User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ইহ,ঈহা,উপাধি ও কুহর নামক চারটি উপন্যাস রয়েছে জলপাহাড়ে। বাংলা কথাসাহিত্যি এর এক অনন্য কথাশিল্প, এক রুদ্ধশ্বাস পাঠভোজ এই জলপাহাড়। এই উপন্যাসের কাহিনী বিন্যাস কল্প কাহিনীর মত মনে হলেও এটি বাস্তব সমাজ জীবনের চিত্রায়ন। যা পাঠ না করলে বুঝা যাবে না।
Was this review helpful to you?
or
জলপাহাড় এ অঞ্চলের বিখ্যাত শহর আপনারা সবাই চেনেন ওখান থেকে সড়কপথে বা রেলপথে দু’-আড়াই ঘণ্টায় যাওয়া যায় জঙ্গুলে শহর বঙ্গল বা ভঙ্গল। সেখানে থাকে দুই চোর নালু আর টেপা। বঙ্গল পুরনো জনপদ। সে হিসেবে এর একটা অতীত আছে গৌরব করার মতো, কিন্তু সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে চলতে না পেরে এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ক্রমে। কারণ একটাই। কোনও এক বৈরিতার প্রতিশোধ নিতে চলমান বর্তমান তাকে দিয়ে চলেছে সীমাহীন অযতœ আর চরম অবহেলা। এ শহরের সবখানে তাই স্থায়ী ও মূর্তিমান হয়ে আছে একটা ভাঙা নড়বড়ে ভাব। সেকালের দালানকোঠা, দিঘি, ঘাট, ধর্মস্থান দেখা যায় এখানে ওখানে। কিন্তু সেগুলো কেউ দেখভাল করে বলে মনে হয় না। ওগুলো ঘিরে দিনে-দিনে যে হারে গজিয়ে উঠছে ঝোপ-জঙ্গল, ঠিক সে হারেই ছড়িয়ে পড়ছে নোংরা পানির নালা-ডোবা। এসব কারণে শহরের অনেক পথে চলা যায় না সাপখোপের ভয়ে, তীব্র দুর্গন্ধের তাড়নায় অনেক পথে যেতে হয় নাকে রুমাল চেপে। তারপরও বঙ্গলকে সুপ্রাচীন আমলের কোন রাজার রাজধানী ঘোষণা করে আহলাদে আটখানা হয়ে আছেন স্থানীয় বুদ্ধিজীবীরা। স্কুলের বার্ষিকীতে এক শিক্ষক গবেষণা করে এ জনপদের বয়স ৫০০ বছরের বেশি নির্ধারণ করায় বঙ্গলের একমাত্র অনিয়মিত সাপ্তাহিকে এক আইনজীবী ঘোষণা করেন, ১১০০ বছর আগেই জনৈক কীর্তিধন্য রাজার রাজধানী ছিল এ শহর। এর পর থেকে স্থানীয় মহিলা মহাবিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এক অধ্যাপক সব সভা-সেমিনারে কমপক্ষে ৯০ মিনিট বক্তৃতা দিয়ে প্রমাণ করতে থাকেন, হাজার বছর আগে বঙ্গল ছিল যোগী সিদ্ধাচার্য্য মেকোপা, লুচিক, পুতলিপা, জয়ানন্দ প্রমুখের সাধনক্ষেত্র। তিনি আরও দাবি করেন, চর্যাগীতিকোষের ৪৬ সংখ্যক পদের রচয়িতা ‘জঅনন্দি’ আসলে জয়ানন্দ, জয়নন্দী নন। নালু আর টেপা’র কথা বলেছি, ওদের আয়-উপার্জন নেই তেমন। সমাজের সবখানে বড়-বড় চোর গেড়ে বসায় তাদের মতো চোরের টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে ইদানীং। কোথায় ঢুকে কি চুরি করে পেট চালাবে সে ভাবনায় অস্থির থাকে দু’জন। বাধ্য হয়ে মাসে দু’-এক বার তারা হাত দেয় ছিচকে কাজে। মন চায় না, কিন্তু কি করবে! ওদিকে পেটের জ্বালায় তাদের বউরা হয়ে ওঠে প্রায় হাফগেরস্ত, ঘুষকী। তবুও নালু ও টেপা স্বপ্ন দেখে, একদিন বড় দাঁও মারবে তারা। কিন্তু হাড় জিরজিরে মরা-মরা শহর বঙ্গলে কোথায় সেই দাঁও? একদিন নালু টের পায়, আছে। বড়সড় দাঁও আছে। টেপারও দেরি হয় না টের পেতে। কিন্তু উপায় কি? এত বড় দাঁওয়ে হাত দিলে হাতটাই যে পুড়ে যাবে! ঠিক ওই সময়টাতেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় নালু’র। একই জায়গায় বেশি-বেশি ছোঁক-ছোঁক করতে গিয়ে একে অন্যের চোখে পড়ে যায় তারা। তারপর কথা বলে ঠারেঠোরে, আপনের কাজকাম বুঝি... জানি... কিন্তু আপনেরে চোখে দেখি না! টেপা বলে, মেম্বারের বাড়িতে আগে-পরে দুই রাতে দেখছি আপনেরে, চিনতে পারি নাই। মুখে গামছা বান্ধা... চিনমু কেমনে? সামনে পড়ি নাই, সইরা গেছি।
Was this review helpful to you?
or
ইহ, ঈহা, উপধি, কুহর নামে চারটি চার চমৎকার উপন্যাস একসাথে রয়েছে এই গ্রন্থে।