User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
লেখকেরা তাদের কথাসাহিত্যের মাধ্যমে যা বলেন বা বলতে চান, তা শেষ পর্যন্ত আসলে সম্পূর্ণরুপে তাদের কথা থাকে না। সেগুলো হয়ে ওঠে কোন নির্দিষ্ট চরিত্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। ফলে লেখকের গল্প-উপন্যাস পড়ে কোন লেখকের মনের তল খুঁজে পাওয়া আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব। কিন্তু সেই কাজটা সম্ভব হতে পারে সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে লেখক যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করতে বা প্রকাশ করতে চান। আজকাল একাধিক পত্রিকায় কলাম লেখার মাধ্যমে ঠিক সেই কাজটিই করছেন স্যার মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তাই তার চিন্তা চেতনার অংশীদার হওয়াটা তার সকল পাঠক কিংবা অনুসারি ছাত্রের নিকট সহজ হয়ে উঠছে। বর্তমানের প্রধান প্রধান আলোচনার বিষয়বস্তুকে স্যার নিজের মত করে ব্যবচ্ছেদ করছেন তার কলামগুলোতে। আর তাই তো পাঠক সম্যক ধারণা লাভ করছে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে স্যারের অবস্থান, অভিব্যক্তি ও সর্বোপরি মানসিকতার। ২০১৩ সালজুড়ে ঠিক এমনই বেশ কয়েকটি কলাম লিখেছেন স্যার। একটা পত্রিকায় নয়, একাধিক পত্রিকায়। তাই যারা নিয়মিত পত্রিকা পড়ে, তাদের স্যারের সেসব লেখার সাথে নিশ্চিতভাবেই পরিচয় আছে। তবে যাদের পরিচয় আছে আর যাদের নেই, তাদের সকলের জন্যই কিন্তু 'মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য' দারুণ লোভনীয় একটি বই হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। প্রথমত, যারা কলামগুলো আগে পড়েনি তারা এখন এক বইয়ে, দুই মলাটের ভিতর কলামগুলো পেয়ে যাবে আর পড়ে নিতে পারবে। তবে লাভবান হবে মূলত তারাই, যারা কলামগুলো আগেও পড়েছে। একে তো তারা সঠিক সময়ে স্যারের সঠিক বক্তব্য ও দিক নির্দেশনার সাক্ষী হতে পেরেছেই, এখন আবারো আলোচ্য বইটির মাধ্যমে সেগুলোর সংকলনকে সংগ্রহে রাখার সুযোগ পাবে। তাছাড়া কলামগুলো এখন বাসি হয়ে গেলেও এর মূল্যমান কিন্তু কমে নাই। হয়ত প্রেক্ষাপট পুরনো হয়ে গেছে তবু সে সময়ে স্যারের চিন্তা চেতনা আর বর্তমানের নানা ঘটনার সাথে স্যারের বর্তমান কলামগুলোর বক্তব্য যদি কেউ মিলিয়ে দেখতে চায়, তবে অবশ্যই তারা স্যারের ব্যক্তিত্বকে আরেকটু কাছ থেকে পর্যবেক্ষনের সুযোগ পাবে। তাই স্যারের একনিষ্ঠ পাঠকদের উচিৎ হবে না এই বই পড়ার সুযোগ হাতছাড়া করা। এবার আসা যাক বইতে কি আছে, তার ব্যাপারে। ঐ তো, যা বললাম এতক্ষণ, ঠিক তাই। ২০১৩ এর প্রধান প্রধান আলোচিত ঘটনা সম্পর্কিত স্যারের কলামগুলোর দেখা মিলবে। প্রধানত দেখা পাওয়া যাবে শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের গণজাগরণ মঞ্চ সম্পর্কে স্যারের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় যাতে হয়, এটা স্যার কতখানি ব্যাকুলভাবে চান, তাও আবারো প্রমাণ হবে কলামগুলোর মাধ্যমে। দেশ কোনদিকে চলছে, দেশের মানুষের কি অবস্থা এসব বিষয়েও স্যারের ব্যক্তিগত মতামত ফুটে উঠবে। স্যারের বিদেশ ভ্রমণ ও অতঃপর দেশের পরিস্থিতির সাথে সেই ভ্রমণের প্রাসংগিকতা বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথ ভর্তির পক্ষে স্যারের সোচ্চার অবস্থান, সবকিছুই দুই মলাটে পাবে পাঠকেরা 'মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য' বইটির মাধ্যমে। স্যারের লেখার মান বা ধরন নিয়ে কথা বলা আমার জন্য বিশাল স্পর্ধাস্বরূপ হয়ে যাবে। সেদিকে পথ নাই বা বাড়ালাম। এতটুকুই শুধু বলতে চাই, পাঠক স্যারের ভক্ত হোক বা না হোক, তার মতামতের অনুসারি হোক বা না হোক, অন্তত তারা যদি দেশের সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে দেশের অন্যতম জ্ঞানি ব্যক্তিটার সহজ, সরল, ঋজু ও স্বচ্ছ মতামত সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় তবে এই বইটা তাদেরকে কিনতেই হবে।
Was this review helpful to you?
