User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বেশ ভালো একটি বই, সংগ্রহে রাখতে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
যারা মুখবইয়ে 'ভালবাসার গল্প' পেজের সদস্য এবং সেখানে প্রকাশিত লেখার নিয়মিত পাঠক তাদেরকে একুয়া রেজিয়া আপুর লেখা সম্পর্কে বলা আমার জন্য ধৃষ্টতা।বর্তমানে ছোট গল্পের শক্তিশালী লেখক লেখিকার তালিকা করতে বললে আমি চোখ বুজে ওনার নাম প্রথম ৫ জনে রাখবো। বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা মাত্র ৭৮। এই ৭৮ টা পৃষ্ঠা যে কোন মায়াজালে আটকে রেখেছিল পুরো ১ ঘণ্টা তা বলার মতো শব্দ খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে। কষ্ট হয় এই ভেবে যে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল কেন গল্পটা! আপাতত তিনটি শব্দে 'কিছু বিষাদ হোক পাখি' কে আমি প্রকাশ করতে পারি-'সহজ, সত্য এবং সুন্দর'। সহজ বলছি কারণ বইটা পড়ে আরাম পেয়েছি সবদিক দিয়ে, চোখেও যেমন মনেও তেমন।কাহিনী সরল, জায়গায় জায়গায় অনর্থক দর্শনের কথা নেই।মূল কাহিনী বাদে অন্য কথা বা এনিগমাগুলো যেখানে ঠিক যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু খুবই সরলভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পাঠককে জটিল চিন্তায় ফেলে দেবার কোন ষড়যন্ত্র নেই।এক জায়গা একবারের বেশি তিন চারবার পড়ে ভাবতে হয়না না বুঝতে পারবার জন্য।যদি কেউ তিন চারবার পড়েও সেটা সম্পূর্ণভাবে নিজের ভাল লাগা থেকে পড়ে।সত্য এই কারণে যে পুরো বইটা পড়ে এক জায়গায়ও কোনরকম কোন খটকা লাগেনি যে গল্পটা বানানো, নাটকীয়তায় ভর্তি।বরং বইয়ের চরিত্রের মুখের সংলাপ থেকে শুরু করে তাদের ভাবনা চিন্তা এমনকি পারিপার্শ্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বর্ণনাও অনেক বাস্তবসম্মত।এই বইয়ের সবচেয়ে বড় পজেটিভ দিক হলো ভিতরের প্রত্যেকটা টুকরো টুকরো ঘটনা বর্ণনার সাথে পাঠকরা নিজেদের কোন না কোন দিক দিয়ে মিল খুঁজে পেতে সক্ষম।একটা বই উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় কল্পনাশক্তি।পাঠকের কল্পনা করার শক্তি যত বেশি ভাল হবে সে তত বেশি কোন বইকে আপন করে নিয়ে উপভোগ করতে পারবে। 'কিছু বিষাদ হোক পাখি'র ক্ষেত্রে বলতে পারি লেখিকার নিজের জাদুকরী ক্ষমতা আছে যা দিয়ে তিনি পাঠকের কল্পনাশক্তি উশকে দিতে পারার সামর্থ্য রাখেন।তার লেখার ভঙ্গী এতটাই সাবলীল যে কিছু কিছু সময় মনে হয়েছে আমার কল্পনা করবার শক্তি না থাকলেও চলতো। উপরে এত কথা বলবার পর সুন্দর কেন বলেছি তা আর বিশদভাবে বলবার প্রয়োজন দেখিনা।যদি কেউ আমাকে শুধু একটি কারণও দেখাতে বলে সুন্দর বলার পিছে আমি বলবো আটপৌরতা,সাধারণ থেকেও অসাধারণতা যা মুগ্ধ করে। ছোট একটা পরিবারের সাধারণ একটা গল্প,অনেকের মাঝে থেকেও একা হবার গল্প,দিন শেষে ভিন্ন ভিন্ন সত্ত্বার সকলের এক অনুভূতির মালিক হবার গল্প,মিল খুঁজে পাবার গল্প, বিষাদগুলোকে পাখি করে দেবার গল্প-শুধু ভাল লেগেছে বললেও সেটা মনে হয় কম বলা হবে। কনটেমপোরারি গল্প পড়ে পড়ে যারা বিরক্ত তাদের কাছেও ভাল লাগতে বাধ্য কেননা প্রধান চরিত্রের অনুভূতিগুলোর সাথে নিজের মিল খুঁজে পাওয়া যায় কোন কষ্ট না করে।পড়তে পড়তে একসময় নিজের কষ্টগুলোকেও পাখি করে উড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে,চকচকে কভারের মুগ্ধ করা নীল সাদা রঙে আটকে দিতে ইচ্ছা করে। পরে অবশ্য মনে হয় সব বিষাদ কি আর পাখি হয়?তবুও কোথাও না কোথাও কিছু আশা লুকানো থাকে। বইটা শেষ করে তাই মেঘদলের গানের লাইন গুলোই মাথায় ঘুরে - কিছু বিষাদ হোক পাখি নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে কাঁচপোকা সারি সারি নির্বাণ, নির্বাণ ডেকে যায় ।। কিছু ভুল রঙের ফুল ফুটে আছে আজ পথে কিছু মিথ্যে কথার রং আমাদের হৃদয়ে ।।
Was this review helpful to you?
