User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এইটা পড়া হই নি এখনো।সুতরাং না পড়া রিভিউ দেওয়া ঠিক হবে না।
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর বই ?
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ বইটি হাতে পেলাম।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে আমি খুব মজা পেয়েছিলাম,,
Was this review helpful to you?
or
Disappointed
Was this review helpful to you?
or
⭐⭐⭐⭐⭐
Was this review helpful to you?
or
Well
Was this review helpful to you?
or
মাশাআল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
really nice book
Was this review helpful to you?
or
Great
Was this review helpful to you?
or
awesomw books...
Was this review helpful to you?
or
এটি অনেক ভালো মানের একটি বই
Was this review helpful to you?
or
Great books
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে প্রচুর!!
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
#সপ্তর্ষি_রকমারি_বুকরিভিউ_প্রতিযোগ রিভিউকারীঃ মোঃ মুজাহিদ হাসান সিফাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানঃ নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ জেলাঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ই-মেইলঃ [email protected] বইয়ের নাম: ক্রীতদাসের হাসি লেখকের নাম: শওকত ওসমান লেখক পরিচিতঃ- লেখক, চিন্তক ও কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান। তিনি কলমি লেখক হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজীজুর রহমান। শওকত ওসমান তাঁর সাহিত্যিক নাম। জন্ম ২ জানুয়ারি, ১৯১৭ সালে সাবলসিংহপুর, হুগলী, পশ্চিমবঙ্গ, ব্রিটিশ ভারতে (অধুনা ভারত)। মৃত্যু ১৪ মে ১৯৯৮ (বয়স ৮১) ঢাকা, বাংলাদেশে। বই সম্পর্কে লেখকের মতামতঃ- "ক্রীতদাসের হাসি" উপন্যাসের সবচেয়ে বড় চমক গল্পের ভূমিকায়। সেখানেই লেখক তাঁর মতামত দিয়েছেন। সারপ্রাইজ হিসেবে থাকুক এটা, উপন্যাস পড়ার সময় মনে করে পড়ে নিবেন। চরিত্রঃ- উপন্যাসের মূল চরিত্র তাতারী। তিনি বিয়ে করেছিলেন বাদী মেহেরজানকে। চরিত্রের মধ্যে রয়েছেঃ খলিফা হারুন-অর-রশিদ, সহচর মশরুর, রাজমহিষী জোবায়দা, কবি নওয়াস, নর্তকী বুসায়না, আবু নওয়াসের, আবু ইসহাক, আবুল আতাহিয়া। সূচনাঃ- আমীর হারুন-অর-রশিদ বোন আব্বাসাকে হত্যা করেছেন জাফরের সাথে প্রেমঘটিত কারণে। পরে তিনি ভুল বুঝতে পারেন, এবং অনুতপ্ত হন বোনকে হত্যা করে। তিনি দিনদিন কেমন যেন একাকী হয়ে যান। আমিরুল মোমেনীনের এ অবস্থা দেখে তার সহচর মশরুর তাকে রাতের পরিবেশে বাগানের পায়চারি করার পরামর্শ দেন। কারণ সে সময় পরিবেশ ভালো থাকে, নিরিবিলি থাকে। সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ- হাবশি গোলাম তাতরীর বিয়ে হয়েছিল হেরেমের বাদী মেহেরজানের সাথে। খলিফা হাবশি গোলাম তাতারী আর বাদী মেহেরজান দুজনকেই মুক্ত-স্বাধীন করে দিলেন। কিন্তু, শর্ত তাদের হাসতে হবে। তাতারীকে হাসানোর জন্য অনেক কিছুর ব্যবস্থা করলেন, তাতারীর মন আকর্ষণের জন্যে পাঠালেন বাগদাদের সবচেয়ে সুন্দরী বুসায়নাকে। হেরেমের অন্ত মহলে আশ্রয় দেওয়া হলো বাদী মেহেরজানকে। এতো কিছু পেয়েও তারা নিজেদের বন্দী পেল। কারণ খলীফা তাদের হাসি চায়!! পরিশিষ্টঃ- হাবশি গোলাম তাতারীকে হাসাতে না পেলে খলিফা হারুন-অর-রশিদ নিজের কাছে অপমানিত হলেন। গোলামকে শাস্তি দেওয়ার আদেশ দিলেন। অতিরিক্ত শাস্তির জন্য এক সময় হাবশি গোলাম তাতারী মৃত্যুর কোলে ঢ'লে পড়লেন। ভালো লাগা কিছু উক্তিঃ- ১. তাতারীঃ শোন, হারুনর রশীদ। দারহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দি কেনা সম্ভব ——! কিন্তু – কিন্তু – ক্রীতদাসের হাসি— না— না— না— না— ২. মানুষও একধরনের স্রষ্টা৷ মানুষের তৈরি চিজ বিধাতার চিজের চেয়ে বেশি কিছু। ৩. বুলবুলের ডাক বনের আড়ালে বসে শুনতে হয়৷ ৪. বিশ্রাম মানেই ঘুম নয়৷ ৫. কবি নওয়াসঃ আমিরুল মোমেনিন, হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি। বইটির ভালো দিকঃ- উপন্যাসের শুরু, মাঝের এবং শেষে নাটকীয়তার তীক্ষ্ণ বাঁকে পাঠক চমকে যেতে বাধ্য। কারণ প্রতিটি পৃষ্ঠায় আপনার মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম। আমার মতে, বইটি ঘুমন্ত মানুষকে জাগ্রত করবে। বইটির খারাপ দিকঃ- বইটিতে বিদেশি শব্দের ব্যবহার দেখা যায়, বিশেষ করে ফারসি শব্দ। বাগদাদের সাথে সম্পৃক্ত রাখতেই ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা সহজভাবে নিলেও অনেক জনের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। বই রহস্যঃ- পাক শাসক আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনকেই ব্যঙ্গ করে লেখক এ উপন্যাসটি লিখেছিলেন। যেখানে পূর্ব বাংলা হচ্ছে বাগদাদ, খলিফা হলেন আইয়ুব খান, তাতারী হলো মুক্তিপ্রত্যাশী বাঙালি। অর্থ, ক্ষমতা আর শক্তির দাপট দেখিয়ে বাংলাকে কেঁড়ে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি। তেমনি ভাবে খলিফা হাবশি গোলাম তাতারির হাসি ফোঁটাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত অনুভূতিঃ- আমার পছন্দের বইগুলোর মধ্যে "ক্রীতদাসের হাসি" অন্যতম। লেখকের সুন্দর উপস্থাপন বইকে আরো চমৎকৃত করেছে। উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র মনে গেঁথে গেছে। এক কথায়, অসাধারণ! বইটি কেন পড়বেনঃ- বইটি সাধারণ একটি বিষয় নিয়ে রচিত, কিন্তু সাধারণের মধ্যে অসাধারণ রয়েছে। পড়তে শুরু করলে ডুবে যাবেন বইয়ের রাজ্যে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত উঠতে মন চাইবে না। এতটুকুই বললাম, কথা আর বাড়াচ্ছি না। পাঠকদের উদ্দেশ্যেঃ- পড়ুন "ক্রীতদাসের হাসি" উপন্যাসটি, কারণ উপন্যাসটি আপনাকে বাগদাদের আমীর হারুন-অর-রশিদ এর সময়ে নিয়ে যাবে। শিক্ষাঃ- ধন-সম্পদ থাকলেই খুশি হওয়া যায় না। সাধারণ জীবনযাপন করেও সুখী হওয়া যায়। শেষ কথাঃ- বই পড়লে জ্ঞান কমে না, বরং বাড়ে। সুতরাং বেশি বেশি বই পড়ুন। ©Mujahid Hasan
Was this review helpful to you?
or
wonderful
Was this review helpful to you?
or
প্রিয়ার ঘরে অাগুন দিয়ে, প্রেমিককে অাপনি শান্ত থাকতে বলতে পারেন না। প্রিয়তম জিনিসটি ছিনিয়ে নিয়ে, ভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে কাউকে অাপনি খুশি করতে পারেন না। স্বাধীনতা মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। মানুষের স্বাধীনতা-ই যখন বাধাগ্রস্ত হয়, তখন বেঁচে থাকার অানন্দটা ফিকে হয়ে যায়। তারপরও মানুষ কিছু-একটা অাঁকড়ে ধরে, কাউকে অাশ্রয় করে বেঁচে থাকে। বেঁচে থাকার লোভ কাহার নাই? পাকিস্তানে পর্বে তখন সামরিক শাসন, সরাসরি অনেক কথাই বলা যায় না কিংবা বলা কঠিন। সেই জায়গা থেকে লেখক শওকত ওসমান অাশ্রয় নিয়েছেন রুপকের। লিখেছেন রুপকধর্মী উপন্যাস "ক্রীতদাসের হাসি"। এটাকে ঠিক উপন্যাস বলব, না কি উপন্যাসিকা কিংবা নাটিকা বলব, তা বুঝে উঠতে পারছি না। যদিও এটি নাট্যগুনে ভরপুর, তা সত্ত্বেও অামরা এটাকে এ-খানে অাপাতত উপন্যাস-ই ধরব। এটি মূলত ১৯৬২ সালের রচনা। ইতঃপূর্বে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশিত হলেও, অামি যে-টির রিভিউ লিখতেছি সেটি বিগত ২০০০ সালের এপ্রিলে " উপন্যাসসমগ্র ১" নামে সময় প্রকাশন থেকে বের হয়। মুদ্রিত মূল্য রাখা হয়েছে ৫০০ টাকা মাত্র। তো চলুন, রিভিউ শুরু করা যাক। লেখক শওকত ওসমান বইয়ের গৌরচন্দ্রিকা শুরু করেছেন ছোট্ট একটি হেঁয়ালি প্রহেলিকা দিয়ে, যেটি পাঠকমনে সত্য-মিথ্যার একটি দোলাচল তৈরী করে। অধিকাংশ পাঠকের মনেই ভ্রম জন্মে এবং কেউ কেউ পুরোপুরি দিকভ্রান্ত হয়ে গল্পটি বিশ্বাস করে বসে। গল্পটি এই~ উনি উনার এক বান্ধবীর বাসায় গিয়ে একটি পান্ডুলিপি অাবিষ্কার করেন, সেটি ছিল "অালিফ লায়লা ওয়া লায়লা"র পান্ডুলিপি। সেখান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন জৌনপুরী থেকে তিনি জানতে পারেন, কেতাবের নাম "অালেফ লায়লা ওয়া লায়লা- সহস্র ও এক রাত্রি" না, বরং কেতাবের পুরো নাম অাসলে "অালেফ লায়লা ওয়া লায়লানে- সহস্র দুই রাত্রি"। এ-কেতাবেরই শেষ কাহিনী " জাহাফুল অাবদ" এর বাংলা তরজমা গোলামের হাসি তথা "ক্রীতদাসের হাসি" গল্পটি অাজকের অালোচ্য বিষয়। পুরো ব্যাপারটি অাসলে সত্যি নয়। অনভিজ্ঞ পাঠক মাত্র-ই এখানে ভুল করতে পারেন। এবার অাসি প্রকৃত কাহিনীতে। বাগদাদের খলিফা হারুনর রশীদ। অপরদিকে, তাঁরই ক্রীতদাস ও -দাসী তাতারী ও মেহেরজান৷ একদিন অামিরুল মুমেনীন তথা খলিফা হারুনর রশীদ তার দরবারের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জল্লাদ মশরুরের সঙ্গে নৈশ বিহারে বেরোলেন। সেখানে হটাৎ তিনি হাসির শব্দ শুনতে পেলেন। সে হাসি ছিল অত্যন্ত প্রাণ-খোলা। অমন প্রাণ-খোলা হাসি খলিফা জীবনে শুনেননি। তাঁর দরবারে এমন-কে অাছে যে এত সুন্দর করে হাসতে পারে, সেটি জানার জন্য খলিফা উদ্গ্রীব হলেন। সঙ্গে সঙ্গে মশরুরকে ঘোষণা দিলেন, কে তাঁর এই-রাজ্যে এত সুন্দর করে হাসতে পারে সেটি খুঁজে বের করতে। ওদিকে খলিফা পুরো বাগদাদ শহরের শাসনকর্তা হয়েও উনার মনে কোন হাসি নেই। অানন্দম নেই। এই হাসির নেপথ্যে ছিল ক্রীতদাস ও -দাসী তাতারী ও মেহেরজান। ওরা তখন গোলামখানায় একান্ত মুহূর্তে সময় কাটাচ্ছিল। জল্লাদ মশরুর সেটি জেনে