User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বিরাজ বৌ উপন্যাসের শেষটা দেবদাস উপন্যাসের ফিমেল ভার্সন বলা যায়। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলো বিরাজ-নীলাম্বর, মোহিনী-পিতাম্বর ও পুটি। নীলাম্বর বড় ও পিতাম্বর ছোট তারা দুই সহোদর এবং তাদের স্ত্রী হলেন বিরাজ ও মোহিনী, আর হরিমতি/পুটি হলো তাদের আদরের ছোট বোন। মাত্র ৯ বছর বয়সে বিয়ে হয় ছোটবেলায় যার সাথে খেলা ঝগড়া মারামরি খুনসুটি সবই হয়েছে সেই নীলাম্বরের সহিত। সংসার জীবনে তাদের সুখের অন্ত ছিল না কিন্তু ধীরে ধীরে সুখের সংসারে অশান্তি বাড়তেই থাকে। পুটির বিয়ের পণ বাবদ ভগ্নিপতির ডাক্তারি পড়ার খরচ দিতে দিতে সোনার সংসারে অভাব এসে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিতে থাকে। একসময় বিরাজ মাটির ছাচ বানিয়ে বিক্রি করে সংসার চালাতে থাকে। স্বামী এবং স্ত্রীর ভালাবাসার এক সুনিপুন বন্ধন অভাব এসে ভাঙন ধরাতে শুরু করে। বিরাজের শেষ ইচ্ছে ছিল স্বামীর কোলে মাথা রেখে মরতে যেন পারে। কিন্তু একদিন স্বামীর দেয়া মিথ্যে/ভুল অপবাদে রক্তাত্ত ও অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়ে জমিদারের নৌকায় উঠে আবার চেতনা ফিরে পেলে নদীতে ঝাপিয়ে পরে। নদী থেকে কিভাবে হাসপাতালে যায় কিছু মনে পড়ে না বিরাজের, এদিকে নীলাম্বর সবাই প্রথমে মনে করে বিরাজ নদীতে আত্মহত্যা করেছে কিন্তু সুন্দরী নামের দাসী শুধুমাত্র নীলাম্বরকে জানিয়ে যায় সে নিজে জমিদারের নৌকায় দিয়ে এসেছিল। হাসাপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়ে পথে পথে ভিক্ষা করে চলতে থাকে বিরাজ। এদিকে ভেঙে পরা নীলাম্বরকে নিয়ে বোন পুটি বিভিন্ন জায়গায় হাওয়া বদল করে বেড়ায়। কিন্তু হাওয়া বদলেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় বাড়ির পথে রওনা হয় তারা এবং সহসাই পথে বিরাজের দেখা হয়ে যায়। অসুস্থ বিরাজকে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে নীলাম্বরের কোলে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করে বিরাজ। ©Al Amin Sarker
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটিতে শরৎ বাবু একজন স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অসম্ভব শ্রদ্ধা, ভালবাসা এবং সর্বোপরি অনুরাগের এক আবেগী বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। শরৎচন্দ্র দুজন নারীকে এমন গুনবতী, মায়বতী এবং কর্তব্যপরায়ণ হিসেবে উপন্যাসটিতে উপস্থাপন করে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শণের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্বামীর পাশে থেকে নিজের মৃত্যুর ইচ্ছা পোষণ করা বিরাজের সংসার স্বামী নীলাম্বরের সাথে ভালোই চলছিল। একবার নিলাম্বের জ্বর হইলে বিরাজ খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়ে স্বামীর জন্য স্রষ্টার নিকট প্রার্থনা করা শুরু করে দিল। নীলম্বরের আদূরে বোন হরিমতির বিয়ের পনের টাকা কাছে দায়বদ্ধ হয়ে এমন আহ্লাদে সংসারে অভাব এসে সব ছন্নছাড় করে দিল।নীলাম্বরের কোন স্থীয় কর্ম না থাকায় বিরাজই গোপনে পরিশ্রম করে সংসার চালাতে থাকে। অসহায় মদ্যপ্য নীলাম্বর সংসারজীবনে প্রথম বিরাজরে সাথে খারাপ আচরণ করলে বিরাজ নীরবে-নিভৃতে গৃহত্যাগ করিয়া অচেনা-অজানায় গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করল। এ দিকে রাতে মদ্যপান করা স্বামী সকালে টের পেলে তার হৃদয়ের ধন, ভালবাসার মণি বিরাজ তাঁর কথায় রাগ করে গঙ্গায় আত্মদান দিয়েছে।কয়েক মাস পর বিরাজ অসুস্থ হয়ে পড়লো এবং তাঁর শেষ ইচ্ছা স্বামীর সন্নিকটে নিজের মৃত্যুর সাধ বারবার তাকে পীড়া দিতে লাগলো। শেষে বিরাজকে এক মন্দির থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসা হলো। তার অল্পদিন পর একে একে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে, স্বামীর দেহে মাথা রাখিয়া সূর্যোদয়ের সঙ্গেই দুঃখিনীর সমস্ত দুঃখের অবসান হইয়া গেল।
Was this review helpful to you?
