User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
'হাজার বছর ধরে'র পর বরফ গলা নদী জহির রায়হানের আরেক কালজয়ী উপন্যাস। আমাকে যদি বাংলা সাহিত্যের সেরা উপন্যাসের তালিকা তৈরি করতে বলা হয় বরফ গলা নদীকে আমি শুরুর দিকেই রাখবো।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই, পড়ে খুব ভালো লাগছে আমার। যেকেউ নির্দ্বিধায় পড়তে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী ' সত্যি অসাধারণ একটা বই। এর কাহিনী এক মধ্যবিত্ত পরিবার কে ঘিরে; must read book! personal rating :9.1/10
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান মানেই সেরা এক কথায়।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই
Was this review helpful to you?
or
আহ...! ভাই প্রচ্ছদ ছাপানোর আগে কি আপনা পড়েন না নাকি ,বইয়ে এতো এতো বানান ভুল যা সত্যি চরম কদর্যতা। এমন সুন্দর সুফলা উপন্যাসটি যখন ফুরফুরা হৃদয়য় নিয়ে পড়তে বসি তখন এই বানান ভুলের কারনে সেই বইটি যথাযথ মর্যাদায় অদীক্ষিত হতে পারে না। যারা বই ছাপান তারা দয়া করে নিজের কাজটুকু করেন ফাকি দিয়েন না।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের লেখা আমার কাছে বারবার ই অসাধারণ লাগে।বরফ গলা নদীর ক্ষেত্রে ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।জহির রায়হানের লেখার সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টি হচ্ছে লেখকের প্রতিটি লেখার সাথে পাঠক নিজেকে রিলেট করতে পারে, মনে হবে এই তো আমার গল্প, আমাদের গল্প বলছে লেখক। বরফ গলা নদী পড়ার সময় আমার মনে হয়নি একবার আমি কোন বই পড়ছি।আমার কাছে মনে হচ্ছিলো প্রতিটি ঘটনা আমার চোখের সামনে ঘটছে এতটাই প্রাণবন্ত ও শক্তিশালী ছিলো প্রিয় লেখল জহির রায়হানের লিখনি তে।
Was this review helpful to you?
or
Valo.
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া জীবনের অন্যতম সেরা একটি উপন্যাস। মধ্যবিত্ত পরিবারের চলনধর্ম, জীবনধারা, প্রেম সকলকিছুর এক সমন্বিত প্রয়াস। একজন মানুষের জীবনে দুইবার প্রেম আসতে পারে কিন্তু সেটাকে আমরা সহজবোধ্য ভাবে মেনে নিতে পারিনা। দোষারোপ আর সন্দেহের অনলে আমরা তা বিলীন করে দিই। কিন্তু একটা সময় পর তা ঠিকই বুঝা যায়। জীবন কখনো থেমে থাকেনা, তাকে চালিয়ে নিতে হয়। সেটাও পেলাম। হাসি, কান্না, অভিমান সকলকিছু নিয়ে এক অপরুপ আয়োজন হলো বরফ গলা নদী।
Was this review helpful to you?
or
the books explores the sad truth about our world truly dose the world stops for anyone? the power that's drive the world around has it's limits? I loved this book and I will highly recommend it! sometimes novels books hold's the deepest realty that we are afraid to face.
Was this review helpful to you?
or
darun akta boi
Was this review helpful to you?
or
আমার বান্ধবী সাজেস্ট করেছিল পড়ার জন্য, তাই পড়েছি। আমি কাউকে সাজেস্ট করবো না।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের লেখা বইগুলোর মধ্যে শুধু "শেষ বিকেলের মেয়ে" বইটা ভালো।
Was this review helpful to you?
or
আমার কাছে উপন্যাসটি অনেক ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
very good. i like this book
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো লেগেছে। জহির রায়হানের বইগুলো পড়ে তার ভক্ত হয়ে গেলাম।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সবচেয়ে সেরা উপন্যাস এটি
Was this review helpful to you?
or
I 'm totally overwhelmed ..
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
GREAT
Was this review helpful to you?
or
উঁনার প্রথম এ বইটা পড়ি...একটা পরিবারের গল্প,মিশে যায় জীবনের সাথে।
Was this review helpful to you?
or
Ndabcb this book.
Was this review helpful to you?
or
very nice
Was this review helpful to you?
or
Very nice book. The way writer depicted crisis of a middle class family is nice.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই ছিলো
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের মতো একজন ঔপন্যাসিক পেয়েছি, যা আমাদের এখনো গর্বিত করে। বাংলাদেশের নিজস্ব কবিদের লিখা উপন্যাসগুলোর মধ্যে এ উপন্যাসটির অবস্থান নিঃসন্দেহে খুবই উপরে। অসাধারণ একটি বই। জহির রায়হানের অনবদ্য সৃষ্টি এ উপন্যাসটি। বইয়ের কোয়ালিটিও ভালো। রিকমন্ডেড। ❤️
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই।কখন ধাক্কা খাবেন বুজতেই পারবেন না।হয়তো আপনার অজান্তেই চোখ ভিজে যেতে পারে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ার পর মনের মাঝে যে হাহাকার তৈরি হয়! সেই হাহাকার মস্তিষ্ককে বিচলিত করে তুলে...
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
Very nice one
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই, জহির রায়হান মানেই একটা ভিন্নতা
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান একজন অসাধারণ লেখক। আর এই বইটি অ দারুণ। চাইলে পড়তে পারেন
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
yes
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী আমার পড়া সেরা উপন্যাস গুলোর মধ্যে একটি। জহির রায়হান এই উপন্যাসে মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের জীবনবোধ খুব সুন্দর ভাবে এই তুলেছেন।
Was this review helpful to you?
or
❤️
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবী কী থেমে থাকে কারও জন্য? অথবা থেমে থাকে আমাদের জীবন;কাছের মানুষকে হারাবার পরও? যাদের ছাড়া আজ মনে হয় বেঁচে থাকা অসম্ভব, তারা না থাকলেও তো আমরা বেঁচে থাকি। সকল দুঃখ কষ্টের ধ্বংসস্তূপ কী ধীরে ধীরে সময় শুষে নেয় না আমাদের জগৎ থেকে? আমরা নিশ্চয়ই আবারও হাসি, গান গাই, স্বপ্ন দেখি, বেঁচে থাকি, সৃষ্টি করি। এই শক্তি আমাদের ভাগ্যিস আছে। আছে বলেই পৃথিবীতে জীবন টিকে থাকে। . . . অসম্ভব আকর্ষন নিয়ে পড়েছি বইটা। কত কিছু ভাবায় জহির রায়হানের লেখাগুলো। খুব ভালো লাগল বইটা। বেদনার যন্ত্রনা সমান ভালো।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ ?
Was this review helpful to you?
or
I think,It's an exclusive & excellent book foever.
Was this review helpful to you?
or
যথাযথ ভাবে বই পেয়েছি ধন্যবাদ রকমারি'কে
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
onk valo boi ta
Was this review helpful to you?
or
মধ্যবিত্ত পরিবারের অপূর্ব এক কাহিনী। ফিনিশিংটা হার্ট টাচিং!
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান এর লেখা অসাধারণ একটি বই । বই টি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ।
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো ভালো লাগার একটা উপন্যাস। কাহিনি অনেকেই রিভিউ তে লিখেছেন। তাই আর লিখলাম না। তবে অনেক বার পরেছি উপন্যাসটা
Was this review helpful to you?
or
একবার পড়েই দেখেন ?
Was this review helpful to you?
or
"বরফ গলা নদী" বইটি সত্যিই জহীর রায়হানের অসাধারণ সৃষ্টিগুলোর অন্যতম একটি! বইটি পড়ার সময় যেন মনে হচ্ছিলো প্রতিটা চরিত্রের মাঝেই হারিয়ে যাচ্ছি, বিশেষ করে মাহমুদ চরিত্রটা ভালো লেগেছে,, আর মরিয়ম মেয়েটার জন্য বুকটা হাহাকার করে উঠছিলো! মধ্যবিত্ত সংসারের নির্মম বাস্তব চিত্র ফুঁটে উঠেছে, অর্থ আর অভাব যে একটি পরিবারের কয়েকটি জীবনের মোড় পরিবর্তন করতে করতে কোথায় নিয়ে যায় তা এই উপন্যাস পরেই উপলব্ধি করতে পারবেন!
Was this review helpful to you?
or
এটা মস্টারপিস
Was this review helpful to you?
or
মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির বাস্তবতা তুলে ধরে অসাধারণ এক লেখা । খুবই সাবলিল ভাবে লেখা , যখন পড়ছি বইটা ,প্রতিটা চরিত্রের মধ্যে ডুবে থাকা হইছে ।
Was this review helpful to you?
or
একটি সরু গলি ৷ চারপাশে নোংরা আবর্জনা ছড়ানো ৷ কলার খোসা,মাছের আমিষ,মরা ইঁদুর,ছেলেমেয়েদর পায়খানা -সব মিলেমিশে একাকার ৷ দুর্গন্ধে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না এমনি একটি গলির শেষে আস্তর ওঠা জীর্ণ শীর্ণ , ভাঙাচুরা লাল দালানে হাসমত আলী তার স্ত্রী সালেহা বিবি ও পাঁচ সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন ৷ পাঁচ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে মাহমুদ একটি ছাপাখানায় স্বল্প বেতনে সাব এডিটরের কাজ করেন,ছোট থেকে অভাব অনটনে বড় হওয়ায় সব সময় তার ভেতরে সমাজের ধনী শ্রেণীর প্রতি ছিলো এক ধরণের ক্ষোভ,শ্রেণী বৈষম্যের বিরুদ্ধ সব সময় সে ছিলো প্রতিবাদী ৷ আর তার বোন মরিয়ম টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ মেটাতো ৷ অভাব,অনটন,কষ্ট ছিলো পরিবারটির নিত্যসঙ্গী ৷ এমন সময় তাদের পরিবারে খোদার ফেরেস্তা রুপে মনসুর নামে এক ব্যক্তির আবির্ভাব হয়,যিনি হঠাৎ করে সবাইকে আপন করে নেয় ৷ মাহমুদ ছাড়া সবার সকলের প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন মনসুর ৷ একসময় মনসুরের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় মরিয়ম ৷ সুখে শান্তিতেই কাটছিলো মরিয়ম ও মরিয়মের পরিবারের কিন্তু এই সুখ তাদের ভাগ্যে স্থায়ী হয়নি ৷ একদিন হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া এক বিপর্যয়ে বদলে যায় সব কিছু ৷ মুহূর্তের মধ্যেই বদলে যায় সকল হিসেব নিকেশ ৷ বরফ গলা নদী জহির রায়হানের একটি কালজয়ী উপন্যাস ৷ নিম্ন মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের সুখ,দুঃখ,আনন্দ,বেদনা চাওয়া পাওয়া, অভাব অনটন সব কিছুই লেখক সুনিপণ ভাবে তুলে ধরেছেন উপন্যাসটিতে ৷ প্রিয় কিছু লাইন, জীবনটা কি কারো অপেক্ষায় বসে থাকে? আমাদেরও একদিন মরতে হবে ৷ তখনো পৃথিবী এমনি চলবে ৷ তার চলা বন্ধ হবে না কোনোদিন ৷ যে- শক্তি জীবনকে চালিয়ে নিয়ে চলেছে, তার কি কোনো শেষ আছে .... ?
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান এমনিতেই অনেক প্রিয় একজন লেখক। বই কোয়ালেটই ও অনেক ভালো ছিল।
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী: পাঠ প্রতিক্রিয়া বরফ গলা নদী আমার পড়া প্রিয় বইগুলোর একটি। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯৬৯ সালে। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, অভাব-আকাঙ্ক্ষা খুব সুন্দর এবং সাবলীলভাবে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন। বইটি পড়ার সময় আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত এক মধ্যবিত্ত পরিবারের আনন্দ-বেদনা'র অকৃত্রিম বিবরণ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। চরিত্র গুলো এতটাই জীবন্ত মনে হয় যে তাদের সাথে পরিচিত হতে পাঠককে কষ্ট করতে হয় না। বইটির অন্যতম চরিত্র মাহমুদ। বই পড়তে গেলে তার মুখে যে কথাটি প্রথম শোনা যায় তা হলো, "আমি যদি মারা যেতাম তাহলে তুমি কি করতে লিলি?" মাহমুদ বাড়ির বড় ছেলে, বি এ পাশ করেছে তিন বছর আগে। একটা পত্রিকায় সাব এডিটরের চাকরী তার, সামান্য বেতন। আদর্শ সাংবাদিক হবার আশা নিয়ে এই চাকরিতে যোগদান করেছিলো সে। কিন্তু তার সে আশা পূরন হয় না। এ সমাজে সত্য এবং সততার দাম নেই। একটু রগচটা স্বভাব। মাঝেমধ্যেই সে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়, তারপর কয়েকদিন বাড়ি ফেরে না। বড়লোকদের সে দুচোখে দেখতে পারে না। সমাজের এই শ্রেনীর প্রতি তার চরম ক্ষোভ। এরা ধনী হয়েছে গরীবের হক মেরে, দুর্নীতি করে। মাহমুদ এর সাংবাদিক হবার আশা এদের জন্যই ভেঙে গেছে। একবার সে রাগ করে পত্রিকার চাকরি ছেড়ে দেয়। কিছুদিন ঘুরে আবার একটি প্রেসে প্রুফরিডিং এর চাকরি নেয়। সে সাধ্যমতো সংসারে সাহায্য করে। মরিয়ম। মাহমুদের বোন। ত্রিশ টাকা মাইনের একটা টিউশনি করে সে। হেঁটে হেঁটে পড়াতে যায় আবার হেঁটে ফিরে আসে। মরিয়মের ছাত্রীর নাম সেলিনা। সেলিনাদের বাড়িতে এসেই তার মনসুর এর সাথে পরিচয়। মনসুর মরিয়মকে পছন্দ করে। মনসুর সেলিনার বড় বোনের দেবর। মরিয়মের প্রথমে মনসুর কে ভালো না লাগলেও সে একটা সহজ সম্পর্ক বজায় রাখে তার সাথে। মরিয়মের বান্ধবী লিলি, মেয়েদের স্কুলে সে শিক্ষকতা করে। মরিয়মের বাড়িতেই মাহমুদের সাথে তার পরিচয়। মরিয়ম-মাহমুদের আরো তিন ভাই বোন আছে, হাসিনা, খোকন এবং দুলু। হাসিনা ক্লাস এইটে পড়ে, চঞ্চল স্বভাবের উৎসুক কিশোরী। মাহমুদ বাড়ি না থাকলে হাসিনা তার বই ঘাঁটাঘাঁটি করে। বই ঘাঁটাঘাঁটি করার কারনটা মজার। একদিন সে বইয়ের ভেতর এক টাকার একটা নোট পেয়েছিলো। সেই আশায় সে প্রতিনিয়ত এই কাজ করে। মাহমুদ অবশ্য বিরক্ত হয় হাসিনার এই কাজে। ঝগড়া বাঁধলে মা থাকে মরিয়মের পক্ষে আর বাবা হাসিনার পক্ষে। হাসিনার সব আবদার এর জায়গা মরিয়ম। খোকন ও স্কুলে পড়ে আর দুলু হচ্ছে সবার ছোট। তাদের বাবা একজন সামান্য কেরানী। সংসারের খরচ তার একার পক্ষে চালানো সম্ভব হয় না। সন্তানদের শখ আহ্লাদ পূরন করতে না পারায় তিনি মনোকষ্টে ভোগেন। তাদের মা বিশুদ্ধ গৃহিণী। তারা থাকে একটা পুরোনো বাড়িতে। আস্তর ওঠা দেয়াল, নড়বড়ে ছাঁদ, টানাটানির সংসার। বৃষ্টি হলে ফাটল দিয়ে পানি পড়ে, ইট খসে পড়ে। বর্ষার মৌসুমে ছাঁদ মেরামত না করলে চলে না। নানা ঘাত প্রতিঘাত, অভাব অনটনের মধ্যেও তাদের দিন চলতে থাকে। এই অভাবের সংসারেও তাদের কিছু সুখের স্মৃতি তৈরী হয়, তা সুখ যোগায় তাদের মনে। মরিয়মের বিয়ে হয় মনসুর এর সাথে। একটি দুর্ঘটনা সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। মাহমুদ দিশেহারা হয়ে পড়ে, তার পাশে এসে দাড়ায় লিলি। তাদের জীবনও এগিয়ে চলে। জীবন চলে তার নিজ গতিতে, সে কারো জন্য থেমে থাকে না।এই জীবনীশক্তি'র যেনো কোনো শেষ নেই। আপনার বইপড়ার অভ্যাস থাক আর না থাক এ বইটি পড়তে আপনার খারাপ লাগবে না। জহির রায়হানের লেখায় এমন। কেমন যেন স্বস্তি পাই পড়তে গেলে। তা বলে পড়ার সময় রোমাঞ্চ কাজ করে না এমন না বরং ঘটনার বর্ণনা এমনভাবে উনি করেন আপনাকে বইয়ের শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে অনায়াসেই। তবে এ বইটি পড়ার সময় কখোনো ঠোঁটের কোণে হাসি এবং চোঁখের কোনে দুফোঁটা জল আসতে পারে।
Was this review helpful to you?
or
Jahir Rayhan er ek ononno srishti “Borof gola nodi”
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অনবদ্য একটা সৃষ্টি জহির রায়হান স্যারের। অসাধারণ লেগেছে বইটি।
Was this review helpful to you?
or
এককথায়, অসাধারণ একটা বই
Was this review helpful to you?
or
Just wow. Must read for book lovers.
