User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের কাহিনির সূত্রপাত এর অন্যতম মুল চরিত্র মহিমের দীনহীন ছাত্রাবাসে মহিম আর তার পরম বাল্যবন্ধু সুরেশের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে। মহিমের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল না। তাই সে কমদামী ছাত্রাবাসে থেকে কোনোরকমে দিনাতিপাত করে। অপরদিকে সুরেশ বেশ অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের সন্তান। সুরেশ মহিমের এই বেহাল দশা প্রত্যক্ষ করার পর যারপরনাই বিস্মিত, দুঃখিত এবং একইসাথে ক্ষুদ্ধ হয়। ক্ষুদ্ধ হয় এই কারণে যে অনেকবার বলেকয়েও মহিমকে এখান থেকে নড়ানো সম্ভবপর হয়নি। সুরেশ এ কারণে মহিমের সাথে বেশ রাগারাগি করে। একই সময় তাদের মধ্যে অচলাকে নিয়েও কথা হয়। সুরেশ নাস্তিক হলেও ব্রাহ্মসমাজের মেয়ে অচলার সাথে মহিমের প্রণয়কে সে মেনে নিতে পারে না। পরে ঘটনাক্রমে এই অচলার প্রতিই প্রথম দেখাতে তার দুর্বলতা জন্মায়। মহিম স্বল্পভাষী, নিরুত্তাপ চরিত্রের - একই সাথে তার আত্মসম্মানবোধ প্রবল। মহিমের এই আচরণের কারণেই অচলা একটু একটু করে সুরেশের দিকে ঝুঁকে পড়ে। যার কারণে মহিমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার পরেও সুরেশ তাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। এক দ্বিধান্বিত পথের দিকে পা বাড়ায় তারা। কী হয় এরপর? জানার জন্যে পড়ে ফেলতে হবে গৃহদাহ। এবারে আসি পাঠ প্রতিক্রিয়ায়। আমাকে যদি আমার পঠিত সেরা তিনটি বইয়ের নাম জিজ্ঞেস করা হয় তবে আমি ২য় বই হিসেবে উল্লেখ করি গৃহদাহের নাম। মোট কতবার যে পড়েছি তার হিসেব আমার কাছে একদমই নেই। মানবমন যে অস্থির, একে স্থির রাখা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রায় দুরূহ- এই বইয়ের কাহিনি তার জ্বলন্ত উদাহরণ। এ উপন্যাসের অন্যতম দ্বিধাবিভক্ত চরিত্র অচলা- বলা চলে সে-ই সবচে বেশি দ্বিধান্বিত। তার মন পেন্ডুলামের কাটার মত একেক সময় একেকজনের দিকে ঝুঁকে গেছে। যাকে ভালোবেসেছে, তার সাথে সংসার করতে তার মনে দ্বিধা জেগেছে, আবার ভালো না বেসেও কারো সাথে সে সময় কাটিয়েছে। অন্যদিকে সুরেশ; তাকে এই আখ্যানের খলচরিত্র বলব নাকি ভালো এটা একদমই আপেক্ষিক। অচলাকে সোজা বাংলায় ভোগ করার জন্য সে তার প্রিয় বন্ধু মহিমকে পীড়িত অবস্থায় ট্রেনে ফেলে রেখে পালিয়েছে অচলাকে নিয়ে। আবার যখন তার বিবেকবোধ জাগ্রত হয়েছে তখন অচলার ভার তার কাছে সহ্য হয়নি। অচলাকে অকপটে সে বলেছে," তখন ভাবতুম কী করে তোমায় পাবো;এখন অহর্নিশ চিন্তা করি, কী উপায়ে তোমাকে মুক্তি দেব। তোমার ভার যেন আমি আর বইতে পারিনে।" বস্তুত সুরেশ যখন বুঝতে পারে যে অচলা তার দেহের অনেক কাছে থেকেও অনেক দূরে তখন অচলার বোঝা তার কাছে অসহ্য বলে মনে হয়। মহিম এ উপন্যাসের সবচাইতে নিষ্ক্রিয় চরিত্র। তার নিস্পৃহ আচরণ অনেক সময় বিরক্তিই জাগায়। আবার একটু গভীরভাবে ভাবতে গেলে সে এমনই স্বল্পভাষী, যে কোনো কথা না বলেই অনেক কথা বলতে সক্ষম। উপন্যাসের বাকি চরিত্রগুলোও স্ব-মহিমায় প্রোজ্জ্বল। কেদারবাবু ঋণের দায়ে জর্জরিত, ক্ষনসময়ের জন্য বিবেকবোধ হারানো এক পিতা; মৃণাল আবহমান বাংলার ধর্মপরায়ণা, সতী নারীর প্রতিনিধি। এই উপন্যাসে তার ব্যাপ্তি কমসময়ের জন্যে হলেও পাঠক তার চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে মাথা নোয়াতে বাধ্য। 'গৃহদাহ' উপন্যাসের নামকরণ মহিমের বাড়ি পুড়ে যাওয়া নাকি কারো অন্তর্দাহের কারণে করা হয়েছে তা পাঠক পড়ে নিজেই যাচাই করুক। অচলা সতী না অসতী সেটাও পাঠকের বিবেচনায় রাখা হোক। তবে আমার পছন্দের তালিকায় গৃহদাহ আছে, থাকবে
Was this review helpful to you?