or
মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য’ বইটি লেখকের ২০১৩ সালে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কলামের একটি সংকলন। এখানে সমসাময়িক সকল বিষয় লেখক তাঁর স্বভাবসুলভ অত্যন্ত সাদাসিধে ভাবে তুলে ধরেছেন। লেখক বইটির শুরুতেই বলেছেন, বাহিরের অনেক দেশে বিখ্যাত কোন লেখকের লেখা বা কার্টুনিস্টের কার্টুন একই দিনে, একই সাথে অনেকগুলো জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এই ধারার প্রচলন আগে ছিল না। লেখক নিজেই উদ্যোগী হয়ে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে এই বিষয়ে কথা বলেন। এবং তাঁরা লেখকের প্রস্তাবে আশাব্যাঞ্জক সাড়াও দেন। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৩ সালে লেখকের কিছু কলাম একই দিনে, একই সাথে একাধিক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। লেখকের সেই কলামগুলোও এই বইয়ে স্থান পেয়েছে। ২০১৩ সালের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ঘোষণা এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন। লেখক তাঁর কলামগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই একাধিকবার এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তরুণ প্রজন্মের স্বাধীনতার চেতনার সাথে একাত্মতা দেখে তাঁর ভালোলাগার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। এবং কোনভাবেই যেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্থ না হয় সে ব্যাপারে সরকারকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্যে বারবার আবেদন জানিয়েছেন তাঁর কলামগুলোতে। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি কলাম তাঁর ‘মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য’ বইয়ে স্থান পেয়েছে। লেখক অনেকদিন থেকেই চেষ্টা করছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌথ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করার জন্যে। এই বিষয়ে তিনি বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের মিটিংয়ে বারবার কথা বলেও বিষয়টি সবার নজরে আনতে পারছিলেন না। অবশেষে তাঁর স্বপ্ন কিছুটা বাস্তবতার মুখ দেখে যখন লেখকের বিশ্ববিদ্যালয় (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একসাথে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হতে পারে। এই ঘটনায় লেখক অত্যন্ত আনন্দিত হন। এই সংক্রান্ত একটি কলাম এই বইয়ে স্থান পেয়েছে। লেখকের ছয়জন ছাত্র উচ্চশিক্ষার্থে আমেরিকা যাবে। তাই তাদের এক ডজন উপদেশ দিয়ে লেখক একটি কলাম লিখেছিলেন। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ ছিল তারা পড়ালেখা শেষ করে আবার যেন এই বাংলা মায়ের কাছে ফিরে আসে। এই বিষয়ে লেখা কলামটিও ‘মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য’ বইয়ে স্থান পেয়েছে। এই রকম সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে লেখা কলাম এই বইয়ে স্থান পেয়েছে। প্রায় সবগুলো কলামই আমার আগেই পড়া ছিল। তারপরও আমি পুরো বইটি আবার পড়েছি শুধুমাত্র লেখকের সহজ, সুন্দর, সাবলীল লেখনীর কারণে। তাই এতটুকু বলাই যায়, যারা মুহম্মদ জাফর ইকবালের কলামের ভক্ত তাদের জন্যে ‘মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য’ অবশ্যই সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।