User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর সমাপ্তি
Was this review helpful to you?
or
সাম্ভালার খোঁজে ড: কারসন দলবল নিয়ে চলে এসেছেন তিব্বতে, তার সত্যিকার উদ্দেশ্য কি কেউ জানে না। ওদিকে অপহৃত হলেন ড: আরেফিন, সুদূর ঢাকা থেকে রাশেদ তার বন্ধুকে নিয়ে ড: আরেফিনকে উদ্ধার করতে চলে এল তিব্বতে কিন্তু তাদের পেছনে লাগল একদল লোক। লখানিয়া সিং ওরফে মজিদ ব্যাপারীও আছেন সাম্ভালার পথে, সঙ্গী যজ্ঞেশ্বর আর বিনোদ চোপড়া, তাদের দুজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ আলাদা, মিচনার ও পিছিয়ে নেই , প্রতিপক্ষ লখানিয়া সিং থেকে সে কেবল এক পা দূরে। অন্যদিকে পিশাচ সাধক আকবর আলী মৃধা আছে পেছনে, তার উদ্দেশ্য একটাই, প্রতিশোধ। দুই চিরশত্রু কি মুখোমুখি হবে একে অপরের? অবশেষে সাম্ভালার সন্ধান কি তারা করতে পেরেছিলো – যেতে পেরেছিল কেউ ওখানে? এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে সাম্ভালা ট্রিলজির শেষপর্ব সাম্ভালা: শেষ যাত্রা’য় বাকি দুটি পর্বের মতই টানটান উত্তেজনায় আপনাকে ধরে রাখবে একদম শেষ পর্যন্ত।বাংলায় এমন অপূর্ব আখ্যান আর আছে বলে আমার জানা নেই!
Was this review helpful to you?
or
বিঃদ্র-এটি পুরো সাম্ভালা সিরিজের উপর একটি রিভিউ। বাংলাদেশের হাজার হাজার গ্রামের মধ্যে অতি সাধারন এক গ্রাম।কাহিনীর শুরু হয় সেখান থেকেই।কিন্তু এই অসাধারন কাহিনী আটকে থাকেনি ঐ সাধারন গ্রামে।আটকে থাকেনি সময়ের বেড়াজালেও।বাংলাদেশের নানা জায়গা থেকে বিশ্বের নানা স্থানে পৌঁছে গেছে কাহিনীর পরিধি,পৌঁছে গেছে বর্তমান থেকে সুদূর অতীতে। কাহিনী সংক্ষেপ- একটি শব্দ-যাকে ঘিরে আবির্ভূত হচ্ছে রহস্য।“সাম্ভালা”।কি এই সাম্ভালার অর্থ?এটা কি কোন জিনিসের নাম?কোন জায়গার নাম?কোন মানুষের নাম?কোন জাতির নাম? নাকি অন্য কিছু!বেশ কিছু মানুষ নেমেছে এই সাম্ভালার খোঁজে।তবে প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য ভিন্ন। সাম্ভালা- অদ্ভুত এক লোক।হাজার বছর ধরে পথ চলছে সে।অন্যদিকে এক শয়তানের সাধক আর তার একনিষ্ঠ বাহিনী।আর সাধারণ ছেলে রাশেদ।নিজ বন্ধুকে হত্যার মিথ্যা অভিযোগে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে।পিছনে লেগেছে পুলিশ।শুধু পুলিশ নয় তার বন্ধুকে যারা মেরেছে তারাও তাকে খুঁজছে। সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা- হাজার বছরের পরিব্রাজক নেমেছেন সাম্ভালার সন্ধানে।তার পিছে লেগেছে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।আবার ডঃ কারসন এবং ডঃ আরেফিনও নেমেছেন সাম্ভালার খোঁজে।অন্যদিকে রাশেদের যেন বিপদ পিছু ছাড়ছে না।জড়িয়ে পড়েছে গুপ্তধন উদ্ধারে।বন্ধুকে বাঁচাতে হলে তাকে খুঁজে বের করতেই হবে ঐ গুপ্তধন। সাম্ভালা শেষ যাত্রা- সাম্ভালার খোঁজে তিব্বতে এসে উধাও ডঃ আরেফিন।তাকে খুঁজে বের করতে বন্ধুকে নিয়ে রাশেদও হাজির হল তিব্বতে।কিন্তু সে জানেনা তাদের পিছনে পিছনেই চলেছে বিপদ।পরিব্রাজক লখানিয়া সিংও আছেন সাম্ভালার খোঁজে।কিন্তু তার প্রতিদ্বন্দ্বীও তার থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই। এই সিরিজটি পড়ার সময় বা পড়া শেষে প্রথম যে ভাবনাগুলো মাথায় আসে তার মধ্যে অন্যতম হল এই সিরিজটাকে কোন জেনারে ফেলা যায়।