User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
রবার্ট ল্যাংডন নিজেকে খুঁজে পায় ইতালিতে। তার কি হয়েছে, কী ঘটেছে, সে কিভাবে এখানে এলো সে রকম কোনো ধারণাই তার নেই। ল্যাংডনের মাথায় কেবল বাজতে থাকে একটি কথা খোঁজো, খুঁজলেই পাবে। কিন্তু কি খুজতে হবে ল্যাংডন তা জানে না। তার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সিয়েনা নামের সুন্দরী কিন্তু অদ্ভুত একটি মেয়ে। তাদের হত্যা করতে চায় একটি বিশেষ সংগঠন এর সেনাবাহিনী। জীবন বাচাতে সিয়েনা কে নিয়ে সে এক শহর থেকে অন্য শহরে পালাতে থাকে। আর সব রহস্যের সমাধান একটু একটু করে খুলতে থাকে। জানতে পারে শুধু সে আর সিয়েনা নয় পুরো মানবজাতি হুমকির মুখে।
Was this review helpful to you?
or
হার্ভার্ড প্রফেসর রবার্ট ল্যাংডন জ্ঞান ফিরে পেয়ে নিজেকে বাড়ি থেকে হাজার মাইল দূরে ইতালির ফ্লোরেন্সে আবিষ্কার করে। কীভাবে সে পৌঁছুল ওখানে, কোনো ধারণাই নেই তার; ডাক্তাররা তাকে জানায় সাময়িক এমনেশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে সে। গত কয়েকদিনের কোনো ঘটনাই তার মনে নেই। বিভ্রান্তি চরমে পৌঁছে যখন ল্যাংডন দেখতে পায়, হাসপাতালে তাকে মারতে গুলি চালায় এক নারী আততায়ী। কর্মরত ডাক্তার সিয়েনা ব্রুকসের সাহায্যে প্রথম বিপদটা কাটিয়ে উঠতে পারলেও তার জ্যাকেটে পাওয়া বায়োহ্যাজার্ডের চিহ্নযুক্ত অদ্ভুত সিলিন্ডার প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়ায় তার সামনে, এর মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসে এক প্রজেক্টর যাতে দেখা মেলে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী বত্তিচেল্লির চিত্রকর্ম। আরো কিছু ঘটনার সম্মুখীন হয়ে ল্যাংডন বুঝতে পারে, সমস্ত রহস্যের চাবিকাঠি আছে ইতালির মধ্যযুগীয় কবি দান্তে অলিঘিয়েরির কাছে। সিয়েনাকে নিয়ে ফ্লোরেন্স জুড়ে ছুটে বেড়ায় রহস্যের কিনারা করার আশায়। কিন্তু তাদের পিছনে পড়ে আছে এক আততায়ী এবং অজানা এক সংস্থা। ধীরে ধীরে জানতে পারে সমস্ত ঘটনার পেছনে হাত আছে উন্মাদ কিন্তু মেধাবী বিজ্ঞানী বার্ট্রান্ড জোবরিস্ট, যিনি পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করতে অভিনব এবং নৃশংস পথ বাতলে দিয়েছিলেন। ল্যাংডন বুঝতে পারে, মানবজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে আছে, যদি না আত্মহত্যার পূর্বে জোবরিস্টের রেখে যাওয়া ভিডিও এবং ক্লু থেকে আসল রহস্য উদ্ধার করতে পারে। শুরু হয় ধাওয়া,পাল্টা-ধাওয়ার এক ইঁদুর দৌড়। একে একে সেই দৌড়ে যুক্ত হয় রাঘব বোয়ালেরা। ইউরোপে-এশিয়ার তিন শহর জুড়ে ল্যাংডনের সেই রোমাঞ্চকর যাত্রার বর্ণনা মিলবে ড্যান ব্রাউনের সর্বশেষ উপন্যাস ‘ইনফার্নো’তে। ড্যান ব্রাউনের সৃষ্ট ‘রবার্ট ল্যাংডন সিরিজ’ এর চতুর্থ থ্রিলার ‘ইনফার্নো’। ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত এই উপন্যাসটির বাংলায় অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন; প্রকাশিত হয় একই বছরেই। অনুমান করতে পারি, প্রতিযোগীদের আগেই অনুবাদটি বাজারে আনতে গিয়ে অনুবাদককে বেশ তাড়াহুড়োয় কাজ করতে হয়েছে যার প্রমাণ বইয়ের অনেক জায়গাতেই মেলে। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ড্যান ব্রাউনের বইয়ের অনুবাদে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন যে পারদর্শিতা অর্জন করেছেন তার মান দেশের অন্যান্য থ্রিলার অনুবাদকের চেয়ে বেশ উপরে। বাংলা অনুবাদে অনেকগুলো মুদ্রণ-প্রমাদ চোখে পড়ে, যা আমাদের প্রকাশনীগুলোর সম্পাদনার পেছনে নজর না দেয়ার প্রবণতাকেই স্পষ্ট করে তোলে। ড্যান ব্রাউনের আগমন থ্রিলারের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এক যুগ আগেই। তিনি ধর্ম, সাহিত্য, আর্ট, স্থাপত্য, গুপ্ত সংঘ, আধুনিক প্রযুক্তি, সিম্বলজি প্রভৃতি মিশেলে এক ভিন্ন জনরার থ্রিলার প্রবর্তন করেছেন যা পাঠক আগে কখনো পড়েন নি। তাঁর বইয়ের বিপুল সাফল্যের পেছনে কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করেছে। প্রথমত, ড্যান ব্রাউনের সেই অমূল্য মেধা এবং লেখনী শক্তি আছে যা দিয়ে তিনি পাঠককে তাঁর বইয়ের সাথে সুপার গ্লুয়ের মতো আটকে রাখতে পারেন। আপনার মনে হতে পারে, বইয়ের গল্পটা অবিশ্বাস্য, প্লটটা অদ্ভুত, কিন্তু আপনি একবার তাঁর থ্রিলার পড়া শুরু করার পর মাঝপথে নামিয়ে রাখতে পারবেন না; শেষটা জানার জন্য আপনি পড়ে যেতে একপ্রকার বাধ্য। ‘ইনফার্নো’ পড়ার সময় কিছু কিছু জায়গায় আমার মনে হয়েছে, লেখক অতিরিক্ত ড্রামা এবং অবিশ্বাস্য পলায়নের বর্ণনা দিচ্ছেন। কিন্তু পড়া থামিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগই পাই নি আমি; কারণ কাহিনী এগিয়ে গেছে রকেটের গতিতে, আর রকেটে সওয়ার হওয়ার পর তা থেকে নামার উপায় নেই যদি না রকেট নিজে থেকেই থেমে যায়। দ্বিতীয়ত, ড্যান ব্রাউন তাঁর থ্রিলারের স্থানগুলোর বর্ণনা এমনভাবে দেন যে, অভিভূত হয়ে যেতে হয়। তাঁর বর্ণনা পড়ে পাঠকের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনি প্লট তৈরি করার জন্য অসম্ভব গবেষণা এবং পরিশ্রম করেছেন। ব্রাউন সাধারণত তাঁর পাত্র-পাত্রীকে ঐতিহাসিক স্থানগুলো পাঠিয়ে দেন। ওইসব ঐতিহাসিক স্থানের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা এমনভাবে চোখে সামনে তুলে ধরেন যে পাঠকের মনে হয়-সেও ওই অবিশ্বাস্য যাত্রার একটি অংশ। ‘ইনফার্নো’তে ইতালির দু’টি এবং ইউরোপ-এশিয়ার সীমান্তে পড়া আরেকটি শহরে ল্যাংডন ও তার সহযাত্রীদের ইঁদুর দৌড়ে বারবারই সামনে চলে এসেছে নানা স্থাপত্য এবং শিল্পকলার নিদর্শন। আর ব্রাউন তাঁর দারুণ বর্ণনায় পাঠককে হতাশ করেন নি। তৃতীয়ত, ব্রাউন তাঁর বইয়ের মাধ্যমে বিতর্ক উস্কে দিতে ভালোবাসেন। এটি তাঁর থ্রিলারগুলোর অর্থনৈতিকভাবে সফল হবার পেছনে একটি বড়ো কারণও বটে। রবার্ট ল্যাংডন সিরিজের প্রথম বই- ‘এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস’এর মাধ্যমে ভ্যাটিকানকে চটিয়েছেন, ‘দ্য ডা ভিঞ্চি কোড’ দিয়ে পুরো খ্রিস্টান সম্প্রদায়কেই উত্তপ্ত করে তুলেছিলেন, ‘দ্য লস্ট সিম্বল’ এর মাধ্যমে বড়ো বিতর্কে সূত্রপাত না হলেও আমেরিকার প্রভাবশালী মহলে প্রাচীন গুপ্তসংঘের উপস্থিতি মৃদু গুঞ্জন তুলেছিল। নতুন উপন্যাস ‘ইনফার্নো’তে বিতর্কের জায়গাটা অবশ্য একেবারেই ভিন্ন দিকে। বিজ্ঞানের নৈতিকতার ক্ষেত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাউন। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নির্মম সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে নৈতিকতার ক্ষেত্রটি কতোটুকু প্রসারিত তা নিয়ে ইতোমধ্যেই পুরো পৃথিবীর বিজ্ঞানের জগতে মৃদু আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এথিকসের ক্লাসে জমজমাট বিতর্কের সূচনা করে দিতে পারে ‘ইনফার্নো’। ‘ইনফার্নো’ শুরু থেকে রহস্যের চাদরে মোড়া, যখন আমরা দেখতে পারি গল্পের নায়ক বিগত কিছুদিনের স্মৃতিশক্তি হারিয়ে বসেছে এবং তার পেছনে লেগেছে এক আততায়ী। ব্রাউন তাঁর অন্য উপন্যাস-গুলোয় শুরু থেকেই রহস্যের সূচনা করেন না, ধীরে ধীরে পুরো রহস্য সামনে নিয়ে আসেন। কিন্তু ‘ইনফার্নো’য় পাঠক যেন শুরু থেকে এক রোলার কোস্টার রাইডের মজা পেতে থাকেন। তবে কিছু দুর্বলতা এবং কিছু অদ্ভুত দিক এই থ্রিলারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যেমন- উপন্যাসের শুরু থেকেই মনে হয়েছে ব্রাউন তাঁর উপন্যাসের হলিউডি রূপান্তরের কথা মাথায় রেখেই উপন্যাস লিখতে বসেছেন। একটি টিপিক্যাল হলিউডি চলচ্চিত্রের সাফল্যের জন্য যা যা চাই, তার সবই ভরে দেয়া হয়েছে ‘ইনফার্নো’তে। চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এতে দারুণ খুশি হবে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রকৃত থ্রিলার পাঠকেরা এতে মনক্ষুণ্ন হয়েছেন। ইউরোপ-এশিয়া জুড়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের মনোমুগ্ধকর এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলোয় ছুটে বেড়িয়েছে রবার্ট ল্যাংডন। সিনেমার পর্দায় লোকেশনগুলো বেশ ভালোই দেখাবে- এমন চিন্তা থেকেই কি ব্রাউন এই স্থানগুলোকে বেছে নিয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তর শুধু তিনিই দিতে পারবেন। একটি ক্ষেত্রে ড্যান ব্রাউন নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন এই উপন্যাসে। তাঁর বাকি থ্রিলার-গুলোয় মানবসভ্যতার যে ক্রাইসিস দেখানো হতো, তা অনেক ক্ষেত্রেই ছিল অবাস্তব; অনেক সমালোচকদের মতে হাস্যকর। কিন্তু এই উপন্যাসে এমন এক সমস্যার সাথে লেখককে যুঝতে হয়েছে যা আমাদের চোখের সামনেই বড়ো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর ক্রম-বর্ধনশীল জনসংখ্যার হ্রাসের জন্য যে বৈপ্লবিক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে- তা এই উপন্যাসের মধ্যে জানাতে চেয়েছেন ড্যান ব্রাউন। ড্যান ব্রাউনের থ্রিলার নিয়ে সমালোচকদের মধ্যে নানা ধরনের বিতর্ক আছে; কোনো কোনটি সঠিকও বটে। তবে পৃথিবীর তাবৎ থ্রিলার-প্রেমীকে নতুন ধরনের থ্রিলারের নেশায় ডুবিয়ে দেয়া ব্রাউন সম্ভবত সেই সমালোচনায় খুব একটা ভাবিত নন। তিনি তাঁর মতো করেই একের পর এক লিখে যাচ্ছেন থ্রিলার এবং মানুষের কাছে তা দারুণভাবে সমাদৃত হচ্ছে। একজন থ্রিলার লেখক তাঁর লেখা থেকে এর চেয়ে বেশি আর কী চায়!
