User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিবারাত্রির কাব্য ১৯৩৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি লেখকের একটি কালজয়ী উপন্যাস। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হেরম্ব। পুরো উপন্যাস জুড়ে দেখা যায় তার জীবনে তিনটি নারীর সংস্পর্শ এসেছে উমা, সুপ্রিয়া ও আনন্দ। উমা হেরম্বের স্ত্রী হলেও এক মেয়ে সন্তান রেখে অজ্ঞাত কারনে আত্মহত্যা করে। উপন্যাসের শুরুতে দেখা যায় হেরম্ব পাঁচ বছর পর থানার সামনে সুপ্রিয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে। তাদের মধ্যে আগে থেকেই ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। এর জন্যই হয়ত তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে কিনা তা উপন্যাসে এক রহস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। উপন্যাসে দিনের কবিতায় হেরম্ব আর সুপ্রিয়ার বিচরণ! আর রাতের কবিতায় দেখা মিলে হেরম্বর সাথে আনন্দের। যা উপন্যাসে অনেক নাটকীয় ও ভয়ংকর ঘটনার সুত্রপাত করেছে। সমস্ত চরিত্র গুলোর মধ্যে ছিলো অভাব বোধ ও ভয়ংকর এক ক্ষুধা! মানুষের মৃত্যু কবলিত জীবন যেমন সার্থক, তেমনি সার্থকতা ক্ষণজীবী হৃদয়েও হয়তো আছে। এই উপন্যাস রূপের রূপক যা টেনে ধরে শেষ পর্যন্ত।অসাধারণ উপন্যাস!
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ প্রিয়াংকা বিশ্বাস উপন্যাস -- দিবারাত্রির কাব্য ঔপন্যাসিক -- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা কথা-সাহিত্যের অন্যতম সার্থক জীবনবাদী শিল্পী যিনি জীবনকে বাস্তব দৃষ্টিতে বিবেচনা করে তাঁর উপন্যাসের নান্দনিক সাফল্য নির্মাণ করেছেন I "দিবা রাত্রির কাব্য" (১৯৩৫) তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস Iপ্রথম পর্যায়ে রচিত এ উপন্যাস বহুমাত্রিক কারণে তাঁর অন্যান্য সৃষ্টিকর্ম থেকে স্বতন্ত্র Iঔপন্যাসিকের নানামাত্রিক দৃষ্টিকোণ এ উপন্যাসে রূপকের সাহায্যে উপস্থাপিত হয়েছে Iতাই "দিবারাত্রির কাব্য" কেবল উপন্যাসই নয়,এটি রূপকধর্মী উপন্যাস I উপন্যাসের ভূমিকায় ঔপন্যাসিক বলেছেন -- " "দিবারাত্রির কাব্য" পড়তে বসে যদি কখনো মনে হয় বইখানা খাপছাড়া ; অস্বাভাবিক, তখন মনে রাখতে হবে এটি গল্পও নয়,উপন্যাসও নয়, রূপক কাহিনী Iরূপকের এ একটা নতুন রূপ I" "দিবারাত্রির কাব্য" উপন্যাসে তিনটি ভাগ রয়েছে I প্রথম ভাগ - দিনের কবিতা দ্বিতীয় ভাগ - রাতের কবিতা তৃতীয় ভাগ - দিবারাত্রির কাব্য উপন্যাসের নায়ক হেরম্ব প্রতিটি ভাগেই উপস্থিত এবং তার আত্মকেন্দ্রিকতাকে ঘিরেই কাহিনি প্রবাহিত হয়েছে I আর হেরম্বকে কেন্দ্র করে সুপ্রিয়া ও আনন্দ চরিত্র আবর্তিত হয়েছে I প্রতিটি ভাগই শুরু হয়েছে কবিতা দিয়ে এবং রূপকধর্মী এ কবিতাগুলোই মূল বক্তব্যের ইঙ্গিতবাহী I প্রথমভাগে হেরম্ব আসে রূপাইকুড়া গ্রামে সুপ্রিয়াকে দেখতে পাঁচ বছর পর Iএকদিনে দুজনের সম্পর্কের টানাপড়েন , জটিলতা,পারিবারিক আসক্তি ও আসক্তিহীনতা,সর্বোপরি মনোজাগতিক নানা বিষয়ের ব্যাখ্যা এখানে দেয়া হয়েছে Iইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক হেরম্বকে বাইরে থেকে দেখে সুস্থ-মানসিকতার মানুষ বলেই মনে হয়, কিনতু উপন্যাসে তার যে জটিল মনস্তত্বর সাথে আমরা পরিচিত হই তার নজির বাংলা সাহিত্যে ছিল প্রথম Iভালোবাসার মানুষকে ভুলিয়ে অন্যর সাথে বিয়ে দেয়ার এক জটিল আকাঙ্খার বাস্তবায়ন,নিজের স্ত্রীর আত্মহত্যা বা আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা কিংবা স্ত্রীকে নিজেই হয়তো খুন করা এবং প্রাক্তন প্রেমিকার জীবন ভালোবাসার জ্বলন্ত চিতায় পুড়িয়ে শেষ করা -- অধ্যাপক হেরম্ব এ সবকিছুই ঘটিয়েছে সুপ্রিয়ার জীবনে I দিনের কবিতায় "রান্নাঘর" একটি রূপক বিষয় Iসুপ্রিয়া কৈশোরে হেরম্বকে ভালবাসতো ,কিনতু হেরম্ব তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে দারোগা অশোকের সাথে বিয়ে দেয় যা সে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি I বিয়ের পর সুপ্রিয়া জীবনধারণের থেকে টিকে থাকার দিকেই বেশি মনযোগী হয় I আর সেই সংগ্রামী জীবনের সঙ্গী হিসেবে সে রান্নাঘরকে বেছে নেয় I মানসিক ও জাগতিক শূন্যতাকে পাশ কাটাতেই তার এই রান্নাঘরপ্রীতি I এ ভাগে রূপকের মাধ্যমে দ্বিমুখী অবস্থানের ব্যাখ্যা করা হয়েছে Iসুপ্রিয়ার স্বামী দারোগা অশোক স্ত্রী-হত্যাকারী বিরসাকে আটক করে থানায় বেঁধে এনেছে,অথচ তার নিজের ঘরেই তখন তার স্ত্রী প্রণয়ী হেরম্ব উপস্থিত Iএ ধরনের বিপ্রতীপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বি-মাত্রিক সম্পর্কের স্বরূপ তুলে ধরেছেন I রাতের কবিতায় "আনন্দ" চরিত্রের নামটি গুরুত্বপূর্ণ Iআনন্দ একরকম অস্পষ্ট এবং রহস্যময় Iদ্বিতীয় ভাগের রাতের কবিতার শুরুতে যে কবিতা উদ্ধৃত হয়েছে তা-ও রূপকাশ্রয়ী I এ ভাগে প্রেম নিয়ে হেরম্ব ও আনন্দের মধ্যে বিস্তর আলোচনা হয়েছে কিনতু শেষ অবধি যে যার বিশ্বাসে অটুট থেকেছে I আনন্দ নিজেকে একটা রহস্যের আবরণে ঢেকে রাখে এবং সেটা করেছে অনেকটা রাতের আঁধারের মতোই Iতাই "রাত্রি" শব্দটি তিনবার ব্যবহার করে ঔপন্যাসিক আনন্দকেই ইঙ্গিত করেছেন I দিনের কবিতায় সুপ্রিয়া "দিন" আর রাতের কবিতায় আনন্দ "রাত" ! তৃতীয় ভাগ "দিবারাত্রির কাব্য"তে উপন্যাসের চূড়ান্ত পরিণতির আভাস পাওয়া যায় শুরুর কবিতার মধ্য দিয়ে Iতবে শেষ ভাগের বিশ্লেষণ এ আমি যাব না , এটুকু তোলা থাক পাঠকের জন্য I ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা এ উপন্যাসটি পাঠকের মনের গহীনে এক সংশয়পূর্ণ নতুন বোধের,নতুন ভাবের জাগরণ ঘটায় Iপ্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি এবং মননশীলতার অধিকারী Iকাজেই সবাইকে চমকপ্রদ এ উপন্যাসটি নিবিড় পরিচর্যায় পাঠ করার আমন্ত্রণ রইলো I