or
গৃহদাহ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় - প্রধান চরিত্র ( মহিম,অচলা,সুরেশ ও মৃনাল ) সমস্ত বই শেষ করিবার পড়েও বুঝিতে পারিলাম না অচলা কি সত্যি সুরেশ কে ভালোবাসিত কি না। এই চরিত্র গুলি সম্পর্কে এই যে রুপ ধারনা জন্মাইয়াছে তাহা তুলিয়া ধরিবার চেষ্টা করিলাম। মহিম- গৃহদাহ উপন্যাসে মহিম এক অনবদ্য চরিত্র, যে মহৎ, স্বল্পভাষী, এবং ক্ষমার এক মহান দৃষ্টান্ত। যা উপন্যাস খানি পড়িবা মাত্র বোঝা যায়। কিন্তু উপন্যাসের শেষের দিকে গেলেই তাহার এই অহংকার ধূলিসাৎ হইয়া যায়। কেননা সকল সত্য জানিবার পরেও অচলা কে প্রত্যাক্ষান করিয়া ডিহরিতেই ফেলিয়া আসিয়াছিলো। মহিম চাইলেই সেদিন অচলাকে ক্ষমা করিয়া গ্রহন করিতে পারিত। অচলা- সমস্ত উপন্যাস জুড়িয়া যে চরিত্র টি পাঠক মনে দাগ কাটিয়া গিয়াছে সে হইলো অচলা। ক্ষণকালের জন্যেও পাঠক কে বুঝিতে দেয় নাই সে আসলে মহিম কে না সুরেষ কে ভালোবাসে ও কতখানি বা ভালোভাসে। নিজ চরিত্রে কালিমা লেপন করিয়া কোন এক অজানা পৈশাচিক আনন্দ লাভ করিবার চেষ্টা করিয়া বার বার প্রত্যাক্ষিত হইয়া ব্রাহ্ম হইয়াও শেষ পর্যন্ত ভগবানের নিকট ফিরিয়া আসিয়াছে। যাহার ভরসা করিয়া নিজ স্বামী ত্যাগ করিয়া অন্যত্র পারি জমাইলো ( চাইলেই সেদিন ফিরিয়া যাইতে পাড়িত ) তাহার কাছেও যখন বোঝা হইয়া গেলো তখন সেই মহিম কেই বারে বারে স্মরণ করিতে লাগিলো। মুলত মেয়ে মানুষের মন বোঝা অসম্ভবই নয় আসাধ্য বটে। তাহাকে লইয়া লিখিলে পেজ কম পড়িয়া যাইবে। তাই অল্পতেই সারিয়া দিলাম। সুরেশ- পাঠকগন সুরেশ কে হয়তো মহাসাধু ভাবিতে পারেন, হয়তো তাই। কিন্তু আমার মতে সে অত্যান্ত কপট। কেননা বিশ্বাসের কোন মুল্যই দিতে জানেনা। মহিম তাহাকে প্রায় অন্ধের মতই বিশ্বাস করিত। সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করিয়া তাহার স্ত্রী হরণ করিয়াছিলো। পরস্ত্রী হরনের দোষ রামায়ণেই ক্ষমা হয় নাই আর এইখানে কিভাবে পাঠকগন মানিয়া লইবে। শুধু হরন করিয়াই সে শান্ত হয় নাই অচলার নাম মাত্র অনেচ্ছা থাকা সত্তেও তাহাকে ভোক করিতে পর্যন্ত দ্বিধাবোধ করে নাই। তাই তাহাকে আমি আর যাইহোক একজন সাধু পুরুষ হিসাবে মানিয়া লইতে পারিলাম না। মৃনাল- এ এমনই এক মধু মাখা চরিত্র যাহাতে লেখক কোন দাগ লাগিতে দেই নাই। যদিও উপন্যাস খানি মহিম, অচলা ও সুরেশের ভালোবাসা কে ঘিরিয়া তাহা হইলেও প্রকৃত ভালবাসা মৃনাল চরিত্রতেই খুজিয়া পাওয়া যায়। কিছুক্ষনের জন্যে হিংসুক প্রবৃত্তির মনে হইলেও পরক্ষনে তাহা আপন ধর্ম ও পরিবার প্রেমের নিকট পদোদলিত হইয়া যায়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয় কে উপস্থাপন করা আমার মত নগন্যের শোভা পায় না। কেননা তাহার সম্পর্কে লিখিবার ভাষা আমার জানা নাই। তারপরেও চেষ্টা করিলাম। তাহার লেখা না পড়িলে হয়তো কোন ক্ষতি হইয়া যাইতোনা কিন্তু মুল্যবান সম্পদ হইতে বঞ্চিত হইতাম। তাই অন্তরের অন্তঃস্থ থেকে জানাই শত কোটি প্রনাম ও ধন্যবাদ। বিঃ দ্রঃ- শরৎচন্দ্র পড়িয়া সাধ জাগিলো সাধু ভাষায় লিখিবার তাই চেষ্টা করিলাম, ভুল - ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখিলে কৃতজ্ঞ থাকিব। উপরিক্ত সকল কিছুই আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনা, ব্যাঙ্গ, কটুক্তি বা অপমান করার জন্য নয়।