or
"কিছু বিষাদ হোক পাখি" একটা উপন্যাস যেখানে ফুটে উঠেছে আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার মধ্যেকার একটি ঘটনার প্রতিচ্ছবি। বস্তুত আনন্দ বেদনা সুখ দুঃখের মিশেল আমাদের এই জীবন, লেখিকা সেটা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে ঘটনা গুলো আরেকটু জমাট বাঁধা যেত, আরো কিছু মোড় নিতে পারতো লিখায়। ৯ এর রেটিং এ আট দিলাম উপন্যাস টিকে।
Was this review helpful to you?
or
'একুয়া রেজিয়া'র 'কিছু বিষাদ হোক পাখি' উপন্যাস পড়বার পর 'আমার মনে হতে লাগলো 'সঞ্জনা' নামের মেয়েটিকে আমি চিনি। মোক্তার হয়তোবা আমাদের অনেকেরই প্রতিরূপ কিংবা আমার অনেকটাই এরকম হতে চাই। নির্মোহ! স্ট্রেইট! এই বইয়ের গল্পগুলো আমার চেনা পরিসরের- একুয়া রেজিয়া 'র প্রথম উপন্যাস "কিছু বিষাদ হোক পাখি"। প্রথম উপন্যাস হিসেবে একুয়া অনেকখানি সফল। পাঠককে মোহগ্রস্থ রাখবার টেকনিক তার জানা আছে এবং তিনি সেটা পেরেছেন শব্দবন্ধন অথবা বর্ণনা কৌশলে.. "কিছু বিষাদ হোক পাখি'র জন্য শুভকামনা।
Was this review helpful to you?
or
এ এক অদ্ভূত গল্প! মনের মধ্যে জমাট বাঁধা অনেক অনুভূতি হঠাৎ করেই যেন ঝেড়ে কাশলো। বইটি পড়া শেষ করেই মনে হলো সঞ্জনা কে ? সে কি আমার আপন কেউ নাকি সে কোন এক দূরের মানুষ। আমার শ্রেণীকক্ষের অনেকের সাথেও তো সঞ্জনা নামের চরিত্রটির অনেক মিল পাওয়া যায়। মনে হচ্ছিলো, আমার চোখের চারপাশে আরেকটু গভীর দৃষ্টি দিলেই তো দেখা মিলবে এমন শত, সহস্র, অজস্র সঞ্জনার। অভিনন্দন ও শুভকামনা রইলো।
Was this review helpful to you?
