User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
love
Was this review helpful to you?
or
Was this review helpful to you?
or
কাহিনী সংক্ষেপঃ দশটি ছোটগল্পের সমারোহে সাজানো হয়েছে কিঙ্কর আহসানের ‘কাঠের শরীর’ বইটি। জীবনধর্মী এসব গল্পে স্থান পেয়েছে পৃথিবীর জাগতিক নিয়ম ও মানুষের হাসি-কান্নার অনভুতি। যেমন- 'জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া’ গল্পে দেখানো হয়েছে সময়ের এক অভিন্ন বিন্দুতে সৃষ্টি ও ধ্বংসের পাশাপাশি অবস্থান, হর্ষ ও বিষাদের ঘনঘটায় সূচনা ও পরিসমাপ্তির সুষম বিচরণ। ‘তপোভঙ্গ’ গল্পে দেখা যায় সন্তানতুল্য রাজার প্রতি তার একনিষ্ঠ ভৃত্যের আনুগত্য, সেই সাথে দেখা যায় সন্তানের অমঙ্গল আশঙ্কায় বিচলিত এক পিতার মনোজগতের প্রতিচ্ছবি। এক বুড়ো বকের ঋণ পরিশোধের পটভূমিতে লেখা হয়েছে বইটির তৃতীয় গল্প ‘অবতরণিকা’। ‘কাঁচা ধানের কবর’ গল্পে দেখা যায় সংসারের মায়ায় সাথে এক পুরুষের বিবাগী হওয়ার স্বপ্নের যুদ্ধ। যে গল্পের নামানুসারে বইটির নামকরণ, সেটা হল ‘কাঠের শরীর’। এখানে দেখা মিলে এক পাকা ডুবুরির, যে রাতভর নদী হেকে লুকিয়ে রাখা সুন্দরী কাঠ তোলে জীবিকা নির্বাহ করে, আর স্বপ্ন দেখে টাকা জমিয়ে বিয়ে করার। কিন্তু তার এই স্বপ্নে সায় নেই তার অতীতের কোন প্রিয়জনের, তাইতো বারবার বাধ সাধতে আসে তার ঘর বাধার কল্পনায়। চা বাগানের নির্যাতিত দুঃখী মানুষের উপর হওয়া একের পর এক অন্যায়ের প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত ক্ষেপে উঠে বাগানের নিরীহ চা-গাছগুলো। এরকমটাই দেখা যায় ‘চা;ঘুম’ নামক গল্পে। বাগানবিলাস গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র এক প্রতিবন্ধী কিশোর, তাকে ঘিরেই এগিয়ে গেছে এই গল্পের কাহিনী। প্রতিশোধস্পৃহা আর মমতার আস্তরন দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘পাতকী’ নামক গল্পটি। অন্যের দুর্বলতাকে পুঁজি করে ভবিষ্যতের জন্য মানুষের নিষ্ঠুর বিনিয়োগের চিত্র স্থান পেয়েছে ‘মোহর’ নামক গল্পে। ‘ছায়ালোকের মায়া’ - এই বইয়ের সর্বশেষ গল্প। সময় কিভাবে প্রতিটি মানুষকে একই স্থানে এনে দাড় করায় সেটাই এই গল্পের মূল উপজীব্য। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ এর আগে কিঙ্কর আহসানের কোন বই পড়া হয়নি, এটা পড়ে ভাবছি বাকিগুলোও পড়ে ফেলব। ভাল লেগেছে বেশিরভাগ গল্পই, বিশেষ করে 'জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া’, ‘তপোভঙ্গ’ ও ‘পাতকী’। তবে সেগুলোকে আরেকটু বড় করে লিখলে আরো ভাল লাগত। ‘কাঁচা ধানের কবর’ গল্পটিকে বাকিগুলোর তুলনায় নিষ্প্রভ মনে হয়েছে। আর শেষের গল্প ‘ছায়ালোকের মায়া’র মূলভাব ভাল লেগেছে, তবে পিতামাতার প্রতি সন্তানের এতটা নিষ্টুরতা বাস্তবস্মমত মনে হয়নি। অভারওল ভাল লেগেছে বইটি।
Was this review helpful to you?
or
কাঠের শরীর : যাপিত জীবনের বহুমাত্রিক স্বাদ গল্পের সঙ্গে জীবনের কী অদ্ভুত সাযুজ্য! জীবন থেকেই গল্প হয়। যে জীবন আমরা যাপন করি তা-ই হয়তো কোনো গল্পের অনুসঙ্গ। অথচ চোখ মেলে দেখা হয় না, কিংবা দেখতে চাই না চমকে ওঠার ভয়ে। যদি নিজেকেই খুঁজে পাই অসুন্দরের মাঝে! কিঙ্কর আহসানের ‘কাঠের শরীর’ বইটি পড়তে গিয়ে বেশ কয়েকবার তেমন অনুভূতি হয়েছে। আমার চোখ দিয়েই যেন দেখছি অন্য আমিকে! দশটি গল্প পড়ার সময় ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি হয়েছে। একেক গল্পের প্লট আঁটতে সাহিত্যের চেনা পথটাকেই নতুন করে চিনিয়েছেন লেখক। গল্পের চরিত্রগুলো কখনো নিয়তির ক্রীড়ানক হয়ে হাপিত্যেশ করেছে, কখনোবা নিজেই তৈরি করেছে অবিশ্বাস্য গল্প। ‘জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া’ গল্পে লেখক লঞ্চের ভেতরের এক ঘটনায় বর্তমান আর ভবিষ্যতকে এনে দাঁড় করিয়েছেন অভিন্ন পরিণতিতে। যেখানে স্বার্থের দ্বন্দ্ব আছে, চিন্তার বিভেদ আছে। তারপরও নিয়তিকে অস্বীকার করার সাধ্য কারো নেই- এটাই যেন নতুন করে দেখালেন