও টের পাচ্ছেন না। উপন্যাসটির গতিময়তার কথা তো আগেই উল্লেখ করেছি।তবে এই গতি কিন্তু সবসময় একইরকম না।একেবারে শুরুর দিকে গতি খুবই সাধারন।হয়ত সামনের তুমুল গতির জন্য আস্তে আস্তে পাঠকদের তৈরি করছিল।কিন্তু কিছুদূর যাবার পর কাহিনী যে গতিতে চলতে শুরু করে তার তুলনা হতে পারে ব্রেক-ফেল করা কোন গাড়ি।আর সে গতি ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছিল,মনে হচ্ছিল যেন বুলেট ট্রেনকেও হার মানাবে।আর সাথে উপরি পাওনা হিসেবে রোমাঞ্চকর সব টুইস্ট তো আছেই।তবে এই অদ্ভুত গতিও একসময় কমতে শুরু করবে।তখন উপন্যাসের সে পর্যায়কে নিতান্ত সাধারন মনে হতে পারে।আসলে এর আগে যে গতিতে কাহিনী এগোচ্ছিল তাতে এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক।অবশ্য এই সময়টা খুবই কম স্থায়ী।একটু পরই কাহিনী আগের গতি ফিরে পেতে শুরু করে।হয়ত আগের সেই ব্রেক-ফেল করা গতি সম্পূর্ণ পায় না,কিন্তু যা পায় তাও কম নয়। এই উপন্যাসটির শ্রেষ্ঠ সম্পদ কি প্রশ্ন করলে রহস্য,গতিময়তা,মারাত্মক সব টুইস্ট সহ নানা উত্তর দেওয়া যেতে পারে।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলোর একটিও সঠিক উত্তর নয়।সঠিক উত্তর লেখকের লেখনী।দুর্দান্ত সাবলীল,প্রাঞ্জল ভাষায় কাহিনীর বর্ণনা করেছেন তিনি।তবে এ কারনে আমি একে সঠিক উত্তর বলছি না।আরও স্পষ্ট করে বললে এই উপন্যাসের শ্রেষ্ঠ সম্পদ লেখকের লেখার দুর্ধর্ষ রসবোধ।যাকে বাংলায় বলে বাক্যবৈদগ্ধ,ইংরেজিতে “Wit”।আমি এর কোন উদাহরণ দিতে যাচ্ছি না,কারন পুরো উপন্যাসটিই বলতে গেলে এর উদাহরণ। উপন্যাসটির এতসব ভালগুণ থাকলেও কিছু খামতিও আছে।অনেকে বলে উপন্যাসটির নারী চরিত্রের সাথে সম্পর্কিত ঘটনাগুলো বিরক্তিকর।আমার কাছে অবশ্য তা মনে হয়নি।এরকম গতির কাহিনীতে মাঝে মাঝে কিছুটা রিলাক্স হবারও দরকার আছে।তবে বিরক্তিকর যা লেগেছে উপন্যাসের তিন প্রধান পুরুষ চরিত্রেরই তাদের ভালভাসার নারীর প্রতি একই ধরনের আচরণ।এক্ষেত্রে মনে হয় তাদের যেন একই ছাঁচে গড়া হয়েছে!একটা-দুটো ঘটনার কারনে আমি এরকম বলছি না। পুরো উপন্যাসটিতেই আমার কথার প্রতিফলন পাবেন।উপন্যাসটির আরেকটি খামতি কাকতালীয়টা।জীবনে কাক-তাল(!)জাতীয় ঘটনা ঘটবেই।আর এ ধরনের লেখায় একটু বেশিই ঘটবে এ তো জানা কথা।কিন্তু যখন রুডি চরিত্রের আগমন ঘটে,কিছু কিছু এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে যা ভেঙ্গে দিতে পারে কাকতালীয় ঘটনার সকল রেকর্ড।উপন্যাসটির আরেকটি জায়গা খামতির জায়গা এর ক্লাইমেক্স।একে অবশ্য খামতি পুরোপুরি বলা উচিত নয়।আসলে উপন্যাসটির ১২ আনা জায়গা যে গতিতে চলেছে,আর আপনার মনে যে প্রত্যাশা জাগিয়েছে তার কাছে একটু পানসে মনে হতে পারে ক্লাইমেক্সকে। কাহিনীর শুরু আস্তে হলেও পরে যে বিশাল গতি পায় তা আগেই বলেছি।আসলে উপন্যাসটির ঐ অংশটি(মানে ১২ আনা অংশ!!) আন্তর্জাতিক মানের।ঐ অংশটি পাল্লা দিতে পারে বিশ্বের যে কোন থৃলারকে।মাথানষ্ট করা এই উত্তেজনাময় অংশ আপনাকে দিবে সর্বোচ্চ তৃপ্তি।লেখক কাহিনীর শেষে সব ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেছেন,যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনাকে সন্তুষ্ট করবে।ক্লাইমেক্স পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি।কিভাবে কি হয়েছে ধরতে না পারলেও সবকিছুর পিছনে কে আছে আমি অবশ্য আগেই টের পেয়েছিলাম।তবে তা লেখক প্রকাশ করার মাত্র কয়েক পৃষ্ঠা আগে!! মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর সাথে আমার প্রথম পরিচয় তার করা অনুবাদের মাধ্যমে।তার করা বেশ কিছু অনুবাদ পড়ার পর জানতে পারি তার লেখা মৌলিক উপন্যাসগুলোর কথা।পড়ে ফেলি জেফরি-বাস্টার্ড সিরিজের প্রথম দুটি উপন্যাসও(বাকি দুটি এখনো পড়া হয়নি)।বেশ ভাল লেগেছিল পড়ে।ভাল লেগেছিল বাংলাদেশের কোন লেখক এধরনের লেখা লিখেছেন বলে।আমার এই ভাল লাগা এক লাফে কয়েক ধাপ উপরে উঠিয়ে নিয়েছে ১৯৫২।তিনি এই লেখাটি লিখেছেন সত্য এক ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে।তার ভাষায় ঘটনাটি ছিল পোয়েটিক জাস্টিসের চমৎকার উদাহরণ।আর সে উদাহরণ থেকে তিনি সৃষ্টি করছেন সার্থক থৃলার এর বাস্তব উদাহরণ।
Was this review helpful to you?
or
সত্যি ভাবি নি, বইটা এত চমৎকার। ধারুণ থ্রিল রয়েছে বইটাতে। লেখকের লেখা নিয়ে কোন কথা হবে না.....Boss ! এককথায়, চরম।
Was this review helpful to you?
or
ছোটবেলা থেকেই আপনার ধ্যান ধারণা ছিল নিজের একটা দামি গাড়ি। বড় হয়ে টাকা পয়সা জমিয়ে কিনেও ফেললেন। কিন্তু, নিজের গাড়ি প্রথমদিন ড্রাইভ করার সময়েই যদি গাড়িচাপা দিয়ে একজনকে মেরে ফেলেন তবে কেমন লাগবে? স্বাগতম, আপনি ফেঁসে গেছেন। সায়েম মোহাইমেন দৈনিক মহাকালের সিনিয়র রিপোর্টার। দেশের বড় কয়েকটা দৈনিকের মধ্যে মহাকাল একটি। গাড়ির প্রতি ছিল তার প্যাশন। মানুষের বিভিন্ন রকম সখ থাকে, ইচ্ছা থাকে, কিন্তু ছোটবেলা থেকে সায়েমের একটাই ইচ্ছা ছিল। বড় হয়ে নিজের একটা দামি গাড়ি হবে। অটোমোবাইল সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখে। এক নজর দেখেই বলে দিতে পারে গাড়ির মডেল আর স্পেসিফিকেশন। কোন গাড়িতে কী কী সুবিধা আছে তা বলতে পারতো শোরুমের সেলসম্যানের থেকেও দ্রুত। বুঝতেই পারছেন গাড়ির প্রতি তার প্যাশনটা কেমন। এমনকি নিজের ক্লোজ বন্ধু বান্ধব ও এলাকার লোকজনদের নিকনেমও রাখতো গাড়ির সাথে মিলিয়ে। ডজ, বেডফোর্ড, মাজদা, মিটশুবিশি ইত্যাদি ইত্যাদি। যাইহোক, একসময় টাকা পয়সা জমিয়ে নিজের স্বপ্নটা বাস্তব রূপ দেয়। কিন্তু..... স্বপ্নটা ধূলিসাৎ হতেও সময় লাগে না। আপনার আমার সকলেরই এমন কিছু বন্ধু আছে না যারা কোনোকিছু কিনলেই ট্রিট চাই ট্রিট চাই বলে গলা ফাটিয়ে ফেলে? সায়েমেরও ছিল। ওদের চাপাচাপিতে গাড়ি কেনার ট্রিট দেয়ার জন্য ওদের নিয়ে বার এ যায়। নিজে যদিও পান করে না, তবে বাসায় গিয়ে খাওয়ার জন্য পাঁচটা বিয়ার নিয়ে যায়। বাসায় যাওয়ার পথে ফোনে গার্লফ্রেন্ডের সাথে একটু কথাও হয়। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে একটা বিয়ারের ক্যানও খালি করে দেয়। গাড়ি তখন এয়ারপোর্ট রোড ধরে মাঝারি গতিতেই চলছিল। কালবৈশাখী ঝড়ের পর বৃষ্টি হওয়াতে রাস্তায় গাড়িও ছিল কম। গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে যেই-না ফোনটা রাখতে যাবে অমনিই গাড়িটা একটু বাম্প করে, ফোনটা হাত থেকে পড়ে যায়। কী হয়েছে দেখার জন্য বৃষ্টির মধ্যেও নেমে পড়ে সায়েম। একটু পেছনে আসতেই দেখতে পায় একটা মানুষকে চাপা দিয়েছে ও। আর ঠিক তখনই উত্তরা থানার টহল গাড়ির হেডলাইট এসে ওর চোখে পড়ে! গোলাম মওলা দিনাজপুর থেকে মাত্রই ঢাকা এসে পৌঁছেছে। দিনাজপুর থেকে বদলি করে ওকে গুলশান বনানী জোনের এসি করা কয়েছে। ডিউটিতে জয়েন করার আগেই তার ফোনে একটা কল আসে। উত্তরা থানার ওসি তার পরিচয় জানতে চায়। ঘটনাচক্রে জানতে পারে মওলার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সায়েমকে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চাপা দিয়ে খুনের দায়ে গ্রেফতার করেছে উত্তরা থানার পুলিশ। আদেল সুফি ছিলেন একজন ভাষাসৈনিক। খুব নামকরা ব্যক্তি। তার ছেলে আরেফ সুফি একবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিল। পরবর্তীতে নিজের জায়গায় আহকামউল্লাহকে সাপোর্ট করে, আহকামউল্লাহ এমপিও হয়। রাজনীতি ছাড়ার পর আরেফ সুফি ব্যবসা বানিজ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, এবং দেশের নামকরা ব্যাবসায়ী হয়ে যায়। সুফি পরিবারের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কও খুব ভালো। সংখ্যার ব্যাপারে আদেল সুফি ছিলেন দুর্বল। নিজের মোবাইল নাম্বারের লাস্ট ৮ ডিজিট ছিল 19251952। ১৯২৫ সালে জন্ম, আর ৫২ তে কী সেটা সবাই জানেন। নিজের জন্মদিনে ছেলে তাকে একটা দামি গাড়ি উপহার দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীকে বলে সে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করানো হয় একটা ইউনিক নাম্বারে। ১৯৫২! আগে পিছে কিছু নেই, এমনি ঢাকা মেট্রো এটাও নেই, শুধুই ১৯৫২। নিজে গাড়ি চালাতে জানতেন না, তাই প্রাণপ্রিয় নাতি আদনান সুফিই চালাতো গাড়িটা। আদেল সুফির মৃত্যুর পর গাড়িটা আদনানের ব্যক্তিগত হয়ে যায়। এখন ঘটনা হলো আদনান সুফির এই ইউনিক নাম্বারের গাড়িটা নিখোঁজ। সায়েমের গাড়ির নিচে পড়েছিল এই আদনান সুফিই। কিন্তু কথা হলো এত রাতে এয়ারপোর্ট রোডের মত ব্যস্ত রাস্তায় আদনান কী করছিল? আর ওর গাড়িটাই বা কোথায়? কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ না বের হয়ে যায়!! কিন্তু কথা হলো খুঁড়বে কে? সায়েমের যদি জামিন হয় তবে পুলিশ বিন্ধু মওলার সাহায্য নিয়ে সেও খুঁড়তে পারে। এত বড় রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে খুন হয়েছে, জামিন এত সহজ? এখন পর্যন্ত মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের যে কয়টা বই পড়েছি তার মধ্যে ১৯৫২ প্রথম দিকেই থাকবে। গল্পটা ভালো ছিল। সাজানো এবং পরিবেশনও ভালো। তবে কিছু জায়গায় কিছু ব্যাপার একদমই ভালো লাগেনি। একদম প্রথম থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল। আদনান সুফি সায়েমের গাড়ির নিচে পড়ার পর থেকেই ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। তারপর নাটকীয়ভাবে একের পর এক মোড় ঘুরতেই থাকে, ঘুরতেই থাকে। গোলাম মওলা পুলিশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়ার পরেও তাকে কিছুটা ছোট করেই দেখানো হয়েছে। আসলে সায়েমকে হাইলাইট করতে গিয়ে মওলাকে ছোট করে ফেলেছে যেটা আমার একদমই ভালো লাগেনি। যোগ্যতা না থাকলে এমনি এমনিই নিশ্চয় তাকে গুলশান বনানী জোনের এসি বানানো হয়নি। অথচ মওলার মাথা থেকে কোনো ভাইটাল পয়েন্ট বের হতে দেখলাম না। সায়েমকে দেখানো হয়েছে একজন সফল প্যাশনেট জার্নালিস্ট হিসেবে, গাড়ির প্রতি যার আবার দুর্বলতা রয়েছে। যে কিনা গাড়ির আওয়াজ শুনেও বলে দিতে পারে কোন গাড়ি যাচ্ছে, অথচ এত কষ্ট করে টাকা পয়সা জমিয়ে সে যে গাড়িটা কেনে তার কোনো উল্লেখ নেই। ব্র্যান্ডের নামই উল্লেখ নেই, মডেল তো পরের কথা। এই বইয়ের প্রধান তিনটা নারী চরিত্র হলো নিম্মি, তাহিতী এবং আমরিন। আশ্চর্যজনকভাবে তিনজনকেই নিজেদের রিলেশনের ব্যাপারে ওভার পজেসিভ দেখানো হয়েছে। এছাড়াও অপ্রধান যে কয়টা নারী চরিত্র ছিল তাদেরকেও। এটা ইচ্ছাকৃত না কাকতালীয় আমার জানা নেই। এই কয়েকটা ব্যাপার বাদে আর তেমন কোনো অসংগতি চোখে পড়েনি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্রও সুন্দরভাবেই ফোটানো হয়েছে। ক্ষমতার লোভ যে কী জিনিস, সেটাও ক্লিয়ার বোঝানো হয়েছে। পড়তে গেলে কোনো জায়গায় একটুও বোর হওয়ার চান্স নেই। তাছাড়া বইটা এমনভাবে লেখা হয়েছে যে আপনি মাঝখানে হুট করে বিরতিও দিতে পারবেন না। পড়তে পড়তে রাত হয়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আজ থাক, সকালে আবার পড়ব, অফিসও আছে। ভাবছিলাম এই অধ্যায়টা শেষ হোক। কিন্তু ঘটনা এমনভাবে মোড় নিয়েছে যে পরে কী হয় না জানা পর্যন্ত স্বস্তি হচ্ছিল না। পরের অধ্যায়েও তথৈবচ। মজার ব্যাপার হলো বাতিঘরের বই নিয়ে আমার এবং সবার যে কমন অভিযোগ থাকে সেটা হলো ভুল বানান, এই বইয়ে সেটা প্রায় অনুপস্থিত। এই ব্যাপারটা স্বস্তিদায়ক ছিল। বইয়ের আরেকটা মজার দিক হলো, আপনি জাস্ট কষ্ট করে প্রথম অধ্যায় পড়বেন, বাকিগুলো বই নিজেই আপনাকে দিয়ে পড়িয়ে নেবে। সুতরাং, দেখেন সায়েমকে জামিন করিয়ে দিতে পারেন কিনা। হ্যাপি জার্নি...