কখনো মনে হবে ফ্যান্টাসি,কখনো এডভেঞ্চার।আসলে এই সিরিজটি ফ্যান্টাসি,অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার,থৃলার,গুপ্তধন,সিক্রেট সোসাইটি সব কিছুর সংমিশ্রণের একটি অনন্য উদাহরণ।অনেক সময় এতকিছু একত্রে আনতে গিয়ে অনেক লেখক একটা জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেন।কিন্তু এক্ষেত্রে লেখক বিন্দুমাত্র ভুল করেননি।সব মিলিয়ে একটি চরম উপভোগ্য লেখা উপহার দিয়েছেন। লেখক শরীফুল হাসান এর কয়েকটা গল্প পড়া ছিল শুধু,যেগুলো মূলত থৃলার গল্প সংকলন ১,২ এ ছিল।সেই গল্পগুলো পড়ে ভাল লেগেছিল।আর সাম্ভালা সিরিজের কথা যে কতবার বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছি,কত প্রশংসা শুনেছি তার ইয়ত্তা নেই।তাই সব মিলিয়ে সাম্ভালা পড়ার জন্য বেশ আগ্রহ ছিল।এখন পড়ার শেষে বলতে পারি বিন্দুমাত্র হতাশ হতে হয়নি। শরীফুল হাসান এর প্রথম মৌলিক উপন্যাস সাম্ভালা।আর প্রথম লেখাতেই তিনি যে জটিল প্লট নিয়ে কাজ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।আসলে এধরনের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের কোন লেখকই আগে লেখেননি।তিনিই প্রথম লিখেছেন।আর কাহিনীর পরিধিও সুবিশাল।একসাথে অনেকগুলো ঘটনা তিনি বর্ননা করে গিয়েছেন।অনেকগুলো চরিত্রের কথা পাশাপাশি বলেছেন।এক কথায় বলতে তিনি একটি বহুস্তরবিশিষ্ট কাহিনী আমাদের শুনিয়েছেন।ভাবতে অবাক লাগে এতসব ঘটনা,চরিত্র তিনি কিভাবে মাথায় রেখে লিখেছিলেন।আমি মাঝেমাঝেই সময়,কাল,চরিত্রের খেই হারাচ্ছিলাম।কিন্তু তিনি খেই হারাননি।যথেষ্ট দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে কাহিনীকে এগিয়ে গিয়েছেন পরিণতির দিকে। সাম্ভালা প্রথম পর্বে লেখকের লেখনী কিছুটা দুর্বল বলা চলে।কিন্তু দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রার ক্ষেত্রে তা বলা যাবেনা।দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রায় এসে লেখকের লেখার ভাষা পেয়েছে সাবলীলতা,প্রাঞ্জলতা,আর কাহিনী পেয়েছে গতি।প্রথম পর্বে এছাড়াও তিনি সময় ব্যাবধানে কিছুটা ভুল করেছেন।যেমন এক জায়গায় দেখা যায় একদিনের মধ্যেই তিনি প্রথমে সকালের ঘটনা লিখে,তারপর রাতের ঘটনা লেখার পর আবার ফিরে গিয়েছেন দিনের ঘটনায়। সিরিজটিতে একই সাথে ঘটে চলেছে অজস্র ঘটনা।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘটনাগুলোর পিছনে যে যুক্তি,যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট দুর্বল মনে হয়েছে।কোন কোন ক্ষেত্রে কোন ব্যাখ্যাই দেওয়া হয়নি।যেমন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি রাশেদ কিভাবে তিন তিনবার তিনতলা থেকে লাফ দিয়েও অক্ষত থাকে।শেষবার অবশ্য একটু পা মচকেছিল!সিরিজের আরেকটি খামতির জায়গা হল কিছু কিছু জায়গায় ডিটেইলিংস এর অভাব।যেমন প্রথম পর্বের এক জায়গায় দেখা যাবে রাশেদ সি.এন.জি তে।তাকে ধাওয়া করা হয়েছে।কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে রাশেদ সেখান থেকে রক্ষা পেয়েছে।কিন্তু কিভাবে পেয়েছে সে সম্পর্কে শুধু বলা হয়েছে সি.এন.জি চালকের দক্ষতায় সে বেঁচেছে।আর কিছু বলা হয়নি। যে ব্যাপারটা পুরো সিরিজে সবচেয়ে চোখে লেগেছে তা হল বেশকিছু অসঙ্গতি।