User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বইঃ আরেক ফাল্গুন লেখকঃ জহির রায়হান প্রথম প্রকাশ: ১৯৬৯ আরেক ফাল্গুন বায়ান্নর রক্তস্নাত ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত কথামালা। নাম ডাকতে ডাকতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন ডেপুটি জেলার সাহেব। একসময়ে বিরক্তির সাথে বললো, উহ্, এতো ছেলেকে জায়গা দিবো কোথায়! জেলখানা তো এমনিতে ভর্তি হয়ে আছে। ওর কথা শুনে কবি রসুল চিৎকার করে উঠলো,জেলখানা আরো বাড়ান সাহেব। এতো ছোট জেলখানায় হবে না। আর একজন বললো, এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো। ★ শুনেছিলাম ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের যেভাবে জেলখানায় আটক বা গুলি করে মারা হয়েছিলো। ঠিক একই দৃশ্য আমরা ২৪ এর জুলাই বিপ্লবে দেখি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। উভয় ক্ষেত্রেই দেখা যায় ছাত্রদের কোনোভাবে দমন করা যায়নি। বরং, বিরোধী শক্তির পতন ঘটেছে। ইতিহাসের সত্যিই পুনরাবৃত্তি ঘটে।
Was this review helpful to you?
or
outstanding book ?
Was this review helpful to you?
or
নাম ডাকতে ডাকতে হাঁফিয়ে উঠেছিলেন ডেপুটি জেলার সাহেব এক সময় বিরক্তির সঙ্গে বললেন উহ্ ,এতো ছেলেকে জায়গা দেবো কাোথায়। জেলখানা তো এমনিতেই ভর্তি হয়ে আছে। কবি রসুল চিৎকার উঠলো ,জেলখানা আরো বাড়ান সাহেব। এত ছোট জেলখানায় হবে না। আর একজন বললো ,এতেই ঘাবরে গেলেন নাকি..? "আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুন হবো"। আমি যখনি গল্পট হাতে নিলাম তখন সময় ৩রা ফাল্গুন। সত্য বলতে এই গল্প পড়াটার পেছনের কাহিনী ২৪এর জুলাইয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের অন্যতম প্লে-কার্ডে রক্তলাল কালিতে ,পষ্ট বাংলায় লিখা ছিল "আসছে ফাল্গুন আমরা কিন্তু দ্বিগুন হবে"। সেখান থেকেই এই উপন্যাসের বীজ হৃদয়ে রোপন হলো। গল্পের সাথে ২৪ এর আন্দোলনের অনেকাংশে হুবুহু মিল যেন। গল্পে ইউনিভার্সিটির প্রোভোস্ট গুলোর ভুমিকায় ২৪ এ ও একই ছিলো। গল্পের পুলিশের ব্যবহার আর ২৪ এর পুলিশের ব্যবহারেও ছিলোনা কোন তারতম্য।গল্পে ডেপুটি জেলার সাহেব বললেন :উহ্..!এতো ছাত্র কোথায় জায়গা দিবো..?২৪ এ ও পুলিশ কমিশনার সরাষ্ট্র মন্ত্রীকে বলেছিলো ,স্যার..!একটা গুলি করলে তো একটাই মরে.... বাকি গুলো সামনে এসে দাড়াঁয়। কী..! আমি কি কিছু বানিয়ে বললাম..? জহির রায়হান সেই উনিশ শতকে থেকেই এদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে শিক্ষাখাত থেকে ধরে উল্লেখ্যযোগ্য যে সংস্কারের আশায় বুক বেধেঁ এমন দারুন ,জ্বালাময়ী তীব্র খরোস্রোতা উপন্যাস গুলো লিখেছেন তার সংস্কার এই ২৪ এ এসেও হয়নি। এখন জহির রায়হান বেচেঁ থাকলে ২৪ এর প্রেক্ষাপটে আরেকটি উপন্যাস রচনা করে ফেলতেন আর নাম দিতেন , অসময়ের কান্ডারী ছাত্রসমাজ।
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
I still loving this book......
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব সুন্দর একটি বই!
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান আমার একজন পছন্দের লেখক।আরেক ফাল্গুন, উপন্যাসটি এত ভালো লেগেছে যে, এই বিষয়ে যায় বলি খুব কম বলা হবে। ভাষা-আন্দোলন কে কেন্দ্র করে রচিত এটি।মুনিমরা সংঘবদ্ধভাবে প্রচরণা করছে, আসছে একুশে ফেব্রুয়ারি তারা বায়ান্ন বা বিভিন্ন সময়ে বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দেয়া ভাষা শহীদদের সম্মান জানাবে।তাই তারা খালি পায়ে কয়দিন ধরে হাঁটছে। বিভিন্ন কলেজ-ঢাকা মেডিকেল কলেজ,ইডেন কলেজ,জগন্নাথ কলেজ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরো সব জায়গা থেকে ছেলে মেয়েরা সংঘবদ্ধ হচ্ছে একুশের ফেব্রুয়ারির জন্য। সালমা মেডিকেলে পড়ে,তার স্বামী -ভাই দেশের জন্য জেলে।তার স্বামী রওশন রাজশাহীর জেলে, গুলিতে তার দুহাত কাটা পড়ছে।এত কিছুর পরেও সালমা পিছু পা হয়নি,অন্যদের মত সেও একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের স্বপ্ন দেখে,সে খালি পায়ে কলেজে গেছে।বেনু, রাণুরা ও খালি পায়ে হেঁটে যাচ্ছে,সবাই ওদের আড় চোখে দেখছে কিন্তু সবাইকে তোয়াক্কা না করে,তারা দেশ আর ভাষা শহীদের কথায় বারেবারে স্মরণ করছিল। এল কাঙ্ক্ষিত দিন,পুলিশ লাঠি পেটা করেও থামাতে পারে নি,বাংলার দামাল ছেলে-মেয়েদের। শীত, শত বাঁধা উপেক্ষা করে তারা সংঘবদ্ধ আজ। জেলে তাদের স্থান দেয়া যাচ্ছে না।কবি রাসুল বলেন-আসছে ফাল্গুন আমরা দ্বীগুণ হবো।অর্থাৎ আমাদের আন্দোলনের কেবল শুরু, এটা চলতেই থাকবে,যত দিন না পর্যন্ত আমরা স্বাধীন হবো। এত সুন্দর করে জহির রায়হান দেশের কথা তুলে ধরতে পেরেছেন, এটা পরে তার প্রতি শ্রদ্ধা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আহারে আমরা যদি তাকে ১৯৭২ সালে না হারাতাম, তাহলে বাংলা সাহিত্য, চলচ্চিত্র আরো পরিপূর্ণ হতো তার হাতের ছোঁয়া পেয়ে।
Was this review helpful to you?
or
Nice Book
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি উপন্যাস ❤️
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ রকমারি।
Was this review helpful to you?
or
আরেক ফাল্গুন সত্যি অসাধারণ একটি উপন্যাস!
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান is the best
Was this review helpful to you?
or
Very Responsive delivery man.
Was this review helpful to you?
or
আমার প্রিয় একটা বই
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের অনন্য সৃষ্টি। জহির রায়হানের মতো একজন ঔপন্যাসিক পেয়েছি, যা আমাদের এখনো গর্বিত করে। বাংলাদেশের নিজস্ব কবিদের লিখা উপন্যাসগুলোর মধ্যে এ উপন্যাসটির অবস্থান নিঃসন্দেহে খুবই উপরে। অসাধারণ একটি বই। জহির রায়হানের অনবদ্য সৃষ্টি এ উপন্যাসটি। বইয়ের কোয়ালিটিও ভালো। রিকমন্ডেড। ❤️
Was this review helpful to you?
or
ভালো লাগলো পড়ে।
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ
Was this review helpful to you?
or
You can check it!