or
'কিছু বিষাদ হোক পাখি'। আজ এই বইটা পড়ার পর মনে হয়েছে,অনলাইন জগতে লেখা-লেখি শুরু না করলে মনে হয় না কখনো এমন অসাধারন বই টা আমার পড়া হতো।মনে হয়েছে,বাস্তব জীবনে চিন্তা-চেতনায় যতো রকমের পার্থক্যই থাকুক না কেন,লেখার জগতে লেখকদের মাঝে একটা বৈশিষ্ট্য থাকে,একটা ম্যাজিকাল পাওয়ার থাকে যা পারে লেখকের লেখার মাধ্যমে কিছু অনুভূতি গুলোকে হুবহু ফুঁটিয়ে তোলা,যা মুখে প্রকাশ করা সম্ভব নয় তা কলমের কালিতে প্রকাশ করা। এবং প্রকাশ ভঙ্গিমাটা লেখকের জন্য চিরায়ত এবং আর পাঠকের জন্য একদম মনের মতো। আমাদের লেখক-পাঠক সত্ত্বা গুলো সম্ভবত এক ধরনের অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা!বন্ধনটা হচ্ছে এমনই অদ্ভুদ,যে জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের মাঝে অমিল থাকলেও আমাদের লেখাগুলোতে আমাদের চিন্তার,আবেগের,অনুভূতি গুলোর এক রকম মিল থাকে,এই মিল বা বন্ধন থাকার কারণেই যখন আমরা একে অপরের লেখা পড়ি,অসম্ভব অবাক হয়ে ভাবি,এতো মিল করে হয় আমাদের অনুভূতি গুলোর মাঝে?! কোন একটা ঘটনাকে হয়তো আমিও চেয়েছিলাম এভাবেই লিখতে কিংবা কোন অনুভূতিকে হয়তো আমিও যেভাবে প্রকাশ করতে চাইতাম,ঠিক সেভাবেই হয়তো অন্য কেউ যখন লিখে তখন সত্যিই এক ধরনের টান অনুভব হয়,মনে হয়, মানুষটা না জানি কতো চেনা আমার না হলে কিভাবে পারল আমার মনের ভাবনাটাকে হুবহু ফুঁটিয়ে তুলতে?! চমৎকার এই বইটি পড়ে সত্যিই মনে হয়েছে,এমন করে বলতে শিখি, পৃথিবীর সব মানুষ গুলো ভালো থাকুক,সবুজ থাকুক। :)
Was this review helpful to you?
or
বইমেলায় নিয়মিতই বই কিনি । বই কিনতে,পড়তে,উপহার হিসেবে দিতে খুব ভালো লাগে ।এতদিন মেলায় গেলেই খালি খুঁজতাম হুমায়ুন আহমেদ স্যার বা জাফর ইকবাল স্যারের নতুন কোন বই এসেছে । সেগুলো চট করে কিনে ফেলতাম । আমাদের দূর্ভাগ্য হুমায়ুন আহমেদ স্যার আমাদের মাঝে আর নেই ।তার নতুন কোন বই পাব না ভাবতেই খারাপ লাগে ।যাইহোক,এইবার ঠিক করলাম নতুন লেখকদের কিছু পড়ব।খুঁজতে লাগলাম।আমি আবার খুব অস্থির মানুষ।এসব খুঁজাখুজি আমার দ্বারা হয়না ।বন্ধু অর্ফিয়াসকে বললাম একটা বই রেফার করার জন্য।ও আমাকে রেফার করল এই বইটি,"কিছু বিষাদ হোক পাখি"।অনেক আগ্রহ নিয়ে বইটি কিনলাম ।অন্যপ্রকাশ থেকে।হুমায়ুন আহমেদ স্যারের বই বের হত এই অন্যপ্রকাশ থেকে।যাইহোক,বইটা হাতে নিয়ে শুরুতেই দেখলাম প্রচ্ছদটা।সাদা আর নীলে মিলানো অনেক সুন্দর একটা প্রচ্ছদ।বাসায় এসে বইটা পড়া শুরু করলাম।সঞ্জনা নামের এক মেয়ের কাহিনী।ছোট থেকে বড় হওয়া,বাবার প্রতি,মনি নামের বড় বোনের প্রতি,মার প্রতি ভালোবাসা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিটি লাইনে।জীবনের ছোট ছোট বাস্তবতাগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।আসলে এইভাবে কী বলব!