User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Amazing book
Was this review helpful to you?
or
এটা একটা অদ্ভুত বই। কিছুটা লিখেছেন হুমায়ুন আহমেদ আর বাকিটা লিখেছেন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। দুইজনই সনামধন্য লেখক। সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটাকে যদি কেউ ব্যক্তিগত ডায়েরীও মনে করে তবে তাতে কোন ভুল হবে না। ১৯৭১ সালের উত্তাল সময়ে হুমায়ূন আহমেদ স্যার নিজের মতো করেই লিখে রাখতেনন প্রতিটা ঘটনা। সেই সব অপ্রকাশিত ঘটনা নিয়েই লেখা "একাত্তর এবং আমার বাবা"। ১৯৭১ সালে যখন বাবা ফয়জুর রহমান পাকিস্তানীদের হাতে মারা যান তখন স্বাভাবিকভাবেই নেমে আসে পরিবারে বিপর্যয়। কারণ হুমায়ূন আহমেদ নিজেও তখন একজন ছাত্র। মধ্যবিত্ত এই পরিবারে বাবা ফয়জুর রহমানই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তখন মা আয়েশা বেগম বলা যায়, সংগ্রাম করে এই সংসারের হাল ধরেন। সেই সময়ের স্মৃতি ধরে রাখতেই ছোট ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবালকে নিয়ে বইটি শেষ করেন। এক কথায় বলা যায়, একটি ঐতিহাসিক দলিল এটি!
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের শিরোনামেই বইয়ের বিষয়বস্তু অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে। বাঙ্গালীর জীবনে একাত্তর একইসঙ্গে বিভীষিকা, বিজয়। সেই একাত্তরের পটভূমিকায় খ্যাতিমান লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন এই বইয়ে। শুধু হূমায়ূন আহমেদ করেছেন বললে বিষয়টা ভূল হবে, তিনি লেখাটা শেষ করেননি, লেখাটা শেষ করতে বলেছিলেন তাঁরই মেজভাই(আরেক খ্যাতিমান লেখক) মুহম্মদ জাফর ইকবালকে। কারণ, বাবার শেষসময়ে মুহম্মদ জাফর ইকবালই ছিলেন বাবার সঙ্গে। ব্যক্তিগতভাবে, আমি দুজনের লেখারই ভক্ত, একই মলাটে দুই লেখককে একত্রে পাওয়া ছিলো প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু। হুমায়ূন আহমেদের লেখা এই পাণ্ডুলিপিটাও পাওয়া যায় আকস্মিকভাবে, তাঁর মৃত্যুর পরে। ধান ভাণতে শিবের গীত গাইছি, মুলবিষয়ে ফিরে আসি। এ বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক, এখানে আমরা দেখতে পাবো এক অন্য হুমায়ূন আহমেদকে। যে হুমায়ূন আহমেদকে আমরা চিনি “গল্পের জাদুকর” হিসেবে, তখনো তিনি তা হয়ে ওঠেননি। “একাত্তর এবং আমার বাবা” বইয়ে তাঁর লেখার হাত অনেকটাই কাঁচা, কিন্তু বাবার জন্যে তীব্র আকুতি, প্রচন্ড ভালোবাসা প্রতিটি অক্ষরের মধ্যেই ছিলো প্রবল। আরেকটি বিষয়, বইটির সাথে মূল পাণ্ডুলিপির স্ক্যান করা কপিও সংযুক্ত করা হয়েছে। মানে, এক পৃষ্ঠায় থাকবে টাইপ করা অক্ষর, পাশের পৃষ্ঠাতেই পাওয়া যাবে মূল পাণ্ডুলিপি, হুমায়ূন আহমেদের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি। তাঁর হাতের লেখা দারুণ ছিলো। পাণ্ডুলিপি পড়ে বোঝা যায়, হুমায়ূন আহমেদের তখন প্রচন্ড বানান ভুল হতো, তবে বিষয়টা আমাদের জন্যে একদিক দিয়ে স্বস্তির। এখন, লেখায় বানান