Was this review helpful to you?
or
এয়ারপোর্ট রোড ধরে পঙখীরাজের মতো চলছে গাড়িটা। আজ সকালেই কিনেছে সায়েম। স্বপ্নটা অনেকদিনের, ছোটবেলা থেকে গাড়ির প্রচন্ডরকম নেশা তার। রাত বেশী হয়নি, তবে একটু আগে বয়ে যাওয়া কালবোশেখীর কারণে জ্যামটা কম। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে পাশের সীটে রাখা বিয়ারের ক্যানগুলো থেকে একটা তুলে নিল সায়েম। এর আগে বন্ধুদের সঙ্গেও কিছু পানাহার হয়েছে। অবশ্য দক্ষ ড্রাইভার সে, সুরার নেশা চালনায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারছে না। ফুরফুরে মেজাজে নিম্মির সাথে টুকটাক প্রেমালাপ সেরে মুঠোফোনটা রাখতে যাচ্ছিলো ড্যাশবোর্ডে, ভয়ংকরভাবে কেঁপে উঠলো গাড়িটা! থ্যাপ! রক্তমাংসের কিছুর সাথে বাড়ি খাওয়ার অদ্ভুত একটা শব্দ! সর্বনাশ! রাত দশটা বাজতেই শুয়ে পড়েছিল গোলাম মাওলা। পুলিশের সহকারি কমিশনার সে, ঘনঘন বদলি হতে হতে এবার পোস্টিং হয়েছে খোদ ঢাকা শহরেই। আজই দিনাজপুর থেকে ঢাকার নতুন আবাসে এসে পৌঁছালো, কাল থেকে চাকরিতে যোগ দিবে। কাঁচা ঘুম ভাঙ্গিয়ে আচমকা বেজে উঠলো ফোনটা। যা শুনলো তাতে ঘুম হারাম হয়ে গেলো গোলাম মাওলার। তার প্রাক্তন সহপাঠী, দৈনিক মহাকালের সিনিয়র রিপোর্টার সায়েম মোহাইমিন উত্তরা থানায়, মাতাল অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালাতে গিয়ে একজনকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে! থানায় পৌঁছে গেলো গোলাম মাওলা। গুলশান-বনানীর এসির পরিচয় কাজে লাগিয়েও বন্ধুকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারলো না। গাড়ির নিচে যে পড়েছে সে হেঁজিপেঁজি কেউ নয়। ভাষাসৈনিক আদেল সুফির নাতি, শিল্পপতি আরেফ সুফির একমাত্র ছেলে আদনান সুফি। রাতটা হাজতেই কাটলো সায়েমের। জামিনের আশা ছেড়েই দিয়েছিল। কিন্তু গোলাম মাওলার নিযুক্ত করা উকিল, তারই প্রিয়জনের ছোটভাই নিশু, আদালতে উলটে দিল পুরো কেস। প্রমাণ করে দেখালো গাড়ি দূর্ঘটনা আদনান সুফির মৃত্যুর কারণ নয়, বরং আগেই মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তাকে। আদনানের গাড়িটাও পাওয়া যাচ্ছে না। জামিন হয়ে গেলো সায়েম মোহাইমিনের। আলোচনার মূলে চলে এলো নিখোঁজ আদনানের হত্যা আর নিখোঁজ গাড়ি, যার নাম্বার প্লেটটা অদ্ভুত - ১৯৫২! কিন্তু মাস কেটে গেলো, মামলার অগ্রগতি হলো না আর। গাড়িটাও যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। এক মাস পর, একদিন রাজনীতিবিদ আহকাম উল্লাহর সাক্ষাৎকার নেওয়ার দায়িত্ব পড়লো সায়েমের উপর। সেদিনই নাটকীয়ভাবে ১৯৫২ নাম্বার প্লেটের গাড়িটার দেখা পেয়ে গেলো সাংবাদিক। দ্রুত ঘটতে শুরু করলো একটার পর একটা ঘটনা! কেন হত্যা করা হলো আদনান সুফিকে? কে মারলো? আহকাম উল্লাহর কি ভূমিকা এতে? মামলার প্রধান আসামী হিসেবে নাম রয়ে গেছে সায়েম মোহাইমিনের। তার তাই এই সবকিছুর শেষ দেখা খুব প্রয়োজন। বন্ধুর বিপদে জড়িয়ে পড়েছে গোলাম মাওলা-ও। কেঁচো খুঁড়তে একে একে বেড়িয়ে আসছে আজদাহা সাপ! সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে আলফা রোমিও কনভার্টিবল গাড়িটা, যার পরিচয় - ১৯৫২। পাঠপ্রতিক্রিয়া: মানুষের পাপ, অবক্ষয়, ক্ষমতা আর রাজনীতির অপব্যবহারের বাস্তবচিত্র নিয়ে জমজমাট থ্রিলার ১৯৫২। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন সবসময়ই তাঁর লেখায় সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু সাহসিকতার সাথে তুলে আনেন। বাংলাদেশে চর্চিত রাজনৈতিক অন্ধকারগুলোর উপর ভিত্তি করে এগিয়েছে উপন্যাসটি। হলুদ সাংবাদিকতা, পুলিশের দূর্ণীতি, ক্ষমতা দখলের দৌড় লেখক নির্দ্বিধায় চিত্রিত করেছেন। উপন্যাসটির পাতায় পাতায় টুইস্ট, ঘটনাপ্রবাহ এমনভাবে এগিয়েছে যে আগ্রহ ধরে রাখবে। প্রতিটি অধ্যায় শেষ হয়েছে উত্তেজনাময় বিরতির মধ্যে দিয়ে, যা পাঠককে পরের অধ্যায়ে নিয়ে যেতে বাধ্য করবে। চমৎকার প্লট, রহস্যটা জমিয়ে তুলে লেখক সমাধানও করেছেন সার্থকভাবে। তবে ঘটনাচক্র বা কাকতালের আশ্রয় আরেকটু কম নেওয়া যেত। বুদ্ধি এবং যুক্তির মাধ্যমে গল্প এগিয়ে নিলে বেশ হতো। চরিত্রগুলো ছিল মানানসই। নিশুর চরিত্রটি খুব ভালো লেগেছিল, তার ব্যপ্তি আরো বেশি হলে খুশি হতাম। পুলিশ অফিসার গোলাম মাওলার চরিত্রটিও যে কারো ভালো লাগবে। আজমত, কিসলুর মতো চরিত্রগুলো ছিল দারুন বাস্তব। নারী চরিত্র নিম্মি আর তাহিতির ভূমিকা মূল কাহিনীতে বিশেষ কিছু ছিল না, তবে ঘটনাচক্রের উত্তেজনার মধ্যে কিছু রোমান্সের সুবাতাস আনার জন্যই তাদের উপস্থিতি। ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়েছে, নেতিবাচক দিকগুলোকে নেতিবাচক ভাবে দেখালেই পাঠকের জন্য উত্তম। মদ্যপান, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, পরকীয়া বা নারী আসক্তির মতো বিষয়গুলো চরিত্রের মধ্যে এনে, আবার সেগুলোকে ভালোভাবে দেখানোর দায় লেখক এড়াতে পারেন না। বাতিঘর প্রকাশনীর নাম ধরে রেখেছে বইয়ের বাঁধাই এবং বানান ও ছাপার ভুলগুলো। প্রচ্ছদ আহামরি নয়। টানটান থ্রিলার যারা পড়তে ভালোবাসেন তারা পড়তে পারেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের উপন্যাস '১৯৫২ - নিছক কোনো সংখ্যা নয়'। বই: ১৯৫২ - নিছক কোনো সংখ্যা নয়... লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনায়: বাতিঘর প্রকাশনী প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৪১৪ মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
''১৯৫২- নিছক কোন সংখ্যা নয়'' ---- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন _____________________ জনরা পরিচিতি: উপন্যাস হোক বা সমসাময়িক গল্প বা থ্রিলার, যাই বলি না কেন বইটি কোন ঘরানার তা জানা খুব জরুরি।তাহলে লেখক তার পুরোপুরি দিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারলো কিনা বা পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে পারলো কিনা তা সঠিকভাবে নিরুপন করা যায়।ধরুন আপনি বইয়ের দোকানে গেলেন।গিয়ে বললেন আমি থ্রিলার পড়তে পছন্দ করি।দোকানের মালিক আপনাকে বললো কি ধরণের থ্রিলার চাই আপনার? আপনি তো থ! আপনি বললেন আপনি ঠিক জানেন না থ্রিলার বেশ কয়েক রকম কি, মেলা রকমের হয়।ক্ষেত্র বিশেষে এর চরিত্র আর ক্রাইটেরিয়াও পরিবর্তিত হয়।বাংলাদেশ থ্রিলার পড়ার প্রতি আগ্রহ আছে এমন বহু পাঠক আছে, কিন্তু এই একটা জনরার যে কত রূপ আর বৈচিত্র আছে তা খুব কম পাঠক জানেন।আচ্ছা, এইবার মূল কথায় আশা যাক।১৯৫২-নিছক কোনো সংখ্যা অবশ্যই নয়।এর অর্থ অনেক গভীর।আর এর জন্য সায়েম মোহাইমেন এর সাথে আপনাকেও যে দুর্ধর্ষ এডভেঞ্চারে নেমে পড়তে হবে, এই গরমে একেবারে ঘেমে নেয়ে একাকার হলে তবেই আপনি এডভেঞ্চার ধর্মী থ্রিলারের আসল স্বাদ পাবেন।বোঝা গেছে ব্যাপারটা? #কাহিনী_সংক্ষেপঃ গল্পের শুরুটা সায়েম মোহাইমেনকে নিয়ে। যিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। অনেক শখ করে নতুন গাড়ি কিনে প্রথমদিন রাস্তায় নেমেই রহস্যজনক দুর্ঘটনার শিকার হলো।কোনো ছোটখাট সড়ক দুর্ঘটনা নয়।প্রেমিকার সাথে ফোনালাপ করতেই এতো কিছু ঘটে যাবে ভাবতেই পারেনি সায়েম। গোলাম মাওলা, ধানমন্ডি থানার ওসি, সায়েমের বন্ধু।বন্ধু হওয়ার সুবাদে যদিও সায়েম ছাড়া পেতে পারতো কিন্তু ঘটনা অন্য দিকে যেন নাটকীয়ভাবে মোড় নেয় যখন জানা যায় নিহতের পরিচিয়।জানা যায় সে প্রয়াত ভাষা সৈনিক আরিফ সূফীর নাতি আদনান সূফী। এখানেই শেষ নয়।সূফী পরিবার দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবার।এদিকে আদনান সূফীকে হত্যার দায় এখন সায়েমের।আর অন্যদিকে নিশু, মাওলার ঠিক করে দেয়া সায়েমের ল-ইয়ার, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী তথ্য দেয় আদনান সূফীর মৃত্যু গাড়ির ধাক্কায় হয়নি, হয়েছে জিরো রেঞ্জ থেকে মাথায় গুলি খাওয়ার কারণে।তাহলে দাঁড়ায়, জনাব আদনান সূফী মারা গেছেন সায়েমের এক্সিডেন্টের আগেই। সমস্ত রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু ১৯৫২ । হত্যা-ষড়যন্ত্র, রাজনীতির তুমুল মারপ্যাচ, তরুণদের সামাজিক অবক্ষয়ের বাস্তবচিত্র এক এক করে অনেকগুলো ঘটনার জটপাকানো রহস্য আর সেই রহস্যের একমাত্র সমাধান দিতে পারে কেবল ১৯৫২- কারন এটি নিছক কোন সংখ্যা নয় । #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ এই বইটাই আমাকে প্রথম লেখকের লেখার প্রতি একটা গুরু আকর্ষণের সৃষ্টি করেছিল।থ্রিলার আগে কখনোই পড়তাম না।ভাবতাম এসব থ্রিলার ট্রিলার বুঝি ছেলেদের পড়ার বিষয়।১৯৫২-নিছক কোনো সংখ্যা নয় পড়ার জন্য অনেক তাগাদা পাচ্ছিলাম তখন।যে ভাবা সেই কাজ। একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত আপনি উঠতে পারবেন না, বইটির টুইস্ট এবং সাসপেন্স আপনাকে বই শেষ করার আগে উঠতে দেবে না।আর সেই থেকেই শুরু আমার থ্রিলারের প্রতি ভালবাসার। এটি একটি মৌলিক থ্রিলার।যেহেতু আমার পড়া প্রথম থ্রিলার তাই আমার পছন্দের দিকটাই ভরপুর।দুই একটা ছোটখাট ভুল ছাড়া তেমন কিছু চোখেই পড়েনি তখন।আমার তখন চোখভরা বিস্ময়।বলবোনা প্রত্যেক পাতাই আমাকে আকর্ষণ করেছে।কিন্তু জায়গায় বিরতি দিয়ে মন ভালো করার মতো কিছু আলোচনা দিয়ে পরক্ষনেই টান টান উত্তেজনা।আমি খালি ভেবেই চলেছি এত্ত রহস্যের সমাধানটা কি হবে।সমাধানটাও মনোমুগদ্ধকর ছিল। আধুনিক বাংলা থ্রিলার সাহিত্যে এক অনবদ্য সংযোজন আমার কাছে তাই বারবার মনে হয়।এই বইটি যদি সিরিজের অংশ হতো তো আমি বাকিগুলো হয়তো তখনি গোগ্রাসে গিলে ফেলতাম।শুধু সাসপেন্স আর টুইস্টই না, আছে হালকা পাতলা রোমান্স, আছে বিরহ, আছে কান্না-হাসি, আছে মানসিক ভয়, আছে অপেক্ষা, আছে সেক্রিফাইস, আছে ভাই-বোনের প্রতি গভীর ভালবাসা, আছে প্রেমিকার প্রতি প্রেমিকের দায়িত্ববোধ, আছে অনুশোচনা, আছে পিতার মমত্ববোধ, আছে ক্ষমতার লোলুপ দৃষ্টি আর গুরুগম্ভীর রাজনৈতিক চক্রান্ত, আছে তরুণ সমাজের অন্ধকার জগতের বাস্তব প্রতিফলন। একটি অমোঘ সত্যি হলো: ''পাপ নাকি তার বাপকেও ছাড়ে না!'' তাহলে কি নেই এই এক মলাটে।এখনো এই বইটি আমার কাছে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্যতম লেখা মনে হয়। #আমার_রেটিং: ৯.০/১০ এক নজরে- নামঃ - ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ঘরানা: থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ৪১১ মূল্যঃ ৩৪০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
One of the best trillers i have ever read. Mind blowing.