খলিফাকে গিয়ে জানালেন। তখন খলিফা তাতারীকে মুক্ত করে দিলেন, এবং তাকে সর্বপ্রকার ঐশ্বর্য ও কিছু দাসী দেওয়া হলো। খলিফার লক্ষ্য হলো, তাতারীর হাসি শুনবেন। কেননা তিনি এত-প্রাণবন্ত হাসি কখনো শুনেননি। সেই জন্য খলিফা বাগদাদের শ্রেষ্ঠ দুইজন কবি অাতাহিয়া ও নওয়াসকে দাওয়াত করলেন তাদেরকে তাতারীর হাসি শুনাবেন বলে। ওরা দরবারে অাসলে তাতারীকে হাসতে নির্দেশ দেওয়া হলো, কিন্তু তাতারী কিছুতেই হাসে না। সে বলল, "হাসতে পারছি না, অামিরুল মুমেনীন"। খলিফার কথা অমান্য করায় ক্ষুব্ধ হয়ে খলিফা তার গর্দান নিতে জল্লাদকে হুকুম দিলেন। কিন্তু তখন কবি অাতাহিয়া খলিফাকে বললেন, "সব সময় হাসি অাসে না"। কবি নওয়াসও খলিফাকে বললেন, " অামি ত অাপনাকে, নূরুল্লাহ অাগেই বলেছি, উপাদান লাগে।" সে-বারের মতো তাতারী গর্দান নেওয়া থেকে মুক্তি পেল বটে। তবে তাকে অন্য সময় নির্ধারণ করে দিলেন হাসার জন্য৷ তথাপি তাতারী তো কিছুতেই হাসে না। কিছুদিন পরে, তার মনোরঞ্জনের জন্য এনে দেওয়া হলো বাগদাদের শ্রেষ্ঠ নর্তকী বুসায়নাকে যাতে করে তার সঙ্গলাভ করে সে অাবার সেই প্রাণ-খোলা হাসি হাসতে পারে। কিন্তু বুসায়না তাকে হাসাতে এসে নিজেই অাত্বহত্যা করে বসলো, কেননা তাতারীর গুন-মুগ্ধ হয়ে সে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। শেষদিকে অামরা দেখি, তাতারীর প্রেমিকা মেহেরজানকে খলিফা বিয়ে করেন। এক পর্যায়ে তাতারী হাসা তো দূরের কথা, কথা বলা-ই বন্ধ করে দেয়। তখন মেহেরজানকে তাতারীর কয়েদখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মেহেরজানকে প্রথমে তাতারী চিনতে না পারলেও, শেষে তাকে চিনতে পারে। অার তখনই তাতারী মেহেরজান ও খলিফাকে লক্ষ্য করে বলে- মেহেরজান, মেহেরজান। শোন, হারুনর রশীদ, দীরহাম, দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দী কেনা সম্ভব--! কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি- না-না-না। তখনই তাতারীর মৃত্যু হয়। এই সময় অাবার কবি অাবু নওয়াস প্রবেশ কর বলেন, "অামিরুল মুমেনীন, হাসি মানুষের অাত্বারই প্রতিধ্বনি।" মজাদার একটা তথ্য দিচ্ছি, এই উপন্যাস লেখার জন্য লেখক ১৯৬২ সালে অাদমজী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। নিয়তির কী পরিহাস, যে অাইয়ূব খানসহ সামরিক শাসনকে ব্যঙ্গ করে এই বই লিখা হয়েছে, সে অাইয়ূব খান-ই লেখককে নিজহাতে অাদমজী সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন। ১৯-০৫-২০২১
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
wonderful book.
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার বই।পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
আর্কষনীয় নয়।
Was this review helpful to you?
or
Tremendous
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর ...
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
অসাধরণ
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ ছিলো এটা
Was this review helpful to you?
or
One of the best Bangla tragedy I have come across.
Was this review helpful to you?
or
onoboddo vai uponnash Ta
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
vlo eeeee
Was this review helpful to you?
or
? বই নিয়ে আলোচনা যতই সোনার খাঁচায় বন্দী করে ছাতু ছোলা খেতে দাওনা কেন, আমার সুখ ঐ বন-বাদাড়ের ফল গুলোতেই। সোনার খাঁচা যত দামীই হোক, সে তো খাঁচা ছাড়া আর কিছুই না। অর্থ দিয়ে সব কেনা সম্ভব হলেও, স্বাধীনতা বিনিময়ের ঊর্ধ্বে। স্বাধীনতার হাসি, অন্তরেরই হাসি। জগতের কেউ এ হাসি কিনতে পারে না। যদি হয় তা এক "ক্রীতদাসের হাসি", তাও না। .. প্রাসাদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে রানী 'জোবায়দা' তার প্রিয় দাসী 'মেহেরজান' কে এই রাতের জন্য বিদায় দিচ্ছেন। কারন, নীচে মেহেরজানের স্বামী হাবশী গোলাম 'তাতারী' অপেক্ষামান আছে। একজন রানী হয়ে দাসীর প্রতি এ আচরন সত্যি বেমানান বৈকি। কিন্তু জোবায়দার প্রিয় মানুষের মধ্যে এই মেহেরজান একজন। তার সকল সুখ দুঃখের শ্রবণ সঙ্গী এই মেহেরজান। বাদশা "খলিফা হারুণুর রশীদ"এর আদেশ ছাড়া রাজ্যে কোনো দাস দাসীর বিয়ে দেয়া নিষেধ। কিন্তু রানী নিজে, রাজার চরণ দাসী হয়েও এই অবাধ্যতা করে এক প্রকার বিদ্রোহ করেন। অনিন্দ্য সুন্দরী মেহেরজান এবং হাবশী কালো গোলাম তাতারী অভিসারে যায়। প্রেমের উন্মাতাল ঢেউয়ে দুজনেই ডুবতে থাকে। এ যেন একটুকরো স্বর্গ বিধাতা ধরনীর বুকে রাজার অগোচরে গড়ে উঠা ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বসিয়ে দিয়েছেন। উত্তাল প্রেম সাগরে বৈঠা বিহীন নৌকা ছেড়ে দিয়েছে মেহেরজান আর তাতারী। অন্ধ ভাবে সেই নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। রসালো বাক্যবাণে দু'জনেই সম্পূর্ণ জর্জরিত। "হাসি" তে ঢলে পড়ছে একজন অন্যজনের বুকে। তাদের হাসি যে কারো কর্ণগোচর হবে তা তারা কী করে জানতো... দ্বন্দ্ব - বিক্ষুব্ধ বাদশা হারুণুর রশীদ তার একান্ত দাস 'মশরুর'রের কথামতো রাজপ্রাসাদের বাহিরে আসেন মন শান্ত করার জন্য। নানা কথাবার্তা, এবং হাঁটাচলার সময় তার কানে একসময় হাসির শব্দ প্রবেশ করে। প্রেমময়, আবেগী, অকৃত্রিম, অবাধ আনন্দের সেই হাসি। যা শুনে রাজা দারুণ ভাবে ঈর্ষান্বিত হন। কারন, তার অঢেল শান-শওকত থাকা স্বত্তেও প্রাণ খুলে হাসতে পারেন না। কিন্তু তার রাজ্য কে এমন নিশ্চিন্ত ভাবে হাসতে পারে? খোঁজ নিয়ে জানা যায় এ হাসি তার-ই দাস তাতারী। বাদশা সাথে করে মশরুরকে এবং কিছু কোতয়াল নিয়ে তাতারীর ঘরে প্রবেশ করেন। গিয়ে দেখেন রাজ দাসী মেহেরজানও আছেন। সব জানার পর বাদশা তাতারীকে সাজা না দিয়ে বিলাসবহুল বাগানবাড়ী সহ অনেক দাস দাসী এবং বিনোদনের অনেক সু-ব্যবস্থা করে দেন। এবং ঘোষণা করেন এই দুইজন নর-নারী তার রাজ্যে স্বাধীন মানুষ। শর্ত একটা, তাতারীর হাসি শুনতে চান বাদশা। যে হাসি তার প্রাণে নতুন শক্তি জোগায়, সে হাসি। তারপরই গোলাম হলো ধনী। আর মেহেরজানকে নিয়ে যাওয়া হলো বাদশার রাজপ্রাসাদে। সাথী বিহীন সখা অঢেল ঐশ্বর্যের মধ্যে থেকেই চির অসুখী হয়ে রইলো। তারতো মুখে হাসি নাই। বাদশা যে করেই হোক তাতারীর হাসি শুনবেনই। তখন রাজসভা কবি বাদশাহ কে বলেন "হেকিমী দাওয়াই তৈরি করতে অনেক উপাদান প্রয়োজন হয়। হাসিও একটা জিনিস। কিন্তু তৈরি হয় নানা জিনিস দিয়ে। এর একটা উপাদান না হলে হাসি তৈরি হবে না।" তবু বাদশা বুঝেন না। নানা রকম অত্যাচার করা হয়। কাহিনির একপর্যায়ে রাজ্য সেরা নর্তকীর মৃত্যুর অপবাদে তাকে সাজা দেয়া হয়। তবে শর্ত থাকে, শুধু একটি বার যদি তাতারী হাসে, তবে মিলবে মুক্তি। তাতারী নিশ্চুপ। সাজার সময় বাড়তে বাড়তে সেটা তিন বছর পর্যন্ত যায়। তবু তাতারী নিশ্চুপ। এখন হাসির সাথে বন্ধ হয়েছে কথাও। বাদশা আবার অনুরোধ করে, নতুন করে অনুরোধ করে, তবু তাতারী চুপ। চাবুক মারতে মারতে তাতারী শরীরের চামড়া ফেটে যায়। একপর্যায়ে বেহুঁশ হয়। তবু তাতারী চুপ-ই থাকে। কিন্তু নির্দয় বাদশা পরিশেষে এমন এক কাজ করেন, যা দেখে তাতারী কথা বলে উঠে। কিন্তু তারপর কী তাতারীর মুক্তি মেলে পাঠক? … "শওকত ওসমানের" এক ব্যাতিক্রমি নাট্য উপন্যাস এই "ক্রীতদাসের হাসি"। তিনি বাদশা হারুণুর রশীদ এবং ঐসময়ের আদলে কাহিনি সাজান। তাঁর প্রথম কোনো বই পড়লাম। অবশ্যই তা সম্ভব হয়েছে স্যার মোঃ রেজাউল করিমের জন্য। উনার পরামর্শেই বইটা পড়ি। এবং আমি দারুন আনন্দিত। লেখক তার এই কাহিনিতে কয়েকটা চরিত্র এত সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন যা সত্যি প্রশংসনীয়। হারুণুর রশীদ, মশরুর, সভা কবি আবু ইসহাক, সভা কবি আবু নওয়াস, বুসায়না, তাতারী, মেহেরজান, জোবায়দা। এই হলো আমার চোখে আকর্ষণীয় চরিত্র। আবু ইসহাকের একটি সুন্দর উক্তিতো উপরে উল্লেখ করেছি। এরকম আরো কিছু আছে। এবং সেগুলোর মাঝে প্রকাশ পায় বাদশার প্রতি একরকম নিষেধাজ্ঞ। কিন্তু অহংকারী বাদশা তা এড়িয়ে যায়। ইসহাকের এই কাব্যিক সতর্ক বাণী আমি বেশ উপভোগ করেছি। তারপর আছেন আবু নওয়াস। উফ কি তার দর্শন চিন্তা। এবং তার যুক্তি দিয়ে অযৌক্তিক চলাফেরা আমায় বেশ আকর্ষণ করেছে। সেই সাথে বাদশার মুখের উপর সত্যি কথা বলার দুঃসাহস করার বিষয়টা ছিলো অসাধারণ। তবে লেখক মেহেরজান চরিত্রকে আরো একটু প্রকাশ করতে পারতেন বলে আমি মনে করি। … " শওকত ওসমান" তিনি তার এই গল্পের মাধ্যমে এক রকমের স্বেচ্ছাচারিতা তৈরি করেন। প্রতিবাদ করেন জুলুমের বিরুদ্ধে। তিনি আদতে সম্পূর্ণ গল্পটা রূপক অর্থে লেখেছেন। ততকালীন বাংলাদেশ পাকিস্তান রেষারেষির পরিস্থিতিটা পাকিস্তান সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে লেখেন তিনি। যাতে সরাসরি কেউ ধরতে না পারে। এ এক কঠিন কর্ম। আমি ছোট মানুষ, বুঝিনা সাহিত্য কি জিনিস। তবে এটুকু বলছি, সাহিত্যের মগডালে তিনি না চড়লে এরকম কাহিনি দাঁড় করাতে পারতেন না। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, আমি যেন সেই আরব্য রজনীর কোনো কাহিনি পড়ছি। আমি ইতিহাস জানি না। তাই গল্পের প্রেক্ষাপট, পরিস্থিতি আমার কাছে সম্পূর্ণ পরিস্কার না। তবে এই গল্পে তীব্র এক প্রতিবাদের চিৎকার শুনতে পাই। যেন বলছে "আর কতকাল এভাবে পড়ে পড়ে মার খাবে? জানো না বন্দীরা স্বাধীন" ধন্যবাদ © মোঃ কামরুল হাসান ? বই হোক আপনার, আপনি বইয়ের ?