ভুল করলেও আত্মপক্ষসমর্থণ করা যাবে। বইটির পুরোটাজুড়েই একাত্তর। একাত্তরের ধ্বংসযজ্ঞে এক মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারের খড়কুটোর মত ভেসে থাকার তীব্র আকুতির গল্পই পুরো বইয়ে লেখা হয়েছে দিনলিপির আদলে। দুঃসময়ে পরিচিত মানুষদের অপরিচিত আচরণ, কখনো কখনো অপরিচিত কারো কাছ থেকে অযাচিত, অকৃত্রিম কোনো সাহায্যের ছিমছাম গল্প, যুদ্ধের পুরোটাজুড়ে অনিশ্চয়তার উপাখ্যাণ... সবকিছুই উঠে এসেছে তরুণ হুমায়ূনের অনভিজ্ঞ কলমে। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ পুলিশে চাকরী করতেন, হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতিচারণমূলক আরো কিছু বই থেকে তাঁর(ফয়জুর রহমান আহমেদ) এর কিছু পরিচয় পাওয়া যায়। হুমায়ূনীয় ভাষায়, তিনি ছিলেন অত্যন্ত রূপবান পুরুষ। সারাজীবন শিরদাঁড়াটা সোজা রেখেই চলেছেন, লেখালেখির বাতিক তাঁরও ছিলো, অবসর সময়ে বইপড়া ছিলো ফয়জুর রহমান আহমেদের তীব্র নেশা। তাঁর ছেলেমেয়েদের মধ্যেও তাঁর স্বভাব, তাঁর নেশা সংক্রামিত হয়েছে, বলাই বাহুল্য। হুমায়ূন আহমেদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। লেখাপড়া শেষ করে তিনি কিছুদিন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন, তারপর পুলিশের চাকরীতে যোগ দেন। বদলীর চাকরীতে হিল্লী-দিল্লী ঘুরে একসময় থিতু হন পিরোজপুরে। সেখানে SDPO( Sub-Divisional Police Officer) হিশেবে যোগ দেন তিনি। তার অব্যবহিতকাল পরেই শুরু হয় যুদ্ধের আর্তনাদ। লেখকের লেখনীতে উঠে আসে যুদ্ধকালীন সময়ের অসহ্য টানাপোড়েন, যার শেষটা হয় এক করুণ পরিসমাপ্তিতে। ১৯৭১ সালের মে মাসের পাঁচ তারিখে, বলেশ্বরী নদীর তীরে হানাদারের একরাশ বুলেট বিদ্ধ করে দিয়ে যায় যুদ্ধে নিহত অসংখ্য বাবাদের একজন ফয়জুর রহমান আহমেদ কে। এই নিহত হওয়ার বর্ণনার মধ্যে কোনো সাহিত্যগত অলংকার ছিলোনা, ছিলোনা আবেগের আতিশয্য। কিন্তু, বইটা শেষ করার পরে, কোথায় যেন হাহাকার করে ওঠে, সবকিছু ছাপিয়ে এক বাবাহারা সন্তানের নির্বাক আর্তনাদে ভারী হয়ে যায় বইয়ের জড় কাগজ। নিজস্ব মতামতঃ আমি ছোটবেলা থেকেই বাবার খুব বড় ভক্ত। আমাদের অনেকের কাছেই আমাদের বাবা’রা সুপার হিউম্যান। তাদের হয়তো আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নেই, চওড়া কাঁধ আছে, যেখানে মনের সুখে কাঁদতে কাঁদতে নালিশ করা যায় কারো বিরুদ্ধে। তাদের হয়তো বিশেষ কোনো ক্ষমতা নেই, কিন্তু কানের কাছে ফিসফিস করে কিছু আবদার করলে সেটা হাসিমুখে মিটিয়ে দেয়ার সামর্থ্য আছে। তাদের হয়তো মুখোশ, ট্রেডমার্ক গেটআপ নেই, কিন্তু সুতির চেক শার্ট, কালো প্যান্ট আর সস্তার স্যান্ডেল আছে, যে পোশাকে আমাদের বাবা’রা হয়ে ওঠেন পৌরাণিক কোনো চরিত্র, আমাদের সুপার হিউম্যান। একুশ বছরের তরুণ হুমায়ূনের কাছে তাঁর বাবা ঠিক তাই ছিলেন।