User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
no
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি মূলত “আত্নপ্রকাশ” উপন্যাসের পরের উপাখ্যানও বলা যায়।“আত্নপ্রকাশ” উপন্যাসেরই একটি নারী চরিত্র এই বেদনা বিষাদ মাখানো প্রেমের গল্পে মুখ্য হয়ে উঠে এসেছে।সেই সাথে রয়েছে ঐ নারী চরিত্রকে নিয়ে দুই বন্ধুর মানসিক দোটানা।সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বরাবরই সহজ সাবলীল উপমামন্ডিত ভাষায় এই লেখা পাঠককে মুগ্ধ করবে।তবে এই বইটি পড়বার আগে “আত্নপ্রকাশ” উপন্যাসটি পড়ে নেওয়া ভালো হবে। শুভ হোক আপনার বই পড়া।
Was this review helpful to you?
or
'স্বপ্ন লজ্জাহীন' লেখক সুনীলের স্বপ্ন ও বাস্তবতার মায়াজালে আটকে পড়ে হাঁসফাঁস করতে থাকা এক প্রেমের গাথা। লেখকের বাস্তব অভিজ্ঞতার কাহিনী এটা। কতকটা নিজের জীবন থেকে ধার নেওয়া, আবার কতকটা লেখকসুলভ ভঙ্গিতে কল্পনার আশ্রয় নেয়া - এই দুইয়ের মিশেলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলে গেছেন বত্রিশ বছরের টগবগে যুবক সুনীলের যৌবনের এক ভালোবাসার কথা, যে ভালোবাসা এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। কেমন একটা মানসিক দোলাচলের মাধ্যমে এগিয়ে গেছে কাহিনী। কাহিনীতে রয়েছে বেশ কিছু বাঁক। সেসব বাঁকের সামনে এসে সুনীলের কখনো নিজেকে নায়িকা মনীষার কাছে নায়ক মনে হয়েছে। কখনো খলনায়ক আর কখনো বা কেবলই এক পরিচিত পুরুষ। ভালোবাসাকে খোঁজার বদলে লেখক এই ভালোবাসার কাহিনীতে নিজের ভূমিকা খুঁজে গেছেন। কিন্তু কখনো তা পারেন নি। পুরোপুরি মনস্তত্ব নির্ভর একদম ভিন্ন ধাঁচের প্রেমের উপন্যাস এটি, যা সুনীলের বিশাল লেখকজীবনেরই অন্যতম উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। প্রেম ভালোবাসার প্রকটতা ব্যক্ত করবার চেয়ে তার প্রাসংগিকতা বের করতে লেখককে বেশি মনোযোগী দেখা গেছে। নারী মনের তল খুঁজে না পাওয়াটাকে মূল উপজীব্য করে না তুলে, কল্পনায় নারী মনকে নিজের বশে আনার যে চিত্র লেখক দেখিয়েছেন, তা অসাধারণ সুন্দর। সেই সৌন্দর্য আপাত বাহ্যিকতায় নয়, অন্তর্নিহিততায়। কেননা তা আমাদেরকে দেখিয়েছে, কিভাবে এক ব্যর্থ প্রেমিক নিজের কল্পনায় তার ভালোবাসার মানুষের সাথে ভালোবাসার খেলা খেলে। আর এই উপন্যাসের সবচেয়ে সুন্দর যে দিক, তা হল কল্পনার প্রেম প্রেম খেলার পরমুহুর্তেই আবার লেখক নিজেই কঠিন বাস্তবতাকে চোখের সামনে নিয়ে এসে এক পক্ষীয় ভালোবাসার স্বরূপ বোঝাতে চেয়েছেন। আসলে কিন্তু এটা ত্রিভুজ প্রেমকাহিনী। একটা মেয়েকে ভালোবাসে দুই বন্ধু। মেয়েটার নাম মনীষা যাকে ভালোবাসে সুনীল আর হেমন্ত দুজনই। তাদের দুজনের ভালোবাসাই মনীষার কাছে অপ্রকাশ্য। কিন্তু দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে কিন্তু তা দিবালোকের মতই সহজ সরল। একাধারে তারা মনীষাকে পেতে চায়, অন্যদিকে আবার বন্ধুত্বের মায়ায় বন্ধুকে নিজের থেকে বেশি খুশি দেখতে চায়। এই নিয়ে নতুন মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব শুরু হয় দুই বন্ধুর। এই দ্বন্দ্বে কেউ কাউকে হারাতে পারে না। কিন্তু কেউ কি জেতে? তাও বোধ হয় নয়। সুনীল আর হেমন্ত কখনোই বুঝতে দেয় না মনীষাকে তাদের ভালোবাসার কথা। অন্যদিকে মনীষাও তো অতি 'সামান্য' একটা মেয়ে। তাই সেও দুই যুবকের ভালোবাসাকে ধরতে ব্যর্থ হয় বাঃ ধরতে পারলেও দুজনের মধ্যে কাকে বেছে নেবে, সেই সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে বিয়ে করে তৃতীয় একজনকে। সেই তৃতীয়জনের কাছে মনীষা সুখি হিয় কিনা জানি না। কিন্তু মনীষাকে না পেয়ে তার দুই সাবেক 'হলেও হতে পারত প্রেমিক' এর কিচতু হৃদয় ভেঙে ছারখার হয়ে যায়। মনীষাও জীবন থেকে সত্যিকারের দুটো ভালোবাসাকে হারায়। একে একে মনীষা, সুনীল, হেমন্ত পরস্পরের থেকে অনেক দূরে সরে যায়। কিন্তু লেখক সুনীলের আছে স্বপ্ন দেখার অতিপ্রাকৃত শক্তি। তাই সে তার কল্পনার রঙ মিশিয়ে মনীষাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে যায়। বাস্তব যাই হোক না কেন, স্বপ্ন তো লজ্জাহীন। তাই লজ্জাহীন স্বপ্নে সে নিজের মত করে ভালোবেসে চলে ভালোবাসার মানুষকে। এভাবেই চিরকালের চিরচেনা ভালোবাসার অসংখ্য খন্ডচিত্রের জোড়া দিয়ে সুনীল গড়ে তুলেছেন লজ্জাহীন স্বপ্নের আসর - 'স্বপ্ন লজ্জাহীন'। সুনীলের প্রেমের উপন্যাস যাদের ভালো লাগে, স্বপ্ন লজ্জাহীন তাদের পড়তেই হবে। নাহলে প্রেম ভালোবাসাকে স্বপ্নিল নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যক্তি সুনীল, প্রেমিক সুনীল ও লেখক সুনীল - এই তিন সত্ত্বা কিরকম আলাদা আলাদা করে দেখেছেন, তা পাঠকের অগোচরেই রয়ে যাবে।