আর অবাক করার ব্যাপার হল প্রথম পর্বে এগুলো খুবই কম ছিল,দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রায় প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়েছিল।আমি সবগুলো বলতে গেলে হয়ত স্পয়লার হয়ে যাবে।তাই শুধু ৩ টি উদাহরণ দিচ্ছি।দ্বিতীয় যাত্রার ১৭১-১৭২ পৃষ্ঠা পড়ার সময় এক জায়গায় দেখা যাবে রাশেদ মোবাইল বের করে সময় দেখছে।পরের মুহূর্তেই দেখা যাবে সাথে মোবাইল না থাকায় সে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না!!আর বইটির বেশকিছু জায়গায় বিনোদ চরিত্রটিকে আকাশ বলা হয়েছে।আবার শেষ যাত্রায় কিছু জায়গায় একটি চরিত্রের নাম কখনো চরনদাস কখনো রামচরন বলা হয়েছে। এসব মাইনাস পয়েন্ট দেখে মনে হতে পারে বইটা আমার ভাল লাগেনি।কিন্তু আগেই বলেছি বইটা আমার ভাল লেগেছে,সত্যি বলতে কি দুর্দান্ত লেগেছে।আর এই মাইনাস পয়েন্টগুলো সংখ্যায় নগণ্য।বইটির প্লাস পয়েন্টই বেশি।বইটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল আপনি একবার পড়া শুরু করলে শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য।আপনি প্রথম পর্ব শেষ করলে এটি আপনাকে বাধ্য করবে দ্বিতীয় পর্ব হাতে না আসা পর্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে।বাধ্য করবে হাতে আসা মাত্র পড়া শুরু করতে। ট্রিলজিটি সব মিলিয়ে ৮০০ পৃষ্ঠার মত।আমি প্রত্যেকটি বইই এক বসায় শেষ করেছি।কারন একবার শুরু করার পর না শেষ করে উঠতে ইচ্ছে করছিল না।লেখক প্রায় পুরো সময়ই রহস্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।কেউ প্রথম পর্ব শেষ করার পর বিন্দুমাত্র ধারনা করতে পারবে না দ্বিতীয় পর্বে কাহিনী কোনদিকে এগোবে।তবে প্রথম দুইটি পর্ব পড়ার পর মনে বেশ কিছু প্রশ্ন জাগে।ট্রিলজিটা শেষ হবার পর অনেক প্রশ্নের যেমন যথাযথ উত্তর মিলেছে তেমনি পাওয়া যাবে না অনেক প্রশ্নেরই উত্তর। বাতিঘরের বই পড়তে গেলে আমার মাথায় প্রথম যে কথাটা আসে,এই প্রকাশনীর সম্ভবত কোন প্রুফরিডার নেই!কারন তাদের আমি যে কয়টি বই পড়েছি তাতে রয়েছে বাড়াবাড়ি ধরনের বানান ভুলের মিছিল।এই সিরিজটিতেও রয়েছে বানান ভুলের অজস্র উদাহরণ।তবে বিস্ময়করভাবে এই সিরিজটিতে আমার মনে হয়েছে তুলনামূলক বানান ভুল কম রয়েছে।যাই হোক এর ফলে বইগুলোর মাহাত্য বিন্দুমাত্র কমে না। বাতিঘর প্রকাশনীকে অজস্র ধন্যবাদ আমাদের এই মানসম্পন্ন মৌলিক লেখা উপহার দেবার জন্য।তারা গত কিছু সময় ধরেই অনুবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌলিক লেখা প্রকাশ করে চলেছে।যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।তবে এই সিরিজটির জন্য প্রকৃত ধন্যবাদ প্রাপ্য শরীফুল হাসান এর।প্রত্যেকটি পর্বই তিনি অত্যন্ত যত্নের সাথে এবং পরিশ্রম করে লিখেছেন বোঝা যায়।সিরিজটির লেখার জন্য তিনি অনেক গবেষণা করেছেন তার পরিস্কার ছাপও তার লেখায় পাওয়া যায়।আশা করি এধরনের আরও অনেক মৌলিক লেখা তার কাছ থেকে ভবিষ্যতে পাব। এক নজরে বইয়ের নাম-সাম্ভালা ট্রিলজি লেখক-শরীফুল হাসান প্রকাশক-বাতিঘর প্রকাশনী গায়ের মূল্য-২০০+২২০+২৪০ টাকা আমার রেটিং-৪.২৫/৫ পরিশেষে বলতে পারি যারা এখনো ট্রিলজিটি পড়েননি পড়ে ফেলুন,বিন্দুমাত্র হতাশ হবেন না।
Was this review helpful to you?
