Our User Product Reviews

দ্বিতীয় দশকের তরুণতর কবি সিজন নাহিয়ান। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করে চলেছেন। হুইল চেয়ার নিত্যসঙ্গী হলেও প্রচণ্ড আশাবাদী এ কবি বহুমাত্রিক জীবনের সঙ্গে বোঝাপড়া চলেছেন প্রতিনিয়ত। পারিবারিক ধারাবাহিকতায় ছোটবেলা থেকেই গড়ে ওঠে লেখালেখির অভ্যাস। সিজন নাহিয়ানের বাবা আমিনুর রহমান সুলতান বিশিষ্ট লেখক, বাংলা একাডেমির উপপরিচালক। পাশাপাশি তিনি সম্পাদনা করেন ‘অমিত্রাক্ষর’ নামের একটি লিটল ম্যাগাজিন। জন্ম থেকে এসব দেখে দেখেই কি জাগ্রত হয়েছে সিজন নাহিয়ানের লেখকসত্তা, খুলেছে অন্তর্দৃষ্টি? হবে হয়তো। সিজন নাহিয়ানের লেখা কবিতা বাংলাদেশের সাহিত্যপত্রিকা ‘কালি ও কলম’সহ পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে, জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় প্রায়ই। একুশে বইমেলা ২০১৪-এ প্রথম কবিতার বই ‘উদ্বাস্তু সিরিজ’ প্রকাশিত হয়েছে ‘চারুলিপি’ প্রকাশন থেকে। এ গ্রন্থে মানুষের দ্বান্দ্বিক জীবনের আজন্ম-উন্মুল-শরণার্থী সত্তার একাকিত্ব, অপ্রাপ্তি কিংবা জীবনের মৃত্যুখেলায় কিংবা চাটুকারিতার আড়ালে অমাবস্যার সৌন্দর্য, অন্তর্দৃষ্টির আড়ালে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা সত্তার আত্মকথা নিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। উদ্বাস্তু মানে বাস্তুহারা, ঘরহারা, আশ্রয়হীন। কিন্তু পৃথিবীতে উদ্বাস্তু সংখ্যা কতই বা আর। প্রতিটি মানুষই ভেতর থেকে যে উদ্বাস্তু এই চরম সত্যটিকে শিল্পময় করে তোলা হয়েছে নানান মাত্রাই প্রকাশিত ৩২টি কবিতায়। ঘর, নিশ্চিত আবাস থাকলেও মানুষ উদ্বাস্তু হয়, হতে বাধ্য। পারিপার্শ্বিকতাই তাকে এমন ‘দুর্গোগের’ দিকে ঠেলে দেয়। ‘উদ্বাস্তু সিরিজ’-এ নতুন ভাবনা, নতুন অভিজ্ঞতায় জারিত করার প্রয়াস রয়েছে কবির। কাব্যগ্রন্থটি পাঠককে আকৃষ্ট করবে। পাঠক এটাও উপলব্ধি করবেন- সিজন নাহিয়ান বয়সে অপরিণত হতে পারেন কিন্তু শিল্পচর্চায় দারুণ পরিণত!