User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ভালো বই। বেশ অন্যরকম হরর গল্প।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটি উপন্যাস।এটি কোনো টিপিক্যাল ভ্যাম্পায়ার,ড্রাকুলা বা প্রেতাত্মা ওয়ালা হরর নয়।এই হররের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে ভয় এবং রোমাঞ্চ।লেখনি বেশ পরিণত এবং লেখার স্টাইলের জন্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে ইচ্ছা করে।বেশ কিছু ম্যাচিউর কন্টেন্ট রয়েছে এবং এজন্যই কাহিনিটিকে খুবই বাস্তব মনে হয়েছে কারন এই বইয়ে একটা লাইনও অপ্রয়োজনীয় মনে হয়নি।কাহিনির কথা বলতে গেলে এটি খুবই অদ্ভুত এবং কাহিনিটি ভালো খারাপের সীমায় আটকানো কঠিন।পাঠককে নিজে পড়ে বুঝতে হবে।বইয়ের এন্ডিং ছিল মারাত্মক। সব মিলিয়ে বইটিকে আমার কাছে একটি আন্ডাররেটেড হরর মাস্টারপিস মনে হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম: এই বাড়িটা ভালো না লেখক: আসমার ওসমান বইয়ের ধরন: ভয়ের উপন্যাস প্রকাশনী: জাগৃতি প্রকাশনী প্রচ্ছদ: ফয়সল আরেফিন প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০১৪ কোথা থেকে তৈরি হয় গল্প? একটা পর একটা শব্দ দিয়ে গল্প তৈরির রসদ আসে কোত্থেকে? আজ যদি কেউ আমাকে বলে- লেখ তো দেখি পাপুয়া নিউগিনির এক বিধবা মায়ের সংগ্রামের গল্প? কিংবা কেউ যদি বলে তিউনিসিয়ার এক জাদুঘরের কিউরেটরের প্রেমের গল্পটা আমাকে লিখে দিতে? কিংবা কেউ যদি আবদার ধরে কেমন করে শ্রীলংকার এক ঘন অরণ্যে বিদ্রোহী এক সেনার সাথে মাতৃহারা ব্যাঘ্র-শাবকের বন্ধুত্ব হলো তার গল্প লিখে দিতে? পারবো আমি? আজকাল পত্র-পত্রিকা, ন্যাশনাল জিওগ্রফিক চ্যানেল কিংবা ইন্টারনেটের তথ্যগুলো গুছিয়ে দিলেও, ঐ গল্প কিংবা গল্পগুলো আমি বলতে পারবো? হবে? কেউ বলে গল্প আসে অভিজ্ঞতা থেকে। কেউ বলে শৈশব আর বেড়ে ওঠবার কালের স্মৃতিই লিখিয়ে নেয় আমাদের দিয়ে। স্মৃতি বড় এক খেলোয়াড় এই ক্ষেত্রে। তবে স্মৃতিও বড় সহজ-সোজা নয়, প্রায়ই শৈশবে কারও মুখ থেকে শোনা গল্পও অনেক সময় নিজের স্মৃতি বলে ভ্রম হয় পরিণত কালে। যদিও ঐখানে-ঐসময়ে আমার থাকবার কথা ছিলো না, তাও শুনতে শুনতে সেও যেন মনে হয় ব্যক্তিগত স্মৃতি। নিজেরই গল্প। নিজের দেখা। নাকি আমাদের শৈশব স্মৃতি আসলে কোন স্থানিক বিষয়ই নয়, বরঞ্চ পুরোটাই শুধুমাত্র নানা তথ্যের একটা বুনোট? এও হক কথা যে, লেখকের এমন কোন দায়ও নেই যে তাকে সত্যই লিখতে হবে। কাগজ-কলম হাতে লেখকের চে’স্বৈরাচারী আর কে আছে এই দুনিয়ায়! হলেও, একদম অদেখা-অজানা নিয়ে লেখা তৈরি তো আর সম্ভব নয়- তাল তৈরি করতে হলে তিলটা তো চাই! আবার শোনা-পড়া অভিজ্ঞতাও আমাদের ঝুলিতে জমতে জমতে তৈরি করিয়ে নেয় গল্প। তবে, আমরা যারা গল্প ফাদবার জন্য হা-পিত্যেশ করি, তারা জানি- গল্প আচমকাও তৈরি হয়, যার কার্যকারণের সন্ধান পাওয়া দায়। বাংলা একাডেমি’র একুশের বইমেলা ২০১৪-তে একটাই বই আমার। পাঁচ ফর্মার ছোট্ট বই। জাগৃতি প্রকাশনী থেকে । নাম রেখেছি- ‘এই বাড়িটা ভালো না । অগড়া প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ভূতের বই?’ মাথা চুলকে উত্তর দিয়েছিলাম, ‘নাহ্, ঠিক ভূতের গল্প না।’ ‘তবে?’ প্রকাশকের সতর্ক প্রশ্ন। ‘ভয়ের গল্প বলা যায়,’ উত্তরে বলি আমি। ‘ছোটদের?’ আবার জিজ্ঞাসা প্রকাশকের। ‘না, বড়দের বিষয়পত্তর ‘আছে,’ লজ্জার মাথা খেয়ে বলি আমি। ‘তাহলে প্রচ্ছদের উপর লিখে দিই- ‘বড়দের উপযোগী ভয়াল উপন্যাস?’ প্রকাশকের জিজ্ঞাসা। ‘না না, মাথা দু’পাশে ঝাঁকিয়ে বলি, ‘বড়দের উপযোগী লেখাটা বড্ড কেমন কেমন শোনায়, মনে হয় বই বিক্রির কৌশল’। ‘ঠিক আছে’, একটু ভেবে বলেন প্রকাশক ‘তাহলে বইয়ের নামের ওপর লেখা থাকুক- ভয়ের উপন্যাস।’ কেমন করে তৈরি আমার এই শীর্ণ উপন্যাসটি? আমার বইয়ের আলমারিটায় চোখ বুলাই। শত-শত বই। পড়া, না পড়া, আধ পড়া। কিন্তু তার মধ্যে আমার মনে খুব করে গেঁথে থাকা বই ক’টা? সেও কম নয় সংখ্যায়। বইয়ের তাকে অনেকগুলো রগরগে ভৌতিক উপন্যাস- দেশী ও বিদেশী; সারি করে রাখা। একটু গর্ব করে এও জানিয়ে রাখি যে আমার ব্যক্তিগত ভৌতিক বইয়ের সংগ্রহটি, বেশ ক’বার বই-দুর্বৃত্তদের হাতে পড়া সত্ত্বেও এখনও যেকোন ভয়-প্রেমিকের ঈর্ষার কারণ হবে। সত্যি বলতে, প-িতেরা যে যাই বলুক, এগুলো পড়তে দিব্যি লাগে আমার। কেমন তরতরিয়ে এগোয় কাহিনী। তবে কেন যেন দুনিয়াজোড়াই ভৌতিক গল্পকে মূলধারার সাহিত্য হিসেবে গণনায় আনতে চাননা প-িতেরা- তাদের অভিযোগ ভৌতিক গল্পে নাকি জীবনবোধ নেই; ভয় দেখানো নাকি মহৎ সাহিত্যের লক্ষণ হতে পারে না। কে জানে। তবে ভয়ে-ভয়ে এও ভাবি যে জীবনের নানান রসের পাশাপাশি ভয়াল রসের উদ্যাপনে সাহিত্যের বোধকরি কোন ক্ষতিও ঘটে না। আমার একটা ইচ্ছে, হয়তো এগুলো পড়বার কারণেই, তৈরি হয়েছিলো যে অমন একটা উপন্যাস লিখবো। কিন্তু কেন যেন এও ভেবে রেখেছিলাম যে লিখলে লিখবো ঐ গল্প যেখানে ভূত থাকবেনা, থাকবে শুধু ভয়। এই বইতে ভূত নেই, নেই সিরিয়াল কিলারের ধারাবাহিক হত্যা। নেই ভিনগ্রহের ভয়াল কোনো জীব। অথচ পুরো বই জুড়ে রয়েছে শ্বাসবন্ধ করা আদি-অকৃত্রিম ভয়। স্মৃতিই চাবিকাঠি। গল্পের রসদ। তবে স্মৃতি আর গল্প বাঁক নেয়; আমাদের স্মৃতির চাইতেও প্রবলতর হয়ে লিখিয়ে নেয় কোন আখ্যান। একটুকরো মেঘ ঢেকে দেয় চাঁদ। বিশাল বটগাছের মতো অন্ধকার মেঘ। অন্ধকার। গাঢ়-নিখাঁদ অন্ধকার। থমকে দাঁড়ায় মাতাল জোছনা। হোক না সে আখ্যান লক্ষবার বলা আর শোনা, আমি সেটা না লিখে থাকতে পারি না। আমার অচেনা স্মৃতির জগত হয়ে ওঠে আমার লেখা। --আসমার ওসমান ([email protected])
Was this review helpful to you?
or
অপ্রয়োজনীয় Mature Content বেশি, বইয়ের আকার বাড়াবার চেষ্টা?