লেখক। ‘ছায়ালোকের মায়া’ পড়তে গিয়ে ঘৃণা আর ভালোবাসার যুগপৎ উপস্থিতি টের পেয়েছি হৃদয়ের গহীনে। জীবনের অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা লেখকের ভাবনার প্রসারতায় ও বর্ণনার গুনে হাহাকারজাগানিয়া হয়ে উঠেছে। ‘তপোভঙ্গ’ গল্পটাতে লেখক ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন প্রাচীন পটভূমিতে। এক রাজাকে আবিষ্কার করতে গিয়ে বরং হারিয়ে ফেলেছেন ক্রোধের আগুনে। নিয়ত একই কাজ করে চলা সামান্য মানুষটিও নিজের রক্তের অপমান সইতে পারে না। এ যেন কালের কথা মহাকালের সুরে! ‘উপাসনা’ গল্পে বিশ্বাসের সঙ্গে বাস্তবতার দূরত্ব প্রতিভাত হয়ে উঠেছে অনন্য চিত্রকল্পের মাধ্যমে। লেখকের মুন্সীয়ানার দেখা মেলে ‘কাঁচা ধানের কবর’ গল্পটিতেও । নামের মতোই নীরবে সয়ে যাওয়া যন্ত্রণার খেরোখাতা সাজিয়েছেন লেখক। প্রতিটি গল্প পড়ার আগে অবচেতন মন এক ধরনের প্রি-কনসেপশন বা প্রাক-ভাবনা তৈরি করে রাখে। গল্পের কাহিনির সঙ্গে মিলে গেলে পাঠক অনেক সময় আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। ‘চা;ঘুম’ গল্পটি আমার মনে তৈরি হওয়া প্রাক-কল্পনাকে অযাচিত প্রমাণ করেছে। নাম যতটা হালকা মনে হয়, গল্পের প্লট ঠিক ততটাই মজবুত। ‘বাগান বিলাস’ ‘পাতকী’ ও ‘মোহর’ গল্পগুলো আমার কাছ থেকে বেশি সময় দাবি করেছে। আমিও তাতে সাড়া দিয়ে ধীরে ধীরে গল্পের রস নিংড়ে নিয়েছি। মুগ্ধতার শেষে ‘কাঠের শরীর’ আরেকবার বাস্তবতার নির্দয় পিঠটা মেলে দেয়। কী এক আফসোস মনের ভেতর ঘুরপাক খেতে থাকে। তা হয়তো জহরের জন্য কিংবা মোমেনার জন্য! আমার গল্প পড়ার অভিজ্ঞতায় কিঙ্কর আহসানের ‘কাঠের শরীর’ সমৃদ্ধ সংযোজন। নিঃসন্দেহে লেখকের গল্প বলার চেষ্টা পুরো মাত্রায় সফল হয়েছে। বইটির প্রকাশক- জাগৃতি প্রকাশনী। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪ তে প্রকাশিত ৮০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য একশত পঞ্চাশ টাকা।
Was this review helpful to you?
or
কাঠের শরীর বইটি মোট দশটি ছোট গল্প নিয়ে রচিত। প্রতিটি গল্পেই জীবনের অদ্ভুত রঙ দেখিয়েছেন লেখক। বেশ ভাল লেগেছে গল্পগুলো। আমি যেভাবে গল্পগুলোকে দেখেছি সেভাবেই আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়াঃ জীবন ও মৃত্যু একই সরলরেখায় চলে। সেজন্যই বোধহয় লেখক জীবনের চিত্রনাট্য লিখতে গিয়ে মৃত্যুকেও নিয়ে এসেছেন। সম্পূর্ণ আলাদা দুটি কাহিনী ঘটে চলেছে লঞ্চের দুটি কেবিনে। একের সাথে অন্যের কোনোপ্রকারের মিল নেই। অথচ দুটি কাহিনীই অদ্ভুত কোনোভাবে হয়ত একে অন্যের সাথে সম্পর্কিত। লেখক দুটি জোনাক পোকার দৃষ্টিতে দুটি কাহিনীকে সমান্তরালে নিয়ে গেছেন। লেখকের দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে হঠাৎ জোনাক পোকার দৃষ্টিতে গল্পটাকে দেখতে গিয়ে আমার কাছে একটু ছন্দপতন ঠেকেছে। ছায়ালোকে মায়াঃ আমাদের আশেপাশেই লুকিয়ে থাকা কাহিনী। সত্য কাহিনী। মানুষ যখন নিজেকে গুটিয়ে ফেলা শুরু করে তখন সে স্বার্থপর হয়ে ওঠে। মা-বাবা-ভাই-বোনের সংসার থেকে একে একে ভাইবোন আলাদা হয়ে যায়। তারপর স্ত্রী নিয়ে আলাদা সংসার। সন্তান হওয়ার পর সে সংসারে মা-বাবার স্থান হয়না। স্ত্রী-পুত্র-কন্যা নিয়ে ছোট সংসার - নিজের সংসার। আমরা ভুলে যাই, আমাদের বানানো এই ছোট্ট নিজের সংসারে একসময় আমাদেরও স্থান হবেনা। আমাদের বানানো নিয়মে আমরাও ঘুরতে থাকব নিরন্তর। অতি পরিচিত গল্পকে ভিন্ন ধাঁচে উপস্থাপন করেছেন লেখক। সত্যিই চমৎকার লেখনী। তপোভঙ্গঃ এ কাহিনী এক রাজার কাহিনী। পঞ্চান্ন বছর বয়সী রাজার কাহিনী। চমৎকার চরিত্রের অধিকারী এক রাজার কাহিনী। যে গানের প্রতি অসম্ভব দূর্বল। একইসাথে যে নারীর প্রতি তদুপেক্ষা অধিক দূর্বল! যার প্রতিটি দিন শুরু হয় খাঁটি মধু খেয়ে গান করতে করতে। আর প্রতিটি রাত শেষ হয় নারীর প্রেমমধু খেতে খেতে। অম্লরোগী রাজামশাইয়ের এত মধু সহ্য হবে কিনা তা নিয়েই এ কাহিনী! উপাসনাঃ এ গল্পেও লেখক প্রথম গল্পের মত অন্যের ভিতর দিয়ে