সাহিত্য হয়েছে কিনা তা গবেষণা করা আমার কাজ না। ঐ প্রমথ চৌধুরীর ভাস্যমতে আমি স্কুল মাস্টার হতে চাইনা ।তারা যেভাবে সাহিত্যের চুলচেরা বিশ্লষণ করেন তখন তা আর সাহিত্য থাকেনা। এখানে একটা জিনিস আছে বলার মত।যেটা আমি নিজেও খেয়াল করেছি ।বাবা মারা গেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়ার জন্য খুব তাড়াহুড়া চলতে থাকে । যেন মেয়েটা পরিবারের জন্য একটা উটকো ঝামেলা।অনেকে হয়ত পরিবারের চাপে আর বাবার শোকে বিয়েও করে ফেলে । তার সকল স্বপ্ন ,সকল আশা আকাঙ্খা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় বাবার মৃত্যুর সাথে সাথে।তখন বাবার মৃত্যুর শোকের থেকে বাবার ওপর অভিমানটাই বড় হয়ে উঠে। এখন সঞ্জনার ব্যাপারে কী বলব!এই গল্পটা তার ভাষাতেই লেখা।তার ছোট্ট জীবন যেন তার বাবা,মা,মনিপাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।তার বড় বোন মনিকে সে মনিপা বলত।সঞ্জনা তার বন্ধু মোক্তারের প্রতি না বলা অনুভূতিগুলো লুকোতে পারেনি তার কাছ থেকে।পরবর্তিতে কি হয়েছে জানিনা। কেউ না হয়েই সঞ্জনার জন্য অনেক কিছু ছিল আদিবা।এমন অনেক অনুভূতিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বইটিতে। অনেক ছোট কাহিনী।এক বসাতেই যেন পুরোটা বলে ফেলতে পারব।কিন্তু বলছি না ।কিনে পড়ে দেখবেন। এখন আমার মন্তব্য বলি আসলে অন্যদের জন্য ভালো বই কী আমি জানি না । আমার জন্য যেই বইটা আমার মনে অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে,কাঁদাতে পারে ,হাসাতে পারে সেইটাই ভালো বই ।এরকম বই আমি খুব কম পড়েছি ।শুভকামনা রইল মাহরীন ফেরদৌস (একুয়া রেজিয়া) আপুকে।
Was this review helpful to you?
or
সঞ্জনা জীবন খুব সাধারণ কিন্তু পরিবেশে কঠিন ভাব মুর্তিগুলো বেশি জটিল মনে হয় তার কাছে... বাবাকে হারানো ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা . মনিপার বিয়ের পর একজন ভালো বন্ধুর জায়গাটা খালি হয়ে যায় , এদিকে একাকীত্ত আর নাম মাত্র শুভাকাঙ্ক্ষীদের কানা ঘুষায় মাও ভুল বুঝতে শুরু করে; অপর দিকে নাদিয়ার শিকল পড়া সম্পর্ক আর মোক্তারে সোজা সাপটা কথা ফাঁকে হঠাৎ ভুল বোঝাবুঝির জম্ম জীবনকে বিষাদ গ্রস্থ করে তুলে …এ মাঝে আদিবা- মুন্নির অসময়ে এমন করে পৃথিবির ছেড়ে যাওয়াটাও মানতে কষ্ট হয় …কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম না মানা ছাড়া কোন পথ নেই … আর তাই আদিবা- মনির মৃত্যুটা সয়ে আসে; মনিপার দেওয়া সুসংবাদ মার ক্ষোভ, অভিমানের অপর মমতার জল ঢেলে দেয়; নাদিয়া পরাধীনতা মন্ত্র পরিত্যাগ করে নিজের হয়ে আকাশে ডানা মেলছে … শত হারানোর স্মৃতি আর হঠাৎ বেজে নীল কষ্টের বাদ্য এক সময় থেমে যায়, সেই থামা থেকে জেগে বেঁচে যাওয়া সুখ … নীল আকাশে কিছু বিষাদ পাখি হয়ে উড়ে যায় এবং মেঘ হয়ে ছেয়ে থাকে খন্ড খন্ড. হাসি … ভালো থেকো, সবুজ থেকো …
Was this review helpful to you?