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী উপন্যাসটি একটি সামাজিক বাস্তবতা ধর্মী মধ্যবিত্তের স্বপ্নের গল্প। যেখানে বেঁচে থাকাটা শুধু সুন্দর ভবিষ্যৎ হবে এই স্বপ্ন নিয়ে। বাড়ির বড় ছেলে পরিবারের জন্য তেমন কিছু করতে না পারলেও তার আর্দশ থেকে বিচ্যুত হয়নি। মরিয়মের টিউশনি করে সংসার চালানোর সংগ্রাম লেখকের বর্ণনায় চোখের সামনে ফুটে উঠে। মরিয়মের প্রশ্নটি আপনাকেও ভাবাবে যে, মানুষ কি দুবার প্রেমে পড়তে পারে না....? আর লেখক সব কিছুর সমাধান হিসেবে কি মৃত্যুকেই দেখিয়েছেন...?প্রশ্নটি আপনার মনে উঠলে তা অস্বাভাবিক হবে না। সবশেষে মাহমুদের বলা সংলাপগুলো শাশ্বত সত্যকেই ধারণ করে- কেন কাঁদছো লিলি। জীবনটা কি কারে অপেক্ষায় বসে থাকে?আমাদেরও একদিন মরতে হবে।তবে পৃথিবী এমনি চলবে।তার চলা বন্ধ হবে না কোনদিন।যে শক্তি জীবনকে চালিয়ে নিয়ে চলছে, তার কি কোন শেষ আছে লিলি...? বরফ গলা নদী সত্যি জহির রায়হানের মাস্টারপিস সৃষ্টি।
Was this review helpful to you?
or
Onek sundor 1ta boi.
Was this review helpful to you?
or
'বরফ গলা নদী' নিঃসন্দেহে চমৎকার লেখা জহির রায়হানের। অনবদ্য সৃষ্টি সব চরিত্র।
Was this review helpful to you?
or
এটি একটি কালজয়ী উপন্যাস । সেই কবে কখন পড়েছিলাম, কিন্তু আজো জীবন্ত সব চরিত্র যেন। বইটি খুললে সবাই সামনে এসে ঘিরে ধরে। জহির রায়হান এর লেখায় এমনটা ঘটবেই। এতোটা বাস্তব আর জীবনের চরম মূহুর্ত গুলো কলমের কালিতে ফুটিয়ে তুলতে খুব কম লেখক এ পারেন। বইটি পরে আপনি হাসবেন এবং কাঁদবেন। বাংলার কয়েক জন লেখক এই রকম লেখা লিখতে পারতেন তার মধ্যে রয়েছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, জহির রায়হান আর কবি জসীমউদ্দিন। এদের লেখা গুলোতে নেই কোনো অসম্ভব কল্পনা, তারা লিখতেন জীবন নিয়ে তাই বই গুলো জীবন্ত । জহির রায়হান এর লেখা মাএ কিছু গল্প উপন্যাস আমরা পেয়েছি। কালের স্রোতে হারিয়ে গেছেন তিনি। তিনি থাকলে হয়তো আমরা আরো কিছু লেখা পেতাম। বাংলার এই লেখককে মনে রাখবে মানুষ আমৃত্যু।
Was this review helpful to you?
or
Very nicely presented social story. I loved it.
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসটি পড়েই, জহির রায়হান আমার পছন্দের লেখকের একজন হিসেবে মনে স্থান লাভ করে। গল্পটিতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি পরিবারের নানা রকম উথান পতনের পরও কিভাবে এগিয়ে চলে সংগ্রামী জীবন, এরই মাঝে ভালোবাসা উকি দেয় কারো কারো মনে, সব কিছুই চলছিল ঠিকঠাক, হঠাৎ কি থেকে যে কি হয়ে গেল বই পড়তে পড়তেই যেন এক ধাক্কা খাবেন। এখানেই লেখকের স্বার্থকতা।
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী জহির রায়হান এর লেখা অনবদ্য এক উপন্যাস। অনুপম প্রকাশনী হতে প্রকাশিত । দামঃ ১৪১ টাকা । প্রতিটি বাক্যে থাকা আবেগের সাথে সুন্দরভাবে রচিত একটি গল্প। আমার চোখ অশ্রু এনেছে উপন্যাসটি । প্রতিটি বাঙালি উপন্যাস প্রেমীদের জন্য অবশ্যই পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীর এ চলার শক্তিই প্রত্যেকের জন্য একটি কবর খুড়ে রেখছে। মরে গলে পচে যাওয়া শরীর নয়, রক্ত-মাংস-হাড় নয়; বরং মুছে ফেলা অতীত আর উপড়ে ফেলা হৃদয় স্থান পায় সেখানে। এ কবরে আলো থেকেও আলো নেই, প্রাণ থেকেও প্রাণ নেই। আছে প্রিয়জনদের ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খা, স্বপ্ন দেখার বিলাসীতা আর জীবনকে আকড়ে ধরা অন্ধকার। তেনমই একটি কবরে বসবাস একটি পরিবারের, কিছু নামের। মাহমুদ, মরিয়ম, হাসিনা, দুলু, খোকন, সালেহা বিবি, হাসমত আলী। এখানে আছে আশা, আছে স্বপ্ন, আছে নিম্নবিত্তের জীবন। কিশোরী প্রেমের সলজ্জ সাধ, আদর্শের লড়াই আছে- খুব ভালো লাগলো
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম: বরফ গলা নদী লেখক: জহির রায়হান প্রচ্ছদ মূল্য: ১৬০ টাকা ছাড়কৃত মূল্য: ১৪১ টাকা কিছু কিছু বই থাকে যাকে কোনোভাবেই ব্যখ্যা করা যায় না কারণ বইগুলো এতটাই বাস্তবিক যে শুধু সে বইগুলো মানুষের ভাবনাকেই বৃদ্ধি করে। জহির রায়হানের লেখা বরফ গলা নদী সেরকম একটি বই। এই একটি ক্ষুদ্র বইয়ে আপনি দর্শন,মনোবিজ্ঞান, সব মোটামোটি সব কিছুর ব্যপারেই জানতে পারবেন। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কাহিনী আপনারা বইটিতে খুঁজে পাবেন। এই গল্পের প্রধান চরিত্র মাহমুদ যে ঘরের বড় ছেলে। বাবার স্বল্প বেতনে তাদের বিশাল পরিবার একদম চলতো না। পরিবারটিকে সুন্দর জীবন দেবার জন্য পত্রিকার এডিটরে চাকরি করে মাহমুদ ৫০ টাকা মাইনের বিনিময়ে। মাহমুদ সৎ ব্যক্তি হওয়ার পরেও শুধুমাত্র অর্থের প্রয়োজনীয়তার জন্য পত্রিকার প্রকাশকদের মিথ্যা খবর তাকে বাধ্য হয়ে চাপতে হতো। গল্পে আপনারা আরেকটি চরিত্র দেখবেন মরিয়ম যে বাড়ির বড় মেয়ে,অল্প বয়সে একটি ভুল করে ফেলে মরিয়ম। এই একটি ভুল তাকে তার স্বামীর সংসার থেকে বঞ্চিত করে। মরিয়ম নিজের পড়াশুনার খরচ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী পড়িয়ে জোগাড় করে নিতো। ছাত্রী পোড়ানোর সুবাধে মনসুরের কাছে সে পছন্দনীয় হয়ে পরে এবং এক পর্যায় তাদের বিয়ে হয়ে যায়। মনসুর ছিল অনেক ধনী পরিবারের ছেলে। মরিয়মের বড় ভাই মাহমুদের এই বিয়েতে কোন মোট ছিল না। কারণ মাহমুদ বড়লোকদের সৈতে পারতো না। মাহমুদ শুধু বোঝে সমাজে দুটি সম্পর্ক ধনী আর গরিব। সে সবসময় বলে মা ভাই বোন নিয়ে তার নাকি কোনো আলাদা অনুভূতি কাজ করে না কিন্তু পরিবারের মারাত্মক বিপদে সেই প্রথমে ভেঙে পড়ে। বিস্তারিত আর নাই বললাম তাহলে হয়তো আপনারা বইটি পরে আর মজা পাবেন না। বইটি সবাই অবশ্যই পড়বেন। যেই পড়বেন আশা করি আপনাদের মনে একটা ভালোলাগার দাগ কেটে যাবে বইটি। সব রুচির মানুষের এই বইটি ভালো লাগবে আশা করছি। সর্বশেষ লেখককে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের পাঠকদের এতো সুন্দর একটি বই উপহার দেবার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
দরিদ্র পরিবারগুলোর নিত্যদিনের জীবনছবির মধ্যদিয়ে এক মন বিগলিত ট্র্যাজেডির চিত্রায়ন করেছেন লেখক। অস্বাস্থ্যকর এক ছোট্ট গলিতে আধভাঙ্গা বাড়িতে কেরানী বৃদ্ধ বাবার পাঁচ সন্তান ও স্ত্রীর বসবাস। মাহমুদ শিক্ষিত,দুর্বার অথচ হতাশায় জর্জরিত এক যুবক যে পরিবারের বড় সন্তান হয়েও তার চাকরি আর বেতন দিয়ে পারেনা সংসারে যথেষ্ট সাহায্য করতে। মরিয়ম তার ছোট বোন,পরিবারের বড় মেয়ে যে তার সর্বাত্মক পরিশ্রমে নিজের পড়ার খরচ চালিয়ে নেয়ার পাশেই তার অষ্টম পড়ুয়া ছোট বোন হাসিনার আবদার ও সাংসারিক আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি মায়ের ঘরোয়া কাজেও সাহায্য করতো । হাসিনা বাড়তি বয়সের মেয়ে,তার জীবনে বায়নাগুলো তার বয়সের তালে চলছিলো উদ্দাম গতিতে। মরিয়মের ছাত্রী সেলিনার মারফতে তারই এক আত্মীয় মনসুরের সাথে পরিচয় না চাইতেও এক সময়ে ভালোলাগাতে রুপান্তরিত হলেও মরিয়ম সে ব্যাপারে এগোতে চায়নি তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা তথা সবচাইতে বড় ভুল জাহেদ এর কারণে। সময়ের সাথে মনসুরের স্বভাবগত মাধুর্য বাড়ির সকলের পছন্দ হলে মরিয়মের সাথে বিয়ে হয় মনসুরের যদিও মাহমুদের একান্ত আপত্তি ছিলো মনসুর বড়লোক হওয়ায়।কারণ তার মনে হতো বড়লোকেরা গরীবদের রক্ত চুষে প্রতিপত্তি জমায়। মনসুরের থেকে আর্থিক সহায়তায় পরিবারে সুখের দিন পা রাখতে চলছিলো এমনই সময় মনসুরের কাছে জাহেদ আর মরিয়মের সম্পর্কের অতীত খুলে আসলে সে বদলে যেতে লাগে। তারা ভাষায়-"জীবনে কী প্রেম দুবার আসে!" এই ভীতি আর রাগ-অভিমানে নেমে আসে মরিয়মের সংসারে অসুখ। যার ফলে অপূর্ণই থেকে যায় মরিয়মের পরিবারের জন্য নতুন বাড়ি করে দেবার মনসুরের করা প্রতিশ্রুতি। মরিয়ম বাড়ি ফিরে গেলে কাউকে বুঝতে দেয় না তার সাংসারিক কলোহের কথা। ঐ রাতটাই বুকভরা আশা নিয়ে ঘুমন্ত ছয়টি প্রাণের শেষ রাত হয়ে দাড়ায় মেরামতের অভাবে অল্পপ্রাণ ছাদ ধসের কারণে। বাবা-মায়ের নতুন বাড়ি পাবার আশা,হাসিনার জীবনের প্রথম ভালোবাসার আলোড়ন জাগানো প্রথম চিঠি,মনসুরের কাছে মন খুলে কথা বলে মনোবিষাদ শেষ করে নিতে পারার আশা গুলো লাশ হয়ে ছিড়ে পড়ে জীবনের পাতা থেকে। মাহমুদের জীবনে খুব একটা দামবিহীন সম্পর্কগুলোই তার আকঁড়ে ধরার খুঁটি ছিল তা সে কখনো প্রকাশ না করতে চাইলেও গোপন রইলোনা। পাঁচটি বছর পর অন্যতম নায়িকা প্রধান চরিত্র লিলি(মরিয়মের বান্ধবী)'র ভালোবাসা ও পরম যত্নে গড়ে ওঠে মাহমুদের নিজের সংসার। মনসুরের জীবনে সেলিনা হয়ে আসে মরিয়মকে করা তার প্রশ্নের উত্তর হয়ে। হ্যাঁ,জীবনে প্রেম দুবার হয়। জহির রায়হান আর তার বরফ গলা নদীর সাথে অবশ্যই হয়।
Was this review helpful to you?
or
চমকে উঠে চোখ মেলে তাকালো সে। সমস্ত শরীর শিরশির করে কাঁপছে তার। বুকটা দুরুদুরু করছে ভয় পেয়েছে মাহমুদ। তবু আশপাশে একবার তাকালো সে। মাকে যদি দেখা যায়। কিন্তু কেউ তার নজরে এলে না। এলো একটা আরশোলা, বইয়ের আলমারিটার ওপর নিশ্চিন্তে হেটে বেড়াচ্ছে সেটা।তার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে রইলে মাহমুদ। একটু পরে পাকঘর থেকে একগ্লাস গরম দুধ নিয়ে ঘরে এলো লিলি।ওকে দেখতে পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হলো মাহমুদ। একটু কাল নিরব থেকে বলল, আমি মরলাম না কেন, বলতে পারো লিলি? ঢাকা শহরের গলি ঘুপচির ময়লা ফেলার স্তুপের ঠিক পেছনে বাবা মা কয়েকজন সদ্যসের পরিবার। বড় ভাই ছাপা কারখানায় কাজ করে বোনেরা স্কুলে যায় মোটামুটি চলে যাচ্ছে দিনগুলো কি এমন হলো যে,উপন্যাসের শেষে কেন্দ্রীয় চরিত্র মাহমুদ মারা গিয়েও মরে নি❗❗❗ বই; বরফ গলা নদী লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃঅনুপম পৃষ্ঠাঃ৯৬ #জহির_রায়হান এর মতো এমন লোকটি কেন নিখোঁজ হলেন। হাত দিয়ে ছোঁয়া যায় এমন বাস্তবধর্মি লেখা তিনি লেখতেন। ♡♡♡♡চমত্কার বই ♡♡♡♡
Was this review helpful to you?
or
যে কোনো লেখক আগে ভূমিকা লিখেন। মাঝখানে সারাংশ বা মূলবিষয় এবং শেষে উপসংহার। কিন্তু, জহির রায়হান এ বইটিকে ভিন্ন কৌশলে সাজিয়েছেন। তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। কিভাবে করেছেন জানতে হলে পড়ে ফেলতে পারেন বইটি।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের এই উপন্যাসটি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের একটি জীবন চিত্র। অভাব-অনটন দুঃখ কষ্টে ভরা জীবনের চিত্রপট। প্রথম দিকে উপন্যাসটির চরিত্রগুলোর মধ্যে হারিয়ে গেলও শেষের ট্রাজেডি টা অনেক কষ্টের এবং শিক্ষনীয়। যাই হোক না কেন উপন্যাসিক লিখেছিলেন জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না ।
Was this review helpful to you?
or
'বরফ গলা নদী’ উপন্যাসে লেখক জহির রায়হান তুলে ধরেছেন মধ্যবিত্ত পরিবারে নিজের খেয়াল মত বেঁচে থাকা অনেক দুঃসাধ্যতা। এখানে বেঁচে থাকতে হলে আগে ভাবতে হয় পরিবারের সবার কথা। এরপর যদি নিজের ভাল থাকার মত কিছু থেকে থাকে তবে তাই নিয়ে বাঁচতে হয়। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কোনরকমে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার চরম বাস্তবতা আছে এতে। বাবার বেতনের টাকায় চলে না এতগুলো মানুষের খাওয়া, পড়াশোনা, বাড়ী ভাড়া। নড়বড়ে ঘর, মায়ের তালি দেয়া শতছিন্ন ছেড়া শাড়ী, ছোট ভাই-বোনের ছোটখাটো আবদার পুরণ করতে না পারা এক সংগ্রামী জীবন মাহমুদের। কাহিনীর শেষটা অবধি লেখক তুলে ধরেছেন সেই সংগ্রামেরই কথা।
Was this review helpful to you?