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম-গৃহদাহ জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পৃষ্ঠা-২২৪ মূল্য-২০০ ব্রাক্ষ্মন কন্যা অচলাকে ঘিরে মহিম আর সুরেশ দুই বন্ধুর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হলো গৃহদাহ উপন্যাসের মূল বিষয়। মহিম আর সুরেশ আপনা বন্ধু। সুরেশ মহিমকে দুইবার মৃত্যুর দোয়ার থেকে তাকে ফিরিয়ে এনেছে। এমন কি মহিমের সকল প্রয়োজন মিটাতে সুরেশ সদা প্রস্তুত। মহিম দরিদ্র ঘরের সন্তান তাই তার ডাক্তারি পড়া হলো না। কিন্তু সুরেশ চেয়েছিলো মহিম যেন ডাক্তারিটা পড়ে। সে সব ব্যয় বহন করবে। সুরেশ ডাক্তারি পড়তে শুরু করলেও মহিম ভর্তি হলো না। এমন কি হুট করে গায়েব হয়ে গেলো। অনেক দিন পর সুরেশ মহিমের হদিশ পেল এক ছাত্রমেসে। যেখানে নিতান্তই গরিব ছাত্রদের বাস। তার এভাবে ছুটে আসার কারন ছিলো অন্য। সুরেশ ধর্মে হিন্দু। যদিও সে ধর্ম এত মানে না। কিন্তু ধর্ম না মানলেও সমাজ মানে। আর সমাজ মানে বলেই সে ছুটে এসেছে মহিমের কাছে। কারণ সে শুনেছে মহিম কোন এক ব্রাক্ষ্ম বাড়িতে আনাগোনা করছে। আর হিন্দু ধর্মের লোকেরা ব্রাক্ষ্ম ধর্মের লোকদের পছন্দ করতো না। তাদের সাথে মেলা মেশাটাকেও তারা মেনে নিতে পারতো না। এই রকম অধর্ম যখন মাহিম করেছে বন্ধু হিসেবে সুরেশের নিষেধ করতে আসারই কথা। কিন্তু মহিমকে সে পায় নি। তাই সে সেই ব্রাক্ষ্ম বাড়িতে গিয়ে হাজির। ব্রাক্ষ্ম বাড়ির মেয়ে অচলা সুরেশ জেনেছে অচলাকে মহিম পছন্দ করে। সে নিজে নিজে ঠিক করেছে এই মেয়েকে আচ্চা মতো কিছু কথা শুনিয়ে দিবে যাতে করে মহিমকে সে আর না জায়গা দেয়। কিন্তু অচলার সাথে দেখা হওয়ার পর সুরেশ বদলে গেলো। সে বাড়িতে গিয়ে অচলার সাথে কথা তো হলোই এমন কি অচলার বাবা কেদার মুখুজ্জ্যের সাথেও আলাপ হলো। যেখানে মহিমকে সে নিষেধ করবে বলে এসেছে সেখানে অচলাকে দেখেই তার ভালো লেগে যায়। আর তাই বন্ধুর অগোচরে বন্ধুর ব্যপারে অনেক কথা বললো যাতে মহিমের উপর থেকে আস্তা সরে গিয়ে সে জায়গাটা সে দখল করতে পারে। কিন্তু আদৌ কি তা সম্ভব হয়েছিলো? ব্যক্তিগত মতামতঃ মহিম আর সুরেশ দুই প্রান্তের মানুষ তাদের মাঝে আচলা। এই একজনকে কেন্দ্র করে বাকি দুজনের ঘূর্ণন। পুরো উপন্যাসে সুরেশ অনেক উজ্জল চরিত্র। সে বেশ চঞ্চল প্রকৃতির। মানুষের সাহায্যে সে সব সময় এগিয়ে যায়। তার বিপরীতে মহিম ঠান্ডা মেজাজের। এতোটা উশৃঙ্খল সে নয়। আর এই দুই চরিত্রের ফেড়ে পরে যায় আচলা শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নিবে এই সংসয় ছিলো তার প্রকট। আমার কাছে সুরেশের থেকে মহিমকে বেশি পছন্দ। তার কারন মহিমের গতি এক। কিন্তু সুরেশের গতি অনেক। তাই সে তাল ঠিক রাখতে পারে না। কিন্তু মহিম ঠিকই আছে বা থাকে সব জায়গায়। অচলা চরিত্র বিতর্কিত। আমি ঠিক তাকে তেমন পছন্দ বা অপছন্দ করতে পারছি। এরা ছাড়াও মৃন্ময়ী চরিত্রটাকেও বেশ ভালো লাগে। গৃহদাহ হলেও উপন্যাসটা বেশ ভালো লাগে। গৃহদাহ শরৎচন্দ্রের অন্যতম উপন্যাস। https://www.rokomari.com/book/6468/গৃহদাহ
Was this review helpful to you?