তাই, দিনশেষে, বইটা শুধুমাত্র হুমায়ূন আহমেদের তাঁর বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ হয়ে থাকেনা, বইটা পড়তে পড়তে কখন যেন নিজের বাবাকেই কল্পনা করে ফেলি বইয়ের পাতায়। বইয়ের শেষে এসে, অজান্তেই বিষণ্ণ হয় মন, নিজের বাবার অমঙ্গল আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে বুক। দিনশেষে, বইটা শুধু হুমায়ূন আহমেদের বাবার গল্পতে সীমাবদ্ধ থাকেনা। পরিণত হয় আমার, তোমার, আপনার বাবার গল্পে। অদ্ভুত এক বিষন্নতাবোধে আক্রান্ত করে দিয়ে যায় “একাত্তর এবং আমার বাবা।“ এক নজরেঃ বইঃ একাত্তর এবং আমার বাবা লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশন প্রচ্ছদঃ আহসান হাবীব প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি বইমেলা,২০১৪ মূল্যঃ ৩২৫ টাকা পৃষ্ঠাঃ ১৭৫
Was this review helpful to you?
or
A middle class family how did spent there time and what was their thinking ? This book is the answer of this question.
Was this review helpful to you?
or
একাত্তর এবং আমার বাবা হুমায়ূন আহমেদ (বইমেলা ২০১৪) ব্যক্তিগত ডায়েরি থেকে এ বইটি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান। তাঁর জীবনের শেষ সময়টুকু ধরে রাখার জন্য লিখতে শুরু করেছিলেন হুমায়ূন। পরবর্তী অংশটুকু লিখিয়ে নিয়েছিলেন অনুজ মুহম্মদ জাফর ইকবালকে দিয়ে—যেখানে আছে তাঁদের পরিবারের বিপর্যয়ের কাহিনি। এ বইটির বিশেষ আকর্ষণ এর লেখক মূলত দুজন।
Was this review helpful to you?
or
[পাঠ পর্যালোচনা ১৩] একাত্তর এবং আমার বাবা—বইটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও এটি ইতিহাসের বই যেমন নয়, তেমনি এটি আত্মজীবনী মূলক বইও নয়। লেখক ভ্রাতা জাফর ইকবালের মতে— ‘এটি প্রায় ব্যক্তিগত ডায়েরীর মতো’। এ কথাটিও পুরোপুরি মানা যায় না। বরং লেখাটিকে লেখকের একটি সংক্ষিপ্ত স্মৃতিকথা বলা যেতে পারে, যে স্মৃতি আবর্তিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ এবং লেখকের বাবাকে কেন্দ্র করে। বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে, অর্থাৎ হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পরে। লেখাটি ঠিক কোন সময়ে লেখা সে বিষয়ে নিশ্চিত নন লেখক ভ্রাতা মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তাঁর মতে যুদ্ধের সময়কার লেখা, তবে পড়লে মনে হয় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে লেখা। কারণ এক জায়গায় উল্লেখ আছে—‘পুরোনো স্মৃতির কথা লিখতে গিয়ে চোখ পানিতে ভরে ওঠে’। বইটির ব্যপারে আরেকটি কথা বলে নেওয়া ভালো। এই বইয়ে লেখকের নামের জায়গায় হুমায়ূন আহমেদের নাম থাকলেও তিনি পুরো বইয়ের লেখক নন। শেষ অর্ধেক লিখেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং বইটির নামও তাঁরই দেওয়া, আছে তাঁর লেখা চার পৃষ্ঠার ভূমিকাও। চাইলে বইয়ের নামে দুজনের নামই দিতে পারতেন, সেটাই যুক্তিযুক্ত হতো। বইটির বর্ণনা শুরু হয় ঢাকা থেকে—১৯৭১ সালের মার্চের শুরুতে যখন জাতীয় অধিবেশন স্থগিত হয় এবং সাত মার্চের ভাষণ তখনও হয়নি, পূর্ব প্রস্তুতি চলছে—সেই