Was this review helpful to you?
or
সম্ভবত ড্যান ব্রাউনের এন্জেলস এন্ড ডেমনস সিরিজের এটিই এই পর্যন্তর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি অন্তত আমার দৃষ্টিতে। বইটি খুব উপভোগ করেছি নিঃসন্দেহে ভালো অনুবাদের কারণে। বইটি হাতে নিয়ে দেখলাম ফাকিজুকি দিয়ে পড়া যাবে না তাই পুরো মনোযোগ দিয়ে কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়তে প্রায় ৪ দিন লেগেছে। শুরুই হয়েছে বেচারা প্রফেসর ল্যাংডনের হাসপাতাল থেকে। তারপর প্রাণ বাঁচানোর জন্য সুন্দরী ডাক্তার তরুণী সিয়েনাকে নিয়ে ফ্লোরেন্সের ভেতরে ছুটোছুটি। পেছনে লেগে রয়েছে এক অদ্ভুত দর্শন খুনে মহিলা আরো নাম না জানা দলবল আর তার ওপর অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী ল্যাংডন হাসপাতালেই আবিষ্কার করেছিলেন যে তিনি সাময়িক এমনেসিয়াতে ভুগছেন যেই কারণে সে এই মুহুর্তে ফ্লোরেন্সে কি করছেন আর কেনইবা তার মত একজন হাভার্ডের প্রফেসরকে কেউ খুন করতে চাইবে এর কোনো উত্তরই পাচ্ছিলেন না। এর পর শুরু হলো উল্টো পথে হাটা, কারণ উদ্ধারের জন্য। এরই মাঝে বার বার তার চোখে ভেসে উঠছে রুপালী চুলের এক সুন্দরী মহিলা এক ভয়াবহ দৃশ্যর পাশে দাড়িয়ে বার বার তাকে বলছে "খোঁজো, খুজলেই পাবে" আর আরেকটি দৃশ্য দেখতে পান যেটি তাকে বিস্মিত করেছে তা হলো কবি দান্তের রচিত চতুর্দশ শতাব্দীর ডিভাইন কমেডির প্রথম অংশ ইনফারনো অর্থাৎ হেল বা নরকের চিত্র রূপ। দান্তেকে শেষ জীবনে তার জন্মস্থান ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল তার চিন্তাধারার কারণে। তার ধারণা ছিল পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি এক অশনি সংকেত যা দুনিয়াতে বসবাসের অযোগ্যতা সৃষ্টি করতে যাচ্ছে তাই একে নিয়ন্ত্রণে আনার একমাত্র উপায় প্লেগ। কিন্তু এই ধরনের গণ হারে মানুষ শেষ করে দেয়াকে ঠান্ডা মাথায় শুধুই খুন ভাবা যায় তাই তার সাথে কেউ সহমত পোষণ করেনি। তিনি পরিস্থিতিটির ওপর মেলোবলেজমের নরকের ৯টা স্তরের বর্ণনা দিয়েছিলেন যার চিত্র খুবই ভয়ঙ্কর। কিন্তু তখন কেউ তার কথা না ভাবলেও তার ধারণার অনুসারীরা বিংশ শতাব্দীতেও রয়ে গেছে কিন্তু একটু অন্য ভাবে। তার মধ্যে চরম দান্তে ভক্ত জেনেসিস্ট সায়েন্টিস্ট জোবরিস্ট। জোবরিস্টও পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা দেখে দান্তের ধারণার সাথে ১০০% সহমত পোষণ করে ছিল কিন্তু কথাবার্তা উগ্র হওয়ার কারণে বাগরা বাধে। যখন সে WHO এর পরিচালক সিনস্কিকে ডেকে তার ধারণার কথা বলার চেষ্টা করে আর জনসংখ্যা স্বাভাবিক করতে "প্লেগের মত একটা কিছুই যে একমাত্র উপায়" এটি বলার পর সিনস্কি জোবরিস্টকে WHO এর নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসে কারণ তার ধারণা হয় এই পাগল ব্যক্তি দুনিয়াতে প্লেগ ছড়িয়ে দিতে পারে যেহেতু সে নিজে একজন গবেষক, তাই সে মানব জাতির জন্য এই মুহুর্তে হুমকি। কিন্তু জোবরিস্ট