User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এস এম শুভ #রবিজ_রকমারি_বুক_রিভিউ_কন্টেস্ট ব্যক্তিগত অভিমতানুসারে রেটিং : ১০/১০ * বইয়ের রিভিউ খানিকটা এলোমেলো হতে পারে। শুরু থেকে শেষ, সবই এলোমেলো। এটাকে কি বুক রিভিউ বলা যায়? "অংকের হেঁয়ালি ও আমার মেজোকাকুর গল্প" বইটা কোনো গণিত শেখার বই নয়। একেবারেই একটা ভিন্ন ধাঁচের একটা উপন্যাস। বইটি মূলত বিদেশী লেখক অ্যাপোস্টোলোস ডক্সাইডসের "আঙ্কল পেট্রস অ্যান্ড গোল্ডবাখ'স কনজেকচার" নামক গ্রিক পটভূমির গল্পের ছায়া অবলম্বনে লেখা হয়েছে। বাংলাদেশী প্রেক্ষাপটে গল্পটির নির্যাসটাকে ব্যবহার করা হয়েছে। বইটির মূল চরিত্র মূলত একজন অসাধারণ গণিতবিদ মোস্তাফিজুর রহমান। ছেলেবেলা থেকেই তার গণিতের প্রতি বিরাট অনুরাগ। তিনি গণিতে তার ব্যাপক পারদর্শিতাও দেখিয়ে এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে তার প্রেমিকার বিচ্ছেদ ঘটায় তিনি যে কতো বড় গণিতজ্ঞ, সেটা তাকে দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাই সমাধান করার চেষ্টা শুরু করলেন গণিতের প্রায় অসম্ভব একটি সমস্যা, যার নাম গোল্ডবাখের কনজেকচার। এটা মূলত নাম্বার থিওরির খেলা। আর এই থিওরির রহস্যময় একটা দিক হচ্ছে মৌলিক সংখ্যা। মৌলিক সংখ্যার বিন্যাসপদ্ধতি অনির্দিষ্ট। অর্থাৎ, কেউ জানে না একটি মৌলিক সংখ্যার সাথে তার পরের মৌলিক সংখ্যার কোনো প্যাটার্ন ঠিক কি। এলোমেলো অবস্থা আরকি, যেমনটা দশমিকের পর পাইয়ের মানের হয়। তো মোস্তাফিজুর রহমান এই অসম্ভব সমস্যাটির সমাধান করতে লেগে গেলেন। গল্পের রস আরো বাড়াতে গল্পে চলে এসেছে রামানুজান,হার্ডি,গোডেলের মতো গণিতজ্ঞরাও! মোস্তাফিজুর রহমান হার্ডির অধীনে কাজ শুরু করেছিলেন। অথচ হার্ডিও একসময় তাকে বলেছিল যে এটার সমাধান করা অসম্ভব। গল্পের গল্পকথক হচ্ছে তার ভাতিজা। তারও গণিতের প্রতি আগ্রহ ছিল। কিন্তু কথায় বলে 'Mathematicians are born,not made.' তার ভাতিজা গণিতবিদের প্রতিভা নিয়ে জন্মায়নি। যাই হোক, গল্পে মোস্তাফিজুর রহমানের গণিতের ভ্রমণের কথা তিন-তিনবার বলা হয়েছে। প্রতিবারই মূল ঘটনাকে নতুনভাবে বলা হয়েছে। এতে পাঠকেরা বেশ উত্তেজনা অনুভব করবেন। বইটিতে দেখানো হয়েছে একজন গণিতবিদের জীবনকে। একজন গণিতবিদ কিভাবে ভাবেন, তার সফলতা, ব্যর্থতা, হতাশা, বিষণ্ণতা, আবেগ ইত্যাদি ফুটে উঠেছে। আগের ঘটনায় ফিরে আসি, গণিতজ্ঞদের জীবনে আবিষ্কারের শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে যুবক বয়স। মোস্তাফিজের এই সময়টা পার হয়ে যাচ্ছিল। বয়স হয়ে যাবার এক পর্যায়ে গিয়ে তিনি কার্ট গোডেলের সমীকরণের কথা শোনেন। এই সমীকরণ অনুসারে গোল্ডবাখের ধাঁধাঁর সমাধান করা অসম্ভব! তাহলে কি মোস্তাফিজুর রহমানের সমস্ত সাধনা ব্যর্থ? যদিও কাজ করতে গিয়ে একটা ফর্মুলা তিনি আবিষ্কার করেছিলেন, তবুও সেটা সঠিক সময়ে প্রকাশ না করায় অন্য একজন সেটি আবিষ্কার করে তার নামে পেটেন্ট করিয়ে নেয়। যদিও এতে মোস্তাফিজুর রহমান গণিতের যুগস্রষ্টা হতে পারতেন না। কারণ ' গণিতে প্রথম ব্যতীত আর কোনো স্থান নেই!' কিন্তু কথা হলো মোস্তাফিজুর রহমান কি গোল্ডবাখের ধাঁধাঁর সমাধান করতে পারেন নি? বুড়ো বয়সে তার ভাতিজা তাকে কথার প্যাঁচে সত্যটা বের করে নিয়ে আসে। আসলে মোস্তাফিজুর রহমান গোডেলের তত্ত্বের পরোয়া করে নি। কিংবা হার্ডির