Was this review helpful to you?
or
১৯৫২ সংখ্যাটি আমাদের পুরো জাতির কাছে এক গভীর আবেগের বস্তু। হ্যাঁ,এটি শুধু নিছক কোন সংখ্যা নয়। ১৯৫২ মানেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে ভাষা আন্দোলনের সব ভয়াবহ দৃশ্য। ভেসে উঠে রফিক,জব্বার,সালাম,বরকত সহ অসংখ্য নাম না জানা শহীদের রক্তের বিনিময়ে, জীবনের বিনিময়ে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির ইতিহাস। ১৯৫২ আমাদের কাছে এক অর্জনের নাম, এক ত্যাগের নাম। এখন প্রশ্ন- বইটির এই অদ্ভুত নামকরণের পেছনে কি ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বিদ্যমান? না। তবে বইটিতে একজন ভাষা সৈনিকের উপস্থিতি দেখা যায়। অবাক হচ্ছেন তো? তাহলে চলুন সরাসরি মূল কাহিনীতে চলে যাই। সায়েম মোহাইমেন - পেশায় একজন সাংবাদিক। আর সাংবাদিক এই মানুষটিই আচমকা পরিণত হলো দেশের প্রধান সংবাদে! কীভাবে? আসলে তা এক আকস্মিক ঘটনা। গাড়ির প্রতি অস্বাভাবিক ঝোঁক সায়েমের ছোটবেলা থেকেই। আর এই ঝোঁকের জন্যেই নিজের গাড়ি না থাকলেও ড্রাইভিং এ সে সিদ্ধহস্ত। অবশ্য তার আজন্ম লালিত স্বপ্ন নিজের একটি গাড়ি হবে। অবশেষে ভালো চাকরির সুবাদে তার স্বপ্ন পূরণের পথ পরিষ্কার হয়ে যায়। নিজেই একটি গাড়ি কিনে ফেলে সে। কিন্তু দুর্ভাগ্য! নতুন গাড়ি কেনার আনন্দ আর অন্যদিকে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের আত্মতৃপ্তি কপালে বেশিক্ষণ সইলোনা তার। ফাঁকা রাস্তায় নতুন গাড়ি পেয়ে গতি একটু বাড়িয়ে দিয়েছিলো সে। আর সেই একই সময়ে ফোনে কথা বলছিলো প্রেমিকার সাথে। গাড়ি চালাতে চালাতে ফোনে কথা বলা নিশ্চয় ভালো কাজ নয়! সায়েমের ক্ষেত্রেও তা ভালো ফল বয়ে আনেনি। কিন্তু যখন হুঁশ ফিরলো ততক্ষণে ঘটে গেছে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা। একজন মানুষের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিয়েছে সে। কিন্তু সায়েমের দৃঢ় বিশ্বাস সে গাড়ি চালানোর সময় সামনের রাস্তায় কেউ ছিলোনা। কিন্তু পুলিশ কি আর এই কথা শুনবে? শোনেনি! গ্রেফতার হয় সায়েম মোহাইমেন। সাধারণ একজন মানুষকে গাড়ি চাপা দিলে তবুও হয়তো ঘটনা একদিকে প্রবাহিত হতো। কিন্তু তা হয়নি! ঘটনাপ্রবাহ মোড় নিলো নাটকীয়ভাবে যখন ভিক্টিমের পরিচয় জানা গেল। ভিক্টিম যে সে কেউ নয়। ভাষা সৈনিক আদেল সুফির একমাত্র নাতি আদনান সুফি। যে ভাষা সৈনিককে পুরো দেশ একনামে চেনে। মন্ত্রীসহ উঁচু স্তরের মানুষদের সাথে যার দহরম-মহরম। এখন কী হবে সায়েমের? তার বন্ধু গুলশান বনানীর এসি গোলাম মওলা কি পারবে তার বন্ধুকে রক্ষা করতে? আদালতে কীভাবে প্রমাণ করবে সায়েম নির্দোষ? কিন্তু সায়েম কি আসলেই নির্দোষ? আর সে নির্দোষ হলে দোষী কে? ঘটনা আসলে কী? ধীরে ধীরে জট খুলতে শুরু করলো। যার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ১৯৫২, যা নিছক কোন সংখ্যা নয়। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ প্লটটি খুব চমৎকার। প্রথমদিকে খুব আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। কিন্তু কাহিনী কিছুদূর এগুনোর পর যেন খাপছাড়া হয়ে পড়েছে। যে চমকের আশা করেছিলাম তেমন কিছুই পাইনি। ম্যাড়মেড়ে লেগেছে। তবে হ্যাঁ, বইয়ে রাজনীতির অন্ধকার দিক,সামাজিক অবক্ষয়-এসব খুব ভালো ভাবে ফুটে উঠেছে। লেখকের বইয়ের নামকরণের সার্থকতা বরাবরের মতোই প্রশংসনীয়। তবে রবীন্দ্রনাথ কখনো খেতে আসেনি বা কেউ কেউ কথা রাখে এবং বাস্টার্ড সিরিজের মত এই বই পড়ে তৃপ্তি পেলাম না। টুইস্ট মজবুত লাগেনি। অবসর সময়ে চাইলে পড়তে পারেন মৌলিক থ্রিলারটি। প্রিয় লাইন, "স্নেহ-ভালবাসা নিঃশব্দে গ্রহণ করলে এর সৌন্দর্য অটুট থাকে। "
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা :::::::::১৮::::::::: বই:- ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয়। লেখক:- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ঘরানা : রহস্য উপন্যাস প্রকাশনী:- বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকাল:- বই মেলা ২০১৪। রকমারি মূল্য:- ২৬৬ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যা:- ৪১৫টি গল্পের কেন্দ্রিয় চরিত্র "সায়েম মোহাইমেন" মহাকাল পত্রিকার সাংবাদিক। নিজের গাড়ি না থাকলেও গাড়ি চালাতে পটু সায়েম। ছোট থেকেই সায়েমের স্বপ্ন লাল টুকটুকে একটি গাড়ি কেনার। চাকরি পাওয়ার কয়েক বছরের মাথায় নতুন একটি টুকটুকে লাল গাড়ি কিনে সায়েম। প্রথমদিন গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নিম্মির সাথে কথা বলে, ফোন রাখার সময় চাদেঁর দিকে তাকায়। এর মধ্যে তার গাড়ির নিচে চলে আসে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। তাৎক্ষনিক পুলিশ এসে সায়েমকে এরেস্ট করে নিয়ে যায় এবং তার গাড়ি থেকে ৪ টি বিয়ারের বোতল উদ্ধার করে। সায়েম পুলিশকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে সে নির্দোষ। বিয়ারের বোতল পাওয়ার পরে তাকে অপরাধী ভাবাটাই স্বাভাবিক। পুলিশও তাই ভাবে। এবং তাকে উত্তরা থানায় নিয়ে যায়। সায়েমের বন্ধু গোলাম মওলা "গুলশান বনানীর এসি"। উত্তরা থানার ওসিকে বুঝানোর চেষ্টা করে তার বন্ধু ড্রাইভ করে। সে এমন অপরাধ মূলক কাজ করতে পারে না। ওসি বলে "জ্বলজ্যান্ত একটা মানুষকে চাপা দেয়ার পরে তো এমনি এমনি ছেড়ে দিতে পারি না"। তবে ভিক্টিমের পরিচয় না জানা গেলে আপনার বন্ধুর জামিন করানো কোন ঝামেলাই হবে না। ছোট খাটো কোন উকিল ধরে কাল কোর্ট থেকে জামিন করিয়ে নিবেন। অপ্রত্যাশিত ভাবে সন্ধ্যায় ভিক্টিমের পরিচয় পাওয়া যায়। ভিক্টিম যে সে লোক নয়। সে আদেল সুফির একমাত্র নাতি "আদনান সুফি"। আদেল সুফি একজন ভাষা সৈনিক এবং মুক্তিযোদ্ধা। ভাষা আন্দোলনের পরে তাকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের পর্দায় প্রায়শই দেখা গিয়েছে। তাদের সাথে প্রধান মন্ত্রীসহ অনেক এম্পিমন্ত্রীদের সাথে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক। সেখানে সায়েমের জামিন শতভাগ অসম্ভব। সুফি পরিবারে একমাত্র উত্তরাধিকারীরের হতাহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে থানা থেকে চলে যেতে বাধ্য হয় মাওলা। গোলাম মওলা ভিক্টিমের পরিবার সম্পর্কে সব জানিয়ে দেয় নবিন উকিল নিশুকে। সায়েম কি অপরাধ না করেই শাস্তি পাবেন???? আদালতে সবাই জানে সায়েম মোহাইমেন আসল খুনি। কিন্তু আসামী পক্ষের উকিল প্রমান করে দেয় "আদনান সুফি যখন গাড়ি চাপা পড়ে তার আগেই তাকে হত্যা করা হয়েছে"। জামিন পেয়ে যায় সায়েম। তবে কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যতদিন আসল খুনিকে না পাওয়া যাবে ততদিন তাকেই অপরাধী বিবেচনা করা হবে। গাড়িটি খুঁজার নির্দেশ দেয় কোর্ট। সকলেই ভাবে গাড়িটির নাম্বার খুব অদ্ভুত (১৯৫২) এই কারনেই হয়তো খুব তাড়াতাড়ি গাড়ির খবর বের করতে পারবে। ঢাকার প্রায় সব গাড়ি চোরকেই ধরে এনে পিটুনি দিয়েও গাড়ির হদিস বের করতে পারে না পুলিশ। কি করে ১৯৫২ উদ্ধার হবে? নাকি হবে না? বাস্তব জীবনের মত কি এখানেও পাপী পাপের শাস্তি পাবে না? পাঠ প্রতিক্রিয়া :- রহস্য উপন্যাস আমার বরাবরই প্রিয়। আর ১৯৫২ অতুলনীয় । প্রিয় বইয়ের তালিকায় আরো একটি বই যোগ হলো। প্রতিটা পাঠেই মনে হতো এই বুঝি রহস্য ভেদ হলো। বইটি পড়ার সময় এমন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। অতিসাধারণ একটি প্লট তবে লেখকের অসাধারন লেখনি সাধারন কে অসাধারণ করে তুলেছে। সায়েম গায়ক বন্ধুর চরিত্রটা ইন্টারেস্টিং ছিলো।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় লেখকের নামঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ঘরনারঃ থ্রিলার রেটিং-৪.৫/৫ রিভিউঃ গাড়ির প্রতি প্রচন্ড ঝোক তার! চালাতেও সে পারে বেশ। বন্ধুদের মধ্য লং জার্নিতে গেলে সে নিজেই ড্রাইভ করে। অনেক শখ করে নতুন গাড়ি কেনা। কিন্তু নতুন গাড়ি কিনে প্রথমদিন রাস্তায় নেমেই রহস্যজনক দুর্ঘটনার শিকার হলেন সেই সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেন। কিভাবে ঠিক কি হলো তা বুঝতে বেশ খানিকটা সময় লেগে গেলো তার। যখন বুঝলো তখন তাকিয়ে দেখে একজন মানুষের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিয়েছে। স্বাভাবিক দূর্ঘটনাই। কিন্তু সব থেকে আশ্চর্য এই যে এটা আর নিছক কোনো সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে থাকলো না। বিভিন্ন উপায়ে নাটকীয়ভাবেই মোড় নিলো ঘটনাপ্রবাহ। কিছু একটা হচ্ছে ভেতর থেকে যা ঠিক বুঝতে পারা যাচ্ছে না। ক্রমেই রহস্য ঘনীভূত হতে শুরু করল। আর তখন, সমস্ত রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলো ১৯৫২! এই একটা দুর্ঘটানা ধীরে ধীরে রূপ পেলো রাজনীতিক কর্মকান্ডের। হত্যা-ষড়যন্ত্র, অপরাজনীতি, সামাজিক অবক্ষয়ের বাস্তবচিত্র বেরিয়ে এলো এক এক করে। পুরো গল্পের রেশ ধরা অনেকগুলো ঘটনার জটপাকানো রহস্য আর সেই রহস্যের সমাধান দিতে পারে কেবল ১৯৫২-কারণ এটি নিছক কোনো সংখ্যা নয়! প্রকাশনীঃ বাতিঘর পৃষ্ঠাঃ৪১৬ মূল্যঃ৩৪০ প্রকাশকালঃ২১৫ বাংলাদেশের থ্রিলার লেখক হিসেবে অন্যতম হলেন, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। সেরা সেরা বেশ কিছু থ্রিলারের অনুবাদক তিনি। আর এই অনুবাদের পর কতগুলো মৌলিক রচনা উপহার দিয়েছেন। । আর এই মৌলিক রচনায় তিনি বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন। পাঠক সমাজে তার মৌলিক থ্রিলার বেশ সমাদৃত। ব্যক্তিগত মতামতঃ থ্রিলার হিসেবে নাজিম উদ্দিনের এই বইয়ের কাহিনী ও প্লট অাগের গুলোর মতোই বেশ ভালো। এটা লেখকের মৌলিক লেখা গুলোর মাঝে ষষ্ঠ বই এবং এটা সিরিজ ভিত্তিক নয়। গল্পের যে প্লট লেখক নির্বাচন করেছেন, তা বিশেষ ভাবে চমৎকার। শুরু থেকে বেশ ভালো ভাবে মুভ করেছিলো , অপেক্ষা করছিলাম একটা ধারুন কিছু হবে। কিন্তু মনে হয় থ্রিলার পড়ার শেষে পাঠক কিছু একটা বিষয়ে কিছুটা চমকে যেতে চায়। কেন জানি মনে হলো এই বই শেষ দিকে সেই চমকটা দিতে পারেনি তেমন। তবুও এটা বিশেষ ভাবে সত্যি যে, নাজিম উদ্দিনের লেখা অন্যতম একটি সেরা থ্রিলার হলো '১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয়'। চরিত্র গুলো লেখক ভালো ভাবেই ফুটিয়ে তুলতে পারেন। কে.এস আসলেই অদ্ভূত একটি চরিত্র।
Was this review helpful to you?