Was this review helpful to you?
or
বই দুটো যথাসময়ে পেয়েছি, ধন্যবাদ রকমারি।
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
ছেলেমেয়েদের জেলখানায় ঢোকানোর সময় নাম ডাকতে ডাকতে হাঁফিয়ে উঠেছিলেন ডেপুটি জেলার সাহেব। একসময়ে বিরক্তির স্বরে বললেন, ‘উহ্, এত ছেলেকে জায়গা দেব কোথায়!’ জেলখানা তো এমনিতেই ভর্তি হয়ে আছে। ও কথা শুনে একজন বললেন, ‘এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হব।’
Was this review helpful to you?
or
thanky
Was this review helpful to you?
or
After all good
Was this review helpful to you?
or
বই : আরেক ফাল্গুন লেখক : জহির রায়হান প্রকাশক : অনুপম প্রকাশনী ধরণ : চিরায়ত উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৭২ প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ প্রথম সংস্করণ : জানুয়ারী ১৯৯৮ সংস্করণ : জুন ২০১৯ ( ষষ্ঠ মুদ্রণ ) মুদ্রিত মূল্য : ১২০ টাকা ISBN : 978-984-404-271-1 লেখক পরিচিতি: জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ৷ তিনি বিখ্যাত ঔপন্যাসিক শহীদুল্লাহ্ কায়সারের ছোট ভাই ৷ ’৫২ তে কারাবরণ করেন ৷ ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় সৈনিক ৷ তার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাঙালি চেতনা উদিত হয় স্ফুলিঙ্গের ন্যায় ৷ হাজার বছর ধরে, জীবন থেকে নেয়া, স্টপ জেনোসাউড, এ স্টেট ইজ বর্ণ ইত্যাদি তার অনন্য সৃষ্টিকর্ম ৷ ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি নিখোঁজ হন ৷ ফ্ল্যাপের কথা : পুলিশ দেখে প্রথমে থমকে দাঁড়িয়ে গেলো ওরা ৷ পরস্পরের মুখের দিকে তাকালো ৷ একটি নীরব মুহূর্ত ৷ তারপর চলতে শুরু করলো ৷ আসাদ বললো, মনে হচ্ছিল আমাদের ধরবার জন্য লরিটা থামিয়েছে ওরা ৷ আমিও তাই ভেবেছিলাম ৷ বললো আরেক জন ৷ মুনিম কিছু বললো না ৷ পকেট থেকে রুমালটা বের করে নীরবে মুখখানা মুছলো ৷ ব্যক্তিগত মন্তব্য : বেশ কয়েক বছর থেকে ভাবছিলাম রিভিউ পোস্ট দেয়া আরম্ভ করবো ৷ কারণ, আমার সংগ্রহে হার্ডকপি কয়েকশ ছাড়িয়েছে ৷ কেন আরেক ফাল্গুন দিয়েই আরম্ভ করেছি ! বাংলাদেশ উচ্চারণ করলেই ভাষা আন্দোলনটা প্রথমে আসে ৷ কোথা থেকে এই বাংলার সৃষ্টি ৷ বাংলার জন্য রক্ত কেন দিয়েছিল আমাদের অগ্রজেরা তারই একটি দলিল বলা যায় অারেক ফাল্গুনকে ৷ যদিও এটি রূপক উপন্যাস কিন্ত প্রত্যেকটা শব্দই যেন বাস্তব ৷ ফাল্গুনেরই একদিনে বাংলার ছেলেরা রক্ত দিয়েছিল মায়ের ভাষাটাকে রক্ষা করতে ৷ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট ঠিক তারই তিনটে বছর পর , আরেক ফাল্গুনের ৷ যেখানে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর প্রস্তুতির কয়েকটা দিনসহ ভাষা আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরা হয়েছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেলের ছেলে-মেয়েরা বৃথা যেতে দিতে চায় নি তাদেরই সহপাঠী বরকতের রক্তকে ৷ শহীদ বরকত কিভাবে শহীদ হয়েছিলেন তার একটা কাল্পনিক সাক্ষাৎকার দেয়া আছে তারই সহপাঠী কবি রসুলের কণ্ঠে ৷ ’৫২ এর ফাল্গুনের বরকত , রফিক, আউয়াল, শফিউরদের এক প্রতিচ্ছবি উপন্যাসের মুনিম, আসাদ, কবি রসুল, সালমারা ৷ আমার মতে জহির রায়হান তার উপন্যাসের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের উদ্দীপন আমাদের মাঝে জিইয়ে রাখতে চেয়েছেন ৷ আমার সবচাইতে প্রিয় বাক্য, “এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি ? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো ৷ ”
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই।
Was this review helpful to you?
or
A simple book with a valuable massage
Was this review helpful to you?
or
khob e valo lagse...boi er binding tao shondor silo...... kinto home delivery bole holeo narsingdi branch thek home delivery kora hoi nah..... tader deya nirdarito location thek ante hoi...
Was this review helpful to you?
or
ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক যতগুলো লেখা পড়েছি' আরেক ফাল্গুন' সবচেয়ে ভাল লেগেছে।খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি গত বইমেলায় কেনার ইচ্ছা ছিলো।অজ্ঞাত কারণ বশত কেনা হয় নি। পরে রকমারি থেকে অর্ডার করি। হাজার বছর ধরে, কয়েকটি মৃত্যু, আর কতদিন, বরগ গলা নদী বইগুলো পড়ার পর এই বইয়ে হাত দিই। অসাধারণ একটি উপন্যাস। প্রথম একটি পাতা পড়েই বইয়ের প্রেমে পড়ে যায়। এখন থেকে কাউকে বই গিফট করলে এই বইটি করব বলে ভেবছি।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের লেখা গুলো অসাধারণ,এটাও অনেক ভালো একটা বই অনেক ভালো লেগেছে,,,
Was this review helpful to you?
or
ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।তাইতো বারবারই গান,কবিতা,উপন্যাস,সিনেমায় উঠে আসে ঘটনাটি।আর জহির রায়হান এমন একজন মানুষ যিনি সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন ফেব্রুয়ারির সেই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা মিছিলে।তাইতো তাঁর লেখনিতে বারবার উঠে এসেছে বিষয়টি।'আরেক ফাল্গুন' উপন্যাসটিতে স্থান পেয়েছে পাকিস্তান শাসনামলে ১৯৫৫ সালে ছাত্রছাত্রীদেন শহিদ দিবস পালনের প্রস্তুতি এবং সরকারের দমন-নিপীড়ন। শুধুমাত্র এই বিষয়টুকুতেই উপন্যাসের কাহিনি সীমাবদ্ধ থাকে নি।উঠে এসেছে প্রেম,মায়ের ভালবাসা,বিশ্বাসঘাতকতা। মুনিম আর ডলি,জাহানারা আর রওশন এদের প্রেম লেখক তুলে এনেছেন অনবদ্যভাবে।আবার ডলির স্খলন,আসাদের জাহানারাকে ভালোলাগা এসব এনে লেখক সহজাত মানবমনকেও তুলে এনেছেন। সব আন্দোলন কিন্তু সবাইকে সমানভাবে স্পর্শ করে না।তাইতো দেখা যায় ছাত্রদের একপক্ষ যখন পুলিশদের আক্রমন ঠেকাতে লাইব্রেরির দরজা লাগাতে ব্যস্ত,আরেকপক্ষ তখন ব্যস্ত পড়শুনাতে।আবার কবি রসুল যখন মিছিলে যায় তখন আরেক কবি বজলে হাসান নিজের জীবন অমূল্য জ্ঞান করে ঘরে বসে থাকেন।
Was this review helpful to you?
or
আরেক ফাল্গুন জহির রায়হান রচিত ভাষা আন্দোলনভিত্তিক একটি কালজয়ী উপন্যাস। বাংলার কলেজ, ভার্সিটির ছাত্র শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় ১৯৫৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী পালনের মাধ্যমে আজকের ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। অসংখ্য মানুষকে তখন জেলে বন্ধি করা হয় শেষ পর্যন্ত জায়গা দিতে না পেরে বলে এখনি ঘাবরে গেলেন আসছে ফাল্গুনে আমরা দিগুন হব। বিষয়গুলো লেখক খুব যত্নসহকারে ফুটিয়ে তুলেছেন। পড়ে ভালো লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভাল একটা বই। নতুন প্রজন্ম কে নিজেদের ভাষা আন্দোলন এবং সম্পর্কে আগ্রহী ও সচেতন করে গড়ে তুলতে আশা করি এই বইটি ভূমিকা পালন করবে । রকমারি কে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ভাবে পুরনো দিনের বইগুলো এত সহজে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
Excellent book. I read this novel. It is very interesting. I could get it at home because of rokomari.com. Thank you rokomari. I hope that rokomari.com will be able to reach all the farthest corners of Banglades.