Was this review helpful to you?
or
ক্রীতদাসের হাসি=90 টাকা মাত্র সত্যিই অসাধারণ একটি গল্প ,এ বইটি কিনে সত্যিই আপনার সার্থকতা আসবে /নিজেকে জানার জন্য অনেক কিছুই খানে পাবেন একবার হলেও বইটি পড়ুন/ এখানে অতিরিক্ত কিছু লিখে লেখক কে ছোট করা হবে /না পড়লে কখনোই বোঝা সম্ভব না /আপনার একবার হলেও পড়ুন সত্যিই অনেক আনন্দিত হবেন আপনাদের অনেক ভালো লাগবে /আমার ভালো লেগেছে / বইটি পড়ুন সকলের প্রতি আমার অনুরোধ বইটি পড়লে জাফর ইকবাল স্যারের সার্থকতা আসবে/ শওকত ওসমান তাঁরনাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, রাজনৈতিক লেখা, শিশু-কিশোর সাহিত্য সর্বত্র তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে তিনি ছিলেন এক উচ্চকিত কণ্ঠের অধিকারী।
Was this review helpful to you?
or
শওকত ওসমানের ক্রীতদাসের হাসি দাস দাসীর প্রেমের মিলন থেকে সৃষ্ট হাসির অনুরণন ঘিরে কাহিনির চিত্রায়ণ।বাদশা হারুনর রশীদ এর প্রাসাদ অভ্যন্তরের ঘটনা;রাজদরবারের প্রচলিত ঘটনার প্রতিকী উপস্থাপন না বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে সে ইতিহাস আমার জানা নেই। বাদশা হারুনের এক স্ত্রী তার খাস দাসী মেহেরজান এর সাথে দাস তাতারী যুবকের বিয়ে দিয়ে,প্রতি রাতে মিলনের ব্যবস্থা করেছিলেন।বেগম সাহেবা নিজ হাতে মেহেরজানকে সাজিয়ে দিতেন।দিনের পর দিন ভালোই চলছিলো। বেগমের দুঃখ থেকে এ ঘটনার অবতারণা কিনা তার বয়ান বইটিতে নেই;খলিফা মনের পুঞ্জীভূত দুঃখের আগুনে জ্বলে পুড়েও নিখাদ প্রেমের বিচ্যুতি না ঘটার চিরন্তন বয়ান এ গ্রন্থটি। নিজেকে হালকা করতে বন্ধুসম জল্লাদ মাশরুর কে নিয়ে গভীর রাতে বাগান ভ্রমনে বের হন খলিফা হারুন।কথার ফাঁকে তাদের কানে জগত ভুলানো হাসি ভেসে আসে। সুর ধ্বনির উঁচু নিচু অঙ্কে নর নারীর যৌথ উপস্থিতি বাদশাহ কে আরো কৌতুহলী করে তোলে।যে রাজ্যে বাদশার মুখে হাসি নেই! সে রাজ্যে কিনা দাস পল্লী হতে মনভুলানো হাসি?মাশরুরকে এ হাসির রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব দেয়া হয়।মাশরুর রহস্য উদঘাটন করলেও বাদশাহ কে বলতে নারাজ;কোনরূপ অনিষ্ট নয় বরং পুরষ্কারের ব্যবস্থা করবেন এই আশ্বাসে মাশরুর বাদশাহকে সব বললেন।বাদশাহ তাতারী দাসকে নাজ নেয়ামত ভরপুর একটি ছোট রাজ্য পুরষ্কার হিসেবে দিয়ে;মৌলানার ফতোয়া অনুযায়ী মেহেরজানকে সাদী করে নিলেন।মৌলানার ফতোয়াটি এইরূপ"মেহেরজান কেনা গোলাম দাসী, মনিবের অনুমতি ছাড়া কোন কাজ বৈধ নয়;তাই তাতারীর সাথে মেহেরজানের সাদীও বৈধ নয়"। কয়েকদিন পর বাদশাহ সহচর ও কবিগণকে নিয়ে তাতারীর সেই হাসি শুনতে গেলেন।তাতারী শুধু হাসি শূন্যই নয় বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।বাদশাহর অনুনয় নিবেদন কিংবা রাগের হুংকার কোন কিছুতেই তাতারী মুখ খুললেন না।"হাসি নামক বস্তু তৈরিতে ও যথাযথ উপকরণ প্রয়োজন " বাদশাহ কবির এই কথা মেনে না নিয়ে, তাতারীর মুখে হাসি ফোঁটাতে অবশ্যই সক্ষম হবেন এই মর্মে কবির সাথে বাজি ধরলেন। বাদশাহ বাগদাদের সবচেয়ে আবেদনময়ী নর্তকীকে তাতারীর মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব দিলেন।আমীর ওমরারা যার পানি প্রার্থী সে নর্তকীকেও তাতারী ফিরিয়ে দিলেন।নিশ্চিত মৃত্যু দন্ডের পূর্বেই নর্তকী আত্মহত্যা করে বসল।বাজীতে হেরে বাদশাহ নির্যাতনের পথে হাটলেন,তাতেও তাতারীর হাসি ফোটাতে ব্যর্থ!বছর তিনেক পর তাতারীকে মেহেরজানের মুখোমুখি করা হলো;সইতে না পেরে মেহেরজান ও অভিনয়ের আশ্রয় নিলেন।মেহেরজানের বিদায়ের পর তাতারী মুখ খুললেন...
Was this review helpful to you?
or
শওকত ওসমান নামের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ‘শেখ আজিজুর রহমান’-এর তৃতীয় উপন্যাস, কারও কারও মতে তার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘ক্রীতদাসের হাসি’র মূলভাব তুলে ধরতে উপন্যাসের অন্তিম মুহূর্তে ক্রীতদাস তাতারীর এই আর্তনাদটুকুই যথেষ্ট। তবে এই আর্তনাদকে অনুভব করতে হলে ফিরে যেতে হবে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে, যে আমলে সামান্য বিরোধিতাকেও গলাচেপে কণ্ঠরোধ করে দেওয়া হতো। আর ঠিক সেই আমলেই শোষণ-জুলুম-অত্যাচারকে রূপক অর্থে ব্যবহার করে স্বয়ং আইয়ুব খানের হাত থেকেই শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন কথাশিল্পী শওকত ওসমান।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কথা: বইয়ের নাম:ক্রীতদাসের হাসি। অনুবাদক :শওকত ওসমান। প্রকাশক :চিত্তরঞ্জন সাহা। সংস্করণ :১১বার। প্রচ্ছদ শিল্পী :সমর মজুমদার। মুদ্রাকর :প্রভাংশুরঞ্জন সাহা। মূল্য:৮০টাকা। সারসংক্ষেপ: গল্পের এক অনন্য চরিত্রের আমিরুল মুমিন। এর মন খারাপের সময়টাতে তার মন্ত্রী মশরুর এর বিপত্তি ঘটে যায়।কি করে মনিবের মন ভালো করা যায় সেটা ভাবতে ভাবতে সময় পার হয়ে যায়।এমন ই এক রাতে আমিরুল মুমিন বিষণ্ণ সময় কাটাচ্ছিলেন।তার এই বিষণ্ণতা দূর করার জন্য মশরুর তাকে বাগানে হেটে বেড়ানোর কথা বললেন।বাগানের কাচা পাকা ফল,ফুলের ঘ্রাণ আর পাখিদের গান সাথে হিমেল হাওয়া বিষণ্ণতা কাটাতে খুব কাজে আসে নাকি।আমিরুল মুমিন তার কথামত বাগানে এলেন, বিষণ্ণতা একেবারে না গেলেও কিছুটা অবসান ঘটলো।মশরুর এবং আমিরুল মুমিন গল্পরত অবস্থায় সময় পার করছিলেন।হঠাৎ তাদের কানে ভেসে আসে এক প্রাণ বন্ত হাসির আওয়াজ। যা রাজাকে মাতোয়ারা করে ফেলে।মুহূর্তেই রাজা পাগল হয়ে যায় জানার জন্য সেই উচ্ছ্বাস ভড়া হাসি কাদের??যেখানে রাজা নিজে হাসতে পারছে না সেখানে এমন করে কে হাসছে??সত্যি ই তো কে হাসছে বা কারা হাসছে এমন করে??এই রিক্ত রাতে তাদের হাসার কারণ ই বা কি??রাজাকি পারবে এই হাসির হদিস বের করতে??নিশ্চয় জানতে ইচ্ছে করছে খুব??তাই তো বলছি দেড়ি না করে বইটা কিনে ফেলি।এবং জেনে ফেলে এই হাসির রহস্য। অভিব্যক্তি : কখনো কোনো বই আমার দুইবার পড়া হয়নি।এই বইটা আমি প্রথম পড়েছিলাম কিন্তু ভাষার একটু অন্যরকম ব্যবহার এর কারণে অত মনোযোগ দিয়ে পড়িনি।কিন্তু এর সম্পর্কে যখন অন্য মন্তব্য শুনি তখন আবার পুরোটা খুব মনোযোগ সহকারে পড়ি।অনেক কিছু আছে বইটাতে উপলব্ধি করার মত।একটা মানুষ তার নিজের স্বার্থের জন্য কি কি করতে পারে তা খুব ভালো করে বুঝা যায় বইটা পড়লে।নিজের জেদি মনোভাব আর লোভ থেকে কতটা হিংস্র হওয়া যায়।জ্ঞান শূন্য এক পশুর মত আচরণ করতে শুরু করে দেয় বিবেকবান সেই মানুষ গুলিই।যদিও লেখকের এটা অনুবাদক বই তবুও বলবো,প্রতিটা কিছুর ই ভালো মন্দ উভয় দিক আছে।ঠিক তেমনি বইটাতে ভালো মন্দ উভয় দিক আছে।মাঝে মাঝে কিছু ভাষা আছে বইটাতে যা আমার ভালো লাগেনি।তবুও বলবো দুই একটার জন্য তো পুরো বইটাকে খারাপ বলা যায় না।জানতে হলে বুঝতে হলে বইটি সবার পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
ভীষণ রকম ভালো লেগেছে এই বইটি পড়ে! রুপক অর্থে লেখা শওকত ওসমানের এই উপন্যাসটি পড়ে বাগদাদের সেই সময়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম যেন। সামান্য তাতারির হাসির জন্য আমিরুল মুমিনিনের যে হাহাকার তার যে মাধুর্যময় শৈলি তা হৃদয় ছুয়ে যায়। আনন্দের হাসি কি এতই দূর্লভ! বাগদাদের এতো বড় যে বাদশাহ; সে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারে না এক দন্ডের তরে নির্মল হাসির পরশে আর যে কিনা সামান্য এক তাতারি সে হাসে মন উজার করা হাসি? শওকত ওসমানের এই উপন্যাসটি এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতই!