or
সাংবাদিক সায়েম সোলায়মানের আজ বড় খুশির দিন। বহুদিনের পুরনো একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার। সেই কোন ছোটবেলা থেকে নিজের একটা চার চাকার গাড়ির কত শখ তার। শেষমেষ একটা গাড়ি কিনেই ফেলল সে। তার জন্য কত জল্পনা কল্পনা, কত খোঁজাখুঁজি। শেষ পর্যন্ত এই গাড়িটাই তার মনে ধরল। বন্ধুদের স্পেশাল ট্রিট দিয়ে সায়েম তাই বেড়িয়েছে গাড়িটাকে নিয়ে। মনের খুশিতে দীর্ঘদিন পর গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার প্লানে মশগুল সায়েম হঠাৎ অনুভব করে আচমকা তার গাড়ির নিচে কি যেন একটা পড়ল। ভাল করে দেখতে গিয়ে আতকে উঠল সে। মানুষ! গাড়ি নিয়ে বের হয়ে প্রথমদিনই একটা মানুষকে চাপা দিয়েছে সে! উত্তরা থানার ওসি গ্রেফতার করে সায়েমকে। ওসির অবর্তমানে বন্ধুকে ফোন দিতে গিয়ে বিপদে পরে সে। তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেয় ওসি। ফোন করে সেই বন্ধুকে। সায়েমের সেই বন্ধু হচ্ছে গুলশান-বনানী থানার নতুন এসি গোলাম মওলা ওরফে ছটকু। বন্ধুর বিপদে দৌড়ে আসে ছটকু। এসে জানতে পারে তার বন্ধু একজনকে গাড়িতে চাপা দিয়েছে। ছটকু আর তরুন ল-ইয়ার নিশু জামিনে ছাড়িয়ে নিয়ে আসার প্ল্যান করে সায়েমকে। কিন্তু কিছু করার আগেই প্রকাশ পায় মৃত ব্যক্তি আর কেউ না, সে দেশের অন্যতম একটি পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মে। ছেলেটির রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান দেশের প্রথম সারির। বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা। সবচেয়ে বড় কথা সে ভাষা আন্দোলনের সৈনিক আদেল সুফির একমাত্র নাতি আদনান সুফি। পরিস্থিতি পুরো পাল্টে থানা প্রাঙ্গন লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। আদালতে নিশু প্রমাণ করতে চেষ্টা করে যে এটা নিছক একটা দুর্ঘটনা, ইচ্ছাকৃত অপরাধ নয়। আর প্রমাণ পাওয়া যায় যে আদনানকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে মৃত আদনান সুফির দাদার নামে নিবন্ধনকৃত যে গাড়িটি আদনান সুফি চালাত সেই অপ্রচলিত ও ইউনিক রেজিস্ট্রেশন নাম্বার "1952" গাড়িটি খুজেঁ পাওয়া যাচ্ছে না। একথা তাহলে নিশ্চিত করে বলা যায় যে গাড়িটি খুনিই সরিয়েছে। এরপর প্রায় মাসখানেক পরে একটা এসাইন্টমেন্টে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বাড়িতে যায় সায়েম। ঘটনাক্রমে সে দেখে ফেলে সেটাকে। দেখামাত্র আটকে উঠে সায়েম। এটা এখানে? কি ছিল সেখানে? ভাষা সৈনিককের নাতির খুনের বিচার কি আর হবে না? জানা যাবে না কেন একটা তাজা প্রাণ ঝরে গেল? আমার কথা : থ্রিলারপ্রেমীদের জন্য 1952 পুরো একটা কমপ্লিট প্যাকেজ। কি নেই এতে? দুর্ঘটনা, থানা-পুলিশ, আইন-আদালত, রাজনীতি, ষড়যন্ত্র, সব মিলিয়ে ফুল প্যাক অব থ্রিল। কাহিনী জায়গায় জায়গায় একটু স্লো মনে হয়েছে বা বাহুল্য লেগেছে কোথাও কোথাও। তবে কাহিনীর টুইস্ট কম ছিল বলে আমার মনে হয়েছে। কারচেসিং বা গাড়ি সংক্রান্ত বিষয়ে আমার জ্ঞান কম বলে ধরতে পারিনি কিন্তু নির্ভুল কিনা একটু সন্দেহ হয়েছে মাঝে মাঝে। তবে না জানাটা বা কম জানাও একধরনের আশীর্বাদ। প্রিয় লেখকের ভুল থাকলে তা অজানা থাকে এইজন্য। আর শেষটা আমার কাছে একটু বেশি ফিল্মি লেগেছে। এতটা নীতিকথা মনে হয় থ্রিলারে থাকে না। যাই হোক আমার যাত্রাটা ভালো ছিল। সেটাই বড় কথা।।। হ্যাপি রিডিং।।।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-১৯৫২"নিছক কোন সংখ্যা নয়" লেখক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ধরন-থ্রিলার পৃষ্ঠা-৪১৬ মূল্য-৩৮০ প্রকাশনী-বাতিঘর "১৯৫২, নিছক কোন সংখ্যা নয়" লেখকের মৌলিক থ্রিলার বইয়ের সংখ্যায় ষষ্ঠ। প্রথম প্রকাশের সময় এ বইয়ের নাম ছিলো "১৯৫২"। এরপর পাঠকেরা ১৯৫২ এর সাথে "নিছক কোন সংখ্যা নয়" এ কথাটি জুড়ে দেয়। বইয়ের তৃতীয় সংস্করনে লেখক নামকরনেও এটা যোগ করে দেন। গল্পের কাহিনী এরকম, সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেন। ছোট বেলা থেকে যার নেশা গাড়ি। এমনি নেশা যে কারো ডুপ্লিকেট নাম রাখার বেলায়ও সে গাড়ির নাম ব্যবহার করতো। তার গাড়ি চালানোর হাতও বেশ পাকা। যদিও তার নিজস্ব কোন গাড়ি ছিলো না। তবুও বন্ধুরা মিলে দূরে কোথাও যেতে চাইলে তাকেই ড্রাইভ করতে বলতো।অথচ তার কোন ড্রাভিং লাইসেন্স ছিলো না। কাহিনীর শুরুতেই সে অনেক শখ করে জীবনের প্রথম গাড়ি কিনেছে। গাড়ির বাহ্যিক দিক দেখে নয়, গাড়ির সাথে তার আত্মিক হৃদ্ধতা বুঝেই, বাজেটের থেকে আরো দু লাখ টাকা বেশি দাম দিয়ে, গাড়ি কিনেছে। নতুন গাড়ি, খুশি চরমে। বন্ধুদের নিয়ে বারে কিছু মদ গেলা হলো,তবে তা বেশ সামন্যই। ইচ্ছে করেও বেশি গেলেনি বাড়ির রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যেতে হবে বলে। বাড়ি যাওয়ার সময় চার ক্যান বিয়ার নিয়ে রওয়ানা হলো, বাড়ি বসে খাওয়া যাবে এ চিন্তায়। ড্রাইভিং সিটে এমন ভাবে সওয়ার হলো, মনে হচ্ছে গাড়ি যেন তার পোষ-মানানু তাগড়া ঘোড়া। এত সতর্ক হয়েও বিধি বাম! প্রথম দিন গাড়ি রাস্তায় বের করেই দুর্ঘটনার শিকার হল। হঠাৎ আবিস্কার করলো তার গাড়ি কাউকে চাপা দিয়েছে। এবং সাথে সাথেই লোকটি মারা গেলো! এবার আর কি? পুলিশ তাকে খুব সহজেই আটকে ফেলল। সোজা থানায় নিয়ে জেলে পুরে দিলো। শখের গাড়ি চালাতে এত সাবধানতায় চালানোর পরেও! কি ভাবে হলো এটা! তার মাথায় এলো না। কিন্তু না এলে কি হবে? কাজটাতো সত্যিই হয়ে গেছে, তার প্রমাণ সে এখন জেলে! এদিকে সাংবাদিকের বন্ধু, পুলিশ অফিসার গোলাম মওলা ওরফে ছটকু সেদিনেই দিনাজপুর থেকে ঢাকা বদলি হয়ে আসেন। ভাগ্য বৈরি বলে কথা। এসেই দেখে বন্ধুর এই অবস্থা। সেই এই থানার বড় কর্মকর্তা। আর তাই বন্ধুকে বাঁচাতে টানা ১১ ঘণ্টা ভ্রমন করার পরও, নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। প্রথমে ব্যাপারটা খুব সহজ মনে করে বন্ধুকে বাচাতে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। এবং মারা যাওয়া ব্যক্তির উপর দোষ আরোপ করেই, নিষ্কৃতি পেতে চায়। অথচ, তখন পর্যন্ত জানা যায় নি মারা যাওয়া ব্যক্তিটির পরিচয়। পরিচয় জেনে তো চক্ষু চড়ক গাছ। কারণ এবার তো বাঁচার কোন উপায় পর্যন্ত নেই। কেন না যে মারা গেছে তার পরিবার এতটাই প্রতিপত্তিশীল, তাদের হাতেই অদল বদল হয় রাজনৈতিক নেতাগন। সায়েম বা ছটকু কেউই বুঝতে পারেনা, তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে! ছটকু বন্ধু কে বাঁচাতে ভার দেয় তার প্রাক্তন প্রেমিকার ছোট ভাই আইনজীবী নিশুর উপর। এরপরই এমন কিছু তথ্য পাওয়া যায় যা জানতে পেরে সায়েম, ছটকু এমনকি পাঠকের আক্কেল গুডুম অবস্থা! নিজেদের অজান্তেই জড়িয়ে গেলো, বেশ বড়সড় রহস্যের প্যাচে। ব্যপার খুব স্বাভাবিক মনে হলেও তা কতটা ভয়াবহ ছিলো তা পাঠকের আন্তাজের বাইরে। শুরু হলো সায়েম ছটকু ও নিশুর রহস্য অভিযান। একের পর এক ভাঙ্গতে শুরু করলো রহস্যের ঝট। আর পাঠককে অবশ্যই এককেটা টুইস্টে চমকে যেতে হলো। পাল্টে যেতে থাকলো ঘটনা, আর একেকটা নতুন মোড় নিতে থাকলো সব গুলো। যেখানে সায়েমের নিশ্চিত শাস্তি হওয়ার কথা। সেখানে বেরিয়ে এলো অন্য কিছু। তবে কি সবটাই সাজানো? আর এখান থেকে শুরু। নাজিমউদ্দিনের কলমে বেড়িয়ে আসতে থাকে নোংরা রাজনীতি, আর ষড়যন্ত্র । একে একে সব কিছু পিছনে যখন ফেলে রহস্যের কিনারা করতে ছটকু এবং সায়েমকে যথেষ্ট নাকানি চুবানি খেতে হয়েছে। কেন না যারা এর পিছনে আছে তারা সহজ কেউ নয়। এরপর পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে পাঠক যখন প্রায় জেনে যাচ্ছে আসল নাটের গুরু কে, তখনি লেখক আরো একটা ধাক্কা দিবেন পাঠককে। আর তাতে পাঠক এতোটাই হতবাক হবেন, পুরোই চিতপটাং! যাই হোক রহস্য সমাধানে আইনজীবী নিশুরও অবদান আছে বেশ। ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয়। আসলে, কাহিনী আবর্তিত হয় এই ১৯৫২ দিয়েই, আর রহস্যের সমাধানও ১৯৫২। তাছাড়া কাহিনীর শুরুটা বেশ স্বাভাবিক ভাবেই গড়াতে থাকলেও, লেখক এতে প্রচুর মশলা দিয়েছেন। এর ফলে , পাঠক এত গুলো পৃষ্ঠার বই পড়ে ফেলবে কোন রকম নিঃশ্বাস ফেলা ছাড়াই। শেষ পর্যন্ত কাহিনীর আকর্ষণ ছিলো তুঙ্গে। লেখক বেশ সাবলীল ভাবেই বর্ণনা করেছেন চিত্রপট।গল্পের চরিত্রগুলো বেশ সুন্দর ভাবেই ফুটে উঠেছে। মূল পুরুষ চরিত্র গুলোর কাউকেই খুব বেশি সুপারম্যান টাইপ করা হয় নি। গল্পে নারী চরিত্র যারা তাদেরও বেশ ভালোই ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। যদিও কাহিনীতে ততোটা প্রয়োজনীয় ছিলো না তারা। এক্ষেত্রে পাঠককে লেখক রেস্ট নেবার সময় দিয়েছেন। এগুলোর তেমন ব্যবহার না হলে বই আরো ছোট করা যেতো। আরো একটি ব্যপার তা হলো সায়েম, ছটকু, নিশু তাদের গার্লফ্রেন্ডদের সাথে একই রকম আবেগীয় ব্যবহার কেমন জানি একই টেস্ট। এখানে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারতো। সব কিছু বাদ দিলেও প্লট থেকে যা উঠিয়ে এনেছেন লেখক, তা সত্যিই দেখার বিষয়। এখনকার সময়ে আমাদের তরুণ সমাজের যে অবক্ষয় এবং তারা দিনকে দিন সে পথেই আরো বেশি আকর্ষিত হচ্ছে তা বেশ সহজ ভাবেই পাঠকের চোখে তুলে ধরেছেন। এসব ব্যপার গুলো আমাদের সামনেই ঘটছে অথচ আমরা নিরব দর্শক! বইয়ের ভূমিকাতেই লেখক জানিয়েছেন , গল্পের প্লট কোন এক সত্য কাহিনী অবলম্বনে। রেটিং-৪.৫/৫ রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/78489/১৯৫২---নিছক-কোন-সংখ্যা-নয়-----
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ ১৯৫২ঃ নিছক কোন সংখ্যা নয় লেখকঃ মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন পৃষ্ঠাঃ ৪১৬ মুল্যঃ ২৬৬টাকা প্রকাশকালঃ ২০১৪ ক্যাটাগরিঃ রহস্য,থ্রিলার প্রচ্ছদঃ সিরাজুল ইসলাম নিউটন প্রকাশনীঃবাতিঘর কাহিনী সংক্ষেপ ঃ ১৯৫২ নাম শুনলেই মনে হয় ভাষা আন্দোলন নিয়ে কোন গল্প-প্রবন্ধ কিংবা কবিতা, কিন্তু এই বইটির নাম ১৯৫২ কেন? ১৯৫৩-৫৪ কিংবা? ২০১৪ হতে পারত।। সায়েম মোহাইমেন গাড়ি পাগল এই সাংবাদিক, গাড়িকে কে পোষ মানাতে পারেন বেশ ভালই। বেশ ছোট থেকেই গাড়ির প্রতি তার নেশা। ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় গল্পের মূল চরিত্রগুলোর একটি! অনেক স্বপ্ন ছিল নিজের গাড়ির,অবশেষে অনেক কষ্টে তিনি তা কিনলেন। সেদিনই বন্ধুদের পাল্লায় পরে এই গাড়ি কেনা উপলক্ষে হালকা মদ্যপান করেন এবং চার বিয়ারের বোতলসহ গাড়ীতে উঠেন। বাড়ি ফেরার পথে, একদিকে কানে ফোন, অন্যদিকে হাতে বিয়ারের বোটল সাথে নিয়ে উত্তরার-হাইওয়ে দিয়ে গাড়ি চালাছিলেন। ঠিক তখনই তিনি এক ব্যক্তির উপর দিয়ে গাড়ি উঠিয়ে দেন। একসময় জানা যায়, নিহত ব্যক্তি এক ভাষা আন্দোলনের সারথি সুফী পরিবারের ৩য় প্রজন্ম। গ্রেফতার হলেন সাংবাদিক। কাকতালীয় ভাবে তার বন্ধু ছটকু সেদিনই ঢাকা বদলী হয়ে আসেন,এটা কি নিছক কাকতালীয়? আজমত আলী, তাকে কেউ ব্ল্যাকমেইল করছে, নিশু মুহুর্তে নানা খবর জোগার করল কি করে??? আরো নানা মানুষ আসবে গল্পের মধ্যে কাহিনীর প্রয়োজনে কিংবা রহস্যের! পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বইটার গল্প ভাল ছিল , কনফেশন থেকে তো বটেই, বাংলাদেশের নিজস্ব মৌলিক থ্রিলার বেশ ভাল হচ্ছে, যেটা আরো হওয়া উচিৎ ছিল, কারণ বাংলাদেশের সাহিত্য অন্য দেশের চেয়ে কম না বেশ সমৃদ্ধ বহু আগে থেকেই। গল্পটা যখন শুরু করি, ঠিক তখন ফেসবুকের নিউজফিডে ভেসে ওঠে ২০ বছরের এক মেয়ের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু......। আবার মদ্যপান- রেকলেস ড্রাইভিং বাংলাদেশে জ্যামের মত কমন হয়ে গেছে, এছাড়া আরো অনেক কিছুই আছে, যেমন পুলিশি ব্যবস্থা, আরো টুকটাক অনেক কিছু বাংলাদেশের খুব চেনা বিষয়। আচ্ছা আমরা নিজেরা সচেতন তো হতে পারি তাইনা?ঠেকে শিখে মানুষ? আর কত ঠেকলে আমরা সচেতন হব? গল্পটাকে কিছুটা টেনে লম্বা করা হয়েছে আমার মনে হয়েছে। এছাড়া সাসপেন্স আরোবেশি হলে ভাল হত হয়ত। তবে গল্পটা নাকি কিছুটা সত্য ঘটনা নিয়েই, সত্য কিংবা মিথ্যা যায় হোক, আমরা সচেতন হই? ফোন কানে রেখে গাড়ি না চালানো, সাবধানে রাস্তা পারহওয়া...। রিভিউ এর চেয়ে বাজে কথা বেশি বলা হল, দুঃখিত, পোকা-পুকী গণ। তবে হ্যাঁ, থ্রিলার হিসেবে বেশ ভাল হয়েছে বইটা, কিছু বাড়তি অংশ বাদ দিলে বইটা মোটামুটি ২০০-৩০০ পেজ এ হয়ে যেত বলে মনে হয়। রকমারি লিঙ্ক ঃ https://www.rokomari.com/book/78489/%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AB%E0%A7%A8---%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A6%95-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A7%9F----- রেটিং ঃ ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