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের জনপ্রিয় ও কালজয়ী উপন্যাস’ আরেক ফাল্গুন’। ভাষা আন্দোলনের সময় কিছু শিক্ষক, ছাত্রদের সেই সময়কার দিনলিপির উপর ভিত্তি করে, ১৯৫৫ সালে এই ২১শে ফেব্রুয়ারির উপর উপন্যাসটি লেখা হয়। বলা যায় যাদের একান্ত চেষ্টা আর সংগ্রামে আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত, পেছনের সেই মানুষগুলোর গল্পই আরেক ফাল্গুন। গল্পে উঠে এসেছে তাদের বিদ্রোহী চেতনা আর পরিণয়ের মাঝের দ্বান্দ্বিকতা। বাদ যায়নি আন্দোলনের লাভের গুড় খাওয়া মানুষগুলোর কথাও। শত শত প্রতিবাদী ছেলেমেয়েকে গ্রেপ্তার করে জেলে জায়গা দিতে না পেরে যখন ডেপুটি জেলার বিরক্তি প্রকাশ করে, ভিড়ের থেকে কেউ একজন বলে, ‘এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো।’ আমাদের বুড়িয়ে যাওয়া রোগটা মনে হয় এই এক ভবিষ্যৎবাণীতেই পুরোপুরি উপশম হয়ে যায়! সর্বোপরি উপন্যাসটি বেশ ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
কথা বলছিলাম জহির রায়হানের 'আরেক ফাল্গুন' নিয়ে ৷ সময়টা ১৯৫৫ সাল ৷ ছাত্ররা চায় ৫২'র ভাষা শহীদ দিবসকে উদযাপন করতে, সেই সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৷ কিন্তু সরকার এ পরিকল্পনার ঘোর বিরোধী ৷ ছাত্ররা তা মানবে কেন? প্রতিবাদ জানাল তারা ৷ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করল যেমন- শহীদদের সম্মানে তিন দিন রোজা রাখা, নগ্ন পায়ে চলাফেরা করা, কালো পোষাক কিংবা ব্যাজ ধারণ করা, লিফলেট, পোস্টার টানানো ৷ একুশে ফেব্রুয়ারীতে কালো পতাকাও টানানো হবে ৷ এই নিয়ে তাদের সাথে সরকারের গন্ডগোল ৷ পুলিশ কখনো ১৪৪ ধারা জারি করল, কখনো রাতবিরেতে বাড়িতে হানা দিতে লাগলো ছাত্রদের গ্রেফতার করতে ৷ রাস্তায় মিছিল করা নিষেধ দেখে হলের ছাদে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দিতে লাগল ছাত্ররা ৷ কিছুতেই বাঁধ মানবে না তারা ৷ নেতৃত্বে আছে ৫২' এর আন্দোলনে সম্মুখে থাকা সেই মুনীম, আসাদ, রসুলরাই ৷ গ্রেফতার হতেও সামান্য ভয় নেই যাদের, বহু ছাত্রীরাও দাঁড়াল পাশে ৷ দিনশেষে গ্রেফতার হল তারা, কিন্তু তখনো দমে নি কেউ ৷ কারণ তারা জানে, প্রতিবাদ এখানেই শেষ নয় ৷ এভাবে প্রতিবাদ চলতেই থাকবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অাসছে ফাল্গুনে তারা দ্বিগুণ হবে ৷ পাঠ প্রতিক্রিয়া: জহির রায়হানের লেখার গুণ এ প্রতিটা ঘটনা মনে হচ্ছিল চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি, আমি নিজেও যেন আন্দোলন কিংবা মিছিলের একটা অংশ ৷ গল্পের ফাঁকে ফাঁকে ৫২'র আন্দোলনের স্মৃতি রোমন্থন আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে লেখনীকে ৷ বইটার শুরুটা যেমন চমৎকার, সিপাহী বিদ্রোহের নির্মম স্মৃতিজড়িত ভিক্টোরিয়া পার্কের বর্ননা দিয়ে ৷ তেমনি এর শেষটা আরো চমৎকার ৷ ছাত্রদের আশা, প্রত্যাশা, প্রতিবাদ সবটাই ঐ অল্প কয়েকটা বাক্যে কি সুন্দর করেই না তুলে ধরলেন লেখক ৷ এরকম একটা মাস্টারপিস বই মিস করা উচিত হবে না কারো, তাই না পড়ে থাকলে নিশ্চয়ই পড়বেন ৷
Was this review helpful to you?
or
ভাষা আন্দোলন-এর সময়কার উপন্যাস এটি। ভাল লেগেছে আমার। আসলে ভাষা আন্দোলন আমাকে খুব টানে। সে হিসেবে বলবো ভাষা আন্দোলনের সময়কার কয়েকজন সাহসী ছাত্র-ছাত্রী, তাদের জীবনাচার, প্রেম-ভালবাসা সবই এসেছে উপন্যাসটিতে। উপন্যাসের নাম যেমন সুন্দর চরিত্রগুলোও তেমনি ভাল লেগেছে। তবে ৫* পাওয়ার মত না। ৪* দিবো।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি ১৯৫৫ সালের পটভূমিতে রচিত। ভাষা শহীদদের স্মরণ করে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করতে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্মম অত্যাচারের চিত্র যেমন ফুটে উঠেছে সেই সাথে বায়ান্ন সালের ২১ ও ২২ শে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের চিত্রও ফুটে উঠেছে। উপন্যাসের একদিকে যেমন রয়েছে মুনিম, আসাদ, রাহাত, মাহের, রওশন, সালমা, রেণু, নীলা কবি রসুলের ও চায়ের দোকানদার মতি ভাইয়ের মত দেশ প্রেমিক, তেমনি রয়েছে মাহমুদ, বজলে ও সবুরদের মত দেশদ্রোহী। শুধু ভাষা আন্দোলন নয়। লেখক জহির রায়হান এ উপন্যাসে বলেছেন ভালোবাসা, দু:খ, পুন:মিলনের গল্প।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ আরেক ফাল্গুন লেখকঃ জহির রায়হান ভাষাঃ বাংলা ঘরনাঃ চিরায়ত উপন্যাস বইয়ের পৃষ্ঠাঃ ৭২ বিনিময় মূল্যঃ ৯০ টাকা প্রকাশনীঃ অনুপম ব্যক্তিগত অনুযোগ (রেটিং): ৪.৬/৫ “যে বলিষ্ঠ হাত দিয়ে তাকে আলিঙ্গন করতো-সে দুটো হাত হারিয়েছে সে। শার্টের হাতাজোড়া শুধু ঝুলে আছে কাঁধের দু’পাশে। সালমার মুখের দিকে তাকিয়ে হয়তো তার মনের ভাবটা আঁচ করতে পেরেছিলো। তাই ক্ষণিকের জন্যে সেও কেমন উন্মনা হয়ে পড়েছিলো। সেই প্রথম অতিকষ্টে, বাঁধ ভেঙে আসা কান্নাকে সংযত করলো সালমা। আস্তে করে শুধালো, কেমন আছো? শূন্য হাতাজোড়া সামান্য উঠলো। ঠোঁট কাপঁলো। সে মৃদু গলায় জবাব দিলো, ভালো।” হৃদয়গ্রাহী এক উপন্যাসের নিষ্ঠুর বাস্তবতার এক চিত্ররুপ উপরের কথাগুলো, যখন কিছু রক্ত জেদী, কিছু বাতাস তাতে সিক্ত। স্বাধীনতা তখন শুধু একটা শব্দ থেকেও বেশি কিছু, বাস্তবতা থেকে একটু কম। বাংলা ভাষা তখন আকুতি, অধিকার, সাহসের অন্য নাম আর এতে কিছু ছাত্র তখন বিপ্লবী। পুরোনো সেই স্মৃতি এখন এতো বছর পরে অনুপ্রেরণা। আর, সেই উপাখানগুলোকে জীবিত রূপদাতা জহির রায়হান তখন ছিলেন জীবিত, আর বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল ইতিহাস। ভাষা আন্দোলন, বায়ান্ন না হয়েও সেই সাতান্ন সালেও যেন সেই বায়ান্নের শহীদ স্মৃতি। বরকত বললো, দাঁড়াও আমি একটু আসি। বলে গেটের দিকে যেখানে ছেলেরা জটলা বেধে তখনো শ্লোগান দিচ্ছিলো, সেদিকে একটু এগিয়ে গেলো সে। সূর্য তখন হেলে পড়েছিলো পশ্চিমে। মেঘহীন আকাশে দাবানল জ্বলছিলো। গাছে গাছে সবুজের সমারোহ। ডালে ডালে ফাল্গুনের প্রানবন্যা। অকস্মাৎ সকলকে চমকে দিয়ে গুলির শব্দ হলো। উপন্যাসে লেখক নিজেকে সেখান দাঁড় করিয়ে দিয়ে পুরোটা কাহিনী প্রেক্ষাপটকে নানন্দিক আর জীবন্ত করে দিয়েছেন। আমি ছিলাম সেই কাপুরুষ শ্রেণীর মানুষ। যে হয়তো মিলিটারিরা যখন কমন রুমে ঢুকে পড়তে চেয়েছিল-একদল ছেলেমেয়ে তখন টেবিলের উপর টেবিল আটকিয়ে তাদের ঠেকাতে চেয়েছিল-তখন হঠাৎ করে তাক থেকে বই নিয়ে দুই একজন পড়তে শুরু করে দিয়েছিল - বেণুর চোখজোড়া জ্বালাপোড়া যেন সেই আমাকে ঘিরে। নিজের ব্যক্তিগত পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে গেলে বলবো যে, বইটা পড়ার পর নিজেকে বেশ সতেজ লাগছে। বইটা পড়ে মনে হল, এ শহর আর সে শহরেরর বাসিন্দাদের মাঝে এখন অনেক পার্থক্য। যারা রাস্তায় নামে তারা প্রাণের ভয় তুচ্ছ করে মাটিতে আর শুয়ে যায় না, বরং কয়েকটা শরীর সবসময়ের জন্য রোজ শুইয়ে দেয়, ঐ ঈশ্বরের নামে যে সবাইকে এক হাতে সৃষ্টি করেছিলেন, ঐ রাজনীতির নামে যা গণতন্ত্রের কথা বলে। তবে এখনো সে রাত রোজ আমাদের ঢেকে দেয়। হৃদয়ে কিংবা বাতাসে পরিচিত গুঞ্জন এখনো আঁধারে কবিতা শুনায়, সে কবিতার কোথাও হয়তো কবির স্নেহ আছে, লুকোনো বিদ্রোহ আছে। আমি আগে শুনতাম, এখন শুনি না। অনেক ফাল্গুন তো গেল..! তবে কেউ কেউ হয়তো এখনো স্বপ্ন দেখে। এখনো! ভাষা সাহিত্যের অনব্দ্য এই সাহিত্য, এই উপন্যাস, সবস্তরের মানুষকে, সাহিত্যপ্রেমিকদের জোরগলায় পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি.....