or
আমি সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। উঠে মনটা ভারী হয়ে রইলো। কি যে করবো বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ এ বইটা হাতে নিলাম। নিয়ে পড়তে শুরু করলাম। সাধারণত আমি ১০-১২ মিনিটের বেশি বই পড়তে পারি না। কিন্তু এই বইটা হাতে নেয়ার পর যতক্ষণ শেষ না করতে পারলাম ততক্ষণ আমি বইটা ছাড়তে পারলাম না। এইবার বইটা সম্পর্কে বলি, বইটি এক কথায় অসাধারণ ও চমৎকার। আর লেখক সম্পর্কে বলার ভাষা আমার নাই। জহির রায়হান একজন বিখ্যাত বাংলা কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।
Was this review helpful to you?
or
ধোয়াশাচ্ছন্ন জীবনসংগ্রামের চারপাশে এরকম অসংখ্য ধুসর আশা নিয়ে বেঁচে থাকা হাজারো নিম্নমধ্যবিত্তদের একজন মাহমুদ। স্বপ্ন ছিলো নামকরা একজন সাংবাদিক হওয়ার। কিন্তু চরম বাস্তবতার কাটাতার ঘেরা সংসার সমরাঙ্গন অল্পতেই তার আকাশচুম্বী সে স্বপ্নকে ধুলিসাৎ করে দেয়। উচ্চবিত্ত কিছু লোলুপ দৃষ্টি তার আঁকড়ে রাখা আশাকে আর জাগতে দেয় না। আর তাই সে তার সমাজটাকে আবিষ্কার করে দু-ভাগে বিভক্ত। এক, উচ্চবিত্ত এবং দুই, নিম্নবিত্ত। উচ্চবিত্তদের মধ্যে সে মনুষ্যত্ত্ববোধ খুঁজে পায় না। ওরা তার পরম প্রতিপক্ষ। যদিও সে জানে সে ওদের টিকিটিও নাড়াতে পাড়বে না। আর সেই উচুস্তরেরই একজন, মনসুর, মাহমুদের বোন মরিয়মের প্রেমে পড়ে যায়। প্রত্যাশিতভাবেই, মাহমুদ ব্যাপারটা জানলেও চরম বিরোধিতা করে আসে। তবুও শেষমেষ বাবা-মার ইচ্ছায় মনসুরের সঙ্গেই বিয়ে হয়ে যায় মরিয়মের। কিন্তু, মনসুর আর মরিয়ম নিজেদের অবস্থানে ঠিক কতদিন সুখী থাকতে পারে? সেদিন বাড়িতে না আসলে কি মরিয়ম বেঁচে যেতে পারতো? নাকি এটা শুধুই কাকতালীয় ছিলো? ঘটনার আকস্মিকতায় মারাত্মকভাবে বিমর্ষিত হয়ে পড়ে মাহমুদ। ছিটকে পড়তে শুরু করে তার স্বাভাবিক জীবনধারা থেকে। আর ঠিক এ সময়ে পাশে এসে দাড়ায় লিলি। কিন্তু লিলির এই সহমর্মিতা ঠিক কতটুকু কার্যকর হয়? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া: বাস্তবতায় ঘেরা মাহমুদের জীবনসংগ্রামের গল্প হৃদয়কে ছুয়ে যেতে বাধ্য। উপসংহার দিয়ে শুরু করা উপন্যাসটি শেষ দিকে চমৎকার একটি ধাক্কা দেয়। কিন্তু সমগ্র গল্পটিতে মাহমুদের আরেক ছোটবোন হাসিনা চরিত্রটি অবান্তর মনে হয়েছে। আর তার রোমান্টিকতা তো আরও একঘেয়ে লেগেছে। তবে, নিঃসন্দেহে গল্পটি অত্যন্ত চমৎকার ও অনন্য।
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসে সুন্দর একটা পরিবারের কথা বলা হয়েছে।যে পরিবারটা নিম্ন মধ্যবিত্ত। এই পরিবারের কর্তা হাশমত আলী। যে কেরানির চাকরি করত,কিন্তু এখন অবসর নিয়েছেন।আর এখন পরিবার দেখাশুনার দায়িত্ব পড়েছে মাহমুদের উপর। মাহমুদ এই পরিবারে বড় ছেলে। সে পত্রিকায় কাজ করে।বেতন খুব বেশি পায় না।মাহমুদরা পাঁচ ভাই বোন। মাহমুদের ছোট দুই বোন আছে।একজন মরিয়ম।এইস এস সি পরীক্ষা দিয়েছে।আর একজন হাসিনা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এই পরিবার এমনভাবে বেঁচে আছে,যাদের প্রতিনিয়ত টানাটানির মধ্যে চলতে হয়।তারা এমন একটা বাড়িতে থাকে , যে বাড়ি যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। যে বাড়ির ছাদে উঠলে ইট পড়ে যায়।এরওকম একটা বাড়িতে থাকে তারা। মরিয়ম নিজেই টিউশন করে তার পড়াশুনার খরচ বহন করে।মাহমুদের একটা মতামত আছে।সে বরলোকদের দেখতে পারে না,তার মতে বরলোকরা অন্যের টাকা মেরে বেশিরভাগ বরলোক হয়।এভাবেই উপন্যাস চলছে।মরিয়ম যে বাসায় পড়ায়। মরিয়মের ছাত্রীর নাম সেলিনা।সেলিনার বড় বোনের দেবর মুনসুর।মুনসুর মরিয়মকে অনেক পছন্দ করে এবং বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল মরিয়মের বাড়িতে।মরিয়মদের বাড়িতে সবাই রাজি হয় শুধু মাহমুদ ব্যতীত কারণ মুনসুরদের আর্থিক অবস্থা অনেক ভালো।অবশেষে বিয়ে হয় মুনসুরের সাথে মরিয়মের ।এভাবেই উপন্যাস এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সময় পরিস্থিতি বদলে দেয়।মুনসুর একদিন মরিয়মকে বাপের বাড়ি তাড়িয়ে দেয়।কিন্তু কেন? মাহমুদদের পরিবার কি এভাবেই চলতে থাকে নাকি বদলে যায়? সময়ের সাথে মাহমুদের পরিবারের কি কোনো ট্রাজেডি আসে? ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া : যারা ট্রাজেডি পছন্দ করেন,তাদের অবশ্যই ভালো লাগবে।এছাড়া আমার মনে হয়, অন্যরকম একটা বাস্তবধর্মী উপন্যাস।বই টা অনেক সুন্দর ভাবে লিখেছেন জহির রায়হান।একদিকে যেমন একটা পরিবারের স্বপ্ন অন্যদিকে সময়ের পরিবর্তে মানুষ অনেক কিছু হারায়।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ বরফ গলা নদী লেখকঃ জহির রায়হান ভাষাঃ বাংলা ঘরনাঃ চিরায়ত উপন্যাস বইয়ের পৃষ্ঠাঃ ৯৬ বিনিময় মূল্যঃ ১৩২ টাকা প্রকাশনীঃ অনুপম ব্যক্তিযোগ অনুযোগঃ ৪.৪/৫ “মা আর কোনো প্রশ্ন করলেন না, ভাতগুলো মজে এসেছে। এখনি নামিয়ে ফেন ঢালতে হবে। তারপর জলের কড়াটা চড়িয়ে দিতে হবে চুলোর উপর। মরিময় পাকঘরে এসে ঝুঁকে পড়ে বললো, এক কাপ চা দিতে পারবে, মা?” আহ-হা, বেদনাভরা এক উত্তর, প্রতিত্তর! সমাজ, নিম্নবিত্ত পরিবার!! উপরের অংশটুকু প্রিয় লেখক, প্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং প্রিয় সৃজনী... জহির রায়হানের অনবদ্য এক উপন্যাস, বরফ গলা নদী, এর অংশবিশেষে। যেখানে তিনি নিম্ন-মধ্যবিত্ত সমাজের বৈচিত্র্যহীন জীবনের ঘটনাবলীর সুশৃঙ্গল ইতিবৃত্ত টেনেছেন, যা বস্তুত এই উপন্যাসের মূল রসদ। জীবন বাস্তবতার লেখক হিসেবে সুখ্যাতি পাওয়ার এই লেখক অনন্য, সৃষ্টিশীল আরেক সাহিত্যিক, শহীদুল্ল্যাহ কায়সার, এর অনুজের। যদিও এখানে শহীদুল্ল্যাহ কায়সারের কোনো প্রতিরূপ নেই। সমাজের একটি বাস্তব দর্পনে প্রতিবিম্ব হয়েছে এই উপন্যাস। একটা পরিবারের শুরু থেকে পথচলা কোথায়, কোথায় এসে শেষ হচ্ছে... লেখক এক লেখনীতে প্রকাশ করেছেন অসাধারণভাবে। লেখকের সৃষ্ট প্রতিটা চরিত্র পাঠকের সামনে উপস্থিত হবে নিজ নিজ ভঙ্গিমায়। জহির রায়হান একাধারে ছিলেন গল্পকার, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং ঔপন্যাসিক। তার সৃষ্ট আরও অনেক উপন্যাস আমরা পড়েছি। মুগ্ধ হয়েছি একাধিকবার। ‘বরফ গলা নদী’ও তার ব্যতিক্রম নয়। মধ্যবিত্ত পরিবারে নিজের খেয়াল মত বেঁচে থাকা অনেক দুঃসাধ্য একটা ব্যাপার। এখানে বেঁচে থাকতে হলে আগে ভাবতে হয় পরিবারের সবার কথা। এরপর যদি নিজের ভাল থাকার মত কিছু থেকে থাকে তবে তাই নিয়ে বাঁচতে হয়। মাহমুদ প্রতিবাদী যুবক। অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে পারেনা সে, সবসময় সততার আদর্শে চলে। পত্রিকা অফিসে চাকুরি করতে এসে সে জানতে পারলো, ‘এখানে টিকতে হলে আদর্শ ধরে রাখা যাবে না।’ সব অন্যায় ধামাচাপা দিয়ে, তোষামোদ করে খবর বানাতে হবে। এসব দেখতে না পেরে চাকরিটা ছেড়ে দেয় সে। অন্যদিকে, মরিয়ম এক বড়লোকের বাড়িতে সেলিনা নামের এক মেয়েকে পড়াতো। সেলিনার বড়বোনের দেবর মনসুরের সাথে সেখানে পরিচয় হয় মরিয়মের। হাসিনা এক উচ্ছ্বল কিশোরী। তার চোখে রঙিন স্বপ্ন। যদিও জীবনের চরম দারিদ্র্যতায় তার সব স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে যায়, তবুও সে পরাজিত হয় না। জীবন যুদ্ধে নিজের মতো করে রাজ্য জয়ে এগিয়ে যায় উদ্দেশহীন সম্মুখপানে। নিজের ব্যক্তিগত পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে গেলে অনুভূতির রাজ্যে হারিয়ে যাবো। কারণ, বাংলা সাহিত্যের লেখনিতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যত লেখক, কবি, সাহিত্যিক এসেছেন, আছেন উনাদের সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়ে হৃদকপটে জায়গা করে নিয়েছেন ‘জহির রায়হান।’ লেখক সম্পর্কে ইন শা আল্লাহ অন্য একদিন কাব্যপাঠ বা সাহিত্যপাঠ লিখবো! উপন্যাসটা শেষ করে ঝিম ধরে বসে থাকলাম। মনে হচ্ছে আমার ভেতরে নিদারুণ কষ্টের বরফ জমে গেছে! বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই লাল বাড়িটি। চাকচিক্যে মোড়া নাগরিক সভ্যতার এক শহরেরই কোন কোনে, অন্ধকার, দুর্গন্ধময় গলি ভেতরে পলেস্তারা খসে পড়া লাল দালানে থাকেন হাসমত আলী ও তার পরিবার। স্যাঁতসেঁতে, পুরানো ফুটো ছাদ, করুণ চোখের মরিয়ম কিংবা একবুক আশা নিয়ে থাকা হাসিনা। হাসমত আলীর স্ত্রী সালেহা বিবি। দুই ছেলে মাহমুদ আর খোকন । মাহমুদ পরিবারের বড় ছেলে। খুব কম বেতনে চাকরী করে একটি পত্রিকা অফিসে। বড়লোকরা হয়ে ওঠে তার চক্ষুশূল। মাহমুদের বন্ধু শাহাদত, বন্ধুপত্নী আমেনা, নাঈম। সর্বমোট ডজনখানেক চরিত্রের উপস্থিতি আছে এই উপন্যাসে। জীবনের কিছু চরম সত্য যে আড়াল করতে হয়, তার পুরোপুরি ভুক্তভোগী হচ্ছে স্বামী-সোহাগ বঞ্চিতা মরিয়ম। বাস্তবিক অর্থে, কিছু কিছু অনুভূতি কখনোই প্রকাশ করা যায় না। এই উপন্যাসটি পড়ে বুকের মধ্যে এমন উথালপাতাল অনুভূতি হয়, যা সত্যিকার অর্থে প্রকাশ করা অসম্ভব! কথাসাহিত্যের শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী জহির রায়হানের ‘বরফ গলা নদী’ উপন্যাসটি সাহিত্যপ্রেমীদের পড়ার সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি.....
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি পারিবারিক কাহিনি দিয়ে সাজানো। একটি পরিবারে যা যা থাকে সবই আছে এখানে। আছে টানাপোড়ন, আধিপত্য, বৈষম্য, আত্মমর্যাদা, প্রেম, খুনসুটি, হাসি-আনন্দ। মাহমুদ ও হাসিনা এই চরিত্র দুটি মন্ত্রমুগ্ধ করার মতো। এটি অনায়াসেই অবসর উদযাপন করার মতো একটি বই। বরফ গলা নদী উপন্যাসটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ দুঃখের গল্প। লেখক জহির রায়হান খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের বেঁচে থাকা
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী উপন্যাসটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ দুঃখের গল্প। লেখক জহির রায়হান খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের বেঁচে থাকার যুদ্ধটা। উপন্যাসের নায়ক মাহমুদ পড়ালেখা জানা ছেলে হওয়া সত্ত্বেও যোগ্যতা অনুসারে জীবিকা পায় না। এক পত্রিকা অফিসে চাকরি করে সে। রাতে যায়, ফিরে সকালে। কখনো ঝড়বৃষ্টির রাতেও বেরোতে হয়। তার জীবনেও এক নারীর আবির্ভাব হয়। নায়িকাকে কি সে পাবে কখনো? উত্তর পাবেন বইতেই। এদিকে মাহমুদের পরিবারেও সুখের হাতছানি আসে একদিন। কিন্তু বইয়ের শেষাংশে ঝড় আসে৷ সেই ঝড় কি তাদের সেই সুখের দিনের আভাসকে মুছে দেবে? পড়ুন এক নিদারুণ বাস্তবতার উপন্যাসটি।
Was this review helpful to you?
or
খুবই সুন্দর উপন্যাস, অনেক কিছুই বাস্তবিক, মানুষ জীবনের গুরুত্ব থাকা না থাকা, মনে হচ্ছিলো সব চরিত্র আমার আশে পাশে ঘুরপাক খাচ্ছে
Was this review helpful to you?
or
এটি একটি সামাজিক উপন্যাস । গল্পটি লেখা হয়েছে পারিবারিক কাহিনী নিয়ে ।বাস্তবতা,টানাপোড়ান..বুর্জোয়াদের আধিপত্য ,অর্থনৈতিক বৈষম্য, আত্মমর্যাদা ,প্রেম ,হাসি আনন্দের মিশেলে চমৎকার একটি বই । এর মাঝে প্রেমের খুনসুটিও আছে । ছোট একটা বইয়ে এক কিছু কিভাবে এত সুন্দর করে গল্প সাজিয়েছেন …!! মাহমুদ চরিত্রটি আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে ।ঠকেছি বইটি এত দিন না পড়ে । এত সহজ সরল ভাষায় কি সুন্দর উপস্থাপন । সত্যিই প্রশংসার দাবিদার । আমার মতে জহির স্যারের সেরা বইগুলোর মধ্যে পাঠকপ্রিয়তায় শীর্ষে থাকবে । জানি অনেকে পড়ছেন ..তবু যারা পড়েন নি ,পড়ে ফেলুন ।
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীর অনেক নদীই বরফ গলা পানি থেকে উৎপন্ন হয়। আর কিছু নদী হয় চোখের জলের। সে জল নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের। এ উপন্যাসটিও সে রকম মানুষদের নিয়ে লেখা যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। কিন্তু জীবনে শিক্ষার ছোঁয়া থাকার কারণে তারা নিম্নবিত্তর মতো হাত পাত্তে পারে না। নোংরা এক গলিতে পাঁচশ পরিবারের মধ্যে ভাঙাচোরা ভাড়া বাসায় বসবাস হাসমত আলীর। তার স্ত্রী সালেহা, ছেলে মাহমুদ, খোকন, দুলু, মেয়ে মরিয়ম, হাসিনা এদের নিয়ে তার সংসার। কেরানী হাসমতের দিন যাপন আর জীবন বাস্তবতার আখ্যান লিখেছেন জহির রায়হান। বেঁচে থাকা আর মানুষের মতো বেঁচে থাকার মাঝে দারিদ্র্য, বেকারত্ব আর ক্ষমতাসীন মানুষের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার এ গল্প লোনা ধরা দেয়ালের কথা বলে।
Was this review helpful to you?