সব পুলিশ অফিসাররা ঢাকায় বদলি হওয়ার জন্য হাউকাউ করে কিন্তু ছটকুর ঢাকায় বদলি হওয়ায় তার ভালো লাগেনি। দিনাজপুরেই তো বেশ ছিল। কিন্তু তারপরেই ঢাকা আসে আর ঢাকা এসেই মুখোমুখি হয় পুরাতন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু সায়েমর সাথে। তবে যে পরিস্থিতিতে দেখা হয় সেটা খুবই ভয়াবহ। সায়েম এক্সিডেন্ট করেছে। ছটকু জানে সায়েম গাড়ি চালাতে কিরকম ভালোবাসে। নিজের গাড়ি না থাকা সত্বেও ড্রাইভিং করে দুর্দান্ত। সেই সায়েম নতুন গাড়ি কিনেই এক্সিডেন্ট করে বসলো। যেহেতু ছটকু থানার একজন বড় কর্মকর্তা তাই কেসটাকে ধামাচাপা দিতে চায়, ভিকটিম কে ভবঘুরে মাতাল প্রমানিত করে বন্ধুকে বাচাতে চায়। কিন্তু এক্সিডেন্টের দায় থেকে তো এতো সহজে মুক্তি মিলবে না, যখন ছটকু ভাবছিল ভিকটিম মামুলী কেউ ঠিক তখনি প্রকাশ পায় ভিকটিমের আসল পরিচয়। ভিকটিম হল ভাষা সৈনিকের নাতি। তার পরিবার মন্ত্রী মিনিস্টারদের পকেটে রাখে। এরকম পরিবারের এক্সিডেন্ট হবার পর ওপর থেকে একটার পর আর একটা ফোন আসছে। বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি কতই ভয়াভয়, কি কঠিন ফাপরে পড়েছে সায়েম এবং তার বন্ধু। তবে সায়েম বিশ্বাস করে তার গাড়িতে এক্সিডেন্ট হয়নি, আর তাছাড়া ভিকটিমের ফোনও পাওয়া যায়নি। তাহলে এখানে কি লুকিয়ে আছে কোন রহস্য? ছটকুকে কি ফাঁসানো হচ্ছে? নাকি কোন প্রতিশোধের আগুন হঠাৎ জ্বলে উঠেছে ভাষা সৈনিকের নাতির ওপর? কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না আর তাই ছটকু সত্য খুজে বের করার ভার দেয় নিশুর ওপর। নিশু তখন প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। তবে এই কেস নিয়ে সেও যারপরনাই অবাক আর বিষ্মিত। নতুন কেস নিয়ে যথেষ্ট উওেজিত হবার পরও ঠিক করে রেখেছে কোন পয়েন্ট ধরে এগুবে। এভাবে চলতে থাকে কাহিনী। আমরা সবাই জানি বইয়ের নাম ১৯৫২। শুধু মাত্র ভিকটিমের প্রথম প্রজন্মের সাথে যুক্ত হয়ে আছে এই সংখ্যা। তাছাড়া এর সাথে আপাততঃ আর কোন সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু সম্পর্ক তো একটা আছে। এখন প্রশ্ন হলো সেই সম্পর্ক পর্যন্ত পৌছাতে কতটা সময় লাগে আর কোন কোন রহস্য সামনে আসে।এমনিতেই ১৯৯২ এর স্মৃতি আমাদের জন্য খুব একটা সুখকর নয় তবে একদিক থেকে যথেষ্ট আনন্দের। আর সেই দুঃখ মিশ্রিত আনন্দ নিয়ে দারুণ একটা প্লট। তবে আমি বইয়ের নাম দেখে কাহিনী আলাদা কিছু আন্দাজ করেছিলাম। ভেবেছিলাম লেখক আমাদের নিয়ে যাবে ১৯৫২ সালে। কিন্তু নামটা অতিত হলেও পুরা প্লট বর্তমানের। কাহিনী আমার অসাধারণ লেগেছে, কাহিনীর প্রথম দিকে সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে অসংখ্য হাসির বিষয় আছে। আমি জানিনা সেসব বাক্য কতটুকু হাসির হিসাবে কেউ বিবেচনা করবে তবে আমার সত্যিই হাসি এসেছে। দুটি পরিস্থিতির কথা না বললেই নয়। একটা হল ছটকুর পরিচয় নিয়ে আর একটা হল নিশুর চ্যাটিং নিয়ে। নিশু তার প্রেমিকা অরুনী সম্পর্কে বলেছিল "যারা চ্যাটিংয়ে বসে তাদের হাগা মুতা বন্ধ রাখতে হবে "। সত্যিই আমার অসাধারণ লেগেছে, প্রেমময় জিনিস গুলো বাদে কাহিনী আমার কাছে তরতর করে এগিয়ে গেছে, নিঃশ্বাস কিংবা চোখের পাতা ফেলার মতও যেন সময় নেই। সেই সাথে প্রচ্ছদ দারুণ ফাটাফাটি লেগেছে বিধায় যিনি প্রচ্ছদ দিয়েছেন তার নাম দিয়েছি যাইহোক আশাকরি আপনাদের সবমিলিয়ে ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
সায়েম মোহাইমেন। ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় ... এর অন্যতম প্রধান চরিত্র। পেশায় তিনি সাংবাদিক। তবে তার প্রচণ্ড শখের জায়গা হলো 'গাড়ি' । বন্ধুদের গাড়ি সবসময় চালাতেন। অনেকদিনের স্বপ্ন, নিজের একটা গাড়ি হবে। অবশেষে অনেক কষ্টে তিনি তা কিনলেন। বন্ধুদের পাল্লায় পরে এই গাড়ি কেনা উপলক্ষে হালকা মদ্যপান করেন। বাড়ি ফেরার পথে, অনেকটা টাইটানিক জাহাজের মতোন, প্রথম যাত্রাতেই হলো বিপত্তি। তিনি এক ব্যক্তির উপর দিয়ে গাড়ি উঠিয়ে দেন। ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে থানাতে। তার বাল্যবন্ধু ছটকু বা গোলাম মওলাকে ফোন করে উনি থানাতে আনেন। সদ্য গুলশান থানার এসি মওলা সাহেব জানতে পারেন, তার বন্ধু এক ব্যক্তির উপর দিয়ে গাড়ি উঠিয়ে দিয়েছে, যিনি কিনা এই দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবার সূফী পরিবারের বংশধর তড়িৎ সিদ্ধান্তে, নিজের প্রেমিকার ভাইকে আইনী সহযোগিতার জন্যে ডাকেন তিনি। ৬ মাস আগে ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্কে হয়তো জোড়া লাগার হাওয়া বইতে শুরু করে নতুন করে... আইনজীবী নিশু প্রমাণ করতে শুরু করে, তার মক্কেল কিভাবে এই মামলায় নির্দোষ এবং তার গাড়ি ঐ ব্যক্তির উপর দিয়ে যাওয়ার আগেই ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়... কিন্তু কিভাবে ? কেইবা এইটা করলো ? জোরালো কোন প্রমাণের অভাবে সত্যটা জোরালো হচ্ছিলো না। রাজনীতিবিদ আহকাম উদ্দিন রাজনীতিতে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে এবং ভবিষ্যতে মন্ত্রী হবার দৌড়ে হেন কোন কাজ নেই, যা করা বাকি রাখেন নাই। ফলে নিজের পরিবারকে দিতে পারতেন না সময়। এবং এই উপন্যাসের শেষে গিয়ে তাইই দেখা যায়, যে, পারিবারিক বন্ধন যেখানে কম, তার পরিণতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে ...
Was this review helpful to you?
or
সায়েম মোহাইমেন। শৈশব থেকেই সে গাড়ি খুব পছন্দ করত। তার বন্ধুদের মাঝে গাড়ি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী জ্ঞান ছিল তার। এজন্য তারা নিজেদের গাড়িও ছেড়ে দিত সায়েমের হাতে নির্দ্বিধায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার নিজের কেনা প্রথম গাড়ি, সেই গাড়িতে প্রথম দিনই ঘটিয়ে ফেলল দুর্ঘটনা,পৌঁছে গেল জেলে।গোলাম মওলা, সায়েমের বন্ধু। একজন পুলিশ। ভেবেছিল সাধারণ কোন মানুষের মৃত্যু, কেসটা সাধারণ হবে। কিন্তু দেখা গেল দেশের অত্যন্ত প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান আদনান সে নিহত হয়েছে সায়েমের গাড়িব নিচে। স্বাভাবিক ভাবেই এবার কঠিন বিচার হবে। কিন্তু ছোট একটা তদন্তে বেড়িয়ে এল কঠিন সত্য। এখান থেকে কাহিনীর শুরু। একে একে বেড়িয়ে আসে নোংরা রাজনীতি, ঘৃন্য ষড়যন্ত্র আর এর কুটিল চাল। সেই সাথে সাধারণ প্রেম। আসল কাহিনী বের করতে নায়ক অর্থাৎ সায়েম এবং তার বন্ধু ছটকু কে নানা ঘাত, প্রতিঘাত, সংঘাত এর মুখোমুখি হতে হয়েছে। এই কাহিনীতে নিশুর অবদান ও আছে। একের পর এক ঘটনায় যখন আপনি নিশ্চিত আসল হত্যাকারী কে তখন বইয়ের শেষ টা পড়লে আপনি একটা ধাক্কা খাবেন। লেখক বইয়ের শেষে অসম্ভব একটা টুইস্ট রেখেছেন। ব্যক্তিগত মতামতঃ বইটি খুব সাধারণ ঘটনা দিয়ে শুরু। প্রথম প্রথম পড়া শুরু করার পর মনে হবে কাহিনী খুব সাধারণ কাহিনী। কিন্তু কিছুদূর পড়ার পর রহস্য শুরু। উত্তেজনাপূর্ণ কাহিনী। কি হবে কি হবেনা এটা নিয়েই পাঠক শংকায় পরে যাবে। লেখক বেশ সাবলীল , সুন্দর ভাবে বর্ননা করেছেন ঘটনাগুলি। সাধারণ কিছু ঘটনা দিয়ে তৈরি করেছেন অসাধারণ এক কাহিনী। জানতে হলে পড়ে ফেলুন বইটি।
Was this review helpful to you?
or
Another entertaining mystery novel from the author of "Nemesis".
Was this review helpful to you?
or
মনে করুন আপনি একটি গাড়িতে বসে। গাড়িটি চলছে কোন পাহাড়ি রাস্তায়। একটু পর পর অজানা তীক্ষ্ণ বাঁক। এরপরেও গাড়ির গতি ক্রমশ বেড়েই চলছে। আপনার কাছে ব্যাপারটা প্রচণ্ড উত্তেজনাকর যেমন মনে হচ্ছে, আবার ভয়ও পাচ্ছেন। না না আমি এর সাথে এই উপন্যাসটির সরাসরি তুলনা করছি না। কারন ঐ দুর্গম রাস্তায় উত্তেজনার চেয়ে বিপদের পরিমাণটাই বেশি। আর এই উপন্যাসটি পড়লে লাভ ছাড়া কোন ক্ষতি নেই। আমি মূলত তুলনা করছি এই দুটির মাঝের উত্তেজনাকর মুহূর্তগুলোর। তুলনা করছি দুটির ক্রমশ বেড়ে যাওয়া গতির। আর অজানা বাঁকের তো দুই ক্ষেত্রেই ছড়াছড়ি। আসলে উপন্যাসটির তুলনা হয়ত করা উচিৎ রোলার কোস্টার রাইডের সাথে। তবে হ্যা উপন্যাসটি পড়ার সময় একটা মানসিক অশান্তি আপনার সঙ্গী হবে। আপনার মনে হবে কখন এটা পড়া শেষ করবেন, কখন জানতে পারবেন সকল রহস্য এর সমাধান। এই উপন্যাসের যাত্রায় আপনি যখন যাত্রী হবেন, তখন আপনার মনে একটি প্রশ্নই থাকবে, এই যাত্রার শেষে কি আছে। কাহিনী সংক্ষেপ- সায়েম মোহাইমেন। সেই শৈশব থেকে তার স্বপ্ন একটি গাড়ি। তার বন্ধুদের মাঝে গাড়ি সম্পর্কে সে সবচেয়ে বেশি জানে। তাই তো তারা নিজেদের গাড়িও ছেড়ে দিত সায়েমের হাতে নির্দ্বিধায়। সেই সায়েমের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত এই ছিল!! তার নিজের কেনা প্রথম গাড়ি, সেই গাড়িতে প্রথম দিন। সে সময়ই সে ঘটিয়ে ফেলল দুর্ঘটনা, পৌঁছে গেল জেলে। গোলাম মওলা। বেচারা! টানা ১১ ঘণ্টা ভ্রমন করে ঢাকায় পৌঁছে কোথায় ঘুমাবে, তা না করে বেচারাকে রাতবেরাতে দৌড়াতে হল পুলিশস্টেশনে। হবে না কেন? সায়েম যে তারই বন্ধু, তাকে ছাড়াতে হবে না! কিন্তু সায়েম আর সে দুইজনেই জানে না সামনে তাদের জন্য কত বড় বিস্ময় অপেক্ষা করছে। কি ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে তারা। আপাতদৃষ্টিতে যেসব ব্যাপার সাধারন মনে হচ্ছিল তা ধারণ করবে কি বিশাল ভয়াবহতা! উপন্যাসটি পড়ার সময় প্রথমেই মাথায় রাখবেন হাতে সময় আছে তো? হাতে কোন কাজ রেখে পড়তে বসবেন না। কারন একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত আপনার আর উঠতে ইচ্ছে করবে না। একবার পড়া শুরু করলে এই উপন্যাসটি আপনাকে তার সাথে বেঁধে রাখবে। দেখা যাবে আপনি কখন যে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে পড়ে যাচ্ছেন তা নিজেও টের পাচ্ছেন না। উপন্যাসটির গতিময়তার কথা তো আগেই উল্লেখ করেছি। তবে এই গতি কিন্তু সবসময় একইরকম না। একেবারে শুরুর দিকে গতি খুবই সাধারণ। হয়ত সামনের তুমুল গতির জন্য আস্তে আস্তে পাঠকদের তৈরি করছিল। কিন্তু কিছুদূর যাবার পর কাহিনী যে গতিতে চলতে শুরু করে তার তুলনা হতে পারে ব্রেক-ফেল করা কোন গাড়ি। আর সে গতি ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল যেন বুলেট ট্রেনকেও হার মানাবে। আর সাথে উপরি পাওনা হিসেবে রোমাঞ্চকর সব টুইস্ট তো আছেই। তবে এই অদ্ভুত গতিও একসময় কমতে শুরু করবে। তখন উপন্যাসের সে পর্যায়কে নিতান্ত সাধারণ মনে হতে পারে।আসলে এর আগে যে গতিতে কাহিনী এগোচ্ছিল তাতে এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক। অবশ্য এই সময়টা খুবই কম স্থায়ী। একটু পরই কাহিনী আস্তে আস্তে আগের গতি ফিরে পেতে শুরু করে। হয়ত আগের সেই ব্রেক-ফেল করা গতি সম্পূর্ণ পায় না, কিন্তু যা পায় তাও কম নয়। এই উপন্যাসটির শ্রেষ্ঠ সম্পদ কি প্রশ্ন করলে রহস্য, গতিময়তা, মারাত্মক সব টুইস্ট সহ নানা উত্তর দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলোর একটিও সঠিক উত্তর নয়। সঠিক উত্তর লেখকের লেখনী। দুর্দান্ত সাবলীল, প্রাঞ্জল ভাষায় কাহিনীর বর্ণনা করেছেন তিনি। তবে এ কারণে আমি একে সঠিক উত্তর বলছি না। আরও স্পষ্ট করে বললে এই উপন্যাসের শ্রেষ্ঠ সম্পদ লেখকের লেখার দুর্ধর্ষ রসবোধ। যাকে বাংলায় বলে বাক্যবৈদগ্ধ, ইংরেজিতে “Wit”। আমি এর কোন উদাহরণ দিতে যাচ্ছি না, কারন পুরো উপন্যাসটিই বলতে গেলে এর উদাহরণ। উপন্যাসটির এতসব ভালগুণ থাকলেও কিছু খামতিও আছে। অনেকে বলে উপন্যাসটির নারী চরিত্রের সাথে সম্পর্কিত ঘটনাগুলো বিরক্তিকর। আমার কাছে অবশ্য তা মনে হয়নি। এরকম গতির কাহিনীতে মাঝে মাঝে কিছুটা রিলাক্স হবারও দরকার আছে। তবে বিরক্তিকর যা লেগেছে উপন্যাসের তিন প্রধান পুরুষ চরিত্রেরই তাদের ভালভাসার নারীর প্রতি একই ধরনের আচরণ। এক্ষেত্রে মনে হয় তাদের যেন একই ছাঁচে গড়া হয়েছে! একটা-দুটো ঘটনার কারনে আমি এরকম বলছি না। পুরো উপন্যাসটিতেই আমার কথার প্রতিফলন পাবেন। উপন্যাসটির আরেকটি খামতি কাকতালীয়টা। জীবনে কাক-তাল(!)