Was this review helpful to you?
or
১৯৫৫ সালে শহীদ দিবস পালনের প্রস্তুতি, সরকারী বাধা ইত্যাদি অবরুদ্ধতাকে কেন্দ্র করে ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের পটভূমি রচিত। জহির রায়হানের ’আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের কাহিনী অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। কাহিনীর স্থিতিকাল মাত্র তিন দিন দুই রাত। প্রথম দিনের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে কাহিনীর সূচনা। প্রথম দিন, রাত এবং দ্বিতীয় দিন ও রাত ধরে চলেছে একুশ পালনের বিরামহীন প্রস্তুতি। তৃতীয় দিন কাহিনীর চূড়ান্তকাল। মিছিল এবং পুলিশের সংঘর্ষের মাধ্যমে অতিক্রান্ত হয়েছে এ চূড়ান্ত কালটি। অতঃপর দিনের শেষে কারা তোরণ প্রাঙ্গণে কাহিনীর পরিসমাপ্তি। সেই জন্য কাহিনীর ব্যাপ্তিকাল সীমিত। কিছু ঘটনা ও উদ্ঘটনায় বিস্তৃত উপন্যাসের কলেবর। সিপাহী বিদ্রোহের নির্মম স্মৃতি বিজড়িত ভিক্টোরিয়া পার্কের বর্ণনা দিয়ে ঔপন্যাসিক উপন্যাসের কাহিনীর সূচনা করেন। “সকালে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছিল পুরো আকাশটা। আকাশের অনেক নিচু দিয়ে মন্থর গতিতে ভেসে চলেছিল এক টুকরো মেঘ। উত্তর থেকে দক্ষিণ-রঙ তার অনেকটা জমাট কুয়াশার মতো দেখতে। ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে ঠিক সেই মেঘের মতো একটি ছেলেকে হেঁটে যেতে দেখা গেল নবাবপুরের দিকে। দক্ষিণ থেকে উত্তরে। পরনে তার সদ্য ধোয়ান সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট, পা-জোড়া খালি। জুতো নেই।” এই ছেলেটিই আরেক ফাল্গুন উপন্যাসের নায়ক মুনিম। মুনিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা। সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতিময়তা এই উপন্যাসের সূচনাকে করেছে তাৎপর্যময় এবং বর্ণনায় প্রকৃতির পরিচর্যা কাহিনীকে করেছে সংকেতময়। মেঘের গতি উত্তর থেকে দক্ষিণে আর মুনিমের গতি দক্ষিণ থেকে উত্তরে। বর্ণনার এই সংকেতময় ইংগিতটি শৈল্পিক। উপন্যাসের শেষাংশে বর্ণনায় এই ইংগিত আরও সম্ভাবনাময় ও সুদূরপ্রসারী বলে মনে হয়েছে। যেমন- “নাম ডেকে ডেকে তখন একজন একজন করে ছেলেমেয়েদের ঢোকানো হচ্ছিল জেলখানার ভেতরে। নাম ডাকতে ডাকতে হাঁফিয়ে উঠেছিলেন ডেপুটি জেলার সাহেব। এক সময় বিরক্তির সঙ্গে বললেন, উহ অত ছেলেকে জায়গা দেব কোথায়? জেলখানাতো এমনি ভর্তি হয়ে আছে। ওর কথা শুনে কবি রসুল চিৎকার করে উঠল, জেলখানা আরও বাড়ান সাহেব। এত ছোট জেলখানায় হবে না। আর একজন বলল, এতেই ঘাবড়ে গেলে নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হব।” সরকার ছাত্রছাত্রীদের শহীদ দিবস পালন করতে দেবে না। রাস্তায় সেøাগান দেয়া নিষিদ্ধ। মিছিল, শোভাযাত্রা বেআইনী ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু ছাত্ররা বদ্ধপরিকর, তারা যে কোন মূল্যে শহীদ দিবস পালন করবে। সেজন্য তারা পূর্ব থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। তাদের কর্মসূচীর মধ্যে তিনদিন নগ্ন পায়ে চলা, সবাই রোজা রাখা, কালো ব্যাজ ধারণ করে ২১ ফেব্রুয়ারিতে কালো পতাকা উত্তোলন করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ছাত্রদের এই সমস্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নে মুনিম-আসাদ দিন-রাত কাজ করে যায়। পোস্টার ও লিফলেট ছাপানো, কালো ব্যাজ বিতরণ, কালো পতাকা উত্তোলন, সেøাগান ও অন্যান্য সাংগঠনিক কর্মকা-ে মুনিমের সক্রিয়তা বিরামহীন। আন্দোলনের সময় মুনিমকে নগ্ন পায়ে আসতে হয় দয়িতা ডলির জন্মদিনের উৎসবে। ব্যস্ততার কারণে ডলিকে সময় দিতে পারে না মুনিম। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে মুনিমকে যোগ দিতে হয় বিভিন্ন ছাত্রসভায়। তাই ডলিকে একান্ন সান্নিধ্য দিতে পারে না সিনেমাতে। অভিমানী ডলি তাই রাগে ক্ষোভে তাকে প্রেরণ করে প্রত্যাখ্যানপত্র। মুনিম আহত হয়। কিন্তু রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ থেকে সে এক মুহূর্তের জন্য বিচ্যুত হয় না। এটা তার রাজনৈতিক আদর্শনিষ্ঠা ও কর্তব্য। কিন্তু ডলির প্রতি অবজ্ঞা কিংবা আন্তরিকতাহীন তা কিন্তু নয়। মুনিম ডলিকে বিস্মৃত হয়নি। রাজনৈতিক কর্মব্যস্ততার আসরে ডলি তার কাছে হয়ে উঠেছে স্মৃতিলোকের মহারানী। আন্দোলনে মুনিম একা নয়। সংগ্রামী উদ্দীপনায় এগিয়ে এসেছে সালমা, নীলা, রানু, বেনু, রাহাত, আসাদ, কবি রসুল, সাহানা প্রমুখ শত শত ছাত্রছাত্রী। রাজপথে তাদের আন্দোলন নিষিদ্ধ জেনেও তারা অবলম্বন করে ভিন্ন পথ। অবশেষে ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শহীদ দিবসের উন্মাদনা ও আত্মদানের মহান ব্রত দেখা যায়। সারারাত কেউ ঘুমায় না। মেডিক্যাল হোস্টেল, মুসলিম হল, চামেলি হাউস, ইডেন হোস্টেল, ফজলুল হক হল ইত্যাদি হলের ছাত্রছাত্রীরা অতন্দ্রপ্রহরীর মতো সারারাত জেগে রইল। কেউ কেউ জটলা বেঁধে কোরাস গান ধরলো ‘ভুলবো না, ভুলবো না, একুশে ফেব্রুয়ারি’। ফজলুল হক হলের সামনের মাঠে কাগজ দিয়ে ছাত্ররা স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তুলল। ১৯৫২ সালেও মেডিক্যাল হোস্টেলের ব্যারাকের সামনে তারা রাতারাতি শহীদ মিনার তৈরি করে রেখেছিল। কয়েকদিন পর পুলিশ এসে সে মিনার ভেঙ্গে দিল। তারপর ছাত্ররা কঞ্চি দিয়ে সেই নির্দিষ্ট স্থানটি ঘেরাও করে রেখেছিল। এখানেও মেডিক্যালের ছাত্ররা কাপড় দিযে ঢেকে দিয়েছে। অবশেষে কালো পতাকা উত্তোলিত হলো। ছাত্রদের সেøাগান ও ব্যারিকেড ভেঙ্গে পুলিশ লাঠিচার্জ করল; এরপর মেডিক্যাল ব্যারাক ঘেরাও করে ছাত্রদের বেধড়ক মারধর করল। পুলিশ ছাত্রছাত্রীসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরপর সকাল ১০টার দিকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জমায়েত হতে লাগল এবং সেখানে কালো পতাকা উত্তোলন হলো। এখানেও পুলিশ গুলি চালায়, অনেক ছাত্রছাত্রী আহত হয় আবার অনেককে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। প্রিজন ভ্যানে উঠে ছাত্রছাত্রীরা সেøাগান দিতে থাকেÑ ‘শহীদের খুন ভুলব না, বরকতের খুন ভুলব না’; ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক’। এভাবে প্রায় আড়াইশ’র মতো ছাত্রছাত্রীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উপন্যাসের তৃতীয় দিনে চূড়ান্ত ঘটনাংশে পূর্বের তুলনায় মুনিমকে ততটা সক্রিয় মনে হয়নি। এ অংশে মুনিম অপেক্ষা আসাদ অধিক সক্রিয়। মিছিলে পুলিশের সংঘর্ষে মুনিম আহত হয়। গ্রেফতার হয়ে অপেক্ষা করে কারাগারের প্রাঙ্গণে। অতঃপর ডলি আর সাহানার আকস্মিক আবির্ভাবে বেদনাবিহ্বল মুনিম হয়ে উঠে আনন্দে উদ্বেল। ডলি এক মুঠো ফুল নিবেদন করে মুনিমকে। ডলির বিচ্ছেদ বেদনার পরিবর্তে কারাবাসী মুনিম বরং আনন্দবোধ করে। “মুনিম মৃদু গলায় বললো, হয়তো দীর্ঘদিন তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে না ডলি। ডলি চোখ তুলে তাকাল ওর দিকে। স্বল্প অন্ধকারেও মুনিম দেখল, ডলির চোখজোড়া পানিতে ছল ছল করছে। আনন্দে মনটা নেচেছিল বার বার। আর সে শুধু চেয়ে দেখছিল ডলিকে। ডলির এমন রূপ আর কোনদিন চোখে পড়েনি মুনিমের।” উপন্যাসের কাহিনী বিস্তারে আপোসহীন ছাত্রনেতা হিসেবে মুনিম ও আসাদের চরিত্র উজ্জ্বল। মুনিম পিতৃহীন, দরিদ্র বিধবা মায়ের সন্তান। মায়ের ¯েœহ-ভালোবাসা ও আপত্তি, সংসারের টানাপড়েনে কিংবা প্রবল আন্দোলনের সময়ে প্রেমাস্পদ ডলি’র প্রত্যাখ্যান কোন কিছুই আন্দোলনের গতিধারা থেকে তাকে বিচ্যুত করতে পারেনি। তাই মুনিম চরিত্রে রাজনৈতিক আদর্শনিষ্ঠা ও প্রণয়নিষ্ঠা উভয়ই সমান্তরাল গতিতে প্রবহমান। অন্যদিকে আসাদও একজন একনিষ্ঠ বিপ্লবী ছাত্রকর্মী। পিতার গালিগালাজ ও আর্থিক অসহযোগিতা তাকে আন্দোলনের মাঠ থেকে স্থানচ্যুত করতে পারেনি। রাজনৈতিক ক্রিয়াকর্মে সে নিজেকে সারাক্ষণ সক্রিয় রেখেছে। বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ থেকে শুরু করে কালো ব্যাজ ও কালো পতাকা বিতরণ ইত্যাদি কাজেও সে ছিল ক্লান্তিহীন। উপন্যাসের শেষের দিকে আসাদকে বেশ সক্রিয় মনে হয়। পুলিশের প্রবল বাধার মুখে ছেলেরা যখন ছত্রভঙ্গ তখন চিৎকার দিয়ে প্রতিরোধের জোর আহ্বান জানিয়েছে আসাদ ছাত্রদের। বায়ান্ন সালের মতোই সর্বাগ্রে যেন পুলিশের নির্যাতন সহ্য করে বন্দী হয়েছে। মামলার কোমল স্পর্শে আসাদের হৃদয় হয়েছে উদ্বেলিত। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সালমার বাসায় আশ্রয় নেয় আসাদ। শীতের গভীর রাতে জ্বলন্ত স্টোভের পাশে বসে আসাদ ও সালমা। “আসাদ বলল, সত্যি ভীষণ শীত পড়ছে। হাতজোড়া বরফের মতো ঠা-া হয়ে গেছে’ দেখুন বলে, হাত দুটো ওর দিকে এগিয়ে দিল আসাদ। অন্ধকারে মৃদু হাসল সালমা। হাত বাড়িয়ে ওর হাতের তাপ অনুভব করতে গেলে হাতজোড়া আলত ধরে রাখল আসাদ।” ডলি বিত্তশালী ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে। ছাত্রনেতা মুনিমের প্রেমিকা। ডলি যতটা ব্যক্তি মুনিমের ভক্ত, তার আদর্শের প্রতি ততটা বিরক্ত। ডলির জন্মদিনের উৎসবে শহীদ স্মৃতির সম্মানে নগ্নপদ যাত্রী মুনিমের উপস্থিতিতে ডলি বিব্রতবোধ করে। এই বিব্রতবোধের কারণ মুনিম নিজে না, তার নগ্নপদযুগল। ডলির উচ্চারণ, “এমন করে আমাকে অপমান করতে চাও কেন শুনি।” এরপর ডলি মুনিমকে তার বাবার স্যান্ডেল পরতে পরামর্শ দেয়। মুনিম কারো সামনে বিব্রত হোক, উপহাসের পাত্র হোক ডলি তা চায় না। প্রবল ব্যস্ততার কারণে ডলিকে সময় দিতে পারে না মুনিম। তাই ডলি হয়ে ওঠে বিক্ষুব্ধ। এই অভিমানী ডলি মুনিমের উপহার সামগ্রী ফেরত দিয়ে প্রেরণ করে রিফিউজ লেটার। এত অল্পসময়ের মধ্যে বা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রিফিউজ করা সত্যিই ভাবিয়ে তুলে পাঠককে। এরপর ডলি গ্রহণ করে বজলকে। বজলের সঙ্গে সর্বত্র তার অবাধ বিচরণ। মুনিম থেকে বজলকে ডলি বেশি ভালবাসে তা কিন্তু নয়; এটা ডলির অভিমানী হৃদয়ের বিশেষ খেয়াল। এক সময় বজলের কপটতা ও মিথ্যাচারীতা ডলি বুঝতে পারে। অবশেষে ডলি ফিরে আসে মুনিমের কাছে। কারাযাত্রী মুনিমকে একগুচ্ছ পুষ্পার্ঘ দিয়ে বরণ করে ডলি। সালমা মেডিক্যালের ছাত্রী, কারারুদ্ধ বিপ্লবী, রওশনের স্ত্রী। সে আন্দোলনে কঠোর, হৃদয়বীর্য কোমল। রওশন সালমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। সালমা তাকে ভালবেসে বিয়ে করেছিল। ১৯৪৮ এর ভাষা আন্দোলনে স্বামী হয়েছে কারারুদ্ধ। কারারুদ্ধ হয়েছে তার ছোট বোন ও ভাই। রাজশাহী জেলে গুলি করলে স্বামী রওশন হারায় দুটি হাত। প্রণয়দগ্ধ, বেদনাদগ্ধ সালমা তাই হয়ে ওঠে ভাষা আন্দোলনের একজন নির্ভীক আন্দোলন কর্মী। স্বামী রওশনের খ-িত হাত কখনো সেøাগানে উত্তেজিত হবে না, নিবিড় আলিঙ্গনে সালমাকে বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করবে না... এ কথা ভাবতে গেলেই সালমার হৃদয় মুচড়ে ওঠে। স্বামীর কারামুক্তির সম্ভাবনাও অনিশ্চিত। অভিভাবক হিসেবে সালমার চাচা বিবাহ বিচ্ছেদের পরামর্শ দিলে সালমা তাতে রাজি হয় না। অন্যদিকে, রওশনের চিঠিতেও অনুকূল সাড়া আসে না। এই দো-টানা পরিস্থিতিতে সালমা নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং হয়ে ওঠে স্বামী আদর্শচারী। তার চরিত্রের এই দৃঢ চেতনাই তার ভালবাসার খাটিত্ব প্রমাণিত হয়। আসাদকে সালমার ভাললাগার একটা কারণ হচ্ছে কথা বলতে গেলে হঠাৎ রওশনের মতো মনে হয়, বিশেষ করে ঠোঁট আর চিবুকের অংশটুকু। তবে সালমার এ ভাললাগার মধ্যে কোন অনুরাগ নেই, রয়েছে সালমার বিরহদগ্ধ সংবেদনশীল হৃদয়ের সাময়িক বিভ্রম মাত্র। বজলের প্রিয় বন্ধু মাহমুদ। গোয়েন্দা কর্মী মাহমুদ কবিতা লেখে। মানসিক দিক দিয়ে উভয় বন্ধুর আদর্শ অভিন্ন। তারা দু’জনই সাহিত্যিক ও নারী লিপ্সু। তবে রমণী রমণে মাহমুদের পারদর্শিতা সমধিক। সে ভালবাসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঢালী ক্লার্কের মেয়ে সালেহাকে আবার বিয়ে করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে সাহানাকে। এই প্রতিশ্রুতি আর অঙ্গীকার করে দু’টি মেয়েকেই করেছে সে কলঙ্কিত ও কলুষিত। যার ফলশ্রুতিতে সালেহা করেছে আত্মহনন আর সাহানা হয়েছে প্রত্যাখ্যাত। ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসে ছাত্রদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামী চেতনার পাশাপাশি সুবিধাভোগী রাজনৈতিক নেতাদের মতো মধ্যবিত্তসুলভ মানসিকাপুষ্ট ছাত্রছাত্রী স্বার্থান্ধ কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের কথা জহির রায়হান অকপটে বর্ণনা করেছেন সুনিপুণভাবে। প্রসঙ্গক্রমে বজলের একটি উক্তি উল্লেখ করা যায়। “আমরা হলাম সাহিত্যিক। সমাজের আর দশটা লোক, মিছিল আর শোভাযাত্রা বের করে পুলিশের লাঠি খেয়ে প্রাণ দিলে কিছু এসে যায় না। কিন্তু আমাদের মৃত্যু মানে দেশের এক একটি প্রতিভার মৃত্যু।” বজলের এই স্বার্থপর উক্তি থেকেই বুঝা যায়, সমাজ বা রাষ্ট্রে তার অবস্থান কোথায়? জহির রায়হানের জীবন দৃষ্টি রোমান্টিক। ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসে এই রোমান্টিক দৃষ্টির প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তিনি সফলভাবে। রাজনৈতিক পটভূমিতে এটি রচিত হলেও প্রণয় উপেক্ষিত নয়। ডলি মুনিমের প্রেমানুভূতি আর সালমা... আমাদের হৃদয়ানুভূতিই এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ। উপন্যাসের মূল কাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য উপ-কাহিনী। প্লট সংগঠনে লেখকের নৈপুণ্য সর্বত্র রক্ষিত হয়নি। চরিত্র অনুসারে ভাষা ব্যবহারে লেখক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সর্বোপরি, বর্ণনার আবেগের সঙ্গে ঘটনার প্রবহমানতা একাত্ম করে জহির রায়হান ভাষা আন্দোলনের তথা একুশের প্রথম উপন্যাস রচনা করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
Was this review helpful to you?
or
ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখার সময় পাননি। কিন্তু ভাষা আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন গল্প এবং উপন্যাস। এ বইটি তার লেখা ভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত উপন্যাস। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির পূর্বাপর তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন এই বইয়ে। উপন্যাসের প্লট অবশ্য ভাষা আন্দোলনের আরও কয়েক বছর পরের। সেই সময়ে বসে লেখক তার সৃষ্ট চরিত্রদের মধ্য দিয়ে পাঠককে নিয়ে যান বায়ান্নর ফেব্রুয়ারিতে। রানু, বেণু, সালমা, ফাহাদ, মুনিম, রসুল চরিত্র গুলো বাংলাদেশের তারণ্যের প্রতীক। সে তরুণদের নিয়ে গল্প লিখে জহির রায়হান এনেছেন একুশে ফেব্রুয়ারিকে। ’৫২ র প্রায় তিন বছর পর আবার যেন বায়ান্ন পুনর্বার সংঘটিত হয়। কিন্তু এখানেই সীমাবদ্ধ থাকেননি লেখক। মুনশিয়ানার সঙ্গে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন সে সময়ের সমাজকে। সে সময়ের মানুষের চাওয়া পাওয়া, সুখ দুঃখকে। তাই নামের মতো এ বইও আসলে ফাল্গুনের বার্তা পৌঁছে দেয়।
Was this review helpful to you?
or
‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসে এই রোমান্টিক দৃষ্টির প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তিনি সফলভাবে। রাজনৈতিক পটভূমিতে এটি রচিত হলেও প্রণয় উপেক্ষিত নয়। ডলি মুনিমের প্রেমানুভূতি আর সালমা... আমাদের হৃদয়ানুভূতিই এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ। উপন্যাসের মূল কাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য উপ-কাহিনী। প্লট সংগঠনে লেখকের নৈপুণ্য সর্বত্র রক্ষিত হয়নি। চরিত্র অনুসারে ভাষা ব্যবহারে লেখক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সর্বোপরি, বর্ণনার আবেগের সঙ্গে ঘটনার প্রবহমানতা একাত্ম করে জহির রায়হান ভাষা আন্দোলনের তথা একুশের প্রথম উপন্যাস রচনা করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
খুব ছোট দৈর্ঘ্যের একটি উপন্যাস কিন্তু জহির রায়হান বিষয়বস্তু উপস্থাপনে খুবই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ভাষা আন্দোলনের সময় তৎকালীন ছাত্র, সাধারণ মানুষ, পাকিস্তানিদের দোষরদের অবস্থা খুব সুন্দর ভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। উপন্যাসের মুল বিষয় বস্তু ভাষা আন্দোলন হলেও ভাষা আন্দোলন কে কেন্দ্র করে মানুষের ব্যাক্তিগত জীবনের খন্ড খন্ড চিত্রও এখানে প্রাধান্য পেয়েছে। স্বামীর জন্যে প্রতিক্ষা, বোনের জন্যে আন্দোলনে যাওয়া, দেশের জন্যে প্রেমিকাকে উপেক্ষা, টাকার জন্যে পাকিস্তানিদের পক্ষে বন্ধুর উপর গুপ্তচর বৃত্তি করা সহ আরও অনেক ঘটনা পাঠকের মনে এক মিশ্র আবেগ সৃষ্টি করবে। ভাষা দক্ষতা এবং ঘটনা প্রবাহ বর্ণনার জন্যে উপন্যাসিক প্রশংসার দাবিদার। তাই পাঠকদের জন্যে ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রিক সাহিত্য হিসাবে এই উপন্যাসটি Highly recommended.
Was this review helpful to you?
or
Novels about the language movement are rare And among those this is by far one of the best The storyline is slow at the initial stage but gradually picks up the pace However the beauty of this book is the portrayal of the sufferings and and sacrifices of the people with masterly skill
Was this review helpful to you?
or
আকাশের পশ্চিম দিগন্তে সূর্য অস্ত যাচ্ছিলো ধীরে ধীরে.. দিনের ক্লান্তি শেষে,রাত আর স্নিগ্ধতা নিয়ে আসছিলো পৃথিবীর বুকে। কর্মচঞ্চল শহর রাত্রির মুখোমুখি এই বিষন্ন বিকেলে হঠাৎ মৌনতার গভীর সমুদ্রে ডুব মেরেছিলো যেন। "আরেক ফাল্গুন- জহির রায়হান" হতে সংগৃহীত
Was this review helpful to you?
or
আসছে ফাল্গুনে আমরা দ্বিগুন হবো । জহির রায়হান অসাধারন অনবদ্য একজন সাহিত্যিক । তার লেখা ভাষা-আন্দোলনের উপর আরেক ফাল্গুন সেরা সৃষ্টি । সাহিত্যে এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক এই উপন্যাসের । ভাষার জন্য একদল তরুন তরুনী যুকব পৌড় সবাইকে নিয়ে একটি মহান আন্দোলন গড়ে তোলে তা চালিয়ে নেওয়া বাঁধার মুখে রুখে দাড়িয়ে জীবনকে মৃত্যুর সাথে মিলিয়ে দিয়ে আরো পস্তুত মৃত্যুতে পস্তুতি নিয়ে নিজের ভাষার জন্য লড়ে যাওয়া । কারফিউ ভেজ্ঞে খালি পায়ে দাঁড়িয়ে বলা এই ভাষা আমার মায়ের । এই ভাষার জন্য রক্ত আমার ভাইয়ের । তোমাদের এই এই জেলে আমাদের আটকে রাখতে পারবে না আসছে ফাল্গুনে আমরা দ্বিগুণ হবো
Was this review helpful to you?