or
এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করলাম। একটা পরিবারের খুব ছােটখাট ব্যাপারগুলাে এত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। মানবমনের চিন্তাধারা তার জীবনধারার উপর কেমন প্রভাব ফেলে সেটা বােঝার জন্য হলেও বইটা পড়া উচিত। আর কখন কী হবে সেটার অনিশ্চয়তা আপনাকে বইটা একটানে পড়ার জন্য প্রলুব্ধ করবে, আমাকে করেছে। আর শেষটা ভালাে লেগেছে। সাধারণত এরকম পরিণতির কাহিনী আমার একদমই ভালাে লাগে না। এটা ব্যতিক্রম। আরাে পড়ার ইচ্ছা আছে তাঁর লেখা।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান সাহেবের কথা মনে পড়ছিল খুব। তাই ভাবলাম কিছুটা সময় তাঁর সাথে কাটাই। কি চমৎকার লিখে লোকটা! মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর নিত্যদিনের গল্পও উপন্যাস হয় যায়! লিলির খুব সাদাসিধে স্বপ্ন আর ভালোবাসার গল্প, মরিয়মের সংগ্রামী একেকটা দিন, হাসমত আলীর অসহায়বোধের তীব্র যাতনা, মাতৃত্বের স্নেহে সালেহা বিবির বিকিয়ে দেওয়া আত্মসম্মানবোধ, চরম বিপদের দিনেও মানুষের প্রতি শাহাদাতের বিশ্বাস -এইসব অনুভূতি মিলিয়ে পরিপূর্ণ একটা উপন্যাস। এবং মাহমুদ! যে দ্রারিদ্র্যের কাছে কখনও মাথা নত করেনি। ঈশ্বরের প্রতি তীব্র অভিমান আর কাছের মানুষগুলোর জন্য লুকিয়ে রাখা স্নেহ-ভালোবাসা - সবকিছু প্রকাশ করতো রাগ দিয়ে। মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর পারিবারিক একটা গ্রুপ ছবি তোলাটাও রীতিমতো উৎসব! কত সংকোচ, লজ্জা আর গোপন চাওয়ার তোলা একটা ছবিও বছর শেষে স্মৃতি হয়ে যায়। শুধু অনুভূতিগুলো কখনও ফিকে হয়না!
Was this review helpful to you?
or
“হাজার বছর ধরে” উপন্যাসটি বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমের আওতাভুক্ত হওয়ায় সবারই পড়া আছে। সেই সূত্রে জহির রায়হান নামটি নিশ্চয়ই অচেনা নয়। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বর্বরতা ও গণহত্যা নিয়ে জহির রায়হান নির্মিত ইংরেজি ডকুমেন্টারি “স্টপ জেনোসাইড” নামের একটি ডকুমেন্টরির কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তার নাম চর্চিত ছিল। বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কথা এলে অবধারিতভাবে জহির রায়হানের নাম চলে আসে। তিনি যেমন কাগজে-কলমে একটি কাহিনী সুন্দরভাবে বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন, ঠিক তেমনি দক্ষ ছিলেন সেই গল্পকে সিনেমার পর্দায় দৃষ্টিনন্দনভাবে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রেও। ১৯৬০ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস “শেষ বিকেলের মেয়ে” প্রকাশিত হয়। “বরফ গলা নদী” তাঁর রচিত চতুর্থ উপন্যাস। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। কাহিনী: নিম্ন-মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে মরিয়ম টিউশনি করে সংসারে অবদান রাখার চেষ্টা করে। ওর বড় ভাই মাহমুদ সাংবাদিকতার চাকরিতে টিকে থাকার চেষ্টায় নিজের মনের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যায় প্রতিনিয়ত। বাবা হাসমত আলী সামান্য কেরানীর চাকরি করেন। মা সালেহা বিবি, ছোট বোন হাসিনা আর দুই ছোট ভাই খোকন আর দুলুকে নিয়ে বিশাল এই পরিবারের ব্যয়ভার করা বাবার একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই জীবনযুদ্ধে লড়ে যেতে হয় ওদের। নোংরা এক গলিতে ভাঙাচোরা ভাড়া বাসায় থাকে ওরা। বৃষ্টি হলে ছাত থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ে। মেঝেতে এটা ওটা বসিয়ে সেই পানিকে জায়গা করে দিতে হয়। নড়বড়ে ছাতটায় একসাথে কয়েকজন ওঠা যায় না। যদি ভেঙ্গে পড়ে! মরিয়ম যাকে পড়ায় তার নাম সেলিনা। সেলিনার পরিবার বেশ ধনী। সেলিনার বড় বোনের দেবর মনসুর মরিয়মকে নিয়মিত অনুসরণ করে। মরিয়ম বিষয়টা খেয়াল করলেও পাত্তা দেয় না। জাহেদ নামের এক পুরুষ ওর জীবনটা যেভাবে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে সেটা আজও ভোলেনি মরিয়ম। ওর কাছে “সব পুরুষই সমান। সবাই শুধু ভোগ করতে চায়। প্রেমের কোনো মূল্য নেই ওদের কাছে। দেহটাকে পাবার জন্য কত অভিনয়ই না করতে পারে ওরা!” ওদিকে সেলিনার মা আনিসা বেগম মনসুরের সাথে সেলিনার বিয়ে দেবেন বলে পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু মনসুর তো মরিয়মের পিছু ছাড়ে না। পরিবারের বড় ছেলে মাহমুদ। শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও উপযুক্ত চাকরি পাচ্ছে না। ছোটখাট যা করছে তাতে পরিবারকে সুখী করা সম্ভব হচ্ছে না। বড়লোকদের প্রতি একধরনের ক্ষোভ কাজ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা মাহমুদের মনে। নিজের আর্থিক অক্ষমতাকে সে ক্ষোভে রূপান্তরিত করে বড়লোকদের উপর উগলে দেয়। সমাজ বদলে দেয়ার মতো বড় আদর্শ বুকে পোষা মাহমুদ জীবনের কঠিন চপেটাঘাত খেতে খেতে মানসিকভাবে ধীরে ধীরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পরিবারের বন্ধনও ওর কাছে মেকি ও বাহুল্য বলে মনে হয়। একদিন নিউমার্কেটে মরিয়মের সাথে মনসুর, সেলিনা আর আনিসা বেগমকে দেখতে পায় মাহমুদ। বড়লোকের গাড়ি চড়ে বোনকে বেড়াতে দেখে তার মেজাজ চড়ে যায়। বাসায় ফিরে বোনকে শ্লেষমাখা কণ্ঠে প্রশ্ন করে। একটা পারিবারিক যুদ্ধের অবতারণা হয় তখন। “পড়ানোর কাজটা কি নিউমার্কেটে সারা হয়?” মরিয়ম জবাব দেয়, “ওরা নিউমার্কেট যাচ্ছিল, সঙ্গে নিয়ে গেল আমায়…।” “তুমি গেলে কেন? ওদের সঙ্গে সম্পর্ক হলো মালিক আর মাস্টারনির সম্পর্ক। ওদের মেয়েকে পড়াও আর বিনিময়ে টাকা পাও। নিউমার্কেটে ওদের সঙ্গ দেবার জন্য নিশ্চয় কোনো বাড়তি টাকা তোমাকে দেয় হয় না?” ছেলের চিৎকার শুনে মা সালেহা বিবি এগিয়ে আসেন। সব শুনে মেয়ের পক্ষ নেন তিনি। “নিউমার্কেটে গেছে তাতে হয়েছে কী, এমন কী অন্যায় করেছে যে তুই বকছিস ওকে?” “তুমি যা বোঝো না, তা নিয়ে কথা বলতে এসো না মা। নিউমার্কেটে ও যাবে না কেন, একশোবার যাবে, কিন্তু ওই বড়লোকদের বাচ্চাগুলোর সঙ্গে নয়।” মাহমুদ নিজেকে কিছুটা সংযত করে বলে। সালেহা বিবি রেগে জিজ্ঞেস করেন, “কেন ওরা কি মানুষ না?” “কই ওরা তো আমাকে নিয়ে যায় না? নিউমার্কেট কেন, সদরঘাট পর্যন্তও ওরা মোটরে করে নিয়ে যাবে না আমায়। তোমার মেয়েকে দেখবে বুড়িগঙ্গা ওপারেও নিয়ে যাবে। কই দশ টাকা বেতন এ মাসে বাড়িয়ে দেবে বলে কথা দিয়েছিল, বাড়িয়েছে? ওদের আমি চিনিনে ভেবেছো? সব ব্যাটা বেঈমান।” মরিয়ম, মনসুর, সেলিনার সম্পর্কের পরিণতি কী হবে? জাহেদ কে? মরিয়মের সাথে জাহেদের কী হয়েছিল? বিতৃষ্ণার শক্ত খোলস গায়ে চড়ানো মাহমুদের ভবিষ্যৎ কী? হাসমত আলীর পরিবারের গন্তব্য কোথায়? এসব উত্তর জানতে হলে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উপন্যাস 'বরফ গলা নদী'। রিভিউ: ক্ষয়িঞ্চু নিম্ন-মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের ঘাত-প্রতিঘাত, আনন্দ, বেদনা, পাওয়া-না পাওয়াগুলোকে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে 'বরফ গলা নদী'। ১৯৬৯ সালের একটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনযাত্রা কেমন ছিল সেই ব্যাপারে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে উপন্যাসটি থেকে। উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে মেকি বলে মনে হয় না। এত সাধারণ, এত বাস্তব, এত চেনা যে চরিত্রগুলোর সাথে পাঠক হিসেবে মিশে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় না মোটেও। শব্দের ছোঁয়ায় বাস্তবসম্মত দৃশ্যপট সুচারুভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক জহির রায়হান। কিন্তু কিছু কমতিও রয়ে গেছে। উপন্যাসটা শেষ করার পর সচেতন পাঠকদের মনে যুক্তির বিচারে কিছু প্রশ্নের উদয় হতে পারে। কিন্তু উপন্যাস হাতড়ে হয়তো জবাব খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্পয়লার এড়াতে বিষয়গুলো উহ্য রাখা হলো। তারপরও সবদিক বিবেচনায় 'বরফ গলা নদী' বাংলা সাহিত্যের একটি সম্পদ হিসেবে পাঠকদের কাছে জায়গা করে নিয়েছে। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হলেও পাঠকদের কাছে যে উপন্যাসটির আবেদন এখনও কমেনি তার প্রমাণ পাওয়া যায় বইটির সংস্করণ সংখ্যা ও সালের দিকে তাকালে। বইটি থেকে জহির রায়হানের কিছু দুর্দান্ত লাইনের উদ্ধৃতি টেনে রিভিউয়ের ইতি টানা যাক, “…অতীত। বর্তমান। ভবিষ্যৎ। ছুরি দিয়ে কেটে-কেটে জীবনটাকে বিশ্লেষণ করার মতো প্রবৃত্তি না হলেও, জীবনের ক্ষণস্থায়ী মুহূর্তগুলো, টুকরো টুকরো ঘটনাগুলো স্মৃতি হয়ে দেখা দেয় মনে। সেখানে আনন্দ আছে, বিষাদ আছে। ব্যর্থতা আছে, সফলতা আছে। হাসি আছে, অশ্রু আছে। অতীতের মতো বর্তমানও যেন ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো ওঠা আর পড়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা কেউ বলতে পারে না। …” বই: বরফ গলা নদী; লেখক: জহির রায়হান; ধরন: চিরায়ত উপন্যাস; প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_আগস্ট_২০১৯ বইয়ের নাম: বরফ গলা নদী; লেখক: জহির রায়হান; প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী; ধরন: চিরায়ত উপন্যাস “হাজার বছর ধরে” উপন্যাসটি বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমের আওতাভুক্ত হওয়ায় সবারই পড়া আছে। সেই সূত্রে জহির রায়হান নামটি নিশ্চয়ই অচেনা নয়। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বর্বরতা ও গণহত্যা নিয়ে জহির রায়হান নির্মিত ইংরেজি ডকুমেন্টারি “স্টপ জেনোসাইড” নামের একটি ডকুমেন্টরির কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তার নাম চর্চিত ছিল। বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কথা এলে অবধারিতভাবে জহির রায়হানের নাম চলে আসে। তিনি যেমন কাগজে-কলমে একটি কাহিনী সুন্দরভাবে বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন, ঠিক তেমনি দক্ষ ছিলেন সেই গল্পকে সিনেমার পর্দায় দৃষ্টিনন্দনভাবে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রেও। ১৯৬০ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস “শেষ বিকেলের মেয়ে” প্রকাশিত হয়। “বরফ গলা নদী” তাঁর রচিত চতুর্থ উপন্যাস। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। কাহিনী: নিম্ন-মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে মরিয়ম টিউশনি করে সংসারে অবদান রাখার চেষ্টা করে। ওর বড় ভাই মাহমুদ সাংবাদিকতার চাকরিতে টিকে থাকার চেষ্টায় নিজের মনের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যায় প্রতিনিয়ত। বাবা হাসমত আলী সামান্য কেরানীর চাকরি করেন। মা সালেহা বিবি, ছোট বোন হাসিনা আর দুই ছোট ভাই খোকন আর দুলুকে নিয়ে বিশাল এই পরিবারের ব্যয়ভার করা বাবার একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই জীবনযুদ্ধে লড়ে যেতে হয় ওদের। নোংরা এক গলিতে ভাঙাচোরা ভাড়া বাসায় থাকে ওরা। বৃষ্টি হলে ছাত থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ে। মেঝেতে এটা ওটা বসিয়ে সেই পানিকে জায়গা করে দিতে হয়। নড়বড়ে ছাতটায় একসাথে কয়েকজন ওঠা যায় না। যদি ভেঙ্গে পড়ে! মরিয়ম যাকে পড়ায় তার নাম সেলিনা। সেলিনার পরিবার বেশ ধনী। সেলিনার বড় বোনের দেবর মনসুর মরিয়মকে নিয়মিত অনুসরণ করে। মরিয়ম বিষয়টা খেয়াল করলেও পাত্তা দেয় না। জাহেদ নামের এক পুরুষ ওর জীবনটা যেভাবে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে সেটা আজও ভোলেনি মরিয়ম। ওর কাছে “সব পুরুষই সমান। সবাই শুধু ভোগ করতে চায়। প্রেমের কোনো মূল্য নেই ওদের কাছে। দেহটাকে পাবার জন্য কত অভিনয়ই না করতে পারে ওরা!” ওদিকে সেলিনার মা আনিসা বেগম মনসুরের সাথে সেলিনার বিয়ে দেবেন বলে পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু মনসুর তো মরিয়মের পিছু ছাড়ে না। পরিবারের বড় ছেলে মাহমুদ। শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও উপযুক্ত চাকরি পাচ্ছে না। ছোটখাট যা করছে তাতে পরিবারকে সুখী করা সম্ভব হচ্ছে না। বড়লোকদের প্রতি একধরনের ক্ষোভ কাজ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা মাহমুদের মনে। নিজের আর্থিক অক্ষমতাকে সে ক্ষোভে রূপান্তরিত করে বড়লোকদের উপর উগলে দেয়। সমাজ বদলে দেয়ার মতো বড় আদর্শ বুকে পোষা মাহমুদ জীবনের কঠিন চপেটাঘাত খেতে খেতে মানসিকভাবে ধীরে ধীরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পরিবারের বন্ধনও ওর কাছে মেকি ও বাহুল্য বলে মনে হয়। একদিন নিউমার্কেটে মরিয়মের সাথে মনসুর, সেলিনা আর আনিসা বেগমকে দেখতে পায় মাহমুদ। বড়লোকের গাড়ি চড়ে বোনকে বেড়াতে দেখে তার মেজাজ চড়ে যায়। বাসায় ফিরে বোনকে শ্লেষমাখা কণ্ঠে প্রশ্ন করে। একটা পারিবারিক যুদ্ধের অবতারণা হয় তখন। “পড়ানোর কাজটা কি নিউমার্কেটে সারা হয়?” মরিয়ম জবাব দেয়, “ওরা নিউমার্কেট যাচ্ছিল, সঙ্গে নিয়ে গেল আমায়…।” “তুমি গেলে কেন? ওদের সঙ্গে সম্পর্ক হলো মালিক আর মাস্টারনির সম্পর্ক। ওদের মেয়েকে পড়াও আর বিনিময়ে টাকা পাও। নিউমার্কেটে ওদের সঙ্গ দেবার জন্য নিশ্চয় কোনো বাড়তি টাকা তোমাকে দেয় হয় না?” ছেলের চিৎকার শুনে মা সালেহা বিবি এগিয়ে আসেন। সব শুনে মেয়ের পক্ষ নেন তিনি। “নিউমার্কেটে গেছে তাতে হয়েছে কী, এমন কী অন্যায় করেছে যে তুই বকছিস ওকে?” “তুমি যা বোঝো না, তা নিয়ে কথা বলতে এসো না মা। নিউমার্কেটে ও যাবে না কেন, একশোবার যাবে, কিন্তু ওই বড়লোকদের বাচ্চাগুলোর সঙ্গে নয়।” মাহমুদ নিজেকে কিছুটা সংযত করে বলে। সালেহা বিবি রেগে জিজ্ঞেস করেন, “কেন ওরা কি মানুষ না?” “কই ওরা তো আমাকে নিয়ে যায় না? নিউমার্কেট কেন, সদরঘাট পর্যন্তও ওরা মোটরে করে নিয়ে যাবে না আমায়। তোমার মেয়েকে দেখবে বুড়িগঙ্গা ওপারেও নিয়ে যাবে। কই দশ টাকা বেতন এ মাসে বাড়িয়ে দেবে বলে কথা দিয়েছিল, বাড়িয়েছে? ওদের আমি চিনিনে ভেবেছো? সব ব্যাটা বেঈমান।” মরিয়ম, মনসুর, সেলিনার সম্পর্কের পরিণতি কী হবে? জাহেদ কে? মরিয়মের সাথে জাহেদের কী হয়েছিল? বিতৃষ্ণার শক্ত খোলস গায়ে চড়ানো মাহমুদের ভবিষ্যৎ কী? হাসমত আলীর পরিবারের গন্তব্য কোথায়? এসব উত্তর জানতে হলে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উপন্যাস 'বরফ গলা নদী'। রিভিউ ক্ষয়িঞ্চু নিম্ন-মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের ঘাত-প্রতিঘাত, আনন্দ, বেদনা, পাওয়া-না পাওয়াগুলোকে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে 'বরফ গলা নদী'। ১৯৬৯ সালের একটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনযাত্রা কেমন ছিল সেই ব্যাপারে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে উপন্যাসটি থেকে। উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে মেকি বলে মনে হয় না। এত সাধারণ, এত বাস্তব, এত চেনা যে চরিত্রগুলোর সাথে পাঠক হিসেবে মিশে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় না মোটেও। শব্দের ছোঁয়ায় বাস্তবসম্মত দৃশ্যপট সুচারুভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক জহির রায়হান। কিন্তু কিছু কমতিও রয়ে গেছে। উপন্যাসটা শেষ করার পর সচেতন পাঠকদের মনে যুক্তির বিচারে কিছু প্রশ্নের উদয় হতে পারে। কিন্তু উপন্যাস হাতড়ে হয়তো জবাব খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্পয়লার এড়াতে বিষয়গুলো উহ্য রাখা হলো। তারপরও সবদিক বিবেচনায় 'বরফ গলা নদী' বাংলা সাহিত্যের একটি সম্পদ হিসেবে পাঠকদের কাছে জায়গা করে নিয়েছে। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হলেও পাঠকদের কাছে যে উপন্যাসটির আবেদন এখনও কমেনি তার প্রমাণ পাওয়া যায় বইটির সংস্করণ সংখ্যা ও সালের দিকে তাকালে। ★বইটি থেকে জহির রায়হানের কিছু দুর্দান্ত লাইনের উদ্ধৃতি টেনে রিভিউয়ের ইতি টানা যাক- “…অতীত। বর্তমান। ভবিষ্যৎ। ছুরি দিয়ে কেটে-কেটে জীবনটাকে বিশ্লেষণ করার মতো প্রবৃত্তি না হলেও, জীবনের ক্ষণস্থায়ী মুহূর্তগুলো, টুকরো টুকরো ঘটনাগুলো স্মৃতি হয়ে দেখা দেয় মনে। সেখানে আনন্দ আছে, বিষাদ আছে। ব্যর্থতা আছে, সফলতা আছে। হাসি আছে, অশ্রু আছে। অতীতের মতো বর্তমানও যেন ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো ওঠা আর পড়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা কেউ বলতে পারে না। …”
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে...............কিন্তু পুরো পরিবারের এমন মৃত্যু খুবই দুঃখজনক ছিল আমার কাছে ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা উপন্যাস। জহির রায়হান এর বই এর ভক্ত হয়ে গেলাম।
Was this review helpful to you?