জাতীয় ঘটনা ঘটবেই। আর এ ধরনের লেখায় একটু বেশিই ঘটবে এ তো জানা কথা। কিন্তু যখন রুডি চরিত্রের আগমন ঘটে, কিছু কিছু এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে যা ভেঙ্গে দিতে পারে কাকতালীয় ঘটনার যাবতীয় রেকর্ড। উপন্যাসটির আরেকটি জায়গা খামতির জায়গা এর ক্লাইমেক্স। একে অবশ্য খামতি পুরোপুরি বলা উচিত নয়। আসলে উপন্যাসটির ১২ আনা জায়গা যে গতিতে চলেছে, আর আপনার মনে যে প্রত্যাশা জাগিয়েছে তার কাছে একটু পানসে মনে হতে পারে ক্লাইমেক্সকে। কাহিনীর শুরু আস্তে হলেও পরে যে বিশাল গতি পায় তা আগেই বলেছি। আসলে উপন্যাসটির ঐ অংশটি(মানে ১২ আনা অংশ!!) আন্তর্জাতিক মানের। ঐ অংশটি পাল্লা দিতে পারে বিশ্বের যে কোন থ্রিলারকে। মাথানষ্ট করা এই উত্তেজনাময় অংশ আপনাকে দিবে সর্বোচ্চ তৃপ্তি। লেখক কাহিনীর শেষে সব ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেছেন, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনাকে সন্তুষ্ট করবে। ক্লাইমেক্স পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি। কিভাবে কি হয়েছে ধরতে না পারলেও সবকিছুর পিছনে কে আছে আমি অবশ্য আগেই টের পেয়েছিলাম। তবে তা লেখক প্রকাশ করার মাত্র কয়েক পৃষ্ঠা আগে!! মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর সাথে আমার প্রথম পরিচয় তার করা অনুবাদের মাধ্যমে। তার করা বেশ কিছু অনুবাদ পড়ার পর জানতে পারি তার লেখা মৌলিক উপন্যাসগুলোর কথা। পড়া শুরু করি তার 'নেমেসিস' সিরিজ।। বেশ ভাল লেগেছিল পড়ে। ভাল লেগেছিল বাংলাদেশের কোন লেখক এ ধরনের লেখা লিখেছেন বলে। আমার এই ভাল লাগা এক লাফে কয়েক ধাপ উপরে উঠিয়ে নিয়েছে ১৯৫২। তিনি এই লেখাটি লিখেছেন সত্য এক ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে। তার ভাষায় ঘটনাটি ছিল পোয়েটিক জাস্টিসের চমৎকার উদাহরণ। আর সে উদাহরণ থেকে তিনি সৃষ্টি করছেন সার্থক থ্রিলারের বাস্তব উদাহরণ।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশে মৌলিক থ্রিলার লেখক খুব কম। হাতেগোনা কয়েকজন। তবে নিঃসন্দেহে মোঃ নাজিম উদ্দিন তাদের মধ্যে সেরা হবার দাবী রাখেন। উনার লেখা আমার পড়া প্রথম বই হল জাল। বইটা যেমনি লাগুক, লেখক কিন্তু নজর কেড়েছিলেন। এরপর পড়া বই হল ১৯৫২ (আমি জেফরী বেগ বাষ্টার্ড সিরিজের আগেই এটা পড়েছি)। খুব ভাল লাগছে বই টা। সাধারন একটা অ্যাক্সিডেন্টকে কেন্দ্র করে অসাধারণ ঘটনা প্রবাহের এক বই। মাঝে কিছু ফ্ল্যাশব্যাক ছাড়া পুরা ৪১৬ পাতার ৪০০ পাতা দুর্দান্ত গতিতে এগিয়েছে। প্লটের ভিতর প্লট, তার ভিতর আরেক প্লট - মাইন্ড ব্লোয়িং। চরিত্রগুলা অনেকটা বাস্তব করেই লেখক তুলে ধরেছে। পুরা বই পড়ে দুই নায়কের দুই নায়িকার চরিত্র বেহুদা মনে হতে পারে অনেকের কাছে, কিন্তু আমার মনে হয় দুই নায়ককে সুপার হিউম্যান না দেখিয়ে হিউম্যান টাচ দেয়ার জন্য এটা জরুরী ছিল। তবে সব ভাল দিক তাও না। আমাকে আমার খারাপ লাগা দিক গুলো বলতে বললে আমি বলব - ১। কাকতালীয় ঘটনাটা একটু বেশী। যদিও শেষ হতে হতে এটাকে কাকতালীয় ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাও কাকতালীয় ঘটনা দিয়েই। ২। সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে একটু বেশী হয়ে গেছে মনে হয়। এত বেশী স্ল্যাং আর সেক্স প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না। কাদা সামনে থাকলে সেটাকে অস্বীকার করা যাবে না ঠিক, কিন্তু থাকলেই কি ঘাটতে হবে? ৩। ১৯৫২ বললে প্রথমে ভাষা আন্দোলন এর কথা মাথায় আসে। সেক্ষেত্রে বইটার স্লোগান মনে হয় একটু মিসলিডিং। ৪। এরকম একটা ভাল বই অনেকাংশেই ম্লান হয়ে যায় তার ফিনিশিং এর দুর্বলতার জন্য। ধরেন আপনি একটা বই পড়তেছেন - চুরির কাহিনী। দাড়োয়ান বলছে বাইরের কেউ আসে নি, ঘরের লোক বলছে বাইরের কাউকে দেখেনি। ত আপনি চোর ঘরের লোক ধরে ইয়ে আগালেন। প্রায় ধরে ফেলছেন চোরকে, এমন সময় জানতে পারলেন যে গেটের সামনে সিসি টিভি আছে। অন করে দেখলেন দাড়য়ান ঘুমাইছে, আর সেই সুযোগে বাইরের লোক চুরি করছে। কেমন লাগবে? আরও একটা দুইটা ছোট জায়গায় খারাপ লাগছে, সেগুলো ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করলাম না। আমার রেটিং - ৪.৫/৫ (ফিনিশিংটায় তৃপ্ত না)
Was this review helpful to you?
or
বাংলা মৌলিক থ্রিলার এর সংখ্যা এমনিতেই নগন্য । সেখানে এই বইটাকে আমি অসাধারন থ্রিলার বলবো । একটা গাড়ি দুর্ঘটনা দিয়ে বই এর কাহিনি শুরু হলেও সেটি অসাধারন ভাবে ঘটনার বাকে মোড় নেয় যে আমি পুরা যেন কাহিনির ভেতর ধুকে গেছিলাম । একবসাতে পড়ে ফেলার মতন দারুন এন্টারটেইন বই । এনডিং এমন হবে কল্পনাও করি নাই । নিঃসন্দেহে এটি পড়ে দেখতে পারেন ।
Was this review helpful to you?
or
প্রচুর অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা। যে কথা দুই লাইনে শেষ করা যায় তা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ১-২ পাতা করে ফেলা। খুব বিরক্তিককর।
Was this review helpful to you?
or
Book best silo .ses ta amake obak korese .vabtei pari ni ses ta amon hobe .ak kothai oshadharon
Was this review helpful to you?
or
good thriller.
Was this review helpful to you?
or
মনে করুন আপনি একটি গাড়িতে বসে।গাড়িটি চলছে কোন পাহাড়ি রাস্তায়।একটু পর পর অজানা তীক্ষ্ণ বাঁক।এরপরেও গাড়ির গতি ক্রমশ বেড়েই চলছে।আপনার কাছে ব্যাপারটা প্রচণ্ড উত্তেজনাকর যেমন মনে হচ্ছে,আবার ভয়ও পাচ্ছেন।না না আমি এর সাথে এই উপন্যাসটির সরাসরি তুলনা করছি না।কারন ঐ দুর্গম রাস্তায় উত্তেজনার চেয়ে বিপদের পরিমাণটাই বেশি।আর এই উপন্যাসটি পড়লে লাভ ছাড়া কোন ক্ষতি নেই।আমি মূলত তুলনা করছি এই দুটির মাঝের উত্তেজনাকর মুহূর্তগুলোর।তুলনা করছি দুটির ক্রমশ বেড়ে যাওয়া গতির।আর অজানা বাঁকের তো দুই ক্ষেত্রেই ছড়াছড়ি।আসলে উপন্যাসটির তুলনা হয়ত করা উচিত রোলার কোস্টার রাইডের সাথে।তবে হ্যা উপন্যাসটি পড়ার সময় একটা মানসিক অশান্তি আপনার সঙ্গী হবে।আপনার মনে হবে কখন এটা পড়া শেষ করবেন,কখন জানতে পারবেন সকল রহস্য এর সমাধান।এই উপন্যাসের যাত্রায় আপনি যখন যাত্রী হবেন,তখন আপনার মনে একটি প্রশ্নই থাকবে,এই যাত্রার শেষে কি আছে। কাহিনী সংক্ষেপ- সায়েম মোহাইমেন।সেই শৈশব থেকে তার স্বপ্ন একটি গাড়ি।তার বন্ধুদের মাঝে গাড়ি সম্পর্কে সে সবচেয়ে বেশি জানে।তাই তো তারা নিজেদের গাড়িও ছেড়ে দিত সায়েমের হাতে নির্দ্বিধায়।সেই সায়েমের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত এই ছিল!!তার নিজের কেনা প্রথম গাড়ি,সেই গাড়িতে প্রথম দিন।সে সময়ই সে ঘটিয়ে ফেলল দুর্ঘটনা,পৌঁছে গেল জেলে। গোলাম মওলা ।বেচারা!টানা ১১ ঘণ্টা ভ্রমন করে ঢাকায় পৌঁছে কোথায় ঘুমাবে,তা না করে বেচারাকে রাতবেরাতে দৌড়াতে হল পুলিশস্টেশনে।হবে না কেন?সায়েম যে তারই বন্ধু,তাকে ছাড়াতে হবে না!কিন্তু সায়েম আর সে দুইজনেই জানেনা সামনে তাদের জন্য কত বড় বিস্ময় অপেক্ষা করছে।কি ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে তারা।আপাতদৃষ্টিতে যেসব ব্যাপার সাধারন মনে হচ্ছিল তা ধারন করবে কি বিশাল ভয়াবহতা! উপন্যাসটি পড়ার সময় প্রথমেই মাথায় রাখবেন হাতে সময় আছে তো?হাতে কোন কাজ রেখে পড়তে বসবেন না।কারন একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত আপনার আর উঠতে ইচ্ছে করবে না।একবার পড়া শুরু করলে এই উপন্যাসটি আপনাকে তার সাথে বেঁধে রাখবে।দেখা যাবে আপনি কখন যে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে পড়ে যাচ্ছেন তা নিজেও টের পাচ্ছেন না। উপন্যাসটির গতিময়তার কথা তো আগেই উল্লেখ করেছি।তবে এই গতি কিন্তু সবসময় একইরকম না।একেবারে শুরুর দিকে গতি খুবই সাধারন।হয়ত সামনের তুমুল গতির জন্য আস্তে আস্তে পাঠকদের তৈরি করছিল।কিন্তু কিছুদূর যাবার পর কাহিনী যে গতিতে চলতে শুরু করে তার তুলনা হতে পারে ব্রেক-ফেল করা কোন গাড়ি।আর সে গতি ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছিল,মনে হচ্ছিল যেন বুলেট ট্রেনকেও হার মানাবে।আর সাথে উপরি পাওনা হিসেবে রোমাঞ্চকর সব টুইস্ট তো আছেই।তবে এই অদ্ভুত গতিও একসময় কমতে শুরু করবে।তখন উপন্যাসের সে পর্যায়কে নিতান্ত সাধারন মনে হতে পারে।আসলে এর আগে যে গতিতে কাহিনী এগোচ্ছিল তাতে এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক।অবশ্য এই সময়টা খুবই কম স্থায়ী।একটু পরই কাহিনী আগের গতি ফিরে পেতে শুরু করে।হয়ত আগের সেই ব্রেক-ফেল করা গতি সম্পূর্ণ পায় না,কিন্তু যা পায় তাও কম নয়। এই উপন্যাসটির শ্রেষ্ঠ সম্পদ কি প্রশ্ন করলে রহস্য,গতিময়তা,মারাত্মক সব টুইস্ট সহ নানা উত্তর দেওয়া যেতে পারে।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলোর একটিও সঠিক উত্তর নয়।সঠিক উত্তর লেখকের লেখনী।দুর্দান্ত সাবলীল,প্রাঞ্জল ভাষায় কাহিনীর বর্ণনা করেছেন তিনি।তবে এ কারনে আমি একে সঠিক উত্তর বলছি না।আরও স্পষ্ট করে বললে এই উপন্যাসের শ্রেষ্ঠ সম্পদ লেখকের লেখার দুর্ধর্ষ রসবোধ।যাকে বাংলায় বলে বাক্যবৈদগ্ধ,ইংরেজিতে “Wit”।আমি এর কোন উদাহরণ দিতে যাচ্ছি না,কারন পুরো উপন্যাসটিই বলতে গেলে এর উদাহরণ। উপন্যাসটির এতসব ভালগুণ থাকলেও কিছু খামতিও আছে।অনেকে বলে উপন্যাসটির নারী চরিত্রের সাথে সম্পর্কিত ঘটনাগুলো বিরক্তিকর।আমার কাছে অবশ্য তা মনে হয়নি।এরকম গতির কাহিনীতে মাঝে মাঝে কিছুটা রিলাক্স হবারও দরকার আছে।তবে বিরক্তিকর যা লেগেছে উপন্যাসের তিন প্রধান পুরুষ চরিত্রেরই তাদের ভালভাসার নারীর প্রতি একই ধরনের আচরণ।এক্ষেত্রে মনে হয় তাদের যেন একই ছাঁচে গড়া হয়েছে!একটা-দুটো ঘটনার কারনে আমি এরকম বলছি না।পুরো উপন্যাসটিতেই আমার কথার প্রতফলন পাবেন।উপন্যাসটির আরেকটি খামতি কাকতালীয়টা।জীবনে কাক-তাল(!)জাতীয় ঘটনা ঘটবেই।আর এ ধরনের লেখায় একটু বেশিই ঘটবে এ তো জানা কথা।কিন্তু যখন রুডি চরিত্রের আগমন ঘটে,কিছু কিছু এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে যা ভেঙ্গে দিতে পারে কাকতালীয় ঘটনার সকল রেকর্ড।উপন্যাসটির আরেকটি জায়গা খামতির জায়গা এর ক্লাইমেক্স।একে অবশ্য খামতি পুরোপুরি বলা উচিত নয়।আসলে উপন্যাসটির ১২ আনা জায়গা যে গতিতে চলেছে,আর আপনার মনে যে প্রত্যাশা জাগিয়েছে তার কাছে একটু পানসে মনে হতে পারে ক্লাইমেক্সকে। কাহিনীর শুরু আস্তে হলেও পরে যে বিশাল গতি পায় তা আগেই বলেছি।আসলে উপন্যাসটির ঐ অংশটি(মানে ১২ আনা অংশ!!) আন্তর্জাতিক মানের।ঐ অংশটি পাল্লা দিতে পারে বিশ্বের যে কোন থৃলারকে।মাথানষ্ট করা এই উত্তেজনাময় অংশ আপনাকে দিবে সর্বোচ্চ তৃপ্তি।লেখক কাহিনীর শেষে সব ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেছেন,যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনাকে সন্তুষ্ট করবে।ক্লাইমেক্স পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি।কিভাবে কি হয়েছে ধরতে না পারলেও সবকিছুর পিছনে কে আছে আমি অবশ্য আগেই টের পেয়েছিলাম।তবে তা লেখক প্রকাশ করার মাত্র কয়েক পৃষ্ঠা আগে!! মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর সাথে আমার প্রথম পরিচয় তার করা অনুবাদের মাধ্যমে।তার করা বেশ কিছু অনুবাদ পড়ার পর জানতে পারি তার লেখা মৌলিক উপন্যাসগুলোর কথা।পড়ে ফেলি জেফরি-বাস্টার্ড সিরিজের প্রথম দুটি উপন্যাসও(বাকি দুটি এখনো পড়া হয়নি)।বেশ ভাল লেগেছিল পড়ে।ভাল লেগেছিল বাংলাদেশের কোন লেখক এধরনের লেখা লিখেছেন বলে।আমার এই ভাল লাগা এক লাফে কয়েক ধাপ উপরে উঠিয়ে নিয়েছে ১৯৫২।তিনি এই লেখাটি লিখেছেন সত্য এক ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে।তার ভাষায় ঘটনাটি ছিল পোয়েটিক জাস্টিসের চমৎকার উদাহরণ।আর সে উদাহরণ থেকে তিনি সৃষ্টি করছেন সার্থক থৃলার এর বাস্তব উদাহরণ।নাজিম ভাইয়ের এখন পর্যন্ত করা সেরা কাজ সম্ভবত এটাই।সামনে হয়ত তার কাছ থেকে আমরা এর চেয়েও ভাল লেখা উপহার পাব।সে উপহারের অপেক্ষায় রইলাম। এক নজরে বইয়ের নাম-১৯৫২-নিছক কোন সংখ্যা নয়… লেখক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশক-বাতিঘর প্রকাশনী প্রথম প্রকাশ-ফেব্রুয়ারি বইমেলা,২০১৪ প্রচ্ছদ-সিরাজুল ইসলাম নিউটন গায়ের মূল্য-৩৪০ টাকা আমার রেটিং-৪.৭৫/৫
Was this review helpful to you?
