User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে পেয়েছি এই দেশ।লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার লক্ষ কোটি গল্প ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশের মাঠে ঘাটে, গ্রামে মেঠোপথে, শহরের অলিতে গলিতে।কেউ যুদ্ধ করছে অস্ত্র হাতে নিজের জীবন বাজি রেখে, আবার কোনো মা বোন যুদ্ধ করছে নিজের স্বামী সন্তান ভাই বাবাকে যুদ্ধে যেতে দিয়ে। এই বইয়ের গল্পগুলো সেরকমই।বইতে লেখকের বিভিন্ন সময়ে রচিত মোট ২০টি গল্প আছে। কোনো গল্পে মেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বাঁচানোর জন্য তার রাজাকার বাবাকে ধরিয়ে দিচ্ছে, তো কোনো গল্পে আবার বাবা প্রতিবেশী বৌদ্ধ পরিবারকে বাঁচাতে নিজের রাজাকার ছেলেকে গুলি করছে। এক গল্পে যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ লুকিয়ে পালাচ্ছে তো আরেক গল্পে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহত হয়ে চিকিৎসা রত নার্সের প্রেমে পড়ছে,,,,,, সবগুলো গল্পেই লেখক যুদ্ধের সময়ের বিভিন্ন অনুভূতি, মানুষের ভিন্ন ভিন্ন জীবনের ভিন্ন ভিন্ন গল্প তুলে ধরছেন। এগুলো যেন যুদ্ধের ভেতরের আরেক যুদ্ধের গল্প।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা ২০টি ছোটগল্পের অনবদ্য সংকলন ‘মেয়েটি যুদ্ধে গিয়েছিল’। সুপ্রতিষ্ঠিত বিপ্রদাশ বড়ুয়ার আদি পরিচয় আসলে গদ্যশিল্পী। মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তিনি লেখালেখিতে সপ্রতিভ, তরুণ গল্পকার হিসেবে সে সময়েই আলোচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের উত্তুঙ্গ সময়ে লেখা তাঁর একটা দুর্দান্ত গল্পের নাম ‘সাদা কফিন’। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ কথা কয়’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছিল। হানাদার বাহিনীর প্রেসক্লাবসহ রাজধানীজুড়ে গোলা নিক্ষেপ, হামলা-ভাঙচুরের সময় দিশাহীন বাঙালিদের বাঁচার আকুতি নিয়ে প্রাণপণ ছোটাছুটির ভয়ানক অথচ নান্দনিক বর্ণনা পাওয়া যায় গল্পটিতে। চোখের সামনে যেন দৃশ্যমান হয়ে ওঠে ২৫ মার্চের কালরাতে ঢাকা শহরের ঘটে যাওয়া যুদ্ধাতঙ্ক- জাতীয় সংগীত না বাজিয়ে ঢাকা বেতার তৃতীয় অধিবেশন শেষ করে দিয়ে যেখানে জানান দেয়, ‘আজ একটা কিছু ঘটতে চলেছে।’ মুক্তিযুদ্ধের গল্প কিংবা ছোটগল্প হিসেবেই কালোত্তীর্ণ হওয়ার দাবিদার ‘সাদা কফিন’ গল্পটি। আমাদের সৌভাগ্য মেয়েটি যুদ্ধে গিয়েছিল গ্রন্থে গল্পটি সংকলিত করেছেন লেখক। গ্রন্থটিতে সংকলিত গল্পগুলোতে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের ভিন্ন ভিন্ন দিক। এর প্রথম ফ্ল্যাপে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘মুক্তিযোদ্ধার জয় ও রাজাকার-পাকিস্তানিদের পরাজয়- এই সরলীকৃত বিষয়ের গল্প-কাহিনী এগুলো নয়। এর গভীরে মানব-হৃদয়ের অতল রহস্য ও দ্বন্দ্ব ফুটে উঠেছে।’ কথাটা অনেকাংশেই সত্য। বেশির ভাগ গল্পেই কাহিনীর বহুমাত্রিকতা প্রকাশ পেয়েছে। গল্পগুলোর গায়ে সারা বাংলার গন্ধ মাখা। কখনো কখনো প্রকৃতিও অংশ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে। গল্প নির্মাণের কুশলতা ও সত্য ঘটনা অবলম্বনে কাহিনী নির্মাণের শিল্পিত-চৈতন্য ও অন্তর্মুখিতা কাহিনীগুলোর স্থায়ী সম্পদ। বিপ্রদাশ প্রকৃতিসন্ধানী এবং প্রকৃতিকে অস্বীকার করে তাঁর পক্ষে লেখালেখি অসম্ভব- এটা বাজি ধরেই বলা যায়। দিন কিংবা রাতের যে পরিবেশই হোক না কেন, পরিস্থিতির সঙ্গে প্রকৃতিও চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে প্রতিটি গল্পে। ফলে গল্পের ঘটনার সঙ্গে পাঠকও এগিয়ে যায়, নায়ক বা নায়িকার সঙ্গে পাঠকও হাঁটতে থাকে অচেনা পথঘাটে। সন্ধ্যা রাতের অসময়ে কাঁঠাল পানি পাখির ‘কাট্টল পাকুক’ কিংবা বুলবুল পাখির ‘টুবলু টুবলু টুব’ ডাক গেরিলা যোদ্ধা কমান্ডার আলমের সঙ্গে পাঠকও যেন কান পেতে শোনে। মধুমালতির ঝাড়, তালতা নদী, পেঁচার সন্দেহপ্রবণ ডাক, গোলাপ চন্দনের মধুর সুবাস, আসাম, ভাঁট-শেওড়া, ঢেঁকি গাছ, আমলকী গাছ, শিরীষ গাছে ঝুলন্ত বীজের ছড়া ইত্যাদি অনায়াসে প্রবেশাধিকার পায় তাঁর গল্পে। প্রতিটি গল্পই অনন্য সাধারণ। সবগুলো গল্প পড়লে একসঙ্গে সেটাও গল্প হয়ে যায়- মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা সেখানে সত্যটা জানান দিয়ে ওঠে। গ্রন্থটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের রাজধানীর গল্প যেমন আছে, তেমনি দেশের বিভিন্ন এলাকার মাঠ-ময়দানের যুদ্ধাভিজ্ঞতা উঠে এসেছে, এমনকি পাহাড়ি এলাকার মানুষেরাও বাদ যায়নি। এ সময়ে অগ্রসর পাঠকদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই গল্পগ্রন্থটি অবশ্য পাঠ্য