or
5 * দিলাম তারপর পড়া শুরু করলাম দেখি কেমন হয়
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর উপন্যাসঃ বরফ গলা নদী লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃঅনুপম ধরনঃচিরায়ত মুল্যঃ ১৪০ টাকা কাহিনী সংক্ষেপঃ মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো আসলে কিভাবে বেঁচে থাকে?? তাদের কি কখনো শখ হয়?? শখ আহ্লাদ করা কি তাদের সাধেনা?? আর এইসব শখ কি আসলেই তাদের পুরন হয়?? গল্পটি শুরু হয় এক মধ্যবিত্ত পরিবারের বর্ননা দিয়ে। যেখানে রয়েছে সালেহা বিবি, মরিয়ম,দুলু,খোকন, হাসিনা,মাহমুদ, হাসমত আলী র মতো চরিত্র গুলো। পরিবারের অভিবাবক হলো সালেহা বিবি এবং হাসমত আলী। তাদের ছেলেমেয়েরা হলেন মাহমুদ, মরিয়ম,দুলু এবং খোকন। মাহমুদ সবাড় বড়, মরিয়ম হলো বাড়ির বড় মেয়ে, দুলু ছোট মেয়ে আর খোকন হলো ছোট ছেলে। পরিবারের অবস্থা খারাপ দেখে মাহমুদ কেই হাল ধরতে হয়েছে সংসারের। আর শুধু মাহমুদের টাকায় সংসার চলেনা যার জন্য মরিয়ম অনেক কষ্টে একটা টিউশন খুজে নিয়েছে, সে পড়াই একজন মেয়েকে, যার নাম হাসিনা। মাহমুদ চাকরি করে এক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যার নেই কোন পিছুটান। তার মুখ থেকে কখনো ভালো ব্যবহার কেউ আশা করেনা খুব বদমেজাজী, রগচটা স্বভাবের। মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য আর অল্প বয়সে পরিবারের পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েই যেন তার মুখের হাসি মলিন হয়ে গেছে, বাস্তবতার কষাঘাতে জর্জড়িত জীবনের কাছ থেকে যেন মাহমুদের আর কোন প্রাপ্তি নেই। অন্যদিকে মরিয়ম এই পরিবারের মেয়ে হয়েও পরিবারকে খুব আগলে রাখতে চাই। তার বেতনের সামান্য কটা টাকা দিয়েই যেন সে পুরন করতে চাই তার ছোট ভাই বোন দুলু এবং খোকনের আবদার। তাইতো মাঝে মাঝে তার নিজের গিফট পাওয়া জিনিস গুলোও সে অনায়াসে দিয়ে দেয় ছোট বোন দুলু কে। অন্যদিকে ছোট বোন দুলু স্বপ্ন দেখতে বেশি ভালোবাসে। তার চাহিদার শেষ নেই যেন। অবশ্য এ নিয়েই কম বকা খায়না দুলু মায়ের কাছে, তখন মরিয়ম মা কে থামিয়ে দেয়, বকা দিতে বারন করে দুলুকে।। এ যেন মা মেয়েদের বাস্তবতার খুনসুটি। হঠাৎ করেই দেখা যায় মরিয়ম যেখানে পড়াতে যাই সেখানে পরিচয় হয় একটি ছেলের সাথে। ছেলেটির নাম মনসুর। ধনীর দুলাল সে। ছাত্রীর আত্মীয় হলেও রোজ মনসুর হাসিনার বাড়িতে আসে মরিয়মের জন্য। কারন সে মরিয়মকে অনেক পছন্দ করে। যখন মরিয়ম এই কথা জানতে পারে তখন অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে।যখন আর লাভ হয়না তখন মনসুরের ভালোবাসার কাছে পরাজয় স্বীকার করে মরিয়ম। কিন্তু এই বিয়েতে বাঁধ সাধে মাহমুদ। কারন সে দুচোখে ধনীদের দেখতে পারেনা, ঘৃনা করে মনে মনে। পরিবারের সবার সম্মতির কাছে মাহমুদের কথা তেমন খাটেনা তাই মরিয়মের সাথে বিয়ে হয়ে যায় মনসুরের। এবং খুব ভালো দিনকাল চলতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করেই এক অতীত সামনে চলে আসে মরিয়ম মনসুরের জীবনে। সুখের সংসার টা তে পুরো আগুন লেগে যায়।। মনসুর পরিবর্তন হতে থাকে এবং অবশেষে সহ্য করতে না পেরে মরিয়ম তার জামা কাপড় নিয়ে চলে আসে বাবা মায়ের বাড়িতে ভাবতে থাকে সুখের দিনগুলোর কথা। কি সমস্যা তাদের মধ্যে এই কথা মরিয়ম কাউকে জানতে দেয়ার আগেই সে রাতে ঘটে এক বিপর্যয়। পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে যায় আর বাস্তবতার কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া মাহমুদ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। কি হয়েছিলো সে রাতে?? আর মাহমুদ কিভাবে সামাল দেবে সবকিছু?? অন্যদিকে মনসুর আর মরিয়মের মধ্যের সমস্যা কি কখনোই আর বাইরের কেউ জানতে পারবেনা?? এগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে এই উপন্যাসে কারন সব প্রশ্নের উত্তর আছে এই বইটিতেই। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ জহির রায়হানের লেখার মধ্যে একটা আলাদা ভাব আছে। তার প্রত্যেক বইয়ে সমাজের বাস্তব প্রতিচ্ছবি কিভাবে যেন প্রকাশ পায়। বইটার প্রকাশকাল অনেক আগে। তারপরও সে সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষের দুঃখগুলো বুঝেছেন তার সমস্ত মন দিয়ে এবং লিখে গিয়েছেন এরকম উপন্যাস। বইটিতে রয়েছে দম বন্ধ করা গভীর বিষাদ, হঠাৎ করেই মানুষের জীবনটা থমকে গেলে যে বিষাদ অনুভব হয় বইটি যেন তারই প্রতিচ্ছবি। আশা করি ভালো লাগবে সবার।।।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান বাংলা সাহিত্যের প্রান।
Was this review helpful to you?
or
# রকমারি বই পোকা রিভিউ প্রতিযোগিতা #লেখেছেন-আরাফ যায়াদ #বই-বরফ গলা নদী #লেখক-জহির রায়হান মুল্য:১১৯৳ ধরণ:চিরায়ত উপন্যাস প্রকাশনী: অনুপম . কাহিনীসংক্ষেপ : নিম্ন-মধ্যবিত্ত সমাজের বৈচিত্রহীন জীবনের ঘটনাবলীর সুশৃঙ্গল ইতিবৃত্তই হচ্ছে এই উপন্যাসের কাহিনীর মুল রসদ। জীবন বাস্তবতার লেখক হিসেবে সুখ্যাতি এই শহীদুল্ল্যাহ কায়সার অনুজের।তারই একটি বাস্তব দর্পন হচ্ছে এই উপন্যাস। "মাহমুদ" কেন্দ্রীয় চরিত্র।প্রথমত একটি পত্রিকায় রিপোর্টার হিসেবে,পরবর্তীতে বেতন নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় অন্য একটি পত্রিকার প্রুফ চেকার হিসাবে রুটি- রোজগার চালায়। সংসার নামক ঠেলাগাড়ির ঠেলাওয়ালা।।পরিচিত শহরের অপরিচিত গলির বিতিকিচ্ছিরি পরিবেশের ভঙ্গুর একটা বাসায়--- বাবা,মা,মরিয়ম,হাসিনা,খোকন ,দুলুকে নিয়ে তাদের সংসার। মাহমুদ জীবন সংসারে থেকেও,গা-ঝাড়া ভাব নিয়ে চলে।থেকেও নেই এমন ভাব।তাঁর কাছে বাবা,মা,ভাই- বোন এগুলা মনুষ্যসৃষ্ট কয়েকটা শব্দমাত্র।এই শব্দ গুলার কাছে কিসের এতো দায়বদ্ধতা????? বাস্তবতা সম্পর্কে অতি তিঁতকুটে অভিজ্ঞতা থাকার দরুন মাহমুদ কিছুটা মুখ আলগা স্বভাবের।অনেক বেফাঁস কথাও সে অমায়িক ভঙ্গিতে বলতে পারে যার প্রমাণ পাই,মরিয়মের বাগদত্তা মনসুর সম্পর্কে তার অভিমত থেকে।মুলত উচ্চশ্রেণী সম্পর্কে তাঁর একটা নাক ছিটকানো স্বভাব আছে,সে সন্দিগ্ধ উচ্চ শ্রেণিতে উত্তরণের উপায় নিয়েও!!!! মাহমুদ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্ব চরিত্রে আছে-- মরিয়মের ছাত্রী সেলিনা, বান্ধবী লিলি,লিলির মামাতো ভাই তসলিম,যার সাথে পরবর্তিতে হাসিনার ছবি উঠানোর কায়দা-কসরত শিখার উছিলায় হৃদয়ের দেনা-দরবার শুরু হয়েছিল নাটকীয়ভাবে।। তাছাড়াও আছে মাহমুদের বন্ধু শাহাদত,বন্ধুপত্নী আমেনা,নাঈম।সর্বমোট ডজনখানেক চরিত্রের উপস্থিতি।। জীবনের কিছু চরম সত্য যে আড়াল করতে হয়, তার পুরোপুরি ভুক্তভোগী হচ্ছে স্বামী-সোহাগ বঞ্চিতা মরিয়ম।সুখের জন্য হলেও কিছু অপ্রয়োজনীয় সত্য সময়ের দাবিতে চেপে যেতে হয়।তা আঁচ করতে পারে নি মরিয়ম। মুলত মধ্যবিত্ত সংসারের টানাপোড়েনকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে এর গাঠনিক আকৃতি। উপন্যাসের শেষ প্রান্তে আকস্মিক বাড়ি- ধ্বসে মারা যান মাহমুদ ছাড়া পরিবারের অন্যসকল সদস্য।।। আমুল পরিবর্তন আসে মাহমুদের জীবনে।।জীবন- সংসার সম্পর্কে যার তিক্ত-বিরক্ত-তিঁতকুটে-অনীহা-বিস্বাদ- অনাসক্ততা সেই মাহমুদই কিনা পরবর্তিতে পত্নীসুদ্ধ- মেয়ে নিয়ে সংসারী হলো!!!!! . এখানে "বরফ গলা নদী" বলতে মুলত - মাহমুদের "মনকে"বোঝানো হয়েছে।। অভিমানের বরফে জমা যাওয়া মনখানা শেষ পর্যন্ত চিরাচরিত সংসার অভিমুখে যাত্রা করেছে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #অক্টোবর - ১ বই : বরফ গলা নদী লেখক : জহির রায়হান প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি, ১৯৯৮ পৃষ্ঠা : ৯৫ মূল্য : ১২০ টাকা চাকচিক্যে মোড়া নাগরিক সভ্যতার এক শহরেরই কোন কোনে, অন্ধকার, দুর্গন্ধময় গলি ভেতরে পলেস্তারা খসে পড়া লাল দালানে থাকেন হাসমত আলী ও তার পরিবার। হাসমত আলীর স্ত্রী সালেহা বিবি। দুই ছেলে মাহমুদ আর খোকন । মাহমুদ পরিবারের বড় ছেলে। খুব কম বেতনে চাকরী করে একটি পত্রিকা অফিসে। ইচ্ছে, বড় একজন সাংবাদিক হওয়ার। আর তিন মেয়ে মরিয়ম, হাসিনা, দুলু। হাসমত আলী এক সরকারি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। তার সামান্য কিছু টাকা দিয়ে সংসার চলেনা। বড় মেয়ে মরিয়ম নিজের টিউশনির টাকা দিয়ে নিজের খরচ চালায়। বড় ছেলে মাহমুদের চাকরীর সামান্য বেতন দিয়ে কোন রকমে তাদের দিন কেটে যায়। মাহমুদ প্রতিবাদী যুবক। অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে পারেনা সে, সবসময় সততার আদর্শে চলে। আর সে কারনেই কাজ নিয়েছিলো পত্রিকায়। কিন্তু পত্রিকা অফিসে চাকরী করতে এসে সে জানতে পারে, এখানে টিকতে হলে আদর্শ ধরে রাখা যাবে না। উপরওয়ালাদের সব অন্যায় ধামাচাপা দিয়ে,তাদের তোষামোদ করে সংবাদ তৈরী করতে হবে । এইসব সহ্য করতে পারে না মাহমুদ। বড়লোক রা হয়ে ওঠে তার চক্ষুশূল। একসময় চাকরিটা ছেড়ে দেয় সে মরিয়ম এক বড়লোকের বাড়িতে সেলিনা নামের এক মেয়েকে পড়াতো। সেলিনার বড়বোনের দেবর মনসুরের সাথে সেখানেই পরিচয় হয় মরিয়মের। বিশাল বড়লোক মনসুর। হাসমত আলী, সালেহা বেগমের পছন্দ হয় তাকে। পছন্দ হয় মরিয়মেরও। মাহমুদের অবশ্য তাকে ভাল লাগে না। তবুও একদিন ধুমধাম করে বিয়ে হয় তাদের। হাসিনা এক উচ্ছ্বল কিশোরী। তার চোখে রঙিন স্বপ্ন। যদিও জীবনের চরম দারিদ্র্যতায় তার সব স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে যায়, তবুও সে পরাজিত হয়না। আরেকজন আছে উপন্যাসে, তার নাম লিলি। সে কে? কি হয় এতগুলো মানুষের? পাঠ প্রতিক্রিয়া : জহির রায়হানের সাথে পরিচয় হয়েছে, আমার আট বছর বয়সে। আপুর মাধ্যমিকের বাংলা সহপাঠ বইয়ের "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসের মাধ্যমে। তারপর থেকে প্রতি বছরই বইটি পড়তাম। নিজে মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে কত শত বার পড়েছি,তা বলে শেষ করা যাবে না। তখন থেকেই জহির রায়হানের ভক্ত আমি । তবে কেন যেন আর তার বই পড়া হয়ে ওঠেনি। অনেকদিন পর পড়ে ফেললাম " বরফ গলা নদী। উপন্যাস টা শেষ করে ঝিম ধরে বসে থাকলাম। মনে হচ্ছে আমার ভেতরে নিদারুণ কষ্টের বরফ জমে গেছে। বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই লাল বাড়িটি। স্যাঁতসেঁতে, পুরানো ফুটো ছাদ, করুণ চোখের মরিয়ম কিংবা একবুক আশা নিয়ে থাকা হাসিনা। কিছু কিছু অনুভূতি কখনোই প্রকাশ করা যায় না। এই উপন্যাসটি পড়ে বুকের মধ্যে এমন উথালপাতাল অনুভূতি হয়, যা সত্যিই প্রকাশ করা অসম্ভব। বরফ গলা নদী আমার এ ক্ষুদ্র জীবনে পড়া উপন্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম ।
Was this review helpful to you?