কথা বলেছেন। এ গল্পে লেখক এক বকের দৃষ্টিতে কাহিনীর ছবি এঁকেছেন। মাত্র দু-পৃষ্ঠার (এপিট-ওপিট) এই অতি সংক্ষিপ্ত গল্পটা পড়ার সাথে সাথেই পাঠক অন্য গল্পে যেতে পারবেন না। এমনই ভাবুক করে দেবে আপনাকে যে আপনাকে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকতেই হবে। কাঁচা ধানের কবরঃ এ গল্প এক বাউলমনা সংসার বিবাগীর। নাম আলম। বাউলমনা হলেও সুর আর কন্ঠ জুতসই না হওয়ায় বাউলদলে নাম লেখাতে পারেনি। ফলে অনিচ্ছায় পাততে হয় সংসার। কিন্তু কি হয় শেষে? জানিনা। আমি দ্বিধান্বিত! চা;ঘুমঃ হৃদয়বিদারক কাহিনী। কিছু বলার নেই। অসাধারণ কাহিনী। পরিচিত গল্পকেও অপরিচিত ভঙ্গিতে প্রকাশ করার মাধ্যমে লেখক নিজের নৈপুণ্য বেশ ভালভাবেই দেখিয়েছেন। গল্পের নামকরণ সত্যিই সার্থক। কাহিনী সম্পর্কে কিছুই বলব না। পাঠক এই কাহিনী না পড়লে যাবতীয় দায়ভার নিজের। বাগানবিলাসঃ এই বইয়ের সবথেকে ছোটগল্প। গল্পটি আবর্তিত হয়েছে লেখক, মাহবুবা ও মাহবুবার ভাইকে নিয়ে। গল্পটা আমার কাছে তেমন ভাল লাগেনি। আগের গল্পগুলোর তুলনায় বেশ কম মানের মনে হয়েছে। পাতকীঃ পাতকী? কে পাতকী? কেন পাতকী? গল্পটি পড়ে এমন সব ভাবনাতেই জড়িয়ে যাবেন পাঠকগণ। ঠাওর করে উঠতে পারবেন না কে আসলে পাতকী! নারীর কাছে স্বামী বেশি প্রিয় না সন্তান সে প্রশ্নের উত্তর পাঠকগণ পেলেও পেতে পারেন। গল্পটা পড়ার অনুরোধ রইল। আলাদা করে গল্প সম্পর্কে বলতে চাইনা। পাঠক আগে থেকে কোনকিছু না জেনেই গল্পটি পড়ুক এই আশা। মোহরঃ এ গল্পে লেখকের গভীর ভাববোধের প্রকাশ ঘটেছে। গল্পটা একধরণের অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি করে মনের ভিতরে। সে অনুভূতি ঠিক বোঝা যায়না। ভালোলাগা মন্দলাগার মাঝখানে কোনো অনুভূতি। পাষণ্ড হৃদয়ে ভালবাসা জাগানোর অদ্ভুত গল্প মোহর। মোহরের লোভে কঠিন পাপ করা নিতিন পালের গল্প মোহর। অথচ লেখকের অদ্ভুত দুটো কথায় গলে গিয়ে নিতিনের মত এত বড় পাপীকেও ক্ষমা করতে ইচ্ছে করে। কেন? লেখকই জানেন এ প্রশ্নের উত্তর। কাঠের শরীরঃ বইয়ের একদম শেষের গল্প। অল্পকথায় অনেক ঘটনা তুলে ধরেছেন লেখক। বেশ ভাল লেগেছে গল্পটি। কাঠের শরীর নামকরণের মধ্যেও সার্থকতা আছে। কাঠের শরীরের সাথে জীবন্ত মানুষের লীন হয়ে যাওয়ার কাহিনী। কি আজগুবি কথা! এ আবার কিভাবে হয়? কেন হয়? - জানতে হলে পড়ে দেখুন। গল্পটি এতই ভাল যে কিছু বলে আগ্রহ নষ্ট করব না। কিছু পাঠক গল্প খানিকটা বুঝতে পারলেই আর পড়েন না - আমি জানি।
Was this review helpful to you?
or
প্রথম গল্পই ভালো লেগে গেল। সৃষ্টি আর মৃত্যু মাঝে এক দেয়ালের পার্থক্য। কারো সাথে কারো মিলে না। আমি আর -তুমি না থাকলে কি?? কারো কিছু আসে যায় না। বৃষ্টি চলতেই থাকে। -২য় গল্পটা সাধারন। সহজেই প্রেডিক্টেড। -বক মাছি পাখি মাঝে মাঝেই অচতনে ধরা দেয়। হয়তোবা জন্মজন্মান্তরের ঋন শোধ করতে। -কাঠের মানুষ গল্পটা বলার মত। এক মুহুর্তের চিন্তাতেই কত কিছু। হাস্নাহেনার ঘ্রাণ- হুম, আজকাল লাক্স সাবান আর গন্ধের জোরে চলেনা। মজার ব্যাপার হল যখন আপনার সেই একজনের পারফিউমের সাথে অপরিচিত কারো পারফিউম মিলে যায়। চোখ মানেনা, বুদ্ধি বলেনা। কিন্তু নাক বলে নাকের সংবেদন বলে এই ত সেই!! মরবার ইচ্ছা কার না জাগে বলুন। আবার বিষয়াবৃত্তির পুনরাবৃত্তি। ছোটগল্পের বিষয় এই অনলাইন অফলাইনের যুগে পেতে কষ্ট আছে। -বাগান বিলাস গল্প কষ্টের হলেও হৃদয়ে প্রবেশ করেনি। -মোহর গল্পটা অপূর্ব। রাতের আধারটা অনেক সুন্দর। -শেষ গল্পটা আমার সামনে প্রতিদিনই হয়। ছেড়ে চলে যায় রোগীর লোকজন সব। বাবা আমার চোখ মুছে দেও, মা আমার চোখ মুছে দেও। কেউ নেই কেউ নেই। খুব সুন্দর কিছু লাইন। লেখক ছোট গল্পের লেখক হিসেবে হয়তো নতুন। ফেসবুক বা পেপারের ছোটগল্প আর ছোটগল্পের বইয়ের গল্প কী এক? লেখকের মনে কেউ কী এই সংজ্ঞা দিয়েছে যে ছোট গল্প মানেই তাহাতে কষ্ট থাকতে হবে, হৈমন্তী, ছুটি, বিলাসী ই কি সব? এ মরবে, ও পড়বে তা ছাড়া কি ছোটগল্প হয় না?
Was this review helpful to you?
