User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের ইতিহাস আসলে শোষিত ও বঞ্চিত হওয়ার ইতিহাস। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় অনিবার্যভাবে আসে মুক্তিযুদ্ধ। ত্রিশ লাখ প্রাণের আত্মত্যাগে, নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন ভূখ-টি। স্বাধীনতার পর থেকেই নানা রকম সমস্যা ও সংকটের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশ। বিচিত্র রকম সমস্যার সঙ্গে কখনো কখনো যোগ হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। রাজনৈতিক দুর্যোগ তো লেগেই আছে। সংঘাতের রাজনীতি দেশকে ক্রমশ পিছিয়ে দিচ্ছে। বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কাক্সিক্ষত অগ্রগতির পথে। এসব সমস্যা মোকাবিলা করেও মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ৩৫০ পৃষ্ঠার এ বইয়ে সন্নিবেশিত হয়েছে ৩০টি প্রবন্ধ। এসব প্রবন্ধে রতনতনু ঘোষ দেখিয়েছেন বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ কীভাবে ‘বাঘ’ হয়ে উঠছে। বইটির শেষে রয়েছে ৫৬ পৃষ্ঠার তিনটি সংযোজনী। প্রথম সংযোজনীতে বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত তথ্য, রাষ্ট্রনায়ক, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন পরিসংখ্যান, দ্বিতীয় সংযোজনীতে রয়েছে বর্তমান (মহাজোট) সরকারের সাফল্য ও অগ্রগতির চার বছর এবং তৃতীয় সংযোজনীতে স্থান পেয়েছে স্টেপস্ টুয়ার্ডস্ ডেভেলপমেন্ট-এর প্রতিবেদনÑ ‘এগিয়ে চলেছে নারী, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’। শেষোক্ত প্রতিবেদনটি নিঃসন্দেহ গুরুত্বপূর্ণÑ যেখানে বাংলাদেশের নারীদের হাত-পা শেকলে বাঁধার জন্য নিয়ত ষড়যন্ত্র করছে তেঁতুল হুজুররা, সেখানে এ ধরনের প্রতিবেদন আশার আলো দেখায়। টের পাওয়া যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীদের ভূমিকা প্রকৃতপক্ষে কতটুকু। এক মলাটের লেখক তুলে এনেছেন বাংলাদেশের খাতওয়ারি চিত্র। প্রবন্ধের শিরোনামগুলো লক্ষ করলেই তা বোঝা যায়Ñ অগ্রসর বাংলাদেশ; বিদেশি পর্যটক, ঐতিহাসিক, ব্যবসায়ীদের মূল্যায়নে বাংলাদেশ; বিভিন্ন শাসনামলে বাংলাদেশের উন্নয়ন; স্বাধীনতার ৪২ বছর : বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরো এগিয়ে যাবে; অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র পেরিয়ে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ; নির্বাচন কমিশন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল; সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি; আইন ও বিচার ক্ষেত্রে অগ্রগতি; কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতি; বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি; স্থানীয় সরকার, সড়ক ও যোগাযোগ এবং নারী উন্নয়ন; তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অগ্রগতি; পরিবেশগত উন্নয়ন; বেশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশ; দি ইকোনমিস্টের দৃষ্টিতে ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল’; পরিবর্তনের ধারায় অগ্রসরমান বাংলাদেশ; ভিয়েতনাম ও হ্যানয়ের সঙ্গে চুক্তি এবং এএসইএম ফোরামের সদস্যভুক্ত বাংলাদেশ; চার দশকে বাংলাদেশ : অগ্রগতি ও সম্ভাবনা; তথ্য ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন; রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে সরকারের প্রস্তুতি; বাংলাদেশের অগ্রগতিতে বিশ্বব্যাংকের সন্তোষ; বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান : রেন্টাল কুইক রেন্টাল বিতর্ক; পার্বত্য শান্তিচুক্তি : অগ্রগতি ও সম্ভাবনা; সমুদ্রের ওপর বাংলাদেশের আইনি স্বত্ব ও কর্তৃত্ব; বাংলাদেশের উন্নয়নে সমুদ্র ও সমুদ্রসম্পদ; ইতিবাচক