or
Best!
Was this review helpful to you?
or
One of the best books!
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ বই: বরফ গলা নদী প্রারম্ভিক কথা: ক্ষয়িষ্ণু নিম্ন মধ্যবিত্ত অসচ্ছল একটি পরিবারের আনন্দ-বেদনা,আশা-নিরাশা, ঘাত-প্রতিঘাতময় জীবন সংগ্রামকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে জহির রায়হানের ‘বরফ গলা নদী’ উপন্যাস। অতি সাধারণ একটি পরিবারের স্বপ্নবুনন,সংসারের টানাপোড়েন, জীবন ও জীবিকার চরম বাস্তবিক গল্প কালজয়ী লেখক শব্দের ছোঁয়ায়, বাক্যবিন্যাসে দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বইকথনঃ বইটির কাহিনী গড়িয়েছে একটি পরিবারকে কেন্দ্র করে। হাসমত আলীর পরিবার। হাসমত আলী, স্ত্রী সালেহা বিবি ও পাঁচ সন্তান নিয়ে তাদের পরিবার। নোংরা এক গলিতে ভাঙাচোরা বাসায় থাকে ওরা। নড়বড়ে ছাদ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা,বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। তাতে ঘর ভিজে যায়, মেঝেতে এটা ওটা বসিয়ে সেই পানি হতে ঘরকে রক্ষা করতে হয়। হাসমত আলী সামান্য বেতনে কেরানির চাকরি করে, পরিবারের বড় সন্তান মাহমুদও ছোটখাটো একটা চাকরি করে। বাবা ও ভাইয়ের সাথে সংসারে হাল ধরতে মরিয়ম টিউশনি করে। আর আছে ছোট বোন হাসিনা, ছোট দুই ভাই খোকন ও দুলু। সাত সদস্যের বড় সংসারে ভরণপোষণের খরচ যোগাতে ভীষণ বেগ পেতে হয় তাদের। অভাব-অনটন, টানাপোড়েন নিয়ে কেটে যায় তাদের দিন। বড় মেয়ে মরিয়ম জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে নিরলস পরিশ্রম করে যায়। সেলিনা নামের ধনী পরিবারের এক মেয়েকে পড়ায় মরিয়ম। সেখানে পরিচয় হয় সেলিনার বড় বোনের দেবর মনসুরের সাথে। মনসুর মনে মনে ভালোবেসে ফেলে মরিয়মকে। কিন্তু মরিয়ম বিষয়টি বুঝতে পারলেও পাত্তা দেয় না। কেননা সে একবার জাহেদ নামের একজনের কাছে বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়। তাই সে এখন আর অন্য কোন পুরুষকে বিশ্বাস করতে পারে না। আবার এদিকে সেলিনার মা মনসুরের সাথে সেলিনার বিয়ে দেবার পরিকল্পনা করে, কিন্তু মনসুর যে মরিয়মকে ভালোবাসে তার পিছু ছাড়ে না! পরিবারের বড় সন্তান মাহমুদ। শিক্ষিত হলেও সামান্য বেতনে চাকরি করে কিন্তু তাতে সংসারের অভাব-অনটন দূর হয় না। তীব্র ক্ষোভ কাজ করে বড়লোকের প্রতি। দারিদ্র্যের কষাঘাতে,জীবনের প্রতিকূলতায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে উঠে সে, ধীরে ধীরে পারিবারিক বন্ধনগুলো ঠুনকো মনে হয় তার কাছে। মরিয়মের ছোট বোন হাসিনার কিশোরীসুলভ চপলতার মাধ্যমে উপন্যাসে এক প্রাণময় সত্ত্বার সঞ্চার হয়, যার মধ্যে নেই কোনো চিন্তার ভাঁজ, সংসারের ভার। নেই পৃথিবীতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ যুদ্ধ। বরং সর্বদা আহ্লাদ, স্বপ্ন, চঞ্চলতা ঘিরে রাখে তাকে। মরিয়মের বান্ধবী লিলি, প্রায়ই মরিয়মের বাসায় আসে তার সাথে দেখা করতে। সেখানে লিলির সাথে মাহমুদের পরিচয় হয়। পরিচয় হতে শুরু হয় একে অপরের প্রতি ভালো লাগা। এছাড়াও উপন্যাসে লক্ষ্য করা যায় অপ্রধান চরিত্র শাহাদাত এবং তার স্ত্রী আমেনাকে। আমেনা চরিত্রের আত্মমর্যাদাবোধ বিশেষভাবে মুগ্ধ করে আমাকে। এছাড়াও রয়েছে তসলিম, লিলি আর মাহমুদের ভালোলাগা থেকে সম্পর্কে রূপ লাভ করে কী? আর মাহমুদের ভবিষ্যৎ কী? মরিয়ম, মনসুর, সেলিনার সম্পর্কের পরিণতি কী হবে?আর জাহেদ কে? মরিয়মের সাথে জাহেদের কী হয়েছিল? হাসমত আলীর পরিবারের গন্তব্য কোথায়? এসব উত্তর জানতে হলে আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে বাংলা সাহিত্যের এক সুন্দর উপন্যাস ‘বরফ গলা নদী’। বই পর্যালোচনাঃ অভাব-অনটনের মাঝে মরিয়মের বড় ঘরে বিয়ে হলে, আশার আলো দেখে হাসমত আলীর পরিবার। মেয়ের জামাইকে কেন্দ্র করে নতুন স্বপ্ন দেখে ভগ্নদশাসম্পন্ন পরিবারটি। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস পারিবারিক কলহ, সম্পর্কে বিশ্বাস-অবিশ্বাস জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। রাঙা প্রভাতের কিরণ আলিঙ্গন করার পূর্বেই তমসাচ্ছন্ন রাত হানা দেয়। নিঃশেষ হয়ে যায় বেশ কয়েকটি জীবন। কোন অবিশ্বাসের জেরে সম্পর্কে ফাটল ধরে? কি এমন ঝড়ের তান্ডবলীলায় সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয় জীবনকে? ধ্বংস করে তার একটি পরিবারকে, জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। উপন্যাসে যেমন প্রতিফলিত হয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন সংগ্রামের করুণ চিত্র, তেমনি অঙ্কিত হয়েছে দুঃখ দুর্দশার পরও পরিবারে ভালোবাসা, খুনসুটি, সুখ খুঁজে নেওয়ার আপ্রাণ প্রচেষ্টার চিত্র। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ‘বরফ গলা নদী’ উপন্যাসের চরিত্র গঠন, কাহিনী বিন্যাস, গল্পের বাচনভঙ্গি সাবলীল ও প্রাঞ্জল। মধ্যবিত্ত সংসারে পাওয়া না পাওয়া,সুখ-দুঃখের গল্প সুচারুরূপে ফুটে উঠেছে। উপন্যাসের পরিধি তেমন বিস্তৃত নয়। স্বল্প দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট এই উপন্যাসের রয়েছে অসাধারণ হৃদয়বিদারক সমাপ্তি, যা পাঠকের অন্তরকে নাড়িয়ে দিতে যথেষ্ট। ক্ষণিক সময়ের জন্য হলেও পাঠকমনে তীব্র আলোড়ন তুলবে,মনটা শূন্যতায় ভরে উঠবে। হৃদয়ের অতল গহ্বরে স্পর্শ করে যাবার মত একটি উপন্যাস! বই পাঠে আমার উপলব্ধিঃ মানুষের জীবন আসলেই বরফ গলা নদীর ন্যায়। এখানেই উপন্যাসের নামকরণের সার্থকতা রয়েছে। পৃথিবী তার আপন গতিতে চলতে থাকে,কখনো কারো জন্য থেমে থাকে না। যাদের ছাড়া আমরা একসময় আমাদের অস্তিত্ব কল্পনাও করতে পারি না,একসময় সেই মানুষগুলোর অনুপস্থিতিতে ঠিকই বেঁচে থাকতে শিখি। ক্ষণে ক্ষণেই হয়তো তাদের স্মরণে মনটা ব্যথিত হয়, কিন্তু জীবন স্থবির হয়ে থাকে না। ঠিকই আমরা আবার স্বপ্ন দেখি, বেঁচে থাকি বুক ভরা আশা নিয়ে। বই হতে প্রিয় উদ্ধৃতিঃ ❝…অতীত। বর্তমান। ভবিষ্যৎ। ছুরি দিয়ে কেটে-কেটে জীবনটাকে বিশ্লেষণ করার মতো প্রবৃত্তি না হলেও, জীবনের ক্ষণস্থায়ী মুহূর্তগুলো, টুকরো টুকরো ঘটনাগুলো স্মৃতি হয়ে দেখা দেয় মনে। সেখানে আনন্দ আছে, বিষাদ আছে। ব্যর্থতা আছে, সফলতা আছে। হাসি আছে, অশ্রু আছে। অতীতের মতো বর্তমানও যেন ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো ওঠা আর পড়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা কেউ বলতে পারে না।❞ বইবৃত্তান্তঃ বইয়ের নাম: বরফ গলা নদী লেখক: জহির রায়হান জনরা: চিরায়ত উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬ ধরন: হার্ডকভার প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী প্রকাশকাল: ১৯৬৬ মলাট মূল্য: ২৫০ টাকা রিভিউ লেখায়: ইসরাত জাহান সামিয়া
Was this review helpful to you?
or
This is a must read book of zahir raihan, it beautifully depicts the struggle of the working class and sadly even today the plot of the book is relatable
Was this review helpful to you?
or
***বুক রিভিউ*** ***বইয়ের নাম --- বরফ গলা নদী** ***লেখক --- জহির রায়হান*** ***প্রথম প্রকাশ---১৯৬৯*** বাসার কাছাকাছি আসতে ওপাশের দোতলা বাড়ি থেকে ঝপ করে একবালতি পানি কে যেন ঢেলে দিলো মরিয়মের গায়ে। সর্বাঙ্গ ভিজে গেল । প্রথম কয়েক মুহূর্ত একেবারে হকচকিয়ে গেল মরিয়ম। সবে গতকাল শাড়িটা ধুয়ে পড়েছে।কে জানে কিসের পানি!!! ভাবতে গিয়ে সারা দেহ রি-রি করে উঠলো। বাবা হারিকেনের আলোয় বসে বসে খোকনকে পড়াচ্ছিলেন। "হুমায়ুনের মৃত্যুর পর আকবর দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন।" মা বললেন,"মরিয়মটা নেই, বাড়িটা কেমন ফাঁকা লাগছে। তুই একটা বিয়ে কর মাহমুদ। মাহমুদ বলল,"কি দরকার আরেকটা নিরীহ মেয়েকে অমানুষ বানিয়ে"? ভ্রুজোড়া অদ্ভুতভাবে বাঁকালো মনসুর ।তারপর আস্তে করে বলল, তোমার কি মনে হয়, মানুষ দুবার প্রেমে পড়তে পারে? বিব্রত মরিয়ম বললো ,পারে!! " বরফ গলা নদী" জহির রায়হান রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস । শত্তর দশকের পটভূমিতে রচিত উপন্যাসটি অর্থনৈতিক কারণে বিপর্যস্ত এক ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্ত পরিবারের অসহায়ত্ব গাঁথা। ** উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলো --- মাহমুদ, মরিয়ম, হাসিনা, লিলি, মনসুর, তসলিম, শাহাদাত, আমেনা। নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মাহমুদ । জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে, ধনী-গরীবের মধ্যকার বৈষম্যকে কঠোরভাবে ধিক্কার করে সে। 'মিলন' পত্রিকায় চাকরি করে আদর্শ সাংবাদিক হবে। কালে কালে লুই ফিসার হবে!!! কিন্তু না..... দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির চাপে তার সেই স্বপ্ন অচিরেই লোপ পেয়ে যায়। একদিন এই চাকরিটা ছেড়ে দেয় সে। ' মাহমুদ' চরিত্রটি বড়ই বিচিত্র; একই সাথে কঠোর আবার ক্ষণে ক্ষণে কোমল। কখনো কড়া গলায় সে বোনদের শাসন করে, আবার মাইনে বাড়লে সেই টাকা বোনদের জন্যই খরচ করবে, এই ভাবনাও মনে মনে পোষণ করে। মরিয়ম -- সে মাহমুদের ছোট বোন। ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে এখন টিউশনি করছে। তার প্রথম যৌবনের একটি ভয়াবহ অতীত আছে, তাই সেলিনার (মরিয়মের ছাত্রী) বোনের দেবর - মনসুরকে সে সহজভাবে নিতে পারেনি। নিতান্তই সহজ-সরল চরিত্রটি পাঠক মনকে বেদনায় ভরিয়ে তোলে। লিলি -- মরিয়মের কলেজ জীবনের বান্ধবী। শিক্ষিতা বুদ্ধিমতী ও শান্ত স্বভাবের এই মেয়েটির চরিত্র শুধু মাহমুদকে নয়, মরিয়ম,হাসিনা এমনকি মাহমুদের মাকেও আকর্ষিত করে। উপন্যাসটিতে ধীরে ধীরে অথচ সুস্পষ্টভাবে মাহমুদের সাথে তার জীবন এগিয়ে চলে। হাসিনা ; মরিয়ম এর ছোট বোন।সদ্য কৈশোরে পদার্পণ করা মেয়েটি নিতান্তই সহজ -সরল ;সাবলীল তার কথা বলার ভঙ্গি ও আচার-আচরণ!! লিলির ভাই তসলিমের সাথে তার ভালোবাসার গল্পটি আমাদের চিরচেনা কৈশোরকেই মনে করিয়ে দেয়!! সেলিনার বোনের দেবর মনসুর । ধনী, স্বাস্থ্যবান মনসুরকে মেয়ের জামাই হিসেবে কল্পনা করে সেলিনার মা। কিন্তু মানুষের সব স্বপ্ন কি পূরণ হয় ??? হয়না,,,,,, মনসুর যে ভালবাসে মরিয়মকে। তার সাথে ভাব করার জন্য কখনো পথ চলার অনাহূত সঙ্গী হয় সে।মরিয়মের অসুস্থতার কথা শুনে ওষুধপথ্য নিয়ে হাজির হয় তাদের বাসায়; দিনের-পর-দিন!! মাহমুদ বাদে ওই পরিবারের সবাইকে সে অভিভূত করে নিজের আর্থিক স্বচ্ছলতায়। উপন্যাসটির অন্যতম দুটি চরিত্র হলো মাহমুদের বন্ধু শাহাদাত ও বন্ধুপত্নী আমিনা। কঠোর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আমেনা দারিদ্র্যের কারণে না খেয়ে মরতেও রাজি; তবু এক মুহূর্তের জন্যও নিজের আত্মসম্মানকে বিসর্জন দিতে প্রস্তুত নয়!!! দারিদ্র্যপীড়িত একটি পরিবারের হাসি-কান্নার আলেখ্য হলো জহির রায়হানের উপন্যাস 'বরফ গলা নদী'। সেখানে আছে সন্তানের স্বাধ আহ্লাদ পূরণে ব্যর্থ বাবার হৃদয়ের আকুতি , পুত্র কন্যার প্রতি মায়ের অমোঘ ভালোবাসা;আছে একটি সুখী জীবনের আশা,যৌবনের একটুকরো ভালোলাগা, আছে হাসি কান্নার অন্তরালে একটুখানি প্রাপ্তির ছোঁয়া।। ব্যক্তিগত মতামত --- একটি দুর্ঘটনা বদলে দিতে পারে হাজারো প্রাণের আশা ভরসা ভালোবাসা। যতবার পড়ি ততবারই ভালো লাগে **ব্যক্তিগত রেটিং - পাঁচ **প্রিয় চরিত্র -- মাহমুদ **অপ্রিয় চরিত্র -- মনসুর **পছন্দের উক্তি-- ১. জ্বলে-জ্বলে ক্ষয়ে যাওয়া মোমবাতির মত ধীরে ধীরে ফুরিয়ে যাবে সবকিছু!!! ২. হাজার হোক, চক্ষুলজ্জা বলতে একটা প্রবৃত্তি আছে মানুষের!! ৩. কতদিন বলেছি, বড়লোকের বাচ্চাগুলোকে আমি দেখতে পারি না আর তুমি ওদের সঙ্গে হাওয়া খেয়ে বেড়াও!! ৪. কেরানির জীবনে সঞ্চয় সম্ভব নয়। ৫. গরিব হয়েছি বলে বুঝি সাধ - আহ্লাদ নেই আমাদের?? ৬. এ সমাজে বাঁচতে হলে মিথ্যের মুখোশ পড়তে হয়!!