or
কারসন দলবল নিয়ে চলে এসেছেন তিব্বতে, তার সত্যিকার উদ্দেশ্য কী কেউ জানে না। ওদিকে অপহৃত হলেন ডঃ আরেফিন, সুদূর ঢাকা থেকে রাশেদ চলে এলো তিব্বতে, কিন্তু তাদের পেছনে লাগলো একদল লোক। লখানিয়া সিং ওরফে আব্দুল মজিদ ব্যাপারীও আছেন সাম্ভালার পথে, সঙ্গী যজ্ঞেশ্বর আর বিনোদ চোপড়া, তাদের দুজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পূর্ন আলাদা, মিচনারও পিছিয়ে নেই, প্রতিপক্ষ লখানিয়া সিং থেকে সে কেবল এক পা দূরে। অন্যদিকে পিশাচ সাধক আকবর আলী মৃধা আছে পেছনে, তার উদ্দেশ্য কী! দুই চিরশত্রু কি মুখোমুখি হবে একে অপরের? অবশেষে সাম্ভালার সন্ধান কি কেউ পেয়েছিল? এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে সাম্ভালা ট্রিলোজির শেষ পর্ব সাম্ভালা শেষ যাত্রায়, প্রথম দুই পর্বের মতোই টানটান উত্তেজনায় আপনাকে ধরে রাখবে একদম শেষ পর্যন্ত।
Was this review helpful to you?
or
ফ্যান্টাসি- অ্যাডভেঞ্চার- থ্রিলার প্রেমী পাঠকের নিঃসন্দেহে ভাল লাগবে। বেশি ভাল লাগছে কারন, আমার মনে হয় একজন বাংলাদেশী লেখকের নিজস্ব সৃজনশীলতায় ইহাই প্রথম মৌলিক থ্রিলার টৃলোজি। ধন্যবাদ লেখককে, তার প্রচেস্টার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
শুরু করছি প্রকাশকের কিছু কথা দিয়েঃ "বাংলাসাহিত্যে এরকম ফ্যান্টাসি-অ্যাডভেঞ্চার থৃলার এর আগে কেউ লিখেছে বলে জানা নেই।... রীতিমতো বিষয়টির উপর পড়াশোনা করে একটি প্লট দাঁড় করিয়েছেন তিনি। সেই সাথে যোগ করেছেন নিজস্ব সৃজনশীলতা, আর কল্পনাশক্তি যা বিশুদ্ধ থৃলারের জন্য অপরিহায্য..." আমি "সাম্ভালা" এবং "সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা" পড়েছি, পড়ে মুগ্ধ হয়েছি, অপেক্ষায় ছিলাম তৃতীয় পর্বে কী চমক নিয়ে হাজির হন লেখক, "সাম্ভালা শেষ যাত্রা" পড়ে আমি মুগ্ধ, এক কথায় অসাধারন। বিস্তৃত একটি প্লট, অসাধারন লেখনী, সাহিত্য, ইতিহাস সম্পর্কে চমৎকার জ্ঞান, একটি লেখার জন্য বিস্তর ঘাটাঘাটি এ ধরনের অনেক কিছু নজরে পড়েছে। আমাদের দেশে লেখালিখি করে কেউ সচ্ছল্ভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে না, বই লেখার মতো অনুৎপাদনশীল কাজে দারুন সময় ব্যয় করেছেন ভদ্রলোক, এই বিশাল কাজ থেকে অর্থ সমাগম না হলেও পাঠকের মনে চিরস্থায়ী একটা দাগ কাটতে সক্ষম হয়েছেন তিনি, তাকে অভিনন্দন, ট্রিলজি বলতে যা বোঝায় বাংলা সাহিত্য তা থেকে বঞ্চিত ছিল এতোদিন, এই বঞ্চনা ঘুচিয়েছেন তিনি।
Was this review helpful to you?