বাংলাদেশ; দেশে-বিদেশে বিনিয়োগের দুয়ার খুলছে; সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ; বিশ্বব্যাপী বাঙালি আর বাঙালির বিশ্বায়ন। বাংলাদেশপ্রেমী যে কোনো নাগরিক এই বই পড়ে মুগ্ধ হবেন, উদ্বুদ্ধ ও উজ্জীবিত হবেন। বাংলাদেশকে আমরা সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবেই জানি কিন্তু সেই সম্ভাবনাটা যে কতটুকুÑ অনেকের ধারণাতেই তা নেই। এ বই দেবে পরিষ্কার একটি ধারণা। অগ্রসর বাংলাদেশের যে আশাজাগানিয়া চিত্র এঁকেছেন লেখকÑ তাতে মামুলি ধন্যবাদ দিলে তাঁর ও প্রকাশকের প্রতি অবিচারই করা হবে! সব ভালোর দৃষ্টিকটু লেগেছে বইটির অত্যধিক মুদ্রণ প্রমাদ। এ বিষয়ে আরেকটু সতর্ক হওয়ার দরকার ছিল। অগ্রসর বাংলাদেশের তথ্যঋদ্ধ আকরগ্রন্থ অনিকেত রাজেশ : বাংলাদেশ স্বাধীনতার চার দশকে অনেক দূও অগ্রসর হয়েছে। তার বৈশ্বিক স্বীকৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বানকি মুন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার পরিচালক প্যাসকেল লাসি, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনসহ অনেক ব্যক্তি ও সংষ্থা। ঐতিহাসিকভাবে বাংলার মানুষ লড়াকু, জীবনসংগামী ও মুক্তিপ্রয়াসী। ক্ষাধীনতার লক্ষ্যে তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বৈষম্য, শোষণ, বঞ্চনা ও অনধিকারের বিরুদ্ধে বীর বাঙালি লড়াই-সংগ্রাম করেছে। রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, কবি নজরুলের জয়বাংলা আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় ডিজিটাল বাংলাদেশ। সামগ্রিকভাবেই বাংলাদেশ এখন হয়ে উঠেছে ‘অগ্রসর বাংলাদেশ’। রতনতনু ঘোষ বাংলাদেশের ক্রমঅগ্রসরমান পরিস্থিতির তথ্যগত বিশেষণ তুলে ধরেছেন। তিনি এতে আর্থিক-সামাজিক-গণতান্ত্রিক-প্রশাসনিক-কৃষি-শিল্প-সংস্কৃতি, বৈদেশিক আয়সহ সামগ্রিক উন্নয়নের বা¯—বচিত্র তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন আমলের উন্নয়নধারা তুলে ধরেছেন। এতে বাংলাদেশের উন্নয়নচিত্র ও গণউন্নয়নের বৈপবিক পরিবর্তন ও রূপাš—ও সনাক্ত করা হয়েছে। বিগত চার দশকে নারীর ¶মতায়ন, ¯^নির্ভরতা, অগ্রগতি, শি¶া, কর্মসংস্থান তুলে ধরা হয়েছে। চার দশকে কৃষিতে বাংলাদেশের পরিপূর্ণ ¯^নির্ভরতা, সৌরশক্তিতে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের শীর্ষস্থান পর্যালোচিত হয়েছে। কৃষকরা ১০ টাকায় বিনা জামানতে ব্যাংকে একাউন্ট কওে ঋণ নিচ্ছেন, ¯^নির্ভও হচ্ছেন। বিদ্যুৎ সংকটের অনেকটাই সমাধান করেছেন সরকার। প্রয়োজনে রেন্টাল পদ্ধতিও গস্খহণ করেছেন। ল¶াধিক লোক বিদেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন এবার। সরকারিভঅবে বিভিন্ন দেশে ল¶ ল¶ লোকের বিদেশ গমনের ও কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, চার দশকে এবার সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে বাংলাদেেম। চিকিৎসাসেবার মান ও ¶েত্র বেড়েছে। শিশুমৃত্যুরোধ ও মাতৃমৃত্যুহার হ্রাসে বাংলাদেশ এশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে আছে। এ ধারাবাহিকতা র¶ার প্রয়োজন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্রেও ধারাবাহিকতা ও সাংবিধানিক পন্থায় সুশাসন। এদেশে প্রলয়ঙ্করী প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর রাজনৈতিক কালো অধ্যায় সত্তে¡ও বাংলাদশে এগিয়ে চলেছে। বিরোধী প¶েও অপপ্রচার, মিথ্যাচার, তথ্যসন্ত্রাস সত্তে¡ও দেশ অগ্রসরমান। মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ... মহাজোট সরকার যুদ্ধাপরাধীদেও বিচারকার্য পরিচালনা করছেন আš—র্জাতিক অপরাধী ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে। জনগণ সাংবিধানিক কালো অধ্যায় ও ধারা থেকে মুক্ত হতে চলেছে। দেশ ক্রমাš^য়ে এগিয়ে যাচ্ছে, আরো এগেিয় যাবে ভবিষ্যতে। জনগণ আশাবাদী এবং সংগ্রামী। এ অবস্থার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে অগ্রসর বাংলাদেশ শীর্ষক গ্রন্থে। বাংলাদেশ এখন ‘সামুদ্রিক বাংলাদেশ’ লাভ করেছে আš—র্জাতিক আইনে। পার্বত্য শাšি— চুক্তি কওে ¶ুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়নের ধারা বহাল রেখেছে। এদেশে বিভিন্ন দেশের প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। আরো বেশি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। এদেশে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন হয়েছে, এশীয় চার“কলা প্রদর্শনী হয়েছে, সার্কেও সম্মেলন অনুষ্ঠান হয়েছে,সার্কের কৃষিসংস্কৃতি এদেশে গঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে বাংলাদেশের জনগণ সচেষ্ট ও সংগ্রামী। সুস্থ-ধারাবাহিক রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ অব্যাহত থাকলে এদেশ বিশ্বেও উন্নয়ন পর্যায়ে উন্নীত হবে। ইতোমধ্যে উন্নত দেশগুলোর সাথে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন ল¶্যে পৌঁছে গেছে। আশি শতাংশ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। নারী শি¶ার হার বেড়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে। খেলাধুলার আš—র্জাতিক ¯^ীকৃতি ও বিজয় ঘটেছে বাংলাদেশের। বিশ্বেও ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী বাঙালি ছড়িয়ে পড়ছে সৌভাগ্যেও সন্ধানে। ব্যবসা-বাণিজ্যে, উদ্ভাবনে, উদ্যোগে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। তাতে বাংলাদেশের সুনাম বাড়ছে। ব্রান্ডিং বাংলাদেশ গঠনে কাজ এগিয়ে চলেছে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও বাংলাদেশ অগ্রসর হয়েছে। পরিবেশবাদী উন্নয়নে বাংলাদেশ পুরস্কৃত হয়েছে জাতিসংঘের মাধ্যমে। এদেশে তার“ণ্য ও যুবশক্তি বেশ উজ্জীবিত ও আশাবাদী হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা বিনির্মাণে এবং গণজাগরণের নতুন অধ্যায় সূচিত হওয়ায়। ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তি, ধর্মান্ধ চক্র, সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠী, মৌলবাদী চক্র, সন্ত্রাসী রাজনীতির ধারক-বাহকেরা এদেশের রাজনীতি থেকে উৎখাতের পথসূত্র তৈরি হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদেও সর্বোচ্চ শা¯ি— হলে, আš—র্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় অনুযায়ী ‘জামায়াত অপরাধী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এবার দাবি উঠেছে এ সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার। বীরের রক্তস্রোত, মায়ের অশ্র“ধারা, বোনের সম্ভ্রম, সাধারণ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে ¯^াধীন বাংলাদেেশর অগ্রযাত্রা রোধ করা যায়নি। বারবার বাধাগ্র¯— হয়েছে উন্নয়নধারা কিন্তু থেমে থাকেনি। রাজনীতির কালোধারা, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক জটিলতা, অপপ্রচার ও মিথ্যা দূও করা গেলে বাংলাদেশ আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে। রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, রাজনীতির কালো ধারা এবং জাতীয় অনৈক্য ও অসাংবিধানিক ধারার প¶ে গুসমর্থন নেই। সাধারণ মানুষকে বিভ্রাš— ও বিপথগামী করতে যারা সচেষ্ট তাদেও র“খে দাঁড়াতে হবে আইনিভাবে, রাষ্ট্রীয়ভাবে। পরিকল্পিত উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ধারাক্রম আর জনগণের সংগ্রামী প্রচেষ্টার বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। এ আশাবাদ নিয়েই প্রাবন্ধিক রতনতনু ঘোষ লিখেছেন ‘অগ্রসর বাংলাদেশ’ গ্রন্থ। বইটির বহুল প্রচার ও পাঠ কাম্য।