Was this review helpful to you?
or
শওকত ওসমানের লেখা অসাধারণ জীবনবোধপূর্ণ উপন্যাস " ক্রীতদাসের হাসি" । ঘটনাটি মুসলিম খলিফা হারুন অর রশিদের অন্দরমহলের। একদিন রাতের বেলায় বাগানে খলিফা বেড়াতে গেলে তার হাবসি ক্রীতদাস তাতারি ও আরমেনীয় দাসী মেহেরজানের প্রাণখোলা হাসি শুনতে পান। সেই হাসিতে ছিল এমন কিছু, যা খলিফার মন ছুঁয়ে যায়। তার মনে হয়েছিল, ওই হাসি ছিল আত্মার প্রতিধ্বনি। এদিকে খলিফার ধন-সম্পদ, শানশওকত—সব কিছু থাকার পরও মনে নেই আনন্দ। আছে শুধু অস্থিরতাবোধ। খলিফা একদিন ঠিক করলেন, সেই ক্রীতদাসকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করে জগতের সব সুখ দিয়ে সেই হাসিটাই আবার শুনবেন। কিভাবে এত চমৎকার হাসি হাসে মানুষ? সামান্য ক্রীতদাস? সেই হাসি বারবার শুনতে খলিফা সব আয়োজন করলেন। কিন্তু সেই প্রাণের হাসি আর শুনতে পেলেন না তিনি। ঐতিহাসিক উপন্যাসটি পড়ে বুঝতে পারলাম, চাইলেই সব পাওয়া যায় না। আবার সব কিছু চাওয়ার মধ্যেও নেই আনন্দ।
Was this review helpful to you?
or
" হাসি মানুষেরই আত্মার প্রতিধ্বনি" ক্রীতদাসের হাসি বইয়ের এই শেষ বার্তাটিয় সবচেয়ে সেরা ছিল।। হাসি কখনোই জোর করে আনা যায় না।। যেমনটা হারুন করতে চেয়েছিল।। যে গোলামের হাসি শুনে আমিরুল মুমেনীন হারুন তাকে সবুজ বাগিচার রাজা বানিয়ে দিলেন সেই বাগিচায় এসে সেই গোলামের হাসি মিলিয়ে যায়।। গোলাম থেকে রাজা হওয়ার ফলে তাতারী আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাওয়ার কথা অথচ এত প্রাচুর্যে থাকার পরেও সে আর হাসতে পারে না।। হারুন তার হাসি শুনতে না পেয়ে প্রায় পাগলপারা হয়ে গিয়েছিলেন।। ফলে কঠিনতম শাস্তিও দিয়েছিলেন।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ ক্রীতদাসের হাসি লেখকঃ শওকত ওসমান ভাষাঃ বাংলা ঘরনাঃ চিরায়ত উপন্যাস প্রকাশনীঃ সময় ব্যক্তিগত অনুযোগ (রেটিং): ৪.৫/৫ “মেহেরজান চলে যাওয়া শুরু করলে ক্রীতদাস তাতারি মুখ খোলে। মেহেরজানকে পিছু ডাক দেন। তারপর খলিফা বলেন, ‘শোন হারুনর রশিদ!’ খলিফাকে যথাযথ সম্মান না জানানোর জন্য সবাই তার উপর খেদোক্তি করে, তার শরীরে শাস্তির কোড়া চলতে থাকে। কিন্তু ক্রীতদাসের তাতে কোনো বিকৃতি আসে না। ক্রীতদাস বলতে থাকে, ‘শোন, হারুনর রশীদ। দিরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দী কেনা সম্ভব। কিন্তু-কিন্তু-ক্রীতদাসের হাসি-না-না-না-না। এরপরই তাকে...” অনিন্দ্য! শব্দযুগলের স্বার্থকতা আর ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশের এমন চাঞ্চল্যকর লেখা বেয়ে উঠে দেশের অসাড়, মেরুদন্ডহীন শাসকদের বিরুদ্ধে। নষ্ট সময়ের যুদ্ধে, হাহাকারের প্রতিরোধ্যে। ক্রীতদাসের হাসি বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান এর লেখা উপন্যাস, যেখানে তিনি তৎকালীন সময়ের দোসর শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রণতরী সাজিয়ে লিখেছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি এ উপন্যাসটি রচনা করেন, যার ভাববস্তু, ১৯৫৮ সাল। জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসন পাকিস্তানকে বর্বর স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে আবদ্ধ করলো, আর এই চেতনাকে দমন করার জন্য আবার নেমে আসে সামরিক শাসন। কিন্তু, তবুও লেখকের প্রতিবাদ স্তব্ধ থাকেনি। সমকালের স্বাধিকার, গনতন্ত্র এবং সর্বপ্রকার মানবিক অধিকার বঞ্চিত মানুষের জীবনের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা সমূহ একত্র হয়েছে শওকত ওসমানের “ক্রীতদাসের হাসি” উপন্যাসের পটভূমিতে। উপন্যাসের প্রথমে বাগদাদের খলিফা হারুনর রশিদের সহধর্মিনী জুবায়াদা ও বাঁদি মেহেরজানের কথোপকথনে প্রকাশ পায় খলিফার চরিত্রের নিগূঢ় সত্যতা, ঘৃণ্য নির্যাতিত বৈশিষ্ট্য। বাঁদি মেহেরজানের প্রেমিক হাবসী তাতারী। তাদের এই প্রণয় খলিফার দৃষ্টিগোচর হলে আর রক্ষা নেই। তাই, অতি গোপনে মেহেরজান বেগম জুবায়দার সহায়তায় মেহেরজান প্রেমিকা তাতারীর সাথে মিলিত হয়। এদিকে প্রজা নিপীড়ক খলিফার মন অশান্তিতে পরিপূর্ণ। সে শান্তির সন্ধান করে ফেরে। মশরুরকে উদ্দেশ্যে বলে, বাগদাদের অধিপতি হওয়া সত্ত্বেও সে বড় একা! খলিফার একাকীত্বের মূলে রয়েছে তার পেছনের স্মৃতি চারণ, নিজের পূর্ব জীবনের আভাসিত কল্পনা। আর, এরকম যন্ত্রণাময় অবস্থায় খলিফার কানে আসে ‘মেহেরজান আর তাতারীর’ প্রেমপূর্ণ মিলনের আবেগোচ্ছল হাস্যধ্বনি। নিশ্চুপ ভাবে এই হাসির শব্দ শুনে খলিফা অনুভব করেন, এটা শুধু মাত্র ঠোঁট দিয়ে নির্গত হাসি নয়। এই হাসির উৎস স্থল হৃদয়ের গহীন প্রদেশ। কেননা, এর ভিতে আছে অন্য কিছু। খলিফার হিংসা হয়। তিনি যেখানে অধিশ্বর হয়েও সুখের কাঙাল, সুখ-শান্তি খোঁজার জন্য তিনি হন্য হয়ে ঘুরছেন, ফিরছেন। আর, সেখানে এক সামান্য ক্রীতদাস কিনা তার সম্মুখে হাসির মাঝে সুখের ঝর্ণা প্রবাহিত হচ্ছে। নাহ, তা হতে পারে না; হিংসা রূপ নেয় প্রতিহিংসায়! আর এভাবে, রূপকের মধ্য দিয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে এই প্রতিবাদ। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’র তাতারী। নিজের ব্যক্তিগত পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখতে গেলে উৎফুল্ল সহকারে লেখা যাবে। ১৯৬২ সালে তিনি এ উপন্যাসটি রচনা করেন। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসন পাকিস্তানকে বর্বর স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে আবদ্ধ করলো। এ সময় সব ধরনের-বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। তৎকালীন পাকিস্থানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের শাসন ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে এ উপন্যাস রচিত হয়। এ উপন্যাসের মূল চরিত্র তাতারী। গণতান্ত্রিক চেতনাকে ভয় পায় স্বৈরাচারী শাসক। এই চেতনাকে দমন করার জন্য আবার নেমে আসে সামরিক শাসন। রূপকের মধ্য দিয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে এই প্রতিবাদ। ক্রীতদাস তাতারির প্রাণোচ্ছল হাসি শুনে বিমোহিত খলিফা ভেবেছিলো, তিনি তাতারির হাসি কিনে নিতে পারবেন। সেই চেষ্টায় খলিফা তাতারিকে দাস থেকে মুক্ত করে অঢেল সম্পত্তি প্রদান করলেও কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন তাতারির খিলখিল করে হাসি’র কুয়া মেহেরজান কে। মেহেরজান থেকে আলাদা হয়ে তাতারি কি হাসতে পারে? পারবে? প্রশ্নগুলোর উত্তর আর ভালোবাসার এক নতুন হাসি খুঁজে পেতে বইপ্রেমী পাঠকদেরক লেখক শওকত ওসমানের অনবদ্য উপন্যাস পড়ার সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি...
Was this review helpful to you?
or
"ক্রীতদাসের হাসি"আরব্য রজনীর একটি গল্পের নাট্যরূপ।উপন্যাসটি বাগদাদের বাদশাহ হারুন-রশীদের সমকালীন পটভূমিতে রচিত।উপন্যাসের শুরুতে দেখা যায় বাদশাহ্ হারুন-রশীদের বেগম জোবায়দা এবং তার খাস বাদীর কথোপকথন।কথপোকথন থেকে বোঝা যায় জোবায়দা গোপনে বাদশাহর অনুমতি ছাড়া তার খাসবাদীর সাথে এক ক্রীতদাস তাতারীর বিয়ে দেন।তিনি এই যুগলের গোপন অভিসারের পৃষ্ঠপোষক।অপর দৃশ্যে দেখা যায় হারুন-রশীদ তার প্রিয় সহচরের সাথে নৈশ ভ্রমনে বের হয়েছেন।এসময় তিনি একজোড়া নরনারীর প্রানোচ্ছল হাসির শব্দ শুনতে পান।এতে বিস্মিত এবং কৌতহুলী হন।তিনি এই রহস্যের সমাধানে তার সহচরকে দায়িত্ব দেন।বাদশাহ এই হাসির সুধা পানের জন্য তার সকল ক্ষমতার প্রয়োগ করেন। এই রহস্যকে কেন্দ্র করে ঘটনাপ্রবাহ এগোতে থাকে। উপন্যাসটি একটি রুপক গুরুত্ব বহন করে। আমাদের ইতিহাসের সংগ্রামমূখর সময়ের প্রতিচ্ছবি এটি।লেখক শাসকগোষ্ঠীর প্রতি প্রতিবাদ হিসেবে এটি রচনা করেন।
Was this review helpful to you?
or
ক্রীতদাসের হাসি এটি বিখ্যাত উপন্যাসিক শওকত ওসমানের একটি সফল উপন্যাস
Was this review helpful to you?