or
এই অসাধারন বই নিয়ে গবেষণা করে কিছু বলার মত এত জ্ঞান-পাপী না আমি। পড়ে কেমন লাগলো সেটাই বলি _ ভালো লেখক/লেখিকা দের এই একটা মজা ...তাদের লিখা পড়তে অসাধারন লাগে। কিন্তু বই টা কে সরাসরি গতানুগতিক উপন্যাস এর কাতারে ফেলা যাবেনা। কিছু আলাদা আলাদা ছোট গল্পের সাথে একটু মূল ছোট গল্পের অসাধারন সমন্বয় করা হয়েছে বইটি তে । মূল কাহিনী টি খুব বেশি লম্বা ছিলো না । অনেক ভালো লাগবে, পাঠক দের উদ্যেশ্যে বলছি_ এখনো বই মেলা চলছে দৌড়াইয়া গিয়া নিয়ে আসেন ।
Was this review helpful to you?
or
একটানে পড়ে শেষ করলাম বইটা।জীবনধর্মী কাহিনী গুলো কি সবসময় বিষণ্ণ হতে হয়?? কিছু বিষাদ হোক পাখি বইটা এত বেশি মন খারাপ করানো কেন???পড়ার পর যে কারো অনুভূতি প্রভাবিত হতে বাধ্য।আমি পারসোনালি সেই লেখাকেই ভালো বলি যেটা আমাদের চারপাশের চরিত্রগুলোরই/ভাবনাগুলোরই প্রতিবিম্ব এবং আমাকে চরিত্র গুলোর লেভেলে/পরিস্থিতিতে নামিয়ে এনে চিন্তা করতে উৎসাহ যোগায়। বইটা শেষ করার পর অনেকটা সময় ধরে ঝিম মেরে ছিলাম, কেমন গুমোট একটা কষ্ট হচ্ছিল মুন্নি আর আদিবার জন্য, করুণা হচ্ছিল আদিবার মার জন্যও, ইচ্ছে করছিল সঞ্জনা আর বাকিদের বুঝিয়ে বলি প্রত্যেক্টা মানুষ একা এইটা যেমন সত্য তেমনি আমাদের এই জীবন আর পৃথিবীটা অনেক বেশি সুন্দর আর কালারফুল এইটা আরো বড় বেশি সত্য। এখানেই লেখিকার সার্থকতা অর্থাৎ পাঠককে এমনভাবে স্পর্শ করা যাতে তার মনে হয় ঘটনাটা তার সাম্নেই ঘটছে অথবা সে চাইলেই তা পরিবর্তন করতে পারে বা তীব্রভাবে চায় পরিবর্তন হোক। মোক্তার ক্যারেকটারটা খুবই ভাল লেগেছে,অদ্ভুতভাবে এর সাথে পরিচিত একজনের অনেক মিল পেলাম, এই টাইপের ক্যারেকটারকে নায়ক করে একদিন লেখিকা একটা উপন্যাস লেখবেন, এই আশা করি। বইটার কয়েক জায়গায় চোখ ভেজার উপক্রম হলেও সাম্লে নিয়েছি, কিন্তু শেষটায় ( সঞ্জনার স্বপ্ন) এসে পারলাম না......এগেইন ক্রেডিট গোজ টু লেখিকা।লেখালেখি চলতে থাকুক। আরো বড় পরিসরে, সব ক্যারেক্টারের যথেষ্ট বিস্তৃতি নিয়ে লেখা চাই। আর সাম্নের বার কিন্তু আর শুধু মন খারাপ করতে চাই না, মাঝে মাঝে একটু হাসতেও চাই। সবমিলিয়ে এককথায় “কিছু বিষাদ হোক পাখি আমাদের গল্প।আমি সবাইকে বলব বইটা কিনুন এবং পড়ে দেখুন, দেখবেন শেষ করার পর আপনি নিজেই অন্যকে বইটা সাজেস্ট করবেন। ভাল লেখাকে আমরা যদি উৎসাহ না দেই তাহলে কে দেবে? রিভিউটা শেষ করতে ইচ্ছে করছিল “সবাই ভাল থাকুক সবুজ থাকুক” এই লাইন দিয়ে। যেহেতু এরিমধ্যে অনেকে এটা বলে ফেলেছে আমি বরং তারচে বলি “কিছু বিষাদ হোক পাখি”, মানুষের সব বিষাদ,দুঃখ পাখি হয়ে উড়ে যাক।
Was this review helpful to you?