or
লেখকের লেখা বইগুলোর মধ্যে আমার পড়া চতুর্থ বই হলো 'কাঠের শরীর'। 'জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া' দিয়ে 'ছায়ালোকের মায়া'য় পড়ে 'উপাসনা'র 'তপোভঙ্গ' করে 'কাঁচা ধানের কবর' দিয়ে 'বাগানবিলাস'এ 'চা;ঘুম' এ আচ্ছন্ন হয়ে 'পাতকী' আর 'মোহর' এর স্বপ্নে আমার শরীর 'কাঠের শরীর' হয়ে গেল। এই বাক্যে লুকিয়ে থাকা দশটি গল্প দিয়েই 'কাঠের শরীর' গল্পগ্রন্থ। বইয়ের প্রচ্ছদে লেখক পিয়াস মজিদের বইটিকে নিয়ে করা অসাধারণ সুন্দর মন্তব্যটি পড়ার পর বইয়ের ভেতরে প্রবেশ করার জন্য উতলা হয়ে গিয়েছিলাম।দুই পেজ উল্টাতে না উল্টাতেই লেখকের কিঙ্কর আহসানের জাদুর কলমে লেখা দুটি লাইন দেখে থেমে যেতে হলো।রীতিমতো বাধ্য হয়ে।" বিধাতা গিয়ে বল,কচুপাতার বুক ছুঁয়েছে আজ কিশোরীর আঁখিজল"।এতসুন্দর কথা পড়ে বই পড়া শুরুর আগেই প্রচ্ছদের প্রতি ভালবাসা জন্ম নিল।একে একে পড়া হল দশটি গল্প,বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের জীবনের টুকরো টুকরো কিছু অংশ কেটে নিয়ে লেখক তাঁর গল্পগ্রন্থের ঝুলিতে বাস্তবতা ভরেছেন।যে কেউ বইটি পড়লে নিজেকে,কাছের মানুষকে অথবা আশেপাশের জীবনকে খুঁজে পাবেন।কয়েকটি লাইন উল্লেখ করি: "মেয়েরা ছেলেদের অতি আবেগ পছন্দ করে না","কেবিনে লাশ নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই","বেঁচে থাকার জন্যই মাঝে মাঝে পাগলামিটা দরকার।খুব করে দরকার","বিয়ে পরিবারের একটি অন্যতম সেরা বিনিয়োগ,এক্ষেত্রে লোকসান করে বোকারা"- এসকল কথার মাঝে যে কতটা দুঃখ,কতটা সৌন্দর্য আর কতটা ভালবাসা লুকিয়ে আছে তা আপনি বইটি না পড়লে বুঝবেন না। এ সকল কথার অন্তর্নিহিত কয়েকটা পৃষ্ঠাই আপনাকে জীবনের অনেক কিছু শিখিয়ে দেবে। লেখকের লেখা বইয়ের ক্ষেত্রে বরাবরের মতন এবারও চতুর্থ পড়া বইটি আমার ভালবাসায় সিক্ত হয়ে গেল,যদিও এই সিক্ততায় বইয়ের পৃষ্ঠা ভিজতে দিব না আমি,লেখকের প্রতি ভালবাসাটা বাড়িয়ে দিলাম।লেখক ভিজুক ভালবাসায়,ভিজে ঠান্ডা লাগুক***।'কাঠের শরীর' টিকে থাক হাজার বছর। ***বিঃদ্রঃ শীতের ঠান্ডা ভালো,নাক পরিষ্কার হয়।
Was this review helpful to you?
or
ইদানীং গল্পের বই খুব পড়ছি। এপার বাংলা- ওপার বাংলা মিলিয়ে বেশ অনেকগুলো গল্পসমগ্র পড়লাম এই কয়দিনে। ভিন্নস্বাদের গল্পগুলো ভালোও লাগছে। তো, এই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি পড়লাম "কাঠের শরীর", লেখক কিঙ্কর আহসান। ওনার লেখা বইয়ের মধ্যে রঙিলা কিতাব পড়েছিলাম আগেই। এ বইটা পড়া ছিলোনা। পড়েছি, পড়ে তৃপ্তি পেয়েছি। "কাঠের শরীর" মূলত একটি গল্পগ্রন্থ। দশটি গল্প নিয়ে এই বইটির কাঠামো নির্মিত হয়েছে। গল্পগুলোঃ ১/ জীবন, চিত্রনাট্য ও খসড়া ২/ তপোভঙ্গ ৩/ উপাসনা ৪/ কাঁচা ধানের কবর ৫/ কাঠের শরীর ৬/ চাঃঘুম ৭/ বাগান-বিলাস ৮/ পাতকী ৯/ মোহর ১০/ ছায়ালোকে মায়া গল্পগুলো পড়ে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে, সেটা হলো প্রতিটি গল্পই ভিন্ন স্বাদের, ভিন্ন ঘরানার। কিছুদিন আগে "মেমসাহেব" খ্যাত নিমাই ভট্টাচার্যের গল্পসমগ্র পড়লাম। তাঁর গল্পসমগ্র পড়ে আমি যারপরনাই ত্যক্তবিরক্ত। সব গল্পেরই সাধারণ প্যাটার্ন, প্রেম। অনেকটা ঐ কৌতুকের মত যেখানে ছোট বাচ্চাটা সবকিছুর মধ্যেই কুমীর ঢুকিয়ে দিতো। "কাঠের শরীর" এ আপনি প্রতিটি গল্পের মধ্যেই পাবেন স্বকীয়তার ছাপ, নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে যদি আমি বলি, তাহলে, "কাঠের শরীর" বইটিকে তুলনা করবো খুব ভালোভাবে রান্না করা বিরিয়ানির সাথে। যে বিরিয়ানিতে গল্পগুলো একেকটা উপাদান, অনেকটা বিরিয়ানিতে মিশে থাকা মাংস, মশলা, জায়ফল, জয়ত্রীর মত। এবং এ কথা বলা বাহুল্য, উপাদানগুলোর সংমিশ্রণ এতটাই খুঁতবিহীন ছিলো অনেক চেষ্টা করেও গল্পগুলোকে আমি নির্দিষ্ট কোনো প্রকারে ফেলতে পারিনি। একেকটা গল্প একেক জীবনবোধের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছিলো, একেক প্রেক্ষাপটে আলোকপাত করছিলো। তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছি বিষয়টা। গল্পগুলোর দিকে লক্ষ্য দিই একটু। প্রথম গল্পের নামঃ জীবন, চিত্রনাট্য ও খসড়া। এ গল্পের পটভূমি এক লঞ্চ। সে লঞ্চের পাশাপাশি দুই কেবিনের ভেতরের মানুষগুলোর গল্পই "জীবন, চিত্রনাট্য ও খসড়া।" দুই কেবিনে দুই প্রকারের মানুষ, দুই ধরণের পরিবেশ। প্রথম কেবিনে সুজন আর তার বউ, যাচ্ছে বাড়িতে। রাত বাড়লে তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গতা বাড়ে। হয়তো এই অন্তরঙ্গতা থেকেই নতুন কোনো প্রাণের জন্ম হবে। নতুন কোনো গল্প তৈরি হবে। দ্বিতীয় কেবিনে আমেনার পরিবার। আমেনার বৃদ্ধ বাবা মারা গেছেন লঞ্চের কেবিনের ধাতব প্রকোষ্ঠে, রাতে। মৃত ব্যক্তিতে নিয়ে পরিবারের সবাই ব্যাপক পেরেশান। লঞ্চের কেবিনে মরা লাশ রাখা যায় না। রাখতে হয় লঞ্চের ছাদে। এ কারণেই সবাই তটস্থ। বাইরে প্রচণ্ড দুর্যোগ। এ দুর্যোগে লাশ নিয়ে লঞ্চের ছাদে রাত কাটানোর ইচ্ছে কারো নেই। এই গল্পে