or
"গৃহদাহ"উপন্যাসে লেখক শরৎচন্দ্র সমসাময়িক সামাজিক জাতির আত্মিক বৈশিষ্ট্য,পারিপার্শ্বিক অবস্থা,ব্যক্তিমানসের পারস্পরিক সম্পর্ক,তাদের প্রেম-পরিণয়,বিশ্বাস কে তুলে ধরতে চেয়েছেন।সমাজ-সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় ন্যায়-নীতি যে কিভাবে সম্পূর্নরূপে এই সমাজের হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তাই এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য।শরৎচন্দ্র জানতেন কি করে গল্প বলতে হয়, কি করে আবেগকে নিয়ে খেলা করতে হয় এবং এরই মাঝে কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের বিষ্ময়কর জনপ্রিয়তার মূল সূত্রটি নিহিত। শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে মানুষ এবং মানুষের হৃদয়ই ছিল অনুসন্ধানের ক্ষেত্র। তাঁর রচনায় উচ্ছাসের বাহুল্য আছে। হৃদয়ের রহস্য আত্ম প্রকাশ করেছে কিন্তু নিজেকে মাধুর্য ও সংযমে রিক্ত করেনি। এমনই একটি উপন্যাস শরৎচন্দ্রের গৃহদাহ। পিতৃগৃহে মানসিক অসম্পূর্ণতায় লালিত। কেদার বাবুর সংসার অসংগঠিত। তিনি নিজেই অস্থির চিত্ত। তিনি এমার্সন পড়েন, টাকা-পয়সা সংক্রান্ত ব্যাপারে মন ভারমুক্ত হলে বায়োস্কাপও দেখতে যান। পেটি বর্জোয়া প্যাটার্নে তার চিন্তাভাবনা আচার আচরণ বিন্যস্ত। অচলা ছোট বেলা থেকেই তার বাবার দেয়া শিক্ষায় শিক্ষিত। তাই তার সত্ত্বা, চিত্ত, মন সবই দোলাচলে আন্দোলিত। তাই প্রথম দিকে সুরেশের অসংযত আবেগদীপ্ত ব্যবহার বিরক্ত করেনি এবং তার প্রতি আমন্ত্রণও ছিল না প্রত্যাখ্যানও না। বিয়ের পর মহিমের সাথে গ্রামে এসে মৃনাল ও মহিমের সম্পর্কে কদর্য সন্দেহ, সর্বোপরি মহিমের নিঃস্নেহ কঠোর কর্তব্য পরায়নতা তার মনেপ্রাণে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। মহিম সব সময়ই ছিল নিরুত্তাপ আবেগহীন। অচলা মহিমকে একান্তভাবে পেয়েও তার প্রোমোচ্ছল হৃদয়েখানি মেলে দিতে পারেনি। এরই সাথে সুরেশের আগমন এক সর্বব্যাপক অগ্নিশিখা তার লেলিহান জিহ্বা বিস্তার করে ক্রমাগত সুরেশ ও মহিমের জীবনকে যেমন গ্রাস করেছে তেমনি প্রজ্বলন্তশিখায় অচলার জীবন হৃদয় দ্বিধান্বিত সত্ত্বা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে। নিজের অজান্তেই অচলা সুরেশের প্রবৃত্তিকে ইন্ধন যুগিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা টলস্তয়ের আন্না কারেনিনার ‘আন্না’ চরিত্রের সামঞ্জস্য লক্ষ্য করি। অবশ্য ‘আন্না’ উপন্যাসের শেষে আত্মহত্যা করে এই যন্ত্রণার অবসান করে তোলে। উপন্যাসের শেষে অচলার অনিশ্চিত জীবন আবার নতুন করে তার হৃদয় যন্ত্রণার সূচনা করে।