or
একুয়া রেজিয়ার প্রথম সম্পূর্ণ উপন্যাস "কিছু বিষাদ হোক পাখি"। কিছু বিষাদ হোক পাখি -আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের টানাপড়েন ও হাসি আনন্দ দিয়ে লেখা কিছু কথামালা। একুয়া রেজিয়ার অন্য সব গল্পের মতই এই উপন্যাসটিতেও তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে পেরেছেন। বইটি পড়ার সময় পরবর্তী কাহিনী জানার একটা ব্যাকুলতা কাজ করে, যেটা কাহিনীর শেষে এসে রূপান্তরিত হয় এক আকাশ বিষাদে। মনের মাঝে কেমন যেন করে বইটি পড়ার পর। কিছু কথা, কিছু কাহিনী যেন আমার জীবনকে নিয়েই লেখা। আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই আমি এই উপন্যাসের অলিতে গলিতে। লেখক হিসেবে একুয়া রেজিয়ার সার্থকতা তার পাঠকের মানসিকতায় এক গাড় বিষাদের ছায়া এঁকে দেয়াতে। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, এই বইটি যে কোন পাঠককে অনেকক্ষণ ভাবাবে, নাড়া দেবে গভীর ভাবে। "কিছু বিষাদ হোক পাখি" উপন্যাসের ও লেখক হিসেবে একুয়া রেজিয়ার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
Was this review helpful to you?
or
একটা সময় ছিল যখন লেখক আগে একটা মূল গল্প ভাবতেন , এরপর তার সাথে আনুষাঙ্গিক রসদ হিসেবে যুক্ত হতো বাদবাকি ঘটনাক্রম । গল্পটা তরতর করে এগিয়ে যেতো আর ঐসব ঘটনা গল্পটার এগিয়ে যাওয়াটাকে তরান্বিত করতো । এরপর সময় বদলেছে বেশ খানিকটা । এখন জীবনের পরতে পরতে গল্পের ঝাঁপি মেলা থাকে সর্বদা । লেখকের কাজ হল সেই সমস্ত গল্পের টুকরোগুলোকে একত্রিত করা কিংবা একই সুতায় বাঁধা । ঠিক এই কাজটায় করেছেন লেখিকা তার উক্ত উপন্যাসটিতে । সঞ্জনা (রঞ্জনা) নামের চরিত্রের ভিতরে মস্ত একটা শ্বাস নিয়ে ডুব দিলে খুঁজে পাওয়া যায় বাকি চরিত্রগুলোর গল্পমালা । লেখিকা পাঠকের মনঃসংযোগ সম্পর্কে পুরো উপন্যাসেই ছিলেন যথেস্ট সচেতন । মূলতঃ যেহেতু পুরো উপন্যাসটিই এক চরিত্রের দুঃখবিলাস , সেহেতু কয়েক পৃষ্ঠা পর পর পাঠকের একটুখানি নিঃশ্বাসের বড্ড দরকার ছিল । লেখিকা সেটা দিয়েছেনও । উপন্যাস কিংবা দীর্ঘ গল্পে লেখকেরা সাধারণত এমন কিছু চরিত্র সৃষ্টি করেন , যাদের বর্ণনা পুরো লেখায় খুব বেশি থাকে না । কিন্তু পাঠক এদেরকেই খুঁজে বেড়ায় । দ্রুত পাতার পর পাতা পড়তে থাকে , যদি সামনে এসব চরিত্র সংশ্লিষ্ট আরো কিছুর দেখা মেলে ! উপন্যাসের "মোক্তার" চরিত্রটিও সেরকম । খানিকটা ছায়া-ছায়া , যেটা অত্যন্ত চিত্তাকরষী । মানুষ যে জগতের সবচেয়ে রহস্যময় প্রানী এবং দিনশেষে প্রতিটা মানুষই যে একা এবং অচেনা -- সেটাই এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য । সেই ধারাক্রমের বর্ণনাই উঠে এসেছে রঞ্জনার জীবনের বাঁকে বাঁকে । যেখানে তার মা ছিলেন , বাবা ছিলেন , মনিপা ছিলেন , পিচ্চি আদিবা ছিল , মোক্তার ছিল , বান্ধবী নাদিয়া ছিল । কিন্তু সবাই ক্ষণিকের জন্য । অস্তমিত সূর্যের তলায় রঞ্জনা বড্ড একা । হয়তো বাকি চরিত্রগুলোর মতোই একা ।। শুভকামনা রইলা লেখিকার জন্য । অপেক্ষায় রইলাম তার পরের উপন্যাসের ।।
Was this review helpful to you?