মূলত জীবন-মৃত্যু'র পাশাপাশি সহাবস্থান, বিশেষ করে, মানবজনমের অনিশ্চয়তার বিষয়টি যেন প্রকট হয়ে ফুটে উঠেছে। দ্বিতীয় গল্প তপোভঙ্গ। শুরুটা পড়ে কিছুটা প্রাগৈতিহাসিক শ্রেণির রূপকথার গল্প বলে মনে হলেও এ গল্প বর্তমানের জন্যেও প্রাসঙ্গিক। এ গল্প রাজা শশীকান্তের( যিনি বৃহত্তর নালপাহাড়িয়ার অর্ধেকের মালিক), তার ভৃত্য গোপালের এবং গোপালের মেয়ে রানুর। রাজার বহু অনাচারের একটি হচ্ছে, কিশোরী মেয়েদের সাথে কাঠের নাচঘরে সহবাস। এভাবেই নানা অনাচারে, আচারে রাজার দিন কাটছিলো। এভাবে চলতে চলতে একদিন রাজার চোখ পড়ে গোপালের মেয়ে রানুর দিকে। রাজা শশীকান্ত সন্ধ্যায় রানুকে আসতে বলেন কাঠের নাচঘরে। কী হবে তারপর? এ গল্প প্রতিশোধের, বোধের। তৃতীয় গল্প উপাসনা। কুমারখালী নদীর পাশের গ্রাম চন্দ্রপহর। সে গ্রামের এক সেলুনের নাম "টিপটপ কাটিং।" দোকানের দশা বেহাল। দুটো ঝাপসা আয়না, নড়বড়ে দুখানা চেয়ার আর দেয়ালজুড়ে বাংলা সিনেমার নায়িকাদের খোলামেলা ছবি... এ নিয়েই দোকানের গড়ন। দোকানের কর্মচারী দুইজন। নিতাই আর ধানী। নিতাই দোকানের মালিক, ধানী বৃদ্ধ কর্মচারী। এ গল্পের সাথে যুক্ত হয় একটি বৃদ্ধ বক। কীভাবে? সে নিয়েই গল্প। আত্মোৎসর্গের গল্প, কৃতজ্ঞতাবোধের গল্প, ঋণশোধের গল্প। চতুর্থ গল্প কাঁচা ধানের কবর। এ গল্প আলমের, যার জনতার হাটে টিনের দোকান আছে। যে যৌবনে বাউল হতে চেয়েছিলো, যে চেয়েছিলো বৈচিত্র্যময় অনিশ্চয়তার জীবন। অথচ, সে হয়ে গেছে কঠিন সংসারী। ম্যাড়মেড়ে নিশ্চয়তার যূপকাষ্ঠে বলি হওয়া আলমের দীর্ঘশ্বাসের গল্প "কাঁচা ধানের কবর।" পঞ্চম গল্প "কাঠের শরীর", বইয়ের নাম যে গল্পের নামে। এ গল্পের প্রধাণ চরিত্র জহর। সে পাকা ডুবুরি। তার আরেকটা পরিচয়ও আছে, সে দোমরা। দোমরা মানে কী, তা নিশ্চিতভাবেই অনেকের অজানা। চোরাচালান করা কাঠ জল থেকে ওপরে ওঠানোর কাজে নিয়োজিত লোকদের স্থানীয়রা দোমরা নামে ডাকে। স্বরূপকাঠি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে যে সন্ধ্যা নদী, সে নদীর তলদেশে প্রচুর সুন্দরী কাঠ। দোমরা জহর আরো কিছু দোমরার সাথে একত্রে সেই সন্ধ্যা নদী থেকে গভীর ডুব দিয়ে সুন্দরী কাঠ তুলে এনে লঞ্চে রাখে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ লোক এই কাঠের ওপরেই নির্ভরশীল। এ গল্পের আরেক চরিত্র মোমেনা। মহাজনের বউ হওয়া সত্বেও যে ভালোবেসে ফেলে জহরকে। এই প্রেমের পরিণতি কী? প্রেম, সংকট, পরিণতি... সবকিছু মিলিয়ে এ বইয়ের এটাই আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প। এবং গল্পের নামকরণও সার্থক। ষষ্ঠ গল্প চাঃঘুম। পুরোটাই এক রূপক গল্প। এ জাতীয় গল্প আমার বেশ পছন্দ। চাঃঘুম গল্পে রূপকের আড়ালে উঠে এসেছে চা-বাগানের এক কলুষিত সংস্কৃতির আখ্যান। তবে গল্পটা এত রূঢ়ভাবে উপস্থাপন না করলেও হয়তো পারতেন লেখক। আরেকটু সহনীয়ভাবে উপস্থাপন করলে হয়তো মন খারাপ ভাবটা একটু কম স্থায়ী হতো। চা বাগান, ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসা রক্ত, প্রদীপ কুমার, রিনা, তার মা... সব মিলিয়ে এ এক শোণিত উপাখ্যান। সপ্তম গল্প বাগান-বিলাস। সমাজে আমরা যাদের প্রতিবন্ধী হিসেবে চিনি, তাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে নীরবে আমাদের গালে যেন এক নির্মম চপেটাঘাত করে গেলেন লেখক "বাগান-বিলাস" লিখে। আমরা, সামাজিক জীব যারা আছি, তাদের বিবেকের প্রাচীর যে কতটা ঠুনকো, তা লেখক বুঝিয়ে দিলেন খুব সহজেই। এ গল্প অনুভূতির। এ গল্প আমাদের তাসের ঘরের মত ক্ষণস্থায়ী বিবেকেরও। অষ্টম গল্প পাতকী। গল্পের চরিত্রঃ জলিল (ট্রাক ড্রাইভার) তার স্ত্রী সায়রা বানু, দুই বানর: রাজা ও রানি। এ গল্পটা পড়ে আমি বেশ মজা পেয়েছি, তৃপ্তিও। এ গল্পে ভালোবাসা আছে, ঘনিষ্ঠ ভালোবাসা। এ গল্পে প্রতিশোধ আছে, তীব্র প্রতিশোধ। এ গল্প ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি, ভিন্ন ভিন্ন স্বভাবের, আচরণের ঘনিষ্ঠ মেলবন্ধন। পুরোটা মিলিয়ে, অনবদ্য। নবম গল্প মোহর। সার্কাসের অসাধু মালিক নিতিন পাল, তার লোভের গল্প, তার প্রায়শ্চিত্তের গল্প "মোহর।" সাথে রাসমনির উপস্থিতি গল্পকে দিয়েছে ভিন্ন দ্যোতনা। দশম গল্প ছায়ালোকে মায়া। বাংলায় একটা বাগধারা বোধহয় আমরা সবাই পড়েছিঃ যেমন কর্ম, তেমন ফল। এ গল্পের পুরোটা জুড়ে সে বাগধারারই সার্থক মঞ্চায়ন। এ গল্প পাপের, পরিণতির, বিষাদের। এ ঘরানার গল্প আগেও পড়েছি। তবুও, ভালো লেগেছে। ছিমছাম, সুন্দর। বর্ণনার আতিশয্যও ভালো লেগেছে। ব্যপ্তিতে ক্ষীণকায় হলেও "কাঠের শরীর" বইটি অনুভূতির দিক থেকে বিশালাকার। কিছু গভীর জীবনবোধকে এভাবে সহজ, সাধারণভাবে কলমের খোঁচায় পাঠকের সামনে আনার জন্যে লেখককে ধন্যবাদ না জানালে অন্যায় হবে। লেখকের লেখা বাকি বইগুলোও খুব শীঘ্রই পড়ে ফেলবো, আশা রাখি। লেখকের জন্যে শুভকামনা। তার দীর্ঘায়ু কামনা করি। বইমেলায় প্রকাশিতব্য লেখকের নতুন বই "মধ্যবিত্ত"র জন্যেও শুভকামনা রইলো।
Was this review helpful to you?