or
জীবন ক্ষণস্থায়ী। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। মৃত্যুকে কেউই জয় করতে পারবে না!!! সাম্ভালা! কেবলই নাম! মোহ! জাদু! রহস্য! মিথ!!! সুদর্শন এক যুবক। পেশীবহুল এক শরীর। দানবের মত শক্তি তার দেহে। রক্ত তার নেশা। পৃথিবীর হাজার মাইল পথ সে পাড়ি দিয়েছে পদব্রজে। কোন কিছুই তার বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এখন তার লক্ষ্য একটাই। তার একমাত্র প্রতিপক্ষ, একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দেয়া এই পৃথিবীর বুক থেকে। সে নির্ডর, সে নির্ভীক। নাম তার মিচনার। আরেক যাত্রী। নাম লখানিয়া সিং। সেও এক পথিক। সে সাধারন নয়। তাঁর লক্ষ্য সাম্ভালা। এগিয়ে চলেছে সাম্ভালা নামক মোহের দিকে। ডঃ কারসন প্রথম থেকেই পড়ে আছেন সাম্ভালার পিছে। তাঁকে এবং তাঁর অভিযান দলকে খুঁজে বের করতেই হবে এ নামের পিছে কী আছে। তাঁরা এগিয়েও চলেছেন সাম্ভালার দিকে। কিন্তু পদে পদে বিপদ এবং নতুন চমক। নতুন শত্রু সামনে। এদিকে পুরানো ভয়ঙ্কর শত্রুও পিছে নেই। সিক্রেট সোসাইটিরাও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। রাশেদ কীভাবে যুক্ত হবে এই অভিযানে? আসলেই কী সাম্ভালা আছে? নাকি কেবলই এক মিথ? রহস্য? কেউ কি পারবে এই রহস্যের কোন কিনারা করতে?? মুহুর্মুহু চেজ, নাটকীয় অপহরন ও নিস্রংসতায় ভরপুর হত্যাকান্ড সম্বলিত এক অসাধারন ট্রিলজির শেষ পর্ব সাম্ভালা শেষ যাত্রা। লেখক শরীফুল হাসানের এক অসামান্য সৃষ্টি এই সাম্ভালা ট্রিলজি। প্রথম দুটি পর্ব পড়েই এই ফ্যান্টাসি এডভেঞ্চার থ্রিলার ট্রিলজিটির বেশ প্রশংসা করেই পজিটিভ রিভিউ লিখেছিলাম। কিন্তু তৃতীয় বই শুরু করার আগে মনে একটু সংশয় ছিল মনে লেখক কী প্রথম দুই পর্বের মত অসামান্য দুর্দান্ত ভাবে ফিনিশিং দিতে পারবেন? এই সংশয়ের পিছে প্রথম দুই পর্বের কোন কারন নেই। এর আগে অনেক বিশ্বখ্যাত সিরিজেও দেখা গেছে যে শুরুর চমকের সাথে শেষটা অতটা দুর্দান্ত হয় না। কিন্তু লেখকের অপুর্ব দুর্দান্ত প্লট এবং প্লট ডেভেলপমেন্ট এই পর্বেও আমাকেও মুগ্ধ করেছে। তিনি পুরো সিরিজটিতেই চমকের পর চমক রেখেছেন। যে কোন চলমান সিরিজের শেষ বই নিয়ে রিভিউ লেখা সহজ নয়। কারন স্বাভাবিক ভাবেই কাহিনী নিয়ে কথা বলতে গেলে পুরো সিরিজের কাহিনীকে বিচার করেই কথা বলতে হয়। আমি আগেই বলেছি এই ট্রিলজির প্লট দুর্দান্ত। এমন প্লট নিয়ে বাংলাদেশে