or
জাহাকুল আবদ অর্থাৎ গোলামের হাসি যার সমার্থক শব্দ হলো, ক্রীতদাসের হাসি। শওকত ওসমানের এই অনবদ্য সৃষ্টি ক্রীতদাসের হাসি যুগ যুগ ধরে একইভাবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে বাংলার সাহিত্য জগতে। এটি মূলত রূপকধর্মী উপন্যাস। যার প্রতিটা চরিত্র নির্দেশ করবে অন্য এক জীবনদর্শন। যেমন, উপন্যাসে বাদশা হারুনর রশিদ চরিত্রটির বর্বরতার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে তৎকালীন পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের অত্যাচারের চিত্র। এবং গোলাম তাতারী যেন তৎকালীন শাসন ব্যবস্থায় শোসিত স্বাধীনচেতা নাগরিক । বাগদাদ রাজ্যের মিম্নদরের গোলাম তাতারী। তাকেই কেন্দ্র করে নানা কাহিনীর মধ্য দিয়ে বর্ণিত হয়েছে "ক্রীতদাসের হাসি" উপন্যাসটি। গোলাম তাতারী গোপনে বিয়ে করে মেহেরজান নামের এক দাসিকে। প্রতিবার লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে অভিসারে যায় তারা। প্রেমলীলায় মত্ত হয়ে হৃদয়খোলা হাসি হাসে দুজন। এক রাতে হাসতে না পারা,নীরানন্দ বাদশা হারুনের কানে যায় অদ্ভত সুন্দর সেই হাসি। এটা স্বাভাবিক কোনো হাসি না। এ যেন আত্মার ধ্বনি। সুখে ডগমগ না হলে এ হাসি হাসা সম্ভম নয়। গোলামেরাও এমন হাসি হাসতে জানে?রাজ্যের বাদশা হয়েও সে হাসতে পারে না। ওরা এত সুখ পায় কোথায়! ঈর্ষায় জ্বলে উঠে বাদশা হারুন । একসযময় তাতারীকে আরাম আয়েশ ধন-সম্পদ,ক্ষমতা দিয়ে গোলাম থেকে মুক্তি দেন বাদশা । বিনিময়ে শুনতে চায় তার আত্মার ধ্বনি অমৃত সেই হাসি। কিন্তু তাতারী হাসে না। এত কিছু পেয়েও বন্ধ হয়ে যায় তাতারীর হাসি। কারণ, যার জন্য সে হাসতে পারতো, যার প্রেম তাতারীকে দিয়েছিল উচ্ছ্বল হাসি সেই প্রিয়তমা মেহেরজানকে বাদশা হারুন আলাদা করে দিয়েছেন। তবুও হাসি শুনতে চান বাদশা । তাতারী কে নারীর অভাব পুরণ করতে তার কাছে পাঠানো হয় রাজ্যের সবচেয়ে সুন্দর,যৌবনা এক নারীকে। পরদিন মেয়েটিকে গাছে ঝোলা অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারনা করা হয় তাতারীই খুন করেছে। যার অপরাধে তাতারীর শাস্তি হয়। সত্যিই কি তাতারী খুন করেছে তাকে? রহস্য ভেদ করতে হলে পড়তে হবে "ক্রীতদাসের হাসি" খুনের অপরাধে ও তাতারীর গর্দান নেন নি বাদশা । সে যে হাসি শুনতে চায়। কিন্তু হাসে না গোলাম এমনকি কথাও বলেনা সে। বাদশাও নাছোড় যেভাবেই হোক সে হাসি শুনবেই / না হাসার কারণ জানবেই। তাতারীর ওপর শুরু হয় আরো অমানবিক অত্যাচার। তিন বছর অত্যাচারের পর তাতারীকে চেনারই আর উপায় থাকেনা। তবুও থেমে ছিল কি বাদশা হারুনের অমানবিক নির্যাতন? ক্রীতদাস তাতারী কি হেসেছিল এত মার খাওয়ার পরেও? কি হয়েছিল শেষ পর্যন্ত জানতে হলে পড়ুন ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসটি,,, ৭৭ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটি এক বসাতেই শেষ করে ফেলতে ইচ্ছা হবে। পড়তে বসে যেমনটা হয়েছিল আমার ক্ষেত্রে । একেক পর্ব পড়ার পর মনে জাগবে পরে "কি হয়েছিল কি হয়েছিল?" ধরণের আকাঙ্ক্ষা । বই শেষ করার পর একটা ঘোরে ছিলাম হাসি জিনিসটা সত্যিই তাই যা, অনেকগুলা উপাদান উপস্থিতির একটা বহিঃপ্রকাশ । যেখানে একটা উপাদানের অনুপস্থিত মানুষকে বিষিয়ে তোলে,হাসিকে দমিয়ে দেয় একেবারে । আর সেই অনুপস্থিত উপাদানটা যদি হয় প্রেম বিচ্ছেদ। তখন তো হাসির উৎসটাই নিবে যাওয়ার কথা!
Was this review helpful to you?
or
বাগদাদের খলিফা হারুনর রশীদ। প্রচন্ড জাত্যাভিমান তার। জাত্যাভিমানে অন্ধ হয়ে নিজের বোন আব্বাসাকেও হত্যা করেন তিনি। কিন্তু এতে করে তার মধ্যে এক ধরনের মানসিক অশান্তি দেখা দেয়। হাসতে ভুলে যান তিনি। এমন এক সময় নিজের কর্মচারী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু মশরুরকে নিয়ে বাগানে ঘোরার সময় তিনি হাসির শব্দ শুনতে পান। হাসি শুনে তিনি মুগ্ধ হয়ে এর উৎস খুঁজতে থাকেন৷ এক পর্যায়ে তিনি আবিষ্কার করেন, হাসির শব্দ আসছে তার গোলাম তাতারীর ঘর থেকে। তাতারী ও আর্মেনীয় বাদী মেহেরজানের প্রণয়ের সময় তাদের হাসি খলিফার কানে পৌঁছে। তাতারী ও মেহেরজানকে লুকিয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন খলিফার স্ত্রী বেগম জোবায়দা। খলিফা এই খবর পেয়ে ভেতরে ভেতরে রেগে থাকলেও কৌশলে তাতারী ও মেহেরজানকে আলাদা করে দেন। কারণ মেহেরজানের রূপে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। তাতারীকে মুক্ত করে তিনি বাগিচা উপহার দেন। আর মেহেরজানকে নিজের বেগম বানিয়ে ফেলেন। খলিফা ভেবেছিলেন তাতারী বাগিচা পেয়ে খুশি হবে। কিন্তু হয়েছিলো তার উল্টোটা। তাতারীর মুখের হাসি চলে গেল। কারণ তার প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছ থেকে তাকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। কিছুদিন বাদে খলিফা তার বন্ধুদের নিয়ে তাতারীর হাসি দেখতে যান। কিন্তু ব্যর্থ হন। তাতারীর মুখের হাসি ফেরাতে বাগদাদের সেরা নর্তকীকে পাঠান তার ঘরে। কিন্তু তাতারী তাকে প্রত্যাখ্যান করে। আত্মগ্লানিতে ভুগতে থাকা নর্তকী আত্মহত্যা করে। এতে করে খলিফা ক্ষেপে গিয়ে তাতারীকে বন্দী করেন। তার উপর অত্যাচার করা হয়। তাতারীকে হাসতে হবে। না হাসতে পারলে তাকে বন্দী হয়ে অত্যাচার সহ্য করে যেতে হবে। এভাবেই এগিয়ে গেছে শওকত ওসমান রচিত ‘ক্রীতদাসের হাসি’ উপন্যাসটি। এটি একটি অনুবাদমূলক উপন্যাস। আরব্য রজনীর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আলিফ লায়লা ওয়া লায়লা’ অর্থাৎ ‘সহস্র ও এক রাত্রি’ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। কিন্তু এটি আসলে ‘আলিফ লায়লা ওয়া লায়লানে’ অর্থাৎ ‘ সহস্র ও দুই রাত্রি’। এর শেষ গল্পটি ‘জাহাকুল আবদ’ বা ‘ক্রীতদাসের হাসি’। ঔপন্যাসিক শওকত ওসমান দৈবক্রমে উপন্যাসটির পান্ডুলিপি পান। তাঁর সহপাঠিনীর বাড়িতে বেড়াতে যেয়ে তার দাদা শাহ ফরিদউদ্দীন জৌনপুরীর কাছ থেকে তিনি এই দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপি সংগ্রহ করেন। হালাকু খান বাগদাদ ধ্বংসের (১২৫৮ খ্রিস্টাব্দ) সময় এই পান্ডুলিপি হিন্দুস্তানে আসে। নানা হাতবদলের মাধ্যমে আসে শাহ সুজার কাছে। তিনি আরাকান পলায়নের সময় পান্ডুলিপি মুর্শিদাবাদের এক ওমারাহের কাছে রেখে যান। সেখান থেকে জৌনপুর। সেখান থেকে ফরিদউদ্দীন জৌনপুরী তা উদ্ধার করেন। পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ মূল উপন্যাসটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে রচিত হলেও ঔপন্যাসিক অনুবাদের ক্ষেত্রে দক্ষতা দেখিয়েছেন৷ যে সব আরবি-ফারসি শব্দ উপন্যাসে ব্যবহার হয়েছে, তার বাংলা অর্থ শেষে দেয়া হয়েছে। ফলে উপন্যাসটি বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না৷ উপন্যাসটিতে নাটকের মত সংলাপ ব্যবহৃত হয়েছে। তাই একে সংলাপনির্ভর উপন্যাস বললেও ভুল হবে না। সংলাপগুলো উপন্যাসটিকে প্রাঞ্জল ও সহজবোধ্য করেছে৷ এর মধ্যে ভালো লাগা উক্তিগুলো তুলে দিচ্ছি- ১. মরজী যেখানে ইনসাফ সেখানে কোন কিছুর উপর বিশ্বাস রাখতে নেই। ২. এই লোভের (রাজত্বের লোভের) আগুনের কাছে হাবিয়া-দোজখ সামাদানের ঝিলিক মাত্র। বিবেক, মমতা, মনুষ্যত্ব- সব পুড়ে যায় সেই আগুনে। ৩. জায়গা বিশেষে কানের চেয়ে চোখের কিমৎ বেশি। ৪. শাস্ত্রকে চোখ ঠারা যায়, কিন্তু বিবেককে চোখ ঠারা অত সহজ নয়। ৫. হাসির জন্য ওয়াক্ত লাগে, যেমন নামাযের জন্য প্রয়োজন হয়। ৬. জমিন-দরদী দেহকান (চাষী) যেমন নহরের পানি নিজের জমির জন্য বাঁধ দিয়ে বেঁধে রাখে, প্রেমিক-নারী তেমনই সমস্ত লজ্জা-সঙ্কোচ একটি হৃদয়ের জন্য সঞ্চিত রাখে। ৭. যুক্তির পেছনে থাকে মুক্তির স্বপ্ন। এই মুক্তির স্বপ্নই মানুষকে মানুষ বানায়। ৮. কালো পাথর কোনদিন নকল হয় না। সাদা আর ঝলমলে পাথরই সহজে নকল করা যায়। ১০. ভুলকে ভুল বলা কবিদের ধর্ম। ১১. সত্য তিক্ত পদার্থ। ১২. দীরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দি কেনা সম্ভব! কিন্তু ক্রীতদাসদের হাসি না- ১৩. হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি। রিভিউ শেষ করার আগে একটি বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করতে চাই। এটি কোন ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা নয়৷ তাই তৎকালীন কোন ব্যক্তি বা সময়ের বাস্তব প্রতিচ্ছবি ভেবে উপন্যাসটিকে পড়লে ভুল ভাবা হবে। তবে অনুবাদের ক্ষেত্রে ঔপন্যাসিক কিছুটা রূপকের আশ্রয় নিয়েছেন। উপন্যাসটি ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হয়। তখন আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী শাসনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ জর্জরিত। ঔপন্যাসিক রূপকের মাধ্যমে ঐ অবস্থাটিকে তুলে এনেছেন বলে মনে করা হয়। খলিফা হারুনর রশীদ যেন আইয়ুব খানের প্রতিমূর্তি, আর তাতারী বাংলার মানুষের। মজার ব্যপার হল, এই উপন্যাসের জন্য পাকিস্তান সরকার ১৯৬৬ সালে তাঁকে ‘আদমজী সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করে। তারা উপন্যাসটির মর্মার্থ উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। সবমিলিয়ে ‘ক্রীতদাসের হাসি’-কে একটি চমৎকার ও সুখপাঠ্য উপন্যাস বলে মনে হয়েছে। ৮০ পৃষ্ঠার উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে ‘সময় প্রকাশন’। গায়ের মূল্য মাত্র ১০০ টাকা৷ আগ্রহীরা পড়তে পারেন। বই: ক্রীতদাসের হাসি; লেখক: শওকত ওসমান; ধরন: চিরায়ত উপন্যাস; প্রকাশক: সময় প্রকাশন