or
ভালো গল্প।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন সব গল্পের সমাহার। সবারই পড়ে দেখা উচিত।
Was this review helpful to you?
or
অনবদ্য ??
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ কাঠের শরীর লেখকঃ কিঙ্কর আহসান পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৮০ মূল্যঃ ১৫০ টাকা প্রকাশনীঃ জাগৃতি প্রকাশনী রিভিউঃ দশটি গল্পের সংকলন এই বইটি। জীবন ঘেঁষা দশটি মৌলিক গল্প। কয়েকটি গল্প এরকমঃ জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়াঃ রাতে মাঝ নদীতে লঞ্চের এক কেবিনের দরজা বন্ধ করে বসে আছে এক নতুন বউ। বাইরে দারিয়ে আছে বিব্রত স্বামী। কিছুক্ষণ আগেই ঝগড়া হয়েছে তাদের। অন্যদিকে আরেক কেবিনে কান্না চেপে লাশ নিয়ে বসে আছে একটি পরিবার। চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছে হলেও কিছুতেই কাঁদতে পারছে না তাঁরা। কি হয়েছিলো এই দুই কেবিনের পরের চিত্রটা? ছায়ালোকের মায়াঃ নিজের কৃতকর্মের ফল নিজের মধ্য দিয়ে উপলদ্ধি করার এক গল্প। তপোভঙ্গঃ বৃদ্ধ রাজা শশীকান্ত শরীরের নানান ব্যাধিতে আক্রান্ত। তবু বিশাল সম্পত্তির মালিক শশীবাবুর ফুর্তির অভ্যেস যায়নি। নাচঘরে ফুর্তি করা অল্পবয়সী মেয়েদের যোগারের দায়িত্ব বিশ্বস্ত ভৃত্য গোপালের। একদিন গোপালের মেয়ের উপরে চোখ যায় লোভী শশীকান্তের। আজীবন মনিবের কোন হুকুম অমান্য না করা গোপাল কি করবে এবার? কাঠের শরীরঃ অভিজ্ঞ ডুবুরি জহর। রাতের অন্ধকারে নদীর ঘোলাটে জলে লুকিয়ে রাখা সুন্দরী কাঠ তোলার কাজ করে জহর। পানির নিচে ডুব দিয়ে কাঠ তুলে নৌকায় তোলা অনেক শক্ত কাজ। অবশ্য জহরের জন্য এসব ডাল-ভাত। এই পাকা ডুবুরিই একরাতে পানিতে ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় তার ফেলে আসা স্মৃতিতে। মনে পড়ে যায় তার প্রেমিকা মোমেনার মুখ। সাদা মাটা সহজ সরল দিন গুলোর স্মৃতি তাঁকে আকড়ে ধরে। মোমেনার পেটে থাকা তারই বাচ্চাটার কথা মনে হয়। এদিকে বাতাসের জন্য ফুসুফুসটা পাগল হয়ে গেছে। দ্বিধান্বিত জহর আটকে আছে পানির নিচে অতীত স্মৃতি আর পানির উপরের অক্সিজেন ভরা দুনিয়ায়। কে জয়ী হবে? পানির নিচের অতীত নাকি জলের উপরে অক্সিজেন ভরা দুনিয়ায়? উওর মিলবে বইয়ের পাতায়? ব্যক্তিগত মতামতঃ বইয়ের প্রতিটা গল্প আমাকে ছুঁয়ে গেছে। জীবন ঘেঁষা গল্পগুলো কখনো আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো সায়রা বানু আর জলিল ড্রাইভারের বাড়ির উঠোনে, আবার কখনো সেই দশ বারো বছরের ছেলেটির কাছে, যে ঘন্টার পর ঘন্টা কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। প্রতিটা গল্পের শেষে এক অদ্ভুত অনুভূতি হতে বাধ্য। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৮/১০
Was this review helpful to you?