or
#বিরাজবৌ_শরৎচন্দ্র_চট্টোপাধ্যয় - প্রধান চরিত্র (বিরাজ, নীলাম্বর ও মোহিনী, পিতাম্বর) অপরের জন্য নিজেকে বিসর্জন দিয়া প্রয়োজনের সময় অপর কে নিজের দুঃখের ভাগিদার করিতে পৃথিবী কেউ পারিয়াছে কিনা আমার জানা নাই কিন্তু আমি এখনো এমন উদাহরণ প্রত্যক্ষ করিয়া উঠিতে পারিনাই। যাহাই হোক আমার কথা রাখিয়া এইবার একটু শরৎ লইয়া আলোচনা করিবো....... শরৎ বাবুর যত গুলো উপন্যাস এখনো পড়িয়াছি একখানা বিষয় পরিলক্ষিত হইয়াছে যে, তিনি প্রতি বারেই উপন্যাসগুলোতে নতুন নতুন চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় করাইয়া দিয়াছেন। কিন্তু বিরাজ বৌ তে একটু ভিন্নতা লক্ষ্য করিলাম সম্পুর্ন উপন্যাস খানা একটা পরিবার কে ঘিরিয়া তুলিয়া ধরিয়াছেন। একখানা সুন্দর সাজানো সংসার। যে সংসারের সদস্য মাত্র ৫ জন। বিরাজ এই সংসারের বড় বৌ, খুব ছোট বয়সে বৌ হইয়া আসিয়াছিলো এই সংসারের তাই সকলেই সাধ করিয়া তাহাকে "বিরাজ বৌ" বলিয়া ডাকিত। সুখ সাচ্ছন্দের অভাব ছিলোনা এই সংসারে। কিন্তু বিধি বৈরি হইলে কাহার সাধ্য সে সুখ হস্তগত করিয়া রাখে। পতিব্রতা স্ত্রী বেহুলা যেমন সতিত্যের জোরে মৃত স্বামীর প্রান ফিরিয়া আনিয়াছিলো। তেমন বিরাজ বৌ সতিত্যের দোহায় দিয়া পতির চরনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করিতে চাহিয়াছিল । এই ভালবাসা যে অভাবে পড়িয়া একদিন ধুলায় লুটাইয়া যাইবে ইহা কি সত্যই ভাবা যায়। অপরের দুঃখে নিজেকে বিলাইয়া দিয়াছিলো যে তাহার দুঃখে আপন ভ্রাতা যে পর হইতে পারে ইহাও কি ভাবা যায়। কথায় বলিয়া থাকে "মরার উপর খারার ঘা"। দুঃখের মধ্যে পড়িয়া বাচিয়া থাকার স্বাধটুকু যখন মিলিয়া গিয়াছে তখন জমিদার পুত্রের নজর পরিয়া গেলো বিরাজ বৌয়ের উপর। শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়িয়া পলায়ন করিতে হয় বিরাজ বৌ কে। কি ঘটিয়াছিলো বিরাজ বৌয়ের অদৃষ্টে? সে কি ফিরিয়া আসিয়াছিলো? নাকি প্রকৃতির বুকে আশ্রয় লইয়াছিলো? কি হইয়াছিলো তাহার সাধের সংসারের? উত্তর জানিতে হইলে বইটি অবশ্যই পড়িতে হইবে। উপলব্ধিঃ মানুষ অতি দুঃখে যখন পাথর হইয়া মরিবার জন্য উদ্ধত হয় তখন মৃত্যুও তাহাকে ত্যাগ করিয়া মুখ ফিরাইয়া লয়। মানুষ বিপদে পড়িলে কাহারো নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতে দ্বিধা বোধ করে করেনা। একজন নিরীহ মানুষের আর্তনাধ ঈশ্বর ব্যতিত আর কেহই বোধ করি শুনিতে চাহেনা তাই ক্ষুদ্র বস্তুর নিকট গিয়াও আশ্রয় খুজিয়া লইতে চায়। কিন্তু বিপদ কাটিয়া গেলে তাহার কথা আর মনে রাখে কি? যাহারা মানুষের মুল্য দিতে যানেনা তাহাদের মুখে মুল্য বোধের কথা শুনিতে মধুর হইলেও তাহা জঘন্য। আবার এমন মানূষ কেউ দেখিতে পাই, যাহারা হাসিতে হাসিতে মুল্যবান বস্তুকে পায়ে ঠেলিয়া দেয় কিন্তু তাহারা বুঝিতেও পারেনা কি বস্তু তাহারা হারাইতেছে। শত সাধনার ফলেও এ বস্তু যে আর মিলিবেনা। আর এই সকল নির্বোধেরও একদিন শুভ বুদ্ধির উদয় হয়, ততক্ষনে অনেক দেরি হইয়া যায়। শরৎ বানীঃ ১. শান্ত নির্বাক ধরিত্রীরর অন্তস্থলে কি আগুন জ্বলে, সে বুঝিবার ক্ষমতা তুই কোথায় পাইবি! ২. কিসের মধ্যে যে কি লুকানো থাকে তা কেহই জানেনা। ৩. খোলস লইয়া খেলা করা চলে, কিন্তু জীবন্ত বিষধর মানুষের ক্রীড়ার সামগ্রী নয়। বিঃ দ্রঃ যাহারা প্রতিদিন সেরাদের তালিকায় থাকেন, তাহাদের রিভিউ দেখিয়া অনুপ্রাণিত হইয়া প্রথমবারের মত বইয়ের ভাষায় উপস্থাপন করিবার চেষ্টা করিলাম। ভুল-ভ্রান্তি গুলো ধরাইয়া দিলে বাধিত থাকিব।