or
আমার ক্লাসের বইয়ে জহির রায়হানের লেখা এই উপন্যাসের নাম জানতে পেরে রকমারিতে অর্ডার করি।উপন্যাসটি সত্যি সুন্দর।ভাষার জন্য মানুষ কত কিছু ত্যাগ করতে পারে বইটি না পড়লে জানতে পারতাম না।আর রকমারির সার্ভিস খুব ভালো।তাদের ডেলুভারি ম্যান গুলো ভদ্র।সবশেষে রকমারিকে জানাই ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
"আর একজন বললো, এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো।" এখানে আর একজনটা আসলে লেখকই উপন্যাসের চরিত্র হিসেবে বর্তমান। একবুক স্পর্ধা আর ভাষা শহীদদের প্রতি অক্ষয় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে পুলিশ অফিসারকে হুমকিস্বরূপ বলেছিলেন সামনে বছরের প্রভাতফেরীতে আমরা দ্বিগুণ হবো। আসলেই আমরা দ্বিগুণ হয়েছি, দ্বিগুণেরও দ্বিগুণ-হাজার লক্ষগুণ ছাড়িয়ে যাই আমরা প্রভাতফেরীতে। উপন্যাসের একটা লাইনও যে অমোঘ সত্যতে জাতীয় জীবনে প্রতিফলিত হয়, এটাই তার প্রমাণ। ১৯৫৫ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস পালনের প্রেক্ষাপটে জহির রায়হান কতৃক রচিত আরেক ফাল্গুন উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের জগতে ভাষা আন্দোলনের উপর নির্মিত প্রথম উপন্যাস। এই উপন্যাসের কাহিনীর স্থিতিকাল মাত্র তিনদিন দুই রাত। প্রথম দুই দিন এবং দুই রাত ধরে চলেছে একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের বিরামহীন প্রস্তুতি। এরপর তৃতীয় দিনে শহীদ দিবস পালনের মিছিলে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ এবং প্রতিবাদী ছাত্রদের গ্রেফতার করে দমিয়ে রাখার ব্যর্থ প্রয়াস চিত্রায়ণের মাধ্যমে জেলগেটের সামনে এ উপন্যাসের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল আরও একটা ভাষা আন্দোলন হতে যাচ্ছে বাংলার জমিনে, তার কারণ হচ্ছে তখনও পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারির আগে পরে ১৪৪ ধারা জারি থাকতো সারাদেশে। দিবসটি পালন করতেও সেই বাহান্ন সালের মতো ১৪৪ ধারা ভেঙে-ই পালন করতে হতো। লেখকও সেই সূত্র ধরে এগিয়ে নিয়েছেন উপন্যাসটিকে। সেই কলা ভবন, সেই মেডিকেল কলেজ, সেই ভেঙে ভেঙে সবাই একসাথে জড়ো হওয়া-হল হোস্টেলে প্রতিবাদ করা, সেই প্লেকার্ড, পোস্টার, সেই পুলিশ তার টিয়ারগ্যাস, সেই ফায়ারিং, গ্রেফতার। সবকিছু মিলিয়ে জহির রায়হান আবারও বাঙালি জাতিকে নামিয়েছেন ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত ময়দানে। হ্যাপি রিডিং...
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের লেখা আরেক ফাল্গুন উপন্যাস টা অনেক দারুণ!
Was this review helpful to you?
or
মুখটা লাল হয়ে উঠছিলো রাগে। দোরগোড়ায় পৌছতে বললো, না এলেই তো পারতে। আসতে তো চাইনি। জোর করে নিয়ে এলো। তাইতো বলছি, এলে কেন? চলে যাওনা। আহ বাচালে তুমি। চলে যেতে উদ্যত হলো মুনিম। পেছন থেকে চাপা গলায় ডলি চিতকার করে উঠলো। যাচ্ছ কোথায়? এতটুক লিখে দিয়ে যদি বলতাম বাকিটুকু জানবার জন্য আপনাকে উপন্যাস টা পড়তেই হবে, তাহলে হয়তো ধারনা হত-ধুর কি এসব প্রেমালু জিনিসপত্র জহির রায়হান লিখেছেন। অথচ আমি বলতে বসেছি আরেক ফাল্গুন উপন্যাসের কথা। ফাল্গুনের পলাশের রক্ত রক্ত স্তুপ যেখানে জমে রয়েছে লেখার রাস্তায় রাস্তায়-সেখানে এই কথাগুলো একমাত্র রিলিফ মাত্র। ভাষা আন্দোলন, বায়ান্ন না হয়েও সেই সাতান্ন সালেও যেন সেই বায়ান্নের শহীদ স্মৃতি। “হঠাত বরকত বললো, দাঁড়াও আমি একটু আসি। বলে গেটের দিকে যেখানে ছেলেরা জটলা বেধে তখনো শ্লোগান দিচ্ছিলো, সেদিকে একটু এগিয়ে গেলো সে। সূর্য তখন হেলে পড়েছিলো পশ্চিমে। মেঘহীন আকাশে দাবানল জ্বলছিলো। গাছে গাছে সবুজের সমারোহ। ডালে ডালে ফাল্গুনের প্রানবন্যা। অকস্মাত সকলকে চমকে দিয়ে গুলির শব্দ হলো” এই উপন্যাস নিয়ে তাই মিভিউ দিলাম না। আমি ছিলাম সেই কাপুরুষ শ্রেণীর মানুষ। যে হয়তো মিলিটারিরা যখন কমন রুমে ঢুকে পড়তে চেয়েছিল-একদল ছেলেমেয়ে তখন টেবিলের উপর টেবিল আটকিয়ে তাদের ঠেকাতে চেয়েছিল-তখন হঠাত করে তাক থেকে বই নিয়ে দুই একজন পড়তে শুরু করে দিয়েছিল-বেণুর চোখজোড়া জ্বালাপোড়া যেন সেই আমাকে ঘিরে। বইয়ের তুলনামূলক আলোচনায় যাবনা, তবে যারা নানা ধরনের উপন্যাস পড়েন, ভাষা আন্দোলনের নানা দিকের উপন্যাস খুজছেন-তাদের কাংখিত হতে পারে। একুশে ফেব্রুয়ারি জহির রায়হানের আরেকটি ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক উপন্যাস। বিসিএস পরীক্ষার্থীদের কাজে দিবে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জানুয়ারি রিভিউ নংঃ৮ বইঃ আরেক ফাল্গুন লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী মুদ্রিত মূল্যঃ একশত টাকা মাত্র ধরনঃ চিরায়ত উপন্যাস লেখক পরিচিতিঃ প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও চলচিত্র পরিচালক জহির রায়হান বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তার সাহিত্য কে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন আন্দোলন, ইতিহাস ও সামাজিকতার প্রেক্ষাপটে। তিনি তার উপন্যাস-গল্পে তুলে ধরেছেন ভাষা আন্দোনলের সক্রিয়তা। এছাড়াও তিনি সামাজিক উপন্যাস গুলোতে ফুটিয়েছেন গণমানুষের কথা। শুধু তাই নয় তিনি বাংলা চলচিত্রের প্রবাদ পুরুষ নামে পরিচিত। তার গল্প উপন্যাসের মতো তার চলচিত্র গুলোও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। কাহিনী সংক্ষেপেঃ জহির রায়হানের লেখাগুলো যতই পড়ছি,ততই মুগ্ধ হচ্ছি!সাথে একটা দীর্ঘশ্বাসও বুকের ভেতর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে,এই মানুষটিকে যদি আমরা এত অল্প সময়ে না হারাতাম,তাহলে হয়তো তার রচিত অসাধারণ সব সাহিত্যকর্ম গুলো বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করতো। আরেক ফাল্গুন।জহির রায়হানের লেখা ভাষা অান্দোলনের প্রেক্ষাপটে লেখা একটি উপন্যাস।ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক রচিত সাহিত্যকর্ম গুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা সাহিত্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই বইটিকে।পটভূমি ভাষা আন্দোলন হলেও গল্পটা ১৯৫২ সালের না,তারও পরের। সময় ১৯৫৫ সাল।ছাত্র জনতার মাঝে তখনও চাপা উত্তেজনা,শহীদদের লাশের গন্ধ তখনো আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি বাংলা,মূল্যায়িত হয়নি শহীদদের আত্মত্যাগ।বরং সরকারের দমন পীড়ন নীতি জোরদার করা হয়েছে।স্বৈরাচারী শাসকের পদতলে পিষ্ট হয়েছে শহীদদের সম্মানে নির্মিত শহীদ মিনার। সিপাহী বিদ্রোহের নির্মম স্মৃতি বিজরিত ভিক্টোরিয়া পার্কের বর্ননা দিয়ে ঔপন্যাসিক উপন্যাসের সূচনা করেন।