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ- বইয়ের নাম- ক্রীতদাসের হাসি (প্রথম সংস্করণ ১৯৬৩) লেখক- শওকত ওসমান প্রকাশনী- সময় প্রকাশনী ধরন- চিরায়ত উপন্যাস প্রচ্ছদ- কাইয়ুম চৌধুরী মূল্য- ১০০ টাকা প্রতিবাদী চেতনার সংগ্রামী যোদ্ধা, কুসংস্কার-ধর্মান্ধতা আর কূপমন্ডুতার বিরুদ্ধে খুরধার যাঁর লেখনী, যশস্বী কথাশিল্পী শওকত ওসমানের সবচেয়ে আলোচিত উপন্যাস(মতান্তরে নাটক) "ক্রীতদাসের হাসি"। ১৯৫৮ খ্রীস্টাব্দে স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খান ক্ষমতায় এলে, তৎকালীন পাক-শাসনব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করেই এই গ্রন্থটি লেখা হয়। যেটা অনেকটা নিরীক্ষামূলকভাবেই "না নাটক- না উপন্যাস" ধরনে লেখা হয়েছে। এবং শাসক-বর্গের মোটিভ অন্যদিকে ঘোরাতে লেখক ভুমিকাংশেই "আলিফ লায়লা ওয়া লায়েলা"র পান্ডুলিপির হারিয়ে যাওয়া অংশের অনুবাদ বলে উল্ল্যেখ করেছেন এটাকে। অর্থাৎ শাসক শ্রেণীর মূর্খতাকে পুঁজি করে পাশার দান ধরেছেন লেখক এবং ফল স্বরূপ খোদ পাক-সরকারই তাঁকে ১৯৬৬ সালে আদমজী পুরষ্কারে ভূষিত করেন। সার-সংক্ষেপ: বাগদদ্ এর খলিফা হারুনর রশীদের বেগম জোনায়দা, যে তাঁর খুব-সুরত বাঁদী মেহেরজান কে বিশেষ স্নেহ করেন এবং খলিফার অগোচরেই তিনি আর্মেনী সুন্দরী-যুবতী মেহেরজান এবং জনৈক হাবশি-গোলাম তাতারীর বিয়ে দিয়ে তাদেরকে গভীর রজনীতে গোপন অভিসারের সুযোগও করে দেন। এ কাহিনীতে মূল চরিত্র তাতারী। যে তার পূর্ন-যুবতী স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়, দু-জোড়া ঠোঁট মিলে যায় পরষ্পর.. মেহেরজানের বুকের কপাট খুলে বেহেশত নেমে আসে জমিনে... সদরিয়া-কাঁচুলি খুলে বুকের মেওয়া পান করতে থাকে তাতারী। হাস্যোচ্ছ্বল হয়ে ওঠে হাবসী গোলাম। কিন্তু নৈশ-ভ্রমনের সময় গোপন সেই হাসি শুনতে পাই জাঁহাপনা হারুনর রশীদ আর তাঁর গোলাম মশরুর্। বিরাট সাম্রাজ্যের অধিকারী হয়েও হাসতে পারেন না খলিফা, হাসি আসে না তাঁর অথচ গোলামের বস্তি থেকে আসা হাসির শব্দে ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন তিনি এবং মশরুর কে কারন উদঘাটন করতে বলেন। সব জানার পর খলিফা তাতারীকে জেনা-র অভিযোগ তুলে হত্যা করতে গিয়েও মত বদলালেন, মুক্ত করে দিলেন দুজনকে। মেহেরজানকে পাঠালেন অন্দরমহলে আর তাতারীকে বাগদদ্ এর পশ্চিম দিকের এক বাগিচার মালিক করে দিলেন। গোলাম হয়ে গেলো বাগদদের ধনাড্য এক ব্যক্তি, তার আরাম-আয়েশের সব রকম বন্দোবস্ত করা হল শুধুমাত্র এই শর্তে যে হারুনর রশিদকে "হাসি" শোনাতে হবে। সব আয়েশের উপাদান; এমনকি বাগদদের সেরা কসবি বুসায়নাকেও পাঠানো হয় গভীর রাততে তাতারীর হর্ষ উৎপাদনের জন্য। তাতারী বুসায়নার যৌবন-বাসনাকেও প্রত্যাখান করে। হাজার চেষ্টাতেও তাতারীর হাসি আর আসে না। এমনকি হাসি না শুনতে পেয়ে খলিফা তাতারীকে প্রাণদন্ড দিলেন, এমতাবস্থায় গল্পের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র কবি আবু নওয়াস কে দেখা গেল। আবু নওয়াস তাতারীর হয়ে খলিফাকে মৃত্যুদন্ড পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান, কারন হিসেবে বলেন হাসতে ওয়াক্ত প্রয়োজন হয়, প্রয়োজন হয় উপাদানের। এভাবেই কাহিনী এগিয়ে যেতে থাকে। তাতারীকে না হাসার অপরাধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। তবুও কি হাসতে পারবে তাতারী? আর মেহেরজান...! অন্দরমহলে তার খবর কী? রোমাঞ্চে আর হর্ষে-বিষাদে পাঠকহৃদয় দোলাচলে দুলতে দুলতে কাহিনীর শেষে পৌঁছে যায়। (তাই বলছি পড়ে ফেলুন!) ★তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিগত বিশ্লেষন: ক্রীতদাস তাতারী আসলে রূপকার্থে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের শোষিত জনগন। যারা ৪৭ এর দেশ বিভাগকে স্বাধীনতা ভেবে ভুল করে, হঠাৎ করে বিলাস-ব্যসনে যেমন তাতারী বিভ্রান্ত হয়। কিন্তু সেটা সাময়িক ভ্রম মাত্র। হারুনর রশিদের মত স্বেচ্ছাচারী পাক-শাসকের কাছে শোষিত হতে থাকে বাঙালি। আর মেহেরজান হচ্ছে স্বাধীনতার মূর্ত রূপ, যার অবর্তমানে হাসি-আনন্দ কোনভাবেই সম্ভব না। আর ক্রীতদাসের হাসি হচ্ছে "বাঙালির বশ্যতা", যা ইচ্ছা করলেই পাওয়া যায় না। আর কবি আবু নওয়াস হচ্ছে তৎকালীন সচেতন সাহিত্যিকদের প্রতিভূ। যারা সমাজকে- সমাজের অন্যায়-অপশাসনকে নিজের ভেতরে ধারন করেছেন, তীব্র অন্তর্দহনে পুঁড়েছেন আর কলমকে করেছেন অস্ত্র। সমস্ত প্রাসঙ্গিকতা তাতারীর একটি উক্তিতে স্পষ্ট- "শোন, হারুনর রশিদ। দীরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দি কেনা সম্ভব! কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না.. না... না...!"
Was this review helpful to you?
or
কিছু অশ্লীল কথা আছে যা না থাকলেও চলতো। শেষের দিকের ট্র্যাজেডিটা আসলেই বড় মর্মান্তিক।
Was this review helpful to you?
or
❤️
Was this review helpful to you?
or
সবার পড়া উচিৎ
Was this review helpful to you?
or
সবার ঘরে রাখার মতো একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
বইটির নাম।দেখেই মূলত পড়ার ইচ্ছে জাগে। তারপর যেই ভাবা সেই কাজ। রকমারিতে বই অর্ডার দিয়ে কিনে ফেললাম। অনেক আগের বই হলেও বইটি পড়ে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করেছে। শেষে কৃতদাসের প্রতি বাদশাহের অসহনীয় নির্যাতন এর বিষয় টা খুবই মর্মাহত করে। যদিও এখানেই লেখকের সার্থকত। ধন্যবাদ রকমারিকে।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃক্রীতদাসের হাসি লেখকঃশওকত ওসমান প্রকাশনীঃসময় প্রকাশ মূল্যঃ৯০টাকা শওকত ওসমানের এক অসাধারণ সৃষ্টি "ক্রীতদাসের হাসি" উপন্যাসে ঔপন্যাসিক একটা সরল দার্শনিক দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন।তা হলো ক্ষমতা, অর্থ, শক্তিবলে মানুষের মুক্ত স্বাধীন চিত্তলোক অধিকার করা সম্ভব নয় কখনই।ঔপন্যাসিকের জীবনার্থের মূলে রয়েছে মানুষের ব্যক্তিস্বত্বার স্বাধীনতা। উপন্যাস বেশ ছোট হলেও গভীরতা বিশাল আর তা আমি খুব ভালোভাবে অনুভব করেছি। চাইলে হাসি খরিদ করা সম্ভব নয় এটাই প্রকাশ পায় তাতারীর কণ্ঠে, " শুনো হারুনর রশীদ দীরহাম দৌলত দিযে ক্রীতদাস কেনা চলে। বাঁদী কেনা সম্ভব । কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না-না-না-না। ..হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি।এটি মূলত"রূপক উপন্যাস। শক্তিশালী বার্তা রয়েছে এর ভেতরে। কেন এত বিখ্যাত, তা বুঝতে অসুবিধে হয় না। অনেকখানি অংশই নাটকের মত করে লেখা। তা ছাড়া কোথাও কোথাও সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ ভিন্নতর এক স্বাদ এনেছে । সত্যিই ক্লাসিক হিসেবে মর্যাদা পাবার যোগ্য বলে আমার মনে হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