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভালো একটা উপন্যাস।পাঁচ ভাইবোন,মা বাবার,মধ্যবিত্ত অভাবী একটা সংসারের কাহিনী। আমাকে সবচেয়ে বেশি নারা দিয়েছে। ছাদ ডোসো এই একই পরিবারের চার জনের মৃত্যু।(উপন্যাসটা পড়লে বুঝতে পারবেন)অনুভব করতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
??
Was this review helpful to you?
or
বইটি সবে মাত্র পড়া শুরু করেছি। জহির রায়হানের অন্যসব উপন্যাস কিংবা গল্পের মতো তেমন জমছে না "বরফ গলা নদী"। হয়তবা আরও কিছুদূর এগুলে ভালো লাগবে। এই চিন্তা মাথায় রেখে পড়ছিলাম, কিন্তু এক পর্যায়ে এসে এমন ধাক্কা খাবো স্বপ্নেও কল্পনা করি নি। জহির রায়হানের প্রতিটি লেখাই অনন্য সাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
ক্ষয়িঞ্চু নিম্ন-মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের ঘাত-প্রতিঘাত, আনন্দ, বেদনা, পাওয়া-না পাওয়াগুলোকে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে 'বরফ গলা নদী'। ১৯৬৯ সালের একটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনযাত্রা কেমন ছিল সেই ব্যাপারে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে উপন্যাসটি থেকে। উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে মেকি বলে মনে হয় না। এত সাধারণ, এত বাস্তব, এত চেনা যে চরিত্রগুলোর সাথে পাঠক হিসেবে মিশে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় না মোটেও। শব্দের ছোঁয়ায় বাস্তবসম্মত দৃশ্যপট সুচারুভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক জহির রায়হান। কিন্তু কিছু কমতিও রয়ে গেছে। উপন্যাসটা শেষ করার পর সচেতন পাঠকদের মনে যুক্তির বিচারে কিছু প্রশ্নের উদয় হতে পারে। কিন্তু উপন্যাস হাতড়ে হয়তো জবাব খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্পয়লার এড়াতে বিষয়গুলো উহ্য রাখা হলো। তারপরও সবদিক বিবেচনায় 'বরফ গলা নদী' বাংলা সাহিত্যের একটি সম্পদ হিসেবে পাঠকদের কাছে জায়গা করে নিয়েছে। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হলেও পাঠকদের কাছে যে উপন্যাসটির আবেদন এখনও কমেনি তার প্রমাণ পাওয়া যায় বইটির সংস্করণ সংখ্যা ও সালের দিকে তাকালে।
Was this review helpful to you?
or
বরফ গলা নদী নামটার মধ্যেই গতিময়তার একটা ভাব বিদ্যমান৷মানুষের জীবনতো বরফ গলা নদীর মতোই৷উপন্যাসটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো৷অনেক দিন থেকেই পড়ার ইচ্ছে ছিলো৷চমৎকার একটি উপন্যাস৷পড়তে পারেন হয়ে যেতে পারে আপনার পড়া সেরা উপন্যাসগুলোর একটি৷
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া জীবনে অন্যতম সেরা একটি উপন্যাস। মধ্যবিত্ত পরিবারের চলনধর্ম,জীবনধারা,প্রেম সকলকিছুর এক সমন্বিত প্রয়াস।একজন মানুষের জীবনে দুইবার প্রেম আসতে পারে কিন্তু সেটাকে আমরা সহজবোধ্য ভাবে মেনে নিতে পারিনা। দোষারোপ আর সন্দেহের অনলে আমরা তা বিলীন করে দিই। কিন্তু একটা সময় পর তা ঠিকই বুঝা যায়। জীবন কখনো থেমে থাকেনা, তাকে চালিয়ে নিতে হয়। সেটাও পেলাম। হাসি, কান্না, অভিমান সকলকিছু নিয়ে এক অপরুপ আয়োজন হলো বরফ গলা নদী।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের সব উপন্যাসই দারুণ। বরফ গলা নদীও তেমনি একটা উপন্যাস। শেষের দিকে এসে গল্পটা এভাবে মোড় নেবে তা কখনো কল্পনা করি নি। সত্যি অসাধারণ একটা উপন্যাস। আর মাহমুদের চরিত্রটা আমার ভীষণ ভালো লাগসে। . " ....... মাহমুদের কানে কথাটা এলো কিনা বোঝা গেল না। আগের মতো পথ চলতে লাগলো সে। পুরো সন্ধেটা পথে পথে ঘুরে কাটিয়ে দিলো মাহমুদ। সেও মরতে পারতো,কিন্তু বেঁচে গেছে, অদ্ভুতভাবে বেঁচে গেছে সে। কাল যারা ছিলো আজ তাঁরা নেই। নেই -- একথা ভাবতে গিয়েও বিশ্বাস হয়না তার। মনে হলো তাঁরা বেঁচে আছে তাদের কথাবার্তা সব শুনতে পাচ্ছে সে। দেখতে পাচ্ছে তাদের। কিন্তু তারা নেই।......... " . ....." ফটোর দিকেকে চেয়ে মৃদু গলায় লিলি জিজ্ঞাস করলো, ক- বছর হলো ? মাহমুদ ওর কাঁধে হাতজোড়া রেখে বললো, পাঁচ বছর। পাঁচটা বছর চলে গেছে তাই না ? লিলির দৃষ্টি তখনো হাতে ধরে রাখা ফটোটার ওপর। ধীরেধীরে মাহমুদের দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওর মুখে চোখ তুলে তাকালো লিলি। চোখজোড়া পানিতে টলমল করছে ওর। দুজনে মৌন। দুজনে নিরব। মাহমুদের গলা জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো লিলি। বুকটা কি অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে ওর। অসহায়ের মতো কাঁপছে। ওর ঘন কালো চুলগুলোর ভেতর সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিয়ে মাহমুদ মৃদু গলায় বললো, কেন কাঁদছো লিলি। জীবনটা কি কারো অপেক্ষায় বসে থাকে ? আমাদেরো একদিন মরতে হবে। তখনো পৃথিবী এমনি চলবে। তার চললা বন্ধ হবে না কোনো দিন। যে - শক্তি জীবনকে চালিয়ে নিয়ে চলেছে, তার কি কোনো শেষ আছে লিলি ? "
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৩ মাসঃ আগস্ট পর্বঃ ৩ বইঃ বরফ গলা নদী লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী ৭ম সংস্করণঃ ২০১৭ প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ ধরণঃ সামাজিক উপন্যাস পৃষ্ঠাঃ ৯৬ মূল্যঃ ১৪০ #লেখক_পরিচিতঃ #জহির_রায়হান বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার জহির রায়হান (১৯ আগস্ট ১৯৩৫ - ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার। বাংলা সাহিত্যের গল্প শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৭৭ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে ১ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে মরণোত্তর বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। “বরফ গলা নদী” তাঁর রচিত চতুর্থ উপন্যাস। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। তার রচিত প্রথম উপন্যাস শেষ বিকেলের মেয়ে ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়। তার রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হল হাজার বছর ধরে ও আরেক ফাল্গুন। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের জন্য ১৯৬৪ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র কখনো আসেনি (১৯৬১)। ১৯৬৪ সালে কাঁচের দেয়াল চলচ্চিত্রের জন্য তিনি নিগার পুরস্কার লাভ করেন। তার নির্মিত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হল বেহুলা, সংগম, আনোয়ারা এবং জীবন থেকে নেওয়া। স্টপ জেনোসাইড প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে প্রশংসিত হন। #পাঠ_সংক্ষেপঃ চারপাশে নোংরা আবর্জনা ছড়ানো। কলার খোসা, মাছের আমিষ, মরা ইঁদুর, বাচ্চা ছেলেমেয়েদের পায়খানা- সব মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকলেও একাকার হতে পারেনি গলিতে বাস করা মানুষ গুলো। মরিয়ম জাহেদকে ভালোবেসেছিল। একসময় খুব বিরক্তিকর মনসুরকেও ভালোবেসে ফেলে মরিয়ম। দুজনকে কি সমানভাবেই ভালোবেসেছিল, নাকি প্রথম প্রেম বলে সত্যিই কিছু আছে? বারবার মনসুরের সেই প্রশ্নটি মাথায় ঘুরছে, একজন মানুষ কি কখনো দুইজনকে প্রেম দিতে পারে? মরিয়মের মৃত্যুর পর মনসুর কি তার ভুল বুঝতে পেরেছিল? নাকি মনসুরের কোনো ভুলই ছিলো না। সবার কাছে কাঠখোট্টা প্রকৃতির মানুষ মাহমুদ। বন্ধু শাহাদাতের বিদায়ে সেই পাথর মনের মাহমুদকেও দীর্ঘশ্বাস ফেলতে দেখা যায়। চঞ্চল হাসিনা আর তসলিমের মাঝে যে প্রেম চলছিল, তা হাসিনার মৃত্যুতে থেমে যায়নি। প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করে না বলেই হয়তো তসলিম অন্য কাউকে বেছে নিয়েছে। দোকানী খোদাবক্স সবসময় খদ্দেরদের জন্য শুভকামনা করে। অবশ্য তাতে আর সুপ্ত স্বার্থ আছে, খদ্দেরদের চাকরি হলে যে বাকি টাকা গুলো পাবার সম্ভাবনা আছে। রফিক, নঈম এখন আর আড্ডা দেয়ার সময় পায় না। সবাই যে যার মতো কাজে ব্যস্ত। সালেহা বিবি আর হাসমত আলী ব্যর্থ মা বাবা। বাসস্থান যে কোনো সময় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে জেনেও তারা পারেনি ছেলেমেয়ে নিয়ে অন্য কোথাও সরে যেতে। তবু তারা দু'চোখে নতুন ভোর, নতুন স্বপ্ন নিয়েই ঘুমাতে গিয়েছিল। ঘুমের মধ্যেই সবাই চলে গেছে নতুন দেশে, যেখান থেকে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়। মাহমুদ সেই ভয়ংকর রাতের স্মৃতি কখনওই ভুলতে পারবে, যে রাতে ধ্বংস হয়ে গেছে তার গোটা পরিবার। তবু লিলি আর মাহমুদ তাদের জীবন গুছিয়ে নিয়েছে। মাত্র পাঁচ বছর সময় অথচ পরিবর্তন কত টা বিশাল। তসলিমের তোলা পারিবারিক ফটোটা দেখে মাহমুদের গলা জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে লিলি। সান্ত্বনা দিয়ে মাহমুদ বললো- " জীবনটা কি কারো অপেক্ষায় বসে থাকে? আমাদের ও যে একদিন মরতে হবে। তখনো পৃথিবী এমনি চলবে। তার চলা বন্ধ হবেনা কোনোদিন। যে শক্তি জীবনকে চালিয়ে নিয়ে চলেছে, তার কি কোনো শেষ আছে লিলি? #প্রিয়_উক্তিঃ "মা, রোজ পাঁঁচ বেলা যার কাছে মাথা ঠোকো, তাকে ভুলেও কি একবার জিজ্ঞেস করতে পারো না, এত সাধ-আহ্লাদ দিয়ে যদি গড়েছেন তোমাদের, সেগুলো পূরণ করার সামর্থ্য কেন দেননি?" #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ জীবনের বাইরেও যে জীবন আছে, শুধু খেয়ে পরে বাঁচতে চাওয়াও যে কারো স্বপ্ন হতে পারে তা বইটি পড়লেই জানা যায়। বইটি পড়ে মনে হলো জীবন বড়লোকের কাছে বিলাসিতা, আর অন্যদের কাছে হয়তো বরফ গলা নদী,,, রিভিউ লিখেছেনঃ শামীমা শাম্মী
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_ প্রতিযোগিতা বই:বরফ গলা নদী লেখক:জহির রায়হান প্রকাশনী:অনুপম মূল্য:১৪০ টাকা কাহিনী সংক্ষেপ:"জীবন"- আত্ম অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ব্যপিত প্রতিশব্দ,সংগ্রামের এক বিশ্লিষ্ট সমার্থক।এরকমই সংগ্রামের বন্ধুর পথের সংগ্রামী তরুণ মাহমুদ।টিকে থাকার,বেঁচে থাকার মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের যোদ্ধা সে।এই গল্প তার মধ্যবিত্ত জীবনের সাথে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মানিয়ে নেয়ার,কষ্ট থেকে কামনার,বিষাদের উন্মত্ত্বতা থেকে উত্তরণের।এই আখ্যান উপলব্ধির,উপভোগে র,যাতনার।এ জগত "জীবন"শব্দটিকে ভালোবাসার,গভীরভাবে ভাববার,সুখ খোঁজার।পাঠক এ জগতে আপনি সাদরে আমন্ত্রিত। পাঠ প্রতিক্রিয়া:সংগ্রহ কিংবা পঠন স্বল্প হলেও জহির রায়হানের বইয়েরই প্রাচুর্যতা বেশি।বইটিকে যখন হাতে নিয়েছিলাম তখন এর ভাবের প্রগাঢ়তা সম্বন্ধে কল্পনাও করতে পারিনি।প্রতিটি চরিত্রই যেন জীবন্ত,সকলেই পাশে বসে আছে আর বাধ্য করছে তাদেরকে জানতে,অনুভব করতে।মাহমুদ,লিল ি,মরিয়ম,মনসুর প্রত্যেকেই নিজ নিজ বিশেষণে অদ্বিতীয়। তাদের নিজস্ব পৃথিবীটা যেন তাদেরই একার,আত্মিক।জহির রায়হান মনে হয় পাঠকের মনন নিয়ে খেলতে ভালোবাসতেন। তাই শেষ পর্যায়ে অশ্রু ভেজানো উপকরণ রেখেছেন তিনি।সবার ভালো লাগতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
যারা হুমায়ুন আহমেদ এর মধ্যবিত্ত স্টাইল পছন্দ করে, তাদের জহির রায়হানকে পছন্দ করার কারন লাগেনা। অতিথির সামনে খাবার প্লেট আসে। সন্দেশ রসগোল্লা, দরজা দিয়ে উকি দিয়ে দেখি। একটা রসগোল্লা যেন থাকে। অতিথি যাবা মাত্রই ঝাপিয়ে পড়া। হাসিনা, দুলু আমাদের সেই মধ্যবিত্ত কিশোর কিশোরী। এমনে সময়ে মা ওত তেল দিয়ে, মসলা দিয়ে রান্না করতেন না। অতিথি এলে তাই মাংস তেল টইটই করত। আমরাও তাই অতিথির সাড়ায় তাদের সাথেই খেতে বসে যেতাম। "টাকার অভাবে তোমরা যে আত্ম বিক্রি হয়ে আছ তা আমি জানি"। প্রাক্তন সাংবাদিক, বর্তমান প্রেসরিডার মাহমুদ বলেছিল। সে আত্ম বিক্রি আজকাল কে হয়না। ছেলের বাবা, বা মেয়ের বাবা, টাকা অনেক কিছু বলে। খালি বড় ভাইটা আদর্শবাদী যুদ্ধ করে যেতে চায়। থাকে সিনেমার মত প্রতিটা পরিবারেই থাকে। "যেভাবে আমরা থাকি সেভাবে মানুষ থাকেনা। কি দরকার আরেকটা নিরীহ।মেয়েকে অমানুষ বানিয়ে"এই হুমায়ুন আহমেদ, জহির রায়হান আমাকে বড়ই হীনম্মন্যতায় ভোগায়। দেখা যায় কাউকে চোখের দেখায় ভালো লাগল, কিন্তু যখন একটু ডানে চকচকে গুচি ব্র্যান্ডের ব্যাগ। থাক। বরফকে এভাবেই ভেংগে দিতে হবে। বলো? নয়তো মরিয়ম ই মারাই যেত, রাগে অভিমানে। বা হাসমত আলী ঋণে জর্জরিত হয়ে, ট্রামে উঠে পড়ত। বড় ভাই হিসেবে সেই ভাগটা মাহমুদের গলাতেই ঝুলিয়ে দিলে। সবাই কত সুখী তাইনা। সবাই কত সুন্দর সব কিছু ভুলে বসে আছে। অতীত তো তাই। বর্তমান ই সব। একগাদা রাগ অভিমান নিয়ে, বইটা পড়ে শেষ করলাম।
Was this review helpful to you?