তার চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে ছিলো। কনসর্টিয়াম নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে লুকিয়ে গবেষণা শেষ করে। তার আবিষ্কার ভেক্টর ভাইরাস সে তুরুস্কে একটি জায়গায় প্লাস্টিকের প্যাকেটে লুকিয়ে রেখে আসে। তবে ভেক্টর ভাইরাস আসলে কি কাজ করবে তা জোবরিস্ট জানিয়ে যায় শুধুমাত্র তার গোপন প্রেমিকাকে। সেই সাথে একটি ভিডিও ক্লিপ আগাম বানিয়ে কনসর্টিয়ামের হাতে তুলে দেয় বিশ্ববাসীকে তার আবিষ্কার কি করতে পারে জানানোর জন্য কিন্তু তার আগেই সিনস্কির হাতে পরে যায় জোবরিস্টের তৈরী একটি হাই টেক প্রজেক্টর যাতে ছিল বত্তিচেল্লির আঁকা ম্যাপ অফ হেল এর পরিবর্তিত ভার্সন। সিনস্কির পক্ষে জোবরিস্টের হেঁয়ালি বোঝা সম্ভব হয়নি তাই তখন তিনি হাভার্ড এর সিম্বলোজির বিখ্যাত প্রফেসর ল্যাংডনের শরণাপন্ন হন যে এই হেঁয়ালির সমাধান করে জোবরিস্টের তৈরী প্লেগ ছড়ানোর আগে লুকানো জায়গা বার করতে। ফলে জোবরিস্ট তার প্ল্যান পরিবর্তন করে আত্মহত্যা করে আর তার আগে প্রেমিকাকে ল্যাংডনের খবর দিয়ে যায় যে WHO এই ব্যক্তিকে তার ভাইরাসের অবস্থান খুঁজে বের করার জন্য নিয়ে আসছে তাই তাকে যেভাবেই হোক ঠেকাতে হবে। অন্য দিকে যেহেতু জোবরিস্ট কন্সর্টিয়ামের সেবা নিয়েছেন তাই তারাও তাদের কাস্টমারের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য উঠে পরে লেগে যায়। আর সেই থেকে ল্যাংডন কাজ শুরু করে দেয় আর ফ্লোরেন্সে পৌছে প্রতিপক্ষের কারণে বেশ কিছু সময়ের জন্য সংযোগ হারিয়ে ফেলে সিনস্কির সাথে। কিন্তু তার দান্তেকে তথা জোবরিস্ট এর প্লেগকে ধাওয়া করা থেমে থাকেনি তাই গল্পও এগিয়ে গেছে সেভাবেই। সত্যি স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে এক পর্যায় আমিও দান্তের সাথে বর্তমান পৃথিবীর অবস্থার কথা ভেবে সহমত পোষণ করা শুরু করেছিলাম। আক্ষেপের শেষ ছিল না এই ভেবে যে ভবিষ্যতে কি হবে যদি বর্তমান এত খারাপ হয়। নরকতো উপচে পরবে। তবে পরে ভেবে দেখলাম যে যদি জোবরিস্টের মত কোনো পাগল বৈজ্ঞানিক আসলেই এমন ভাইরাস তৈরী করে যা বংশানুক্রমিক আর জন্মদানে সক্ষম থাকবে না তাহলে সত্যিই এক সময় পৃথিবীতে আর মানুষ থাকবে না। প্রকৃতি তার নিয়মেই চলবে, প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত সেই নেবে আমরা শুধুই দর্শক। আর হয়তো তাই ভালো। যুগে যুগে প্লেগ আবির্ভূত হয়ে আসছে, শুধু নাম ভিন্ন হয় হয়তো চেহারাও ভিন্ন হয়। কিন্তু ফলাফল একই থাকে। সম্ভবত একবারে পড়লে নাওয়া খাওয়া ভুলে যেতে হবে। তবে ড্যান ব্রাউনের যেকোনো লেখা খুবই বিস্তারিত বর্ণনামূলক হয়ে থাকে কাজেই কেউ যদি এক প্যারাও বাদ দিয়ে পড়তে যায় তাহলে খেই হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে। তাই ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে এমন অসাধারণ বইটি উপভোগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।