আগে কোন ফ্যান্টাসি-এডভেঞ্চার থ্রিলার লেখা হয়নি। এই শেষ যাত্রায় এসে প্লটটি যখন ধীরে ধীরে সামনে পরিষ্কার হতে থাকে তখনই লেখকের বিচক্ষণতার প্রকাশ পেতে থাকে আরও ভালভাবে। কাহিনীর ডেভেলপমেন্টকেই আমি এই সিরিজকে বেশী ভালো লাগার পিছনের মূল কারন বলব। লেখক প্রথম ও দ্বিতীয় যাত্রায় কিছু চরিত্র হঠাৎ করেই নিয়ে আসেন, যাদেরকে শুরুতে মনে হয় কি দরকার এই চরিত্রের? শেষ যাত্রায় এসে এর উত্তর মিলবে। কাহিনীর গতিশীলতা প্রথম দুই পর্বের চেয়ে শেষ যাত্রায় বেশ ভালই। কিছু কিছু অধ্যায় কাহিনীর গতি বেশ মুগ্ধ করার মত। লেখকের লেখনীর কথা বলতে গেলে আমি প্রথম দুই পর্বের রেফারেন্স নিয়ে আসব। প্রথম পর্বের লেখনীর কারনেই একটু ধীরগতিতে পড়তে হয়েছিলো আমাকে। কিন্তু লেখকের প্রথম মৌলিক লেখা বলেই আমি এ বিষয়কে অতটা প্রাধান্য দিই নাই। দ্বিতীয় যাত্রায় এসে লেখকের লেখনী অনেক ভালো হয়েছে এবং আমার পড়ার গতিও অনেক বেড়ে গিয়েছিল এই পর্বে এসে। আর শেষ যাত্রায় লেখকের লেখনী আগের দুই পর্বকে ছাড়িয়ে অনেক পরিপক্ক হয়েছে। আসলে এটাই স্বাভাবিক একজন লেখক যতই লিখবেন ততই অভিজ্ঞতার ঝুলি বেড়ে পরিপক্কতা আসবে। এই পরিপক্কতা কেবলমাত্র লেখনীতেই ফুটে উঠেনি। এই পরিপক্কতা কাহিনীর ডেভেলপমেন্ট, গতিশীলতা এবং সিকোয়েন্স ডিটেইলিংসে পরিলক্ষিত হয়েছে। আগের দুই পর্বে সিকোয়েন্স ডিটেইলিংসে ঘাটতি ছিল যা এই পর্বে এসে অনেক ভালো হয়েছে। আমার কাছে এই দুর্দান্ত ট্রিলজির শেষ যাত্রার একমাত্র দুর্বলতা লেগেছে কিছু কিছু অধ্যায়ের সংযোজন। কিছু কিছু অধ্যায়/অংশ আমার কাছে অতিরিক্ত লেগেছে যা না থাকলেও কাহিনীর ডেভেলপমেন্টে কোন ক্ষতি হত না। এবং ফিনিশিংটাও আরেকটু প্রলম্বিত হলে খারাপ লাগতো না। সর্বোপরি এক দুর্দান্ত ট্রিলজির দুর্দান্ত শেষ পর্বের অসাধারন এন্ডিং। লেখক একেকটি পর্ব লেখার জন্য সময় নিয়েছেন এক বছর করে। তিন পর্বের জন্য তিন বছর কষ্ট করেছেন। আর আমরা পাঠকরা লেখকের তিন বছরের কষ্টের ফসল তিন দিনে পড়ে মহা আনন্দ নিয়েছি। লেখক শরিফুল হাসানকে আবারও সাধুবাদ জানাচ্ছি আমাদের এত দারুন একটি ফ্যান্টাসি-এডভেঞ্চার থ্রিলার ট্রিলজি দেয়ার জন্য। সাম্ভালা শেষ যাত্রার জন্য লেখকের প্রতি শুভকামনা রইল। একইসাথে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক বেড়ে গেল লেখকের কাছে। আশা করছি সন্নিকটেই লেখকের পরবর্তী বই পড়ার সুযোগ পাব আমরা।