সময়টায়। সেসময়কার থমথমে ঢাকার কিছুটা চিত্র বইটিতে ফুটে উঠেছে। সেখান থেকে গল্প চলে যায় পিরোজপুরে। পরিবারের সাথে লেখকের কিছু সুখকর দিনের কথা যেমন পাওয়া যায় তেমনি পাওয়া যায় যুদ্ধের সময় পিরোজপুরে কী অবস্থা চলছিল সেসব কথা, লেখক পরিবারের বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় গ্রহণ করার কথা জানতে পারবো। দুঃখের বিষয় হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের পাণ্ডুলিপি থেকে মাঝের একটি পৃষ্ঠা হারিয়ে গেছে, যে পৃষ্ঠাটাকে মনে হয়েছে কোন বিশেষ একটা ঘটনা সেখানে ছিল। এ বিষয়ে জাফর ইকবালও কিছু লেখেন নি, যদিও উনার সেই ঘটনার কথা আংশিক হলেও জানার কথা। গল্পের সমাপ্তি হয় জাফর ইকবালের বয়ানে যেখানে পরিবারের সবাইকে তিনি তাঁর বাবার মৃত্যুর সংবাদ দিচ্ছেন। পুলিশপিতা ফয়জুর রহমানের শেষ দিনটিতে সাথে ছিলেন জাফর ইকবাল। এই বইয়ের আরেকটি বিষয় হলো লেখকদ্বয়ের পাণ্ডুলিপি বইটিতে দেওয়া আছে। এক পৃষ্টায় পাণ্ডুলিপির চিত্র, পরের পৃষ্ঠায় সেই পাণ্ডূলিপির টাইপিং। তাই বইয়ের পৃষ্ঠা ১৭৫ হলেও বইটি আদতে ছোট। তবে হুমায়ূন প্রেমীদের জন্য লেখকের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি পড়তে পারা আনন্দদায়কই হবার কথা। বইটিতে তারিখের উল্লেখ থাকলে আরও একটু ভালো হতো। আদতে লেখাটি অনেকটা নিজের পরিবারের একটা ঘটনা যেন ভালোভাবে মনে রাখতে পারা যায় সেই চিন্তা থেকেই লেখা। তাই দেওয়া হয়নি অধিকাংশ মানুষের যথার্থ পরিচয়, যেমনটা আত্মজীবনীতে দেখা যায়। এই বইয়ের কাহিনী আমরা লেখকের আত্মজীবনী গুলোতেও খুঁজে পাবো। তবুও খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা এই বইটি সুখপাঠ্য, তাই চাইলে পড়ে দেখতে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের মধ্যে বিশাল একটা পাঠক অংশ রয়েছে।ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু বিভিন্ন বয়সের পাঠক।এই পাঠক তৈরির পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান যে মানুষটির রয়েছে তিনি হলেন হুমায়ূন আহমেদ।একটার পর একটা সুন্দর বই লিখে তিনি সকলের হৃদয়ে ভালবাসার স্থানটি দখল করে নিয়েছেন। 'একাত্তর এবং আমার বাবা' বইটি পড়েছি আজকে।শুরু করার পর শেষ না করে উঠতে ইচ্ছা হচ্ছিলনা।বইটিতে হুমায়ূন আহমেদ এর হাতের লেখা দেখার একটা বিশাল সুযোগ পেয়েছি 3 এতো সুন্দর স্পষ্ট হাতের লেখা।মনে হয়েছে প্রত্যেকটি অক্ষর ভেবে চিন্তে যত্ন নিয়ে লিখেছেন।যতক্ষণ পড়েছি অন্য কাজে মনোযোগ দিতে পারিনি।বইটিতে কিছু একটা আছে যেটা আমাকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করেছে।কোন একটা কারণে অনেক কষ্ট অনুভব করছিলাম।যতই এগিয়ে যাচ্ছিলাম সামনে কষ্টের পরিমাণটা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল।পড়া শেষে মনে হয়েছিল আমি যদি একা একটু শান্তিমত কাঁদতে পারতাম! বইটিতে হুমায়ূন আহমেদ যুদ্ধ চলা কালীন সময়ে তাঁর বাবা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে লিখেছেন।