or
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর এই উপন্যাসটা আমার ওনার রবীন্দ্রনাথ এর থেকেও ভালো মনে হয়েছে। প্লট ভালো ছিলো এবং জম্পেশ থ্রিলিং ও ছিলো। তবে লেখকের একটাই দোষ আছে উনি প্রচুর অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা করেন যেটা আদতে অনেক বিরক্তিকর।
Was this review helpful to you?
or
এই পর্যন্ত যারা পড়েছে বইটা তারা সবাই খুবই পজিটিভ রিভিউ দিয়েছে। আমি আর তাহলে নেগেটিভ কি বলব?? আসলেই বইটা ভাল লেগেছে, যদিও যে গতিতে বইটা ছুটছিল সে অনুপাতে সারপ্রাইজ দিতে পারে নাই, কারণ প্লট এর একাংশ নেক্সাস এর সাথে খানিকটা মিলে যায়(আমার মতে) তাই ঐ মূল সার্প্রাইজ টা আমাকে তেমন নাড়া দিতে পারেনাই, তবুও বলব নি:সন্দেহে বাংলাদেশ এর পরিপ্রেক্ষিতে লেখা এটা অন্যতম সেরা থ্রিলার্। গল্পের ক্যারেক্টার গুলা খুবই সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, কাউকেই অতিরিক্ত নায়োকোচিত কিছু করতে হয় নাই। গল্পের কারণে যে পার্শ্বচরিত্র গুলো আনা হয়েছে সেগুলো ও বেশ উপভোগ্য, যে যার জায়গায় ঠিক আছে। তবে গল্পের মূল নায়ক কে এই নিয়ে আমার সন্দেহ আছে, তবে দুই জনকেই ভাল লেগেছে। আর যথারিতী উনার বাকী বইগুলার মত এই বই এর নারী চরিত্র গুলাও আকর্ষনীয় ছিল :p । যদিও বই এ এদের ভূমিকা কেবল অলঙ্করণেই । তবুও যদি এই চরিত্র ও খন্ড গল্প গুলো না থাকত তাহলে অনেক সময় বোরিং লাগত। ১৯৫২ জিনিসটা কি সেটা পাঠক এই বই এর প্রচ্ছদ এর দিকে একটু ভাল মত তাকালেই বুঝতে পারবে, মূল রহস্য ও একে ঘিরেই। নাজিমুদ্দিন এর বই এর আরেকটা জিনিস আমার ভাল লাগে যে উনি আমাদের সমাজের যে খারাপ দিকগুলা আছে এবং সময়ের সাথে সাথে এখানকার যুব সমাজ যে একটি অন্ধকার দিকে পা বাড়াচ্ছে তা খুব সুন্দর ভাবে তাদেরই দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেন। যে জিনিসগুলা আমরা প্রত্যেকেই দেখি কিন্তু চুপ করে থাকি বা থাকতে বাধ্য হই। এ বই এও উনি এই দিকগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করেছেন। যারা গাড়ী ভালবাসেন তাদেরও এই বইটা ভালই লাগবে। কারণ বইটাতে যথেষ্ঠ গাড়ী চেজিং আছে। গল্পের প্লট এর বিস্তৃতি ছোট কিন্তু এটার উপরেই যে লেখক এত সুন্দর করে কাহিনী সাজিয়েছেন সে জন্যে অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে। তবে থ্রিলার এর কোন শাখায় যে এটা পড়বে তা বলা মুশকিল তবে মার্ডার মিস্ট্রি এর সাথে পলিটিকাল ড্রামার একটা মিশ্রণ বলা যেতে পারে। বই এর ভূমিকা তে লেখক যে পোয়েটিক জাস্টিস এর কথা বলেছেন শেষে এসে তা একেবারে সার্থক মনে হবে। আর লেখক কিছু ছোট ছোট দৈনন্দিন ঘটনার মাধ্যমে এত সুন্দর করে একটা বৃহত ভাবনা তুলে ধরেন যে সবাই ভাবতে বাধ্য । প্রত্যাশা মতই আবার বিনোদন দেয়ার জন্যে উনাকে আবারো ধন্যবাদ। :)
Was this review helpful to you?
or
একটু আগে পড়ে শেষ করলাম ।কাহিনী টা আমার কাছে দারুন লেগেছে ।সাথে থ্রিলার তো ছিলই।আমাদের সমাজ নিয়ে লেখকের সচেতনতাও ফুটে উটেছে। অপরাজনীতি,ইয়াবার কোপানলে পড়া যুবসমাজ,আধুনিক পোলাপাইন এগুলোকে কাহিনীতে খুব ভালোভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন।মোট কথা, বইটা আমার খুব ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
নাজিম উদ্দিনের থ্রিলারের নাম ১৯৫২-নিছক কোন সংখ্যা নয়, সত্যি কথা বলতে কী এতো বড় সাইজের একটা বই পড়ে শেষের টুইস্ট দেখে আমি হতাশ। সারা রাত রামায়ন পড়ে সীতা করা বাপ!!! মিস্টিক রিভার মুভিটা দেখলেই এই উপন্যাসের সাথে অনেক সাদৃশ্য খুঁজে পাবেন, ডেনিস লেহানের এই উপন্যাসটা অসাধারন একটা জিনিস, নাজিম উদ্দিন কী সেই অনুপ্রেরনায় এই জিনিস লিখলেন! বুঝলাম না। মূল কাহিনি লিখতে গেলে বইটা একশ পাতায় শেষ হয়ে যাবার কথা, কিন্তু লেখক শুধু শুধু এমন সব কাহিনি, উপ-কাহিনি যোগ করেছেন তাতে বইটা শুধু বড়ই হয়েছে, কাজের কাজ কিছু হয় নি। পাঠক প্রথম ৫০ পাতা পড়ে শেষ ৫০ পাতা পড়লেই হয়ে যাবে, মাঝখানের অংশ বাড়তি। আর ধার করা কাহিনি থেকে লেখা থেকে বিরত থাকবেন আশা করি, সেটা মিস্টিক রিভারই হোক বা নির্মাতা শ্রেনীর কারো কাছ থেকেই হোক। আমরা মৌলিক জিনিস আশা করছি, আশা করি উনি এই জিনিসটা সামনে থেকে মাথায় রাখবেন।
Was this review helpful to you?
or
'১৯৫২ - নিছক কোন সংখ্যা নয়' পড়ার পর আমার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হলঃ এটি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের এ পর্যন্ত লেখা মৌলিক থ্রিলারগুলোর মধ্যে অবিসংবাদিত সেরা তো বটেই, পাশাপাশি সম্ভবত বাংলাভাষায় রচিত মৌলিক থ্রিলারগুলোর মধ্যেও অন্যতম শ্রেষ্ঠ। এমনকি বাংলা সাহিত্যের নিয়মিত অনুসারীদের পক্ষেও কষ্টের কাজ হবে মনে করা যে শেষ কবে একজন বাংলাদেশী লেখকের কলম (কিংবা কিবোর্ড) থেকে এত শক্তিশালী একটি থ্রিলার সৃষ্টি হয়েছে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের থ্রিলারগুলোর যে বৈশিষ্ট্য, সেটিকে অক্ষুণ্ন রেখে এই থ্রিলারেরও শুরুটা হয়েছে একেবারে সহজ সরলভাবে। ভাষাগত সহজ সরলতার কথা বলছি না। বলছি কাহিনীর সরলতার কথা। কাহিনীর প্রবর্তনা হয়েছে এমনই সাধারণ একটা ঘটনা থেকে যে তা পরবর্তিতে অসাধারনত্বে রূপ নিতে পারবে তা অভাবনীয়। কিন্তু এই থ্রিলারেও সেটিই হয়েছে। সাংবাদিক সায়েম মোহাইমেন গাড়ি কিনে প্রথমদিনই দুর্ঘটনার শিকার হল। নিজে তাতে আহত না হলেও, আপাতদৃষ্টিতে তার জন্যই নিহত হল জনৈক ব্যক্তি। একেবারে সাদামাটা কেস। বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে হরহামেশা যা ঘটে। কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে থাকে চমকপ্রদ নানা তথ্য। প্রথমত, ভিক্টিমের পরিচয় ও তার পারিবারিক প্রভাব প্রতিপত্তির কথা জানতে পারলে চোখ কপালে উঠবে সকলেরই। দ্বিতীয়বার বিস্ময় জাগবে যখন জানা যাবে, এটা আসলে কোন নিছক সড়ক দুর্ঘটনার কেস নয়। ভিক্টিম খুন হয়েছে দুর্ঘটনার আগেই! এভাবেই রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হতে থাকে। কাহিনীতে ধীরে ধীরে যোগ হতে থাকে নানা টুইস্ট অ্যান্ড টার্ন। বেশ মোটা দাগেই দেশের রাজনীতি ও মন্ত্রিপদ প্রত্যাশী এক সংসদ সদস্য জড়িয়ে পড়ে কাহিনীতে। দেশের রাজনীতির কুচ্ছিত দিকটাকে নির্দেশের একটা চেষ্টাও দেখা গেছে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় হয়ে ওঠে একটা সংখ্যা - ১৯৫২ যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে থাকে কাহিনী। তাতেই অবশ্য সব শেষ না। প্রতিভাধর চিত্রশিল্পীরা যেমন তুলির শেষ এক জাদুকরী আঁচড়ের মাধ্যমে ক্যানভাসে আঁকা চিত্রকে নিমিষেই এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেন, তেমনি আমাদের দেশের বর্তমানের সেরা থ্রিলার লেখকটিও তার এই অসাধারণ থ্রিলারের শেষ পর্যায়ে এসে তুলে ধরেছেন মাদকাসক্তি আর মাদকের ভয়াল ছোবলে সৃষ্ট সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়াল চিত্র। সবকিছুকে এক সুতোয় গেঁথে শেষ অব্দি যখন রহস্যের পর্দা উন্মোচন হতে থাকে, তখন আর '১৯৫২ - নিছক কোন সংখ্যা নয়' নামক থ্রিলারটি নিছক কোন থ্রিলারের উপাধিতে আবদ্ধ থাকে না। হয়ে ওঠে এক মহাকাব্যিক সৃষ্টিকর্ম। থ্রিলার হলেও দমবন্ধ করা টেনশনে মোড়া টানটান উত্তেজনার মুহুর্ত এই বইতে কমই আছে। বরং রহস্য উন্মোচনের সমান্তরালে লেখক বলতে চেয়েছেন চারটা আলাদা আলাদা ভালোবাসার কাহিনীও। জানি না এই ব্যাপারটি কার কাছে কেমন লাগবে। ইতিবাচক দৃষ্টিতে যারা জিনিসটিকে দেখবেন, তারা বলতে পারেন যে থ্রিলার কাহিনীর ফাঁকে ফাঁকে পাঠককে একটু জিরিয়ে নেবার সুযোগ দিতে এটা হয়ত একটা মাস্টারস্ট্রোক। কিন্তু কোন কোন হার্ডকোর থ্রিলার পাঠক এটিকে স্রেফ লেখকের উপন্যাসের পরিধি বৃদ্ধির একটি কৌশল বলেও দাবি করতে পারেন। তবে একটা কথা মানতেই হবে, বর্তমান প্রজন্মের সম্পর্কের স্বাভাবিক চিত্রকে লেখক যে সাবলীলতায়, বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তুলে ধরতে চেয়েছেন, তা প্রশংসার দাবিদার। তবে আরেকটা বিষয় উল্লেখ্য। সামগ্রিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করলে আলোচ্য উপন্যাসটির কিছু দুর্বলতাও চোখে পড়ার মত। যেমন প্রথমেই বলা যায় কাহিনীবিন্যাসের ব্যাপারটি। প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে একটা সাসপেন্স তৈরির প্রবণতা দেখা গেছে। কিন্তু সবক্ষেত্রে সেটা যে ঠিক মানায় না তা লেখকের বোঝা দরকার। যেসব পাঠক কাহিনীর গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম, কিছু কিছু ব্যাপার তাদের কাছে প্রেডিক্টেবল হয়ে ওঠে। সেইসব জায়গায় তাই বাড়তি সাসপেন্স ক্রিয়েট না করে যদি সহজভাবেই একবারে বিষয়গুলো খোলাসা করা হত, তাহলেই বরং ভাল দেখাত। মাঝেমধ্যে আবার পাঠককে টেনশনে রাখতে একটা অধ্যায়ের শেষে চমকজাগানিয়া কিছু লিখে, পরের দুই তিন অধ্যায়ে অন্য কোন টপিকে ফোকাস করা হয়েছে। তাতে অসুবিধা থাকত না, যদি মাঝখানের সেই অধ্যায়গুলোর কাহিনীর সাথে আসলেই কোন বড় সম্পর্ক থাকত। স্রেফ পাঠকের সামনে নাটকীয়তা সৃষ্টি করতে গিয়ে মাঝখানে খানিকটা অংশ জুড়ে অর্থহীন কিছু দৃশ্য আর সংলাপ টেনে আনার ব্যাপারটা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের মত শক্তিশালী লেখকের স্বভাবের সাথে ঠিক মেলে না। এছাড়াও আমার যেটি দৃষ্টিকটু লেগেছে তা হল এই উপন্যাসের প্রথমার্ধ, মূলত প্রথম ২৫০ পাতার মত কাহিনীর গতি খুবই স্লো পেসড। ওইটুক জায়গায় উল্লেখযোগ্য ঘটনা বেশি ঘটেনি। মূলত হাতে গোনা কয়েকটি। কিন্তু যেগুলো ঘটেছে, সেগুলোকে নিয়ে অতিরিক্ত ঘাঁটাঘাঁটি, চরিত্রদের মুখ থেকে একই টাইপের সংলাপ বারবার বের করে আনা ঠিক যুক্তিসঙ্গত না। শেষের দিকে এসে অর্থাৎ শেষ ৩০-৩৫ পাতায় কাহিনী আবার আচমকাই নতুন দিকে মোড় নিতে থাকে। এরকমটাই যদি হওয়ার থাকে, তাহলে আগের ৩৭০ পাতা পাঠক কেন পড়লাম, এই প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগতে পারে। শেষের দিকে মূল খুনি ও তার খুনের মোটিভ সম্পর্কে পত্রিকার রিপোর্টের মত ধারাবিবরণী না দিয়ে, কাহিনীর শুরু থেকেই যদি মাঝে সাঝে খুনিকে নিয়ে দুই-একটা অধ্যায় সাজানো হত বা তাকে ঘিরে একটু আধটু রহস্যের জাল বোনা হত, তাহলে বোধ হয় ভাল হত। আচমকা খুনিকে চিহ্নিত করা ও একনাগাড়ে অনেক ঘটনা সামনে নিয়ে আসাটা অন্তত আমার কাছে ভাল লাগেনি। সেগুলো যত বিস্ময়করই হোক, একসাথে তাদের রিভিল না করে ধীরে ধীরে তা করলে পাঠক হয় বেশি বিনোদিত হত। যাইহোক, পরিশেষে একটাই কথা বলতে চাই, বাংলা সাহিত্যের মৌলিক থ্রিলারের সীমিত পরিসরে '১৯৫২' উপন্যাসটি একটি অসামান্য সংযোজন। যারা থ্রিলারের ভক্ত, তাদের একদমই উচিৎ হবে না এই উপন্যাসটি পড়বার মজা থেকে নিজেদের বঞ্চিত করা।
Was this review helpful to you?