Was this review helpful to you?
or
তেল আভিভ শহরের জন্ম ১৯০৯ সালে। তেল আভিভ ইসরায়েলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ১৯০৯ সালে যখন এই শহরের গোড়াপত্তন হয় তখনও কেউ জানতো না মাসুদ রানা নামের একজন ভয়ংকর এজেন্টের জন্ম হবে তারও অনেকবছর পর বাংলাদেশ নামের একটি ছোট্ট দেশে এবং তেল আভিভের গোড়াপত্তনের ৯০ বছর পর মাসুদ রানা এই শহরে এসে উপস্থিত হবে অবকাশ যাপনের জন্য। ১৯৯৯ সালের অগাস্ট মাস। তেল আভিভ শহরের প্রান্তছোয়া সমুদ্রসৈকত। মাসুদ রানা যদিও এসেছে অবকাশ যাপনে কিন্তু এখানকার রানা এজেন্সি থেকে ওকে কোন হোটেলে থাকতে দেয়নি রানার নিরাপত্তার কথা ভেবেই। রানার সাথে মোসাদের সম্পর্ক ভাল নয়। প্যালেস্টাইন এবং আরব দেশগুলোর পক্ষ নিয়ে রানা বেশ ক’বার লড়েছে মোসাদের বিপক্ষে এবং বলাবাহুল্য যে প্রতিবারই রানা এজেন্সির কাছে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে মোসাদকে। তাই এবার যখন রানা এজেন্সির তেল আভিভ চীফ ফিদা হুসাইন রানাকে খুব করে ধরলো তাদের Shalom Meir Tower এর অফিসের ছদ্মবেশে নেয়া রানা এজেন্সির সেইফ হাউজে উঠতে, রানা আর মানা করতে পারেনি। তাছাড়া বহুদিন পর সোহানার সাথে এক হয়েছে রানা, এ অবস্থায় তার মনও সায় দিচ্ছিল না কোন উটকো ঝামেলা নিতে। আজকে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেছে রানা - এমনটা বললে ভুল হবে। সোহানা গতকাল গভীর রাতের ফ্লাইটে তেল আভিভে এসে পৌঁছেছে সিউল থেকে। তারপর লেট সাপার করে হট শাওয়ারে যাবার পর থেকে আর দু’জন আলাদা হয়নি। বলা যায় ভোরের দিকে দরজায় ‘do not disturb’ ঝুলিয়ে ঘুমুতে গেছে দু’জন। এই কিছুক্ষণ আগে ঘুম থেকে উঠেছে। রানা হাত-মুখ ধুয়ে বীচে চলে এসেছে, সোহানা অন্য সময় খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হতে পারলেও আজ রানার কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছে খানিকক্ষণ, শাড়ি পড়বে বলে। রানা অন্যমনস্কভাবে চারপাশের উঁচু ভবনগুলো খেয়াল করে নিল। সতর্কতার কোন বিকল্প নেই তাদের এই এস্পিওনাজ জগতে, একমুহুর্তের অসতর্কতায় জীবন খোয়াতে হতে পারে, খুব ভাল করেই জানে রানা। তেল আভিভ বীচটা আজ খুব শান্ত। তাপমাত্রা সহনীয়, ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো হতে পারে, যা স্বাভাবিকের চাইতে খানিকটা কমই বলা চলে। বাতাস বইছে সমুদ্রতীরবর্তী শহরটাতে, কিছু ধনী ইহুদী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে তাদের বেঁধে রাখা ইয়টে অলস শুয়ে আর কিছু শিশু-কিশোর বালির মধ্যে দৌড়া-দৌড়ি করে আনন্দে মত্ত। রানার হঠাৎ করেই মন খারাপ হয়ে যায়। প্যালেস্টাইনি মুসলমানদের জায়গা দখল করা ইহুদী ইসরায়েলিরা আজ বেশুমার আয়েশিতে জীবন কাটাচ্ছে অন্যদিকে দরিদ্র প্যালেস্টাইনিদের পানির সরবরাহও বন্ধ করে দেয় জালিম ইসরাইলি বাহিনী যখন-তখন। ভাবতে ভাবতে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় মাসুদ রানার। এবারের অভিযানটা