or
“বরফ গলা নদী” মূলত একটি সামাজিক উপন্যাস। অর্থনৈতিক দোলাচলের মধ্যে চলতে থাকা এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের দিনাতিপাত এবং একটি দুঃঘটনার ফলস্বরূপ অভ্যস্ত জীবনস্রোতে আমুল পরিবর্তন গল্পটির মূলভিত্তি। বেকারত্বের জ্বালা এবং চাকুরেদের ক্ষেত্রে যোগ্য চাকরির অভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গল্পের মাহমুদ চরিত্রের মধ্য দিয়ে। পারিবারিক খুনসুটি, অপরিণত প্রেম, মনমালিন্য, ছোট ছোট চাহিদার সমাবেশ, ধনী বিদ্বেষ, সামাজিক মর্যাদাক্ষয়ের আশঙ্কা, আপনজন বিয়োগের মতো ঘটনার বিন্যাস ঘটেছে উচ্চতর লেখনীশৈলীর মধ্য দিয়ে।
Was this review helpful to you?
or
বই পড়ে রিভিউ লেখার অভ্যাস আমার একেবারেই নেই। এতো এতো বই পড়ি, কিন্তু কেনো জানিনা, কখনো কোনদিনও কোন রিভিউ লেখা হয়নি আমার। তবে এই উপন্যাসটি আমার মনে এতোটাই দাগ কেটেছে যে, বইটি পড়ার এতোদিন পর এসেও যখন রকমারিতে হঠাৎ বইটির প্রচ্ছদ চোখে পড়লো, মনে হলো একটু রিভিউ লিখি বইটি নিয়ে। অবশ্য এটাকে রিভিউ না বলে বরং আমার অনুভুতি প্রকাশ বলাটাই শ্রেয়। আমার পড়া অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বিশিষ্ট চলচিত্রকার, ঔপন্যাসিক ও গল্পকার জহির রায়হানের “বরফ গলা নদী”। সাধারণ মধ্যবিত্তের টানাপোড়ন নিয়ে সাজানো উপন্যাসটির শেষ পাতাটি না পড়া পযর্ন্ত গল্পটির আসল বিষয় আপনি কখনোই বুঝবেন না। রিভিউ লেখার আগে আমার অনুভূতি একটু শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছিনা। সাধারণত আমি বই পড়তে পড়তে হাসি, আবার কখনো বই পড়তে পড়তেই চোখের কোণে হীরার মতো চকচক করে ওঠে পানি। কখনো বা কপোল বেয়ে গড়িয়েও পড়ে কয়েক ফোঁটা। কিন্তু বরফ গলা নদী পড়ার পর প্রথম কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে ছিলাম। তারপর টের পেলাম চোখের পানিতে মুখ ভিজে গেছে কখন যেন। এখানেই শেষ হলেও হতো। কিন্তু তা হলো না, বইটি পড়ার পরের পুরো সপ্তাহ জুড়ে আমার মনে বইটির রেশ থেকে গেলো। যাই করি, ঘুরে ফিরে বইটির কাহিনী মনে পড়ে। কী নিষ্ঠুর পরিনতি!!! সাধারণত বই পড়তে পড়তে আমরা শেষের দিকে কি হবে, অনেকটাই উপলব্ধি করতে পারি, কিন্তু এই বইটির শেষাংশ আপনি কখনোই আগে থেকে উপলব্ধি করতে পারবেন না। তাই অনুরোধ করবো, খুব ভালো একটি বই যদি আপনি পড়তে চান, নির্দিধায় জহির রায়হানের এই অসাধারণ উপন্যাসটি আপনি পড়ে ফেলুন। জহির রায়হানের সব উপন্যাসই খুব সুন্দর, কিন্তু এটি বিশেষ ভাবে আপনার মনে থাকবে। অন্তত আমার ক্ষেত্রে তাই-ই হয়েছে। যাই হোক, মূল রিভিউতে চলে আসি। বরফ গলা নদী একটি সামাজিক উপন্যাস যেখানে মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের কষ্টসাধ্য জীবনযাপন তুলে ধরা হয়েছে। হাসমত আলী একজন কেরানী। স্বাভাবিকভাবেই অন্যসব কেরানীর মতো তারও নানা দুঃখ-কষ্ট, অর্থাভাবে সংসার চলে। স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে কষ্টের মাঝে যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা আর নানা পোড়-খাওয়া নিয়ে এগিয়ে গেছে উপন্যাসটি। যেখানে মূল চরিত্র ছিল হাসমত আলীর বড় ছেলে মাহমুদের। যারা নিজের কষ্ট নিজের ভিতরে লুকিয়ে রাখে, মাহমুদ তাদের মধ্যেই একজন। তার ভেতরটা কখনোই প্রকাশ পায়না। আপাত দৃষ্টিতে তাই মাহমুদকে স্বার্থপর বলে মনে হলেও অন্যের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া মাহমুদ তা কাউকে বুঝতে দেয় না। একটি পত্রিকার সাব-এডিটরের কাজ করে যা মাইনে পায় তাই দিয়েই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা আর সংসারের হাল ধরতে চাওয়া মাহমুদের কাছে কখনো আবদার করতে পারে না ছোট-ভাইবোন গুলো। তাদের সকল আবদার তাদের বড় বোনের কাছে। সেই বড় বোনটির যখন একটি ধনী পরিবারে বিয়ে হয় তখন সকলেই আশায় বুক বাঁধে। এই বুঝি তাদের কষ্টের দিন শেষ হতে চলেছে। যদিও এ কথা ভােবেনি মাহমুদ। ধনীরা তার দু’চোখের বিষ। এভাবেই এগিয়ে চলা গল্পের শেষ দিকে একদিন স্বামীর সাথে রাগারাগি করে বাবার বাসায় আসে বড় মেয়ে হাসিনা। সেদিন সারারাত অফিসে কাজ করে ভোরে যখন মাহমুদ ঘরে ফেরে তখন সে দেখে একটি নতুন ভোর! কী ছিল সেই ভোরে, সেটি জানতে হলে বইটি পড়ুন। সব কিছু রিভিউতে থাকতে নেই। আমার এই ছোট্ট রিভিউটি মোটেও পাঠযোগ্য নয়, তাই এই রিভিউ পড়ে কেউ হতাশ হবেন না, মূল বইটি কিন্তু আসলেই অসাধারণ। যদি না পড়ে থাকেন, তবে মনে করবেন আপনার জীবনে একটি অসাধারণ উপন্যাস মিস করলেন।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটা আমার আজীবন সংগী। যতোদিন বেচে থাকবো এই বইটা আমার আত্তার সাথে মিশে থাকবে। এর চেয়ে আর কোনো ভালো উপন্যাস আছে বলে আমার মনে হয় না। পরম শ্রদ্ধাভরে শ্মরন করি আমার প্রিয় লেখক কে
Was this review helpful to you?
or
ছুটির দিনের সকালটা বেশ কাটলো জহির রায়হান এর "বরফ গলা নদী" উপন্যাস পড়ে।সত্যিই চমৎকার একটা উপন্যাস। আমার এ ক্ষুদ্রজীবনে পড়া উপন্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা উপন্যাস এটি।উপন্যাসের নামকরণও সার্থক হয়েছে পুরোপুরি। মানুষের জীবন তো আসলে বরফ গলা নদীই।
Was this review helpful to you?
or
মধ্যবিত্ত পরিবারে নিজের খেয়াল মত বেঁচে থাকা অনেক দুঃসাধ্য একটা ব্যাপার। এখানে বেঁচে থাকতে হলে আগে ভাবতে হয় পরিবারের সবার কথা।এরপর যদি নিজের ভাল থাকার মত কিছু থেকে থাকে তবে তাই নিয়ে বাঁচতে হয়। এমনি এক মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় সন্তান মাহমুদ। অভাবের মাঝে বড় হওয়া মাহমুদের বড়লোকের সন্তানদের প্রতি ছিল তীব্র ঘৃণা। এত অভাবের মাঝেও সে নিজের মনুষ্যত্বকে বিলিয়ে দেয় নি।সারা রাত প্রুফ রিডিং এর কাজ করে মাস শেষে বেতনের অনেকটাই দিয়ে দিত পরিবারের জন্য।ছোট ভাইবোনদের জন্য কখনোই সে কিছু করতে পারে নি। মাহমুদের বাবাও কখনো ছেলেমেয়ের শখ পূরণ করতে পারেন নি।মাহমুদের বোন হাসিনা খুব আহ্লাদী স্বভাবের। বোন মরিয়মের কাছে তার নিত্য নতুন বায়না।মরিয়মও চেষ্টা করে সাধ্যমত তার আহ্লাদ পূরণ করতে। অভাবের নিত্য নতুন উপশমগুলো বড্ড কষ্ট দেয় মাহমুদকে।পরিবারের জন্য কিছু করতে না পারার কষ্ট তাকে বারবার বিক্ষিপ্ত করে তোলে। এরই মাঝে মরিয়মের বিয়ের সময় পরিচয় ঘটে মরিয়মের বান্ধবী লিলির সাথে।কথা বেশি না হলেও মাহমুদকে নিয়ে এক ধরনের ভাল লাগা কাজ করে লিলির। মনসুরের সাথে মরিয়মের বিয়েটা এই পরিবারে এক ধরণের শান্তির বার্তা নিয়ে আসে।একমাত্র মাহমুদ ছাড়া সবাই ভেবে নেয় এবার পরিবারের অভাব ঘুচে নতুন দিন আসবে। নতুন দিন এসেছিল। কিন্তু কিভাবে? জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে বইটা। বই এর শুরু থেকে শেষ অবধি এক ধরণের ভাল লাগার আবেশ আপনাকে মুগ্ধ করে রাখবে। বই এর নামকরণ এক কথায় সার্থক।একটা পরিবারের শুরু থেকে পথচলা কোথায় এসে শেষ হচ্ছে লেখক এক লেখনীতে প্রকাশ করেছেন অসাধারণভাবে। লেখকের সৃষ্ট প্রতিটা চরিত্র পাঠকের সামনে উপস্থিত হবে নিজ নিজ ভঙ্গিমায়। জহির রায়হান একাধারে ছিলেন গল্পকার, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং ঔপন্যাসিক। তার সৃষ্ট আরও অনেক উপন্যাস আমরা পড়েছি। মুগ্ধ হয়েছি একাধিকবার। ‘বরফ গলা নদী’ ও তার ব্যতিক্রম নয়।
Was this review helpful to you?
or
ধণী, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সকল পাঠকেরাই উপন্যাসের চরিত্রগুলোর সাথে জড়িয়ে যাবেন। যেখানে অর্থের সাথে সম্পর্কগুলো কিভাবে ঢেউ তুলে পাঠক তা উপলব্ধি করবে। সাথে সাথে মাহমুদ চরিত্রটি স্থবিরতা রেখে যাবে বুকে। অত্যন্ত বাস্তবিক উপন্যাস। কিনে পড়ুন, অন্যকেও পড়তে দিন। টাকা বিফলে যাবেনা, জোর গলায় বলতে পারি।
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে উপন্যাস পড়ার পর এই প্রথম জহির রায়হানের এই উপন্যাস টা পড়ে সত্যি খারাপ লাগলো। চরম বাস্তব একটা উপন্যাস। একদমে কয়েক ঘন্টার ভেতরে পুরো উপন্যাস টা পড়ে ফেললাম। একটুও বোরিং ফিল হোল না। আমরা যারা মধ্যবিত্ত তাদের জন্য একটা চরম বাস্তব উপন্যাস। 'মরিয়ম' মেয়েটার জন্য খারাপ লাগলো। সারাটা জীবন কষ্ট করেও কিছুই পেলো না সে। উপন্যাস টা পরে মনে হোল সত্যি বাস্তব কারো জীবনের প্রতিচ্ছবি। পুরো ঘটনা জানতে উপন্যাস টা পড়ুন। আশা করি আপনাদের টাকা বিফলে যাবে না।
Was this review helpful to you?
or
আমার কাছে মনে হয়েছে এটি একটি সামাজিক উপন্যাস । হুমায়ুন আহমেদ এর “শঙ্খনীল কারাগার” এবং “নন্দিত নরকে” এর পর আমার ভালো লাগা আরেকটি উপন্যাস “বরফ গলা নদী” । একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কোনরকমে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার চরম বাস্তবতা আছে এতে । বাবার বেতনের টাকায় চলে না এতগুলো মানুষের খাওয়া , পড়াশোনা , বাড়ী ভাড়া। নড়বড়ে ঘর , মায়ের তালি দেয়া শতছিন্ন ছেড়া শাড়ী , ছোট ভাই-বোনের ছোটখাটো আবদার পুরণ করতে না পারা এক সংগ্রামী জীবন মাহমুদের । বি.এ.পাশ করে একটা পত্রিকায় সাব এডিটর এর চাকরি করে মাহমুদ ৫০ টাকা মাইনে পায় , এতে নিজের খরচ রেখে পরিবারে একটু সাহায্য করে । চাকরি টা অনেক আশা করে নিয়েছিল কিন্তু সেই আশা সম্পাদকের নিয়মনীতির গণ্ডিতে বাঁধা পরে গেছে । বাড়ীর বড় মেয়ে মরিয়ম , অল্প বয়সে একটা ভুল করে ফেলে । যা তাকে পরবর্তী জীবনে সুখ থেকে বঞ্চিত করে রাখে । সেও নিজের পড়াশোনার খরচ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী পড়িয়ে জোগাড় করে নেয় । ছাত্রী পড়ানোর সুবাদে একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে । পারিবারিক আয়োজনেই বিয়ে হয়ে যায় বড়লোক ছেলে মনসুরের সাথে । যদিও এই বিয়েতে মরিয়মের বড় ভাই মাহমুদের মত ছিল না । মাহমুদ বড়লোকদের দুচোখে দেখতে পারে না । সে শুধু সমাজের দুটি সম্পর্ককে জানে , ধনী আর গরিব । তার কাছে নাকি বাবা মা ভাই বোন নিয়ে আলাদা কোন অনুভূতি কাজ করেনা সেটা সে বলে বেড়ায় কিন্তু পরিবারের মারাত্মক বিপর্যয়ে দেখা যায় সেই প্রথমে ভেঙ্গে পড়ে। এই গুলো ছিল তার রাগের কথা মনের কথা নয় । মরিয়মের বিয়ের প্রায় ৬ মাস পড়ে একদিন হটাৎ কাপড়চোপড় নিয়ে হাজির হয় মরিয়ম । মনসুরের সাথে হওয়া মনমালিণ্য নিয়ে বাসার কাউকে কিছু জানায়নি সে । সেই রাতেই চরম বিপর্যয় ঘটল সেই বাসায় । কি হয়েছিল সেটা না হয় পড়েই জানতে পারবেন । আরও অনেকগুলো চরিত্রের ছোটখাটো ঘটনা সন্নিবেশিত আছে এতে । পড়তে বসলে বোরিং লাগবে না । আমি শুধু এখানে কাহিনী সংক্ষেপ আকারে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি । আশা করি এইটুকু পড়লে আপনাদের বই পড়ার মজা নষ্ট হবে না ।