User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
পড়লাম শ্রদ্ধেয় শাকুর মজিদ এর "নোবেলের শহর"। লেখক ও ফটোগ্রাফার শাকুর মজিদ দুজনকেই খুজে পেয়েছি বইটিতে। তাঁর প্রাণবন্ত লেখায় মুগ্ধ হয়েছি, মনে হচ্ছিল স্টকহোমে কড়া রঙ এর এপার্টমেন্টের পাশে বা নীল জলরাশির ধারে লেখকের সাথেই ঘুরে বেড়াচ্ছি। বইটি পড়ার সাথে সাথে ইউটিউবে জায়গাগুলোর ভিডিও দেখছিলাম।নো নয়েজ, বিশুদ্ধ বাতাস ও বিশুদ্ধ পানির শহর স্টকহোম দারুণ লেগেছে। স্টকহোম রয়েল প্যালেস এর রয়েল গার্ড চেঞ্জ হওয়ার দৃশ্যতো আসাধারণ লেগেছে। নোবেল প্রাইজ ও সুইডেনের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারলাম। সত্যিই আসাধারণ জাতি এই সুইডিশরা। You can trust anybody in the street.
Was this review helpful to you?
or
বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও ভ্রমনপিপাসু লেখক শাকুর মজিদ এর “নোবেলর শহর” বইটি সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম এর উপর রচিত।স্টকহোমের দৃষ্টিনন্দন বর্ণনা তুলে ধরেছেন লেখক শাকুর মজিদ।ছোট বড় চৌদ্দটি দ্বীপ নিয়ে বৃহত্তর স্টকহোম। দ্বীপগুলো পরস্পর সেতু দিয়ে সংযুক্ত। স্টকহোম নাম করনের পশ্চাতে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস আছে। ১৩শ শতকে হেলজেন্সহোলম নামক জায়গায় স্টকহোম শহরের গোড়াপত্তন হয়। হেলজেন্সহোলম ছিল বর্তমান বৃহত্তর স্টকহোমের ছোট একটি দ্বীপ, বর্তমানে এই দ্বীপে জাতীয় সংসদ স্থাপিত। ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধের জন্য দুটি সেতুর মাঝে শহরটিকে সরিয়ে আনা হয় বলে শহরটির নাম হয় স্টকহোম। সুইডেনের পার্শবর্তী দেশ এস্টোনীয়া স্টকহোম থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে সমৃদ্ধশালী জনপদ সিগটুনা আক্রমণ ও ধ্বংস করলে সিগটুনাবাসীরা তাঁদের মূল্যবান সম্পদ লেক ম্যালারেনে নিক্ষেপ করে নতুন দ্বীপে চলে আসে। ‘স্টক’ শব্দের অর্থ রক্ষিত স্থান আর ‘হোলম’ শব্দের অর্থ ‘দ্বীপ’। অর্থাৎ স্টকহোম সম্পদ রক্ষাকারী দ্বীপ। পর্যটক বা দর্শনপ্রাথীদের জন্য স্টকহোমের ‘গামলাস্তন’ বা পুরানো শহর দর্শনীয় স্থান। পর্যটকরা স্টকহোমে এসেই পুরানো শহরে চলে আসেন। পুরানো শহরের পাশেই গড়ে উঠেছে অধুনিক নতুন শহর। স্টকহোম সেন্ট্রাল স্টেশান হতে বের হয়েই আপনি ‘রানীর সড়ক’ বা ড্রতনিংগতান ধরে হাঁটতে হাঁটতে ছোট সেতু পার হয়ে সংসদ ভবনের মাঝের রাস্তা ধরে পুরানো শহরে চলে আসতে পারেন। ড্রতনিংগতানে গাড়ি-ঘোড়া চলার নিয়ম নেই। কাজেই আপনি ধীরে ধীরে হেঁটে সময় নিয়ে আসতে পারেন। এই সড়কের দু’ধারে রয়েছে বিভিন্ন দোকান এর মধ্যে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত শপিং সেন্টার আর কালচারাল হাউজ। ড্রতনিংগতানের শেষ মাথায় ছোট সেতুটি পুরানো আর নতুন শহরের সংযোগস্থল। যদি আপনার মাছ ধরার শখ থেকে থাকে তবে সেতুর উপর দাঁড়িয়ে ছিপ দিয়ে ম্যালার লেক হতে মাছ ধরতে