সফল হলে স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গঠন সহজ হয়ে যাবে অনেকাংশেই এবং এর জন্য আরব বিশ্ব যে ওরদিকেই তাকিয়ে আছে তাও বেশ বুঝতে পারে রানা। নানাকথা ভাবতে ভাবতে দেখতে পায় সোহানা এগিয়ে আসছে তার দিকে হাসতে হাসতে। কালো জর্জেটের একটা শাড়ি পড়েছে সোহানা, সোনালী ঢেউ খেলানো চুল কাধের ওপরদিয়ে এলিয়ে দিয়ে এগিয়ে আসছে রানার দিকে। রানা যতবারই সোহানাকে দেখে এখনও তার হার্ট-বিট মিস করে। মনে পড়ে যায় প্রথম চুম্বনের দিনটার কথা। কোন এক ১৪ ফেব্রুয়ারী, এখন যে জায়গাটায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্লট বিক্রি চলছে, সেখানেই একটা এসাইনমেন্টের পর রানা আর সোহানা দাড়িয়ে ছিল চুপচাপ। সেদিন পূর্ণিমা, রানার স্পষ্ট মনে আছে কোন এক অদ্ভুত কারণে সেদিনও সোহানা কালো একটা শাড়ি পড়ে ছিল যদিও সাধারণত এজেন্টরা মিশনে যাবার সময় শাড়ি পড়েনা। রানা আকাশ জোড়া চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখেছিল সোহানার বা-কাধের তিলটাকে আর সেদিনই বুঝি বুঝে গিয়েছিল আর কোনদিনও কারও প্রেমে পড়া হবেনা তার। সোহানাকে এগিয়ে আসতে দেখে রানার ইচ্ছা করে আবার ঘরে ফিরে যায়, কিন্তু কিচ্ছু করবার নাই, তার প্রিয় বন্ধু এবং রানা এজেন্সির সি।ই।ও সোহেলও এই মুহুর্তে তেল আভিভে এবং জরুরী দরকারে রানা আর সোহানার সাথে দেখা করতে চায়। তাই প্রিয় বন্ধুকে আর মানা করেনি রানা, বলে দিয়েছে দুপুরের লাঞ্চটা তারা করবে একসাথে Catit এ। Catit শহরের ঠিক বাইরে একটা রেস্টুরেন্ট, অভিজাত এবং স্ট্র্যাটেজিকালি নিরাপদ; রানা আগেও খেয়েছে ওখানে কয়েকবার, তাই সোহেল যখন প্রস্তাব করল তখন আর মানা করতে পারেনি। সোহানা যখন তার কালো জর্জেট শাড়ি পড়ে এগিয়ে যাচ্ছিল মাসুদ রানার দিকে, ঠিক তখনই ১৯৯৯ সালের একই দিনে অগাস্ট মাসের কোন এক সন্ধ্যায় শামীম আহমেদ নামে এক যুবক মাসুদ রানার একটা বই পড়া শেষ করে ঘর থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে পৌঁছে। আজ ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিতে পারে বলে জোর গুজব। নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা। শামীম যখন কলাভবনে পৌঁছে তখন সন্ধ্যা হয় হয়, চারদিকে অন্ধকার নেমে আসছে। ফলাফল প্রত্যাশী কিছু শিক্ষার্থীরা ছাড়া তেমন কেউ নেই। শামীম যখন দেয়ালে সাটানো ময়লা ছেঁড়া কাগজে ফলাফল খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করছে ঠিক তখনই আরেকটা ছেলে কলাভবনের একতলার বারান্দায় বসে পা নাচাতে নাচাতে তাকে গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকে। দেয়ালে বসে পা নাচাতে থাকা সেই ছেলেটি এবং শামীম আহমেদ পরে একসাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়। তখনও তারা জানতোনা, ১৫ বছর পর একুশে বইমেলায় তাদের দু’জনেরই দু’টি বই প্রকাশিত হবে। শামীম আহমেদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ এবং আসমার ওসমানের ১৯ তম গ্রন্থ। আসমার ওসমানের ডাক নাম রুপেন। ১৯৯৯ সালে না হলেও তার কয়েক বছরের মধ্যে শামীম জেনে যায় বছর বিশেকের মধ্যে আসমার ওসমান হবে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে শক্তিশালী লেখক। এই বইমেলায় রুপেনের একটা বই বের হয়েছে, নাম ‘এই বাড়িটা ভালো না’ এবং মাত্র কিছুক্ষণ আগে বইটি পড়ে শেষ করলাম। রুপেনের অনেক বইয়ের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় বই ‘আমাদের এই বিষণ্ন নগরী’। এই বইটি এত সহজ সরল করে লেখা এবং এত সহজেই মন ছুঁয়ে যায় যে কি বলব। এই বইটি পড়ে আমি একটি কবিতা লিখি, “আমাদের এই বিষন্ন নগরীতে অনড়, অথর্ব বৃদ্ধের মতো আরেকটি দিন আসে। কী এক ভীষণ অস্থিরতায়, আকাশে মেঘ ডাকে! নিকষ কালো মেঘে অদ্ভুত গভীরতায়; অসীম শূণ্যতায়... আষ্ঠে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে আমায়, তুমি বলো, ‘কিছু লাগবেনা, ভালো থেকো তোমার বৃত্তকে সাথে নিয়ে... কি ভীষণ নির্দয় তুমি? শুধু দাও, চাই আর কিছু নাই? বড় স্বার্থপর তুমি... শুধু নিয়েই যাবে? কিছু দিতে ইচ্ছে করে? কখনো? কোন অবেলায়?’ আমি বিব্রত, ম্লান হাসি কিছু বলি, না বলার মতন করে, আমার ঠোঁট কেঁপে ওঠে, যতটা কাঁপলে তোমার চোখের পাতায় ভাঙ্গনের গান বাজে ভালোবাসা দুমড়ে-মুচড়ে ওঠে! আমি কিছু বলিনা! ভয় হয়, তুমিই বলো আবার। ‘গুনেছো কতটা নির্ঘুম রাত কাটে আমার, তোমায় ভেবে? অলস দুপুরে, যখন চিলের ডানায় ভর করে মৃত্যু মিছিল! তখনো আমার গ্রীবায় খেলা করে তোমার তৃষ্ণার্থ ওষ্ঠখানি! তবু বন্ধুই হবে আমার? আমার ঘর্মাক্ত হাতে ভিজে তোমার প্রেমের অজানা কাব্যরাশি হারিয়ে যায় যদি দিগন্তে, অন্ধকারে? আমি ঘৃণা করি, তোমাকে তোমার পরাবাস্তব ভালোবাসার ধুম্রজালে আটকে থাকা আমার ওই নগ্ন আঁচলটাকে!’ আমি আস্তে করে বলি ভালোবাসি! যতটা ভালোবাসলে ঘৃণাকেও প্রেম বলে ভুল হয়। বন্ধুত্বে প্রগাঢ় চুম্বন হয়... জিভে জিভে ঘর্ষণে মেঘ হয় আর সেই মেঘে ওঁত পেতে থাকে পাঁচটি অবাক নীল পদ্ম! আমাদের এই বিষন্ন নগরীতে আরেকটি গভীর রাত হয় মৃত্যু হয়, প্রেম হয়, চুম্বন হয়...” এবারের বইমেলায় রুপেনের আরেকটা বই এসেছে যেমনটি বলছিলাম “এই বাড়িটি ভালো না”। বইটি নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ, বইটির ভূমিকায় বলা হয়েছে বইটিতে ভূত নেই, ভয় আছে, আছে অনেক শিহরণ – তেমনটি পাইনি। তবে আসমার ওসমানের স্বকীয়তা এবং লেখনী যা আমাকে এখনও বিশ্বাস করায় ওই হবে আগামী দশকের সেরা বাঙালী লেখক, সেই একই কারণে আপনাদের বলি এখুনি বইটি সংগ্রহ করে পড়ুন। http://rokomari.com/book/76506 [১৯৯৯ সালের অগাস্ট মাসের ওই দিনও পূর্ণিমা ছিল। ভরা পূর্ণিমায় মধ্যরাতে দু’জন নগ্ন নর-নারীকে কেউ কেউ দেখে তেল আভিভের বীচে জল-কেলি করতে। তাদের কেউ কেউ আগ্রহ নিয়ে দেখে, কেউ কেউ দীর্ঘশ্বাস ফেলে। রুপেন আর শামীম ওদিকে তখনও বাংলাদেশে বসে তাদের ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল জানতে পারেনি!]