বইঃক্রীতদাসের হাসি। লেখকঃশওকত ওসমান। বুক রিভিউঃবাগদাদের খলিফা হারুনর রশীদ, তার সহধর্মিণী বেগম জুবায়দা, বাঁদী মেহেরজান ও এক হাবসী গোলাম যার নাম তাতারী এই উপন্যাসের মূল চরিত্র।এছাড়াও জল্লাদ মশরুর, কবি ইসহাক ও কবি নওয়াস মূল চরিত্র না হলেও অতীব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।মেহেরজান বেগম জুবায়দার অনেক পছন্দের বাঁদী।মেহেরজানকে অনেক ভালোবাসে বেগম।তাই মেহেরজানের প্রেমিক হাবসী গোলাম তাতারীর সঙ্গে খলিফার অজান্তে বিবাহ দেন।তাই প্রতিদিন রাতেই লোকচক্ষুর অন্তরালে তাতারীর গৃহে অবস্থান করে মেহেরজান, সেখানে রাত্রিযাপন করে সকালেই বেগম জোবায়দার নিকট ফেরত আসে।এমনই এক রাতে মেহেরজান যখন তাতারীর গৃহে তখন গৃহের অদূরে প্রাসাদের বাগানে মনমরা খলিফা তার জল্লাদ বা তার কাছের বন্ধু মসরুরের পরামর্শে অবস্থান করে, তার মন ভালো করতে প্রকৃতির সংস্পর্শে।তখন হঠাৎই দূর থেকে হাসির শব্দ ভেসে আসে।খলিফা বা মশরুর কেউই সেই হাসির রহস্য ভেদ করতে পারে না।খলিফা মশরুরের উপর দায়িত্ব দেন এই হাসির রহস্য উদঘাটনের জন্য।মশরুর খলিফাকে বলেন এই হাসি গোলামদের গৃহ থেকে আসে।মশরুর, খলিফা আর কবি ইসহাক'কে নিয়ে যান গোলামদের গৃহের কাছে।সেখানে হাবসী গোলাম তাতারীর গৃহের জানালা দিয়ে তারা তাতারী আর মেহেরজানকে অবস্থায় দেখতে পান।এতদিন এই গৃহ থেকেই তাদের হাসির শব্দ শোনা যেত।খলিফা কিছু প্রহরীসমেত তাতারীর ঘরের দরজায় টোকা দেয়।তাতারী দরজা খুলতেই সকলে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে।তারা অদূরে বোরকা পরিহিত কাউকে আবিষ্কার করে।তাতারীর কাছে খলিফা জানতে চাই ওখানে কে? তাতারী একটু ইতস্তত বোধ করলে, খলিফা তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়।তখনি বোরকা থেকে বেরিয়ে আসে মেহেরজান।খলিফা জানতে পারে এদের দু'জনের বিবাহ হয়ে গেছে।মালিকের অমতে কোন ক্রীতদাসের বিবাহ হয় না, তাই খলিফা তাদের শাস্তি দিতে চান।কিন্ত এই হাসি তার এতই ভালোলেগে ছিল যে, পরমূহুর্তেই তিনি তাতারীকে ক্ষমা করে দেন এবং আরো অনেক ধন সম্পদ এবং ফলিফার একটি মহল তাতারীকে উপহার দেন তবে শর্ত একটাই তাতারীর প্রতিদিন হাসি দিয়ে মন ভরাতে হবে খলিফার।আর মেহেরজানের রূপে বিমোহিত খলিফা তাকে বিবাহের উদ্দেশ্যে মহলে নিয়ে যায়।একদিন তাতারীকে হাসতে বললে তাতারী হাসতে প্রস্তুত ছিল না।খলিফা সেদিন বলেন আজ না হাসলেও আমি আরেকদিন আমার বন্ধুদের নিয়ে তোমার মহলে আসবো সেদিন তোমাকে হাসতেই হবে।এদিকে কবি নওয়াস খলিফার সাথে বাজি ধরেন সকল জিনিসের জন্যই উপাদানের প্রয়োজন হয়, হাসির জন্য ও তেমনি।খলিফা বলেন তাতারীকে হাসতেই, এত সম্পদ ওকে দান করেছি যে ওকে আমি যা বলবো তাই ও শুনবে।খলিফার সাথে কবি নওয়াস এর বাজি হয় তাতরীর হাসি নিয়ে।এরপর আরও কয়েকদিন খলিফা তার বন্ধুদের নিয়ে তাতারীর মহলে যায়।কিন্তু কখনও সে হাসতে পারে না।খলিফা তাতারীর মন ভালো করতে তার মহলে একজন নর্তকী পাঠায়।তবে নর্তকী ও তার মন ভালো করতে পারে না।তাতারীর মহানুভবতার কাছে মাথানত করে নজ্জায় আত্মহত্যা করে সে।এই আত্নহত্যা'কে খুন বলে চালিয়ে তাতারীর কাঁধে সেই খুনের দায় চাপিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয় খলিফা।তবে কবি নওয়াস এর জন্য মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় না তাতারীর।তাই তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়।সেখানে খলিফা তাতারীকে বলেন যদি সে একবার হাসে তবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে।কিন্তু তাতারীর মুখ দিয়ে কোন জবাব বের হয় না।এভাবে কারাগারে প্রচুর নির্যাতন চলতে থাকে তাতারীর।এভাবে চার বছর পার হয়ে যায় তবুও তাতারীর মুখ দিয়ে এতটুকু হাসি বের হয় না।অবশেষে একদিন কারাগারে এসে হাজির হয় খলিফা, আর তাতারীকে হাসতে বলে।অবশ্য ততদিনে তাতারীকে দেখলে আর চেনা যায় না।অত্যাচারে তার শরীরের চামড়া প্রায় নেই বললেই চলে।খলিফা বলেন তোমার হাসির প্রয়োজন নেই তুমি একবার শুধু জবাব দাও তুমি কেন হাসছো না।তবুও কোন জবাব আসেনা।খলিফা এবার তার শেষ অস্ত্র প্রয়োগ করেন।তিনি মেহেরজানকে কারাগারে নিয়ে আসতে প্রহরীদের বলেন।অবশ্য ততদিনে মেহেরজানকে বিবাহ করেছেন খলিফা।কিন্তু মেহেরজান কিছুতেই চিনতে পারে না তাতারীকে।মেহেরজান বলে এর এ অবস্থা কেন এ কে? খলিফা বলেন এ আমার সাথে বেয়াদবি করেছে তাই এ অবস্থা।একে হাসতে বললে এ হাসছে না।মেহেরজান বলে আমি একে চিনতে পারছি না, যদি আপনার সাথে বেয়াদবি করে তবে একে মেরে ফেলুন।অনেক চেষ্টার পর যখন একে মেহেরজান চিনতে পারে না তখন খলিফা তাকে জানান এই সেই তাতারী।অবশেষে মনে পড়ে মেহেরজানের, তখন সে বলে তুমি হাসছো না কেন? হাসলেই যে তোমার প্রাণ বাঁচে।তবুও কোন জবাব আসেনা।মেহেরজান বলে আমি তো সময়ের সাথে নিজেকে বদলে ফেলেছি তুমি কেন পারছো না।মেহেরজান তাতারীকে অনেক অনুরোধ করে একটু হাসার জন্য।তখন খলিফা প্রহরীদের আদেশ দেন, প্রহরীকে মেহেরজানকে যখন ধরে নিয়ে যাচ্ছে তখন তাতারী বলে মেহেরজান শোন।মেহেরজানকে তখন নিয়ে যায় প্রহরীরা, তাই ক্ষোভে তাতারীরে খলিফাকে নাম ধরে ডাক দিয়ে বলে হারুন শোন।তখন খলিফার সাথে বেয়াদবির জন্য চাবুক দিয়ে পেটানো শুরু হয় তাতারীকে।তাতারী তখন খলিফাকে বলে, তুমি ধন-দৌলত দিয়ে অনেক মহল খরিদ করতে পারো, বাঁদী খরিদ করতে পারো, ক্রীতদাস খরিদ করতে পারো কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি নয়।
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ ক্রীতদাসের হাসি-শওকত ওসমান বাগদাদ অধীপতি খলিফা হারুনর রশীদ। স্বেচ্ছাচারী,নিষ্ঠুর শাসকরূপে তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে।ইতিহাসের চেয়ে কল্পনার উপস্থিতি বেশি এখানে।হারুনর রশীদ জাত্যাভিমানে এতটাই অন্ধ যে নিজের বোন আব্বাসাকে হত্যা করতে কুন্ঠাবোধ করেননি।পরে অবশ্য অনুতাপেও ভুগেছেন।নিজ হাতে যাদের প্রাণ নিয়েছিলেন,তাদেরই স্মৃতির জালে বন্দি হয়ে খলিফা কোথাও শান্তি পাচ্ছিলেন না।হাসি কী জিনিস-যেন ভুলতেই বসেছিলেন। একদিন নিজের প্রাসাদের বাগানে জল্লাদ মশরুরের সাথে,যাকে খলিফা নিজের বন্ধু মনে করেন, পায়চারি করতে গিয়ে শুনতে পান এক জোড়া মানব-মানবীর স্বর্গীয় হাসি।শুনেই হারুনর রশীদ বিস্মিত ও ঈর্ষান্বিত হয়ে বলেন"কে এই সুখীজন-আমার হিংসে হয়,মশরুর!আমি বগদাদ অধীশ্বর সুখ-ভিক্ষুক।সে ত আমার তুলনায় বগদাদের ভিক্ষুক,তবু সুখের অধীশ্বর!কে, সে?" আর্মেনীয় বাঁদী মেহেরজান আর হাবসী গোলাম তাতারী-প্রাসাদের অতন্দ্র নিরাপত্তাবেষ্টনীকে ফাঁকি দিয়ে রাতের নিকষ অন্ধকারে দেখা করত পরস্পরের সাথে।খলিফার হুকুম ছাড়া কোনো গোলামের বিয়ে করার নিয়ম নেই জেনেও তারা বিয়ে করেছিল।তাই এভাবে লুকিয়েই দেখা হত তাদের।সেই সময়টাতে ভুবন-ভুলানো হাসিতে মেতে উঠত তারা।স্থান-কালের কোনো হিসেবই মাথায় থাকত না তাদের।এমনই এক অসতর্ক মুহুর্তে খলিফার কানে যায় তাদের হাসি। খলিফার অদ্ভুত খেয়াল।ধন-সম্পদ, বাঁদী-গোলাম দিয়ে ভরিয়ে দিলেন গোলাম তাতারীকে।মুক্ত করে দিলেন গোলামী থেকে।বাঁদী মেহেরজানও সেদিন থেকে আর বাঁদী রইলো না।এত কিছুর বিনিময়ে খলিফা চান যখন তার হৃদয় দুঃখ-ভারাক্রান্ত হবে,তখন তাদের হাসি শুনে হৃদয় শীতল করতে।এরই মধ্যে তাতারীকে পাঠানো হল বাগদাদ শহরের পশ্চিমে এক বাগিচার মালিক করে।আর মেহেরজানকে দেওয়া হয় এরচেয়েও বড় ইনাম-খলিফা তাকে নিজের বেগম বানিয়ে নেন। এরপর অনেকবার খলিফা তাতারীর হাসি দেখতে চান,বন্ধু-সহচরদের নিয়ে ক্রীতদাসের হাসি দেখতে যেয়েও ব্যর্থ হন।খলিফা বুঝেই উঠতে পারেন না,এত শান-শওকাতের মধ্যে থেকেও তাতারী কেন হাসতে ভুলে গেল?যেই হাসি তার জীবনভিক্ষা দিয়েছে,সেই হাসিই ঠোঁটে আনতে আজ কোন উপাদানটি বাধা হয়ে দাঁড়ালো! আসলে খলিফা সব বুঝেও নাদান সাজতে চেয়েছিলেন।যেটা ছিল তাতারীর সত্যিকারের ভালোবাসা,খলিফার কঠিন হৃদয় সেটাকে ভেবে বসলো তেজ।এরপর চলতে থাকে অবর্ণনীয় জুলুম।তবু,খলিফার সেই কাঙ্ক্ষিত হাসি ফোটে না ক্রীতদাসের মুখে। অত্যাচারের মাত্রা যখন চরমে পৌঁছে,তখন তাতারী বলে,"শোন,হারুনর রশীদ।দীরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে।বন্দি কেনা সম্ভব-!কিন্তু-কিন্তু-ক্রীতদাসের হাসি- না-না-না-না-"এই বলে সে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে। এই উপন্যাসটিকে রূপক উপন্যাস বলা হয়।এই নিয়ে অনেক অনেক আলোচনা আছে।আমি সেই আলোচনায় গেলাম না।উপন্যাসের মূল কাহিনি সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। উপন্যাসটির উপস্থাপনার ঢং দেখে একে নাটক বলে মনে হয়-মূলত সংলাপ নির্ভর নাটক এটি।যেকোনো ঘটনার প্রেক্ষাপট খুব একটা আলোচনা নেই উপন্যাসটিতে। চরিত্রগুলোর মুখে এত হৃদয়গ্রাহী সংলাপ উচ্চারিত হয়েছে যে এগুলো বারবার পড়তে ইচ্ছে হয়। ও আচ্ছা,একটা কথা বলা হয়নি,এটি কিন্তু একটি অনুবাদ সাহিত্য।আরব্যরজনীর "আলেফ লায়লা ওয়া লায়লানে" অর্থাৎ "সহস্র দুই রাত্রি" বইয়ের সর্বশেষ গল্প হল এই "জাহাকুল আবদ" তথা ক্রীতদাসের হাসি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম-ক্রীতদাসের হাসি জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-শওকত ওসমান পৃষ্ঠা-৮০ মূল্য-১০০ সমকালের স্বাধিকার, গনতন্ত্র এবং সর্বপ্রকার মানবিক অধিকার বঞ্চিত মানুষের জীবনের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা সমূহ একত্র হয়েছে শওকত ওসমানের "ক্রীতদাসের হাসি" উপন্যাসের পটভূমিতে। উপন্যাসের প্রথমেই বাগদাদের খলিফা হারুনর রশিদের সহধর্মিনী জুবায়দা ও বাঁদি মেহেরজানের কথোপকথনে প্রাকাশ পায় খলিফার চরিত্রের নির্যাতিত বৈশিষ্ট। বাঁদি মেহেরজানের প্রেমিক হাবসী তাতারী। তাদের এই প্রনয় খলিফার দৃষ্টিগোচর হলে আর রক্ষা নেই। তাই অতি গোপনে মেহেরজান বেগম জুবায়দার সহায়তায় মেহেরজান প্রেমিকা তাতারীর সাথে মিলিত হয়। এদিকে প্রজানিপীড়ক খলিফার মন অশান্তিতে পরিপূর্ণ। তাই সে শান্তির সন্ধান করে ফেরে। মশরুরকে উদ্দেশ্যে বলে বাগদাদের অধিপতি হওয়া সত্বেও সে বড় একা! খলিফার একাকীত্বের মূলে রয়েছে তার পেছনের স্মৃতি চারণ। এরকম যন্ত্রণাময় অবস্থায় খলিফার কানে প্রবেশ করে মেহেরজান আর তাতারীর প্রেমপূর্ণ মিলনের আবেগোচ্ছল হাস্যধ্বনি। নিশ্চুপ ভাবে এই হাসির শব্দ শুনে খলিফা অনুভব করেন, এটা শুধু মাত্র ঠোট দিয়ে নির্গত হাসি নয়। এই হাসির উৎস স্থল হৃদয়ের গহীন প্রদেশ। এর মূলে রয়েছে অন্য কিছু। খলিফার হিংসা হয়। তিনি যেখানে অধিশ্বর হয়েও সুখের কাঙাল। সেখানে এক সামান্য ক্রীতদাস কিনা তার সম্মুখে হাসির মাঝে সুখের ঝর্ণা প্রবাহিত হচ্ছে! নাহ তা হতে পারে না। হিংসা রূপ নেয় প্রতিহিংসায়! ব্যক্তিগত মতামত: "ক্রীতদাসের হাসি" উপন্যাসে ঔপন্যাসিক একটা সরল দার্শনিক দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। তা হলো ক্ষমতা, অর্থ, শক্তিবলে মানুষের মুক্ত স্বাধীন চিত্তলোক অধিকার করা সম্ভব নয় কখনই।