নিরুৎসাহের। তিনি সত্যের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময়েই তার নার্ভাস ব্রেক ডাউন হয়। মাথায় গিট্টু লেগে গিয়েছিল। কথার প্যাঁচে তার তেজ ফিরিয়ে আনায় তিনি তার ভাতিজাকে কয়েক কেজি তেঁতুলের বিচি আনতে বলেন ( তেঁতুলের বিচি সাজিয়ে তিনি সমস্যার সমাধান করবেন )। তার মস্তিষ্কের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছিল। প্রায় পাগলের মতো হয়ে পড়ছিলেন। এদিকে আবার বিভিন্ন সংখ্যাও তাকে দেখা দিতে শুরু করলো ( হ্যালুসিনেশান সম্ভাবত ) সব কিছু তোয়াক্কা করে কিছুদিন পর তিনি তার ভাতিজাকে ভোরবেলা ফোন দিয়ে বেশ উত্তেজনার সাথে ভাতিজার সাথে আরো একজন নিয়ে তার বাসায় আসতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান তাক বলে যে মৌলিক সংখ্যারা তাকে নিয়ে যেতে চাইছে। ভাতিজা একজন ডাক্তারকে নিয়ে তার বাসায় উপস্থিত হয়, কিন্তু ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়। কারণ অধিক উত্তেজনা। কিন্তু কেন তিনি উত্তেজিত হয়েছিলেন? তিনি কি তবে গোল্ডবাখের ধাঁধাঁ প্রমাণ করতে পেরেছিলেন? গল্পকথক ( তার ভাতিজা ) এর উত্তর দেয় নি। না জানাই থাক না........ পুনশ্চঃ আমার পড়া সেরা বইগুলোর তালিকায় এখনো এই বইটি সগৌরবে প্রথম স্থান অধিকার করে রেখেছে....
Was this review helpful to you?
or
বইটা অসাধারন বললেও কম হয়ে যাবে মনে হয়। কারন আমার জানামতে বাংলা সাহিত্যে এমন বই দ্বিতীয়টা আর নেই। যদিও বইটা একটা বিদেশি বইয়ের অবলম্বনে লেখা, তবুও এতে উঠে এসেছে সম্পূর্ণ বাংলাদেশেরই প্রেক্ষাপট। আর এই বই সম্পর্কে Munir Hasan স্যারের রিভিউটা অসাধারন। বইটা Uncle Petros and Goldbach's Conjecture এর অনুকরনে লেখা হয়েছে। আর এর নাম হল 'অংকের হেয়ালি ও আমার মেজোকাকুর গল্প'; লেখক হলেন Farseem Mannan Mohammedy স্যার। এই বইয়ে উঠে এসেছে একজন গনিতবিদের দৈনন্দিন জীবন-যাপন, সমাজ-পরিবার, আচরন ও চালচরন এবং তার কঠর অদ্ধাবসায়ের কাজ। কিভাবে জীবনকে বাজি রেখে একজন গনিতবিদ একটা তুচ্ছ উপপাদ্দের পেছনে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেয় তা এখানে সাহিত্যের ভাষায় বলা হয়েছে। আমি জিবনে এত গনিতবিদের নাম এক বইয়ের মধ্যে পাইনি। এই বই পড়ে একজন যেমন গনিত বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠবে তেমনিই গনিতকে ভালবাসতে শিখবে। সে সময়ের কাজ সময়েই করার তাগাদা অনুভপব করবে। এটাও বুঝতে পারবে যে এক মাথার থেকে অনেক মাথা উত্তম, তাই যেকোন কাজ সবার সাথে মিলেমিশে করার জন্য আগ্রহী হবে। আসলে বলতে গেলে এটা বাংলা সাহিত্যের প্রথম "গনিত উপন্যাস"।এমন বই আমি আর কোন দিনই পড়িনি। এই বইয়ে প্রায় সকল বিখ্যাত গনিতবিদের নাম ও তাদের কাজ সাহিত্যের ভাষায় আনন্দের সাথে বলা হয়েছে, যা থেকে আমরা সহজেই এগুলো মনে রাখতে পারব। এই বইয়ে রিমান, ফার্মা, কুরট গোডেল, আলান ট্যুরিং, হার্ডি থেকে শুরু করে ড. জিয়াউদ্দিন,রামানুজান সহ জানা অজানা অনেক গনিতবিদের কথা উল্লেখ আছে। এখানে মূলত নাম্বার থিউরি নিয়ে অনেক সহজ ভাষায় আলোচনা হয়েছে। দেখানো হয়ে প্রাইম নাম্বারের অনিন্দ সৌন্দর্য। আরো উল্লেখ আছে রিমান হাইপোথিসিস, ফার্মার শেষ উপপাদ্য, গোল্ডবাখ কনজেকচার। এই বই উল্লেখিত আমার সবচেয়ে প্রিয় উক্তি হল, "Mathmaticinas are born not made"- হেনরি পয়কারে।