User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#বড়দিদি_শরৎচন্দ্র_চট্টোপাধ্যায় - প্রধান চরিত্র (সুরেন্দ্রনাথ ও মাধবী)। বছর খানেক আগে একখানা বাচ্চা টিয়া পাখি কিনিয়া খাচায় পুরিয়াছিলাম পোষ মানাইবার জন্য। এক বছরে পোষ মানিয়াছিলো ঠিকই। কিন্তু হঠাৎ শুভ বুদ্ধির উদয় হইলো তাই পাখিটাকে বন্ধি জীবন হইতে মুক্ত করিতে চাহিলাম। খাচার দ্বার খুলিয়া তাহাকে মুক্ত করিয়া দিলাম। কিন্তু যাহাকে স্বাধ করিয়া মুক্ত করিলাম, মুক্ত হইবার আনন্দের লেশমাত্র তাহার মধ্যে লক্ষ করিলাম না। একটিবার উরিবার চেষ্টাও করিলোনা। ইহাই বোধকরি বোঝাইতে চাহিলো যে জন্মের পর হইতে একটিবারের জন্যে যে উরিবার স্বাধ পায়নাই তাহার জন্যে উরিবার বৃথা চেষ্টা করাটাও বুঝি অন্যায়। এইবার একটু শরতে বিচরন করা যাক। বড়দিদি পড়িতে গিয়া চোখের কোনে একফোঁটা অশ্রু আসেনাই এমন মানুষ খুজিয়া পাওয়া দুষ্কর। মানুষ পাখি পুষিয়া তাহাকে যাহা শিখাইয়া দেয় পাখিটি যে তাহারই অনুকরন করে। খাচার মধ্যে থাকিয়া মুক্তি পাইবার জন্যে ছটফট করিতে থাকে। একটি বারের জন্যেও হয়তো ভাবিতে চেষ্টা করেনা বাহিরে তাহাকে কত কষ্ট করিয়া আহারের যোগার করিতে হইবে, কত কষ্ট করিয়া বাসস্থান তৈরি করিতে হইবে। পাখির মালিক তাহাকে যতই ভালোবাসুক না কেন, মুক্তির আনন্দ উপভোগ করিবার জন্যই হয়তো তাহার এই ছটফটানি। কিন্তু মুক্তি পাইবার পর যে ডাল ধরিয়া বাচিবার সপ্ন দেখে সেই ডাল যখন দমকা হাওয়ায় ভাঙিয়া পরে তখন সেই মুক্তির তৃপ্তিটুকু আর গ্রহন করা হয়না। সেই ভাঙা ডাল খানির মায়া বুকে জরাইয়া ফিরিয়া আসিতে বাধ্য হয়। সে মায়া অনন্ত কাল ধরিয়া লালন করিয়া বুকের মধ্যেই হয়তো সমাধিস্থ করিতে হয়। লেখক তাহার লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন, প্রতেক মানুষের মনের মধ্যে রহিয়াছে গুপ্ত ভালোবাসা। কিন্তু মানুষ প্রকৃতির বন্ধনে এমন ভাবেই আবদ্ধ যে কেহ চাহিলেই সেই ভালোবাসার দ্বারখানি প্রকাশ্যে উন্মুক্ত করিতে পারেনা। আর লিখিতে পারিলাম না, মাত্রই শেষ করিলাম তাই হাত কাপিতেছে। বইখানা পড়িয়া বাকিটুকু বুঝিয়া লইবার জন্য অনুরোধ রইলো। উপলব্ধিঃ আমাদের চারিপাশে এমন অসংখ্য মানুষ রহিয়াছে যাহাদের ভালোবাসার পুর্ন অধিকার রহিয়াছে। কিন্তু সামাজিকতার বন্ধন তাহাদিগকের সেই অধিকারটুকু নিজ বলে কারিয়া লইয়াছে। তাহাদের মধ্যে মন্ত্রের মত ঢুকাইয়া দিয়াছে তাহাদের ভালোবাসতে নেই, তাহাদের ভালোবাসা অন্যায়, তাহাদের ভালোবাসা পাপ। আমাদের সমাজ কি এই ভাবেই চলিতে থাকিবে? ইহার কি কোন পরিবর্তন হইবে না? মানুষ যাহাকে ভালোবাসে তাহার প্রসংশা অন্যের কাছে শুনিলে বড়ই তৃপ্তি হয়। শরতবাবুর দেবদাস লইয়া একখানা পুর্নদৈর্ঘ ছবি নির্মিত হইয়াছে "বড়দিদি" লইয়া হইলেও কম জনপ্রিয় হইবেনা ইহা আমি স্পষ্ট করিয়া বলিতে পারি। শরৎ বানীঃ ১. এ পৃথিবীতে এক সম্প্রদায়ের লোক আছে, তাহারা যেন খরের আগুন। দপ করিয়া জ্বলিয়া উঠিতেও পারে আবার খপ করিয়া নিবিয়া যাইতেও পারে। তাহা দিগকের পিছনে সদাসর্বদা একজন লোক থাকা প্রয়োজন - সে যেন আবশ্যক অনুসারে খড় যোগাইয়া দেয়। ২. বনের পাখির চেয়ে পিঞ্জরের পাখিই বেশি ছটফট করে। ৩. স্বর্গের কল্পতরু কখনো দেখি নাই, দেখিবো কিনা তাও জানিনা, সুতরাং তাহার কথা বলিতেও পারিলাম না। ৪. লোক যেমন ইষ্ট দেবতা কে দেখিতে পায়না, শুধু নামটি শিখিয়া রাখে, দুঃখে-কষ্টে সেই নামটির সম্মুখে সমস্ত হৃদয় মুক্ত করে, নতজানু হইয়া করুণা ভিক্ষা চাহে, চক্ষে জল আসে, মুছিয়া ফেলিয়া শুন্যদৃষ্টিতে কাহাকে যেন দেখিতে চাহে - কিছুই দেখা যায়না; অস্পষ্ট জিহ্বা শুধু দুইটি কথা অস্ফুট উচ্চারন করিয়া থামিয়া যায়। ৫. বিধাতাকে দোষ দেই তিনি কি জন্য এত কোমল, এই জলের মত পদার্থ দিয়া নারী হৃদয় গড়িয়াছিলেন? এত ভালোবাসা ঢালিয়া দিয়া কে গড়িতে সাধিয়েছিল? তাহার চরনে পার্থনা যেন এই হৃদয়গুলোকে একটু শক্ত করিয়া নির্মান করা হয়। ৬. যাহার গুন আছে, সে প্রকাশ করিবেই। যার হৃদয় আছে সে ভালোবাসিতে জানে-সে ভালোবাসিবেই। মাধবীলতা রসালো বৃক্ষ অবলম্বন করে, ইহা জগতের রিতী। তুমি আমি কই করিতে পারি? বিঃ দ্রঃ ভালোবাসার পরাজয় মানিয়া লইতে আসলেই অনেক কষ্ট হয়। তবে পৃথিবীর রিতী বলিয়া অভ্যাশে পরিনিত করিয়া লইয়াছি। আর হ্যা যাহারা বইখানা পড়েননি অবশ্যই পড়িয়া লইবেন।