ঔপন্যাসিকের জীবনার্থের মূলে রয়েছে মানুষের ব্যক্তিস্বত্বার স্বাধীনতা। উপন্যাস বেশ ছোট হলেও গভীরতা বিশাল! হাসি যে হৃদয় থেকে আসে, তা কোন শাসন বা কারো আদেশে নয় তাই বুঝিয়েছেন। চাইলে হাসি খরিদ করা সম্ভব নয় এটাই প্রকাশ পায় তাতারীর কণ্ঠে, " শুনো হারুনর রশীদ দীরহাম দৌলত দিযে ক্রীতদাস কেনা চলে। বাঁদী কেনা সম্ভব । কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না-না-না-না। .... হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি।" ১৯৬২ সালে উপন্যাসটি রচিত হয় মূলত ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসন পাকিস্তানকে বর্বর স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে আবদ্ধ করার ফলে সে সময় সব ধরনের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়। তৎকালীন পাকিস্থানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের শাসন ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে। তাতারীর মাধ্যমে পুরো বাঙালিকে নির্দেশ করেছেন উপন্যাসে। ক্রীতদাসের হাসিকে জনগনের অধিকার ও স্বাধীনতা প্রতীক হিসেবে দেখিয়েছেন। সারা পাকিস্তানেই তখন স্বৈরশাসনে নিষ্পেষণে অভিশপ্ত। উপন্যাসে বাগদাদ নগরী যেন সমগ্র পাকিস্তানের রূপক হিসেবে ব্যবহৃত। ভালো লাগার উপন্যাস। পড়ে ভালো লাগবে আশা করি। https://www.rokomari.com/book/6987/ক্রীতদাসের-হাসি(প্রথম-সংস্করণ-১৯৬৩)
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতাbr বইয়ের নামঃক্রীতদাসের হাসিbr লেখকঃশওকত ওসমান প্রকাশনীঃসময় প্রকাশনী ধরনঃচিরায়ত উপন্যাস প্রচ্ছদঃকাইয়ুম চৌধুরী মূল্যঃ১০০ টাকা(রকমারি মূল্যঃ৭৫ টাকা) . ঘটনাটি মুসলিম খলিফা হারুন অর রশিদের অন্দর মহলের। খলিফার হাবসী ক্রীতদাস #তাতারী ও আরমেনীয় দাসী #মেহেরজান পরষ্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রেমে পড়ে। তাদের ভালবাসাকে স্বীকৃতি দেন রাজমহিষী। খলিফার অজান্তেই রাজমহিষী দুজনের বিয়ে দিয়ে দেন। তারা খলিফার স্ত্রীর অনুমতিক্রমে প্রতিরাতেই দাসদের বসবাসের নির্ধারিত স্থানে মিলিত হত। এ দুই প্রেমিক-প্রেমিকা মিলিত হয়ে প্রাণখোলা হাসি হাসত। . এদিকে খলিফার মনে শান্তি নাই,তার ধন সম্পদ রাজ-ক্ষমতা সবই রয়েছে। কিন্তু তিনি মনের মধ্যে সব সময় একটি অস্থিরতাবোধ করেন। তিনি যেন হাসতেই ভুলে গেছেন। একদিন রাতের বেলায় বাগানে তার জল্লাদ-কাম সহচর মাশরুরসহ বেড়াতে গেলে সেখান থেকে ক্রীতদাসের হাসি শুনতে পান। . খলিফা মাশরুরকে আদেশ দেন যে কে এমন প্রান খোলা হাসি হাসে তাকে খুজে বের করতে।মাশরুর সেই হাসির উৎস খুজে বার করে এবং খলিফাকে জানায়।পরের দিন তিনি গোপনে তাতারি ও মেহেরজান এর প্রেমলীলা প্রতক্ষ করেন। কিন্তু খলিফার অদ্ভূত খেয়াল হয় তিনি ক্রীতদাসকে মুক্ত করে দিয়ে তাকে প্রয়োজনীয় শানসাওকাত দিয়ে তার প্রাণখোলা হাসি শুনবেন। . ক্রীতদাস তাতারির প্রাণোচ্ছল হাসি শুনে বিমোহিত খলিফা ভেবেছিল তিনি তাতারির হাসি কিনে নিতে পারবেন। যখন ইচ্ছে সেই হাঁসি শুনতে পাবেন যেন তাতারি চাবি দেওয়া পুতুল। যখন চাবিতে মোচড় দেবেন তখনি সে হাসতে শুরু করবে। সেই চেষ্টায় খলিফা তাতারি কে দাস থেকে মুক্ত করে অঢেল সম্পত্তি প্রদান করলেও তাতারি কিন্তু আর তার সেই প্রান খোলা হাসি হাসতে পারেনি।কেন পারেনি তাতারি আগের মতো প্রাণ খুলে হাসতে? . অঢেল ধন-সম্পদ দেয়া সত্বে তাতারির হাসি শুনতে পাননি খলিফা।তাই ক্রুদ্ধ খলিফার নির্দেশে চাবুকের আঘাত তাতারির কালো চামড়া ফালি ফালি হয়েছে, রক্তাক্ত হয়েছে। কিন্তু হাসি ফিরে আসেনি।কেন তাতারি হাসতে পারে না? খলিফার সভাকবি ইসহাক বলেন যে হেকমী দাওয়াই তৈরি করতে যেমন অনেক উপাদান প্রয়োজন হয়।তেমনি হাসির জন্য বহু অনুপান দরকার।হাসিও একটা জিনিস।হাসি তৈরি হয় নানা জিনিস দিয়ে; খাওয়া লাগে,পড়া লাগে,আরাম লাগে,শিক্ষা লাগে,আরো বহু কিছু। তাই তার একটা উপাদানের যদি অভাব ঘটে, তখন আর হাসি তৈরি হবে না।তাতারি ক্ষেত্রে ও কোন না কোন উপাদানের অভাব ঘটেছে তাই সে আর হাসতে পারছে না।কি সেই উপাদান? সেটা নাহয় পড়ার পরই জানবেন। . #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ ক্রীতদাসের হাসি বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান রচিত একটি উপন্যাস। ১৯৬২ সালে তিনি এ উপন্যাসটি রচনা করেন। উপন্যাসটি চমৎকার! কিন্তু এটা সঠিক উপন্যাস না নাটক এ নিয়ে বড় খটকা জাগে। তবে এটা দুইয়েরই সংমিশ্রণ। কাহিনীটি ঐতিহাসিক মোড়কে হলে এর সাথে প্রকৃত ইতিহাসের কোন সংযোগ নেই।পড়ে ভালই লাগছে। আশা করি আপনাদেরও ভাল লাগবে। উপন্যাস এর শেষে তাতারি যে খলিফার উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলে ওঠে সেগুলো "দিরহাম দৌলত দিযে ক্রীতদাস কেনা যায। বান্দি কেনা সম্ভব । কিন্তু-কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না-না-না। .... হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি"এই কথা গুলো উপন্যাস এর অনেক দূর্বলতা ছাড়ায়ে গেছে। হাপি রিডিং......
Was this review helpful to you?
or
হাসি জিনিসটা ভেতর থেকে আসে। তবে মেকি হাসির কথা ভিন্ন। সেটা সবসময় মুখে ধরে রাখা যায়। কিন্তু সে হাসিতে প্রান থাকে না। আমরা বেশির ভাগ সময় মেকি হাসি মুখে লেপটে রাখি। কিন্তু অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে যে হাসি বা বলতে পারেন যে খুশি আসবে সেটা মহা মূল্যবান। আপনি পার্থিব সম্পদ দিয়ে সে হাসি কিনতে পারবেন না। যেমন পারেননি এই উপন্যাসের খলিফা হারুনুর রশীদ। ক্রীতদাস তাতারির প্রাণোচ্ছল হাসি শুনে বিমোহিত খলিফা ভেবেছিল তিনি তাতারির হাসি কিনে নিতে পারবেন। যখন ইচ্ছে সেই হাঁসি শুনতে পাবেন যেন তাতারি চাবি দেওয়া পুতুল। যখন চাবিতে মোচড় দেবেন তখনি সে হাসতে শুরু করবে। সেই চেষ্টায় খলিফা তাতারি কে দাস থেকে মুক্ত করে অঢেল সম্পত্তি প্রদান করলেও কেড়ে নেন তাতারির হাসির মূল উৎস মেহেরজান কে। মেহেরজান থেকে আলাদা হয়ে তাতারি কি হাসতে পারে! না পারেনি তাতারি। ক্রুদ্ধ খলিফার নির্দেশে চাবুকের আঘাত তাতারির কালো চামড়া ফালি ফালি হয়েছে, রক্তাক্ত হয়েছে। কিন্তু হাসি ফিরে আসেনি। না আর দশটা মানুষের মতো তাতারি পারেনি মেকি হাসি মুখে লেপটে রাখতে। পারেনি অঢেল সম্পত্তি পেয়ে নিজের অস্তিত্ব ভুলে যেতে। "ক্রীতদাসের হাসি" দারুণ একটা উপন্যাস। সাইজে বেশ ছোট হলেও গভীরতায় সমুদ্রসম। ভালো লাগবে সবার আশা করি। তবে শেষাংশে তাতারীর কণ্ঠে "দিরহাম দৌলত দিযে ক্রীতদাস কেনা যায। বান্দি কেনা সম্ভব । কিন্তু-কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি না-না-না। .... হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি।" কথাগুলো সম্ভবত লেখাটার অনেকগুলো দুর্বলতাকেই ছাপিয়ে গেছে।
Was this review helpful to you?
or
ক্রীতদাসের হাসি বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান রচিত একটি উপন্যাস। ১৯৬২ সালে তিনি এ উপন্যাসটি রচনা করেন। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসন পাকিস্তানকে বর্বর স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে আবদ্ধ করলো। এ সময় সব ধরনের-বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। তৎকালীন পাকিস্থানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের শাসন ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে এ উপন্যাস রচিত হয়। এ উপন্যাসের মূল চরিত্র তাতারী। গণতান্ত্রিক চেতনাকে ভয় পায় স্বৈরাচারী শাসক। এই চেতনাকে দমন করার জন্যই আবার নেমে আসে সামরিক শাসন তবুও লেখকের প্রতিবাদ স্তব্ধ থাকেনি। রূপকের মধ্য দিয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে এই প্রতিবাদ। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’র তাতারী। খলিফা হারুনর রশীদ কোনো কিছুর বিনিময়েই তাতারীর হাসি শুনতে পান না। খলিফার নির্দেশে হাসার চেয়ে মৃত্যুকে শ্রেয় মনে করেছে তাতারী।