or
" দীর্ঘদিন খাঁচার ভেতরে থাকার পর খাঁচা খুলে দিলেও পাখি মুক্ত হতে চায় না। স্বাধীনতা মানে খাঁচা খুলে দেয়া নয়, খাঁচা থেকে বের হওয়া। " - মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন গাড়িপাগল এক ছেলে। পেশায় সাংবাদিক। নাম সায়েম মোহাইমেন। অনেক শখ করে জীবনের প্রথম গাড়ি কিনেছে। প্রথম দিন গাড়ি রাস্তায় বের করেই দুর্ঘটনার শিকার হল। তার গাড়ির ধাক্কায় একজন মারা গেল। পুলিশ খুব সহজেই তাকে আটক করলো। কিন্তু এ কোন সাধারন দুর্ঘটনা নয়। এ এক অন্য রহস্যের আভাস দিচ্ছে। ঘটনাপ্রবাহ খুব দ্রুতই পাল্টে যেতে লাগল। পরদিনই ঘটনার অবিশ্বাস্য মোড়ে সায়েম হল বিহ্বল। এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ১৯৫২। কারন ১৯৫২ হারিয়ে গেছে !!! মৌলিক থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের গতবছরের হতাশাজনক কনফেশন এবং পরীক্ষামূলক থ্রিলার জাল এর পরে এই বছরে লেখকের কাছে প্রত্যাশা খুব বেড়ে গিয়েছিল। আরও যখন জানতে পারলাম এই বইমেলায় লেখকের কেবলমাত্র একটি বইই বের হবে তখন তো আমার প্রত্যাশার আগুনে তুষ ঢেলে দিয়েছেন লেখক নিজেই। এই থ্রিলারের নামেই এক বিশাল রহস্য জড়িয়ে আছে। যা আশা করেছিলাম এই থ্রিলার নিয়ে তা কী পুরন হয়েছে আমার? লেখক কি তাঁর সেই ক্লাসিক থ্রিলিং ফর্ম ফিরে পেয়েছেন ১৯৫২ এর মাধ্যমে? লেখকের এই প্রচেষ্টা শতভাগ সফল। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের থ্রিলার উপন্যাসের রিভিউ লেখার সবচেয়ে জটিল কাজটি হচ্ছে উক্ত উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপকে পাঠকদের জন্য কোন স্পয়লার না দিয়ে লিখতে পারা। কারন লেখকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল তিনি পাঠককে বিশ্রাম দিতে চান না । প্রথম ৪/৫ পাতার পর থেকেই কাহিনী এত বাঁক নিতে থাকে যে, মুখবন্ধ অথবা প্রথম অধ্যায়ের মধ্যেই কাহিনী সংক্ষেপ সীমাবদ্ধ রাখতে হয়। ১৯৫২ এর মুখবন্ধের শেষ লাইন থেকেই শুরু হয়ে যায় লেখকের অতি সুপরিচিত থ্রিলিং গতি। প্রথমেই লিখছি এই উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে। দুর্দান্ত এবং চরম বুদ্ধিদীপ্ত প্লট। কাহিনীর ডেভেলপমেন্ট তো আরও দুর্দান্ত। কেবলমাত্র লেখকের চিন্তাশীল প্লট ডেভেলপমেন্ট পাঠককে পুরো সময়েই বোকা বানিয়ে রাখতে সক্ষম। একটি থ্রিলার উপন্যাসে পাঠক যদি শেষ মুহুর্তে লেখকের সাহায্যে রহস্যের জট না খুলে তাহলে এ কিসের থ্রিলার। একজন যতই অভিজ্ঞ পাঠক হোক না কেন, ১৯৫২ তে লেখকের সাহায্য ছাড়া নিজ মনে মনে ফিনিশিং এ পৌছাতে মোটেও পারবে না। আর এই লেখকের মৌলিক থ্রিলারের লেখনী নিয়ে তো কোন কথাই নেই। লেখকের সাবলীল বর্ননায় ১৯৫২ এর প্রাণ যেন আরও বেড়ে গেছে। উনার কোন বইই না শেষ করে উঠা যায় না, তা হোক না কনফেশন এর মত সাদামাটা কাহিনীও। আর ১৯৫২ এর লেখকের সাবলীলতা যেন আগের উপন্যাসগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৫২ এর দুর্বলতা বা ঘাটতি খুঁজে বের করা আসলে বেশ কষ্টদায়ক ছিল। আমি ব্যাক্তিগতভাবে বড় সাইজের উপন্যাস পছন্দ করলেও আমার মনে হয়েছে ১৯৫২ এর সাইজ আরও ২/১ ফর্মা কমানো যেতে পারত। বিশেষ করে প্রেমিকাদের দিক থেকে দেখানো কিছু অধ্যায় না থাকলেও কোন ক্ষতি হত না। তবে ওই অধ্যায়গুলো বাদ দিলে পাঠকরা আবার নিশ্বাস নেওয়ারও সময় পেত না। সেকেন্ড লীড আরেকটু বুদ্ধিমান হলে ভালো লাগত। দুএকটা ডিটেইলিংসে ভুল ছিল বলেই মনে হচ্ছে। খুঁটিনাটি এগুলা বাদ দিলে লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন একটা মাস্টারপিস সৃষ্টি করেছেন। ১৯৫২ উপন্যাসের রহস্য নিহিত আছে ১৯৫২ তেই, এটা বলে দিলেও কোন সমস্যা নেই, কারন উপন্যাসের নামই ১৯৫২। এই উপন্যাসকে থ্রিলারের সুনির্দিস্ট কোন ধারায় আমি ফেলতে পারছি না। কারন এটি সাস্পেন্সফুল মার্ডার-মিস্ট্রি এবং পলিটিকাল কন্সপিরেসি থ্রিলারের সমন্বয়ে লেখা হয়েছে। একটি পারফেক্ট বিনোদনমুলক থ্রিলারের যা যা উপকরন সব ভরপুর এই থ্রিলারে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের এক একটি থ্রিলার একেক কারনে আমার ফেভারিট। এতদিন পর্যন্ত কন্ট্রাক্ট ও নেক্সাস আমার সবচেয়ে ফেভারিট ছিল। কিন্তু আজ ১৯৫২ পড়ার পর এটি এখন থেকে আমার সবচেয়ে প্রিয় দেশী থ্রিলার উপন্যাসে পরিণত হল। ১৯৫২ তে প্রচুর গাড়ির বর্ননা এবং চেজ আছে। গাড়ির গতির সাথে এই উপন্যাসকে যদি তুলনা করতে যাই, তাহলে বলব, প্রথম থেকে ১৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত গতি ছিল ৬০ কিমি/ঘ। ১৫ পৃষ্ঠা থেকে ১৫০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত এই গতি হঠাৎ করেই উঠে গেছে ১২০ কিমি/ঘ তে, ১৫১ থেকে ২০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত গতি কিছুটা কমে এসে হয়েছে ৮০ কিমি/ঘ। কিন্তু ২০০ পৃষ্ঠার পর হঠাৎ করেই গতি এতই বেড়েছে যে মাথা নষ্ট হয়ে যাবে। স্পিডোমিটারের কাটাই অকার্যকর হয়ে গেছে। রেড লাইন হিট করে। এ এক মাথা নষ্ট করা গতিশীল পিওর থ্রিলার। লেখককে আর ধন্যবাদ জানাব না। কারন উনার কাছ থেকে আমরা এটাই প্রত্যাশা করি। আমি এখানে নির্মাতা কাজী আসাদকে ধন্যবাদ দিব লেখকের সাথে একটি সত্য ঘটনা শেয়ার করার জন্য। যা থেকেই লেখকের মাথায় এই দুর্দান্ত প্লট এসেছে এবং তাই বলে আমি এই মাস্টারপিস পড়তে পারলাম। উপন্যাসটি শেষ করার পরে পাঠকরা আশা করি খুব সহজেই সত্য ঘটনাটি কি তা বুঝে যাবেন। সবশেষে লেখকের সাথে তাল মিলিয়েই বলছি ' পোয়েটিক জাস্টিস' এর এক চমৎকার উদাহরন।
Was this review helpful to you?
or
বইটার পুরো নাম '১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় ' । মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিনের লেখা ষষ্ঠ বই । আগেরগুলোর মত এটাও থ্রিলার । এবারেরটা কোন সিরিজের অন্তর্ভুক্ত না । উদ্দিনই যে বাংলাদেশে থ্রিলার চালু করার কৃতিত্ব পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই । আমি ওর আগের বইগুলোও পড়েছি, ভালও লেগেছে প্রায় সব বই-ই । কিন্তু রিভিউ লেখার সময় আমি এই বইটাকে শুধুই আরও একটা বই হিসেবে ধরে লিখব । বইটির কাহিনির শুরু একজন সাংবাদিকের নতুন গাড়ি কিনে রাস্তায় জোরে চালাতে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় । সাংবাদিক সায়েম দেখে সে একজন মানুষের উপর গাড়ি চালিয়ে দিয়েছে । সে নিজের কাজ বিশ্বাস করতে পারে না, কারণ তার নিজের গাড়ি নতুন হলেও অন্যের গাড়ি চালিয়ে চালিয়ে সে একাজে ওস্তাদ, তাছাড়া সে সাবধান হয়েই চালাচ্ছিল । নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে না । তার পুলিশে চাকরি করা গুলশান-বনানি থানার ওসি গোলাম মাওলাকে কল করে পুরো ঘটনা বলে সে । তখন পর্যন্ত লাশের পরিচয় জানা যায় নি দেখে তারা ঘটনার গভীরতা বুঝতে পারে নি । দেখা যায় লাশটি ভাষা সৈনিক আদেল সুফির নাতি আদনান সুফির । পুরো দেশ তাদের চিনে, মানে । এমনকি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তাদের সম্মাম করে । এ অবস্থায় কেসটির দায়িত্ব মাওলা দেয় তার সাবেক প্রেমিকার ছোট ভাই মিশুকে । তরুণ সাংবাদিক আদালতে দেখায় আদানান আগেই মারা গেছিল । ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয় । ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়েন প্রভাবশালী এমপি আহকাম উল্লাহ, যে কিনা শীগগিরি মন্ত্রী হবেন । কিন্তু প্রমাণের অভাবে কিছু করা যায় না । আদেল সুফি ভাষাসৈনিক হওয়ায় তার গাড়ি নম্বর ১৯৫২, যেটি ঘটনাচক্রে আবিষ্কার করেন সায়েম । এরপর বিরাট কাহিনি শেষে দেখা যায় আহকাম উল্লাহ'র ছেলে দোষী, তার সহযোগী আজমত দোষী, ভদ্রলোক নিজেও দোষী আরেক অপরাধে । কাহিনি হিসেবে খুব একটা খারাপ নয় এই বই, তবে অযাচিত বড় করা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে দৃষ্টিকটু ভাবেই । একটা পর্যায়ে গিয়ে পুরো কাহিনি বোঝা যায় । এমনকি কেউ যদি মনে করে পাঁচ পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে পড়বে তাতেও খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা না, আসলে সমস্যা হবে না । বইটি লিখতে গিয়ে লেখক যে কোন রকমেরই রিসার্চ করে নি তা পরলেই বুঝা যাবে । তিনি নিজেই বলেছেন তরুণ নির্মাতা কাজি আসাদের কাছ থেকে শুনে বাসায় এসে লিখে ফেলেন । ষষ্ঠ বইয়ে এসে উনার এরকম আচরণ ভালো দেখায় না। পুরো বইটাতে গভীরতা আসলেই কম । দেখুন সত্যি ঘটনার উপর বই লেখা এই প্রথম নয় । ফ্রেডরিক ফরসাইথ নিজের 'ডগস অব ওয়ার' বইটা লিখতে গিয়ে আফ্রিকান একটা দেশে ক্যু পর্যন্ত করিয়েছিলেন । তবে ঐ বইয়ের সাথে এই বইয়ের বিস্তর ফারাক । লম্বা না করে যদি উদ্দিন কাহিনির কন্টেন্ট এবং সারপ্রাইজ নিয়ে মাথা ঘাঁটাতেন তবে বইটি আরও ভালো হতে পারত । কাহিনিটা খুব ভালো ছিল, এত সুন্দর কাহিনি উদ্দিনের মত লেখক এভাবে উপস্থাপন করবেন ভাবা যায় না । আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে হতাশ হয়েছি । আমি উনার ফ্যান তবে, বইটি এক কথায় খুব ভালো হয় নি । শুধু শুধু বড় করতে গিয়ে বইটির পরিসর বেড়েছে, পৃষ্ঠা বেশি তাই দামটাও তুলনামূলক বেশি । ২৬০ টাকা দিয়ে এই বই কিনে অনেকেই আক্ষেপ করবে নিশ্চিত । তবে উদ্দিনের প্রশংসা করতে হবে তার এই উদ্যোগ নিয়ে । আর কেউ সাহস করে নি কিন্তু । পৃষ্ঠাগুলো ভালই, বানানে কিছু মার্জনীয় ভুল আছে । কাভারটা বরাবরের মতই সাধারণ, এই জায়গায় বাতিঘর আরও উন্নতি করতে পারে সন্দেহ নেই । সব শেষে, থ্রিলার পড়ার একটা ভালো দিক হল সারাদিনের ক্লাস আর টিউশনি করিয়ে একটা চাঙা ভাব আসে, এই বইয়ে এই জিনিসটার অভাব চোখে পড়ার মত । উদ্দিনের আগামী বইগুলো ভালো হবে এই প্রত্যাশা থাকবেই । আর এই একটা বই দিয়ে উদ্দিনকে বিচার করা ভুল হবে । তার আগের বইগুলো নিঃসন্দেহে ভালো । অনুবাদগুলোর কিছু কিছু তো শীর্ষ মানের । এই বইটা তাই পড়লেন নাহয় লেখক কে ভালবেসেই । আর যাই হোক উদ্দিন খারাপ লেখে না । '১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় ' এর ব্যতিক্রম নয় । পড়েই ফেলুন !