মূলত উনার বাবাকে নিয়েই লেখা।শেষ অংশটুকু তাঁর ছোট ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল সমাপ্ত করেছেন কারণ উনাদের বাবা ফয়জুর রহমান যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন জাফর ইকবাল উনার পাশে ছিলেন।ফয়জুর রহমান পেশায় পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় হল জীবন থেকে শুরু করে কখন কি হয়েছিল, দেশ স্বাধীন নিয়ে ফয়জুর রহমানের ভাবনা সব ঘটনায় মোটামুটি উল্লেখ আছে বইটিতে।শেষটুকু সম্পর্কে লিখতে ইচ্ছা করছেনা। মন খুব খারাপ হয়েছে। বইটিতে মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর একটি উক্তি খুব ভাল লেগেছে 'যারা পাঠক শুধু তারাই লেখকের ভক্ত হতে পারে-অন্যদেরতো আর সেই সুযোগ নেই।' কিন্তু কোন এক রহস্যময় কারণে হুমায়ূন আহমেদ শুধু পাঠকপ্রিয় ছিলনা,সে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিল। সত্যিই তাই! উনি আমাদেরকে এ জগৎ এর প্রত্যেকটা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তুকে ভালবাসতে শিখিয়েছেন অন্যের দুঃখে কাঁদতে শিখিয়েছেন,প্রাণ খুলে হাসতে শিখিয়েছেন।ভালবাসার হুমায়ূন আহমেদ 3
Was this review helpful to you?
or
‘একাত্তর এবং আমার বাবা’ বইটির মূল্য লেখা ৩২৫ টাকা। অল্প বাজেট নিয়ে বইমেলায় গিয়েছিলাম বলে বইটির দাম আমার কাছে একটু বেশিই মনে হয়েছিল। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যেও বইটি কিনবো নাকি কিনবো না, এই চিন্তা মাথায় আসে নি। কারণ, বিভিন্ন প্রেক্ষিতে এই বইটি অমূল্য। বিশেষত হুমায়ূন ভক্তদের কাছে। সে সব নিয়ে কথা হবে। তবে আগে বলে রাখি এটা এমন একটা বই যেটা কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সবার কম-বেশি স্পর্শ পেয়ে ধন্য হয়েছে। এই প্রথম আমরা একই মলাটের ভিতরে হুমায়ূন আহমেদ এবং মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা পেয়েছি এই বইয়ে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন তাঁদের ছোট ভাই জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব। প্রচ্ছদে হুমায়ূন আহমেদের বাবার যে ছবি দেয়া হয়েছে তা পাওয়া গেছে বড়বোন সুফিয়া হায়দারের কাছে থেকে। হুমায়ূন আহমেদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ছবিটি দিয়েছেন ছোটবোন রোখসানা আহমেদ। ‘একাত্তর এবং আমার বাবা’ বইটিকে এক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখা শেষ বই বলা যায়। আর মজার ব্যাপার হল কীভাবে কীভাবে জানি সেই শেষ বইটি পরিবারের সবার ভালোবাসার উষ্ণ স্পর্শ পেয়েছে। ‘একাত্তর এবং আমার বাবা’ বইটির পাণ্ডুলিপি হঠাৎ করেই আবিষ্কৃত হয়। বইটি মূলত হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিগত ডায়েরির মত। বইটির সর্বাঙ্গ জুড়ে হুমায়ূন আহমেদের বাবার মৃত্যুর অংশটিই প্রাধান্য পেয়েছে। তবে আসলে এই মূল ঘটনার আড়ালে এই বইয়ের পাতায় পাতায় একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের খুব বিশ্বস্ত ছবি উঠে এসেছে। বইটি বা বলা যায় ডায়েরিটি ঠিক কবে লেখা হয়েছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত না হলেও বিষয়বস্তু দেখে ধারণা করা যায় খুব সম্ভবত এটা একাত্তর সালেই লেখা। বইয়ের শেষে হুমায়ূন আহমেদের বাবার মৃত্যুর অংশটুকু হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ছোটভাই মুহাম্মদ জাফর ইকবালকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছিলেন। কারণ সে সময় জাফর ইকবাল বাবার পাশে ছিলেন। আমার ধারণা হুমায়ূন আহমেদ চেয়েছিলেন তাঁর বাবার মৃত্যুর প্রেক্ষাপট ও সেই কলঙ্কিত ঘটনার একটা লিখিত দলিল থাকুক। তবে মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার তাঁর দুর্বল স্মৃতির কারণে তিনি ঠিক কবে এগুলো লিখেছিলেন তা আর মনে করতে পারেন নি, যা তিনি বইয়ের ভূমিকা অংশে বলেছেন। এই বইয়ে পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে ছাপার অক্ষরের পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি সংযুক্ত করা হয়েছে। আসলে এই বইটি যখন লেখা হয় তখন হুমায়ূন আহমেদ আজকের প্রবাদতুল্য জনপ্রিয়তার অধিকারী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ হয়ে ওঠেন নি। তাই বইটির লেখায় কোন কোন স্থানে বাক্যগঠনে দুর্বলতা দেখা যায়। এছাড়া হাতে লেখা পাণ্ডুলিপিতে কিছু বানান বিভ্রাটও দেখা যায়, যেটা ছাপার হরফে কিছুটা সংশোধন করা হলেও পাণ্ডুলিপি অংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে হয়তো বানানগুলো লিখতে ভুল হয়েছিলো বা এমনও হতে পারে তৎকালীন বানানরীতি অনুসরণ করে স্যার লিখেছিলেন বলেই এই বিভ্রাট। যাই হোক, এই বইটি লেখার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন পাঠক এই ছোট-খাট ব্যাপারগুলো সহজভাবেই নিবেন বলে আশা করা যায়। পরিশেষে বলা যায়, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বাবার স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ডায়েরির আদলে লিখলেও যখন ‘একাত্তর ও আমার বাবা’ বই আকারে প্রকাশিত হয় তখন তা আর শুধু ব্যক্তিগত আখ্যান থাকে নি। বরং ব্যক্তিজীবনের গল্পের আড়ালে সেই সময়ের মানুষদের যুদ্ধের প্রতি মনোভাবের একটা অনবদ্য দলিল হয়ে উঠেছে। আর বেশ আগে লেখা হলেও এই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদের পাঠককে গল্পের মধ্যে টেনে নিয়ে যাবার যে সহজাত ক্ষমতা, যে স্বভাবজাত সাবলীলতা তাও খুব ভালভাবেই পাওয়া যায়। হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশিত শেষ বই, হুমায়ূন আহমেদের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি সংবলিত বই, একই মলাটের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবাল দুই ভাইয়ের লেখাই বিদ্যমান আর সবচেয়ে বড় কথা এটা হুমায়ূন পরিবারের যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের ঘটনাপঞ্জি ; একটা বইয়ের কাছে থেকে পাঠকের এর চেয়ে বেশি আর কী-ই বা চাওয়ার থাকতে পারে?