পারেন। ছিপ দিয়েই মাছ ধরতে হবে, জাল ফেলার নিয়ম নেই। মাছ ধরা সুইডিশদের বিরাট এক নেশা। এইতো দিন কয়েক আগে প্রবাসী আবিদ ভাই ভোর রাতে এই সেতুর উপর হতেই সাড়ে চৌদ্দ কিলো এক বিশাল লাক্স (সোলমন) মাছ ধরলেন। এতো বড় মাছ এর আগে খুব কমই ধরা পরেছে। সেতুর ওপারেই সংসদ ভবন। সংসদ ভবনের ভেতর দিয়েই পায়ে হাঁটা পথ। পথের শেষে রাজবাড়ি। রাজা কার্লগুস্তাব এই প্রসাদেই বাস করেন। রাজবাড়ির পাশ দিয়েই সরু পাথরের রাস্তাটি চলে গেছে পুরানো শহরে। পুরানো শহরে ঢোকার আগে রাজপ্রসাদটি ঘুরে ফিরে দেখতে ভুলবেন না। রাজপ্রাসাদে পাহারাদার থাকলেও আপনাকে কেউ বাঁধা দেবেনা বরং সাহায্য করবে। এক সময় প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্কের বেশ আধিপত্য ছিল সুইডেনের উপর। ১৫২০ সালে ডেনিস রাজা দ্বিতীয় ক্রিশ্চিয়ানের রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে স্টকহোমে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাজপ্রতিনিধি, আভিজাত সম্প্রদায়, বিশিষ্ট জনগণ ও নগরবাসীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। দীর্ঘ তিনদিন উৎসব চলার পর অভিজাত সম্প্রদায় কথায় কথায় প্রচলিত ধর্মমতের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেন। গীর্জার প্রধান ধর্মজাযক গুস্তাভ ট্রোল্লে তাদের অভিযুক্ত করলে আদালত দ্রুতই তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়। দণ্ডাদেশের পরদিন থেকে বর্তমান পুরানো শহরের বড়বাজারে (Stortorget) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে থাকে এবং দুদিনেই অভিজাত সম্প্রদায়ের ১০০ জনের শিরোচ্ছেদ করা হয়। ইতিহাসে এই হত্যাকাণ্ড এক কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আছে। এই হত্যাকাণ্ড ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করে ও অনেক ঘটনার জন্ম দেয়। অবশেষে ১৫২৩ সালে গুস্তাভ ভসা স্টকহোম অবরোধ করে নিজেকে সুইডেনের প্রথম রাজা হিসেবে ঘোষণা দেন এবং রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। সুইডেনের বর্তমান রাজা সেই রাজবংশেরই বংশধর। স্টকহোম হত্যাকাণ্ডের ৩১৩ বছর পর ১৮৩৩ সালে স্টকহোমে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলফ্রেড নবেল। নবেল তাঁর প্রভূত সম্পত্তির যে উইল করে যান, তার থেকে দেয়া হয় ‘নবেল পুরস্কার’। পৃথিবীতে সম্মানজনক নবেল পুরস্কারের বিকল্প নেই। স্টকহোম পুরানো নগরীর বড়বাজার চত্তরেই গড়ে উঠেছে ‘নবেল মিউজিয়ম’। নবেল বিজয়ীদের দুর্লভ নিদর্শন রয়েছে এই মিউজিয়মে, রবিঠাকুরও রয়েছেন এখানে। নবেল মিউজিয়মের পাশেই রাজপ্রাসাদ এবং আরো অনান্য পুরানো স্থাপনা। পুরানো শহরের রাস্তাগুলো সরু পাথর বিছানো।এমন সুন্দর শহরের বর্ণনা আর ইতিহাস লেখক অমায়িক লেখনীদ্বারা তুলে ধরেছেন বইটিতে।ভ্রমন পিপাসু যারা তাদের খাছে বইটি ভাল লাগবে তাই বলব পাঠক মিস করবেন না পড়তে।আশা করি আপনাদের কাছে বইটি অনেক ভাল লাগবে।