or
প্রছদ দেখে বইয়ের প্রেমে পরার অভ্যাস আমার অনেক আগের। কাঠের শরীর বইটির প্রচ্ছদ দেখে প্রথমেই প্রেমে পরে যাই। নামটাও বেশ। মনে ধরার মত। কিন্তু বিপত্তি ঘটল লেখকের অবস্থা দেখে। সাধারনত টাকা দিয়ে কিনে নতুন কোনো লেখকদের বই কিনে পড়তে বেশ সন্দেহেই থাকি। যদি মজা না পাই। বইয়ের মধ্যে যে রসায়নটা থাকা দরকার সেই রসায়নটা খুজে না পাই তাহলে তো পুরো টাকাটাই মাটি!! তবুও একজন পাঠক হিসেবে নতুন লেখকদের প্রতি আমার অগাদ বিশ্বাস। সর্বদাই আমি বিশ্বাস করি নতুন লেখকদের কাছ থেকে এমন কিছু পাব যা পুরাতন লেখকদের চাইতে ঢের ভাল। তেমনি পেয়েও গেলাম। 'কাঠের শরীর ' বইটিকে পড়ার পর মনে হল, ''নাহ খারাপ তো না। নতুনরা তাদের লেখা গুলোকে নতুন ধাচে সাজিয়েছে। আর নতুন হিসেবে কিন্কর আহসান তো হতাশা করেনি!'' হ্যা… তাই হয়েছে জাগৃতি প্রকাশনী ১৩৪ নাম্বার স্টল থেকে বইটি কিনে ঠকিনি তা আমি একশতে একশ ভাগ বিশ্বাস রেখে বলতে পারি। বই রিভিও তে আমি বেশ পাকা তা দাবি করবো না। এটাও দাবি করবো না আমি বেশ কয়েকটা বই রিভিও করেছি। কিন্তু হ্যা, একটা বই পড়ার পর পাঠক হিসেবে সেটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারব সেই ব্যাপার নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাসটা আছে। ছোট গল্প কখনো রিভিও করিনি আমি। এক্সামের কারণে হাতে ল্যাপটপ খানা নেই। মোবাইলে তাই বেশি কিছু লিখতে পারবো না। আর আমার কাছে মনে হয় ছোট গল্পের রিভিও করতে গেলে পুরো গল্পটি রিভিও হিসেবে প্রকাশ করতে হবে। তবুও বইটি কেন আমার পছন্দ তা বলতে পিছ পা হতে কিংবা কার্পণ্য করতে আমি রাজি নই। গল্পরা বড্ড বাস্তব হয় তা কিন্কর আহসানের কাঠের শরীর ছোট গল্প গ্রন্থটিকে পাঠ করলেই বুঝা যায়। বাস্তব জীবনের প্রতিটা দিককে সে তুলে ধরেছে গল্পে। পার্থিব জীবনের কর্ম গুলো এবং সকল কর্মের প্রাপ্তি গুলো বেশ চমৎকার ভাবে উপস্থাপনা করা হয়ে কাঠের শরীর এ। জীবনের নির্মম পরিস্থিতিতে ভুক্তভুগিদের অবস্থান সুষ্পষ্ট। প্রতিটা কাজের প্রতিদান সরুপ একটা মানুষকে যে তার প্রাপ্তি পেতে হবে তা লিখতে ছাড়ে নি কিন্কর আহসান নামক কম বয়েসি লেখক তার কাঠের শরীরের। 'ছায়ালোকে মায়া!' গল্পটিতে তারি বর্নণা রয়েছে। পাপ যে নিষ্ঠুর ভাবে নিজেকে পাপিষ্ঠকেই শেষ করে দেয় তার অবস্থা গত দিকটি ছায়ালোকে মায়া গল্পটিতে পরিলক্ষিত। ''বেঁচ্যে থাকার জন্যই মাঝে মাঝে পাগলামিটা দরকার। খুব করে দরকার!''… আরে না, কথাটা আমার নয়। কাঠের শরীর গ্রন্থের 'জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া!' বইটি থেকে এই দিক্ষা পেয়েছি আমি। মানুষ প্রকৃতি গত দিকটা যে বেশ অদ্ভূত তার খাটি প্রমান এই গল্পটি। একই সাথে থেকে এক জনের দুঃখ আরেক জনের সুখ কিংবা একজনের কান্না হাহাকার আর একজনের বিশেষ সময়ের শীৎকার এর পরিবেশটা কেমন হয় তার বাস্তবতা তুলে ধরেছেন লেখক কিন্কর আহসান তার 'কাঠের শরীর ' বইটিতে। আর জোনাকী পোকারা যে অনুভবে পরিপূর্ণ তা আমি জানতে পেরেছি ''জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া!' গল্পটি থেকে। একজন লেখক সর্বদা যে তার লেখার সব বিষয়ে পারদর্শি তা আমার কাছে মনে হয় না। আর এই পারদর্শিতার প্রমান হিসেবে কিন্কর দা একটু অন্য রকম ভুমিকা পালন করেছেন তার গল্প সংকলন গ্রন্থটির নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে। পুরোটা বইয়ের ভাল লাগা না লাগার ব্যাপারে নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রটাও বিশেষ ভাবে পরিলক্ষিত। কাঠের শরীর বইটির শেষ গল্প হচ্ছে কাঠের শরীর। জহর নামক চরিত্রটাকে প্রধান করে লেখা গল্পটি সমন্ধে কিছু বলার সাধ্য আমার নেই। মনে হয় এটা সমন্ধে বলতে গেলে আমাকে আরেকটা গীত বিতান কিংবা পুরো বইটির মত আরো একটি বই লিখতে হবে। তাই এ সমন্ধে কিছু বলছি না। কিন্তু এতো টুকু বলতে পারি 'কাঠের শরীর ' গল্পটির নাম দিয়ে পুরো বইয়ের নাম করাটা ছিল লেখকের সব চাইতে বুদ্ধি মানের কাজ। অবশেষে বলতে চাই। এক্সামের কারণে বইটা পুরো পড়তে পারিনি। কিন্তু যত গুলো গল্প পড়েছি তার সমন্ধে মন্তব্য করলেই পূর্ণ বইটি কেমন হয়েছে তার সমন্ধে ধারনা করা যায়। আশা করি বইটি সবাই সংগ্রহ করবেন। বই মেলা আছে আর কিছু দিন। এর মধ্যে জাগৃতি প্রকাশনীর ১৩৪, ১৩৫, এবং ১৩৬ নাম্বার স্টল থেকে বইটি সবাই পাবেন। আর একটা কথা কিন্কর দা শুধু গল্প লিখে তা নয়। তার লেখা একটি উপন্যাসও বের হয়েছে বই মেলায়। 'আঙ্গারধানি!' নামক উপন্যাসটি জাগৃতি প্রকাশনী থেকেই সংগ্রহ করতে পারবেন আপনারা। আর হ্যা, যদি কারো ইচ্ছে হয় তাহলে আঙ্গারধানি বইটির দুইটি কপি কিনবেন। গিফট হিসেবে আমার জন্য একটা পাঠিয়ে দিলে মন্দ হয় না। পয়সা কড়ির অভাবে কিনা হয় নি। আর যাই হোক, অবশ্যই কাঠের শরীর বইটি সংগ্রহ করবেন। আর ধন্যবাদ কিন্কর দা কে। এতো ভাল একটি বই পাঠকদের জন্য প্রকাশ করার জন্য…
Was this review helpful to you?
or
execellent
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
খুব চমৎকার একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
a gud 1
Was this review helpful to you?
or
হারিয়ে গিয়েছিলাম`কাঠের শরীর' পড়তে যেয়ে। লেখকের অক্লান্ত পরিশ্রম প্রতিটি লাইনে পাওয়া যায়। অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
হৃদয়ের অনুভূতিতে লেখা।
Was this review helpful to you?
or
পয়সা উসুল। বইটি পড়ে পুলকিত।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন। বইটি অবশ্যপাঠ্য ।
Was this review helpful to you?
or
wonderful writing.keep it up.
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
Definitely worthy of getting a copy. Thanks to Kingkor Ahsan
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম কাঠের শরীর কিন্তু কিঙ্কর আহসান প্রথম গল্পের বইয়ে খুঁজে ফিরেছেন মানুষের মন। বিচিত্র সেই মানুষ, বিচিত্রতর তাদের মন। কাঠের শরীর বেয়ে কিঙ্করের সে মানুষÑঅনুসন্ধান চলে কাঁচা ধানের কবর জুড়ে, কবর থেকে বাগানবিলাসে; কখনো চায়ের কাপেÑকখনোবা ঘুমে। এভাবে ছায়ালোকের মায়াময় চোখে তিনি দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন জীবন-চিত্রনাট্যের খসড়ায়। বরিশালের লঞ্চ হয়ে শশীকান্তের রাজবাড়ি পর্যন্ত গল্পকার কিঙ্করের অবাধ যাতায়াত। পৃথিবীজোড়া মানুষের মৌলগল্প বোধহয় ঘুরেফিরে একই। নতুন গল্পকার কীভাবে তা বলছেন তাইতো আমাদের দ্রষ্টব্য। নিরায়োজন ভঙ্গিতে, এতো সহজÑসৌন্দর্যে এবং যোগাযোগযোগ্য ভাষায় গল্প বয়ন করে চলেন আমাদের এই নবীন গল্পকার যে চিনতে মোটেও ভুল হয় না-এটা কিঙ্করের গল্প। পাঠক আসুন, কিঙ্কর আহসানকে বাংলা ছোটগল্পের ঋদ্ধ রাজ্যে আন্তরিক স্বাগত জানাই এবং বলি সবে শুরু মাত্র; সামনে তোমার শিল্পদীর্ঘ পথ। গল্পগ্রন্থ : কাঠের শরীর জাগৃতি প্রকাশনী প্রচ্ছদ: নিয়াজ চৈাধুরী তুলি
Was this review helpful to you?
or
Good writing....go ahead.
Was this review helpful to you?
or
wonderful brief work of literature
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ চরিত্র চিত্রণ...মারাত্মক...।
Was this review helpful to you?
or
A truly wonderful book.
Was this review helpful to you?
or
(y) (y) (y) (y) I am truly blessed to get such an amazing and very meaningful book from writer Kingkor Ahsan. I hope to get more work done by this amazing writer. best of luck.
Was this review helpful to you?
or
পড়ে শেষ করলাম কিঙ্কর আহ্সান এর গল্প গ্রন্থ ‘কাঠের শরীর’। বইয়ের প্রথম গল্পের নাম ‘জীবন-চিত্রনাট্য-খসড়া’। প্রকৃতি এবং নিয়তির মেলবন্ধনে ব্যক্তি বিশেষে আনন্দ-বেদনা, সুখ দুঃখ, হাসি কান্না আর অপার্থিব বাস্তবতাকে পাশাপাশি এক ফ্রেমের চিত্রনাট্যে তুলে ধরেছেন গল্পকার। গল্পের শেষে এসেও পাঠকের গতানুগতিক অনুমানকে ভুল প্রমান করে জীবনের চিত্রনাট্যকে প্রকৃতির নির্মমতায় থেমে যেতে দেননি বরং বয়ে চলার সুযোগ দিয়েছেন। আমার কাছে এই গ্রন্থের সেরা গল্প ‘ছায়ালোকে মায়া’। নিজ আত্মার পাপ আর অপরাধগুলোর কাছে ক্ষুদ্র মানুষ যে শেষ সময়ে এসে আরও বেশি ক্ষুদ্র হয়ে যায় জীবনের কাছে, খুব সহজ ভাষায় গল্পকার তা লেখনীতে তুলে এনেছেন। লেখনীর সাবলীলতা আর জীবনের শেষ প্রান্তে অযথাই ভীড় করা স্মৃতির ফিরে আসা এবং মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ টানার গল্প ‘ছায়ালোকে মায়া’। পাপ আর পরিনতির গল্পে ডুবে থেকে চোখ যে কখন পরের গল্পের চরিত্র রাজা শশীকান্তের কাছে এসে আটকে যায় তা টের পাওয়া যায়না। রাজামশাই এর লোভ যে পিতা-পুত্র সম সম্পর্ককে দিন শেষে কর্তা- ভৃত্য’র ফ্রেমে বন্দী হয়ে ভোগের আড়ালে ঢেকে যাবে ভৃত্য গোপাল সেটা আঁচ করতে দেরী করে ফেলে। রক্তের সম্পর্কের আবেদনের কাছে মানুষ কতটা দু:সাহসী তারই একটুকরো উপলব্ধি ‘তপোভঙ্গ’ গল্পটি। এই গল্প শেষ করে চলে যেতে হয় কুমারখালি নদী তীরের 'চন্দ্রপহর' গ্রামে। প্রকৃতির ঋণ শোধ আর মানুষের জৈবিক চাহিদার কাছে ধর্ম সৃষ্ট বিধি নিষেধের অবচেতন পরাজয়ের মাধ্যমে এক কথায় মানব 'উপাসনা' কে এক কঠিন প্রশ্নের মুখে দাড় করিয়েছেন গল্পের মধ্য দিয়ে গল্পকার। এভাবে একে একে ‘কাঁচা ধানের কবর’ থেকে চা;ঘুম, বাগান বিলাস, পাতকী আর মোহর গল্পগুলো ছুয়ে দিয়ে পাঠক হিসেবে মন ‘কাঠের শরীর’ এর কাছে আত্মসমর্পন করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। নামের মতই রহস্য নিয়ে অতি প্রাকৃত ঘটনার মিশেলে অপূর্ণ কিছু আকুলতা ‘কাঠের শরীর’ গল্পে উঠে এসেছে। ‘জাগৃতি প্রকাশনী’ থেকে বের হওয়া কিঙ্কর আহ্সানের ‘কাঠের শরীর’ গ্রন্থটি পাঠককে নিয়ে যায় অন্য এবং ভুবনে। পাঠ শেষে সে ভুবন থেকে ফিরে পাঠক অনুভব করে অদ্ভূত এক ভালোলাগার অপূর্নতা। গল্পের বিষয়বস্তুু, সংলাপ, বর্ননারীতি দিয়ে মোহবিস্ট করে রাখার জন্য গল্পকারকে ধন্যবাদ। শব্দের রং তুলি দিয়ে যে ছবি এঁকেছেন বইয়ের পাতায় পাতায় তা চালু থাকুক। পাঠক হিসেবে বলবে পারি, আপনার এ যাত্রা একদিনের নয়। অনেক দিনের। ফাহিম ফুয়াদ