এরপরই দেখা যায়,সাদা শার্ট,সাদা প্যান্ট পরিহিত নগ্ন পায়ে একটি ছেলে নবাবপুরের দিকে হেটে যাচ্ছে।এই ছেলেটিই মুনীম,আমাদের উপন্যাসের নায়ক।পৃষ্ঠা উল্টানোর সাথে সাথে আরো অনেকের সাথে দেখা মিলবে-সালমা,রেনু,বানু,নীলা,আসাদ,কবি রসুল প্রমুখ শত শত ছাত্র ছাত্রী।সবারই নগ্ন পা।কিন্তু কেন? এই বইয়ে অনেকগুলো চরিত্রের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন লেখক,তারপরও খেই হারায়নি কোথাও।মনে হচ্ছিল প্রত্যেকটি চরিত্রেরই প্রয়োজন ছিল,আর সবগুলো চরিত্রের ছোট ছোট অবদানগুলো বইটির আবেদনও বাড়িয়েছে বহুগুণ।ভাষা শহীদদের সম্মান জানানো আর রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে তাদের আন্দোলন।তিনদিন নগ্ন পায়ে চলা,রোজা রাখা,আর কালোব্যাজ ধারনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে থাকে তাদের শান্তিপূর্ন আন্দোলন। এর আগে জহির রায়হানের লেখা যে তিনটি উপন্যাস পড়েছি তাতে রোমান্টিকতার অনন্য সব উপকরন ছিল।এ উপন্যাসের তার ব্যতিক্রম হয়নি।লেখক অত্যন্ত দক্ষ হাতে প্রেম, ভালোবাসা,আবেগ,কপটতা,চতুরতা আর বিচ্ছেদের কিছু খন্ডচিত্র উপহার দিয়েছেন আমাদের। আন্দোলনের ময়দান থেকে প্রেম-ভালোবাসাই চলে গিয়েছিলাম!!চলুন আবার আন্দোলনে ফিরে আসি! ওদিকে,সরকার শহীদ দিবস পালন করতে দিবেনা।আর সে লক্ষ্যে মিছিল,মিটিং বেআইনি ঘোষনা করা হয়েছে।নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে রাজপথের স্লোগান।কিন্তু ছাত্র সমাজ কি থেমে থাকবে?না,কখনোই নয়। ২১ ফেব্রুয়ারির আগের রাতে বিভিন্ন কলেজ ভার্সিটির হলগুলোতে ছাত্র ছাত্রীরা অতন্দ্র প্রহরীর মত সারারাত জেগে রইল।কোরাস গান ধরলো কেউ কেউ- " ভূলবো না,ভূলবোনা একুশে ফেব্রুয়ারি।"স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হলো হলগুলোর ছাদ।রাতেই মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে আক্রমন করে পুলিশ,গ্রেফতার হয় অনেকে। পরদিন সকাল বেলা।বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শত শত ছাত্র ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জমায়েত হতে লাগলো।উত্তোলন করা হলো কালো পতাকা।সেখানেও পুলিশের নগ্ন হামলা।গ্রেফতার।কিন্তু প্রিজন ভ্যানে উঠেও তাদের স্লোগান- "বরকতের খুন ভূলবোনা,শহীদদের খুন ভুলবোনা।" কিংবা "শহীদ স্মৃতি,অমর হোক।" লিখতে গিয়ে চোখটা ছলছল করে উঠল।আমাদের এই দেশের জন্য,ভাষার জন্য,স্বাধীকারের জন্য ঐ সময়ের ছাত্র সমাজের কত ত্যাগই না স্বীকার করতে হয়েছে,আর আমরা?? আমাদের সময়ের ছাত্র সংগঠন আর ছাত্র নেতাদের ভূমিকা বা অবদানগুলো হয়তো অনেকগুলো প্রশ্নবোধক চিন্হ হয়েই থাকবে ইতিহাসের পাতায়। বইয়ের শেষের দৃষ্টপটটি দারুনভাবে উদ্বেলিত করে।যেখানে শত শত ছাত্র-ছাত্রীদের জেলে ঢুকানো হচ্ছে।এদের সংখ্যা দেখে আর নাম ডাকতে ডাকতে বিরক্ত হয়ে উঠছে জেলার।তখন কেউ একজন বলে উঠল- "এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি?আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুন হবো।" পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ বর্ণনার আবেগের সংগে ঘটনার প্রবহমানতা একাত্ম করে রচিত জহির রায়হানের এই উপন্যাসটি পড়ার অনুরোধ রইল সবার প্রতি।
Was this review helpful to you?
or
আরেক ফাল্গুন ১৯৫৫ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী পালনের গল্প। এই ১৯৫৫ সালেই আমাদের শহীদ মিনারের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু তরুণ তরুণী এক সকালে হঠাৎ করেই খালি পায়ে বেড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। স্থাপন করে কাগজ আর বাঁশের শহীদ মিনার। ক্ষণস্থায়ী এই শহীদ মিনার খুব বেশী সময় টেকেনা পুলিশের তোপের মুখে। যাদের একান্ত চেষ্টা আর সংগ্রামে আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত, পেছনের সেই মানুষগুলোর গল্প আরেক ফাল্গুন। উঠে এসেছে তাঁদের বিদ্রোহী চেতনা আর পরিণয় এর মাঝের দ্বান্দ্বিকতা। বাদ যায়নি আন্দোলনের লাভের গুড় খাওয়া মানুষগুলোর কথাও। শয়ে শয়ে প্রতিবাদী ছেলেমেয়েকে গ্রেপ্তার করে জেলে জায়গা দিতে না পেরে যখন ডেপুটি জেলার বিরক্তি প্রকাশ করে, ভিড়ের থেকে কেউ একজন বলে, 'এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো।' আমাদের বুড়িয়ে যাওয়া রোগটা মনে হয় এই এক ভবিষ্যৎবাণীতেই পুরোপুরি উপশম হয়ে যায়
Was this review helpful to you?
or
কিছু রক্ত তখন জেদী, কিছু বাতাস তাতে সিক্ত। স্বাধীনতা তখন শুধু একটা শব্দ থেকেও বেশি কিছু, বাস্তবতা থেকে একটু কম। বাংলা ভাষা তখন আকুতি, অধিকার, সাহসের অন্য নাম। কিছু ছাত্র তখন বিপ্লবী আর এখন এত বছর পরে অনুপ্রেরণা। জহির রায়হান তখন জীবিত, আর এখন ইতিহাস। যতটুকু জানি, কিছু শিক্ষক, ছাত্রদের সেই সময়কার দিনলিপির উপর ভিত্তি করে, '৫৫ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির উপর এ লেখা। প্রথম পৃষ্ঠা শুরু করে থমকে যেতে হয়। অন্তত পক্ষে আমি থমকে গিয়েছিলাম! হঠাৎ করে কাহিনী ধরা যায় না, আর যখন যায়, তখন ছাড়া সম্ভব হয় না। এত চরিত্রে ভরা বই কম পড়েছি।কিন্তু একটা চরিত্রকেও শেষ পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় মনে হল না। ডলির উপস্থিতি যেমন দরকার ছিল, ঠিক তেমনি ছিল শাহীনের। আমার কখনোই কোন বই পড়া শেষে চরিত্রের নাম মনে থাকে না। ভেবেছিলাম তাই এ বই ঠিক ধরতে পারবো না। জহির রায়হান দেখেই হয়তো পেরেছি, সানন্দে ও স্বাচ্ছন্দে। কিছু মানুষ তাড়াতাড়ি চলে যাওয়াতে আফসোস হয়, জহির রায়হান, সুকান্ত, তারেক মাসুদ.. যাই হোক, এত বছর পরে বইটা পড়ে মনে হল, এ শহর আর সে শহরেরর বাসিন্দাদের মাঝে এখন অনেক পার্থক্য। যারা রাস্তায় নামে তারা প্রাণের ভয় তুচ্ছ করে মাটিতে আর শুয়ে যায় না, বরং কয়েকটা শরীর সবসময়ের জন্য রোজ শুইয়ে দেয়, ঐ ঈশ্বরের নামে যে সবাইকে এক হাতে সৃষ্টি করেছিলেন, ঐ রাজনীতির নামে যা গণতন্ত্রের কথা বলে। এখন সেই সব উজ্জীবিত নারীও কম যারা ফ্যাশন বাদ দিয়ে এমনিতেই কালো শাড়ি জড়াবেন, অবশ্য রাত জেগে মোবাইলে (ক্যারিয়ার, পড়াশুনা ফেলে) প্রিয়তমের রান্না ঘরে বসে থাকা তথাকথিত প্রিয়তমা হওয়ার স্বপ্ন সাজানো নারীর সংখ্যা নেহাতই কম নয়! তবে এখনো সে রাত রোজ আমাদের ঢেকে দেয়। হৃদয়ে কিংবা বাতাসে পরিচিত গুঞ্জন এখনো আঁধারে কবিতা শুনায়, সে কবিতার কোথাও হয়তো কবির স্নেহ আছে, লুকোনো বিদ্রোহ আছে। আমি আগে শুনতাম, এখন শুনি না। অনেক ফাল্গুন তো গেল..! তবে কেউ কেউ হয়তো এখনো স্বপ্ন দেখে। এখনো!