or
"কিছু বিষাদ হোক পাখি" একটা উপন্যাস যেখানে ফুটে উঠেছে আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার মধ্যেকার একটি ঘটনার প্রতিচ্ছবি। বস্তুত আনন্দ বেদনা সুখ দুঃখের মিশেল আমাদের এই জীবন, লেখিকা সেটা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।এক জায়গা একবারের বেশি তিন চারবার পড়ে ভাবতে হয়না না বুঝতে পারবার জন্য।যদি কেউ তিন চারবার পড়েও সেটা সম্পূর্ণভাবে নিজের ভাল লাগা থেকে পড়ে।সত্য এই কারণে যে পুরো বইটা পড়ে এক জায়গায়ও কোনরকম কোন খটকা লাগেনি যে গল্পটা বানানো, নাটকীয়তায় ভর্তি।বরং বইয়ের চরিত্রের মুখের সংলাপ থেকে শুরু করে তাদের ভাবনা চিন্তা এমনকি পারিপার্শ্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বর্ণনাও অনেক বাস্তবসম্মত।এই বইয়ের সবচেয়ে বড় পজেটিভ দিক হলো ভিতরের প্রত্যেকটা টুকরো টুকরো ঘটনা বর্ণনার সাথে পাঠকরা নিজেদের কোন না কোন দিক দিয়ে মিল খুঁজে পেতে সক্ষম।একটা বই উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় কল্পনাশক্তি।পাঠকের কল্পনা করার শক্তি যত বেশি ভাল হবে সে তত বেশি কোন বইকে আপন করে নিয়ে উপভোগ করতে পারবে। 'কিছু বিষাদ হোক পাখি'র ক্ষেত্রে বলতে পারি লেখিকার নিজের জাদুকরী ক্ষমতা আছে যা দিয়ে তিনি পাঠকের কল্পনাশক্তি উশকে দিতে পারার সামর্থ্য রাখেন।তার লেখার ভঙ্গী এতটাই সাবলীল যে কিছু কিছু সময় মনে হয়েছে আমার কল্পনা করবার শক্তি না থাকলেও চলতো। সঞ্জনা জীবন খুব সাধারণ কিন্তু পরিবেশে কঠিন ভাব মুর্তিগুলো বেশি জটিল মনে হয় তার কাছে... বাবাকে হারানো ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা . মনিপার বিয়ের পর একজন ভালো বন্ধুর জায়গাটা খালি হয়ে যায় , এদিকে একাকীত্ত আর নাম মাত্র শুভাকাঙ্ক্ষীদের কানা ঘুষায় মাও ভুল বুঝতে শুরু করে; অপর দিকে নাদিয়ার শিকল পড়া সম্পর্ক আর মোক্তারে সোজা সাপটা কথা ফাঁকে হঠাৎ ভুল বোঝাবুঝির জম্ম জীবনকে বিষাদ গ্রস্থ করে তুলে …এ মাঝে আদিবা- মুন্নির অসময়ে এমন করে পৃথিবির ছেড়ে যাওয়াটাও মানতে কষ্ট হয় …কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম না মানা ছাড়া কোন পথ নেই … আর তাই আদিবা- মনির মৃত্যুটা সয়ে আসে; মনিপার দেওয়া সুসংবাদ মার ক্ষোভ, অভিমানের অপর মমতার জল ঢেলে দেয়; নাদিয়া পরাধীনতা মন্ত্র পরিত্যাগ করে নিজের হয়ে আকাশে ডানা মেলছে … শত হারানোর স্মৃতি আর হঠাৎ বেজে নীল কষ্টের বাদ্য এক সময় থেমে যায়, সেই থামা থেকে জেগে বেঁচে যাওয়া সুখ … নীল আকাশে কিছু বিষাদ পাখি হয়ে উড়ে যায় এবং মেঘ হয়ে ছেয়ে থাকে খন্ড খন্ড. হাসি … ভালো থেকো, সবুজ থেকো …